মাহিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার

মৌলভীবাজার জেলা সদর, শ্রীমঙ্গল উপজেলা ও হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার বিস্তৃত অঞ্চল নিয়ে হাইল হাওর। আর এই হাওরের একটা বিলের নাম বাইক্কা বিল। বাইক্কা বিলের নাম শুনলেই হাজারো পাখির মেলা ভেসে ওঠে এই অঞ্চলের মানুষের চোখে। একসময় শীত এলেই ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির দেখা মিলত বাইক্কা বিলে। শত প্রজাতির হাজারো অতিথি পাখির কিচিরমিচিরে মুখরিত থাকত বিল এলাকা। বিভিন্ন প্রজাতির দেশি পাখির নিরাপদ আবাসস্থল ছিল এই বিল।
কয়েক বছর ধরে আর এই রূপ দেখা যায় না। শীতেও অতিথি পাখির আগমন কমে গিয়েছে। দেশি পাখির আনাগোনাও তেমন দেখা যায় না। পাখিদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে এই আবাসস্থল। কয়েক বছর ধরে অতিথি পাখির সংখ্যা কমে আসার কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আবাসস্থল কমে যাওয়া, জলবায়ু পরিবর্তন এবং জলজ উদ্ভিদ কমে যাওয়া। পাখিদের বসবাসের জন্য বাইক্কা বিলের পরিবেশগত উপযোগিতা কমে গিয়েছে।
অভয়াশ্রম বাইক্কা বিলে যেসব পাখি আসত
২০০৩ সালের ১ জুলাই বিলের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ১০০ হেক্টর জলাভূমিকে ‘বাইক্কা বিল অভয়াশ্রম’ ঘোষণা করে ভূমি মন্ত্রণালয়। মাছ ধরা ও জলজ উদ্ভিদ আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়। এই বিলে বালিহাঁস, উত্তরে লেঞ্জা হাঁস, গিরিয়া হাঁস, উত্তরে খন্তিহাঁস, মরচে রং ভূতিহাঁস, মেটে মাথা টিটি, কালালেজ জৌরালি, খয়রা কাস্তে চরা, তিলা লালসা, গেওয়ালা বাটান, পিয়াং হাঁস, পাতি তিলা হাঁস, নীলমাথা হাঁস, বিল বাটান, পাতিসবুজলা, বন বাটান, পাতিচ্যাগা, ছোট ডুবুরি, বড় পানকৌড়ি, ছোট পানকৌড়ি, গয়ার, বাংলা শকুন, এশীয় শামুকখোল, পানমুরগি, পাতিকুট, নিউপিপি, দলপিপি, কালাপাখ ঠেঙ্গি, উদয়ী বাবু বাটান, ছোট নথ জিরিয়া, রাজহাঁস, ওটা, ধুপনি বক, ইগল, ভুবন চিল, হলদে বক, দেশি কানিবক, গোবক, ছোট বক, মাঝেলা বগা, লালচে বক, বেগুনি কালেম, বড় বগা, দেশি মেটে হাঁস, সরালি, বালিহাঁস, পানমুরগিসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখির দেখা পাওয়া যেত। এ ছাড়া বিলের পাড়ে গাছগাছালিতে শালিক, ঘুঘু, দোয়েল, চড়ুই, বুলবুলি, দাগি ঘাস পাখি, টুনটুনিসহ বিভিন্ন ধরনের দেশি পাখির বসবাস ছিল।
বাইক্কা বিলে প্রতিবছর একটি বেসরকারি একটা সংস্থা পাখি শুমারি করে। তারা বলছে, গত কয়েক বছর ধরে পাখির সংখ্যা কমেছে। তাদের শুমারিতে ২০২৪ সালে ৩৮ প্রজাতির ৭ হাজার ৭৮০ পাখির সংখ্যা পাওয়া গেছে। ২০২৩ সালে ৩৩ প্রজাতির ৪ হাজার ৬১৫ পাখি ছিল। এর আগে শুমারিতে ১২ হাজার পর্যন্ত পাখির হিসাব পাওয়া গিয়েছিল।
সরেজমিন খোঁজ নিয়ে স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, যাঁরা বাইক্কা বিল দেখাশোনা করেন, তাঁরাই পাখি ও মাছ শিকারে জড়িত। বন্যার সময় মাছ শিকার করতে সব কচুরিপানা সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কচুরিপানা, শাপলা-শালুক না থাকায় খাবারের অভাবে পাখি কমে যাচ্ছে। এ ছাড়া নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল দিয়ে পাখি ও মাছ শিকার, হাওর বাঁধ, সেচ মেশিন ব্যবহারের কারণে পাখি কমে যাচ্ছে।

পাখি কমে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বাইক্কা বিলের দায়িত্বে থাকা বড়গাঙ্গিনা সম্পদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মিন্নত আলী বলেন, এক দশক আগে পাখির সংখ্যা অনেক বেশি ছিল। তবে কয়েক বছর ধরে পাখির সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমে আসছে।
কেন আগের মতো পাখি আসছে না বাইক্কা বিলে
পাখি গবেষকেরা বলছেন, মাছ শিকারের জন্য বিল থেকে জলজ উদ্ভিদ সরিয়ে ফেলা হয়েছে। কচুরিপানা, শাপলা-শালুক না থাকায় পাখিরা কোথাও বসে খাবার খেতে পারে না। পাখি না আসার মূল কারণ এটি। এ ছাড়া ফাঁদ পেতে পাখি শিকার নিয়ন্ত্রণের ব্যর্থতা ও জলজ উদ্ভিদের অভাব পাখিদের বিলে আসা কমিয়ে দিচ্ছে।

পানির পাশাপাশি হাওর এলাকায় গাছগাছালি কমে যাওয়া, অপরিকল্পিতভাবে হাওর ভরাট, সেচ ও বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে মাছ ধরা, নির্বিচারে পাখি শিকার, হাওরের ভেতর দিয়ে যানবাহন চলাচল, শীত কমে যাওয়া, আবাসস্থল ধ্বংসের পেছনে আবহাওয়া বা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবসহ নানা কারণে পাখির সংখ্যা কমে যাচ্ছে। এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা এখন থেকে সচেতন না হলে বাইক্কা বিল থেকে পাখিরা একেবারে চলে যাবে বলে সতর্ক করছেন পরিবেশবিদেরা।

পরিবেশকর্মী নূরুল মোহাইমিন মিল্টন বলেন, বাইক্কা বিলে কয়েক বছর ধরে শীতে অতিথি পাখি কম আসার মূল কারণ জলজ ও স্থলজ পরিবেশের অবক্ষয়। আবহাওয়ার পরিবর্তন, পাখির নিরাপদ আবাসস্থল না থাকা, খাবার সংগ্রহে ঝুঁকি, পুঁজিবাদী ভোগ বিলাসিতার কারণে হাওর-বিল ভরাট, বেদখল আর বাণিজ্যিক কার্যক্রম। এসব কারণ থেকে বাইক্কা বিল রক্ষা করলে পাখির সংখ্যা বাড়ার আশা করা যায়।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ টাইগার অ্যাকশন প্ল্যানের প্রণেতা অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ মনিরুল হাসান খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, বাইক্কা বিলকে সংরক্ষিত বিল ঘোষণা করা হয়েছে। এই বিল পাখি ও মা মাছের জন্য সংরক্ষণ করা হয়েছে। এখন যদি সেই আগের মতো পাখি বা মৎস্য নিধন করা হয় অথবা জলজ উদ্ভিদ ফেলে দেওয়া হয় তাহলে পাখি বা মাছ কারও জন্য ভালো হবে না। পাখিদের ফিরিয়ে আনতে বিল সংরক্ষণ করতে হবে। পরিবেশের পাশাপাশি পাখিদের জন্য জলজ উদ্ভিদ বাঁচিয়ে রাখতে হবে।

ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্সের প্রধান নির্বাহী ও বন্য প্রাণী গবেষক শাহরিয়ার সিজার রহমান বলেন, বাইক্কা বিলের পরিবেশ, জলজ উদ্ভিদ কমে যাওয়া, অবাধে পাখি শিকার, অতিরিক্ত পর্যটক, বৃক্ষনিধন, যে জায়গায় পাখিরা থাকে সেখান থেকে মাছ শিকার এসব কারণে পাখির সংখ্যা কমে যাচ্ছে। পাখি অবাধ বিচরণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। নয়তো একটা সময় এখানে আর পাখি পাওয়া যাবে না।
পাখি কমে যাওয়ার বিষয়ে মৌলভীবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. মো. আরিফ হোসেন বলেন, ‘সংরক্ষিত বাইক্কা বিলে নিরাপদে পাখিরা আশ্রয় নেওয়ার জন্য আমরা সব সময় নিরাপত্তার জন্য মানুষ নিয়োগ দিয়েছি। এ ছাড়া কেউ যদি অবৈধভাবে পাখি বা মাছ শিকার করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে আমরা অভিযান পরিচালনা করি। পাখি কমার পেছনে মূল কারণ হচ্ছে আবহাওয়া। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় পাখিরা কম আসছে।’

বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, সিলেটের (সদর দপ্তর মৌলভীবাজার) বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘বাইক্কা বিলে পাখির সংখ্যা কমার পেছনে নানা কারণ রয়েছে। হাওরের গভীরতা আগের চেয়ে অনেক কমেছে, যেখানে আগে আট থেকে নয় মাস হাওরে পানি থাকত, এখন সেখানে তিন থেকে চার মাস পানি থাকে। এ ছাড়া শীতের তীব্রতা আগের মতো নেই। শীত কম থাকায় হয়তো অতিথি পাখিরা আসা কমিয়ে দিয়েছে। আগের চেয়ে মানুষজন আসা অনেক বেড়ে গিয়েছে। এসব কারণে হয়তো পাখিরা আসা কমিয়ে দিচ্ছে।’

মৌলভীবাজার জেলা সদর, শ্রীমঙ্গল উপজেলা ও হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার বিস্তৃত অঞ্চল নিয়ে হাইল হাওর। আর এই হাওরের একটা বিলের নাম বাইক্কা বিল। বাইক্কা বিলের নাম শুনলেই হাজারো পাখির মেলা ভেসে ওঠে এই অঞ্চলের মানুষের চোখে। একসময় শীত এলেই ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির দেখা মিলত বাইক্কা বিলে। শত প্রজাতির হাজারো অতিথি পাখির কিচিরমিচিরে মুখরিত থাকত বিল এলাকা। বিভিন্ন প্রজাতির দেশি পাখির নিরাপদ আবাসস্থল ছিল এই বিল।
কয়েক বছর ধরে আর এই রূপ দেখা যায় না। শীতেও অতিথি পাখির আগমন কমে গিয়েছে। দেশি পাখির আনাগোনাও তেমন দেখা যায় না। পাখিদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে এই আবাসস্থল। কয়েক বছর ধরে অতিথি পাখির সংখ্যা কমে আসার কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আবাসস্থল কমে যাওয়া, জলবায়ু পরিবর্তন এবং জলজ উদ্ভিদ কমে যাওয়া। পাখিদের বসবাসের জন্য বাইক্কা বিলের পরিবেশগত উপযোগিতা কমে গিয়েছে।
অভয়াশ্রম বাইক্কা বিলে যেসব পাখি আসত
২০০৩ সালের ১ জুলাই বিলের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ১০০ হেক্টর জলাভূমিকে ‘বাইক্কা বিল অভয়াশ্রম’ ঘোষণা করে ভূমি মন্ত্রণালয়। মাছ ধরা ও জলজ উদ্ভিদ আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়। এই বিলে বালিহাঁস, উত্তরে লেঞ্জা হাঁস, গিরিয়া হাঁস, উত্তরে খন্তিহাঁস, মরচে রং ভূতিহাঁস, মেটে মাথা টিটি, কালালেজ জৌরালি, খয়রা কাস্তে চরা, তিলা লালসা, গেওয়ালা বাটান, পিয়াং হাঁস, পাতি তিলা হাঁস, নীলমাথা হাঁস, বিল বাটান, পাতিসবুজলা, বন বাটান, পাতিচ্যাগা, ছোট ডুবুরি, বড় পানকৌড়ি, ছোট পানকৌড়ি, গয়ার, বাংলা শকুন, এশীয় শামুকখোল, পানমুরগি, পাতিকুট, নিউপিপি, দলপিপি, কালাপাখ ঠেঙ্গি, উদয়ী বাবু বাটান, ছোট নথ জিরিয়া, রাজহাঁস, ওটা, ধুপনি বক, ইগল, ভুবন চিল, হলদে বক, দেশি কানিবক, গোবক, ছোট বক, মাঝেলা বগা, লালচে বক, বেগুনি কালেম, বড় বগা, দেশি মেটে হাঁস, সরালি, বালিহাঁস, পানমুরগিসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখির দেখা পাওয়া যেত। এ ছাড়া বিলের পাড়ে গাছগাছালিতে শালিক, ঘুঘু, দোয়েল, চড়ুই, বুলবুলি, দাগি ঘাস পাখি, টুনটুনিসহ বিভিন্ন ধরনের দেশি পাখির বসবাস ছিল।
বাইক্কা বিলে প্রতিবছর একটি বেসরকারি একটা সংস্থা পাখি শুমারি করে। তারা বলছে, গত কয়েক বছর ধরে পাখির সংখ্যা কমেছে। তাদের শুমারিতে ২০২৪ সালে ৩৮ প্রজাতির ৭ হাজার ৭৮০ পাখির সংখ্যা পাওয়া গেছে। ২০২৩ সালে ৩৩ প্রজাতির ৪ হাজার ৬১৫ পাখি ছিল। এর আগে শুমারিতে ১২ হাজার পর্যন্ত পাখির হিসাব পাওয়া গিয়েছিল।
সরেজমিন খোঁজ নিয়ে স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, যাঁরা বাইক্কা বিল দেখাশোনা করেন, তাঁরাই পাখি ও মাছ শিকারে জড়িত। বন্যার সময় মাছ শিকার করতে সব কচুরিপানা সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কচুরিপানা, শাপলা-শালুক না থাকায় খাবারের অভাবে পাখি কমে যাচ্ছে। এ ছাড়া নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল দিয়ে পাখি ও মাছ শিকার, হাওর বাঁধ, সেচ মেশিন ব্যবহারের কারণে পাখি কমে যাচ্ছে।

পাখি কমে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বাইক্কা বিলের দায়িত্বে থাকা বড়গাঙ্গিনা সম্পদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মিন্নত আলী বলেন, এক দশক আগে পাখির সংখ্যা অনেক বেশি ছিল। তবে কয়েক বছর ধরে পাখির সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমে আসছে।
কেন আগের মতো পাখি আসছে না বাইক্কা বিলে
পাখি গবেষকেরা বলছেন, মাছ শিকারের জন্য বিল থেকে জলজ উদ্ভিদ সরিয়ে ফেলা হয়েছে। কচুরিপানা, শাপলা-শালুক না থাকায় পাখিরা কোথাও বসে খাবার খেতে পারে না। পাখি না আসার মূল কারণ এটি। এ ছাড়া ফাঁদ পেতে পাখি শিকার নিয়ন্ত্রণের ব্যর্থতা ও জলজ উদ্ভিদের অভাব পাখিদের বিলে আসা কমিয়ে দিচ্ছে।

পানির পাশাপাশি হাওর এলাকায় গাছগাছালি কমে যাওয়া, অপরিকল্পিতভাবে হাওর ভরাট, সেচ ও বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে মাছ ধরা, নির্বিচারে পাখি শিকার, হাওরের ভেতর দিয়ে যানবাহন চলাচল, শীত কমে যাওয়া, আবাসস্থল ধ্বংসের পেছনে আবহাওয়া বা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবসহ নানা কারণে পাখির সংখ্যা কমে যাচ্ছে। এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা এখন থেকে সচেতন না হলে বাইক্কা বিল থেকে পাখিরা একেবারে চলে যাবে বলে সতর্ক করছেন পরিবেশবিদেরা।

পরিবেশকর্মী নূরুল মোহাইমিন মিল্টন বলেন, বাইক্কা বিলে কয়েক বছর ধরে শীতে অতিথি পাখি কম আসার মূল কারণ জলজ ও স্থলজ পরিবেশের অবক্ষয়। আবহাওয়ার পরিবর্তন, পাখির নিরাপদ আবাসস্থল না থাকা, খাবার সংগ্রহে ঝুঁকি, পুঁজিবাদী ভোগ বিলাসিতার কারণে হাওর-বিল ভরাট, বেদখল আর বাণিজ্যিক কার্যক্রম। এসব কারণ থেকে বাইক্কা বিল রক্ষা করলে পাখির সংখ্যা বাড়ার আশা করা যায়।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ টাইগার অ্যাকশন প্ল্যানের প্রণেতা অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ মনিরুল হাসান খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, বাইক্কা বিলকে সংরক্ষিত বিল ঘোষণা করা হয়েছে। এই বিল পাখি ও মা মাছের জন্য সংরক্ষণ করা হয়েছে। এখন যদি সেই আগের মতো পাখি বা মৎস্য নিধন করা হয় অথবা জলজ উদ্ভিদ ফেলে দেওয়া হয় তাহলে পাখি বা মাছ কারও জন্য ভালো হবে না। পাখিদের ফিরিয়ে আনতে বিল সংরক্ষণ করতে হবে। পরিবেশের পাশাপাশি পাখিদের জন্য জলজ উদ্ভিদ বাঁচিয়ে রাখতে হবে।

ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্সের প্রধান নির্বাহী ও বন্য প্রাণী গবেষক শাহরিয়ার সিজার রহমান বলেন, বাইক্কা বিলের পরিবেশ, জলজ উদ্ভিদ কমে যাওয়া, অবাধে পাখি শিকার, অতিরিক্ত পর্যটক, বৃক্ষনিধন, যে জায়গায় পাখিরা থাকে সেখান থেকে মাছ শিকার এসব কারণে পাখির সংখ্যা কমে যাচ্ছে। পাখি অবাধ বিচরণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। নয়তো একটা সময় এখানে আর পাখি পাওয়া যাবে না।
পাখি কমে যাওয়ার বিষয়ে মৌলভীবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. মো. আরিফ হোসেন বলেন, ‘সংরক্ষিত বাইক্কা বিলে নিরাপদে পাখিরা আশ্রয় নেওয়ার জন্য আমরা সব সময় নিরাপত্তার জন্য মানুষ নিয়োগ দিয়েছি। এ ছাড়া কেউ যদি অবৈধভাবে পাখি বা মাছ শিকার করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে আমরা অভিযান পরিচালনা করি। পাখি কমার পেছনে মূল কারণ হচ্ছে আবহাওয়া। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় পাখিরা কম আসছে।’

বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, সিলেটের (সদর দপ্তর মৌলভীবাজার) বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘বাইক্কা বিলে পাখির সংখ্যা কমার পেছনে নানা কারণ রয়েছে। হাওরের গভীরতা আগের চেয়ে অনেক কমেছে, যেখানে আগে আট থেকে নয় মাস হাওরে পানি থাকত, এখন সেখানে তিন থেকে চার মাস পানি থাকে। এ ছাড়া শীতের তীব্রতা আগের মতো নেই। শীত কম থাকায় হয়তো অতিথি পাখিরা আসা কমিয়ে দিয়েছে। আগের চেয়ে মানুষজন আসা অনেক বেড়ে গিয়েছে। এসব কারণে হয়তো পাখিরা আসা কমিয়ে দিচ্ছে।’
মাহিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার

মৌলভীবাজার জেলা সদর, শ্রীমঙ্গল উপজেলা ও হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার বিস্তৃত অঞ্চল নিয়ে হাইল হাওর। আর এই হাওরের একটা বিলের নাম বাইক্কা বিল। বাইক্কা বিলের নাম শুনলেই হাজারো পাখির মেলা ভেসে ওঠে এই অঞ্চলের মানুষের চোখে। একসময় শীত এলেই ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির দেখা মিলত বাইক্কা বিলে। শত প্রজাতির হাজারো অতিথি পাখির কিচিরমিচিরে মুখরিত থাকত বিল এলাকা। বিভিন্ন প্রজাতির দেশি পাখির নিরাপদ আবাসস্থল ছিল এই বিল।
কয়েক বছর ধরে আর এই রূপ দেখা যায় না। শীতেও অতিথি পাখির আগমন কমে গিয়েছে। দেশি পাখির আনাগোনাও তেমন দেখা যায় না। পাখিদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে এই আবাসস্থল। কয়েক বছর ধরে অতিথি পাখির সংখ্যা কমে আসার কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আবাসস্থল কমে যাওয়া, জলবায়ু পরিবর্তন এবং জলজ উদ্ভিদ কমে যাওয়া। পাখিদের বসবাসের জন্য বাইক্কা বিলের পরিবেশগত উপযোগিতা কমে গিয়েছে।
অভয়াশ্রম বাইক্কা বিলে যেসব পাখি আসত
২০০৩ সালের ১ জুলাই বিলের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ১০০ হেক্টর জলাভূমিকে ‘বাইক্কা বিল অভয়াশ্রম’ ঘোষণা করে ভূমি মন্ত্রণালয়। মাছ ধরা ও জলজ উদ্ভিদ আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়। এই বিলে বালিহাঁস, উত্তরে লেঞ্জা হাঁস, গিরিয়া হাঁস, উত্তরে খন্তিহাঁস, মরচে রং ভূতিহাঁস, মেটে মাথা টিটি, কালালেজ জৌরালি, খয়রা কাস্তে চরা, তিলা লালসা, গেওয়ালা বাটান, পিয়াং হাঁস, পাতি তিলা হাঁস, নীলমাথা হাঁস, বিল বাটান, পাতিসবুজলা, বন বাটান, পাতিচ্যাগা, ছোট ডুবুরি, বড় পানকৌড়ি, ছোট পানকৌড়ি, গয়ার, বাংলা শকুন, এশীয় শামুকখোল, পানমুরগি, পাতিকুট, নিউপিপি, দলপিপি, কালাপাখ ঠেঙ্গি, উদয়ী বাবু বাটান, ছোট নথ জিরিয়া, রাজহাঁস, ওটা, ধুপনি বক, ইগল, ভুবন চিল, হলদে বক, দেশি কানিবক, গোবক, ছোট বক, মাঝেলা বগা, লালচে বক, বেগুনি কালেম, বড় বগা, দেশি মেটে হাঁস, সরালি, বালিহাঁস, পানমুরগিসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখির দেখা পাওয়া যেত। এ ছাড়া বিলের পাড়ে গাছগাছালিতে শালিক, ঘুঘু, দোয়েল, চড়ুই, বুলবুলি, দাগি ঘাস পাখি, টুনটুনিসহ বিভিন্ন ধরনের দেশি পাখির বসবাস ছিল।
বাইক্কা বিলে প্রতিবছর একটি বেসরকারি একটা সংস্থা পাখি শুমারি করে। তারা বলছে, গত কয়েক বছর ধরে পাখির সংখ্যা কমেছে। তাদের শুমারিতে ২০২৪ সালে ৩৮ প্রজাতির ৭ হাজার ৭৮০ পাখির সংখ্যা পাওয়া গেছে। ২০২৩ সালে ৩৩ প্রজাতির ৪ হাজার ৬১৫ পাখি ছিল। এর আগে শুমারিতে ১২ হাজার পর্যন্ত পাখির হিসাব পাওয়া গিয়েছিল।
সরেজমিন খোঁজ নিয়ে স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, যাঁরা বাইক্কা বিল দেখাশোনা করেন, তাঁরাই পাখি ও মাছ শিকারে জড়িত। বন্যার সময় মাছ শিকার করতে সব কচুরিপানা সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কচুরিপানা, শাপলা-শালুক না থাকায় খাবারের অভাবে পাখি কমে যাচ্ছে। এ ছাড়া নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল দিয়ে পাখি ও মাছ শিকার, হাওর বাঁধ, সেচ মেশিন ব্যবহারের কারণে পাখি কমে যাচ্ছে।

পাখি কমে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বাইক্কা বিলের দায়িত্বে থাকা বড়গাঙ্গিনা সম্পদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মিন্নত আলী বলেন, এক দশক আগে পাখির সংখ্যা অনেক বেশি ছিল। তবে কয়েক বছর ধরে পাখির সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমে আসছে।
কেন আগের মতো পাখি আসছে না বাইক্কা বিলে
পাখি গবেষকেরা বলছেন, মাছ শিকারের জন্য বিল থেকে জলজ উদ্ভিদ সরিয়ে ফেলা হয়েছে। কচুরিপানা, শাপলা-শালুক না থাকায় পাখিরা কোথাও বসে খাবার খেতে পারে না। পাখি না আসার মূল কারণ এটি। এ ছাড়া ফাঁদ পেতে পাখি শিকার নিয়ন্ত্রণের ব্যর্থতা ও জলজ উদ্ভিদের অভাব পাখিদের বিলে আসা কমিয়ে দিচ্ছে।

পানির পাশাপাশি হাওর এলাকায় গাছগাছালি কমে যাওয়া, অপরিকল্পিতভাবে হাওর ভরাট, সেচ ও বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে মাছ ধরা, নির্বিচারে পাখি শিকার, হাওরের ভেতর দিয়ে যানবাহন চলাচল, শীত কমে যাওয়া, আবাসস্থল ধ্বংসের পেছনে আবহাওয়া বা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবসহ নানা কারণে পাখির সংখ্যা কমে যাচ্ছে। এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা এখন থেকে সচেতন না হলে বাইক্কা বিল থেকে পাখিরা একেবারে চলে যাবে বলে সতর্ক করছেন পরিবেশবিদেরা।

পরিবেশকর্মী নূরুল মোহাইমিন মিল্টন বলেন, বাইক্কা বিলে কয়েক বছর ধরে শীতে অতিথি পাখি কম আসার মূল কারণ জলজ ও স্থলজ পরিবেশের অবক্ষয়। আবহাওয়ার পরিবর্তন, পাখির নিরাপদ আবাসস্থল না থাকা, খাবার সংগ্রহে ঝুঁকি, পুঁজিবাদী ভোগ বিলাসিতার কারণে হাওর-বিল ভরাট, বেদখল আর বাণিজ্যিক কার্যক্রম। এসব কারণ থেকে বাইক্কা বিল রক্ষা করলে পাখির সংখ্যা বাড়ার আশা করা যায়।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ টাইগার অ্যাকশন প্ল্যানের প্রণেতা অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ মনিরুল হাসান খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, বাইক্কা বিলকে সংরক্ষিত বিল ঘোষণা করা হয়েছে। এই বিল পাখি ও মা মাছের জন্য সংরক্ষণ করা হয়েছে। এখন যদি সেই আগের মতো পাখি বা মৎস্য নিধন করা হয় অথবা জলজ উদ্ভিদ ফেলে দেওয়া হয় তাহলে পাখি বা মাছ কারও জন্য ভালো হবে না। পাখিদের ফিরিয়ে আনতে বিল সংরক্ষণ করতে হবে। পরিবেশের পাশাপাশি পাখিদের জন্য জলজ উদ্ভিদ বাঁচিয়ে রাখতে হবে।

ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্সের প্রধান নির্বাহী ও বন্য প্রাণী গবেষক শাহরিয়ার সিজার রহমান বলেন, বাইক্কা বিলের পরিবেশ, জলজ উদ্ভিদ কমে যাওয়া, অবাধে পাখি শিকার, অতিরিক্ত পর্যটক, বৃক্ষনিধন, যে জায়গায় পাখিরা থাকে সেখান থেকে মাছ শিকার এসব কারণে পাখির সংখ্যা কমে যাচ্ছে। পাখি অবাধ বিচরণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। নয়তো একটা সময় এখানে আর পাখি পাওয়া যাবে না।
পাখি কমে যাওয়ার বিষয়ে মৌলভীবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. মো. আরিফ হোসেন বলেন, ‘সংরক্ষিত বাইক্কা বিলে নিরাপদে পাখিরা আশ্রয় নেওয়ার জন্য আমরা সব সময় নিরাপত্তার জন্য মানুষ নিয়োগ দিয়েছি। এ ছাড়া কেউ যদি অবৈধভাবে পাখি বা মাছ শিকার করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে আমরা অভিযান পরিচালনা করি। পাখি কমার পেছনে মূল কারণ হচ্ছে আবহাওয়া। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় পাখিরা কম আসছে।’

বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, সিলেটের (সদর দপ্তর মৌলভীবাজার) বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘বাইক্কা বিলে পাখির সংখ্যা কমার পেছনে নানা কারণ রয়েছে। হাওরের গভীরতা আগের চেয়ে অনেক কমেছে, যেখানে আগে আট থেকে নয় মাস হাওরে পানি থাকত, এখন সেখানে তিন থেকে চার মাস পানি থাকে। এ ছাড়া শীতের তীব্রতা আগের মতো নেই। শীত কম থাকায় হয়তো অতিথি পাখিরা আসা কমিয়ে দিয়েছে। আগের চেয়ে মানুষজন আসা অনেক বেড়ে গিয়েছে। এসব কারণে হয়তো পাখিরা আসা কমিয়ে দিচ্ছে।’

মৌলভীবাজার জেলা সদর, শ্রীমঙ্গল উপজেলা ও হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার বিস্তৃত অঞ্চল নিয়ে হাইল হাওর। আর এই হাওরের একটা বিলের নাম বাইক্কা বিল। বাইক্কা বিলের নাম শুনলেই হাজারো পাখির মেলা ভেসে ওঠে এই অঞ্চলের মানুষের চোখে। একসময় শীত এলেই ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির দেখা মিলত বাইক্কা বিলে। শত প্রজাতির হাজারো অতিথি পাখির কিচিরমিচিরে মুখরিত থাকত বিল এলাকা। বিভিন্ন প্রজাতির দেশি পাখির নিরাপদ আবাসস্থল ছিল এই বিল।
কয়েক বছর ধরে আর এই রূপ দেখা যায় না। শীতেও অতিথি পাখির আগমন কমে গিয়েছে। দেশি পাখির আনাগোনাও তেমন দেখা যায় না। পাখিদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে এই আবাসস্থল। কয়েক বছর ধরে অতিথি পাখির সংখ্যা কমে আসার কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আবাসস্থল কমে যাওয়া, জলবায়ু পরিবর্তন এবং জলজ উদ্ভিদ কমে যাওয়া। পাখিদের বসবাসের জন্য বাইক্কা বিলের পরিবেশগত উপযোগিতা কমে গিয়েছে।
অভয়াশ্রম বাইক্কা বিলে যেসব পাখি আসত
২০০৩ সালের ১ জুলাই বিলের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ১০০ হেক্টর জলাভূমিকে ‘বাইক্কা বিল অভয়াশ্রম’ ঘোষণা করে ভূমি মন্ত্রণালয়। মাছ ধরা ও জলজ উদ্ভিদ আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়। এই বিলে বালিহাঁস, উত্তরে লেঞ্জা হাঁস, গিরিয়া হাঁস, উত্তরে খন্তিহাঁস, মরচে রং ভূতিহাঁস, মেটে মাথা টিটি, কালালেজ জৌরালি, খয়রা কাস্তে চরা, তিলা লালসা, গেওয়ালা বাটান, পিয়াং হাঁস, পাতি তিলা হাঁস, নীলমাথা হাঁস, বিল বাটান, পাতিসবুজলা, বন বাটান, পাতিচ্যাগা, ছোট ডুবুরি, বড় পানকৌড়ি, ছোট পানকৌড়ি, গয়ার, বাংলা শকুন, এশীয় শামুকখোল, পানমুরগি, পাতিকুট, নিউপিপি, দলপিপি, কালাপাখ ঠেঙ্গি, উদয়ী বাবু বাটান, ছোট নথ জিরিয়া, রাজহাঁস, ওটা, ধুপনি বক, ইগল, ভুবন চিল, হলদে বক, দেশি কানিবক, গোবক, ছোট বক, মাঝেলা বগা, লালচে বক, বেগুনি কালেম, বড় বগা, দেশি মেটে হাঁস, সরালি, বালিহাঁস, পানমুরগিসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখির দেখা পাওয়া যেত। এ ছাড়া বিলের পাড়ে গাছগাছালিতে শালিক, ঘুঘু, দোয়েল, চড়ুই, বুলবুলি, দাগি ঘাস পাখি, টুনটুনিসহ বিভিন্ন ধরনের দেশি পাখির বসবাস ছিল।
বাইক্কা বিলে প্রতিবছর একটি বেসরকারি একটা সংস্থা পাখি শুমারি করে। তারা বলছে, গত কয়েক বছর ধরে পাখির সংখ্যা কমেছে। তাদের শুমারিতে ২০২৪ সালে ৩৮ প্রজাতির ৭ হাজার ৭৮০ পাখির সংখ্যা পাওয়া গেছে। ২০২৩ সালে ৩৩ প্রজাতির ৪ হাজার ৬১৫ পাখি ছিল। এর আগে শুমারিতে ১২ হাজার পর্যন্ত পাখির হিসাব পাওয়া গিয়েছিল।
সরেজমিন খোঁজ নিয়ে স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, যাঁরা বাইক্কা বিল দেখাশোনা করেন, তাঁরাই পাখি ও মাছ শিকারে জড়িত। বন্যার সময় মাছ শিকার করতে সব কচুরিপানা সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কচুরিপানা, শাপলা-শালুক না থাকায় খাবারের অভাবে পাখি কমে যাচ্ছে। এ ছাড়া নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল দিয়ে পাখি ও মাছ শিকার, হাওর বাঁধ, সেচ মেশিন ব্যবহারের কারণে পাখি কমে যাচ্ছে।

পাখি কমে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বাইক্কা বিলের দায়িত্বে থাকা বড়গাঙ্গিনা সম্পদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মিন্নত আলী বলেন, এক দশক আগে পাখির সংখ্যা অনেক বেশি ছিল। তবে কয়েক বছর ধরে পাখির সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমে আসছে।
কেন আগের মতো পাখি আসছে না বাইক্কা বিলে
পাখি গবেষকেরা বলছেন, মাছ শিকারের জন্য বিল থেকে জলজ উদ্ভিদ সরিয়ে ফেলা হয়েছে। কচুরিপানা, শাপলা-শালুক না থাকায় পাখিরা কোথাও বসে খাবার খেতে পারে না। পাখি না আসার মূল কারণ এটি। এ ছাড়া ফাঁদ পেতে পাখি শিকার নিয়ন্ত্রণের ব্যর্থতা ও জলজ উদ্ভিদের অভাব পাখিদের বিলে আসা কমিয়ে দিচ্ছে।

পানির পাশাপাশি হাওর এলাকায় গাছগাছালি কমে যাওয়া, অপরিকল্পিতভাবে হাওর ভরাট, সেচ ও বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে মাছ ধরা, নির্বিচারে পাখি শিকার, হাওরের ভেতর দিয়ে যানবাহন চলাচল, শীত কমে যাওয়া, আবাসস্থল ধ্বংসের পেছনে আবহাওয়া বা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবসহ নানা কারণে পাখির সংখ্যা কমে যাচ্ছে। এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা এখন থেকে সচেতন না হলে বাইক্কা বিল থেকে পাখিরা একেবারে চলে যাবে বলে সতর্ক করছেন পরিবেশবিদেরা।

পরিবেশকর্মী নূরুল মোহাইমিন মিল্টন বলেন, বাইক্কা বিলে কয়েক বছর ধরে শীতে অতিথি পাখি কম আসার মূল কারণ জলজ ও স্থলজ পরিবেশের অবক্ষয়। আবহাওয়ার পরিবর্তন, পাখির নিরাপদ আবাসস্থল না থাকা, খাবার সংগ্রহে ঝুঁকি, পুঁজিবাদী ভোগ বিলাসিতার কারণে হাওর-বিল ভরাট, বেদখল আর বাণিজ্যিক কার্যক্রম। এসব কারণ থেকে বাইক্কা বিল রক্ষা করলে পাখির সংখ্যা বাড়ার আশা করা যায়।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ টাইগার অ্যাকশন প্ল্যানের প্রণেতা অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ মনিরুল হাসান খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, বাইক্কা বিলকে সংরক্ষিত বিল ঘোষণা করা হয়েছে। এই বিল পাখি ও মা মাছের জন্য সংরক্ষণ করা হয়েছে। এখন যদি সেই আগের মতো পাখি বা মৎস্য নিধন করা হয় অথবা জলজ উদ্ভিদ ফেলে দেওয়া হয় তাহলে পাখি বা মাছ কারও জন্য ভালো হবে না। পাখিদের ফিরিয়ে আনতে বিল সংরক্ষণ করতে হবে। পরিবেশের পাশাপাশি পাখিদের জন্য জলজ উদ্ভিদ বাঁচিয়ে রাখতে হবে।

ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্সের প্রধান নির্বাহী ও বন্য প্রাণী গবেষক শাহরিয়ার সিজার রহমান বলেন, বাইক্কা বিলের পরিবেশ, জলজ উদ্ভিদ কমে যাওয়া, অবাধে পাখি শিকার, অতিরিক্ত পর্যটক, বৃক্ষনিধন, যে জায়গায় পাখিরা থাকে সেখান থেকে মাছ শিকার এসব কারণে পাখির সংখ্যা কমে যাচ্ছে। পাখি অবাধ বিচরণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। নয়তো একটা সময় এখানে আর পাখি পাওয়া যাবে না।
পাখি কমে যাওয়ার বিষয়ে মৌলভীবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. মো. আরিফ হোসেন বলেন, ‘সংরক্ষিত বাইক্কা বিলে নিরাপদে পাখিরা আশ্রয় নেওয়ার জন্য আমরা সব সময় নিরাপত্তার জন্য মানুষ নিয়োগ দিয়েছি। এ ছাড়া কেউ যদি অবৈধভাবে পাখি বা মাছ শিকার করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে আমরা অভিযান পরিচালনা করি। পাখি কমার পেছনে মূল কারণ হচ্ছে আবহাওয়া। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় পাখিরা কম আসছে।’

বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, সিলেটের (সদর দপ্তর মৌলভীবাজার) বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘বাইক্কা বিলে পাখির সংখ্যা কমার পেছনে নানা কারণ রয়েছে। হাওরের গভীরতা আগের চেয়ে অনেক কমেছে, যেখানে আগে আট থেকে নয় মাস হাওরে পানি থাকত, এখন সেখানে তিন থেকে চার মাস পানি থাকে। এ ছাড়া শীতের তীব্রতা আগের মতো নেই। শীত কম থাকায় হয়তো অতিথি পাখিরা আসা কমিয়ে দিয়েছে। আগের চেয়ে মানুষজন আসা অনেক বেড়ে গিয়েছে। এসব কারণে হয়তো পাখিরা আসা কমিয়ে দিচ্ছে।’

রৌদ্রোজ্জ্বল ঢাকায় আজ শুক্রবার ছুটির দিনে সকালে হালকা কুয়াশার দেখা মিলেছে। তবে হাড়কাঁপানো শীত না পড়লেও বইছে মিষ্টি হিমেল বাতাস। আজ সারা দিন রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলে আকাশ পরিষ্কার থাকবে, আবহাওয়াও থাকবে শুষ্ক।
৫ ঘণ্টা আগে
আজ বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৬টা। সূর্যের আলো যখন পুরোপুরি ফুটে ওঠেনি, ঠিক তখনই ভূমিকম্পে আবারও কেঁপে উঠল রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চল। রিখটার স্কেলে এই ভূকম্পনের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ১। উৎপত্তিস্থল ঢাকা থেকে ৩৮ কিলোমিটার দূরে নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার পাটুয়ারপাড় এলাকা।
১ দিন আগে
শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলো বিশ্বের দূষিত শহর তালিকায় শুরুর দশের মধ্যে অবস্থান করছে। এর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই এ তালিকায় শীর্ষে ছিল ভারতের দিল্লি।
১ দিন আগে
রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় ছিল ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল ছিল ১৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের বেলা আজকের এই তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

রৌদ্রোজ্জ্বল ঢাকায় আজ শুক্রবার সকালে হালকা কুয়াশার দেখা মিলেছে। তবে হাড়কাঁপানো শীত না পড়লেও বইছে মিষ্টি হিমেল বাতাস। আজ সারা দিন রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলে আকাশ পরিষ্কার থাকবে, আবহাওয়াও থাকবে শুষ্ক।
আজ সকাল ৭টায় ঢাকা ও আশপাশ এলাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সকাল ৬টায় রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮৯ শতাংশ। এদিন দুপুর পর্যন্ত ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার ওপর দিয়ে উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে।
আজ ঢাকায় সূর্যাস্তের সময় সন্ধ্যা ৫টা ১১ মিনিটে, আগামীকাল সূর্যাস্ত ৬টা ২৮ মিনিটে।

রৌদ্রোজ্জ্বল ঢাকায় আজ শুক্রবার সকালে হালকা কুয়াশার দেখা মিলেছে। তবে হাড়কাঁপানো শীত না পড়লেও বইছে মিষ্টি হিমেল বাতাস। আজ সারা দিন রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলে আকাশ পরিষ্কার থাকবে, আবহাওয়াও থাকবে শুষ্ক।
আজ সকাল ৭টায় ঢাকা ও আশপাশ এলাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সকাল ৬টায় রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮৯ শতাংশ। এদিন দুপুর পর্যন্ত ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার ওপর দিয়ে উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে।
আজ ঢাকায় সূর্যাস্তের সময় সন্ধ্যা ৫টা ১১ মিনিটে, আগামীকাল সূর্যাস্ত ৬টা ২৮ মিনিটে।

মৌলভীবাজার জেলা সদর, শ্রীমঙ্গল উপজেলা ও হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার বিস্তৃত অঞ্চল নিয়ে হাইল হাওর। আর এই হাওরের একটা বিলের নাম বাইক্কা বিল। বাইক্কা বিলের নাম শুনলেই হাজারো পাখির মেলা ভেসে ওঠে এই অঞ্চলের মানুষের চোখে।
২১ জানুয়ারি ২০২৫
আজ বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৬টা। সূর্যের আলো যখন পুরোপুরি ফুটে ওঠেনি, ঠিক তখনই ভূমিকম্পে আবারও কেঁপে উঠল রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চল। রিখটার স্কেলে এই ভূকম্পনের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ১। উৎপত্তিস্থল ঢাকা থেকে ৩৮ কিলোমিটার দূরে নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার পাটুয়ারপাড় এলাকা।
১ দিন আগে
শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলো বিশ্বের দূষিত শহর তালিকায় শুরুর দশের মধ্যে অবস্থান করছে। এর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই এ তালিকায় শীর্ষে ছিল ভারতের দিল্লি।
১ দিন আগে
রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় ছিল ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল ছিল ১৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের বেলা আজকের এই তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

আজ বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৬টা। সূর্যের আলো যখন পুরোপুরি ফুটে ওঠেনি, ঠিক তখনই ভূমিকম্পে আবারও কেঁপে উঠল রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চল। রিখটার স্কেলে এই ভূকম্পনের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ১। উৎপত্তিস্থল ঢাকা থেকে ৩৮ কিলোমিটার দূরে নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার পাটুয়ারপাড় এলাকা।
আর এই ভূকম্পনেই আতঙ্কিত হয়ে ওঠে ঢাকার নগরজীবন থেকে শুরু করে সারা দেশের মানুষ। আতঙ্কিত হয়ে ওঠাই স্বাভাবিক। কারণ, এক-দুবার নয়, মাত্র ১৪ দিনে বাংলাদেশে একাধিকবার ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে। এর মধ্যে চারটি ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল নরসিংদী, গাজীপুরের মতো ঢাকার আশপাশের অঞ্চল ছিল বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আর সবচেয়ে বড় ভূমিকম্পটি হয় গত ২১ নভেম্বর। ওই দিন ৫ দশমিক ৭ মাত্রার এক ভূমিকম্পে ঢাকাসহ সারা দেশ কেঁপে উঠেছিল।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর বাংলাদেশেই উৎপত্তিস্থল ছিল পাঁচটি ভূমিকম্পের। এর প্রথমটি ছিল ২১ নভেম্বরের ঠিক দুই মাস আগে ২১ সেপ্টেম্বর। এদিন ৪ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এর উৎপত্তি হয় সিলেটের ছাতকে।
এরপরের ভূমিকম্প ছিল ২১ নভেম্বর, মাত্রা ৫ দশমিক ৭। পরদিন ২২ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টা ৬ মিনিটে ৪ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদী জেলার কালীগঞ্জ। এর ৫ দিন পর, ২৭ নভেম্বর বিকেল সোয়া ৪টায় ৪ মাত্রার ভূমিকম্প হয়, উৎপত্তিস্থল ঢাকার পাশের জেলা গাজীপুরের টঙ্গীর ঢালাদিয়া এলাকা।
কতবার ভূকম্পন হলো
তবে বারবার ভূমিকম্প কেবল বাংলাদেশেই নয়, সীমান্তঘেঁষা মিয়ানমার, ভারত, নেপাল, এমনকি চীনের তিব্বত সীমান্তেও ঘন ঘন ভূমিকম্প হচ্ছে। চলতি বছরের ১১ মাসে এই অঞ্চলে ২৮৫ বার ভূমিকম্প হয়েছে। এর কোনোটিই ৪ মাত্রার নিচে ছিল না।
গত সোমবার ১ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে মিয়ানমারের ফালামে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প হয়। ফলে চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকেও এটি অনুভূত হয়েছে। ঢাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র থেকে উৎপত্তিস্থলের দূরত্ব ছিল ৪৩১ কিলোমিটার। ওই ভূমিকম্প বাংলাদেশ সময় রাত ১২টা ৫৫ মিনিট ১৬ সেকেন্ডে অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৯।
বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে বিবিসি বাংলা জানিয়েছে, টেকটোনিক প্লেটে বাংলাদেশের যে অবস্থান, তাতে দুটো প্লেটের সংযোগস্থল রয়েছে, পশ্চিমে ইন্ডিয়ান প্লেট আর পূর্ব দিকে বার্মা প্লেট। আর বাংলাদেশের উত্তর দিকে আছে ইউরেশিয়ান প্লেট।

ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বিবিসি বাংলাকে বলেন, ভারতীয় প্লেটটি ধীরে ধীরে পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বার্মা প্লেটের নিচে, অর্থাৎ চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রামের নিচে তলিয়ে যাচ্ছে। আর এই তলিয়ে যাওয়ার কারণে একটা সাবডাকশন জোনের তৈরি হয়েছে।
হুমায়ুন আখতার আরও বলেন, ‘এই জোনের ব্যাপ্তি সিলেট থেকে টেকনাফ পর্যন্ত বিস্তৃত। পুরো চট্টগ্রাম অঞ্চল এর মধ্যে পড়েছে। এখানে বিভিন্ন সেগমেন্ট আছে। আমাদের এই সেগমেন্টে ৮.২ থেকে ৯ মাত্রার শক্তি জমা হয়ে আছে। এটা বের হতেই হবে।’ তাঁর মতে, ‘এখানে প্লেট লকড হয়ে ছিল। এর অতি সামান্য ক্ষুদ্রাংশ খুলল বলেই শুক্রবারের ভূমিকম্প হয়েছে। এটিই ধারণা দেয় যে সামনে বড় ভূমিকম্প আমাদের দ্বারপ্রান্তে আছে।’
আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ
তবে ভূমিকম্প নিয়ে উৎকণ্ঠিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ভূতত্ত্ববিদ ও ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মো. মমিনুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, এখন যেসব ভূকম্পন, সেগুলো হলো ২১ নভেম্বর ভূমিকম্পের ‘আফটার শক’।
২০১১ সালের ১১ মার্চ জাপানের হনশু দ্বীপের টোহুকু অঞ্চলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প এবং এর জেরে সৃষ্ট সুনামির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওই ঘটনার পর কেবল ৬ মাত্রারই ৪৫০ বার আফটার শক হয়েছিল জাপানে। আরও অসংখ্যবার ছোট ছোট আফটার শক হয়েছিল তখন।
ভূকম্পনবিদ্যার গবেষক মমিনুল ইসলাম আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে ২১ নভেম্বরের পর একাধিকবার আফটার শক হচ্ছে। এই আফটার শক বহুদিন ধরে হতে পারে, কমপক্ষে আরও তিন মাস হতে পারে। ২ মাত্রার নিচের ভূকম্পনগুলো আমাদের (বাংলাদেশে) সিস্টেমে ধরা পড়ে না।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৬টা। সূর্যের আলো যখন পুরোপুরি ফুটে ওঠেনি, ঠিক তখনই ভূমিকম্পে আবারও কেঁপে উঠল রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চল। রিখটার স্কেলে এই ভূকম্পনের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ১। উৎপত্তিস্থল ঢাকা থেকে ৩৮ কিলোমিটার দূরে নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার পাটুয়ারপাড় এলাকা।
আর এই ভূকম্পনেই আতঙ্কিত হয়ে ওঠে ঢাকার নগরজীবন থেকে শুরু করে সারা দেশের মানুষ। আতঙ্কিত হয়ে ওঠাই স্বাভাবিক। কারণ, এক-দুবার নয়, মাত্র ১৪ দিনে বাংলাদেশে একাধিকবার ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে। এর মধ্যে চারটি ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল নরসিংদী, গাজীপুরের মতো ঢাকার আশপাশের অঞ্চল ছিল বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আর সবচেয়ে বড় ভূমিকম্পটি হয় গত ২১ নভেম্বর। ওই দিন ৫ দশমিক ৭ মাত্রার এক ভূমিকম্পে ঢাকাসহ সারা দেশ কেঁপে উঠেছিল।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর বাংলাদেশেই উৎপত্তিস্থল ছিল পাঁচটি ভূমিকম্পের। এর প্রথমটি ছিল ২১ নভেম্বরের ঠিক দুই মাস আগে ২১ সেপ্টেম্বর। এদিন ৪ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এর উৎপত্তি হয় সিলেটের ছাতকে।
এরপরের ভূমিকম্প ছিল ২১ নভেম্বর, মাত্রা ৫ দশমিক ৭। পরদিন ২২ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টা ৬ মিনিটে ৪ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদী জেলার কালীগঞ্জ। এর ৫ দিন পর, ২৭ নভেম্বর বিকেল সোয়া ৪টায় ৪ মাত্রার ভূমিকম্প হয়, উৎপত্তিস্থল ঢাকার পাশের জেলা গাজীপুরের টঙ্গীর ঢালাদিয়া এলাকা।
কতবার ভূকম্পন হলো
তবে বারবার ভূমিকম্প কেবল বাংলাদেশেই নয়, সীমান্তঘেঁষা মিয়ানমার, ভারত, নেপাল, এমনকি চীনের তিব্বত সীমান্তেও ঘন ঘন ভূমিকম্প হচ্ছে। চলতি বছরের ১১ মাসে এই অঞ্চলে ২৮৫ বার ভূমিকম্প হয়েছে। এর কোনোটিই ৪ মাত্রার নিচে ছিল না।
গত সোমবার ১ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে মিয়ানমারের ফালামে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প হয়। ফলে চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকেও এটি অনুভূত হয়েছে। ঢাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র থেকে উৎপত্তিস্থলের দূরত্ব ছিল ৪৩১ কিলোমিটার। ওই ভূমিকম্প বাংলাদেশ সময় রাত ১২টা ৫৫ মিনিট ১৬ সেকেন্ডে অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৯।
বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে বিবিসি বাংলা জানিয়েছে, টেকটোনিক প্লেটে বাংলাদেশের যে অবস্থান, তাতে দুটো প্লেটের সংযোগস্থল রয়েছে, পশ্চিমে ইন্ডিয়ান প্লেট আর পূর্ব দিকে বার্মা প্লেট। আর বাংলাদেশের উত্তর দিকে আছে ইউরেশিয়ান প্লেট।

ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বিবিসি বাংলাকে বলেন, ভারতীয় প্লেটটি ধীরে ধীরে পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বার্মা প্লেটের নিচে, অর্থাৎ চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রামের নিচে তলিয়ে যাচ্ছে। আর এই তলিয়ে যাওয়ার কারণে একটা সাবডাকশন জোনের তৈরি হয়েছে।
হুমায়ুন আখতার আরও বলেন, ‘এই জোনের ব্যাপ্তি সিলেট থেকে টেকনাফ পর্যন্ত বিস্তৃত। পুরো চট্টগ্রাম অঞ্চল এর মধ্যে পড়েছে। এখানে বিভিন্ন সেগমেন্ট আছে। আমাদের এই সেগমেন্টে ৮.২ থেকে ৯ মাত্রার শক্তি জমা হয়ে আছে। এটা বের হতেই হবে।’ তাঁর মতে, ‘এখানে প্লেট লকড হয়ে ছিল। এর অতি সামান্য ক্ষুদ্রাংশ খুলল বলেই শুক্রবারের ভূমিকম্প হয়েছে। এটিই ধারণা দেয় যে সামনে বড় ভূমিকম্প আমাদের দ্বারপ্রান্তে আছে।’
আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ
তবে ভূমিকম্প নিয়ে উৎকণ্ঠিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ভূতত্ত্ববিদ ও ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মো. মমিনুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, এখন যেসব ভূকম্পন, সেগুলো হলো ২১ নভেম্বর ভূমিকম্পের ‘আফটার শক’।
২০১১ সালের ১১ মার্চ জাপানের হনশু দ্বীপের টোহুকু অঞ্চলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প এবং এর জেরে সৃষ্ট সুনামির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওই ঘটনার পর কেবল ৬ মাত্রারই ৪৫০ বার আফটার শক হয়েছিল জাপানে। আরও অসংখ্যবার ছোট ছোট আফটার শক হয়েছিল তখন।
ভূকম্পনবিদ্যার গবেষক মমিনুল ইসলাম আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে ২১ নভেম্বরের পর একাধিকবার আফটার শক হচ্ছে। এই আফটার শক বহুদিন ধরে হতে পারে, কমপক্ষে আরও তিন মাস হতে পারে। ২ মাত্রার নিচের ভূকম্পনগুলো আমাদের (বাংলাদেশে) সিস্টেমে ধরা পড়ে না।

মৌলভীবাজার জেলা সদর, শ্রীমঙ্গল উপজেলা ও হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার বিস্তৃত অঞ্চল নিয়ে হাইল হাওর। আর এই হাওরের একটা বিলের নাম বাইক্কা বিল। বাইক্কা বিলের নাম শুনলেই হাজারো পাখির মেলা ভেসে ওঠে এই অঞ্চলের মানুষের চোখে।
২১ জানুয়ারি ২০২৫
রৌদ্রোজ্জ্বল ঢাকায় আজ শুক্রবার ছুটির দিনে সকালে হালকা কুয়াশার দেখা মিলেছে। তবে হাড়কাঁপানো শীত না পড়লেও বইছে মিষ্টি হিমেল বাতাস। আজ সারা দিন রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলে আকাশ পরিষ্কার থাকবে, আবহাওয়াও থাকবে শুষ্ক।
৫ ঘণ্টা আগে
শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলো বিশ্বের দূষিত শহর তালিকায় শুরুর দশের মধ্যে অবস্থান করছে। এর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই এ তালিকায় শীর্ষে ছিল ভারতের দিল্লি।
১ দিন আগে
রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় ছিল ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল ছিল ১৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের বেলা আজকের এই তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলো বিশ্বের দূষিত শহর তালিকায় শুরুর দশের মধ্যে অবস্থান করছে। এর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই এ তালিকায় শীর্ষে ছিল ভারতের দিল্লি। আজ বৃহস্পতিবার দিল্লিকে পেছনে ফেলে এ শীর্ষ দূষিত শহর হলো ঢাকা।
বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে আজ ঢাকার অবস্থান ১ম। আজ সকাল ১০টার রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান আজ ২৯৬, যা খুব অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক।
ঢাকার যেসব এলাকায় বায়ু দূষণ সবচেয়ে বেশি— পল্লবী দক্ষিণ, কল্যাণপুর, বেজ এজওয়াটার আউটডোর, ইস্টার্ন হাউজিং ও গ্রেস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল।
ঢাকার নিম্নমানের বাতাসের প্রধান কারণ হলো পিএম ২.৫ বা সূক্ষ্ম কণা। এই অতিক্ষুদ্র কণাগুলো, যাদের ব্যাস ২.৫ মাইক্রোমিটারের চেয়েও কম, ফুসফুসের গভীরে প্রবেশ করে রক্তপ্রবাহে মিশে যেতে পারে। এর ফলে হাঁপানি (অ্যাজমা) বৃদ্ধি, ব্রঙ্কাইটিস এবং হৃদ্রোগের মতো শ্বাসযন্ত্র ও হৃদ্যন্ত্রের গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়।
বাতাসের এই বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে করণীয়
অত্যন্ত সংবেদনশীল গোষ্ঠী: শিশু, বয়স্ক, হৃদ্রোগ বা শ্বাসকষ্টের রোগীরা সব ধরনের ঘরের বাইরে না যাওয়াই ভালো।
সাধারণ সুস্থ ব্যক্তি: তাদের উচিত বাইরে কাটানো সময় সীমিত করা এবং শারীরিক পরিশ্রমের কাজ এড়িয়ে চলা।
যদি বাইরে বের হতে হয়, তবে অবশ্যই দূষণ রোধে কার্যকর মাস্ক ব্যবহার করুন।
ঘরের ভেতরের বাতাস পরিষ্কার রাখতে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন এবং দূষিত বাতাস প্রবেশ ঠেকাতে জানালা ও দরজা বন্ধ রাখুন।
দূষিত বায়ুর শহর তালিকায় শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো— ভারতের দিল্লি ও কলকাতা, পাকিস্তানের লাহোর ও কাতারের দোহা। শহরগুলোর বায়ুমান যথাক্রমে ২৭৮, ২৩৩, ১৯৯ ও ১৮৯।
বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১-১৫০ এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।
বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতি বছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।
দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।
পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলো বিশ্বের দূষিত শহর তালিকায় শুরুর দশের মধ্যে অবস্থান করছে। এর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই এ তালিকায় শীর্ষে ছিল ভারতের দিল্লি। আজ বৃহস্পতিবার দিল্লিকে পেছনে ফেলে এ শীর্ষ দূষিত শহর হলো ঢাকা।
বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে আজ ঢাকার অবস্থান ১ম। আজ সকাল ১০টার রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান আজ ২৯৬, যা খুব অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক।
ঢাকার যেসব এলাকায় বায়ু দূষণ সবচেয়ে বেশি— পল্লবী দক্ষিণ, কল্যাণপুর, বেজ এজওয়াটার আউটডোর, ইস্টার্ন হাউজিং ও গ্রেস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল।
ঢাকার নিম্নমানের বাতাসের প্রধান কারণ হলো পিএম ২.৫ বা সূক্ষ্ম কণা। এই অতিক্ষুদ্র কণাগুলো, যাদের ব্যাস ২.৫ মাইক্রোমিটারের চেয়েও কম, ফুসফুসের গভীরে প্রবেশ করে রক্তপ্রবাহে মিশে যেতে পারে। এর ফলে হাঁপানি (অ্যাজমা) বৃদ্ধি, ব্রঙ্কাইটিস এবং হৃদ্রোগের মতো শ্বাসযন্ত্র ও হৃদ্যন্ত্রের গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়।
বাতাসের এই বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে করণীয়
অত্যন্ত সংবেদনশীল গোষ্ঠী: শিশু, বয়স্ক, হৃদ্রোগ বা শ্বাসকষ্টের রোগীরা সব ধরনের ঘরের বাইরে না যাওয়াই ভালো।
সাধারণ সুস্থ ব্যক্তি: তাদের উচিত বাইরে কাটানো সময় সীমিত করা এবং শারীরিক পরিশ্রমের কাজ এড়িয়ে চলা।
যদি বাইরে বের হতে হয়, তবে অবশ্যই দূষণ রোধে কার্যকর মাস্ক ব্যবহার করুন।
ঘরের ভেতরের বাতাস পরিষ্কার রাখতে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন এবং দূষিত বাতাস প্রবেশ ঠেকাতে জানালা ও দরজা বন্ধ রাখুন।
দূষিত বায়ুর শহর তালিকায় শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো— ভারতের দিল্লি ও কলকাতা, পাকিস্তানের লাহোর ও কাতারের দোহা। শহরগুলোর বায়ুমান যথাক্রমে ২৭৮, ২৩৩, ১৯৯ ও ১৮৯।
বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১-১৫০ এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।
বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতি বছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।
দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।
পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

মৌলভীবাজার জেলা সদর, শ্রীমঙ্গল উপজেলা ও হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার বিস্তৃত অঞ্চল নিয়ে হাইল হাওর। আর এই হাওরের একটা বিলের নাম বাইক্কা বিল। বাইক্কা বিলের নাম শুনলেই হাজারো পাখির মেলা ভেসে ওঠে এই অঞ্চলের মানুষের চোখে।
২১ জানুয়ারি ২০২৫
রৌদ্রোজ্জ্বল ঢাকায় আজ শুক্রবার ছুটির দিনে সকালে হালকা কুয়াশার দেখা মিলেছে। তবে হাড়কাঁপানো শীত না পড়লেও বইছে মিষ্টি হিমেল বাতাস। আজ সারা দিন রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলে আকাশ পরিষ্কার থাকবে, আবহাওয়াও থাকবে শুষ্ক।
৫ ঘণ্টা আগে
আজ বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৬টা। সূর্যের আলো যখন পুরোপুরি ফুটে ওঠেনি, ঠিক তখনই ভূমিকম্পে আবারও কেঁপে উঠল রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চল। রিখটার স্কেলে এই ভূকম্পনের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ১। উৎপত্তিস্থল ঢাকা থেকে ৩৮ কিলোমিটার দূরে নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার পাটুয়ারপাড় এলাকা।
১ দিন আগে
রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় ছিল ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল ছিল ১৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের বেলা আজকের এই তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় ছিল ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল ছিল ১৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের বেলা এই তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
আজ সকাল ৭টায় পরবর্তী ছয় ঘণ্টার আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে এসব কথা বলা হয়েছে।
পূর্বাভাসের তথ্য অনুযায়ী, আজ সকাল ৬টায় ঢাকায় তাপমাত্রা ছিল ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮১ শতাংশ।
এ ছাড়া আজ দুপুর পর্যন্ত ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। আবহাওয়া প্রায় শুষ্ক থাকবে। দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ দুপুর পর্যন্ত ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার ওপর দিয়ে উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে।
আজ ঢাকায় সূর্যাস্তের সময় সন্ধ্যা ৫টা ১১ মিনিটে, আগামীকাল সূর্যাস্ত ৬টা ২৭ মিনিটে।

রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় ছিল ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল ছিল ১৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের বেলা এই তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
আজ সকাল ৭টায় পরবর্তী ছয় ঘণ্টার আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে এসব কথা বলা হয়েছে।
পূর্বাভাসের তথ্য অনুযায়ী, আজ সকাল ৬টায় ঢাকায় তাপমাত্রা ছিল ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮১ শতাংশ।
এ ছাড়া আজ দুপুর পর্যন্ত ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। আবহাওয়া প্রায় শুষ্ক থাকবে। দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ দুপুর পর্যন্ত ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার ওপর দিয়ে উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে।
আজ ঢাকায় সূর্যাস্তের সময় সন্ধ্যা ৫টা ১১ মিনিটে, আগামীকাল সূর্যাস্ত ৬টা ২৭ মিনিটে।

মৌলভীবাজার জেলা সদর, শ্রীমঙ্গল উপজেলা ও হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার বিস্তৃত অঞ্চল নিয়ে হাইল হাওর। আর এই হাওরের একটা বিলের নাম বাইক্কা বিল। বাইক্কা বিলের নাম শুনলেই হাজারো পাখির মেলা ভেসে ওঠে এই অঞ্চলের মানুষের চোখে।
২১ জানুয়ারি ২০২৫
রৌদ্রোজ্জ্বল ঢাকায় আজ শুক্রবার ছুটির দিনে সকালে হালকা কুয়াশার দেখা মিলেছে। তবে হাড়কাঁপানো শীত না পড়লেও বইছে মিষ্টি হিমেল বাতাস। আজ সারা দিন রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলে আকাশ পরিষ্কার থাকবে, আবহাওয়াও থাকবে শুষ্ক।
৫ ঘণ্টা আগে
আজ বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৬টা। সূর্যের আলো যখন পুরোপুরি ফুটে ওঠেনি, ঠিক তখনই ভূমিকম্পে আবারও কেঁপে উঠল রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চল। রিখটার স্কেলে এই ভূকম্পনের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ১। উৎপত্তিস্থল ঢাকা থেকে ৩৮ কিলোমিটার দূরে নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার পাটুয়ারপাড় এলাকা।
১ দিন আগে
শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলো বিশ্বের দূষিত শহর তালিকায় শুরুর দশের মধ্যে অবস্থান করছে। এর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই এ তালিকায় শীর্ষে ছিল ভারতের দিল্লি।
১ দিন আগে