Ajker Patrika

যেভাবে সিনেমা যায় অস্কারে

খায়রুল বাসার নির্ঝর
যেভাবে সিনেমা যায় অস্কারে

ওয়ান কান্ট্রি ওয়ান ফিল্ম’ বিদেশি ভাষার সিনেমার ক্ষেত্রে এ নীতিই মেনে চলে একাডেমি অব মোশন পিকচার্স আর্টস অ্যান্ড সায়েন্স। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরের যেকোনো দেশ থেকে প্রতিবছর কেবল একটি সিনেমাই পাঠানো যাবে অস্কার মনোনয়নের জন্য। কিন্তু এমন তো নয় যে একটি দেশে বছরে একটিই ভালো সিনেমা হয়! একাধিকও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে কোনটিকে নির্বাচন করা হবে? এ প্রশ্নটি মাথায় রেখেই পৃথিবীর অনেক দেশে সিলেকশন কমিটির উদ্ভব।

প্রতিবছর সিনেমা আহ্বান করা হয়। যাচাই-বাছাই করে কমিটি সিদ্ধান্ত দেয় কোনটি অস্কারে পাঠানোর উপযোগী। যুক্তরাজ্যে এ কাজটি করে ব্রিটিশ একাডেমি অব ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন আর্টস। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে এ দায়িত্ব পালন করে ফিল্ম ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া। আবার ব্রাজিলের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি কিছুটা অন্য রকম। অস্কারে সিনেমা পাঠানো-সংক্রান্ত যাবতীয় কর্মকাণ্ড দেখভাল করে দেশটির সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়।

বাংলাদেশেও এ–সংক্রান্ত একটি কমিটি আছে ‘অস্কার বাংলাদেশ কমিটি’। ২০০২ সাল থেকে তারা কাজ করছে। বাংলাদেশ ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজের উদ্যোগে ওই বছর তারেক মাসুদের ‘মাটির ময়না’ দিয়ে শুরু হয় বাংলাদেশি ছবির অস্কারযাত্রা। এই দীর্ঘ সময়ে অস্কারগামী বাংলাদেশি ছবির সংখ্যা ঠেকেছে ১৬ তে।

বাংলাদেশি সিনেমার জন্য এটি অত গৌরবের বিষয় না হলেও একেবারেই ফেলনা নয়। অতীতে অস্কারে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করা সিনেমার তালিকায় প্রশংসিত কাজ যেমন ছিল, তেমনি এমন অনেক সিনেমা ছিল যেগুলো নিয়ে সমালোচনাও হয়েছে। সমালোচকদের অভিযোগ, তুলনামূলক গুরুত্বপূর্ণ সিনেমা বাদ পড়েছে।

ফিসফিসানিটা ক্রমেই বাড়ছে। ভারতে তো অস্কার সিলেকশন কমিটির বিরুদ্ধে বেশ কয়েকবারই প্রকাশ্যে অনিয়মের অভিযোগ এনেছেন কয়েকজন নির্মাতা-প্রযোজক! প্রশ্ন হচ্ছে, বাংলাদেশের অস্কার কমিটি সিনেমা বাছাইকরণ প্রক্রিয়ায় কতখানি স্বচ্ছতা এবং দক্ষতার পরিচয় দিতে পারছে?

হাবিবুর রহমান খান, ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘পদ্মা নদীর মাঝি’সহ গুরুত্বপূর্ণ কিছু সিনেমার প্রযোজক। তিনি শুরু থেকেই অস্কার কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বলেন, ‘এখানে বিতর্কের সুযোগ নেই। প্রতিবছর অস্কার কমিটির কাছে আমাদের কমিটির তালিকা পাঠাতে হয়। ওরা যাচাই-বাছাই করে অনুমোদন দেওয়ার পর আমরা কাজটা করি।’

নয় সদস্যের কমিটি। কারা থাকেন এতে? চেয়ারম্যান হিসেবে এ বছরও আছেন হাবিবুর রহমান খান। আরও আছেন বাংলাদেশ ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজের সভাপতি আব্দুস সেলিম, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার, চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সভাপতি ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ, শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর, চিত্রগ্রাহক সমিতির সভাপতি আব্দুল লতিফ বাচ্চু, ফিল্ম এডিটরস গিল্ডের সভাপতি আবু মূসা দেবু, নির্মাতা শামীমা আক্তার ও আবু সাইয়ীদ।

কে কী বলছেন?

বিতর্ক করার জন্য কিছু লোক তো থাকেই

Habibur-rahman-khan

হাবিবুর রহমান খান চেয়ারম্যান, অস্কার বাংলাদেশ কমিটি

প্রতিবছর অস্কারের মূল কমিটির কাছে আমাদের কমিটির তালিকা পাঠাতে হয়। ওরা যাচাই-বাছাই করে অনুমোদন দেওয়ার পর আমরা কাজটা করি। এখানে আমরা ওদের অ্যাফিলিয়েটেড কমিটি। ইচ্ছা করলেই আমি একটা কমিটি করলাম বা আপনি একটা করলেন—সেটা হবে না। আর বিতর্কের বিষয়ে বলব, বিতর্ক করার জন্য কিছু লোক তো থাকেই। কেউ বিতর্ক করতে চাইলে কিছু করতে পারব আমরা? একটা কথা বলি, এখনকার অনেক স্থপতি আছেন যাঁরা তাজমহলেরও ভুল ধরেন! কীই-বা করার আছে। প্রতিবছর একটা-দুটা-তিনটা করে ছবি জমা পড়ে। অস্কারের আবার বিভিন্ন নিয়মনীতি আছে—কোনটা দেওয়া যাবে, কোনটা যাবে না। সব যাচাই করেই সিদ্ধান্ত নিই।

একাধিক সিনেমা পাঠানো গেলে ভালো হতো

Abu_Sateed

আবু সাইয়ীদ, অস্কার বাংলাদেশ কমিটির সদস্য, ‘নিরন্তর’ পরিচালক

এটা সত্যি যে, একটা প্রতিনিধিত্বমূলক কমিটি থাকতে হয়। তবে কমিটিতে কে থাকবে, কে থাকবে না এ নিয়ে একাডেমির কোনো মাথাব্যথা থাকার কথা নয়। এটা যেহেতু ইন্টারন্যাশনাল বডি নয়, লোকাল বডি; ফলে তার জায়গা থেকে কমিটি যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে। সেখান থেকে প্রশ্ন উঠতে পারে। যদি এ রকম হতো, একটা দেশ থেকে দুটি বা তিনটি ছবি যাবে, অস্কারের সাবকমিটি যেকোনো একটা নির্বাচন করবে, তাহলে আরেক রকম হতো। ভারতেও মাঝে মাঝে দেখা যায়, একটা ছবি সাবমিটেড হলে অন্যরা সেটা পছন্দ করে না। এর বাইরে অন্য কোথাও বিষয়টি নিয়ে কোনো বিতর্ক হয় কি না, সেটা জানার তেমন সুযোগ নেই। কারণ, এটা খুবই ছোট একটা বিষয়! তবে আমার মনে হয় একাধিক ছবি পাঠানোর সুযোগ থাকলে জটিলতা কমত।

জয়যাত্রা কিন্তু অস্কারে যায়নি

taukeer-ahmed

তৌকীর আহমেদ, ‘অজ্ঞাতনামা’ পরিচালক

এই কমিটির মাধ্যমেই বাংলাদেশি ছবি প্রথম অস্কারে যায়। সময়ের সঙ্গে হয়তো কমিটি আরও অর্গানাইজড হবে। আর সত্যি কথা বলতে কি, আমরা যে খুব ভালো ছবি বানাচ্ছি, তা-ও তো নয়। এখান থেকে যে সিলেকশনটা দেওয়া হয়, এটা একধরনের প্রতিনিধিত্ব। একটা সময়ে আমাদের ছবি মূল পর্বে সিলেক্ট হবে, সে রকম স্বপ্নও আমরা দেখতে পারি। কিন্তু সে রকম ছবি তো নির্মাণ করতে হবে!

আমি তো আগেও ছবি বানিয়েছি, ‘জয়যাত্রা’ [২০০৪] ভীষণ প্রশংসিত ছবি। ‘জয়যাত্রা’ কিন্তু অস্কারে যায়নি। আবার ‘অজ্ঞাতনামা’ পাঠানো হয়েছিল অস্কারে।

এখানে একটা কমিটি কাজ করছে। সিলেকশন যত নিরপেক্ষ হবে, আমাদের জন্য ততই মঙ্গল। আশা করছি সাংগঠনিকভাবে এসব কমিটি আরও দক্ষ হয়ে উঠবে। প্রত্যাশা করি, তাঁরা যেন উপযুক্ত সিদ্ধান্তটা নিতে পারেন। কারণ, এটা একটা দেশের ইমেজের ব্যাপার। যত সুষ্ঠু হবে প্রক্রিয়াটা, ততই চলচ্চিত্রের জন্য মঙ্গল।

আপনার ইচ্ছা হলে নাটকও একটা পাঠাতে পারেন

amitab-reza-1

অমিতাভ রেজা চৌধুরী, পরিচালক

আমার কোনো আইডিয়াই নেই এসব ব্যাপারে। আমি আসলে আগ্রহী নই। আমার ছবি বানাতে পারলেই হয়, এসব পুরস্কার-অস্কার নিয়ে তেমন কিছুই জানি না। কানে প্রতিবছর দুই লাখ ছবি এন্ট্রি হয়, আপনার ইচ্ছা হলে নাটকও একটা পাঠাতে পারেন। অসুবিধা তো নেই! অস্কারেও তো এ রকম অনেক ছবি যায়। এখন প্রতি দেশ থেকে একটা ছবিই যায়, নাকি কীভাবে যায়, একাডেমি অ্যাওয়ার্ডসের কী নিয়ম—কিচ্ছু জানি না। কান-বার্লিন সম্বন্ধে জানি, অস্কার নিয়ে জানি না। বাংলাদেশ থেকে ‘আয়নাবাজি’ অস্কারে পাঠানোর মতো ছবি বলেও মনে হয় না। সারা পৃথিবী থেকে বিদেশি ভাষায় যে ছবিগুলো অস্কার পায়, সেগুলোর কাছাকাছি মানের কোনো ছবি আমরা বানাতে পেরেছি নাকি?

অস্কার কমিটিই অধিক দায়িত্বশীল

abu-sahed-emon

আবু শাহেদ ইমন, ‘জালালের গল্প’ পরিচালক

বাংলাদেশে অস্কার কমিটি কীভাবে হবে, এটার জন্য একটা দিকনির্দেশনা আছে। দিকনির্দেশনা মোতাবেক অস্কার কমিটি গঠন করা হয়। চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিত্বরা থাকেন এখানে। এফডিসির প্রতিনিধিরা থাকেন। চলচ্চিত্র সংসদগুলোর প্রতিনিধিরাও থাকেন। গত কয়েক বছরে যে ছবিগুলো অস্কারে পাঠানো হয়েছে, সেগুলোর বেশির ভাগই বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করে। দু-একটা বছর হয়তো কিছু ছবি নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে, সেটা নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না। জাতীয়ভাবে যেসব পুরস্কার দেওয়া হয়, সেখানে বিদেশে পুরস্কারপ্রাপ্ত ছবির ব্যাপারে একধরনের অনীহা দেখা যায়। যতগুলো ছবি অস্কারে গেছে, সেসবের বেশির ভাগই জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পায়নি। আমার তো মনে হয়, অস্কার কমিটিই অধিক দায়িত্বশীল।

অস্কারে যত সিনেমা

মাটির ময়না [২০০২] তারেক মাসুদ

শ্যামল ছায়া [২০০৫] হুমায়ূন আহমেদ

নিরন্তর [২০০৬] আবু সাইয়ীদ

স্বপ্নডানায় [২০০৭] গোলাম রাব্বানী বিপ্লব

আহা! [২০০৮] এনামুল করিম নির্ঝর

বৃত্তের বাইরে [২০০৯] গোলাম রাব্বানী বিপ্লব

থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার [২০১০] মোস্তফা সরয়ার ফারুকী

ঘেটুপুত্র কমলা [২০১২] হুমায়ূন আহমেদ

টেলিভিশন [২০১৩] মোস্তফা সরয়ার ফারুকী

জোনাকির আলো [২০১৪] খালিদ মাহমুদ মিঠু

জালালের গল্প [২০১৫] আবু শাহেদ ইমন

অজ্ঞাতনামা [২০১৬] তৌকীর আহমেদ

খাঁচা [২০১৭] আকরাম খান

ডুব [২০১৮] মোস্তফা সরয়ার ফারুকী

আলফা [২০১৯] নাসির উদ্দীন ইউসুফ

ইতি তোমারই ঢাকা [২০২০] ১১ জন নির্মাতা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

তাইওয়ানে যুদ্ধে জড়ালে চীনের কাছে হারতে পারে যুক্তরাষ্ট্র— পেন্টাগনের গোপন নথি ফাঁস

হাদিকে গুলি: সীমান্তে মানুষ পার করা ফিলিপকে খুঁজছে পুলিশ, তাঁর দুই সহযোগী আটক

খালি হাতে বন্দুকধারীকে ঠেকিয়ে নায়ক বনে যাওয়া কে এই আল-আহমেদ

ড. ইউনূস যদি চান, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাতে পারেন—আদালতে আনিস আলমগীর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হলিউডের পরিচালক ও তাঁর স্ত্রীর রহস্যময় মৃত্যু, ছেলে গ্রেপ্তার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
হলিউডের নির্মাতা রব রেইনার ও তাঁর ছেলে নিক রেইনার। ছবি: এএফপি
হলিউডের নির্মাতা রব রেইনার ও তাঁর ছেলে নিক রেইনার। ছবি: এএফপি

হলিউডের নির্মাতা রব রেইনার ও তাঁর স্ত্রী মিশেল সিঙ্গার রেইনারের মৃত্যুর খবরে যুক্তরাষ্ট্রের চলচ্চিত্র ও রাজনৈতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। গতকাল রোববার লস অ্যাঞ্জেলেসের অভিজাত ব্রেন্টউড এলাকায় নিজেদের বাড়িতে রব রেইনার (৭৮) ও তাঁর স্ত্রী মিশেলকে (৬৮) মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। এ ঘটনায় তাঁদের ছেলে নিক রেইনারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির কারাগারের নথির বরাতে জানিয়েছে, ৩২ বছর বয়সী নিক রেইনারকে গতকাল রাতে হেফাজতে নেওয়া হয়। নথিতে তাঁর বিরুদ্ধে ‘গ্যাং কার্যকলাপ’-এর অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে অভিযোগের বিস্তারিত জানানো হয়নি। তাঁর জামিনের জন্য ৪০ লাখ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে।

গতকাল স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ৩টার দিকে চিকিৎসা সহায়তার জন্য ব্রেন্টউডের ওই বাড়িতে পৌঁছায় লস অ্যাঞ্জেলেস ফায়ার ডিপার্টমেন্ট। সেখানে ৭৮ বছর বয়সী এক পুরুষ ও ৬৮ বছর বয়সী এক নারীকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে তাঁদের রব ও মিশেল রেইনার হিসেবে শনাক্ত করা হয়। জানা গেছে, পাশের বাড়িতে থাকা একটি মেয়ে প্রথম তাঁদের মরদেহ দেখতে পান।

লস অ্যাঞ্জেলেস পুলিশ বিভাগ (এলএপিডি) পরে জানায়, গোয়েন্দারা ঘটনাটি ‘সম্ভাব্য হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে তদন্ত করছে। টিএমজেড ও পিপল ম্যাগাজিন জানিয়েছে, দুজনের শরীরে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।

লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্র জানায়, পরিবারের একজন সদস্যকে এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে গতকাল রাতে সংবাদ সম্মেলনে এলএপিডির প্রধান গোয়েন্দা অ্যালান হ্যামিলটন বলেন, তদন্ত চলমান। এখনো কাউকে সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়নি।

রেইনার পরিবারের এক মুখপাত্র গতকাল সন্ধ্যায় মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

রব রেইনার হলিউডের অন্যতম সফল ও প্রভাবশালী পরিচালক। When Harry Met Sally, This Is Spinal Tap, Stand By Me, Misery, A Few Good Men–সহ বিভিন্ন অনেক জনপ্রিয় সিনেমা তিনি নির্মাণ করেছেন। তিনি উদারপন্থী রাজনীতি ও ডেমোক্রেটিক দলের একজন প্রকাশ্য সমর্থক হিসেবেও পরিচিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

তাইওয়ানে যুদ্ধে জড়ালে চীনের কাছে হারতে পারে যুক্তরাষ্ট্র— পেন্টাগনের গোপন নথি ফাঁস

হাদিকে গুলি: সীমান্তে মানুষ পার করা ফিলিপকে খুঁজছে পুলিশ, তাঁর দুই সহযোগী আটক

খালি হাতে বন্দুকধারীকে ঠেকিয়ে নায়ক বনে যাওয়া কে এই আল-আহমেদ

ড. ইউনূস যদি চান, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাতে পারেন—আদালতে আনিস আলমগীর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ওজন কমিয়ে শুটিংয়ে বাঁধন, মুক্তির অপেক্ষায় আরও দুই সিনেমা

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আজমেরী হক বাঁধন। ছবি: সংগৃহীত
আজমেরী হক বাঁধন। ছবি: সংগৃহীত

চরিত্রের সঙ্গে মানিয়ে নিতে চেষ্টার কোনো কমতি রাখেন না অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। ‘রেহেনা মরিয়ম নূর’-এর রেহেনা, ‘গুটি’র সুলতানা কিংবা ‘এশা মার্ডার’ সিনেমার পুলিশ কর্মকর্তা লীনা চরিত্রেও দেখা গেছে পুরো প্রস্তুত হয়ে ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছেন অভিনেত্রী। এবার তানিম নূরের ‘বনলতা এক্সপ্রেস’ সিনেমায় সুরমা চরিত্রে অভিনয়ের জন্য ১৮ কেজি ওজন কমালেন বাঁধন। আজ থেকে শুরু হবে এই সিনেমার শুটিং। এ ছাড়া ইতিমধ্যে তিনি শেষ করেছেন রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিতের ‘মাস্টার’ ও রুবাইয়াত হোসেনের ‘দ্য ডিফিকাল্ট ব্রাইড’ সিনেমার শুটিং।

গত শুক্রবার বনলতা এক্সপ্রেস সিনেমার আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় জানানো হয়, এতে অভিনয় করছেন বাঁধন। গতকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় বাঁধন জানালেন, নতুন এই সিনেমার জন্য প্রস্তুত হতে তাঁকে কমাতে হয়েছে ১৮ কেজি ওজন। বাঁধন জানালেন, ওজন কমানোর এই পথ সহজ ছিল না তাঁর জন্য। ফেসবুকে বাঁধন লেখেন, ‘৭৮ কেজি থেকে ৬০ কেজি—এই যাত্রা সহজ ছিল না। মানসিক স্বাস্থ্য সংগ্রাম, অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস ও জেনেটিক কারণে ওজন বেড়েই যাচ্ছিল। কিন্তু সঠিক চিকিৎসকের নির্দেশনা, ডিসিপ্লিন এবং আত্মবিশ্বাসের জোরে আমি মাত্র ৬ মাসে ১৮ কেজি ওজন কমাতে পেরেছি। এটি শুধু ওজন কমানো নয়—এটি নিরাময়, শক্তি এবং আত্মসম্মানেরও প্রতীক; এখনো এগিয়ে চলছি।’

বাঁধন জানান, এই যাত্রায় সবচেয়ে বড় শক্তি ছিল তাঁর মেয়ে। মেয়েই তাঁকে শরীরচর্চা করতে, জাঙ্ক ফুড থেকে দূরে থাকতে এবং প্রতিদিন নিজেকে বিশ্বাস করতে অনুপ্রাণিত করেছে। এর আগে বনলতা এক্সপ্রেস সিনেমার সংবাদ সম্মেলনে বাঁধন জানান, এই সিনেমায় যুক্ত হওয়ার অন্যতম প্রেরণা ছিল তাঁর মেয়ে। বাঁধন বলেন, ‘তানিম নূর যখন এই চরিত্রের কথা বলল, তখন আমার মেয়ে সবার আগে বলেছে, তুমি এটি করো। কারণ আমাকে নাকি সব সময় সিরিয়াস আর অবসাদগ্রস্ত চরিত্রে দেখা যায়। ও চায় উৎসব-এর মতো সিনেমায় আমি কাজ করি। তাই এই চিত্রনাট্য আমার কাছে এগিয়ে ছিল।’

কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ‘কিছুক্ষণ’ উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত হচ্ছে বনলতা এক্সপ্রেস। এতে বাঁধনের বিপরীতে আছেন চঞ্চল চৌধুরী। আরও দেখা যাবে মোশাররফ করিম, ইন্তেখাব দিনার, জাকিয়া বারী মম, শরিফুল রাজ, সাবিলা নূর ও শ্যামল মাওলাকে। আগামী বছর রোজার ঈদে মুক্তি পাবে এই সিনেমা।

আজমেরী হক বাঁধন। ছবি: সংগৃহীত
আজমেরী হক বাঁধন। ছবি: সংগৃহীত

এদিকে শুক্রবার রাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় নির্মাতা রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত জানালেন, সম্পূর্ণ কাজ শেষে মাস্টার সিনেমাটি এখন সবাইকে দেখানোর জন্য প্রস্তুত। গত বছর এপ্রিলে শেষ হয়েছিল সরকারি অনুদানে নির্মিত এই সিনেমার শুটিং। রাজনৈতিক থ্রিলার ঘরানার মাস্টারের শুটিং-পরবর্তী কাজ হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিলেন পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের শিল্পীরা। একটি উপজেলার স্থানীয় রাজনীতি এই সিনেমার প্রেক্ষাপট। এতে বাঁধনকে দেখা যাবে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) চরিত্রে। আরও অভিনয় করেছেন নাসির উদ্দিন খান, জাকিয়া বারী মম প্রমুখ। নির্মাতা জানিয়েছেন, বিভিন্ন দেশের চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নেওয়ার পর দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে মাস্টার।

আজমেরী হক বাঁধন। ছবি: সংগৃহীত
আজমেরী হক বাঁধন। ছবি: সংগৃহীত

এ বছরের মাঝামঝি সময়ে বাঁধন শেষ করেছেন দ্য ডিফিকাল্ট ব্রাইড সিনেমার কাজ। ১৩ ডিসেম্বর ফ্রান্সে শুরু হওয়া লেস আর্কস ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের ওয়ার্ক-ইন-প্রোগ্রেস প্রোগ্রামে এই সিনেমার প্রকল্পটি প্রদর্শিত হবে। আগামী বছরের মার্চ নাগাদ শেষ হবে সম্পূর্ণ কাজ। রুবাইয়াত হোসেনের পরিচালনায় এতে বাঁধনের সহশিল্পী রিকিতা নন্দিনী শিমু, সুনেরাহ বিনতে কামাল, জাইনিন করিম চৌধুরী প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

তাইওয়ানে যুদ্ধে জড়ালে চীনের কাছে হারতে পারে যুক্তরাষ্ট্র— পেন্টাগনের গোপন নথি ফাঁস

হাদিকে গুলি: সীমান্তে মানুষ পার করা ফিলিপকে খুঁজছে পুলিশ, তাঁর দুই সহযোগী আটক

খালি হাতে বন্দুকধারীকে ঠেকিয়ে নায়ক বনে যাওয়া কে এই আল-আহমেদ

ড. ইউনূস যদি চান, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাতে পারেন—আদালতে আনিস আলমগীর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নতুন ওয়েব ফিল্মে বিদ্যা সিনহা মিম

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
বিদ্যা সিনহা মিম। ছবি: সংগৃহীত
বিদ্যা সিনহা মিম। ছবি: সংগৃহীত

গত মাসেই বিদ্যা সিনহা মিম জানিয়েছিলেন, নতুন বছরটা হবে তাঁর প্রত্যাবর্তনের বছর। সেভাবেই এগোচ্ছেন তিনি। ইতিমধ্যে শেষ করেছেন সাইফ চন্দনের নাম চূড়ান্ত না হওয়া একটি সিনেমার শুটিং। এবার যুক্ত হলেন নতুন ওয়েব ফিল্মে। পরিচালনা করবেন কাজী আসাদ। প্রাথমিকভাবে সিনেমার নাম রাখা হয়েছে ‘লাইফ লাইন’। নতুন বছরে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকিতে মুক্তি পাবে এটি।

১৩ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে এই ওয়েব ফিল্মের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন মিম। মিম জানান, গল্পটা তাঁর ভালো লেগেছে। আরও জানান, গল্প ভালো না লাগায় এত দিন কাজ করা হয়নি তাঁর। মিম বলেন, ‘অনেকেই জানতে চান, কাজ কম করছি কেন? কারণ গল্পটাই মিলছিল না ঠিকভাবে। গল্প বা কাজের প্রস্তাব তো অনেক আসে, কিন্তু গল্প বা আনুষঙ্গিক বিষয়গুলো ভালো লাগছিল না। কাজী আসাদ যখন এই গল্পটা শোনালেন এবং আমি চরকিতে তাঁর আগের কাজ দেখলাম, আমার মনে হলো কাজটা করা দরকার।’

এই ওয়েব ফিল্মে একদম নতুনভাবে উপস্থাপন করা হবে মিমকে। কাজী আসাদ বলেন, ‘বিদ্যা সিনহা মিম আমাদের ইন্ডাস্ট্রির একজন পরীক্ষিত, মেধাবী এবং গ্ল্যামারাস অভিনেত্রী। সচরাচর তাঁকে গ্ল্যামার লুকেই দেখি। কিন্তু মজাটাই ওখানে যে তাঁকে কীভাবে ভেঙে নতুন ধরনের চরিত্রে দর্শকদের সামনে হাজির করা যায়। আমরা সেই চ্যালেঞ্জটা নিয়েছি। আশা করছি দর্শকেরা আমার কথা মিলিয়ে নিতে পারবেন।’

এখনই গল্প নিয়ে কোনো কথা বলতে চান না নির্মাতা। শুধু জানালেন, এটি নির্মিত হবে ইমোশনাল ড্রামা ঘরানায়। গল্প লিখেছেন মাহমুদুল হাসান টিপু ও কাজী আসাদ। নির্মাতার সঙ্গে চিত্রনাট্য করেছেন আসাদুজ্জামান আবীর। এ মাসের শেষ দিকে শুরু হবে শুটিং। এই সিনেমায় মিমের সহশিল্পীদের নাম শিগগির ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছে চরকি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

তাইওয়ানে যুদ্ধে জড়ালে চীনের কাছে হারতে পারে যুক্তরাষ্ট্র— পেন্টাগনের গোপন নথি ফাঁস

হাদিকে গুলি: সীমান্তে মানুষ পার করা ফিলিপকে খুঁজছে পুলিশ, তাঁর দুই সহযোগী আটক

খালি হাতে বন্দুকধারীকে ঠেকিয়ে নায়ক বনে যাওয়া কে এই আল-আহমেদ

ড. ইউনূস যদি চান, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাতে পারেন—আদালতে আনিস আলমগীর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বছরের শেষ সিনেমা ‘এখানে রাজনৈতিক আলাপ জরুরি’

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
সিনেমার দৃশ্যে ইমতিয়াজ বর্ষণ
সিনেমার দৃশ্যে ইমতিয়াজ বর্ষণ

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সিনেমা মুক্তির হার কমেছে উল্লেখযোগ্যভাবে। এ বছর এখন পর্যন্ত মুক্তি পেয়েছে ৪৬টি সিনেমা। বছরের শেষ ভাগে সিনেমা মুক্তির সংখ্যা বাড়লেও ডিসেম্বরে এসে কমেছে। এ মাসে মুক্তি পেয়েছে একটি সিনেমা। গত শুক্রবার মুক্তির ঘোষণা এল আরও এক সিনেমার। ২৬ ডিসেম্বর মুক্তি পাবে আহমেদ হাসান সানি পরিচালিত ‘এখানে রাজনৈতিক আলাপ জরুরি’। এই সিনেমা দিয়ে শেষ হচ্ছে বছর।

এখানে রাজনৈতিক আলাপ জরুরি সিনেমার গল্পে ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থান, রাজনৈতিক পরিবর্তন এবং যুগ যুগ ধরে চলে আসা রাজনৈতিক অস্থিরতার নানা প্রসঙ্গ তুলে এনেছেন নির্মাতা। গত মাস থেকে সিনেমার প্রচার শুরু হয়েছে। গানের পর ট্রেলার প্রকাশের মধ্য দিয়ে ঘোষণা করা হলো সিনেমার মুক্তির তারিখ।

আহমেদ হাসান সানি একজন সংগীতশিল্পী। বিজ্ঞাপনচিত্র বানিয়ে নির্মাতা হিসেবেও পরিচিতি পেয়েছেন। ‘এখানে রাজনৈতিক আলাপ জরুরি’ তাঁর প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। সানি বলেন, ‘রাজনৈতিক আলাপের অভ্যাসটা জরুরি। মানুষ যত রাজনৈতিকভাবে সচেতন হবে, তত দেশকে নিয়ে ভাবতে শিখবে। আমরা সারা জীবন দেখে এসেছি হোটেলে, বাসে, রেস্টুরেন্টে বড় করে লেখা থাকে, এখানে রাজনৈতিক আলাপ নিষিদ্ধ। রাজনৈতিক আলাপ করাকে ট্যাবু হিসেবে দেখেছি আমরা। এই ট্যাবুকে ভাঙার লক্ষ্যে সিনেমাটি করা।’

সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইমতিয়াজ বর্ষণ। আরও আছেন আজাদ আবুল কালাম, তানভীর অপূর্ব, এ কে আজাদ সেতু, কেয়া আলমসহ অনেকে। প্রযোজনা করেছেন খালিদ মাহমুদ তূর্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

তাইওয়ানে যুদ্ধে জড়ালে চীনের কাছে হারতে পারে যুক্তরাষ্ট্র— পেন্টাগনের গোপন নথি ফাঁস

হাদিকে গুলি: সীমান্তে মানুষ পার করা ফিলিপকে খুঁজছে পুলিশ, তাঁর দুই সহযোগী আটক

খালি হাতে বন্দুকধারীকে ঠেকিয়ে নায়ক বনে যাওয়া কে এই আল-আহমেদ

ড. ইউনূস যদি চান, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাতে পারেন—আদালতে আনিস আলমগীর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত