Ajker Patrika

ছোট হয়ে আসছে কাস্পিয়ান সাগর, প্রাকৃতিক সংকট নাকি রাষ্ট্রীয় উদাসীনতা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৯ জুন ২০২৫, ১১: ৩৪
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

পরিবেশবিদ আদিলবেক কোজিবাকভ কাজাখস্তানের আকতাউ শহরের বাসিন্দা। তাঁর শৈশবে তাঁদের ফ্রিজে সব সময় ক্যাভিয়ার ভর্তি বয়াম থাকত। প্রতিদিন সকালের নাস্তায় মাখন পাউরুটির সঙ্গে ক্যাভিয়ার খাওয়া ছিল তাঁর জন্য বাধ্যতামূলক। কারণ, তাঁর মা বিশ্বাস করতেন ক্যাভিয়ার স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।

ছোটবেলায় আদিলবেকের ক্যাভিয়ার খুব একটা পছন্দ ছিল না। কিন্তু এখন সে কথা মনে করে তিনি বেশ নস্টালজিক হয়ে পড়েন। কারণ, এখন তাঁর শহরে আর অর্গানিক ক্যাভিয়ার পাওয়া যায় না।

ক্যাভিয়ার অত্যন্ত ব্যয়বহুল খাবার। এটি মূলত স্টারজিওন নামের একটি মাছের ডিম। এটি কাঁচা খাওয়া হয়। স্বাদ নোনতা। ৩০ গ্রাম ক্যাভিয়ারের দাম ২০০ ডলার বা তারও বেশি।

অতিরিক্ত মাছ শিকার এবং প্রাকৃতিক আবাসস্থল সংকুচিত হওয়ার কারণে স্টারজিওন মাছ এখন বিলুপ্তির মুখে। আর শিগগিরই হয়তো সাগরটাও হারিয়ে যেতে পারে।

‘নেচার’ সাময়িকীতে এপ্রিল মাসে প্রকাশিত এক গবেষণা বলছে, শতাব্দীর শেষ নাগাদ কাস্পিয়ান সাগরের পানির স্তর ১৮ মিটার পর্যন্ত হ্রাস পেতে পারে এবং এর পৃষ্ঠের ৩৪ শতাংশ পর্যন্ত হারিয়ে যেতে পারে। গবেষণা অনুযায়ী, পানির স্তর ৫ থেকে ১০ মিটার পর্যন্ত কমে গেলেও এর আশপাশের গুরুত্বপূর্ণ বাস্তুতন্ত্র বিপর্যস্ত হবে—যেমন, কাস্পিয়ান সিল ও স্টারজিওনের আবাসস্থল ধ্বংস হয়ে যাবে।

কাস্পিয়ান সাগর। ছবি: সংগৃহীত
কাস্পিয়ান সাগর। ছবি: সংগৃহীত

কাজাখস্তানের পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি নাগরিক পরামর্শদাতা কমিটির সদস্য কোজিবাকভ বলেন, ‘এই সাগর শুকিয়ে যাচ্ছে, তা জানার জন্য আমাদের গবেষণা করতে হয় না। খালি চোখেই দেখা যায়, সাগরের পানি কমছে।’

রাশিয়া, কাজাখস্তান, তুর্কমেনিস্তান, ইরান ও আজারবাইজান—এই পাঁচ দেশের মাঝখানে অবস্থিত কাস্পিয়ান সাগর বিশ্বের বৃহত্তম স্থলবেষ্টিত জলাশয়। এটি মধ্য এশিয়া থেকে ইউরোপে যাওয়ার সবচেয়ে দ্রুতগামী পথ, যেটি রাশিয়াকে এড়িয়ে চীন ও ইউরোপকে যুক্ত করে। পাশাপাশি এটি একই সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ তেল ও গ্যাসের উৎসও।

তবে অনেকেই আশঙ্কা করছেন, কাস্পিয়ান সাগরের পরিণতিও হতে পারে এর নিকটবর্তী আরাল সাগরের মতো। কাজাখস্তান ও উজবেকিস্তানের মাঝে অবস্থিত আরাল। ১৯৬০-এর দশকে সোভিয়েত ইউনিয়ন তুলা চাষের জন্য এর সঙ্গে যুক্ত নদীগুলোর পানি ব্যাপক হারে ব্যবহার শুরু করলে সাগরটি শুকিয়ে যেতে শুরু করে। বর্তমানে সাগরটির মূল আয়তনের মাত্র ১০ শতাংশ টিকে আছে। এই সাগরের পতনে স্থানীয় পরিবেশব্যবস্থা ও জনস্বাস্থ্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আরাল সাগরের কিংবা কাস্পিয়ান সাগর শুকিয়ে যাওয়ার পেছনে কেবল জলবায়ু পরিবর্তনই একমাত্র কারণ নয়।

কাস্পিয়ান সাগরের পানির প্রধান উৎসই হলো রাশিয়ার ভলগা নদী। এটি ইউরোপের বৃহত্তম ও দীর্ঘতম নদী। কাস্পিয়ান সাগরের পানির ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশই আসে ভলগা নদী থেকে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, রাশিয়ার পানি ব্যবস্থাপনা এই সাগরের ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলছে। আল-জাজিরাকে আদিলবেক কোজিবাকভ বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে রাশিয়া ভলগা নদীতে অনেক বাঁধ ও জলাধার নির্মাণ করেছে এবং কৃষি ও শিল্পের কাজে এর পানি ব্যবহার করেছে। ফলে, এখন কাস্পিয়ান সাগরে আগের তুলনায় অনেক কম পানি প্রবাহিত হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘একশ বছর আগে স্টারজিওন মাছ বহু দশক পর্যন্ত বেঁচে থাকত, কেউ এদের ধরত না। এর বিশাল আকারে বেড়ে উঠত, যার প্রমাণ আমরা পুরোনো ছবিতে দেখি। তবে, বর্তমানে এত পরিমাণ মাছ ধরা হচ্ছে যে সেই সংখ্যা নেমে এসেছে একেবারে তলানিতে। এ ছাড়া, তেল কোম্পানিগুলোর দূষণ মাছগুলোর আবাসস্থলও ধ্বংস করে দিয়েছে।’

কাজাখস্তানের তিনটি বড় তেলক্ষেত্র, যেগুলো সোভিয়েত আমলে আবিষ্কৃত হয়েছিল, বর্তমানে বিদেশি প্রতিষ্ঠান সেগুলো পরিচালনা করছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে, কাজাখস্তানের পরিবেশবিদ ও আইনজীবী ভাদিম নি ‘কাস্পিয়ান সাগর বাঁচাও’ ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে নিজ দেশের সরকারের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেন। তাঁর অভিযোগ—তেল ও গ্যাস উত্তোলনের জন্য বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর সঙ্গে করা রাষ্ট্রীয় চুক্তিগুলো গোপন রাখা হয়েছে, যার ফলে এই চুক্তিগুলোর পরিবেশগত প্রভাব নির্ধারণ করা সম্ভব হচ্ছে না।

কাস্পিয়ান সাগর। ছবি: সংগৃহীত
কাস্পিয়ান সাগর। ছবি: সংগৃহীত

১৯৯০-এর দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর কাজাখস্তান স্বাধীন হয়। যখন স্পষ্ট হয় যে দেশটির তেল ও গ্যাস রপ্তানি করা সম্ভব, তখন বিশ্বের বড় বড় জ্বালানি কোম্পানি ও তাদের আইনজীবীরা চুক্তি করতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন। তারা এসব চুক্তিকে আন্তর্জাতিক গোপনীয়তা আইনের আওতায় নিয়ে যেতে কাজাখ সরকারকে রাজি করায়, যাতে চুক্তির বিস্তারিত তথ্য গোপন রাখা যায়। ফলে, চুক্তিতে কোনো বিরোধ দেখা দিলে তা কেবল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের মাধ্যমেই নিষ্পত্তি করা সম্ভব।

ভাদিম বলেন, এটি অনৈতিক এবং আন্তর্জাতিক আইন তো বটেই আরহুস কনভেনশনেরও পরিপন্থী। আরহুস কনভেনশন পরিবেশ সংক্রান্ত তথ্য সবার জন্য উন্মুক্ত রাখার কথা বলে। তিনি বলেন, ‘তেল কোম্পানিগুলো পরিবেশগত দায় এড়াতে চায়। তাই দায়িত্বশীলতার প্রমাণ দিতে প্রায়ই পরিবেশগত গবেষণা চালায়, কিন্তু যেহেতু এসব গবেষণায় তাদের নিজস্ব স্বার্থ জড়িত, তাই এর নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যখন সবুজ জ্বালানি নিয়ে কথা বলছি, তখন কাস্পিয়ান অঞ্চলে হাইড্রোজেন জ্বালানিতে জার্মানির বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা চলছে। কিন্তু এ জ্বালানি ইউরোপের জন্য সবুজ জ্বালানি হবে, আমাদের জন্য নয়। হাইড্রোজেন উৎপাদনে বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ লাগে, যেটি নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে আসবে। কিন্তু সেই প্রক্রিয়ার বর্জ্য ও পানিদূষণের বোঝা আমাদেরই বইতে হবে।’

তবে, ভাদিমের মামলা গ্রহণ করেনি আদালত। আদালতের ভাষ্য—এই মামলার কোনো যথাযথ ভিত্তি নেই। ভাদিম জানিয়েছেন, তাঁর আপিল খারিজ হলে আন্তর্জাতিক আইনি ব্যবস্থার আওতায় মামলাটি চালিয়ে যাবেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

জমিয়তে উলামাকে যে ৪টি আসন ছেড়ে দিল বিএনপি

দিল্লির পর কলকাতায় ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ উপহাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বায়ুদূষণ বেড়েছে ঢাকায়, বিপর্যস্ত কায়রো

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

শীতের মৌসুমে বাতাস থাকে শুষ্ক। বেড়ে যায় ধূলিকণার পরিমাণ। আর এ কারণে বায়ুদূষণও বাড়তে থাকে। আজ মঙ্গলবার ঢাকার বায়ুমান ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ অবস্থায় আছে।

সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তালিকায় দেখা যায়, বিশ্বের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে আজ ঢাকা তৃতীয় স্থানে রয়েছে। আর শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে মিশরের কায়রো।

আইকিউএয়ারের সকাল ৮টা ৩০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী, ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স স্কোর ২৫৪।

ঢাকার বেশকিছু স্থানের বাতাসের অবস্থা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর থেকে খুব অস্বাস্থ্যকর। এর মধ্যে রয়েছে— দক্ষিণ পল্লবী (৩০২), বেজ এজওয়াটার আউটডোর (২৭৯), ইস্টার্ন হাউজিং (২৬৭), কল্যাণপুর (২৬৬) ও গ্রেস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল (২৩৯)।

বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশিমাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বাতাসের মূল ক্ষতিকারক উপাদান হলো ক্ষুদ্র বস্তুকণা বা পিএম ২.৫। এটি এতই সূক্ষ্ম যে তা ফুসফুসে, এমনকি রক্তপ্রবাহেও প্রবেশ করতে পারে।

অন্যদিকে দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে কায়রো। শহরটির একিউআই স্কোর ৩৪৬। যা এই শহরের বাতাসকে ‘দুর্যোগপূর্ণ’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করেছে।

তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারতের দিল্লি (২৬৪, খুব অস্বাস্থ্যকর), পাকিস্তানের করাচি (২০৬, খুব অস্বাস্থ্যকর) ও পঞ্চম স্থানে রয়েছে ইরানের তেহরান (১৭১, সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর)।

বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।

বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।

দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।

পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

জমিয়তে উলামাকে যে ৪টি আসন ছেড়ে দিল বিএনপি

দিল্লির পর কলকাতায় ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ উপহাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকার তাপমাত্রা কমবে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানী ঢাকায় তাপমাত্রা আজ মঙ্গলবার সামান্য কমেছে। তাপমাত্রা আরও কমতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ ছাড়া সকালে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।

আজ সকাল ৭টায় ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ সকাল ৬টায় রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ১৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন সোমবার ছিল ১৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৯ শতাংশ।

পূর্বাভাসের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। সেই সঙ্গে হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আকাশ আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৫ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।

পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ সূর্যাস্ত ৫টা ১৭ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৩৮ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

জমিয়তে উলামাকে যে ৪টি আসন ছেড়ে দিল বিএনপি

দিল্লির পর কলকাতায় ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ উপহাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বায়ু দূষণে তৃতীয় স্থানে ঢাকা, শীর্ষে দিল্লি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

শীতের মৌসুমে বাতাস থাকে শুষ্ক। বেড়ে যায় ধূলিকণার পরিমাণ। আর এ কারণে বায়ুদূষণও বাড়তে থাকে। আজ সোমবার ঢাকার বায়ুমানের অবনতি হয়ে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ অবস্থায় আছে।

সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তালিকায় দেখা যায়, বিশ্বের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে আজ ঢাকা তৃতীয় স্থানে রয়েছে। আর শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে ভারতের রাজধানী দিল্লি।

আইকিউএয়ারের সকাল ৮টা ৩০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী, ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স স্কোর ২৩২, যা খুব অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক। আর শীর্ষে থাকা দিল্লির এয়ার কোয়ালিটি ইনডেস্ক স্কোর ২৭৪, যা খুব অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক।

শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো মিশরের কায়রো (২৩৫), ভারতের কলকাতা (২১০) ও ভিয়েতনামের হ্যানয় (১৯১)।

আজ ঢাকার যেসব এলাকায় বায়ুদূষণ সবচেয়ে বেশি— গোড়ান, দক্ষিণ পল্লবী, ইস্টার্ন হাউজিং, কল্যাণপুর, বেজ এজওয়াটার আউটডোর, গ্রেস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, শান্তা ফোরাম, পেয়ারাবাগ রেল লাইন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোকাররম বিল্ডিং।

ঢাকার নিম্নমানের বাতাসের প্রধান কারণ হলো পিএম ২.৫ বা সূক্ষ্ম কণা। এই অতিক্ষুদ্র কণাগুলো, যাদের ব্যাস ২.৫ মাইক্রোমিটারের চেয়েও কম, ফুসফুসের গভীরে প্রবেশ করে রক্তপ্রবাহে মিশে যেতে পারে। এর ফলে হাঁপানি (অ্যাজমা) বৃদ্ধি, ব্রঙ্কাইটিস এবং হৃদ্‌রোগের মতো শ্বাসযন্ত্র ও হৃদ্‌যন্ত্রের গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়।

শীতকালীন আবহাওয়ার ধরন, যানবাহন ও শিল্প থেকে অনিয়ন্ত্রিত নির্গমন, চলমান নির্মাণকাজ থেকে সৃষ্ট ধুলো এবং আশপাশের ইটভাটাগুলো এই দূষণ সংকটের জন্য দায়ী।

বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১ থেকে ১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১ থেকে ২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।

বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।

দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।

পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

বাতাসের এই বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে করণীয়

অত্যন্ত সংবেদনশীল গোষ্ঠী: শিশু, বয়স্ক, হৃদ্‌রোগ বা শ্বাসকষ্টের রোগীরা সব ধরনের ঘরের বাইরে না যাওয়াই ভালো।

সাধারণ সুস্থ ব্যক্তি: তাদের উচিত বাইরে কাটানো সময় সীমিত করা এবং শারীরিক পরিশ্রমের কাজ এড়িয়ে চলা।

যদি বাইরে বের হতে হয়, তবে অবশ্যই দূষণ রোধে কার্যকর মাস্ক ব্যবহার করুন।

ঘরের ভেতরের বাতাস পরিষ্কার রাখতে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন এবং দূষিত বাতাস প্রবেশ ঠেকাতে জানালা ও দরজা বন্ধ রাখুন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

জমিয়তে উলামাকে যে ৪টি আসন ছেড়ে দিল বিএনপি

দিল্লির পর কলকাতায় ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ উপহাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকায় সকালে তাপমাত্রা আবারও ১৬ ডিগ্রির ঘরে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ভোরবেলা কিছুটা কুয়াশা পড়লেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আজ সোমবার সকালে রাজধানী ঢাকায় রোদের দেখা মিলেছে। তবে গতকালের চেয়ে কিছুটা বেশি শীত পড়ছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ সকালে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।

আজ সকাল ৭টায় ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ সকাল ৬টায় রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ১৬ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন ছিল ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৯ শতাংশ।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। আকাশ আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৫ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ সূর্যাস্ত ৫টা ১৭ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৩৮ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

জমিয়তে উলামাকে যে ৪টি আসন ছেড়ে দিল বিএনপি

দিল্লির পর কলকাতায় ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ উপহাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত