আবু তাহের খান

করোনা-উত্তর অর্থনৈতিক মন্দা, ইউক্রেন যুদ্ধ, মার্কিন-চীন উত্তেজনা ইত্যাদির মতোই গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক আলোচনার কেন্দ্রে এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই)। এর প্রায়োগিক ফলাফল, উপকারিতা, ক্ষতিকর অনুষঙ্গ, দীর্ঘমেয়াদি প্রতিক্রিয়া ইত্যাদি নিয়ে পক্ষ-বিপক্ষের আলোচনাও এখন যথেষ্টই মুখর। পরিবর্তনবাদীদের মতে, প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও ফলাফলকে পরিপূর্ণ মাত্রায় ব্যবহার করতে না পারলে এ ক্ষেত্রে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়াটা প্রায় অনিবার্য।
অন্যদিকে নিজেদের যাঁরা মানবিক যুক্তিবাদী বলে দাবি করেন, তাঁদের মত হচ্ছে, এআইকে একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ও নিয়ন্ত্রণকাঠামোর আওতায় ব্যবহার করতে না পারলে পরিণামে তা পুরো মানবজাতির বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ ও সৃজনশীলতাকেই হুমকির মুখে ঠেলে দিতে পারে। এর চেয়েও বড় কথা, এটি বৈশ্বিক অর্থনৈতিক কাঠামোতে পুঁজির একচেটিয়াত্বকে আরও প্রবল করে তোলার মাধ্যমে শ্রেণিবৈষম্যকে প্রকট করে তুলতে পারে, যার সবচেয়ে বড় অমানবিক শিকারে পরিণত হতে পারে বিশ্বের অনুন্নত দেশগুলো।
উপরিউক্ত এ ত্রিমাত্রিক পরিস্থিতিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের ক্ষেত্রে মানবজাতির দৃষ্টিভঙ্গি ও ব্যবহারকাঠামো কী হবে, সে বিষয়টি নিয়ে যেকোনো ধরনের আবেগ ও আসক্তির ঊর্ধ্বে উঠে সম্পূর্ণ নির্মোহ দৃষ্টিকোণ থেকে চিন্তাভাবনা করা উচিত বলে মনে করি। উল্লেখ্য, ইতালি এবং আরও বেশ কিছু দেশ ইতিমধ্যে এআইর ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে।
অপরদিকে বিরাটসংখ্যক সহজবাদী মানুষ ও নিরবচ্ছিন্ন মুনাফা সন্ধানী উদ্যোক্তা ইতিমধ্যে একে প্রযুক্তির বৈপ্লবিক রূপান্তর বলে আখ্যায়িত করেছেন। আর রাজনৈতিক অর্থনীতির বিশ্লেষকেরা ইতিমধ্যে দেখিয়েছেন যে বিশ্বের কেন্দ্রে থেকে এআই প্রযুক্তির উৎপাদন ও বণ্টনকে যাঁরা নিয়ন্ত্রণ করছেন, এর মাধ্যমে তাঁরা বস্তুত তাঁদের নিজস্ব চিন্তাভাবনা, প্রয়োজন ও ব্যবসায়িক স্বার্থকেই সমুন্নত রাখার চেষ্টা করছেন এবং ভবিষ্যতেও হয়তো তাঁরা সেটাই করবেন।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে অন্য একটি আলোচনা এরূপ যে এর সম্প্রসারিত ব্যবহারের ফলে বহু মানুষ বেকার হয়ে পড়বে, যা খুবই অগভীর ও অসম্পূর্ণ আলোচনা। আসলে এআইর বর্ধিত ব্যবহারজনিত বেকারত্বের বিষয়টি তেমন বড় কোনো সমস্যা নয়, যেমন বড় বলে আপাতদৃষ্টিতে এটিকে মনে করা হচ্ছে। এর ব্যাপকভিত্তিক প্রয়োগের ফলে সীমিতসংখ্যক মানুষের বেকার হয়ে পড়ার আশঙ্কা হয়তো আছে। তবে এর ব্যবহার-প্রক্রিয়ায় নতুন করে বহু লোকের কর্মসংস্থানেরও সুযোগ রয়েছে।
ফলে এ নিয়ে যতটা উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে, বাস্তব পরিস্থিতি মোটেও ততটা ভীতিকর নয়। যেকোনো নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রাথমিক পর্যায়ে সব যুগেই এমনটি হয়ে এসেছে। বাংলাদেশের লগি-বৈঠাচালিত নৌকার জায়গায় যখন শ্যালো ইঞ্জিনচালিত নৌকার চলাচল শুরু হয়, তখন নিরীহ অসহায় মাঝিরা জীবিকা হারানোর ভয়ে রীতিমতো তটস্থ ছিলেন। কিন্তু ঘটনা-পরবর্তী অতি অল্প সময়ের মধ্যেই তাঁরা বিকল্প জীবিকা খুঁজে নিতে সক্ষম হন এবং নতুন সে পেশা যেকোনো বিবেচনা থেকেই পূর্ববর্তী পেশার চেয়ে অধিকতর উন্নত, উপভোগ্য ও মর্যাদাকর বলে প্রমাণিত হয়।
কিন্তু তারপরও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে এটি এখন খুবই উদ্বেগজনক আলোচনা যে তা মানুষের চিন্তা ও সৃজনশীলতা বিকাশের পথকে রুদ্ধ করে দিতে পারে এবং ফলে মানবসমাজে বুদ্ধিবৃত্তিক বন্ধ্যত্ব দেখা দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর মানুষের মেধা, প্রতিভা ও মৌলিক চিন্তাভাবনা বিকাশের পথ রুদ্ধ হয়ে গেলে সৃজনশীলতার দুর্ভিক্ষ একটি জাতিগোষ্ঠীকে কীভাবে ও কতটা পঙ্গু করে দিতে পারে, তার জাজ্বল্যমান উদাহরণ এই বাংলাদেশেই রয়েছে।
কোনো প্রকার আদর্শিক ও দার্শনিক লক্ষ্য ছাড়াই বিচ্ছিন্ন চিন্তাভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত একটি চরম মানহীন গিনিপিগ শিক্ষাব্যবস্থার শিকারে পরিণত হওয়া এ দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে কেরানি বা ব্যবস্থাপক, হিসাবরক্ষক বা খাজাঞ্চি, বণিক অথবা উদ্যোক্তা, মন্ত্রী অথবা আমলা ইত্যাদি অনেক কিছুই তৈরি হচ্ছে। কিন্তু সে তুলনায় বিশ্বমানের বিজ্ঞানী, উদ্ভাবক বা আবিষ্কারক, দার্শনিক, সাহিত্যিক, দেশপ্রেমিক নেতা কিংবা দলনিরপেক্ষ দক্ষ দপ্তরকর্মী ইত্যাদি গড়ে ওঠার হার খুবই নগণ্য। ফলে দিনে দিনে এ দেশ একটি বৃহত্তর ভোক্তা সমাজে তথা অন্য দেশে উদ্ভাবিত পণ্যের একচ্ছত্র বাজারে পরিণত হচ্ছে।
আর এ অবস্থারই অনিবার্য ফল হিসেবে করোনা থেকে বাঁচার জন্য আমরা অন্যের উদ্ভাবিত টিকার অপেক্ষায় থাকি, দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে নিরাময় পাওয়ার উদ্দেশ্যে অন্যের আবিষ্কৃত ওষুধ খুঁজি, শিল্পে ব্যবহারের জন্য অন্য দেশ থেকে যন্ত্রপাতি আমদানি করি, তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের নাম করে মুখে ফেনা তুলি আর দিনরাত ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে নেশায় বুঁদ হয়ে থেকে এ মাধ্যমের সমুদয় ও একচেটিয়া মুনাফা আটলান্টিক পাড়ের পশ্চিমি উদ্ভাবকদের হাতে তুলে দিই।
মোটকথা, আমরা আয় বাড়িয়ে ভোক্তা হতে চাই, আন্তর্জাতিক পণ্যের বাজার হয়ে নিজেদের বৈশ্বিক বলে প্রমাণ করতে চাই, এমনকি এরূপ অবাধ বাজারব্যবস্থার সুবাদে নিজ দেশের সম্পদ অন্য দেশে পাচার করে দিতেও অকুণ্ঠিত থাকি। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই নিজেদের মেধা ও প্রতিভার বিকাশ ঘটানোর ব্যাপারে আগ্রহ দেখাই না বা সেই মর্যাদাবোধের জায়গাটিও জাতি হিসেবে আমরা গড়ে তুলতে পারিনি। বস্তুত সাম্রাজ্যবাদী উপনিবেশ থেকে এখন আমরা নয়া পুঁজিবাদী ঔপনিবেশিকতার যুগে প্রবেশ করেছি এবং সামনের দিনগুলোতে তা ক্রমান্বয়ে আরও জোরদার হবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। ওই যে আমাদের রাজনৈতিক বিষয়ের সিদ্ধান্ত বিদেশিরা গ্রহণ করছেন, সেটিও ওই মৌলিক চিন্তা বিকশিত না হওয়াজনিত দৈন্যতাপূর্ণ মানসিকতারই ফল।
অতএব বলতেই হয় যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে মূল সমস্যাটি কাজ হারানোজনিত নয়; বরং বাংলাদেশের জন্য মূল সমস্যা হচ্ছে এআইকে ঘিরে বিশ্বব্যাপী এর চেয়েও উন্নততর কাজের যে বিপুল সুযোগ তৈরি হতে যাচ্ছে, সেই সুযোগ ব্যবহারের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে না পারা। আর তা না পারার জন্য যে কারণগুলো সর্বাধিক দায়ী তার মধ্যে একেবারে প্রথমেই রয়েছে চরম মানহীন একটি শিক্ষাব্যবস্থা, যার আওতায় শিক্ষার প্রচলিত ধাঁচের মান এবং ব্যতিক্রমী সৃজনশীলতা কোনোটির বিকাশই সম্ভব নয়। মেধা ও সৃজনশীলতার বিকাশ অবশ্য আন্তর্জাতিক পুঁজির মালিকানাকাঠামোর ধরনের কারণেও বিঘ্নিত হচ্ছে।
ওই যে এআই এখন সারা পৃথিবীর সব মানুষের করতলগত, তা সত্ত্বেও এর বাস্তব ব্যবহারের ক্ষমতা ও ব্যবহারজনিত ফলাফল এর কোনোটিই কি বিশ্বের অনগ্রসর দেশগুলোর সংখ্যাগরিষ্ঠ বিত্তহীন ও স্বল্পবিত্তের সাধারণ মানুষের আয়ত্তের মধ্যে ও স্বার্থের অনুকূলে রয়েছে বা নিকট ভবিষ্যতে তা থাকবে? মোটেও না।
বিষয়টিকে খানিকটা ব্যাখ্যা করা যাক। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা রোবটসহ অন্য যে ধরনের প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল, তা আহরণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ ব্যয়ের সামর্থ্য এসব সাধারণ মানুষের প্রায় নেই বললেই চলে। ফলে নব উদ্ভাবিত এই প্রযুক্তি অবধারিতভাবেই নিয়ন্ত্রিত হবে বিত্তবান শ্রেণি দ্বারা; অর্থাৎ পুঁজি বা পুঁজিপতিরাই এর আহরণ ও ব্যবহারকে নিয়ন্ত্রণ করবেন।
দ্বিতীয়ত, তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নেওয়া যায় যে অর্থনীতি শাস্ত্রের নানা তাত্ত্বিক হিসাবনিকাশের ফাঁকফোকর গলিয়ে এআই প্রযুক্তির অধিগ্রহণ ক্ষমতা স্বল্পবিত্তের সাধারণ মানুষের হাতেও থাকবে, তাহলেও প্রশ্ন থেকে যায়, কৃত্রিম বুদ্ধি সৃষ্টির জন্য তথ্য ও উপাত্তকে যাঁরা যন্ত্রে সন্নিবেশিত করবেন (প্রোগ্রামিং), তারা কি শ্রেণিনিরপেক্ষ? কখনোই না। ফলে সেখানে, অর্থাৎ প্রযুক্তি-প্রক্রিয়ায় তাঁরা যেসব তথ্য-উপাত্ত ব্যবহার করবেন, সেই সব খুব স্বাভাবিকভাবেই পুঁজির স্বার্থকেই রক্ষা করে চলবে। উদাহরণস্বরূপ, বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ রোবট উৎপাদনকারী মার্কিন প্রতিষ্ঠান চ্যাটজিপিটিকে যখন জিজ্ঞেস করা হলো ইউক্রেন যুদ্ধের মূল দায় কার এবং এ ক্ষেত্রে ইইউ কতটুকু দায়ী, সে জবাব দিল ‘সাধারণ আন্তর্জাতিক ঐকমত্য অনুযায়ী’ রাশিয়াই এর জন্য দায়ী।
কিন্তু এ বক্তব্য কি ঠিক যে এটিই সাধারণ ঐকমত্য? তাহলে যে ইউক্রেন যুদ্ধ প্রশ্নে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ভোটাভুটিতে সিরিয়া-উত্তর কোরিয়াসহ ৪ দেশ রাশিয়ার পক্ষে ভোট দিল এবং চীন-ভারতসহ ৩৫ দেশ ভোটদান থেকে বিরত থাকল, সেটি কী? মোট ৩৯ দেশ কর্তৃক প্রস্তাব সমর্থন না করা সত্ত্বেও সেটি ঐকমত্য হয় কেমন করে? আর তার চেয়েও বড় কথা, চ্যাটজিপিটি যদি মার্কিন না হয়ে ইরানি প্রতিষ্ঠান হতো, তাহলে এর জবাবটি কি সম্পূর্ণ বিপরীত হতো না? অতএব এআইর জ্ঞান কখনোই শ্রেণিনিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ হয়ে উঠতে পারবে না; বরং বরাবরই তা কাজ করবে নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের রাজনৈতিক মুখপাত্র হিসেবে।
লেখক: সাবেক পরিচালক, বিসিক, শিল্প মন্ত্রণালয়

করোনা-উত্তর অর্থনৈতিক মন্দা, ইউক্রেন যুদ্ধ, মার্কিন-চীন উত্তেজনা ইত্যাদির মতোই গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক আলোচনার কেন্দ্রে এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই)। এর প্রায়োগিক ফলাফল, উপকারিতা, ক্ষতিকর অনুষঙ্গ, দীর্ঘমেয়াদি প্রতিক্রিয়া ইত্যাদি নিয়ে পক্ষ-বিপক্ষের আলোচনাও এখন যথেষ্টই মুখর। পরিবর্তনবাদীদের মতে, প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও ফলাফলকে পরিপূর্ণ মাত্রায় ব্যবহার করতে না পারলে এ ক্ষেত্রে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়াটা প্রায় অনিবার্য।
অন্যদিকে নিজেদের যাঁরা মানবিক যুক্তিবাদী বলে দাবি করেন, তাঁদের মত হচ্ছে, এআইকে একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ও নিয়ন্ত্রণকাঠামোর আওতায় ব্যবহার করতে না পারলে পরিণামে তা পুরো মানবজাতির বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ ও সৃজনশীলতাকেই হুমকির মুখে ঠেলে দিতে পারে। এর চেয়েও বড় কথা, এটি বৈশ্বিক অর্থনৈতিক কাঠামোতে পুঁজির একচেটিয়াত্বকে আরও প্রবল করে তোলার মাধ্যমে শ্রেণিবৈষম্যকে প্রকট করে তুলতে পারে, যার সবচেয়ে বড় অমানবিক শিকারে পরিণত হতে পারে বিশ্বের অনুন্নত দেশগুলো।
উপরিউক্ত এ ত্রিমাত্রিক পরিস্থিতিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের ক্ষেত্রে মানবজাতির দৃষ্টিভঙ্গি ও ব্যবহারকাঠামো কী হবে, সে বিষয়টি নিয়ে যেকোনো ধরনের আবেগ ও আসক্তির ঊর্ধ্বে উঠে সম্পূর্ণ নির্মোহ দৃষ্টিকোণ থেকে চিন্তাভাবনা করা উচিত বলে মনে করি। উল্লেখ্য, ইতালি এবং আরও বেশ কিছু দেশ ইতিমধ্যে এআইর ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে।
অপরদিকে বিরাটসংখ্যক সহজবাদী মানুষ ও নিরবচ্ছিন্ন মুনাফা সন্ধানী উদ্যোক্তা ইতিমধ্যে একে প্রযুক্তির বৈপ্লবিক রূপান্তর বলে আখ্যায়িত করেছেন। আর রাজনৈতিক অর্থনীতির বিশ্লেষকেরা ইতিমধ্যে দেখিয়েছেন যে বিশ্বের কেন্দ্রে থেকে এআই প্রযুক্তির উৎপাদন ও বণ্টনকে যাঁরা নিয়ন্ত্রণ করছেন, এর মাধ্যমে তাঁরা বস্তুত তাঁদের নিজস্ব চিন্তাভাবনা, প্রয়োজন ও ব্যবসায়িক স্বার্থকেই সমুন্নত রাখার চেষ্টা করছেন এবং ভবিষ্যতেও হয়তো তাঁরা সেটাই করবেন।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে অন্য একটি আলোচনা এরূপ যে এর সম্প্রসারিত ব্যবহারের ফলে বহু মানুষ বেকার হয়ে পড়বে, যা খুবই অগভীর ও অসম্পূর্ণ আলোচনা। আসলে এআইর বর্ধিত ব্যবহারজনিত বেকারত্বের বিষয়টি তেমন বড় কোনো সমস্যা নয়, যেমন বড় বলে আপাতদৃষ্টিতে এটিকে মনে করা হচ্ছে। এর ব্যাপকভিত্তিক প্রয়োগের ফলে সীমিতসংখ্যক মানুষের বেকার হয়ে পড়ার আশঙ্কা হয়তো আছে। তবে এর ব্যবহার-প্রক্রিয়ায় নতুন করে বহু লোকের কর্মসংস্থানেরও সুযোগ রয়েছে।
ফলে এ নিয়ে যতটা উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে, বাস্তব পরিস্থিতি মোটেও ততটা ভীতিকর নয়। যেকোনো নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রাথমিক পর্যায়ে সব যুগেই এমনটি হয়ে এসেছে। বাংলাদেশের লগি-বৈঠাচালিত নৌকার জায়গায় যখন শ্যালো ইঞ্জিনচালিত নৌকার চলাচল শুরু হয়, তখন নিরীহ অসহায় মাঝিরা জীবিকা হারানোর ভয়ে রীতিমতো তটস্থ ছিলেন। কিন্তু ঘটনা-পরবর্তী অতি অল্প সময়ের মধ্যেই তাঁরা বিকল্প জীবিকা খুঁজে নিতে সক্ষম হন এবং নতুন সে পেশা যেকোনো বিবেচনা থেকেই পূর্ববর্তী পেশার চেয়ে অধিকতর উন্নত, উপভোগ্য ও মর্যাদাকর বলে প্রমাণিত হয়।
কিন্তু তারপরও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে এটি এখন খুবই উদ্বেগজনক আলোচনা যে তা মানুষের চিন্তা ও সৃজনশীলতা বিকাশের পথকে রুদ্ধ করে দিতে পারে এবং ফলে মানবসমাজে বুদ্ধিবৃত্তিক বন্ধ্যত্ব দেখা দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর মানুষের মেধা, প্রতিভা ও মৌলিক চিন্তাভাবনা বিকাশের পথ রুদ্ধ হয়ে গেলে সৃজনশীলতার দুর্ভিক্ষ একটি জাতিগোষ্ঠীকে কীভাবে ও কতটা পঙ্গু করে দিতে পারে, তার জাজ্বল্যমান উদাহরণ এই বাংলাদেশেই রয়েছে।
কোনো প্রকার আদর্শিক ও দার্শনিক লক্ষ্য ছাড়াই বিচ্ছিন্ন চিন্তাভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত একটি চরম মানহীন গিনিপিগ শিক্ষাব্যবস্থার শিকারে পরিণত হওয়া এ দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে কেরানি বা ব্যবস্থাপক, হিসাবরক্ষক বা খাজাঞ্চি, বণিক অথবা উদ্যোক্তা, মন্ত্রী অথবা আমলা ইত্যাদি অনেক কিছুই তৈরি হচ্ছে। কিন্তু সে তুলনায় বিশ্বমানের বিজ্ঞানী, উদ্ভাবক বা আবিষ্কারক, দার্শনিক, সাহিত্যিক, দেশপ্রেমিক নেতা কিংবা দলনিরপেক্ষ দক্ষ দপ্তরকর্মী ইত্যাদি গড়ে ওঠার হার খুবই নগণ্য। ফলে দিনে দিনে এ দেশ একটি বৃহত্তর ভোক্তা সমাজে তথা অন্য দেশে উদ্ভাবিত পণ্যের একচ্ছত্র বাজারে পরিণত হচ্ছে।
আর এ অবস্থারই অনিবার্য ফল হিসেবে করোনা থেকে বাঁচার জন্য আমরা অন্যের উদ্ভাবিত টিকার অপেক্ষায় থাকি, দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে নিরাময় পাওয়ার উদ্দেশ্যে অন্যের আবিষ্কৃত ওষুধ খুঁজি, শিল্পে ব্যবহারের জন্য অন্য দেশ থেকে যন্ত্রপাতি আমদানি করি, তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের নাম করে মুখে ফেনা তুলি আর দিনরাত ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে নেশায় বুঁদ হয়ে থেকে এ মাধ্যমের সমুদয় ও একচেটিয়া মুনাফা আটলান্টিক পাড়ের পশ্চিমি উদ্ভাবকদের হাতে তুলে দিই।
মোটকথা, আমরা আয় বাড়িয়ে ভোক্তা হতে চাই, আন্তর্জাতিক পণ্যের বাজার হয়ে নিজেদের বৈশ্বিক বলে প্রমাণ করতে চাই, এমনকি এরূপ অবাধ বাজারব্যবস্থার সুবাদে নিজ দেশের সম্পদ অন্য দেশে পাচার করে দিতেও অকুণ্ঠিত থাকি। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই নিজেদের মেধা ও প্রতিভার বিকাশ ঘটানোর ব্যাপারে আগ্রহ দেখাই না বা সেই মর্যাদাবোধের জায়গাটিও জাতি হিসেবে আমরা গড়ে তুলতে পারিনি। বস্তুত সাম্রাজ্যবাদী উপনিবেশ থেকে এখন আমরা নয়া পুঁজিবাদী ঔপনিবেশিকতার যুগে প্রবেশ করেছি এবং সামনের দিনগুলোতে তা ক্রমান্বয়ে আরও জোরদার হবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। ওই যে আমাদের রাজনৈতিক বিষয়ের সিদ্ধান্ত বিদেশিরা গ্রহণ করছেন, সেটিও ওই মৌলিক চিন্তা বিকশিত না হওয়াজনিত দৈন্যতাপূর্ণ মানসিকতারই ফল।
অতএব বলতেই হয় যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে মূল সমস্যাটি কাজ হারানোজনিত নয়; বরং বাংলাদেশের জন্য মূল সমস্যা হচ্ছে এআইকে ঘিরে বিশ্বব্যাপী এর চেয়েও উন্নততর কাজের যে বিপুল সুযোগ তৈরি হতে যাচ্ছে, সেই সুযোগ ব্যবহারের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে না পারা। আর তা না পারার জন্য যে কারণগুলো সর্বাধিক দায়ী তার মধ্যে একেবারে প্রথমেই রয়েছে চরম মানহীন একটি শিক্ষাব্যবস্থা, যার আওতায় শিক্ষার প্রচলিত ধাঁচের মান এবং ব্যতিক্রমী সৃজনশীলতা কোনোটির বিকাশই সম্ভব নয়। মেধা ও সৃজনশীলতার বিকাশ অবশ্য আন্তর্জাতিক পুঁজির মালিকানাকাঠামোর ধরনের কারণেও বিঘ্নিত হচ্ছে।
ওই যে এআই এখন সারা পৃথিবীর সব মানুষের করতলগত, তা সত্ত্বেও এর বাস্তব ব্যবহারের ক্ষমতা ও ব্যবহারজনিত ফলাফল এর কোনোটিই কি বিশ্বের অনগ্রসর দেশগুলোর সংখ্যাগরিষ্ঠ বিত্তহীন ও স্বল্পবিত্তের সাধারণ মানুষের আয়ত্তের মধ্যে ও স্বার্থের অনুকূলে রয়েছে বা নিকট ভবিষ্যতে তা থাকবে? মোটেও না।
বিষয়টিকে খানিকটা ব্যাখ্যা করা যাক। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা রোবটসহ অন্য যে ধরনের প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল, তা আহরণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ ব্যয়ের সামর্থ্য এসব সাধারণ মানুষের প্রায় নেই বললেই চলে। ফলে নব উদ্ভাবিত এই প্রযুক্তি অবধারিতভাবেই নিয়ন্ত্রিত হবে বিত্তবান শ্রেণি দ্বারা; অর্থাৎ পুঁজি বা পুঁজিপতিরাই এর আহরণ ও ব্যবহারকে নিয়ন্ত্রণ করবেন।
দ্বিতীয়ত, তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নেওয়া যায় যে অর্থনীতি শাস্ত্রের নানা তাত্ত্বিক হিসাবনিকাশের ফাঁকফোকর গলিয়ে এআই প্রযুক্তির অধিগ্রহণ ক্ষমতা স্বল্পবিত্তের সাধারণ মানুষের হাতেও থাকবে, তাহলেও প্রশ্ন থেকে যায়, কৃত্রিম বুদ্ধি সৃষ্টির জন্য তথ্য ও উপাত্তকে যাঁরা যন্ত্রে সন্নিবেশিত করবেন (প্রোগ্রামিং), তারা কি শ্রেণিনিরপেক্ষ? কখনোই না। ফলে সেখানে, অর্থাৎ প্রযুক্তি-প্রক্রিয়ায় তাঁরা যেসব তথ্য-উপাত্ত ব্যবহার করবেন, সেই সব খুব স্বাভাবিকভাবেই পুঁজির স্বার্থকেই রক্ষা করে চলবে। উদাহরণস্বরূপ, বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ রোবট উৎপাদনকারী মার্কিন প্রতিষ্ঠান চ্যাটজিপিটিকে যখন জিজ্ঞেস করা হলো ইউক্রেন যুদ্ধের মূল দায় কার এবং এ ক্ষেত্রে ইইউ কতটুকু দায়ী, সে জবাব দিল ‘সাধারণ আন্তর্জাতিক ঐকমত্য অনুযায়ী’ রাশিয়াই এর জন্য দায়ী।
কিন্তু এ বক্তব্য কি ঠিক যে এটিই সাধারণ ঐকমত্য? তাহলে যে ইউক্রেন যুদ্ধ প্রশ্নে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ভোটাভুটিতে সিরিয়া-উত্তর কোরিয়াসহ ৪ দেশ রাশিয়ার পক্ষে ভোট দিল এবং চীন-ভারতসহ ৩৫ দেশ ভোটদান থেকে বিরত থাকল, সেটি কী? মোট ৩৯ দেশ কর্তৃক প্রস্তাব সমর্থন না করা সত্ত্বেও সেটি ঐকমত্য হয় কেমন করে? আর তার চেয়েও বড় কথা, চ্যাটজিপিটি যদি মার্কিন না হয়ে ইরানি প্রতিষ্ঠান হতো, তাহলে এর জবাবটি কি সম্পূর্ণ বিপরীত হতো না? অতএব এআইর জ্ঞান কখনোই শ্রেণিনিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ হয়ে উঠতে পারবে না; বরং বরাবরই তা কাজ করবে নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের রাজনৈতিক মুখপাত্র হিসেবে।
লেখক: সাবেক পরিচালক, বিসিক, শিল্প মন্ত্রণালয়

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

করোনা-উত্তর অর্থনৈতিক মন্দা, ইউক্রেন যুদ্ধ, মার্কিন-চীন উত্তেজনা ইত্যাদির মতোই গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক আলোচনার কেন্দ্রে এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই)।
০৩ জুলাই ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

করোনা-উত্তর অর্থনৈতিক মন্দা, ইউক্রেন যুদ্ধ, মার্কিন-চীন উত্তেজনা ইত্যাদির মতোই গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক আলোচনার কেন্দ্রে এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই)।
০৩ জুলাই ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

করোনা-উত্তর অর্থনৈতিক মন্দা, ইউক্রেন যুদ্ধ, মার্কিন-চীন উত্তেজনা ইত্যাদির মতোই গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক আলোচনার কেন্দ্রে এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই)।
০৩ জুলাই ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

করোনা-উত্তর অর্থনৈতিক মন্দা, ইউক্রেন যুদ্ধ, মার্কিন-চীন উত্তেজনা ইত্যাদির মতোই গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক আলোচনার কেন্দ্রে এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই)।
০৩ জুলাই ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫