এ কে এম শামসুদ্দিন

তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি ভারত তো করেইনি; বরং চীনের সহায়তায় শুষ্ক মৌসুমে তিস্তার জীবন রক্ষা প্রকল্পের যে উদ্যোগ বাংলাদেশ নিতে চেয়েছিল, তাতেও ভারত আপত্তি করেছে বলে শোনা গেছে।
প্রায় এক যুগ পর গত ২৫ আগস্ট অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) ৩৮তম মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে ভারতের পক্ষ থেকে আবারও ‘সর্বাত্মক চেষ্টার আশ্বাস’ পাওয়া গেছে। এই বৈঠকে সিলেটে প্রবাহিত কুশিয়ারা নদীর পানি প্রত্যাহারে একটি সমঝোতা স্মারকের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। ৫ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকালে কুশিয়ারা নদীর পানি প্রত্যাহারের বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া এই বৈঠকে বাংলাদেশে গঙ্গার পানির সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহারে একটি যৌথ সমীক্ষার বিষয়ে সম্মত হয়েছে। ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভারত ও বাংলাদেশের যে অভিন্ন ৫৪টি নদী রয়েছে, এর মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ৭টি নদীর পানিবণ্টনের রূপরেখা চূড়ান্ত করার বিষয়ে আগেই সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠকে মনু, মুহুরী, খোয়াই, গোমতী, ধরলা, দুধকুমার ও কুশিয়ারা নদীর পানি নিয়েও আলোচনা হয়।
আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয়, আরও কয়েকটি অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন-সংক্রান্ত অন্তর্বর্তীকালীন চুক্তির জন্য নদীর তথ্য-উপাত্ত আদান-প্রদান করা হবে। এ বিষয়ে পরে জেআরসির কারিগরি পর্যায়ের বৈঠকে আলোচনা হবে। বৈঠকে ত্রিপুরার সাবরুম শহরের সুপেয় পানি সরবরাহের বিষয়টি যাতে দ্রুত বাস্তবায়ন হয়, সে জন্য তাগাদা দেওয়া হয়।
২০১৯ সালের অক্টোবরে ত্রিপুরার সাবরুমে ফেনী নদীর পানি সরবরাহের নিমিত্তে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যে সমঝোতা স্মারক সই হয়, এর তিন বছরের মধ্যেই ফেনী নদীর ইনটেক পয়েন্টের স্থান ও নকশা চূড়ান্ত হয়ে গেছে।
দীর্ঘ ১২ বছর পর জেআরসির বৈঠক হলো। শেষ বৈঠকটি হয়েছিল ২০১০ সালের মার্চে দিল্লিতে। জেআরসির পরবর্তী বৈঠকগুলো যাতে একটা নির্দিষ্ট সময় অন্তর হতে পারে, সে জন্য দুই দেশের প্রতিনিধিরা নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছেন। নীতিগতভাবে সম্মত হলেই-বা কী! অতীতে দেখা গেছে, ভারতের মেজাজ-মর্জির ওপর নির্ভর করে, এসব বৈঠক পূর্বনির্ধারিত সময়ে হবে কি হবে না। ২০১০ সালে দিল্লিতে ৩৭তম বৈঠক হওয়ার পরও সিদ্ধান্ত হয়েছিল, জেআরসির মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক যেন নিয়মিত হয়। ওই বৈঠকের পর পরবর্তী বৈঠক, অর্থাৎ ৩৮তম বৈঠকটি হওয়ার কথা ছিল ২০১৩ সালের ১৮-১৯ জুন ঢাকায়। সে সময় ভারতের কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় ছিল। তখনো বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বৈঠকের জন্য তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও বিশেষ কোনো ফল হয়নি।
বৈঠকের প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে এসে ভারতের পক্ষ থেকে একতরফা তা বাতিল করা হয়েছিল। বৈঠক বাতিল করার বিশেষ কোনো কারণও তখন বাংলাদেশকে জানানো হয়নি। বাতিল করে দেওয়া ৩৮তম বৈঠক পরের বছর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও ভারতের পক্ষ থেকে পুনরায় তা বাতিল করা হয়। ২০১৪ সালে মোদি সরকার ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জেআরসি মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের নিমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু ২০১৪ সালের ২৪ জুলাই একটি চিঠির মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয়, সে সময় ভারতের সংসদে বাজেট অধিবেশন চলবে, তাই পরে পারস্পরিক সুবিধামতো সময়ে এ বৈঠক করা যাবে। শেষ পর্যন্ত এক যুগ পর ভারত তাদের সেই সুবিধামতো সময় খুঁজে পেয়েছে এবং গত ২৫ আগস্ট মন্ত্রী পর্যায়ের ৩৮তম বৈঠকটি হতে পেরেছে।
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের অভিন্ন নদীর সংখ্যা ৫৪টি। এর মধ্যে তিস্তা অন্যতম। তিস্তার দৈর্ঘ্য ৩৬৬ কিলোমিটার। ভারতের সিকিম হিমবাহ থেকে উৎপন্ন নদীটি ১১৭ কিলোমিটার বাংলাদেশে, বাকি ২৪৯ কিলোমিটার ভারতের সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়। কয়েক দশক ধরে পর্যায়ক্রমে শুষ্ক মৌসুমে তিস্তার পানি ভারত প্রত্যাহার করে নেওয়ায় বাংলাদেশ কঠিন সমস্যায় পড়েছে। তিস্তার পানিবণ্টনের জন্য বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে অনুরোধ জানিয়ে এলেও ভারত কেবল আশ্বাস ও প্রতিশ্রুতিই দিয়ে যাচ্ছে। বাস্তবে ভারত চুক্তি স্বাক্ষরের কোনো উদ্যোগই নিচ্ছে না। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্কের সবচেয়ে ভালো সময় অতিবাহিত করছে বলে উভয় দেশের সরকার দাবি করে থাকে। অথচ নানামুখী চেষ্টার পরও তিস্তার চুক্তি না হওয়ায় বাংলাদেশের মানুষ চরম হতাশ। এ কথা ঠিক, সড়ক, নদী কিংবা রেলপথের সংযোগের ক্ষেত্রে যেমন দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অগ্রগতিতে লাভবান হয় নয়াদিল্লি, তেমনি নদীর পানিবণ্টনের যেকোনো চুক্তিতে লাভবান হওয়ার কথা বাংলাদেশেরও। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের রেল, সড়ক ও নদীপথের যোগাযোগ স্থাপনের ক্ষেত্রে যে পরিমাণ অগ্রগতি হয়েছে, তাতে বাংলাদেশের তুলনায় ভারতই বেশি লাভবান হয়েছে। দিন যতই গড়িয়েছে ভারতের লাভ হয়—এমন প্রকল্পগুলোই অগ্রাধিকার পেয়েছে বেশি। অথচ এ পর্যন্ত গঙ্গা চুক্তি বাদে বাংলাদেশের স্বার্থে যায় এমন নদীর পানিবণ্টন চুক্তি আর হয়নি। তবে হ্যাঁ, ২০১৯ সালে আরও একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে তা হলো, ত্রিপুরার সাবরুম শহরে সুপেয় পানি সরবরাহের জন্য ফেনী নদীর পানিবণ্টন চুক্তি। দেখা যাচ্ছে এবারও ভারতই লাভবান হয়েছে।
ভারত তিস্তা নদীর পানিবণ্টন চুক্তির অনুরোধ রক্ষা না করে বছরের পর বছর ঝুলিয়ে রেখে যে আশ্বাস ও প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছে, সেই আশ্বাস ও প্রতিশ্রুতির প্রতি বাংলাদেশের মানুষের একবিন্দুও আস্থা বা বিশ্বাস নেই। বাংলাদেশের বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর এযাবৎ ভারত বাংলাদেশ থেকে যে পরিমাণ সুযোগ-সুবিধা আদায় করে নিয়েছে, সেই তুলনায় বাংলাদেশ সরকার খুব কমই ভারতের কাছ থেকে আদায় করতে পেরেছে। বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রীদের মুখে শুধু বড় বড় বক্তব্যই শোনা যায়, বাস্তবে তার কোনো প্রতিফলন দেখি না। ভারত বাংলাদেশকে বন্ধুরাষ্ট্র হিসেবে যতই জাহির করুক না কেন, তাদের এরূপ আচরণ আমাদের সংশয় জাগায় বৈকি! ভারতকে একটা কথা মনে রাখতে হবে, শুধু মুখে বললে চলবে না, কাজকর্মে তা দেখাতে হবে। ভারত বাংলাদেশের প্রতি প্রকাশ্যে যে আন্তরিকতা প্রকাশ করে, তা শুধু তাদের স্বার্থ আদায়ের জন্য যতটুকু প্রয়োজন, ততটুকুই। ভারতের এই স্বার্থপর আচরণ আমাদের পীড়া দেয়।
তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি ভারত তো করেইনি; বরং চীনের সহায়তায় শুষ্ক মৌসুমে তিস্তার জীবন রক্ষা প্রকল্পের যে উদ্যোগ বাংলাদেশ নিতে চেয়েছিল, তাতেও ভারত আপত্তি করেছে বলে শোনা গেছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে রংপুর অঞ্চলের তিস্তার ১১৫ কিলোমিটার ব্যাপক খনন করে নদীর মাঝখানের গভীরতাকে ১০ মিটার বাড়িয়ে এবং প্রশস্ততাকে ব্যাপকভাবে কমিয়ে ফেলা হবে। একই সঙ্গে নদীশাসনের মাধ্যমে ভূমি উদ্ধার করে চাষাবাদের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে।
নদীর দুই তীর বরাবর ১১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের চার লেনের সড়ক নির্মাণ করা হবে। উপযুক্ত স্থানে কয়েকটি ব্যারাজ ও সড়ক নির্মাণ করে নদীর দুই তীরের যোগাযোগ নিশ্চিত করা হবে। এ ছাড়া বর্ষাকালে প্রবাহিত নদীর বিপুল উদ্বৃত্ত জলরাশি সংরক্ষণ করে সেচ খাল খননের মাধ্যমে নদীর উভয় তীরের এলাকার চাষযোগ্য জমিতে শুষ্ক মৌসুমে সেচের ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। প্রকল্পটির মোট বাজেট ধরা হয়েছে ৯৮ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার, যার মধ্যে ঋণ হিসেবে ৮৫ কোটি ৩০ লাখ ডলার চাওয়া হয়েছে চীনের কাছে। প্রস্তাবিত তিস্তা পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পটি চূড়ান্তভাবে প্রস্তুত হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও ভারতের আপত্তির মুখে তা বর্তমানে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরে গেলেই বাংলাদেশের মানুষ আশার স্বপ্ন বোনে, ‘এবার বুঝি তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তির একটা সুরাহা হবে।’ এবারও প্রধানমন্ত্রীর সফরের কথা প্রথম যখন প্রকাশ পায়, তখনো অনেকেই মনে করেছেন, সফর শেষে তিস্তা চুক্তির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী হয়তো কোনো আশার বাণী শোনাবেন। কিন্তু গত ২৫ আগস্ট জেআরসির মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকটি যেন মানুষের সেই প্রত্যাশার থালায় পানি ঢেলে দিয়েছে। জেআরসি বৈঠকের যে ফলাফল আমরা জেনেছি, তাতে ধরেই নেওয়া যায়, প্রধানমন্ত্রীর এবারকার সফরেও তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তির অগ্রগতির কোনো ভালো খবর আমরা পাব না।
এবারের সফরে মোদির সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর শীর্ষ বৈঠকে যে বিষয়গুলো অগ্রাধিকার পাবে বলে শোনা যাচ্ছে, তাতে আলাদাভাবে তিস্তা চুক্তির বিষয়ে কিছু শোনা যাচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরকালে মোদির সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকে আলোচনার সময়, অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন, ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ানো, জ্বালানি ও নিত্যপণ্যের সরবরাহ, নিরাপত্তা ও সীমান্ত ইস্যু, প্রতিরক্ষা ঋণের ব্যবহার, মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী পরিবারের জন্য বৃত্তি বিষয়ে অগ্রাধিকার পাবে। প্রধানমন্ত্রী ৫ সেপ্টেম্বর ভারত সফরে গিয়ে ৮ সেপ্টেম্বর দেশে ফিরবেন। প্রধানমন্ত্রী যখন ফিরে আসবেন, তখন হয়তো অন্যবারের মতোই জাতীয় দৈনিক পত্রিকগুলোর সংবাদ শিরোনাম হবে, ‘ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তিস্তার পানিবণ্টন নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’ তবে, এ দেশের মানুষ যে সুসংবাদটি শোনার জন্য প্রতিবারই অপেক্ষা করে, সেই সুসংবাদটি হয়তো এবারও তারা শুনতে পাবে না।
এ কে এম শামসুদ্দিন, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ও কলাম লেখক

তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি ভারত তো করেইনি; বরং চীনের সহায়তায় শুষ্ক মৌসুমে তিস্তার জীবন রক্ষা প্রকল্পের যে উদ্যোগ বাংলাদেশ নিতে চেয়েছিল, তাতেও ভারত আপত্তি করেছে বলে শোনা গেছে।
প্রায় এক যুগ পর গত ২৫ আগস্ট অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) ৩৮তম মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে ভারতের পক্ষ থেকে আবারও ‘সর্বাত্মক চেষ্টার আশ্বাস’ পাওয়া গেছে। এই বৈঠকে সিলেটে প্রবাহিত কুশিয়ারা নদীর পানি প্রত্যাহারে একটি সমঝোতা স্মারকের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। ৫ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকালে কুশিয়ারা নদীর পানি প্রত্যাহারের বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া এই বৈঠকে বাংলাদেশে গঙ্গার পানির সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহারে একটি যৌথ সমীক্ষার বিষয়ে সম্মত হয়েছে। ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভারত ও বাংলাদেশের যে অভিন্ন ৫৪টি নদী রয়েছে, এর মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ৭টি নদীর পানিবণ্টনের রূপরেখা চূড়ান্ত করার বিষয়ে আগেই সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠকে মনু, মুহুরী, খোয়াই, গোমতী, ধরলা, দুধকুমার ও কুশিয়ারা নদীর পানি নিয়েও আলোচনা হয়।
আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয়, আরও কয়েকটি অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন-সংক্রান্ত অন্তর্বর্তীকালীন চুক্তির জন্য নদীর তথ্য-উপাত্ত আদান-প্রদান করা হবে। এ বিষয়ে পরে জেআরসির কারিগরি পর্যায়ের বৈঠকে আলোচনা হবে। বৈঠকে ত্রিপুরার সাবরুম শহরের সুপেয় পানি সরবরাহের বিষয়টি যাতে দ্রুত বাস্তবায়ন হয়, সে জন্য তাগাদা দেওয়া হয়।
২০১৯ সালের অক্টোবরে ত্রিপুরার সাবরুমে ফেনী নদীর পানি সরবরাহের নিমিত্তে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যে সমঝোতা স্মারক সই হয়, এর তিন বছরের মধ্যেই ফেনী নদীর ইনটেক পয়েন্টের স্থান ও নকশা চূড়ান্ত হয়ে গেছে।
দীর্ঘ ১২ বছর পর জেআরসির বৈঠক হলো। শেষ বৈঠকটি হয়েছিল ২০১০ সালের মার্চে দিল্লিতে। জেআরসির পরবর্তী বৈঠকগুলো যাতে একটা নির্দিষ্ট সময় অন্তর হতে পারে, সে জন্য দুই দেশের প্রতিনিধিরা নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছেন। নীতিগতভাবে সম্মত হলেই-বা কী! অতীতে দেখা গেছে, ভারতের মেজাজ-মর্জির ওপর নির্ভর করে, এসব বৈঠক পূর্বনির্ধারিত সময়ে হবে কি হবে না। ২০১০ সালে দিল্লিতে ৩৭তম বৈঠক হওয়ার পরও সিদ্ধান্ত হয়েছিল, জেআরসির মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক যেন নিয়মিত হয়। ওই বৈঠকের পর পরবর্তী বৈঠক, অর্থাৎ ৩৮তম বৈঠকটি হওয়ার কথা ছিল ২০১৩ সালের ১৮-১৯ জুন ঢাকায়। সে সময় ভারতের কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় ছিল। তখনো বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বৈঠকের জন্য তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও বিশেষ কোনো ফল হয়নি।
বৈঠকের প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে এসে ভারতের পক্ষ থেকে একতরফা তা বাতিল করা হয়েছিল। বৈঠক বাতিল করার বিশেষ কোনো কারণও তখন বাংলাদেশকে জানানো হয়নি। বাতিল করে দেওয়া ৩৮তম বৈঠক পরের বছর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও ভারতের পক্ষ থেকে পুনরায় তা বাতিল করা হয়। ২০১৪ সালে মোদি সরকার ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জেআরসি মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের নিমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু ২০১৪ সালের ২৪ জুলাই একটি চিঠির মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয়, সে সময় ভারতের সংসদে বাজেট অধিবেশন চলবে, তাই পরে পারস্পরিক সুবিধামতো সময়ে এ বৈঠক করা যাবে। শেষ পর্যন্ত এক যুগ পর ভারত তাদের সেই সুবিধামতো সময় খুঁজে পেয়েছে এবং গত ২৫ আগস্ট মন্ত্রী পর্যায়ের ৩৮তম বৈঠকটি হতে পেরেছে।
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের অভিন্ন নদীর সংখ্যা ৫৪টি। এর মধ্যে তিস্তা অন্যতম। তিস্তার দৈর্ঘ্য ৩৬৬ কিলোমিটার। ভারতের সিকিম হিমবাহ থেকে উৎপন্ন নদীটি ১১৭ কিলোমিটার বাংলাদেশে, বাকি ২৪৯ কিলোমিটার ভারতের সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়। কয়েক দশক ধরে পর্যায়ক্রমে শুষ্ক মৌসুমে তিস্তার পানি ভারত প্রত্যাহার করে নেওয়ায় বাংলাদেশ কঠিন সমস্যায় পড়েছে। তিস্তার পানিবণ্টনের জন্য বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে অনুরোধ জানিয়ে এলেও ভারত কেবল আশ্বাস ও প্রতিশ্রুতিই দিয়ে যাচ্ছে। বাস্তবে ভারত চুক্তি স্বাক্ষরের কোনো উদ্যোগই নিচ্ছে না। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্কের সবচেয়ে ভালো সময় অতিবাহিত করছে বলে উভয় দেশের সরকার দাবি করে থাকে। অথচ নানামুখী চেষ্টার পরও তিস্তার চুক্তি না হওয়ায় বাংলাদেশের মানুষ চরম হতাশ। এ কথা ঠিক, সড়ক, নদী কিংবা রেলপথের সংযোগের ক্ষেত্রে যেমন দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অগ্রগতিতে লাভবান হয় নয়াদিল্লি, তেমনি নদীর পানিবণ্টনের যেকোনো চুক্তিতে লাভবান হওয়ার কথা বাংলাদেশেরও। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের রেল, সড়ক ও নদীপথের যোগাযোগ স্থাপনের ক্ষেত্রে যে পরিমাণ অগ্রগতি হয়েছে, তাতে বাংলাদেশের তুলনায় ভারতই বেশি লাভবান হয়েছে। দিন যতই গড়িয়েছে ভারতের লাভ হয়—এমন প্রকল্পগুলোই অগ্রাধিকার পেয়েছে বেশি। অথচ এ পর্যন্ত গঙ্গা চুক্তি বাদে বাংলাদেশের স্বার্থে যায় এমন নদীর পানিবণ্টন চুক্তি আর হয়নি। তবে হ্যাঁ, ২০১৯ সালে আরও একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে তা হলো, ত্রিপুরার সাবরুম শহরে সুপেয় পানি সরবরাহের জন্য ফেনী নদীর পানিবণ্টন চুক্তি। দেখা যাচ্ছে এবারও ভারতই লাভবান হয়েছে।
ভারত তিস্তা নদীর পানিবণ্টন চুক্তির অনুরোধ রক্ষা না করে বছরের পর বছর ঝুলিয়ে রেখে যে আশ্বাস ও প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছে, সেই আশ্বাস ও প্রতিশ্রুতির প্রতি বাংলাদেশের মানুষের একবিন্দুও আস্থা বা বিশ্বাস নেই। বাংলাদেশের বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর এযাবৎ ভারত বাংলাদেশ থেকে যে পরিমাণ সুযোগ-সুবিধা আদায় করে নিয়েছে, সেই তুলনায় বাংলাদেশ সরকার খুব কমই ভারতের কাছ থেকে আদায় করতে পেরেছে। বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রীদের মুখে শুধু বড় বড় বক্তব্যই শোনা যায়, বাস্তবে তার কোনো প্রতিফলন দেখি না। ভারত বাংলাদেশকে বন্ধুরাষ্ট্র হিসেবে যতই জাহির করুক না কেন, তাদের এরূপ আচরণ আমাদের সংশয় জাগায় বৈকি! ভারতকে একটা কথা মনে রাখতে হবে, শুধু মুখে বললে চলবে না, কাজকর্মে তা দেখাতে হবে। ভারত বাংলাদেশের প্রতি প্রকাশ্যে যে আন্তরিকতা প্রকাশ করে, তা শুধু তাদের স্বার্থ আদায়ের জন্য যতটুকু প্রয়োজন, ততটুকুই। ভারতের এই স্বার্থপর আচরণ আমাদের পীড়া দেয়।
তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি ভারত তো করেইনি; বরং চীনের সহায়তায় শুষ্ক মৌসুমে তিস্তার জীবন রক্ষা প্রকল্পের যে উদ্যোগ বাংলাদেশ নিতে চেয়েছিল, তাতেও ভারত আপত্তি করেছে বলে শোনা গেছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে রংপুর অঞ্চলের তিস্তার ১১৫ কিলোমিটার ব্যাপক খনন করে নদীর মাঝখানের গভীরতাকে ১০ মিটার বাড়িয়ে এবং প্রশস্ততাকে ব্যাপকভাবে কমিয়ে ফেলা হবে। একই সঙ্গে নদীশাসনের মাধ্যমে ভূমি উদ্ধার করে চাষাবাদের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে।
নদীর দুই তীর বরাবর ১১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের চার লেনের সড়ক নির্মাণ করা হবে। উপযুক্ত স্থানে কয়েকটি ব্যারাজ ও সড়ক নির্মাণ করে নদীর দুই তীরের যোগাযোগ নিশ্চিত করা হবে। এ ছাড়া বর্ষাকালে প্রবাহিত নদীর বিপুল উদ্বৃত্ত জলরাশি সংরক্ষণ করে সেচ খাল খননের মাধ্যমে নদীর উভয় তীরের এলাকার চাষযোগ্য জমিতে শুষ্ক মৌসুমে সেচের ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। প্রকল্পটির মোট বাজেট ধরা হয়েছে ৯৮ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার, যার মধ্যে ঋণ হিসেবে ৮৫ কোটি ৩০ লাখ ডলার চাওয়া হয়েছে চীনের কাছে। প্রস্তাবিত তিস্তা পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পটি চূড়ান্তভাবে প্রস্তুত হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও ভারতের আপত্তির মুখে তা বর্তমানে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরে গেলেই বাংলাদেশের মানুষ আশার স্বপ্ন বোনে, ‘এবার বুঝি তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তির একটা সুরাহা হবে।’ এবারও প্রধানমন্ত্রীর সফরের কথা প্রথম যখন প্রকাশ পায়, তখনো অনেকেই মনে করেছেন, সফর শেষে তিস্তা চুক্তির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী হয়তো কোনো আশার বাণী শোনাবেন। কিন্তু গত ২৫ আগস্ট জেআরসির মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকটি যেন মানুষের সেই প্রত্যাশার থালায় পানি ঢেলে দিয়েছে। জেআরসি বৈঠকের যে ফলাফল আমরা জেনেছি, তাতে ধরেই নেওয়া যায়, প্রধানমন্ত্রীর এবারকার সফরেও তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তির অগ্রগতির কোনো ভালো খবর আমরা পাব না।
এবারের সফরে মোদির সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর শীর্ষ বৈঠকে যে বিষয়গুলো অগ্রাধিকার পাবে বলে শোনা যাচ্ছে, তাতে আলাদাভাবে তিস্তা চুক্তির বিষয়ে কিছু শোনা যাচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরকালে মোদির সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকে আলোচনার সময়, অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন, ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ানো, জ্বালানি ও নিত্যপণ্যের সরবরাহ, নিরাপত্তা ও সীমান্ত ইস্যু, প্রতিরক্ষা ঋণের ব্যবহার, মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী পরিবারের জন্য বৃত্তি বিষয়ে অগ্রাধিকার পাবে। প্রধানমন্ত্রী ৫ সেপ্টেম্বর ভারত সফরে গিয়ে ৮ সেপ্টেম্বর দেশে ফিরবেন। প্রধানমন্ত্রী যখন ফিরে আসবেন, তখন হয়তো অন্যবারের মতোই জাতীয় দৈনিক পত্রিকগুলোর সংবাদ শিরোনাম হবে, ‘ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তিস্তার পানিবণ্টন নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’ তবে, এ দেশের মানুষ যে সুসংবাদটি শোনার জন্য প্রতিবারই অপেক্ষা করে, সেই সুসংবাদটি হয়তো এবারও তারা শুনতে পাবে না।
এ কে এম শামসুদ্দিন, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ও কলাম লেখক

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি ভারত তো করেইনি; বরং চীনের সহায়তায় শুষ্ক মৌসুমে তিস্তার জীবন রক্ষা প্রকল্পের যে উদ্যোগ বাংলাদেশ নিতে চেয়েছিল, তাতেও ভারত আপত্তি করেছে বলে শোনা গেছে।
০৩ সেপ্টেম্বর ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি ভারত তো করেইনি; বরং চীনের সহায়তায় শুষ্ক মৌসুমে তিস্তার জীবন রক্ষা প্রকল্পের যে উদ্যোগ বাংলাদেশ নিতে চেয়েছিল, তাতেও ভারত আপত্তি করেছে বলে শোনা গেছে।
০৩ সেপ্টেম্বর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি ভারত তো করেইনি; বরং চীনের সহায়তায় শুষ্ক মৌসুমে তিস্তার জীবন রক্ষা প্রকল্পের যে উদ্যোগ বাংলাদেশ নিতে চেয়েছিল, তাতেও ভারত আপত্তি করেছে বলে শোনা গেছে।
০৩ সেপ্টেম্বর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি ভারত তো করেইনি; বরং চীনের সহায়তায় শুষ্ক মৌসুমে তিস্তার জীবন রক্ষা প্রকল্পের যে উদ্যোগ বাংলাদেশ নিতে চেয়েছিল, তাতেও ভারত আপত্তি করেছে বলে শোনা গেছে।
০৩ সেপ্টেম্বর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫