Ajker Patrika

মঞ্চে আলো নেই, অনলাইনে সচল থাকার চেষ্টা নাট্যকর্মীদের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৮ এপ্রিল ২০২১, ১১: ৪৩
মঞ্চে আলো নেই, অনলাইনে সচল থাকার চেষ্টা নাট্যকর্মীদের

করোনায় থমকে গেছে জীবন। সেই সঙ্গে থমকে গেছে মঞ্চে জীবনের রূপায়নও। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর সীমিতভাবে নাট্যচর্চা শুরু হলেও সরকারি বিধিনিষেধে আবারও বন্ধ হয়ে গেছে নাট্যচর্চা। দেশে প্রায় প্রতিদিনই বাড়ছে সংক্রমণের হার। এর সঙ্গে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। কোনোভাবে বেঁচে থাকার তাগিদে শহরজুড়ে ছুটে বেড়াচ্ছে মানুষজন। আতঙ্ক ও অস্থিরতা সর্বত্র। একটু মানসিক স্বস্তির আশায় নানা মাধ্যমে জড়ো হচ্ছেন নাট্যকর্মীরা। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মানুষের করুণ অথবা আলৌকিক জীবনযাপনের চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।

অভিনেতা ও দর্শকের সম্মিলনের মধ্য দিয়েই থিয়েটার তৈরি হয়। কিন্তু করোনা এমন এক পরিস্থিতি তৈরি করেছে, যেখানে কাছাকাছি আসাটাই নিষিদ্ধ। তবু নানা বিধিনিষেধ ডিঙিয়ে নাট্যকর্মীরা চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁদের প্রশিক্ষণ ও মহড়া। করোনার কারণে অনেক দল সরাসরি মহড়ার আয়োজন করতে না পারলেও অনলাইনে প্রতিনিয়ত প্রশিক্ষণ, নাটকপাঠের মতো কার্যক্রম চলছে। নাট্যকর্মীদের আশা, খুব দ্রুতই দর্শকদের সঙ্গে নিয়ে আবারও মঞ্চে আলো জ্বালাতে পারবেন তাঁরা। আবারও কোনো এক অভিনয় শিল্পীর দৃপ্ত কণ্ঠে কেঁপে উঠবে শিল্পকলা বা মহিলা সমিতির মঞ্চ।

করোনাকালে নাট্যচর্চা, নাট্যকর্মীদের সম্পৃক্ততা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন সংগঠকেরা। করোনায় অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, পারিবারিক টানাপোড়েন ও ব্যক্তিগত অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কারণে অনেক নাট্যকর্মীই স্বপ্নের মঞ্চ চিরতরে ছেড়ে দিতে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা। রেপার্টরি নাট্যদল তাড়ুয়ার সংগঠক শফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই মাসের ১০ তারিখ আমাদের “লেট মি আউট” নাটকের শো করার কথা ছিল। আমরা অনলাইনে মহড়াও শুরু করেছিলাম। কিন্তু লকডাউনের কারণে আমাদের শো বাতিল করা হলো। এটা হলে আমাদের অভিনেতাদের হাতে কিছু টাকা তুলে দিতে পারতাম।’

লকডাউনে নাট্যকর্মীদের অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরে শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রায় সবাই তাঁদের জীবন নির্বাহের জন্যে নানাবিধ কাজের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন। একজন অভিনেতা শুধু অভিনয় করতে চান। কিন্তু অভিনয়ের সুযোগ কোথায়? বাধ্য হয়ে অন্য কাজ করতে হচ্ছে। ফলে অনেকেই আমাদের অনলাইন প্রশিক্ষণ ক্লাসগুলোতে যুক্ত হতে পারছে না। বর্তমানে যে অবস্থা—টাকা নেই, খাবার নেই; থিয়েটার করবে কিভাবে?’

করোনার আগের সময়ের তুলনায় অস্বাভাবিকভাবে বদলে গেছে করোনা পরবর্তী সময়ের প্রেক্ষাপট। যেখানে সরাসরি দর্শকের সামনে অভিনয় শিল্পীরা এক হয়ে ঘটনাকে রূপ দিতে মঞ্চে, এখন সেখানে একসঙ্গে মহড়া করাই দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে। এর মধ্যে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় অনেকেই যুক্ত হতে পারছেন না মহড়ায়। অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতার কারণে যুক্ত হতে পারছেন না অনলাইন আড্ডা বা প্রশিক্ষণেও।

এম্পটি স্পেস থিয়েটার গত বছর করোনার পরপর জুলাই মাসে ‘নিউ টেস্টামেন্ট অব রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট’ নাটকের মহড়া শুরু করেছিল। এর আগে করোনাকালে অনলাইনে নাটকটি নিয়ে কাজ করেন দলটির কর্মীরা। ডিসেম্বর মাসে নাটকটির প্রদর্শনী হয়। নাটকটি নিয়ে এগিয়ে যেতে চেয়েছিল দলটি। একইসঙ্গে হাইনার মুলারের ‘হ্যামলেট মেশিন’–এর কাজও শুরু করেছিল দলটি। জানুয়ারিতে প্রদর্শনীর কথা থাকলেও আবারও করোনার প্রকোপে কাজ বন্ধ হয়ে গেছে দলটির।

দলটির সংগঠক গোলাম শাহরিয়ার সিক্ত বলেন, ‘নতুন নাটকের কাজ শুরু করতে পারছি না। একটি নতুন নাটকের জন্য অনেক টাকা প্রয়োজন। করোনার কারণে কোনো স্পনসর পাচ্ছি না। নিজেদের অবস্থাও খারাপ। দর্শকের আশায়ও নেমে পড়া যাচ্ছে না। নতুন নাটক নামিয়ে দর্শকের সামনেই যদি না আসতে পারি, তবে আর লাভ কী?’ এখন আবার করোনা মোকাবিলায় সরকারি কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ হওয়ায় অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন দলটির সংগঠক ও কলা-কুশলীরা। দলের সবাইকে মানসিকভাবে চাঙা রাখতে অনলাইনে লাইট, সেট, কস্টিউম, প্রপসের ডিজাইন ইত্যাদি নিয়ে আড্ডা চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।

বিভিন্ন নাট্যদলের সঙ্গে যুক্ত বেশির ভাগ নাট্যকর্মীই মনে করছেন আপাতত মানুষের জীবন বাঁচানোই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতিতে অভিনেতাদের সুস্থ থেকে ব্যক্তিক চর্চার মাধ্যমে আত্মোন্নয়নই করণীয় বলে মনে করেন অভিজ্ঞ নাট্যকর্মী ও সংগঠকেরা।

এ বিষয়ে সুবচন নাট্য সংসদের সংগঠক আহমেদ গিয়াস আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত এক বছর ধরে দলের কার্যক্রম একেবারেই বন্ধ। আমি মনে করি, আগে জীবনটা বাঁচুক, তারপর থিয়েটার। আমরা গত ফেব্রুয়ারি ‘মহাজনের নাও’–এর সর্বশেষ প্রদর্শনী করেছি। আর গত ফেব্রুয়ারিতে একটি পথনাটক। এ ছাড়া আর কিছু করা সম্ভব হয়নি। বর্তমান পরিস্থিতিতে একেবারেই কিছু করা সম্ভব না। করোনায় সবার অবস্থাই খারাপ। এটা কাটাতে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে প্রতিনিয়ত অনলাইন আড্ডা চালিয়ে যাচ্ছি।’

বর্তমান প্রেক্ষাপটে সরাসরি নাটকের মহড়ায় যুক্ত হওয়া সবার জন্যই বিপজ্জনক বলে মনে করেন আরণ্যক নাট্যদলের সংগঠক রিয়া চৌধুরী। করোনার কারণে দীর্ঘদিন ধরে দলের কার্যক্রম অনেকটা স্থগিত বলে জানান তিনি। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নাট্যকর্মীরা মঞ্চে ফিরবেন বলে তিনি আশাবাদী। আজকের পত্রিকার সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, ‘গত বছর আমাদের “ফেসবুক” নাটকটির প্রদর্শনী হয়েছে। এর পর করোনার কারণে আর কোনো নতুন নাটকের কাজ করা সম্ভব হয়নি। এই মাসে প্রদর্শনীর কথা ছিল। মার্চে আমরা মহড়াও শুরু করেছিলাম। কিন্তু আবার সব বন্ধ হয়ে গেল।’

মঞ্চ থেকে দীর্ঘদিন দূরে থাকার ফলে অনেক নাট্যকর্মীই হতাশায় ভুগছেন। নাট্যদলগুলোতে বেশির ভাগ সদস্যই কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুা তরুণ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় তাঁরা ঢাকা বাইরে অবস্থান করছেন। ফলে অনলাইন বা সরাসরি কোনো মহড়াতেই তাঁদের যুক্ত করা যাচ্ছে না। নেটওয়ার্ক সমস্যা ও অর্থনৈতিক সংকটও বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে তরুণ নাট্যকর্মীদের সামনে। তবুও সব বাধা উপেক্ষা করে শিগগিরই মঞ্চে ফিরবেন বলে আশা করছেন বিভিন্ন নাট্যদলের সংগঠকেরা। তাঁরা মনে করেন, একজন নাট্যকর্মী তখনই জীবন্ত হয়ে ওঠেন, যখন তিনি মঞ্চের আলোয় আলোকিত হন। সংকটময় পরিস্থিতির সমাধান না হওয়া পর্যন্ত সরাসরি কাছাকাছি না থাকতে পারলেও বিকল্প মাধ্যমে দলবদ্ধ থাকার চেষ্টা করছেন নাট্যকর্মীরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খুলনায় এনসিপির শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাকে মাথায় গুলি

বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলা: লুটের টাকায় টিভি-ফ্রিজ কিনেছিলেন গ্রেপ্তার নাইম

তারা মধ্যযুগীয় কায়দায় পুড়িয়ে মারতে চেয়েছে: নূরুল কবীর

মনোনয়নপত্র কিনে ভুল করেছি, জমা দেব না: কুমিল্লার সাবেক মেয়র সাক্কু

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তিন বছর পর বিচ্ছেদের খবর দিলেন বিন্দু

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ২৮
বিন্দু। ছবি: সংগৃহীত
বিন্দু। ছবি: সংগৃহীত

২০১৪ সালে ব্যবসায়ী আসিফ সালাহউদ্দিন মালিককে বিয়ে করেন অভিনেত্রী আফসান আরা বিন্দু। বিয়ের পর শোবিজ থেকে পুরোপুরি নিজেকে গুটিয়ে নেন তিনি। অভিনয় ছেড়ে হয়ে ওঠেন সংসারী। বিয়ের চার বছর পর গুঞ্জন রটে, সংসার ভেঙেছে বিন্দুর। তবে বিচ্ছেদ নিয়ে তখন কোনো কথা বলেননি বিন্দু কিংবা তাঁর স্বামী। অবশেষে নিজের বিচ্ছেদের বিষয়টি নিশ্চিত করলেন অভিনেত্রী। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বিন্দু জানান, ২০২২ সালে বিচ্ছেদ হয়েছে তাঁর।

২০২২ সালে বিচ্ছেদ হলেও ২০১৭ সাল থেকেই স্বামীর সঙ্গে সেপারেশনে ছিলেন বিন্দু। পাঁচ বছর পর তাঁরা চূড়ান্তভাবে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন। বিন্দু বলেন, ‘অনেকেই মনে করেন, আমি এখনো বিবাহিত। কিন্তু না, আমার বিচ্ছেদ হয়ে গেছে। আমার সংসারের জার্নিটা অনেক ছোট ছিল।’

বিচ্ছেদের কারণ জানিয়ে বিন্দু বলেন, ‘আলাদা হওয়ার জন্য অনেক সময় বড় কারণ থাকে, বড় ঘটনা ঘটে। অনেক সময় আবার তেমন কোনো কারণও দরকার হয় না। আমার এই জার্নিতে আরও একজন মানুষ জড়িত। তারও ব্যক্তিগত জীবন আছে। বিচ্ছেদ নিয়ে কোনো ব্যাখ্যা দিয়ে তাকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলতে চাই না।’

২০০৬ সালে লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতা দিয়ে শোবিজে যাত্রা শুরু হয় বিন্দুর। অল্প দিনেই হয়ে ওঠেন মিডিয়ার নিয়মিত মুখ। অভিনয় থেকে বিরতি নেওয়ার আগে ২০১৪ সালের শুধু কোরবানির ঈদেই প্রচারিত হয় তাঁর অভিনীত ৫২টি নাটক। ছোট পর্দার পাশাপাশি বিন্দু অভিনয় করেছেন সিনেমাতেও।

ক্যারিয়ারের শুরুতে আরিফিন শুভর সঙ্গে জুটি বেঁধে অনেক নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। পর্দায় তাঁদের জুটি অনেক জনপ্রিয় ছিল। অনস্ক্রিন কেমেস্ট্রির প্রভাব পড়েছিল দুজনের বাস্তব জীবনেও। একসময় শুভর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান বিন্দু। সেই প্রেমের কথা স্বীকারও করেছেন অভিনেত্রী। কেন তাঁদের সম্পর্ক ভেঙে গিয়েছিল? বিন্দুর সংক্ষিপ্ত জবাব, ‘এর উত্তর আমার কাছে নেই। দুটি মানুষের জার্নি যে একসঙ্গে একই গন্তব্যে শেষ হবে, এমন তো কোনো কথা নেই।’

প্রায় এক দশকের বিরতি কাটিয়ে ২০২৩ সালে ‘উনিশ ২০’ ওয়েব ফিল্ম দিয়ে অভিনয়ে ফেরেন বিন্দু। মিজানুর রহমান আরিয়ানের পরিচালনায় এতে বিন্দুর বিপরীতে ছিলেন সেই আরিফিন শুভই। তবে এরপর আর কোনো কাজে দেখা যায়নি বিন্দুকে। তবে তিনি নিয়মিত অভিনয় করতে চান। বিন্দু বলেন, ‘শিল্পী হিসেবে কাজ করতে প্রস্তুত। এখন আমাকে নিয়ে কাজ করার চিন্তা, আমার পেছনে ইনভেস্ট করার বিষয়গুলো ভাবতে হবে। এমন ধরনের কাজ করতে চাই, যেগুলো এখনো করিনি। আমি চাই, নির্মাতারা আমাকে নিয়ে এমনভাবে ভাবুক, যেমনটা আগে ভাবা হয়নি।’

অভিনয় ছেড়ে দিয়ে বছর পাঁচেক আগে ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়েছেন বিন্দু। গুলশানে রয়েছে তাঁর একটি বুটিক হাউস। ‘আফসান বিন্দু ডিজাইনার স্টুডিও’ নামের এ ব্র্যান্ডের পোশাক বিন্দু নিজেই ডিজাইন করেন। ২০২০ সালে যখন প্রতিষ্ঠানটি শুরু করেন বিন্দু, তখন তাঁর কর্মীর সংখ্যা ছিল মাত্র একজন। তবে এখন তাঁর সঙ্গে ১৫ জন কাজ করেন বলে জানিয়েছেন অভিনেত্রী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খুলনায় এনসিপির শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাকে মাথায় গুলি

বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলা: লুটের টাকায় টিভি-ফ্রিজ কিনেছিলেন গ্রেপ্তার নাইম

তারা মধ্যযুগীয় কায়দায় পুড়িয়ে মারতে চেয়েছে: নূরুল কবীর

মনোনয়নপত্র কিনে ভুল করেছি, জমা দেব না: কুমিল্লার সাবেক মেয়র সাক্কু

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘ইত্যাদি’র নতুন পর্ব এবার চুয়াডাঙ্গায়

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র দৃশ্য
ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র দৃশ্য

নব্বইয়ের দশক থেকে স্টুডিওর চারদেয়ালের বাইরে বেরিয়ে শিকড়ের সন্ধানে দেশের নানা প্রান্তে শুটিং করা হচ্ছে ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদির। তারই ধারাবাহিকতায় ইত্যাদির নতুন পর্ব ধারণ করা হয়েছে ইতিহাস ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ প্রাচীন জনপদ চুয়াডাঙ্গায়।

এবারের ইত্যাদির মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছিল ব্রিটিশ আমলে তৈরি শতাধিক বছরের প্রাচীন হাজারদুয়ারি নামে খ্যাত ঐতিহ্যবাহী স্কুল নাটুদা মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। এবারের পর্বে গান রয়েছে দুটি। একটি গান গেয়েছেন লোকসংগীতশিল্পী বিউটি ও পান্থ কানাই। গানটির কথা লিখেছেন মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান, সংগীতায়োজন করেছেন মেহেদী।

এ ছাড়া অনুষ্ঠানের শুরুতে চুয়াডাঙ্গার কৃষ্টিকথা ও ইতিহাসগাথা নিয়ে রয়েছে শাহ আলম সনির কথায় একটি পরিচিতিমূলক গানের সঙ্গে নৃত্য। গানটির সুর করেছেন হানিফ সংকেত, সংগীতায়োজন করেছেন মেহেদী। পরিবেশন করেছেন স্থানীয় নৃত্যশিল্পীরা। এ ছাড়া ইত্যাদির নতুন পর্বে থাকছে চুয়াডাঙ্গা নিয়ে কয়েকটি প্রতিবেদন। রয়েছে চুয়াডাঙ্গা জেলার ইতিহাস-ঐতিহ্যসহ এর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান-স্থাপনার ওপর একটি তথ্যভিত্তিক প্রতিবেদন।

ইত্যাদির নিয়মিত আয়োজন চিঠিপত্র পর্বে উঠে এসেছে চুয়াডাঙ্গার একজন ব্যতিক্রমী ছড়াকারের গল্প। আরও রয়েছে সামাজিক অসংগতি ও সমসাময়িক প্রসঙ্গনির্ভর নাটিকা। দানের নামে ফটোসেশন, সংসারের ভারে স্বপ্নভঙ্গ, মিষ্টি নিয়ে অনাসৃষ্টি, ইংরেজির দাপটে অসহায় বাংলা ভাষা, বোঝা না বোঝার বোঝা, স্টাইলিশ আইকনের বিপত্তি, লোম বাছতে কম্বল উজাড়সহ কয়েকটি নাট্যাংশে অভিনয় করেছেন সোলায়মান খোকা, সুভাশিষ ভৌমিক, আবদুল্লাহ রানা, আমিন আজাদ, কাজী আসাদ, মুকিত জাকারিয়া, আনোয়ার শাহী, শাহেদ আলী, জামিল হোসেন, আনন্দ খালেদ, তারিক স্বপন, আবু হেনা রনি প্রমুখ।

ইত্যাদির এই পর্ব দেখা যাবে ২৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ টেলিভিশনে রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর। ইত্যাদি রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেছেন হানিফ সংকেত। নির্মাণ করেছে ফাগুন অডিও ভিশন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খুলনায় এনসিপির শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাকে মাথায় গুলি

বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলা: লুটের টাকায় টিভি-ফ্রিজ কিনেছিলেন গ্রেপ্তার নাইম

তারা মধ্যযুগীয় কায়দায় পুড়িয়ে মারতে চেয়েছে: নূরুল কবীর

মনোনয়নপত্র কিনে ভুল করেছি, জমা দেব না: কুমিল্লার সাবেক মেয়র সাক্কু

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘মহাশূন্যে সাইকেল’ নাটকের চার দিনে সাত প্রদর্শনী

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
‘মহাশূন্যে সাইকেল’ নাটকের দৃশ্য
‘মহাশূন্যে সাইকেল’ নাটকের দৃশ্য

গত বছর ডিসেম্বরে মঞ্চে এসেছিল অনুস্বর নাট্যদলের নাটক ‘মহাশূন্যে সাইকেল’। বাংলাদেশ মহিলা সমিতিতে পাঁচ দিনে নাটকটির আটটি প্রদর্শনী হয়েছিল। বছর ঘুরে আবারও মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে মহাশূন্যে সাইকেল নাটকের প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে অনুস্বর। ২৪ থেকে ২৭ ডিসেম্বর টানা চার দিন দেখা যাবে নাটকের সাতটি প্রদর্শনী।

কথাসাহিত্যিক শাহাদুজ্জামানের লেখা একই শিরোনামের গল্প অবলম্বনে এর নাট্যরূপ দিয়েছেন লেখক নিজে। নির্দেশনায় সাইফ সুমন। ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় দেখা যাবে মহাশূন্যে সাইকেল। ২৫ থেকে ২৭ ডিসেম্বর প্রতিদিন বিকেল ৫টা ও সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মঞ্চস্থ হবে আরও ছয়টি প্রদর্শনী।

নাট্যকার শাহাদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা কিছু কথা অনেকের সঙ্গে বলি, কিছু কথা নির্দিষ্ট মানুষের সঙ্গে বলি আর কিছু কথা শুধু নিজের সঙ্গে বলি। যেকোনো ক্রান্তির সময় নিজের সঙ্গে এই বোঝাপড়ার মাত্রা এবং ব্যাপ্তি সম্ভবত বেড়ে যায়। মহাশূন্যে সাইকেলের মূল ভাবনাটা এ রকম। গত বছর এই গল্পের নাট্যরূপ দিই। একজন ব্যক্তি নিজেকে দুই ভাগ করে তার এই দুই সত্তার সঙ্গে মঞ্চে কথোপকথন করছে। দর্শক হিসেবে একজন ব্যক্তির এই একান্ত বিভক্ত সত্তার ভেতরে এই কথোপকথন দেখার ভেতরে একটা গোপন কৌতূহল হয়তো আছে। কিংবা নিজের সঙ্গে মিলিয়ে নেওয়ার আনন্দ আছে।’

নির্দেশক সাইফ সুমন বলেন, ‘ভোগবাদিতা আর ব্যক্তিস্বার্থের কারণে মানুষ এখন প্রতিনিয়তই পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। পরিবার, বন্ধু, সমাজ থেকে ক্রমেই বিচ্ছিন্ন হচ্ছি আমরা। কখনো কখনো মানুষের মধ্যে বাস্তবের চেয়ে কল্পনা বা অলৌকিক জগৎ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। পরিবারের সঙ্গে থেকেও একা অনুভব করে। সেই কথাই বলার চেষ্টা হয়েছে নাটকে।’

মহাশূন্যে সাইকেল নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন মোহাম্মদ বারী, এস আর সম্পদ, প্রশান্ত হালদার, নুরুজ্জামান সরকার, রীমা প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খুলনায় এনসিপির শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাকে মাথায় গুলি

বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলা: লুটের টাকায় টিভি-ফ্রিজ কিনেছিলেন গ্রেপ্তার নাইম

তারা মধ্যযুগীয় কায়দায় পুড়িয়ে মারতে চেয়েছে: নূরুল কবীর

মনোনয়নপত্র কিনে ভুল করেছি, জমা দেব না: কুমিল্লার সাবেক মেয়র সাক্কু

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নতুন লুকে চমকে দিলেন কিয়ারা আদভানি

বিনোদন ডেস্ক
কিয়ারা আদভানি। ছবি: সংগৃহীত
কিয়ারা আদভানি। ছবি: সংগৃহীত

‘কেজিএফ’ সিনেমার দুই পর্বের ব্যাপক সাফল্যের পর কন্নড় সুপারস্টার ইয়াশ যুক্ত হয়েছেন মালয়ালম নির্মাতা গিতু মোহনদাসের সিনেমায়। ‘টক্সিক: আ ফেয়ারিটেল ফর গ্রোনআপস’ নামের কন্নড় ভাষার এ সিনেমায় প্রথমবারের মতো ইয়াশের নায়িকা হয়েছেন কিয়ারা আদভানি। টক্সিকে কিয়ারার চরিত্রের নাম নাদিয়া। গতকাল প্রকাশ করা হয়েছে এ সিনেমায় কিয়ারার চরিত্রের লুক।

শোবিজে কিয়ারার এক যুগ হতে চলেছে। ২০১৪ সালে ‘ফুগলি’ দিয়ে যাত্রা শুরুর পর এ পর্যন্ত ২০টির মতো সিনেমায় অভিনয় করেছেন। প্রতিটিতেই দেখা দিয়েছেন বৈচিত্র্যময় চরিত্রে। তবে টক্সিকে কিয়ারার চরিত্রটি যে একেবারেই আলাদা হতে চলেছে, সে আভাস পাওয়া গেল সদ্য মুক্তি পাওয়া ফার্স্ট লুক পোস্টারে। এতে তাঁকে দেখা যাবে একজন সার্কাসশিল্পী হিসেবে।

ফার্স্ট লুক পোস্টারে আলো ঝলমলে সার্কাসের সেটে অফ-শোল্ডার ভেলভেট গাউন পরে দাঁড়িয়ে আছে কিয়ারা অভিনীত নাদিয়া চরিত্রটি। চোখে-মুখে বিষণ্নতা, ক্লান্তির ছাপ। সার্কাসের মঞ্চে জাঁকজমক আবহে নৃত্যরত যে শিল্পীকে দেখা যায় দর্শকের সামনে, তার মনের ভেতরে অনেক সময় চলে দুঃখের দোলাচল। ভেতরে জমাট কষ্ট নিয়েই হাসিমুখে দর্শকের সামনে পারফর্ম করে তারা। টক্সিকের পোস্টারে তেমনটাই ধরা পড়েছে। এমনই এক জটিল চরিত্র নিয়ে দর্শকের সামনে আসবেন কিয়ারা।

ভিএন প্রোডাকশন এবং মনস্টার মাইন্ড ক্রিয়েশনসের ব্যানারে নির্মিত বিগ-বাজেট সিনেমা টক্সিক মুক্তি পাবে ২০২৬ সালের ১৯ মার্চ। দক্ষিণি মেগাস্টার যশ ও কিয়ারার এই নতুন রসায়ন বড় পর্দায় দেখার জন্য এখন থেকেই অপেক্ষায় অনুরাগীরা। এতে আরও অভিনয় করেছেন নয়নতারা, তারা সুতারিয়া, হুমা কুরেশি, অক্ষয় ওবেরয় প্রমুখ।

ইংরেজি ও কন্নড়—দুই ভাষাতেই টক্সিক সিনেমার শুটিং করা হয়েছে। পাশাপাশি হিন্দি, তেলুগু, তামিল, মালয়ালমসহ বিভিন্ন ভাষায় ডাব করা হবে। এতে কিয়ারার পারফরম্যান্স নিয়ে নির্মাতা গিতু মোহনদাস বলেন, ‘কিছু পারফরম্যান্স শুধু পর্দায় নয়, প্রভাব ফেলে শিল্পীর জীবনেও। টক্সিক সিনেমায় কিয়ারা যা করেছে, তার কোনো তুলনা হয় না। সিনেমাটি নিয়ে আমাদের প্রথম আলাপের মুহূর্ত থেকেই তিনি চরিত্রটির প্রতি নিজেকে সম্পূর্ণ সমর্পণ করেছেন। তিনি শুধু নাদিয়া চরিত্রে অভিনয় করেননি, নিজেও চরিত্রটির মতো করেই যাপন করেছেন।’

প্রসঙ্গত, বলিউডের তারকা দম্পতি কিয়ারা আদভানি ও সিদ্ধার্থ মালহোত্রার সংসারে নতুন সদস্য এসেছে গত ১৫ জুলাই। এখন সন্তানকে নিয়েই পুরো সময়টা কাটছে অভিনেত্রীর। আর একটু একটু করে নিচ্ছেন আবার শোবিজে ফেরার প্রস্তুতি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খুলনায় এনসিপির শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাকে মাথায় গুলি

বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলা: লুটের টাকায় টিভি-ফ্রিজ কিনেছিলেন গ্রেপ্তার নাইম

তারা মধ্যযুগীয় কায়দায় পুড়িয়ে মারতে চেয়েছে: নূরুল কবীর

মনোনয়নপত্র কিনে ভুল করেছি, জমা দেব না: কুমিল্লার সাবেক মেয়র সাক্কু

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত