Ajker Patrika

কাইজারই কি প্রথম?

অর্ণব সান্যাল
কাইজারই কি প্রথম?

শিরোনামের এই প্রশ্ন শুনলে পর্দার কাইজার চৌধুরী হয়তো দ্বিধাগ্রস্ত কণ্ঠে বলে বসতেন, ‘ওহ্, তাই নাকি?’

হ্যাঁ, বাংলাদেশের এই নতুন সংস্করণের (পড়ুন ওটিটি) গোয়েন্দাটির মনে দ্বিধা আছে। নিজের কাজ নিয়ে সংশয়ও আছে। আছে প্রয়োজনে ‘মুখ খারাপ’ করার অভ্যাস। এই গোয়েন্দা যেমন নিজে কাঁদতে পারে, তেমনি সুযোগ বুঝে অন্যের মুখে আনতে পারে মুচকি হাসি। আর এই সবকিছু নিয়েই ‘কাইজার’।

স্ট্রিমিং সাইট হইচই–এ গত ৮ জুলাই থেকে চলছে কাইজার চৌধুরীর প্রথম সিজনের অভিযান। ওয়েব সিরিজটির মোট পর্ব নয়টি। ঘটনার ব্যাপ্তি অনুযায়ী একেকটি পর্বের দৈর্ঘ্য নির্ধারিত হয়েছে। যেমন প্রথম পর্বটিই প্রায় ৪০ মিনিটের। আবার কোনো কোনো পর্ব ২০ মিনিটেও শেষ হচ্ছে। পুরো বিষয়টিই নির্ধারিত হয়েছে গল্পের খাতিরে। ফলে অহেতুক কখনো স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকতে হয়নি।

‘কাইজার’ পরিচালক তানিম নূরের সঙ্গে অভিনেত্রী দীপান্বিতা মার্টিন।শুরু থেকেই শুরু করা যাক। এডিসি কাইজার চৌধুরী এই ওয়েব সিরিজের মূল চরিত্র। তিনি একজন হোমিসাইড ডিটেকটিভ। কাইজার ব্যক্তিগত জীবনে বিপর্যস্ত। সেই সঙ্গে কাইজার ভিডিও গেম খেলায় চূড়ান্ত আসক্ত। এই গোয়েন্দার মেজাজের মতি-গতি বোঝাও একটু মুশকিল, তদন্তের প্রয়োজনে কখন যে কার গলা চেপে ধরবেন, সেটি বোঝা দায়। অথচ এই কাইজারই আবার ক্রাইম সিনে গিয়ে গলা কাটা লাশ দেখে চোখ উল্টে ফেলেন!

কাইজারের কীর্তি–কাহিনি বলার সঙ্গে সঙ্গে ওয়েব সিরিজটির নির্মাণ সম্পর্কেও দু-একটি কথা বলা উচিত হবে। ক্যামেরার কাজ ভালো। সংলাপ কিছু কিছু ক্ষেত্রে একটু অস্পষ্ট ছিল, তবে ঘটনার সঙ্গে মিলে গেছে বলে অতটা খারাপ লাগেনি। সিরিজের প্রতিটি পর্বে কলাকুশলীদের নাম দেখানোর সময় সুপরিচিত পপ কালচার আর নব্বইয়ের দশকের ঢাকার ভিডিও ফুটেজের মিশ্রণ চোখের জন্য ছিল আরামদায়ক। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক খারাপ লাগেনি, গোয়েন্দা গল্পের জন্য মানানসই। সুরে শিহরণ যেমন ছিল, তেমনি পাওয়া গেছে বিষাদও।

‘কাইজার’ ওয়েব সিরিজের অভিনয়শিল্পীরা।আবার কাইজারের গল্পে ফেরা যাক। সিরিজের প্রথমেই পরিচয় হয় একজন পুরোপুরি বিক্ষিপ্ত ব্যক্তিত্বের সঙ্গে। ব্যক্তিটি গোয়েন্দা হলেও ভিডিও কনসোল হাতে তাকে শুধুই একজন ‘পাগল’ গেমার বলে বিশ্বাস হয়। অপরাধের বিচার-বিশ্লেষণে যদিও সেই ব্যক্তিটিই ক্ষুরধার বেশ। সবচেয়ে বড় বিষয় গোয়েন্দা কাইজারের হিউমার টনটনে।

কাইজারে ফেলুদা এসেছে। ছিল কাকাবাবু–সন্তু বা ব্যোমকেশ বকশি থেকে আগাথা ত্রিস্টি বা আর্থার কোনান ডয়েলও। তবে কারও অন্তর্ভুক্তিই আরোপিত ছিল না, এটাই সবচেয়ে স্বস্তির। গল্প বা সংলাপের স্রোতেই সবাই এসেছে, আবার চলেও গেছে। আর এটাই কাইজারের চিত্রনাট্যের সবচেয়ে বড় গুণ। ওয়েব সিরিজে, বিশেষ করে সেটি যদি রহস্য–রোমাঞ্চভিত্তিক হয়, তবে টানটান গল্প ও চিত্রনাট্য প্রধান অস্ত্র বলে বিবেচিত ওটিটির দুনিয়ায়। এই জায়গাতে পুরোপুরি সফল কাইজার, কখনোই গল্পকে ঝুলে পড়তে দেওয়া হয়নি। ফলে নিতান্ত ঘটনাবিহীন পর্ব শেষেও কখনো মনে হবে না যে, ‘সময়টা নষ্ট হলো!’

‘কাইজার’ ওয়েব সিরিজের গুরুত্বপূর্ণ অভিনয়শিল্পীরা। সিরিজটির নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন আফরান নিশো। কাইজার চরিত্রটি পর্দায় ফুটিয়ে তোলায় তিনি এককথায় অনবদ্য ছিলেন। বিচ্ছেদ হওয়া স্ত্রীর সঙ্গে কথোপকথন বা দূরে থাকা মেয়ের সঙ্গে ক্ষণিকের আলাপে অথবা ইন্টারোগেশন রুমের রূক্ষতা—সবেতেই সমান তালে তাল মিলিয়েছেন নিশো। নিজের জীবনের বিক্ষিপ্ততায় বিষণ্ণ কাইজারকে পর্দায় যেমন বিশ্বাসযোগ্য করেছেন, তেমনি গোয়েন্দার ভূমিকাটিকেও কখনো অতিরঞ্জিত বা অতিনাটকীয় বোধ করাননি। নিশোরূপী কাইজার অনেক বেশি বাস্তব, কোনো সুপারম্যান নয়। আর তাতেই সার্থকতা নিশ্চিত।

‘কাইজার’ সিরিজের দৃশ্যে আফরান নিশো ও সৌম্য জ্যোতি। ‘কাইজার’ সিরিজে আরও অভিনয় করেছেন মোস্তাফিজুর নূর ইমরান, আহমেদ রেজা রুবেল, নাদের চৌধুরী, রিকিতা নন্দিনী শিমু, শাহেদ আলী, শতাব্দী ওয়াদুদ, সুমন আনোয়ার, ইমতিয়াজ বর্ষণ, শঙ্খ জামান, জিনাত সানু স্বাগতা প্রমুখ। প্রত্যেকেই যার যার চরিত্রে নিখুঁত হওয়ার চেষ্টা করেছেন। তবে আলাদা করে বলতে হয় শতাব্দী ওয়াদুদ, সুমন আনোয়ার ও ইমতিয়াজ বর্ষণের কথা। এই তিন অভিনেতা সিরিজটিকে আরও উপভোগ্য করে তুলেছেন।

‘কাইজার’ সিরিজের দৃশ্যে আফরান নিশো, শিমু ও মোস্তাফিজ নূর ইমরান।তানিম নূর সিরিজটি নির্মাণ করেছেন। নির্মাণে যে মুনশিয়ানা ও পরিমিতিবোধ আছে, তা স্বীকার করতেই হবে। প্রতিটি পর্বে ওয়েব সিরিজের ক্ল্যাসিক ফরমুলা অনুসরণ করা হয়েছে জ্ঞাতসারেই। ফলে এক পর্ব থেকে আরেক পর্বে যাওয়ার কয়েক সেকেন্ডের বিরতি কখনোই আপনাকে চোখ সরিয়ে নিতে উৎসাহিত করবে না। ‘কাইজার’–এর আগমনী সংবাদ দেওয়ার সময় তানিম বলেছিলেন যে, ‘বাংলাদেশের বা ঢাকার মৌলিক একটি গোয়েন্দা চরিত্র নিয়ে খুব বেশি কাজ হয়নি। আমার স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশের একটি গোয়েন্দা চরিত্রের ফ্র্যাঞ্চাইজি তৈরি করা।’ সেই কাজটি যে তানিম ভালোমতোই সম্পন্ন করেছেন, তা বলাই যায়।

এখন প্রশ্ন হলো, কাইজারই কি এ দেশের প্রথম সার্থক গোয়েন্দা চরিত্র? নির্দ্বিধায় ‘হ্যাঁ’ বলতে হলে কাইজারকে আরও কয়েকটা সিজন পাড়ি দিতে হবে। পরবর্তী সিজনের সম্ভাবনা প্রথম মৌসুমেই পাওয়া গেছে কিছুটা। তবে একটি কথা বলাই যায় যে, সম্ভাবনা প্রবল। আশা করা যায়, নিকট ভবিষ্যতেই আমরা হয়তো কাইজারের জীবনের পরবর্তী অধ্যায় পর্দায় রূপায়ণের খবর পাব। সেই পর্যন্ত না হয় ‘শুভকামনা’ জানিয়ে অপেক্ষায় থাকা যাক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শিল্পকলায় নাট্যতীর্থের আয়োজনে ‘নবীন প্রবীণ নাট্যমেলা’

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
শিল্পকলায় নাট্যতীর্থের আয়োজনে ‘নবীন প্রবীণ নাট্যমেলা’

আজ থেকে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে শুরু হচ্ছে নাট্যতীর্থ আয়োজিত ‘নবীন প্রবীণ নাট্যমেলা’ শীর্ষক আট দিনব্যাপী নাট্যোৎসব। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় আয়োজিত এই উৎসবে প্রদর্শিত হবে আট দলের আটটি নাটক। ১৯ থেকে ২৬ ডিসেম্বর প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টায় দেখা যাবে নাটকগুলো। উৎসবে ছয়জন নাট্যব্যক্তিত্বকে দেওয়া হবে নাট্যবন্ধু সম্মাননা।

উৎসব শুরু হবে আজ সন্ধ্যা ৬টায়। উদ্বোধন করবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান। অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন এবং বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কামাল বায়েজীদ। সভাপতিত্ব করবেন নাট্যতীর্থের দলপ্রধান ও নাট্যমেলার আহ্বায়ক তপন হাফিজ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর মঞ্চস্থ হবে তীরন্দাজ রেপার্টারির প্রযোজনা দীপক সুমনের নির্দেশিত ‘কণ্ঠনালীতে সূর্য’।

আগামীকাল শনিবার মঞ্চস্থ হবে আরণ্যক নাট্যদলের ‘রাঢ়াঙ’। রচনা ও নির্দেশনায় মামুনুর রশীদ। এদিন অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন নাট্যজন সামিনা লুৎফা নিত্রা। সম্মাননা পদক দেওয়া হবে অধ্যাপক আবদুস সেলিমকে।

২১ ডিসেম্বর মঞ্চস্থ হবে বাতিঘরের প্রযোজনা ‘প্যারাবোলা’, নির্দেশনায় মুক্তনীল। অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন নাট্যজন আফজাল হোসেন ও সম্মাননা পদক গ্রহণ করবেন শাহীন খান।

২২ ডিসেম্বর মঞ্চস্থ হবে বহুবচনের প্রযোজনা আরহাম আলো নির্দেশিত ‘অনিকেত সন্ধ্যা’। এদিন সম্মাননা পদক গ্রহণ করবেন সামিউন জাহান দোলা।

২৩ ডিসেম্বর মঞ্চস্থ হবে নাট্যতীর্থের প্রযোজনা ‘জুলিয়াস সিজার’, নির্দেশনায় তপন হাফিজ। সম্মাননা পদক গ্রহণ করবেন বাপ্পাদিত্য চৌধুরী। ২৪ ডিসেম্বর প্রদর্শিত হবে ঢাকা থিয়েটার মঞ্চের প্রযোজনা গোলাম সরোয়ার নির্দেশিত ‘ঘর জামাই’। সম্মাননা দেওয়া হবে খন্দকার সাইফুল ইসলাম নিপুকে।

২৫ ডিসেম্বর মঞ্চস্থ হবে পদাতিক নাট্য সংসদের (টিএসসি) প্রযোজনা ‘আলিবাবা এবং চল্লিশ চোর’। নির্দেশনা সুদীপ চক্রবর্তী। সম্মাননা পদক গ্রহণ করবেন মাহফুজা হিলালী। নাটক প্রদর্শনীর আগে এদিন বিকেল ৪টায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত হবে ‘প্রবীণের ঐতিহ্যালোকে নবীনের শিল্পযাত্রা’ শীর্ষক সেমিনার।

২৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হবে নাট্যমেলার সমাপনী অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে নাট্যতীর্থের কর্মীদের মধ্য নির্বাচিত নাট্যকর্মীকে দেওয়া হবে ‘নাট্যতীর্থ সর্বোচ্চ উপস্থিতি সম্মাননা পদক’। সমাপনী অনুষ্ঠানের পর মঞ্চস্থ হবে আবদুল্লাহ আল-মামুন নির্দেশিত থিয়েটার প্রযোজনা ‘মেরাজ ফকিরের মা’।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘রাক্ষস’-এর গল্প বাংলাদেশে নিয়ে এসেছে সুস্মিতাকে

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
সুস্মিতা চট্টোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত
সুস্মিতা চট্টোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত

মেহেদী হাসান হৃদয়ের ‘রাক্ষস’ সিনেমা দিয়ে ঢালিউডে অভিষেক হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের সুস্মিতা চট্টোপাধ্যায়ের। এ মাসের শুরুতেই শোনা গিয়েছিল এমন খবর। জানা গিয়েছিল দেশের বাইরে রাক্ষস সিনেমার দ্বিতীয় লটের শুটিংয়ে যোগ দেবেন তিনি। তবে সবাইকে চমকে দিয়ে গত বুধবার বিএফডিসিতে রাক্ষস সিনেমার আনুষ্ঠানিক ঘোষণার সময় উপস্থিত হলেন নায়িকা। জানালেন রাক্ষসের গল্পই তাঁকে বাংলাদেশে নিয়ে এসেছে।

সংবাদ সম্মেলনে রাক্ষস সিনেমায় যুক্ত হওয়ার কারণ জানিয়ে সুস্মিতা চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘নির্মাতা হৃদয়ের কাছ থেকে গল্পটা শুনে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। গল্পের জন্যই এ সিনেমায় যুক্ত হওয়া। কারণ এই গল্পে নায়িকার অনেক কিছু করার আছে। চরিত্রটি পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে নিজের ২০০ ভাগ দিয়ে চেষ্টা করব।’

প্রথমবার ঢাকাই সিনেমায় অভিনয় প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি ভীষণ এক্সাইটেড, এই প্রথমবার বাংলাদেশে এসেছি, সিনেমায় অভিনয় করছি। এই দিনটা আমার কাছে ভীষণ স্পেশাল। অনেকবার সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছি। ভালো একটি টিমের সঙ্গে প্রথমবার বাংলাদেশি সিনেমায় অভিনয় করতে চলেছি, এটা আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া।’

ঢাকাই সিনেমায় কাজ করাটা চ্যালেঞ্জিং মনে করলেও সবার সহায়তায় সেই চ্যালেঞ্জকে জয় করতে চান সুস্মিতা। পেতে চান বাংলাদেশের দর্শকদের ভালোবাসা। সুস্মিতা বলেন, ‘যখন সিনেমায় নাম লেখাই তখন কলকাতার সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির কাউকেও চিনতাম না। অডিশন দিয়ে অনেক কষ্ট করে সিনেমায় এসেছি। ওটাও যেমন আমার জন্য কঠিন ছিল, তেমনি এই দেশের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতেও প্রথম কাজটা চ্যালেঞ্জিং হবে। কিন্তু এখানে এসে টিমের সবাইকে দেখে মনে হচ্ছে চ্যালেঞ্জটা উতরে যেতে পারব। তাঁরা একবারের জন্য আমাকে মনে করতে দিচ্ছে না যে আমি অন্য দেশ থেকে এসেছি। আমি এ দেশের দর্শকদের ভালোবাসা নিতে এসেছি, আশা করছি অনেক ভালোবাসা পাব।’

ছোটবেলা থেকেই অভিনেত্রী হতে চেয়েছেন সুস্মিতা। পড়াশোনায়ও ছিলেন খুব ভালো। তাই পরিবারের চাওয়া ছিল আগে পড়াশোনা শেষ হবে, তারপর অন্য কাজ। মা-বাবার ইচ্ছা অনুযায়ী ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্ন করেন সুস্মিতা। পড়াশোনা শেষে বড় প্রতিষ্ঠানে চাকরিও পেয়েছিলেন। কিন্তু চাকরিটা করা হয়নি। তিনি হেঁটেছেন ছোটবেলার স্বপ্নের দিকে, অভিনেত্রী হতে।

২০২১ সালে ‘প্রেম টেম’ সিনেমা দিয়ে টালিউডে অভিষেক হয় সুস্মিতার। এরপর কাজ করেছেন ‘চেঙ্গিজ’, ‘মানুষ’সহ একাধিক সিনেমায়। এবার নাম লেখালেন ঢাকাই সিনেমায়। রুপালি পর্দায় নিজের অভিজ্ঞতা জানিয়ে সুস্মিতা বলেন, ‘প্রেম টেম সিনেমার সুস্মিতা আর রাক্ষসের সুস্মিতার মধ্যে অনেক পার্থক্য। চার বছর হয়ে গেছে প্রেম টেম সিনেমার। এই সময়ে অনেক ম্যাচিউরিটি এসেছে আমার কাজে, ব্যক্তিত্বে। আশা করছি পর্দায় সেটা বুঝতে পারবেন সবাই।’

রাক্ষস সিনেমায় সুস্মিতার বিপরীতে আছেন সিয়াম আহমেদ। সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশ করা হয় সিনেমার অ্যানাউন্সমেন্ট টিজার। ১ মিনিট ২৬ সেকেন্ডের ভিডিওতে ভয়ংকর এক সিয়ামকে দেখা গেল। ফ্লোরের চারদিকে রক্তের ছোপ, রক্তমাখা সাদা স্যুট পরা সিয়ামের এক হাতে চায়নিজ কুড়াল অন্য হাতে পিস্তল। কামড়ে ধরে আছেন একটি গোলাপ। হাতের অস্ত্র উঁচিয়ে বাথটাবে পড়ে থাকা একটি মৃত বাঘের দিকে গুলি ছুড়লেন।

টিজার দেখে বোঝাই যাচ্ছে বরবাদ সিনেমার মতো রাক্ষসেও ভরপুর অ্যাকশন, ভায়োলেন্স দেখাবেন নির্মাতা মেহেদী হাসান হৃদয়। নির্মাতা জানালেন, এ সিনেমায় একটি প্রেমের গল্প আছে, যে প্রেমের কারণে সিয়াম অভিনীত চরিত্রটি রাক্ষস হয়ে ওঠে। এতে আরও অভিনয় করছেন বাপ্পারাজ, আলীরাজ প্রমুখ। সিনেমাটি নির্মিত হচ্ছে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান রিয়েল অ্যানার্জি প্রোডাকশনের ব্যানারে। ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে শুটিং। সব ঠিক থাকলে আগামী বছরের রোজার ঈদে মুক্তি পাবে রাক্ষস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকায় দুই কনসার্টে গাইলেন আতিফ আসলাম

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
ইউনাইটেড কনভেনশন সেন্টারে আতিফ আসলাম। ছবি: সংগৃহীত
ইউনাইটেড কনভেনশন সেন্টারে আতিফ আসলাম। ছবি: সংগৃহীত

এ মাসে ঢাকায় পাকিস্তানি সংগীতশিল্পী আতিফ আসলামের দুটি কনসার্টের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। তবে শঙ্কা জেগেছিল অনুমতি নিয়ে। স্থগিত হওয়ার শঙ্কা আছে জেনে দুটি কনসার্ট আয়োজনের পরিকল্পনা থেকে সরে এসে যৌথভাবে ১৩ ডিসেম্বর একটি কনসার্টের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মেইন স্টেজ ও স্পিরিটস অব জুলাই। তাতেও হয়নি শেষরক্ষা। নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে বাতিল করা হয় সেই কনসার্ট। তবে কনসার্ট বাতিল হলেও ঢাকায় এসেছেন আতিফ আসলাম। একের পর এক প্রাইভেট কনসার্টে গান শোনাচ্ছেন তিনি।

গতকাল আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (এআইইউবি) আয়োজিত ‘মিউজিক বিয়ন্ড বাউন্ডারিজ’ শীর্ষক কনসার্টে গান শোনান আতিফ। বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে আয়োজিত এ কনসার্টে প্রবেশের সুযোগ ছিল শুধু এআইইউবির বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীদের। বহিরাগতদের প্রবেশে ছিল কড়াকড়ি।

আতিফের কনসার্ট ঘিরে উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়েছিল এআইইউবিতে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া কয়েকটি ভিডিওতে দেখা যায়, কনসার্ট দেখতে মাঠে প্রবেশ করতে ছিল দীর্ঘ লাইন। বেলা ২টায় অনুষ্ঠানের সময় নির্ধারিত হলেও সকাল থেকেই কনসার্টের স্থলে ভিড় করতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। তিল ধরার জায়গা ছিল না মাঠে। আতিফও নিরাশ করেননি তাঁদের। গেয়ে শোনান তাঁর জনপ্রিয় গানগুলো। আতিফের আগে এই কনসার্টে গান শোনান দেশের সংগীতশিল্পী মিনার রহমান।

এর আগে ১৫ ডিসেম্বর ঢাকার ইউনাইটেড কনভেনশন সেন্টারে ‘দ্য ফাইনাল নোট’ শিরোনামের আরেকটি কনসার্টে গান শোনান আতিফ আসলাম। ওই কনসার্টে শুধু গুলশান ক্লাবের সদস্যরাই আমন্ত্রিত ছিলেন। এ ছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছে ঢাকায় আতিফের ঘুরে বেড়ানোর ভিডিও। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ক্রিকেট খেলায় মেতেছেন তিনি।

এর আগে পাকিস্তানের আলী আজমত ও ব্যান্ড কাভিশের কনসার্ট বাতিল হলেও তাঁরাও বাংলাদেশে এসেছিলেন। শোনা গেছে, তাঁরাও ঢাকায় একাধিক প্রাইভেট কনসার্টে পারফর্ম করেছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এ সপ্তাহের ওটিটি: ‘সাবা’সহ মুক্তির তালিকায় যেসব সিনেমা-সিরিজ

প্রতি সপ্তাহে নতুন সিনেমা বা ওয়েব সিরিজের জন্য দর্শকদের নজর থাকে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে। এ সপ্তাহেও মুক্তি পাচ্ছে নানা দেশের, নানা ভাষার কনটেন্ট। বাছাই করা এমন কিছু কনটেন্টের খোঁজ থাকছে এ প্রতিবেদনে।

বিনোদন ডেস্ক
মিসেস দেশপান্ডে সিরিজে মাধুরী। ছবি: সংগৃহীত
মিসেস দেশপান্ডে সিরিজে মাধুরী। ছবি: সংগৃহীত

সাবা (বাংলা সিনেমা)

  • মুক্তি: হইচই (১৯ ডিসেম্বর)
  • অভিনয়: মেহজাবীন চৌধুরী, মোস্তফা মনওয়ার, রোকেয়া প্রাচী
  • গল্পসংক্ষেপ: মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান সাবা। বাবা গত হয়েছে। মা সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে বিছানায় পড়ে আছে। বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন মেয়ে সাবা। পরিবার আর মায়ের সেবায় নিজের ক্যারিয়ার গুছিয়ে উঠতে পারেনি সাবা। অর্থের টানাটানিতে দিনরাত এক করে মাকে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা তার।

রাত আকেলি হ্যায়: দ্য বানসাল মার্ডারস (হিন্দি সিনেমা)

  • মুক্তি: নেটফ্লিক্স (১৯ ডিসেম্বর)
  • অভিনয়: নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকী, রাধিকা আপ্তে, চিত্রাঙ্গদা সিং
  • গল্পসংক্ষেপ: ২০২০ সালে মুক্তি পাওয়া ক্রাইম থ্রিলার ‘রাত আকেলি হ্যায়’ সিনেমার সিকুয়েল এটি। ইন্সপেক্টর জটিল যাদব এবার ফিরছে নতুন মামলা নিয়ে। কানপুরের ধনী ও প্রভাবশালী বানসাল পরিবারে ঘটে যাওয়া নৃশংস হত্যাকাণ্ডের তদন্তের দায়িত্ব পড়ে জটিল যাদবের ওপর। ঘটনার অন্তরালের লোভ, বিশ্বাসঘাতকতা ও ষড়যন্ত্রের জাল উন্মোচন করে সে।

মিসেস দেশপান্ডে (হিন্দি সিরিজ)

  • মুক্তি: জিওহটস্টার (১৯ ডিসেম্বর)
  • অভিনয়: মাধুরী দীক্ষিত, প্রিয়াংশু চ্যাটার্জি, সিদ্ধার্থ চান্দেকর
  • গল্পসংক্ষেপ: ফরাসি থ্রিলার ‘লা ম্যান্টে’র অনুপ্রেরণায় তৈরি এ সিরিজে মাধুরীকে দেখা যাবে একজন সিরিয়াল কিলারের চরিত্রে। অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় ২৫ বছর সাজা হয় মিসেস দেশপান্ডের। তার খুন করার ধরন কপি করছে আরেকজন। তাকে ধরতে পুলিশ সহায়তা নেয় মিসেস দেশপান্ডের।

এমিলি ইন প্যারিস সিজন ৫ (ইংরেজি সিরিজ)

  • মুক্তি: নেটফ্লিক্স (১৮ ডিসেম্বর)
  • অভিনয়: লিলি কুপার, ফিলিপাইন লেরয়-বিউলিউ, অ্যাশলে পার্ক
  • গল্পসংক্ষেপ: চতুর্থ সিজনে এমিলি কুপারের ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে অনেক কিছু অমীমাংসিত ছিল। সেসব প্রশ্ন ও কৌতূহল নিয়েই শুরু হচ্ছে পঞ্চম সিজন। এবার শুধু প্যারিসে নয়, এমিলির জার্নি বিস্তৃত হবে রোম শহরেও।

থাম্মা (হিন্দি সিনেমা)

  • মুক্তি: প্রাইম ভিডিও (১৬ ডিসেম্বর)
  • অভিনয়: আয়ুষ্মান খুরানা, রাশমিকা মান্দানা, নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকী
  • গল্পসংক্ষেপ: ভৌতিক গল্পের এ সিনেমার শুরুতে পাহাড়ে ট্রেকিংয়ে গিয়ে বিপদে পড়ে অলোক নামের এক সাংবাদিক। পথ ভুলে পৌঁছায় এমন এক ডেরায়, যেখানে অতিপ্রাকৃত শক্তির বাস। সেখানেই অলোকের দেখা হয় মানুষরূপী এ প্রেতাত্মার সঙ্গে। ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত