Ajker Patrika

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশ থেকে শিক্ষা নিতে চায় ইউরোপ

আপডেট : ২১ জুলাই ২০২৩, ১৫: ২৩
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশ থেকে শিক্ষা নিতে চায় ইউরোপ

১৯৭০ সালের এক মধ্যরাতে আব্দুল জলিল মির্ধার গ্রামে আঘাত হানে প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় ‘সাইক্লোন ভোলা’। নিমেষেই বিধ্বস্ত হয় অসংখ্য ঘরবাড়ি, প্রাণ হারায় কয়েক ডজন মানুষ। তখন মির্ধার বয়স ছিল ১২ বছর। তাকেসহ সব ভাইবোনকে ঘরের মধ্যে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রেখেছিলেন বাবা-মা, যাতে উজানের ঢেউ তাঁদের ভাসিয়ে নিয়ে যেতে না পারে। সেই যাত্রায় জলিল বেঁচে গেলেও দেশের কয়েক লাখ মানুষ প্রাণ হারায়। 

সেই ঘূর্ণিঝড় দেখেছিলেন বরিশালের মির্ধা বেগমও। আজ তাঁর বয়স ৬৫ বছর। ঘূর্ণিঝড়ের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, ‘সকালে চারপাশে অনেক লাশ ভেসে উঠছিল, মানুষ কাঁদছিল। গবাদিপশু মারা গিয়েছিল। সেই কষ্ট আপনি কোনোভাবেই কল্পনা বা অনুভব করতে পারবেন না।’

সাইক্লোন ভোলা ছিল ক্যাটাগরি-৩ ঘূর্ণিঝড়। এই ঝড়ে বাতাসের গতিবেগ ছিল ১৫০ মাইল পর্যন্ত। এটি এখন পর্যন্ত রেকর্ড করা সবচেয়ে মারাত্মক গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়। বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়গুলোর একটি। বঙ্গোপসাগরের উপকূলজুড়ে ৫ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। 

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সুপার সাইক্লোন আরও ঘন ঘন আঘাত হানছে। ১৯৭০ সালের পর এ ধরনের ঘটনা পাঁচ গুণ বেড়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ এমনভাবে মোকাবিলা করতে শিখেছে, যা ইউরোপসহ বিশ্বের বহু দেশ পারেনি। নিচু উপক্রান্তীয় এলাকা হওয়ার পরও বিশ্বের সবচেয়ে জোরালো প্রতিরক্ষাব্যবস্থার কারণে বাংলাদেশে দুর্যোগে প্রাণহাণি ১ শতাংশের নিচে নেমেছে।

দুর্যোগ মোকাবিলায় দক্ষিণ এশীয় দেশটির অগ্রগতি ইউরোপের ঠিক উল্টো। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আকস্মিক বন্যায় ১৮০ জন জার্মান মারা গেছে। ফ্রান্স, স্পেন, গ্রীসেও দাবানলে অসংখ্য মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। এক ঐতিহাসিক দাবদাহে ইউরোপ মহাদেশজুড়ে ৬১ হাজারেরও বেশি মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। 

ইউরোপীয় কর্তৃপক্ষ এখনো দুর্যোগ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা স্থাপনের চেষ্টায় রয়েছে। তাই এ ক্ষেত্রে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী বাংলাদেশ থেকে শিক্ষা নিতে চাইছে। 

ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের ঝুঁকি ও দুর্যোগ বিজ্ঞানের সহযোগী অধ্যাপক ড. বায়েস আহমেদ বলেন, ‘অনেক দেশ বাংলাদেশের সাফল্য থেকে শিক্ষা নেওয়ার চেষ্টা করছে। এটি বিশ্বমানের উদাহরণ হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।’ 

১৯৭০ সালের ‘সাইক্লোন ভোলা’র প্রতক্ষ্যদর্শী ও বর্তমানে স্বেচ্ছাসেবক আব্দুল জলিল মির্ধা‘ঘূর্ণিঝড় মোখা’ মোকাবিলায় বাংলাদেশ

সর্বশেষ গত ১৪ মে বাংলাদেশের উপকূলে ‘ঘূর্ণিঝড় মোখা’ আঘাত হানে। এই শতাব্দীর সবচেয়ে শক্তিশালী এই ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায়ও বাংলাদেশ সফল হয়েছে। প্রতি ঘণ্টায় ১৬০ মাইল বাতাসের বেগে দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ-পশ্চিম মিয়ানমারে এটি আঘাত হানে। 

এই ঘূর্ণঝড়ে মিয়ানমারে শত শত লোক মারা গেছে। বাংলাদেশের ২ দশমিক ৩ মিলিয়ন মানুষ ক্যাটাগরি-৫-এর এই ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে। ১৩ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়। তবু কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। 

বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সাইক্লোন প্রিপারেডনেস প্রোগ্রামের (সিপিপি) পরিচালক আহমেদুল হক বলেন, ‘আমরা আগেই জানতে পেরেছিলাম ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানতে যাচ্ছে। ফলে মোকাবিলার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ পেয়েছি।’ 

আহমেদুল হকের মতে, সরকার এপ্রিলের শেষের দিকে প্রাক্‌ঘূর্ণিঝড় পর্যবেক্ষণ শুরু করে। ৪ মে নাগাদ সতর্কবার্তা পেতে শুরু করে। ৯ মে উপকূল থেকে ১ হাজার মাইল দূরে নিম্নচাপটি তৈরি হওয়ায় আবহাওয়া অধিদপ্তর ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কবার্তা দেয়। মোখা আঘাত হানার দুই দিন আগে ১২ মে রাতে লাল সতর্কতাসংকেত দেওয়া হয়। পাশাপাশি ৭ লাখ ৫০ হাজার লোককে স্থায়ী ও অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। 

আহমেদুল হক বলেন, ‘আমাদের খুব ভালো একটি প্রাথমিক অ্যাকশন প্রোটোকল আছে। এখানে ৭১টি পূর্বনির্ধারিত কাজ রয়েছে, যা সঠিক পূর্বাভাস, সময়মতো সতর্কতা জারি এবং স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে কাজ করার সুযোগ দেওয়া।’ 

বাংলাদেশের দুর্যোগ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা শক্তিশালী না হলে মোখার মতো ঘূর্ণিঝড়ে লাখো মানুষ প্রাণ হারাত। বিশেষ করে দেশটির উচ্চ জনসংখ্যার ঘনত্বের কারণে। 

‘ঘূর্ণিঝড় ভোলার’ পরে ১৯৭২ সালে সরকার বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সহায়তায় অত্যন্ত কার্যকরী আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা চালু করে। এরপর আবহাওয়ার পূর্বাভাস প্রযুক্তি, দেশব্যাপী নেটওয়ার্ক, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক ও গণ প্রশিক্ষণে বিনিয়োগ করে। 

বাংলাদেশে এই সফলতা এসেছিল চারটি মৌলিক স্তম্ভ ব্যবহার করে। এগুলো ছিল- প্রস্তুতি, প্রশমন, প্রতিক্রিয়া এবং পুনরুদ্ধার। 

ঢাকায় অবস্থিত একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের পরিচালক অধ্যাপক সালিমুল হক। বাংলাদেশি-ব্রিটিশ এই জলবায়ু বিজ্ঞানী বলেন, ‘এই কয়েক বছর ধরে আমরা বিশ্বের সবচেয়ে সেরা ঘূর্ণিঝড় সতর্কতা এবং উচ্ছেদ ব্যবস্থা তৈরি করেছি।’ 

আগে বাংলাদেশে মাত্র তিনটি উপকূলীয় রাডার ছিল, যা উপকূল থেকে ২০০ মাইল দূরে ঘূর্ণিঝড়ের অবস্থান চিহ্নিত করতে পারত। এখন সেখানে ২৫৬টি স্থানীয় আবহাওয়া স্টেশন রয়েছে। এগুলো বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রের ডেটাসহ আগত ঝড় শনাক্ত ও নিরীক্ষণে সহায়তা করে। 

প্রয়োজনে টিভি ও রেডিওতে সম্প্রচার, এসএমএস বিজ্ঞপ্তি এবং ২৪ ঘন্টা হেল্পলাইনের মাধ্যমে সতর্কবার্তা প্রচার করা হয়। সবচেয়ে প্রত্যন্ত এবং অরক্ষিত মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য ৭৬ হাজারেরও বেশি স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের একটি বাহিনী মেগাফোন এবং সাইরেনসহ উপকূলীয় গ্রামে যায়। তাঁরা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় সতর্কীকরণ পতাকা তোলে এবং ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা বাড়িগুলোর দ্বারে দ্বারে গিয়ে সতর্কবার্তা দেয়। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের ১৫ হাজার ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়। ১৯৭০ সালে যা মাত্র ৪৪টি ছিল। 

বাংলাদেশের উপকূল অঞ্চল।১৯৭৬ সালে মিরধা বেগমের বয়স হয় ১৮ বছর। তখন তিনি স্বেচ্ছাসেবক হয়ে ওঠেন। এখন তিনি বরিশালে ইউনিট টিম লিডারের পাশাপাশি একজন কৃষক। মিরধা বেগম বলেন, ‘সাইক্লোন ভোলায় অনেক মানুষ মারা গিয়েছিল, কারণ আমরা প্রস্তুতি বা ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন ছিলাম না। তাই মানুষকে বাঁচাতে আমি স্বেচ্ছাসেবকের কাজ শুরু করেছি।’ 

স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের কাজগুলো হলো- প্রাথমিক সতর্কবার্তা প্রচার করা, গ্রামবাসীদের আশ্রয়কেন্দ্র নেওয়া, উদ্ধার করা, প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদানসহ ঘূর্ণিঝড়ের সময় এবং পরে শুকনো খাবার বিতরণ করা। 

বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পশ্চিমা বিশ্বকে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা দিতে পারে। ইমারজেন্সি ইভেন্ট ডেটাবেজ অনুসারে, গত বছর বিশ্বব্যাপী ৩৮৭টি প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং বিপর্যয় আঘাত হেনেছে। এতে ৩০ হাজার ৭০৪ জন মারা গেছে এবং ১৮৫ মিলিয়ন মানুষ এসব দুর্যোগের কবলে পড়েছেন। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ‘হারিকেন ইয়ান’ এর আঘাতে ১৩০ জনকে মারা গেছেন, পাকিস্তানে বন্যায় ১ হাজার ৭৩৯ জন মারা গেছেন, আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে ১ হাজার ৩৬ জন নিহত হয়েছেন এবং গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঝড় ‘মেগি’র আঘাতে ফিলিপাইনে ৩৪৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন। জাতিসংঘ জানিয়েছে, উপযুক্ত পদক্ষেপ না নিলে ২০৩০ সালের মধ্যে বছরে ৫৬০টি মাঝারি বা বড় আকারের বিপর্যয় ঘটবে। 

অধ্যাপক আহমেদুল হক বলেছেন, ‘এটি বড় চ্যালেঞ্জ, এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো ধনী দেশগুলোর জন্যও। যখন আপনি হারিকেন ক্যাটরিনার মতো বিপর্যয়ের কথা ভাবেন। আমরা জানি কীভাবে জীবন রক্ষা করতে হয়। আমাদের এই শেখা জ্ঞান বিশ্বের অন্যান্য জাতি-দেশের সঙ্গে বিনিময় করতে ইচ্ছুক।’ 

২০২২ সালের নভেম্বরে জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনে ২০২৭ সালের মধ্যে ‘পৃথিবীর সবাইকে’ প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করার জন্য একটি পরিকল্পনা তৈরি করেছিলেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। 

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা বলছে, বিশ্বের প্রায় অর্ধেক দেশেই কোনো আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা নেই। জলবায়ু পরিবর্তন পর্যবেক্ষক সংস্থা গ্লোবাল কমিশন অন অ্যাডাপটেশন এক প্রতিবেদনে বলেছে, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এই ধরনের ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় ৮০ কোটি ডলার খরচ করলে বছরে ১ হাজার ৬০০ কোটি ডলারের ক্ষতি এড়ানো যাবে। 

তবুও ইতালির স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এই সপ্তাহে তাপমাত্রা ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠতে পারে বলে সতর্ক করেছেন। স্পেনের লা পালমার ক্যানারি দ্বীপে একটি দাবানলের সঙ্গে লড়ছে, যা ৪ হাজার ৬০০ হেক্টর জমি পুড়িয়ে দিয়েছে। দ্রুত উষ্ণ হয়ে উঠছে ইউরোপ। বিষয়টি নিয়ে মহাদেশটিতে নতুন উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। মহাদেশটির জলবায়ু বিপর্যয় মোকাবিলায় নেই পর্যাপ্ত প্রস্তুতি। ঠিক যেমন বাংলাদেশ ছিল ১৯৭০ এর দশকে। 

এই পরিস্থিতির ভবিষ্যৎ পরিণতি হবে আরও মারাত্মক এবং ব্যয়বহুল। বার্সেলোনা ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল হেলথের গত সপ্তাহে প্রকাশিত গবেষণা অনুসারে, কার্যকরী অভিযোজন পরিকল্পনা বাস্তবায়িত না হলে ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতি গ্রীষ্মে প্রায় ৬৮ হাজার ইউরোপীয় প্রচণ্ড গরমে মারা যাবে। ইউরোপিয়ান এনভায়রনমেন্ট এজেন্সি জানিয়েছে, বিপর্যয়ের কারণে ১৯৮০ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর ১৩ বিলিয়ন ইউরো মূল্যমানের ক্ষতি হয়েছে, এই অঙ্ক সামনে আরও বাড়বে। 

জাতিসংঘের অধীন থাকা বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার মহাসচিব পেটেরি তালাস বলেছেন, ‘এই প্রধান জলবায়ু ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত চরম আবহাওয়ার ঘটনাগুলির প্রারম্ভিক সতর্কতা এবং পূর্বাভাসমূলক পদক্ষেপ জীবন ও জীবিকা বাঁচানোর জন্য অত্যাবশ্যক।’ 

সৌভাগ্যক্রমে মহাদেশটির দুর্যোগ পূর্বাভাসের ক্ষেত্রে কিছু অগ্রগতি হয়েছে। এপ্রিলে যুক্তরাজ্য প্রথমবারের মতো চরম আবহাওয়া সম্পর্কে জরুরি বার্তা সম্প্রচারের জন্য একটি সিস্টেম পরীক্ষা করে। মে মাসে গ্রিসের রাজধানী এথেন্সে নতুন ‘চিফ হিট অফিসার’ নিয়োগ করা হয়েছে। প্যারিস, মিলান এবং রটারডামের মতো অন্য শহরগুলো ‘এক্সট্রিম হিট’ অ্যাপ চালু করেছে। 

তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, জলবায়ু সম্পর্কিত বিপর্যয় মোকাবিলায় ইউরোপকে প্রস্তুতি আরও বাড়াতে হবে। বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান প্রাকটিক্যাল অ্যাকশনের ‘বন্যা প্রতিরোধী’ প্রকল্পের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তামান্না রহমান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ভূমিকম্প, ভূমিধস, অগ্নিকাণ্ড এবং আকস্মিক বন্যা মোকাবিলা ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করতে কাজ করছে। এটি স্মার্ট, অত্যাধুনিক সতর্কতা ব্যবস্থা ক্ষয়ক্ষতি কতটা কমিয়ে আনতে পারে তা দেখিয়েছে। 

তামান্না রহমান আরও বলেন, ‘আমাদের মডেল দুর্যোগকালে জীবন বাঁচাতে সফল হয়েছে। এখন আমাদের এটিতে সঠিকভাবে বিনিয়োগ করতে হবে এবং আরও এগিয়ে নিতে হবে।’ 

যুক্তরাজ্যের ‘দ্য টেলিগ্রাফে’ প্রকাশিত পুরস্কারজয়ী সাংবাদিক পিটার ইয়ংয়ের প্রতিবেদন অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকার সহ-সম্পাদক মুহম্মদ আবদুল বাছেদ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দূষণ বাড়ছে বাতাসে, যেসব সতর্কতা অবলম্বন করতে পারেন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

অগ্রহায়ণের শেষ দিন আজ। বাতাসে শীতের আমেজ। তবে শীতল আবহাওয়া নিয়ে আসা শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ঢাকার বাতাসে বেড়ে যায় দূষণের মাত্রা। বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে আজ সোমবার ঢাকার অবস্থান ৮ম।

আজ সকাল ৮টা ৪৩ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান আজ ১৫৮, যা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক।

বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্‌রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

অন্যদিকে গতকালের মতো আজও শীর্ষস্থানে দিল্লি। শহরটির বায়ুমান ৩৪৬, যা দুর্যোগপূর্ণ বাতাসের নির্দেশক।

শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো— পাকিস্তানের করাচি, কুয়েতের কুয়েত সিটি, মিশরের কায়রো ও পাকিস্তানের লাহোর। শহরগুলোর বায়ুমান যথাক্রমে ২০১, ১৮৯, ১৮৯ ও ১৮১।

বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১-১৫০ এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।

বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতি বছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।

দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।

পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

বাতাসের এই পরিস্থিতিতে করণীয়

অত্যন্ত সংবেদনশীল গোষ্ঠী: শিশু, বয়স্ক, হৃদ্‌রোগ বা শ্বাসকষ্টের রোগীরা সব ধরনের ঘরের বাইরে না যাওয়াই ভালো।

সাধারণ সুস্থ ব্যক্তি: তাদের উচিত বাইরে কাটানো সময় সীমিত করা এবং শারীরিক পরিশ্রমের কাজ এড়িয়ে চলা।

যদি বাইরে বের হতে হয়, তবে অবশ্যই দূষণ রোধে কার্যকর মাস্ক ব্যবহার করুন।

ঘরের ভেতরের বাতাস পরিষ্কার রাখতে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন এবং দূষিত বাতাস প্রবেশ ঠেকাতে জানালা ও দরজা বন্ধ রাখুন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাকায় তাপমাত্রা কমতে পারে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

অগ্রহায়ণের বিদায়বেলায় আজ সোমবার সকালবেলা রাজধানী ঢাকায় তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছে। আগের দিন রোববার ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ সকাল ৬টায় সেটি বেড়ে হয়েছে ১৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আজ সকাল ৭টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়, আজ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক এবং আকাশ পরিষ্কার থাকতে পারে। সকাল ৬টায় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮২ শতাংশ। দুপুর পর্যন্ত এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।

আজ ঢাকায় সূর্যাস্তের সময় সন্ধ্যা ৫টা ১৪ মিনিটে, আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৩৪ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিলুপ্তি থেকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বাঘের ফিরে আসার গল্পটি রুদ্ধশ্বাস

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সাইবেরিয়ান বাঘ। ছবি: নিও সায়েন্টিস্ট
সাইবেরিয়ান বাঘ। ছবি: নিও সায়েন্টিস্ট

রাশিয়ার আমুর বা সাইবেরিয়ান বাঘ রক্ষার দীর্ঘ ও নাটকীয় সংগ্রামের ভেতরের গল্পটি তুলে ধরেছে নতুন একটি বই। ‘টাইগার্স বিটুইন এম্পায়ার্স’ নামের এই বইটি লিখেছেন বন্যপ্রাণী জীববিজ্ঞানী জনাথন স্ল্যাগট। এতে উঠে এসেছে বিশ্বের দীর্ঘতম বাঘ গবেষণা কার্যক্রম হিসেবে পরিচিত ‘সাইবেরিয়ান টাইগার প্রজেক্ট’–এর ইতিহাস, সাফল্য ও সংকট।

বইটি লেখার প্রেক্ষাপট নিয়ে রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সিএনএন লিখেছে—২৫ বছরের বন্ধুত্বে সহকর্মী ডেল মিকুয়েলের মুখে ‘একদিন এ নিয়ে বই লিখব’ কথাটি বহুবার শুনেছিলেন স্ল্যাগট। কিন্তু সেই বই আর লেখা হয়নি। অবশেষে ২০২১ সালে স্ল্যাগট নিজেই উদ্যোগ নেন। চার বছর পর ৫১২ পৃষ্ঠার এই বইয়ে তিনি তুলে ধরেন কীভাবে রাশিয়ার দূরপ্রাচ্যে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে আমুর বাঘকে বিলুপ্তির হাত থেকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা হয়েছে।

উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে রাশিয়ায় প্রায় তিন হাজার বাঘ থাকলেও ১৯৩০-এর দশকে সেই সংখ্যা নেমে আসে মাত্র ৩০ টিতে। পরে শিকার নিষেধাজ্ঞা ও সংরক্ষিত এলাকা গড়ে ওঠায় পরিস্থিতির উন্নতি হয়। তবে ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর দারিদ্র্য ও অবৈধ শিকারের কারণে আবারও বাঘের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়ে। ঠিক সেই সময় শুরু হয় সাইবেরিয়ান টাইগার প্রজেক্ট।

এই প্রকল্পে মার্কিন বিজ্ঞানীরা অর্থ ও প্রযুক্তি সহায়তা দেন, আর রুশ সংরক্ষণবিদেরা মাঠপর্যায়ের অভিজ্ঞতা কাজে লাগান। রেডিও ও জিপিএস কলার ব্যবহার করে প্রথমবারের মতো বাঘের চলাচল, খাদ্যাভ্যাস ও জীবনচক্র সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়। প্রকল্প চলাকালে ১১৪টি বাঘ ধরা ও ছাড়া হয়। এর মধ্যে ‘ওলগা’ নামের একটি বাঘকে ১৩ বছর ধরে অনুসরণ করা হয়—যা গবেষকদের কাছে তাকে শুধু গবেষণার নম্বর নয়, এক জীবন্ত চরিত্রে পরিণত করে।

দেখা গিয়েছিল—প্রকল্পটির প্রথম এক দশকে যতগুলো বাঘ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল, তার ৭৫ শতাংশই ছিল চোরাশিকারের ফল। স্ল্যাগট লিখেছেন, বাঘের জীবন মোটেও শান্ত বা রোমান্টিক নয়—বরং সহিংস জীবন তাদের।

ওই প্রকল্পের গবেষণার ভিত্তিতেই গড়ে উঠেছিল নতুন সংরক্ষিত এলাকা। এর ফলে সুরক্ষিত বনভূমির পরিমাণ দ্বিগুণ হয়। তবে ২০১০ সালের পর বিদেশি সংস্থার ওপর রুশ সরকারের সন্দেহ বাড়তে থাকে। ২০২২ সালে ইউক্রেন যুদ্ধের পর অনেক আন্তর্জাতিক পরিবেশ সংস্থা দেশটিতে নিষিদ্ধ হয়।

রাশিয়ার সরকার বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধির দাবি করলেও আইইউসিএন-এর হিসাব অনুযায়ী, প্রাপ্তবয়স্ক বাঘের সংখ্যা এখন ২৬৫ থেকে ৪৮৬-এর মধ্যে, যা স্থিতিশীল হলেও ঝুঁকিমুক্ত নয়। স্ল্যাগটের মতে, পুরোপুরি সমাধান হয়ে গেছে, বিষয়টি এমন নয়। তবে এটি একটি সাফল্য, যা টিকিয়ে রাখতে হলে নিয়মিত নজরদারি ও আন্তর্দেশীয় সহযোগিতা অপরিহার্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা বাস্তবায়নে সবার সহযোগিতা চাইলেন পরিবেশ উপদেষ্টা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ট্রাফিক বিভাগকে সাউন্ড লেভেল মিটার তুলে দেন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ছবি: পিআইডি
ট্রাফিক বিভাগকে সাউন্ড লেভেল মিটার তুলে দেন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ছবি: পিআইডি

শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে নতুন জারি করা শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০২৫ কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের উদ্যোগে এক দিকনির্দেশনামূলক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পরিবেশ অধিদপ্তর অডিটরিয়ামে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

পরিবেশ অধিদপ্তর বাস্তবায়নাধীন শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারত্বমূলক প্রকল্পের আওতায় আয়োজিত এই কর্মশালায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ৬০ জন ট্রাফিক সার্জেন্ট, বিআরটিএর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসম্পন্ন পাঁচজন কর্মকর্তা, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০ জন ম্যাজিস্ট্রেট, পরিবেশ অধিদপ্তরের মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকারী ম্যাজিস্ট্রেট এবং সংশ্লিষ্ট অংশীজনেরা অংশ নেন।

কর্মশালায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান এবং সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামান (এনডিসি)।

উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ট্রাফিক সার্জেন্টদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা আপনাদের সাথে নিয়ে ভলান্টিয়ারদের সম্পৃক্ত করে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে ক্যাম্পেইন শুরু করব। কয়েকটি নীরব এলাকাকে এবার আমরা শব্দ দূষণমুক্ত করতে চাই।’

উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘জানুয়ারি মাসে চলেন আমরা হর্নের বিরুদ্ধে অভিযান এবং সচেতনতা একসাথে পরিচালনা করি এবং এটা চলমান রাখতে হবে। কারণ, আমাদের অভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে—সেটা এক দিনে হবে না, কিন্তু চেষ্টাটা চালিয়ে যেতে হবে।’ এই বিধিমালা বাস্তবায়নে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

প্রকল্প পরিচালক ফরিদ আহমেদের স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া কর্মশালায় শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০২৫ নিয়ে প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সিদ্ধার্থ শংকর কুন্ডু। তিনি জানান, হালনাগাদ বিধিমালায় প্রথমবারের মতো পুলিশকে সরাসরি ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, যা শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিশ্চিত করবে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. আনিছুর রহমান বলেন, ‘ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত আছেন ৪ হাজার ১০৫ জন। এই জনবল দিয়ে দুই কোটি মানুষের ঢাকা শহরকে ট্রাফিকিং করা খুবই চ্যালেঞ্জিং, কিন্তু তারপরও ডিএমপির ট্রাফিক সদস্যগণ নিরলসভাবে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে।’

আনিছুর রহমান আরও বলেন, এই বিধিমালায় যেহেতু ট্রাফিক সার্জেন্টদের ক্ষমতায়িত করা হয়েছে, ঢাকা মেট্রোতে ৯৮০ জন ট্রাফিক পুলিশ রয়েছেন—তাঁদের দিয়ে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ‘ট্রাফিক সার্জেন্টদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর সুযোগ পাওয়া যায় না। এই যে উনারা রাত-দিন, ঝড়বৃষ্টি উপেক্ষা করে দায়িত্ব পালন করেন, তাঁর কৃতজ্ঞতা জানানোর সুযোগটুকু যেহেতু পেয়েছি, কাজেই সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।’

নিয়াজ আহমেদ আরও বলেন, ‘পরিবেশর সুরক্ষা দেওয়ার বিষয়টিকে আমাদের সবার চর্চার মধ্যে আনতে হবে। একটু একটু করে করতে থাকলে একদিন নিশ্চয়ই একটা ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।’

সভাপতির বক্তব্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামান এনডিসি কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বিধিমালা বাস্তবায়নে সবার সহযোগিতা কামনা করেন। অনুষ্ঠানে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. ফাহমিদা খানমও বক্তব্য দেন।

কর্মশালায় বিগত থার্টি ফার্স্ট নাইটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকার জন্য উপাচার্যকে সম্মাননা স্মারক দেওয়া হয়। পাশাপাশি প্রকল্পের পক্ষ থেকে ডিএমপিকে ৫০টি সাউন্ড লেভেল মিটার দেওয়া হয়, যার একটি ট্রাফিক পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনারের হাতে তুলে দেন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত