
এ বছর হাজারের বেশি নতুন প্রজাতি আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। এর মধ্যে কিছু প্রজাতি সত্যিই রীতিমতো অদ্ভুত। প্রশান্ত মহাসাগরের গভীর থেকে শুরু করে ভিয়েতনামের পর্বতমালা পর্যন্ত, পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে এ বছর অনেক অদ্ভুত এবং বিস্ময়কর নতুন উদ্ভিদ, প্রাণী এবং ছত্রাক আবিষ্কৃত হয়েছে। কিছু প্রজাতি এমন অঞ্চলে মিলেছে যেসব এলাকায় আগে খুব বেশি অনুসন্ধান করা হয়নি, আবার কিছু জিনিস জাদুঘরের কোনো একটি আলমারিতে লুকিয়ে থাকা অবস্থায় আবিষ্কৃত হয়েছে। এরা আমাদের গ্রহের জীবজগতের মূল্যবান বৈচিত্র্যই আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।
আর ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির সূত্রে এমন কিছু বিচিত্র প্রজাতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেব এখন।

মাছের গন্ধযুক্ত ছত্রাক
গত এক বছরে লন্ডনের রয়্যাল বোটানিক গার্ডেনস এবং এর সহযোগীরা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উদ্ভিদের ১৪৯টি এবং ছত্রাকের ২৩টি নতুন প্রজাতি শ্রেণিবদ্ধ করেছেন। এর মধ্যে তিনটি নতুন ছত্রাক তাদের স্বতন্ত্র মাছের গন্ধের জন্য বিশেষ নজর করেছে।
রুসালা গণে প্রায় ৮০০টি মাশরুম প্রজাতি শনাক্ত করা হয়েছে। এ মাশরুমগুলো আপেলের মাংসের মতো কাণ্ডযুক্ত। মাটির নিচে বেড়ে ওঠা দীর্ঘ শাখা-প্রশাখাযুক্ত রুসালার হাইফা প্রায়ই গাছের সঙ্গে একটি পারস্পরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। এসব মাশরুম ট্রাইমিথাইলঅ্যামিন যৌগ উৎপন্ন করে, যা এদের তীব্র মাছের গন্ধের উৎস।
নতুন আবিষ্কৃত প্রজাতির মধ্যে একটি হলো রুসালা ল্যাপোনিকা, যা সুইডেন, নরওয়ে এবং এস্তোনিয়ার মিশ্রিত বার্চ, স্প্রুস, পাইন, হ্যাজেল এবং অ্যাসপেন বনে পাওয়া গেছে। আরেকটি প্রজাতি, রুসালা নিওপাসকুয়া, যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো এবং মন্টানার রকি পর্বতমালার উইলো গাছের আশপাশে পাওয়া যায়। তৃতীয় প্রজাতি রুসালা অলিম্পিয়ানা প্রশান্ত মহাসাগরের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল এবং ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার বনভূমিতে দেখা যায়।

ভ্যাম্পায়ার হেজহগ
এই নতুন হেজহগ প্রজাতিটির শরীর কাটার বদলে নরম এবং খসখসে লোমে আবৃত। তবে এটির একমাত্র ‘কাঁটাযুক্ত’ বৈশিষ্ট্য এর মুখের ভেতর লুকিয়ে আছে। ভিয়েতনামে আবিষ্কৃত এই প্রজাতির পুরুষ হেজহগের লম্বা, ছুরি-সদৃশ দাঁত রয়েছে, যা এর বৈজ্ঞানিক নাম হাইলোমিস ম্যাকারং রাখার অনুপ্রেরণা দিয়েছে। উল্লেখ্য, ভিয়েতনামী ভাষায় ম্যাকারং অর্থ ভ্যাম্পায়ার।
১৪ সেন্টিমিটার লম্বা এবং দেখতে অনেকটা ইঁদুর ও ছুচোর মিশেল বলে মনে হওয়া এই লোমশ নিশাচর প্রাণীটির ছবি প্রথমবার ২০০৯ সালে রাশিয়ান-ভিয়েতনামী একটি গবেষণাকেন্দ্রের মাধ্যমে তোলা হয়েছিল। তবে প্রাণীটির একটি নমুনা ১৯৬১ সাল থেকেই ওয়াশিংটন ডিসির স্মিথসোনিয়ান ন্যাশনাল মিউজিয়ামের ধূলিমাখা সংগ্রহশালায় সংরক্ষিত ছিল, যা এত দিন উপেক্ষিত ছিল।
বিজ্ঞানীরা যখন বিভিন্ন জাদুঘরে সংরক্ষিত নরম-লোমযুক্ত হেজহগ প্রজাতিগুলোর নমুনা বিশ্লেষণ করেন এবং জেনেটিক বিশ্লেষণের সাহায্যে তুলনা করতে শুরু করেন, তখন তারা বুঝতে পারেন যে এটি বিজ্ঞানীদের কাছে সম্পূর্ণ নতুন একটি অজানা প্রজাতি। এই লম্বা দাঁতের সুনির্দিষ্ট আকৃতি এখনো রহস্যজনক, তবে পুরুষদের দাঁত অপেক্ষাকৃত বড় হওয়ায় ধারণা করা হয়, এটি সঙ্গী বাছাই প্রক্রিয়ায় ভূমিকা পালন করতে পারে।
হাইলোমিস ম্যাকারং বৃহত্তর মেকং অঞ্চলে গত বছর আবিষ্কৃত ২৩৪টি নতুন প্রজাতির একটি। কম্বোডিয়া, লাওস, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনামের মতো অঞ্চল এ এলাকার অন্তর্ভুক্ত। এটি এই অঞ্চলের জীববৈচিত্র্যের বৈচিত্র্যতাকে আরও একবার তুলে ধরেছে।

ভুতুড়ে পাম
২০২৪ সালে রয়্যাল বোটানিক গার্ডেনসের গবেষকদের আরেকটি রহস্যময় উদ্ভিদ আবিষ্কার হলো বোর্নিওর পশ্চিমাঞ্চলে পাওয়া এক ধরনের পামগাছ। এই গাছটির পাতা সাদা রঙের নিচের অংশ এবং ধূসর কাণ্ডের কারণে স্থানীয়ভাবে একে ‘উই মুকুপ’ বা ‘উই মুকাউপ’ নামে ডাকা হয়।
মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার সুরক্ষিত বর্ষা বনে পাওয়া এই তালগাছ ঐতিহ্যগতভাবে ঝুড়ি তৈরিতে ব্যবহৃত হতো, তবে এর কোনো বৈজ্ঞানিক নাম ছিল না। এবার একে প্লেকটোকমিওপসিস হান্তু নামে চিহ্নিত করা হয়েছে। ‘হান্তু’ শব্দটি ইন্দোনেশিয়া ও মালয় ভাষায় ‘ভূত’ বোঝায়, যা এর অদ্ভুত চেহারাকে প্রতিফলিত করে।

বাউন্টি ট্রগ
এটি কোনো একক আবিষ্কার নয়, বরং নিউজিল্যান্ডের দক্ষিণ দ্বীপের উপকূলের নিচের সমুদ্রতল ‘বাউন্টি ট্রগ’ নামে পরিচিত একটি এলাকাকে নতুন প্রজাতির খনি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সমুদ্র জরিপের অংশ হিসেবে, বিজ্ঞানীরা প্রায় ৪,৮০০ মিটার (১৫,৭৪৮ ফুট) গভীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছেন, যা ৮০০ কিলোমিটার (৪৯৮ মাইল) দীর্ঘ এই এলাকায় বিস্তৃত।
তিন সপ্তাহের অভিযানে প্রশান্ত মহাসাগরের নতুন সামুদ্রিক প্রজাতির বিশাল সংগ্রহ পাওয়া গেছে, যার মধ্যে ডজনখানেক মলাস্ক (শামুক-ঝিনুকজাতীয় খোলযুক্ত প্রাণী), তিনটি মাছ, একটি চিংড়ি এবং একটি নতুন প্রজাতির প্রবাল রয়েছে।

কাও ব্যাং ক্রোকোডাইল নিউট
নামটি বেশ ভয়ংকর মনে হলেও এই ছোট্ট উভচর প্রাণীটি ভীষণ লাজুক। ভিয়েতনামের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বনঘেরা পাহাড়ি পথে একটি খামারের ঝিরিতে পাথরের নিচে লুকিয়ে ছিল। এর নামকরণ করা হয়েছে টাইলোটোট্রিটন কোলিয়েনসিস। কোলিয়া মাউন্টেন পাস-এর কোলিয়া অর্গানিক খামারে পাওয়া যাওয়াতেই এমন নামকরণ।
এই ছোট্ট উভচর প্রাণীটির পিঠে কুমিরের মতো দেখতে হাড়ের খাঁজ ও গুটির মতো রয়েছে। তবে সাদৃশ্য এখানেই শেষ। বড় স্ত্রীদের দৈর্ঘ্য মাত্র ৭.৩ সেন্টিমিটার (২.৮ ইঞ্চি)। প্রাণীটি প্রায় সম্পূর্ণ কালো রঙের, তবে এর আঙুল ও পায়ের ডগাগুলো উজ্জ্বল কমলা। লেজের নিচের অংশে একটি কমলা রঙের দাগ রয়েছে।
ক্রোকোডাইল নিউট হলো পৃথিবীর সবচেয়ে বিপন্ন উভচর প্রাণীগুলোর একটি। কাও ব্যাং ক্রোকোডাইল নিউট আবিষ্কার করা রুশ, ভিয়েতনামী ও ফরাসি গবেষকেরা মনে করেন, এটি এর আত্মীয়দের মতো শিকারি এবং অবৈধ বন্যপ্রাণী ব্যবসার শিকার হতে পারে।

দস্যু মাকড়সা
আটলান্টিক মহাসাগরের একটি দূরবর্তী উষ্ণ দ্বীপে, গবেষকেরা দস্যু কিংবা ডাকাতের মতো আচরণ করে মাকড়সার এমন দুটি নতুন প্রজাতি আবিষ্কার করেছেন। এই মাকড়সাগুলো সেন্ট হেলেনার সংকটাপন্ন মেঘবন বা ক্লাউড ফরেস্টে বাস করে। সেন্ট হেলেনা হলো সাগরের মধ্যখানে অবস্থিত ব্রিটিশ শাসনাধীন একটি এলাকা। সেখানে তারা অন্য মাকড়সার জাল দখল করে সেই জালের বাসিন্দাদের হত্যা করার অভ্যাসে অভ্যস্ত।
ইরো লিজি এবং ইরো নাতাশি নামে এই প্রজাতিগুলোকে চিহ্নিত করা হয়েছে লন্ডনের ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম এবং বেলজিয়ামের রয়্যাল মিউজিয়াম অব সেন্ট্রাল আফ্রিকাতে সংরক্ষিত নমুনার ওপর জিনগত বিশ্লেষণ চালানোর পর। ৪ মিলিমিটার (০.১৫ ইঞ্চি) লম্বা ইরো লিজির শরীরের পেছনে দুই জোড়া কাটার মতো আবরণ রয়েছে। এগুলোর সুনির্দিষ্ট কাজ এখনো অজানা, তবে এটি একে ভয়ংকর একটি চেহারা দিয়েছে।

হাড়বহুল স্যালমান্ডার কেরমিট
বিখ্যাত এক ব্যাঙের নামে নামকরণ করা কেরমিটপস গ্র্যাটাস নামের প্রাণীটি জীবিত নেই, তবে এটি জীবাশ্ম হিসেবে সংরক্ষিত রয়েছে। গত চার দশক ধরে এই রহস্যময় জীবাশ্মটি ওয়াশিংটন ডিসির স্মিথসোনিয়ান ন্যাশনাল মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্ট্রির সংগ্রহে ছিল। এবার, ২০২৪ সালে, একে ধূলিমুক্ত করে নামকরণ করা হয়েছে।
নামে ব্যাঙের সঙ্গে মিল থাকলেও নতুন আবিষ্কৃত উভচর প্রাণীটি দেখতে অনেকটা মোটা হাড়ের সালামান্ডারের মতো। প্রায় ২৭ কোটি বছর আগে এটি বর্তমান টেক্সাস অঞ্চলে বাস করত এবং পোকামাকড় জাতীয় খাবার খেত।

ফুটকি ভরা মাথার মাছ এবং আধা-জলজ ইঁদুর
পেরুর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের আল্টো মায়ো এলাকায় ৩৮ দিনের অভিযানের সময়, গবেষকেরা ২৭টি নতুন প্রজাতি আবিষ্কার করেন, যার মধ্যে একটি বিরল উভচর ইঁদুর এবং একটি অদ্ভুত মাছ রয়েছে।
ফুটকি-মাথার এই অদ্ভুত মাছটিকে গবেষকেরা একটি বিস্ময়কর আবিষ্কার বলছেন। এর অদ্ভুত মাথার আকৃতি এখনো একটি রহস্য। ওই অঞ্চলের পাথুরে পাহাড়ি খরস্রোতা ঝিরিতে এটি পাওয়া যায়। এটি ক্যাটফিশের একটি প্রজাতি। যদিও এটি এলাকার আদিবাসী আওয়াজুনদের কাছে পরিচিত ছিল, তবে এটি বিজ্ঞানের জন্য সম্পূর্ণ নতুন।
অন্যদিকে, আধা-জলজ ইঁদুরটি একটি ছোট জলাভূমি বনে পাওয়া গেছে। এর পায়ের আঙুলে জাল থাকায় এটি জলজ পরিবেশে বসবাসের জন্য উপযুক্ত। তবে গবেষকেরা উল্লেখ করেছেন যে, এর বাসস্থান ইতিমধ্যেই কৃষির জন্য হুমকির সম্মুখীন।

জীববৈচিত্র্য সংকট
এ বছরের উদ্ভিদ, ছত্রাক এবং দুর্লভ প্রাণীদের আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের মধ্যে প্রচুর উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে। তবে, রয়্যাল বোটানিক গার্ডেনসের আফ্রিকা অঞ্চলের সিনিয়র গবেষণা নেতা মার্টিন চিক সতর্ক করে বলেছেন, এই আবিষ্কারগুলো মানুষের অনিয়ন্ত্রিত কার্যকলাপের কারণে জীববৈচিত্র্যের ওপর ‘ধ্বংসাত্মক’ প্রভাবের একটি বার্তা বহন করছে।
চিক বলেন, ‘আমরা ক্রমশই দেখতে পাচ্ছি যে নতুন প্রজাতিগুলো প্রায় বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে পাওয়া যাচ্ছে, অথবা কখনো কখনো আমরা তাদের খুঁজে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তারা বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। আর এর জন্য মানুষের কারণে তাদের বাসস্থান ধ্বংস হওয়াটাই সবচেয়ে বেশি দায়ী।’
চিক আরও বলেন, ‘জীববৈচিত্র্য সংকট আমাদের সবার ওপরই প্রভাব ফেলে। এখন সময় এসেছে এ বিষয়ে আরও সচেতন হওয়ার এবং বৈশ্বিক সংরক্ষণ প্রচেষ্টায় সক্রিয়ভাবে সমর্থন দেওয়ার। না হলে এমন একদিন ঘুম থেকে উঠে আমরা বুঝতে পারব, কিছু করার জন্য খুব দেরি হয়ে গেছে।’

এ বছর হাজারের বেশি নতুন প্রজাতি আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। এর মধ্যে কিছু প্রজাতি সত্যিই রীতিমতো অদ্ভুত। প্রশান্ত মহাসাগরের গভীর থেকে শুরু করে ভিয়েতনামের পর্বতমালা পর্যন্ত, পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে এ বছর অনেক অদ্ভুত এবং বিস্ময়কর নতুন উদ্ভিদ, প্রাণী এবং ছত্রাক আবিষ্কৃত হয়েছে। কিছু প্রজাতি এমন অঞ্চলে মিলেছে যেসব এলাকায় আগে খুব বেশি অনুসন্ধান করা হয়নি, আবার কিছু জিনিস জাদুঘরের কোনো একটি আলমারিতে লুকিয়ে থাকা অবস্থায় আবিষ্কৃত হয়েছে। এরা আমাদের গ্রহের জীবজগতের মূল্যবান বৈচিত্র্যই আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।
আর ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির সূত্রে এমন কিছু বিচিত্র প্রজাতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেব এখন।

মাছের গন্ধযুক্ত ছত্রাক
গত এক বছরে লন্ডনের রয়্যাল বোটানিক গার্ডেনস এবং এর সহযোগীরা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উদ্ভিদের ১৪৯টি এবং ছত্রাকের ২৩টি নতুন প্রজাতি শ্রেণিবদ্ধ করেছেন। এর মধ্যে তিনটি নতুন ছত্রাক তাদের স্বতন্ত্র মাছের গন্ধের জন্য বিশেষ নজর করেছে।
রুসালা গণে প্রায় ৮০০টি মাশরুম প্রজাতি শনাক্ত করা হয়েছে। এ মাশরুমগুলো আপেলের মাংসের মতো কাণ্ডযুক্ত। মাটির নিচে বেড়ে ওঠা দীর্ঘ শাখা-প্রশাখাযুক্ত রুসালার হাইফা প্রায়ই গাছের সঙ্গে একটি পারস্পরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। এসব মাশরুম ট্রাইমিথাইলঅ্যামিন যৌগ উৎপন্ন করে, যা এদের তীব্র মাছের গন্ধের উৎস।
নতুন আবিষ্কৃত প্রজাতির মধ্যে একটি হলো রুসালা ল্যাপোনিকা, যা সুইডেন, নরওয়ে এবং এস্তোনিয়ার মিশ্রিত বার্চ, স্প্রুস, পাইন, হ্যাজেল এবং অ্যাসপেন বনে পাওয়া গেছে। আরেকটি প্রজাতি, রুসালা নিওপাসকুয়া, যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো এবং মন্টানার রকি পর্বতমালার উইলো গাছের আশপাশে পাওয়া যায়। তৃতীয় প্রজাতি রুসালা অলিম্পিয়ানা প্রশান্ত মহাসাগরের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল এবং ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার বনভূমিতে দেখা যায়।

ভ্যাম্পায়ার হেজহগ
এই নতুন হেজহগ প্রজাতিটির শরীর কাটার বদলে নরম এবং খসখসে লোমে আবৃত। তবে এটির একমাত্র ‘কাঁটাযুক্ত’ বৈশিষ্ট্য এর মুখের ভেতর লুকিয়ে আছে। ভিয়েতনামে আবিষ্কৃত এই প্রজাতির পুরুষ হেজহগের লম্বা, ছুরি-সদৃশ দাঁত রয়েছে, যা এর বৈজ্ঞানিক নাম হাইলোমিস ম্যাকারং রাখার অনুপ্রেরণা দিয়েছে। উল্লেখ্য, ভিয়েতনামী ভাষায় ম্যাকারং অর্থ ভ্যাম্পায়ার।
১৪ সেন্টিমিটার লম্বা এবং দেখতে অনেকটা ইঁদুর ও ছুচোর মিশেল বলে মনে হওয়া এই লোমশ নিশাচর প্রাণীটির ছবি প্রথমবার ২০০৯ সালে রাশিয়ান-ভিয়েতনামী একটি গবেষণাকেন্দ্রের মাধ্যমে তোলা হয়েছিল। তবে প্রাণীটির একটি নমুনা ১৯৬১ সাল থেকেই ওয়াশিংটন ডিসির স্মিথসোনিয়ান ন্যাশনাল মিউজিয়ামের ধূলিমাখা সংগ্রহশালায় সংরক্ষিত ছিল, যা এত দিন উপেক্ষিত ছিল।
বিজ্ঞানীরা যখন বিভিন্ন জাদুঘরে সংরক্ষিত নরম-লোমযুক্ত হেজহগ প্রজাতিগুলোর নমুনা বিশ্লেষণ করেন এবং জেনেটিক বিশ্লেষণের সাহায্যে তুলনা করতে শুরু করেন, তখন তারা বুঝতে পারেন যে এটি বিজ্ঞানীদের কাছে সম্পূর্ণ নতুন একটি অজানা প্রজাতি। এই লম্বা দাঁতের সুনির্দিষ্ট আকৃতি এখনো রহস্যজনক, তবে পুরুষদের দাঁত অপেক্ষাকৃত বড় হওয়ায় ধারণা করা হয়, এটি সঙ্গী বাছাই প্রক্রিয়ায় ভূমিকা পালন করতে পারে।
হাইলোমিস ম্যাকারং বৃহত্তর মেকং অঞ্চলে গত বছর আবিষ্কৃত ২৩৪টি নতুন প্রজাতির একটি। কম্বোডিয়া, লাওস, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনামের মতো অঞ্চল এ এলাকার অন্তর্ভুক্ত। এটি এই অঞ্চলের জীববৈচিত্র্যের বৈচিত্র্যতাকে আরও একবার তুলে ধরেছে।

ভুতুড়ে পাম
২০২৪ সালে রয়্যাল বোটানিক গার্ডেনসের গবেষকদের আরেকটি রহস্যময় উদ্ভিদ আবিষ্কার হলো বোর্নিওর পশ্চিমাঞ্চলে পাওয়া এক ধরনের পামগাছ। এই গাছটির পাতা সাদা রঙের নিচের অংশ এবং ধূসর কাণ্ডের কারণে স্থানীয়ভাবে একে ‘উই মুকুপ’ বা ‘উই মুকাউপ’ নামে ডাকা হয়।
মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার সুরক্ষিত বর্ষা বনে পাওয়া এই তালগাছ ঐতিহ্যগতভাবে ঝুড়ি তৈরিতে ব্যবহৃত হতো, তবে এর কোনো বৈজ্ঞানিক নাম ছিল না। এবার একে প্লেকটোকমিওপসিস হান্তু নামে চিহ্নিত করা হয়েছে। ‘হান্তু’ শব্দটি ইন্দোনেশিয়া ও মালয় ভাষায় ‘ভূত’ বোঝায়, যা এর অদ্ভুত চেহারাকে প্রতিফলিত করে।

বাউন্টি ট্রগ
এটি কোনো একক আবিষ্কার নয়, বরং নিউজিল্যান্ডের দক্ষিণ দ্বীপের উপকূলের নিচের সমুদ্রতল ‘বাউন্টি ট্রগ’ নামে পরিচিত একটি এলাকাকে নতুন প্রজাতির খনি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সমুদ্র জরিপের অংশ হিসেবে, বিজ্ঞানীরা প্রায় ৪,৮০০ মিটার (১৫,৭৪৮ ফুট) গভীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছেন, যা ৮০০ কিলোমিটার (৪৯৮ মাইল) দীর্ঘ এই এলাকায় বিস্তৃত।
তিন সপ্তাহের অভিযানে প্রশান্ত মহাসাগরের নতুন সামুদ্রিক প্রজাতির বিশাল সংগ্রহ পাওয়া গেছে, যার মধ্যে ডজনখানেক মলাস্ক (শামুক-ঝিনুকজাতীয় খোলযুক্ত প্রাণী), তিনটি মাছ, একটি চিংড়ি এবং একটি নতুন প্রজাতির প্রবাল রয়েছে।

কাও ব্যাং ক্রোকোডাইল নিউট
নামটি বেশ ভয়ংকর মনে হলেও এই ছোট্ট উভচর প্রাণীটি ভীষণ লাজুক। ভিয়েতনামের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বনঘেরা পাহাড়ি পথে একটি খামারের ঝিরিতে পাথরের নিচে লুকিয়ে ছিল। এর নামকরণ করা হয়েছে টাইলোটোট্রিটন কোলিয়েনসিস। কোলিয়া মাউন্টেন পাস-এর কোলিয়া অর্গানিক খামারে পাওয়া যাওয়াতেই এমন নামকরণ।
এই ছোট্ট উভচর প্রাণীটির পিঠে কুমিরের মতো দেখতে হাড়ের খাঁজ ও গুটির মতো রয়েছে। তবে সাদৃশ্য এখানেই শেষ। বড় স্ত্রীদের দৈর্ঘ্য মাত্র ৭.৩ সেন্টিমিটার (২.৮ ইঞ্চি)। প্রাণীটি প্রায় সম্পূর্ণ কালো রঙের, তবে এর আঙুল ও পায়ের ডগাগুলো উজ্জ্বল কমলা। লেজের নিচের অংশে একটি কমলা রঙের দাগ রয়েছে।
ক্রোকোডাইল নিউট হলো পৃথিবীর সবচেয়ে বিপন্ন উভচর প্রাণীগুলোর একটি। কাও ব্যাং ক্রোকোডাইল নিউট আবিষ্কার করা রুশ, ভিয়েতনামী ও ফরাসি গবেষকেরা মনে করেন, এটি এর আত্মীয়দের মতো শিকারি এবং অবৈধ বন্যপ্রাণী ব্যবসার শিকার হতে পারে।

দস্যু মাকড়সা
আটলান্টিক মহাসাগরের একটি দূরবর্তী উষ্ণ দ্বীপে, গবেষকেরা দস্যু কিংবা ডাকাতের মতো আচরণ করে মাকড়সার এমন দুটি নতুন প্রজাতি আবিষ্কার করেছেন। এই মাকড়সাগুলো সেন্ট হেলেনার সংকটাপন্ন মেঘবন বা ক্লাউড ফরেস্টে বাস করে। সেন্ট হেলেনা হলো সাগরের মধ্যখানে অবস্থিত ব্রিটিশ শাসনাধীন একটি এলাকা। সেখানে তারা অন্য মাকড়সার জাল দখল করে সেই জালের বাসিন্দাদের হত্যা করার অভ্যাসে অভ্যস্ত।
ইরো লিজি এবং ইরো নাতাশি নামে এই প্রজাতিগুলোকে চিহ্নিত করা হয়েছে লন্ডনের ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম এবং বেলজিয়ামের রয়্যাল মিউজিয়াম অব সেন্ট্রাল আফ্রিকাতে সংরক্ষিত নমুনার ওপর জিনগত বিশ্লেষণ চালানোর পর। ৪ মিলিমিটার (০.১৫ ইঞ্চি) লম্বা ইরো লিজির শরীরের পেছনে দুই জোড়া কাটার মতো আবরণ রয়েছে। এগুলোর সুনির্দিষ্ট কাজ এখনো অজানা, তবে এটি একে ভয়ংকর একটি চেহারা দিয়েছে।

হাড়বহুল স্যালমান্ডার কেরমিট
বিখ্যাত এক ব্যাঙের নামে নামকরণ করা কেরমিটপস গ্র্যাটাস নামের প্রাণীটি জীবিত নেই, তবে এটি জীবাশ্ম হিসেবে সংরক্ষিত রয়েছে। গত চার দশক ধরে এই রহস্যময় জীবাশ্মটি ওয়াশিংটন ডিসির স্মিথসোনিয়ান ন্যাশনাল মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্ট্রির সংগ্রহে ছিল। এবার, ২০২৪ সালে, একে ধূলিমুক্ত করে নামকরণ করা হয়েছে।
নামে ব্যাঙের সঙ্গে মিল থাকলেও নতুন আবিষ্কৃত উভচর প্রাণীটি দেখতে অনেকটা মোটা হাড়ের সালামান্ডারের মতো। প্রায় ২৭ কোটি বছর আগে এটি বর্তমান টেক্সাস অঞ্চলে বাস করত এবং পোকামাকড় জাতীয় খাবার খেত।

ফুটকি ভরা মাথার মাছ এবং আধা-জলজ ইঁদুর
পেরুর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের আল্টো মায়ো এলাকায় ৩৮ দিনের অভিযানের সময়, গবেষকেরা ২৭টি নতুন প্রজাতি আবিষ্কার করেন, যার মধ্যে একটি বিরল উভচর ইঁদুর এবং একটি অদ্ভুত মাছ রয়েছে।
ফুটকি-মাথার এই অদ্ভুত মাছটিকে গবেষকেরা একটি বিস্ময়কর আবিষ্কার বলছেন। এর অদ্ভুত মাথার আকৃতি এখনো একটি রহস্য। ওই অঞ্চলের পাথুরে পাহাড়ি খরস্রোতা ঝিরিতে এটি পাওয়া যায়। এটি ক্যাটফিশের একটি প্রজাতি। যদিও এটি এলাকার আদিবাসী আওয়াজুনদের কাছে পরিচিত ছিল, তবে এটি বিজ্ঞানের জন্য সম্পূর্ণ নতুন।
অন্যদিকে, আধা-জলজ ইঁদুরটি একটি ছোট জলাভূমি বনে পাওয়া গেছে। এর পায়ের আঙুলে জাল থাকায় এটি জলজ পরিবেশে বসবাসের জন্য উপযুক্ত। তবে গবেষকেরা উল্লেখ করেছেন যে, এর বাসস্থান ইতিমধ্যেই কৃষির জন্য হুমকির সম্মুখীন।

জীববৈচিত্র্য সংকট
এ বছরের উদ্ভিদ, ছত্রাক এবং দুর্লভ প্রাণীদের আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের মধ্যে প্রচুর উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে। তবে, রয়্যাল বোটানিক গার্ডেনসের আফ্রিকা অঞ্চলের সিনিয়র গবেষণা নেতা মার্টিন চিক সতর্ক করে বলেছেন, এই আবিষ্কারগুলো মানুষের অনিয়ন্ত্রিত কার্যকলাপের কারণে জীববৈচিত্র্যের ওপর ‘ধ্বংসাত্মক’ প্রভাবের একটি বার্তা বহন করছে।
চিক বলেন, ‘আমরা ক্রমশই দেখতে পাচ্ছি যে নতুন প্রজাতিগুলো প্রায় বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে পাওয়া যাচ্ছে, অথবা কখনো কখনো আমরা তাদের খুঁজে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তারা বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। আর এর জন্য মানুষের কারণে তাদের বাসস্থান ধ্বংস হওয়াটাই সবচেয়ে বেশি দায়ী।’
চিক আরও বলেন, ‘জীববৈচিত্র্য সংকট আমাদের সবার ওপরই প্রভাব ফেলে। এখন সময় এসেছে এ বিষয়ে আরও সচেতন হওয়ার এবং বৈশ্বিক সংরক্ষণ প্রচেষ্টায় সক্রিয়ভাবে সমর্থন দেওয়ার। না হলে এমন একদিন ঘুম থেকে উঠে আমরা বুঝতে পারব, কিছু করার জন্য খুব দেরি হয়ে গেছে।’

এ বছর হাজারের বেশি নতুন প্রজাতি আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। এর মধ্যে কিছু প্রজাতি সত্যিই রীতিমতো অদ্ভুত। প্রশান্ত মহাসাগরের গভীর থেকে শুরু করে ভিয়েতনামের পর্বতমালা পর্যন্ত, পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে এ বছর অনেক অদ্ভুত এবং বিস্ময়কর নতুন উদ্ভিদ, প্রাণী এবং ছত্রাক আবিষ্কৃত হয়েছে। কিছু প্রজাতি এমন অঞ্চলে মিলেছে যেসব এলাকায় আগে খুব বেশি অনুসন্ধান করা হয়নি, আবার কিছু জিনিস জাদুঘরের কোনো একটি আলমারিতে লুকিয়ে থাকা অবস্থায় আবিষ্কৃত হয়েছে। এরা আমাদের গ্রহের জীবজগতের মূল্যবান বৈচিত্র্যই আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।
আর ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির সূত্রে এমন কিছু বিচিত্র প্রজাতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেব এখন।

মাছের গন্ধযুক্ত ছত্রাক
গত এক বছরে লন্ডনের রয়্যাল বোটানিক গার্ডেনস এবং এর সহযোগীরা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উদ্ভিদের ১৪৯টি এবং ছত্রাকের ২৩টি নতুন প্রজাতি শ্রেণিবদ্ধ করেছেন। এর মধ্যে তিনটি নতুন ছত্রাক তাদের স্বতন্ত্র মাছের গন্ধের জন্য বিশেষ নজর করেছে।
রুসালা গণে প্রায় ৮০০টি মাশরুম প্রজাতি শনাক্ত করা হয়েছে। এ মাশরুমগুলো আপেলের মাংসের মতো কাণ্ডযুক্ত। মাটির নিচে বেড়ে ওঠা দীর্ঘ শাখা-প্রশাখাযুক্ত রুসালার হাইফা প্রায়ই গাছের সঙ্গে একটি পারস্পরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। এসব মাশরুম ট্রাইমিথাইলঅ্যামিন যৌগ উৎপন্ন করে, যা এদের তীব্র মাছের গন্ধের উৎস।
নতুন আবিষ্কৃত প্রজাতির মধ্যে একটি হলো রুসালা ল্যাপোনিকা, যা সুইডেন, নরওয়ে এবং এস্তোনিয়ার মিশ্রিত বার্চ, স্প্রুস, পাইন, হ্যাজেল এবং অ্যাসপেন বনে পাওয়া গেছে। আরেকটি প্রজাতি, রুসালা নিওপাসকুয়া, যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো এবং মন্টানার রকি পর্বতমালার উইলো গাছের আশপাশে পাওয়া যায়। তৃতীয় প্রজাতি রুসালা অলিম্পিয়ানা প্রশান্ত মহাসাগরের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল এবং ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার বনভূমিতে দেখা যায়।

ভ্যাম্পায়ার হেজহগ
এই নতুন হেজহগ প্রজাতিটির শরীর কাটার বদলে নরম এবং খসখসে লোমে আবৃত। তবে এটির একমাত্র ‘কাঁটাযুক্ত’ বৈশিষ্ট্য এর মুখের ভেতর লুকিয়ে আছে। ভিয়েতনামে আবিষ্কৃত এই প্রজাতির পুরুষ হেজহগের লম্বা, ছুরি-সদৃশ দাঁত রয়েছে, যা এর বৈজ্ঞানিক নাম হাইলোমিস ম্যাকারং রাখার অনুপ্রেরণা দিয়েছে। উল্লেখ্য, ভিয়েতনামী ভাষায় ম্যাকারং অর্থ ভ্যাম্পায়ার।
১৪ সেন্টিমিটার লম্বা এবং দেখতে অনেকটা ইঁদুর ও ছুচোর মিশেল বলে মনে হওয়া এই লোমশ নিশাচর প্রাণীটির ছবি প্রথমবার ২০০৯ সালে রাশিয়ান-ভিয়েতনামী একটি গবেষণাকেন্দ্রের মাধ্যমে তোলা হয়েছিল। তবে প্রাণীটির একটি নমুনা ১৯৬১ সাল থেকেই ওয়াশিংটন ডিসির স্মিথসোনিয়ান ন্যাশনাল মিউজিয়ামের ধূলিমাখা সংগ্রহশালায় সংরক্ষিত ছিল, যা এত দিন উপেক্ষিত ছিল।
বিজ্ঞানীরা যখন বিভিন্ন জাদুঘরে সংরক্ষিত নরম-লোমযুক্ত হেজহগ প্রজাতিগুলোর নমুনা বিশ্লেষণ করেন এবং জেনেটিক বিশ্লেষণের সাহায্যে তুলনা করতে শুরু করেন, তখন তারা বুঝতে পারেন যে এটি বিজ্ঞানীদের কাছে সম্পূর্ণ নতুন একটি অজানা প্রজাতি। এই লম্বা দাঁতের সুনির্দিষ্ট আকৃতি এখনো রহস্যজনক, তবে পুরুষদের দাঁত অপেক্ষাকৃত বড় হওয়ায় ধারণা করা হয়, এটি সঙ্গী বাছাই প্রক্রিয়ায় ভূমিকা পালন করতে পারে।
হাইলোমিস ম্যাকারং বৃহত্তর মেকং অঞ্চলে গত বছর আবিষ্কৃত ২৩৪টি নতুন প্রজাতির একটি। কম্বোডিয়া, লাওস, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনামের মতো অঞ্চল এ এলাকার অন্তর্ভুক্ত। এটি এই অঞ্চলের জীববৈচিত্র্যের বৈচিত্র্যতাকে আরও একবার তুলে ধরেছে।

ভুতুড়ে পাম
২০২৪ সালে রয়্যাল বোটানিক গার্ডেনসের গবেষকদের আরেকটি রহস্যময় উদ্ভিদ আবিষ্কার হলো বোর্নিওর পশ্চিমাঞ্চলে পাওয়া এক ধরনের পামগাছ। এই গাছটির পাতা সাদা রঙের নিচের অংশ এবং ধূসর কাণ্ডের কারণে স্থানীয়ভাবে একে ‘উই মুকুপ’ বা ‘উই মুকাউপ’ নামে ডাকা হয়।
মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার সুরক্ষিত বর্ষা বনে পাওয়া এই তালগাছ ঐতিহ্যগতভাবে ঝুড়ি তৈরিতে ব্যবহৃত হতো, তবে এর কোনো বৈজ্ঞানিক নাম ছিল না। এবার একে প্লেকটোকমিওপসিস হান্তু নামে চিহ্নিত করা হয়েছে। ‘হান্তু’ শব্দটি ইন্দোনেশিয়া ও মালয় ভাষায় ‘ভূত’ বোঝায়, যা এর অদ্ভুত চেহারাকে প্রতিফলিত করে।

বাউন্টি ট্রগ
এটি কোনো একক আবিষ্কার নয়, বরং নিউজিল্যান্ডের দক্ষিণ দ্বীপের উপকূলের নিচের সমুদ্রতল ‘বাউন্টি ট্রগ’ নামে পরিচিত একটি এলাকাকে নতুন প্রজাতির খনি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সমুদ্র জরিপের অংশ হিসেবে, বিজ্ঞানীরা প্রায় ৪,৮০০ মিটার (১৫,৭৪৮ ফুট) গভীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছেন, যা ৮০০ কিলোমিটার (৪৯৮ মাইল) দীর্ঘ এই এলাকায় বিস্তৃত।
তিন সপ্তাহের অভিযানে প্রশান্ত মহাসাগরের নতুন সামুদ্রিক প্রজাতির বিশাল সংগ্রহ পাওয়া গেছে, যার মধ্যে ডজনখানেক মলাস্ক (শামুক-ঝিনুকজাতীয় খোলযুক্ত প্রাণী), তিনটি মাছ, একটি চিংড়ি এবং একটি নতুন প্রজাতির প্রবাল রয়েছে।

কাও ব্যাং ক্রোকোডাইল নিউট
নামটি বেশ ভয়ংকর মনে হলেও এই ছোট্ট উভচর প্রাণীটি ভীষণ লাজুক। ভিয়েতনামের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বনঘেরা পাহাড়ি পথে একটি খামারের ঝিরিতে পাথরের নিচে লুকিয়ে ছিল। এর নামকরণ করা হয়েছে টাইলোটোট্রিটন কোলিয়েনসিস। কোলিয়া মাউন্টেন পাস-এর কোলিয়া অর্গানিক খামারে পাওয়া যাওয়াতেই এমন নামকরণ।
এই ছোট্ট উভচর প্রাণীটির পিঠে কুমিরের মতো দেখতে হাড়ের খাঁজ ও গুটির মতো রয়েছে। তবে সাদৃশ্য এখানেই শেষ। বড় স্ত্রীদের দৈর্ঘ্য মাত্র ৭.৩ সেন্টিমিটার (২.৮ ইঞ্চি)। প্রাণীটি প্রায় সম্পূর্ণ কালো রঙের, তবে এর আঙুল ও পায়ের ডগাগুলো উজ্জ্বল কমলা। লেজের নিচের অংশে একটি কমলা রঙের দাগ রয়েছে।
ক্রোকোডাইল নিউট হলো পৃথিবীর সবচেয়ে বিপন্ন উভচর প্রাণীগুলোর একটি। কাও ব্যাং ক্রোকোডাইল নিউট আবিষ্কার করা রুশ, ভিয়েতনামী ও ফরাসি গবেষকেরা মনে করেন, এটি এর আত্মীয়দের মতো শিকারি এবং অবৈধ বন্যপ্রাণী ব্যবসার শিকার হতে পারে।

দস্যু মাকড়সা
আটলান্টিক মহাসাগরের একটি দূরবর্তী উষ্ণ দ্বীপে, গবেষকেরা দস্যু কিংবা ডাকাতের মতো আচরণ করে মাকড়সার এমন দুটি নতুন প্রজাতি আবিষ্কার করেছেন। এই মাকড়সাগুলো সেন্ট হেলেনার সংকটাপন্ন মেঘবন বা ক্লাউড ফরেস্টে বাস করে। সেন্ট হেলেনা হলো সাগরের মধ্যখানে অবস্থিত ব্রিটিশ শাসনাধীন একটি এলাকা। সেখানে তারা অন্য মাকড়সার জাল দখল করে সেই জালের বাসিন্দাদের হত্যা করার অভ্যাসে অভ্যস্ত।
ইরো লিজি এবং ইরো নাতাশি নামে এই প্রজাতিগুলোকে চিহ্নিত করা হয়েছে লন্ডনের ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম এবং বেলজিয়ামের রয়্যাল মিউজিয়াম অব সেন্ট্রাল আফ্রিকাতে সংরক্ষিত নমুনার ওপর জিনগত বিশ্লেষণ চালানোর পর। ৪ মিলিমিটার (০.১৫ ইঞ্চি) লম্বা ইরো লিজির শরীরের পেছনে দুই জোড়া কাটার মতো আবরণ রয়েছে। এগুলোর সুনির্দিষ্ট কাজ এখনো অজানা, তবে এটি একে ভয়ংকর একটি চেহারা দিয়েছে।

হাড়বহুল স্যালমান্ডার কেরমিট
বিখ্যাত এক ব্যাঙের নামে নামকরণ করা কেরমিটপস গ্র্যাটাস নামের প্রাণীটি জীবিত নেই, তবে এটি জীবাশ্ম হিসেবে সংরক্ষিত রয়েছে। গত চার দশক ধরে এই রহস্যময় জীবাশ্মটি ওয়াশিংটন ডিসির স্মিথসোনিয়ান ন্যাশনাল মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্ট্রির সংগ্রহে ছিল। এবার, ২০২৪ সালে, একে ধূলিমুক্ত করে নামকরণ করা হয়েছে।
নামে ব্যাঙের সঙ্গে মিল থাকলেও নতুন আবিষ্কৃত উভচর প্রাণীটি দেখতে অনেকটা মোটা হাড়ের সালামান্ডারের মতো। প্রায় ২৭ কোটি বছর আগে এটি বর্তমান টেক্সাস অঞ্চলে বাস করত এবং পোকামাকড় জাতীয় খাবার খেত।

ফুটকি ভরা মাথার মাছ এবং আধা-জলজ ইঁদুর
পেরুর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের আল্টো মায়ো এলাকায় ৩৮ দিনের অভিযানের সময়, গবেষকেরা ২৭টি নতুন প্রজাতি আবিষ্কার করেন, যার মধ্যে একটি বিরল উভচর ইঁদুর এবং একটি অদ্ভুত মাছ রয়েছে।
ফুটকি-মাথার এই অদ্ভুত মাছটিকে গবেষকেরা একটি বিস্ময়কর আবিষ্কার বলছেন। এর অদ্ভুত মাথার আকৃতি এখনো একটি রহস্য। ওই অঞ্চলের পাথুরে পাহাড়ি খরস্রোতা ঝিরিতে এটি পাওয়া যায়। এটি ক্যাটফিশের একটি প্রজাতি। যদিও এটি এলাকার আদিবাসী আওয়াজুনদের কাছে পরিচিত ছিল, তবে এটি বিজ্ঞানের জন্য সম্পূর্ণ নতুন।
অন্যদিকে, আধা-জলজ ইঁদুরটি একটি ছোট জলাভূমি বনে পাওয়া গেছে। এর পায়ের আঙুলে জাল থাকায় এটি জলজ পরিবেশে বসবাসের জন্য উপযুক্ত। তবে গবেষকেরা উল্লেখ করেছেন যে, এর বাসস্থান ইতিমধ্যেই কৃষির জন্য হুমকির সম্মুখীন।

জীববৈচিত্র্য সংকট
এ বছরের উদ্ভিদ, ছত্রাক এবং দুর্লভ প্রাণীদের আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের মধ্যে প্রচুর উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে। তবে, রয়্যাল বোটানিক গার্ডেনসের আফ্রিকা অঞ্চলের সিনিয়র গবেষণা নেতা মার্টিন চিক সতর্ক করে বলেছেন, এই আবিষ্কারগুলো মানুষের অনিয়ন্ত্রিত কার্যকলাপের কারণে জীববৈচিত্র্যের ওপর ‘ধ্বংসাত্মক’ প্রভাবের একটি বার্তা বহন করছে।
চিক বলেন, ‘আমরা ক্রমশই দেখতে পাচ্ছি যে নতুন প্রজাতিগুলো প্রায় বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে পাওয়া যাচ্ছে, অথবা কখনো কখনো আমরা তাদের খুঁজে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তারা বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। আর এর জন্য মানুষের কারণে তাদের বাসস্থান ধ্বংস হওয়াটাই সবচেয়ে বেশি দায়ী।’
চিক আরও বলেন, ‘জীববৈচিত্র্য সংকট আমাদের সবার ওপরই প্রভাব ফেলে। এখন সময় এসেছে এ বিষয়ে আরও সচেতন হওয়ার এবং বৈশ্বিক সংরক্ষণ প্রচেষ্টায় সক্রিয়ভাবে সমর্থন দেওয়ার। না হলে এমন একদিন ঘুম থেকে উঠে আমরা বুঝতে পারব, কিছু করার জন্য খুব দেরি হয়ে গেছে।’

এ বছর হাজারের বেশি নতুন প্রজাতি আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। এর মধ্যে কিছু প্রজাতি সত্যিই রীতিমতো অদ্ভুত। প্রশান্ত মহাসাগরের গভীর থেকে শুরু করে ভিয়েতনামের পর্বতমালা পর্যন্ত, পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে এ বছর অনেক অদ্ভুত এবং বিস্ময়কর নতুন উদ্ভিদ, প্রাণী এবং ছত্রাক আবিষ্কৃত হয়েছে। কিছু প্রজাতি এমন অঞ্চলে মিলেছে যেসব এলাকায় আগে খুব বেশি অনুসন্ধান করা হয়নি, আবার কিছু জিনিস জাদুঘরের কোনো একটি আলমারিতে লুকিয়ে থাকা অবস্থায় আবিষ্কৃত হয়েছে। এরা আমাদের গ্রহের জীবজগতের মূল্যবান বৈচিত্র্যই আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।
আর ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির সূত্রে এমন কিছু বিচিত্র প্রজাতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেব এখন।

মাছের গন্ধযুক্ত ছত্রাক
গত এক বছরে লন্ডনের রয়্যাল বোটানিক গার্ডেনস এবং এর সহযোগীরা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উদ্ভিদের ১৪৯টি এবং ছত্রাকের ২৩টি নতুন প্রজাতি শ্রেণিবদ্ধ করেছেন। এর মধ্যে তিনটি নতুন ছত্রাক তাদের স্বতন্ত্র মাছের গন্ধের জন্য বিশেষ নজর করেছে।
রুসালা গণে প্রায় ৮০০টি মাশরুম প্রজাতি শনাক্ত করা হয়েছে। এ মাশরুমগুলো আপেলের মাংসের মতো কাণ্ডযুক্ত। মাটির নিচে বেড়ে ওঠা দীর্ঘ শাখা-প্রশাখাযুক্ত রুসালার হাইফা প্রায়ই গাছের সঙ্গে একটি পারস্পরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। এসব মাশরুম ট্রাইমিথাইলঅ্যামিন যৌগ উৎপন্ন করে, যা এদের তীব্র মাছের গন্ধের উৎস।
নতুন আবিষ্কৃত প্রজাতির মধ্যে একটি হলো রুসালা ল্যাপোনিকা, যা সুইডেন, নরওয়ে এবং এস্তোনিয়ার মিশ্রিত বার্চ, স্প্রুস, পাইন, হ্যাজেল এবং অ্যাসপেন বনে পাওয়া গেছে। আরেকটি প্রজাতি, রুসালা নিওপাসকুয়া, যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো এবং মন্টানার রকি পর্বতমালার উইলো গাছের আশপাশে পাওয়া যায়। তৃতীয় প্রজাতি রুসালা অলিম্পিয়ানা প্রশান্ত মহাসাগরের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল এবং ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার বনভূমিতে দেখা যায়।

ভ্যাম্পায়ার হেজহগ
এই নতুন হেজহগ প্রজাতিটির শরীর কাটার বদলে নরম এবং খসখসে লোমে আবৃত। তবে এটির একমাত্র ‘কাঁটাযুক্ত’ বৈশিষ্ট্য এর মুখের ভেতর লুকিয়ে আছে। ভিয়েতনামে আবিষ্কৃত এই প্রজাতির পুরুষ হেজহগের লম্বা, ছুরি-সদৃশ দাঁত রয়েছে, যা এর বৈজ্ঞানিক নাম হাইলোমিস ম্যাকারং রাখার অনুপ্রেরণা দিয়েছে। উল্লেখ্য, ভিয়েতনামী ভাষায় ম্যাকারং অর্থ ভ্যাম্পায়ার।
১৪ সেন্টিমিটার লম্বা এবং দেখতে অনেকটা ইঁদুর ও ছুচোর মিশেল বলে মনে হওয়া এই লোমশ নিশাচর প্রাণীটির ছবি প্রথমবার ২০০৯ সালে রাশিয়ান-ভিয়েতনামী একটি গবেষণাকেন্দ্রের মাধ্যমে তোলা হয়েছিল। তবে প্রাণীটির একটি নমুনা ১৯৬১ সাল থেকেই ওয়াশিংটন ডিসির স্মিথসোনিয়ান ন্যাশনাল মিউজিয়ামের ধূলিমাখা সংগ্রহশালায় সংরক্ষিত ছিল, যা এত দিন উপেক্ষিত ছিল।
বিজ্ঞানীরা যখন বিভিন্ন জাদুঘরে সংরক্ষিত নরম-লোমযুক্ত হেজহগ প্রজাতিগুলোর নমুনা বিশ্লেষণ করেন এবং জেনেটিক বিশ্লেষণের সাহায্যে তুলনা করতে শুরু করেন, তখন তারা বুঝতে পারেন যে এটি বিজ্ঞানীদের কাছে সম্পূর্ণ নতুন একটি অজানা প্রজাতি। এই লম্বা দাঁতের সুনির্দিষ্ট আকৃতি এখনো রহস্যজনক, তবে পুরুষদের দাঁত অপেক্ষাকৃত বড় হওয়ায় ধারণা করা হয়, এটি সঙ্গী বাছাই প্রক্রিয়ায় ভূমিকা পালন করতে পারে।
হাইলোমিস ম্যাকারং বৃহত্তর মেকং অঞ্চলে গত বছর আবিষ্কৃত ২৩৪টি নতুন প্রজাতির একটি। কম্বোডিয়া, লাওস, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনামের মতো অঞ্চল এ এলাকার অন্তর্ভুক্ত। এটি এই অঞ্চলের জীববৈচিত্র্যের বৈচিত্র্যতাকে আরও একবার তুলে ধরেছে।

ভুতুড়ে পাম
২০২৪ সালে রয়্যাল বোটানিক গার্ডেনসের গবেষকদের আরেকটি রহস্যময় উদ্ভিদ আবিষ্কার হলো বোর্নিওর পশ্চিমাঞ্চলে পাওয়া এক ধরনের পামগাছ। এই গাছটির পাতা সাদা রঙের নিচের অংশ এবং ধূসর কাণ্ডের কারণে স্থানীয়ভাবে একে ‘উই মুকুপ’ বা ‘উই মুকাউপ’ নামে ডাকা হয়।
মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার সুরক্ষিত বর্ষা বনে পাওয়া এই তালগাছ ঐতিহ্যগতভাবে ঝুড়ি তৈরিতে ব্যবহৃত হতো, তবে এর কোনো বৈজ্ঞানিক নাম ছিল না। এবার একে প্লেকটোকমিওপসিস হান্তু নামে চিহ্নিত করা হয়েছে। ‘হান্তু’ শব্দটি ইন্দোনেশিয়া ও মালয় ভাষায় ‘ভূত’ বোঝায়, যা এর অদ্ভুত চেহারাকে প্রতিফলিত করে।

বাউন্টি ট্রগ
এটি কোনো একক আবিষ্কার নয়, বরং নিউজিল্যান্ডের দক্ষিণ দ্বীপের উপকূলের নিচের সমুদ্রতল ‘বাউন্টি ট্রগ’ নামে পরিচিত একটি এলাকাকে নতুন প্রজাতির খনি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সমুদ্র জরিপের অংশ হিসেবে, বিজ্ঞানীরা প্রায় ৪,৮০০ মিটার (১৫,৭৪৮ ফুট) গভীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছেন, যা ৮০০ কিলোমিটার (৪৯৮ মাইল) দীর্ঘ এই এলাকায় বিস্তৃত।
তিন সপ্তাহের অভিযানে প্রশান্ত মহাসাগরের নতুন সামুদ্রিক প্রজাতির বিশাল সংগ্রহ পাওয়া গেছে, যার মধ্যে ডজনখানেক মলাস্ক (শামুক-ঝিনুকজাতীয় খোলযুক্ত প্রাণী), তিনটি মাছ, একটি চিংড়ি এবং একটি নতুন প্রজাতির প্রবাল রয়েছে।

কাও ব্যাং ক্রোকোডাইল নিউট
নামটি বেশ ভয়ংকর মনে হলেও এই ছোট্ট উভচর প্রাণীটি ভীষণ লাজুক। ভিয়েতনামের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বনঘেরা পাহাড়ি পথে একটি খামারের ঝিরিতে পাথরের নিচে লুকিয়ে ছিল। এর নামকরণ করা হয়েছে টাইলোটোট্রিটন কোলিয়েনসিস। কোলিয়া মাউন্টেন পাস-এর কোলিয়া অর্গানিক খামারে পাওয়া যাওয়াতেই এমন নামকরণ।
এই ছোট্ট উভচর প্রাণীটির পিঠে কুমিরের মতো দেখতে হাড়ের খাঁজ ও গুটির মতো রয়েছে। তবে সাদৃশ্য এখানেই শেষ। বড় স্ত্রীদের দৈর্ঘ্য মাত্র ৭.৩ সেন্টিমিটার (২.৮ ইঞ্চি)। প্রাণীটি প্রায় সম্পূর্ণ কালো রঙের, তবে এর আঙুল ও পায়ের ডগাগুলো উজ্জ্বল কমলা। লেজের নিচের অংশে একটি কমলা রঙের দাগ রয়েছে।
ক্রোকোডাইল নিউট হলো পৃথিবীর সবচেয়ে বিপন্ন উভচর প্রাণীগুলোর একটি। কাও ব্যাং ক্রোকোডাইল নিউট আবিষ্কার করা রুশ, ভিয়েতনামী ও ফরাসি গবেষকেরা মনে করেন, এটি এর আত্মীয়দের মতো শিকারি এবং অবৈধ বন্যপ্রাণী ব্যবসার শিকার হতে পারে।

দস্যু মাকড়সা
আটলান্টিক মহাসাগরের একটি দূরবর্তী উষ্ণ দ্বীপে, গবেষকেরা দস্যু কিংবা ডাকাতের মতো আচরণ করে মাকড়সার এমন দুটি নতুন প্রজাতি আবিষ্কার করেছেন। এই মাকড়সাগুলো সেন্ট হেলেনার সংকটাপন্ন মেঘবন বা ক্লাউড ফরেস্টে বাস করে। সেন্ট হেলেনা হলো সাগরের মধ্যখানে অবস্থিত ব্রিটিশ শাসনাধীন একটি এলাকা। সেখানে তারা অন্য মাকড়সার জাল দখল করে সেই জালের বাসিন্দাদের হত্যা করার অভ্যাসে অভ্যস্ত।
ইরো লিজি এবং ইরো নাতাশি নামে এই প্রজাতিগুলোকে চিহ্নিত করা হয়েছে লন্ডনের ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম এবং বেলজিয়ামের রয়্যাল মিউজিয়াম অব সেন্ট্রাল আফ্রিকাতে সংরক্ষিত নমুনার ওপর জিনগত বিশ্লেষণ চালানোর পর। ৪ মিলিমিটার (০.১৫ ইঞ্চি) লম্বা ইরো লিজির শরীরের পেছনে দুই জোড়া কাটার মতো আবরণ রয়েছে। এগুলোর সুনির্দিষ্ট কাজ এখনো অজানা, তবে এটি একে ভয়ংকর একটি চেহারা দিয়েছে।

হাড়বহুল স্যালমান্ডার কেরমিট
বিখ্যাত এক ব্যাঙের নামে নামকরণ করা কেরমিটপস গ্র্যাটাস নামের প্রাণীটি জীবিত নেই, তবে এটি জীবাশ্ম হিসেবে সংরক্ষিত রয়েছে। গত চার দশক ধরে এই রহস্যময় জীবাশ্মটি ওয়াশিংটন ডিসির স্মিথসোনিয়ান ন্যাশনাল মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্ট্রির সংগ্রহে ছিল। এবার, ২০২৪ সালে, একে ধূলিমুক্ত করে নামকরণ করা হয়েছে।
নামে ব্যাঙের সঙ্গে মিল থাকলেও নতুন আবিষ্কৃত উভচর প্রাণীটি দেখতে অনেকটা মোটা হাড়ের সালামান্ডারের মতো। প্রায় ২৭ কোটি বছর আগে এটি বর্তমান টেক্সাস অঞ্চলে বাস করত এবং পোকামাকড় জাতীয় খাবার খেত।

ফুটকি ভরা মাথার মাছ এবং আধা-জলজ ইঁদুর
পেরুর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের আল্টো মায়ো এলাকায় ৩৮ দিনের অভিযানের সময়, গবেষকেরা ২৭টি নতুন প্রজাতি আবিষ্কার করেন, যার মধ্যে একটি বিরল উভচর ইঁদুর এবং একটি অদ্ভুত মাছ রয়েছে।
ফুটকি-মাথার এই অদ্ভুত মাছটিকে গবেষকেরা একটি বিস্ময়কর আবিষ্কার বলছেন। এর অদ্ভুত মাথার আকৃতি এখনো একটি রহস্য। ওই অঞ্চলের পাথুরে পাহাড়ি খরস্রোতা ঝিরিতে এটি পাওয়া যায়। এটি ক্যাটফিশের একটি প্রজাতি। যদিও এটি এলাকার আদিবাসী আওয়াজুনদের কাছে পরিচিত ছিল, তবে এটি বিজ্ঞানের জন্য সম্পূর্ণ নতুন।
অন্যদিকে, আধা-জলজ ইঁদুরটি একটি ছোট জলাভূমি বনে পাওয়া গেছে। এর পায়ের আঙুলে জাল থাকায় এটি জলজ পরিবেশে বসবাসের জন্য উপযুক্ত। তবে গবেষকেরা উল্লেখ করেছেন যে, এর বাসস্থান ইতিমধ্যেই কৃষির জন্য হুমকির সম্মুখীন।

জীববৈচিত্র্য সংকট
এ বছরের উদ্ভিদ, ছত্রাক এবং দুর্লভ প্রাণীদের আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের মধ্যে প্রচুর উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে। তবে, রয়্যাল বোটানিক গার্ডেনসের আফ্রিকা অঞ্চলের সিনিয়র গবেষণা নেতা মার্টিন চিক সতর্ক করে বলেছেন, এই আবিষ্কারগুলো মানুষের অনিয়ন্ত্রিত কার্যকলাপের কারণে জীববৈচিত্র্যের ওপর ‘ধ্বংসাত্মক’ প্রভাবের একটি বার্তা বহন করছে।
চিক বলেন, ‘আমরা ক্রমশই দেখতে পাচ্ছি যে নতুন প্রজাতিগুলো প্রায় বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে পাওয়া যাচ্ছে, অথবা কখনো কখনো আমরা তাদের খুঁজে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তারা বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। আর এর জন্য মানুষের কারণে তাদের বাসস্থান ধ্বংস হওয়াটাই সবচেয়ে বেশি দায়ী।’
চিক আরও বলেন, ‘জীববৈচিত্র্য সংকট আমাদের সবার ওপরই প্রভাব ফেলে। এখন সময় এসেছে এ বিষয়ে আরও সচেতন হওয়ার এবং বৈশ্বিক সংরক্ষণ প্রচেষ্টায় সক্রিয়ভাবে সমর্থন দেওয়ার। না হলে এমন একদিন ঘুম থেকে উঠে আমরা বুঝতে পারব, কিছু করার জন্য খুব দেরি হয়ে গেছে।’

রৌদ্রোজ্জ্বল ঢাকায় আজ শুক্রবার ছুটির দিনে সকালে হালকা কুয়াশার দেখা মিলেছে। তবে হাড়কাঁপানো শীত না পড়লেও বইছে মিষ্টি হিমেল বাতাস। আজ সারা দিন রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলে আকাশ পরিষ্কার থাকবে, আবহাওয়াও থাকবে শুষ্ক।
৯ ঘণ্টা আগে
আজ বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৬টা। সূর্যের আলো যখন পুরোপুরি ফুটে ওঠেনি, ঠিক তখনই ভূমিকম্পে আবারও কেঁপে উঠল রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চল। রিখটার স্কেলে এই ভূকম্পনের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ১। উৎপত্তিস্থল ঢাকা থেকে ৩৮ কিলোমিটার দূরে নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার পাটুয়ারপাড় এলাকা।
১ দিন আগে
শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলো বিশ্বের দূষিত শহর তালিকায় শুরুর দশের মধ্যে অবস্থান করছে। এর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই এ তালিকায় শীর্ষে ছিল ভারতের দিল্লি।
১ দিন আগে
রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় ছিল ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল ছিল ১৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের বেলা আজকের এই তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

রৌদ্রোজ্জ্বল ঢাকায় আজ শুক্রবার সকালে হালকা কুয়াশার দেখা মিলেছে। তবে হাড়কাঁপানো শীত না পড়লেও বইছে মিষ্টি হিমেল বাতাস। আজ সারা দিন রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলে আকাশ পরিষ্কার থাকবে, আবহাওয়াও থাকবে শুষ্ক।
আজ সকাল ৭টায় ঢাকা ও আশপাশ এলাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সকাল ৬টায় রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮৯ শতাংশ। এদিন দুপুর পর্যন্ত ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার ওপর দিয়ে উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে।
আজ ঢাকায় সূর্যাস্তের সময় সন্ধ্যা ৫টা ১১ মিনিটে, আগামীকাল সূর্যাস্ত ৬টা ২৮ মিনিটে।

রৌদ্রোজ্জ্বল ঢাকায় আজ শুক্রবার সকালে হালকা কুয়াশার দেখা মিলেছে। তবে হাড়কাঁপানো শীত না পড়লেও বইছে মিষ্টি হিমেল বাতাস। আজ সারা দিন রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলে আকাশ পরিষ্কার থাকবে, আবহাওয়াও থাকবে শুষ্ক।
আজ সকাল ৭টায় ঢাকা ও আশপাশ এলাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সকাল ৬টায় রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮৯ শতাংশ। এদিন দুপুর পর্যন্ত ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার ওপর দিয়ে উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে।
আজ ঢাকায় সূর্যাস্তের সময় সন্ধ্যা ৫টা ১১ মিনিটে, আগামীকাল সূর্যাস্ত ৬টা ২৮ মিনিটে।

এ বছর হাজারের বেশি নতুন প্রজাতি আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। এর মধ্যে কিছু প্রজাতি সত্যিই রীতিমতো অদ্ভুত। প্রশান্ত মহাসাগরের গভীর থেকে শুরু করে ভিয়েতনামের পর্বতমালা পর্যন্ত, পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে এ বছর অনেক অদ্ভুত এবং বিস্ময়কর নতুন উদ্ভিদ, প্রাণী এবং ছত্রাক আবিষ্কৃত হয়েছে। কিছু প্রজাতি এমন অঞ্চ
৩০ ডিসেম্বর ২০২৪
আজ বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৬টা। সূর্যের আলো যখন পুরোপুরি ফুটে ওঠেনি, ঠিক তখনই ভূমিকম্পে আবারও কেঁপে উঠল রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চল। রিখটার স্কেলে এই ভূকম্পনের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ১। উৎপত্তিস্থল ঢাকা থেকে ৩৮ কিলোমিটার দূরে নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার পাটুয়ারপাড় এলাকা।
১ দিন আগে
শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলো বিশ্বের দূষিত শহর তালিকায় শুরুর দশের মধ্যে অবস্থান করছে। এর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই এ তালিকায় শীর্ষে ছিল ভারতের দিল্লি।
১ দিন আগে
রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় ছিল ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল ছিল ১৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের বেলা আজকের এই তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

আজ বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৬টা। সূর্যের আলো যখন পুরোপুরি ফুটে ওঠেনি, ঠিক তখনই ভূমিকম্পে আবারও কেঁপে উঠল রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চল। রিখটার স্কেলে এই ভূকম্পনের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ১। উৎপত্তিস্থল ঢাকা থেকে ৩৮ কিলোমিটার দূরে নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার পাটুয়ারপাড় এলাকা।
আর এই ভূকম্পনেই আতঙ্কিত হয়ে ওঠে ঢাকার নগরজীবন থেকে শুরু করে সারা দেশের মানুষ। আতঙ্কিত হয়ে ওঠাই স্বাভাবিক। কারণ, এক-দুবার নয়, মাত্র ১৪ দিনে বাংলাদেশে একাধিকবার ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে। এর মধ্যে চারটি ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল নরসিংদী, গাজীপুরের মতো ঢাকার আশপাশের অঞ্চল ছিল বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আর সবচেয়ে বড় ভূমিকম্পটি হয় গত ২১ নভেম্বর। ওই দিন ৫ দশমিক ৭ মাত্রার এক ভূমিকম্পে ঢাকাসহ সারা দেশ কেঁপে উঠেছিল।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর বাংলাদেশেই উৎপত্তিস্থল ছিল পাঁচটি ভূমিকম্পের। এর প্রথমটি ছিল ২১ নভেম্বরের ঠিক দুই মাস আগে ২১ সেপ্টেম্বর। এদিন ৪ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এর উৎপত্তি হয় সিলেটের ছাতকে।
এরপরের ভূমিকম্প ছিল ২১ নভেম্বর, মাত্রা ৫ দশমিক ৭। পরদিন ২২ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টা ৬ মিনিটে ৪ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদী জেলার কালীগঞ্জ। এর ৫ দিন পর, ২৭ নভেম্বর বিকেল সোয়া ৪টায় ৪ মাত্রার ভূমিকম্প হয়, উৎপত্তিস্থল ঢাকার পাশের জেলা গাজীপুরের টঙ্গীর ঢালাদিয়া এলাকা।
কতবার ভূকম্পন হলো
তবে বারবার ভূমিকম্প কেবল বাংলাদেশেই নয়, সীমান্তঘেঁষা মিয়ানমার, ভারত, নেপাল, এমনকি চীনের তিব্বত সীমান্তেও ঘন ঘন ভূমিকম্প হচ্ছে। চলতি বছরের ১১ মাসে এই অঞ্চলে ২৮৫ বার ভূমিকম্প হয়েছে। এর কোনোটিই ৪ মাত্রার নিচে ছিল না।
গত সোমবার ১ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে মিয়ানমারের ফালামে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প হয়। ফলে চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকেও এটি অনুভূত হয়েছে। ঢাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র থেকে উৎপত্তিস্থলের দূরত্ব ছিল ৪৩১ কিলোমিটার। ওই ভূমিকম্প বাংলাদেশ সময় রাত ১২টা ৫৫ মিনিট ১৬ সেকেন্ডে অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৯।
বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে বিবিসি বাংলা জানিয়েছে, টেকটোনিক প্লেটে বাংলাদেশের যে অবস্থান, তাতে দুটো প্লেটের সংযোগস্থল রয়েছে, পশ্চিমে ইন্ডিয়ান প্লেট আর পূর্ব দিকে বার্মা প্লেট। আর বাংলাদেশের উত্তর দিকে আছে ইউরেশিয়ান প্লেট।

ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বিবিসি বাংলাকে বলেন, ভারতীয় প্লেটটি ধীরে ধীরে পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বার্মা প্লেটের নিচে, অর্থাৎ চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রামের নিচে তলিয়ে যাচ্ছে। আর এই তলিয়ে যাওয়ার কারণে একটা সাবডাকশন জোনের তৈরি হয়েছে।
হুমায়ুন আখতার আরও বলেন, ‘এই জোনের ব্যাপ্তি সিলেট থেকে টেকনাফ পর্যন্ত বিস্তৃত। পুরো চট্টগ্রাম অঞ্চল এর মধ্যে পড়েছে। এখানে বিভিন্ন সেগমেন্ট আছে। আমাদের এই সেগমেন্টে ৮.২ থেকে ৯ মাত্রার শক্তি জমা হয়ে আছে। এটা বের হতেই হবে।’ তাঁর মতে, ‘এখানে প্লেট লকড হয়ে ছিল। এর অতি সামান্য ক্ষুদ্রাংশ খুলল বলেই শুক্রবারের ভূমিকম্প হয়েছে। এটিই ধারণা দেয় যে সামনে বড় ভূমিকম্প আমাদের দ্বারপ্রান্তে আছে।’
আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ
তবে ভূমিকম্প নিয়ে উৎকণ্ঠিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ভূতত্ত্ববিদ ও ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মো. মমিনুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, এখন যেসব ভূকম্পন, সেগুলো হলো ২১ নভেম্বর ভূমিকম্পের ‘আফটার শক’।
২০১১ সালের ১১ মার্চ জাপানের হনশু দ্বীপের টোহুকু অঞ্চলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প এবং এর জেরে সৃষ্ট সুনামির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওই ঘটনার পর কেবল ৬ মাত্রারই ৪৫০ বার আফটার শক হয়েছিল জাপানে। আরও অসংখ্যবার ছোট ছোট আফটার শক হয়েছিল তখন।
ভূকম্পনবিদ্যার গবেষক মমিনুল ইসলাম আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে ২১ নভেম্বরের পর একাধিকবার আফটার শক হচ্ছে। এই আফটার শক বহুদিন ধরে হতে পারে, কমপক্ষে আরও তিন মাস হতে পারে। ২ মাত্রার নিচের ভূকম্পনগুলো আমাদের (বাংলাদেশে) সিস্টেমে ধরা পড়ে না।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৬টা। সূর্যের আলো যখন পুরোপুরি ফুটে ওঠেনি, ঠিক তখনই ভূমিকম্পে আবারও কেঁপে উঠল রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চল। রিখটার স্কেলে এই ভূকম্পনের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ১। উৎপত্তিস্থল ঢাকা থেকে ৩৮ কিলোমিটার দূরে নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার পাটুয়ারপাড় এলাকা।
আর এই ভূকম্পনেই আতঙ্কিত হয়ে ওঠে ঢাকার নগরজীবন থেকে শুরু করে সারা দেশের মানুষ। আতঙ্কিত হয়ে ওঠাই স্বাভাবিক। কারণ, এক-দুবার নয়, মাত্র ১৪ দিনে বাংলাদেশে একাধিকবার ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে। এর মধ্যে চারটি ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল নরসিংদী, গাজীপুরের মতো ঢাকার আশপাশের অঞ্চল ছিল বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আর সবচেয়ে বড় ভূমিকম্পটি হয় গত ২১ নভেম্বর। ওই দিন ৫ দশমিক ৭ মাত্রার এক ভূমিকম্পে ঢাকাসহ সারা দেশ কেঁপে উঠেছিল।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর বাংলাদেশেই উৎপত্তিস্থল ছিল পাঁচটি ভূমিকম্পের। এর প্রথমটি ছিল ২১ নভেম্বরের ঠিক দুই মাস আগে ২১ সেপ্টেম্বর। এদিন ৪ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এর উৎপত্তি হয় সিলেটের ছাতকে।
এরপরের ভূমিকম্প ছিল ২১ নভেম্বর, মাত্রা ৫ দশমিক ৭। পরদিন ২২ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টা ৬ মিনিটে ৪ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদী জেলার কালীগঞ্জ। এর ৫ দিন পর, ২৭ নভেম্বর বিকেল সোয়া ৪টায় ৪ মাত্রার ভূমিকম্প হয়, উৎপত্তিস্থল ঢাকার পাশের জেলা গাজীপুরের টঙ্গীর ঢালাদিয়া এলাকা।
কতবার ভূকম্পন হলো
তবে বারবার ভূমিকম্প কেবল বাংলাদেশেই নয়, সীমান্তঘেঁষা মিয়ানমার, ভারত, নেপাল, এমনকি চীনের তিব্বত সীমান্তেও ঘন ঘন ভূমিকম্প হচ্ছে। চলতি বছরের ১১ মাসে এই অঞ্চলে ২৮৫ বার ভূমিকম্প হয়েছে। এর কোনোটিই ৪ মাত্রার নিচে ছিল না।
গত সোমবার ১ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে মিয়ানমারের ফালামে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প হয়। ফলে চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকেও এটি অনুভূত হয়েছে। ঢাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র থেকে উৎপত্তিস্থলের দূরত্ব ছিল ৪৩১ কিলোমিটার। ওই ভূমিকম্প বাংলাদেশ সময় রাত ১২টা ৫৫ মিনিট ১৬ সেকেন্ডে অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৯।
বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে বিবিসি বাংলা জানিয়েছে, টেকটোনিক প্লেটে বাংলাদেশের যে অবস্থান, তাতে দুটো প্লেটের সংযোগস্থল রয়েছে, পশ্চিমে ইন্ডিয়ান প্লেট আর পূর্ব দিকে বার্মা প্লেট। আর বাংলাদেশের উত্তর দিকে আছে ইউরেশিয়ান প্লেট।

ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বিবিসি বাংলাকে বলেন, ভারতীয় প্লেটটি ধীরে ধীরে পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বার্মা প্লেটের নিচে, অর্থাৎ চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রামের নিচে তলিয়ে যাচ্ছে। আর এই তলিয়ে যাওয়ার কারণে একটা সাবডাকশন জোনের তৈরি হয়েছে।
হুমায়ুন আখতার আরও বলেন, ‘এই জোনের ব্যাপ্তি সিলেট থেকে টেকনাফ পর্যন্ত বিস্তৃত। পুরো চট্টগ্রাম অঞ্চল এর মধ্যে পড়েছে। এখানে বিভিন্ন সেগমেন্ট আছে। আমাদের এই সেগমেন্টে ৮.২ থেকে ৯ মাত্রার শক্তি জমা হয়ে আছে। এটা বের হতেই হবে।’ তাঁর মতে, ‘এখানে প্লেট লকড হয়ে ছিল। এর অতি সামান্য ক্ষুদ্রাংশ খুলল বলেই শুক্রবারের ভূমিকম্প হয়েছে। এটিই ধারণা দেয় যে সামনে বড় ভূমিকম্প আমাদের দ্বারপ্রান্তে আছে।’
আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ
তবে ভূমিকম্প নিয়ে উৎকণ্ঠিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ভূতত্ত্ববিদ ও ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মো. মমিনুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, এখন যেসব ভূকম্পন, সেগুলো হলো ২১ নভেম্বর ভূমিকম্পের ‘আফটার শক’।
২০১১ সালের ১১ মার্চ জাপানের হনশু দ্বীপের টোহুকু অঞ্চলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প এবং এর জেরে সৃষ্ট সুনামির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওই ঘটনার পর কেবল ৬ মাত্রারই ৪৫০ বার আফটার শক হয়েছিল জাপানে। আরও অসংখ্যবার ছোট ছোট আফটার শক হয়েছিল তখন।
ভূকম্পনবিদ্যার গবেষক মমিনুল ইসলাম আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে ২১ নভেম্বরের পর একাধিকবার আফটার শক হচ্ছে। এই আফটার শক বহুদিন ধরে হতে পারে, কমপক্ষে আরও তিন মাস হতে পারে। ২ মাত্রার নিচের ভূকম্পনগুলো আমাদের (বাংলাদেশে) সিস্টেমে ধরা পড়ে না।

এ বছর হাজারের বেশি নতুন প্রজাতি আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। এর মধ্যে কিছু প্রজাতি সত্যিই রীতিমতো অদ্ভুত। প্রশান্ত মহাসাগরের গভীর থেকে শুরু করে ভিয়েতনামের পর্বতমালা পর্যন্ত, পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে এ বছর অনেক অদ্ভুত এবং বিস্ময়কর নতুন উদ্ভিদ, প্রাণী এবং ছত্রাক আবিষ্কৃত হয়েছে। কিছু প্রজাতি এমন অঞ্চ
৩০ ডিসেম্বর ২০২৪
রৌদ্রোজ্জ্বল ঢাকায় আজ শুক্রবার ছুটির দিনে সকালে হালকা কুয়াশার দেখা মিলেছে। তবে হাড়কাঁপানো শীত না পড়লেও বইছে মিষ্টি হিমেল বাতাস। আজ সারা দিন রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলে আকাশ পরিষ্কার থাকবে, আবহাওয়াও থাকবে শুষ্ক।
৯ ঘণ্টা আগে
শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলো বিশ্বের দূষিত শহর তালিকায় শুরুর দশের মধ্যে অবস্থান করছে। এর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই এ তালিকায় শীর্ষে ছিল ভারতের দিল্লি।
১ দিন আগে
রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় ছিল ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল ছিল ১৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের বেলা আজকের এই তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলো বিশ্বের দূষিত শহর তালিকায় শুরুর দশের মধ্যে অবস্থান করছে। এর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই এ তালিকায় শীর্ষে ছিল ভারতের দিল্লি। আজ বৃহস্পতিবার দিল্লিকে পেছনে ফেলে এ শীর্ষ দূষিত শহর হলো ঢাকা।
বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে আজ ঢাকার অবস্থান ১ম। আজ সকাল ১০টার রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান আজ ২৯৬, যা খুব অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক।
ঢাকার যেসব এলাকায় বায়ু দূষণ সবচেয়ে বেশি— পল্লবী দক্ষিণ, কল্যাণপুর, বেজ এজওয়াটার আউটডোর, ইস্টার্ন হাউজিং ও গ্রেস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল।
ঢাকার নিম্নমানের বাতাসের প্রধান কারণ হলো পিএম ২.৫ বা সূক্ষ্ম কণা। এই অতিক্ষুদ্র কণাগুলো, যাদের ব্যাস ২.৫ মাইক্রোমিটারের চেয়েও কম, ফুসফুসের গভীরে প্রবেশ করে রক্তপ্রবাহে মিশে যেতে পারে। এর ফলে হাঁপানি (অ্যাজমা) বৃদ্ধি, ব্রঙ্কাইটিস এবং হৃদ্রোগের মতো শ্বাসযন্ত্র ও হৃদ্যন্ত্রের গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়।
বাতাসের এই বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে করণীয়
অত্যন্ত সংবেদনশীল গোষ্ঠী: শিশু, বয়স্ক, হৃদ্রোগ বা শ্বাসকষ্টের রোগীরা সব ধরনের ঘরের বাইরে না যাওয়াই ভালো।
সাধারণ সুস্থ ব্যক্তি: তাদের উচিত বাইরে কাটানো সময় সীমিত করা এবং শারীরিক পরিশ্রমের কাজ এড়িয়ে চলা।
যদি বাইরে বের হতে হয়, তবে অবশ্যই দূষণ রোধে কার্যকর মাস্ক ব্যবহার করুন।
ঘরের ভেতরের বাতাস পরিষ্কার রাখতে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন এবং দূষিত বাতাস প্রবেশ ঠেকাতে জানালা ও দরজা বন্ধ রাখুন।
দূষিত বায়ুর শহর তালিকায় শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো— ভারতের দিল্লি ও কলকাতা, পাকিস্তানের লাহোর ও কাতারের দোহা। শহরগুলোর বায়ুমান যথাক্রমে ২৭৮, ২৩৩, ১৯৯ ও ১৮৯।
বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১-১৫০ এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।
বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতি বছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।
দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।
পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলো বিশ্বের দূষিত শহর তালিকায় শুরুর দশের মধ্যে অবস্থান করছে। এর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই এ তালিকায় শীর্ষে ছিল ভারতের দিল্লি। আজ বৃহস্পতিবার দিল্লিকে পেছনে ফেলে এ শীর্ষ দূষিত শহর হলো ঢাকা।
বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে আজ ঢাকার অবস্থান ১ম। আজ সকাল ১০টার রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান আজ ২৯৬, যা খুব অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক।
ঢাকার যেসব এলাকায় বায়ু দূষণ সবচেয়ে বেশি— পল্লবী দক্ষিণ, কল্যাণপুর, বেজ এজওয়াটার আউটডোর, ইস্টার্ন হাউজিং ও গ্রেস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল।
ঢাকার নিম্নমানের বাতাসের প্রধান কারণ হলো পিএম ২.৫ বা সূক্ষ্ম কণা। এই অতিক্ষুদ্র কণাগুলো, যাদের ব্যাস ২.৫ মাইক্রোমিটারের চেয়েও কম, ফুসফুসের গভীরে প্রবেশ করে রক্তপ্রবাহে মিশে যেতে পারে। এর ফলে হাঁপানি (অ্যাজমা) বৃদ্ধি, ব্রঙ্কাইটিস এবং হৃদ্রোগের মতো শ্বাসযন্ত্র ও হৃদ্যন্ত্রের গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়।
বাতাসের এই বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে করণীয়
অত্যন্ত সংবেদনশীল গোষ্ঠী: শিশু, বয়স্ক, হৃদ্রোগ বা শ্বাসকষ্টের রোগীরা সব ধরনের ঘরের বাইরে না যাওয়াই ভালো।
সাধারণ সুস্থ ব্যক্তি: তাদের উচিত বাইরে কাটানো সময় সীমিত করা এবং শারীরিক পরিশ্রমের কাজ এড়িয়ে চলা।
যদি বাইরে বের হতে হয়, তবে অবশ্যই দূষণ রোধে কার্যকর মাস্ক ব্যবহার করুন।
ঘরের ভেতরের বাতাস পরিষ্কার রাখতে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন এবং দূষিত বাতাস প্রবেশ ঠেকাতে জানালা ও দরজা বন্ধ রাখুন।
দূষিত বায়ুর শহর তালিকায় শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো— ভারতের দিল্লি ও কলকাতা, পাকিস্তানের লাহোর ও কাতারের দোহা। শহরগুলোর বায়ুমান যথাক্রমে ২৭৮, ২৩৩, ১৯৯ ও ১৮৯।
বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১-১৫০ এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।
বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতি বছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।
দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।
পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

এ বছর হাজারের বেশি নতুন প্রজাতি আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। এর মধ্যে কিছু প্রজাতি সত্যিই রীতিমতো অদ্ভুত। প্রশান্ত মহাসাগরের গভীর থেকে শুরু করে ভিয়েতনামের পর্বতমালা পর্যন্ত, পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে এ বছর অনেক অদ্ভুত এবং বিস্ময়কর নতুন উদ্ভিদ, প্রাণী এবং ছত্রাক আবিষ্কৃত হয়েছে। কিছু প্রজাতি এমন অঞ্চ
৩০ ডিসেম্বর ২০২৪
রৌদ্রোজ্জ্বল ঢাকায় আজ শুক্রবার ছুটির দিনে সকালে হালকা কুয়াশার দেখা মিলেছে। তবে হাড়কাঁপানো শীত না পড়লেও বইছে মিষ্টি হিমেল বাতাস। আজ সারা দিন রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলে আকাশ পরিষ্কার থাকবে, আবহাওয়াও থাকবে শুষ্ক।
৯ ঘণ্টা আগে
আজ বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৬টা। সূর্যের আলো যখন পুরোপুরি ফুটে ওঠেনি, ঠিক তখনই ভূমিকম্পে আবারও কেঁপে উঠল রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চল। রিখটার স্কেলে এই ভূকম্পনের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ১। উৎপত্তিস্থল ঢাকা থেকে ৩৮ কিলোমিটার দূরে নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার পাটুয়ারপাড় এলাকা।
১ দিন আগে
রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় ছিল ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল ছিল ১৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের বেলা আজকের এই তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় ছিল ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল ছিল ১৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের বেলা এই তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
আজ সকাল ৭টায় পরবর্তী ছয় ঘণ্টার আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে এসব কথা বলা হয়েছে।
পূর্বাভাসের তথ্য অনুযায়ী, আজ সকাল ৬টায় ঢাকায় তাপমাত্রা ছিল ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮১ শতাংশ।
এ ছাড়া আজ দুপুর পর্যন্ত ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। আবহাওয়া প্রায় শুষ্ক থাকবে। দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ দুপুর পর্যন্ত ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার ওপর দিয়ে উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে।
আজ ঢাকায় সূর্যাস্তের সময় সন্ধ্যা ৫টা ১১ মিনিটে, আগামীকাল সূর্যাস্ত ৬টা ২৭ মিনিটে।

রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় ছিল ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল ছিল ১৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের বেলা এই তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
আজ সকাল ৭টায় পরবর্তী ছয় ঘণ্টার আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে এসব কথা বলা হয়েছে।
পূর্বাভাসের তথ্য অনুযায়ী, আজ সকাল ৬টায় ঢাকায় তাপমাত্রা ছিল ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮১ শতাংশ।
এ ছাড়া আজ দুপুর পর্যন্ত ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। আবহাওয়া প্রায় শুষ্ক থাকবে। দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ দুপুর পর্যন্ত ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার ওপর দিয়ে উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে।
আজ ঢাকায় সূর্যাস্তের সময় সন্ধ্যা ৫টা ১১ মিনিটে, আগামীকাল সূর্যাস্ত ৬টা ২৭ মিনিটে।

এ বছর হাজারের বেশি নতুন প্রজাতি আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। এর মধ্যে কিছু প্রজাতি সত্যিই রীতিমতো অদ্ভুত। প্রশান্ত মহাসাগরের গভীর থেকে শুরু করে ভিয়েতনামের পর্বতমালা পর্যন্ত, পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে এ বছর অনেক অদ্ভুত এবং বিস্ময়কর নতুন উদ্ভিদ, প্রাণী এবং ছত্রাক আবিষ্কৃত হয়েছে। কিছু প্রজাতি এমন অঞ্চ
৩০ ডিসেম্বর ২০২৪
রৌদ্রোজ্জ্বল ঢাকায় আজ শুক্রবার ছুটির দিনে সকালে হালকা কুয়াশার দেখা মিলেছে। তবে হাড়কাঁপানো শীত না পড়লেও বইছে মিষ্টি হিমেল বাতাস। আজ সারা দিন রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলে আকাশ পরিষ্কার থাকবে, আবহাওয়াও থাকবে শুষ্ক।
৯ ঘণ্টা আগে
আজ বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৬টা। সূর্যের আলো যখন পুরোপুরি ফুটে ওঠেনি, ঠিক তখনই ভূমিকম্পে আবারও কেঁপে উঠল রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চল। রিখটার স্কেলে এই ভূকম্পনের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ১। উৎপত্তিস্থল ঢাকা থেকে ৩৮ কিলোমিটার দূরে নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার পাটুয়ারপাড় এলাকা।
১ দিন আগে
শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলো বিশ্বের দূষিত শহর তালিকায় শুরুর দশের মধ্যে অবস্থান করছে। এর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই এ তালিকায় শীর্ষে ছিল ভারতের দিল্লি।
১ দিন আগে