
আজকের পত্রিকা: আমরা ভাবতাম, একটা গণতান্ত্রিক দেশে বসবাস করি। আসলে কি কখনো আমাদের দেশ গণতন্ত্র দ্বারা শাসিত হয়েছে?
আলতাফ পারভেজ: গণতন্ত্র কোনো একটি উপাদান দিয়ে গঠিত নয়। এর কোনো ধরাবাঁধা পরিসরও নেই। সমাজ ও রাষ্ট্রে কী কী উপাদান থাকলে তাকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বা গণতান্ত্রিক সমাজ বলা হবে, তার সীমারেখা বেশ বড়। তবে নিশ্চয়ই গণতন্ত্রের ন্যূনতম কিছু উপাদান বা সূচক আছে। বিশ্বজুড়ে সেই ন্যূনতম সাধারণ উপাদানগুলো দিয়েই বিভিন্ন জনপদের গণতান্ত্রিক অবস্থা পরিমাপ করা হয়।যেমন কোথাও বিভিন্ন আদর্শের রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ আছে কি না, সংবাদপত্রে সংবাদ ছাপানো ও মতামত প্রকাশের ভয়হীন পরিবেশ আছে কি না, মানুষ শাসকদের সঙ্গে কোনো বিষয়ে ভিন্নমত প্রকাশ করে নির্বিঘ্নে বাসাবাড়িতে থাকতে পারে কি না, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ তাদের প্রয়োজনে সংঘবদ্ধ হতে পারে কি না ইত্যাদি হলো গণতন্ত্রের ন্যূনতম বিষয়। আমাদের দেশে এসব ছিল না, এমন নয়। সবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন তো আমরা দেখেছি এ দেশে। ডিজিটাল অ্যাক্ট, সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টের মতো আইনের আগে, সন্ত্রাস দমন আইনের আগে, বিশেষ ক্ষমতা আইনের আগে নিশ্চয়ই এখনকার মতো পরিবেশ ছিল না। অন্তত আমার কথা বলতে পারি, জীবনের শুরুতে এমন অনেক ঐতিহাসিক বিষয়-আশয়ে লিখেছি, গবেষণা করেছি, এখন আর সে রকম লেখার কাজ করার সাহস পাই না। সাহসের এই ঘাটতি তো পরিবেশ-সৃষ্ট। লেখক স্বেচ্ছায় আত্মহত্যা করে না।
আজকের পত্রিকা: জাতি আজ দুদিকে বিভক্ত হয়ে গেছে। এক পক্ষ আরেক পক্ষকে গ্রাহ্যই করে না। সহিংস হয়ে উঠেছে। এর প্রতিকার কী?
আলতাফ পারভেজ: জাতি দুই ভাগ হয়ে গেছে কথাটা সত্য। তবে কীভাবে দুই ভাগ হলো এবং সেই দুই ভাগে কারা কারা আছে, সেটা দেখার বিষয় হলো গুরুত্বপূর্ণ; অর্থাৎ ভাগের মানদণ্ডটা হলো গুরুত্বপূর্ণ।
যেমন আমরা যদি শেয়ারবাজারকে একটা মানদণ্ড ধরি, তাহলে যারা শেয়ারবাজার থেকে নানা অনিয়মের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা সরিয়েছে এবং যারা সেখানে সর্বস্ব খুইয়েছে, এরা দুই ভাগে পড়ে যাওয়া মানুষ। এখন কেউ যদি বলে এই দুই ভাগের মানুষই তো বাঙালি—তাদের মিলেমিশে শান্তিতে থাকা উচিত, তাহলে সেটা কিন্তু বাজার লুণ্ঠনকারীদের পক্ষে যাবে।
পুরো অর্থনীতি মিলিয়ে এ রকম মোটাদাগের দুটি শ্রেণি আছে এখন। একদল নির্বিঘ্নে টাকা পাচার করতে পারছে, সিন্ডিকেট বানিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে, সামান্য বেতনের চাকরি করেও হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হতে পারছে, আরেক দল অসহায়ের মতো সেসবের দর্শক-শ্রোতা হয়ে আছে।
আবার উপরিকাঠামোর রাজনীতি যদি দেখি, সেখানেও অবশ্যই দুটি পক্ষ আছে। তাদের মাঝে যে দ্বন্দ্ব ও বৈরিতা দেখছি, তার কারণ সবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনী ব্যবস্থার সংকট। কোনো দেশের সমাজে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ যদি দেখে ভোটের মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধি বাছাইয়ের বিশ্বাসযোগ্য ব্যবস্থা থাকে, শান্তিতে মতামত ব্যক্ত করা যাচ্ছে, তাহলেই কেবল স্বাস্থ্যকর একটা রাজনৈতিক পরিবেশ আশা করা যায় সেখানে। কোনো সমাজই অহেতুক সহিংস হয়ে ওঠে না। সহিংসতার কারণ না খুঁজে শান্তিবাদী হয়ে ওঠাও একটা বোকা বোকা ব্যাপার। সমাজে সহিংসতার কারণ দূর না করে আহাজারি করে আমরা ইতিবাচক কোথাও পৌঁছাতে পারব না।
আজকের পত্রিকা: সাধারণ মানুষের মধ্যেও যে ধৈর্যহীনতা, অসহিষ্ণুতা এসেছে, কিছু একটা হলেই হাতাহাতি, মারামারি হচ্ছে, এর থেকে কীভাবে উদ্ধার পাওয়া সম্ভব?
আলতাফ পারভেজ: বাংলাদেশের মানুষকে আমার অতিরিক্ত সহিষ্ণু এবং ধৈর্যশীল মনে হয়। এত ধনবৈষম্য, এত নাগরিক অধিকারহীন, এতটা মানবিক মর্যাদাহীন, এতটা অর্থনৈতিক ন্যায়বিচারশূন্য একটা সমাজে মানুষ যে এত শান্তিবাদী হয়ে থাকছে দশকের পর দশক, সেটাই বরং খুব অস্বাভাবিক। এখানে দশকওয়ারি হানাহানির পরিসংখ্যানও খুব নগণ্য। আমি এমন অনেক জেলা-উপজেলার কথা জানি, যেখানে নাগরিক পরিবহনব্যবস্থা নেই, স্বাস্থ্যব্যবস্থা দুর্বল, লাখ লাখ তরুণ-তরুণী বেকার, লাখ লাখ মানুষ ভূমিহীন অথচ সমাজ প্রায় শান্ত। তারা এসব বিষয়ে কথা বলতেও ভুলে গেছে। এখানে কোটি কোটি তরুণ-তরুণী জানে না তাদের পেশাগত ভবিষ্যৎ কী—অথচ তারা এ নিয়ে তেমন সোচ্চারও নয়। ভোটের সময় এসব কোনো ইস্যুও হয় না। কোটি কোটি মানুষের এ রকম দাসোচিত জীবন সমাজবিজ্ঞানের দিক থেকে খুবই বিস্ময়কর, অস্বাভাবিক এবং অসুস্থতার লক্ষণও বটে।
আজকের পত্রিকা: আমাদের মনন গঠনে সাম্প্রদায়িকতা এসেছে। অথচ দেশ স্বাধীন হওয়ার সময় অসাম্প্রদায়িকতার দীক্ষা নিয়েছিল জনগণ। এই বাঁকবদলের কারণ কী?
আলতাফ পারভেজ: ধর্মভিত্তিক হানাহানির অর্থে আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িকতার সমস্যা খুবই অনুল্লেখ্য। আশপাশের দেশ মিয়ানমার, ভারত, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান ইত্যাদি দেশে যেভাবে অপর ধর্ম পদ্ধতিগত সহিংসতার শিকার হয়, বাংলাদেশে অন্তত তেমন মোটাদাগে কিছু দেখি না। তবে এখানে মনস্তাত্ত্বিক ধর্মীয় বিদ্বেষ আছে। এর কারণ হলো, স্বাধীনতার পর থেকে যখন যে দল ক্ষমতায় এসেছে, সেই দল নিজেদের প্রয়োজনে বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন ধর্মকে ব্যবহার করেছে। শাসকেরা চায় এখানে ধর্মচর্চা বাড়ুক। এই শাসকেরা কখনো সংখ্যাগরিষ্ঠের ধর্মকে, কখনো আবার সংখ্যালঘুকে আপন স্বার্থে রাজনৈতিক-প্রশাসনিকভাবে ব্যবহার করেছে। ফলে সমাজে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের মাঝে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। আবার আমাদের এখানে সাম্প্রদায়িক পরিবেশ তৈরির পেছনে ভারতের সাম্প্রদায়িক রাজনীতি পরোক্ষে গভীর প্রভাব রেখেছে। সেখানে আরএসএস-বিজেপির উত্থান দেখে সবাই এখন মনে করছে, ধর্মকে ব্যবহার করে সমাজে প্রভাবশালী হওয়া যায়, ভোটের রাজনীতিতেও সফল হওয়া যায়। ভারতে ধর্মনিরপেক্ষতা সবল থাকলে আমাদের এখানেও সাম্প্রদায়িকতার আবেদন কমে যেত।
আজকের পত্রিকা: বামপন্থী আন্দোলন কেন দেশের জনগণের সমর্থন পেল না?
আলতাফ পারভেজ: ‘সফলতা’কে আমরা আসলে কীভাবে মাপব? ক্ষমতায় থাকার অর্থে? নাকি সমাজের ইতিবাচক বিকাশের অর্থে? আমাদের এখানে বামপন্থীরা কোনোকালে ক্ষমতায় ছিল না। ছিল ডানপন্থী-মধ্যপন্থীরাই। আপনার ওপরের প্রশ্নেই রয়েছে, এই ডান ও মধ্যপন্থীদের ৫০-৫৫ বছরের শাসনে সমাজে শান্তি নেই, হিংসা ও বৈরিতায় ছেয়ে গেছে সমাজ। তাহলে তাদের কি আমরা সফল বলব? তবে ‘ক্ষমতা’য় থাকাও নিশ্চয়ই কোনো এক মানদণ্ডে সফলতাই বটে। এই মানদণ্ডে বামেরা ব্যর্থ। ডানেরা সফল।
বামেরা যে ক্ষমতায় যেতে পারেনি তার কারণ, তাদের প্রধান একাংশ মূলত ডানদের লেজুড়বৃত্তি করেছে। ডানদের করুণা ভিক্ষা করে ক্ষমতার হিস্যা পেতে চেয়েছে। অনেক বামপন্থী দল ডানদের নির্বাচনী প্রতীকে নির্বাচন করে। খুবই করুণ ব্যাপার।
আবার অনেক বামপন্থী দল ডানদের সঙ্গে সরাসরি নির্বাচনী আঁতাত না করেও একধরনের ছদ্ম মিত্রের ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে নমনীয় বিরোধিতার আড়ালে। সাধারণ মানুষের কাছে এসব ভঙ্গি খুবই পরিষ্কার। ফলে মানুষ কখনো এ রকম কোনো ধারাকে সবল এবং ক্ষমতার উপযুক্ত ভাবেনি। তরুণদের কাছে এদের ব্যবহারিক ভূমিকার কারণে প্রকৃত বামপন্থী আদর্শ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে এ রকম দলগুলোর ক্ষমতায় যাওয়ার কোনো সুযোগ আসবে বলে মনে হয় না।
আজকের পত্রিকা: এ অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায় কী?
আলতাফ পারভেজ: বাংলাদেশে ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রকাঠামোর আমূল সংস্কার দরকার। প্রশ্ন হলো, সেই সংস্কার কে করবে? সে রকম কোনো সবল রাজনৈতিক শক্তি এখানে হাজির নেই। হাজির হলেও তাদের ব্যাপক বাধার মুখে পড়তে হবে। ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রযন্ত্র এবং তার সহায়ক রাজনৈতিক শক্তিগুলো এখানে সংস্কার উদ্যোগকে বাধা দেবে। সেই বাধা অতিক্রমের মতো রাজনীতি গড়ে না ওঠা পর্যন্ত এখানে চলতি অবস্থাই চলতে থাকবে।
আজকের পত্রিকা: আপনাকে ধন্যবাদ সময় দেওয়ার জন্য।
আলতাফ পারভেজ: আপনাদেরও ধন্যবাদ।
আজকের পত্রিকা: আমরা ভাবতাম, একটা গণতান্ত্রিক দেশে বসবাস করি। আসলে কি কখনো আমাদের দেশ গণতন্ত্র দ্বারা শাসিত হয়েছে?
আলতাফ পারভেজ: গণতন্ত্র কোনো একটি উপাদান দিয়ে গঠিত নয়। এর কোনো ধরাবাঁধা পরিসরও নেই। সমাজ ও রাষ্ট্রে কী কী উপাদান থাকলে তাকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বা গণতান্ত্রিক সমাজ বলা হবে, তার সীমারেখা বেশ বড়। তবে নিশ্চয়ই গণতন্ত্রের ন্যূনতম কিছু উপাদান বা সূচক আছে। বিশ্বজুড়ে সেই ন্যূনতম সাধারণ উপাদানগুলো দিয়েই বিভিন্ন জনপদের গণতান্ত্রিক অবস্থা পরিমাপ করা হয়।যেমন কোথাও বিভিন্ন আদর্শের রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ আছে কি না, সংবাদপত্রে সংবাদ ছাপানো ও মতামত প্রকাশের ভয়হীন পরিবেশ আছে কি না, মানুষ শাসকদের সঙ্গে কোনো বিষয়ে ভিন্নমত প্রকাশ করে নির্বিঘ্নে বাসাবাড়িতে থাকতে পারে কি না, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ তাদের প্রয়োজনে সংঘবদ্ধ হতে পারে কি না ইত্যাদি হলো গণতন্ত্রের ন্যূনতম বিষয়। আমাদের দেশে এসব ছিল না, এমন নয়। সবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন তো আমরা দেখেছি এ দেশে। ডিজিটাল অ্যাক্ট, সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টের মতো আইনের আগে, সন্ত্রাস দমন আইনের আগে, বিশেষ ক্ষমতা আইনের আগে নিশ্চয়ই এখনকার মতো পরিবেশ ছিল না। অন্তত আমার কথা বলতে পারি, জীবনের শুরুতে এমন অনেক ঐতিহাসিক বিষয়-আশয়ে লিখেছি, গবেষণা করেছি, এখন আর সে রকম লেখার কাজ করার সাহস পাই না। সাহসের এই ঘাটতি তো পরিবেশ-সৃষ্ট। লেখক স্বেচ্ছায় আত্মহত্যা করে না।
আজকের পত্রিকা: জাতি আজ দুদিকে বিভক্ত হয়ে গেছে। এক পক্ষ আরেক পক্ষকে গ্রাহ্যই করে না। সহিংস হয়ে উঠেছে। এর প্রতিকার কী?
আলতাফ পারভেজ: জাতি দুই ভাগ হয়ে গেছে কথাটা সত্য। তবে কীভাবে দুই ভাগ হলো এবং সেই দুই ভাগে কারা কারা আছে, সেটা দেখার বিষয় হলো গুরুত্বপূর্ণ; অর্থাৎ ভাগের মানদণ্ডটা হলো গুরুত্বপূর্ণ।
যেমন আমরা যদি শেয়ারবাজারকে একটা মানদণ্ড ধরি, তাহলে যারা শেয়ারবাজার থেকে নানা অনিয়মের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা সরিয়েছে এবং যারা সেখানে সর্বস্ব খুইয়েছে, এরা দুই ভাগে পড়ে যাওয়া মানুষ। এখন কেউ যদি বলে এই দুই ভাগের মানুষই তো বাঙালি—তাদের মিলেমিশে শান্তিতে থাকা উচিত, তাহলে সেটা কিন্তু বাজার লুণ্ঠনকারীদের পক্ষে যাবে।
পুরো অর্থনীতি মিলিয়ে এ রকম মোটাদাগের দুটি শ্রেণি আছে এখন। একদল নির্বিঘ্নে টাকা পাচার করতে পারছে, সিন্ডিকেট বানিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে, সামান্য বেতনের চাকরি করেও হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হতে পারছে, আরেক দল অসহায়ের মতো সেসবের দর্শক-শ্রোতা হয়ে আছে।
আবার উপরিকাঠামোর রাজনীতি যদি দেখি, সেখানেও অবশ্যই দুটি পক্ষ আছে। তাদের মাঝে যে দ্বন্দ্ব ও বৈরিতা দেখছি, তার কারণ সবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনী ব্যবস্থার সংকট। কোনো দেশের সমাজে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ যদি দেখে ভোটের মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধি বাছাইয়ের বিশ্বাসযোগ্য ব্যবস্থা থাকে, শান্তিতে মতামত ব্যক্ত করা যাচ্ছে, তাহলেই কেবল স্বাস্থ্যকর একটা রাজনৈতিক পরিবেশ আশা করা যায় সেখানে। কোনো সমাজই অহেতুক সহিংস হয়ে ওঠে না। সহিংসতার কারণ না খুঁজে শান্তিবাদী হয়ে ওঠাও একটা বোকা বোকা ব্যাপার। সমাজে সহিংসতার কারণ দূর না করে আহাজারি করে আমরা ইতিবাচক কোথাও পৌঁছাতে পারব না।
আজকের পত্রিকা: সাধারণ মানুষের মধ্যেও যে ধৈর্যহীনতা, অসহিষ্ণুতা এসেছে, কিছু একটা হলেই হাতাহাতি, মারামারি হচ্ছে, এর থেকে কীভাবে উদ্ধার পাওয়া সম্ভব?
আলতাফ পারভেজ: বাংলাদেশের মানুষকে আমার অতিরিক্ত সহিষ্ণু এবং ধৈর্যশীল মনে হয়। এত ধনবৈষম্য, এত নাগরিক অধিকারহীন, এতটা মানবিক মর্যাদাহীন, এতটা অর্থনৈতিক ন্যায়বিচারশূন্য একটা সমাজে মানুষ যে এত শান্তিবাদী হয়ে থাকছে দশকের পর দশক, সেটাই বরং খুব অস্বাভাবিক। এখানে দশকওয়ারি হানাহানির পরিসংখ্যানও খুব নগণ্য। আমি এমন অনেক জেলা-উপজেলার কথা জানি, যেখানে নাগরিক পরিবহনব্যবস্থা নেই, স্বাস্থ্যব্যবস্থা দুর্বল, লাখ লাখ তরুণ-তরুণী বেকার, লাখ লাখ মানুষ ভূমিহীন অথচ সমাজ প্রায় শান্ত। তারা এসব বিষয়ে কথা বলতেও ভুলে গেছে। এখানে কোটি কোটি তরুণ-তরুণী জানে না তাদের পেশাগত ভবিষ্যৎ কী—অথচ তারা এ নিয়ে তেমন সোচ্চারও নয়। ভোটের সময় এসব কোনো ইস্যুও হয় না। কোটি কোটি মানুষের এ রকম দাসোচিত জীবন সমাজবিজ্ঞানের দিক থেকে খুবই বিস্ময়কর, অস্বাভাবিক এবং অসুস্থতার লক্ষণও বটে।
আজকের পত্রিকা: আমাদের মনন গঠনে সাম্প্রদায়িকতা এসেছে। অথচ দেশ স্বাধীন হওয়ার সময় অসাম্প্রদায়িকতার দীক্ষা নিয়েছিল জনগণ। এই বাঁকবদলের কারণ কী?
আলতাফ পারভেজ: ধর্মভিত্তিক হানাহানির অর্থে আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িকতার সমস্যা খুবই অনুল্লেখ্য। আশপাশের দেশ মিয়ানমার, ভারত, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান ইত্যাদি দেশে যেভাবে অপর ধর্ম পদ্ধতিগত সহিংসতার শিকার হয়, বাংলাদেশে অন্তত তেমন মোটাদাগে কিছু দেখি না। তবে এখানে মনস্তাত্ত্বিক ধর্মীয় বিদ্বেষ আছে। এর কারণ হলো, স্বাধীনতার পর থেকে যখন যে দল ক্ষমতায় এসেছে, সেই দল নিজেদের প্রয়োজনে বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন ধর্মকে ব্যবহার করেছে। শাসকেরা চায় এখানে ধর্মচর্চা বাড়ুক। এই শাসকেরা কখনো সংখ্যাগরিষ্ঠের ধর্মকে, কখনো আবার সংখ্যালঘুকে আপন স্বার্থে রাজনৈতিক-প্রশাসনিকভাবে ব্যবহার করেছে। ফলে সমাজে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের মাঝে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। আবার আমাদের এখানে সাম্প্রদায়িক পরিবেশ তৈরির পেছনে ভারতের সাম্প্রদায়িক রাজনীতি পরোক্ষে গভীর প্রভাব রেখেছে। সেখানে আরএসএস-বিজেপির উত্থান দেখে সবাই এখন মনে করছে, ধর্মকে ব্যবহার করে সমাজে প্রভাবশালী হওয়া যায়, ভোটের রাজনীতিতেও সফল হওয়া যায়। ভারতে ধর্মনিরপেক্ষতা সবল থাকলে আমাদের এখানেও সাম্প্রদায়িকতার আবেদন কমে যেত।
আজকের পত্রিকা: বামপন্থী আন্দোলন কেন দেশের জনগণের সমর্থন পেল না?
আলতাফ পারভেজ: ‘সফলতা’কে আমরা আসলে কীভাবে মাপব? ক্ষমতায় থাকার অর্থে? নাকি সমাজের ইতিবাচক বিকাশের অর্থে? আমাদের এখানে বামপন্থীরা কোনোকালে ক্ষমতায় ছিল না। ছিল ডানপন্থী-মধ্যপন্থীরাই। আপনার ওপরের প্রশ্নেই রয়েছে, এই ডান ও মধ্যপন্থীদের ৫০-৫৫ বছরের শাসনে সমাজে শান্তি নেই, হিংসা ও বৈরিতায় ছেয়ে গেছে সমাজ। তাহলে তাদের কি আমরা সফল বলব? তবে ‘ক্ষমতা’য় থাকাও নিশ্চয়ই কোনো এক মানদণ্ডে সফলতাই বটে। এই মানদণ্ডে বামেরা ব্যর্থ। ডানেরা সফল।
বামেরা যে ক্ষমতায় যেতে পারেনি তার কারণ, তাদের প্রধান একাংশ মূলত ডানদের লেজুড়বৃত্তি করেছে। ডানদের করুণা ভিক্ষা করে ক্ষমতার হিস্যা পেতে চেয়েছে। অনেক বামপন্থী দল ডানদের নির্বাচনী প্রতীকে নির্বাচন করে। খুবই করুণ ব্যাপার।
আবার অনেক বামপন্থী দল ডানদের সঙ্গে সরাসরি নির্বাচনী আঁতাত না করেও একধরনের ছদ্ম মিত্রের ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে নমনীয় বিরোধিতার আড়ালে। সাধারণ মানুষের কাছে এসব ভঙ্গি খুবই পরিষ্কার। ফলে মানুষ কখনো এ রকম কোনো ধারাকে সবল এবং ক্ষমতার উপযুক্ত ভাবেনি। তরুণদের কাছে এদের ব্যবহারিক ভূমিকার কারণে প্রকৃত বামপন্থী আদর্শ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে এ রকম দলগুলোর ক্ষমতায় যাওয়ার কোনো সুযোগ আসবে বলে মনে হয় না।
আজকের পত্রিকা: এ অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায় কী?
আলতাফ পারভেজ: বাংলাদেশে ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রকাঠামোর আমূল সংস্কার দরকার। প্রশ্ন হলো, সেই সংস্কার কে করবে? সে রকম কোনো সবল রাজনৈতিক শক্তি এখানে হাজির নেই। হাজির হলেও তাদের ব্যাপক বাধার মুখে পড়তে হবে। ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রযন্ত্র এবং তার সহায়ক রাজনৈতিক শক্তিগুলো এখানে সংস্কার উদ্যোগকে বাধা দেবে। সেই বাধা অতিক্রমের মতো রাজনীতি গড়ে না ওঠা পর্যন্ত এখানে চলতি অবস্থাই চলতে থাকবে।
আজকের পত্রিকা: আপনাকে ধন্যবাদ সময় দেওয়ার জন্য।
আলতাফ পারভেজ: আপনাদেরও ধন্যবাদ।

আজকের পত্রিকা: আমরা ভাবতাম, একটা গণতান্ত্রিক দেশে বসবাস করি। আসলে কি কখনো আমাদের দেশ গণতন্ত্র দ্বারা শাসিত হয়েছে?
আলতাফ পারভেজ: গণতন্ত্র কোনো একটি উপাদান দিয়ে গঠিত নয়। এর কোনো ধরাবাঁধা পরিসরও নেই। সমাজ ও রাষ্ট্রে কী কী উপাদান থাকলে তাকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বা গণতান্ত্রিক সমাজ বলা হবে, তার সীমারেখা বেশ বড়। তবে নিশ্চয়ই গণতন্ত্রের ন্যূনতম কিছু উপাদান বা সূচক আছে। বিশ্বজুড়ে সেই ন্যূনতম সাধারণ উপাদানগুলো দিয়েই বিভিন্ন জনপদের গণতান্ত্রিক অবস্থা পরিমাপ করা হয়।যেমন কোথাও বিভিন্ন আদর্শের রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ আছে কি না, সংবাদপত্রে সংবাদ ছাপানো ও মতামত প্রকাশের ভয়হীন পরিবেশ আছে কি না, মানুষ শাসকদের সঙ্গে কোনো বিষয়ে ভিন্নমত প্রকাশ করে নির্বিঘ্নে বাসাবাড়িতে থাকতে পারে কি না, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ তাদের প্রয়োজনে সংঘবদ্ধ হতে পারে কি না ইত্যাদি হলো গণতন্ত্রের ন্যূনতম বিষয়। আমাদের দেশে এসব ছিল না, এমন নয়। সবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন তো আমরা দেখেছি এ দেশে। ডিজিটাল অ্যাক্ট, সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টের মতো আইনের আগে, সন্ত্রাস দমন আইনের আগে, বিশেষ ক্ষমতা আইনের আগে নিশ্চয়ই এখনকার মতো পরিবেশ ছিল না। অন্তত আমার কথা বলতে পারি, জীবনের শুরুতে এমন অনেক ঐতিহাসিক বিষয়-আশয়ে লিখেছি, গবেষণা করেছি, এখন আর সে রকম লেখার কাজ করার সাহস পাই না। সাহসের এই ঘাটতি তো পরিবেশ-সৃষ্ট। লেখক স্বেচ্ছায় আত্মহত্যা করে না।
আজকের পত্রিকা: জাতি আজ দুদিকে বিভক্ত হয়ে গেছে। এক পক্ষ আরেক পক্ষকে গ্রাহ্যই করে না। সহিংস হয়ে উঠেছে। এর প্রতিকার কী?
আলতাফ পারভেজ: জাতি দুই ভাগ হয়ে গেছে কথাটা সত্য। তবে কীভাবে দুই ভাগ হলো এবং সেই দুই ভাগে কারা কারা আছে, সেটা দেখার বিষয় হলো গুরুত্বপূর্ণ; অর্থাৎ ভাগের মানদণ্ডটা হলো গুরুত্বপূর্ণ।
যেমন আমরা যদি শেয়ারবাজারকে একটা মানদণ্ড ধরি, তাহলে যারা শেয়ারবাজার থেকে নানা অনিয়মের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা সরিয়েছে এবং যারা সেখানে সর্বস্ব খুইয়েছে, এরা দুই ভাগে পড়ে যাওয়া মানুষ। এখন কেউ যদি বলে এই দুই ভাগের মানুষই তো বাঙালি—তাদের মিলেমিশে শান্তিতে থাকা উচিত, তাহলে সেটা কিন্তু বাজার লুণ্ঠনকারীদের পক্ষে যাবে।
পুরো অর্থনীতি মিলিয়ে এ রকম মোটাদাগের দুটি শ্রেণি আছে এখন। একদল নির্বিঘ্নে টাকা পাচার করতে পারছে, সিন্ডিকেট বানিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে, সামান্য বেতনের চাকরি করেও হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হতে পারছে, আরেক দল অসহায়ের মতো সেসবের দর্শক-শ্রোতা হয়ে আছে।
আবার উপরিকাঠামোর রাজনীতি যদি দেখি, সেখানেও অবশ্যই দুটি পক্ষ আছে। তাদের মাঝে যে দ্বন্দ্ব ও বৈরিতা দেখছি, তার কারণ সবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনী ব্যবস্থার সংকট। কোনো দেশের সমাজে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ যদি দেখে ভোটের মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধি বাছাইয়ের বিশ্বাসযোগ্য ব্যবস্থা থাকে, শান্তিতে মতামত ব্যক্ত করা যাচ্ছে, তাহলেই কেবল স্বাস্থ্যকর একটা রাজনৈতিক পরিবেশ আশা করা যায় সেখানে। কোনো সমাজই অহেতুক সহিংস হয়ে ওঠে না। সহিংসতার কারণ না খুঁজে শান্তিবাদী হয়ে ওঠাও একটা বোকা বোকা ব্যাপার। সমাজে সহিংসতার কারণ দূর না করে আহাজারি করে আমরা ইতিবাচক কোথাও পৌঁছাতে পারব না।
আজকের পত্রিকা: সাধারণ মানুষের মধ্যেও যে ধৈর্যহীনতা, অসহিষ্ণুতা এসেছে, কিছু একটা হলেই হাতাহাতি, মারামারি হচ্ছে, এর থেকে কীভাবে উদ্ধার পাওয়া সম্ভব?
আলতাফ পারভেজ: বাংলাদেশের মানুষকে আমার অতিরিক্ত সহিষ্ণু এবং ধৈর্যশীল মনে হয়। এত ধনবৈষম্য, এত নাগরিক অধিকারহীন, এতটা মানবিক মর্যাদাহীন, এতটা অর্থনৈতিক ন্যায়বিচারশূন্য একটা সমাজে মানুষ যে এত শান্তিবাদী হয়ে থাকছে দশকের পর দশক, সেটাই বরং খুব অস্বাভাবিক। এখানে দশকওয়ারি হানাহানির পরিসংখ্যানও খুব নগণ্য। আমি এমন অনেক জেলা-উপজেলার কথা জানি, যেখানে নাগরিক পরিবহনব্যবস্থা নেই, স্বাস্থ্যব্যবস্থা দুর্বল, লাখ লাখ তরুণ-তরুণী বেকার, লাখ লাখ মানুষ ভূমিহীন অথচ সমাজ প্রায় শান্ত। তারা এসব বিষয়ে কথা বলতেও ভুলে গেছে। এখানে কোটি কোটি তরুণ-তরুণী জানে না তাদের পেশাগত ভবিষ্যৎ কী—অথচ তারা এ নিয়ে তেমন সোচ্চারও নয়। ভোটের সময় এসব কোনো ইস্যুও হয় না। কোটি কোটি মানুষের এ রকম দাসোচিত জীবন সমাজবিজ্ঞানের দিক থেকে খুবই বিস্ময়কর, অস্বাভাবিক এবং অসুস্থতার লক্ষণও বটে।
আজকের পত্রিকা: আমাদের মনন গঠনে সাম্প্রদায়িকতা এসেছে। অথচ দেশ স্বাধীন হওয়ার সময় অসাম্প্রদায়িকতার দীক্ষা নিয়েছিল জনগণ। এই বাঁকবদলের কারণ কী?
আলতাফ পারভেজ: ধর্মভিত্তিক হানাহানির অর্থে আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িকতার সমস্যা খুবই অনুল্লেখ্য। আশপাশের দেশ মিয়ানমার, ভারত, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান ইত্যাদি দেশে যেভাবে অপর ধর্ম পদ্ধতিগত সহিংসতার শিকার হয়, বাংলাদেশে অন্তত তেমন মোটাদাগে কিছু দেখি না। তবে এখানে মনস্তাত্ত্বিক ধর্মীয় বিদ্বেষ আছে। এর কারণ হলো, স্বাধীনতার পর থেকে যখন যে দল ক্ষমতায় এসেছে, সেই দল নিজেদের প্রয়োজনে বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন ধর্মকে ব্যবহার করেছে। শাসকেরা চায় এখানে ধর্মচর্চা বাড়ুক। এই শাসকেরা কখনো সংখ্যাগরিষ্ঠের ধর্মকে, কখনো আবার সংখ্যালঘুকে আপন স্বার্থে রাজনৈতিক-প্রশাসনিকভাবে ব্যবহার করেছে। ফলে সমাজে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের মাঝে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। আবার আমাদের এখানে সাম্প্রদায়িক পরিবেশ তৈরির পেছনে ভারতের সাম্প্রদায়িক রাজনীতি পরোক্ষে গভীর প্রভাব রেখেছে। সেখানে আরএসএস-বিজেপির উত্থান দেখে সবাই এখন মনে করছে, ধর্মকে ব্যবহার করে সমাজে প্রভাবশালী হওয়া যায়, ভোটের রাজনীতিতেও সফল হওয়া যায়। ভারতে ধর্মনিরপেক্ষতা সবল থাকলে আমাদের এখানেও সাম্প্রদায়িকতার আবেদন কমে যেত।
আজকের পত্রিকা: বামপন্থী আন্দোলন কেন দেশের জনগণের সমর্থন পেল না?
আলতাফ পারভেজ: ‘সফলতা’কে আমরা আসলে কীভাবে মাপব? ক্ষমতায় থাকার অর্থে? নাকি সমাজের ইতিবাচক বিকাশের অর্থে? আমাদের এখানে বামপন্থীরা কোনোকালে ক্ষমতায় ছিল না। ছিল ডানপন্থী-মধ্যপন্থীরাই। আপনার ওপরের প্রশ্নেই রয়েছে, এই ডান ও মধ্যপন্থীদের ৫০-৫৫ বছরের শাসনে সমাজে শান্তি নেই, হিংসা ও বৈরিতায় ছেয়ে গেছে সমাজ। তাহলে তাদের কি আমরা সফল বলব? তবে ‘ক্ষমতা’য় থাকাও নিশ্চয়ই কোনো এক মানদণ্ডে সফলতাই বটে। এই মানদণ্ডে বামেরা ব্যর্থ। ডানেরা সফল।
বামেরা যে ক্ষমতায় যেতে পারেনি তার কারণ, তাদের প্রধান একাংশ মূলত ডানদের লেজুড়বৃত্তি করেছে। ডানদের করুণা ভিক্ষা করে ক্ষমতার হিস্যা পেতে চেয়েছে। অনেক বামপন্থী দল ডানদের নির্বাচনী প্রতীকে নির্বাচন করে। খুবই করুণ ব্যাপার।
আবার অনেক বামপন্থী দল ডানদের সঙ্গে সরাসরি নির্বাচনী আঁতাত না করেও একধরনের ছদ্ম মিত্রের ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে নমনীয় বিরোধিতার আড়ালে। সাধারণ মানুষের কাছে এসব ভঙ্গি খুবই পরিষ্কার। ফলে মানুষ কখনো এ রকম কোনো ধারাকে সবল এবং ক্ষমতার উপযুক্ত ভাবেনি। তরুণদের কাছে এদের ব্যবহারিক ভূমিকার কারণে প্রকৃত বামপন্থী আদর্শ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে এ রকম দলগুলোর ক্ষমতায় যাওয়ার কোনো সুযোগ আসবে বলে মনে হয় না।
আজকের পত্রিকা: এ অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায় কী?
আলতাফ পারভেজ: বাংলাদেশে ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রকাঠামোর আমূল সংস্কার দরকার। প্রশ্ন হলো, সেই সংস্কার কে করবে? সে রকম কোনো সবল রাজনৈতিক শক্তি এখানে হাজির নেই। হাজির হলেও তাদের ব্যাপক বাধার মুখে পড়তে হবে। ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রযন্ত্র এবং তার সহায়ক রাজনৈতিক শক্তিগুলো এখানে সংস্কার উদ্যোগকে বাধা দেবে। সেই বাধা অতিক্রমের মতো রাজনীতি গড়ে না ওঠা পর্যন্ত এখানে চলতি অবস্থাই চলতে থাকবে।
আজকের পত্রিকা: আপনাকে ধন্যবাদ সময় দেওয়ার জন্য।
আলতাফ পারভেজ: আপনাদেরও ধন্যবাদ।
আজকের পত্রিকা: আমরা ভাবতাম, একটা গণতান্ত্রিক দেশে বসবাস করি। আসলে কি কখনো আমাদের দেশ গণতন্ত্র দ্বারা শাসিত হয়েছে?
আলতাফ পারভেজ: গণতন্ত্র কোনো একটি উপাদান দিয়ে গঠিত নয়। এর কোনো ধরাবাঁধা পরিসরও নেই। সমাজ ও রাষ্ট্রে কী কী উপাদান থাকলে তাকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বা গণতান্ত্রিক সমাজ বলা হবে, তার সীমারেখা বেশ বড়। তবে নিশ্চয়ই গণতন্ত্রের ন্যূনতম কিছু উপাদান বা সূচক আছে। বিশ্বজুড়ে সেই ন্যূনতম সাধারণ উপাদানগুলো দিয়েই বিভিন্ন জনপদের গণতান্ত্রিক অবস্থা পরিমাপ করা হয়।যেমন কোথাও বিভিন্ন আদর্শের রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ আছে কি না, সংবাদপত্রে সংবাদ ছাপানো ও মতামত প্রকাশের ভয়হীন পরিবেশ আছে কি না, মানুষ শাসকদের সঙ্গে কোনো বিষয়ে ভিন্নমত প্রকাশ করে নির্বিঘ্নে বাসাবাড়িতে থাকতে পারে কি না, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ তাদের প্রয়োজনে সংঘবদ্ধ হতে পারে কি না ইত্যাদি হলো গণতন্ত্রের ন্যূনতম বিষয়। আমাদের দেশে এসব ছিল না, এমন নয়। সবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন তো আমরা দেখেছি এ দেশে। ডিজিটাল অ্যাক্ট, সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টের মতো আইনের আগে, সন্ত্রাস দমন আইনের আগে, বিশেষ ক্ষমতা আইনের আগে নিশ্চয়ই এখনকার মতো পরিবেশ ছিল না। অন্তত আমার কথা বলতে পারি, জীবনের শুরুতে এমন অনেক ঐতিহাসিক বিষয়-আশয়ে লিখেছি, গবেষণা করেছি, এখন আর সে রকম লেখার কাজ করার সাহস পাই না। সাহসের এই ঘাটতি তো পরিবেশ-সৃষ্ট। লেখক স্বেচ্ছায় আত্মহত্যা করে না।
আজকের পত্রিকা: জাতি আজ দুদিকে বিভক্ত হয়ে গেছে। এক পক্ষ আরেক পক্ষকে গ্রাহ্যই করে না। সহিংস হয়ে উঠেছে। এর প্রতিকার কী?
আলতাফ পারভেজ: জাতি দুই ভাগ হয়ে গেছে কথাটা সত্য। তবে কীভাবে দুই ভাগ হলো এবং সেই দুই ভাগে কারা কারা আছে, সেটা দেখার বিষয় হলো গুরুত্বপূর্ণ; অর্থাৎ ভাগের মানদণ্ডটা হলো গুরুত্বপূর্ণ।
যেমন আমরা যদি শেয়ারবাজারকে একটা মানদণ্ড ধরি, তাহলে যারা শেয়ারবাজার থেকে নানা অনিয়মের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা সরিয়েছে এবং যারা সেখানে সর্বস্ব খুইয়েছে, এরা দুই ভাগে পড়ে যাওয়া মানুষ। এখন কেউ যদি বলে এই দুই ভাগের মানুষই তো বাঙালি—তাদের মিলেমিশে শান্তিতে থাকা উচিত, তাহলে সেটা কিন্তু বাজার লুণ্ঠনকারীদের পক্ষে যাবে।
পুরো অর্থনীতি মিলিয়ে এ রকম মোটাদাগের দুটি শ্রেণি আছে এখন। একদল নির্বিঘ্নে টাকা পাচার করতে পারছে, সিন্ডিকেট বানিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে, সামান্য বেতনের চাকরি করেও হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হতে পারছে, আরেক দল অসহায়ের মতো সেসবের দর্শক-শ্রোতা হয়ে আছে।
আবার উপরিকাঠামোর রাজনীতি যদি দেখি, সেখানেও অবশ্যই দুটি পক্ষ আছে। তাদের মাঝে যে দ্বন্দ্ব ও বৈরিতা দেখছি, তার কারণ সবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনী ব্যবস্থার সংকট। কোনো দেশের সমাজে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ যদি দেখে ভোটের মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধি বাছাইয়ের বিশ্বাসযোগ্য ব্যবস্থা থাকে, শান্তিতে মতামত ব্যক্ত করা যাচ্ছে, তাহলেই কেবল স্বাস্থ্যকর একটা রাজনৈতিক পরিবেশ আশা করা যায় সেখানে। কোনো সমাজই অহেতুক সহিংস হয়ে ওঠে না। সহিংসতার কারণ না খুঁজে শান্তিবাদী হয়ে ওঠাও একটা বোকা বোকা ব্যাপার। সমাজে সহিংসতার কারণ দূর না করে আহাজারি করে আমরা ইতিবাচক কোথাও পৌঁছাতে পারব না।
আজকের পত্রিকা: সাধারণ মানুষের মধ্যেও যে ধৈর্যহীনতা, অসহিষ্ণুতা এসেছে, কিছু একটা হলেই হাতাহাতি, মারামারি হচ্ছে, এর থেকে কীভাবে উদ্ধার পাওয়া সম্ভব?
আলতাফ পারভেজ: বাংলাদেশের মানুষকে আমার অতিরিক্ত সহিষ্ণু এবং ধৈর্যশীল মনে হয়। এত ধনবৈষম্য, এত নাগরিক অধিকারহীন, এতটা মানবিক মর্যাদাহীন, এতটা অর্থনৈতিক ন্যায়বিচারশূন্য একটা সমাজে মানুষ যে এত শান্তিবাদী হয়ে থাকছে দশকের পর দশক, সেটাই বরং খুব অস্বাভাবিক। এখানে দশকওয়ারি হানাহানির পরিসংখ্যানও খুব নগণ্য। আমি এমন অনেক জেলা-উপজেলার কথা জানি, যেখানে নাগরিক পরিবহনব্যবস্থা নেই, স্বাস্থ্যব্যবস্থা দুর্বল, লাখ লাখ তরুণ-তরুণী বেকার, লাখ লাখ মানুষ ভূমিহীন অথচ সমাজ প্রায় শান্ত। তারা এসব বিষয়ে কথা বলতেও ভুলে গেছে। এখানে কোটি কোটি তরুণ-তরুণী জানে না তাদের পেশাগত ভবিষ্যৎ কী—অথচ তারা এ নিয়ে তেমন সোচ্চারও নয়। ভোটের সময় এসব কোনো ইস্যুও হয় না। কোটি কোটি মানুষের এ রকম দাসোচিত জীবন সমাজবিজ্ঞানের দিক থেকে খুবই বিস্ময়কর, অস্বাভাবিক এবং অসুস্থতার লক্ষণও বটে।
আজকের পত্রিকা: আমাদের মনন গঠনে সাম্প্রদায়িকতা এসেছে। অথচ দেশ স্বাধীন হওয়ার সময় অসাম্প্রদায়িকতার দীক্ষা নিয়েছিল জনগণ। এই বাঁকবদলের কারণ কী?
আলতাফ পারভেজ: ধর্মভিত্তিক হানাহানির অর্থে আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িকতার সমস্যা খুবই অনুল্লেখ্য। আশপাশের দেশ মিয়ানমার, ভারত, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান ইত্যাদি দেশে যেভাবে অপর ধর্ম পদ্ধতিগত সহিংসতার শিকার হয়, বাংলাদেশে অন্তত তেমন মোটাদাগে কিছু দেখি না। তবে এখানে মনস্তাত্ত্বিক ধর্মীয় বিদ্বেষ আছে। এর কারণ হলো, স্বাধীনতার পর থেকে যখন যে দল ক্ষমতায় এসেছে, সেই দল নিজেদের প্রয়োজনে বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন ধর্মকে ব্যবহার করেছে। শাসকেরা চায় এখানে ধর্মচর্চা বাড়ুক। এই শাসকেরা কখনো সংখ্যাগরিষ্ঠের ধর্মকে, কখনো আবার সংখ্যালঘুকে আপন স্বার্থে রাজনৈতিক-প্রশাসনিকভাবে ব্যবহার করেছে। ফলে সমাজে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের মাঝে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। আবার আমাদের এখানে সাম্প্রদায়িক পরিবেশ তৈরির পেছনে ভারতের সাম্প্রদায়িক রাজনীতি পরোক্ষে গভীর প্রভাব রেখেছে। সেখানে আরএসএস-বিজেপির উত্থান দেখে সবাই এখন মনে করছে, ধর্মকে ব্যবহার করে সমাজে প্রভাবশালী হওয়া যায়, ভোটের রাজনীতিতেও সফল হওয়া যায়। ভারতে ধর্মনিরপেক্ষতা সবল থাকলে আমাদের এখানেও সাম্প্রদায়িকতার আবেদন কমে যেত।
আজকের পত্রিকা: বামপন্থী আন্দোলন কেন দেশের জনগণের সমর্থন পেল না?
আলতাফ পারভেজ: ‘সফলতা’কে আমরা আসলে কীভাবে মাপব? ক্ষমতায় থাকার অর্থে? নাকি সমাজের ইতিবাচক বিকাশের অর্থে? আমাদের এখানে বামপন্থীরা কোনোকালে ক্ষমতায় ছিল না। ছিল ডানপন্থী-মধ্যপন্থীরাই। আপনার ওপরের প্রশ্নেই রয়েছে, এই ডান ও মধ্যপন্থীদের ৫০-৫৫ বছরের শাসনে সমাজে শান্তি নেই, হিংসা ও বৈরিতায় ছেয়ে গেছে সমাজ। তাহলে তাদের কি আমরা সফল বলব? তবে ‘ক্ষমতা’য় থাকাও নিশ্চয়ই কোনো এক মানদণ্ডে সফলতাই বটে। এই মানদণ্ডে বামেরা ব্যর্থ। ডানেরা সফল।
বামেরা যে ক্ষমতায় যেতে পারেনি তার কারণ, তাদের প্রধান একাংশ মূলত ডানদের লেজুড়বৃত্তি করেছে। ডানদের করুণা ভিক্ষা করে ক্ষমতার হিস্যা পেতে চেয়েছে। অনেক বামপন্থী দল ডানদের নির্বাচনী প্রতীকে নির্বাচন করে। খুবই করুণ ব্যাপার।
আবার অনেক বামপন্থী দল ডানদের সঙ্গে সরাসরি নির্বাচনী আঁতাত না করেও একধরনের ছদ্ম মিত্রের ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে নমনীয় বিরোধিতার আড়ালে। সাধারণ মানুষের কাছে এসব ভঙ্গি খুবই পরিষ্কার। ফলে মানুষ কখনো এ রকম কোনো ধারাকে সবল এবং ক্ষমতার উপযুক্ত ভাবেনি। তরুণদের কাছে এদের ব্যবহারিক ভূমিকার কারণে প্রকৃত বামপন্থী আদর্শ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে এ রকম দলগুলোর ক্ষমতায় যাওয়ার কোনো সুযোগ আসবে বলে মনে হয় না।
আজকের পত্রিকা: এ অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায় কী?
আলতাফ পারভেজ: বাংলাদেশে ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রকাঠামোর আমূল সংস্কার দরকার। প্রশ্ন হলো, সেই সংস্কার কে করবে? সে রকম কোনো সবল রাজনৈতিক শক্তি এখানে হাজির নেই। হাজির হলেও তাদের ব্যাপক বাধার মুখে পড়তে হবে। ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রযন্ত্র এবং তার সহায়ক রাজনৈতিক শক্তিগুলো এখানে সংস্কার উদ্যোগকে বাধা দেবে। সেই বাধা অতিক্রমের মতো রাজনীতি গড়ে না ওঠা পর্যন্ত এখানে চলতি অবস্থাই চলতে থাকবে।
আজকের পত্রিকা: আপনাকে ধন্যবাদ সময় দেওয়ার জন্য।
আলতাফ পারভেজ: আপনাদেরও ধন্যবাদ।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

আলতাফ পারভেজ লেখক ও গবেষক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে স্নাতকোত্তর। ডাকসুর নির্বাচিত সদস্য ছিলেন। মুজিব বাহিনী থেকে গণবাহিনী: ইতিহাসের পুনঃপাঠ, বার্মা: জাতিগত সংঘাতের সাত দশক, শ্রীলঙ্কার তামিল ইলম, গ্রামসি ও তাঁর রাষ্ট্রচিন্তা প্রভৃতি তাঁর গুরুত্বপূর্ণ বই। সম্প্রতি দেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে
২৮ জুলাই ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

আলতাফ পারভেজ লেখক ও গবেষক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে স্নাতকোত্তর। ডাকসুর নির্বাচিত সদস্য ছিলেন। মুজিব বাহিনী থেকে গণবাহিনী: ইতিহাসের পুনঃপাঠ, বার্মা: জাতিগত সংঘাতের সাত দশক, শ্রীলঙ্কার তামিল ইলম, গ্রামসি ও তাঁর রাষ্ট্রচিন্তা প্রভৃতি তাঁর গুরুত্বপূর্ণ বই। সম্প্রতি দেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে
২৮ জুলাই ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

আলতাফ পারভেজ লেখক ও গবেষক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে স্নাতকোত্তর। ডাকসুর নির্বাচিত সদস্য ছিলেন। মুজিব বাহিনী থেকে গণবাহিনী: ইতিহাসের পুনঃপাঠ, বার্মা: জাতিগত সংঘাতের সাত দশক, শ্রীলঙ্কার তামিল ইলম, গ্রামসি ও তাঁর রাষ্ট্রচিন্তা প্রভৃতি তাঁর গুরুত্বপূর্ণ বই। সম্প্রতি দেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে
২৮ জুলাই ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আলতাফ পারভেজ লেখক ও গবেষক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে স্নাতকোত্তর। ডাকসুর নির্বাচিত সদস্য ছিলেন। মুজিব বাহিনী থেকে গণবাহিনী: ইতিহাসের পুনঃপাঠ, বার্মা: জাতিগত সংঘাতের সাত দশক, শ্রীলঙ্কার তামিল ইলম, গ্রামসি ও তাঁর রাষ্ট্রচিন্তা প্রভৃতি তাঁর গুরুত্বপূর্ণ বই। সম্প্রতি দেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে
২৮ জুলাই ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫