চিররঞ্জন সরকার

না, বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ ভালো করেনি। সেই ২০০৭ সাল থেকে টানা চারটি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ তিনের বৃত্তে ঘুরপাক খেয়েছে। চারটি বিশ্বকাপেই ছিল তিনটি করে জয়। সেই বৃত্ত ছিঁড়ে বেরোনোর মিশন ছিল এবার। কিন্তু তাতে সফলতা আসেনি; বরং অবনমন হয়েছে। তিনের বদলে এবার জয় দুটি! বাংলাদেশ জিতেছে কেবল আফগানিস্তান আর শ্রীলঙ্কার সঙ্গে। বাকি ম্যাচগুলোতে বাংলাদেশ একতরফাভাবে হেরেছে।
সবচেয়ে আলোচিত হার ছিল নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে। এই পরাজয় একটা অন্তঃসারশূন্য দলের ছবিই তুলে ধরেছে। ২৩০ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ডাচদের বিপক্ষে ন্যূনতম প্রতিদ্বন্দ্বিতাও গড়তে পারেনি বাংলাদেশ। গ্লানিমাখা এই হারের পর বাংলাদেশের সমর্থকদের উদ্দেশে একটা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন ক্রিকেট বিশ্লেষক ও ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলে। হার্শা দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশ ক্রিকেটকে অনুসরণ করে আসছেন। বাংলাদেশ ভালো করলে অনেকবারই তাঁর মুখে প্রশংসা শোনা গেছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট নিয়মিত অনুসরণের অভিজ্ঞতা থেকেই হার্শা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে সমর্থকদের উদ্দেশে একটা প্রশ্ন রেখেছেন, ‘বাংলাদেশকে কিছু কঠিন প্রশ্ন নিজেদের করতে হবে। বাংলাদেশি সমর্থকেরা আপনাদের মতে সাকিব, মুশফিক ও তামিমদের ব্যাচের পর আর সত্যিকার অর্থে কোনো বিশ্বমানের
খেলোয়াড় কি এসেছে?’
হঠাৎ হার্শার এই প্রশ্ন করার কারণ কী? হতে পারে লিটন দাস ও নাজমুল হোসেনদের এখনো বিশ্বমানের মনে করেন না এই ক্রিকেট বিশ্লেষক। ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় লিটনের। দীর্ঘ সময় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার পরও ধারাবাহিক হতে পারেননি লিটন। এবারের বিশ্বকাপেও বাংলাদেশের বড় ভরসার জায়গা ছিলেন তিনি। তবে নিজের কাজটা ঠিকঠাকভাবে করতে পারেননি। দুই ম্যাচে অর্ধশতক করে আশা জাগিয়েছিলেন। কিন্তু ওই দুটি ইনিংসকেই বড় শতকে রূপান্তর করতে পারেননি।
জাতীয় দলে নাজমুলের অভিষেক ২০১৭ সালে। অনেক দিন ধরেই একাদশে নিয়মিত নাজমুল। তবে তিনি এবারের বিশ্বকাপে ‘চূড়ান্তভাবে’ ব্যর্থ। আফগানিস্তান ম্যাচে ফিফটি করা নাজমুল পরের ম্যাচগুলোতে ভালো করতে পারেননি; যা পুরো দলকে ভুগিয়েছে।সাত বছর ধরে বাংলাদেশ দলে নিয়মিত খেলা মেহেদী হাসান মিরাজও এই বিশ্বকাপে তেমন কিছু করতে পারেননি। তৌহিদ হৃদয়, তাসকিন, মোস্তাফিজ প্রমুখ ক্রিকেটারের ওপরই ভরসা রেখে বিশ্বকাপে দারুণ কিছুর প্রত্যাশায় ছিলেন বাংলাদেশের সমর্থকেরা। কিন্তু তাঁরা সবাই ব্যর্থ।
পাকিস্তানের সাবেক ফাস্ট বোলার ওয়াসিম আকরামও বাংলাদেশ দলের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘২০ বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ টেস্ট খেলছে। গড়পড়তা পারফরম্যান্সও বাংলাদেশ করতে পারেনি। বিশ্বকাপে আসার আগে অনেক সমস্যার কথা শুনেছি, জানি না এর পেছনে রাজনীতি কী, কারণটা কী? দেশকে রাখতে হবে সবার আগে। ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ আর নিজেদের মধ্যে দূরত্ব থাকবে পরে।’
আকরাম আরও যোগ করেন, ‘বলছি না তাদের বিশ্বকাপ জেতা উচিত। তবে অন্তত বড় দলগুলোর সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করা উচিত। নতুন ব্যাটার খুঁজতে হবে। সবাই বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত, কীভাবে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট হবে, কোন উইকেটে হবে।’
সমালোচনার তিরে বিদ্ধ হওয়া ছাড়া ক্রিকেটে আমাদের আপাতত অন্য কোনো উপহার নেই। একের পর এক ব্যর্থতার চোরাবালিতে ডুবে যেতে থাকার পরও এ দেশের ক্রিকেট-সংশ্লিষ্ট কারও পক্ষে কি এই সমালোচনাগুলো থেকে ‘প্রকৃত শিক্ষা’ নেওয়া সম্ভব হবে? যদি সম্ভব না হয়, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে জাতীয় ক্রিকেট দলের কাছ থেকে একরাশ হতাশা ছাড়া আর কিছুই মিলবে না।
ক্রিকেটে আমরা এগোচ্ছি না বা এগোতে পারছি না। এটা একটা হতাশার দিক। তবে সবার আগে এ কথা মনে রাখা দরকার, ক্রিকেট দিয়ে দেশ এগোয় না। বড়জোর দেশের নাম ফাটে। দেশ এগোয় শিক্ষায়, গবেষণায়, উদ্ভাবনে। আমাদের জন্য সবচেয়ে গ্লানির দিক হচ্ছে—শিক্ষা, গবেষণা, উদ্ভাবনেও আমরা এগোচ্ছি না; বরং দিন দিন যেন পিছিয়ে পড়ছি।
গবেষণা ছাড়া শিক্ষাকে আর শিক্ষা ছাড়া দেশকে এগিয়ে নেওয়া অসম্ভব। পৃথিবীর সব দেশেই গবেষণাকে সবচেয়ে বেশি মূল্য দেওয়া হয়। কিন্তু আমরা সবচেয়ে কম মূল্য দিই গবেষণাকে। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও গবেষণা প্রধান বিষয় হিসেবে বিবেচিত হয় না।
উচ্চশিক্ষায় ইউজিসি ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার জন্য ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মূল বাজেটে ১৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। গত বছরের তুলনায় বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ২৪ কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে গবেষণা খাতে ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ ধরা হয়েছিল।
দেশের সবচেয়ে সেরা বিদ্যাপীঠের বাজেটের দিকে তাকালেও বিষয়টি স্পষ্ট হবে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ৯১৩ কোটি ৮৯ লাখ ৮৭ হাজার টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। বাজেটে গবেষণা বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছে মাত্র ১৫ কোটি ৫ লাখ টাকা, যা মোট ব্যয়ের ১ দশমিক ৬৪ শতাংশ। বাজেট পর্যালোচনায় দেখা যায়, এর সিংহভাগ খরচ হবে (৬৮ দশমিক ২৯ শতাংশ) শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতায়।
এই হচ্ছে আমাদের দেশে উচ্চশিক্ষায় গবেষণা খাতে ব্যয় বরাদ্দের চিত্র। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তো তবু কিছু টাকা ধরা হয়েছে, সরকারি-বেসরকারি অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আছে, যেখানে গবেষণায় কোনো টাকাই বরাদ্দ থাকে না! উচ্চশিক্ষায় গবেষণা খাতে কোনো বরাদ্দ না রাখার ঘটনা সম্ভবত বাংলাদেশেই প্রথম। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ হচ্ছে নতুন জ্ঞান ও তথ্যের অনুসন্ধান।
অথচ এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গবেষণা খাতে কোনো বরাদ্দ না রাখায় নতুন জ্ঞান কীভাবে তৈরি করবে? বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মৌলিক কাজই হচ্ছে গবেষণা করা। গবেষণাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (প্রাথমিক-মাধ্যমিক-কলেজ) পার্থক্য। অথচ বিশ্বের মানসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গবেষণাকে প্রাধান্য দিলেও আমাদের এখানে এ চিত্র উল্টো।
যদিও পৃথিবীর বেশির ভাগ দেশ ক্রিকেট খেলে না, তবু ক্রিকেট খেলিয়ে বিশ্বের প্রথম ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের নাম আছে। কিন্তু অঙ্ক, বিজ্ঞান গবেষণায় কি আছে? নম্বর থিওরি, ফিজিকস, অপটিকস, মেটামরফিক রক কিংবা ভূমিকম্প গবেষণায় কি আছে? আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ক্রিকেট ছাড়া কোনো ক্ষেত্রেই আমাদের কোনো অবস্থান ও কৃতিত্ব নেই। এমনকি বিনোদনের জগতেও নেই।
বিনোদন কিংবা ক্রীড়াজগতে আমাদের অবস্থান যেমনই হোক, তা নিয়ে বড় বেশি খেদ নেই। কেননা তাতে জাতি হিসেবে আমরা খুব বেশি উন্নতি বা অবনতির সীমায় পৌঁছাতে পারব না! আমাদের আফসোস একাডেমিশিয়ানদের নিয়ে, যাঁরা উচ্চশিক্ষার জগতে যুক্ত, বিশ্ববিদ্যালয় বা ইনস্টিটিউটগুলোতে পড়ানো এবং গবেষণার কাজে ব্যাপৃত। আন্তর্জাতিক মঞ্চে দাগ কাটার সুযোগ তাঁদেরই রয়েছে।
একাডেমিক প্রতিটি বিষয়কে ৮-১০টা করে প্রধান ভাগে ভাগ করা যাক। যেমন ফিজিকস। এর ভাগগুলো হতে পারে অপটিকস, সাউন্ড, স্ট্যাটিক ইলেকট্রিসিটি ইত্যাদি ইত্যাদি। অঙ্কের ভাগগুলো হতে পারে টপোলজি, অ্যালজেবরা, নম্বর থিওরি—এসব। উল্লিখিত বিষয়ে বাংলাদেশের গবেষকদের স্থান ঠিক কোথায়?
আমাদের উচ্চশিক্ষিত ছাত্রদের উজ্জ্বলতর অংশই পাড়ি দেন বিদেশে। সামান্য অংশ উচ্চতর শিক্ষার জন্য, আর বেশির ভাগই আরও ভালো, সমৃদ্ধ জীবনযাপনের আকাঙ্ক্ষায়। উচ্চশিক্ষায় বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করে আমরা মূলত আমেরিকা এবং সঙ্গে অন্য কিছু দেশকে বছরের পর বছর উপহার দিয়ে চলেছি কিছু ফিনিশড প্রোডাক্ট, যা তাদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নতিতে ব্যবহৃত হয়ে চলেছে।
আর কিছু ব্যতিক্রম বাদ দিলে আমরা আমাদের জন্য তৈরি করে চলেছি মূলত মধ্যমানের কিছু গবেষক, যাঁরা জ্ঞানকে ‘ফলদায়ক’ করার ক্ষেত্রে তেমন কোনো ভূমিকা পালন করতে পারছেন না। গবেষণা খাতে যতটুকু যা ব্যয় হচ্ছে তার অনেকাংশই অপচয় ছাড়া আর কিছু নয়। আমাদের দেশে গবেষণায় যেমন বরাদ্দ নেই, আবার কে কী বিষয়ে গবেষণা করবে, সে বিষয়ে কোনো সুষ্ঠু নিয়মনীতি ও দিকনির্দেশনাও নেই।
অথচ দেশের কল্যাণের জন্য আমাদের শিক্ষা-গবেষণায় অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। প্রয়োজন বিদেশে পাড়ি দিতে চাওয়া ছাত্রদের উজ্জ্বলতর অংশকে ধরে রাখা বা সময়মতো দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা; অন্তত তাঁদের মধ্যে যাঁরা উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার জগতে থাকতে চান তাঁদের। যাঁরা বিদেশে পাড়ি দেন তাঁদের সবাই যে ভীষণ ভালো, তা হয়তো নয়। কিন্তু যাঁরা প্রকৃতই ভীষণ ভালো, তাঁদের ফিরিয়ে আনার বিষয়টি ভেবে দেখা দরকার। এই ভীষণ ভালোরা যাঁরা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দাগ কাটতে পারবেন, প্রয়োজনে তাঁদের বেশি মাইনে ও সুবিধা দিতে হবে, তাঁরা বিদেশে থাকলে যা পেতেন দিতে হবে তা-ই।
মনে রাখতে হবে, শিক্ষার সঙ্গে গবেষণা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। গবেষণাহীন শিক্ষা কোনো দিন কাঙ্ক্ষিত ফল উপহার দিতে পারে না।
লেখক: গবেষক, কলামিস্ট

না, বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ ভালো করেনি। সেই ২০০৭ সাল থেকে টানা চারটি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ তিনের বৃত্তে ঘুরপাক খেয়েছে। চারটি বিশ্বকাপেই ছিল তিনটি করে জয়। সেই বৃত্ত ছিঁড়ে বেরোনোর মিশন ছিল এবার। কিন্তু তাতে সফলতা আসেনি; বরং অবনমন হয়েছে। তিনের বদলে এবার জয় দুটি! বাংলাদেশ জিতেছে কেবল আফগানিস্তান আর শ্রীলঙ্কার সঙ্গে। বাকি ম্যাচগুলোতে বাংলাদেশ একতরফাভাবে হেরেছে।
সবচেয়ে আলোচিত হার ছিল নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে। এই পরাজয় একটা অন্তঃসারশূন্য দলের ছবিই তুলে ধরেছে। ২৩০ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ডাচদের বিপক্ষে ন্যূনতম প্রতিদ্বন্দ্বিতাও গড়তে পারেনি বাংলাদেশ। গ্লানিমাখা এই হারের পর বাংলাদেশের সমর্থকদের উদ্দেশে একটা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন ক্রিকেট বিশ্লেষক ও ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলে। হার্শা দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশ ক্রিকেটকে অনুসরণ করে আসছেন। বাংলাদেশ ভালো করলে অনেকবারই তাঁর মুখে প্রশংসা শোনা গেছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট নিয়মিত অনুসরণের অভিজ্ঞতা থেকেই হার্শা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে সমর্থকদের উদ্দেশে একটা প্রশ্ন রেখেছেন, ‘বাংলাদেশকে কিছু কঠিন প্রশ্ন নিজেদের করতে হবে। বাংলাদেশি সমর্থকেরা আপনাদের মতে সাকিব, মুশফিক ও তামিমদের ব্যাচের পর আর সত্যিকার অর্থে কোনো বিশ্বমানের
খেলোয়াড় কি এসেছে?’
হঠাৎ হার্শার এই প্রশ্ন করার কারণ কী? হতে পারে লিটন দাস ও নাজমুল হোসেনদের এখনো বিশ্বমানের মনে করেন না এই ক্রিকেট বিশ্লেষক। ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় লিটনের। দীর্ঘ সময় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার পরও ধারাবাহিক হতে পারেননি লিটন। এবারের বিশ্বকাপেও বাংলাদেশের বড় ভরসার জায়গা ছিলেন তিনি। তবে নিজের কাজটা ঠিকঠাকভাবে করতে পারেননি। দুই ম্যাচে অর্ধশতক করে আশা জাগিয়েছিলেন। কিন্তু ওই দুটি ইনিংসকেই বড় শতকে রূপান্তর করতে পারেননি।
জাতীয় দলে নাজমুলের অভিষেক ২০১৭ সালে। অনেক দিন ধরেই একাদশে নিয়মিত নাজমুল। তবে তিনি এবারের বিশ্বকাপে ‘চূড়ান্তভাবে’ ব্যর্থ। আফগানিস্তান ম্যাচে ফিফটি করা নাজমুল পরের ম্যাচগুলোতে ভালো করতে পারেননি; যা পুরো দলকে ভুগিয়েছে।সাত বছর ধরে বাংলাদেশ দলে নিয়মিত খেলা মেহেদী হাসান মিরাজও এই বিশ্বকাপে তেমন কিছু করতে পারেননি। তৌহিদ হৃদয়, তাসকিন, মোস্তাফিজ প্রমুখ ক্রিকেটারের ওপরই ভরসা রেখে বিশ্বকাপে দারুণ কিছুর প্রত্যাশায় ছিলেন বাংলাদেশের সমর্থকেরা। কিন্তু তাঁরা সবাই ব্যর্থ।
পাকিস্তানের সাবেক ফাস্ট বোলার ওয়াসিম আকরামও বাংলাদেশ দলের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘২০ বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ টেস্ট খেলছে। গড়পড়তা পারফরম্যান্সও বাংলাদেশ করতে পারেনি। বিশ্বকাপে আসার আগে অনেক সমস্যার কথা শুনেছি, জানি না এর পেছনে রাজনীতি কী, কারণটা কী? দেশকে রাখতে হবে সবার আগে। ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ আর নিজেদের মধ্যে দূরত্ব থাকবে পরে।’
আকরাম আরও যোগ করেন, ‘বলছি না তাদের বিশ্বকাপ জেতা উচিত। তবে অন্তত বড় দলগুলোর সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করা উচিত। নতুন ব্যাটার খুঁজতে হবে। সবাই বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত, কীভাবে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট হবে, কোন উইকেটে হবে।’
সমালোচনার তিরে বিদ্ধ হওয়া ছাড়া ক্রিকেটে আমাদের আপাতত অন্য কোনো উপহার নেই। একের পর এক ব্যর্থতার চোরাবালিতে ডুবে যেতে থাকার পরও এ দেশের ক্রিকেট-সংশ্লিষ্ট কারও পক্ষে কি এই সমালোচনাগুলো থেকে ‘প্রকৃত শিক্ষা’ নেওয়া সম্ভব হবে? যদি সম্ভব না হয়, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে জাতীয় ক্রিকেট দলের কাছ থেকে একরাশ হতাশা ছাড়া আর কিছুই মিলবে না।
ক্রিকেটে আমরা এগোচ্ছি না বা এগোতে পারছি না। এটা একটা হতাশার দিক। তবে সবার আগে এ কথা মনে রাখা দরকার, ক্রিকেট দিয়ে দেশ এগোয় না। বড়জোর দেশের নাম ফাটে। দেশ এগোয় শিক্ষায়, গবেষণায়, উদ্ভাবনে। আমাদের জন্য সবচেয়ে গ্লানির দিক হচ্ছে—শিক্ষা, গবেষণা, উদ্ভাবনেও আমরা এগোচ্ছি না; বরং দিন দিন যেন পিছিয়ে পড়ছি।
গবেষণা ছাড়া শিক্ষাকে আর শিক্ষা ছাড়া দেশকে এগিয়ে নেওয়া অসম্ভব। পৃথিবীর সব দেশেই গবেষণাকে সবচেয়ে বেশি মূল্য দেওয়া হয়। কিন্তু আমরা সবচেয়ে কম মূল্য দিই গবেষণাকে। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও গবেষণা প্রধান বিষয় হিসেবে বিবেচিত হয় না।
উচ্চশিক্ষায় ইউজিসি ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার জন্য ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মূল বাজেটে ১৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। গত বছরের তুলনায় বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ২৪ কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে গবেষণা খাতে ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ ধরা হয়েছিল।
দেশের সবচেয়ে সেরা বিদ্যাপীঠের বাজেটের দিকে তাকালেও বিষয়টি স্পষ্ট হবে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ৯১৩ কোটি ৮৯ লাখ ৮৭ হাজার টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। বাজেটে গবেষণা বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছে মাত্র ১৫ কোটি ৫ লাখ টাকা, যা মোট ব্যয়ের ১ দশমিক ৬৪ শতাংশ। বাজেট পর্যালোচনায় দেখা যায়, এর সিংহভাগ খরচ হবে (৬৮ দশমিক ২৯ শতাংশ) শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতায়।
এই হচ্ছে আমাদের দেশে উচ্চশিক্ষায় গবেষণা খাতে ব্যয় বরাদ্দের চিত্র। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তো তবু কিছু টাকা ধরা হয়েছে, সরকারি-বেসরকারি অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আছে, যেখানে গবেষণায় কোনো টাকাই বরাদ্দ থাকে না! উচ্চশিক্ষায় গবেষণা খাতে কোনো বরাদ্দ না রাখার ঘটনা সম্ভবত বাংলাদেশেই প্রথম। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ হচ্ছে নতুন জ্ঞান ও তথ্যের অনুসন্ধান।
অথচ এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গবেষণা খাতে কোনো বরাদ্দ না রাখায় নতুন জ্ঞান কীভাবে তৈরি করবে? বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মৌলিক কাজই হচ্ছে গবেষণা করা। গবেষণাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (প্রাথমিক-মাধ্যমিক-কলেজ) পার্থক্য। অথচ বিশ্বের মানসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গবেষণাকে প্রাধান্য দিলেও আমাদের এখানে এ চিত্র উল্টো।
যদিও পৃথিবীর বেশির ভাগ দেশ ক্রিকেট খেলে না, তবু ক্রিকেট খেলিয়ে বিশ্বের প্রথম ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের নাম আছে। কিন্তু অঙ্ক, বিজ্ঞান গবেষণায় কি আছে? নম্বর থিওরি, ফিজিকস, অপটিকস, মেটামরফিক রক কিংবা ভূমিকম্প গবেষণায় কি আছে? আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ক্রিকেট ছাড়া কোনো ক্ষেত্রেই আমাদের কোনো অবস্থান ও কৃতিত্ব নেই। এমনকি বিনোদনের জগতেও নেই।
বিনোদন কিংবা ক্রীড়াজগতে আমাদের অবস্থান যেমনই হোক, তা নিয়ে বড় বেশি খেদ নেই। কেননা তাতে জাতি হিসেবে আমরা খুব বেশি উন্নতি বা অবনতির সীমায় পৌঁছাতে পারব না! আমাদের আফসোস একাডেমিশিয়ানদের নিয়ে, যাঁরা উচ্চশিক্ষার জগতে যুক্ত, বিশ্ববিদ্যালয় বা ইনস্টিটিউটগুলোতে পড়ানো এবং গবেষণার কাজে ব্যাপৃত। আন্তর্জাতিক মঞ্চে দাগ কাটার সুযোগ তাঁদেরই রয়েছে।
একাডেমিক প্রতিটি বিষয়কে ৮-১০টা করে প্রধান ভাগে ভাগ করা যাক। যেমন ফিজিকস। এর ভাগগুলো হতে পারে অপটিকস, সাউন্ড, স্ট্যাটিক ইলেকট্রিসিটি ইত্যাদি ইত্যাদি। অঙ্কের ভাগগুলো হতে পারে টপোলজি, অ্যালজেবরা, নম্বর থিওরি—এসব। উল্লিখিত বিষয়ে বাংলাদেশের গবেষকদের স্থান ঠিক কোথায়?
আমাদের উচ্চশিক্ষিত ছাত্রদের উজ্জ্বলতর অংশই পাড়ি দেন বিদেশে। সামান্য অংশ উচ্চতর শিক্ষার জন্য, আর বেশির ভাগই আরও ভালো, সমৃদ্ধ জীবনযাপনের আকাঙ্ক্ষায়। উচ্চশিক্ষায় বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করে আমরা মূলত আমেরিকা এবং সঙ্গে অন্য কিছু দেশকে বছরের পর বছর উপহার দিয়ে চলেছি কিছু ফিনিশড প্রোডাক্ট, যা তাদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নতিতে ব্যবহৃত হয়ে চলেছে।
আর কিছু ব্যতিক্রম বাদ দিলে আমরা আমাদের জন্য তৈরি করে চলেছি মূলত মধ্যমানের কিছু গবেষক, যাঁরা জ্ঞানকে ‘ফলদায়ক’ করার ক্ষেত্রে তেমন কোনো ভূমিকা পালন করতে পারছেন না। গবেষণা খাতে যতটুকু যা ব্যয় হচ্ছে তার অনেকাংশই অপচয় ছাড়া আর কিছু নয়। আমাদের দেশে গবেষণায় যেমন বরাদ্দ নেই, আবার কে কী বিষয়ে গবেষণা করবে, সে বিষয়ে কোনো সুষ্ঠু নিয়মনীতি ও দিকনির্দেশনাও নেই।
অথচ দেশের কল্যাণের জন্য আমাদের শিক্ষা-গবেষণায় অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। প্রয়োজন বিদেশে পাড়ি দিতে চাওয়া ছাত্রদের উজ্জ্বলতর অংশকে ধরে রাখা বা সময়মতো দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা; অন্তত তাঁদের মধ্যে যাঁরা উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার জগতে থাকতে চান তাঁদের। যাঁরা বিদেশে পাড়ি দেন তাঁদের সবাই যে ভীষণ ভালো, তা হয়তো নয়। কিন্তু যাঁরা প্রকৃতই ভীষণ ভালো, তাঁদের ফিরিয়ে আনার বিষয়টি ভেবে দেখা দরকার। এই ভীষণ ভালোরা যাঁরা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দাগ কাটতে পারবেন, প্রয়োজনে তাঁদের বেশি মাইনে ও সুবিধা দিতে হবে, তাঁরা বিদেশে থাকলে যা পেতেন দিতে হবে তা-ই।
মনে রাখতে হবে, শিক্ষার সঙ্গে গবেষণা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। গবেষণাহীন শিক্ষা কোনো দিন কাঙ্ক্ষিত ফল উপহার দিতে পারে না।
লেখক: গবেষক, কলামিস্ট
চিররঞ্জন সরকার

না, বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ ভালো করেনি। সেই ২০০৭ সাল থেকে টানা চারটি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ তিনের বৃত্তে ঘুরপাক খেয়েছে। চারটি বিশ্বকাপেই ছিল তিনটি করে জয়। সেই বৃত্ত ছিঁড়ে বেরোনোর মিশন ছিল এবার। কিন্তু তাতে সফলতা আসেনি; বরং অবনমন হয়েছে। তিনের বদলে এবার জয় দুটি! বাংলাদেশ জিতেছে কেবল আফগানিস্তান আর শ্রীলঙ্কার সঙ্গে। বাকি ম্যাচগুলোতে বাংলাদেশ একতরফাভাবে হেরেছে।
সবচেয়ে আলোচিত হার ছিল নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে। এই পরাজয় একটা অন্তঃসারশূন্য দলের ছবিই তুলে ধরেছে। ২৩০ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ডাচদের বিপক্ষে ন্যূনতম প্রতিদ্বন্দ্বিতাও গড়তে পারেনি বাংলাদেশ। গ্লানিমাখা এই হারের পর বাংলাদেশের সমর্থকদের উদ্দেশে একটা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন ক্রিকেট বিশ্লেষক ও ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলে। হার্শা দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশ ক্রিকেটকে অনুসরণ করে আসছেন। বাংলাদেশ ভালো করলে অনেকবারই তাঁর মুখে প্রশংসা শোনা গেছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট নিয়মিত অনুসরণের অভিজ্ঞতা থেকেই হার্শা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে সমর্থকদের উদ্দেশে একটা প্রশ্ন রেখেছেন, ‘বাংলাদেশকে কিছু কঠিন প্রশ্ন নিজেদের করতে হবে। বাংলাদেশি সমর্থকেরা আপনাদের মতে সাকিব, মুশফিক ও তামিমদের ব্যাচের পর আর সত্যিকার অর্থে কোনো বিশ্বমানের
খেলোয়াড় কি এসেছে?’
হঠাৎ হার্শার এই প্রশ্ন করার কারণ কী? হতে পারে লিটন দাস ও নাজমুল হোসেনদের এখনো বিশ্বমানের মনে করেন না এই ক্রিকেট বিশ্লেষক। ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় লিটনের। দীর্ঘ সময় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার পরও ধারাবাহিক হতে পারেননি লিটন। এবারের বিশ্বকাপেও বাংলাদেশের বড় ভরসার জায়গা ছিলেন তিনি। তবে নিজের কাজটা ঠিকঠাকভাবে করতে পারেননি। দুই ম্যাচে অর্ধশতক করে আশা জাগিয়েছিলেন। কিন্তু ওই দুটি ইনিংসকেই বড় শতকে রূপান্তর করতে পারেননি।
জাতীয় দলে নাজমুলের অভিষেক ২০১৭ সালে। অনেক দিন ধরেই একাদশে নিয়মিত নাজমুল। তবে তিনি এবারের বিশ্বকাপে ‘চূড়ান্তভাবে’ ব্যর্থ। আফগানিস্তান ম্যাচে ফিফটি করা নাজমুল পরের ম্যাচগুলোতে ভালো করতে পারেননি; যা পুরো দলকে ভুগিয়েছে।সাত বছর ধরে বাংলাদেশ দলে নিয়মিত খেলা মেহেদী হাসান মিরাজও এই বিশ্বকাপে তেমন কিছু করতে পারেননি। তৌহিদ হৃদয়, তাসকিন, মোস্তাফিজ প্রমুখ ক্রিকেটারের ওপরই ভরসা রেখে বিশ্বকাপে দারুণ কিছুর প্রত্যাশায় ছিলেন বাংলাদেশের সমর্থকেরা। কিন্তু তাঁরা সবাই ব্যর্থ।
পাকিস্তানের সাবেক ফাস্ট বোলার ওয়াসিম আকরামও বাংলাদেশ দলের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘২০ বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ টেস্ট খেলছে। গড়পড়তা পারফরম্যান্সও বাংলাদেশ করতে পারেনি। বিশ্বকাপে আসার আগে অনেক সমস্যার কথা শুনেছি, জানি না এর পেছনে রাজনীতি কী, কারণটা কী? দেশকে রাখতে হবে সবার আগে। ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ আর নিজেদের মধ্যে দূরত্ব থাকবে পরে।’
আকরাম আরও যোগ করেন, ‘বলছি না তাদের বিশ্বকাপ জেতা উচিত। তবে অন্তত বড় দলগুলোর সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করা উচিত। নতুন ব্যাটার খুঁজতে হবে। সবাই বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত, কীভাবে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট হবে, কোন উইকেটে হবে।’
সমালোচনার তিরে বিদ্ধ হওয়া ছাড়া ক্রিকেটে আমাদের আপাতত অন্য কোনো উপহার নেই। একের পর এক ব্যর্থতার চোরাবালিতে ডুবে যেতে থাকার পরও এ দেশের ক্রিকেট-সংশ্লিষ্ট কারও পক্ষে কি এই সমালোচনাগুলো থেকে ‘প্রকৃত শিক্ষা’ নেওয়া সম্ভব হবে? যদি সম্ভব না হয়, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে জাতীয় ক্রিকেট দলের কাছ থেকে একরাশ হতাশা ছাড়া আর কিছুই মিলবে না।
ক্রিকেটে আমরা এগোচ্ছি না বা এগোতে পারছি না। এটা একটা হতাশার দিক। তবে সবার আগে এ কথা মনে রাখা দরকার, ক্রিকেট দিয়ে দেশ এগোয় না। বড়জোর দেশের নাম ফাটে। দেশ এগোয় শিক্ষায়, গবেষণায়, উদ্ভাবনে। আমাদের জন্য সবচেয়ে গ্লানির দিক হচ্ছে—শিক্ষা, গবেষণা, উদ্ভাবনেও আমরা এগোচ্ছি না; বরং দিন দিন যেন পিছিয়ে পড়ছি।
গবেষণা ছাড়া শিক্ষাকে আর শিক্ষা ছাড়া দেশকে এগিয়ে নেওয়া অসম্ভব। পৃথিবীর সব দেশেই গবেষণাকে সবচেয়ে বেশি মূল্য দেওয়া হয়। কিন্তু আমরা সবচেয়ে কম মূল্য দিই গবেষণাকে। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও গবেষণা প্রধান বিষয় হিসেবে বিবেচিত হয় না।
উচ্চশিক্ষায় ইউজিসি ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার জন্য ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মূল বাজেটে ১৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। গত বছরের তুলনায় বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ২৪ কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে গবেষণা খাতে ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ ধরা হয়েছিল।
দেশের সবচেয়ে সেরা বিদ্যাপীঠের বাজেটের দিকে তাকালেও বিষয়টি স্পষ্ট হবে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ৯১৩ কোটি ৮৯ লাখ ৮৭ হাজার টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। বাজেটে গবেষণা বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছে মাত্র ১৫ কোটি ৫ লাখ টাকা, যা মোট ব্যয়ের ১ দশমিক ৬৪ শতাংশ। বাজেট পর্যালোচনায় দেখা যায়, এর সিংহভাগ খরচ হবে (৬৮ দশমিক ২৯ শতাংশ) শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতায়।
এই হচ্ছে আমাদের দেশে উচ্চশিক্ষায় গবেষণা খাতে ব্যয় বরাদ্দের চিত্র। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তো তবু কিছু টাকা ধরা হয়েছে, সরকারি-বেসরকারি অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আছে, যেখানে গবেষণায় কোনো টাকাই বরাদ্দ থাকে না! উচ্চশিক্ষায় গবেষণা খাতে কোনো বরাদ্দ না রাখার ঘটনা সম্ভবত বাংলাদেশেই প্রথম। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ হচ্ছে নতুন জ্ঞান ও তথ্যের অনুসন্ধান।
অথচ এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গবেষণা খাতে কোনো বরাদ্দ না রাখায় নতুন জ্ঞান কীভাবে তৈরি করবে? বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মৌলিক কাজই হচ্ছে গবেষণা করা। গবেষণাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (প্রাথমিক-মাধ্যমিক-কলেজ) পার্থক্য। অথচ বিশ্বের মানসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গবেষণাকে প্রাধান্য দিলেও আমাদের এখানে এ চিত্র উল্টো।
যদিও পৃথিবীর বেশির ভাগ দেশ ক্রিকেট খেলে না, তবু ক্রিকেট খেলিয়ে বিশ্বের প্রথম ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের নাম আছে। কিন্তু অঙ্ক, বিজ্ঞান গবেষণায় কি আছে? নম্বর থিওরি, ফিজিকস, অপটিকস, মেটামরফিক রক কিংবা ভূমিকম্প গবেষণায় কি আছে? আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ক্রিকেট ছাড়া কোনো ক্ষেত্রেই আমাদের কোনো অবস্থান ও কৃতিত্ব নেই। এমনকি বিনোদনের জগতেও নেই।
বিনোদন কিংবা ক্রীড়াজগতে আমাদের অবস্থান যেমনই হোক, তা নিয়ে বড় বেশি খেদ নেই। কেননা তাতে জাতি হিসেবে আমরা খুব বেশি উন্নতি বা অবনতির সীমায় পৌঁছাতে পারব না! আমাদের আফসোস একাডেমিশিয়ানদের নিয়ে, যাঁরা উচ্চশিক্ষার জগতে যুক্ত, বিশ্ববিদ্যালয় বা ইনস্টিটিউটগুলোতে পড়ানো এবং গবেষণার কাজে ব্যাপৃত। আন্তর্জাতিক মঞ্চে দাগ কাটার সুযোগ তাঁদেরই রয়েছে।
একাডেমিক প্রতিটি বিষয়কে ৮-১০টা করে প্রধান ভাগে ভাগ করা যাক। যেমন ফিজিকস। এর ভাগগুলো হতে পারে অপটিকস, সাউন্ড, স্ট্যাটিক ইলেকট্রিসিটি ইত্যাদি ইত্যাদি। অঙ্কের ভাগগুলো হতে পারে টপোলজি, অ্যালজেবরা, নম্বর থিওরি—এসব। উল্লিখিত বিষয়ে বাংলাদেশের গবেষকদের স্থান ঠিক কোথায়?
আমাদের উচ্চশিক্ষিত ছাত্রদের উজ্জ্বলতর অংশই পাড়ি দেন বিদেশে। সামান্য অংশ উচ্চতর শিক্ষার জন্য, আর বেশির ভাগই আরও ভালো, সমৃদ্ধ জীবনযাপনের আকাঙ্ক্ষায়। উচ্চশিক্ষায় বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করে আমরা মূলত আমেরিকা এবং সঙ্গে অন্য কিছু দেশকে বছরের পর বছর উপহার দিয়ে চলেছি কিছু ফিনিশড প্রোডাক্ট, যা তাদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নতিতে ব্যবহৃত হয়ে চলেছে।
আর কিছু ব্যতিক্রম বাদ দিলে আমরা আমাদের জন্য তৈরি করে চলেছি মূলত মধ্যমানের কিছু গবেষক, যাঁরা জ্ঞানকে ‘ফলদায়ক’ করার ক্ষেত্রে তেমন কোনো ভূমিকা পালন করতে পারছেন না। গবেষণা খাতে যতটুকু যা ব্যয় হচ্ছে তার অনেকাংশই অপচয় ছাড়া আর কিছু নয়। আমাদের দেশে গবেষণায় যেমন বরাদ্দ নেই, আবার কে কী বিষয়ে গবেষণা করবে, সে বিষয়ে কোনো সুষ্ঠু নিয়মনীতি ও দিকনির্দেশনাও নেই।
অথচ দেশের কল্যাণের জন্য আমাদের শিক্ষা-গবেষণায় অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। প্রয়োজন বিদেশে পাড়ি দিতে চাওয়া ছাত্রদের উজ্জ্বলতর অংশকে ধরে রাখা বা সময়মতো দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা; অন্তত তাঁদের মধ্যে যাঁরা উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার জগতে থাকতে চান তাঁদের। যাঁরা বিদেশে পাড়ি দেন তাঁদের সবাই যে ভীষণ ভালো, তা হয়তো নয়। কিন্তু যাঁরা প্রকৃতই ভীষণ ভালো, তাঁদের ফিরিয়ে আনার বিষয়টি ভেবে দেখা দরকার। এই ভীষণ ভালোরা যাঁরা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দাগ কাটতে পারবেন, প্রয়োজনে তাঁদের বেশি মাইনে ও সুবিধা দিতে হবে, তাঁরা বিদেশে থাকলে যা পেতেন দিতে হবে তা-ই।
মনে রাখতে হবে, শিক্ষার সঙ্গে গবেষণা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। গবেষণাহীন শিক্ষা কোনো দিন কাঙ্ক্ষিত ফল উপহার দিতে পারে না।
লেখক: গবেষক, কলামিস্ট

না, বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ ভালো করেনি। সেই ২০০৭ সাল থেকে টানা চারটি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ তিনের বৃত্তে ঘুরপাক খেয়েছে। চারটি বিশ্বকাপেই ছিল তিনটি করে জয়। সেই বৃত্ত ছিঁড়ে বেরোনোর মিশন ছিল এবার। কিন্তু তাতে সফলতা আসেনি; বরং অবনমন হয়েছে। তিনের বদলে এবার জয় দুটি! বাংলাদেশ জিতেছে কেবল আফগানিস্তান আর শ্রীলঙ্কার সঙ্গে। বাকি ম্যাচগুলোতে বাংলাদেশ একতরফাভাবে হেরেছে।
সবচেয়ে আলোচিত হার ছিল নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে। এই পরাজয় একটা অন্তঃসারশূন্য দলের ছবিই তুলে ধরেছে। ২৩০ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ডাচদের বিপক্ষে ন্যূনতম প্রতিদ্বন্দ্বিতাও গড়তে পারেনি বাংলাদেশ। গ্লানিমাখা এই হারের পর বাংলাদেশের সমর্থকদের উদ্দেশে একটা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন ক্রিকেট বিশ্লেষক ও ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলে। হার্শা দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশ ক্রিকেটকে অনুসরণ করে আসছেন। বাংলাদেশ ভালো করলে অনেকবারই তাঁর মুখে প্রশংসা শোনা গেছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট নিয়মিত অনুসরণের অভিজ্ঞতা থেকেই হার্শা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে সমর্থকদের উদ্দেশে একটা প্রশ্ন রেখেছেন, ‘বাংলাদেশকে কিছু কঠিন প্রশ্ন নিজেদের করতে হবে। বাংলাদেশি সমর্থকেরা আপনাদের মতে সাকিব, মুশফিক ও তামিমদের ব্যাচের পর আর সত্যিকার অর্থে কোনো বিশ্বমানের
খেলোয়াড় কি এসেছে?’
হঠাৎ হার্শার এই প্রশ্ন করার কারণ কী? হতে পারে লিটন দাস ও নাজমুল হোসেনদের এখনো বিশ্বমানের মনে করেন না এই ক্রিকেট বিশ্লেষক। ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় লিটনের। দীর্ঘ সময় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার পরও ধারাবাহিক হতে পারেননি লিটন। এবারের বিশ্বকাপেও বাংলাদেশের বড় ভরসার জায়গা ছিলেন তিনি। তবে নিজের কাজটা ঠিকঠাকভাবে করতে পারেননি। দুই ম্যাচে অর্ধশতক করে আশা জাগিয়েছিলেন। কিন্তু ওই দুটি ইনিংসকেই বড় শতকে রূপান্তর করতে পারেননি।
জাতীয় দলে নাজমুলের অভিষেক ২০১৭ সালে। অনেক দিন ধরেই একাদশে নিয়মিত নাজমুল। তবে তিনি এবারের বিশ্বকাপে ‘চূড়ান্তভাবে’ ব্যর্থ। আফগানিস্তান ম্যাচে ফিফটি করা নাজমুল পরের ম্যাচগুলোতে ভালো করতে পারেননি; যা পুরো দলকে ভুগিয়েছে।সাত বছর ধরে বাংলাদেশ দলে নিয়মিত খেলা মেহেদী হাসান মিরাজও এই বিশ্বকাপে তেমন কিছু করতে পারেননি। তৌহিদ হৃদয়, তাসকিন, মোস্তাফিজ প্রমুখ ক্রিকেটারের ওপরই ভরসা রেখে বিশ্বকাপে দারুণ কিছুর প্রত্যাশায় ছিলেন বাংলাদেশের সমর্থকেরা। কিন্তু তাঁরা সবাই ব্যর্থ।
পাকিস্তানের সাবেক ফাস্ট বোলার ওয়াসিম আকরামও বাংলাদেশ দলের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘২০ বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ টেস্ট খেলছে। গড়পড়তা পারফরম্যান্সও বাংলাদেশ করতে পারেনি। বিশ্বকাপে আসার আগে অনেক সমস্যার কথা শুনেছি, জানি না এর পেছনে রাজনীতি কী, কারণটা কী? দেশকে রাখতে হবে সবার আগে। ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ আর নিজেদের মধ্যে দূরত্ব থাকবে পরে।’
আকরাম আরও যোগ করেন, ‘বলছি না তাদের বিশ্বকাপ জেতা উচিত। তবে অন্তত বড় দলগুলোর সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করা উচিত। নতুন ব্যাটার খুঁজতে হবে। সবাই বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত, কীভাবে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট হবে, কোন উইকেটে হবে।’
সমালোচনার তিরে বিদ্ধ হওয়া ছাড়া ক্রিকেটে আমাদের আপাতত অন্য কোনো উপহার নেই। একের পর এক ব্যর্থতার চোরাবালিতে ডুবে যেতে থাকার পরও এ দেশের ক্রিকেট-সংশ্লিষ্ট কারও পক্ষে কি এই সমালোচনাগুলো থেকে ‘প্রকৃত শিক্ষা’ নেওয়া সম্ভব হবে? যদি সম্ভব না হয়, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে জাতীয় ক্রিকেট দলের কাছ থেকে একরাশ হতাশা ছাড়া আর কিছুই মিলবে না।
ক্রিকেটে আমরা এগোচ্ছি না বা এগোতে পারছি না। এটা একটা হতাশার দিক। তবে সবার আগে এ কথা মনে রাখা দরকার, ক্রিকেট দিয়ে দেশ এগোয় না। বড়জোর দেশের নাম ফাটে। দেশ এগোয় শিক্ষায়, গবেষণায়, উদ্ভাবনে। আমাদের জন্য সবচেয়ে গ্লানির দিক হচ্ছে—শিক্ষা, গবেষণা, উদ্ভাবনেও আমরা এগোচ্ছি না; বরং দিন দিন যেন পিছিয়ে পড়ছি।
গবেষণা ছাড়া শিক্ষাকে আর শিক্ষা ছাড়া দেশকে এগিয়ে নেওয়া অসম্ভব। পৃথিবীর সব দেশেই গবেষণাকে সবচেয়ে বেশি মূল্য দেওয়া হয়। কিন্তু আমরা সবচেয়ে কম মূল্য দিই গবেষণাকে। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও গবেষণা প্রধান বিষয় হিসেবে বিবেচিত হয় না।
উচ্চশিক্ষায় ইউজিসি ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার জন্য ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মূল বাজেটে ১৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। গত বছরের তুলনায় বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ২৪ কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে গবেষণা খাতে ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ ধরা হয়েছিল।
দেশের সবচেয়ে সেরা বিদ্যাপীঠের বাজেটের দিকে তাকালেও বিষয়টি স্পষ্ট হবে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ৯১৩ কোটি ৮৯ লাখ ৮৭ হাজার টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। বাজেটে গবেষণা বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছে মাত্র ১৫ কোটি ৫ লাখ টাকা, যা মোট ব্যয়ের ১ দশমিক ৬৪ শতাংশ। বাজেট পর্যালোচনায় দেখা যায়, এর সিংহভাগ খরচ হবে (৬৮ দশমিক ২৯ শতাংশ) শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতায়।
এই হচ্ছে আমাদের দেশে উচ্চশিক্ষায় গবেষণা খাতে ব্যয় বরাদ্দের চিত্র। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তো তবু কিছু টাকা ধরা হয়েছে, সরকারি-বেসরকারি অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আছে, যেখানে গবেষণায় কোনো টাকাই বরাদ্দ থাকে না! উচ্চশিক্ষায় গবেষণা খাতে কোনো বরাদ্দ না রাখার ঘটনা সম্ভবত বাংলাদেশেই প্রথম। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ হচ্ছে নতুন জ্ঞান ও তথ্যের অনুসন্ধান।
অথচ এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গবেষণা খাতে কোনো বরাদ্দ না রাখায় নতুন জ্ঞান কীভাবে তৈরি করবে? বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মৌলিক কাজই হচ্ছে গবেষণা করা। গবেষণাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (প্রাথমিক-মাধ্যমিক-কলেজ) পার্থক্য। অথচ বিশ্বের মানসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গবেষণাকে প্রাধান্য দিলেও আমাদের এখানে এ চিত্র উল্টো।
যদিও পৃথিবীর বেশির ভাগ দেশ ক্রিকেট খেলে না, তবু ক্রিকেট খেলিয়ে বিশ্বের প্রথম ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের নাম আছে। কিন্তু অঙ্ক, বিজ্ঞান গবেষণায় কি আছে? নম্বর থিওরি, ফিজিকস, অপটিকস, মেটামরফিক রক কিংবা ভূমিকম্প গবেষণায় কি আছে? আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ক্রিকেট ছাড়া কোনো ক্ষেত্রেই আমাদের কোনো অবস্থান ও কৃতিত্ব নেই। এমনকি বিনোদনের জগতেও নেই।
বিনোদন কিংবা ক্রীড়াজগতে আমাদের অবস্থান যেমনই হোক, তা নিয়ে বড় বেশি খেদ নেই। কেননা তাতে জাতি হিসেবে আমরা খুব বেশি উন্নতি বা অবনতির সীমায় পৌঁছাতে পারব না! আমাদের আফসোস একাডেমিশিয়ানদের নিয়ে, যাঁরা উচ্চশিক্ষার জগতে যুক্ত, বিশ্ববিদ্যালয় বা ইনস্টিটিউটগুলোতে পড়ানো এবং গবেষণার কাজে ব্যাপৃত। আন্তর্জাতিক মঞ্চে দাগ কাটার সুযোগ তাঁদেরই রয়েছে।
একাডেমিক প্রতিটি বিষয়কে ৮-১০টা করে প্রধান ভাগে ভাগ করা যাক। যেমন ফিজিকস। এর ভাগগুলো হতে পারে অপটিকস, সাউন্ড, স্ট্যাটিক ইলেকট্রিসিটি ইত্যাদি ইত্যাদি। অঙ্কের ভাগগুলো হতে পারে টপোলজি, অ্যালজেবরা, নম্বর থিওরি—এসব। উল্লিখিত বিষয়ে বাংলাদেশের গবেষকদের স্থান ঠিক কোথায়?
আমাদের উচ্চশিক্ষিত ছাত্রদের উজ্জ্বলতর অংশই পাড়ি দেন বিদেশে। সামান্য অংশ উচ্চতর শিক্ষার জন্য, আর বেশির ভাগই আরও ভালো, সমৃদ্ধ জীবনযাপনের আকাঙ্ক্ষায়। উচ্চশিক্ষায় বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করে আমরা মূলত আমেরিকা এবং সঙ্গে অন্য কিছু দেশকে বছরের পর বছর উপহার দিয়ে চলেছি কিছু ফিনিশড প্রোডাক্ট, যা তাদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নতিতে ব্যবহৃত হয়ে চলেছে।
আর কিছু ব্যতিক্রম বাদ দিলে আমরা আমাদের জন্য তৈরি করে চলেছি মূলত মধ্যমানের কিছু গবেষক, যাঁরা জ্ঞানকে ‘ফলদায়ক’ করার ক্ষেত্রে তেমন কোনো ভূমিকা পালন করতে পারছেন না। গবেষণা খাতে যতটুকু যা ব্যয় হচ্ছে তার অনেকাংশই অপচয় ছাড়া আর কিছু নয়। আমাদের দেশে গবেষণায় যেমন বরাদ্দ নেই, আবার কে কী বিষয়ে গবেষণা করবে, সে বিষয়ে কোনো সুষ্ঠু নিয়মনীতি ও দিকনির্দেশনাও নেই।
অথচ দেশের কল্যাণের জন্য আমাদের শিক্ষা-গবেষণায় অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। প্রয়োজন বিদেশে পাড়ি দিতে চাওয়া ছাত্রদের উজ্জ্বলতর অংশকে ধরে রাখা বা সময়মতো দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা; অন্তত তাঁদের মধ্যে যাঁরা উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার জগতে থাকতে চান তাঁদের। যাঁরা বিদেশে পাড়ি দেন তাঁদের সবাই যে ভীষণ ভালো, তা হয়তো নয়। কিন্তু যাঁরা প্রকৃতই ভীষণ ভালো, তাঁদের ফিরিয়ে আনার বিষয়টি ভেবে দেখা দরকার। এই ভীষণ ভালোরা যাঁরা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দাগ কাটতে পারবেন, প্রয়োজনে তাঁদের বেশি মাইনে ও সুবিধা দিতে হবে, তাঁরা বিদেশে থাকলে যা পেতেন দিতে হবে তা-ই।
মনে রাখতে হবে, শিক্ষার সঙ্গে গবেষণা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। গবেষণাহীন শিক্ষা কোনো দিন কাঙ্ক্ষিত ফল উপহার দিতে পারে না।
লেখক: গবেষক, কলামিস্ট

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

না, বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ ভালো করেনি। সেই ২০০৭ সাল থেকে টানা চারটি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ তিনের বৃত্তে ঘুরপাক খেয়েছে। চারটি বিশ্বকাপেই ছিল তিনটি করে জয়। সেই বৃত্ত ছিঁড়ে বেরোনোর মিশন ছিল এবার। কিন্তু তাতে সফলতা আসেনি; বরং অবনমন হয়েছে। তিনের বদলে এবার জয় দুটি! বাংলাদেশ জিতেছে কেবল আফগানিস্তান আর শ্রী
১৪ নভেম্বর ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

না, বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ ভালো করেনি। সেই ২০০৭ সাল থেকে টানা চারটি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ তিনের বৃত্তে ঘুরপাক খেয়েছে। চারটি বিশ্বকাপেই ছিল তিনটি করে জয়। সেই বৃত্ত ছিঁড়ে বেরোনোর মিশন ছিল এবার। কিন্তু তাতে সফলতা আসেনি; বরং অবনমন হয়েছে। তিনের বদলে এবার জয় দুটি! বাংলাদেশ জিতেছে কেবল আফগানিস্তান আর শ্রী
১৪ নভেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

না, বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ ভালো করেনি। সেই ২০০৭ সাল থেকে টানা চারটি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ তিনের বৃত্তে ঘুরপাক খেয়েছে। চারটি বিশ্বকাপেই ছিল তিনটি করে জয়। সেই বৃত্ত ছিঁড়ে বেরোনোর মিশন ছিল এবার। কিন্তু তাতে সফলতা আসেনি; বরং অবনমন হয়েছে। তিনের বদলে এবার জয় দুটি! বাংলাদেশ জিতেছে কেবল আফগানিস্তান আর শ্রী
১৪ নভেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

না, বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ ভালো করেনি। সেই ২০০৭ সাল থেকে টানা চারটি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ তিনের বৃত্তে ঘুরপাক খেয়েছে। চারটি বিশ্বকাপেই ছিল তিনটি করে জয়। সেই বৃত্ত ছিঁড়ে বেরোনোর মিশন ছিল এবার। কিন্তু তাতে সফলতা আসেনি; বরং অবনমন হয়েছে। তিনের বদলে এবার জয় দুটি! বাংলাদেশ জিতেছে কেবল আফগানিস্তান আর শ্রী
১৪ নভেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫