Ajker Patrika

বছরের প্রথম দিন শিশুরা পাচ্ছে না বেশির ভাগ পাঠ্যবই

  • ৪০ কোটির বেশি বইয়ের মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে সাড়ে ৬ কোটি।
  • সব উপজেলায় বই পৌঁছায়নি। সব দরপত্র-প্রক্রিয়া শেষ হয়নি।
  • হচ্ছে না বই উৎসব। প্রথম দিনে অনলাইনে সব বই দেওয়া হবে।
  • নতুন শিক্ষাক্রম বাতিল, বই পরিমার্জনের জন্য দরপত্রে দেরি।
রাহুল শর্মা, ঢাকা 
আপডেট : ০১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫: ৫২
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

শিক্ষাবর্ষের প্রথম দিনে এবার আর ‘বই উৎসব’ করে শিক্ষার্থীদের নতুন পাঠ্যবই দেওয়া হচ্ছে না। সব শিক্ষার্থী বই পাচ্ছেও না। যারা পাবে, তারাও আজ বছরের প্রথম দিনে সর্বোচ্চ তিনটি বই পেতে পারে। কারণ, ৪০ কোটির বেশি বই দরকার হলেও গতকাল মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত প্রস্তুত হয়েছে মাত্র সাড়ে ৬ কোটি বই। সব উপজেলায় বই পাঠানোও হয়নি।

অবশ্য সরকারের বিনা মূল্যের পাঠ্যবই ছাপানো ও বিতরণের দায়িত্বে থাকা জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) বলছে, অর্থের অপচয় রোধে এবার বই উৎসব হচ্ছে না। প্রথম দিনে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে অন্তত তিনটি বই এবং জানুয়ারির মধ্যে সব বই তুলে দেওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী তাঁরা। বইয়ের চাহিদা পূরণে প্রথম দিনই সব পাঠ্যবইয়ের সফট কপি অনলাইনে প্রকাশ করা হবে।

এনসিটিবি সূত্র বলছে, জুলাই-আগস্টের আন্দোলন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান এবং ক্ষমতার পটপরিবর্তনের কারণে পাঠ্যবই ছাপানোর দরপত্র, পুনঃদরপত্র প্রক্রিয়ায় এবার অনেক দেরি হয়েছে। নতুন শিক্ষাক্রম বাতিল, বইয়ে সংশোধন, সংযোজন ও পরিমার্জন হয়েছে। এতে দরপত্রপ্রক্রিয়া শেষ হয়েছে অক্টোবরে। কয়েকটি বইয়ের দরপত্রপ্রক্রিয়া এখনো চলছে। অন্যান্য বছর দরপত্রপ্রক্রিয়া জুনে শেষ হয়েছিল। এ ছাড়া এবার মানসম্মত কাগজ ও কালির ব্যাপক সংকট ছিল। সব মিলিয়ে সময়মতো বই ছাপানো শুরু করা যায়নি।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে গতকাল এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শিক্ষাবর্ষের প্রথম দিনে সব শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছে দিতে আমরা কাজ করছি। আশা করছি, সব শ্রেণির শিক্ষার্থী প্রথম দিনই অন্তত তিনটি বই পাবে। জানুয়ারি মাসেই সব বই হাতে পাবে শিক্ষার্থীরা। তবে প্রথম দিন সব বইয়ের সফট কপি অনলাইনে উন্মুক্ত করা হবে।’ তিনি বলেন, অর্থের অপচয় রোধ করতেই এবার বই উৎসব হচ্ছে না।

২০১০ সাল থেকে সরকার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যের পাঠ্যবই দিচ্ছে। এক দশকের বেশি সময় ধরে ১ জানুয়ারি ‘বই উৎসব’ করে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া হয়েছে।

এ বছরের জন্য প্রাক্-প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তর মিলিয়ে মোট ৪০ কোটি ১৫ লাখ ৬৭ হাজার ২০২টি পাঠ্যবই ছাপানো হচ্ছে। এগুলোর মধ্যে মাধ্যমিক স্তরের জন্য ৩০ কোটি ৯৫ লাখ ৪১ হাজার ৪৮৬টি এবং প্রাথমিক স্তরের জন্য ৯ কোটি ১৯ লাখ ৫৪ হাজার ৩৫৫টি বই রয়েছে। এসব বই ছাপানো ও বিতরণে খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা।

এনসিটিবি সূত্র বলছে, প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বই ছাপানোর কাজ মোটামুটি শেষ। দশম শ্রেণির এক কোটি বই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে ছাপানো হচ্ছে। তাই এই শ্রেণির বই ১০ জানুয়ারির মধ্যে শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছানো সম্ভব হবে। বাকি বইগুলো ছাপানোর কাজ শেষ করে মাঠপর্যায়ে পৌঁছাতে আগামী মার্চ পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

সূত্র জানায়, গতকাল দুপুর পর্যন্ত ছাপানোর কাজ শেষ হয়েছে মাত্র সাড়ে ৬ কোটি পাঠ্যবই। এর মধ্যে সাড়ে ৫ কোটি বইয়ের পোস্ট ডেলিভারি ইন্সপেকশন (পিডিআই) শেষ হয়েছে। অর্থাৎ এসব বই উপজেলা পর্যায়ে বিতরণের জন্য ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।

এনসিটিবির উৎপাদন দপ্তরের সূত্র জানায়, গতকাল পর্যন্ত প্রাক্-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যবইয়ের ছাড়পত্র হয়েছে ৩ কোটি ৯৮ লাখ ৯ হাজারটির। তবে প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণির ২৭টি লটের বইয়ের পুনঃদরপত্র হয়েছে। এতে এসব লটের জন্য নির্ধারিত ১০৫টি উপজেলায় আজ বছরের প্রথম দিন বই না যাওয়ার আশঙ্কাই বেশি। চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির বই ছাপানোর কাজ চলছে। গতকাল পর্যন্ত এই দুই শ্রেণির সাড়ে ১৩ শতাংশ বই ছাপানোসহ সব কাজ শেষ হয়েছে। পিডিআই বাকি। এদিকে মাধ্যমিক (মাদ্রাসার ইবতেদায়িসহ) স্তরের মাত্র ১ কোটি ৫০ লাখের মতো বইয়ের পিডিআই হয়েছে। বেশ কয়েকটি লটের দরপত্রপ্রক্রিয়া এখনো চলছে।

গতকাল দেশের অন্তত ১৫টি উপজেলায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কোনো কোনো উপজেলায় মাধ্যমিক স্তরের একটি, কোনোটিতে দুটি বই পৌঁছেছে। কোনো কোনো উপজেলায় গতকাল পর্যন্ত একটি বইও পৌঁছায়নি। যেসব উপজেলায় বই গেছে, সেগুলো শিক্ষার্থীদের তুলনায় অপ্রতুল। ফলে সব শিক্ষার্থী বই পাবে না।

জানতে চাইলে এনসিটিবির উৎপাদন নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) আবু নাসের টুকু বলেন, ‘দ্রুততম সময়ের মধ্যে বই ছাপানোর কাজ শেষ করতে আমরা দিন-রাত কাজ করছি।’

সূত্র জানায়, আগের বছরগুলোতে বই ছাপানোর দরপত্রের সব প্রক্রিয়া জুনের মধ্যেই শেষ হয়েছে। জুলাই থেকে বই ছাপানোর কাজ শুরু হতো। কিন্তু এবার প্রথম দফায় জুনে বেশির ভাগ লটের দরপত্র সম্পন্ন হয়েছিল। কার্যাদেশ দেওয়া হয়নি। কিন্তু মধ্য জুলাই থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হলে এ প্রক্রিয়া পিছিয়ে যায়। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পরিস্থিতি বদলে যায়। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর আগের সব দরপত্রপ্রক্রিয়া এবং নতুন শিক্ষাক্রম বাতিল করা হয়। পাঠ্যবইয়ে সংশোধন, সংযোজন, পরিমার্জন হয়। এসব কারণে পুনরায় দরপত্র আহ্বান প্রক্রিয়ায় দেরি হয়। সেপ্টেম্বরের শেষ দিক থেকে দরপত্র আহ্বান শুরু হয়। দরপত্রপ্রক্রিয়া শেষে অক্টোবর থেকে বিভিন্ন লটের কার্যাদেশ নির্বাচিত মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেওয়া হয়।

কিন্তু এত বিপুলসংখ্যক বই ছাপানোর কাজ করতে গিয়ে দেখা দেয় মানসম্মত কাগজের সংকট। একই অবস্থা কালির। ফলে কার্যাদেশ পেলেও কাগজ-কালির সংকটে বই ছাপানোতে হিমশিম খেতে হয় মুদ্রণকারীদের।

কার্যাদেশ পাওয়া একটি মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বেশ কয়েকটি কারণে বই ছাপানোয় দেরি হচ্ছে। শিক্ষাক্রম পরিবর্তন করে বইগুলো পরিমার্জন, পুনরায় দরপত্র, কার্যাদেশ দেরিতে দেওয়াসহ আনুষঙ্গিক কাজে দেরি করেছে এনসিটিবি। এরপর আছে কাগজ ও কালির সংকট। ফলে সব শিক্ষার্থীর হাতে সব বই তুলে দিতে মার্চ পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

এনসিটিবি সূত্র জানায়, এবার বছরের প্রথম দিন মাধ্যমিকের সব বই শিক্ষার্থীদের হাতে ‍তুলে দেওয়া সম্ভব হবে না—এমন চিন্তা থেকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাংলা, গণিত ও ইংরেজি বইয়ের ছাপানোসহ সব কাজ শেষ করার তাগিদ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এই তিন বইও সব শিক্ষার্থীর জন্য প্রস্তুত করা সম্ভব হয়নি।

এদিকে এনসিটিবির সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, ৪৫ লটের বই ছাপানোর পুনঃদরপত্র করা হয়েছে। চলতি সপ্তাহের মধ্যে এই দরপত্রগুলো সম্পন্ন হবে। এ ছাড়া মুদ্রণের কাজ পাওয়া কিছু মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠান এখনো বই ছাপানোর জন্য এনসিটিবির সঙ্গে এখনো চুক্তি করেনি। অনেক দরপত্রের বই সরবরাহের জন্য ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে।

এনসিটিবির চেয়ারম্যান বলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বই ছাপানোর কাজ শুরু করতে কিছুটা দেরি হয়েছে। এ ক্ষতি পোষাতে দিনরাত কাজ চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দেশে অণুজীববিজ্ঞান শিক্ষায় ভূমিকা রয়েছে বিএসএমের

শিক্ষা ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দেশে অণুজীববিজ্ঞান শিক্ষা ও গবেষণা প্রসারে ‘বাংলাদেশ সোসাইটি অব মাইক্রোবায়োলজিস্টসের (বিএসএম)’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি ড. মুনিরুল আলম।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞান বিভাগ ও বিএসএমের যৌথ উদ্যোগে গত ২১–২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ৩৯তম বার্ষিক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। একই সঙ্গে তিনি বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অণুজীববিজ্ঞান গবেষণায় উদ্ভাবনের গুরুত্ব তুলে ধরেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

দুই দিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানী, গবেষক, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, ভেটেরিনারি বিশেষজ্ঞ, শিল্পখাতের প্রতিনিধি এবং শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। সম্মেলনের মূল লক্ষ্য ছিল অণুজীববিজ্ঞান ও সংশ্লিষ্ট শাখাগুলোতে সাম্প্রতিক গবেষণা ও অগ্রগতি নিয়ে মতবিনিময় করা, বৈজ্ঞানিক সহযোগিতা জোরদার করা এবং সমসাময়িক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কার্যকর দিকনির্দেশনা প্রদান করা। সম্মেলনে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৪০০-এর অধিক প্রতিনিধি অংশ নেন।

এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য বিষয় “Microbiomes for a Sustainable Future” সময়োপযোগী ছিল এবং মানব উন্নয়ন ও কল্যাণে অণুজীববিজ্ঞানের গুরুত্ব তুলে ধরতে সহায়ক হয়। সর্বমোট ২৮৮টি সারসংক্ষেপ (Abstract) গৃহীত হওয়ার পর সম্মেলনের ১২টি টেকনিক্যাল সেশনে ২টি প্লেনারি বক্তৃতা, ৮টি কীনোট বক্তৃতা, ৬টি আমন্ত্রিত বক্তৃতা, ৪টি ইয়াং সায়েন্টিস্ট টক, ৫৮টি মৌখিক উপস্থাপনা এবং প্রায় ২২৬টি পোস্টার উপস্থাপন করা হয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. এস. এম. এ. ফয়েজ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (একাডেমিক) প্রফেসর ডা. মামুন আহমেদ। স্বাগতিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. শাকিলা নার্গিস খান।

অনুষ্ঠানের শেষপর্বে সম্মেলন আয়োজন কমিটির চেয়ারম্যান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড রিসার্চ ইন সায়েন্সেসের (সিএআরএস) চিফ সায়েন্টিস্ট ডা. লতিফুল বারী ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‎জকসু নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিলেন জামাল ভূঁইয়া

জবি প্রতিনিধি 
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন দরজায় কড়া নাড়ছে। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এসেছেন বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়া। ‎

আজ ‎বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আসেন তিনি। এ সময় শহীদ সাজিদ ভবন, প্রক্টর অফিস ঘুরে প্রোগোজ স্কুলের মাঠে সাংবাদিক ও ফ্যানদের সঙ্গে কথা বলেন এই ফুটবলার। ‎

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎এ সময় জামাল ভূঁইয়া বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো এলাম। আমার অনেক ভালো লাগছে। এটি অনেক পুরোনো বিশ্ববিদ্যালয়। আগামী ৩০ ডিসেম্বর জকসু নির্বাচন। আপনাদের সবার প্রতি শুভকামনা। আমি আবার আসব ইনশা আল্লাহ।’ ‎

‎এ সময় জাতীয় ছাত্র শক্তি সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ জবিয়ান’ প্যানেলের জিএস পদপ্রার্থী মো. ফয়সাল মুরাদ বলেন, ‘আমরা স্পোর্টস কার্নিভালের সময় জামাল ভাইকে আমাদের ক্যাম্পাসে আসার আহ্বান জানিয়েছিলাম। কিন্তু তখন শিডিউল না পাওয়ায় সম্ভব হয়নি। এই প্রজন্মের কাছে বাংলাদেশ ফুটবলের প্রথম সুপারস্টার জামাল ভূঁইয়া। তাঁর মাধ্যমে বাংলাদেশ ফুটবলের এই নতুন ধারা উন্মোচিত হয়েছে।’ ‎

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎এ সময় এই সংবাদ সম্মেলনে প্যানেলটির ভিপি পদপ্রার্থী কিশোয়ার আনজুম সাম্য, ক্রীড়া সম্পাদক পদপ্রার্থী ফেরদৌস হাসান সোহান, কার্যনির্বাহী সদস্য পদপ্রার্থী সিনহা ইসলাম অর্না এবং ছাত্রদল সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেলের ক্রীড়া সম্পাদক কামরুল হাছান নাফিজসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জকসু নির্বাচনে ব্যতিক্রমী প্রচারণায় প্রার্থীরা

সোহানুর রহমান, জবি
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৩৪
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন ঘিরে ক্যাম্পাসজুড়ে বিরাজ করছে উৎসবমুখর ও প্রাণবন্ত পরিবেশ। কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর প্রথমবার অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই নির্বাচনের প্রচারণায় যুক্ত হয়েছে ভিন্নমাত্রিক ও সৃজনশীল পদ্ধতি, যা শিক্ষার্থীদের মাঝে বাড়তি আগ্রহ ও উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে।

জকসু নির্বাচনের প্রার্থীরা প্রচারণায় পোস্টার ও লিফলেটের মতো প্রচলিত প্রচারসামগ্রীর বাইরে গিয়ে লাল কার্ড, রঙিন প্ল্যাকার্ড ও হাতে বহনযোগ্য নানা প্রচারসামগ্রী ব্যবহার করছেন। দেয়ালে পোস্টার সাঁটানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় আচরণবিধি মেনেই ভিন্ন কৌশলে ভোটারদের কাছে নিজেদের বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন তাঁরা।

নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী ১৫ থেকে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রচারণার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যেই প্রার্থীরা শিক্ষার্থীদের মন জয় করতে ব্যবহার করছেন এরোপ্লেন আকৃতির কাগজ, প্রতীকী নোট, কাপ, বোতল, প্রজাপতি, জকসু পাসপোর্টসহ নানা অভিনব উপকরণ। আকর্ষণীয় স্লোগান ও রঙিন ডিজাইনের মাধ্যমে তুলে ধরা হচ্ছে নির্বাচনী অঙ্গীকার ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা।

প্রচারণায় প্রযুক্তির ব্যবহারও চোখে পড়ার মতো। কিউআর কোড সংযুক্ত প্রচারণা সামগ্রীর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা মোবাইল ফোন স্ক্যান করে মুহূর্তেই প্রার্থীদের বিস্তারিত ইশতেহার ও পরিকল্পনা জানতে পারছেন।

ছাত্রদল-সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেলের জিএস পদপ্রার্থী খাদিজাতুল কুবরা বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের মাঝে একটি স্বতঃস্ফূর্ত ও প্রাণবন্ত পরিবেশ বিরাজ করছে। শুরু থেকেই আমরা জোরালো প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানো এবং তাঁদের দৃষ্টি আকর্ষণের লক্ষ্যেই আমি ভিন্নধর্মী প্রচার কার্ড ব্যবহার করছি।’

ছাত্রশিবির-সমর্থিত ‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য’ প্যানেলের শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক পদপ্রার্থী ইব্রাহিম খলিল বলেন, ‘লিফলেট দিয়ে প্রচার করার ফলে ভোটাররা অতিষ্ঠ হয়ে গেছেন, তাই এবার আমাদের অন্য রকম প্রচারণা। আমাদের বার্তাটি আকর্ষণীয়ভাবে ভোটারদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কার্যক্রম চালাচ্ছি।’

স্বতন্ত্র নির্বাহী সদস্য পদপ্রার্থী আল শাহরিয়ার খান বলেন, ‘নারী শিক্ষার্থীদের আগ্রহ সৃষ্টি করা এবং প্রচারসামগ্রী যেন সংরক্ষণযোগ্য হয়, এই চিন্তা থেকেই আমি বিড়ালের আদলে কার্ড তৈরি করেছি।’

ছাত্রশক্তি-সমর্থিত ‘নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেলের জিএস পদপ্রার্থী ফয়সাল মুরাদ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের কাছে ইশতেহার পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি তাঁদের সমস্যা ও প্রত্যাশা বোঝার চেষ্টা করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‎জবির ‘এ’ ও ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ২৬ ও ২৭ ডিসেম্বর

জবি প্রতিনিধি 
‎জবির ‘এ’ ও ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ২৬ ও ২৭ ডিসেম্বর

‎জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতক (সম্মান) ও বিবিএ প্রথম বর্ষের ‘এ’ ইউনিট (বিজ্ঞান ও লাইফ অ্যান্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদ) ও ‘সি’ ইউনিটের (বাণিজ্য অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষা আগামী ২৬ ডিসেম্বর (শুক্রবার) ও ২৭ ডিসেম্বর (শনিবার) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। উভয় দিন পরীক্ষার সময় বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১ ঘন্টা।

‎‘এ’ ইউনিটের (বিজ্ঞান ও লাইফ অ্যান্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষায় ৮৬০টি আসনের বিপরীতে ৭২ হাজর ৪৭৪ জন আবেদন করেছে। প্রতি আসনের জন্য ৮৫ জন পরীক্ষার্থী লড়বেন। আর ‘সি’ ইউনিটে (বাণিজ্য অনুষদ) ৫২০টি আসনের বিপরীতে ২০ হাজর ৫৩৭ জন আবেদন করেছে। বিজ্ঞান অনুষদে ৮৬০ আসনের বিপরীতে ৭২ হাজর ৪৭৪ জন আবেদন করেছে। প্রতি আসনের জন্য ৪০ জন শিক্ষার্থী লড়বেন।

‎‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা মোট ১২টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ঢাকার বাহিরে তিনটি কেন্দ্র, কুমিল্লা বিশ্বিবদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা হবে। ঢাকার মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ মোট ৯টি কেন্দ্রের মধ্যে পরীক্ষা হবে। ঢাকার ভেতরের কেন্দ্র সমূহ হলো— জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মোহাম্মদপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল, কে এল জুবিলি হাই স্কুল এন্ড কলেজ, বিইএএম মডেল হাই স্কুল এন্ড কলেজ।

‎‘সি’ ইউনিটে (বাণিজ্য অনুষদ) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও ঢাকার মধ্যে বাংলাবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, গভর্মেন্ট মুসলিম হাই স্কুল কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ৷

‎মোট ১০০ মার্কের পরীক্ষায় ৭২ মার্ক এমসিকিউ ও বাকী ১৮ মার্ক থাকবে এসএসসি (সমমান) ও এইচএসসি (সমমান) ফলাফলের ওপর। ‘এ’ ইউনিটে পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন গণিত অথবা জীব বিজ্ঞান বিষয়ে প্রশ্ন করা হবে। ‘সি’ ইউনিটে ইংরেজি, গাণিতিক বুদ্ধিমত্তা ও হিসাব বিজ্ঞান, ব্যবসায় নীতি ও প্রয়োগ বিষয়ে প্রশ্ন আসবে।

‎পরীক্ষার সার্বিক প্রস্তুতি বিষয়ে বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. পরিমল বালা বলেন, ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের সব প্রস্তুতি আমাদের সম্পন্ন হয়েছে। এবার পরীক্ষার্থীদের সুবিধার কথা বিবেচনায় নিয়ে এবার ঢাকার বাহিরে খুলনা, রাজশাহী ও কুমিল্লা পরীক্ষা কেন্দ্র রাখা হয়েছে।

‎বাণিজ্য অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মঞ্জুর মুর্শেদ ভূঁইয়া বলেন, আমাদের ৫২০ আসনের বিপরীতে ২০ হাজার ৫৩৭ জন আবেদন করেছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও ঢাকার মধ্যে আরও ৩টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকার বাহিরে কোন কেন্দ্রে পরীক্ষা হবে না।

‎এর আগে ১৩ ডিসেম্বর ‘ই’ ইউনিটের (চারুকলা অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। উল্লখ্য, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ডি ইউনিটের পরীক্ষা আগামী ৯ জানুয়ারি বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। কলা ও আইন অনুষদভুক্ত বি ইউনিটের পরীক্ষা আগামী ৩০ জানুয়ারি বেলা ৩টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত