Ajker Patrika

বিসিএস মৌখিক পরীক্ষার পরামর্শ: দুঃখিত স্যার, বিষয়টি আমার জানা নেই

মো. রাকিবুর রহমান
আপডেট : ০৭ আগস্ট ২০২২, ১১: ০৮
বিসিএস মৌখিক পরীক্ষার পরামর্শ: দুঃখিত স্যার, বিষয়টি আমার জানা নেই

বিসিএস পরীক্ষায় তিনটি ধাপের মধ্যে প্রথম পছন্দের ক্যাডার পাওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো মৌখিক পরীক্ষা (ভাইভা)। লিখিত পরীক্ষায় ভালো নম্বর, ক্যাডার বা ননক্যাডার জব পেতে যথেষ্ট হলেও প্রথম পছন্দের ক্যাডার পেতে হলে পরীক্ষার্থীকে ভালো করে লিখিত ও ভাইভা পরীক্ষা দিতে হয়। ভালো করে ভাইভা পরীক্ষা দেওয়া মানে সবগুলো প্রশ্নের উত্তর দিতে পারা নয়, বরং আমাদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার ধরন ও অভিব্যক্তি কতটা উন্নত, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। অর্থাৎ, বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে পরিস্থিতিটাকে কত স্বাভাবিক রাখা যায়, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। অভিজ্ঞতার আলোকে বিসিএস মৌখিক পরীক্ষার (ভাইভা) প্রস্তুতিসংক্রান্ত পরামর্শ দিয়েছেন ৪০তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডার সুপারিশপ্রাপ্ত মো. রাকিবুর রহমান। 

প্রত্যেক মানুষের শক্তিশালী ও দুর্বল দিক আলাদা এবং প্রত্যেকের পড়াশোনার কৌশল আলাদা। প্রত্যেকে যাঁর যাঁর আলাদা সক্ষমতা ও কৌশল কাজে লাগিয়ে সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছাতে পারেন। মৌখিক পরীক্ষায় ভালো করার জন্য আমি যেসব কৌশল অবলম্বন করেছিলাম এবং যেসব বই পড়েছিলাম, তা অক্ষরে অক্ষরে অনুসরণ করা জরুরি না, তবে আপনি অনুসরণ করলে আপনার প্রথম পছন্দের ক্যাডার পাওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা সহায়ক হবে। ৪০তম বিসিএস ছিল আমার প্রথম চাকরির পরীক্ষা, তাই আমার জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার পরিধি খুবই ছোট। আমার মনে হয় ভাইভা পরীক্ষায় ভালো করার জন্য দুটি কাজ করা উচিত। প্রথমত, To know thyself is the beginning of wisdom (Socrates)। প্রথমে একজন ভাইভা প্রার্থীর উচিত নিজেকে জানা, নিজেকে নিয়ে গভীর চিন্তাভাবনা করা। নিজেকে জানার অনেকগুলো ধাপ হতে পারে। যেমন

  • একজন প্রার্থীর নিজ নাম, নামের অর্থ, এই নামে বিখ্যাত ব্যক্তি, জন্ম তারিখ, জন্ম সাল ও দিনে বিখ্যাত ঘটনা, পিতা-মাতার নামের অর্থ ও তাঁদের জন্ম সাল, নিজ স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কিত তথ্য, প্রিয় শিক্ষক, প্রিয় গায়ক, প্রিয় ব্যক্তি, প্রিয় বই, শখসহ যাবতীয় ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে মনোযোগী হওয়া উচিত। ধরুন, ভাইভা বোর্ডে একজন প্রার্থীকে জিজ্ঞেস করা হলো তাঁর শখ কী বা প্রিয় লেখক কে। এ রকম সহজ প্রশ্নেও প্রার্থী হতবিহ্বল হয়ে পড়তে পারে। তাই একজন প্রার্থীকে ভাইভা পরীক্ষায় উপস্থিত হওয়ার আগে তাঁর নিজ সম্পর্কিত প্রতিটি বিষয়ে চিন্তাভাবনা করে রাখা উচিত। নিজের সবল ও দুর্বল দিকগুলো শনাক্ত করা উচিত। সবল দিকগুলোর ওপর অধিকতর আস্থা অর্জন ও জীবনের প্রতি ক্ষেত্রে সবল দিকগুলো কাজে লাগানোর চেষ্টা করতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব, দুর্বল দিকগুলো কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করা। যেমন—যদি একজন প্রার্থী কোনো একটি বিষয়ের ওপর বাংলা কিংবা ইংরেজিতে গুছিয়ে কথা বলতে না পারে, তবে রেগুলার আয়নার সামনে বসে বা পরিচিত কারও সামনে কোনো একটি টপিক নিয়ে নিজে নিজে জোরে জোরে কথা বলার অভ্যাস করা উচিত। আমি প্রায় রেগুলার আয়নার সামনে বসে এই কাজটি করতাম, যা ভাইভা বোর্ডে দারুণ কাজে দেয়। আমার মনে হয়েছিল আমি খুব আস্থার সঙ্গে আয়নার সামনে বসে সম্মানিত স্যারদের সঙ্গে কথা বলছিলাম।
  • পররাষ্ট্র/ পুলিশ/ এডমিন/ কাস্টমস/ সাধারণ শিক্ষা কেন আপনার প্রথম পছন্দ? এই প্রশ্নের উত্তর প্রস্তুত রাখুন। অবশ্যই বাজারের বই থেকে উত্তরটি প্রস্তুত করবেন না। আপনার পছন্দ ও অপছন্দকে বুঝতে শিখুন। একান্তই নিজের পছন্দ-অপছন্দকে বিশ্লেষণ করে এই প্রশ্নের উত্তর প্রস্তুত করুন। একজন প্রার্থী যত ব্যবহারিক উত্তর করবে, বোর্ড তাঁকে তত পজেটিভলি নেবে।
  • ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলুন, মানুষের সঙ্গে বিনয়ী আচরণ করুন। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা হিসেবে আপনার কী করণীয় ও বর্জনীয়, তা বুঝতে শিখুন এবং আজ থেকেই ব্যক্তিগত জীবনে তা অনুশীলন করুন। ধরুন, একজন প্রার্থীর কাউকে সালাম দেওয়ার অভ্যাস নেই; কিন্তু তিনি ঠিক করলেন ভাইভা বোর্ডে ঢুকতে ও বের হতে প্রত্যেক সম্মানিত স্যারকে কয়েকবার করে সালাম দেবেন। আমি নিশ্চিত, সেই প্রার্থী একবার সালাম দিতেই ভুলে যাবেন। তাই আমার পরামর্শ হলো, যা কিছুই ভালো ও সুন্দর, তা আজ থেকেই ব্যক্তিগত জীবনে অনুশীলন করুন। আপনি ব্যক্তিগত জীবনে যে রকম, ভাইভা বোর্ডে নিজের অজান্তেই আপনার ব্যক্তিত্ব ও বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠবে।
  • মক ভাইভা অথবা কারও সঙ্গে কোনো বিষয়ে যুক্তিতর্ক করার সময় একজন প্রার্থীকে তর্কে জেতার জন্য অযথা, যুক্তিহীন তর্ক করা উচিত নয়। কোনো বিষয়ে আপনার জানা কম থাকলে বা ভুল জানা থাকলে সেটা স্বীকার করুন। একজন প্রার্থীর কোনো বিষয়ে কম জানা বা অজ্ঞতাকে স্বীকার করার অভ্যাস না থাকলে তিনি ভাইভা বোর্ডে তর্কে জড়িয়ে পড়তে পারেন। সব প্রশ্নের উত্তর পারতেই হবে, এ রকম কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। কোনো প্রশ্নের উত্তর জানা না থাকলে বা বিষয়টি সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা না থাকলে, আপনি বিনয়ের সঙ্গে বলতে পারেন ‘দুঃখিত স্যার, বিষয়টি আমার জানা নেই/মনে করতে পারছি না। আমার বিষয়টি সম্পর্কে জানা উচিত ছিল।’ 

সব প্রশ্নের উত্তর পারতেই হবে, এ রকম কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। কোনো প্রশ্নের উত্তর জানা না থাকলে বা বিষয়টি সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা না থাকলে, আপনি বিনয়ের সঙ্গে বলতে পারেন ‘দুঃখিত স্যার, বিষয়টি আমার জানা নেই।

ইংরেজিতে কথা বলতে অনেকের দুর্বলতা থাকে। ভাইভা বোর্ডে প্রায়ই ইংরেজিতে প্রশ্ন করে। ইংরেজিতে প্রশ্ন করলে, ইংরেজিতেই উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবেন। ধরুন, একজন প্রার্থীকে তাঁর ‘নিজ পরিচিতি’ ইংরেজিতে বলতে বললেন। প্রার্থী এরকমভাবে উত্তর করবে না, যাতে মনে হয় তিনি উত্তরটি মুখস্থ করে এসেছেন। ইংরেজিতে কথা বলার অনুশীলন করুন। কথা বলার সময় সহজ ও প্রচলিত শব্দ ব্যবহার করুন। পরিচিত কারও সঙ্গে অনুশীলন করুন অথবা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে একা একা কথা বলুন অথবা ইংরেজিতে কথা বলার বিভিন্ন Apps (Buddy talk) ব্যবহার করতে পারেন, এতে আপনার ভয় কাটবে ও কথা বলতে অসুবিধা কম হবে। 

মো. রাকিবুর রহমান, ৪০তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রতিষ্ঠার ১৫ বছর পর বুটেক্সে প্রথম সমাবর্তন

শেফাক মাহমুদ, বুটেক্স
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুটেক্স) অনুষ্ঠিত হলো সমাবর্তন। শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং অভিভাবকদের মধ্যে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ।

সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার। অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হংকং পলিটেকনিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জুংগাই ওয়াং। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ।

সমাবর্তনে মোট ৪,১২৬ জন শিক্ষার্থীকে গ্র্যাজুয়েশন ও পোস্টগ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি প্রদান করা হয়। এর মধ্যে ৬০ জন মাস্টার্স, ১৯৪ জন এমবিএ এবং বুটেক্স অধিভুক্ত কলেজসমূহ থেকে ১,২৫০ জন গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রি অর্জন করেছেন। কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের জন্য ৪১ জন শিক্ষার্থীকে গোল্ড মেডেল প্রদান করা হয়।

শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেন, "আজকের এই সমাবর্তন শুধু বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে নয়, দেশের বস্ত্রশিল্পের গবেষণা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রেও একটি যুগান্তকারী অর্জন। এই আয়োজনের মাধ্যমে আমরা এমন একটি প্রতিষ্ঠানের পরিপক্কতার সাক্ষী হচ্ছি, যা অল্প সময়ের মধ্যেই দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখতে সক্ষম দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলছে। এটি কেবল শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত সাফল্য নয়; বরং ভবিষ্যতের আরও অসংখ্য তরুণকে অনুপ্রাণিত করবে।"

ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ বলেন, "আমাদের বৈদেশিক আয়ের বড় অংশ আসে টেক্সটাইল ও অ্যাপারেল পণ্য থেকে। এই গুরুত্বপূর্ণ শিল্পের জন্য দক্ষ মানবসম্পদ সরবরাহে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় অগ্রণী ভূমিকা রেখে চলেছে। তাই মনে রাখতে হবে—দেশ ও জাতি আজ তোমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। চলার পথ সহজ নয়; সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। তবে মনে রেখো, তোমাদের প্রতিটি সিদ্ধান্ত ও কাজের প্রভাব শুধু নিজেই নয়, পরিবার, সমাজ এবং দেশের ওপরও পড়বে।"

হংকং পলিটেকনিক বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ার অধ্যাপক ড. জুংগাই ওয়াং বলেন, “প্রাচীনকাল থেকে এশীয় এই উপমহাদেশ বস্ত্রশিল্পে বিশ্বজুড়ে সুপরিচিত। ঢাকার মসলিন ছিল বিশ্বের সর্বোৎকৃষ্ট তুলা বস্ত্র—যার কোমলতা ও মান আজও অতুলনীয়। ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় আজও বাংলাদেশের টেক্সটাইল ও অ্যাপারেল খাত বিশ্ববাজারে শক্ত অবস্থান তৈরি করেছে। দেশের ৫০ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক শিল্পের মেরুদণ্ড হিসেবে গড়ে ওঠা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটদের প্রতি জানাই আন্তরিক অভিনন্দন। টেক্সটাইল ও অ্যাপারেলের প্রতি আগ্রহ ও নিষ্ঠা নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলবে এবং দেশসেবার সুযোগ তৈরি করবে। এই সমাবর্তন শুধু একটি ডিগ্রি অর্জনের অনুষ্ঠান নয়—এটি আরও বড় একটি উত্তরাধিকার বহনের আনুষ্ঠানিক সূচনা।"

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জুলহাস উদ্দিন বলেন, "মোট ৪,১২৬ জন গ্র্যাজুয়েট আজ তাদের ডিগ্রি গ্রহণ করছেন। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এই সকল গ্র্যাজুয়েট দেশ ও জাতির কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবেন। আমাদের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে দেশের টেক্সটাইল শিল্পে দক্ষতা ও সুনামের সঙ্গে অবদান রেখে আসছে। এর পাশাপাশি ২৫০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থী উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করে কর্মসংস্থান ও অর্থনীতিতে ভূমিকা রেখেছেন। আজকের এই সমাবর্তন শুধু একটি অর্জন নয়, বরং দায়িত্ব ও অঙ্গীকারের সূচনা। সততা, অধ্যবসায় এবং শিক্ষার ধারাবাহিক চর্চাকে জীবন ও কর্মের মূলমন্ত্র হিসেবে ধারণ করে নিজেদের জ্ঞান ও দক্ষতা দিয়ে সমাজ, দেশ ও মানবকল্যাণে আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানাই।"

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মধ্য জানুয়ারির আগেই শিক্ষার্থীদের হাতে শতভাগ বই পৌঁছাবে: শিক্ষা উপদেষ্টা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কার্যালয়ে আজ রোববার আয়োজিত অনুষ্ঠান। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কার্যালয়ে আজ রোববার আয়োজিত অনুষ্ঠান। ছবি: আজকের পত্রিকা

আগামী জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ের আগেই শতভাগ নতুন বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে যাবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার (সি আর আবরার)।

রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কার্যালয়ে আজ রোববার আয়োজিত ‘নতুন পাঠ্যবইয়ের সফট কপি অনলাইনে আপলোডকরণ উদ্বোধন’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান। সেখানে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যবইয়ের অনলাইন ভার্সন বা পিডিএফ কপি প্রকাশ করা হয়।

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, শিক্ষা কার্যক্রম আগামী বছরের জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকে শুরু হবে। তার আগেই অলমোস্ট হান্ড্রেড পার্সেন্ট (প্রায় শতভাগ) বই পৌঁছে যাবে।

আগামী বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীদের সবাই সব বিষয়ের নতুন পাঠ্যবই হাতে পাবে না বলে সম্প্রতি কয়েকটি পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়।

এর সমালোচনা করে সি আর আবরার বলেন, ‘এখানে পত্রপত্রিকায় বিভিন্ন সময়ে রিপোর্ট (প্রতিবেদন) হয়েছে, যথার্থ রিপোর্ট হয়েছে। আবার কিছু কিছু রিপোর্ট আমি বলব, সেগুলো খুব যে একটা সৎ উদ্দেশ্যে হয়েছিল, সেটা না।’

নতুন বই নিয়ে অভিযোগের জবাব শিক্ষা প্রশাসন কাজের মাধ্যমে দেবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

উপদেষ্টা বলেন, ‘বিভিন্ন রকমের স্বার্থগোষ্ঠী এখানে কাজ করেছে এবং আমরা এখানে সেগুলো সয়েছি। এগুলো আমরা কোশ্চেন করিনি, কনটেস্ট করিনি। আমরা মনে করেছি, শেষ বিচারে আমরা কতটুকু নির্ভুল ও মানসম্পন্ন বই দিতে পারব, দ্যাট উইল বি আলটিমেট টেস্ট।’

বই ছাপানোর সময় বেশি লাগার কারণও অনুষ্ঠানে ব্যাখ্যা করেন সি আর আবরার।

বিভিন্ন প্রেসে অভিযান চালিয়ে ‘মানহীন’ বই ধ্বংস করা হয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের প্রক্রিয়ার মধ্যে যেন কোনো ভুল না থাকে, এ জন্য রিটেন্ডার করতে হয়েছে। বিভিন্ন রকমের চিন্তাভাবনা ছিল, সেগুলো আমাদের নিরসন করতে হয়েছে।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানাসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও এনসিটিবির কর্মকর্তারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সমুদ্রের বাতাসে স্বাস্থ্যের বার্তা

ক্যাম্পাস ডেস্ক 
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৪৫
সমুদ্রের বাতাসে স্বাস্থ্যের বার্তা

কক্সবাজারের সোনারপাড়া মেরিন ড্রাইভ সড়কে সম্প্রতি এক বর্ণাঢ্য ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল এবং বিদেশ থেকে মোট ৫০০ জন দৌড়বিদ এই আয়োজনে অংশ নেন।

ভোর ৬টায় উখিয়ার সোনারপাড়া বিচ পয়েন্ট থেকে শুরু হয়ে দৌড়টি শেষ হয় সকাল ৭টায় তারকা মানের হোটেল অর্কিড ব্লুতে। পুরুষ ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হন মোহাম্মদ সায়েদ (০১৫৯), প্রথম রানারআপ তারেক (০৪৫৬) এবং দ্বিতীয় রানারআপ আশিক (০১৬০)। নারীদের বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হন বিদেশি প্রতিযোগী জোহানা (০২৩৯), প্রথম রানারআপ আভা (০০৬৫) এবং দ্বিতীয় রানারআপ কুজো (০০৮৭)।

ম্যারাথন আয়োজন করে শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হাসিঘর ফাউন্ডেশন। অনুষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন উপদেষ্টা এ এইচ সেলিম উল্লাহ, প্রতিষ্ঠাতা ও কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইয়াসিন সিকদার, উখিয়া শাখার সভাপতি পিএম মোবারক, ইনস্টিটিউশনাল অ্যাফেয়ার্স উইংয়ের সিডিসিও শাইফুল ইসলাম শিহাব, উবায়েদ উল্লাহ শুভ, শাকিবুল ইসলাম, সাইয়েদ মোবারক, মেহেদী হাসান, শাহরিয়ার তানভীর রিফাত, আর জে রাফি, আবুল কাশেমসহ সংগঠনের অন্য সদস্যরা।

সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ ইয়াসিন সিকদার বলেন, ‘বিপুল সাড়া পাওয়ায় আমরা খুবই আনন্দিত। এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য তরুণদের মাদক থেকে দূরে রাখা এবং স্বাস্থ্যসচেতন হওয়ার প্রতি উদ্বুদ্ধ করা।’

ম্যারাথনের সমাপ্তির পর অংশগ্রহণকারীরা আরও এরূপ আয়োজনের আহ্বান জানিয়েছেন। আয়োজকেরা জানান, আগামী বছরও তাঁরা একটি নতুন ম্যারাথন আয়োজনের চেষ্টা করবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এআইইউবিতে সাইবার গেমিং ফেস্ট

ক্যাম্পাস ডেস্ক 
এআইইউবিতে সাইবার গেমিং ফেস্ট

আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (এআইইউবি) কম্পিউটার ক্লাবের (এসিসি) আয়োজনে এবং অফিস অব স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্সের সহযোগিতায় এআইইউবি সাইবার গেমিং ফেস্ট ২০২৫ সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। চার দিনব্যাপী এই আয়োজনে দেশের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু শিক্ষার্থী অংশ নেন।

উদ্বোধনী ও বিভিন্ন পর্বের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এআইইউবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রহমান, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মঞ্জুর এইচ খান, অফিস অব স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্সের বিশেষ সহকারী ও সহযোগী অধ্যাপক অভিজিৎ ভৌমিক, সহকারী অধ্যাপক এবং বিশেষ সহকারী মো. মাজেদ-উল-হক এবং প্রভাষক ও বিশেষ সহকারী এস এম আবদুল্লাহ শাফি।

অনলাইন ও অন-ক্যাম্পাস প্রতিযোগিতার সমন্বয়ে আয়োজিত এই উৎসবে এআইইউবি ক্যাম্পাস পরিণত হয় এক প্রাণবন্ত ও প্রতিযোগিতামূলক গেমিং অঙ্গনে। পাবজি মোবাইল প্রতিযোগিতার অনলাইন কোয়ালিফায়ার পর্বে ৫১টি দল অংশ নেয়। সেখান থেকে ৩২টি দল সেমিফাইনালে এবং পরবর্তী সময়ে ১৬টি দল ক্যাম্পাস ফাইনালে উত্তীর্ণ হয়। চূড়ান্ত দিনে অনুষ্ঠিত চারটি উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচ শেষে ব্ল্যাকবিয়ার্ড পাইরেটস চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে।

ভ্যালোরান্ট বিভাগে অনলাইন লোয়ার-ব্র্যাকেট পর্ব ও ক্যাম্পাসে ল্যান ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। লোয়ার-ব্র্যাকেট থেকে উঠে এসে অলস্টারস দল গ্র্যান্ড ফাইনালে ন্যাক্সআর ই-স্পোর্টসের মুখোমুখি হয়। তিন ম্যাচের রুদ্ধশ্বাস ফাইনালে শেষ পর্যন্ত অলস্টারস চ্যাম্পিয়নশিপ নিশ্চিত করে।

এ ছাড়া উৎসবে মোবাইল লেজেন্ডস: ব্যাঙ ব্যাঙ (এমএলবিবি), এফসি ২৫ এবং ই-ফুটবল প্রতিযোগিতাও অনুষ্ঠিত হয়। এমএলবিবি বিভাগে ভাইপার স্ট্রাইকার্স, এফসি ২৫ বিভাগে নিও, ই-ফুটবল একক বিভাগে শাওন শান্ত এবং দলীয় বিভাগে পিএনজি বট চ্যাম্পিয়ন হয়।

সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এআইইউবির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মিস নাদিয়া আনোয়ার, উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম এবং উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রহমান। বক্তারা আয়োজনের ব্যাপ্তি, পেশাদার ব্যবস্থাপনা এবং প্রতিযোগিতামূলক গেমিংয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের দক্ষতা ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধির গুরুত্ব তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠান শেষে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কারের অর্থ ও ক্রেস্ট বিতরণ করা হয়। পাশাপাশি তিনজন সেরা ক্যাম্পাস অ্যাম্বাসেডর এবং এআইইউবি ফটোগ্রাফি ক্লাব, এআইইউবি ই-স্পোর্টস ক্লাব ও এআইইউবি পারফর্মিং আর্টস ক্লাবকে বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত