Ajker Patrika

মনে আরাম দেওয়া একটি সিনেমা

জাহীদ রেজা নূর
আপডেট : ০৪ মার্চ ২০২৩, ১৫: ৪৭
মনে আরাম দেওয়া একটি সিনেমা

মন্ত্রী পৌঁছাতে দেরি করছেন, সে কারণে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান থেমে থাকেনি। প্রথমে ভাবা হয়েছিল আসুন না মন্ত্রী, তারপর শুরু করা যাবে। কিন্তু তাতে ছবিটি দেখার কৌতূহল নিয়ে যাঁরা উপস্থিত হয়েছিলেন মহাখালীর এসকেএস টাওয়ারের স্টার সিনেপ্লেক্সে, তাঁদের ধৈর্যসীমায় আঘাত লাগতে পারে ভেবে সিনেমার লোকেরা সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলেন। মন্ত্রী থাকলেন পথে, শুরু হয়ে গেল পরিচিতি অনুষ্ঠান। সিনেমাতেই রয়েছে যে ইংরেজি গানটি, সেটি নাসিম আলী খান পরিবেশন করলেন সবার আগে। মিলনায়তনের প্রায় নিবে যাওয়া রহস্যময় আলো-আঁধারিতে কানে বাজতে লাগল নাসিম আলী খানের গান। 

 ‘জে কে ১৯৭১’ ছবির পরিচালক ফাখরুল আরেফীন খান পরিচয় করিয়ে দিলেন কলাকুশলীদের সঙ্গে। তাঁদের কেউ কেউ যখন কথা বলছেন, তখন উপস্থিত হলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। তিনি বুঝলেন, সময়ক্ষেপণ করা ঠিক হবে না। সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষ করে সিনেমাটি দেখার সুযোগ করে দিলেন। ফলে ট্রেন চলল কু ঝিকঝিক। ছবি শুরু হতে দেরি হলো না। 

ফাখরুলের যে বিষয়টি আমার সবচেয়ে ভালো লাগে তা হলো পরিমিতিবোধ। অযথা সংলাপের বাড়াবাড়ি কিংবা দৃশ্যায়নে নাটকীয়তা সৃষ্টির কোনো প্রয়াস দেখি না ওর মধ্যে। যা সাবলীল, যা চোখ এবং কানকে আরাম দেয় কিংবা কষ্ট দেয়, সে রকম ঘটনারই প্রকাশ দেখা গেল ছবিটায়। 

 জে কে ১৯৭১ ছবিটি শুরু হওয়ার পরই মনে হলো, নানা স্তরের মুক্তিযুদ্ধের একটি স্তর নিয়ে সযতনে যে কাজটি করেছেন ফাখরুল, সে জন্য তাঁকে সাধুবাদ জানানো দরকার। অনেকেই এখন জানেন, বোঝেন, বাংলার মুক্তিসংগ্রাম তো কেবল ৯ মাসের সশস্ত্র যুদ্ধ ছিল না, যেখানে অস্ত্র হাতে দুই দল সৈন্য সামনাসামনি হয়েছে। বহু যুগ আগে থেকে শুরু হওয়া মুক্তিসংগ্রামের চূড়ান্ত রূপ আমরা দেখেছি স্বাধীনতাযুদ্ধে। এবং এই যুদ্ধ নানাভাবে করেছে এ দেশেরই মানুষ। কেউ লিখে, কেউ এঁকে, কেউ গান গেয়ে, কেউ ফুটবল খেলে, কেউ রোগীর সেবা করে, কেউ মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে সহযোগিতা করে, কেউ গুপ্তচরবৃত্তি করে স্বাধীনতার রসদ জোগান দিয়েছেন। সেটা যে শুধুই বঙ্গদেশের নাগরিকেরা করেছেন তা নয়; বিদেশ-বিভুঁইয়ের অনেকেই বাংলা নামের দেশটির সঙ্গে প্রাণের যুক্ততা অনুভব করেছেন। 

আর হ্যাঁ, একটি প্রবল গণযুদ্ধকে শুধু জেনারেলদের সমরকাহিনি বলে চালালেও বিপদ আছে। তাহলে সত্য ইতিহাসটি ভুল দিকে রওনা করতে পারে। ইতিহাসকে ঠিক পথে রাখার জন্য যে প্রয়াসগুলো নিতে হয়, তা নিতে হয় বুঝেশুনেই। আমাদের দেশে একাত্তর নিয়ে যে এখনো বড় মাপের কোনো কাজ হলো না, তার একটা কারণ তো একাত্তরকে ঠিকভাবে বুকে ধারণ করতে না পারা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে সোভিয়েত ইউনিয়নে যে সিনেমাগুলো হয়েছে, সেগুলোর দিকে চোখ রাখলেও এই সত্য ধরা পড়ে। যুদ্ধ আছে ছবিতে, কিন্তু মানুষের কাহিনিই সেখানে বিবৃত হয়েছে যথার্থভাবে। ‘ক্রেইনস আর ফ্লাইং’ কিংবা ‘ব্যালাড অব এ সোলজার’ ছবি দুটির দিকে চোখ রাখলেই বোঝা যায়, যুদ্ধের ভয়াবহতা অগ্রাহ্য করে কীভাবে জয়ী হচ্ছে সাধারণ মানুষ। 

 তেমনি একজন মানুষের গল্প শোনালেন ফাখরুল আরেফীন খান। ফরাসি এই যুবক তাঁর প্রাণের বিশালতা এবং শিশুদের প্রতি প্রগাঢ় ভালোবাসা থেকে যে কাজটি করেছিলেন, তারই চলচ্চিত্ররূপ দেখা গেল ফাখরুলে। 

ফাখরুল ছবিতে নাটকীয়তা বর্জন করেছেন। আবহ সংগীত ব্যবহারেও ছিলেন সংযত। কখনো কখনো মনে হচ্ছিল একটু নাটকীয় হলে ক্ষতি কী ছিল? হলিউডি ছবির মতো হঠাৎ করে সৃষ্টিছাড়া শব্দের জন্ম হলেই বা কী ক্ষতি ছিল? ছুরি হাতে এয়ারহোস্টেজ যখন জেকেকে হত্যা করার জন্য এগিয়ে আসে, তখন অভিনয়ে কিংবা আবহসংগীতে কি আরেকটু চাঞ্চল্য আনা যেত? কিংবা শেষ দিকে কমান্ডোরা যখন ঢুকছে, তখন কি আরেকটু টানটান হতে পারত দৃশ্যটি? তা নিয়ে বোদ্ধামহলে আলোচনা হতে পারে। কিন্তু আমরা যারা খোলা মন নিয়ে ছবি দেখতে যাই, যারা সমালোচনা করার যোগ্য নই, তারা ওই সীমাবদ্ধতা মেনে নিতে রাজি থাকি। 

ছবিটি কেবল সিনেমা হলে এসেছে, এখন কাহিনি নিয়ে কথা বলা ঠিক হবে না। তাতে দর্শক-শ্রোতা কাহিনি জেনে নেওয়ায় হলে গিয়ে ছবি দেখতে নিরুৎসাহিত হতে পারেন। তাই অন্য কথা বলি। ফাখরুল যখন থেকে ছবি করছেন, তখন থেকেই তাঁর ভাবনার দিকটি স্বচ্ছ ছিল। সে লালনের আখড়া হোক, আর হোক আলবদরের কাহিনি, সে ভুবনমাঝি হোক, আর জেকে ১৯৭১ হোক, সবখানেই ওর বলার উদ্দেশ্যটি পরিষ্কার। আরেফীনের ছবিগুলোয় একধরনের শিকড়ের প্রতি ভালোবাসা দৃশ্যমান। কিংবা একটু ভিন্নধারায় যে ‘গণ্ডি’ ছবিটি তিনি করেছেন, তাতেও প্রকাশ পায় তাঁর পরিমিতি। 

 আর যেটা ভালো লাগে, তা হলো আমাদের উচ্চকিত সংস্কৃতি জগৎটায় প্রায় সবাই যখন দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য প্রাণান্ত চেষ্টা করে যাচ্ছেন, সাংবাদিক ভজাচ্ছেন, উচ্চবিত্ত মানুষকে তোয়াজ করছেন, রাজনৈতিক প্রভু খুঁজছেন, তখন ফাখরুল নিজের পছন্দের একটা বিষয় নিয়ে বুঁদ হচ্ছেন সৃষ্টির আনন্দে। 

অভিনয়ে সবাই উতরে গেছেন। তবে যে ফরাসিরা হাইজ্যাকের মতো একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামাল দিচ্ছিলেন, তাঁদের দেহভাষায় আরেকটু উত্তাপ থাকতে পারত। আর জেকে যখন ফরাসিতে দীর্ঘ দীর্ঘ কথা বলছিলেন, তখন দোভাষী ভদ্রলোক (ইন্দ্রজিৎ যে ভূমিকায় অভিনয় করেছেন) একেবারে মুখস্থের মতো তা ইংরেজিতে অনুবাদ করে দিচ্ছিলেন, সেটা একটু অস্বস্তি আনছিল মনে। বাক্যগুলো আলাদা আলাদা বলা হলে তা মনে রেখে অনুবাদ করা যায়। কিন্তু একবারে বলা কথাগুলো একেবারে ঠিক ঠিক অনুবাদ করা দুরূহ! 

বলতে হবে, ফাখরুলের এই সিনেমা স্বস্তি এনে দেয় মনে, আরাম এনে দেয়। বহু দূরদেশের একজন তরুণ তেপান্তরের মাঠ পেরোনো আর এক দেশের শিশুদের বাঁচাতে খালি হাতে প্লেন হাইজ্যাক করছেন, এই অসামান্য ঘটনাটি সংরক্ষণ করা হলো, এ বড় আনন্দ সংবাদ। 

 ফাখরুলের ক্যামেরা ঠিক বিষয়টিকে উঠিয়ে আনে। পরিমিতিবোধের কথা তো আগেই বলা হলো। ইদানীং বাংলাদেশে চলচ্চিত্রে নতুন একটা ঢেউ এসেছে সত্যি। ‘কুড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া’, ‘হাওয়া. ’ ‘পরান’, ‘দামাল’ ছবিগুলো প্রতিশ্রুতিশীল। ফাখরুল আরেফীন খানের ‘জেকে ১৯৭১’ তারই ধারাবাহিকতা শুধু নয়, আরও কিছু। 

ছবিতে ‘জঁ কুয়ে’র ভূমিকায় যে ছেলেটি অভিনয় করেছেন, তিনি নিজেকে ফরাসি যুবক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন। হ্যাঁ, সৌরভ শুভ্র দাশকে জঁ কুয়ে ভাবতে একেবারেই কষ্ট হয়নি। 

শেষ দৃশ্যটি মনে কেন আরাম দেয় সেটা বুঝতে হলে তো যেতে হবে সিনেমা হলে। সে এক অন্য অভিজ্ঞতা। 

 ফাখরুল চলচ্চিত্রকার হতে চাননি। তিনি বলেছেন, এই জগতে আসা তাঁর জন্য একটা দুর্ঘটনা। কিন্তু এ রকম দুর্ঘটনা আমাদের সংস্কৃতিজগতের জন্য ভালো। প্রাণদায়ী। এই দুর্ঘটনা আমাদের ভালো কিছুর সামনে নিয়ে এসেছে, ভবিষ্যতেও আনবে, এই ভাবনা স্বস্তি দেয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রুবাইয়াত হোসেনের সিনেমায় বাঁধন, শিমু ও সুনেরাহ

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘদিন ধরে ‘দ্য ডিফিকাল্ট ব্রাইড’ সিনেমা নিয়ে কাজ করছেন নির্মাতা রুবাইয়াত হোসেন। চিত্রনাট্য নিয়ে ঘুরেছেন বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে। পেয়েছেন আন্তর্জাতিক ফান্ড। অবশেষে জানা গেল এ সিনেমার অভিনয়শিল্পীদের নাম। দ্য ডিফিকাল্ট ব্রাইড সিনেমায় অভিনয় করছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া তিন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন, রিকিতা নন্দিনী শিমু ও সুনেরাহ বিনতে কামাল। তাঁদের সঙ্গে আছেন জাইনিন করিম চৌধুরী। সংবাদমাধ্যম ভ্যারাইটিকে এমনটাই জানিয়েছেন নির্মাতা।

সিনেমাটির গল্পে দেখা যাবে, এক মেয়ের স্বপ্ন রূপকথার মতো আয়োজনে তার বিয়ে হবে। কিন্তু ভেতরে ভেতরে সে এক জটিল রোগে ভুগছে। সমস্যা সমাধানে ঘরোয়া উপায় ব্যবহার করে। কোনো ফল না পাওয়ায় মানসিক চাপ বাড়তে থাকে। একদিন বিউটি পারলারে গিয়ে লম্বা চুলের এক রহস্যময় নারীকে কল্পনায় দেখতে শুরু করে মেয়েটি।

ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে সিনেমাটির শুটিং। অভিনয়শিল্পীদের নিয়ে রুবাইয়াত হোসেন বলেন, ‘প্রত্যেক অভিনয়শিল্পী উজাড় করে দিয়েছেন। নিজেদের সর্বোচ্চটা দিয়েছেন। আমি তাঁদের আস্থা, তাঁদের উদারতা, তাঁদের নিখুঁত শৈল্পিকতা এবং দৃঢ় প্রত্যয়ের জন্য কৃতজ্ঞ।’ নির্মাতা জানান, গল্পটি নিয়ে প্রায় দুই দশক ধরে কাজ করছেন তিনি। ২০০৬ সালে প্রথমে স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমা হিসেবে নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন দ্য ডিফিকাল্ট ব্রাইড। পরবর্তী সময়ে সিদ্ধান্ত বদলে পূর্ণদৈর্ঘ্য নির্মাণের পথে হাঁটেন।

রুবাইয়াত হোসেন বলেন, ‘২১ বছর ধরে গল্পটি মনের মধ্যে রেখেছি, বারবার লিখেছি। আমার জীবনের অর্ধেক সময়জুড়ে আছে এই গল্প। অবশেষে একটা দুর্দান্ত টিম নিয়ে সিনেমাটি বানাতে পেরেছি। এটা আমার কাছে মিরাকলের মতো লাগছে।’

দ্য ডিফিকাল্ট ব্রাইড সিনেমার চিত্রগ্রহণে আছেন পর্তুগিজ নির্মাতা লিওনর টেলস। অন্যান্য বিভাগেও কাজ করেছেন আন্তর্জাতিক কলাকুশলীরা। রুবাইয়াত হোসেনের সঙ্গে সিনেমাটি যৌথভাবে প্রযোজনা করেছেন ফ্রান্সের ফ্রাঁসোয়া ডি’আর্টেমারে, জার্মানির আন্না ক্যাচকো, পর্তুগালের পেড্রো বোর্গস, নরওয়ের ইনগার্ড লিল হটন।

১৩ ডিসেম্বর থেকে ফ্রান্সে শুরু হতে যাওয়া লেস আর্কস ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের ওয়ার্ক-ইন-প্রোগ্রেস প্রোগ্রামে এই সিনেমার প্রকল্পটি প্রদর্শিত হবে। জানা গেছে, এখন চলছে পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ। ২০২৬ সালের মার্চ নাগাদ প্রস্তুত হবে দ্য ডিফিকাল্ট ব্রাইড। এর পর অংশ নেবে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এবার অপু বিশ্বাসের নায়ক সজল

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

কয়েক দিন আগে শবনম বুবলীর সঙ্গে ‘শাপলা শালুক’ সিনেমার শুটিং শেষ করেছেন আবদুন নূর সজল। সরকারি অনুদানের সিনেমাটি পরিচালনা করছেন রাশেদা আক্তার লাজুক। শাপলা শালুকের পর আরও এক সিনেমায় যুক্ত হয়েছেন সজল। এবার তাঁর নায়িকা অপু বিশ্বাস। ১৬ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে ‘দুর্বার’ নামের সিনেমার শুটিং। এটি পরিচালনা করছেন কামরুল হাসান ফুয়াদ।

দুর্বার সিনেমার গল্প নিয়ে এখনই বিস্তারিত কথা বলতে চান না নির্মাতা। শুধু জানালেন, এটি নির্মিত হবে থ্রিলার ও মার্ডার মিস্ট্রি গল্পে। ১৬ ডিসেম্বর থেকে একটানা দৃশ্যধারণের কাজ শেষ করতে চান তিনি। এতে আরও অভিনয় করছেন জান্নাতুল নূর, সানজু জনসহ অনেকে। সিনেমার গল্প ও চিত্রনাট্য লিখেছেন আবদুল্লাহ জহির বাবু।

শোনা যাচ্ছে, আগামী বছর কোরবানির ঈদে মুক্তির পরিকল্পনা নিয়ে তৈরি হচ্ছে দুর্বার। নির্মাতা কামরুল হাসান ফুয়াদ বলেন, ‘আগে সিনেমার কাজ ভালোভাবে শেষ করতে চাই। এরপর মুক্তির তারিখ ঘোষণা করব। আমাদের ইচ্ছা আছে কোনো একটি উৎসবে সিনেমাটি মুক্তি দেওয়ার। তবে কোনো রকম তাড়াহুড়া করতে চাই না। আমাদের সবার উদ্দেশ্য, দর্শকদের ভালো একটি সিনেমা উপহার দেওয়া।’

জানা গেছে, এখন সিনেমার রিহার্সালে ব্যস্ত সময় পার করছেন অভিনয়শিল্পীরা। পুরোপুরি প্রস্তুত হয়েই ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে চান সজল ও অপু। শুটিং শুরুর আগে ১৪ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক ফটোশুটে অংশ নেওয়ার কথা আছে তাঁদের।

সিনেমার পাশাপাশি ডাবিং আর্টিস্ট হিসেবেও ব্যস্ত সময় পার করছেন সজল। একাধিক বিদেশি সিরিয়ালের ডাবিং করছেন তিনি। এই মাধ্যমের কাজও দারুণ উপভোগ করছেন সজল। অন্যদিকে, কয়েক দিন আগে জানা গেছে অপু বিশ্বাসের আরও এক সিনেমার খবর। বন্ধন বিশ্বাসের পরিচালনায় ‘সিক্রেট’ নামে আরেক সিনেমায় অভিনয় করবেন তিনি। এতে অপুর নায়ক আদর আজাদ। দুর্বারের কাজ শেষ হওয়ার পর সিক্রেট সিনেমার শুটিং শুরু করবেন অপু।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হঠাৎ অভিনয় ছাড়ার ঘোষণা দিলেন মৌ খান

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ০৯
হঠাৎ অভিনয় ছাড়ার ঘোষণা দিলেন মৌ খান
মৌ খান

২০১৯ সালে ‘প্রতিশোধের আগুন’ সিনেমা দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেক হয় মৌ খানের। সেই থেকে নিয়মিত কাজ করছেন শোবিজে। এখনো একাধিক সিনেমা রয়েছে তাঁর হাতে। হঠাৎ করেই অভিনয় থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিলেন মৌ খান। সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিনেত্রী জানান, ব্যক্তিগত কারণে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে বাকিটা জীবন কাটাতে চান মৌ।

অভিনয়কে বিদায় জানানোর ঘোষণা দিয়ে গতকাল ফেসবুকে মৌ খান লেখেন, ‘আমার এই দীর্ঘ অভিনয়জীবনে আপনাদের অসীম ভালোবাসা, সমর্থন ও দোয়া সব সময় গভীর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ রাখব। তবে আমার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের জায়গা থেকে জানাতে চাই, আমি আর অভিনয় ক্যারিয়ারটি চালিয়ে যেতে চাই না।’

অভিনয় ছাড়ার কারণ জানিয়ে অভিনেত্রী বলেন, ‘এটি সম্পূর্ণভাবেই আমার নিজস্ব ও ভেবেচিন্তে নেওয়া সিদ্ধান্ত। জীবনের বাকি পথ আমি আল্লাহর আদেশ অনুযায়ী, নামাজ-কোরআন ও দ্বীনের আলোকে চলতে চাই। রাসুল (সা.)-এর সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরেই আমার পরবর্তী জীবন গড়ে তুলতে চাই।’

নতুন করে কোনো সিনেমায় আর চুক্তিবদ্ধ হবে না বলে জানিয়েছেন মৌ খান। তবে হাতে থাকা অসম্পূর্ণ কাজগুলো শেষ করবেন। দ্রুত সেই কাজগুলো শেষ করতে পরিচালকদের অনুরোধ করেছেন তিনি। মৌ খান বলেন, ‘যে কয়েকটি কাজ এখনো অসম্পূর্ণ রয়েছে, সেগুলোর সম্মানিত পরিচালকদের প্রতি অনুরোধ, দয়া করে আপনারা সেগুলো সম্পন্ন করে নেবেন। আমার যতটুকু কাজ আছে, তা আমি শেষ করে দেব।’

সব শেষ গত অক্টোবরে মুক্তি পেয়েছিল মৌ খান অভিনীত সিনেমা ‘বান্ধব’। এখন কাজ করছেন ‘আবার হঠাৎ বৃষ্টি’, ‘চাইল্ড অব দ্য স্টেশন’ এবং ‘তবুও প্রেম দামি’ সিনেমায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সৌদিতে সিনেমার উৎসবে ঐশ্বরিয়া

বিনোদন ডেস্ক
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৫৩
ঐশ্বরিয়া রাই। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
ঐশ্বরিয়া রাই। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

কয়েক বছর ধরে সৌদি আরব হয়ে উঠেছে বিশ্ব সিনেমার অন্যতম প্রাণকেন্দ্র। সারা বছর সেখানে সিনেমাকেন্দ্রিক নানা আয়োজন চলে। এ ক্ষেত্রে সৌদির সবচেয়ে বড় আয়োজন রেড সি ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। ৪ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে এ উৎসবের পঞ্চম আসর। ১০ দিনের এই উৎসবে ৫০টির বেশি দেশের ১০০টির বেশি সিনেমা প্রদর্শিত হবে।

প্রতিবছর রেড সি ফেস্টিভ্যালে হলিউড, বলিউডসহ আরববিশ্বের নামকরা অভিনয়শিল্পী-নির্মাতারা হাজির থাকেন। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি। বৃহস্পতিবার রাতে উৎসবের রেড কার্পেট হয়ে উঠেছিল তারকাময়। হাজির ছিলেন অ্যাড্রিয়েন ব্রডি, ঐশ্বরিয়া রাই, কার্স্টেন ডানস্ট, ভিন ডিজেল, জেসিকা আলবা, কুইন লতিফা, ডাকোটা জনসন, আনা ডি আরমাস, রিজ আহমেদ, নাওমি হ্যারিস, উমা থারম্যান, কৃতি শ্যানন প্রমুখ। সম্মানজনক পুরস্কারে ভূষিত করা হয় জুলিয়েট বিনোচে, স্যার মাইকেল কেইন, স্ট্যানলি টংয়ের মতো কিংবদন্তি শিল্পীদের।

উৎসবের প্রথম দিন এক ঘণ্টার বিশেষ সেমিনারে যোগ দেন ঐশ্বরিয়া রাই। সেখানে নিজের ক্যারিয়ারের নানা পর্যায় নিয়ে আলাপ করেন অভিনেত্রী। দর্শকদের প্রশ্নের উত্তর দেন। এই দীর্ঘ ক্যারিয়ারে যেসব সিনেমার জন্য প্রশংসিত হয়েছেন, যেসব সিনেমার কলাকুশলীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। ঐশ্বরিয়া জানান, জীবনের সব পরিস্থিতিতে কখনোই সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেননি তিনি। অন্যরা কী বলবে, এ চিন্তা না করে নিজের সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন। তিনি বলেন, ‘কখনো অনিরাপদ বোধ করি না; যে কারণে আজকের এই অবস্থানে আসতে পেরেছি। চারপাশের নানা মানুষের নানা মত অনেক সময় মানুষের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করে। কিন্তু আমি সেটা হতে দিইনি।’

জীবনকে সব সময় একজন শিক্ষার্থীর দৃষ্টিতে দেখেছেন ঐশ্বরিয়া। নানা পরিস্থিতি থেকে প্রতিনিয়ত শেখার চেষ্টা করেছেন। অভিনেত্রী বলেন, ‘ডাক্তার হতে চেয়েছিলাম। আমি সায়েন্সের ছাত্রী ছিলাম। স্থাপত্য নিয়ে পড়াশোনা করেছি। পরে ভাগ্য আমাকে শোবিজে নিয়ে এসেছে। এখনো জীবনের প্রতি আমার দৃষ্টিভঙ্গি একজন শিক্ষার্থীর মতো; যা কিছু ঘটেছে, শেখার চেষ্টা করেছি।’

বড় আয়োজন কিংবা বড় বাজেটের সিনেমা নয়, ঐশ্বরিয়া সব সময় চেষ্টা করেছেন ভালো কাজের সঙ্গী হতে। সঞ্জয় লীলা বানসালির ‘দেবদাস’-এর মতো বড় প্রজেক্টে অভিনয়ের পর যুক্ত হয়েছিলেন কম বাজেটের বাংলা সিনেমায়। ঐশ্বরিয়া বলেন, ‘আমার মনে আছে, দেবদাসের পর সবাই ভাবছিল, এরপর আমার বড় প্রজেক্ট কী হবে? তখন আমি ঋতুপর্ণ ঘোষের “চোখের বালি” করেছি। কারণ, এমন সুন্দর গল্পেই আমি সব সময় কাজ করতে চেয়েছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত