Ajker Patrika

‘নাট্যকলায় পড়তে আমি ঘর পালাইছিলাম’

খায়রুল বাসার নির্ঝর, ঢাকা
আপডেট : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৯: ১৭
‘নাট্যকলায় পড়তে আমি ঘর পালাইছিলাম’

জাকিয়া বারী মম এমন একজন অভিনেত্রী, যাকে যেকোনো চরিত্রের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়া যায়। তিনিও চ্যালেঞ্জটি লুফে নেন স্বচ্ছন্দে। অনেক দিন হলো অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মম ক্যামেরার সামনে দাঁড়াননি। তিনি আছেন নিজের মতো। পড়ছেন, দেখছেন, প্রস্তুতি নিচ্ছেন ভালো কাজের। মম এখন ব্যক্তিগত সফরে শ্রীমঙ্গলে। সঙ্গে আছেন অভিনেত্রী সুষমা সরকার। যাওয়ার আগে মম বললেন ক্যারিয়ার নিয়ে অনেক কথা। তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন খায়রুল বাসার নির্ঝর

আপনার ছোটবেলার কিছু ছবি দেখলাম ফেসবুক টাইমলাইনে। মঞ্চে আপনি গাইছেন, নাচছেন…

জাকিয়া বারী মম: আম্মার বাসায় গেছিলাম। অনেক দিন পর দেখা হলে যেমন হয়, আম্মা আমাকে অনেক কিছু দিলেন। আমি বললাম, কী ব্যাপার? সবকিছু দিয়ে দিচ্ছ কেন? সমস্যা কী তোমার? আম্মা বললেন, নাও, তোমার জিনিস তোমার কাছে থাকলেই হয়তো ভালো হবে। (আমি বললাম) তোমার কাছে তো ভালোই ছিল। আমার ছোটবেলার ছবির অ্যালবাম ছিল মায়ের কাছে, অ্যালবাম দেখা তো নস্টালজিক ব্যাপার আরকি! ওখান থেকে কয়েকটা ছবি ফেসবুকে দিয়েছি।

ছবিগুলো দেখে মনে পড়ল, একসময় সকালবেলা রাস্তায় হাঁটলে কোনো না কোনো বাড়ি থেকে হারমোনিয়ামের আওয়াজ আসত। কেউ রিহার্সাল করছে...সুর ভেসে আসছে...

জাকিয়া বারী মম: এটা তো আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শুনছি। ট্রাস্ট মি। এখন আমার বন্ধুবান্ধবেরা আমাকে ক্ষ্যাপানোর জন্য বলে, ‘এই যে তুমি তো ব্রাহ্মণবাইড়া। যেহেতু তুমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার, খালি মারামারি করবা।’ আমি বলি, মানে! এইটা তো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পরিচয় হইতেই পারে না।

যে ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে আমি জন্মাইছি, বড় হইছি, ইট ওয়াজ সো বিউটিফুল। তুমি যেটা বলতেছিলা, রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে হারমোনিয়ামের সাউন্ড, এগুলা কিন্তু হইতোই তখন ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে। বিকাল হইলেই গাইতে পারুক না পারুক বাচ্চারা ট্রাই করত। সবাই, কমবেশি।

জাকিয়া বারী মম

তাহলে ছোটবেলা থেকেই কালচারালি বেশ অ্যাকটিভ ছিলেন আপনি?

জাকিয়া বারী মম: আমি যখন আলাউদ্দীন সংগীতাঙ্গনে ভর্তি হই, তখন আমার বয়স সাড়ে তিন-চার—এ রকম কিছু হবে। আমার তো আসলে তখন ওই ধরনের কোনো সেন্স কাজ করার ব্যাপার নেই। তখন আমার নাচতে ভালো লাগে, গাইতে ভালো লাগে, মিউজিক ভালো লাগে, ছবি আঁকতে ভালো লাগে। বাচ্চাদের এগুলা ডেফিনেটলি ভালো লাগবে। তো আমি ওই ‘বাচ্চাদের ভালো লাগার জায়গা থেকেই’ এগুলোর সাথে ইনভলভ হই, পড়াশোনার পাশাপাশি।

আমার চাইল্ডহুড ইজ সো কালারফুল। নাচ-গান-আর্টের ক্লাসে যাওয়া, আবার সন্ধ্যার সময় ফিরে আম্মার কাছে পড়তে বসা। তার পর একটা টাইম পর্যন্ত খেলা, টেলিভিশন দেখা—ইট ওয়াজ সো নাইস। মানে এত সিসটেমেটিক! এবং লেখাপড়ার সাথে সাথে আব্বা-আম্মা আমাকে...আমার আব্বা-আম্মা এদিক থেকে বেশ...যদি বোধের জায়গা বলি, ভালো লাগার জায়গা বলি, দে আর দ্য পারসন, যারা কিনা চাইছে তাঁদের সন্তান কালচারালি অ্যাকটিভ থাকুক।

বিকজ তাঁরা অনেক কালচারালি অ্যাকটিভ ছিলেন তাঁদের সময়। আমার বাবা তো কবিতা লেখেন। তাঁর বইও পাবলিশড হইছে দুইটা। উনি একটু পলিটিক্যাল...একটু বাম ঘেঁষা মানুষ।

আমার মা একসময় আমার নানার সঙ্গে নাটক করেছেন। আমার নানা আমার মাকে, খালাকে গান শিখাইছেন। অভিনয় শিখাইছেন। ওইখানকার সময়...লাকসামে তখন...ওই সময় মফস্বলে যে ধরনের ট্রেন্ড ছিল আরকি। টাউন হল, ক্লাব—এ ধরনের। তো ওই রকম একটা ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে আমার বাবা-মা দুজনই আসাতে তাঁরা চেয়েছিলেন তাঁদের সন্তানকে কালচারাল অ্যাক্টিভিটিতে দেখতে। ইট ওয়াজ দেয়ার ট্রেন্ড।

আমি ছোটবেলা থেকে ইনভলভ হইছি। পরে এসে এইটা...ইটস মাই হ্যাভিট...মানে এক ধরনের জার্নির মতো হয়ে গেছে। আমি কখনোই আসলে শুধু লেখাপড়া করি নাই। আমাকে সবকিছু একসাথে করতে হতো। লটস অব কমপিটিশন আই হ্যাড। এটা আরও লম্বা জার্নি। এটা বললে আরও সময় চলে যাবে।

শৈশব আসলে মানুষকে তৈরি করে দেয়। একটা ভালো শৈশব পেয়েছেন আপনি। সেটাই আজকের এই মমকে তৈরি করে দিয়েছে...

জাকিয়া বারী মম: এটা প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই হয়। এটাই হওয়া স্বাভাবিক আরকি।

আপনি যে ধরনের কালারফুল শৈশব কাটিয়েছেন, ওইরকম শৈশব কি এই সময়ে বাচ্চারা পাচ্ছে?

জাকিয়া বারী মম

জাকিয়া বারী মম: ওই ফ্রেশ ওয়েদার তো নাই আসলে। ওই ফ্রেশ ওয়েদার তো বাচ্চাদেরকে দেওয়া এখন ডিফিকাল্ট। এখন টেকনোলজি নানাভাবে ডমিনেট করতেছে। ডোন্ট নো। আমি হয়তো এভাবে বড় হইছি বলে আমার এভাবে মনে হইছে। কিন্তু এখন যে সন্তানটা জন্মাচ্ছে, তার জন্য তো এটাই রিয়্যালিটি। ওদেরকে তো আসলে এটা বলে বোঝানো যাবে না, যেটা আমি এক্সপেরিয়েন্স করছি।

ওরা কতটুকুই বুঝতে পারে? ওরা যতটুকু বুঝতে পারে, ততটুকু পর্যন্ত গিয়ে তারা তাদের ইন্টারেস্টে ডাইভার্ট হয়ে যায়। এটাই স্বাভাবিক। এখনকার বাচ্চারা অনেক প্র্যাকটিক্যালি ভাবে। আমরা হয়তো আরও ইমোশনালি ভাবতাম—এটাও আমার কাছে মনে হইছে। এটাও সময়ের একটা ব্লেন্ডিং। চেঞ্জ হইতেছে। এভাবেই আগাবে।

বাংলাদেশের এখনকার যে সমাজবাস্তবতা, তাতে শুধু অভিনয়টাকেই পেশা হিসেবে নেওয়ার মতো পরিস্থিতি কি আছে? বা এস্টাবলিশড হয়েছে? আপনার কী মনে হয়?

জাকিয়া বারী মম: এখন তো আরও অনেক অপশন আছে। আমি প্রথমে...দ্যাখো, চিন্তা করো...যে বাবা-মা তাঁদের সন্তানকে এভাবে বড় করে ছোটবেলা থেকে, তাঁরা সাডেনলি ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময় আমাকে নাট্যকলায় ভর্তি হতে না দেওয়ার কারণটা কী? বিকজ ইনসিকিউরিটি। তাঁদের মেয়েকে নিয়ে তাঁরা কনসার্ন। নাট্যকলায় পড়লে সে যদি ক্যারিয়ার করতে চায়, কীভাবে ক্যারিয়ার করবে? তখন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, কম্পিউটার সায়েন্স, বিবিএ—এগুলো বেশি পপুলার। আমাদের সাবজেক্টের ওই রকম ভ্যালু তখন...এখনো সোশ্যালি তো না-ই।

আমাকে তো পালাইতে হইছে বাসা থেকে। বাবার সাথে আমার দুই বছর কথা হয় নাই। আমি তো জাহাঙ্গীরনগর (বিশ্ববিদ্যালয়ে) পালাইয়া গিয়া ভর্তি হইছিলাম। ওই সব নাটক তো জীবনে অনেক করছি।

ওই তুলনায় এখন তো টেকনোলজি অনেক ওপেন করে দিছে। ঘরে বসেই এখন ইউ ক্যান রিড লটস অব স্টাফ, যা আমরা তখন অ্যাফোর্ড করতে পারি নাই। এখন তো কত টিউটোরিয়াল, কত এক্সারসাইজ! এখন যদি কেউ অ্যাক্টর হতে চায়, তাহলে সে ঘরে বসে তো তার প্রাইমারি লেসনটা নিতেই পারে।

এখন তো টিভি নাটকের বাইরে শুধু ইউটিউবের জন্যও অনেক প্রোডাকশন তৈরি হচ্ছে। তা ছাড়া ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নতুন করে জনপ্রিয় হচ্ছে। ওয়েব ফিল্ম-সিরিজ তৈরি হচ্ছে। কাজের ব্যাপ্তি বেড়েছে…

জাকিয়া বারী মম: প্রচুর হচ্ছে তো। প্রচুর হলে সুবিধা-অসুবিধা দুটোই থাকবে। জালালুদ্দিন রুমির একটা কথা সম্ভবত এমন যে, কোনো কিছু অতিরিক্ত হলেই তা বিষ। ‘হোয়াট ইজ পয়জন?’ এ রকম প্রশ্নের উত্তরে তিনি সম্ভবত এমন কিছু বলেছিলেন। ভালোবাসা বেশি হলেও সেটা বিষ।

 

 

জাকিয়া বারী মম

এটাতেই বেশি আক্রান্ত হয় মানুষ…

জাকিয়া বারী মম: এটাতে বেশি আক্রান্ত হয় কারণ, মানুষ আবেগতাড়িত হয় তো। ইমোশনাল ব্যালেন্স করাটা ডিফিকাল্ট হয়ে যায়। তবে হ্যাঁ, ভালোবাসলেই তো ঘৃণা করা সম্ভব। আদারওয়াইজ হাউ ইউ ডিজার্ভ ইট?

 

অনেক দিন হলো আপনি কোনো শুটিং করছেন না। আপনার এই সাময়িক অনুপস্থিতিতে এক ধরনের শূন্যতা কিন্তু তৈরি হয়েছে সাম্প্রতিক প্রোডাকশনগুলোতে। অভিনয় নিয়ে এখন জাকিয়া বারী মমর ভাবনাটা কী?

জাকিয়া বারী মম: দ্যাখো, আমি অ্যাক্টর হইতে চাইছি। আমি জানি না এই অ্যাক্টর ব্যাপারটা কী? আমি জানি না অ্যাক্টিংটা কী? এত কিছুর পরও আমি বুঝি না, হোয়াট ইজ ইট? এত জানা-দেখার পরও। এত অ্যাফোর্ট থাকার পরেও। তো আমার কাছে মনে হয় যে, বিয়ন্ড সামথিং মাই আন্ডারস্ট্যান্ডিং, হোয়াট ইজ ইট? দিস ইজ লাভ।

আমার ভীষণ ভালো লাগে, আমি অভিনয় করতে চেষ্টা করি—এটা ভেবে। আমি ভীষণ ভালোবাসি এই কাজটাকে, এবং কাজটা করতেও পারি, দ্যাটস হোয়াই আই অ্যাম ফরচুনেট। মানে আমি কাজের সাথেই থাকতে চাই।

ইটস নট যে, আমি কোনো স্ট্র্যাটেজিক্যালি কিছু ফিল করে বললাম, ইটস নট দ্যাট।

এই যে দিলারা (জামান) মা, আমাদের দেশে তো উনিই সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ অভিনেত্রী। তিনি কীভাবে এত অ্যাফোর্ট দেন! কাজের প্রতি ওনার যে ডেডিকেশন, যে ভক্তি—এমন শিল্পী হতে পারলেই তো জীবনে অনেক বড় পাওয়া হয়ে যায়। শিল্পী হওয়ার যে চেষ্টা, এটা কিন্তু দারুণ ব্যাপার।

কাজ করতে চাইলে তো সারা জীবনই করা যায়, যে যেভাবে চায়। কিন্তু সেটাও তো নানা ফরম্যাটে নানা সময়ে বদল হয়। ইন্ডাস্ট্রিতে আমি অনেক ব্যস্ত সময় কাটিয়েছি। সবার প্রতিই আমার কৃতজ্ঞতা। ইটস লং টাইম। কোভিড আসার পর একটু থেমেছি। থামা যে জীবনে জরুরি, এটা অনুভব করেছি।

এখন কীভাবে সময় কাটছে তাহলে আপনার?

জাকিয়া বারী মম: এখন বরং পড়তে, নিজের সাথে থাকতে, দেখতে, এক্সারসাইজ করতেই আমার বেশি ভালো লাগছে। একটাই ব্যাপার, আমি যখন কাজ করতে গেছি, কাজের জায়গাটা অনেক বেশি নয়েজি মনে হয়েছে। আমি আসলে নেহাতই ভালোবেসে কাজটা করতে আসছিলাম। ভালোবেসে কাজ করতে করতে একটা লম্বা সময় চেষ্টা করে যাচ্ছি কী কী শেখা যায়, লেখাপড়া করা যায়। সব মিলিয়ে আমার মনে হচ্ছে, আই ডোন্ট নো, হচ্ছে না আরকি! এটা এক ধরনের আমার না-পারাই। আমি পেরে উঠছি না। বাসায় বসে এই দুই বছরে টুকিটাকি লেখাপড়া, নিজের কিছু লেখা লিখতে ইচ্ছা করেছে। কিন্তু কোনো লেখাই শেষ করতে পারি না।

জাকিয়া বারী মম

কী কী লিখছেন? নিজের কথাই?

জাকিয়া বারী মম: নিজের কথা না। আমি একটা চরিত্র দাঁড় করেছিলাম রোদসী নামে। রোদসীর সঙ্গে বাংলাদেশের যেকোনো মেয়ে নিজেকে মেলাতে পারবে। খুবই সাধারণ একটা চরিত্র। ক্যারেক্টার সিম্পল কিন্তু মানসিকভাবে বা ও যে ধরনের বোধের মানুষ, সে সবকিছু খানিকটা অন্যভাবে দেখে।

এটা কি শুধু গল্প হয়েই থাকবে? নাকি এ গল্প নিয়ে নাটক-সিনেমা কিছু বানাবেন?

জাকিয়া বারী মম: না, না ভাই। ওই যে দেখো কী বিপদ! বাংলাদেশে যারা বানান, আমি তাঁদেরকে হাত জোড় করে স্যালুট করি। এ দেশে যারা ডিরেক্টর, ডিরেকশনের চেয়ে তাঁদেরকে অন্যান্য অনেক কিছু নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকতে হয়। সেগুলো ডিঙিয়ে তাঁর যে মূল নির্মাতা-সত্তা সেখানে পৌঁছতেই অনেক কষ্ট হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ৩ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক, কাল সাধারণ ছুটি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

খালেদা জিয়ার সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি জানালেন সংগীতশিল্পী পুতুল

খালেদা জিয়ার জানাজা কাল, দাফন জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি জানালেন সংগীতশিল্পী পুতুল

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ৫৩
২০০৪ সালের ১৯ জানুয়ারি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার হাত থেকে নতুন কুঁড়ি ২০০৩-এর দেশাত্মবোধক গানের প্রথম পুরস্কার গ্রহণ করছেন পুতুল। ছবি: সংগৃহীত
২০০৪ সালের ১৯ জানুয়ারি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার হাত থেকে নতুন কুঁড়ি ২০০৩-এর দেশাত্মবোধক গানের প্রথম পুরস্কার গ্রহণ করছেন পুতুল। ছবি: সংগৃহীত

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ ৩০ ডিসেম্বর সকাল ৬টায় মারা গেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে দেশজুড়ে। শোক জানাচ্ছেন শোবিজের তারকারাও। শোক জানিয়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি ভাগ করেছেন সংগীতশিল্পী সাজিয়া সুলতানা পুতুল।

খালেদা জিয়াকে প্রথমবার দেখার স্মৃতি জানিয়ে ফেসবুকে পুতুল লেখেন, ‘জীবনে প্রথম তাঁকে দেখেছিলাম শৈশবে; ছুঁয়েছিলাম তাঁর তুলতুলে হাত। কী অভূতপূর্ব সেই অনুভূতি! বিজয়ী হয়ে যত না আনন্দ হয়েছিল, তার চাইতে কোনো অংশে কম ছিল না তাঁকে ছুঁতে পারার আনন্দ। পুরস্কার নিতে নিতে তাকিয়েছিলাম তাঁর চোখ দুটোর দিকে। মনে হয়েছিল এক মোম দিয়ে গড়া মানবী আমার সামনে দাঁড়িয়ে হাসছেন। ধূসর চুল আর শুভ্র শাড়িতে মনে হয়েছিল রাষ্ট্রপ্রধান হতে হলে বোধ হয় এতটাই আভিজাত্য নিজের ভেতর ধারণ করতে হয়।’

বড় হওয়ার পার খালেদা জিয়ার সামনে গান গাওয়ার অভিজ্ঞতা আছে পুতুলের। সেই স্মৃতির কথা জানিয়ে পুতুল লেখেন, ‘বড় হওয়ার পর আবার গান গেয়েছি তাঁর সামনে। তত দিনে সংগীতাঙ্গনে পেশাদার শিল্পী হিসেবে যাত্রা শুরু করেছি। তিনি মঞ্চে বসে, তার ঠিক কয়েক হাত দূরে দাঁড়িয়ে একই মঞ্চে গাইছি। তিনি আদর করেছিলেন সেদিন আমার পরিবেশনা শেষে। বুঝেছিলাম তিনি একজন সংস্কৃতিপ্রেমী প্রধানমন্ত্রী।’

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে পুতুল লেখেন, ‘একটা অধ্যায়ের শেষ হলো। বাংলাদেশ নামক ভূখণ্ডের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ওপারে চলে গেছেন, যিনি এ দেশের লাখো তরুণীকে স্বপ্ন দেখিয়েছেন, সাধারণ একজন গৃহবধূ হয়েও আত্মবিশ্বাসের জোরে অসাধারণ হয়ে ওঠা যায়। শুধু অসাধারণ নয়, দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়াও অসম্ভব কিছু নয়। জন্ম থেকে রাজনীতির কেবল দীর্ঘ প্রেক্ষাপট থাকলেই প্রধানমন্ত্রী হওয়া যায়, এই ধারণাকে ভুল প্রমাণ করে নিজের প্রজ্ঞা আর আত্মবিশ্বাস দিয়ে তিনবার তিনি হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ভালো থাকবেন মাননীয়া। ইতিহাস আপনাকে মনে রাখবে...।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ৩ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক, কাল সাধারণ ছুটি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

খালেদা জিয়ার সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি জানালেন সংগীতশিল্পী পুতুল

খালেদা জিয়ার জানাজা কাল, দাফন জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়া বড় দুঃসময়ে বিদায় নিলেন: জয়া আহসান

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ১৫
খালেদা জিয়া ও জয়া আহসান। ছবি: সংগৃহীত
খালেদা জিয়া ও জয়া আহসান। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে দেশজুড়ে। শোক জানাচ্ছেন শোবিজের তারকারাও। খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে অভিনেত্রী জয়া আহসান বলেন, খালেদা জিয়া বড় দুঃসময়ে বিদায় নিলেন।

ফেসবুকে জয়া আহসান লেখেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া বড় দুঃসময়ে বিদায় নিলেন। সামনে নির্বাচন আর গণতন্ত্রের জন্য মানুষ অপেক্ষা করছে। তাঁর উপস্থিতির মূল্যই ছিল অসামান্য।’

জয়া আরও লেখেন, ‘রাজনীতিতে মত-পথের বিরোধ থাকবে। কিন্তু সামরিক শাসনবিরোধী এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বেগম জিয়া ছিলেন প্রধান একটি চরিত্র, সাহসে ও নেতৃত্বে উজ্জ্বল। তাঁর সঙ্গে দেশের দীর্ঘ রাজনৈতিক আন্দোলনের একটি অধ্যায় শেষ হলো। তাঁর আত্মা চিরপ্রশান্তি লাভ করুক।’

গত ২৩ নভেম্বর থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন খালেদা জিয়া। আজ ৩০ ডিসেম্বর সকাল ৬টার মারা যান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ৩ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক, কাল সাধারণ ছুটি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

খালেদা জিয়ার সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি জানালেন সংগীতশিল্পী পুতুল

খালেদা জিয়ার জানাজা কাল, দাফন জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোবিজ তারকাদের শোক

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
শাকিব, অপু বিশ্বাস ও জেমস। ছবি: সংগৃহীত
শাকিব, অপু বিশ্বাস ও জেমস। ছবি: সংগৃহীত

আজ ৩০ ডিসেম্বর ভোর ৬টায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে দেশজুড়ে। শোক জানাচ্ছেন শোবিজের তারকারাও।

ফেসবুকে ব্যান্ড তারকা নগরবাউল জেমস লেখেন, ‘শোক ও বিনম্র শ্রদ্ধা। বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে আমরা গভীর শোক প্রকাশ করছি। মহান আল্লাহ যেন তাঁকে জান্নাতুল ফেরদৌসের সর্বোচ্চ মাকামে অধিষ্ঠিত করেন—আমিন। শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি আমরা গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।’

শাকিব খান লেখেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করছি। তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই।’

জয়া আহসান লেখেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া বড় দুঃসময়ে বিদায় নিলেন। সামনে নির্বাচন আর গণতন্ত্রের জন্য মানুষ অপেক্ষা করছে। তাঁর উপস্থিতির মূল্যই ছিল অসামান্য। রাজনীতিতে মত-পথের বিরোধ থাকবে। কিন্তু সামরিক শাসনবিরোধী এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে খালেদা জিয়া ছিলেন প্রধান একটি চরিত্র, সাহসে ও নেতৃত্বে উজ্জ্বল। তাঁর সঙ্গে দেশের দীর্ঘ রাজনৈতিক আন্দোলনের একটি অধ্যায় শেষ হলো। তাঁর আত্মা চিরপ্রশান্তি লাভ করুক।’

অপু বিশ্বাস লেখেন, ‘বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার এই চিরবিদায় যেন মহাকালের সাক্ষী হয়ে রইল। একজন মহীয়সী নারীর প্রস্থান যেন যুগে যুগে বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে লেখা থাকবে। বিনম্র শ্রদ্ধা।’

শবনম বুবলী লেখেন, ‘বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তাঁর বিদেহী আত্মা চিরশান্তিতে থাকুক। আমিন।’

সিয়াম আহমেদ লেখেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।’

নুসরাত ফারিয়া লেখেন, ‘আল্লাহ তাঁকে ক্ষমা করুন এবং জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন।’

নির্মাতা আশফাক নিপুন লেখেন, ‘আল্লাহ আপনাকে জান্নাত নসিব করুন। আপনি ছিলেন ধৈর্য, আভিজাত্য এবং হার না মানার এক অনন্য প্রতীক; এমনকি প্রতিপক্ষের অমানবিক আচরণের মুখেও আপনি দমে যাননি। এই জাতি আপনাকে সব সময় গর্বের সঙ্গে মনে রাখবে।’

অনেক দিন ধরে অসুস্থ ছিলেন খালেদা জিয়া। ভুগছিলেন শারীরিক বিভিন্ন জটিলতায়। গত ২৩ নভেম্বর থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ছিলেন চিকিৎসাধীন। সেখানেই মারা যান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ৩ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক, কাল সাধারণ ছুটি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

খালেদা জিয়ার সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি জানালেন সংগীতশিল্পী পুতুল

খালেদা জিয়ার জানাজা কাল, দাফন জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ফরিদা পারভীনের জন্মদিনে শিল্পকলায় বিশেষ আয়োজন

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
ফরিদা পারভীন। ছবি: সংগৃহীত
ফরিদা পারভীন। ছবি: সংগৃহীত

শিষ্যদের মাঝে বেঁচে থাকতে চেয়েছেন লালনসংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন। তাই লালনের গান শেখাতে গড়ে তোলেন অচিন পাখি সংগীত একাডেমি। মনের বাসনা ব্যক্ত করে ফরিদা পারভীন বলেছিলেন, ‘সাঁইজি যেমন তাঁর শিষ্যদের মাঝে বেঁচে আছেন, আমার মাঝে আমার গুরু বেঁচে আছেন, তেমনি আমার অচিন পাখির ছাত্রছাত্রীদের মাঝে আমি বেঁচে থাকতে চাই।’ আগামীকাল ৩১ ডিসেম্বর ফরিদা পারভীনের জন্মদিন উপলক্ষে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে তাঁর গড়া অচিন পাখি সংগীত একাডেমি।

আগামীকাল বুধবার বিকেল ৪টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা মিলনায়তনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে থাকবে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক আয়োজন। আমন্ত্রিত অতিথিরা কথায় কথায় তুলে ধরবেন শিল্পীর জীবনের নানা অধ্যায়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। বিশেষ অতিথি থাকবেন তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মাহবুবা ফারজানা এবং শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক রেজাউদ্দিন স্টালিন। উদ্বোধন করবেন সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ। সভাপতিত্ব করবেন ফরিদা পারভীনের জীবনসঙ্গী ও বংশীবাদক গাজী আবদুল হাকিম।

ফরিদা পারভীনের জন্ম ১৯৫৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর, নাটোরে। পাঁচ বছর বয়সে মাগুরায় কমল চক্রবর্তীর কাছে গানের হাতেখড়ি ফরিদা পারভীনের। মাত্র ১৪ বছর বয়সে তাঁর পেশাদার সংগীতজীবন শুরু হয়। ক্যারিয়ারে নজরুলগীতি, দেশাত্মবোধকসহ নানা ধরনের গান করলেও তিনি মূলত জনপ্রিয়তা পেয়েছেন লালনসংগীতে। সংগীতে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ফরিদা পারভীন পেয়েছেন একুশে পদক (১৯৮৭), জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (১৯৯৩), জাপানের ফুকুওয়াকা পুরস্কারসহ (২০০৮) অসংখ্য পুরস্কার।

এ বছর ১৩ সেপ্টেম্বর না ফেরার দেশে পাড়ি জমান ফরিদা পারভীন। দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। কিডনি সমস্যা, ডায়াবেটিসসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ৩ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক, কাল সাধারণ ছুটি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

খালেদা জিয়ার সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি জানালেন সংগীতশিল্পী পুতুল

খালেদা জিয়ার জানাজা কাল, দাফন জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত