Ajker Patrika

বিশ্বের প্রথম অক্টোপাসের খামার স্পেনে, বিজ্ঞানীদের উদ্বেগ

বিশ্বের প্রথম অক্টোপাসের খামার স্পেনে, বিজ্ঞানীদের উদ্বেগ

বিশ্বের প্রথম অক্টোপাসের খামার তৈরি করছে স্পেন। দেশটির সমুদ্র গবেষণা বিষয়ক সংস্থা ওশেনোগ্রাফিক ইনস্টিটিউটের অধীনে ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জে খামারটি তৈরি করবে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান নুয়েভা পেসকানোভা। সম্প্রতি অক্টোপাসের খামারের পরিকল্পনা প্রস্তাব বিষয়ক গোপনীয় নথি প্রকাশ পায়। আর এ নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন বিজ্ঞানী ও গবেষকেরা।

ওই গোপনীয় পরিকল্পনা প্রস্তাবের নথি বিবিসিকে দিয়েছে প্রাণী অধিকার সচেতনতা নিয়ে কাজ করা ইউরোগ্রুপ ফর অ্যানিমেলস। প্রস্তাবটি ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের জেনারেল ডিরেক্টরেট অব ফিশিং বরাবর পাঠিয়েছে নুয়েভা পেসকানোভা। যদিও এ বিষয়ে অনুরোধ করে কোনো সাড়া পায়নি বিবিসি।

নথিতে থাকা পরিকল্পনা প্রস্তাব অনুসারে অক্টোপাসের প্রতি অমানবিক আচরণের ইঙ্গিত মিলেছে। যদিও এই চাষ পরিকল্পনায় সম্পৃক্ত বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানটি অক্টোপাসের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, খামারটি বছরে ৩ হাজার টন অক্টোপাস উৎপাদন করবে। যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের মতো প্রিমিয়াম আন্তর্জাতিক বাজারে জোগান দেওয়া হবে এসব অক্টোপাস। তবে অক্টোপাসগুলোকে কী অবস্থায় রাখা হবে সে সম্পর্কে কোনো বিবরণ প্রকাশ করতে অস্বীকার করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

নুয়েভা পেসকানোভার দাবি, অক্টোপাস চাষ টেকসই, নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যকর হবে। এর ফলে মৎস্য শিকারে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে চাপ কমবে বলে মনে করে তারা।

অক্টোপাসের চাষ প্রক্রিয়া এবং হত্যার পদ্ধতিকে অমানবিক বলছেন বিজ্ঞানী ও গবেষকেরাবুদ্ধিমত্তার নিরিখে মানুষের পর উন্নত মস্তিষ্কের প্রাণীদের তালিকায় শীর্ষে অক্টোপাস। শুধু বুদ্ধিমত্তাই নয়, অক্টোপাসকে অত্যন্ত সংবেদনশীল প্রাণী বলেও চিহ্নিত করেছেন গবেষকেরা। শারীরিক যন্ত্রণা, আনন্দ, দুঃখ ও আবেগ অনুভব করতে পারে এই অমেরুদণ্ডী প্রাণী। খাদ্যের জন্য এমন একটি প্রাণীর বাণিজ্যিক উৎপাদনকে নৈতিকতার প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

অক্টোপাসের এই বাণিজ্যিক চাষ প্রক্রিয়া এবং হত্যার পদ্ধতিকে অমানবিক বলছেন বিজ্ঞানী ও গবেষকেরা। গোপনীয় নথি থেকে জানা যায়, একটি পানির কন্টেইনারে মাইনাস ৩ সেলসিয়াসের তাপমাত্রার মধ্যে রেখে হত্যা করা হবে অক্টোপাসগুলোকে। আর এই পদ্ধতিতে মৃত্যু ধীরে এবং যন্ত্রণাদায়ক হয়। সে ক্ষেত্রে জেলেরা যেভাবে মাথায় আঘাত করে হত্যা করে ওই পদ্ধতিকে কম যন্ত্রণার বলছেন অনেক।

এর আগে এভাবে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে কখনই অক্টোপাস চাষ করা হয়নি। যে পদ্ধতিতে চাষ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ করা হবে একে ‘নিষ্ঠুর’ বলে অভিহিত করেছেন বিজ্ঞানীরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতার যে ব্যাখ্যা দিলেন আখতার

রাতে শাহবাগে উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে যা বললেন ডিএমপি কমিশনার

জটিল ও সংকটময় মুহূর্ত পার করছেন খালেদা জিয়া: এ জেড এম জাহিদ

রাষ্ট্রপতির কাছে অব্যাহতিপত্র দিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান

জামায়াতে ইসলামী নির্ভরযোগ্য মিত্র না: সামান্তা শারমিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তাপমাত্রা কমবে কি না জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৫০
তাপমাত্রা খুব বেশি কমলেও আজ রোববার সকাল থেকে রাজধানী ঢাকার আকাশ কুয়াশাচ্ছন্ন। দেখা মেলেনি সূর্যের আলো। ছবি: আজকের পত্রিকা
তাপমাত্রা খুব বেশি কমলেও আজ রোববার সকাল থেকে রাজধানী ঢাকার আকাশ কুয়াশাচ্ছন্ন। দেখা মেলেনি সূর্যের আলো। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানী ঢাকায় আজ রোববার সকাল ৬টায় তাপমাত্রা ছিল ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে, যা গতকাল একই সময়ে ছিল ১৩ দশমিক ৫।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ ঢাকায় তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। সেই সঙ্গে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।

আজ সকাল ৭টায় ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ সকাল ৬টায় রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৩ শতাংশ।

পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। আকাশ আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৫ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। আজ সূর্যাস্ত ৫টা ২০ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৪০ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতার যে ব্যাখ্যা দিলেন আখতার

রাতে শাহবাগে উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে যা বললেন ডিএমপি কমিশনার

জটিল ও সংকটময় মুহূর্ত পার করছেন খালেদা জিয়া: এ জেড এম জাহিদ

রাষ্ট্রপতির কাছে অব্যাহতিপত্র দিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান

জামায়াতে ইসলামী নির্ভরযোগ্য মিত্র না: সামান্তা শারমিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তীব্র শীতে বিপর্যস্ত দেশ কষ্টে খেটে খাওয়া মানুষ

  • গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যশোরে
  • শীতের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ
  • গরম কাপড় ব্যবহার ও কুসুম গরম পানি পানের পরামর্শ চিকিৎসকদের
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৪০
কাজের অপেক্ষায় বসে আছেন কয়েকজন শ্রমজীবী। ছবি: আজকের পত্রিকা
কাজের অপেক্ষায় বসে আছেন কয়েকজন শ্রমজীবী। ছবি: আজকের পত্রিকা

পৌষের প্রথম সপ্তাহে শীতের কামড় তেমন না থাকলেও মাঝামাঝি সময়ে এসে সারা দেশে ঘন কুয়াশার সঙ্গে অনুভূত হচ্ছে তীব্র শীত। তীব্র শীতে সারা দেশের জনজীবন অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে। উত্তরাঞ্চল থেকে দক্ষিণ-পশ্চিম, মধ্যাঞ্চল থেকে রাজধানীসহ সবখানেই শীতের দাপট। বিশেষ করে দুর্ভোগে পড়েছেন শ্রমজীবীসহ নিম্ন আয়ের মানুষেরা।

গতকাল শনিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যশোরে। এ জেলার তাপমাত্রা নেমে আসে ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।

চলতি সপ্তাহের শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় বাড়তি সতর্কতা জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ আফরোজা সুলতানা। তিনি বলেন, ‘চলতি বছরের মধ্যে গত দুই দিন তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। আগামী কয়েক দিন আবহাওয়ার উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা কম। ফলে শীত ও কুয়াশার এই পরিস্থিতি আরও কিছুদিন অব্যাহত থাকতে পারে।’

এর আগে গত শুক্রবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, রাজশাহী, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, গোপালগঞ্জ ও নীলফামারীর ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, যা কোথাও কোথাও অব্যাহত থাকতে পারে।

তীব্র শীতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন দিনমজুর, রিকশাচালক, নির্মাণশ্রমিক ও খেটে খাওয়া মানুষ, যাদের বেশির ভাগকেই খোলা আকাশের নিচে কাজ করতে হয়। যশোর শহরের বিভিন্ন শ্রমবাজারে প্রতিদিন যেখানে

৩০০-৪০০ মানুষ কাজের আশায় জড়ো হন, কাজকর্ম কম থাকায় সেখানে এখন সেই সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে। অনেকেই সকাল থেকে অপেক্ষা করে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরছেন।

রিকশাচালক, নির্মাণশ্রমিক ও দিনমজুররা জানান, বেশি শীতের কারণে লোকজন ঘর থেকে কম বের হচ্ছে। নির্মাণসহ বিভিন্ন কাজ তেমন হাতে নেওয়া হচ্ছে না। এতে তাঁদের কাজ কমে গেছে। কিন্তু আয় কমলেও সংসারের ব্যয় তো কমছে না। এ চিত্র বগুড়া, গাইবান্ধা, লালমনিরহাটসহ দেশের উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায়।

বগুড়ায় গতকাল শনিবার মৌসুমের সর্বনিম্ন ১১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। জেলার বিভিন্ন এলাকায় সকাল থেকেই ঘন কুয়াশা আর হিমশীতল বাতাসে লোকজনের স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হয়।

বগুড়া আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘বগুড়ায় কয়েক দিন ধরেই শীতের প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। শনিবার সকাল থেকেই জেলাজুড়ে ব্যাপক কুয়াশা এবং হিমেল বাতাস বয়ে গেছে। জেলায় সর্বনিম্ন ১১ দশমিক ৬ ডিগ্রি তাপমাত্রার রেকর্ড করা হয়। এটিই এখন পর্যন্ত এই মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। আগামী কয়েক দিন শীতের এমন তীব্রতা অব্যাহত থাকতে পারে।’

উত্তরের শেষ প্রান্ত, হিমালয়ের ঘেঁষা জেলা লালমনিরহাটে শীতের তীব্রতা আরও বেশি। চরাঞ্চলে ঘন কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ায় রুটিরুজি কমে গরিব মানুষ কষ্টে আছেন। সন্ধ্যার আগেই কুয়াশার চাদরে ঢেকে যাচ্ছে পুরো এলাকা।

লালমনিরহাটের সীমান্তে কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা সুবল চন্দ্র বলেন, রাজারহাট ও আশপাশের এলাকায় তাপমাত্রা ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী চার বা পাঁচ দিন আবহাওয়ার উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।

লালমনিরহাটের প্রধান সড়কে ভারী কুয়াশায় যানবাহন চলাচল খুব কমে গেছে। ট্রাকচালক জামাল উদ্দিন বলেন, দিনে হেড লাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চালালেও সন্ধ্যার পরে কিছুই দেখা যায় না। ঘণ্টায় ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার গতিতে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বৃদ্ধি পাওয়া ছাড়াও জ্বালানি খরচ আর সময় অনেক বেশি লাগছে।

তিস্তার চরাঞ্চলের গোবর্ধন গ্রামের আবদুর রশিদ বলেন, ‘চরাঞ্চলে কুয়াশা আর হিমেল হাওয়া অনেক বেশি। রাতে বিছানাও বরফের মতো ঠান্ডা হয়ে যায়। এক-দুইটা পাতলা কম্বলে শরীর গরম হচ্ছে না। ফলে রাতেও ঘুমাতে পারছি না।’

মধ্য উত্তরের জেলা গাইবান্ধার আশপাশের এলাকাগুলোতে শীত ও কুয়াশার কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। শীত থেকে বাঁচতে আগুন পোহাতে দেখা যাচ্ছে অনেককে। শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরোনো কাপড়ের দোকানগুলোতে নিম্ন আয়ের মানুষের ভিড় বেড়েছে।

কুয়াশার প্রভাব আকাশ, নৌ ও সড়কপথে

ঘন কুয়াশার প্রভাব পড়েছে নৌ এবং আকাশপথেও। রাজধানী ঢাকায়ও কুয়াশার তীব্রতা বেড়েছে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কুয়াশার কারণে গতকাল সকালে আটটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট অবতরণ করতে না পারায় তাদের বিকল্প বিমানবন্দরে পাঠানো হয়েছে। দৃশ্যমানতা কমে যাওয়ায় নিরাপত্তার স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানিয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।

রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌ রুটে ঘন কুয়াশার কারণে গত শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে বাড়তি সতর্কতার জন্য সাড়ে ১৪ ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন ঘরমুখী হাজারো মানুষ। পরে গতকাল শনিবার সকালে ফের চালু করা হয় ফেরি। ঘন কুয়াশায় জামালপুরে যমুনা নদীতে প্রায় ১৫ ঘণ্টা আটকে থাকার পর বর-কনেসহ ৪৭ যাত্রীকে ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার করে।

বেড়েছে স্বাস্থ্যঝুঁকি

শীতের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ। জ্বর, সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা। চিকিৎসকেরা যথাযথ গরম কাপড় ব্যবহার ও কুসুম গরম পানি পান করা এবং প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন।

বিভিন্ন জেলার প্রশাসন শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে বলে জানালেও জানা গেছে, অনেক এলাকায় তা প্রয়োজনের তুলনায় কম। বিশেষ করে শিশুদের গরম কাপড় ও কম্বলের অভাব রয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতার যে ব্যাখ্যা দিলেন আখতার

রাতে শাহবাগে উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে যা বললেন ডিএমপি কমিশনার

জটিল ও সংকটময় মুহূর্ত পার করছেন খালেদা জিয়া: এ জেড এম জাহিদ

রাষ্ট্রপতির কাছে অব্যাহতিপত্র দিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান

জামায়াতে ইসলামী নির্ভরযোগ্য মিত্র না: সামান্তা শারমিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শীতে কাঁপছে সারা দেশ ভোগাচ্ছে ঘন কুয়াশা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ১৮
কুয়াশা ও কনকনে শীতে কাবু উত্তরাঞ্চল। গতকাল গাইবান্ধায় খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে দেখা যায় অনেককে। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুয়াশা ও কনকনে শীতে কাবু উত্তরাঞ্চল। গতকাল গাইবান্ধায় খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে দেখা যায় অনেককে। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনের পাশের ব্যস্ত সড়কের ধারে জবুথবু হয়ে বসে আছেন নাছিমা। কোলে তাঁর ছোট্ট নবজাতক। পাতলা একটি কম্বল আর পুরোনো কাঁথা জোড়া দিয়ে কোনো-রকমে নিজের ও নবজাতকের শরীর ঢেকে রেখেছেন। কনকনে বাতাসে নবজাতকের ঠোঁট নীলচে হয়ে এসেছে।

নাছিমা বলেন, ‘শীতটা খুব কষ্ট দিতাছে। কাল থেইকা রাতে ঠিকমতো ঘুমাইতে পারি না। বাচ্চাডারে নিয়া বেশি ভয় লাগতাছে। ঠান্ডা লাগলে কী করুম, সেই চিন্তাই মাথায় ঘোরে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল শুক্রবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যশোরে, ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়াবিদ দপ্তর জানাচ্ছে, আগামী কয়েক দিন সারা দেশে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে এবং শীতের তীব্রতা বাড়তে পারে।

হঠাৎ শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন দিনমজুর, শ্রমজীবী ও খেটে খাওয়া মানুষ। কাজের সুযোগ কমে যাওয়ার পাশাপাশি বেড়েছে অসুস্থতার ঝুঁকি। অনেকে বলছেন, জ্বর-কাশি, শ্বাসকষ্টে ভুগছেন তাঁরা।

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে পরবর্তী ১২০ ঘণ্টার (৫ দিন) পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, আগামী কয়েক দিন সারা দেশে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। বাড়তে পারে শীতের তীব্রতা; পাশাপাশি থাকবে কুয়াশার প্রকোপ।

ফেরি চলাচল বন্ধ

রাজবাড়ী প্রতিনিধি জানান, ঘন কুয়াশার কারণে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন বলেন, ‘সন্ধ্যার পর থেকে কুয়াশা বাড়তে থাকে। সোয়া ৭টার সময় নদী পথ অস্পষ্ট হয়ে যায়। এ কারণে নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে এই রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। কুয়াশা কেটে গেলে ফেরি চলাচল শুরু হবে।’

জনজীবন বিপর্যস্ত

পঞ্চগড় প্রতিনিধি জানান, উত্তরাঞ্চলের জেলা পঞ্চগড়ে ঘন কুয়াশা আর তীব্র শীতে জনজীবন প্রায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ভোর থেকে ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকে পঞ্চগড়ের সড়ক ও জনপথ। কুয়াশার কারণে দৃশ্যমানতা কমে যাওয়ায় স্বাভাবিক যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন বাড়ছে রোগীর সংখ্যা।

গতকাল সকাল ৬টায় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১০০ শতাংশ। ঘন কুয়াশার কারণে ভোর থেকে যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে।

গাইবান্ধা প্রতিনিধি জানান, উত্তরের জেলা গাইবান্ধা ঘন কুয়াশা ও কনকনে শীতের কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের শিশুচিকিৎসক সোহেল বলেন, ‘শীতের মধ্যে বাড়ির শিশু ও বৃদ্ধদের বাড়তি যত্ন নিতে হবে। ঠান্ডা ও বাসি খাবার পরিহার করতে হবে।’

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি জানান, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তঘেঁষা জেলা চুয়াডাঙ্গায় জেঁকে বসেছে শীত। চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের তথ্যমতে, গতকাল সকাল ৯টায় জেলায় চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। টানা কয়েক দিন ধরে এই জেলায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে; যা মৃদু শৈত্যপ্রবাহে রূপ নিয়েছে।

জেলার বড় বাজারের মুদিদোকানি সুমন আলী বলেন, ‘সকাল সকাল দোকান খুলে বসে থাকি, কিন্তু কাস্টমারের দেখা নেই। মানুষ খুব প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না। ঠান্ডায় দোকানের ভেতর বসে থাকাই এখন কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন জানিয়েছেন, শীতার্ত মানুষের সহায়তায় জেলা প্রশাসন ইতিমধ্যে কম্বল ও শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু করেছে।

যশোর প্রতিনিধি জানান, জেলায় চলতি মৌসুমের প্রথম মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলছে। যশোর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গতকাল যশোরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস; যা এদিনের দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও কয়েক দিন ধরে কুয়াশা ও উত্তরের বাতাসে বাড়িয়ে দিচ্ছে শীতের অনুভূতি।

যশোর শহরের রায়পাড়া এলাকার রিকশাচালক জোহর আলী বলেন, ‘শীতে রিকশা চালাতে গিয়ে হাত-পা জমে যাচ্ছে। ব্রেকও ঠিকমতো ধরা যাচ্ছে না। বাসায় মনে হচ্ছে, গায়ে সুই ফোটাচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতার যে ব্যাখ্যা দিলেন আখতার

রাতে শাহবাগে উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে যা বললেন ডিএমপি কমিশনার

জটিল ও সংকটময় মুহূর্ত পার করছেন খালেদা জিয়া: এ জেড এম জাহিদ

রাষ্ট্রপতির কাছে অব্যাহতিপত্র দিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান

জামায়াতে ইসলামী নির্ভরযোগ্য মিত্র না: সামান্তা শারমিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শীতের প্রকোপ বাড়ছে: ৭ জেলায় ঘন কুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহ, থাকবে কত দিন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ১৪
চুয়াডাঙ্গায় জেঁকে বসেছে শীত। ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে জনপদ। ছবি: আজকের পত্রিকা
চুয়াডাঙ্গায় জেঁকে বসেছে শীত। ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে জনপদ। ছবি: আজকের পত্রিকা

দেশজুড়ে শীতের দাপট বাড়তে শুরু করেছে। দেশের সাতটি জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং ঘন কুয়াশার কারণে সড়ক, নৌ ও আকাশপথে যোগাযোগব্যবস্থা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আজ শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

শৈত্যপ্রবাহের কবলে সাত জেলা আবহাওয়া অফিস জানায়, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, গোপালগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, সিরাজগঞ্জ এবং নীলফামারী জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতি দেশের কোথাও কোথাও আরও কয়েক দিন অব্যাহত থাকতে পারে। কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ার কারণে দেশের অনেক জায়গায় দিনের বেলায়ও হাড়কাঁপানো ঠান্ডার অনুভূতি বজায় থাকবে।

ঘন কুয়াশার সতর্কতা পূর্বাভাস অনুযায়ী, মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। কোনো কোনো এলাকায় এই কুয়াশা দুপুর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগ সাময়িকভাবে ব্যাহত হতে পারে বলে সতর্ক করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

তাপমাত্রা ও বৃষ্টির সম্ভাবনায় আগামী কয়েক দিন সারা দেশের আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা থাকতে পারে, তবে আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকবে। সারা দেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। তবে ২৯ ডিসেম্বর থেকে তাপমাত্রা কিছুটা কমার সম্ভাবনা রয়েছে।

বিভাগীয় শহরগুলোর তাপমাত্রা গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যশোরে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বিভাগীয় শহরগুলোর মধ্যে ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি, চট্টগ্রামে ১৫ ডিগ্রি, রাজশাহীতে ১০ দশমিক ৪, রংপুরে ১১ দশমিক ২, খুলনায় ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি, বরিশালে ১২ দশমিক ৪ এবং সিলেটে ১৪ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ শাহানাজ সুলতানা জানান, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে, যার বর্ধিতাংশ উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

আগামী পাঁচ দিন আবহাওয়ার উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতার যে ব্যাখ্যা দিলেন আখতার

রাতে শাহবাগে উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে যা বললেন ডিএমপি কমিশনার

জটিল ও সংকটময় মুহূর্ত পার করছেন খালেদা জিয়া: এ জেড এম জাহিদ

রাষ্ট্রপতির কাছে অব্যাহতিপত্র দিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান

জামায়াতে ইসলামী নির্ভরযোগ্য মিত্র না: সামান্তা শারমিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত