Ajker Patrika

এশিয়ার পর ইউরোপ-আমেরিকায় প্রচণ্ড দাবদাহে নাকাল মানুষ 

আপডেট : ১৬ জুলাই ২০২৩, ১৪: ২৩
এশিয়ার পর ইউরোপ-আমেরিকায় প্রচণ্ড দাবদাহে নাকাল মানুষ 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গতকাল শনিবার কয়েক মিলিয়ন মানুষ দাবদাহে ভুগেছে। ইউরোপ ও জাপানে রেকর্ড তাপমাত্রার পূর্বাভাসের পর যুক্তরাষ্ট্রেও একই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এএফপি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

মার্কিন জাতীয় আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, এই সপ্তাহের ছুটির দিনে তাপমাত্রা সবচেয়ে বেশি থাকবে। দিনের তাপমাত্রা পশ্চিমে স্বাভাবিকের চেয়ে ১০ থেকে ২০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বেশি হতে পারে। এ ছাড়া ক্যালিফোর্নিয়া ও টেক্সাসে তাপপ্রবাহ শীর্ষে উঠবে বলেও আশঙ্কা করা হয়েছে। 

এই দাবদাহের মাত্রা সবচেয়ে বেশি অ্যারিজোনায়। অঙ্গরাজ্যটির বাসিন্দারা প্রতিদিন সূর্যের অগ্নিশর্মায় পুড়ে নাকাল হচ্ছে। রাজ্যের রাজধানী ফিনিক্সে গত ১৬ দিন ধরে তাপমাত্রা ১০৯ ফারেনহাইট (৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস)-এর ওপরে রেকর্ড করা হয়েছে। গতকাল শনিবার এটি ছিল ১১৫ ফারেনহাইট, যা আজ রোববার ১৩০ ফারেনহাইট হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। 

ক্যালিফোর্নিয়ার ‘ডেথ ভ্যালি’ পৃথিবীর উষ্ণতম স্থানগুলোর মধ্যে একটি। আজ রোববার এখানে নতুন রেকর্ড গড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সম্ভবত ১৩০ ফারেনহাইটে (৫৪ সেলসিয়াসে) উঠতে পারে। গতকাল শনিবার মধ্যাহ্ন নাগাদ এখানে তাপমাত্রা ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছিল এবং এমনকি রাতের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের রেকর্ড ভাঙতে পারে। 

যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষ সতর্কবার্তা দিয়ে মানুষকে দিনের বেলা বাইরের কাজে বের না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। পাশাপাশি শরীরে পানিশূন্যতার বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছে। 

এই দাবদাহের মধ্যেও টেক্সাসের বাইরে নির্মাণ সাইট হাস্টনে জুয়ান নামের (২৮) এক শ্রমিককে কাজ করতে দেখা গেছে। প্রাচীর নির্মাণকাজের ফাঁকে তিনি এএফপিকে বলেন, ‘এতই গরম যে পানি খেলেও মাথা ঘোরে, গরমে আমার বমি আসে।’ 

লাস ভেগাস আবহাওয়া পরিষেবা সতর্ক করে জানিয়েছে, উচ্চ তাপমাত্রা পাশের মরুভূমির তাপ ধরে নেওয়া বিপজ্জনক মানসিকতা। এই তাপপ্রবাহ সাধারণ মরুভূমির তাপ নয়। 

দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়া অসংখ্য দাবানল নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। এর মধ্যে রয়েছে রিভারসাইড কাউন্টি, যেখানে ৩ হাজার একরেরও বেশি (১ হাজার ২১৪ হেক্টর) বনানঞ্চল পুড়ে গেছে। 

এদিকে কানাডা সরকার জানিয়েছে, এ বছরের দাবানল আগের সব রেকর্ড ভেঙেছে। ১০ মিলিয়ন হেক্টর পুড়িয়ে দিয়েছে। গ্রীষ্মে আরও ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। 

ইতিহাসের সবচেয়ে বড় দাবদাহের পূর্বাভাস
ইউরোপের দেশ ইতালির রোম, বোলোগনা, ফ্লোরেন্সসহ ১৬টি শহরের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একটি ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করেছে। আবহাওয়া কেন্দ্র ইতালীয়দের গ্রীষ্মের এই সময়কালে নিরাপদে ও সতর্ক থাকতে নির্দেশ দিয়েছে। 

থার্মোমিটারটি রোমে আগামীকাল সোমবারের মধ্যে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট) এবং মঙ্গলবার ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস হতে পারে। এটা হলে ২০০৭ সালের আগস্টের ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের রেকর্ড ভেঙে যাবে। 

সিসিলি ও সার্ডিনিয়া দ্বীপপুঞ্জে ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা উঠতে পারে। ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা সতর্ক করে জানিয়েছে, এটি ইউরোপে রেকর্ড করা সর্বকালের উষ্ণ তাপমাত্রা। 

গ্রিসের অন্যতম শীর্ষ পর্যটন আকর্ষণ অ্যাথেন্স অ্যাক্রোপলিস। কিন্তু ছুটির দিন রোববার দাবদাহের কারণে বন্ধ থাকবে। এ নিয়ে টানা তিন দিন বন্ধ থাকছে কেন্দ্রটি। 

এদিকে ফ্রান্সে উচ্চ তাপমাত্রা এবং খরা কৃষিশিল্পের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। গতকাল শনিবার কৃষিমন্ত্রী মার্ক ফেসন্যু জলবায়ু বিশেষজ্ঞদের মতামতের সমালোচনা করেছেন। এর আগে ফ্রান্সের জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন, গ্রীষ্মে এমন তাপমাত্রা স্বাভাবিক। 

ফ্রান্সের জাতীয় আবহাওয়া সংস্থা অনুসারে, গত জুন ফ্রান্সের ইতিহাসে দ্বিতীয় উষ্ণতম মাস ছিল। আগামী মঙ্গলবার থেকে দেশের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে দাবদাহের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। 

স্পেনের আবহাওয়া সংস্থা গতকাল শনিবার সতর্ক করে জানিয়েছে, আগামী সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত একটি তাপপ্রবাহ ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জ এবং দক্ষিণ আন্দালুসিয়া অঞ্চলে বয়ে যাবে, যা ৪০ ডিগ্রির ওপরে হতে পারে। 

পূর্ব জাপানে রবি ও সোমবার তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আবহাওয়া সংস্থা সতর্ক করে জানিয়েছে, তাপমাত্রা আগের রেকর্ড ভাঙতে পারে। 

দাবদাহের পর মরণঘাতী বৃষ্টি
এদিকে ভারতে টানা কয়েক দিনের দাবদাহের পর ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। বন্যায় হিমাচল ও দিল্লিতে ভূমিধস হয়েছে। এতে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। 

নয়াদিল্লির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত যমুনা নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছে, যা যমুনার পূর্বের রেকর্ড ভেঙেছে। এই মেগাসিটির নিচু এলাকাগুলো ঝুঁকির মুখে পড়েছে। 

বর্ষাকালে বড় ধরনের বন্যা ও ভূমিধস সাধারণ ঘটনা। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এসব ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা ও তীব্রতা বাড়ছে।

মরক্কোতে এই সপ্তাহান্তে কিছু প্রদেশে গড় তাপমাত্রা ছিল ৪৭ সেলসিয়াস। দেশটির আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, এমন তাপমাত্রা সাধারণত আগস্টে হয়ে থাকে, কিন্তু এবার জুলাইয়ে এটি দেখা দিয়েছে। এতে জলের ঘাটতি দেখা দিয়েছে এবং উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। 

সঙ্কুচিত হচ্ছে তাইগ্রিস নদী
অপ্রতুল জলের দেশ জর্ডান এ বছর দাবানল নিয়ন্ত্রণে নিতে ২১৪ টন জল খরচ করতে বাধ্য হয়েছে। কেননা, দাবদাহের মধ্যে দেশটির উত্তরের আজলুন বনে আগুন ধরেছিল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। 

ইরাকে জ্বলন্ত গ্রীষ্ম যেন অনেকটাই স্বাভাবিক। উইসাম আবেদ নামের এক নাগরিক জানান, গ্রীষ্ম তিনি সাধারণত টাইগ্রিস নদীতে সাঁতার কেটে কিছুটা স্বস্তি পেতেন। কিন্তু নদীতে আর আগের মতো পানি নেই, নেই স্বস্তির সাঁতারও। 

বাগদাদ শহরে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছে তাপমাত্রা আর শুষ্ক। এর মধ্য আবেদ নদীর মাঝখানে দাঁড়িয়েছিলেন, কিন্তু জল তার কোমর পর্যন্তই উঠেছিল সর্বোচ্চ। 

উইসাম আবেদ (৩৭) এএফপিকে বলেন, ‘বছরের পর বছর টাইগ্রিসের পানির পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে।’ 

যদিও জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য একটি নির্দিষ্ট আবহাওয়ার ঘটনাকে দায়ী করা কঠিন, তবু বিজ্ঞানীরা জোর দিয়েই বলছেন, এই বৈশ্বিক উষ্ণতার পেছনে বড় কারণ জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতা। এতে দাবদাহের মাত্রাও হচ্ছে লাগামহীন। 

ইউরোপীয় ইউনিয়নের জলবায়ু পর্যবেক্ষণ পরিষেবা বলেছে, গত জুন ছিল বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে উষ্ণতম মাস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজ ঢাকার আবহাওয়া কেমন থাকবে জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রাজধানী ঢাকায় আজ শুক্রবার সকালে তাপমাত্রা ছিল ১৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে।

আজ সকাল ৭টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে এ কথা বলা হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ সকাল ৬টায় ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৬ শতাংশ।

পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। তবে আকাশ আংশিক মেঘলা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ সূর্যাস্ত ৫টা ১৫ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৩৬ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন: দক্ষিণ এশিয়ায় বায়ুদূষণে বছরে প্রাণ হারাচ্ছে ১০ লাখ মানুষ

  • ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলের মধ্যে আছে বাংলাদেশও
  • অস্বাস্থ্যকর বায়ুতে শ্বাস নিচ্ছে কোটি কোটি মানুষ
  • ক্ষতি হচ্ছে জিডিপির ১০ শতাংশের সমপরিমাণ
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

দক্ষিণ এশিয়ার গাঙ্গেয় সমভূমি ও হিমালয়ের পাদদেশ (আইজিপি-এইচএফ) অঞ্চলের প্রায় ১০০ কোটি মানুষ নিয়মিত অস্বাস্থ্যকর বায়ুতে শ্বাস নিচ্ছে। এতে বছরে এই অঞ্চলের প্রায় ১০ লাখ মানুষ অকালে প্রাণ হারাচ্ছে। বায়ুদূষণের ফলে অঞ্চলটির অর্থনীতিতে বছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১০ শতাংশের সমপরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে। এই দূষণের ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশও।

বিশ্বব্যাংকের ‘এ ব্রেথ অব চেঞ্জ: সলিউশনস ফর ক্লিনার এয়ার ইন দ্য ইন্দো-গেঞ্জেটিক প্লেইনস অ্যান্ড হিমালয়ান ফুটহিলস’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। সংস্থাটির ঢাকা অফিস থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আইজিপি-এইচএফ অঞ্চলে বায়ুদূষণ এখনো অন্যতম বড় উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে। সমন্বিত ও বাস্তবভিত্তিক কিছু পদক্ষেপ নিলে দূষণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব। এতে একই সঙ্গে জনস্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দুটোরই উন্নতি হবে।

গাঙ্গেয় সমভূমি ও হিমালয়ের পাদদেশ অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, পাকিস্তান ও ভুটানের অংশবিশেষ। প্রতিবেদনে বলা হয়, এ অঞ্চলের বায়ুদূষণের প্রধান পাঁচটি উৎস রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে রান্না ও ঘর গরম করার কাজে লাকড়িজাতীয় কঠিন বস্তু ব্যবহার, শিল্পকারখানায় জীবাশ্ম জ্বালানি (তেল, গ্যাস, কয়লা) ও বায়োম্যাসের ফিল্টার ছাড়া অদক্ষ ব্যবহার, অনুন্নত প্রযুক্তির ইঞ্জিনের যানবাহন চালানো, কৃষকদের খেতের ফসলের অবশিষ্টাংশ পোড়ানো এবং রাসায়নিক সার ও গোবরের অদক্ষ ব্যবস্থাপনা এবং গৃহস্থালি ও কারখানার বর্জ্য পোড়ানো।

দূষণ কমাতে কয়েকটি তুলনামূলকভাবে সহজে বাস্তবায়নযোগ্য কৌশলের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে। এগুলো হলো–বৈদ্যুতিক চুলায় রান্না, শিল্পকারখানার বয়লার, ফার্নেস ও ইটভাটার আধুনিকায়ন, নন-মোটরাইজড ও বৈদ্যুতিক পরিবহনব্যবস্থার প্রসার, কৃষিবর্জ্য ও পশুবর্জ্যের উন্নত ব্যবস্থাপনা এবং বর্জ্য পৃথক্‌করণ ও পুনর্ব্যবহারের ওপর জোর দেওয়া।

প্রতিবেদনে নির্মল বায়ু নিশ্চিত করার কৌশলকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। ১. দূষণের উৎসেই নির্গমন কমানোর ব্যবস্থা। ২. স্বাস্থ্য ও শিক্ষাব্যবস্থা শক্তিশালী করে শিশু ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়া। ৩. কার্যকর আইন, বাজারভিত্তিক প্রণোদনা ও আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গড়ে তোলা।

বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ পরিবেশ অর্থনীতিবিদ মার্টিন হেগার বলেন, ‘নির্মল বায়ু নিশ্চিত করার সমাধানগুলো বাস্তবসম্মত ও কার্যকর। নীতিনির্ধারকদের জন্য এটি একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ দেয়। একই সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার পরিবার, কৃষক ও উদ্যোক্তাদের জন্য পরিচ্ছন্ন প্রযুক্তি ব্যবহারে আর্থিক ও অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক সুযোগ তৈরি করে।’

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নির্মল বায়ু নিশ্চিত করতে ‘চারটি আই’ (ইংরেজি আদ্যক্ষর)—তথ্য, প্রণোদনা, প্রতিষ্ঠান এবং অবকাঠামোর ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। নির্ভরযোগ্য তথ্যভিত্তিক পরিকল্পনা, পরিচ্ছন্ন বিকল্পে বিনিয়োগে প্রণোদনা, কার্যকর প্রতিষ্ঠান এবং পরিচ্ছন্ন জ্বালানি ও পরিবহন অবকাঠামো গড়ে তোলাই এই রূপান্তরের মূল চাবিকাঠি।

বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের পরিবেশবিষয়ক প্র্যাকটিস ম্যানেজার অ্যান জিনেট গ্লাউবার বলেন, স্থানীয় থেকে আঞ্চলিক পর্যায় পর্যন্ত সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া নির্মল বায়ু অর্জন সম্ভব নয়। সরকারগুলো একসঙ্গে কাজ করলেই কেবল দূষণ কমানো, লাখো মানুষের জীবন রক্ষা এবং সবার জন্য নিরাপদ বায়ু নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকার বাতাস সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর, আজও দূষণে শীর্ষে দিল্লি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ০২
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বেশ কিছুদিন ধরে দিল্লির বাতাসের অবস্থা দুর্যোগপূর্ণ। আজ বৃহস্পতিবার দূষিত শহরের তালিকার শীর্ষে রয়েছে শহরটি। অন্যদিকে ঢাকার বায়ুমান আজ সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর।

সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, আজ বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে সপ্তম স্থানে রয়েছে ঢাকা।

আইকিউএয়ারের সকাল ৮টা ৩০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী, ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স স্কোর ১৯০। যা নির্দেশ করে ঢাকার বাতাসের অবস্থা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর।

ঢাকার বেশ কিছু স্থানের বাতাসের অবস্থা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর থেকে খুব অস্বাস্থ্যকর। এর মধ্যে রয়েছে— কল্যাণপুর (২৬০), দক্ষিণ পল্লবী (২৫৬), বেজ এজওয়াটার আউটডোর (১৯৬), গোড়ান (১৯৬) ও বেচারাম দেউরি (১৯০)।

অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরেই দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে দিল্লি। শহরটির একিউআই স্কোর ৩১০। যা এই শহরের বাতাসকে ‘দুর্যোগপূর্ণ’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করেছে।

তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর (২৭০, খুব অস্বাস্থ্যকর), তৃতীয় স্থানে বসনিয়া-হার্জেগোভিনার সারাজেভ (২২৭, খুব অস্বাস্থ্যকর), চতুর্থ স্থানে রয়েছে পাকিস্তানের করাচি (২০১, খুব অস্বাস্থ্যকর) এবং পঞ্চম স্থানে রয়েছে মিসরের কায়রো (১৯৪, সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর)।

বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশিমাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্‌রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বাতাসের মূল ক্ষতিকারক উপাদান হলো ক্ষুদ্র বস্তুকণা বা পিএম ২.৫। এটি এতই সূক্ষ্ম যে তা ফুসফুসে এমনকি রক্তপ্রবাহেও প্রবেশ করতে পারে।

বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।

বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।

দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।

পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বেড়েছে ঢাকার তাপমাত্রা, জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

পৌষ মাসের তৃতীয় দিন আজ। শীতের মৌসুম চলে এলেও রাজধানী ঢাকায় বাড়ছে তাপমাত্রা। আজ বৃহস্পতিবার সকালের আবহাওয়া বুলেটিনে দেখা যায়, গতকালের তুলনায় আজ সকালে তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ সকাল ৬টায় ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল মঙ্গলবার ছিল ১৬ দশমিক ৬। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৯ শতাংশ।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের সকাল ৭টায় পরবর্তী ছয় ঘণ্টার জন্য ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। তবে আকাশ আংশিক মেঘলা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ সূর্যাস্ত ৫টা ১৫ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৩৬ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত