সুতপা বেদজ্ঞ

সংস্কৃতিচর্চা মানবিক মানুষ হতে শেখায়, মানুষে-মানুষে মমত্ববোধ গড়ে তোলে, মানুষের সঙ্গে প্রকৃতির নিবিড় সম্পর্ক তৈরি করে। শিশু-কিশোরদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়ায়, মন্দ চিন্তা থেকে দূরে রাখে, সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটায়। দেশের প্রতি, সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ করে তোলে সংস্কৃতি।
সভ্যতা-সংস্কৃতি শব্দযুগল পাশাপাশি যেমন ব্যবহৃত হয়, তেমনি এরা হাত ধরাধরি করে টিকে থাকে। সংস্কৃতির হাত ধরে সভ্যতা এগিয়ে চলে, বিকশিত হয়। সভ্যতা মানুষকে সমালোচনা গ্রহণ করতে শেখায়, আত্মসমালোচনার পথ বাতলে দেয়। মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ববোধ, মমতার বন্ধন গড়ে তোলে সংস্কৃতি। মোটকথা, মানুষের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নির্মাণ করে চলা, তাকে অগ্রসর করে নিয়ে যাওয়া সভ্যতার অন্যতম কাজ। সভ্যতা মানুষকে প্রগতিমুখী বিজ্ঞানমনস্ক যুক্তিবাদী করে তোলে। সভ্যতার হাত ধরে এগিয়ে চলা সুস্থ সংস্কৃতিচর্চা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে মানুষে মানুষে বন্ধনকে মজবুত করে।
সভ্যতার সঙ্গে শিক্ষার রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক। শিক্ষা ছাড়া সভ্যতা একচুল অগ্রসর হতে পারে না। আর এসব কাজই সম্পাদিত হয় সংস্কৃতির ওপর ভর করে। দীর্ঘদিনের জীবনাচরণের ছন্দময় গতিময়তার শেকড় সমাজে প্রথিত হতে হতে সংস্কৃতি নামক মহিরুহটি সমাজে বিস্তার লাভ করে। বাঙালি সংস্কৃতিও তেমনিভাবে বিস্তার লাভ করেছে এবং এখনো টিকে আছে।
সভ্যতা-সংস্কৃতি শূন্য থেকে সৃষ্টি হয় না এবং এটা কোনো আবদ্ধ বিষয়ও নয়। বাঙালির নৃতাত্ত্বিক ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, বেশির ভাগ বাঙালিই অস্ট্রো-এশিয়াটিক। দ্রাবিড় গোষ্ঠীও এর মধ্যে মিশেছে। এই দুটি প্রধান নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী ছাড়াও বাঙালির মধ্যে তিব্বতি, চীনা এবং সেমেটিক রক্তের সংমিশ্রণ ঘটেছে। তেরো শতকে বখতিয়ার খিলজির বঙ্গ বিজয়ের পরপরই ভারতীয় ভূখণ্ডের সংস্কৃতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আসে। বখতিয়ার খিলজি তুর্কি ছিলেন। তাঁর সৈন্যরা তুর্কিস্তান, উজবেকিস্তান, ইরান কেউবা আফগানিস্তান থেকে এসেছিল। পনেরো শতকে উত্তর এবং পূর্ব আফ্রিকার হাবসিরাও এসেছিল এই ভূখণ্ডে। এদের বেশির ভাগই এই অঞ্চলের মেয়েদের বিয়ে করে স্থায়ীভাবে থেকে যায় এবং ধীরে ধীরে বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে যায়। তাদের সংস্কৃতিও আমাদের সংস্কৃতিতে প্রবেশ করে। এরপর কেটে গেছে কয়েক শ বছর। প্রতিনিয়ত পরিবর্তন ও পরিমার্জনের মধ্য দিয়ে বাঙালির জীবন ও সংস্কৃতিচর্চায় এসেছে নানা পরিবর্তন।
আমাদের মতো বহু মত-পথ সম্প্রদায়ের দেশে ধর্ম ও সংস্কৃতি মিলেমিশে ঘেঁষাঘেঁষি করে টিকে থাকে, বিকশিত হয়। তা সত্ত্বেও ধর্মীয় ও জাতীয় সংস্কৃতির মধ্যে সুস্পষ্ট পার্থক্য বিদ্যমান। সেই পার্থক্যকে সতর্কতার সঙ্গে চর্চায় আনতে না পারলে ঘটতে পারে নানা ধরনের বিপত্তি। এমনকি বহু প্রাচীন সংস্কৃতি পুরোপুরি হারিয়ে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটতে পারে। ভিন্ন ভিন্ন ধর্মের আচার-আচরণ উপাসনার ধরন ভিন্ন ভিন্ন হওয়ায় ধর্মীয় সংস্কৃতি ভিন্নতা নিয়েই সমাজে টিকে থাকে। জাতীয় সংস্কৃতির অবয়ব বহুমাত্রিক এবং তা ধর্মীয় সংস্কৃতি থেকে সম্পূর্ণই আলাদা। অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর সংস্কৃতির মতোই বাঙালির অভিন্নতা তার ভাষায়, খাদ্যাভ্যাসে, পোশাকে, চেহারায়, সাহিত্য ও শিল্পকলাচর্চায় এমনকি আবাসন নির্মাণেও।
এ কথাও বিবেচনায় নেওয়া দরকার অধিকাংশ ধর্মপ্রাণ মানুষের দেশে কখনো কখনো ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়তে পারে। তাতে দোষের কিছু নেই।
তখন সংস্কৃতিটাই প্রধান হয়ে ওঠে এবং তাতে ধর্মের কোনো ক্ষতি হয় না। যেমন আজকাল বিয়ের গায়েহলুদের সংস্কৃতি সব ধর্মের অনুসারীরাই প্রায় একই কায়দায় পালন করেন। নাটক-সিনেমা বা আজকালকার সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা কায়দাকানুনও সংস্কৃতিকে প্রভাবিত করে আচার-অনুষ্ঠানে যুক্ত হতে দেখা যায়। বর্তমান সময়ে আমাদের দেশের প্রায় এক কোটি নারী-পুরুষ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে কর্মরত। তাঁরা রেমিট্যান্স যেমন পাঠাচ্ছেন সঙ্গে সঙ্গে চলে আসছে সেই সব দেশের সংস্কৃতি। বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে অন্য দেশের সংস্কৃতির প্রভাব পুরোপুরি এড়িয়ে যাওয়া হয়তো সম্ভব নয়। কিন্তু কতটুকু গ্রহণ করলে আমাদের সংস্কৃতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, সে ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন থাকা বাঞ্ছনীয়।
এ ক্ষেত্রে চিন্তার কথা হচ্ছে, অনেকটা বাধাহীনভাবেই বাঙালি সংস্কৃতিতে ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ ঘটছে। বাঙালি সংস্কৃতি বারবার রাজনীতি দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে—এ কথা সবারই জানা। রাজনৈতিক ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার স্বার্থে ধর্ম ও সংস্কৃতিকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়ে সৃষ্টি করা হয়েছে বিভেদ। ১৯৪৭ সালে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক বিবেচনায় কেবলমাত্র ধর্মের ভিত্তিতে দুটি দেশ তৈরির সিদ্ধান্ত সবকিছু এলোমেলো করে দেয়। বাঙালিরাও জোরেশোরে হিন্দু-মুসলিমে, অর্থাৎ ধর্মের পরিচয়ে ভাগ হতে থাকে। জাতীয় বা সংস্কৃতিগত পরিচয় ক্রমেই গৌণ হয়ে ওঠে। শাসকগোষ্ঠী কর্তৃক ধর্মে-ধর্মে বিদ্বেষ, হিংসা জিইয়ে রাখার কৌশল সংস্কৃতিকে দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
এপার বাংলা-ওপার বাংলা তৈরি হয়। এক বাংলায় বাঙালি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ, অন্য বাংলায় বাঙালি হিন্দু। ফলে যা ঘটল তা হচ্ছে দুটি প্রধান ধর্মমতকে ঘিরেই বাঙালি সংস্কৃতি আবর্তিত ও বিকশিত হতে থাকল। দুই দেশের শাসকগোষ্ঠীই এটিতে বাধা না দিয়ে বরং তা অগ্রসর করতে নানা কায়দাকানুন জারি রাখল। রাষ্ট্রের সঙ্গে ধর্মকে মিলিয়ে-মিশিয়ে জাতিগত পরিচয়কে ক্ষতিগ্রস্ত করা হলো। এখন পর্যন্ত শাসকশ্রেণির প্রত্যক্ষ-অপ্রত্যক্ষ মদদে দুই দেশেই ধর্মীয় উন্মাদনা বেড়ে চলেছে। মানুষ যত ধর্মের নেশায় ডুবে থাকে, ততই শাসকদের সুবিধা। এই রাজনৈতিক সুবিধাবাদীদের আশকারায় জাতীয় সংস্কৃতি ক্রমেই পথ হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ছে। গত দুই দশকে বাঙালি দুই ধর্মের মানুষের মধ্যে কি পোশাকে, কি ভাষা ব্যবহারে এমনকি খাদ্যাভ্যাসেও ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। হিন্দুধর্মাবলম্বীদের মধ্যে ছোঁয়াছুঁয়ির বাতিক ক্রমেই বিস্তার লাভ করছে। ধর্মীয় পোশাক ও সাজসজ্জায় নিজের ধর্মীয় পরিচয়কেই প্রধান হিসেবে বাইরে প্রদর্শন করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন অনেকে। অন্যদিকে মুসলিম ধর্মাবলম্বী
নারী-পুরুষের পোশাক ও ভাষা প্রক্ষেপণে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে।
ধর্মীয় সম্প্রদায়নির্বিশেষে বহু বাঙালি নিজের সংস্কৃতি ছেড়ে এখন অন্য সংস্কৃতি ভালোবাসতে শুরু করেছে, নিজস্ব সংস্কৃতিকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে এমনকি জাতীয় সংস্কৃতির বিরুদ্ধে ‘অবরোধ’ পর্যন্ত ঘোষণা করছে। তারা বাঙালি সংস্কৃতিকে ধর্মীয় মোড়কে নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করছে। কিছু ধর্মব্যবসায়ীর বিভাজন মানসিকতার কারণে মানুষে মানুষে সৃষ্টি হচ্ছে বিভেদ, হিংসা, হানাহানি। আবার আধুনিকতার নামে উন্মাদনার যে সংস্কৃতি প্রচার করা হয়, তার ক্ষতিকর প্রভাবও কম নয়। দুই-ই জাতীয় সংস্কৃতি টিকে থাকার ক্ষেত্রে হুমকিস্বরূপ। একই জল-হাওয়ায় বড় হওয়া সত্ত্বেও শুধু ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে একে অপরকে সহ্য পর্যন্ত করতে না পারার যে সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে, এর ফলাফল যে ভয়াবহ, তার প্রমাণ মিলছে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ, লালন সাঁইজির ভক্তদের ওপর হামলা, শাহ্ আবদুল করিমের স্মৃতিচিহ্ন মুছে ফেলার চেষ্টাসহ নানা অপকর্মের মধ্য দিয়ে। বাংলা ভূখণ্ডে একটি গোষ্ঠী বরাবরই জাতীয় সংস্কৃতিকে অবজ্ঞা করে তাদের গোষ্ঠীগত স্বার্থ হাসিল করতে চেয়েছে। স্বার্থবাদীরা নিষিদ্ধ সংস্কৃতি বলে সমাজে যা প্রচার করে, তা আসলে শিল্পকলা, সংস্কৃতির একটা অংশমাত্র। এর বাইরে সংস্কৃতির বিশাল জগৎ রয়েছে। সেই জগৎকে তারা কেবল আড়ালই করে না, তাকে বিনষ্টও করতে চায়।
আজ আর বলতে বাধা নেই অনেক সৃজনশীল সাংস্কৃতিক বিদ্যালয় এখন (নাচ-গান-আবৃত্তি-ছবি আঁকা) শিক্ষার্থী সংকটে ভুগছে। বাবা-মায়েরা তাঁদের সন্তানদের নাচ-গান-নাটক-থিয়েটার শেখাতে আগ্রহী নন। পাড়ার লাইব্রেরিতে শিশু-কিশোরেরা পড়তে যায় না। বিদ্যালয়গুলো তাদের পাঠাগারগুলো শিশু-কিশোরবান্ধব করে তোলার ক্ষেত্রে মনোযোগী নয়। এর কোনোটিই সংস্কৃতি বিকাশের জন্য শুভ খবর নয়। সৃষ্টিশীল সংস্কৃতি বিমুখতা মানুষকে গণ্ডিবদ্ধ করে ফেলে। সুকুমার বৃত্তিকে গলা টিপে ধরে। তার ছাপ ক্রমেই প্রকাশিত হতে শুরু করেছে। সংস্কৃতিচর্চার অভাবে আমাদের শিশু-কিশোরেরা একাকিত্ব আর হতাশায় ভুগছে, জড়িয়ে পড়ছে নানা সামাজিক অপরাধে। শিশুকাল থেকে চলন-বলন-পোশাক সবই নির্দিষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে। অর্থ উপার্জন এবং পরকালের ভীতি নিয়ে বড় হচ্ছে এই প্রজন্মের অধিকাংশ শিশু।
সংস্কৃতিচর্চা মানবিক মানুষ হতে শেখায়, মানুষে-মানুষে মমত্ববোধ গড়ে তোলে, মানুষের সঙ্গে প্রকৃতির নিবিড় সম্পর্ক তৈরি করে। শিশু-কিশোরদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়ায়, মন্দ চিন্তা থেকে দূরে রাখে, সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটায়। দেশের প্রতি, সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ করে তোলে সংস্কৃতি। কাজেই নিজস্ব সংস্কৃতিকে এড়িয়ে বা পাশ কাটিয়ে সুস্থ সমাজ বা জাতি গঠন যেমন সম্ভব নয়, তেমনি জাতীয় সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখাও কঠিন। বাঙালি জাতিগত সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখতেই ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছিল, মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল। প্রাণ-প্রাচুর্যে ভরা হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতি বাঙালি জাতির সম্পদ। একে রক্ষা করা ও প্রগতির পথে অগ্রসর করে নিয়ে যাওয়া আমাদের দায়।
আজকের প্রজন্ম ও সচেতন মানুষেরাও বোধকরি সে দায় এড়িয়ে যেতে পারেন না। এই দায়িত্ব বোধ থেকেই আগামীর জন্য, আমাদের সন্তানদের স্বার্থে বাঙালি সভ্যতা-সংস্কৃতিচর্চা ও একে টিকিয়ে রাখতে মনোযোগী হওয়া বিশেষ প্রয়োজন।
লেখক: সুতপা বেদজ্ঞ, কলামিস্ট ও সমাজকর্মী

সংস্কৃতিচর্চা মানবিক মানুষ হতে শেখায়, মানুষে-মানুষে মমত্ববোধ গড়ে তোলে, মানুষের সঙ্গে প্রকৃতির নিবিড় সম্পর্ক তৈরি করে। শিশু-কিশোরদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়ায়, মন্দ চিন্তা থেকে দূরে রাখে, সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটায়। দেশের প্রতি, সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ করে তোলে সংস্কৃতি।
সভ্যতা-সংস্কৃতি শব্দযুগল পাশাপাশি যেমন ব্যবহৃত হয়, তেমনি এরা হাত ধরাধরি করে টিকে থাকে। সংস্কৃতির হাত ধরে সভ্যতা এগিয়ে চলে, বিকশিত হয়। সভ্যতা মানুষকে সমালোচনা গ্রহণ করতে শেখায়, আত্মসমালোচনার পথ বাতলে দেয়। মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ববোধ, মমতার বন্ধন গড়ে তোলে সংস্কৃতি। মোটকথা, মানুষের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নির্মাণ করে চলা, তাকে অগ্রসর করে নিয়ে যাওয়া সভ্যতার অন্যতম কাজ। সভ্যতা মানুষকে প্রগতিমুখী বিজ্ঞানমনস্ক যুক্তিবাদী করে তোলে। সভ্যতার হাত ধরে এগিয়ে চলা সুস্থ সংস্কৃতিচর্চা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে মানুষে মানুষে বন্ধনকে মজবুত করে।
সভ্যতার সঙ্গে শিক্ষার রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক। শিক্ষা ছাড়া সভ্যতা একচুল অগ্রসর হতে পারে না। আর এসব কাজই সম্পাদিত হয় সংস্কৃতির ওপর ভর করে। দীর্ঘদিনের জীবনাচরণের ছন্দময় গতিময়তার শেকড় সমাজে প্রথিত হতে হতে সংস্কৃতি নামক মহিরুহটি সমাজে বিস্তার লাভ করে। বাঙালি সংস্কৃতিও তেমনিভাবে বিস্তার লাভ করেছে এবং এখনো টিকে আছে।
সভ্যতা-সংস্কৃতি শূন্য থেকে সৃষ্টি হয় না এবং এটা কোনো আবদ্ধ বিষয়ও নয়। বাঙালির নৃতাত্ত্বিক ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, বেশির ভাগ বাঙালিই অস্ট্রো-এশিয়াটিক। দ্রাবিড় গোষ্ঠীও এর মধ্যে মিশেছে। এই দুটি প্রধান নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী ছাড়াও বাঙালির মধ্যে তিব্বতি, চীনা এবং সেমেটিক রক্তের সংমিশ্রণ ঘটেছে। তেরো শতকে বখতিয়ার খিলজির বঙ্গ বিজয়ের পরপরই ভারতীয় ভূখণ্ডের সংস্কৃতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আসে। বখতিয়ার খিলজি তুর্কি ছিলেন। তাঁর সৈন্যরা তুর্কিস্তান, উজবেকিস্তান, ইরান কেউবা আফগানিস্তান থেকে এসেছিল। পনেরো শতকে উত্তর এবং পূর্ব আফ্রিকার হাবসিরাও এসেছিল এই ভূখণ্ডে। এদের বেশির ভাগই এই অঞ্চলের মেয়েদের বিয়ে করে স্থায়ীভাবে থেকে যায় এবং ধীরে ধীরে বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে যায়। তাদের সংস্কৃতিও আমাদের সংস্কৃতিতে প্রবেশ করে। এরপর কেটে গেছে কয়েক শ বছর। প্রতিনিয়ত পরিবর্তন ও পরিমার্জনের মধ্য দিয়ে বাঙালির জীবন ও সংস্কৃতিচর্চায় এসেছে নানা পরিবর্তন।
আমাদের মতো বহু মত-পথ সম্প্রদায়ের দেশে ধর্ম ও সংস্কৃতি মিলেমিশে ঘেঁষাঘেঁষি করে টিকে থাকে, বিকশিত হয়। তা সত্ত্বেও ধর্মীয় ও জাতীয় সংস্কৃতির মধ্যে সুস্পষ্ট পার্থক্য বিদ্যমান। সেই পার্থক্যকে সতর্কতার সঙ্গে চর্চায় আনতে না পারলে ঘটতে পারে নানা ধরনের বিপত্তি। এমনকি বহু প্রাচীন সংস্কৃতি পুরোপুরি হারিয়ে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটতে পারে। ভিন্ন ভিন্ন ধর্মের আচার-আচরণ উপাসনার ধরন ভিন্ন ভিন্ন হওয়ায় ধর্মীয় সংস্কৃতি ভিন্নতা নিয়েই সমাজে টিকে থাকে। জাতীয় সংস্কৃতির অবয়ব বহুমাত্রিক এবং তা ধর্মীয় সংস্কৃতি থেকে সম্পূর্ণই আলাদা। অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর সংস্কৃতির মতোই বাঙালির অভিন্নতা তার ভাষায়, খাদ্যাভ্যাসে, পোশাকে, চেহারায়, সাহিত্য ও শিল্পকলাচর্চায় এমনকি আবাসন নির্মাণেও।
এ কথাও বিবেচনায় নেওয়া দরকার অধিকাংশ ধর্মপ্রাণ মানুষের দেশে কখনো কখনো ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়তে পারে। তাতে দোষের কিছু নেই।
তখন সংস্কৃতিটাই প্রধান হয়ে ওঠে এবং তাতে ধর্মের কোনো ক্ষতি হয় না। যেমন আজকাল বিয়ের গায়েহলুদের সংস্কৃতি সব ধর্মের অনুসারীরাই প্রায় একই কায়দায় পালন করেন। নাটক-সিনেমা বা আজকালকার সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা কায়দাকানুনও সংস্কৃতিকে প্রভাবিত করে আচার-অনুষ্ঠানে যুক্ত হতে দেখা যায়। বর্তমান সময়ে আমাদের দেশের প্রায় এক কোটি নারী-পুরুষ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে কর্মরত। তাঁরা রেমিট্যান্স যেমন পাঠাচ্ছেন সঙ্গে সঙ্গে চলে আসছে সেই সব দেশের সংস্কৃতি। বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে অন্য দেশের সংস্কৃতির প্রভাব পুরোপুরি এড়িয়ে যাওয়া হয়তো সম্ভব নয়। কিন্তু কতটুকু গ্রহণ করলে আমাদের সংস্কৃতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, সে ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন থাকা বাঞ্ছনীয়।
এ ক্ষেত্রে চিন্তার কথা হচ্ছে, অনেকটা বাধাহীনভাবেই বাঙালি সংস্কৃতিতে ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ ঘটছে। বাঙালি সংস্কৃতি বারবার রাজনীতি দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে—এ কথা সবারই জানা। রাজনৈতিক ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার স্বার্থে ধর্ম ও সংস্কৃতিকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়ে সৃষ্টি করা হয়েছে বিভেদ। ১৯৪৭ সালে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক বিবেচনায় কেবলমাত্র ধর্মের ভিত্তিতে দুটি দেশ তৈরির সিদ্ধান্ত সবকিছু এলোমেলো করে দেয়। বাঙালিরাও জোরেশোরে হিন্দু-মুসলিমে, অর্থাৎ ধর্মের পরিচয়ে ভাগ হতে থাকে। জাতীয় বা সংস্কৃতিগত পরিচয় ক্রমেই গৌণ হয়ে ওঠে। শাসকগোষ্ঠী কর্তৃক ধর্মে-ধর্মে বিদ্বেষ, হিংসা জিইয়ে রাখার কৌশল সংস্কৃতিকে দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
এপার বাংলা-ওপার বাংলা তৈরি হয়। এক বাংলায় বাঙালি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ, অন্য বাংলায় বাঙালি হিন্দু। ফলে যা ঘটল তা হচ্ছে দুটি প্রধান ধর্মমতকে ঘিরেই বাঙালি সংস্কৃতি আবর্তিত ও বিকশিত হতে থাকল। দুই দেশের শাসকগোষ্ঠীই এটিতে বাধা না দিয়ে বরং তা অগ্রসর করতে নানা কায়দাকানুন জারি রাখল। রাষ্ট্রের সঙ্গে ধর্মকে মিলিয়ে-মিশিয়ে জাতিগত পরিচয়কে ক্ষতিগ্রস্ত করা হলো। এখন পর্যন্ত শাসকশ্রেণির প্রত্যক্ষ-অপ্রত্যক্ষ মদদে দুই দেশেই ধর্মীয় উন্মাদনা বেড়ে চলেছে। মানুষ যত ধর্মের নেশায় ডুবে থাকে, ততই শাসকদের সুবিধা। এই রাজনৈতিক সুবিধাবাদীদের আশকারায় জাতীয় সংস্কৃতি ক্রমেই পথ হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ছে। গত দুই দশকে বাঙালি দুই ধর্মের মানুষের মধ্যে কি পোশাকে, কি ভাষা ব্যবহারে এমনকি খাদ্যাভ্যাসেও ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। হিন্দুধর্মাবলম্বীদের মধ্যে ছোঁয়াছুঁয়ির বাতিক ক্রমেই বিস্তার লাভ করছে। ধর্মীয় পোশাক ও সাজসজ্জায় নিজের ধর্মীয় পরিচয়কেই প্রধান হিসেবে বাইরে প্রদর্শন করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন অনেকে। অন্যদিকে মুসলিম ধর্মাবলম্বী
নারী-পুরুষের পোশাক ও ভাষা প্রক্ষেপণে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে।
ধর্মীয় সম্প্রদায়নির্বিশেষে বহু বাঙালি নিজের সংস্কৃতি ছেড়ে এখন অন্য সংস্কৃতি ভালোবাসতে শুরু করেছে, নিজস্ব সংস্কৃতিকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে এমনকি জাতীয় সংস্কৃতির বিরুদ্ধে ‘অবরোধ’ পর্যন্ত ঘোষণা করছে। তারা বাঙালি সংস্কৃতিকে ধর্মীয় মোড়কে নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করছে। কিছু ধর্মব্যবসায়ীর বিভাজন মানসিকতার কারণে মানুষে মানুষে সৃষ্টি হচ্ছে বিভেদ, হিংসা, হানাহানি। আবার আধুনিকতার নামে উন্মাদনার যে সংস্কৃতি প্রচার করা হয়, তার ক্ষতিকর প্রভাবও কম নয়। দুই-ই জাতীয় সংস্কৃতি টিকে থাকার ক্ষেত্রে হুমকিস্বরূপ। একই জল-হাওয়ায় বড় হওয়া সত্ত্বেও শুধু ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে একে অপরকে সহ্য পর্যন্ত করতে না পারার যে সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে, এর ফলাফল যে ভয়াবহ, তার প্রমাণ মিলছে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ, লালন সাঁইজির ভক্তদের ওপর হামলা, শাহ্ আবদুল করিমের স্মৃতিচিহ্ন মুছে ফেলার চেষ্টাসহ নানা অপকর্মের মধ্য দিয়ে। বাংলা ভূখণ্ডে একটি গোষ্ঠী বরাবরই জাতীয় সংস্কৃতিকে অবজ্ঞা করে তাদের গোষ্ঠীগত স্বার্থ হাসিল করতে চেয়েছে। স্বার্থবাদীরা নিষিদ্ধ সংস্কৃতি বলে সমাজে যা প্রচার করে, তা আসলে শিল্পকলা, সংস্কৃতির একটা অংশমাত্র। এর বাইরে সংস্কৃতির বিশাল জগৎ রয়েছে। সেই জগৎকে তারা কেবল আড়ালই করে না, তাকে বিনষ্টও করতে চায়।
আজ আর বলতে বাধা নেই অনেক সৃজনশীল সাংস্কৃতিক বিদ্যালয় এখন (নাচ-গান-আবৃত্তি-ছবি আঁকা) শিক্ষার্থী সংকটে ভুগছে। বাবা-মায়েরা তাঁদের সন্তানদের নাচ-গান-নাটক-থিয়েটার শেখাতে আগ্রহী নন। পাড়ার লাইব্রেরিতে শিশু-কিশোরেরা পড়তে যায় না। বিদ্যালয়গুলো তাদের পাঠাগারগুলো শিশু-কিশোরবান্ধব করে তোলার ক্ষেত্রে মনোযোগী নয়। এর কোনোটিই সংস্কৃতি বিকাশের জন্য শুভ খবর নয়। সৃষ্টিশীল সংস্কৃতি বিমুখতা মানুষকে গণ্ডিবদ্ধ করে ফেলে। সুকুমার বৃত্তিকে গলা টিপে ধরে। তার ছাপ ক্রমেই প্রকাশিত হতে শুরু করেছে। সংস্কৃতিচর্চার অভাবে আমাদের শিশু-কিশোরেরা একাকিত্ব আর হতাশায় ভুগছে, জড়িয়ে পড়ছে নানা সামাজিক অপরাধে। শিশুকাল থেকে চলন-বলন-পোশাক সবই নির্দিষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে। অর্থ উপার্জন এবং পরকালের ভীতি নিয়ে বড় হচ্ছে এই প্রজন্মের অধিকাংশ শিশু।
সংস্কৃতিচর্চা মানবিক মানুষ হতে শেখায়, মানুষে-মানুষে মমত্ববোধ গড়ে তোলে, মানুষের সঙ্গে প্রকৃতির নিবিড় সম্পর্ক তৈরি করে। শিশু-কিশোরদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়ায়, মন্দ চিন্তা থেকে দূরে রাখে, সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটায়। দেশের প্রতি, সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ করে তোলে সংস্কৃতি। কাজেই নিজস্ব সংস্কৃতিকে এড়িয়ে বা পাশ কাটিয়ে সুস্থ সমাজ বা জাতি গঠন যেমন সম্ভব নয়, তেমনি জাতীয় সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখাও কঠিন। বাঙালি জাতিগত সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখতেই ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছিল, মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল। প্রাণ-প্রাচুর্যে ভরা হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতি বাঙালি জাতির সম্পদ। একে রক্ষা করা ও প্রগতির পথে অগ্রসর করে নিয়ে যাওয়া আমাদের দায়।
আজকের প্রজন্ম ও সচেতন মানুষেরাও বোধকরি সে দায় এড়িয়ে যেতে পারেন না। এই দায়িত্ব বোধ থেকেই আগামীর জন্য, আমাদের সন্তানদের স্বার্থে বাঙালি সভ্যতা-সংস্কৃতিচর্চা ও একে টিকিয়ে রাখতে মনোযোগী হওয়া বিশেষ প্রয়োজন।
লেখক: সুতপা বেদজ্ঞ, কলামিস্ট ও সমাজকর্মী

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

সংস্কৃতিচর্চা মানবিক মানুষ হতে শেখায়, মানুষে-মানুষে মমত্ববোধ গড়ে তোলে, মানুষের সঙ্গে প্রকৃতির নিবিড় সম্পর্ক তৈরি করে। শিশু-কিশোরদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়ায়, মন্দ চিন্তা থেকে দূরে রাখে, সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটায়। দেশের প্রতি, সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ করে তোলে সংস্কৃতি।
০৮ ডিসেম্বর ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

সংস্কৃতিচর্চা মানবিক মানুষ হতে শেখায়, মানুষে-মানুষে মমত্ববোধ গড়ে তোলে, মানুষের সঙ্গে প্রকৃতির নিবিড় সম্পর্ক তৈরি করে। শিশু-কিশোরদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়ায়, মন্দ চিন্তা থেকে দূরে রাখে, সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটায়। দেশের প্রতি, সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ করে তোলে সংস্কৃতি।
০৮ ডিসেম্বর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

সংস্কৃতিচর্চা মানবিক মানুষ হতে শেখায়, মানুষে-মানুষে মমত্ববোধ গড়ে তোলে, মানুষের সঙ্গে প্রকৃতির নিবিড় সম্পর্ক তৈরি করে। শিশু-কিশোরদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়ায়, মন্দ চিন্তা থেকে দূরে রাখে, সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটায়। দেশের প্রতি, সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ করে তোলে সংস্কৃতি।
০৮ ডিসেম্বর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

সংস্কৃতিচর্চা মানবিক মানুষ হতে শেখায়, মানুষে-মানুষে মমত্ববোধ গড়ে তোলে, মানুষের সঙ্গে প্রকৃতির নিবিড় সম্পর্ক তৈরি করে। শিশু-কিশোরদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়ায়, মন্দ চিন্তা থেকে দূরে রাখে, সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটায়। দেশের প্রতি, সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ করে তোলে সংস্কৃতি।
০৮ ডিসেম্বর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫