জাহীদ রেজা নূর

আমাদের দেশে নির্বাচনী মাঠে প্রতিপক্ষকে দমননিপীড়ন করার ঐতিহ্য আজকের নয়। আইয়ুব খানের আমল থেকে ধরলে দেখা যায়, ১৯৬৫ সালের জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় বিরোধীপক্ষের কর্মীদের তুমুলভাবে দমননিপীড়ন করা হয়েছিল। তাতে ভোটের মাঠে নিজেদের কর্তৃত্ব রাখার পথ সুগম হয়েছিল।
আইয়ুব খানের বিচিত্র সৃষ্টি মৌলিক গণতন্ত্রীরাই তৎকালীন দুই পাকিস্তানে ভোট দিয়েছিলেন বটে, কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানের করাচি এবং পূর্ব পাকিস্তানের ঢাকায় আইয়ুব খানের চেয়ে বেশি ভোট পেয়েছিলেন মিস ফাতেমা জিন্নাহ। এতে ভীষণ রকম খেপে গিয়েছিলেন আইয়ুবশাহি। করাচির বিভিন্ন জায়গায় অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ইত্যাদি চালানো হয়েছিল স্বয়ং আইয়ুব খানের ছেলে গওহর আইয়ুবের নেতৃত্বে।
পাকিস্তানের রাজনীতিতে নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতার জনকও বোধ হয় আইয়ুব খান। খুবই অবাক করা বিষয় হলো, এই নির্বাচনে মিস ফাতেমা জিন্নাহর হয়ে ন্যাপের পক্ষ থেকে মাওলানা ভাসানীর প্রচারণা চালানোর কথা ছিল উত্তরবঙ্গে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রচারণা চালানো হয়েছিল ঢাকা ও চট্টগ্রামে। কেন আওয়ামী লীগকে পূর্ববঙ্গের দুটো বিভাগে প্রচারণা চালানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল এ নিয়ে ভাসানী সাহেবের দলের আপত্তি ছিল। তাই তিনি একবারের জন্যও উত্তরবঙ্গে গিয়ে মিস ফাতেমা জিন্নাহর হয়ে ভোট চাননি। এতে আইয়ুব খানের সঙ্গে মাওলানা ভাসানীর কোনো আঁতাত হয়েছিল কি না, তা নিয়ে একধরনের জল্পনা-কল্পনার সৃষ্টি হয়েছিল। সে সময় যদি সম্মিলিত বিরোধী দলের ঐক্য বজায় থাকত, তাহলে আইয়ুব খানের প্রতি অনাস্থার বিষয়টি সহজেই প্রমাণিত হতে পারত বলে অনেকে মনে করেন। আইয়ুব খানের তৈরি মৌলিক গণতন্ত্রীদের অনেকেই তখন ফাতেমা জিন্নাহকে ভোট দিয়েছিলেন।
১৯৭০ সালে পাকিস্তানে যে সাধারণ নির্বাচন হয়, তাতে জনগণের ভোট দেওয়ার পথ সুগম হয়। এবার আর মৌলিক গণতন্ত্রীরা ভোট দেননি; বরং সাধারণ জনগণ তার নিজের ভোট প্রয়োগ করতে পেরেছিলেন। ইদানীং কেউ কেউ বলার চেষ্টা করছেন যে সেই নির্বাচনেও কারচুপি হয়েছিল। এই হঠাৎ ‘হয়ে ওঠা’ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, নির্বাচনের সময় এবং নির্বাচন-পরবর্তীকালে নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে, এ রকম অভিযোগ কোনো পক্ষ থেকেই করা হয়নি। নির্বাচনের ফলাফল এ রকম হওয়ার একটা বড় কারণ ছিল এই, জাতি তত দিনে ঠিক করে ফেলেছিল, কে হবে তাদের মূল নেতা। নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে ভাসানী ন্যাপ যে দোদুল্যমানতার পরিচয় দিয়েছে, সেখানেও ভাসানী-ইয়াহিয়ার মধ্যে কোনো সমঝোতা হয়েছিল কি না, সে প্রশ্ন উঠেছিল। আওয়ামী লীগ ছাড়াও পূর্ব পাকিস্তানে ভাসানী ন্যাপের জনপ্রিয়তা ছিল। কেন তারা নির্বাচনে অংশ নিল না, তা নিয়ে ব্যাপক গবেষণা হওয়া দরকার।
১৯৭৩ সালে যে নির্বাচন হয়েছিল তাতে কারচুপির বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছিল বলে লেখালেখি হয়েছে। জ্ঞানতাপস আব্দুর রাজ্জাক বঙ্গবন্ধুকে বলেছিলেন বিরোধী দলকে এক শর মতো আসন ছেড়ে দিতে। কিন্তু নির্বাচনের ফলাফলে দেখা গেল সংসদে বিরোধীদের প্রায় ঠাঁই নেই বললেই চলে। সে সময় গণতন্ত্র পোক্ত করার একটি সুযোগ সৃষ্টি হতে পারত অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান করার মাধ্যমে।কিন্তু সে সময়কার রাজনৈতিক পরিস্থিতি, নানা ধরনের অব্যবস্থা, সরকারের পিঠে ছুরি মারার ষড়যন্ত্র ইত্যাদির মিশেলে যে নির্বাচন হয়েছে, তা খুব গণতান্ত্রিক উপায়ে হয়েছে, সেটা বলা যাবে না। গণতন্ত্র তাতে প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছে।
খন্দকার মোশতাক আহমদ ক্ষমতায় ছিলেন ৮২ দিন। এই সময়কালে তিনি দেশের পাকিস্তানীকরণের ক্ষেত্রে যে দুটি বড় কাজ করেছিলেন, তার একটি হলো জেল হত্যা এবং অপরটি হলো ১৫ আগস্টের খুনিদের বিচার করা যাবে না—এই মর্মে একটি ইনডেমনিটি বা দায়মুক্তির অধ্যাদেশ জারি করা।
এরপর বেশ কিছু ঘটনার মাধ্যমে ক্ষমতার হাতবদল হতে হতে একসময় জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসীন হন। তিনি শেখ মুজিবের মতো তাঁর চারপাশে কোনো ফাঁকফোকর রাখেননি। তিনি সে সময় ছিলেন প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক, ছিলেন সেনাপ্রধান, ছিলেন চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ; অর্থাৎ মোট চারটি গুরুত্বপূর্ণ পথ দখল করে রাখলেন তিনি।
১৯৭৭ সালের মে মাসে তিনি আন্তর্জাতিক অনুমোদনের জন্য একটি গণভোটের ব্যবস্থা করেছিলেন। সেই গণভোটে তিনি পেয়েছিলেন শতকরা ৯৮.৯ ভাগ ভোট। এটা যে স্বয়ং জিয়াউর রহমানের জন্য বিব্রতকর ছিল সে কথা বলার অপেক্ষায় রাখে না। কর্মকর্তাদের বলা হয়েছিল ভোটদাতার সংখ্যা যেন মোট ভোটদাতার শতকরা ৭০ ভাগের বেশি না হয়। কিন্তু অতি উৎসাহী কর্মকর্তারা নিজেদের উৎসাহ এবং দক্ষতা প্রমাণ করার জন্য ভেলকি দেখিয়েছিলেন। শতকরা ৮৮.৫ ভাগ ভোট পড়েছিল এই সুপরিকল্পিত নির্বাচনে।
১৯৭৮ সালের ৩ জুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ওসমানীকে দেওয়া হয় ২১.৭ ভাগ ভোট আর জিয়াউর রহমানের ভাগে পড়ে ৭৬.৭ ভাগ ভোট। কারচুপি হয়েছিল কি না, সে কথা না বলে আমরা বরং বলতে পারি ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছিল বিকেল ৫টায়, আর কেরানীগঞ্জের একটি ভোটকেন্দ্রের ফলাফল বেতারে প্রচারিত হয়েছিল সাড়ে ৫টার আগেই।
জিয়াউর রহমানের শাসনামলের দিকে দৃষ্টি দিলে দেখা যাবে, তিনি যে গণভোটের আয়োজন করেছিলেন, তার সঙ্গে আইয়ুব খানের নির্বাচনী মেজাজের বেশ মিল আছে। অনেক ক্ষেত্রেই তিনি আইয়ুব খানের দেখানো পথ ধরে হেঁটেছেন। শেখ মুজিবের সমাজবাদী অর্থনীতির জায়গায় তিনি ব্যক্তিমালিকানা বা ফ্রি এন্টারপ্রাইজের জয়গান করলেন।
এরশাদ আমলের নির্বাচন নিয়ে কথা বলার কোনো মানে নেই। এরশাদ তাঁর স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থা এমনভাবে চালিয়েছিলেন যে তাঁর আমলে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না।
এরশাদ-পরবর্তী গণতন্ত্রের যুগে বিএনপি আমলের একটি নির্বাচনের উল্লেখ করাই যথেষ্ট। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির সেই নির্বাচন প্রমাণ করেছে, কারচুপির সুযোগ পেলে বিএনপি তা হাতছাড়া করে না। সেই নির্বাচনে ভোট পড়েছিল ২১ শতাংশ। বিএনপি ৩০০ আসনের মধ্যে ২৭৮টি আসন লাভ করেছিল। আওয়ামী লীগ নির্বাচন বর্জন করেছিল।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলের নির্বাচনগুলোই বরং অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য ছিল। কিন্তু ২০০৬ সালে ক্ষমতা ছাড়ার আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে বিএনপি যে নির্বাচনী পরিকল্পনা করেছিল, তাতে এই ব্যবস্থায় সত্যিই আর অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছিল। এরপর ক্ষমতায় থেকে ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগ যে নির্বাচন করেছিল, সেই নির্বাচনকেও প্রহসনের নির্বাচন বললে অত্যুক্তি হবে না।
২. নির্বাচন মানেই গণতন্ত্র নয়। কিন্তু গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রয়োজন রয়েছে। বিগত সময়ে আমরা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করে তুলতে পেরেছি বলে মনে হয় না। জোর যার মুল্লুক তার—এই প্রবাদবাক্যই হয়ে উঠেছে আমাদের গণতন্ত্রের একধরনের সংজ্ঞা। তাই মুখে যতই গণতন্ত্রের বুলি কপচানো হোক না কেন, আদতে আমাদের দলের মধ্যেই গণতন্ত্র নেই, তাই ব্যাপক অর্থে গণতন্ত্রের লালন-পালন করার যে স্বপ্ন দেখা হয়, তার মধ্যে সত্য রয়েছে কম।
এ রকম একটা বাস্তবতা নিয়েই বারবার নির্বাচন আসে। যে দলগুলো নির্বাচনে অংশ নেয়, তারা প্রত্যেকেই জয়ী হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে। যে দল পরাজিত হয়, সেই দল অবধারিতভাবেই নির্বাচনে কারচুপির কথা বলে। যে দল জয়ী হয় তারা বলে যে জনতার জয় হয়েছে।এর ব্যত্যয় ঘটে না।
রাজনীতি যখন থেকে আখের গোছানোর বড় মাধ্যম হয়ে পড়েছে, তখন থেকে রাজনীতির মাধ্যমে জনসেবা নয়, নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার দিকেই মন দিয়েছেন জননেতারা। ফলে আত্মত্যাগী নেতারা রাজনৈতিক মঞ্চ থেকে ধীরে ধীরে নির্বাসিত হয়েছেন এবং তাঁদের জায়গায় উঠে এসেছেন সুযোগসন্ধানী ব্যবসায়ী এবং পেশিশক্তির অধিকারীরা। এ রকম একটা জায়গায় যখন রাজনীতি এসে দাঁড়ায়, তখন সুষ্ঠু নির্বাচন তার গুরুত্ব হারায়।
শুধু ভোটের ব্যাপারেই চিন্তা-ভাবনা না করে নির্বাচন এবং নির্বাচন-পরবর্তী সময় দেশের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডকে কীভাবে জনকল্যাণে ব্যয় করা যাবে—সেটা নিয়েই আলোচনায় বসা দরকার।
খেয়াল করলেই দেখা যাবে, দেশ আজ নেতৃত্বশূন্যতায় ভুগছে। যে নেতাদের পেছনে একসময় দাঁড়াত মানুষ, তাঁদের অনেকেই মারা গেছেন কিংবা রাজনৈতিকভাবে আর ততটা সক্রিয় নন। নতুন যাঁরা নেতৃত্ব উঠে এসেছেন, তাঁরা কতটা জনসম্পৃক্ত, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। তাই একদলকে ক্ষমতাচ্যুত করে আরেক দল ক্ষমতায় এলে জনগণের খুব লাভ হবে, এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই। যে যায় লঙ্কায় সেই হয় রাবণ।
এই যে রাজনৈতিক অঙ্গনে অন্ধকারের অতলান্ত দেখতে পাচ্ছি আমরা, তা থেকে মুক্ত হতে হলে যে রাজনীতির প্রয়োজন, সেই রাজনীতির সন্ধান আমরা কবে পেতে পারি, সে আশঙ্কা এখনো কাটেনি।
গণতন্ত্রমনা হওয়ার জন্য যে প্রস্তুতি থাকা দরকার, তার কোনো চর্চা আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে খুব একটা আছে বলে মনে হয় না। তাই সামনে যে নির্বাচন আসছে, তাতে কোন দল অংশ নিল আর কোন দল নিল না, কোন দল নির্বাচনে জয়ী হলো আর কোন দল হলো না, সেটা সাধারণ মানুষের জীবনে বড় কোনো প্রভাব ফেলবে বলে মনে হয় না। গণতন্ত্রের চর্চা শুধু মুখে মুখে থাকলে দেশের জনগণ তাতে উপকৃত হবে না।
লেখক: উপসম্পাদক, আজকের পত্রিকা

আমাদের দেশে নির্বাচনী মাঠে প্রতিপক্ষকে দমননিপীড়ন করার ঐতিহ্য আজকের নয়। আইয়ুব খানের আমল থেকে ধরলে দেখা যায়, ১৯৬৫ সালের জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় বিরোধীপক্ষের কর্মীদের তুমুলভাবে দমননিপীড়ন করা হয়েছিল। তাতে ভোটের মাঠে নিজেদের কর্তৃত্ব রাখার পথ সুগম হয়েছিল।
আইয়ুব খানের বিচিত্র সৃষ্টি মৌলিক গণতন্ত্রীরাই তৎকালীন দুই পাকিস্তানে ভোট দিয়েছিলেন বটে, কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানের করাচি এবং পূর্ব পাকিস্তানের ঢাকায় আইয়ুব খানের চেয়ে বেশি ভোট পেয়েছিলেন মিস ফাতেমা জিন্নাহ। এতে ভীষণ রকম খেপে গিয়েছিলেন আইয়ুবশাহি। করাচির বিভিন্ন জায়গায় অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ইত্যাদি চালানো হয়েছিল স্বয়ং আইয়ুব খানের ছেলে গওহর আইয়ুবের নেতৃত্বে।
পাকিস্তানের রাজনীতিতে নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতার জনকও বোধ হয় আইয়ুব খান। খুবই অবাক করা বিষয় হলো, এই নির্বাচনে মিস ফাতেমা জিন্নাহর হয়ে ন্যাপের পক্ষ থেকে মাওলানা ভাসানীর প্রচারণা চালানোর কথা ছিল উত্তরবঙ্গে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রচারণা চালানো হয়েছিল ঢাকা ও চট্টগ্রামে। কেন আওয়ামী লীগকে পূর্ববঙ্গের দুটো বিভাগে প্রচারণা চালানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল এ নিয়ে ভাসানী সাহেবের দলের আপত্তি ছিল। তাই তিনি একবারের জন্যও উত্তরবঙ্গে গিয়ে মিস ফাতেমা জিন্নাহর হয়ে ভোট চাননি। এতে আইয়ুব খানের সঙ্গে মাওলানা ভাসানীর কোনো আঁতাত হয়েছিল কি না, তা নিয়ে একধরনের জল্পনা-কল্পনার সৃষ্টি হয়েছিল। সে সময় যদি সম্মিলিত বিরোধী দলের ঐক্য বজায় থাকত, তাহলে আইয়ুব খানের প্রতি অনাস্থার বিষয়টি সহজেই প্রমাণিত হতে পারত বলে অনেকে মনে করেন। আইয়ুব খানের তৈরি মৌলিক গণতন্ত্রীদের অনেকেই তখন ফাতেমা জিন্নাহকে ভোট দিয়েছিলেন।
১৯৭০ সালে পাকিস্তানে যে সাধারণ নির্বাচন হয়, তাতে জনগণের ভোট দেওয়ার পথ সুগম হয়। এবার আর মৌলিক গণতন্ত্রীরা ভোট দেননি; বরং সাধারণ জনগণ তার নিজের ভোট প্রয়োগ করতে পেরেছিলেন। ইদানীং কেউ কেউ বলার চেষ্টা করছেন যে সেই নির্বাচনেও কারচুপি হয়েছিল। এই হঠাৎ ‘হয়ে ওঠা’ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, নির্বাচনের সময় এবং নির্বাচন-পরবর্তীকালে নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে, এ রকম অভিযোগ কোনো পক্ষ থেকেই করা হয়নি। নির্বাচনের ফলাফল এ রকম হওয়ার একটা বড় কারণ ছিল এই, জাতি তত দিনে ঠিক করে ফেলেছিল, কে হবে তাদের মূল নেতা। নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে ভাসানী ন্যাপ যে দোদুল্যমানতার পরিচয় দিয়েছে, সেখানেও ভাসানী-ইয়াহিয়ার মধ্যে কোনো সমঝোতা হয়েছিল কি না, সে প্রশ্ন উঠেছিল। আওয়ামী লীগ ছাড়াও পূর্ব পাকিস্তানে ভাসানী ন্যাপের জনপ্রিয়তা ছিল। কেন তারা নির্বাচনে অংশ নিল না, তা নিয়ে ব্যাপক গবেষণা হওয়া দরকার।
১৯৭৩ সালে যে নির্বাচন হয়েছিল তাতে কারচুপির বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছিল বলে লেখালেখি হয়েছে। জ্ঞানতাপস আব্দুর রাজ্জাক বঙ্গবন্ধুকে বলেছিলেন বিরোধী দলকে এক শর মতো আসন ছেড়ে দিতে। কিন্তু নির্বাচনের ফলাফলে দেখা গেল সংসদে বিরোধীদের প্রায় ঠাঁই নেই বললেই চলে। সে সময় গণতন্ত্র পোক্ত করার একটি সুযোগ সৃষ্টি হতে পারত অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান করার মাধ্যমে।কিন্তু সে সময়কার রাজনৈতিক পরিস্থিতি, নানা ধরনের অব্যবস্থা, সরকারের পিঠে ছুরি মারার ষড়যন্ত্র ইত্যাদির মিশেলে যে নির্বাচন হয়েছে, তা খুব গণতান্ত্রিক উপায়ে হয়েছে, সেটা বলা যাবে না। গণতন্ত্র তাতে প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছে।
খন্দকার মোশতাক আহমদ ক্ষমতায় ছিলেন ৮২ দিন। এই সময়কালে তিনি দেশের পাকিস্তানীকরণের ক্ষেত্রে যে দুটি বড় কাজ করেছিলেন, তার একটি হলো জেল হত্যা এবং অপরটি হলো ১৫ আগস্টের খুনিদের বিচার করা যাবে না—এই মর্মে একটি ইনডেমনিটি বা দায়মুক্তির অধ্যাদেশ জারি করা।
এরপর বেশ কিছু ঘটনার মাধ্যমে ক্ষমতার হাতবদল হতে হতে একসময় জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসীন হন। তিনি শেখ মুজিবের মতো তাঁর চারপাশে কোনো ফাঁকফোকর রাখেননি। তিনি সে সময় ছিলেন প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক, ছিলেন সেনাপ্রধান, ছিলেন চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ; অর্থাৎ মোট চারটি গুরুত্বপূর্ণ পথ দখল করে রাখলেন তিনি।
১৯৭৭ সালের মে মাসে তিনি আন্তর্জাতিক অনুমোদনের জন্য একটি গণভোটের ব্যবস্থা করেছিলেন। সেই গণভোটে তিনি পেয়েছিলেন শতকরা ৯৮.৯ ভাগ ভোট। এটা যে স্বয়ং জিয়াউর রহমানের জন্য বিব্রতকর ছিল সে কথা বলার অপেক্ষায় রাখে না। কর্মকর্তাদের বলা হয়েছিল ভোটদাতার সংখ্যা যেন মোট ভোটদাতার শতকরা ৭০ ভাগের বেশি না হয়। কিন্তু অতি উৎসাহী কর্মকর্তারা নিজেদের উৎসাহ এবং দক্ষতা প্রমাণ করার জন্য ভেলকি দেখিয়েছিলেন। শতকরা ৮৮.৫ ভাগ ভোট পড়েছিল এই সুপরিকল্পিত নির্বাচনে।
১৯৭৮ সালের ৩ জুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ওসমানীকে দেওয়া হয় ২১.৭ ভাগ ভোট আর জিয়াউর রহমানের ভাগে পড়ে ৭৬.৭ ভাগ ভোট। কারচুপি হয়েছিল কি না, সে কথা না বলে আমরা বরং বলতে পারি ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছিল বিকেল ৫টায়, আর কেরানীগঞ্জের একটি ভোটকেন্দ্রের ফলাফল বেতারে প্রচারিত হয়েছিল সাড়ে ৫টার আগেই।
জিয়াউর রহমানের শাসনামলের দিকে দৃষ্টি দিলে দেখা যাবে, তিনি যে গণভোটের আয়োজন করেছিলেন, তার সঙ্গে আইয়ুব খানের নির্বাচনী মেজাজের বেশ মিল আছে। অনেক ক্ষেত্রেই তিনি আইয়ুব খানের দেখানো পথ ধরে হেঁটেছেন। শেখ মুজিবের সমাজবাদী অর্থনীতির জায়গায় তিনি ব্যক্তিমালিকানা বা ফ্রি এন্টারপ্রাইজের জয়গান করলেন।
এরশাদ আমলের নির্বাচন নিয়ে কথা বলার কোনো মানে নেই। এরশাদ তাঁর স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থা এমনভাবে চালিয়েছিলেন যে তাঁর আমলে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না।
এরশাদ-পরবর্তী গণতন্ত্রের যুগে বিএনপি আমলের একটি নির্বাচনের উল্লেখ করাই যথেষ্ট। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির সেই নির্বাচন প্রমাণ করেছে, কারচুপির সুযোগ পেলে বিএনপি তা হাতছাড়া করে না। সেই নির্বাচনে ভোট পড়েছিল ২১ শতাংশ। বিএনপি ৩০০ আসনের মধ্যে ২৭৮টি আসন লাভ করেছিল। আওয়ামী লীগ নির্বাচন বর্জন করেছিল।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলের নির্বাচনগুলোই বরং অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য ছিল। কিন্তু ২০০৬ সালে ক্ষমতা ছাড়ার আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে বিএনপি যে নির্বাচনী পরিকল্পনা করেছিল, তাতে এই ব্যবস্থায় সত্যিই আর অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছিল। এরপর ক্ষমতায় থেকে ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগ যে নির্বাচন করেছিল, সেই নির্বাচনকেও প্রহসনের নির্বাচন বললে অত্যুক্তি হবে না।
২. নির্বাচন মানেই গণতন্ত্র নয়। কিন্তু গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রয়োজন রয়েছে। বিগত সময়ে আমরা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করে তুলতে পেরেছি বলে মনে হয় না। জোর যার মুল্লুক তার—এই প্রবাদবাক্যই হয়ে উঠেছে আমাদের গণতন্ত্রের একধরনের সংজ্ঞা। তাই মুখে যতই গণতন্ত্রের বুলি কপচানো হোক না কেন, আদতে আমাদের দলের মধ্যেই গণতন্ত্র নেই, তাই ব্যাপক অর্থে গণতন্ত্রের লালন-পালন করার যে স্বপ্ন দেখা হয়, তার মধ্যে সত্য রয়েছে কম।
এ রকম একটা বাস্তবতা নিয়েই বারবার নির্বাচন আসে। যে দলগুলো নির্বাচনে অংশ নেয়, তারা প্রত্যেকেই জয়ী হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে। যে দল পরাজিত হয়, সেই দল অবধারিতভাবেই নির্বাচনে কারচুপির কথা বলে। যে দল জয়ী হয় তারা বলে যে জনতার জয় হয়েছে।এর ব্যত্যয় ঘটে না।
রাজনীতি যখন থেকে আখের গোছানোর বড় মাধ্যম হয়ে পড়েছে, তখন থেকে রাজনীতির মাধ্যমে জনসেবা নয়, নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার দিকেই মন দিয়েছেন জননেতারা। ফলে আত্মত্যাগী নেতারা রাজনৈতিক মঞ্চ থেকে ধীরে ধীরে নির্বাসিত হয়েছেন এবং তাঁদের জায়গায় উঠে এসেছেন সুযোগসন্ধানী ব্যবসায়ী এবং পেশিশক্তির অধিকারীরা। এ রকম একটা জায়গায় যখন রাজনীতি এসে দাঁড়ায়, তখন সুষ্ঠু নির্বাচন তার গুরুত্ব হারায়।
শুধু ভোটের ব্যাপারেই চিন্তা-ভাবনা না করে নির্বাচন এবং নির্বাচন-পরবর্তী সময় দেশের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডকে কীভাবে জনকল্যাণে ব্যয় করা যাবে—সেটা নিয়েই আলোচনায় বসা দরকার।
খেয়াল করলেই দেখা যাবে, দেশ আজ নেতৃত্বশূন্যতায় ভুগছে। যে নেতাদের পেছনে একসময় দাঁড়াত মানুষ, তাঁদের অনেকেই মারা গেছেন কিংবা রাজনৈতিকভাবে আর ততটা সক্রিয় নন। নতুন যাঁরা নেতৃত্ব উঠে এসেছেন, তাঁরা কতটা জনসম্পৃক্ত, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। তাই একদলকে ক্ষমতাচ্যুত করে আরেক দল ক্ষমতায় এলে জনগণের খুব লাভ হবে, এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই। যে যায় লঙ্কায় সেই হয় রাবণ।
এই যে রাজনৈতিক অঙ্গনে অন্ধকারের অতলান্ত দেখতে পাচ্ছি আমরা, তা থেকে মুক্ত হতে হলে যে রাজনীতির প্রয়োজন, সেই রাজনীতির সন্ধান আমরা কবে পেতে পারি, সে আশঙ্কা এখনো কাটেনি।
গণতন্ত্রমনা হওয়ার জন্য যে প্রস্তুতি থাকা দরকার, তার কোনো চর্চা আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে খুব একটা আছে বলে মনে হয় না। তাই সামনে যে নির্বাচন আসছে, তাতে কোন দল অংশ নিল আর কোন দল নিল না, কোন দল নির্বাচনে জয়ী হলো আর কোন দল হলো না, সেটা সাধারণ মানুষের জীবনে বড় কোনো প্রভাব ফেলবে বলে মনে হয় না। গণতন্ত্রের চর্চা শুধু মুখে মুখে থাকলে দেশের জনগণ তাতে উপকৃত হবে না।
লেখক: উপসম্পাদক, আজকের পত্রিকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

আমাদের দেশে নির্বাচনী মাঠে প্রতিপক্ষকে দমননিপীড়ন করার ঐতিহ্য আজকের নয়। আইয়ুব খানের আমল থেকে ধরলে দেখা যায়, ১৯৬৫ সালের জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় বিরোধীপক্ষের কর্মীদের তুমুলভাবে দমননিপীড়ন করা হয়েছিল। তাতে ভোটের মাঠে নিজেদের কর্তৃত্ব রাখার পথ সুগম হয়েছিল।
২৭ নভেম্বর ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

আমাদের দেশে নির্বাচনী মাঠে প্রতিপক্ষকে দমননিপীড়ন করার ঐতিহ্য আজকের নয়। আইয়ুব খানের আমল থেকে ধরলে দেখা যায়, ১৯৬৫ সালের জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় বিরোধীপক্ষের কর্মীদের তুমুলভাবে দমননিপীড়ন করা হয়েছিল। তাতে ভোটের মাঠে নিজেদের কর্তৃত্ব রাখার পথ সুগম হয়েছিল।
২৭ নভেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

আমাদের দেশে নির্বাচনী মাঠে প্রতিপক্ষকে দমননিপীড়ন করার ঐতিহ্য আজকের নয়। আইয়ুব খানের আমল থেকে ধরলে দেখা যায়, ১৯৬৫ সালের জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় বিরোধীপক্ষের কর্মীদের তুমুলভাবে দমননিপীড়ন করা হয়েছিল। তাতে ভোটের মাঠে নিজেদের কর্তৃত্ব রাখার পথ সুগম হয়েছিল।
২৭ নভেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আমাদের দেশে নির্বাচনী মাঠে প্রতিপক্ষকে দমননিপীড়ন করার ঐতিহ্য আজকের নয়। আইয়ুব খানের আমল থেকে ধরলে দেখা যায়, ১৯৬৫ সালের জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় বিরোধীপক্ষের কর্মীদের তুমুলভাবে দমননিপীড়ন করা হয়েছিল। তাতে ভোটের মাঠে নিজেদের কর্তৃত্ব রাখার পথ সুগম হয়েছিল।
২৭ নভেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫