Ajker Patrika

পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়

আপডেট : ১২ মে ২০২৩, ১৯: ২২
পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়

আজ থেকে পাঁচ দশক আগে আঘাত হেনেছিল এক ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস। কেড়ে নিয়েছিল ৩ থেকে ৫ লাখ মানুষের প্রাণ। মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছিল ঘরবাড়ি। তছনছ করে দিয়েছিল বিস্তীর্ণ এলাকা। জাতিসংঘের আওতাধীন বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও) ২০১৭ সালের ১৮ মে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়গুলোর একটি তালিকা প্রকাশ করে। এতে এই ঘূর্ণিঝড়কেই ‘সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়’ হিসেবে চিহ্নিত করে সংস্থাটি। 

বাংলাদেশের ভোলায় আঘাত হানা এই সামুদ্রিক ঝড় বিশ্বব্যাপী ‘দ্য গ্রেট ভোলা সাইক্লোন’ নামে পরিচিত। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের দক্ষিণ উপকূল দিয়ে এই সাইক্লোন বয়ে যায়। তবে সবচেয়ে তীব্র আঘাতটি হেনেছিল ভোলায়। 

 ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২২৪ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানা এই ঘূর্ণিঝড়ের সময় উপকূলীয় এলাকায় জলোচ্ছ্বাসের উচ্চতা ছিল ১০-৩৩ ফুট! 

এই ঘূর্ণিঝড়ের পরই এমন একটি বিপর্যয়কর প্রাণহানির পুনরাবৃত্তি রোধ করতে বিশ্বব্যাপী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি উঠতে থাকে। শেষ পর্যন্ত ডব্লিউএমও-এর ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড় কর্মসূচির ভিত্তি স্থাপন করে এই বিপর্যয়। 

ঘূর্ণিঝড় ভোলা দক্ষিণ মধ্য বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ থেকে শক্তি বৃদ্ধি করে ১৯৭০ সালের ১২-১৩ নভেম্বর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ভোলায় আঘাত হানে। ৩ লাখ থেকে ৫ লাখ মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয় এই ঝড় ও জলোচ্ছ্বাস। বেশির ভাগ মৃত্যুই ঘটেছে বঙ্গোপসাগরের উপকূলে আছড়ে পড়া বৃহৎ জলোচ্ছ্বাসের কারণে। জোয়ারের পানিতে ভেসে যায় সমতল। ডুবে যায় উপকূলের কাছে থাকা দ্বীপাঞ্চল। ডব্লিউএমওর ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যান্ড ক্লাইমেট এক্সট্রিমস আর্কাইভ ভোলার এই ঝড়কে বিশ্বের সবচেয়ে মারাত্মক ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড় হিসেবে ঘোষণা করেছে। 

এই ট্র্যাজেডির পর জাতিসংঘ বেশ কয়েকটি প্রস্তাব উত্থাপন এবং ‘ক্রান্তীয় সাইক্লোনের ক্ষতিকারক প্রভাবগুলো প্রশমিত করার উপায় খুঁজে বের করার’ আহ্বান জানায়। পরবর্তীতে অবশ্য স্বাধীন বাংলাদেশ জনসংখ্যার ব্যাপক ঘনত্ব এবং বিস্তীর্ণ নিচু উপকূলীয় সমভূমি থাকা সত্ত্বেও দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস এবং স্থিতিস্থাপকতার জন্য ‘আন্তর্জাতিক চ্যাম্পিয়ন’ হয়ে উঠেছে। 

গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়গুলো এমনকি বিকাশের প্রাথমিক পর্যায়েও জীবন ও সম্পত্তির জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে উঠতে পারে। ঝড়, বন্যা, দমকা বাতাস, টর্নেডো এবং বজ্রপাতের মতো ভয়ানক প্রাকৃতিক দুর্যোগ ডেকে আনে এসব ঝড়। এই বিপদগুলো একসঙ্গে আসে। এ কারণে জীবনহানি এবং অন্যান্য ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা অনেক বেশি থাকে। 

ভোলার ঘূর্ণিঝড়ের পর বিগত ২০ বছরে ১ হাজার ৯৪২টি মারাত্মক প্রাকৃতিক দুর্যোগই ঘটেছে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়ের কারণে। এতে প্রাণ গেছে ৭ লাখ ৭৯ হাজার ৩২৪ জন মানুষের। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১ হাজার ৪০৭ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। সে হিসাবে এই সময়ে শুধু গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়ের কারণেই দৈনিক গড়ে ৪৩ জনের প্রাণহানি এবং ৭৮ মিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে! 

বলা হয়, গত ৪২ বছরে ডব্লিউএমওর গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় কর্মসূচি সারা বিশ্বে যে ভূমিকা রেখেছে, তা না থাকলে প্রাণহানি আরও অনেক বেশি হতো। 

ডব্লিউএমওর গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় কর্মসূচিটি ১৯৭১ সালে সংস্থার ষষ্ঠ কংগ্রেসে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে উত্থাপিত প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৭০ সালে বাংলাদেশের বিপর্যয়কর ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়ের মতো দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতির প্রভাবগুলো প্রশমিত করার জন্য এটি করা হয়। 

ওই সময় এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের সঙ্গে ডব্লিউএমও দুটি আন্তঃসরকারি আঞ্চলিক সংস্থার সঙ্গে কাজ শুরু করে। আন্তরাষ্ট্রীয় আঞ্চলিক সংগঠন দুটি হলো টাইফুন কমিটি এবং ট্রপিক্যাল সাইক্লোন প্যানেল। এই সংগঠনকে সহায়তা করে আসছে ডব্লিউএমও। 

ডব্লিউএমও-এর ছত্রচ্ছায়ায় অনন্য বৈশ্বিক সমন্বয় ও সহযোগিতা গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস এবং সতর্কতার সঠিকতার ক্ষেত্রে নাটকীয় অগ্রগতি হয়েছে। এই উদ্যোগ বছরের পর বছর ধরে হাজার হাজার জীবন বাঁচিয়ে আসছে। 

তবে জলবায়ু পরিবর্তন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, জনসংখ্যা এবং নগরায়ণ বৃদ্ধির কারণে ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়ের ঝুঁকি দিন দিন বাড়ছে। চ্যালেঞ্জগুলোর প্রতিক্রিয়ায় ডব্লিউএমও প্রভাব-ভিত্তিক পূর্বাভাস নিয়ে কাজ করছে। 
২০২২ সালে মিসরে অনুষ্ঠিত কোপ-২৭ শীর্ষ সম্মেলনে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বৈশ্বিক ‘আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা’ নির্মাণে ৩০০ কোটি ডলারের একটি প্রকল্পের ঘোষণা দেন। সারা বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে খরা, বন্যা এবং তাপপ্রবাহের মতো যে চরম আবহাওয়াজনিত সংকট বাড়ছে, এর প্রভাব বিবেচনায় আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা চালু করতেই এই উদ্যোগ।

উল্লেখ্য, ভোলায় ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার পর থেকে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার একেবারেই উদাসীন ছিল। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে সহায়তা করার জন্য প্রথম দিন কার্যত কিছুই করেনি তারা। 
ঘূর্ণিঝড় যখন আঘাত হানে তখন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান রাষ্ট্রীয় সফরে চীনে ছিলেন। ঝড়ের দুই দিন পরে তিনি চীন থেকে ঢাকায় আসেন। কিন্তু উপদ্রুত এলাকা পরিদর্শনে না গিয়ে ইয়াহিয়া খান পশ্চিম পাকিস্তানে ফিরে যান। ঘূর্ণিঝড়ের ১৪ দিন পরে সি প্লেনে করে ভোলায় আসেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট। 

 ১৯৭০ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ তাঁদের পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে। বলতে গেলে পশ্চিম পাকিস্তানের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের অবিশ্বাসের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছিল ভোলার সেই সাইক্লোন। ১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানের ১৬৯টি আসনের মধ্যে ১৬৭টি আসনে জয়লাভ করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এনসিপির সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করলেন মওলানা ভাসানীর নাতি

আজকের রাশিফল: অন্যের নামে সঙ্গীকে ডেকে হুলুস্থুল বাধাবেন, হঠাৎ অর্থপ্রাপ্তির সম্ভাবনা

‘জেবু’কে নিয়ে মানুষের কৌতূহল দেখে অবাক জাইমা, দীর্ঘ পোস্টে লিখলেন অনুভূতি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শীতে কাঁপছে সারা দেশ, রাতে তাপমাত্রা আরও কমবে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
যশোরে টানা দুইদিন সূর্যের দেখা নেই। ছবি: আজকের পত্রিকা
যশোরে টানা দুইদিন সূর্যের দেখা নেই। ছবি: আজকের পত্রিকা

মাঘ মাস আসতে এখনো অনেক বাকি। আজ সোমবার কেবল ১৪ পৌষ। তবে এখনই হাড়কাঁপানো শীত পড়েছে দেশজুড়ে। আজ সকাল ৬টায় দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল কিশোরগঞ্জের নিকলীতে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় রাজধানী ঢাকায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ রাতে সারা দেশেই তাপমাত্রা আরও কমতে পারে।

আজ সকাল ৯টা আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকতে পারে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ সকালে দেশের বিভাগীয় শহরগুলোর মধ্যে রাজশাহীতে তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ৪, রংপুরে ১৩, ময়মনসিংহে ১৩ দশমিক ৬, সিলেটে ১৪ দশমিক ৫, চট্টগ্রামে ১৫ দশমিক ৭ এবং খুলনা ও বরিশালে ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

কুয়াশার কারণে দেশজুড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিঘ্ন হতে পারে উল্লেখ করে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঘন কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা সাময়িকভাবে ব্যাহত হতে পারে।

এ ছাড়া সারা দেশে আজ রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ার কারণে দেশের অনেক জায়গায় শীতের অনুভূতি অব্যাহত থাকতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এনসিপির সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করলেন মওলানা ভাসানীর নাতি

আজকের রাশিফল: অন্যের নামে সঙ্গীকে ডেকে হুলুস্থুল বাধাবেন, হঠাৎ অর্থপ্রাপ্তির সম্ভাবনা

‘জেবু’কে নিয়ে মানুষের কৌতূহল দেখে অবাক জাইমা, দীর্ঘ পোস্টে লিখলেন অনুভূতি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকায় শীত আরও বেড়েছে, পড়বে ঘন কুয়াশা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ২৩
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রাজধানী ঢাকায় শীত যেন আরও জেঁকে বসেছে। গতকাল রোববার সকাল ৬টায় তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে, আজ সোমবার একই সময়ে সেটি কমে হয়েছে ১৩ দশমিক ৮।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ ঢাকায় তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে। সেই সঙ্গে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে।

আজ সকাল ৭টায় ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ সকাল ৬টায় রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৫ শতাংশ।

পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। আকাশ আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। আজ সূর্যাস্ত ৫টা ২১ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৪০ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এনসিপির সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করলেন মওলানা ভাসানীর নাতি

আজকের রাশিফল: অন্যের নামে সঙ্গীকে ডেকে হুলুস্থুল বাধাবেন, হঠাৎ অর্থপ্রাপ্তির সম্ভাবনা

‘জেবু’কে নিয়ে মানুষের কৌতূহল দেখে অবাক জাইমা, দীর্ঘ পোস্টে লিখলেন অনুভূতি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শীতে বিপর্যস্ত জনজীবন, কুয়াশায় ব্যাহত চলাচল

  • দক্ষিণের পথে লঞ্চ চলাচল সাময়িক বন্ধ ঘোষণা।
  • কুয়াশায় ব্যাহত সড়ক ও বিমান যোগাযোগও।
  • বাগেরহাটে শীতের জেরে বৃদ্ধের মৃত্যু।
  • রাতের তাপমাত্রা আরেকটু কমতে পারে।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৪৯
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

আবহাওয়া দপ্তরের ভাষায় ‘শৈত্যপ্রবাহ’ না চললেও গতকাল রোববার টানা তৃতীয় দিনের মতো সারা দেশ তীব্র শীতে কাবু ছিল। বরং ঠান্ডার কামড়ের জোর আরও কিছুটা বেড়েছে। উত্তরবঙ্গসহ দেশের অনেক এলাকাতেই ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতের কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত। গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলায়।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী কয়েক দিনে রাতের তাপমাত্রা আরও কিছুটা কমতে পারে। চলতে পারে ঘন কুয়াশার ভোগান্তিও। তবে কয়েক দিন পরই নতুন বছরের শুরুতে ধীরে ধীরে তাপমাত্রা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

নিকলী আবহাওয়া কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক আক্তারুজ্জামান ফারুক জানিয়েছেন, গতকাল সেখানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ুর বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামা মানে রীতিমতো হাড়কাঁপানো শীত।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, উপমহাদেশীয় উচ্চ চাপবলয়ের বাড়তি অংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করায় শীতের প্রকোপ বেড়েছে। গতকাল আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, আজ সোমবারসহ আগামী চার দিন সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্য রাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত কুয়াশার চাদর অব্যাহত থাকতে পারে।

লঞ্চ চলাচল সাময়িক বন্ধ

ঘন কুয়াশার কারণে গতকাল রাতে চাঁদপুর ও দেশের দক্ষিণাঞ্চলের নৌপথে সব ধরনের যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। সংস্থাটির এক বিজ্ঞপ্তিতে যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানানো হয়।

কুয়াশার কারণে সড়ক ও নৌযোগাযোগের পাশাপাশি বিমান চলাচলও ব্যাহত হচ্ছে। ঘন কুয়াশার প্রভাবে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গতকালও ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত একাধিক আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট দেরিতে অবতরণ ও উড্ডয়ন করে। তবে কাল সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো ফ্লাইট অন্যত্র পাঠানো হয়নি।

বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালকের মুখপাত্র মো. মাসুদুল হাসান মাসুদ গতকাল দুপুরের দিকে বলেন, ‘ভোরে রানওয়ের দৃশ্যমানতা কম থাকায় ফ্লাইট অপারেশনে সাময়িক বিঘ্ন ঘটে। তবে সকাল গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতির উন্নতি হয়। ফ্লাইট অপারেশন ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে’।

বাগেরহাটে বৃদ্ধের মৃত্যু

বাগেরহাটের চিতলমারীতে শীতের তীব্রতায় অসুস্থ হয়ে বৈদ্যনাথ মণ্ডল (৭৫) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সন্ধ্যায় তিনি মারা যান। বৈদ্যনাথ চিতলমারী উপজেলার খিলিগাতী গ্রামের মুকুন্দলাল মণ্ডলের ছেলে।

এ ছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঠান্ডাজনিত সর্দি, কাশি ও হাঁপানিতে আক্রান্ত হয়ে গত চার দিনে মোট ৫৫০ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। শিশু ও বৃদ্ধরা এসব রোগে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন।

উত্তরে জীবন বিপর্যস্ত

তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। কুয়াশার জন্য মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে যানবাহন চলছে ধীরগতিতে। হিমালয়ের পাদদেশের কাছাকাছি হওয়ায় বরাবরই উত্তরের জেলাগুলোতে শীতের তীব্রতা বেশি থাকে। ঘন কুয়াশা ও হিমেল বাতাসে সে অঞ্চলের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে তিস্তার চরাঞ্চলের ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের মানুষজন চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

সৈয়দপুর বিমানবন্দরের আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ লোকমান হোসেন জানান, গত দুই দিনে এ অঞ্চলে সর্বনিম্ন ১৩ এবং সর্বোচ্চ ১৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। ঘন কুয়াশার কারণে শনিবার ও গতকাল দুপুর ১২টার আগে বিমানবন্দরে কোনো ফ্লাইট অবতরণ করতে পারেনি।

দেশের দক্ষিণাঞ্চল থেকে উত্তরবঙ্গের অন্যতম প্রবেশদ্বার সিরাজগঞ্জে গতকাল সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। জেলার তাড়াশ আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার জানায়, এটি চলতি মৌসুমে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।

তাড়াশ আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘রোববার সকাল ৬টা থেকে অনেকক্ষণ পর্যন্ত তাপমাত্রা ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে স্থির ছিল। এটি চলতি মৌসুমে এখানকার সর্বনিম্ন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এনসিপির সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করলেন মওলানা ভাসানীর নাতি

আজকের রাশিফল: অন্যের নামে সঙ্গীকে ডেকে হুলুস্থুল বাধাবেন, হঠাৎ অর্থপ্রাপ্তির সম্ভাবনা

‘জেবু’কে নিয়ে মানুষের কৌতূহল দেখে অবাক জাইমা, দীর্ঘ পোস্টে লিখলেন অনুভূতি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জেঁকে বসেছে শীত, বছরের শেষ দিন পর্যন্ত কমতে পারে তাপমাত্রা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৩৭
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

মধ্য পৌষে এসে সারা দেশে শীত যেন জেঁকে বসেছে। গতকালের তুলনায় আজ রোববার তাপমাত্রা সামান্য বেড়েছে। তবে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত তাপমাত্রা কমতে পারে। এর সঙ্গে পড়বে ঘন কুয়াশা।

আজ বেলা ১১টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ পূর্বাভাসে এসব কথা জানানো হয়েছে।

পূর্বাভাসের তথ্য অনুযায়ী, আজ সকাল ৬টায় সারা দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলের নিকলীতে ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় রাজধানী ঢাকায় ছিল ১৪ দশমিক ৩।

বিভাগীয় শহরগুলোর মধ্যে সকালে তাপমাত্রা ছিল রাজশাহী, রংপুর, বরিশালে ১৩; ময়মনসিংহে ১৩ দশমিক ৩, সিলেটে ১৪ দশমিক ৮, চট্টগ্রামে ১৬, খুলনায় ১৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আজ রোববার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ১২০ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। কোথাও কোথাও আবার দুপুর পর্যন্ত কুয়াশা থাকতে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা সাময়িকভাবে ব্যাহত হতে পারে।

সারা দেশে আজ রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ার কারণে দেশের অনেক জায়গায় শীতের অনুভূতি অব্যাহত থাকতে পারে।

এ ছাড়া আজ ঢাকায় পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৫ থেকে ১০ কিলোমিটার গতিতে বাতাস বয়ে যেতে পারে।

২৯ ডিসেম্বরও পরিস্থিতির পরিবর্তন তেমন হবে না উল্লেখ করে আবহাওয়া অধিদপ্তর আরও জানায়, ৩০ ডিসেম্বর মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। তবে নদী অববাহিকার কোথাও কোথাও ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। এদিন রাতে তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। পরদিন ৩১ ডিসেম্বর সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। তবে দিনের বেলা তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এনসিপির সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করলেন মওলানা ভাসানীর নাতি

আজকের রাশিফল: অন্যের নামে সঙ্গীকে ডেকে হুলুস্থুল বাধাবেন, হঠাৎ অর্থপ্রাপ্তির সম্ভাবনা

‘জেবু’কে নিয়ে মানুষের কৌতূহল দেখে অবাক জাইমা, দীর্ঘ পোস্টে লিখলেন অনুভূতি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত