Ajker Patrika

বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা হলেই মেয়াদ শেষ নতুন পরিচালনা কমিটির

ইলিয়াস শান্ত, ঢাকা
আপডেট : ০৬ মার্চ ২০২৫, ২৩: ০১
বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা হলেই মেয়াদ শেষ নতুন পরিচালনা কমিটির

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) থেকে অধিভুক্ত সাত কলেজের আনুষ্ঠানিক পৃথকীকরণ প্রক্রিয়া শুরু হতে যাচ্ছে। ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীদের যাবতীয় শিক্ষা কার্যক্রম নতুন কাঠামোর অধীনে হবে। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নজরদারিতে তৈরি হবে সমন্বয় কমিটি। যার পরিচালক হবেন সাত কলেজের কোনো একজন অধ্যক্ষ। সঙ্গে থাকবে ঢাবির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, ভর্তি, রেজিস্ট্রার ও হিসাব বিভাগের প্রতিনিধি। তবে যেসব শিক্ষার্থী বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে রয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বর্তমান ব্যবস্থা চালু রাখবে।

রাজধানীর সরকারি সাত কলেজ ২০১৭ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হওয়ার পর থেকে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে নানা জটিলতা তৈরি হতে থাকে। অধিভুক্তির দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও পরীক্ষা, মানসম্মত শিক্ষাসহ অন্য সমস্যা সমাধান পুরোপুরি হয়নি। ফলে বারবার আন্দোলনে নেমেছেন কলেজগুলোর শিক্ষার্থীরা। সর্বশেষ গেল বছরের সেপ্টেম্বরে ঢাবি অধিভুক্তি বাতিল করে সাত কলেজের সমন্বয়ে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলনে নামেন তাঁরা। শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সাত কলেজকে ‘সম্মানজনক’ পৃথকীকরণের সিদ্ধান্তের কথা জানায়। এতে সাত কলেজের চলতি শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কার্যক্রম জটিলতার মুখে পড়ে।

ঢাবি প্রশাসনের সাত কলেজের পৃথকীকরণের সিদ্ধান্তের প্রায় এক মাস পর এবার নতুন পদক্ষেপের কথা জানাল ইউজিসি। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে সাত কলেজের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে সাময়িক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে। যেখানে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে এই প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষা কার্যক্রম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পৃথকীকরণের কথা জানানো হয়।

শিক্ষার্থীরা কী বলছেন

বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রী জাফরিন আক্তার বলেন, ‘সাত কলেজের সমস্যা সমাধানে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের প্রায় দুই মাস শেষ হয়েছে। এ সময়ে বিশেষজ্ঞ কমিটির বেশ কিছু দৃশ্যমান পদক্ষেপ আমরা দেখেছি। তারা কলেজের শিক্ষার্থী প্রতিনিধি, শিক্ষকবৃন্দ, শিক্ষাবিদ ও সাংবাদিকদের সঙ্গে বসে আলোচনা করেছেন। এখন ক্যাম্পাসগুলো ঘুরে দেখছেন। সম্প্রতি সাত কলেজের পরিচালনায় নতুন পরিচালনা কাঠামোর খবর সামনে এসেছে। শুনেছি, এটা ঢাবি প্রশাসন অনুমোদন দিলে আইনগত বৈধতা পাবে। পবিত্র রমজান মাসের মধ্যেও কাজগুলো চলমান রয়েছে। যা প্রকৃতপক্ষেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভরসার জায়গা তৈরি করছে। আমরা আশাবাদী, অবশিষ্ট কাজগুলোও অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ হবে।’

ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী মো. আব্দুর রহমান বলেন, ‘সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তরে বিশেষজ্ঞ কমিটির প্রতিটি পদক্ষেপ শিক্ষার্থীদের প্রাণ ছুঁয়েছে। প্রথম থেকেই শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো তাঁরা যত্নের সঙ্গে শুনেছেন। এখন যতটুকু জানতে পেরেছি, অধিকাংশ কাজই গোছানো হয়ে গেছে। আমাদের প্রত্যাশা, বিশেষজ্ঞ কমিটি দ্রুতই সাত কলেজের চূড়ান্ত মুক্তির অভিপ্রায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ঘোষণা করে যাবতীয় কর্মযজ্ঞ সমাপ্ত করবেন। স্বাধীনতার এত বছর পরে সাত কলেজের চূড়ান্ত মুক্তির জন্য যেসব শিক্ষাবিদ নিজেদের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন, শিক্ষার্থীরা তাঁদের আমৃত্যু স্মরণ রাখবে।’

সাত কলেজ পরিচালনায় নতুন পরিচালনা কমিটির প্রস্তাবনা এলেও শিক্ষার্থীদের মূল ফোকাস ‘বিশ্ববিদ্যালয়’। সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থী সাবরিনা সুলতানা বলেন, ‘সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা মূলত চূড়ান্ত মুক্তির আন্দোলন শুরু করেছিল। সরকারের নির্দেশনায় ইউজিসি ধাপে ধাপে সেদিকে এগোচ্ছে। এখন বিশেষ পরিস্থিতিতে যে প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে, সেখানে পরিচালনা কমিটির মাধ্যমে সাত কলেজের কার্যক্রম চালু রাখার কথা হয়েছে। পরিচালনা কমিটি হোক আর যা-ই হোক, আমাদের শিক্ষার্থীদের মূল দাবি কিন্তু চূড়ান্ত মুক্তি। সে ক্ষেত্রে সাত কলেজের সমন্বয়ে প্রতিষ্ঠিত হতে যাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়কেই আমরা চূড়ান্ত মুক্তি হিসেবে দেখছি।’

ইউজিসির সুপারিশ অনুযায়ী, সাময়িকভাবে সাতটি প্রতিষ্ঠানে একক সমন্বিত কাঠামো থাকবে। একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় বা সমকক্ষ প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর আওতাভুক্ত হওয়ার আগপর্যন্ত এই সাময়িক কাঠামো সাতটি কলেজের দায়িত্ব পালন করবে। কমিটির পরিচালক হবেন সাত কলেজ থেকে একজন অধ্যক্ষ। এই কাঠামোর অধীনে সাত কলেজের সব হিসাব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আলাদা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পরিচালিত হবে। প্রস্তাবিত এই ব্যবস্থাটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। ঢাবি থেকে অনুমোদনের পরই তা কার্যকর হবে।

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ‘সাত কলেজ নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনায় সাময়িক ব্যবস্থা সংক্রান্ত’ শিরোনামে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো ইউজিসির ওই সুপারিশপত্রে স্বাক্ষর করেছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ও সাত কলেজ বিষয়ে গঠিত উচ্চপর্যায়ের বিশেষজ্ঞ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ। এরপর ২ মার্চ ইউজিসির এই সুপারিশপত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্মতি দেয় দেয়। একই সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যকে ইউজিসির সুপারিশ অনুযায়ী অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানায় মন্ত্রণালয়।

জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সাত কলেজ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে আমরা একটি চিঠি রিসিভ করেছি। ঢাবি থেকে সাত কলেজকে পৃথক্‌করণ ঘোষণার পর এসব কলেজের জন্য ইউজিসির পক্ষ থেকে চিঠিতে একটি পরিচালনা কমিটির সুপারিশ করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ সুপারিশের অনুমোদন দিলে নতুন পরিচালনা কমিটি আইনগত বৈধতা পাবে। আমরা সে প্রক্রিয়ার দিকেই যাচ্ছি। এ কমিটি ঢাবি থেকে অনুমোদনের জন্য কিছু ধাপ রয়েছে। এ ধাপগুলো শেষ করতে কিছু সময় লাগতে পারে। এটা আগামী দু-এক সপ্তাহের মধ্যে শেষ করতে পারব।’

রাজধানীর সাত সরকারি কলেজ হলো ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ। এই কলেজগুলোতে শিক্ষার্থী প্রায় দুই লাখ। শিক্ষক এক হাজারের বেশি।

ঢাকা কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস আজকের পত্রিকাকে বলেন, সাত কলেজ বিষয়ে এবার কিন্তু সময় নিয়ে ও সুচিন্তিতভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যাতে নতুন করে আর কোনো সমস্যা তৈরির সুযোগ না থাকে। সাত কলেজকে এমন নির্দিষ্ট একটা গন্তব্যে পৌঁছানোর লক্ষ্যে ইউজিসির নেতৃত্বাধীন বিশেষজ্ঞ কমিটি কাজ করছে। সে আলোকেই কিন্তু এ অন্তর্বর্তী কাঠামো তৈরি করা হচ্ছে।

ইডেন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শামছুন নাহার বলেন, ‘সাত কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখার লক্ষ্যে একটা অন্তর্বর্তী কমিটি গঠনের কথা আমরা শুনেছি। সাত কলেজে কোনো এক অধ্যক্ষকে এ কমিটি পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হবে। আমরা তো আসলে এখন কোথাও নেই... না আছি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। আমাদের তো একটা পরিচয় লাগবে। সে অর্থে চিন্তা করলে ইউজিসির এই সুপারিশকে কাজের অগ্রগতি বলাই যায়।’

ইউজিসির নেতৃত্বে গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির কাছে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো স্বতন্ত্র পরিচয় নিশ্চিত করতে চান সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে নতুন প্রস্তাবনায় যেন কোনো সমন্বয়হীনতা তৈরি না হয়, সে প্রত্যাশাও তাঁদের। কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী জাকারিয়া বারী সাগর বলেন, ঢাবির অধীনে থেকেও সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা পরিচয় সংকটের মধ্যে ছিল। ঢাবি অধিভুক্তি বাতিল ঘোষণার পর থেকে সাত কলেজ এখন অভিভাবকহীন অবস্থায় চলছে। এমন অবস্থায় ইউজিসি সাত কলেজের জন্য একটি পরিচালনা কমিটির সুপারিশ করেছে। এ কমিটির অধীনে যেন সাত কলেজ পরিচালনায় কোনো সমন্বয়হীনতা না থাকে। একই সঙ্গে এ পরিচালনা কমিটি কত দিন দায়িত্ব পালন করবে, সক্ষমতা কতটুকু থাকবে—এসব বিষয়গুলোর পরিষ্কার করতে হবে।

সাত কলেজের স্বতন্ত্র পরিচয় প্রতিষ্ঠায় গত ৩০ ডিসেম্বর ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজকে সভাপতি করে চার সদস্যের উচ্চপর্যায়ের একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কমিটির সদস্যরা হলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব খালেদা আক্তার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ ও ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক তানজিমউদ্দিন খান। এ কমিটিকে আগামী এপ্রিলের মধ্যে কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে। এ কমিটি তাদের সর্বশেষ পদক্ষেপ হিসেবে সাত কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনায় সাময়িক ব্যবস্থার সুপারিশ করে।

প্রস্তাবিত পরিচালনা কমিটির মেয়াদ কতদিন

ইউজিসির প্রস্তাবনায় উল্লেখ করা হয়েছে, একটি সনদপ্রাপ্ত পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়/সমকক্ষ প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর আওতাভুক্ত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এই সাময়িক কাঠামো সাতটি কলেজ বিষয়ে দায়িত্ব পালন করবে।

চাইলে ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যেহেতু সাত কলেজকে পৃথকীকরণের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, সে ক্ষেত্রে এ কলেজগুলোর প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম স্থিতিশীল রাখতে একটা পরিচালনা কাঠামোর প্রস্তাবনা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। মন্ত্রণালয় সেটার অনুমোদন দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়েছে। এখন এটা ঢাবির সিন্ডিকেট ও কাউন্সিলে পাস হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। ঢাবির অনুমোদনের পর এ কমিটি নতুন সেশনের ভর্তি কার্যক্রমসহ যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এ কমিটি ইউজিসির নজরদারিতে কাজ করবে। নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামো, আইন ও ঘোষণা হওয়া আগপর্যন্ত এ কমিটির কার্যকারিতা বলবৎ থাকবে।

সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল, অধিভুক্তি বাতিল করে এসব কলেজগুলোর সমন্বয়ে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার। অন্তর্বর্তী সরকারের সদ্য সাবেক শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ শিক্ষার্থীদের দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছেন। সে অনুযায়ী কাজও চলমান রয়েছে। এ বিষয়ে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, আট বছর আগে একটি সরকার বিবেচনাহীনভাবে সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করে। যার ফলে জটিল সমস্যা তৈরি হয়েছে। এই সাত কলেজ নিয়ে নতুন একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় করা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কাজ কতদূর

ইউজিসি চেয়ারম্যান ও উচ্চপর্যায়ের বিশেষজ্ঞ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ফায়েজ বলেন, সাত কলেজের সমন্বয়ে নতুন যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা কাজ করছি, সেটার বেশ অগ্রগতি হয়েছে। এখন কাজ প্রায় শেষের দিকে রয়েছে। আমরা শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, সাত কলেজের শিক্ষার্থী প্রতিনিধি, সাত কলেজের অধ্যক্ষ, ঢাবি কর্তৃপক্ষ—সবার সঙ্গে পৃথকভাবে কথা বলেছি। নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম চেয়ে সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশ্যে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি। এসবগুলো কাজ এখন আমাদের ফিল্টারিং করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ইউজিসির নেতৃত্বে আমরা প্রায় সবগুলো ক্যাম্পাস ঘুরে দেখেছি। এর মাধ্যমে আমরা প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা ও দুর্বলতার দিকগুলো নির্ণয়ের চেষ্টা করছি। কিছু প্রতিষ্ঠানে সন্তোষজনক অবস্থা দেখা গেছে। কয়েকটির অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। আমরা এখন ক্যাম্পাসগুলোর সরেজমিন পর্যবেক্ষণ মূল্যায়নের চেষ্টা করছি। একইসঙ্গে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের মডেলের কাজও দ্রুত গতিতে চলছে। আশা করছি, আমাদের যে সময়সীমা দেওয়া হয়েছে তার আগেই কাজ শেষ করতে পারব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‎জকসু নির্বাচনে প্যানেল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ৪ দফা দাবি

জবি প্রতিনিধি 
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ৫৪
জকসু নির্বাচন স্থগিতের প্রতিবাদে বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা
জকসু নির্বাচন স্থগিতের প্রতিবাদে বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে চার দফা দাবি জানিয়েছে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা চার প্যানেলেসহ স্বতন্ত্র পদপ্রার্থীরা। আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে উপাচার্য বরাবর সম্মিলিতভাবে এ দাবি জানান তাঁরা। ‎

‎এ বিষয়ে ছাত্রশিবির সমর্থিত অদম্য জবিয়ান ঐক্য প্যানেলের জিএস পদপ্রার্থী আব্দুল আলিম আরিফ ‎বলেন, ‘আমরা প্যানেল এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জকসু নির্বাচনকে ঘিরে সম্মিলিতভাবে চার দফা মৌখিক দাবি জানিয়েছি। প্রশাসন থেকে আমাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে যে সবগুলো পূরণ করতে তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে।’ ‎

‎সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট সমর্থিত মওলানা ভাসানী ব্রিগেড প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী গৌরব ভৌমিক বলেন, ‘আমরা যে দাবি জানিয়েছি, তা অবশ্যই পূরণ করা লাগবে—এটা আমাদের অধিকার।’ ‎

এর আগে সকালে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক জানিয়ে নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম। নির্বাচন স্থগিতের ঘোষণার পরপরই ক্ষুব্ধ সাধারণ শিক্ষার্থী ও প্রার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শুরু করেন। কয়েক ঘণ্টা ধরে উপাচার্য ভবন ঘেরাও করে আন্দোলন চালান তাঁরা। ‎

‎শিক্ষার্থীদের তীব্র আন্দোলনের মুখে আবারও সিন্ডিকেট সভা ডাকা হয়। সভা শেষে উপাচার্য শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের আবেগের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হলেও শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী ৬ জানুয়ারি জকসু ও হল সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’ ‎

‎চার দফা দাবি হলো—জকসু ও হল সংসদ নির্বাচন আগামী ৬ জানুয়ারির মধ্যেই অনুষ্ঠিত করতে হবে। নির্বাচন সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোনো সদস্য পদত্যাগ করতে পারবেন না। নির্বাচন শেষে যেসব সিন্ডিকেট সদস্য নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাদের পদত্যাগ করতে হবে। নির্বাচন স্থগিতের পেছনে কোনো দলীয় বা রাজনৈতিক চাপ ছিল কি না, সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার মৃত্যু: জকসু নির্বাচন পিছিয়ে ৬ জানুয়ারি

জবি প্রতিনিধি‎
জকসু ও হল সংসদ নির্বাচন স্থগিতের ঘোষণায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা
জকসু ও হল সংসদ নির্বাচন স্থগিতের ঘোষণায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ পিছিয়ে আগামী ৬ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক জানিয়ে এই ভোট গ্রহণ সাত দিন পেছাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

‎‎আজ ‎মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ‎

‎তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক জানিয়ে আজ সকালে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জকসু ও হল সংসদ নির্বাচন স্থগিতের ঘোষণা দেন উপাচার্য ড. মো. রেজাউল করিম। এতে শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্যানেলের প্রার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে তাঁরা উপাচার্য ভবন ঘেরাও করেন। বিক্ষোভকারীরা তফসিল অনুযায়ী আজই নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানান।

‎শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে সিন্ডিকেটের জরুরি সভা ডাকা হয়।

সভা শেষে উপাচার্য শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের আবেগের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হলেও শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী ৬ জানুয়ারি জকসু ও হল সংসদ নির্বাচন হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার মৃত্যু: বুধবারের বৃত্তি পরীক্ষা স্থগিত, হবে ৫ জানুয়ারি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ৫০
খালেদা জিয়ার মৃত্যু: বুধবারের বৃত্তি পরীক্ষা স্থগিত, হবে ৫ জানুয়ারি

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা ও বুধবার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করায় এ দিন অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জুনিয়র বৃত্তির বিজ্ঞান এবং বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ের পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করেছে শিক্ষা বোর্ডগুলো। পরীক্ষাটি আগামী ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় শোক এবং বুধবার ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। তাই বুধবারের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। ওই পরীক্ষা আগামী ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।’

পরীক্ষা স্থগিত ও নতুন তারিখ ঘোষণা দিয়ে শিক্ষা বোর্ডগুলো বিজ্ঞপ্তি জারি করছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের ভিত্তিতে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান এবং বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বিষয়ে জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

রোববার বাংলা, সোমবার ইংরেজি, মঙ্গলবার গণিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবারের বিজ্ঞান এবং বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ৫ জানুয়ারি।

বাংলা, ইংরেজি, গণিত বিষয়ে আলাদা আলাদা পরীক্ষা হলে বিজ্ঞান এবং বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ের পরীক্ষা হবে একসঙ্গে।

বৃত্তি পরীক্ষার মোট নম্বর হবে ৪০০। বাংলায় ১০০, ইংরেজিতে ১০০, গণিতে ১০০, বিজ্ঞানে ৫০ এবং বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে ৫০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। প্রতিটি পরীক্ষা হবে ৩ ঘণ্টা সময়ে।

এ পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে ‘ট্যালেন্টপুল’ কোটায় ও ‘সাধারণ’ কোটায় শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‎জকসু নির্বাচন স্থগিত, ক্যাম্পাস ছাড়ছেন শিক্ষার্থীরা

  জবি প্রতিনিধি
ক্যাম্পাস ছাড়তে শুরু করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ক্যাম্পাস ছাড়তে শুরু করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন স্থগিতের ঘোষণার পর উপাচার্যের ভবন ঘেরাও করে আন্দোলন শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা। এদিকে এ উত্তাল পরিস্থিতির মাঝে ক্যাম্পাস ছাড়তে শুরু করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

‎আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক ও আশপাশের এলাকায় শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস ছাড়ার দৃশ্য চোখে পড়ে। এদিন সকাল থেকেই ভোট দেওয়ার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে এসেছিলেন। তবে ভোটের অনিশ্চয়তায় ক্যাম্পাস ছাড়ছেন তাঁরা।

‎গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২২–২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান সোহাগ বলেন, জীবনের প্রথম ভোট দিতে ক্যাম্পাসে এসেছিলাম। কিন্তু প্রশাসনের সিদ্ধান্তের কারণে সেই সুযোগ আর হলো না। জানি না কবে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এজন্যই বাসায় ফিরে যাচ্ছি।

‎সমাজকর্ম বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী মায়িশা ফাহমিদা বলেন, নির্বাচনকে ঘিরে এক ধরনের ভিন্ন অনুভূতি কাজ করছিল। কিন্তু যা প্রশাসন করল, তা ছিল একেবারেই অপ্রত্যাশিত। ভোট যেহেতু হবে না, তাই ক্যাম্পাসে থাকার আর কোনো মনমানসিকতা নেই এ কারণেই চলে যাচ্ছি। ‎

‎এর আগে এক জরুরি সিন্ডিকেট সভায় জকসু নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে নিশ্চিত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম। আজ সকাল সোয়া ৯টায় নির্বাচন স্থগিতের এ আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসে।

‎‎তবে এ ঘোষণার পর ভিসি ভবন ঘেরাও করে আন্দোলন শুরু করেন প্রার্থী ও শিক্ষার্থীরা। প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ভিসি ভবন ঘেরাও করে নির্বাচন আদায়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত