Ajker Patrika

বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা হলেই মেয়াদ শেষ নতুন পরিচালনা কমিটির

ইলিয়াস শান্ত, ঢাকা
আপডেট : ০৬ মার্চ ২০২৫, ২৩: ০১
বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা হলেই মেয়াদ শেষ নতুন পরিচালনা কমিটির

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) থেকে অধিভুক্ত সাত কলেজের আনুষ্ঠানিক পৃথকীকরণ প্রক্রিয়া শুরু হতে যাচ্ছে। ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীদের যাবতীয় শিক্ষা কার্যক্রম নতুন কাঠামোর অধীনে হবে। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নজরদারিতে তৈরি হবে সমন্বয় কমিটি। যার পরিচালক হবেন সাত কলেজের কোনো একজন অধ্যক্ষ। সঙ্গে থাকবে ঢাবির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, ভর্তি, রেজিস্ট্রার ও হিসাব বিভাগের প্রতিনিধি। তবে যেসব শিক্ষার্থী বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে রয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বর্তমান ব্যবস্থা চালু রাখবে।

রাজধানীর সরকারি সাত কলেজ ২০১৭ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হওয়ার পর থেকে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে নানা জটিলতা তৈরি হতে থাকে। অধিভুক্তির দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও পরীক্ষা, মানসম্মত শিক্ষাসহ অন্য সমস্যা সমাধান পুরোপুরি হয়নি। ফলে বারবার আন্দোলনে নেমেছেন কলেজগুলোর শিক্ষার্থীরা। সর্বশেষ গেল বছরের সেপ্টেম্বরে ঢাবি অধিভুক্তি বাতিল করে সাত কলেজের সমন্বয়ে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলনে নামেন তাঁরা। শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সাত কলেজকে ‘সম্মানজনক’ পৃথকীকরণের সিদ্ধান্তের কথা জানায়। এতে সাত কলেজের চলতি শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কার্যক্রম জটিলতার মুখে পড়ে।

ঢাবি প্রশাসনের সাত কলেজের পৃথকীকরণের সিদ্ধান্তের প্রায় এক মাস পর এবার নতুন পদক্ষেপের কথা জানাল ইউজিসি। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে সাত কলেজের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে সাময়িক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে। যেখানে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে এই প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষা কার্যক্রম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পৃথকীকরণের কথা জানানো হয়।

শিক্ষার্থীরা কী বলছেন

বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রী জাফরিন আক্তার বলেন, ‘সাত কলেজের সমস্যা সমাধানে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের প্রায় দুই মাস শেষ হয়েছে। এ সময়ে বিশেষজ্ঞ কমিটির বেশ কিছু দৃশ্যমান পদক্ষেপ আমরা দেখেছি। তারা কলেজের শিক্ষার্থী প্রতিনিধি, শিক্ষকবৃন্দ, শিক্ষাবিদ ও সাংবাদিকদের সঙ্গে বসে আলোচনা করেছেন। এখন ক্যাম্পাসগুলো ঘুরে দেখছেন। সম্প্রতি সাত কলেজের পরিচালনায় নতুন পরিচালনা কাঠামোর খবর সামনে এসেছে। শুনেছি, এটা ঢাবি প্রশাসন অনুমোদন দিলে আইনগত বৈধতা পাবে। পবিত্র রমজান মাসের মধ্যেও কাজগুলো চলমান রয়েছে। যা প্রকৃতপক্ষেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভরসার জায়গা তৈরি করছে। আমরা আশাবাদী, অবশিষ্ট কাজগুলোও অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ হবে।’

ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী মো. আব্দুর রহমান বলেন, ‘সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তরে বিশেষজ্ঞ কমিটির প্রতিটি পদক্ষেপ শিক্ষার্থীদের প্রাণ ছুঁয়েছে। প্রথম থেকেই শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো তাঁরা যত্নের সঙ্গে শুনেছেন। এখন যতটুকু জানতে পেরেছি, অধিকাংশ কাজই গোছানো হয়ে গেছে। আমাদের প্রত্যাশা, বিশেষজ্ঞ কমিটি দ্রুতই সাত কলেজের চূড়ান্ত মুক্তির অভিপ্রায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ঘোষণা করে যাবতীয় কর্মযজ্ঞ সমাপ্ত করবেন। স্বাধীনতার এত বছর পরে সাত কলেজের চূড়ান্ত মুক্তির জন্য যেসব শিক্ষাবিদ নিজেদের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন, শিক্ষার্থীরা তাঁদের আমৃত্যু স্মরণ রাখবে।’

সাত কলেজ পরিচালনায় নতুন পরিচালনা কমিটির প্রস্তাবনা এলেও শিক্ষার্থীদের মূল ফোকাস ‘বিশ্ববিদ্যালয়’। সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থী সাবরিনা সুলতানা বলেন, ‘সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা মূলত চূড়ান্ত মুক্তির আন্দোলন শুরু করেছিল। সরকারের নির্দেশনায় ইউজিসি ধাপে ধাপে সেদিকে এগোচ্ছে। এখন বিশেষ পরিস্থিতিতে যে প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে, সেখানে পরিচালনা কমিটির মাধ্যমে সাত কলেজের কার্যক্রম চালু রাখার কথা হয়েছে। পরিচালনা কমিটি হোক আর যা-ই হোক, আমাদের শিক্ষার্থীদের মূল দাবি কিন্তু চূড়ান্ত মুক্তি। সে ক্ষেত্রে সাত কলেজের সমন্বয়ে প্রতিষ্ঠিত হতে যাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়কেই আমরা চূড়ান্ত মুক্তি হিসেবে দেখছি।’

ইউজিসির সুপারিশ অনুযায়ী, সাময়িকভাবে সাতটি প্রতিষ্ঠানে একক সমন্বিত কাঠামো থাকবে। একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় বা সমকক্ষ প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর আওতাভুক্ত হওয়ার আগপর্যন্ত এই সাময়িক কাঠামো সাতটি কলেজের দায়িত্ব পালন করবে। কমিটির পরিচালক হবেন সাত কলেজ থেকে একজন অধ্যক্ষ। এই কাঠামোর অধীনে সাত কলেজের সব হিসাব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আলাদা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পরিচালিত হবে। প্রস্তাবিত এই ব্যবস্থাটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। ঢাবি থেকে অনুমোদনের পরই তা কার্যকর হবে।

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ‘সাত কলেজ নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনায় সাময়িক ব্যবস্থা সংক্রান্ত’ শিরোনামে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো ইউজিসির ওই সুপারিশপত্রে স্বাক্ষর করেছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ও সাত কলেজ বিষয়ে গঠিত উচ্চপর্যায়ের বিশেষজ্ঞ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ। এরপর ২ মার্চ ইউজিসির এই সুপারিশপত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্মতি দেয় দেয়। একই সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যকে ইউজিসির সুপারিশ অনুযায়ী অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানায় মন্ত্রণালয়।

জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সাত কলেজ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে আমরা একটি চিঠি রিসিভ করেছি। ঢাবি থেকে সাত কলেজকে পৃথক্‌করণ ঘোষণার পর এসব কলেজের জন্য ইউজিসির পক্ষ থেকে চিঠিতে একটি পরিচালনা কমিটির সুপারিশ করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ সুপারিশের অনুমোদন দিলে নতুন পরিচালনা কমিটি আইনগত বৈধতা পাবে। আমরা সে প্রক্রিয়ার দিকেই যাচ্ছি। এ কমিটি ঢাবি থেকে অনুমোদনের জন্য কিছু ধাপ রয়েছে। এ ধাপগুলো শেষ করতে কিছু সময় লাগতে পারে। এটা আগামী দু-এক সপ্তাহের মধ্যে শেষ করতে পারব।’

রাজধানীর সাত সরকারি কলেজ হলো ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ। এই কলেজগুলোতে শিক্ষার্থী প্রায় দুই লাখ। শিক্ষক এক হাজারের বেশি।

ঢাকা কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস আজকের পত্রিকাকে বলেন, সাত কলেজ বিষয়ে এবার কিন্তু সময় নিয়ে ও সুচিন্তিতভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যাতে নতুন করে আর কোনো সমস্যা তৈরির সুযোগ না থাকে। সাত কলেজকে এমন নির্দিষ্ট একটা গন্তব্যে পৌঁছানোর লক্ষ্যে ইউজিসির নেতৃত্বাধীন বিশেষজ্ঞ কমিটি কাজ করছে। সে আলোকেই কিন্তু এ অন্তর্বর্তী কাঠামো তৈরি করা হচ্ছে।

ইডেন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শামছুন নাহার বলেন, ‘সাত কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখার লক্ষ্যে একটা অন্তর্বর্তী কমিটি গঠনের কথা আমরা শুনেছি। সাত কলেজে কোনো এক অধ্যক্ষকে এ কমিটি পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হবে। আমরা তো আসলে এখন কোথাও নেই... না আছি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। আমাদের তো একটা পরিচয় লাগবে। সে অর্থে চিন্তা করলে ইউজিসির এই সুপারিশকে কাজের অগ্রগতি বলাই যায়।’

ইউজিসির নেতৃত্বে গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির কাছে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো স্বতন্ত্র পরিচয় নিশ্চিত করতে চান সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে নতুন প্রস্তাবনায় যেন কোনো সমন্বয়হীনতা তৈরি না হয়, সে প্রত্যাশাও তাঁদের। কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী জাকারিয়া বারী সাগর বলেন, ঢাবির অধীনে থেকেও সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা পরিচয় সংকটের মধ্যে ছিল। ঢাবি অধিভুক্তি বাতিল ঘোষণার পর থেকে সাত কলেজ এখন অভিভাবকহীন অবস্থায় চলছে। এমন অবস্থায় ইউজিসি সাত কলেজের জন্য একটি পরিচালনা কমিটির সুপারিশ করেছে। এ কমিটির অধীনে যেন সাত কলেজ পরিচালনায় কোনো সমন্বয়হীনতা না থাকে। একই সঙ্গে এ পরিচালনা কমিটি কত দিন দায়িত্ব পালন করবে, সক্ষমতা কতটুকু থাকবে—এসব বিষয়গুলোর পরিষ্কার করতে হবে।

সাত কলেজের স্বতন্ত্র পরিচয় প্রতিষ্ঠায় গত ৩০ ডিসেম্বর ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজকে সভাপতি করে চার সদস্যের উচ্চপর্যায়ের একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কমিটির সদস্যরা হলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব খালেদা আক্তার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ ও ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক তানজিমউদ্দিন খান। এ কমিটিকে আগামী এপ্রিলের মধ্যে কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে। এ কমিটি তাদের সর্বশেষ পদক্ষেপ হিসেবে সাত কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনায় সাময়িক ব্যবস্থার সুপারিশ করে।

প্রস্তাবিত পরিচালনা কমিটির মেয়াদ কতদিন

ইউজিসির প্রস্তাবনায় উল্লেখ করা হয়েছে, একটি সনদপ্রাপ্ত পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়/সমকক্ষ প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর আওতাভুক্ত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এই সাময়িক কাঠামো সাতটি কলেজ বিষয়ে দায়িত্ব পালন করবে।

চাইলে ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যেহেতু সাত কলেজকে পৃথকীকরণের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, সে ক্ষেত্রে এ কলেজগুলোর প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম স্থিতিশীল রাখতে একটা পরিচালনা কাঠামোর প্রস্তাবনা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। মন্ত্রণালয় সেটার অনুমোদন দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়েছে। এখন এটা ঢাবির সিন্ডিকেট ও কাউন্সিলে পাস হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। ঢাবির অনুমোদনের পর এ কমিটি নতুন সেশনের ভর্তি কার্যক্রমসহ যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এ কমিটি ইউজিসির নজরদারিতে কাজ করবে। নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামো, আইন ও ঘোষণা হওয়া আগপর্যন্ত এ কমিটির কার্যকারিতা বলবৎ থাকবে।

সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল, অধিভুক্তি বাতিল করে এসব কলেজগুলোর সমন্বয়ে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার। অন্তর্বর্তী সরকারের সদ্য সাবেক শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ শিক্ষার্থীদের দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছেন। সে অনুযায়ী কাজও চলমান রয়েছে। এ বিষয়ে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, আট বছর আগে একটি সরকার বিবেচনাহীনভাবে সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করে। যার ফলে জটিল সমস্যা তৈরি হয়েছে। এই সাত কলেজ নিয়ে নতুন একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় করা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কাজ কতদূর

ইউজিসি চেয়ারম্যান ও উচ্চপর্যায়ের বিশেষজ্ঞ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ফায়েজ বলেন, সাত কলেজের সমন্বয়ে নতুন যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা কাজ করছি, সেটার বেশ অগ্রগতি হয়েছে। এখন কাজ প্রায় শেষের দিকে রয়েছে। আমরা শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, সাত কলেজের শিক্ষার্থী প্রতিনিধি, সাত কলেজের অধ্যক্ষ, ঢাবি কর্তৃপক্ষ—সবার সঙ্গে পৃথকভাবে কথা বলেছি। নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম চেয়ে সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশ্যে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি। এসবগুলো কাজ এখন আমাদের ফিল্টারিং করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ইউজিসির নেতৃত্বে আমরা প্রায় সবগুলো ক্যাম্পাস ঘুরে দেখেছি। এর মাধ্যমে আমরা প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা ও দুর্বলতার দিকগুলো নির্ণয়ের চেষ্টা করছি। কিছু প্রতিষ্ঠানে সন্তোষজনক অবস্থা দেখা গেছে। কয়েকটির অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। আমরা এখন ক্যাম্পাসগুলোর সরেজমিন পর্যবেক্ষণ মূল্যায়নের চেষ্টা করছি। একইসঙ্গে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের মডেলের কাজও দ্রুত গতিতে চলছে। আশা করছি, আমাদের যে সময়সীমা দেওয়া হয়েছে তার আগেই কাজ শেষ করতে পারব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সমুদ্রের বাতাসে স্বাস্থ্যের বার্তা

ক্যাম্পাস ডেস্ক 
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৪৫
সমুদ্রের বাতাসে স্বাস্থ্যের বার্তা

কক্সবাজারের সোনারপাড়া মেরিন ড্রাইভ সড়কে সম্প্রতি এক বর্ণাঢ্য ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল এবং বিদেশ থেকে মোট ৫০০ জন দৌড়বিদ এই আয়োজনে অংশ নেন।

ভোর ৬টায় উখিয়ার সোনারপাড়া বিচ পয়েন্ট থেকে শুরু হয়ে দৌড়টি শেষ হয় সকাল ৭টায় তারকা মানের হোটেল অর্কিড ব্লুতে। পুরুষ ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হন মোহাম্মদ সায়েদ (০১৫৯), প্রথম রানারআপ তারেক (০৪৫৬) এবং দ্বিতীয় রানারআপ আশিক (০১৬০)। নারীদের বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হন বিদেশি প্রতিযোগী জোহানা (০২৩৯), প্রথম রানারআপ আভা (০০৬৫) এবং দ্বিতীয় রানারআপ কুজো (০০৮৭)।

ম্যারাথন আয়োজন করে শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হাসিঘর ফাউন্ডেশন। অনুষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন উপদেষ্টা এ এইচ সেলিম উল্লাহ, প্রতিষ্ঠাতা ও কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইয়াসিন সিকদার, উখিয়া শাখার সভাপতি পিএম মোবারক, ইনস্টিটিউশনাল অ্যাফেয়ার্স উইংয়ের সিডিসিও শাইফুল ইসলাম শিহাব, উবায়েদ উল্লাহ শুভ, শাকিবুল ইসলাম, সাইয়েদ মোবারক, মেহেদী হাসান, শাহরিয়ার তানভীর রিফাত, আর জে রাফি, আবুল কাশেমসহ সংগঠনের অন্য সদস্যরা।

সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ ইয়াসিন সিকদার বলেন, ‘বিপুল সাড়া পাওয়ায় আমরা খুবই আনন্দিত। এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য তরুণদের মাদক থেকে দূরে রাখা এবং স্বাস্থ্যসচেতন হওয়ার প্রতি উদ্বুদ্ধ করা।’

ম্যারাথনের সমাপ্তির পর অংশগ্রহণকারীরা আরও এরূপ আয়োজনের আহ্বান জানিয়েছেন। আয়োজকেরা জানান, আগামী বছরও তাঁরা একটি নতুন ম্যারাথন আয়োজনের চেষ্টা করবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এআইইউবিতে সাইবার গেমিং ফেস্ট

ক্যাম্পাস ডেস্ক 
এআইইউবিতে সাইবার গেমিং ফেস্ট

আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (এআইইউবি) কম্পিউটার ক্লাবের (এসিসি) আয়োজনে এবং অফিস অব স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্সের সহযোগিতায় এআইইউবি সাইবার গেমিং ফেস্ট ২০২৫ সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। চার দিনব্যাপী এই আয়োজনে দেশের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু শিক্ষার্থী অংশ নেন।

উদ্বোধনী ও বিভিন্ন পর্বের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এআইইউবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রহমান, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মঞ্জুর এইচ খান, অফিস অব স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্সের বিশেষ সহকারী ও সহযোগী অধ্যাপক অভিজিৎ ভৌমিক, সহকারী অধ্যাপক এবং বিশেষ সহকারী মো. মাজেদ-উল-হক এবং প্রভাষক ও বিশেষ সহকারী এস এম আবদুল্লাহ শাফি।

অনলাইন ও অন-ক্যাম্পাস প্রতিযোগিতার সমন্বয়ে আয়োজিত এই উৎসবে এআইইউবি ক্যাম্পাস পরিণত হয় এক প্রাণবন্ত ও প্রতিযোগিতামূলক গেমিং অঙ্গনে। পাবজি মোবাইল প্রতিযোগিতার অনলাইন কোয়ালিফায়ার পর্বে ৫১টি দল অংশ নেয়। সেখান থেকে ৩২টি দল সেমিফাইনালে এবং পরবর্তী সময়ে ১৬টি দল ক্যাম্পাস ফাইনালে উত্তীর্ণ হয়। চূড়ান্ত দিনে অনুষ্ঠিত চারটি উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচ শেষে ব্ল্যাকবিয়ার্ড পাইরেটস চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে।

ভ্যালোরান্ট বিভাগে অনলাইন লোয়ার-ব্র্যাকেট পর্ব ও ক্যাম্পাসে ল্যান ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। লোয়ার-ব্র্যাকেট থেকে উঠে এসে অলস্টারস দল গ্র্যান্ড ফাইনালে ন্যাক্সআর ই-স্পোর্টসের মুখোমুখি হয়। তিন ম্যাচের রুদ্ধশ্বাস ফাইনালে শেষ পর্যন্ত অলস্টারস চ্যাম্পিয়নশিপ নিশ্চিত করে।

এ ছাড়া উৎসবে মোবাইল লেজেন্ডস: ব্যাঙ ব্যাঙ (এমএলবিবি), এফসি ২৫ এবং ই-ফুটবল প্রতিযোগিতাও অনুষ্ঠিত হয়। এমএলবিবি বিভাগে ভাইপার স্ট্রাইকার্স, এফসি ২৫ বিভাগে নিও, ই-ফুটবল একক বিভাগে শাওন শান্ত এবং দলীয় বিভাগে পিএনজি বট চ্যাম্পিয়ন হয়।

সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এআইইউবির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মিস নাদিয়া আনোয়ার, উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম এবং উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রহমান। বক্তারা আয়োজনের ব্যাপ্তি, পেশাদার ব্যবস্থাপনা এবং প্রতিযোগিতামূলক গেমিংয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের দক্ষতা ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধির গুরুত্ব তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠান শেষে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কারের অর্থ ও ক্রেস্ট বিতরণ করা হয়। পাশাপাশি তিনজন সেরা ক্যাম্পাস অ্যাম্বাসেডর এবং এআইইউবি ফটোগ্রাফি ক্লাব, এআইইউবি ই-স্পোর্টস ক্লাব ও এআইইউবি পারফর্মিং আর্টস ক্লাবকে বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নতুন বছরে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ভাবনা ও প্রত্যাশা

শিক্ষা ডেস্ক
নতুন বছরে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ভাবনা ও প্রত্যাশা

মো. রাকিব আল হাসান
মো. রাকিব আল হাসান

নতুন বছর মানে শুধু ক্যালেন্ডারের একটি সংখ্যা বদলে যাওয়া নয়; বরং পুরোনো ক্লান্তি, হতাশা ও ব্যর্থতা পেছনে ফেলে নতুন স্বপ্ন, প্রত্যাশা এবং সম্ভাবনার দিকে এগিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের কাছে প্রতিটি নতুন বছর আসে নতুন চ্যালেঞ্জ ও নতুন সম্ভাবনা নিয়ে। একদিকে পড়াশোনা, ক্যারিয়ার ও ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ, অন্যদিকে নিজেকে নতুনভাবে গড়ে তোলার দৃঢ়সংকল্প। বাস্তবতা ও স্বপ্নের এ মিশ্রণই নতুন বছরে তাঁদের প্রত্যাশাকে করে তোলে গভীর ও অর্থবহ। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সেই ভাবনা ও প্রত্যাশার কথাই তুলে ধরছেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী মো. রাকিব আল হাসান

মো. আশিক মাহমুদ
মো. আশিক মাহমুদ

ক্যাম্পাস হোক রাজনৈতিক অস্থিরতামুক্ত

মো. আশিক মাহমুদ, শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

নতুন বছর আমার কাছে শুধু সময়ের পরিবর্তন নয়; এটি নিজেকে নতুন করে আবিষ্কারের সুযোগ। আমার প্রত্যাশা, বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙিনা হবে রাজনৈতিক অস্থিরতামুক্ত; যেখানে জ্ঞানচর্চাই হবে মুখ্য। ক্লাসরুমে ফিরে আসুক শিক্ষার প্রকৃত জৌলুশ ও গুণগত মান। ব্যক্তিগতভাবে আমি চাই নিরবচ্ছিন্ন মনোযোগ ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে নিজেকে প্রস্তুত করতে, যেন যোগ্যতার ভিত্তিতে কাঙ্ক্ষিত কর্মজীবনের পথে এগোতে পারি। একই সঙ্গে জাগতিক সাফল্যের ভিড়ে হারিয়ে না গিয়ে মানবিক মূল্যবোধে সমৃদ্ধ একজন পরিপূর্ণ মানুষ হয়ে ওঠাই হোক নতুন বছরের লক্ষ্য।

রাইসা আমিন,
রাইসা আমিন,

সহযোগিতা ও সৌহার্দ্যের বন্ধন আরও দৃঢ় হোক

রাইসা আমিন, শিক্ষার্থী, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

নতুন বছর মানে আমার কাছে নতুন লক্ষ্য নির্ধারণ এবং নতুন করে স্বপ্ন দেখার সুযোগ। আমি প্রত্যাশা করি, শিক্ষাঙ্গন হবে আরও প্রাণবন্ত, গবেষণামুখী এবং সহমর্মিতায় পরিপূর্ণ। পড়াশোনার পাশাপাশি নেতৃত্বগুণ, মানবিক মূল্যবোধ ও সামাজিক দায়বদ্ধতার চর্চা বাড়ুক। মতের ভিন্নতা থাকলেও পরস্পরের প্রতি সম্মান বজায় থাকুক—মতভেদ হোক, কিন্তু বিভেদ নয়। সহপাঠীদের মধ্যে সহযোগিতা ও সৌহার্দ্যের বন্ধন আরও দৃঢ় হোক। ব্যক্তিগত জীবনে সময়ের সঠিক ব্যবহার এবং লক্ষ্যভিত্তিক পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজেকে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করতে চাই।

মো. মাহামুদুল হাসান
মো. মাহামুদুল হাসান

তরুণ প্রজন্মের অন্তরে এক অদম্য আশার স্রোত

মো. মাহামুদুল হাসান, শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

নতুন বছরের সূচনায় বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের অন্তরে জেগে উঠেছে এক অদম্য আশার স্রোত। আর্থসামাজিক অস্থিরতা, বেকারত্ব ও অনিশ্চয়তার মধ্যেও প্রযুক্তির অগ্রগতি; বিশেষত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং ব্লকচেইনের মতো ক্ষেত্র—আমাদের সামনে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং নানা প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও আমরা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী। প্রতিহিংসা নয়, বরং ন্যায়ভিত্তিক ও স্বনির্ভর সমাজ গঠনের স্বপ্নই আমাদের অনুপ্রেরণা। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ঐক্যবদ্ধ যুবশক্তির হাত ধরে বাংলাদেশ পৌঁছাবে নতুন উচ্চতায়।

মেহরাজ হোসেন
মেহরাজ হোসেন

গবেষণায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এগিয়ে যাক

মেহরাজ হোসেন, শিক্ষার্থী, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

নতুন বছর একদিকে যেমন বিদায়ের বার্তা দেয়, অন্যদিকে সম্ভাবনার নতুন দরজা খুলে দেয়। সাম্প্রতিক আন্দোলনের ইতিবাচক প্রভাবে ক্যাম্পাসগুলোতে পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে। ছাত্র সংসদ নির্বাচন, র‍্যাগিং ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে অবস্থান—সবই শিক্ষার্থীদের সচেতনতার প্রতিফলন। নতুন বছরে প্রত্যাশা, ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণ ও সহযোগিতামূলক পরিবেশ বজায় থাকবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আরও এগিয়ে যাবে জ্ঞান ও গবেষণায়। গবেষণাভিত্তিক শিক্ষার মাধ্যমে দেশকে আন্তর্জাতিক পরিসরে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠা করাই হোক আমাদের যৌথ লক্ষ্য।

সমাপ্তি খান
সমাপ্তি খান

নিজেকে মানবিক ও সচেতন করে গড়ে তুলতে চাই

সমাপ্তি খান, শিক্ষার্থী, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

নতুন বছর আমাদের কাছে নতুন স্বপ্নের পাশাপাশি নতুন দায়বদ্ধতার সময়। এটি শুধু ক্যালেন্ডারের পরিবর্তন নয়; বরং নিজের সঙ্গে নতুন করে অঙ্গীকার করার মুহূর্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আমি চাই নিজেকে আরও দায়িত্বশীল, মানবিক এবং সচেতন মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে। পড়াশোনার পাশাপাশি গবেষণা, দক্ষতা অর্জন এবং সামাজিক দায়বদ্ধতার চর্চা জরুরি বলে আমি মনে করি। নানা ধরনের সীমাবদ্ধতা ও অনিশ্চয়তার মধ্যেও আমরা স্বপ্ন দেখতে ছাড়িনি। আমাদের প্রত্যাশা, একটি কার্যকর শিক্ষাব্যবস্থা, নিরাপদ ক্যাম্পাসজীবন এবং ন্যায়ভিত্তিক ভবিষ্যৎ। নতুন বছর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের সাহস জোগাক।

উম্মে হাবিবা নিশাত
উম্মে হাবিবা নিশাত

নবসূর্যের নিঃশব্দ প্রতিশ্রুতি

উম্মে হাবিবা নিশাত, শিক্ষার্থী, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ

নতুন বছর আমার কাছে নিঃশব্দ এক প্রতিশ্রুতি—ধীরে বাঁচার সাহস ও গভীরভাবে অনুভব করার শক্তি। চাই সম্পর্কগুলো হোক বোঝাপড়ার জায়গা, নীরবতাগুলো হোক হৃদয়ের ভাষা। ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে প্রতিটি পদক্ষেপে ধৈর্য ও কোমলতা বজায় রাখতে চাই। অল্পতেই সুখ খুঁজে পাওয়ার প্রজ্ঞা এবং নিজের ভেতরের ক্লান্তি ঝেড়ে ফেলে নতুনভাবে জেগে ওঠার প্রত্যয়—এই হোক নতুন বছরের সঙ্গী। নবসূর্যের মতো নীরব অথচ উজ্জ্বল হোক আগামীর দিনগুলো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জ্ঞান, নৈতিকতা এবং উৎকর্ষের ধারায় তিন দশকের গৌরবময় অগ্রযাত্রা

মিজানুর রহমান ভূঁইয়া
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ০৮
এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের স্থায়ী ক্যাম্পাস। ছবি: সংগৃহীত
এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের স্থায়ী ক্যাম্পাস। ছবি: সংগৃহীত

দেশের উচ্চশিক্ষার ইতিহাসে গত তিন যুগ ছিল পরিবর্তন ও সম্প্রসারণের সময়। এই সময়ে শিক্ষা শুধু শহরকেন্দ্রিক থেকে বেড়ে ধীরে ধীরে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছেছে। এ ক্ষেত্রে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। নৈতিকতা, গুণগত মান ও সামাজিক দায়বদ্ধতার সমন্বয়ে যে কয়টি প্রতিষ্ঠান ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (এইউবি) সেগুলোর মধ্যে অন্যতম।

১৯৯৬ সালের ৪ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয় এই বিশ্ববিদ্যালয়। আগামী ৪ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠানটি তিন দশকে পদার্পণ করছে। মাত্র ২৯৫ শিক্ষার্থী নিয়েযাত্রা শুরু হয়। এইউবি আজ দেশের সুপরিচিত উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আশুলিয়ার টংগাবাড়িতে স্থায়ী ক্যাম্পাসে দেশি-বিদেশি কয়েক হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে।

শিক্ষার্থীদের দৃষ্টিকোণ

সাবেক শিক্ষার্থী ও শিক্ষক রবিউল আলম বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব কুইন্সল্যান্ডে পিএইচডি রিসার্চার। তিনি বলেন, ‘৩০ বছর মানে শুধু সময় পার হওয়া নয়, বরং সময়টা চিন্তার ধারাবাহিকতাও। এই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের শুধু ডিগ্রি অর্জনে নয়; প্রশ্ন করতে, নিজস্ব বাস্তবতা বুঝতে এবং জ্ঞানকে নতুনভাবে ভাবতে উৎসাহ দিয়েছে। এটি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৃত শক্তি।’

ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী সামসুন্নাহার পিংকি বলেন, ‘এইউবি আমাদের স্বপ্ন গড়ার জায়গা। এখানে শিক্ষকেরা শুধু বইয়ের জ্ঞান দেন না, ভালো মানুষ হতে শেখান। তাঁদের আন্তরিকতা, ধৈর্য ও সহযোগিতা আমাদের প্রতিদিন এগিয়ে যেতে সাহস জোগায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আশা করি, আগামীর দিনগুলোতেও এই প্রতিষ্ঠান শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেবে।’

এক স্বপ্নদ্রষ্টার উদ্যোগ

প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. আবুল হাসান এম সাদেক একজন অর্থনীতিবিদ ও শিক্ষাবিদ। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর কানাডায় পিএইচডি সম্পন্ন করেন। বিদেশে কর্মজীবনের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও দেশে ফিরে আসেন। এরপর তিনি ব্যক্তিগত সঞ্চয়, অভিজ্ঞতা এবং শ্রম বিনিয়োগ করার মধ্য

দিয়ে ১৯৯৬ সালে এইউবি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বলেন, ‘সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন সীমিত। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত সুযোগ সৃষ্টি করেছে। আমরা স্বল্প খরচে শিক্ষাদান করছি। আমাদের শিক্ষার্থীরা দেশ-বিদেশে বিভিন্ন খাতে দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে কাজ করছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রম আন্তর্জাতিক মানের; আইসিটি, স্মার্ট ক্লাসরুম, অনলাইন লার্নিং এবং আধুনিক কারিকুলাম চালু রয়েছে।’

শিক্ষা দর্শন ও একাডেমিক পরিবেশ

এইউবির শিক্ষা দর্শনের মূল ভিত্তি নৈতিকতা, শৃঙ্খলা ও মানবিক মূল্যবোধ। এখানে শিক্ষা শুধু সনদ অর্জনে সীমাবদ্ধ নয়; ব্যক্তিত্ব ও দায়িত্ববোধ গঠনের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। আধুনিক ও কর্মবাজারমুখী পাঠ্যক্রম, অভিজ্ঞ শিক্ষক ও গবেষকদের সমন্বয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি একটি স্থিতিশীল একাডেমিক পরিবেশ তৈরি করেছে। গবেষণা, সেমিনার ও কর্মশালার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বিশ্লেষণী ও সৃজনশীল চিন্তায় উৎসাহ দেওয়া হয়।

গ্র্যাজুয়েটদের অবস্থান

দেশ-বিদেশে ব্যাংকিং, করপোরেট খাত, শিক্ষা, গবেষণা, তথ্যপ্রযুক্তি, প্রশাসন, গণমাধ্যম ও বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে তাঁরা কর্মরত। পেশাদারি ও নৈতিক আচরণে সবাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।

মান নিশ্চয়তা ও অবকাঠামো

শিক্ষার মান নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয়টি গঠন করেছে ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসিউরেন্স সেল (আইকিউএসি)। ১০ একর জমির স্থায়ী ক্যাম্পাসে রয়েছে ১০ তলা একাডেমিক ভবন, আধুনিক শ্রেণিকক্ষ, গবেষণাগার, সেমিনার কক্ষ, দুটি খেলার মাঠ, সাতটি কম্পিউটার ল্যাব এবং লাখো বইয়ের লাইব্রেরি ও জার্নাল। শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে হোস্টেল সুবিধা ও বিনা মূল্যের পরিবহনব্যবস্থা।

সামাজিক দায়বদ্ধতা ও সুযোগ

স্বল্প ফি কাঠামোর মাধ্যমে উচ্চশিক্ষাকে সহজলভ্য করা এইউবির লক্ষ্য। মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য পূর্ণ বৃত্তি এবং মেধাবী ও আর্থিকভাবে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন স্কলারশিপ প্রোগ্রাম রয়েছে। নারী শিক্ষা, সহশিক্ষা কার্যক্রম, বিতর্ক, সাংস্কৃতিক আয়োজন, খেলাধুলা ও সামাজিক স্বেচ্ছাসেবামূলক কর্মকাণ্ড শিক্ষার্থীদের নেতৃত্ব ও সামাজিক দায়িত্ববোধ গড়ে তুলতে সহায়ক।

ভবিষ্যৎ লক্ষ্য

তিন দশকের অভিজ্ঞতায় এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এখন একটি স্বনামধন্য উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। গবেষণা, ডিজিটাল লার্নিং, উদ্ভাবন, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং উদ্যোক্তা উন্নয়নের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত