
আপনাকে অভিনন্দন নির্বাচন কমিশন সংস্কারের দায়িত্ব পাওয়ার জন্য। দায়িত্ব পাওয়ার পর কী কী সংস্কারের কথা ভাবছেন?
প্রথমত, আমাকে যে নতুন দায়িত্ব দেওয়া হলো সে জন্য আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। একই সঙ্গে এ দায়িত্ব পেয়ে আমি সম্মানিত বোধ করছি। এ দায়িত্ব দেওয়ার মাধ্যমে আমার কাজের প্রতি আস্থা প্রকাশ করা হয়েছে। এত দিন ধরে আমি যে কাজটি করেছি, সেটা অনেক ব্যক্তির অবদানের ফসল।
নির্বাচনীব্যবস্থার সংস্কারের জন্য অনেক বিষয় জড়িত। প্রথম কাজ হলো, নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। সেটার জন্য ২০২২ সালে প্রধান নির্বাচন কমিশন এবং অন্যান্য কমিশন নিয়োগের একটা আইন করা হয়েছিল। কিন্তু এটা সন্তোষজনক আইন নয় এবং এটা ভয়ানকভাবে ত্রুটিপূর্ণ। এ আইনের মাধ্যমে যেকোনো ব্যক্তিকেই নিয়োগ দেওয়া যাবে। যেটা অতীতে করা হয়েছে। আর এ আইনটা একটা পাতানো নির্বাচন কমিশন গঠনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এ জন্য এই নিয়োগ আইনটা আগে সংস্কার বা পরিবর্তন করতে হবে, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য।
দ্বিতীয় বিষয় হলো, প্রচলিত যে হলফনামা আছে সেটাকে যুগোপযোগী করতে হবে। এখন যেটা আছে, সেটা মান্ধাতার আমলের। প্রথমে যেটা করা হয়েছিল সেটা পরিবর্তন করা হয়নি। তাই হলফনামার পরিবর্তন ও পরিমার্জন দরকার।
তৃতীয় হলো, আরপিও বা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশেরও কিছু পরিবর্তন করা দরকার। এ আইনটা মোটামুটি গ্রহণযোগ্য বলা যেতে পারে। যেমন এ বিধানে অঙ্গ বা সহযোগী সংগঠন সম্পর্কে বিধান আছে, কিন্তু লেজুড়বৃত্তি সংগঠনের কার্যক্রম অব্যাহত আছে। আরপিও আইন অনুযায়ী, কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের অঙ্গ বা সহযোগী সংগঠন থাকতে পারবে না। এসব কিন্তু এখনো সক্রিয়। আক্ষরিক অর্থে আইন মানা হলেও এর উদ্দেশ্যকে মানা হচ্ছে না।
এর বাইরে আরও কিছু বিষয় আছে। যেমন মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে ২০০৭ সালে যে আইন করা হয়েছিল, সেখানে বলা হয়েছিল স্থানীয় নেতা-কর্মীরা একটা প্যানেল তৈরি করে প্রার্থী মনোনয়ন দেবেন। কিন্তু আইন পরিবর্তন করে করা হয়েছে, প্যানেল বিবেচনা করে মনোনয়ন দেবে। এতে করে ইচ্ছেমতো মনোনয়ন দেওয়া শুরু হলো। এ জন্য নির্বাচনে ব্যবসায়ীরা আসতে পেরেছেন এবং টাকার খেলা শুরু হয়েছে। এটা হলো আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ভেঙে যাওয়ার অন্যতম কারণ। এ আইন পরিবর্তন করে নিশ্চিত করা দরকার যে প্যানেলের মাধ্যমে প্রার্থী মনোনীত করতে হবে।
আবার সংরক্ষিত নারী প্রার্থীদের ক্ষেত্রে হলফনামা নেই। সেটাও বাধ্যতামূলক করতে হবে। একই সঙ্গে বিরুদ্ধ হলফনামাও থাকতে হবে। কোনো প্রার্থী যে হলফনামা দেবেন, তিনি যদি ভুল তথ্য দেন, সেটা যেন কেউ চ্যালেঞ্জ করতে পারে। আর হলফনামার যাচাই-বাছাই বাধ্যতামূলক করা দরকার।
শুধু নির্বাচন কমিশন আইন সংস্কার করলেই কি ভালো নির্বাচন নিশ্চিত করা যাবে?
সম্ভব না। নির্বাচন কমিশন রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। ভালো নির্বাচন করা তার অন্যতম দায়িত্ব। কিন্তু নির্বাচন কমিশন এককভাবে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারবে না। কারণ নির্বাচনে অনেক অংশীজন থাকে। যেমন রাজনৈতিক দল, প্রার্থী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন, গণমাধ্যম, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিসহ সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফলে একটা ভালো নির্বাচন হয়। কিন্তু তারা যদি তাদের দায়িত্ব পালন না করে, তাহলে সম্ভব না। রাজনৈতিক দলগুলো যদি তাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তন না করে, তাহলে শুধু নির্বাচন কমিশনের একার পক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব না।
নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন করতে না পারলেও খারাপ নির্বাচন বন্ধ করতে পারে। যে নির্বাচন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে কার্যকর করতে পারে না, সেটা করলে সংবিধানকে লঙ্ঘন করা হবে। কারণ মৌলিক কাঠামোর মধ্যে একটা হলো গণতন্ত্র। সেটা হয় সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে। যে নির্বাচনে জনগণের ম্যান্ডেট প্রতিফলিত হবে না, সেটা তারা বন্ধ করতে পারে। কিন্তু সদ্যবিদায়ী এবং আগের নির্বাচন কমিশন সেটা বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছিল। তারা স্পষ্টতই সংবিধান লঙ্ঘন করেছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেনি। দলীয় লেজুড়ের ভূমিকা পালন করেছিল। কিন্তু তারা স্বাধীনভাবে কীভাবে কাজ করতে পারে?
প্রথমত, সঠিক ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে হবে। এবং সঠিক ব্যক্তিদের সৎ ও মেরুদণ্ডসম্পন্ন হতে হবে। তাঁরা যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে না পারেন, তাহলে দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে—এ রকম মেরুদণ্ডসম্পন্ন ব্যক্তি হতে হবে। কোনো অন্যায়ের কাছে মাথা নত করবে না। সে রকম নির্লোভ ব্যক্তি না হয়ে যদি দলবাজ ও মেরুদণ্ডহীন হয়, তাহলে আগের পরিস্থিতিই বিরাজমান থাকবে। এ জন্য আইনি কাঠামো ঠিক করে সঠিক ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে হবে। পাশাপাশি নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত অংশীজনদেরও সঠিক ভূমিকা পালন করতে হবে। তারা যেন কোনোভাবেই দলীয় পক্ষপাতিত্বের আচরণ করতে না পারে।
দেশে ক্রমাগত মব জাস্টিস বাড়ছে। এটা বন্ধ করতে করণীয় কী?
এটা বন্ধ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ভূমিকা পালন করতে হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলো, আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এমনভাবে দলীয় হয়ে গিয়েছিল যে তারা আর রাষ্ট্রীয় বাহিনী ছিল না। গত সরকারের পতনের পর পুরো সিস্টেমটাই ভেঙে পড়েছে। সে কারণে তারা এখন পর্যন্ত স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে তাদের দায়িত্ব পালন করছে না। একই সঙ্গে নাগরিকদেরও এসব জায়গায় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। যেমন আমরা বলতে পারি গত ৫ আগস্টের পর দেশে কোনো ধরনের পুলিশিব্যবস্থা সক্রিয় ছিল না। কিন্তু সাধারণ জনগণ এলাকায় দলবদ্ধ হয়ে পাহারা দিয়ে চুরি-ডাকাতি সামাল দিয়েছে। শিক্ষার্থীরা নিজেরাই ট্রাফিক সিস্টেম নিয়ন্ত্রণে দায়িত্ব পালন করেছে।
মাজারে হামলা এবং সংখ্যালঘুদের বাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও মন্দিরে হামলা অব্যাহত থাকলে নতুন বাংলাদেশ গড়া কীভাবে সম্ভব?
এসব অব্যাহত থাকলে আমরা কিছুই করতে পারব না। নিঃসন্দেহে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনায় কিছু বাড়াবাড়ি ছিল। যেটা আমাদের কাছে কাম্য নয়। আওয়ামী লীগের নেতারা বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হলে কয়েক লাখ লোক মারা যাবে। আওয়ামী লীগের পতন তো বিএনপির কারণে হয়নি এবং তারা ক্ষমতায়ও যেতে পারেনি। এ ঘটনাটা সারা দেশের বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতার
কারণে সম্ভবপর হয়েছে।
এখন কথা হলো, ক্ষমতা পরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগের নেতাদের আশঙ্কা তো ভুল প্রমাণিত হয়েছে। সেভাবে কিন্তু ক্ষতি হয়নি। কিন্তু আমার কথা হলো, যতটুকু আঘাত হয়েছে সংখ্যালঘুদের ওপর, সেটারও আমি নিন্দা জানাই। এ রকম ঘটনা কোনোভাবেই কাম্য নয়। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যেন না ঘটে তার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তৎপর থাকতে হবে। যেকোনোভাবেই হোক আইনশৃঙ্খলাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।
দখলদারি, চাঁদাবাজি এখনো অব্যাহত আছে। এসব বন্ধে অন্তর্বর্তী সরকার তো কিছু করছে না।
আমাদের দুর্ভাগ্য যে আমরা যদি রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তন না করতে পারি, তাহলে দখলদারি, চাঁদাবাজি বন্ধ করা সম্ভব হবে না। এসব বন্ধে অর্ন্তবর্তী সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সক্রিয় করার চেষ্টা করছে। শোনা যাচ্ছে, যেসব পুলিশ বাহিনীর সদস্য প্রথমে পালিয়ে গিয়ে পরে কাজে যুক্ত হয়েছেন, তাঁদের একটা অংশ এ সরকারের সফলতা চায় না। কারণ তাঁরা এখনো চরমভাবে দলীয়। এ কারণে পুলিশ বাহিনীতে এখনো স্বাভাবিকতা ফেরেনি। এ ঘটনাগুলো বিরাট চ্যালেঞ্জ।
আমাদের একটা কথা স্মরণে রাখতে হবে যে এ সরকার কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো না। তাদের কাজ রুটিন মাফিক না।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার কোনো নীতিনির্ধারণী কাজ করতে পারত না। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারকে নীতিনির্ধারণী ভূমিকাও পালন করতে হচ্ছে। যেখানে রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠান ভেঙে পড়েছে, সবকিছু জোড়া লাগিয়ে সংস্কার করতে হবে। সবকিছুকে নতুন করে বিন্যস্ত করা চারটিখানি কাজ নয়।
৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্রপতির কাছে শপথ নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, এটা কতটা সাংবিধানিক আর কতটা না?
এটা কোনো সমস্যা না। তাঁরা সংবিধান মেনেই শপথ গ্রহণ করেছেন। যেহেতু আমাদের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না, তিনি দেশ ত্যাগ করেছিলেন। তাই তাঁদের এভাবে শপথ নিতে হয়েছে। যেভাবে ক্ষমতার রদবদল হওয়ার কথা, সেটা সেভাবে হয়নি। সুপ্রিম কোর্টের একটা নির্দেশনা নিয়ে তাঁরা সরকার গঠন করেছেন। এটা সাংবিধানিকভাবে অসাংবিধানিক নয়।
একটা প্রশ্ন হলো, আমাদের ভবিষ্যতের জন্য সংবিধান নতুনভাবে লেখা বা পুনর্লিখন করা দরকার কি না, সেটা জাতি হিসেবে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আপনাকেও ধন্যবাদ।
আপনাকে অভিনন্দন নির্বাচন কমিশন সংস্কারের দায়িত্ব পাওয়ার জন্য। দায়িত্ব পাওয়ার পর কী কী সংস্কারের কথা ভাবছেন?
প্রথমত, আমাকে যে নতুন দায়িত্ব দেওয়া হলো সে জন্য আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। একই সঙ্গে এ দায়িত্ব পেয়ে আমি সম্মানিত বোধ করছি। এ দায়িত্ব দেওয়ার মাধ্যমে আমার কাজের প্রতি আস্থা প্রকাশ করা হয়েছে। এত দিন ধরে আমি যে কাজটি করেছি, সেটা অনেক ব্যক্তির অবদানের ফসল।
নির্বাচনীব্যবস্থার সংস্কারের জন্য অনেক বিষয় জড়িত। প্রথম কাজ হলো, নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। সেটার জন্য ২০২২ সালে প্রধান নির্বাচন কমিশন এবং অন্যান্য কমিশন নিয়োগের একটা আইন করা হয়েছিল। কিন্তু এটা সন্তোষজনক আইন নয় এবং এটা ভয়ানকভাবে ত্রুটিপূর্ণ। এ আইনের মাধ্যমে যেকোনো ব্যক্তিকেই নিয়োগ দেওয়া যাবে। যেটা অতীতে করা হয়েছে। আর এ আইনটা একটা পাতানো নির্বাচন কমিশন গঠনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এ জন্য এই নিয়োগ আইনটা আগে সংস্কার বা পরিবর্তন করতে হবে, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য।
দ্বিতীয় বিষয় হলো, প্রচলিত যে হলফনামা আছে সেটাকে যুগোপযোগী করতে হবে। এখন যেটা আছে, সেটা মান্ধাতার আমলের। প্রথমে যেটা করা হয়েছিল সেটা পরিবর্তন করা হয়নি। তাই হলফনামার পরিবর্তন ও পরিমার্জন দরকার।
তৃতীয় হলো, আরপিও বা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশেরও কিছু পরিবর্তন করা দরকার। এ আইনটা মোটামুটি গ্রহণযোগ্য বলা যেতে পারে। যেমন এ বিধানে অঙ্গ বা সহযোগী সংগঠন সম্পর্কে বিধান আছে, কিন্তু লেজুড়বৃত্তি সংগঠনের কার্যক্রম অব্যাহত আছে। আরপিও আইন অনুযায়ী, কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের অঙ্গ বা সহযোগী সংগঠন থাকতে পারবে না। এসব কিন্তু এখনো সক্রিয়। আক্ষরিক অর্থে আইন মানা হলেও এর উদ্দেশ্যকে মানা হচ্ছে না।
এর বাইরে আরও কিছু বিষয় আছে। যেমন মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে ২০০৭ সালে যে আইন করা হয়েছিল, সেখানে বলা হয়েছিল স্থানীয় নেতা-কর্মীরা একটা প্যানেল তৈরি করে প্রার্থী মনোনয়ন দেবেন। কিন্তু আইন পরিবর্তন করে করা হয়েছে, প্যানেল বিবেচনা করে মনোনয়ন দেবে। এতে করে ইচ্ছেমতো মনোনয়ন দেওয়া শুরু হলো। এ জন্য নির্বাচনে ব্যবসায়ীরা আসতে পেরেছেন এবং টাকার খেলা শুরু হয়েছে। এটা হলো আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ভেঙে যাওয়ার অন্যতম কারণ। এ আইন পরিবর্তন করে নিশ্চিত করা দরকার যে প্যানেলের মাধ্যমে প্রার্থী মনোনীত করতে হবে।
আবার সংরক্ষিত নারী প্রার্থীদের ক্ষেত্রে হলফনামা নেই। সেটাও বাধ্যতামূলক করতে হবে। একই সঙ্গে বিরুদ্ধ হলফনামাও থাকতে হবে। কোনো প্রার্থী যে হলফনামা দেবেন, তিনি যদি ভুল তথ্য দেন, সেটা যেন কেউ চ্যালেঞ্জ করতে পারে। আর হলফনামার যাচাই-বাছাই বাধ্যতামূলক করা দরকার।
শুধু নির্বাচন কমিশন আইন সংস্কার করলেই কি ভালো নির্বাচন নিশ্চিত করা যাবে?
সম্ভব না। নির্বাচন কমিশন রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। ভালো নির্বাচন করা তার অন্যতম দায়িত্ব। কিন্তু নির্বাচন কমিশন এককভাবে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারবে না। কারণ নির্বাচনে অনেক অংশীজন থাকে। যেমন রাজনৈতিক দল, প্রার্থী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন, গণমাধ্যম, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিসহ সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফলে একটা ভালো নির্বাচন হয়। কিন্তু তারা যদি তাদের দায়িত্ব পালন না করে, তাহলে সম্ভব না। রাজনৈতিক দলগুলো যদি তাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তন না করে, তাহলে শুধু নির্বাচন কমিশনের একার পক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব না।
নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন করতে না পারলেও খারাপ নির্বাচন বন্ধ করতে পারে। যে নির্বাচন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে কার্যকর করতে পারে না, সেটা করলে সংবিধানকে লঙ্ঘন করা হবে। কারণ মৌলিক কাঠামোর মধ্যে একটা হলো গণতন্ত্র। সেটা হয় সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে। যে নির্বাচনে জনগণের ম্যান্ডেট প্রতিফলিত হবে না, সেটা তারা বন্ধ করতে পারে। কিন্তু সদ্যবিদায়ী এবং আগের নির্বাচন কমিশন সেটা বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছিল। তারা স্পষ্টতই সংবিধান লঙ্ঘন করেছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেনি। দলীয় লেজুড়ের ভূমিকা পালন করেছিল। কিন্তু তারা স্বাধীনভাবে কীভাবে কাজ করতে পারে?
প্রথমত, সঠিক ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে হবে। এবং সঠিক ব্যক্তিদের সৎ ও মেরুদণ্ডসম্পন্ন হতে হবে। তাঁরা যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে না পারেন, তাহলে দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে—এ রকম মেরুদণ্ডসম্পন্ন ব্যক্তি হতে হবে। কোনো অন্যায়ের কাছে মাথা নত করবে না। সে রকম নির্লোভ ব্যক্তি না হয়ে যদি দলবাজ ও মেরুদণ্ডহীন হয়, তাহলে আগের পরিস্থিতিই বিরাজমান থাকবে। এ জন্য আইনি কাঠামো ঠিক করে সঠিক ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে হবে। পাশাপাশি নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত অংশীজনদেরও সঠিক ভূমিকা পালন করতে হবে। তারা যেন কোনোভাবেই দলীয় পক্ষপাতিত্বের আচরণ করতে না পারে।
দেশে ক্রমাগত মব জাস্টিস বাড়ছে। এটা বন্ধ করতে করণীয় কী?
এটা বন্ধ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ভূমিকা পালন করতে হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলো, আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এমনভাবে দলীয় হয়ে গিয়েছিল যে তারা আর রাষ্ট্রীয় বাহিনী ছিল না। গত সরকারের পতনের পর পুরো সিস্টেমটাই ভেঙে পড়েছে। সে কারণে তারা এখন পর্যন্ত স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে তাদের দায়িত্ব পালন করছে না। একই সঙ্গে নাগরিকদেরও এসব জায়গায় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। যেমন আমরা বলতে পারি গত ৫ আগস্টের পর দেশে কোনো ধরনের পুলিশিব্যবস্থা সক্রিয় ছিল না। কিন্তু সাধারণ জনগণ এলাকায় দলবদ্ধ হয়ে পাহারা দিয়ে চুরি-ডাকাতি সামাল দিয়েছে। শিক্ষার্থীরা নিজেরাই ট্রাফিক সিস্টেম নিয়ন্ত্রণে দায়িত্ব পালন করেছে।
মাজারে হামলা এবং সংখ্যালঘুদের বাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও মন্দিরে হামলা অব্যাহত থাকলে নতুন বাংলাদেশ গড়া কীভাবে সম্ভব?
এসব অব্যাহত থাকলে আমরা কিছুই করতে পারব না। নিঃসন্দেহে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনায় কিছু বাড়াবাড়ি ছিল। যেটা আমাদের কাছে কাম্য নয়। আওয়ামী লীগের নেতারা বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হলে কয়েক লাখ লোক মারা যাবে। আওয়ামী লীগের পতন তো বিএনপির কারণে হয়নি এবং তারা ক্ষমতায়ও যেতে পারেনি। এ ঘটনাটা সারা দেশের বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতার
কারণে সম্ভবপর হয়েছে।
এখন কথা হলো, ক্ষমতা পরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগের নেতাদের আশঙ্কা তো ভুল প্রমাণিত হয়েছে। সেভাবে কিন্তু ক্ষতি হয়নি। কিন্তু আমার কথা হলো, যতটুকু আঘাত হয়েছে সংখ্যালঘুদের ওপর, সেটারও আমি নিন্দা জানাই। এ রকম ঘটনা কোনোভাবেই কাম্য নয়। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যেন না ঘটে তার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তৎপর থাকতে হবে। যেকোনোভাবেই হোক আইনশৃঙ্খলাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।
দখলদারি, চাঁদাবাজি এখনো অব্যাহত আছে। এসব বন্ধে অন্তর্বর্তী সরকার তো কিছু করছে না।
আমাদের দুর্ভাগ্য যে আমরা যদি রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তন না করতে পারি, তাহলে দখলদারি, চাঁদাবাজি বন্ধ করা সম্ভব হবে না। এসব বন্ধে অর্ন্তবর্তী সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সক্রিয় করার চেষ্টা করছে। শোনা যাচ্ছে, যেসব পুলিশ বাহিনীর সদস্য প্রথমে পালিয়ে গিয়ে পরে কাজে যুক্ত হয়েছেন, তাঁদের একটা অংশ এ সরকারের সফলতা চায় না। কারণ তাঁরা এখনো চরমভাবে দলীয়। এ কারণে পুলিশ বাহিনীতে এখনো স্বাভাবিকতা ফেরেনি। এ ঘটনাগুলো বিরাট চ্যালেঞ্জ।
আমাদের একটা কথা স্মরণে রাখতে হবে যে এ সরকার কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো না। তাদের কাজ রুটিন মাফিক না।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার কোনো নীতিনির্ধারণী কাজ করতে পারত না। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারকে নীতিনির্ধারণী ভূমিকাও পালন করতে হচ্ছে। যেখানে রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠান ভেঙে পড়েছে, সবকিছু জোড়া লাগিয়ে সংস্কার করতে হবে। সবকিছুকে নতুন করে বিন্যস্ত করা চারটিখানি কাজ নয়।
৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্রপতির কাছে শপথ নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, এটা কতটা সাংবিধানিক আর কতটা না?
এটা কোনো সমস্যা না। তাঁরা সংবিধান মেনেই শপথ গ্রহণ করেছেন। যেহেতু আমাদের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না, তিনি দেশ ত্যাগ করেছিলেন। তাই তাঁদের এভাবে শপথ নিতে হয়েছে। যেভাবে ক্ষমতার রদবদল হওয়ার কথা, সেটা সেভাবে হয়নি। সুপ্রিম কোর্টের একটা নির্দেশনা নিয়ে তাঁরা সরকার গঠন করেছেন। এটা সাংবিধানিকভাবে অসাংবিধানিক নয়।
একটা প্রশ্ন হলো, আমাদের ভবিষ্যতের জন্য সংবিধান নতুনভাবে লেখা বা পুনর্লিখন করা দরকার কি না, সেটা জাতি হিসেবে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আপনাকেও ধন্যবাদ।

আপনাকে অভিনন্দন নির্বাচন কমিশন সংস্কারের দায়িত্ব পাওয়ার জন্য। দায়িত্ব পাওয়ার পর কী কী সংস্কারের কথা ভাবছেন?
প্রথমত, আমাকে যে নতুন দায়িত্ব দেওয়া হলো সে জন্য আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। একই সঙ্গে এ দায়িত্ব পেয়ে আমি সম্মানিত বোধ করছি। এ দায়িত্ব দেওয়ার মাধ্যমে আমার কাজের প্রতি আস্থা প্রকাশ করা হয়েছে। এত দিন ধরে আমি যে কাজটি করেছি, সেটা অনেক ব্যক্তির অবদানের ফসল।
নির্বাচনীব্যবস্থার সংস্কারের জন্য অনেক বিষয় জড়িত। প্রথম কাজ হলো, নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। সেটার জন্য ২০২২ সালে প্রধান নির্বাচন কমিশন এবং অন্যান্য কমিশন নিয়োগের একটা আইন করা হয়েছিল। কিন্তু এটা সন্তোষজনক আইন নয় এবং এটা ভয়ানকভাবে ত্রুটিপূর্ণ। এ আইনের মাধ্যমে যেকোনো ব্যক্তিকেই নিয়োগ দেওয়া যাবে। যেটা অতীতে করা হয়েছে। আর এ আইনটা একটা পাতানো নির্বাচন কমিশন গঠনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এ জন্য এই নিয়োগ আইনটা আগে সংস্কার বা পরিবর্তন করতে হবে, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য।
দ্বিতীয় বিষয় হলো, প্রচলিত যে হলফনামা আছে সেটাকে যুগোপযোগী করতে হবে। এখন যেটা আছে, সেটা মান্ধাতার আমলের। প্রথমে যেটা করা হয়েছিল সেটা পরিবর্তন করা হয়নি। তাই হলফনামার পরিবর্তন ও পরিমার্জন দরকার।
তৃতীয় হলো, আরপিও বা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশেরও কিছু পরিবর্তন করা দরকার। এ আইনটা মোটামুটি গ্রহণযোগ্য বলা যেতে পারে। যেমন এ বিধানে অঙ্গ বা সহযোগী সংগঠন সম্পর্কে বিধান আছে, কিন্তু লেজুড়বৃত্তি সংগঠনের কার্যক্রম অব্যাহত আছে। আরপিও আইন অনুযায়ী, কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের অঙ্গ বা সহযোগী সংগঠন থাকতে পারবে না। এসব কিন্তু এখনো সক্রিয়। আক্ষরিক অর্থে আইন মানা হলেও এর উদ্দেশ্যকে মানা হচ্ছে না।
এর বাইরে আরও কিছু বিষয় আছে। যেমন মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে ২০০৭ সালে যে আইন করা হয়েছিল, সেখানে বলা হয়েছিল স্থানীয় নেতা-কর্মীরা একটা প্যানেল তৈরি করে প্রার্থী মনোনয়ন দেবেন। কিন্তু আইন পরিবর্তন করে করা হয়েছে, প্যানেল বিবেচনা করে মনোনয়ন দেবে। এতে করে ইচ্ছেমতো মনোনয়ন দেওয়া শুরু হলো। এ জন্য নির্বাচনে ব্যবসায়ীরা আসতে পেরেছেন এবং টাকার খেলা শুরু হয়েছে। এটা হলো আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ভেঙে যাওয়ার অন্যতম কারণ। এ আইন পরিবর্তন করে নিশ্চিত করা দরকার যে প্যানেলের মাধ্যমে প্রার্থী মনোনীত করতে হবে।
আবার সংরক্ষিত নারী প্রার্থীদের ক্ষেত্রে হলফনামা নেই। সেটাও বাধ্যতামূলক করতে হবে। একই সঙ্গে বিরুদ্ধ হলফনামাও থাকতে হবে। কোনো প্রার্থী যে হলফনামা দেবেন, তিনি যদি ভুল তথ্য দেন, সেটা যেন কেউ চ্যালেঞ্জ করতে পারে। আর হলফনামার যাচাই-বাছাই বাধ্যতামূলক করা দরকার।
শুধু নির্বাচন কমিশন আইন সংস্কার করলেই কি ভালো নির্বাচন নিশ্চিত করা যাবে?
সম্ভব না। নির্বাচন কমিশন রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। ভালো নির্বাচন করা তার অন্যতম দায়িত্ব। কিন্তু নির্বাচন কমিশন এককভাবে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারবে না। কারণ নির্বাচনে অনেক অংশীজন থাকে। যেমন রাজনৈতিক দল, প্রার্থী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন, গণমাধ্যম, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিসহ সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফলে একটা ভালো নির্বাচন হয়। কিন্তু তারা যদি তাদের দায়িত্ব পালন না করে, তাহলে সম্ভব না। রাজনৈতিক দলগুলো যদি তাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তন না করে, তাহলে শুধু নির্বাচন কমিশনের একার পক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব না।
নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন করতে না পারলেও খারাপ নির্বাচন বন্ধ করতে পারে। যে নির্বাচন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে কার্যকর করতে পারে না, সেটা করলে সংবিধানকে লঙ্ঘন করা হবে। কারণ মৌলিক কাঠামোর মধ্যে একটা হলো গণতন্ত্র। সেটা হয় সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে। যে নির্বাচনে জনগণের ম্যান্ডেট প্রতিফলিত হবে না, সেটা তারা বন্ধ করতে পারে। কিন্তু সদ্যবিদায়ী এবং আগের নির্বাচন কমিশন সেটা বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছিল। তারা স্পষ্টতই সংবিধান লঙ্ঘন করেছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেনি। দলীয় লেজুড়ের ভূমিকা পালন করেছিল। কিন্তু তারা স্বাধীনভাবে কীভাবে কাজ করতে পারে?
প্রথমত, সঠিক ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে হবে। এবং সঠিক ব্যক্তিদের সৎ ও মেরুদণ্ডসম্পন্ন হতে হবে। তাঁরা যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে না পারেন, তাহলে দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে—এ রকম মেরুদণ্ডসম্পন্ন ব্যক্তি হতে হবে। কোনো অন্যায়ের কাছে মাথা নত করবে না। সে রকম নির্লোভ ব্যক্তি না হয়ে যদি দলবাজ ও মেরুদণ্ডহীন হয়, তাহলে আগের পরিস্থিতিই বিরাজমান থাকবে। এ জন্য আইনি কাঠামো ঠিক করে সঠিক ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে হবে। পাশাপাশি নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত অংশীজনদেরও সঠিক ভূমিকা পালন করতে হবে। তারা যেন কোনোভাবেই দলীয় পক্ষপাতিত্বের আচরণ করতে না পারে।
দেশে ক্রমাগত মব জাস্টিস বাড়ছে। এটা বন্ধ করতে করণীয় কী?
এটা বন্ধ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ভূমিকা পালন করতে হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলো, আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এমনভাবে দলীয় হয়ে গিয়েছিল যে তারা আর রাষ্ট্রীয় বাহিনী ছিল না। গত সরকারের পতনের পর পুরো সিস্টেমটাই ভেঙে পড়েছে। সে কারণে তারা এখন পর্যন্ত স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে তাদের দায়িত্ব পালন করছে না। একই সঙ্গে নাগরিকদেরও এসব জায়গায় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। যেমন আমরা বলতে পারি গত ৫ আগস্টের পর দেশে কোনো ধরনের পুলিশিব্যবস্থা সক্রিয় ছিল না। কিন্তু সাধারণ জনগণ এলাকায় দলবদ্ধ হয়ে পাহারা দিয়ে চুরি-ডাকাতি সামাল দিয়েছে। শিক্ষার্থীরা নিজেরাই ট্রাফিক সিস্টেম নিয়ন্ত্রণে দায়িত্ব পালন করেছে।
মাজারে হামলা এবং সংখ্যালঘুদের বাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও মন্দিরে হামলা অব্যাহত থাকলে নতুন বাংলাদেশ গড়া কীভাবে সম্ভব?
এসব অব্যাহত থাকলে আমরা কিছুই করতে পারব না। নিঃসন্দেহে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনায় কিছু বাড়াবাড়ি ছিল। যেটা আমাদের কাছে কাম্য নয়। আওয়ামী লীগের নেতারা বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হলে কয়েক লাখ লোক মারা যাবে। আওয়ামী লীগের পতন তো বিএনপির কারণে হয়নি এবং তারা ক্ষমতায়ও যেতে পারেনি। এ ঘটনাটা সারা দেশের বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতার
কারণে সম্ভবপর হয়েছে।
এখন কথা হলো, ক্ষমতা পরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগের নেতাদের আশঙ্কা তো ভুল প্রমাণিত হয়েছে। সেভাবে কিন্তু ক্ষতি হয়নি। কিন্তু আমার কথা হলো, যতটুকু আঘাত হয়েছে সংখ্যালঘুদের ওপর, সেটারও আমি নিন্দা জানাই। এ রকম ঘটনা কোনোভাবেই কাম্য নয়। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যেন না ঘটে তার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তৎপর থাকতে হবে। যেকোনোভাবেই হোক আইনশৃঙ্খলাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।
দখলদারি, চাঁদাবাজি এখনো অব্যাহত আছে। এসব বন্ধে অন্তর্বর্তী সরকার তো কিছু করছে না।
আমাদের দুর্ভাগ্য যে আমরা যদি রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তন না করতে পারি, তাহলে দখলদারি, চাঁদাবাজি বন্ধ করা সম্ভব হবে না। এসব বন্ধে অর্ন্তবর্তী সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সক্রিয় করার চেষ্টা করছে। শোনা যাচ্ছে, যেসব পুলিশ বাহিনীর সদস্য প্রথমে পালিয়ে গিয়ে পরে কাজে যুক্ত হয়েছেন, তাঁদের একটা অংশ এ সরকারের সফলতা চায় না। কারণ তাঁরা এখনো চরমভাবে দলীয়। এ কারণে পুলিশ বাহিনীতে এখনো স্বাভাবিকতা ফেরেনি। এ ঘটনাগুলো বিরাট চ্যালেঞ্জ।
আমাদের একটা কথা স্মরণে রাখতে হবে যে এ সরকার কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো না। তাদের কাজ রুটিন মাফিক না।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার কোনো নীতিনির্ধারণী কাজ করতে পারত না। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারকে নীতিনির্ধারণী ভূমিকাও পালন করতে হচ্ছে। যেখানে রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠান ভেঙে পড়েছে, সবকিছু জোড়া লাগিয়ে সংস্কার করতে হবে। সবকিছুকে নতুন করে বিন্যস্ত করা চারটিখানি কাজ নয়।
৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্রপতির কাছে শপথ নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, এটা কতটা সাংবিধানিক আর কতটা না?
এটা কোনো সমস্যা না। তাঁরা সংবিধান মেনেই শপথ গ্রহণ করেছেন। যেহেতু আমাদের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না, তিনি দেশ ত্যাগ করেছিলেন। তাই তাঁদের এভাবে শপথ নিতে হয়েছে। যেভাবে ক্ষমতার রদবদল হওয়ার কথা, সেটা সেভাবে হয়নি। সুপ্রিম কোর্টের একটা নির্দেশনা নিয়ে তাঁরা সরকার গঠন করেছেন। এটা সাংবিধানিকভাবে অসাংবিধানিক নয়।
একটা প্রশ্ন হলো, আমাদের ভবিষ্যতের জন্য সংবিধান নতুনভাবে লেখা বা পুনর্লিখন করা দরকার কি না, সেটা জাতি হিসেবে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আপনাকেও ধন্যবাদ।
আপনাকে অভিনন্দন নির্বাচন কমিশন সংস্কারের দায়িত্ব পাওয়ার জন্য। দায়িত্ব পাওয়ার পর কী কী সংস্কারের কথা ভাবছেন?
প্রথমত, আমাকে যে নতুন দায়িত্ব দেওয়া হলো সে জন্য আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। একই সঙ্গে এ দায়িত্ব পেয়ে আমি সম্মানিত বোধ করছি। এ দায়িত্ব দেওয়ার মাধ্যমে আমার কাজের প্রতি আস্থা প্রকাশ করা হয়েছে। এত দিন ধরে আমি যে কাজটি করেছি, সেটা অনেক ব্যক্তির অবদানের ফসল।
নির্বাচনীব্যবস্থার সংস্কারের জন্য অনেক বিষয় জড়িত। প্রথম কাজ হলো, নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। সেটার জন্য ২০২২ সালে প্রধান নির্বাচন কমিশন এবং অন্যান্য কমিশন নিয়োগের একটা আইন করা হয়েছিল। কিন্তু এটা সন্তোষজনক আইন নয় এবং এটা ভয়ানকভাবে ত্রুটিপূর্ণ। এ আইনের মাধ্যমে যেকোনো ব্যক্তিকেই নিয়োগ দেওয়া যাবে। যেটা অতীতে করা হয়েছে। আর এ আইনটা একটা পাতানো নির্বাচন কমিশন গঠনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এ জন্য এই নিয়োগ আইনটা আগে সংস্কার বা পরিবর্তন করতে হবে, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য।
দ্বিতীয় বিষয় হলো, প্রচলিত যে হলফনামা আছে সেটাকে যুগোপযোগী করতে হবে। এখন যেটা আছে, সেটা মান্ধাতার আমলের। প্রথমে যেটা করা হয়েছিল সেটা পরিবর্তন করা হয়নি। তাই হলফনামার পরিবর্তন ও পরিমার্জন দরকার।
তৃতীয় হলো, আরপিও বা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশেরও কিছু পরিবর্তন করা দরকার। এ আইনটা মোটামুটি গ্রহণযোগ্য বলা যেতে পারে। যেমন এ বিধানে অঙ্গ বা সহযোগী সংগঠন সম্পর্কে বিধান আছে, কিন্তু লেজুড়বৃত্তি সংগঠনের কার্যক্রম অব্যাহত আছে। আরপিও আইন অনুযায়ী, কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের অঙ্গ বা সহযোগী সংগঠন থাকতে পারবে না। এসব কিন্তু এখনো সক্রিয়। আক্ষরিক অর্থে আইন মানা হলেও এর উদ্দেশ্যকে মানা হচ্ছে না।
এর বাইরে আরও কিছু বিষয় আছে। যেমন মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে ২০০৭ সালে যে আইন করা হয়েছিল, সেখানে বলা হয়েছিল স্থানীয় নেতা-কর্মীরা একটা প্যানেল তৈরি করে প্রার্থী মনোনয়ন দেবেন। কিন্তু আইন পরিবর্তন করে করা হয়েছে, প্যানেল বিবেচনা করে মনোনয়ন দেবে। এতে করে ইচ্ছেমতো মনোনয়ন দেওয়া শুরু হলো। এ জন্য নির্বাচনে ব্যবসায়ীরা আসতে পেরেছেন এবং টাকার খেলা শুরু হয়েছে। এটা হলো আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ভেঙে যাওয়ার অন্যতম কারণ। এ আইন পরিবর্তন করে নিশ্চিত করা দরকার যে প্যানেলের মাধ্যমে প্রার্থী মনোনীত করতে হবে।
আবার সংরক্ষিত নারী প্রার্থীদের ক্ষেত্রে হলফনামা নেই। সেটাও বাধ্যতামূলক করতে হবে। একই সঙ্গে বিরুদ্ধ হলফনামাও থাকতে হবে। কোনো প্রার্থী যে হলফনামা দেবেন, তিনি যদি ভুল তথ্য দেন, সেটা যেন কেউ চ্যালেঞ্জ করতে পারে। আর হলফনামার যাচাই-বাছাই বাধ্যতামূলক করা দরকার।
শুধু নির্বাচন কমিশন আইন সংস্কার করলেই কি ভালো নির্বাচন নিশ্চিত করা যাবে?
সম্ভব না। নির্বাচন কমিশন রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। ভালো নির্বাচন করা তার অন্যতম দায়িত্ব। কিন্তু নির্বাচন কমিশন এককভাবে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারবে না। কারণ নির্বাচনে অনেক অংশীজন থাকে। যেমন রাজনৈতিক দল, প্রার্থী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন, গণমাধ্যম, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিসহ সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফলে একটা ভালো নির্বাচন হয়। কিন্তু তারা যদি তাদের দায়িত্ব পালন না করে, তাহলে সম্ভব না। রাজনৈতিক দলগুলো যদি তাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তন না করে, তাহলে শুধু নির্বাচন কমিশনের একার পক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব না।
নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন করতে না পারলেও খারাপ নির্বাচন বন্ধ করতে পারে। যে নির্বাচন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে কার্যকর করতে পারে না, সেটা করলে সংবিধানকে লঙ্ঘন করা হবে। কারণ মৌলিক কাঠামোর মধ্যে একটা হলো গণতন্ত্র। সেটা হয় সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে। যে নির্বাচনে জনগণের ম্যান্ডেট প্রতিফলিত হবে না, সেটা তারা বন্ধ করতে পারে। কিন্তু সদ্যবিদায়ী এবং আগের নির্বাচন কমিশন সেটা বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছিল। তারা স্পষ্টতই সংবিধান লঙ্ঘন করেছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেনি। দলীয় লেজুড়ের ভূমিকা পালন করেছিল। কিন্তু তারা স্বাধীনভাবে কীভাবে কাজ করতে পারে?
প্রথমত, সঠিক ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে হবে। এবং সঠিক ব্যক্তিদের সৎ ও মেরুদণ্ডসম্পন্ন হতে হবে। তাঁরা যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে না পারেন, তাহলে দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে—এ রকম মেরুদণ্ডসম্পন্ন ব্যক্তি হতে হবে। কোনো অন্যায়ের কাছে মাথা নত করবে না। সে রকম নির্লোভ ব্যক্তি না হয়ে যদি দলবাজ ও মেরুদণ্ডহীন হয়, তাহলে আগের পরিস্থিতিই বিরাজমান থাকবে। এ জন্য আইনি কাঠামো ঠিক করে সঠিক ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে হবে। পাশাপাশি নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত অংশীজনদেরও সঠিক ভূমিকা পালন করতে হবে। তারা যেন কোনোভাবেই দলীয় পক্ষপাতিত্বের আচরণ করতে না পারে।
দেশে ক্রমাগত মব জাস্টিস বাড়ছে। এটা বন্ধ করতে করণীয় কী?
এটা বন্ধ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ভূমিকা পালন করতে হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলো, আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এমনভাবে দলীয় হয়ে গিয়েছিল যে তারা আর রাষ্ট্রীয় বাহিনী ছিল না। গত সরকারের পতনের পর পুরো সিস্টেমটাই ভেঙে পড়েছে। সে কারণে তারা এখন পর্যন্ত স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে তাদের দায়িত্ব পালন করছে না। একই সঙ্গে নাগরিকদেরও এসব জায়গায় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। যেমন আমরা বলতে পারি গত ৫ আগস্টের পর দেশে কোনো ধরনের পুলিশিব্যবস্থা সক্রিয় ছিল না। কিন্তু সাধারণ জনগণ এলাকায় দলবদ্ধ হয়ে পাহারা দিয়ে চুরি-ডাকাতি সামাল দিয়েছে। শিক্ষার্থীরা নিজেরাই ট্রাফিক সিস্টেম নিয়ন্ত্রণে দায়িত্ব পালন করেছে।
মাজারে হামলা এবং সংখ্যালঘুদের বাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও মন্দিরে হামলা অব্যাহত থাকলে নতুন বাংলাদেশ গড়া কীভাবে সম্ভব?
এসব অব্যাহত থাকলে আমরা কিছুই করতে পারব না। নিঃসন্দেহে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনায় কিছু বাড়াবাড়ি ছিল। যেটা আমাদের কাছে কাম্য নয়। আওয়ামী লীগের নেতারা বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হলে কয়েক লাখ লোক মারা যাবে। আওয়ামী লীগের পতন তো বিএনপির কারণে হয়নি এবং তারা ক্ষমতায়ও যেতে পারেনি। এ ঘটনাটা সারা দেশের বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতার
কারণে সম্ভবপর হয়েছে।
এখন কথা হলো, ক্ষমতা পরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগের নেতাদের আশঙ্কা তো ভুল প্রমাণিত হয়েছে। সেভাবে কিন্তু ক্ষতি হয়নি। কিন্তু আমার কথা হলো, যতটুকু আঘাত হয়েছে সংখ্যালঘুদের ওপর, সেটারও আমি নিন্দা জানাই। এ রকম ঘটনা কোনোভাবেই কাম্য নয়। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যেন না ঘটে তার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তৎপর থাকতে হবে। যেকোনোভাবেই হোক আইনশৃঙ্খলাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।
দখলদারি, চাঁদাবাজি এখনো অব্যাহত আছে। এসব বন্ধে অন্তর্বর্তী সরকার তো কিছু করছে না।
আমাদের দুর্ভাগ্য যে আমরা যদি রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তন না করতে পারি, তাহলে দখলদারি, চাঁদাবাজি বন্ধ করা সম্ভব হবে না। এসব বন্ধে অর্ন্তবর্তী সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সক্রিয় করার চেষ্টা করছে। শোনা যাচ্ছে, যেসব পুলিশ বাহিনীর সদস্য প্রথমে পালিয়ে গিয়ে পরে কাজে যুক্ত হয়েছেন, তাঁদের একটা অংশ এ সরকারের সফলতা চায় না। কারণ তাঁরা এখনো চরমভাবে দলীয়। এ কারণে পুলিশ বাহিনীতে এখনো স্বাভাবিকতা ফেরেনি। এ ঘটনাগুলো বিরাট চ্যালেঞ্জ।
আমাদের একটা কথা স্মরণে রাখতে হবে যে এ সরকার কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো না। তাদের কাজ রুটিন মাফিক না।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার কোনো নীতিনির্ধারণী কাজ করতে পারত না। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারকে নীতিনির্ধারণী ভূমিকাও পালন করতে হচ্ছে। যেখানে রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠান ভেঙে পড়েছে, সবকিছু জোড়া লাগিয়ে সংস্কার করতে হবে। সবকিছুকে নতুন করে বিন্যস্ত করা চারটিখানি কাজ নয়।
৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্রপতির কাছে শপথ নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, এটা কতটা সাংবিধানিক আর কতটা না?
এটা কোনো সমস্যা না। তাঁরা সংবিধান মেনেই শপথ গ্রহণ করেছেন। যেহেতু আমাদের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না, তিনি দেশ ত্যাগ করেছিলেন। তাই তাঁদের এভাবে শপথ নিতে হয়েছে। যেভাবে ক্ষমতার রদবদল হওয়ার কথা, সেটা সেভাবে হয়নি। সুপ্রিম কোর্টের একটা নির্দেশনা নিয়ে তাঁরা সরকার গঠন করেছেন। এটা সাংবিধানিকভাবে অসাংবিধানিক নয়।
একটা প্রশ্ন হলো, আমাদের ভবিষ্যতের জন্য সংবিধান নতুনভাবে লেখা বা পুনর্লিখন করা দরকার কি না, সেটা জাতি হিসেবে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আপনাকেও ধন্যবাদ।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

প্রথমত, আমাকে যে নতুন দায়িত্ব দেওয়া হলো সে জন্য আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। একই সঙ্গে এ দায়িত্ব পেয়ে আমি সম্মানিত বোধ করছি। এ দায়িত্ব দেওয়ার মাধ্যমে আমার কাজের প্রতি আস্থা প্রকাশ করা হয়েছে। এত দিন ধরে আমি যে কাজটি করেছি, সেটা অনেক ব্যক্তির অবদানের ফসল।
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

প্রথমত, আমাকে যে নতুন দায়িত্ব দেওয়া হলো সে জন্য আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। একই সঙ্গে এ দায়িত্ব পেয়ে আমি সম্মানিত বোধ করছি। এ দায়িত্ব দেওয়ার মাধ্যমে আমার কাজের প্রতি আস্থা প্রকাশ করা হয়েছে। এত দিন ধরে আমি যে কাজটি করেছি, সেটা অনেক ব্যক্তির অবদানের ফসল।
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

প্রথমত, আমাকে যে নতুন দায়িত্ব দেওয়া হলো সে জন্য আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। একই সঙ্গে এ দায়িত্ব পেয়ে আমি সম্মানিত বোধ করছি। এ দায়িত্ব দেওয়ার মাধ্যমে আমার কাজের প্রতি আস্থা প্রকাশ করা হয়েছে। এত দিন ধরে আমি যে কাজটি করেছি, সেটা অনেক ব্যক্তির অবদানের ফসল।
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

প্রথমত, আমাকে যে নতুন দায়িত্ব দেওয়া হলো সে জন্য আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। একই সঙ্গে এ দায়িত্ব পেয়ে আমি সম্মানিত বোধ করছি। এ দায়িত্ব দেওয়ার মাধ্যমে আমার কাজের প্রতি আস্থা প্রকাশ করা হয়েছে। এত দিন ধরে আমি যে কাজটি করেছি, সেটা অনেক ব্যক্তির অবদানের ফসল।
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫