আবু তাহের খান

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মেসবাহ কামাল বছর চারেক আগে তাঁর এক বক্তব্যে উল্লেখ করেছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়টি ক্রমেই একটি উচ্চতর মাদ্রাসায় রূপ নিচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষায় ৮০ নম্বরই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের গড় থেকে নেওয়ার ভ্রান্ত পদ্ধতির উল্লেখ করে তিনি বলেন, মাদ্রাসাগুলো তাদের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার খাতা অত্যন্ত উদারভাবে মূল্যায়ন করে, যা সাধারণত শুরুই হয় ৯০ শতাংশ নম্বর দিয়ে, যেখানে ইংরেজির প্রায় কোনো সংশ্লিষ্টতাই নেই। অথচ সাধারণ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা অনেক পরিশ্রম করেও তার কাছাকাছি পর্যায়ের নম্বর পান না। ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অনেক নিম্ন মেধার মাদ্রাসাশিক্ষার্থী দাখিল ও আলিম পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়ার সুবাদে খুব সহজেই ভর্তি পরীক্ষায় টিকে যাচ্ছেন এবং
এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি ক্রমেই একটি উচ্চতর মাদ্রাসায় রূপ নিতে শুরু করেছে।
অধ্যাপক মেসবাহ কামালের এই উদ্বেগের সঙ্গে দেশের অনেক সচেতন মানুষেরও একাত্ম হওয়ার কথা। কারণ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে এ দেশের মানুষ বাংলাদেশ-সমাজের দর্পণ হিসেবেই গণ্য করে। সেখানে যা ঘটে এবং যা ঘটে না, এ উভয়ই বস্তুত এ দেশের রাষ্ট্র, রাজনীতি ও সমাজ কোন পথে ধাবিত হচ্ছে, তারই নির্দেশক।১৯৪৮-৭১ সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র আন্দোলনের যে ইতিহাস, তা বস্তুত বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামেরই ইতিহাস, যার সূচনা হয়েছিল ১৯৪৮ সালের ১৯ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে দেওয়া জিন্নাহর ভাষণের প্রতিবাদের মধ্য দিয়ে। একইভাবে ১৯৭১-পরবর্তী বাংলাদেশ কোন পথে এগিয়েছে, তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে তাকালেই অনেকটা স্পষ্ট হবে। এই মুহূর্তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যে ক্রমেই একটি মাদ্রাসা হয়ে উঠছে, এটি বস্তুত বাংলাদেশ সমাজেরই একটি ধর্মীয় মৌলবাদী সামাজিক শক্তির প্রাধান্যযুক্ত রাষ্ট্রে রূপান্তরিত হয়ে ওঠার প্রবণতারই সমান্তরাল ঘটনা।
নিম্ন মেধার মাদ্রাসাশিক্ষার্থীরা শুধু যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই আধিক্য গড়ে তুলছেন তা-ই নয়, একই অবস্থা ঘটছে শিক্ষাসংশ্লিষ্ট অন্যান্য নানা ক্ষেত্রেও। কওমি ও সাধারণ ধারার যেকোনো মাদ্রাসা থেকে ১৬ ও ১৭ বছরের শিক্ষাকাল অতিক্রম করলেই সেখানকার একজন শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সমমানের সনদ পেয়ে যাচ্ছেন। আর এরূপ একটি সনদ হাতে থাকলে তদবিরের জোরে চাকরি পেয়ে যাওয়া, বিশেষ করে সরকারি প্রতিষ্ঠানে, এখন খুবই মামুলি ব্যাপার এবং বাস্তবে তা এতটাই ঘটছে যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব দখলের মতো বিভিন্ন স্তরের চাকরিবাকরি ও সমাজের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানেও ক্রমান্বয়ে ওই মাদ্রাসা থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের অধিকারেই চলে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে রাষ্ট্র শুধু যে প্রশ্রয়ই দিচ্ছে তা-ই নয়, অবিরাম পৃষ্ঠপোষকতাও দিয়ে যাচ্ছে। কখনো হেফাজতের সঙ্গে আবার কখনো কওমি মাদ্রাসাপন্থীদের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন সেই পৃষ্ঠপোষকতারই প্রামাণ্য দলিল। আর এটা তো সহজেই বোধগম্য যে এ দেশের সংস্কৃতি অনুযায়ী, ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সম্পাদিত রাজনৈতিক চুক্তি শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তিরই সমতুল্য হয়ে দাঁড়ায়।
হেফাজত ও কওমি মাদ্রাসাপন্থীদের পরামর্শে শিক্ষার পাঠ্যক্রম বদলে ফেলাটাও বিজ্ঞান ও ইংরেজিবর্জিত মাদ্রাসাশিক্ষাকে এগিয়ে রাখারই একটি কৌশল মাত্র। আর বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা এ ধারায় এগোতে থাকলে মাদ্রাসা শিক্ষায়ই ক্রমান্বয়ে এ দেশে মূলধারার শিক্ষাব্যবস্থা হয়ে ওঠে কি না, সে ঝুঁকিও অনেকটা থেকে যায় বৈকি! এই বক্তব্যের বাস্তবতা উপলব্ধি করা যাবে শুধু ঢাকা শহরেই কতসংখ্যক অননুমোদিত প্রাথমিক মাদ্রাসা আছে, তার হিসাব নেওয়া গেলে। দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি, এ সংখ্যা শতক নয়, হাজারের কোঠায় হিসাব করতে হবে। তো, শুধু ঢাকা শহরেই যদি এ সংখ্যা কয়েক হাজার হয়, তাহলে সারা দেশে কত হতে পারে তা কি আমরা ভেবে দেখেছি? আর এ অবস্থা সম্পর্কে রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকেরা কি অবহিত আছেন? আর অবহিত থাকলে তাঁরা কি এ ব্যাপারে নিয়ন্ত্রণমূলক কোনো ব্যবস্থা নিয়েছেন, নাকি এ অবস্থা সৃষ্টিতে তাঁদের নীরব সমর্থন আছে বলেই বিষয়টিতে তাঁরা চুপ করে থাকছেন?
প্রশ্ন হচ্ছে, এ অবস্থাটি কীভাবে তৈরি হলো? এ নিয়ে আলোচনা করতে গেলে প্রথমেই উল্লেখ করতে হয় যে প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী, এ-জাতীয় মাদ্রাসা স্থাপনে কোনো সরকারি অনুমতি লাগে না। তাহলে প্রশ্ন, প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য যদি অনুমোদন লাগে, তাহলে প্রাথমিক মাদ্রাসার জন্য নয় কেন? এ প্রসঙ্গে বলা দরকার, প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী এগুলো স্থাপনে যেহেতু সরকারি অনুমতির প্রয়োজন নেই, সেহেতু এগুলো অননুমোদিত হলেও অবৈধ নয়।
আর এ ধরনের বৈধ অনিয়মের আওতাতেই দেশে মাদ্রাসাশিক্ষার প্রথম সোপানটি চতুর্দিকে শিকড় গেড়ে বসছে এবং সে ধারায় একসময় তা আফগানিস্তানের তালেবান সংস্কৃতির রূপ পরিগ্রহ করলে তাতেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। আর সে কাজটিই সম্ভবত অতি নীরবে এখন ঘটে চলেছে এবং এরাই হয়তো একসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যাগরিষ্ঠ শিক্ষার্থী হয়ে উঠবেন, যেমন করে আগামী ১৫-২০ বছরের মধ্যে উগ্র ধর্মীয় মৌলবাদী চিন্তায় দীক্ষিত রোহিঙ্গারা কক্সবাজার জেলায় সংখ্যাগরিষ্ঠ ‘বাংলাদেশি নাগরিক’ হয়ে উঠতে পারে।
অধ্যাপক মেসবাহ কামাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিম্ন মেধার মাদ্রাসাশিক্ষার্থীদের ভর্তি হওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু ২০ বছর পর এ ক্যাম্পাস যদি মাদ্রাসাশিক্ষার্থীদের পাশাপাশি মৌলবাদী ওরিয়েন্টেশনে গড়া রোহিঙ্গাদের ভিড়েও সরব হয়ে ওঠে, তাহলে সেটিকে বোধ হয় আজ নিম্ন মেধার মাদ্রাসাশিক্ষার্থীদের যেভাবে মেনে নিতে হচ্ছে, তেমনি করে অসহায় চোখে মেনে নিতে হবে। লক্ষণীয় হচ্ছে, রাষ্ট্রের যেসব নীতিনির্ধারক এসব ভ্রান্তিপূর্ণ নীতি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছেন, তাঁরা হয়তো তাঁদের কার্যকাল শেষে চলে যাবেন; কিন্তু এর চরম মূল্য ও খেসারত দিতে হবে এ দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তথা আগামী দিনের রাষ্ট্র ও সমাজ তথা পুরো জাতিকে। আর সে ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ভূমিকা ইতিহাসের অন্যতম নেতিবাচক অনুষঙ্গ হয়েই থাকবে বৈকি!
এটিও এখন প্রতিষ্ঠিত আলোচনা যে, বৃহৎ মাদ্রাসার মতোই সান্ধ্য কোর্সের সুবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইতিমধ্যে একটি বৃহৎ কোচিং সেন্টারে রূপান্তরিত হয়েছে, যেখানে নীল-সাদায় তেমন কোনো বিরোধ নেই। একইভাবে সুবিধার পাতে ভাগ বসানোর জন্য রাতারাতি যেমন একই রাজনৈতিক দলের ৭৩টি অঙ্গসংগঠন গড়ে ওঠে, তেমনি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও রাতারাতি গড়ে উঠেছে অপ্রয়োজনীয় সব বিভাগ ও ইনস্টিটিউট এবং খুব স্বাভাবিকভাবেই সেখানেও ওই মাদ্রাসা থেকে আসাদেরই ভিড়। ওই যে রাজনৈতিক পরিচয় মেনে শিক্ষক নিয়োগ, শোনা তো যায় যে সেখানেও শুভ্র ভূষণের ওপর নীল টিপ পরে ঢুকে যাচ্ছে মৌলবাদীরাই। তাহলে কোন পথে এগোচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, নাকি কেবলই পেছাচ্ছে?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা, ১৯৭৩-এর স্বায়ত্তশাসন অধ্যাদেশের সুযোগ নিয়ে আপনারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সদস্য হচ্ছেন। একই সুযোগকে ব্যবহার করে আপনারা কেন এ সিদ্ধান্তটুকু নিতে পারছেন না যে, এ দেশের শ্রেষ্ঠ-মেধাবী সন্তানদের এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী হিসেবে আকৃষ্ট করার জন্য বাইরের যেকোনো নির্দেশ ও পরামর্শকে উপেক্ষা করে সর্বোত্তম ভর্তি ও নিয়োগ ব্যবস্থাটি এখানে গড়ে তুলবেন? এ দেশের প্রায় নিরক্ষর কৃষক খরা, বন্যা, ভূমির মালিকানাহীনতা ও নানাবিধ প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে গত পঞ্চাশ বছরে দেশের খাদ্যোৎপাদনকে প্রায় সাড়ে ৪ গুণ বাড়িয়েছেন। আর আপনারা এত শিক্ষা-দীক্ষা ও রাষ্ট্রের নানা আনুকূল্য নিয়েও এ বিশ্ববিদ্যালয়টিকে গত পঞ্চাশ বছরের আগের অবস্থার চেয়েও পিছিয়ে দিলেন?
লেখক: সাবেক পরিচালক, বিসিক, শিল্প মন্ত্রণালয়

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মেসবাহ কামাল বছর চারেক আগে তাঁর এক বক্তব্যে উল্লেখ করেছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়টি ক্রমেই একটি উচ্চতর মাদ্রাসায় রূপ নিচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষায় ৮০ নম্বরই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের গড় থেকে নেওয়ার ভ্রান্ত পদ্ধতির উল্লেখ করে তিনি বলেন, মাদ্রাসাগুলো তাদের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার খাতা অত্যন্ত উদারভাবে মূল্যায়ন করে, যা সাধারণত শুরুই হয় ৯০ শতাংশ নম্বর দিয়ে, যেখানে ইংরেজির প্রায় কোনো সংশ্লিষ্টতাই নেই। অথচ সাধারণ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা অনেক পরিশ্রম করেও তার কাছাকাছি পর্যায়ের নম্বর পান না। ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অনেক নিম্ন মেধার মাদ্রাসাশিক্ষার্থী দাখিল ও আলিম পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়ার সুবাদে খুব সহজেই ভর্তি পরীক্ষায় টিকে যাচ্ছেন এবং
এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি ক্রমেই একটি উচ্চতর মাদ্রাসায় রূপ নিতে শুরু করেছে।
অধ্যাপক মেসবাহ কামালের এই উদ্বেগের সঙ্গে দেশের অনেক সচেতন মানুষেরও একাত্ম হওয়ার কথা। কারণ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে এ দেশের মানুষ বাংলাদেশ-সমাজের দর্পণ হিসেবেই গণ্য করে। সেখানে যা ঘটে এবং যা ঘটে না, এ উভয়ই বস্তুত এ দেশের রাষ্ট্র, রাজনীতি ও সমাজ কোন পথে ধাবিত হচ্ছে, তারই নির্দেশক।১৯৪৮-৭১ সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র আন্দোলনের যে ইতিহাস, তা বস্তুত বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামেরই ইতিহাস, যার সূচনা হয়েছিল ১৯৪৮ সালের ১৯ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে দেওয়া জিন্নাহর ভাষণের প্রতিবাদের মধ্য দিয়ে। একইভাবে ১৯৭১-পরবর্তী বাংলাদেশ কোন পথে এগিয়েছে, তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে তাকালেই অনেকটা স্পষ্ট হবে। এই মুহূর্তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যে ক্রমেই একটি মাদ্রাসা হয়ে উঠছে, এটি বস্তুত বাংলাদেশ সমাজেরই একটি ধর্মীয় মৌলবাদী সামাজিক শক্তির প্রাধান্যযুক্ত রাষ্ট্রে রূপান্তরিত হয়ে ওঠার প্রবণতারই সমান্তরাল ঘটনা।
নিম্ন মেধার মাদ্রাসাশিক্ষার্থীরা শুধু যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই আধিক্য গড়ে তুলছেন তা-ই নয়, একই অবস্থা ঘটছে শিক্ষাসংশ্লিষ্ট অন্যান্য নানা ক্ষেত্রেও। কওমি ও সাধারণ ধারার যেকোনো মাদ্রাসা থেকে ১৬ ও ১৭ বছরের শিক্ষাকাল অতিক্রম করলেই সেখানকার একজন শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সমমানের সনদ পেয়ে যাচ্ছেন। আর এরূপ একটি সনদ হাতে থাকলে তদবিরের জোরে চাকরি পেয়ে যাওয়া, বিশেষ করে সরকারি প্রতিষ্ঠানে, এখন খুবই মামুলি ব্যাপার এবং বাস্তবে তা এতটাই ঘটছে যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব দখলের মতো বিভিন্ন স্তরের চাকরিবাকরি ও সমাজের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানেও ক্রমান্বয়ে ওই মাদ্রাসা থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের অধিকারেই চলে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে রাষ্ট্র শুধু যে প্রশ্রয়ই দিচ্ছে তা-ই নয়, অবিরাম পৃষ্ঠপোষকতাও দিয়ে যাচ্ছে। কখনো হেফাজতের সঙ্গে আবার কখনো কওমি মাদ্রাসাপন্থীদের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন সেই পৃষ্ঠপোষকতারই প্রামাণ্য দলিল। আর এটা তো সহজেই বোধগম্য যে এ দেশের সংস্কৃতি অনুযায়ী, ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সম্পাদিত রাজনৈতিক চুক্তি শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তিরই সমতুল্য হয়ে দাঁড়ায়।
হেফাজত ও কওমি মাদ্রাসাপন্থীদের পরামর্শে শিক্ষার পাঠ্যক্রম বদলে ফেলাটাও বিজ্ঞান ও ইংরেজিবর্জিত মাদ্রাসাশিক্ষাকে এগিয়ে রাখারই একটি কৌশল মাত্র। আর বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা এ ধারায় এগোতে থাকলে মাদ্রাসা শিক্ষায়ই ক্রমান্বয়ে এ দেশে মূলধারার শিক্ষাব্যবস্থা হয়ে ওঠে কি না, সে ঝুঁকিও অনেকটা থেকে যায় বৈকি! এই বক্তব্যের বাস্তবতা উপলব্ধি করা যাবে শুধু ঢাকা শহরেই কতসংখ্যক অননুমোদিত প্রাথমিক মাদ্রাসা আছে, তার হিসাব নেওয়া গেলে। দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি, এ সংখ্যা শতক নয়, হাজারের কোঠায় হিসাব করতে হবে। তো, শুধু ঢাকা শহরেই যদি এ সংখ্যা কয়েক হাজার হয়, তাহলে সারা দেশে কত হতে পারে তা কি আমরা ভেবে দেখেছি? আর এ অবস্থা সম্পর্কে রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকেরা কি অবহিত আছেন? আর অবহিত থাকলে তাঁরা কি এ ব্যাপারে নিয়ন্ত্রণমূলক কোনো ব্যবস্থা নিয়েছেন, নাকি এ অবস্থা সৃষ্টিতে তাঁদের নীরব সমর্থন আছে বলেই বিষয়টিতে তাঁরা চুপ করে থাকছেন?
প্রশ্ন হচ্ছে, এ অবস্থাটি কীভাবে তৈরি হলো? এ নিয়ে আলোচনা করতে গেলে প্রথমেই উল্লেখ করতে হয় যে প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী, এ-জাতীয় মাদ্রাসা স্থাপনে কোনো সরকারি অনুমতি লাগে না। তাহলে প্রশ্ন, প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য যদি অনুমোদন লাগে, তাহলে প্রাথমিক মাদ্রাসার জন্য নয় কেন? এ প্রসঙ্গে বলা দরকার, প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী এগুলো স্থাপনে যেহেতু সরকারি অনুমতির প্রয়োজন নেই, সেহেতু এগুলো অননুমোদিত হলেও অবৈধ নয়।
আর এ ধরনের বৈধ অনিয়মের আওতাতেই দেশে মাদ্রাসাশিক্ষার প্রথম সোপানটি চতুর্দিকে শিকড় গেড়ে বসছে এবং সে ধারায় একসময় তা আফগানিস্তানের তালেবান সংস্কৃতির রূপ পরিগ্রহ করলে তাতেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। আর সে কাজটিই সম্ভবত অতি নীরবে এখন ঘটে চলেছে এবং এরাই হয়তো একসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যাগরিষ্ঠ শিক্ষার্থী হয়ে উঠবেন, যেমন করে আগামী ১৫-২০ বছরের মধ্যে উগ্র ধর্মীয় মৌলবাদী চিন্তায় দীক্ষিত রোহিঙ্গারা কক্সবাজার জেলায় সংখ্যাগরিষ্ঠ ‘বাংলাদেশি নাগরিক’ হয়ে উঠতে পারে।
অধ্যাপক মেসবাহ কামাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিম্ন মেধার মাদ্রাসাশিক্ষার্থীদের ভর্তি হওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু ২০ বছর পর এ ক্যাম্পাস যদি মাদ্রাসাশিক্ষার্থীদের পাশাপাশি মৌলবাদী ওরিয়েন্টেশনে গড়া রোহিঙ্গাদের ভিড়েও সরব হয়ে ওঠে, তাহলে সেটিকে বোধ হয় আজ নিম্ন মেধার মাদ্রাসাশিক্ষার্থীদের যেভাবে মেনে নিতে হচ্ছে, তেমনি করে অসহায় চোখে মেনে নিতে হবে। লক্ষণীয় হচ্ছে, রাষ্ট্রের যেসব নীতিনির্ধারক এসব ভ্রান্তিপূর্ণ নীতি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছেন, তাঁরা হয়তো তাঁদের কার্যকাল শেষে চলে যাবেন; কিন্তু এর চরম মূল্য ও খেসারত দিতে হবে এ দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তথা আগামী দিনের রাষ্ট্র ও সমাজ তথা পুরো জাতিকে। আর সে ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ভূমিকা ইতিহাসের অন্যতম নেতিবাচক অনুষঙ্গ হয়েই থাকবে বৈকি!
এটিও এখন প্রতিষ্ঠিত আলোচনা যে, বৃহৎ মাদ্রাসার মতোই সান্ধ্য কোর্সের সুবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইতিমধ্যে একটি বৃহৎ কোচিং সেন্টারে রূপান্তরিত হয়েছে, যেখানে নীল-সাদায় তেমন কোনো বিরোধ নেই। একইভাবে সুবিধার পাতে ভাগ বসানোর জন্য রাতারাতি যেমন একই রাজনৈতিক দলের ৭৩টি অঙ্গসংগঠন গড়ে ওঠে, তেমনি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও রাতারাতি গড়ে উঠেছে অপ্রয়োজনীয় সব বিভাগ ও ইনস্টিটিউট এবং খুব স্বাভাবিকভাবেই সেখানেও ওই মাদ্রাসা থেকে আসাদেরই ভিড়। ওই যে রাজনৈতিক পরিচয় মেনে শিক্ষক নিয়োগ, শোনা তো যায় যে সেখানেও শুভ্র ভূষণের ওপর নীল টিপ পরে ঢুকে যাচ্ছে মৌলবাদীরাই। তাহলে কোন পথে এগোচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, নাকি কেবলই পেছাচ্ছে?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা, ১৯৭৩-এর স্বায়ত্তশাসন অধ্যাদেশের সুযোগ নিয়ে আপনারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সদস্য হচ্ছেন। একই সুযোগকে ব্যবহার করে আপনারা কেন এ সিদ্ধান্তটুকু নিতে পারছেন না যে, এ দেশের শ্রেষ্ঠ-মেধাবী সন্তানদের এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী হিসেবে আকৃষ্ট করার জন্য বাইরের যেকোনো নির্দেশ ও পরামর্শকে উপেক্ষা করে সর্বোত্তম ভর্তি ও নিয়োগ ব্যবস্থাটি এখানে গড়ে তুলবেন? এ দেশের প্রায় নিরক্ষর কৃষক খরা, বন্যা, ভূমির মালিকানাহীনতা ও নানাবিধ প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে গত পঞ্চাশ বছরে দেশের খাদ্যোৎপাদনকে প্রায় সাড়ে ৪ গুণ বাড়িয়েছেন। আর আপনারা এত শিক্ষা-দীক্ষা ও রাষ্ট্রের নানা আনুকূল্য নিয়েও এ বিশ্ববিদ্যালয়টিকে গত পঞ্চাশ বছরের আগের অবস্থার চেয়েও পিছিয়ে দিলেন?
লেখক: সাবেক পরিচালক, বিসিক, শিল্প মন্ত্রণালয়
আবু তাহের খান

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মেসবাহ কামাল বছর চারেক আগে তাঁর এক বক্তব্যে উল্লেখ করেছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়টি ক্রমেই একটি উচ্চতর মাদ্রাসায় রূপ নিচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষায় ৮০ নম্বরই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের গড় থেকে নেওয়ার ভ্রান্ত পদ্ধতির উল্লেখ করে তিনি বলেন, মাদ্রাসাগুলো তাদের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার খাতা অত্যন্ত উদারভাবে মূল্যায়ন করে, যা সাধারণত শুরুই হয় ৯০ শতাংশ নম্বর দিয়ে, যেখানে ইংরেজির প্রায় কোনো সংশ্লিষ্টতাই নেই। অথচ সাধারণ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা অনেক পরিশ্রম করেও তার কাছাকাছি পর্যায়ের নম্বর পান না। ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অনেক নিম্ন মেধার মাদ্রাসাশিক্ষার্থী দাখিল ও আলিম পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়ার সুবাদে খুব সহজেই ভর্তি পরীক্ষায় টিকে যাচ্ছেন এবং
এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি ক্রমেই একটি উচ্চতর মাদ্রাসায় রূপ নিতে শুরু করেছে।
অধ্যাপক মেসবাহ কামালের এই উদ্বেগের সঙ্গে দেশের অনেক সচেতন মানুষেরও একাত্ম হওয়ার কথা। কারণ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে এ দেশের মানুষ বাংলাদেশ-সমাজের দর্পণ হিসেবেই গণ্য করে। সেখানে যা ঘটে এবং যা ঘটে না, এ উভয়ই বস্তুত এ দেশের রাষ্ট্র, রাজনীতি ও সমাজ কোন পথে ধাবিত হচ্ছে, তারই নির্দেশক।১৯৪৮-৭১ সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র আন্দোলনের যে ইতিহাস, তা বস্তুত বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামেরই ইতিহাস, যার সূচনা হয়েছিল ১৯৪৮ সালের ১৯ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে দেওয়া জিন্নাহর ভাষণের প্রতিবাদের মধ্য দিয়ে। একইভাবে ১৯৭১-পরবর্তী বাংলাদেশ কোন পথে এগিয়েছে, তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে তাকালেই অনেকটা স্পষ্ট হবে। এই মুহূর্তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যে ক্রমেই একটি মাদ্রাসা হয়ে উঠছে, এটি বস্তুত বাংলাদেশ সমাজেরই একটি ধর্মীয় মৌলবাদী সামাজিক শক্তির প্রাধান্যযুক্ত রাষ্ট্রে রূপান্তরিত হয়ে ওঠার প্রবণতারই সমান্তরাল ঘটনা।
নিম্ন মেধার মাদ্রাসাশিক্ষার্থীরা শুধু যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই আধিক্য গড়ে তুলছেন তা-ই নয়, একই অবস্থা ঘটছে শিক্ষাসংশ্লিষ্ট অন্যান্য নানা ক্ষেত্রেও। কওমি ও সাধারণ ধারার যেকোনো মাদ্রাসা থেকে ১৬ ও ১৭ বছরের শিক্ষাকাল অতিক্রম করলেই সেখানকার একজন শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সমমানের সনদ পেয়ে যাচ্ছেন। আর এরূপ একটি সনদ হাতে থাকলে তদবিরের জোরে চাকরি পেয়ে যাওয়া, বিশেষ করে সরকারি প্রতিষ্ঠানে, এখন খুবই মামুলি ব্যাপার এবং বাস্তবে তা এতটাই ঘটছে যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব দখলের মতো বিভিন্ন স্তরের চাকরিবাকরি ও সমাজের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানেও ক্রমান্বয়ে ওই মাদ্রাসা থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের অধিকারেই চলে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে রাষ্ট্র শুধু যে প্রশ্রয়ই দিচ্ছে তা-ই নয়, অবিরাম পৃষ্ঠপোষকতাও দিয়ে যাচ্ছে। কখনো হেফাজতের সঙ্গে আবার কখনো কওমি মাদ্রাসাপন্থীদের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন সেই পৃষ্ঠপোষকতারই প্রামাণ্য দলিল। আর এটা তো সহজেই বোধগম্য যে এ দেশের সংস্কৃতি অনুযায়ী, ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সম্পাদিত রাজনৈতিক চুক্তি শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তিরই সমতুল্য হয়ে দাঁড়ায়।
হেফাজত ও কওমি মাদ্রাসাপন্থীদের পরামর্শে শিক্ষার পাঠ্যক্রম বদলে ফেলাটাও বিজ্ঞান ও ইংরেজিবর্জিত মাদ্রাসাশিক্ষাকে এগিয়ে রাখারই একটি কৌশল মাত্র। আর বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা এ ধারায় এগোতে থাকলে মাদ্রাসা শিক্ষায়ই ক্রমান্বয়ে এ দেশে মূলধারার শিক্ষাব্যবস্থা হয়ে ওঠে কি না, সে ঝুঁকিও অনেকটা থেকে যায় বৈকি! এই বক্তব্যের বাস্তবতা উপলব্ধি করা যাবে শুধু ঢাকা শহরেই কতসংখ্যক অননুমোদিত প্রাথমিক মাদ্রাসা আছে, তার হিসাব নেওয়া গেলে। দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি, এ সংখ্যা শতক নয়, হাজারের কোঠায় হিসাব করতে হবে। তো, শুধু ঢাকা শহরেই যদি এ সংখ্যা কয়েক হাজার হয়, তাহলে সারা দেশে কত হতে পারে তা কি আমরা ভেবে দেখেছি? আর এ অবস্থা সম্পর্কে রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকেরা কি অবহিত আছেন? আর অবহিত থাকলে তাঁরা কি এ ব্যাপারে নিয়ন্ত্রণমূলক কোনো ব্যবস্থা নিয়েছেন, নাকি এ অবস্থা সৃষ্টিতে তাঁদের নীরব সমর্থন আছে বলেই বিষয়টিতে তাঁরা চুপ করে থাকছেন?
প্রশ্ন হচ্ছে, এ অবস্থাটি কীভাবে তৈরি হলো? এ নিয়ে আলোচনা করতে গেলে প্রথমেই উল্লেখ করতে হয় যে প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী, এ-জাতীয় মাদ্রাসা স্থাপনে কোনো সরকারি অনুমতি লাগে না। তাহলে প্রশ্ন, প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য যদি অনুমোদন লাগে, তাহলে প্রাথমিক মাদ্রাসার জন্য নয় কেন? এ প্রসঙ্গে বলা দরকার, প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী এগুলো স্থাপনে যেহেতু সরকারি অনুমতির প্রয়োজন নেই, সেহেতু এগুলো অননুমোদিত হলেও অবৈধ নয়।
আর এ ধরনের বৈধ অনিয়মের আওতাতেই দেশে মাদ্রাসাশিক্ষার প্রথম সোপানটি চতুর্দিকে শিকড় গেড়ে বসছে এবং সে ধারায় একসময় তা আফগানিস্তানের তালেবান সংস্কৃতির রূপ পরিগ্রহ করলে তাতেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। আর সে কাজটিই সম্ভবত অতি নীরবে এখন ঘটে চলেছে এবং এরাই হয়তো একসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যাগরিষ্ঠ শিক্ষার্থী হয়ে উঠবেন, যেমন করে আগামী ১৫-২০ বছরের মধ্যে উগ্র ধর্মীয় মৌলবাদী চিন্তায় দীক্ষিত রোহিঙ্গারা কক্সবাজার জেলায় সংখ্যাগরিষ্ঠ ‘বাংলাদেশি নাগরিক’ হয়ে উঠতে পারে।
অধ্যাপক মেসবাহ কামাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিম্ন মেধার মাদ্রাসাশিক্ষার্থীদের ভর্তি হওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু ২০ বছর পর এ ক্যাম্পাস যদি মাদ্রাসাশিক্ষার্থীদের পাশাপাশি মৌলবাদী ওরিয়েন্টেশনে গড়া রোহিঙ্গাদের ভিড়েও সরব হয়ে ওঠে, তাহলে সেটিকে বোধ হয় আজ নিম্ন মেধার মাদ্রাসাশিক্ষার্থীদের যেভাবে মেনে নিতে হচ্ছে, তেমনি করে অসহায় চোখে মেনে নিতে হবে। লক্ষণীয় হচ্ছে, রাষ্ট্রের যেসব নীতিনির্ধারক এসব ভ্রান্তিপূর্ণ নীতি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছেন, তাঁরা হয়তো তাঁদের কার্যকাল শেষে চলে যাবেন; কিন্তু এর চরম মূল্য ও খেসারত দিতে হবে এ দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তথা আগামী দিনের রাষ্ট্র ও সমাজ তথা পুরো জাতিকে। আর সে ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ভূমিকা ইতিহাসের অন্যতম নেতিবাচক অনুষঙ্গ হয়েই থাকবে বৈকি!
এটিও এখন প্রতিষ্ঠিত আলোচনা যে, বৃহৎ মাদ্রাসার মতোই সান্ধ্য কোর্সের সুবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইতিমধ্যে একটি বৃহৎ কোচিং সেন্টারে রূপান্তরিত হয়েছে, যেখানে নীল-সাদায় তেমন কোনো বিরোধ নেই। একইভাবে সুবিধার পাতে ভাগ বসানোর জন্য রাতারাতি যেমন একই রাজনৈতিক দলের ৭৩টি অঙ্গসংগঠন গড়ে ওঠে, তেমনি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও রাতারাতি গড়ে উঠেছে অপ্রয়োজনীয় সব বিভাগ ও ইনস্টিটিউট এবং খুব স্বাভাবিকভাবেই সেখানেও ওই মাদ্রাসা থেকে আসাদেরই ভিড়। ওই যে রাজনৈতিক পরিচয় মেনে শিক্ষক নিয়োগ, শোনা তো যায় যে সেখানেও শুভ্র ভূষণের ওপর নীল টিপ পরে ঢুকে যাচ্ছে মৌলবাদীরাই। তাহলে কোন পথে এগোচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, নাকি কেবলই পেছাচ্ছে?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা, ১৯৭৩-এর স্বায়ত্তশাসন অধ্যাদেশের সুযোগ নিয়ে আপনারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সদস্য হচ্ছেন। একই সুযোগকে ব্যবহার করে আপনারা কেন এ সিদ্ধান্তটুকু নিতে পারছেন না যে, এ দেশের শ্রেষ্ঠ-মেধাবী সন্তানদের এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী হিসেবে আকৃষ্ট করার জন্য বাইরের যেকোনো নির্দেশ ও পরামর্শকে উপেক্ষা করে সর্বোত্তম ভর্তি ও নিয়োগ ব্যবস্থাটি এখানে গড়ে তুলবেন? এ দেশের প্রায় নিরক্ষর কৃষক খরা, বন্যা, ভূমির মালিকানাহীনতা ও নানাবিধ প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে গত পঞ্চাশ বছরে দেশের খাদ্যোৎপাদনকে প্রায় সাড়ে ৪ গুণ বাড়িয়েছেন। আর আপনারা এত শিক্ষা-দীক্ষা ও রাষ্ট্রের নানা আনুকূল্য নিয়েও এ বিশ্ববিদ্যালয়টিকে গত পঞ্চাশ বছরের আগের অবস্থার চেয়েও পিছিয়ে দিলেন?
লেখক: সাবেক পরিচালক, বিসিক, শিল্প মন্ত্রণালয়

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মেসবাহ কামাল বছর চারেক আগে তাঁর এক বক্তব্যে উল্লেখ করেছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়টি ক্রমেই একটি উচ্চতর মাদ্রাসায় রূপ নিচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষায় ৮০ নম্বরই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের গড় থেকে নেওয়ার ভ্রান্ত পদ্ধতির উল্লেখ করে তিনি বলেন, মাদ্রাসাগুলো তাদের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার খাতা অত্যন্ত উদারভাবে মূল্যায়ন করে, যা সাধারণত শুরুই হয় ৯০ শতাংশ নম্বর দিয়ে, যেখানে ইংরেজির প্রায় কোনো সংশ্লিষ্টতাই নেই। অথচ সাধারণ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা অনেক পরিশ্রম করেও তার কাছাকাছি পর্যায়ের নম্বর পান না। ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অনেক নিম্ন মেধার মাদ্রাসাশিক্ষার্থী দাখিল ও আলিম পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়ার সুবাদে খুব সহজেই ভর্তি পরীক্ষায় টিকে যাচ্ছেন এবং
এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি ক্রমেই একটি উচ্চতর মাদ্রাসায় রূপ নিতে শুরু করেছে।
অধ্যাপক মেসবাহ কামালের এই উদ্বেগের সঙ্গে দেশের অনেক সচেতন মানুষেরও একাত্ম হওয়ার কথা। কারণ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে এ দেশের মানুষ বাংলাদেশ-সমাজের দর্পণ হিসেবেই গণ্য করে। সেখানে যা ঘটে এবং যা ঘটে না, এ উভয়ই বস্তুত এ দেশের রাষ্ট্র, রাজনীতি ও সমাজ কোন পথে ধাবিত হচ্ছে, তারই নির্দেশক।১৯৪৮-৭১ সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র আন্দোলনের যে ইতিহাস, তা বস্তুত বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামেরই ইতিহাস, যার সূচনা হয়েছিল ১৯৪৮ সালের ১৯ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে দেওয়া জিন্নাহর ভাষণের প্রতিবাদের মধ্য দিয়ে। একইভাবে ১৯৭১-পরবর্তী বাংলাদেশ কোন পথে এগিয়েছে, তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে তাকালেই অনেকটা স্পষ্ট হবে। এই মুহূর্তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যে ক্রমেই একটি মাদ্রাসা হয়ে উঠছে, এটি বস্তুত বাংলাদেশ সমাজেরই একটি ধর্মীয় মৌলবাদী সামাজিক শক্তির প্রাধান্যযুক্ত রাষ্ট্রে রূপান্তরিত হয়ে ওঠার প্রবণতারই সমান্তরাল ঘটনা।
নিম্ন মেধার মাদ্রাসাশিক্ষার্থীরা শুধু যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই আধিক্য গড়ে তুলছেন তা-ই নয়, একই অবস্থা ঘটছে শিক্ষাসংশ্লিষ্ট অন্যান্য নানা ক্ষেত্রেও। কওমি ও সাধারণ ধারার যেকোনো মাদ্রাসা থেকে ১৬ ও ১৭ বছরের শিক্ষাকাল অতিক্রম করলেই সেখানকার একজন শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সমমানের সনদ পেয়ে যাচ্ছেন। আর এরূপ একটি সনদ হাতে থাকলে তদবিরের জোরে চাকরি পেয়ে যাওয়া, বিশেষ করে সরকারি প্রতিষ্ঠানে, এখন খুবই মামুলি ব্যাপার এবং বাস্তবে তা এতটাই ঘটছে যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব দখলের মতো বিভিন্ন স্তরের চাকরিবাকরি ও সমাজের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানেও ক্রমান্বয়ে ওই মাদ্রাসা থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের অধিকারেই চলে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে রাষ্ট্র শুধু যে প্রশ্রয়ই দিচ্ছে তা-ই নয়, অবিরাম পৃষ্ঠপোষকতাও দিয়ে যাচ্ছে। কখনো হেফাজতের সঙ্গে আবার কখনো কওমি মাদ্রাসাপন্থীদের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন সেই পৃষ্ঠপোষকতারই প্রামাণ্য দলিল। আর এটা তো সহজেই বোধগম্য যে এ দেশের সংস্কৃতি অনুযায়ী, ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সম্পাদিত রাজনৈতিক চুক্তি শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তিরই সমতুল্য হয়ে দাঁড়ায়।
হেফাজত ও কওমি মাদ্রাসাপন্থীদের পরামর্শে শিক্ষার পাঠ্যক্রম বদলে ফেলাটাও বিজ্ঞান ও ইংরেজিবর্জিত মাদ্রাসাশিক্ষাকে এগিয়ে রাখারই একটি কৌশল মাত্র। আর বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা এ ধারায় এগোতে থাকলে মাদ্রাসা শিক্ষায়ই ক্রমান্বয়ে এ দেশে মূলধারার শিক্ষাব্যবস্থা হয়ে ওঠে কি না, সে ঝুঁকিও অনেকটা থেকে যায় বৈকি! এই বক্তব্যের বাস্তবতা উপলব্ধি করা যাবে শুধু ঢাকা শহরেই কতসংখ্যক অননুমোদিত প্রাথমিক মাদ্রাসা আছে, তার হিসাব নেওয়া গেলে। দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি, এ সংখ্যা শতক নয়, হাজারের কোঠায় হিসাব করতে হবে। তো, শুধু ঢাকা শহরেই যদি এ সংখ্যা কয়েক হাজার হয়, তাহলে সারা দেশে কত হতে পারে তা কি আমরা ভেবে দেখেছি? আর এ অবস্থা সম্পর্কে রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকেরা কি অবহিত আছেন? আর অবহিত থাকলে তাঁরা কি এ ব্যাপারে নিয়ন্ত্রণমূলক কোনো ব্যবস্থা নিয়েছেন, নাকি এ অবস্থা সৃষ্টিতে তাঁদের নীরব সমর্থন আছে বলেই বিষয়টিতে তাঁরা চুপ করে থাকছেন?
প্রশ্ন হচ্ছে, এ অবস্থাটি কীভাবে তৈরি হলো? এ নিয়ে আলোচনা করতে গেলে প্রথমেই উল্লেখ করতে হয় যে প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী, এ-জাতীয় মাদ্রাসা স্থাপনে কোনো সরকারি অনুমতি লাগে না। তাহলে প্রশ্ন, প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য যদি অনুমোদন লাগে, তাহলে প্রাথমিক মাদ্রাসার জন্য নয় কেন? এ প্রসঙ্গে বলা দরকার, প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী এগুলো স্থাপনে যেহেতু সরকারি অনুমতির প্রয়োজন নেই, সেহেতু এগুলো অননুমোদিত হলেও অবৈধ নয়।
আর এ ধরনের বৈধ অনিয়মের আওতাতেই দেশে মাদ্রাসাশিক্ষার প্রথম সোপানটি চতুর্দিকে শিকড় গেড়ে বসছে এবং সে ধারায় একসময় তা আফগানিস্তানের তালেবান সংস্কৃতির রূপ পরিগ্রহ করলে তাতেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। আর সে কাজটিই সম্ভবত অতি নীরবে এখন ঘটে চলেছে এবং এরাই হয়তো একসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যাগরিষ্ঠ শিক্ষার্থী হয়ে উঠবেন, যেমন করে আগামী ১৫-২০ বছরের মধ্যে উগ্র ধর্মীয় মৌলবাদী চিন্তায় দীক্ষিত রোহিঙ্গারা কক্সবাজার জেলায় সংখ্যাগরিষ্ঠ ‘বাংলাদেশি নাগরিক’ হয়ে উঠতে পারে।
অধ্যাপক মেসবাহ কামাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিম্ন মেধার মাদ্রাসাশিক্ষার্থীদের ভর্তি হওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু ২০ বছর পর এ ক্যাম্পাস যদি মাদ্রাসাশিক্ষার্থীদের পাশাপাশি মৌলবাদী ওরিয়েন্টেশনে গড়া রোহিঙ্গাদের ভিড়েও সরব হয়ে ওঠে, তাহলে সেটিকে বোধ হয় আজ নিম্ন মেধার মাদ্রাসাশিক্ষার্থীদের যেভাবে মেনে নিতে হচ্ছে, তেমনি করে অসহায় চোখে মেনে নিতে হবে। লক্ষণীয় হচ্ছে, রাষ্ট্রের যেসব নীতিনির্ধারক এসব ভ্রান্তিপূর্ণ নীতি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছেন, তাঁরা হয়তো তাঁদের কার্যকাল শেষে চলে যাবেন; কিন্তু এর চরম মূল্য ও খেসারত দিতে হবে এ দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তথা আগামী দিনের রাষ্ট্র ও সমাজ তথা পুরো জাতিকে। আর সে ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ভূমিকা ইতিহাসের অন্যতম নেতিবাচক অনুষঙ্গ হয়েই থাকবে বৈকি!
এটিও এখন প্রতিষ্ঠিত আলোচনা যে, বৃহৎ মাদ্রাসার মতোই সান্ধ্য কোর্সের সুবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইতিমধ্যে একটি বৃহৎ কোচিং সেন্টারে রূপান্তরিত হয়েছে, যেখানে নীল-সাদায় তেমন কোনো বিরোধ নেই। একইভাবে সুবিধার পাতে ভাগ বসানোর জন্য রাতারাতি যেমন একই রাজনৈতিক দলের ৭৩টি অঙ্গসংগঠন গড়ে ওঠে, তেমনি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও রাতারাতি গড়ে উঠেছে অপ্রয়োজনীয় সব বিভাগ ও ইনস্টিটিউট এবং খুব স্বাভাবিকভাবেই সেখানেও ওই মাদ্রাসা থেকে আসাদেরই ভিড়। ওই যে রাজনৈতিক পরিচয় মেনে শিক্ষক নিয়োগ, শোনা তো যায় যে সেখানেও শুভ্র ভূষণের ওপর নীল টিপ পরে ঢুকে যাচ্ছে মৌলবাদীরাই। তাহলে কোন পথে এগোচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, নাকি কেবলই পেছাচ্ছে?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা, ১৯৭৩-এর স্বায়ত্তশাসন অধ্যাদেশের সুযোগ নিয়ে আপনারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সদস্য হচ্ছেন। একই সুযোগকে ব্যবহার করে আপনারা কেন এ সিদ্ধান্তটুকু নিতে পারছেন না যে, এ দেশের শ্রেষ্ঠ-মেধাবী সন্তানদের এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী হিসেবে আকৃষ্ট করার জন্য বাইরের যেকোনো নির্দেশ ও পরামর্শকে উপেক্ষা করে সর্বোত্তম ভর্তি ও নিয়োগ ব্যবস্থাটি এখানে গড়ে তুলবেন? এ দেশের প্রায় নিরক্ষর কৃষক খরা, বন্যা, ভূমির মালিকানাহীনতা ও নানাবিধ প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে গত পঞ্চাশ বছরে দেশের খাদ্যোৎপাদনকে প্রায় সাড়ে ৪ গুণ বাড়িয়েছেন। আর আপনারা এত শিক্ষা-দীক্ষা ও রাষ্ট্রের নানা আনুকূল্য নিয়েও এ বিশ্ববিদ্যালয়টিকে গত পঞ্চাশ বছরের আগের অবস্থার চেয়েও পিছিয়ে দিলেন?
লেখক: সাবেক পরিচালক, বিসিক, শিল্প মন্ত্রণালয়

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মেসবাহ কামাল বছর চারেক আগে তাঁর এক বক্তব্যে উল্লেখ করেছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়টি ক্রমেই একটি উচ্চতর মাদ্রাসায় রূপ নিচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষায় ৮০ নম্বরই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের গড় থেকে নেওয়ার ভ্রা
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মেসবাহ কামাল বছর চারেক আগে তাঁর এক বক্তব্যে উল্লেখ করেছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়টি ক্রমেই একটি উচ্চতর মাদ্রাসায় রূপ নিচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষায় ৮০ নম্বরই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের গড় থেকে নেওয়ার ভ্রা
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মেসবাহ কামাল বছর চারেক আগে তাঁর এক বক্তব্যে উল্লেখ করেছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়টি ক্রমেই একটি উচ্চতর মাদ্রাসায় রূপ নিচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষায় ৮০ নম্বরই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের গড় থেকে নেওয়ার ভ্রা
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মেসবাহ কামাল বছর চারেক আগে তাঁর এক বক্তব্যে উল্লেখ করেছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়টি ক্রমেই একটি উচ্চতর মাদ্রাসায় রূপ নিচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষায় ৮০ নম্বরই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের গড় থেকে নেওয়ার ভ্রা
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫