মোনায়েম সরকার

আর মাত্র দুই দিন পর আমরা একটি নতুন বছরে পদার্পণ করব। ২০২৩ সালকে বিদায় দিয়ে স্বাগত জানাব ২০২৪ সালকে। পেছনে তাকিয়ে বলতে পারি, দ্বিধাদ্বন্দ্ব-দোলাচল, বিভেদ-বিভ্রান্তি সত্ত্বেও আমরা সংকট মোকাবিলা করে সম্ভাবনার দিকেই এগিয়ে চলেছি। বিদায়ী বছরে করোনা মহামারি আমাদের সেভাবে ভোগায়নি, তবে ডেঙ্গু অনেকের জীবন কেড়েছে। মশা নিধনে কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার খোরাক জুগিয়েছে।
বন্যা বা অন্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসলহানি হলে পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে, সেই শঙ্কা ছিল। কিন্তু পরিস্থিতির তেমন অবনতি হয়নি। আগের বছরই বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু চালু করে দেওয়ার কাজটি সরকার করতে পেরেছে। এটি আমাদের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন প্রকল্প। এটি শুধু একটি প্রকল্প নয়, স্বপ্নের বাস্তবায়ন। আমরা সবাই জানি, কত প্রতিকূলতার মধ্যে সরকার পদ্মা সেতু প্রকল্প নিয়ে এগিয়েছে এবং অবশেষে তা বাস্তবায়ন করতে পেরেছে।
বিদায়ী বছরে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে রেললাইন চালু হয়েছে। পদ্মা সেতু চালুর পর রেল চলাচল শুরু হওয়ায় রাজধানীর সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার নিরবচ্ছিন্ন, সাশ্রয়ী ও দ্রুত যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এ ছাড়া বিদায়ী বছরে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে চালু হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল। এটা বাংলাদেশের প্রথম সুড়ঙ্গপথ এবং দক্ষিণ এশিয়ায় নদীর তলদেশের প্রথম ও দীর্ঘতম সড়ক সুড়ঙ্গপথ। বিদায়ী বছরেই চালু হয়েছে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল।
বছরজুড়েই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি ছিল বিপুলসংখ্যক মানুষের জন্য উদ্বেগ ও অস্বস্তির। ডিম, আলু, পেঁয়াজ নিয়ে কত কাণ্ডই না হলো! ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কাছে সরকারের অসহায় আত্মসমর্পণ মানুষকে পীড়া দিয়েছে।
বিদায়ী বছরে সরকারের অর্থসংকটে পড়ার খবর দফায় দফায় শোনা গেছে। আমাদের মতো দেশের পক্ষে উচ্চাভিলাষী উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে অনেক সময় অর্থসংকট দেখা দেওয়া অস্বাভাবিক নয়। রাজস্ব আদায়ে সব সরকারের আমলেই ব্যর্থতা লক্ষ করা গেলেও কোনো সময়েই বিদেশি অর্থসহায়তা পেতে আমাদের বেগ পেতে হয়নি। কারণ, এ ধরনের ঋণ পরিশোধে আমাদের সুনাম আছে।
বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ কমতে থাকার বিষয়টি অনেকবারই খবর হয়েছে। এই সংকটের মূল কারণ সম্ভবত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যায় অস্বাভাবিকভাবে, বিশ্ববাজারে খাদ্যের দামও বেড়ে যায় আকস্মিকভাবে শুরু হওয়া এই যুদ্ধ দ্রুত বন্ধ না হওয়ায়। ইউক্রেন ঘিরে রাশিয়ার আগ্রাসী মনোভাবের পাশাপাশি আমেরিকার নেতৃত্বে ন্যাটো জোটের উসকানিও এই পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য দায়ী।
এর মূল্য দিতে হচ্ছে বাংলাদেশের মতো উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোকে। বিদায়ী বছরে আমাদের অর্থনীতি ও জনজীবনে সংকট দেখা দিলেও সরকার চেষ্টা করছে আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক রেখে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে। কিছু সময়ের জন্য যে বিদ্যুৎসংকট দেখা দিয়েছিল, সেটাও নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসার চেষ্টা করেছে সরকার। বিদ্যুতের বেড়ে চলা চাহিদা পূরণে সরকার কিছু সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছিল।
তবে বিদ্যুৎ খাতে অপচয়-দুর্নীতির কথা অনেকে বলে থাকেন এবং বিদ্যুৎসংকটের সময় সমালোচনা বেড়েছিল স্বভাবতই। বেসরকারি খাতের চুক্তিগুলো নিয়েও অনেক কথা শুনতে হয়েছে সরকারকে। নতুন বছরে এ ক্ষেত্রে নতুন কী হয়, সেটা এখন দেখার অপেক্ষা।
নতুন বছরেই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ শেষে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সড়ক যোগাযোগ উন্নত করার কাজ শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার করে যাচ্ছে দায়িত্ব গ্রহণের শুরু থেকেই। বিদায়ী বছরে অর্জনগুলো দৃশ্যমান হয়েছে অনেক ক্ষেত্রেই।
নতুন যে বছর আসছে, তার শুরুতেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে অংশ না নিয়ে বিএনপিসহ কিছু দল আন্দোলন করছে। নিজেদের পছন্দমতো সরকারের অধীনে নির্বাচন না হওয়ায় বিএনপিসহ কিছু দলের এই নির্বাচনবিরোধিতা।
আগের বছরের মধ্যভাগ থেকে বিএনপির নেতৃত্বে বিরোধী দলগুলো রাজনীতির মাঠ গরম করতে তৎপর হয়ে উঠলেও এ পর্যন্ত তাদের কোনো সফলতা নেই। বিএনপির সঙ্গে তার সব সময়ের মিত্র জামায়াতে ইসলামীসহ মৌলবাদী দলগুলো প্রকাশ্যে ততটা না হলেও কৌশলে অবশ্যই রয়েছে। দলটির সঙ্গে নতুন করে যোগ দিয়েছে সাবেক বাম, মধ্য বাম কিছু গ্রুপ। অনলাইনে দেশে-বিদেশে সক্রিয় একটি গোষ্ঠীও সরকারের সমালোচনা অব্যাহত রেখেছে। সমালোচনায় কারও আপত্তি হওয়ার কথা নয়, তবে অপপ্রচারে আপত্তি করতেই হবে। বিদায়ী বছরে আমরা লক্ষ করেছি, জনজীবনে সৃষ্টি হওয়া কিছু সমস্যা নিয়ে দেশে যেমন বিরোধী দলগুলো সক্রিয় হয়ে উঠতে চেয়েছে, তেমনি অনলাইনে সক্রিয় একটি গোষ্ঠী মেতে উঠেছে অপপ্রচারে। রিজার্ভ পরিস্থিতি ও ব্যাংক খাতের কিছু অপ্রত্যাশিত ঘটনা নিয়ে তারা এত অপপ্রচার চালায়, যা মোকাবিলা করা সরকারের পক্ষে সহজ ছিল না। দেশ অচিরেই শ্রীলঙ্কা হয়ে যাবে বলে প্রচারণা চালিয়ে অবশ্য কোনো সুফল তারা পায়নি। দেশ শ্রীলঙ্কা হয়নি।
তবে এ কথা ঠিক, ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী কোনো কোনো ব্যাংকে সংকট তৈরি করছে এবং তারা দেশ থেকে অর্থ পাচারেও জড়িত। এদের দমনে সরকারের আন্তরিক উদ্যোগে ঘাটতির অভিযোগও আছে। নতুন বছরে নতুন সরকার যত দ্রুত পাচার, লুটপাট রোধে পদক্ষেপ নেবে, ততই আস্থা ফিরে আসবে মানুষের মনে। এর প্রভাব বিরোধী দলের আন্দোলনেও গিয়ে পড়বে।
তাদের আন্দোলনের সুযোগ আসে প্রধানত সরকারের কিছু সীমাবদ্ধতা ও ব্যর্থতা থেকে। বিদায়ী বছরে আমরা ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের অতি তৎপরতা দেখে বিস্মিত হয়েছি। এর প্রতিক্রিয়ায় আবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী রাষ্ট্রগুলোর তৎপরতাও প্রকাশ্যেই দেখা গেছে। সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্য বলা হয়েছে, গণতন্ত্র, নির্বাচন ও মানবাধিকারের মতো বিষয়ে বাইরের কোনো দেশের রীতিবিরুদ্ধ কথাবার্তা ও কার্যকলাপ বাংলাদেশ পছন্দ করে না। তাদের কূটনৈতিক রীতিনীতি মান্য করে দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র দপ্তরকে এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় আরও সতর্ক থাকতে হবে। অনেকে মনে করেন, আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক শক্তিগুলো পরস্পরের দ্বন্দ্ব-সংঘাতের একটি ক্ষেত্র করে তুলতে চায় বাংলাদেশকে। বলা বাহুল্য, দীর্ঘদিন ধরে সচেষ্ট থেকেও কার্যকর আন্দোলন রচনায় ব্যর্থ বিরোধী দল এর সুযোগ নিতে চাইছে। নতুন বছরে এ বিষয়ে বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে সরকারকে। এটা আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের জন্যও একটি পরীক্ষা।
আন্দোলনে অসফল বলেই এটা মনে করা ঠিক হবে না যে বিএনপির কোনো জনসমর্থন নেই। বিএনপির পেছনে জনগণের একটি বড় অংশের সমর্থন আছে। আওয়ামী লীগ নজিরবিহীনভাবে টানা তিন মেয়াদ ক্ষমতায় থাকায় দলটির জন্য কিছু জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষমতাসীনদের প্রতি মানুষের রাগ-ক্ষোভ থাকা স্বাভাবিক। অন্যায় কাজে ক্ষমতার প্রয়োগ মানুষ পছন্দ করে না। মানুষ অন্যায়ের বিরুদ্ধে ক্ষমতার প্রয়োগ দেখতে চায়।
আগের দুটি নির্বাচন ত্রুটিমুক্ত না হওয়া এবং দেশে-বিদেশে সমালোচনার কারণে এবার সরকারও চেয়েছে সবার অংশগ্রহণে একটি অর্থবহ নির্বাচন। নির্বাচন একেবারে প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন হচ্ছে না। নির্বাচনে জয়ী হয়ে উন্নয়নের চলমান ধারা অব্যাহত রাখতে চাইছে ক্ষমতাসীন দল। ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ করার উচ্চাভিলাষের কথা সামনে এনেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেটি অর্জনের জন্য স্মার্ট সরকার ও প্রশাসন প্রয়োজন হবে এবং দলকেও সেভাবে প্রস্তুত করতে হবে। শুধু অবকাঠামোগত উন্নয়নে নিয়োজিত থাকলে চলবে না; জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ এবং তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করতে হবে সরকার ও ক্ষমতাসীন দলকে। সংগঠনকে সচল ও রাজনৈতিক কর্মসূচিভিত্তিক কাজ বাড়াতে হবে তৃণমূল পর্যন্ত। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগকে জনগণ ভোট দিয়ে দফায় দফায় ক্ষমতায় আনলেও মানুষের জীবনমান উন্নয়নে সরকারের মনোভাব বৈষম্যমূলক। বিরোধী দল তাদের মনমতো নির্বাচনের দাবিতে অরাজকতা সৃষ্টি করতে চাইলে সেটা যেমন হতে দেওয়া যাবে না, তেমনি তাদের সমালোচনা ও অপপ্রচারের যুক্তিপূর্ণ জবাবও তো দিতে হবে।
পাশাপাশি দুর্নীতি দমন ও সুশাসন নিশ্চিত করে জনগণকে আশ্বস্ত করতে হবে জনকল্যাণের বিষয়ে। অর্থনীতিতে যেসব সংকট রয়েছে, সেগুলো মোকাবিলায় পদক্ষেপও আরও জোরালো করা চাই। বেকারত্ব হ্রাস ও আয়বৈষম্য কমিয়ে আনা গেলে জনমনে স্বস্তি ফিরে আসতে সময় লাগবে না। তাতে সরকারের ওপর আস্থাও বাড়বে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত আরও শক্তিশালী হবে এতে। সবচেয়ে বড় কথা, নতুন বছরে নতুন সরকারের কাছে মানুষ নতুন ধারার রাজনীতি প্রত্যাশা করে।
মোনায়েম সরকার, রাজনীতিবিদ, লেখক ও চেয়ারম্যান, বিএফডিআর

আর মাত্র দুই দিন পর আমরা একটি নতুন বছরে পদার্পণ করব। ২০২৩ সালকে বিদায় দিয়ে স্বাগত জানাব ২০২৪ সালকে। পেছনে তাকিয়ে বলতে পারি, দ্বিধাদ্বন্দ্ব-দোলাচল, বিভেদ-বিভ্রান্তি সত্ত্বেও আমরা সংকট মোকাবিলা করে সম্ভাবনার দিকেই এগিয়ে চলেছি। বিদায়ী বছরে করোনা মহামারি আমাদের সেভাবে ভোগায়নি, তবে ডেঙ্গু অনেকের জীবন কেড়েছে। মশা নিধনে কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার খোরাক জুগিয়েছে।
বন্যা বা অন্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসলহানি হলে পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে, সেই শঙ্কা ছিল। কিন্তু পরিস্থিতির তেমন অবনতি হয়নি। আগের বছরই বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু চালু করে দেওয়ার কাজটি সরকার করতে পেরেছে। এটি আমাদের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন প্রকল্প। এটি শুধু একটি প্রকল্প নয়, স্বপ্নের বাস্তবায়ন। আমরা সবাই জানি, কত প্রতিকূলতার মধ্যে সরকার পদ্মা সেতু প্রকল্প নিয়ে এগিয়েছে এবং অবশেষে তা বাস্তবায়ন করতে পেরেছে।
বিদায়ী বছরে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে রেললাইন চালু হয়েছে। পদ্মা সেতু চালুর পর রেল চলাচল শুরু হওয়ায় রাজধানীর সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার নিরবচ্ছিন্ন, সাশ্রয়ী ও দ্রুত যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এ ছাড়া বিদায়ী বছরে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে চালু হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল। এটা বাংলাদেশের প্রথম সুড়ঙ্গপথ এবং দক্ষিণ এশিয়ায় নদীর তলদেশের প্রথম ও দীর্ঘতম সড়ক সুড়ঙ্গপথ। বিদায়ী বছরেই চালু হয়েছে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল।
বছরজুড়েই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি ছিল বিপুলসংখ্যক মানুষের জন্য উদ্বেগ ও অস্বস্তির। ডিম, আলু, পেঁয়াজ নিয়ে কত কাণ্ডই না হলো! ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কাছে সরকারের অসহায় আত্মসমর্পণ মানুষকে পীড়া দিয়েছে।
বিদায়ী বছরে সরকারের অর্থসংকটে পড়ার খবর দফায় দফায় শোনা গেছে। আমাদের মতো দেশের পক্ষে উচ্চাভিলাষী উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে অনেক সময় অর্থসংকট দেখা দেওয়া অস্বাভাবিক নয়। রাজস্ব আদায়ে সব সরকারের আমলেই ব্যর্থতা লক্ষ করা গেলেও কোনো সময়েই বিদেশি অর্থসহায়তা পেতে আমাদের বেগ পেতে হয়নি। কারণ, এ ধরনের ঋণ পরিশোধে আমাদের সুনাম আছে।
বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ কমতে থাকার বিষয়টি অনেকবারই খবর হয়েছে। এই সংকটের মূল কারণ সম্ভবত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যায় অস্বাভাবিকভাবে, বিশ্ববাজারে খাদ্যের দামও বেড়ে যায় আকস্মিকভাবে শুরু হওয়া এই যুদ্ধ দ্রুত বন্ধ না হওয়ায়। ইউক্রেন ঘিরে রাশিয়ার আগ্রাসী মনোভাবের পাশাপাশি আমেরিকার নেতৃত্বে ন্যাটো জোটের উসকানিও এই পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য দায়ী।
এর মূল্য দিতে হচ্ছে বাংলাদেশের মতো উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোকে। বিদায়ী বছরে আমাদের অর্থনীতি ও জনজীবনে সংকট দেখা দিলেও সরকার চেষ্টা করছে আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক রেখে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে। কিছু সময়ের জন্য যে বিদ্যুৎসংকট দেখা দিয়েছিল, সেটাও নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসার চেষ্টা করেছে সরকার। বিদ্যুতের বেড়ে চলা চাহিদা পূরণে সরকার কিছু সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছিল।
তবে বিদ্যুৎ খাতে অপচয়-দুর্নীতির কথা অনেকে বলে থাকেন এবং বিদ্যুৎসংকটের সময় সমালোচনা বেড়েছিল স্বভাবতই। বেসরকারি খাতের চুক্তিগুলো নিয়েও অনেক কথা শুনতে হয়েছে সরকারকে। নতুন বছরে এ ক্ষেত্রে নতুন কী হয়, সেটা এখন দেখার অপেক্ষা।
নতুন বছরেই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ শেষে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সড়ক যোগাযোগ উন্নত করার কাজ শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার করে যাচ্ছে দায়িত্ব গ্রহণের শুরু থেকেই। বিদায়ী বছরে অর্জনগুলো দৃশ্যমান হয়েছে অনেক ক্ষেত্রেই।
নতুন যে বছর আসছে, তার শুরুতেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে অংশ না নিয়ে বিএনপিসহ কিছু দল আন্দোলন করছে। নিজেদের পছন্দমতো সরকারের অধীনে নির্বাচন না হওয়ায় বিএনপিসহ কিছু দলের এই নির্বাচনবিরোধিতা।
আগের বছরের মধ্যভাগ থেকে বিএনপির নেতৃত্বে বিরোধী দলগুলো রাজনীতির মাঠ গরম করতে তৎপর হয়ে উঠলেও এ পর্যন্ত তাদের কোনো সফলতা নেই। বিএনপির সঙ্গে তার সব সময়ের মিত্র জামায়াতে ইসলামীসহ মৌলবাদী দলগুলো প্রকাশ্যে ততটা না হলেও কৌশলে অবশ্যই রয়েছে। দলটির সঙ্গে নতুন করে যোগ দিয়েছে সাবেক বাম, মধ্য বাম কিছু গ্রুপ। অনলাইনে দেশে-বিদেশে সক্রিয় একটি গোষ্ঠীও সরকারের সমালোচনা অব্যাহত রেখেছে। সমালোচনায় কারও আপত্তি হওয়ার কথা নয়, তবে অপপ্রচারে আপত্তি করতেই হবে। বিদায়ী বছরে আমরা লক্ষ করেছি, জনজীবনে সৃষ্টি হওয়া কিছু সমস্যা নিয়ে দেশে যেমন বিরোধী দলগুলো সক্রিয় হয়ে উঠতে চেয়েছে, তেমনি অনলাইনে সক্রিয় একটি গোষ্ঠী মেতে উঠেছে অপপ্রচারে। রিজার্ভ পরিস্থিতি ও ব্যাংক খাতের কিছু অপ্রত্যাশিত ঘটনা নিয়ে তারা এত অপপ্রচার চালায়, যা মোকাবিলা করা সরকারের পক্ষে সহজ ছিল না। দেশ অচিরেই শ্রীলঙ্কা হয়ে যাবে বলে প্রচারণা চালিয়ে অবশ্য কোনো সুফল তারা পায়নি। দেশ শ্রীলঙ্কা হয়নি।
তবে এ কথা ঠিক, ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী কোনো কোনো ব্যাংকে সংকট তৈরি করছে এবং তারা দেশ থেকে অর্থ পাচারেও জড়িত। এদের দমনে সরকারের আন্তরিক উদ্যোগে ঘাটতির অভিযোগও আছে। নতুন বছরে নতুন সরকার যত দ্রুত পাচার, লুটপাট রোধে পদক্ষেপ নেবে, ততই আস্থা ফিরে আসবে মানুষের মনে। এর প্রভাব বিরোধী দলের আন্দোলনেও গিয়ে পড়বে।
তাদের আন্দোলনের সুযোগ আসে প্রধানত সরকারের কিছু সীমাবদ্ধতা ও ব্যর্থতা থেকে। বিদায়ী বছরে আমরা ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের অতি তৎপরতা দেখে বিস্মিত হয়েছি। এর প্রতিক্রিয়ায় আবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী রাষ্ট্রগুলোর তৎপরতাও প্রকাশ্যেই দেখা গেছে। সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্য বলা হয়েছে, গণতন্ত্র, নির্বাচন ও মানবাধিকারের মতো বিষয়ে বাইরের কোনো দেশের রীতিবিরুদ্ধ কথাবার্তা ও কার্যকলাপ বাংলাদেশ পছন্দ করে না। তাদের কূটনৈতিক রীতিনীতি মান্য করে দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র দপ্তরকে এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় আরও সতর্ক থাকতে হবে। অনেকে মনে করেন, আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক শক্তিগুলো পরস্পরের দ্বন্দ্ব-সংঘাতের একটি ক্ষেত্র করে তুলতে চায় বাংলাদেশকে। বলা বাহুল্য, দীর্ঘদিন ধরে সচেষ্ট থেকেও কার্যকর আন্দোলন রচনায় ব্যর্থ বিরোধী দল এর সুযোগ নিতে চাইছে। নতুন বছরে এ বিষয়ে বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে সরকারকে। এটা আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের জন্যও একটি পরীক্ষা।
আন্দোলনে অসফল বলেই এটা মনে করা ঠিক হবে না যে বিএনপির কোনো জনসমর্থন নেই। বিএনপির পেছনে জনগণের একটি বড় অংশের সমর্থন আছে। আওয়ামী লীগ নজিরবিহীনভাবে টানা তিন মেয়াদ ক্ষমতায় থাকায় দলটির জন্য কিছু জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষমতাসীনদের প্রতি মানুষের রাগ-ক্ষোভ থাকা স্বাভাবিক। অন্যায় কাজে ক্ষমতার প্রয়োগ মানুষ পছন্দ করে না। মানুষ অন্যায়ের বিরুদ্ধে ক্ষমতার প্রয়োগ দেখতে চায়।
আগের দুটি নির্বাচন ত্রুটিমুক্ত না হওয়া এবং দেশে-বিদেশে সমালোচনার কারণে এবার সরকারও চেয়েছে সবার অংশগ্রহণে একটি অর্থবহ নির্বাচন। নির্বাচন একেবারে প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন হচ্ছে না। নির্বাচনে জয়ী হয়ে উন্নয়নের চলমান ধারা অব্যাহত রাখতে চাইছে ক্ষমতাসীন দল। ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ করার উচ্চাভিলাষের কথা সামনে এনেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেটি অর্জনের জন্য স্মার্ট সরকার ও প্রশাসন প্রয়োজন হবে এবং দলকেও সেভাবে প্রস্তুত করতে হবে। শুধু অবকাঠামোগত উন্নয়নে নিয়োজিত থাকলে চলবে না; জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ এবং তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করতে হবে সরকার ও ক্ষমতাসীন দলকে। সংগঠনকে সচল ও রাজনৈতিক কর্মসূচিভিত্তিক কাজ বাড়াতে হবে তৃণমূল পর্যন্ত। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগকে জনগণ ভোট দিয়ে দফায় দফায় ক্ষমতায় আনলেও মানুষের জীবনমান উন্নয়নে সরকারের মনোভাব বৈষম্যমূলক। বিরোধী দল তাদের মনমতো নির্বাচনের দাবিতে অরাজকতা সৃষ্টি করতে চাইলে সেটা যেমন হতে দেওয়া যাবে না, তেমনি তাদের সমালোচনা ও অপপ্রচারের যুক্তিপূর্ণ জবাবও তো দিতে হবে।
পাশাপাশি দুর্নীতি দমন ও সুশাসন নিশ্চিত করে জনগণকে আশ্বস্ত করতে হবে জনকল্যাণের বিষয়ে। অর্থনীতিতে যেসব সংকট রয়েছে, সেগুলো মোকাবিলায় পদক্ষেপও আরও জোরালো করা চাই। বেকারত্ব হ্রাস ও আয়বৈষম্য কমিয়ে আনা গেলে জনমনে স্বস্তি ফিরে আসতে সময় লাগবে না। তাতে সরকারের ওপর আস্থাও বাড়বে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত আরও শক্তিশালী হবে এতে। সবচেয়ে বড় কথা, নতুন বছরে নতুন সরকারের কাছে মানুষ নতুন ধারার রাজনীতি প্রত্যাশা করে।
মোনায়েম সরকার, রাজনীতিবিদ, লেখক ও চেয়ারম্যান, বিএফডিআর

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

আর মাত্র দুই দিন পর আমরা একটি নতুন বছরে পদার্পণ করব। ২০২৩ সালকে বিদায় দিয়ে স্বাগত জানাব ২০২৪ সালকে। পেছনে তাকিয়ে বলতে পারি, দ্বিধাদ্বন্দ্ব-দোলাচল, বিভেদ-বিভ্রান্তি সত্ত্বেও আমরা সংকট মোকাবিলা করে সম্ভাবনার দিকেই এগিয়ে চলেছি। বিদায়ী বছরে করোনা মহামারি আমাদের সেভাবে ভোগায়নি, তবে ডেঙ্গু অনেকের জীবন কেড়
২৯ ডিসেম্বর ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

আর মাত্র দুই দিন পর আমরা একটি নতুন বছরে পদার্পণ করব। ২০২৩ সালকে বিদায় দিয়ে স্বাগত জানাব ২০২৪ সালকে। পেছনে তাকিয়ে বলতে পারি, দ্বিধাদ্বন্দ্ব-দোলাচল, বিভেদ-বিভ্রান্তি সত্ত্বেও আমরা সংকট মোকাবিলা করে সম্ভাবনার দিকেই এগিয়ে চলেছি। বিদায়ী বছরে করোনা মহামারি আমাদের সেভাবে ভোগায়নি, তবে ডেঙ্গু অনেকের জীবন কেড়
২৯ ডিসেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

আর মাত্র দুই দিন পর আমরা একটি নতুন বছরে পদার্পণ করব। ২০২৩ সালকে বিদায় দিয়ে স্বাগত জানাব ২০২৪ সালকে। পেছনে তাকিয়ে বলতে পারি, দ্বিধাদ্বন্দ্ব-দোলাচল, বিভেদ-বিভ্রান্তি সত্ত্বেও আমরা সংকট মোকাবিলা করে সম্ভাবনার দিকেই এগিয়ে চলেছি। বিদায়ী বছরে করোনা মহামারি আমাদের সেভাবে ভোগায়নি, তবে ডেঙ্গু অনেকের জীবন কেড়
২৯ ডিসেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আর মাত্র দুই দিন পর আমরা একটি নতুন বছরে পদার্পণ করব। ২০২৩ সালকে বিদায় দিয়ে স্বাগত জানাব ২০২৪ সালকে। পেছনে তাকিয়ে বলতে পারি, দ্বিধাদ্বন্দ্ব-দোলাচল, বিভেদ-বিভ্রান্তি সত্ত্বেও আমরা সংকট মোকাবিলা করে সম্ভাবনার দিকেই এগিয়ে চলেছি। বিদায়ী বছরে করোনা মহামারি আমাদের সেভাবে ভোগায়নি, তবে ডেঙ্গু অনেকের জীবন কেড়
২৯ ডিসেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫