চিররঞ্জন সরকার

একটি দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না। এই কান্নাই বর্তমানে আমাদের দেশে নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। বিষাদে রূপ নিচ্ছে ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবের ছুটির আনন্দ। সড়কে রোজ ঝরছে প্রাণ। অন্যান্য সপ্তাহের তুলনায় ঈদের সপ্তাহে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে।
যেখানে হাসিমাখা মুখ প্রিয়জনের হৃদয় জুড়িয়ে দেওয়ার কথা, সেখানে বাড়ির উঠানে আসছে নিথর দেহ। পৃথিবীর প্রতিটি জনপদেই উৎসব উদ্যাপিত হয়। কিন্তু কোনো নাশকতা ছাড়া শুধু সড়ক দুর্ঘটনায় এত মানুষ হতাহতের নজির বোধ হয় অন্য কোথাও নেই। এবারের ঈদযাত্রায়ও সড়ক দুর্ঘটনার খবর গণমাধ্যমে এসেছে প্রতিদিনই।
শুধু ঈদের দিনই সারা দেশে ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিআরটিএ জানিয়েছে, ৪ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত ১৭ দিনে সারা দেশে ২৮৬টি সড়ক দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেছে। এতে ৩২০ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৪৬২ জন আহত হয়েছে; যা গত বছরের চেয়ে প্রায় ১৯ শতাংশ বেশি।অন্যদিকে যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্য বলছে, ঈদযাত্রা শুরুর দিন (৪ এপ্রিল) থেকে ১৮ এপ্রিল কর্মস্থলে ফেরা পর্যন্ত ১৫ দিনে সড়কে ৩৯৯টি দুর্ঘটনায় ৪০৭ জন নিহত ও ১ হাজার ৩৯৮ জন আহত হয়েছে। এই সময়ে রেলপথে ১৮টি দুর্ঘটনায় ২৪ জন নিহত ও ২১ জন আহত হয়েছে। নৌপথে ২টি দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত ও ৫ জন আহত হয়েছে। সব মিলিয়ে সড়ক, রেল ও নৌপথে ৪১৯টি দুর্ঘটনায় ৪৩৮ জন নিহত ও ১ হাজার ৪২৪ জন আহত হয়েছে।
গত বছর ঈদুল ফিতরে ৩০৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২৮ জন নিহত ও ৫৬৫ জন আহত হয়েছিল। গত বছরের তুলনায় এবারের ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা ৩১ দশমিক ২৫ শতাংশ, প্রাণহানি ২৪ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ ও আহত ১৪৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ বেড়েছে। আর এসব দুর্ঘটনায় যথারীতি মোটরসাইকেলই শীর্ষে রয়েছে। এবারের ঈদে ১৯৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৬৫ জন নিহত ও ২৪০ জন আহত হয়েছে; যা মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৪৯ দশমিক ৬২ শতাংশ, নিহতের ৪০ দশমিক ৫৪ শতাংশ এবং আহতের ৩০ দশমিক ৩৭ শতাংশ প্রায়।
যদিও সব দুর্ঘটনার খবর গণমাধ্যমে আসে না। তাই প্রকৃত দুর্ঘটনার সংখ্যা আরও বেশি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যাত্রী কল্যাণ সমিতির পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৬ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আট বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় মোট ৬০ হাজার ৮৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহায় ৩ হাজার ৮৬২ দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে ৪ হাজার ৪৭৫ জনের; অর্থাৎ কেবল ঈদের মৌসুমেই সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশের সড়ক যোগাযোগব্যবস্থায় বৈপ্লবিক উন্নয়ন হয়েছে। আর বর্তমান সরকারের সময়ে যে পরিমাণ নতুন রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কার হয়েছে তা অতীতের সব রেকর্ড ছাপিয়ে গেছে। ১৯৭১ সালে মাত্র ৩ হাজার ৬০০ কিলোমিটারের সড়ক দিয়ে শুরু করা বাংলাদেশে বর্তমানে ৩ লাখ ৭৫ হাজার কিলোমিটারের সড়ক রয়েছে। এর মধ্যে জাতীয় ও আঞ্চলিক মিলিয়ে ২২ হাজার কিলোমিটার মহাসড়ক আছে। যোগাযোগের ক্ষেত্রে এসেছে বিস্ময়কর পরিবর্তন।
এসব সড়ক নিয়ন্ত্রণে কাজ করেন হাইওয়ে পুলিশের ৭৩টি ইউনিটের প্রায় ৩ হাজার সদস্য। ইতিমধ্যে দেশে অনেক মহাসড়ক, এক্সপ্রেসওয়ে, ফ্লাইওভার, ওভারপাস, আন্ডারপাস, ওভারব্রিজ নির্মিত হয়েছে। দুই লেনের মহাসড়ক চার লেনে পরিণত হয়েছে আর চার লেনগুলো আট লেনে পরিণত হবে। কিন্তু এত সব আয়োজন দুর্ঘটনা কমাতে ন্যূনতম ভূমিকা পালন করতে পারছে না। মানুষ বেঘোরে প্রাণ হারাচ্ছে। কোথাও কোনো প্রতিকার মিলছে না।
শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের ফলে ‘সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮’ প্রণয়ন করা হয়েছে। এত এত অবকাঠামো উন্নয়ন, জনবল মোতায়েন এবং পরিবহন আইন সংস্কার সত্ত্বেও সড়কে শৃঙ্খলার অভাব রয়ে গেছে, যা রোজার ঈদ আর কোরবানির ঈদে প্রকট আকার ধারণ করে। ফিটনেসবিহীন যানবাহন, ভাঙাচোরা সড়ক, অদক্ষ চালক, দুর্নীতি, ট্রাফিক তদারকির অভাব, অপ্রশস্ত সড়ক, বেপরোয়া গতি, মহাসড়কে মোটরসাইকেল, তিন চাকার গাড়ি চলাচল ইত্যাদি। পরিবহনের তুলনায় যাত্রী কয়েক গুণ বৃদ্ধি এবং পরিবহন মালিকের অতিমুনাফার লোভে ফিটনেসবিহীন গাড়ি ও অদক্ষ চালক রাস্তায় নামানো হয়।
সড়ক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিদের কর্তব্যে অবহেলা ও দুর্নীতি সড়ক শৃঙ্খলার অন্তরায়। এমনকি মহাসড়কে অনভ্যস্ত শহুরে সিটি বাসগুলো সড়কে চাপ তৈরি করে। আর অধিক ট্রিপ পাওয়ার আশায় বিরতিহীন ও বেপরোয়া গতিতে গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টাও দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ।
অসচেতন যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা না ভেবে বাস, ট্রেন ও লঞ্চের ছাদে ভ্রমণের বহু পুরোনো অভ্যাস তো আছেই। আর যথাযথ রাষ্ট্রীয় তদারকিরও ঘাটতি আছে। তবে এসব ছাপিয়ে সাম্প্রতিককালে অগণিত মোটরসাইকেল সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে উঠেছে। জ্যাম এড়াতে মহাসড়কে মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি যাওয়া, উঠতি তরুণদের বেপরোয়া গতি, নিরাপত্তাসরঞ্জাম পরিধান না করার কারণে মূলত মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় হতাহত বাড়ছে। এবারের ঈদেও এর ব্যতিক্রম হয়নি।
সড়ক নিরাপত্তায় হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প, শত শত সুপারিশ, টাস্কফোর্স—কিছুই কাজে আসছে না। প্রায় প্রতিটি দুর্ঘটনার পর গাড়ি কিংবা সড়কের ত্রুটি সামনে আসছে। সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ), সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ), হাইওয়ে পুলিশসহ সরকারের নানা সংস্থা অনিয়ম রোধে থাকলেও আগেভাগে ত্রুটি ধরা পড়ে না।
২০১৮ সালে শিক্ষার্থীদের নজিরবিহীন আন্দোলনে সড়কের নিরাপত্তায় শাস্তি বহু গুণ বাড়িয়ে আইন করা হয়। দুর্ঘটনা রোধে ১১১ দফা সুপারিশ জমা দিয়েছে উচ্চক্ষমতার কমিটি। সুপারিশ বাস্তবায়নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে টাস্কফোর্স হয়েছে। এর আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ১৭ দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন ৬ দফা নির্দেশনা। কিন্তু সড়কে কিছুই ঠিকমতো বাস্তবায়ন হচ্ছে না। দুর্ঘটনাও রোধ হচ্ছে না।
মহাসড়ক নিরাপদ করতে ধীরগতির যানবাহন চলাচলে হাজার হাজার কোটি টাকায় সার্ভিস লেন নির্মাণ করা হয়েছে। তবে সেগুলো দখল হয়ে গেছে। খোদ পুলিশ রয়েছে দখলদারের তালিকায়। মহাসড়কে বসানো হয়েছে স্পিডমিটার, সিসিক্যামেরা। তবু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। ফিটনেসবিহীন যান আর অপরিণত চালক টোল প্লাজায় পিষে দিচ্ছে অন্যান্য যান ও যাত্রীকে। এ যেন অমোঘ নিয়তির কাছে আত্মসমর্পণ!
এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে বাংলাদেশ সরকার প্রতিনিয়ত সড়কের উন্নয়ন করছে, কিন্তু তবুও সড়কের সম্পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি, যার দরুন প্রতিনিয়তই দুর্ঘটনার হার বাড়ছে। নিরাপদ সড়কের জন্য ২০১৮ সালে যখন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছিল, তখন সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ নামে নতুন একটি আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল। এই আইনের পরিপ্রেক্ষিতে সড়ক পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফিরবে এবং দুর্ঘটনার হার কমবে—এমন প্রত্যাশা ছিল সবার। কিন্তু ২০২৪ সালে এসেও সেই আইনের পুরোপুরি বাস্তবায়নের দেখা মিলছে না এবং প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছেই।
প্রশ্ন হলো, আর কতটি প্রাণের বিনিময়ে বন্ধ হবে এই মৃত্যুর মিছিল? আর কত মায়ের কোল খালি করতে হবে? কত সন্তান বাবাহারা হবে?
সড়কের যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে মৃত্যুর মিছিল বন্ধ করা এখন সময়ের দাবি। তাই সরকারের উচিত, শুধু আইন তৈরিতেই সীমাবদ্ধ না থেকে যত দ্রুত সম্ভব তা বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেওয়া এবং সাধারণ জনগণেরও উচিত, তাদের যাতায়াতের ক্ষেত্রে আরও বেশি সচেতন হওয়া।
সড়ক নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা করতে হলে সরকারকে অবশ্যই কঠোর হতে হবে। নিয়ম মানাতে বাধ্য করতে হবে। আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগের মাধ্যমে এ খাতকে সুশৃঙ্খল রাখা সম্ভব। যানবাহনের ফিটনেস ও চালকের লাইসেন্স নিয়ে কোনো ধরনের শৈথিল্য কাম্য নয়। যানবাহনের ত্রুটি কিংবা চালকের অবহেলা ও অদক্ষতার কারণে অকালে কোনো মানুষের জীবনপ্রদীপ নিভে যেতে পারে না।
পঙ্গুত্বের মতো দুর্বিষহ যন্ত্রণা নিয়ে মানুষ জীবন কাটাতে পারে না। দেশে সন্ত্রাস দমনে যদি বিশেষ বাহিনী গঠন করা যায়, তাহলে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে এ ধরনের বাহিনী গঠন করা হচ্ছে না কেন? জানমাল রক্ষা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। আইন না মানাই সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। সবাইকে আইন মানতে বাধ্য করতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে পরিবহন মালিক-শ্রমিক এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারের কাছ থেকে সমন্বিত, আন্তরিক, সচেতন, দৃঢ় ও দায়িত্বশীল ভূমিকা সবাই আশা করে।
লেখক: গবেষক, কলামিস্ট

একটি দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না। এই কান্নাই বর্তমানে আমাদের দেশে নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। বিষাদে রূপ নিচ্ছে ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবের ছুটির আনন্দ। সড়কে রোজ ঝরছে প্রাণ। অন্যান্য সপ্তাহের তুলনায় ঈদের সপ্তাহে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে।
যেখানে হাসিমাখা মুখ প্রিয়জনের হৃদয় জুড়িয়ে দেওয়ার কথা, সেখানে বাড়ির উঠানে আসছে নিথর দেহ। পৃথিবীর প্রতিটি জনপদেই উৎসব উদ্যাপিত হয়। কিন্তু কোনো নাশকতা ছাড়া শুধু সড়ক দুর্ঘটনায় এত মানুষ হতাহতের নজির বোধ হয় অন্য কোথাও নেই। এবারের ঈদযাত্রায়ও সড়ক দুর্ঘটনার খবর গণমাধ্যমে এসেছে প্রতিদিনই।
শুধু ঈদের দিনই সারা দেশে ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিআরটিএ জানিয়েছে, ৪ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত ১৭ দিনে সারা দেশে ২৮৬টি সড়ক দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেছে। এতে ৩২০ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৪৬২ জন আহত হয়েছে; যা গত বছরের চেয়ে প্রায় ১৯ শতাংশ বেশি।অন্যদিকে যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্য বলছে, ঈদযাত্রা শুরুর দিন (৪ এপ্রিল) থেকে ১৮ এপ্রিল কর্মস্থলে ফেরা পর্যন্ত ১৫ দিনে সড়কে ৩৯৯টি দুর্ঘটনায় ৪০৭ জন নিহত ও ১ হাজার ৩৯৮ জন আহত হয়েছে। এই সময়ে রেলপথে ১৮টি দুর্ঘটনায় ২৪ জন নিহত ও ২১ জন আহত হয়েছে। নৌপথে ২টি দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত ও ৫ জন আহত হয়েছে। সব মিলিয়ে সড়ক, রেল ও নৌপথে ৪১৯টি দুর্ঘটনায় ৪৩৮ জন নিহত ও ১ হাজার ৪২৪ জন আহত হয়েছে।
গত বছর ঈদুল ফিতরে ৩০৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২৮ জন নিহত ও ৫৬৫ জন আহত হয়েছিল। গত বছরের তুলনায় এবারের ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা ৩১ দশমিক ২৫ শতাংশ, প্রাণহানি ২৪ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ ও আহত ১৪৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ বেড়েছে। আর এসব দুর্ঘটনায় যথারীতি মোটরসাইকেলই শীর্ষে রয়েছে। এবারের ঈদে ১৯৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৬৫ জন নিহত ও ২৪০ জন আহত হয়েছে; যা মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৪৯ দশমিক ৬২ শতাংশ, নিহতের ৪০ দশমিক ৫৪ শতাংশ এবং আহতের ৩০ দশমিক ৩৭ শতাংশ প্রায়।
যদিও সব দুর্ঘটনার খবর গণমাধ্যমে আসে না। তাই প্রকৃত দুর্ঘটনার সংখ্যা আরও বেশি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যাত্রী কল্যাণ সমিতির পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৬ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আট বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় মোট ৬০ হাজার ৮৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহায় ৩ হাজার ৮৬২ দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে ৪ হাজার ৪৭৫ জনের; অর্থাৎ কেবল ঈদের মৌসুমেই সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশের সড়ক যোগাযোগব্যবস্থায় বৈপ্লবিক উন্নয়ন হয়েছে। আর বর্তমান সরকারের সময়ে যে পরিমাণ নতুন রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কার হয়েছে তা অতীতের সব রেকর্ড ছাপিয়ে গেছে। ১৯৭১ সালে মাত্র ৩ হাজার ৬০০ কিলোমিটারের সড়ক দিয়ে শুরু করা বাংলাদেশে বর্তমানে ৩ লাখ ৭৫ হাজার কিলোমিটারের সড়ক রয়েছে। এর মধ্যে জাতীয় ও আঞ্চলিক মিলিয়ে ২২ হাজার কিলোমিটার মহাসড়ক আছে। যোগাযোগের ক্ষেত্রে এসেছে বিস্ময়কর পরিবর্তন।
এসব সড়ক নিয়ন্ত্রণে কাজ করেন হাইওয়ে পুলিশের ৭৩টি ইউনিটের প্রায় ৩ হাজার সদস্য। ইতিমধ্যে দেশে অনেক মহাসড়ক, এক্সপ্রেসওয়ে, ফ্লাইওভার, ওভারপাস, আন্ডারপাস, ওভারব্রিজ নির্মিত হয়েছে। দুই লেনের মহাসড়ক চার লেনে পরিণত হয়েছে আর চার লেনগুলো আট লেনে পরিণত হবে। কিন্তু এত সব আয়োজন দুর্ঘটনা কমাতে ন্যূনতম ভূমিকা পালন করতে পারছে না। মানুষ বেঘোরে প্রাণ হারাচ্ছে। কোথাও কোনো প্রতিকার মিলছে না।
শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের ফলে ‘সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮’ প্রণয়ন করা হয়েছে। এত এত অবকাঠামো উন্নয়ন, জনবল মোতায়েন এবং পরিবহন আইন সংস্কার সত্ত্বেও সড়কে শৃঙ্খলার অভাব রয়ে গেছে, যা রোজার ঈদ আর কোরবানির ঈদে প্রকট আকার ধারণ করে। ফিটনেসবিহীন যানবাহন, ভাঙাচোরা সড়ক, অদক্ষ চালক, দুর্নীতি, ট্রাফিক তদারকির অভাব, অপ্রশস্ত সড়ক, বেপরোয়া গতি, মহাসড়কে মোটরসাইকেল, তিন চাকার গাড়ি চলাচল ইত্যাদি। পরিবহনের তুলনায় যাত্রী কয়েক গুণ বৃদ্ধি এবং পরিবহন মালিকের অতিমুনাফার লোভে ফিটনেসবিহীন গাড়ি ও অদক্ষ চালক রাস্তায় নামানো হয়।
সড়ক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিদের কর্তব্যে অবহেলা ও দুর্নীতি সড়ক শৃঙ্খলার অন্তরায়। এমনকি মহাসড়কে অনভ্যস্ত শহুরে সিটি বাসগুলো সড়কে চাপ তৈরি করে। আর অধিক ট্রিপ পাওয়ার আশায় বিরতিহীন ও বেপরোয়া গতিতে গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টাও দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ।
অসচেতন যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা না ভেবে বাস, ট্রেন ও লঞ্চের ছাদে ভ্রমণের বহু পুরোনো অভ্যাস তো আছেই। আর যথাযথ রাষ্ট্রীয় তদারকিরও ঘাটতি আছে। তবে এসব ছাপিয়ে সাম্প্রতিককালে অগণিত মোটরসাইকেল সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে উঠেছে। জ্যাম এড়াতে মহাসড়কে মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি যাওয়া, উঠতি তরুণদের বেপরোয়া গতি, নিরাপত্তাসরঞ্জাম পরিধান না করার কারণে মূলত মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় হতাহত বাড়ছে। এবারের ঈদেও এর ব্যতিক্রম হয়নি।
সড়ক নিরাপত্তায় হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প, শত শত সুপারিশ, টাস্কফোর্স—কিছুই কাজে আসছে না। প্রায় প্রতিটি দুর্ঘটনার পর গাড়ি কিংবা সড়কের ত্রুটি সামনে আসছে। সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ), সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ), হাইওয়ে পুলিশসহ সরকারের নানা সংস্থা অনিয়ম রোধে থাকলেও আগেভাগে ত্রুটি ধরা পড়ে না।
২০১৮ সালে শিক্ষার্থীদের নজিরবিহীন আন্দোলনে সড়কের নিরাপত্তায় শাস্তি বহু গুণ বাড়িয়ে আইন করা হয়। দুর্ঘটনা রোধে ১১১ দফা সুপারিশ জমা দিয়েছে উচ্চক্ষমতার কমিটি। সুপারিশ বাস্তবায়নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে টাস্কফোর্স হয়েছে। এর আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ১৭ দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন ৬ দফা নির্দেশনা। কিন্তু সড়কে কিছুই ঠিকমতো বাস্তবায়ন হচ্ছে না। দুর্ঘটনাও রোধ হচ্ছে না।
মহাসড়ক নিরাপদ করতে ধীরগতির যানবাহন চলাচলে হাজার হাজার কোটি টাকায় সার্ভিস লেন নির্মাণ করা হয়েছে। তবে সেগুলো দখল হয়ে গেছে। খোদ পুলিশ রয়েছে দখলদারের তালিকায়। মহাসড়কে বসানো হয়েছে স্পিডমিটার, সিসিক্যামেরা। তবু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। ফিটনেসবিহীন যান আর অপরিণত চালক টোল প্লাজায় পিষে দিচ্ছে অন্যান্য যান ও যাত্রীকে। এ যেন অমোঘ নিয়তির কাছে আত্মসমর্পণ!
এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে বাংলাদেশ সরকার প্রতিনিয়ত সড়কের উন্নয়ন করছে, কিন্তু তবুও সড়কের সম্পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি, যার দরুন প্রতিনিয়তই দুর্ঘটনার হার বাড়ছে। নিরাপদ সড়কের জন্য ২০১৮ সালে যখন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছিল, তখন সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ নামে নতুন একটি আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল। এই আইনের পরিপ্রেক্ষিতে সড়ক পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফিরবে এবং দুর্ঘটনার হার কমবে—এমন প্রত্যাশা ছিল সবার। কিন্তু ২০২৪ সালে এসেও সেই আইনের পুরোপুরি বাস্তবায়নের দেখা মিলছে না এবং প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছেই।
প্রশ্ন হলো, আর কতটি প্রাণের বিনিময়ে বন্ধ হবে এই মৃত্যুর মিছিল? আর কত মায়ের কোল খালি করতে হবে? কত সন্তান বাবাহারা হবে?
সড়কের যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে মৃত্যুর মিছিল বন্ধ করা এখন সময়ের দাবি। তাই সরকারের উচিত, শুধু আইন তৈরিতেই সীমাবদ্ধ না থেকে যত দ্রুত সম্ভব তা বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেওয়া এবং সাধারণ জনগণেরও উচিত, তাদের যাতায়াতের ক্ষেত্রে আরও বেশি সচেতন হওয়া।
সড়ক নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা করতে হলে সরকারকে অবশ্যই কঠোর হতে হবে। নিয়ম মানাতে বাধ্য করতে হবে। আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগের মাধ্যমে এ খাতকে সুশৃঙ্খল রাখা সম্ভব। যানবাহনের ফিটনেস ও চালকের লাইসেন্স নিয়ে কোনো ধরনের শৈথিল্য কাম্য নয়। যানবাহনের ত্রুটি কিংবা চালকের অবহেলা ও অদক্ষতার কারণে অকালে কোনো মানুষের জীবনপ্রদীপ নিভে যেতে পারে না।
পঙ্গুত্বের মতো দুর্বিষহ যন্ত্রণা নিয়ে মানুষ জীবন কাটাতে পারে না। দেশে সন্ত্রাস দমনে যদি বিশেষ বাহিনী গঠন করা যায়, তাহলে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে এ ধরনের বাহিনী গঠন করা হচ্ছে না কেন? জানমাল রক্ষা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। আইন না মানাই সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। সবাইকে আইন মানতে বাধ্য করতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে পরিবহন মালিক-শ্রমিক এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারের কাছ থেকে সমন্বিত, আন্তরিক, সচেতন, দৃঢ় ও দায়িত্বশীল ভূমিকা সবাই আশা করে।
লেখক: গবেষক, কলামিস্ট

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

একটি দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না। এই কান্নাই বর্তমানে আমাদের দেশে নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। বিষাদে রূপ নিচ্ছে ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবের ছুটির আনন্দ। সড়কে রোজ ঝরছে প্রাণ। অন্যান্য সপ্তাহের তুলনায় ঈদের সপ্তাহে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে।
২৩ এপ্রিল ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

একটি দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না। এই কান্নাই বর্তমানে আমাদের দেশে নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। বিষাদে রূপ নিচ্ছে ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবের ছুটির আনন্দ। সড়কে রোজ ঝরছে প্রাণ। অন্যান্য সপ্তাহের তুলনায় ঈদের সপ্তাহে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে।
২৩ এপ্রিল ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

একটি দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না। এই কান্নাই বর্তমানে আমাদের দেশে নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। বিষাদে রূপ নিচ্ছে ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবের ছুটির আনন্দ। সড়কে রোজ ঝরছে প্রাণ। অন্যান্য সপ্তাহের তুলনায় ঈদের সপ্তাহে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে।
২৩ এপ্রিল ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

একটি দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না। এই কান্নাই বর্তমানে আমাদের দেশে নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। বিষাদে রূপ নিচ্ছে ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবের ছুটির আনন্দ। সড়কে রোজ ঝরছে প্রাণ। অন্যান্য সপ্তাহের তুলনায় ঈদের সপ্তাহে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে।
২৩ এপ্রিল ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫