Ajker Patrika

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জনের ১০০ বছর 

ফারুক ছিদ্দিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
আপডেট : ০১ জুলাই ২০২১, ১৫: ১৮
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জনের ১০০ বছর 

স্বাধীনতার আগে–পরে সব ইতিবাচক গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সূতিকাগার হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ইতিহাসের সঙ্গে অনেক সংগ্রাম জড়িত। বঙ্গভঙ্গ রদের ফলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম জোরালো হতে থাকে। ১৯২১ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হলেও আমাদের পেছনের দিকে তাকাতে হয় এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস জানার জন্য। বাঙালি নাগরিক সমাজের সঙ্গে ব্রিটিশ সরকারের দীর্ঘ বোঝাপড়ার ফসল এই বিশ্ববিদ্যালয়। বঙ্গভঙ্গ রদের অল্প কিছুদিন পরেই ব্রিটিশ ভারতের তৎকালীন ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন। সময়টি ছিল ১৯১২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি। ১৯১২ সালের ২৭ মে নাথান কমিশন গঠিত হয়। ১৯১৩ সালের ডিসেম্বর মাসে কমিশন ইতিবাচক রিপোর্ট দিলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পথ আরও এক ধাপ এগিয়ে যায়। এর পরে বিশ্বযুদ্ধের দামামা বেজে উঠলে কার্যক্রম স্তিমিত হয়ে যায়। এর পরেও বাঙালি নাগরিক সমাজ বসে থাকেনি। তারা ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালাতে থাকে। ১৯১৭ সালে স্যাডলার কমিশন ইতিবাচক রিপোর্ট দিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার চূড়ান্ত ধাপ তৈরি হয়ে যায়। অবশেষে ১৯২০ সালের ১৩ মার্চ ভারতীয় আইনসভায় ‘দ্য ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যাক্ট ১৯২০’ পাস হয়। ২৩ মার্চ গভর্নর জেনারেল এই বিলে সম্মতি প্রদান করেন। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সব সন্দেহের অবসান ঘটে। এই আইনকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আইনটি বাস্তবায়নের ফলাফল হিসেবে ১৯২১ সালের ১ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’। 

সৈয়দ আবুল মকসুদ তাঁর লিখিত 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা' বইয়ে উল্লেখ করেন, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক পশ্চাৎপদতার কারণে আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে এত উৎসাহ-আয়োজন দেখালেও লর্ড হার্ডিঞ্জের প্রস্তাবের পর পূর্ববঙ্গের মুসলমান নেতারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য অক্লান্ত আন্দোলন-সংগ্রাম করে গেছেন। নওয়াব সলিমুল্লাহর মৃত্যুর (১৯১৪) পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্প বাস্তবায়নকে নিজের প্রধান রাজনৈতিক এজেন্ডা বানিয়ে এই লক্ষ্যে মাঠে-ময়দানে লেজিসলেটিভ কাউন্সিলে দাবি-দাওয়া পেশ ও চাপ প্রয়োগ করে অসাধারণ দৃঢ়তার পরিচয় দেন নওয়াব আলী চৌধুরী। এ ছাড়া আরও যেসব নেতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ও বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন তাঁদের মধ্যে ছিলেন নবাব সিরাজুল ইসলাম, স্যার সৈয়দ শামসুল হুদা, আবদুল করিম, এ কে ফজলুল হক, আহছানউল্লাহ প্রমুখ (পৃ.৫৫-৬৯)। 

সৈয়দ শামসুল হুদার ভূমিকা উঠে এসেছে বইটিতে। এই নেতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট কমানোর প্রতিবাদ করেন। ঢাকায় প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয় যেন ‘উন্নত মানের আদর্শ বিশ্ববিদ্যালয়’ হয়, এই বিশ্ববিদ্যালয় যাতে পূর্ববঙ্গে বুদ্ধিবৃত্তিক উদ্দীপনা সৃষ্টি করতে পারে, সে ব্যাপারে তিনি সরব ছিলেন। আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ভালো বরাদ্দ দেওয়া, ভালো শিক্ষক নিয়োগ, আধুনিক লাইব্রেরিসহ অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করার দাবিতেও তিনি সোচ্চার ছিলেন। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্প ঘোষণার পর থেকে বিশ্বযুদ্ধ, সরকারের আর্থিক অসংগতিসহ অসংখ্য কারণে এই প্রকল্প পিছিয়ে যায়। এই সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্পকে সরকারের অগ্রাধিকারে রাখার জন্য রাজনীতির মঞ্চে, লেজিসলেটিভ কাউন্সিলে আপ্রাণ চেষ্টা করে গেছেন নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী। শুধু হিন্দু বুদ্ধিজীবী শ্রেণি নয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশ্নে তাঁকে আলীগড়পন্থীদেরও মোকাবিলা করতে হয়েছিল। তাঁদের আশ্বস্ত করতে হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হলে তা প্রস্তাবিত আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিদ্বন্দ্বী হবে না। ২৭ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নাথান কমিটির ২৫টি সাব-কমিটির ৬টিতেই তিনি সদস্য ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘আঞ্চলিক আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ চালু করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ১৬ হাজার টাকার তহবিল দান করা ইত্যাদি ছিল তাঁর অনন্য অবদান। হিন্দুধর্ম ও হিন্দু পুরাণ প্রাধান্যের পাঠ্যপুস্তকের বদলে যেন মুসলমানদের পছন্দসই পাঠ্যপুস্তক চালু করা হয়, এই ছিল তাঁর সব সময়ের দাবি। মাতৃভাষার প্রশ্নে সমসাময়িক মুসলিম নেতাদের মতো আচ্ছন্নতায় না ভুগে তিনি ঘোষণা করেছিলেন : ‘আমাদের মাতৃভাষা উর্দু নয়, বাংলা।’ দীর্ঘদিন পর সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁর নামে একটি অডিটোরিয়াম তৈরি করেছে (পৃ.৬৪-৬৬)। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশ্নে নিবেদিত আরেকজন মুসলিম নেতা ছিলেন শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক। মুসলমানদের শিক্ষার প্রসঙ্গ ছিল তাঁর রাজনীতির একটা গুরুত্বপূর্ণ অ্যাজেন্ডা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে শুধু মুসলমানরা উপকৃত হবে—এই তত্ত্বের তিনি ছিলেন ঘোর বিরোধী। বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভায় তিনি এর বিরোধিতা করেন, পূর্ববঙ্গের মানুষের প্রতি যে বৈষম্য হচ্ছে তার ব্যাপারে তিনি সোচ্চার ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরও তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রগতি, ছাত্রদের সমস্যার খোঁজখবর করতে নিয়মিত আসতেন। আরেকজন মুসলমান নেতা, যিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন, তিনি হলেন খান বাহাদুর আহছানউল্লাহ। শিক্ষা বিভাগের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা হওয়ায় তিনি সরকারের শিক্ষাসংক্রান্ত বিভিন্ন কমিটিতে থাকতেন এবং মুসলমানদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য কাজ করে গেছেন (পৃ.৬৯-৭২)। 

দেশের এই প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা অনেক বেশি। দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি, পরিবেশ-পরিস্থিতি, স্বল্প বাজেট, রাজনৈতিক ক্ষমতাবলে পদায়ন, ক্ষমতাসীনদের একক আধিপত্য ও ভিন্নমত দমনে গড়ে ওঠা সংস্কৃতির কারণে গণমানুষের চাওয়াকে পাওয়ায় পরিণত করতে অনেক ক্ষেত্রে ব্যর্থ হচ্ছে। এত কিছুর পরেও বলা যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জাতিকে তার জাতির পিতা উপহার দিয়েছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মন্ত্রিপরিষদ, আইনসভা এবং রাষ্ট্রীয় ও প্রশাসনিক গুরুত্বপূর্ণ অংশে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পদচারণা দৃশ্যমান। 

 '৫২–র ভাষা আন্দোলন, '৬২–র শিক্ষা আন্দোলন, '৬৯–এর গণ-অভ্যুত্থান, '৭০–এর নির্বাচন এবং '৭১–এর মহান স্বাধীনতার সংগ্রামে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহস্রাধিক শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারী অংশগ্রহণ করেন। ২৫ মার্চ কালরাতে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়ে। সেদিন অনেককে জীবন দিতে হয়েছে। ১৯৭১ সালের ২ মার্চ প্রথম এই বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এর পরে '৯০–এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভূমিকা লক্ষণীয়। দেশের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা অপরিসীম। কিওএস র‍্যাঙ্কিংসহ অন্যান্য র‍্যাঙ্কিংয়ের তালিকায় নিম্নগামী হওয়ার কারণে অনেক সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয় কর্তৃপক্ষকে। কিন্তু এগিয়ে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুযোগ-সুবিধা, আবাসনব্যবস্থা, মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ও ডিজিটালাইজেশনে নিতান্তই অপ্রতুল। সরকারি চাকরির প্রতি অধিকাংশ শিক্ষার্থীর মোহের কারণে, লেজুড়বৃত্তি শিক্ষক ও ছাত্ররাজনীতির কারণে সমসাময়িক গবেষক তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে। করোনা মহামারিতে টিকা তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে। অথচ দেশের সাধারণ মানুষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এসব কিছু আশা করে। 

বিশ্ব যখন ডিজিটালাইজেশনে এগিয়ে যাচ্ছে, তখনো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রয়ে গেছে পশ্চাৎপদ। ডিজিটাল ক্লাসরুম, ডিজিটাল লাইব্রেরি, আবাসিক সুবিধা, অনলাইনে ফি পরিশোধের ব্যবস্থা ও ভর্তি কার্যক্রমে জটিলতা কমাতে পারেনি। আবাসিক সুযোগ-সুবিধা, শতভাগ ডিজিটালাইজেশন, লেজুড়বৃত্তির শিক্ষক ও ছাত্ররাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস গড়ে উঠলেই বিশ্বের সেরা বিদ্যাপীঠের স্থান দখল করবে বলে আমাদের বিশ্বাস। 

করোনার ভয়াল থাবায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদযাপন :   

দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তির মূল অনুষ্ঠান পেছানো হয়েছে। ১ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে শতবর্ষের মূল অনুষ্ঠান বর্ণাঢ্য ও জাঁকজমকপূর্ণভাবে আয়োজন করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। 

ওই অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মো. আবদুল হামিদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। 

আজ সীমিত পরিসরে অনলাইনে প্রতীকী কর্মসূচি পালিত হবে। অনলাইনে প্রতীকী কর্মসূচিতে উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে ভার্চ্যুয়াল আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হবে। 

এতে মূল বক্তা হিসেবে থাকবেন ভাষাসৈনিক, কলামিস্ট আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী। তিনি ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ : ফিরে দেখা' শীর্ষক মূল বক্তব্য উপস্থাপন করবেন।

মহামারির কারণে বন্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা না থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবন, টিএসসি ও কার্জন হল আলোকসজ্জায় সাজানো হয়েছে। 

শতবর্ষ পূর্তিকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের’ নানা পরিকল্পনা থাকলেও দেশে লকডাউনের কারণে এক দিন আগে বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই ফ্লোরে সীমিত পরিসরে পতাকা উত্তোলন ও উদ্বোধনী অনুষ্ঠান প্রতীকী কর্মসূচি পালন করেছে। 

শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান এক শুভেচ্ছাবাণী দিয়েছেন। 

শুভেচ্ছাবাণীতে উপাচার্য বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষে প্রিয় মাতৃভূমি ও গণমানুষের প্রতি আমাদের অনিঃশেষ কৃতজ্ঞতা। মহান রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন, চিরগৌরবময় মুক্তিযুদ্ধসহ গণমানুষের সব লড়াইয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সর্বদা নেতৃত্ব দিয়েছে। জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এবং দেশসেবায় রেখেছে অনন্য অবদান। 

 'মহান এই বিদ্যাপীঠের স্বনামধন্য প্রাক্তন শিক্ষার্থী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ (মুজিববর্ষ), মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদ্‌যাপনের বিরল সৌভাগ্যপ্রাপ্তির ক্ষণে আমরা দেশের শিক্ষা ও গবেষণার মানকে আরও উন্নত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করছি।' 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাবির বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৩৪
ঢাবির বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের বিজ্ঞান শাখার প্রথম বর্ষের আন্ডারগ্র‍্যাজুয়েট প্রোগ্রামের ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। সকল জুলাই যোদ্ধা, শরিফ ওসমান হাদি ও শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শন হিসেবে আগামীকাল শনিবার অনুষ্ঠেয় এই পরীক্ষা স্থগিত করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

আজ শুক্রবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামের পাঠানো এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানা গেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালনের অংশ হিসেবে আগামীকাল শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক দিবস পালন করা হবে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘সাহসী জুলাই যোদ্ধা শরিফ ওসমান হাদি এবং ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী সকল জুলাই যোদ্ধা ও শহীদের প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শন হিসেবে আগামীকাল ২০ ডিসেম্বর শনিবার অনুষ্ঠেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২০২৬ শিক্ষাবর্ষের বিজ্ঞান ইউনিটের প্রথম বর্ষ আন্ডারগ্র‍্যাজুয়েট প্রোগ্রামের ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। স্থগিত ভর্তি পরীক্ষার সময়সূচি শিগগিরই ঘোষণা করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এসএসসির ফরম পূরণ শুরু ৩১ ডিসেম্বর

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

আগামী বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফরম পূরণ শুরু হবে ৩১ ডিসেম্বর থেকে। যা চলবে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত। ফি জমা দেওয়া যাবে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ফরম পূরণের বিজ্ঞপ্তি থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ থাকা সাপেক্ষে জিপিএ উন্নয়ন পরীক্ষার্থীসহ আবশ্যিক ও নৈর্বাচনিক বিষয় ও বিষয়গুলো এক থেকে চার বিষয়ে ২০২৫ সালে অকৃতকার্য পরীক্ষার্থীদের ২০২৬ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় অকৃতকার্য বিষয় ও বিষয়গুলোতে অংশ নেওয়ার জন্য নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান বরাবরে সাদা কাগজে ২৪ ডিসেম্বরের মধ্যে আবেদন করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো নির্বাচনী পরীক্ষা নিয়ে ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে ফল প্রকাশ করবে।

আরও বলা হয়, বিলম্ব ফিসহ অনলাইনে ফরম পূরণ করা যাবে ২০২৬ সালের ১২ থেকে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত। পরীক্ষার্থী প্রতি ১০০ টাকা হারে বিলম্ব ফিসহ অনলাইনে ফি জমা দেওয়া যাবে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত।

আরও বলা হয়, বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন ফি (চতুর্থ বিষয় ছাড়া) ২ হাজার ৪৩৫ টাকা, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিকে ২ হাজার ৩১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের বেতন ও সেশন চার্জ হিসেবে ২০২৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পরিশোধ করতে হবে।কোনো শিক্ষার্থীর নবম ও দশম শ্রেণির মোট ২৪ মাসের বেশি বেতন নেওয়া যাবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিইউবিটিতে চতুর্থবারের মতো ‘আইসিপিসি এশিয়া ঢাকা রিজিওনাল কনটেস্ট’ আয়োজিত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বিইউবিটিতে চতুর্থবারের মতো ‘আইসিপিসি এশিয়া ঢাকা রিজিওনাল কনটেস্ট’ আয়োজিত হচ্ছে। এই উপলক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
বিইউবিটিতে চতুর্থবারের মতো ‘আইসিপিসি এশিয়া ঢাকা রিজিওনাল কনটেস্ট’ আয়োজিত হচ্ছে। এই উপলক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) স্থায়ী ক্যাম্পাসের ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স হলে গতকাল বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) ‘আইসিপিসি এশিয়া ঢাকা রিজিওনাল কনটেস্ট ২০২৫’ উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে দেশের বিভিন্ন স্বনামধন্য জাতীয় দৈনিক, টেলিভিশন চ্যানেল, অনলাইন পোর্টাল এবং ডিজিটাল মিডিয়ার সাংবাদিকেরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।

বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা, যা ‘প্রোগ্রামিংয়ের অলিম্পিক’ খ্যাত—আইসিপিসির এই রিজিওনাল পর্বটি ২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ বিইউবিটি ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হবে। উল্লেখ্য, বিইউবিটি এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো এই মর্যাদাপূর্ণ আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা আয়োজন করার গৌরব অর্জন করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বিইউবিটির উপাচার্য ড. এ বি এম শওকত আলী উপস্থিত সাংবাদিকদের এবং এই আয়োজনের গর্বিত স্পনসরদের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, ‘এই প্রতিযোগিতার মূল লক্ষ্য হলো সারা দেশ থেকে বাংলাদেশের সেরা প্রোগ্রামারদের খুঁজে বের করা এবং তাঁদের মেধা বিকাশের মাধ্যমে বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ করে দেওয়া।’

শওকত আলী আরও জানান, এবারের আয়োজনে সারা বাংলাদেশ থেকে রেকর্ড সংখ্যক প্রতিযোগী অংশ নিচ্ছেন। মোট ৩১৩টি টিমের ৯৩৯ জন মেধাবী প্রোগ্রামার এই চূড়ান্ত পর্বে লড়বেন, যা বাংলাদেশে আইসিপিসির ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিইউবিটি ট্রাস্টি বোর্ডের সম্মানিত সদস্য মো. শামসুল হুদা এফসিএ।

এ ছাড়া সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন এবং টেকনিক্যাল বিষয়গুলো তুলে ধরেন আইসিপিসি এশিয়া ঢাকা সাইট ২০২৫-এর আরসিডি (RCD) এবং বিইউবিটির সিএসই বিভাগের চেয়ারম্যান মো. সাইফুর রহমান এবং আইসিপিসি এশিয়া ঢাকা সাইট ২০২৫-এর অ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টর ও এনএসইউর ইসিই বিভাগের অধ্যাপক ড. আবুল লায়েস এম এস হক।

এ সময় মঞ্চে আরও উপস্থিত ছিলেন আইসিপিসি ওয়ার্ল্ড ফাইনালস বিচারক (২০০৩-২০১৮) শাহরিয়ার মঞ্জুর এবং বিইউবিটির প্রকৌশল ও ফলিতবিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. মুন্সী মাহবুবুর রহমান। সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিইউবিটির সিএসই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আশরাফুল ইসলাম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জকসু নির্বাচন: তিন দিনেও প্রকাশ করা হয়নি ব্যালট নম্বর, প্রচারে নেমে বিপাকে প্রার্থীরা

  জবি প্রতিনিধি
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৪৫
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদের ‎আসন্ন নির্বাচনে ক্যাম্পাসে প্রচার শুরু হয়েছে ১৫ ডিসেম্বর থেকে। তফসিল অনুযায়ী টানা ১৩ দিন চলবে এই প্রচার। তবে প্রচার শুরুর পর তিন দিন পার হলেও প্রার্থীদের ব্যালট নম্বর প্রকাশ করেনি নির্বাচন কমিশন। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন প্রার্থীরা।

‎‎তফসিল সূত্রে জানা যায়, নির্বাচনী প্রচারণার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ থেকে ২৭ ডিসেম্বর। প্রচারণার ১৩ দিন সময়ের ৩ দিন পেরিয়ে গেলেও ব্যালট নম্বর প্রকাশ না করায় প্রচারণায় বাধার অভিযোগ তুলেছেন প্রার্থীরা।

‎‎শিবির-সমর্থিত ‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য প্যানেল’ থেকে ভিপি প্রার্থী রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ব্যালট নম্বর না থাকায় প্রচার ও পেপার ছাপাতে জটিলতা তৈরি হয়েছে। একই সঙ্গে নাম সংশোধনের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দেওয়া হচ্ছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

‎ছাত্রদল-সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান প্যানেল’ থেকে জিএস প্রার্থী খাদিজাতুল কোবরা বলেন, ব্যালট নম্বর প্রকাশ না করায় প্রচার ব্যাহত হচ্ছে এবং এতে নির্বাচন কমিশনের অদক্ষতা ও স্বচ্ছতা প্রমাণিত হয়। দ্রুত ব্যালট নম্বর প্রকাশের দাবি জানান তিনি।

‎স্বতন্ত্র ভিপি প্রার্থী চন্দন কুমার দাস বলেন, শুরু থেকেই নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা দায়িত্বহীন। প্রার্থিতা ও আচরণবিধি-সংক্রান্ত অভিযোগে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ার পাশাপাশি ব্যালট নম্বর না দেওয়ায় প্রচার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, যা কোনো পক্ষকে সুবিধা দেওয়ার ইঙ্গিত দেয়।

‎‎এসব অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে জকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসান বলেন, ‘আমাদের কার্যক্রম চলছে। প্রার্থীদের নাম সংশোধনের জন্য আমাদের কাছে আবেদন এসেছে অনেকগুলো। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা নাম সংশোধন বা নিকনেম রাখার জন্য কাজ করছি। ফলে আমাদের কিছুটা সময় বেশি লাগছে।’

‎এর আগে ৪ ডিসেম্বর সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সংশোধিত তফসিল ঘোষণা করা হয়। সেই তফসিল অনুযায়ী ৯ ও ১০ ডিসেম্বর প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট সম্পন্ন হয়। নির্ধারিত তফসিল অনুযায়ী ১১ ডিসেম্বর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়। ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার, ১৪ ডিসেম্বর প্রত্যাহারকৃত তালিকা প্রকাশ করা হয়। ভোট গ্রহণের তারিখ ৩০ ডিসেম্বর, ভোট গণনা ৩০ ডিসেম্বর (ভোট গ্রহণ শেষে) এবং ফলাফল ঘোষণা ৩০ অথবা ৩১ ডিসেম্বর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত