Ajker Patrika

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি

আব্দুল্লাহ সাদমান জামী
আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৪: ৩৫
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার আর খুব বেশি দিন বাকি নেই। ইতিমধ্যে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী নিজেদের মতো করে প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছ, তবে যারা এখনো পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি কীভাবে নিলে সর্বোচ্চ ফলাফল পাওয়া যাবে, সেটি নিয়ে দ্বিধায় ভুগছ, তাদের জন্য আমার ভর্তি পরীক্ষার আলোকে এবং বিগত বছরগুলোর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ইচ্ছুক প্রার্থীদের পড়ানোর অভিজ্ঞতার আলোকে কিছু কথা শেয়ার করব তোমাদের সঙ্গে। 

মান বণ্টন আগের মতোই
এ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কলা বিভাগ এবং বিভাগ পরিবর্তন, অর্থাৎ সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের পরীক্ষা প্রথমবারের মতো একসঙ্গে হবে। তবে উভয় অনুষদেই যেহেতু বাংলা, ইংরেজি ও সাধারণ জ্ঞানের পরীক্ষাই নেওয়া হয়ে থাকে, তাই প্রশ্নপত্রে খুব বেশি পরিবর্তন হয়তো আসবে না। মান বণ্টন বিগত বছরগুলোর মতোই আছে; অর্থাৎ ৬০ মার্কের এমসিকিউ পরীক্ষা এবং ৪০ মার্কের লিখিত পরীক্ষা হবে, বাকি ২০ পরীক্ষার ফলাফলের ওপরে। তবে এমসিকিউ পরীক্ষায় নির্দিষ্ট পরিমাণ একটি মার্ক পেলে তবেই সেই শিক্ষার্থীর লিখিত খাতা মূল্যায়ন করা হয়। তাই ভর্তি পরীক্ষায় এমসিকিউ অংশে ভালো করাটা প্রথম শর্ত। দ্বিতীয়ত, ভালো সাবজেক্ট পেতে গেলে বাংলা ও ইংরেজিতে বেশ ভালো নম্বর পেতে হয়। লিখিত অংশে ভালো করাটা জরুরি হয়ে ওঠে মেধাতালিকায় এগিয়ে থাকার জন্য, কারণ শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকার প্রথম দিকের সাবজেক্টগুলো খুব দ্রুতই শেষ হয়ে যায়। 

বহুনির্বাচনি পরীক্ষার প্রস্তুতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিগত তিন থেকে চার বছরের প্রশ্ন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, পাঠ্যবইভিত্তিক প্রশ্ন অনেক বেশি আসছে। যেমন ইংরেজিতে গ্রামারের চেয়ে পাঠ্যবইয়ের ভেতরের প্রশ্নকে অনেক বেশি প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। তাই শিক্ষার্থীদের বলব, বাংলা ও ইংরেজি পাঠ্যবই লাইন বাই লাইন পড়তে, গুরুত্বপূর্ণ শব্দগুলো দাগিয়ে রাখতে। কারণ শর্ট সিলেবাস হওয়ার কারণে শিক্ষার্থীরা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পড়ছে কি না, সেটি বিগত কয়েক বছরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশ্নপত্রে অনুসন্ধান করা হচ্ছে। প্রথমেই বলি ইংরেজির কথা। ইংরেজি পাঠ্যবইয়ের সিলেবাসের চাপ্টারগুলোর শব্দার্থ এবং সেগুলোর পার্টস অব স্পিচ, এমনকি গ্রামাটিক্যাল প্রশ্ন বইয়ের ভেতর থেকে করার প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। গ্রামারের মধ্যে Identification of Parts of Speech, Voice, Narration, right form of verbs, subject verb agreement এগুলোর ওপরে খুবই ভালো দখল থাকতে হবে। এগুলো থেকে যেকোনো ধরনের প্রশ্ন এলে সমাধান করার দক্ষতা যেন শিক্ষার্থীর থাকে। একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় কত কম সময়ে কত বেশি প্রশ্নের উত্তর করতে পারছ, মূলত সেটিই ঠিক করে দেয় ভর্তি পরীক্ষায় তোমার অবস্থান। তাই যে টপিক পড়বে, সে বিষয়ের বিগত বছরের প্রশ্নগুলো তুমি কত দ্রুত সময়ে সলভ করতে পারছ, সেটি ঘড়ি ধরে নিজে মূল্যায়ন করবে। সাধারণ জ্ঞানে আমরা দেখছি মানবিকের মৌলিক বিষয়গুলো থেকে অনেক বেশি প্রশ্ন আসছে, যেমন—অর্থনীতি ও পৌরনীতির পাঠ্যবই থেকে বিগত বছরের পরীক্ষায় অনেকগুলো প্রশ্ন এসেছে, যা মূলত আগের বছরগুলোতে দেখা যায়নি। তাই বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলির বিষয়গুলো, সাম্প্রতিকের তথ্য পড়ার পাশাপাশি মৌলিক বিষয়গুলোর ওপর গুরুত্ব দেওয়াটা খুবই জরুরি। 

লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি
লিখিত পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বড় বিভ্রান্তি যেটি থাকে সেটি হচ্ছে, পরীক্ষায় বোধ হয় পূর্ণাঙ্গ মার্কস পাওয়া সম্ভব না। লিখিত পরীক্ষায় সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জিং বিষয়টি হচ্ছে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করে আসতে পারা।

বিগত বছরগুলোতে আমরা দেখেছি, শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন কমন পাওয়ার পরেও সব লিখে আসতে পারেনি শুধু সময়ের অভাবে। তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার অফিশিয়াল সার্কুলার অনুযায়ী ইংরেজি ও বাংলার লিখিত অংশগুলো টপিক ধরে ধরে প্রতিদিন বেশ সময় নিয়ে প্র্যাকটিস করা উচিত এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় লিখিতর জন্য যতটুকু জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয় এবং যতটুকু সময় দেওয়া হয়, সেটিকেই মডেল হিসেবে ধরে নিয়ে প্র্যাকটিস করলে লিখিত পরীক্ষায় পূর্ণাঙ্গ মার্কস অর্জন অবশ্যই সম্ভব।

তুমি পরিকল্পনা অনুযায়ী পরিশ্রম করলে পরীক্ষার হলে ভালো না করার কোনো কারণই নেই। যারা নিজেদের স্বপ্নের পেছনে শক্তভাবে লেগে থাকে, বিজয়ীদের দলে তাদের অবস্থান সুনিশ্চিত

ইংরেজি অংশের ক্ষেত্রে ট্রান্সলেশন, সেনটেন্স মেকিং, প্যারাগ্রাফ রাইটিং—এগুলো বেশি আসতে দেখা গেছে। পাশাপাশি কম্প্রিহেনশন, এক্সপ্লানেশন, রি-এরেঞ্জিং এবং ট্রান্সফরমেশন অব সেনটেন্সের ওপরে প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে।

বাংলা লিখিতর ক্ষেত্রে বানান শুদ্ধি ও প্রমিতকরণ, মূলভাব লিখন, কবিতার উদ্ধৃতি ব্যাখ্যা, অনুবাদ, সংক্ষিপ্ত অনুচ্ছেদ লেখন, মিলকরণ ইত্যাদি পড়ে যাওয়া জরুরি। 

কেমন হবে পরীক্ষার রুটিন
পরীক্ষার রুটিন করার আগে মূলত নিজের কোন বিষয়ে দক্ষতা বেশি আর কোন বিষয়ে দক্ষতা কম, সেটি নিজেই অ্যানালাইসিস করা জরুরি। সেই অনুযায়ী যে বিষয়ে দুর্বলতা বেশি, সেটির জন্য রুটিনে বেশি সময় বরাদ্দ রাখতে হবে। যেমন ইংরেজি প্রশ্নপত্র যেহেতু মার্ক ওঠানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং বলে বিবেচিত হয়, এ ক্ষেত্রে দিনে দুই থেকে তিন ঘণ্টা ইংরেজিতে সময় দেওয়া খুবই জরুরি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০-১৫ বছরের প্রশ্ন পড়লে প্রশ্নের প্যাটার্ন সম্পর্কেও দ্বিধাদ্বন্দ্ব অনেকটা দূর হয়ে যায়; বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় কোন কোন টপিক থেকে কোন প্রশ্ন বেশি করে থাকে, সেটি নিজেই তুমি অনুধাবন করতে পারবে। তাই বেশ কয়েকবার প্রশ্ন ব্যাংক সমাধান করাটা জরুরি। সবশেষে বলব, প্রস্তুতি যখন একটা মোটামুটি জায়গায় চলে আসবে, তখন একটা মডেল টেস্টের বই কিনে নিজে নিজে পরীক্ষা দাও ঘড়ি ধরে। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় সময় সবচেয়ে বড় ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে। শিক্ষার্থীদের মনে রাখতে হবে, অন্যের প্রস্তুতির সঙ্গে তুলনা করা খুব বেশি সুবিধাজনক কিছু বয়ে নিয়ে আসে না, কারণ একেকজনের একেক বিষয়ে দক্ষতার স্তর একেক রকম হয়। তাই নিজের শক্তি এবং দুর্বলতাগুলো বিশ্লেষণ করে সেখানে নিয়মিত সময় দিতে পারলেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর অধরা থাকবে না।

নিজের সঙ্গে নিজের যুদ্ধে জয়!
বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় মানসিক চাপ থাকে অনেক। এ সময় শিক্ষার্থীদের খুব কম সময়ে অনেক বেশি পড়াশোনা করতে হয় এবং অনেক মানুষের প্রত্যাশার চাপ তাদের জন্য অনেক সময় বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। মনে রাখতে হবে, এই সময় নিজেকে মানসিকভাবে সতেজ রাখাটা অনেক বেশি জরুরি। তুমি পরিকল্পনা অনুযায়ী পরিশ্রম করলে পরীক্ষার হলে ভালো না করার কোনো কারণই নেই। কারণ দিনান্তে যারা নিজেদের স্বপ্নের পেছনে শক্তভাবে লেগে থাকে, বিজয়ীদের দলে তাদের অবস্থান সুনিশ্চিত। 

আব্দুল্লাহ সাদমান জামী, ২য় স্থান, ডি ইউনিট, ঢাবি (২০১৭-১৮)

অনুলিখন: জুবায়ের আহম্মেদ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দেশে অণুজীববিজ্ঞান শিক্ষায় ভূমিকা রয়েছে বিএসএমের

শিক্ষা ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দেশে অণুজীববিজ্ঞান শিক্ষা ও গবেষণা প্রসারে ‘বাংলাদেশ সোসাইটি অব মাইক্রোবায়োলজিস্টসের (বিএসএম)’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি ড. মুনিরুল আলম।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞান বিভাগ ও বিএসএমের যৌথ উদ্যোগে গত ২১–২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ৩৯তম বার্ষিক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। একই সঙ্গে তিনি বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অণুজীববিজ্ঞান গবেষণায় উদ্ভাবনের গুরুত্ব তুলে ধরেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

দুই দিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানী, গবেষক, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, ভেটেরিনারি বিশেষজ্ঞ, শিল্পখাতের প্রতিনিধি এবং শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। সম্মেলনের মূল লক্ষ্য ছিল অণুজীববিজ্ঞান ও সংশ্লিষ্ট শাখাগুলোতে সাম্প্রতিক গবেষণা ও অগ্রগতি নিয়ে মতবিনিময় করা, বৈজ্ঞানিক সহযোগিতা জোরদার করা এবং সমসাময়িক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কার্যকর দিকনির্দেশনা প্রদান করা। সম্মেলনে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৪০০-এর অধিক প্রতিনিধি অংশ নেন।

এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য বিষয় “Microbiomes for a Sustainable Future” সময়োপযোগী ছিল এবং মানব উন্নয়ন ও কল্যাণে অণুজীববিজ্ঞানের গুরুত্ব তুলে ধরতে সহায়ক হয়। সর্বমোট ২৮৮টি সারসংক্ষেপ (Abstract) গৃহীত হওয়ার পর সম্মেলনের ১২টি টেকনিক্যাল সেশনে ২টি প্লেনারি বক্তৃতা, ৮টি কীনোট বক্তৃতা, ৬টি আমন্ত্রিত বক্তৃতা, ৪টি ইয়াং সায়েন্টিস্ট টক, ৫৮টি মৌখিক উপস্থাপনা এবং প্রায় ২২৬টি পোস্টার উপস্থাপন করা হয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. এস. এম. এ. ফয়েজ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (একাডেমিক) প্রফেসর ডা. মামুন আহমেদ। স্বাগতিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. শাকিলা নার্গিস খান।

অনুষ্ঠানের শেষপর্বে সম্মেলন আয়োজন কমিটির চেয়ারম্যান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড রিসার্চ ইন সায়েন্সেসের (সিএআরএস) চিফ সায়েন্টিস্ট ডা. লতিফুল বারী ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‎জকসু নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিলেন জামাল ভূঁইয়া

জবি প্রতিনিধি 
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন দরজায় কড়া নাড়ছে। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এসেছেন বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়া। ‎

আজ ‎বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আসেন তিনি। এ সময় শহীদ সাজিদ ভবন, প্রক্টর অফিস ঘুরে প্রোগোজ স্কুলের মাঠে সাংবাদিক ও ফ্যানদের সঙ্গে কথা বলেন এই ফুটবলার। ‎

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎এ সময় জামাল ভূঁইয়া বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো এলাম। আমার অনেক ভালো লাগছে। এটি অনেক পুরোনো বিশ্ববিদ্যালয়। আগামী ৩০ ডিসেম্বর জকসু নির্বাচন। আপনাদের সবার প্রতি শুভকামনা। আমি আবার আসব ইনশা আল্লাহ।’ ‎

‎এ সময় জাতীয় ছাত্র শক্তি সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ জবিয়ান’ প্যানেলের জিএস পদপ্রার্থী মো. ফয়সাল মুরাদ বলেন, ‘আমরা স্পোর্টস কার্নিভালের সময় জামাল ভাইকে আমাদের ক্যাম্পাসে আসার আহ্বান জানিয়েছিলাম। কিন্তু তখন শিডিউল না পাওয়ায় সম্ভব হয়নি। এই প্রজন্মের কাছে বাংলাদেশ ফুটবলের প্রথম সুপারস্টার জামাল ভূঁইয়া। তাঁর মাধ্যমে বাংলাদেশ ফুটবলের এই নতুন ধারা উন্মোচিত হয়েছে।’ ‎

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎এ সময় এই সংবাদ সম্মেলনে প্যানেলটির ভিপি পদপ্রার্থী কিশোয়ার আনজুম সাম্য, ক্রীড়া সম্পাদক পদপ্রার্থী ফেরদৌস হাসান সোহান, কার্যনির্বাহী সদস্য পদপ্রার্থী সিনহা ইসলাম অর্না এবং ছাত্রদল সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেলের ক্রীড়া সম্পাদক কামরুল হাছান নাফিজসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জকসু নির্বাচনে ব্যতিক্রমী প্রচারণায় প্রার্থীরা

সোহানুর রহমান, জবি
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৩৪
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন ঘিরে ক্যাম্পাসজুড়ে বিরাজ করছে উৎসবমুখর ও প্রাণবন্ত পরিবেশ। কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর প্রথমবার অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই নির্বাচনের প্রচারণায় যুক্ত হয়েছে ভিন্নমাত্রিক ও সৃজনশীল পদ্ধতি, যা শিক্ষার্থীদের মাঝে বাড়তি আগ্রহ ও উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে।

জকসু নির্বাচনের প্রার্থীরা প্রচারণায় পোস্টার ও লিফলেটের মতো প্রচলিত প্রচারসামগ্রীর বাইরে গিয়ে লাল কার্ড, রঙিন প্ল্যাকার্ড ও হাতে বহনযোগ্য নানা প্রচারসামগ্রী ব্যবহার করছেন। দেয়ালে পোস্টার সাঁটানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় আচরণবিধি মেনেই ভিন্ন কৌশলে ভোটারদের কাছে নিজেদের বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন তাঁরা।

নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী ১৫ থেকে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রচারণার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যেই প্রার্থীরা শিক্ষার্থীদের মন জয় করতে ব্যবহার করছেন এরোপ্লেন আকৃতির কাগজ, প্রতীকী নোট, কাপ, বোতল, প্রজাপতি, জকসু পাসপোর্টসহ নানা অভিনব উপকরণ। আকর্ষণীয় স্লোগান ও রঙিন ডিজাইনের মাধ্যমে তুলে ধরা হচ্ছে নির্বাচনী অঙ্গীকার ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা।

প্রচারণায় প্রযুক্তির ব্যবহারও চোখে পড়ার মতো। কিউআর কোড সংযুক্ত প্রচারণা সামগ্রীর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা মোবাইল ফোন স্ক্যান করে মুহূর্তেই প্রার্থীদের বিস্তারিত ইশতেহার ও পরিকল্পনা জানতে পারছেন।

ছাত্রদল-সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেলের জিএস পদপ্রার্থী খাদিজাতুল কুবরা বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের মাঝে একটি স্বতঃস্ফূর্ত ও প্রাণবন্ত পরিবেশ বিরাজ করছে। শুরু থেকেই আমরা জোরালো প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানো এবং তাঁদের দৃষ্টি আকর্ষণের লক্ষ্যেই আমি ভিন্নধর্মী প্রচার কার্ড ব্যবহার করছি।’

ছাত্রশিবির-সমর্থিত ‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য’ প্যানেলের শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক পদপ্রার্থী ইব্রাহিম খলিল বলেন, ‘লিফলেট দিয়ে প্রচার করার ফলে ভোটাররা অতিষ্ঠ হয়ে গেছেন, তাই এবার আমাদের অন্য রকম প্রচারণা। আমাদের বার্তাটি আকর্ষণীয়ভাবে ভোটারদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কার্যক্রম চালাচ্ছি।’

স্বতন্ত্র নির্বাহী সদস্য পদপ্রার্থী আল শাহরিয়ার খান বলেন, ‘নারী শিক্ষার্থীদের আগ্রহ সৃষ্টি করা এবং প্রচারসামগ্রী যেন সংরক্ষণযোগ্য হয়, এই চিন্তা থেকেই আমি বিড়ালের আদলে কার্ড তৈরি করেছি।’

ছাত্রশক্তি-সমর্থিত ‘নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেলের জিএস পদপ্রার্থী ফয়সাল মুরাদ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের কাছে ইশতেহার পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি তাঁদের সমস্যা ও প্রত্যাশা বোঝার চেষ্টা করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‎জবির ‘এ’ ও ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ২৬ ও ২৭ ডিসেম্বর

জবি প্রতিনিধি 
‎জবির ‘এ’ ও ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ২৬ ও ২৭ ডিসেম্বর

‎জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতক (সম্মান) ও বিবিএ প্রথম বর্ষের ‘এ’ ইউনিট (বিজ্ঞান ও লাইফ অ্যান্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদ) ও ‘সি’ ইউনিটের (বাণিজ্য অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষা আগামী ২৬ ডিসেম্বর (শুক্রবার) ও ২৭ ডিসেম্বর (শনিবার) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। উভয় দিন পরীক্ষার সময় বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১ ঘন্টা।

‎‘এ’ ইউনিটের (বিজ্ঞান ও লাইফ অ্যান্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষায় ৮৬০টি আসনের বিপরীতে ৭২ হাজর ৪৭৪ জন আবেদন করেছে। প্রতি আসনের জন্য ৮৫ জন পরীক্ষার্থী লড়বেন। আর ‘সি’ ইউনিটে (বাণিজ্য অনুষদ) ৫২০টি আসনের বিপরীতে ২০ হাজর ৫৩৭ জন আবেদন করেছে। বিজ্ঞান অনুষদে ৮৬০ আসনের বিপরীতে ৭২ হাজর ৪৭৪ জন আবেদন করেছে। প্রতি আসনের জন্য ৪০ জন শিক্ষার্থী লড়বেন।

‎‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা মোট ১২টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ঢাকার বাহিরে তিনটি কেন্দ্র, কুমিল্লা বিশ্বিবদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা হবে। ঢাকার মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ মোট ৯টি কেন্দ্রের মধ্যে পরীক্ষা হবে। ঢাকার ভেতরের কেন্দ্র সমূহ হলো— জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মোহাম্মদপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল, কে এল জুবিলি হাই স্কুল এন্ড কলেজ, বিইএএম মডেল হাই স্কুল এন্ড কলেজ।

‎‘সি’ ইউনিটে (বাণিজ্য অনুষদ) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও ঢাকার মধ্যে বাংলাবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, গভর্মেন্ট মুসলিম হাই স্কুল কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ৷

‎মোট ১০০ মার্কের পরীক্ষায় ৭২ মার্ক এমসিকিউ ও বাকী ১৮ মার্ক থাকবে এসএসসি (সমমান) ও এইচএসসি (সমমান) ফলাফলের ওপর। ‘এ’ ইউনিটে পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন গণিত অথবা জীব বিজ্ঞান বিষয়ে প্রশ্ন করা হবে। ‘সি’ ইউনিটে ইংরেজি, গাণিতিক বুদ্ধিমত্তা ও হিসাব বিজ্ঞান, ব্যবসায় নীতি ও প্রয়োগ বিষয়ে প্রশ্ন আসবে।

‎পরীক্ষার সার্বিক প্রস্তুতি বিষয়ে বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. পরিমল বালা বলেন, ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের সব প্রস্তুতি আমাদের সম্পন্ন হয়েছে। এবার পরীক্ষার্থীদের সুবিধার কথা বিবেচনায় নিয়ে এবার ঢাকার বাহিরে খুলনা, রাজশাহী ও কুমিল্লা পরীক্ষা কেন্দ্র রাখা হয়েছে।

‎বাণিজ্য অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মঞ্জুর মুর্শেদ ভূঁইয়া বলেন, আমাদের ৫২০ আসনের বিপরীতে ২০ হাজার ৫৩৭ জন আবেদন করেছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও ঢাকার মধ্যে আরও ৩টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকার বাহিরে কোন কেন্দ্রে পরীক্ষা হবে না।

‎এর আগে ১৩ ডিসেম্বর ‘ই’ ইউনিটের (চারুকলা অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। উল্লখ্য, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ডি ইউনিটের পরীক্ষা আগামী ৯ জানুয়ারি বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। কলা ও আইন অনুষদভুক্ত বি ইউনিটের পরীক্ষা আগামী ৩০ জানুয়ারি বেলা ৩টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত