Ajker Patrika

২০২৪-এ আবিষ্কৃত অদ্ভুত সব প্রজাতি

২০২৪ সালে শনাক্ত হওয়া নরম-লোমযুক্ত একটি নতুন প্রজাতির হেজহগ হলো ভ্যাম্পায়ার হেজহগ। ছবি: বিবিসি
২০২৪ সালে শনাক্ত হওয়া নরম-লোমযুক্ত একটি নতুন প্রজাতির হেজহগ হলো ভ্যাম্পায়ার হেজহগ। ছবি: বিবিসি

এ বছর হাজারের বেশি নতুন প্রজাতি আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। এর মধ্যে কিছু প্রজাতি সত্যিই রীতিমতো অদ্ভুত। প্রশান্ত মহাসাগরের গভীর থেকে শুরু করে ভিয়েতনামের পর্বতমালা পর্যন্ত, পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে এ বছর অনেক অদ্ভুত এবং বিস্ময়কর নতুন উদ্ভিদ, প্রাণী এবং ছত্রাক আবিষ্কৃত হয়েছে। কিছু প্রজাতি এমন অঞ্চলে মিলেছে যেসব এলাকায় আগে খুব বেশি অনুসন্ধান করা হয়নি, আবার কিছু জিনিস জাদুঘরের কোনো একটি আলমারিতে লুকিয়ে থাকা অবস্থায় আবিষ্কৃত হয়েছে। এরা আমাদের গ্রহের জীবজগতের মূল্যবান বৈচিত্র্যই আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।

আর ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির সূত্রে এমন কিছু বিচিত্র প্রজাতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেব এখন।

ফ্লাইং স্প্যাগেটি মনস্টারের দেখা মেলে চিলির উপকূলে গভীর সমুদ্রে অভিযান চলানোর সময়। ছবি: শ্মিট ওশেন ইনস্টিটিউট
ফ্লাইং স্প্যাগেটি মনস্টারের দেখা মেলে চিলির উপকূলে গভীর সমুদ্রে অভিযান চলানোর সময়। ছবি: শ্মিট ওশেন ইনস্টিটিউট

মাছের গন্ধযুক্ত ছত্রাক

গত এক বছরে লন্ডনের রয়্যাল বোটানিক গার্ডেনস এবং এর সহযোগীরা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উদ্ভিদের ১৪৯টি এবং ছত্রাকের ২৩টি নতুন প্রজাতি শ্রেণিবদ্ধ করেছেন। এর মধ্যে তিনটি নতুন ছত্রাক তাদের স্বতন্ত্র মাছের গন্ধের জন্য বিশেষ নজর করেছে।

রুসালা গণে প্রায় ৮০০টি মাশরুম প্রজাতি শনাক্ত করা হয়েছে। এ মাশরুমগুলো আপেলের মাংসের মতো কাণ্ডযুক্ত। মাটির নিচে বেড়ে ওঠা দীর্ঘ শাখা-প্রশাখাযুক্ত রুসালার হাইফা প্রায়ই গাছের সঙ্গে একটি পারস্পরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। এসব মাশরুম ট্রাইমিথাইলঅ্যামিন যৌগ উৎপন্ন করে, যা এদের তীব্র মাছের গন্ধের উৎস।

নতুন আবিষ্কৃত প্রজাতির মধ্যে একটি হলো রুসালা ল্যাপোনিকা, যা সুইডেন, নরওয়ে এবং এস্তোনিয়ার মিশ্রিত বার্চ, স্প্রুস, পাইন, হ্যাজেল এবং অ্যাসপেন বনে পাওয়া গেছে। আরেকটি প্রজাতি, রুসালা নিওপাসকুয়া, যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো এবং মন্টানার রকি পর্বতমালার উইলো গাছের আশপাশে পাওয়া যায়। তৃতীয় প্রজাতি রুসালা অলিম্পিয়ানা প্রশান্ত মহাসাগরের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল এবং ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার বনভূমিতে দেখা যায়।

রাসুলা নিওপাসকুয়া কলোরাডো এবং মন্টানার উঁচু রকি পর্বত এলাকায় পাওয়া যায়। ছবি: বিবিসি
রাসুলা নিওপাসকুয়া কলোরাডো এবং মন্টানার উঁচু রকি পর্বত এলাকায় পাওয়া যায়। ছবি: বিবিসি

ভ্যাম্পায়ার হেজহগ

এই নতুন হেজহগ প্রজাতিটির শরীর কাটার বদলে নরম এবং খসখসে লোমে আবৃত। তবে এটির একমাত্র ‘কাঁটাযুক্ত’ বৈশিষ্ট্য এর মুখের ভেতর লুকিয়ে আছে। ভিয়েতনামে আবিষ্কৃত এই প্রজাতির পুরুষ হেজহগের লম্বা, ছুরি-সদৃশ দাঁত রয়েছে, যা এর বৈজ্ঞানিক নাম হাইলোমিস ম্যাকারং রাখার অনুপ্রেরণা দিয়েছে। উল্লেখ্য, ভিয়েতনামী ভাষায় ম্যাকারং অর্থ ভ্যাম্পায়ার।

১৪ সেন্টিমিটার লম্বা এবং দেখতে অনেকটা ইঁদুর ও ছুচোর মিশেল বলে মনে হওয়া এই লোমশ নিশাচর প্রাণীটির ছবি প্রথমবার ২০০৯ সালে রাশিয়ান-ভিয়েতনামী একটি গবেষণাকেন্দ্রের মাধ্যমে তোলা হয়েছিল। তবে প্রাণীটির একটি নমুনা ১৯৬১ সাল থেকেই ওয়াশিংটন ডিসির স্মিথসোনিয়ান ন্যাশনাল মিউজিয়ামের ধূলিমাখা সংগ্রহশালায় সংরক্ষিত ছিল, যা এত দিন উপেক্ষিত ছিল।

বিজ্ঞানীরা যখন বিভিন্ন জাদুঘরে সংরক্ষিত নরম-লোমযুক্ত হেজহগ প্রজাতিগুলোর নমুনা বিশ্লেষণ করেন এবং জেনেটিক বিশ্লেষণের সাহায্যে তুলনা করতে শুরু করেন, তখন তারা বুঝতে পারেন যে এটি বিজ্ঞানীদের কাছে সম্পূর্ণ নতুন একটি অজানা প্রজাতি। এই লম্বা দাঁতের সুনির্দিষ্ট আকৃতি এখনো রহস্যজনক, তবে পুরুষদের দাঁত অপেক্ষাকৃত বড় হওয়ায় ধারণা করা হয়, এটি সঙ্গী বাছাই প্রক্রিয়ায় ভূমিকা পালন করতে পারে।

হাইলোমিস ম্যাকারং বৃহত্তর মেকং অঞ্চলে গত বছর আবিষ্কৃত ২৩৪টি নতুন প্রজাতির একটি। কম্বোডিয়া, লাওস, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনামের মতো অঞ্চল এ এলাকার অন্তর্ভুক্ত। এটি এই অঞ্চলের জীববৈচিত্র্যের বৈচিত্র্যতাকে আরও একবার তুলে ধরেছে।

নতুন আবিষ্কৃত নরম-লোমযুক্ত হেজহগের পাঁচটি প্রজাতির মধ্যে একটি এটি। ছবি: বিবিসি
নতুন আবিষ্কৃত নরম-লোমযুক্ত হেজহগের পাঁচটি প্রজাতির মধ্যে একটি এটি। ছবি: বিবিসি

ভুতুড়ে পাম

২০২৪ সালে রয়্যাল বোটানিক গার্ডেনসের গবেষকদের আরেকটি রহস্যময় উদ্ভিদ আবিষ্কার হলো বোর্নিওর পশ্চিমাঞ্চলে পাওয়া এক ধরনের পামগাছ। এই গাছটির পাতা সাদা রঙের নিচের অংশ এবং ধূসর কাণ্ডের কারণে স্থানীয়ভাবে একে ‘উই মুকুপ’ বা ‘উই মুকাউপ’ নামে ডাকা হয়।

মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার সুরক্ষিত বর্ষা বনে পাওয়া এই তালগাছ ঐতিহ্যগতভাবে ঝুড়ি তৈরিতে ব্যবহৃত হতো, তবে এর কোনো বৈজ্ঞানিক নাম ছিল না। এবার একে প্লেকটোকমিওপসিস হান্তু নামে চিহ্নিত করা হয়েছে। ‘হান্তু’ শব্দটি ইন্দোনেশিয়া ও মালয় ভাষায় ‘ভূত’ বোঝায়, যা এর অদ্ভুত চেহারাকে প্রতিফলিত করে।

বোর্নিওর পশ্চিমাঞ্চলে পাওয়া যায় এই প্রজাতির পামগাছ। ছবি: বিবিসি
বোর্নিওর পশ্চিমাঞ্চলে পাওয়া যায় এই প্রজাতির পামগাছ। ছবি: বিবিসি

বাউন্টি ট্রগ

এটি কোনো একক আবিষ্কার নয়, বরং নিউজিল্যান্ডের দক্ষিণ দ্বীপের উপকূলের নিচের সমুদ্রতল ‘বাউন্টি ট্রগ’ নামে পরিচিত একটি এলাকাকে নতুন প্রজাতির খনি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সমুদ্র জরিপের অংশ হিসেবে, বিজ্ঞানীরা প্রায় ৪,৮০০ মিটার (১৫,৭৪৮ ফুট) গভীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছেন, যা ৮০০ কিলোমিটার (৪৯৮ মাইল) দীর্ঘ এই এলাকায় বিস্তৃত।

তিন সপ্তাহের অভিযানে প্রশান্ত মহাসাগরের নতুন সামুদ্রিক প্রজাতির বিশাল সংগ্রহ পাওয়া গেছে, যার মধ্যে ডজনখানেক মলাস্ক (শামুক-ঝিনুকজাতীয় খোলযুক্ত প্রাণী), তিনটি মাছ, একটি চিংড়ি এবং একটি নতুন প্রজাতির প্রবাল রয়েছে।

কাও ব্যাং ক্রোকোডাইল নিউট খুব লাজুক এক প্রাণী। ছবি: বিবিসি
কাও ব্যাং ক্রোকোডাইল নিউট খুব লাজুক এক প্রাণী। ছবি: বিবিসি

কাও ব্যাং ক্রোকোডাইল নিউট

নামটি বেশ ভয়ংকর মনে হলেও এই ছোট্ট উভচর প্রাণীটি ভীষণ লাজুক। ভিয়েতনামের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বনঘেরা পাহাড়ি পথে একটি খামারের ঝিরিতে পাথরের নিচে লুকিয়ে ছিল। এর নামকরণ করা হয়েছে টাইলোটোট্রিটন কোলিয়েনসিস। কোলিয়া মাউন্টেন পাস-এর কোলিয়া অর্গানিক খামারে পাওয়া যাওয়াতেই এমন নামকরণ।

এই ছোট্ট উভচর প্রাণীটির পিঠে কুমিরের মতো দেখতে হাড়ের খাঁজ ও গুটির মতো রয়েছে। তবে সাদৃশ্য এখানেই শেষ। বড় স্ত্রীদের দৈর্ঘ্য মাত্র ৭.৩ সেন্টিমিটার (২.৮ ইঞ্চি)। প্রাণীটি প্রায় সম্পূর্ণ কালো রঙের, তবে এর আঙুল ও পায়ের ডগাগুলো উজ্জ্বল কমলা। লেজের নিচের অংশে একটি কমলা রঙের দাগ রয়েছে।

ক্রোকোডাইল নিউট হলো পৃথিবীর সবচেয়ে বিপন্ন উভচর প্রাণীগুলোর একটি। কাও ব্যাং ক্রোকোডাইল নিউট আবিষ্কার করা রুশ, ভিয়েতনামী ও ফরাসি গবেষকেরা মনে করেন, এটি এর আত্মীয়দের মতো শিকারি এবং অবৈধ বন্যপ্রাণী ব্যবসার শিকার হতে পারে।

ইরো লিজে নামের এই পাইরেট স্পাইডার অন্য মাকড়সার জাল দখল করে, সেগুলোর বাসিন্দাদের হত্যা করে। ছবি: ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম
ইরো লিজে নামের এই পাইরেট স্পাইডার অন্য মাকড়সার জাল দখল করে, সেগুলোর বাসিন্দাদের হত্যা করে। ছবি: ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম

দস্যু মাকড়সা

আটলান্টিক মহাসাগরের একটি দূরবর্তী উষ্ণ দ্বীপে, গবেষকেরা দস্যু কিংবা ডাকাতের মতো আচরণ করে মাকড়সার এমন দুটি নতুন প্রজাতি আবিষ্কার করেছেন। এই মাকড়সাগুলো সেন্ট হেলেনার সংকটাপন্ন মেঘবন বা ক্লাউড ফরেস্টে বাস করে। সেন্ট হেলেনা হলো সাগরের মধ্যখানে অবস্থিত ব্রিটিশ শাসনাধীন একটি এলাকা। সেখানে তারা অন্য মাকড়সার জাল দখল করে সেই জালের বাসিন্দাদের হত্যা করার অভ্যাসে অভ্যস্ত।

ইরো লিজি এবং ইরো নাতাশি নামে এই প্রজাতিগুলোকে চিহ্নিত করা হয়েছে লন্ডনের ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম এবং বেলজিয়ামের রয়্যাল মিউজিয়াম অব সেন্ট্রাল আফ্রিকাতে সংরক্ষিত নমুনার ওপর জিনগত বিশ্লেষণ চালানোর পর। ৪ মিলিমিটার (০.১৫ ইঞ্চি) লম্বা ইরো লিজির শরীরের পেছনে দুই জোড়া কাটার মতো আবরণ রয়েছে। এগুলোর সুনির্দিষ্ট কাজ এখনো অজানা, তবে এটি একে ভয়ংকর একটি চেহারা দিয়েছে।

কারমিটপস গ্রেটাস হলো ২৭ কোটি বছর আগে পৃথিবীতে বাস করা এবং বর্তমানে বিলুপ্ত একটি স্যালামান্ডার। এর জীবাশ্মযুক্ত খুলি আধুনিক ব্যাঙের খুলি পাশে প্রদর্শিত হয়েছে। ছবি: স্মিথসোনিয়ান
কারমিটপস গ্রেটাস হলো ২৭ কোটি বছর আগে পৃথিবীতে বাস করা এবং বর্তমানে বিলুপ্ত একটি স্যালামান্ডার। এর জীবাশ্মযুক্ত খুলি আধুনিক ব্যাঙের খুলি পাশে প্রদর্শিত হয়েছে। ছবি: স্মিথসোনিয়ান

হাড়বহুল স্যালমান্ডার কেরমিট

বিখ্যাত এক ব্যাঙের নামে নামকরণ করা কেরমিটপস গ্র্যাটাস নামের প্রাণীটি জীবিত নেই, তবে এটি জীবাশ্ম হিসেবে সংরক্ষিত রয়েছে। গত চার দশক ধরে এই রহস্যময় জীবাশ্মটি ওয়াশিংটন ডিসির স্মিথসোনিয়ান ন্যাশনাল মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্ট্রির সংগ্রহে ছিল। এবার, ২০২৪ সালে, একে ধূলিমুক্ত করে নামকরণ করা হয়েছে।

নামে ব্যাঙের সঙ্গে মিল থাকলেও নতুন আবিষ্কৃত উভচর প্রাণীটি দেখতে অনেকটা মোটা হাড়ের সালামান্ডারের মতো। প্রায় ২৭ কোটি বছর আগে এটি বর্তমান টেক্সাস অঞ্চলে বাস করত এবং পোকামাকড় জাতীয় খাবার খেত।

এই অদ্ভুত মাথার আকৃতির মাছটি পেরুর আমাজনে একটি অভিযানে আবিষ্কৃত ২৭টি নতুন প্রজাতির মধ্যে একটি। ছবি: কনজারভেশন ইন্টারন্যাশনাল
এই অদ্ভুত মাথার আকৃতির মাছটি পেরুর আমাজনে একটি অভিযানে আবিষ্কৃত ২৭টি নতুন প্রজাতির মধ্যে একটি। ছবি: কনজারভেশন ইন্টারন্যাশনাল

ফুটকি ভরা মাথার মাছ এবং আধা-জলজ ইঁদুর

পেরুর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের আল্টো মায়ো এলাকায় ৩৮ দিনের অভিযানের সময়, গবেষকেরা ২৭টি নতুন প্রজাতি আবিষ্কার করেন, যার মধ্যে একটি বিরল উভচর ইঁদুর এবং একটি অদ্ভুত মাছ রয়েছে।

ফুটকি-মাথার এই অদ্ভুত মাছটিকে গবেষকেরা একটি বিস্ময়কর আবিষ্কার বলছেন। এর অদ্ভুত মাথার আকৃতি এখনো একটি রহস্য। ওই অঞ্চলের পাথুরে পাহাড়ি খরস্রোতা ঝিরিতে এটি পাওয়া যায়। এটি ক্যাটফিশের একটি প্রজাতি। যদিও এটি এলাকার আদিবাসী আওয়াজুনদের কাছে পরিচিত ছিল, তবে এটি বিজ্ঞানের জন্য সম্পূর্ণ নতুন।

অন্যদিকে, আধা-জলজ ইঁদুরটি একটি ছোট জলাভূমি বনে পাওয়া গেছে। এর পায়ের আঙুলে জাল থাকায় এটি জলজ পরিবেশে বসবাসের জন্য উপযুক্ত। তবে গবেষকেরা উল্লেখ করেছেন যে, এর বাসস্থান ইতিমধ্যেই কৃষির জন্য হুমকির সম্মুখীন।

এই অর্ধ জলজ ইঁদুর বিজ্ঞানীদের মতে নতুন প্রজাতি হতে পারে। ছবি: কনজারভেশন ইন্টারন্যাশনাল
এই অর্ধ জলজ ইঁদুর বিজ্ঞানীদের মতে নতুন প্রজাতি হতে পারে। ছবি: কনজারভেশন ইন্টারন্যাশনাল

জীববৈচিত্র্য সংকট

এ বছরের উদ্ভিদ, ছত্রাক এবং দুর্লভ প্রাণীদের আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের মধ্যে প্রচুর উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে। তবে, রয়্যাল বোটানিক গার্ডেনসের আফ্রিকা অঞ্চলের সিনিয়র গবেষণা নেতা মার্টিন চিক সতর্ক করে বলেছেন, এই আবিষ্কারগুলো মানুষের অনিয়ন্ত্রিত কার্যকলাপের কারণে জীববৈচিত্র্যের ওপর ‘ধ্বংসাত্মক’ প্রভাবের একটি বার্তা বহন করছে।

চিক বলেন, ‘আমরা ক্রমশই দেখতে পাচ্ছি যে নতুন প্রজাতিগুলো প্রায় বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে পাওয়া যাচ্ছে, অথবা কখনো কখনো আমরা তাদের খুঁজে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তারা বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। আর এর জন্য মানুষের কারণে তাদের বাসস্থান ধ্বংস হওয়াটাই সবচেয়ে বেশি দায়ী।’

চিক আরও বলেন, ‘জীববৈচিত্র্য সংকট আমাদের সবার ওপরই প্রভাব ফেলে। এখন সময় এসেছে এ বিষয়ে আরও সচেতন হওয়ার এবং বৈশ্বিক সংরক্ষণ প্রচেষ্টায় সক্রিয়ভাবে সমর্থন দেওয়ার। না হলে এমন একদিন ঘুম থেকে উঠে আমরা বুঝতে পারব, কিছু করার জন্য খুব দেরি হয়ে গেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাকার বাতাস সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর, আজও দূষণে শীর্ষে দিল্লি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ০২
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বেশ কিছুদিন ধরে দিল্লির বাতাসের অবস্থা দুর্যোগপূর্ণ। আজ বৃহস্পতিবার দূষিত শহরের তালিকার শীর্ষে রয়েছে শহরটি। অন্যদিকে ঢাকার বায়ুমান আজ সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর।

সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, আজ বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে সপ্তম স্থানে রয়েছে ঢাকা।

আইকিউএয়ারের সকাল ৮টা ৩০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী, ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স স্কোর ১৯০। যা নির্দেশ করে ঢাকার বাতাসের অবস্থা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর।

ঢাকার বেশ কিছু স্থানের বাতাসের অবস্থা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর থেকে খুব অস্বাস্থ্যকর। এর মধ্যে রয়েছে— কল্যাণপুর (২৬০), দক্ষিণ পল্লবী (২৫৬), বেজ এজওয়াটার আউটডোর (১৯৬), গোড়ান (১৯৬) ও বেচারাম দেউরি (১৯০)।

অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরেই দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে দিল্লি। শহরটির একিউআই স্কোর ৩১০। যা এই শহরের বাতাসকে ‘দুর্যোগপূর্ণ’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করেছে।

তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর (২৭০, খুব অস্বাস্থ্যকর), তৃতীয় স্থানে বসনিয়া-হার্জেগোভিনার সারাজেভ (২২৭, খুব অস্বাস্থ্যকর), চতুর্থ স্থানে রয়েছে পাকিস্তানের করাচি (২০১, খুব অস্বাস্থ্যকর) এবং পঞ্চম স্থানে রয়েছে মিসরের কায়রো (১৯৪, সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর)।

বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশিমাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্‌রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বাতাসের মূল ক্ষতিকারক উপাদান হলো ক্ষুদ্র বস্তুকণা বা পিএম ২.৫। এটি এতই সূক্ষ্ম যে তা ফুসফুসে এমনকি রক্তপ্রবাহেও প্রবেশ করতে পারে।

বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।

বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।

দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।

পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বেড়েছে ঢাকার তাপমাত্রা, জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

পৌষ মাসের তৃতীয় দিন আজ। শীতের মৌসুম চলে এলেও রাজধানী ঢাকায় বাড়ছে তাপমাত্রা। আজ বৃহস্পতিবার সকালের আবহাওয়া বুলেটিনে দেখা যায়, গতকালের তুলনায় আজ সকালে তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ সকাল ৬টায় ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল মঙ্গলবার ছিল ১৬ দশমিক ৬। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৯ শতাংশ।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের সকাল ৭টায় পরবর্তী ছয় ঘণ্টার জন্য ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। তবে আকাশ আংশিক মেঘলা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ সূর্যাস্ত ৫টা ১৫ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৩৬ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাকায় আজ সকালে তাপমাত্রা ১৬.৬

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ২৯
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রাজধানী ঢাকায় আকাশ আজ বুধবার ভোর থেকে ছিল হালকা কুয়াশাচ্ছন্ন। তবে হাড়কাঁপানো শীত পড়েনি।

আজ সারা দিন ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলের আবহাওয়া শুষ্ক থাকবে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ সকাল ৬টায় ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল মঙ্গলবার ছিল ১৬ দশমিক ৬। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮০ শতাংশ।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের সকাল ৭টায় পরবর্তী ছয় ঘণ্টার জন্য ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ সূর্যাস্ত ৫টা ১৪ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৩৫ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাকায় পড়েছে হালকা শীত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ০৬
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

মহান বিজয় দিবসের ছুটির দিনে আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানী ঢাকায় অনুভূত হচ্ছে হালকা শীত। তাপমাত্রাও গতকালের মতো রয়েছে ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ সকাল ৬টায় ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল সোমবার ছিল ১৭ দশমিক ১। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৯ শতাংশ।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের সকাল ৭টায় পরবর্তী ছয় ঘণ্টার জন্য ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আকাশ পরিষ্কার থাকবে। আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ সূর্যাস্ত ৫টা ১৪ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৩৫ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত