Ajker Patrika

সহজ পাঠ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১২: ৫১
সহজ পাঠ

বইয়ের সংখ্যার সঙ্গে পড়ার চাপ কমিয়ে আনন্দময় পরিবেশে সহজে শিক্ষার্থীদের শেখাতে নতুন জাতীয় শিক্ষাক্রম অনুমোদন করেছে সরকার। আগামী বছর থেকে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের ১০০টি করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা-মূলকভাবে এই শিক্ষাক্রম শুরু হবে। ২০২৩-২৫ সালে ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন হবে পুরো শিক্ষাক্রম।

নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা থাকবে না। থাকছে না পিইসি-জেএসসি পরীক্ষা। নবম-দশম শ্রেণিতে থাকবে না কোনো বিভাগের বিভাজন। শুধু দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচিতে হবে এসএসসি পরীক্ষা। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে দুটি পরীক্ষা হবে, তার ভিত্তিতে দেওয়া হবে এইচএসসির ফল।

জাতীয় শিক্ষাক্রমের রূপরেখা গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে উপস্থাপন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী তাঁর পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে রূপরেখাটি অনুমোদন করেছেন বলে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি জানিয়েছেন। সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন শিক্ষাক্রমের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন তিনি।

দীপু মনি বলেন, প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত এই রূপরেখা করা হয়েছে। এর আগে সব শিক্ষাক্রমই প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের জন্য আলাদা আলাদা ছিল। একজন শিক্ষার্থী প্রাক-প্রাথমিক শেষ করে মাধ্যমিকে যাচ্ছে। এ জন্য এক স্তর থেকে আরেক স্তরে যাওয়াটা যেন খুব মসৃণ হয়, সহজ হয়, মাঝে যেন ছেদ না পড়ে, এক স্তর থেকে অন্য স্তরে গিয়ে যেন খাপ খাওয়াতে কোনো সমস্যা না হয়, সেসব বিষয় নিশ্চিত করা হয়েছে। এ জন্য প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের বিশেষজ্ঞরা একসঙ্গে বসে এই রূপরেখা প্রণয়ন করেছেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘পুরো শিক্ষাক্রম হবে শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক এবং পড়াশোনা হবে আনন্দময়। বিষয়বস্তু ও পাঠ্যপুস্তকের বোঝা ও চাপ কমানো হবে। গভীর শিখনে গুরুত্ব দেওয়া হবে। মুখস্থ নির্ভরতার বিষয়টি যেন না থাকে। এর পরিবর্তে অভিজ্ঞতা ও কার্যক্রমভিত্তিক শেখাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের দৈহিক ও মানসিক বিকাশে খেলাখুলা ও অন্যান্য সৃজনশীল কাজের মধ্য দিয়ে পাঠদান দেওয়া হবে।’

নতুন শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষেই যেন অধিকাংশ পড়া শেষ করতে পারে, সেই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই এরপর শিক্ষার্থীরা নিজেদের মতো সময় কাটানোর সুযোগ যেন পায়, বাড়ি ফিরেই যেন হোমওয়ার্কের পেছনে ছুটতে না হয়। পড়াশোনার বাইরে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা বা অন্যান্য বিষয়ের সুযোগ কমে গেছে, এটা যেন না হয়। জ্ঞান, দক্ষতা, মূল্যবোধ ও দৃষ্টিভঙ্গির সমন্বয়ে যোগ্যতা অর্জন করতে হবে।’

নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী নবম শ্রেণিতে আর বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থাকবে না। নবম ও দশম শ্রেণিতে বাধ্যতামূলকভাবে ১০টি করে বিষয় পড়তে হবে। কোন স্তরে শিখন সময় কতটা হবে তা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হবে। পরীক্ষা নিয়ে যে মূল্যায়ন করা হয়, সেই সামষ্টিক মূল্যায়নের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক মূল্যায়নেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কোন পর্যায়ে কতটা সামষ্টিক ও কতটা ধারাবাহিক মূল্যায়ন হবে তা-ও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।

যেভাবে হবে বাস্তবায়ন
আগামী বছর থেকে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের এক শটি করে প্রতিষ্ঠানের প্রথম ও ষষ্ঠ শ্রেণিতে পাইলটিং হিসেবে নতুন রূপরেখা বাস্তবায়ন করা হবে। ছয় মাস পাইলটিং শেষে ২০২৩ সাল থেকে প্রথম, দ্বিতীয়, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন হবে। ২০২৪ সালে তৃতীয়, চতুর্থ, অষ্টম ও নবম শ্রেণি এবং ২০২৫ সালে পঞ্চম ও দশম শ্রেণিতে এই শিক্ষাক্রম শুরু হবে। ২০২৫ সালের মধ্যে পুরো শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের প্রতি তাঁর ভালোবাসা দিয়ে, পরামর্শ দিয়ে রূপরেখাটি অনুমোদন দিয়েছেন। ২০২১ সালে এই শিক্ষাক্রম পাইলটিংয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও করোনা মহামারির কারণে তা আর সম্ভব হয়নি।

যেভাবে হবে মূল্যায়ন
প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণিতে কোনো পরীক্ষা না নিয়ে শিখনকালীন ধারাবাহিক মূল্যায়ন করা হবে। চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান এবং সামাজিক বিজ্ঞানে ৬০ ভাগ শিখনকালীন এবং ৪০ ভাগ সামষ্টিক মূল্যায়ন (পরীক্ষা নিয়ে) হবে। অন্য বিষয়ে হবে শুধু ধারাবাহিক মূল্যায়ন।

ষষ্ঠ-সপ্তম শ্রেণিতে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান, সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ে ৬০ ভাগ শিখনকালীন এবং ৪০ ভাগ সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে। ষষ্ঠ-সপ্তমের অন্য বিষয়গুলোতে শতভাগ মূল্যায়ন হবে শিখনকালীন। নবম-দশম শ্রেণিতে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান, সামাজিক বিজ্ঞানে ৫০ ভাগ শিখনকালীন ও ৫০ ভাগ সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে। এই দুই শ্রেণির অন্য বিষয়গুলোতে শতভাগ শিখনকালীন মূল্যায়ন হবে।

শিক্ষামন্ত্রী জানান, দশম শ্রেণি শেষে শুধু দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচির আলোকে পাবলিক পরীক্ষা নেওয়া হবে। এখন নবম ও দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচির ওপর ভিত্তি করে পাবলিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। অর্থাৎ দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচি অনুযায়ী এসএসসি পরীক্ষা হবে। একাদশ ও দ্বাদশের আবশ্যিক বিষয়ে ৩০ ভাগ শিখনকালীন আর ৭০ ভাগ সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে। একাদশ-দ্বাদশে প্রায়োগিক ও ঐচ্ছিক বিষয়ে শুধু শিখনকালীন মূল্যায়ন হবে। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যসূচির ওপর প্রতি বর্ষে একটি করে পরীক্ষা হবে। একাদশ ও দ্বাদশের ফলাফলের সমন্বয়ে এইচএসসির চূড়ান্ত ফলাফল নির্ধারণ করা হবে।

পঞ্চম ও অষ্টমের সমাপনী পরীক্ষা আলাদা করে আর না হলে এই দুই শ্রেণিতে এখনকার মতো করে সনদ দেওয়া হবে কি না, এ প্রশ্নে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রাথমিক শেষে একটা, অষ্টম শ্রেণি শেষে আরেকটা সনদ দেওয়া হতে পারে। এসব শ্রেণিতে পাবলিক পরীক্ষা নিয়ে সনদ দিতে হবে এমন না। স্কুলের পড়া শেষ করলেই তো সনদ দেওয়ার ব্যবস্থা থাকতে পারে। একটা স্তর শেষ করার পর সনদ দেওয়া হতে পারে।

নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী পঞ্চম ও অষ্টমে শুধু ক্লাসরুমের পরীক্ষা হবে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো ধরনের কোনো পরীক্ষা নেই। এরপর থেকে সব ক্লাসেই সমাপনী পরীক্ষা হবে। পঞ্চমেও হয়তো সনদ দিয়ে দেব। সনদ দেওয়ার জন্য পাবলিক পরীক্ষার দরকার নেই। তবে প্রতিটি ক্লাসেই মূল্যায়ন হবে। নতুন শিক্ষাক্রমে সামষ্টিক মূল্যায়নের পাশাপাশি প্রকল্পভিত্তিক, ব্যবহারিক ও অন্যান্য উপায়েও শিখনকালীন মূল্যায়নের সুযোগ রাখা হয়েছে।

নবম-দশম শ্রেণিতে শিক্ষার্থীদের ১০টি করে বিষয় পড়তে হবে জানিয়ে দীপু মনি বলেন, ষষ্ট, সপ্তম ও অষ্টমে প্রি-ভকেশনাল কোর্স পড়বে শিক্ষার্থীরা। একাদশ শ্রেণিতে উঠে শিক্ষার্থীরা বিভাগ পছন্দ করে ঐচ্ছিক বিষয় বেছে নিতে পারবে। অন্যান্য দেশের পাঠ্যক্রম অনুসরণ করে নতুন এই শিক্ষাক্রম করা হয়েছে। ফলে ফলাফল দেওয়া গ্রেডিং পদ্ধতিও ‘৫’-এর বদলে ‘৪’-এ নামিয়ে আনা হবে। শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। শিক্ষকগাইডও তৈরি করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

আজকের রাশিফল: ফেসবুকে জ্ঞান ঝাড়বেন না— বন্ধুরা জানে আপনি কপি মাস্টার, স্ত্রীর কথা শুনুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চীনের বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্পূর্ণ অর্থায়িত সিএসসি বৃত্তি

শিক্ষা ডেস্ক
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ২২
বেইহাং ইউনিভার্সিটি, চীন
বেইহাং ইউনিভার্সিটি, চীন

চীনে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন দেখা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য এসেছে বড় সুযোগ। দেশটির বেইহাং ইউনিভার্সিটি চায়নিজ গভর্নমেন্ট স্কলারশিপের আবেদনপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিশ্বের যেকোনো দেশের শিক্ষার্থীরা এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। সম্পূর্ণ অর্থায়িত এই বৃত্তিতে অর্থায়ন করবে দেশটির সরকার। বৃত্তিটির আওতায় নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়টি থেকে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ পাবেন। ২০২৬-২৭ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রদত্ত এই বৃত্তি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য এক অনন্য সুযোগ।

চীনের শীর্ষস্থানীয় প্রকৌশল ও প্রযুক্তিনির্ভর উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বেইহাং ইউনিভার্সিটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ১৯৫২ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয় বেইজিংয়ে অবস্থিত। এর পূর্ব নাম ছিল বেইজিং ইউনিভার্সিটি অব অ্যারোনটিকস অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোনটিকস। চীনের ‘ডাবল ফার্স্ট ক্লাস ইউনিভার্সিটি’ উদ্যোগের অন্তর্ভুক্ত এই প্রতিষ্ঠান আধুনিক গবেষণাগার, বিশ্বমানের ফ্যাকাল্টি এবং শক্তিশালী শিল্প-সহযোগিতার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অত্যন্ত আকর্ষণীয় গন্তব্য হিসেবে বিবেচিত।

সুযোগ-সুবিধা

বেইহাং ইউনিভার্সিটি সিএসসি স্কলারশিপ চীনে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য সম্পূর্ণ অর্থায়িত একটি বৃত্তি। এই বৃত্তির আওতায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার প্রায় সব খরচ বহন করা হয়। এই বৃত্তির জন্য নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের সম্পূর্ণ টিউশন ফি মওকুফ করা হবে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিনা মূল্যে আবাসন অথবা আবাসন ভর্তুকির সুযোগ থাকবে। শিক্ষার্থীদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার খরচ নির্বাহের জন্য দেওয়া হবে মাসিক ভাতা (স্টাইপেন্ড)। স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অন্তর্ভুক্ত থাকবে সমন্বিত চিকিৎসাবিমা।

আবেদনের যোগ্যতা

বৃত্তিটির জন্য আবেদন করতে হলে প্রার্থীদের কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতার শর্ত পূরণ করতে হবে। আবেদনকারীকে অবশ্যই গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের বাইরে অন্য কোনো দেশের নাগরিক হতে হবে। প্রার্থীদের অবশ্যই শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে। শিক্ষাগত যোগ্যতা ও বয়সের ক্ষেত্রে মাস্টার্স প্রোগ্রামে আবেদনকারীদের স্নাতক ডিগ্রিধারী হতে হবে এবং বয়স ৩৫ বছরের নিচে থাকতে হবে। অন্যদিকে, ডক্টরাল (পিএইচডি) প্রোগ্রামে আবেদনকারীদের স্নাতকোত্তর ডিগ্রি থাকতে হবে এবং বয়স ৪০ বছরের নিচে হতে হবে।

প্রয়োজনীয় তথ্য

বৃত্তিটিতে আবেদন করতে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের নির্ধারিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র প্রস্তুত ও জমা দিতে হবে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে চায়নিজ গভর্নমেন্ট স্কলারশিপের আবেদন ফরম (চীনা অথবা ইংরেজি ভাষায় পূরণকৃত), হালনাগাদ রেজুমে বা সিভি, পাসপোর্টের মূল তথ্য-পাতার কপি, সর্বোচ্চ ডিগ্রির নোটারাইজড সনদ এবং একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট বিভাগ বা সুপারভাইজরের অ্যাকসেপ্ট্যান্স লেটার, একটি সুস্পষ্ট স্টাডি প্ল্যান বা গবেষণা প্রস্তাবনা এবং দুটি সুপারিশপত্র জমা দিতে হবে। এ ছাড়া ফরেনার ফিজিক্যাল এক্সামিনেশন ফরমের কপি, নন-ক্রিমিনাল রেকর্ডের নথি এবং ইংরেজি ভাষা দক্ষতার সনদ সংযুক্ত করতে হবে।

অধ্যয়নের ক্ষেত্রসমূহ

স্কুল অব অ্যারোনটিক্যাল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, অ্যাস্ট্রোনটিকস, অটোমেশন সায়েন্স অ্যান্ড ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রনিক ইনফরমেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অটোমেশন, ম্যাটেরিয়ালস সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং, সাইবার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ম্যাথমেটিকস অ্যান্ড সিস্টেমস সায়েন্স, ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, ইকোনমিকস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট, হিউম্যানিটিজ অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেস, ফরেন ল্যাঙ্গুয়েজেস এবং স্কুল অব ল।

আবেদনের পদ্ধতি

আগ্রহী প্রার্থীরা লিংকে গিয়ে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।

আবেদনের শেষ সময়

২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৬।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

আজকের রাশিফল: ফেসবুকে জ্ঞান ঝাড়বেন না— বন্ধুরা জানে আপনি কপি মাস্টার, স্ত্রীর কথা শুনুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জকসু নির্বাচন: ইশতেহারে অগ্রাধিকার দ্বিতীয় ক্যাম্পাস

  • ছাত্রদলের প্যানেলের ১৩ দফা ও শিবিরের প্যানেলের ২১ দফা অঙ্গীকার।
  • নিরাপদ ক্যাম্পাসের প্রতিশ্রুতি উভয় প্যানেলের।
  • সরে দাঁড়ালেন তিন স্বতন্ত্র ভিপি পদপ্রার্থী।
  জবি প্রতিনিধি
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ইশতেহার ঘোষণা করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল-সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ এবং ইসলামী ছাত্রশিবির-সমর্থিত ‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য’ প্যানেল।

ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেলের ১৩ দফার ইশতেহারে দ্বিতীয় ক্যাম্পাস দ্রুত বাস্তবায়ন ও আবাসন-সংকট নিরসনকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্যসম্মত খাবার নিশ্চিত করা কথা বলা হয়েছে। অন্যদিকে বর্তমান ক্যাম্পাসের ঐতিহ্য রক্ষা ও আধুনিকায়ন, নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিতকরণসহ ২১ দফা অঙ্গীকার করেছে ছাত্রশিবির-সমর্থিত ‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য’ প্যানেল।

গতকাল মঙ্গলবার বেলা ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী এ কে এম রাকিব ইশতেহার পাঠ করেন। পরে প্যানেলের অন্যান্য প্রার্থী পর্যায়ক্রমে ইশতেহারের বিভিন্ন দফা উপস্থাপন করেন।

ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেলের ১৩ দফার মধ্যে রয়েছে—গণতান্ত্রিক ও সুরক্ষিত ক্যাম্পাস নিশ্চিতকরণ; আবাসন-সংকটের স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি সমাধান; মূল ক্যাম্পাসের অবকাঠামোগত সংস্কার, সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন; দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের নির্মাণ দ্রুত সম্পন্ন করা; পরিবহন ও যাতায়াতব্যবস্থার মানোন্নয়ন; স্বাস্থ্যসম্মত ও পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিতকরণ; মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা ও স্বাস্থ্যবিমা; শিক্ষা ও গবেষণার মানোন্নয়ন; প্রশাসনিক সেবা সহজ ও দ্রুততর করা; কর্মসংস্থান ও ক্যারিয়ার উন্নয়ন; ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম সম্প্রসারণ; নারী শিক্ষার্থীর অধিকার সুরক্ষা; বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও সবুজায়ন; আর্থিকভাবে অসচ্ছল ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ উদ্যোগ।

এদিকে দুপুর ১২টার দিকে ভাষাশহীদ রফিক ভবনের সামনে ছাত্রশিবির-সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মো. রিয়াজুল ইসলাম নিজেদের ইশতেহার পাঠ করেন। পরে প্যানেলের অন্যান্য প্রার্থী পর্যায়ক্রমে ইশতেহারের বিভিন্ন দফা উপস্থাপন করেন।

শিবির-সমর্থিত প্যানেলের ২১ দফার মধ্যে রয়েছে—স্বপ্নের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস, আবাসন-সংকট নিরসন, বর্তমান ক্যাম্পাসের ঐতিহ্য রক্ষা ও আধুনিকায়ন, নিরাপদ ক্যাম্পাস, বিশ্বমানের শিক্ষা, প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক শিক্ষা, গবেষণা ও উচ্চশিক্ষা, শিক্ষার্থীবান্ধব লাইব্রেরি ও সেমিনার, স্বাস্থ্যসেবা, নারীর জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাস, ছাত্রী হল, ন্যায্যমূল্যে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার, পরিবহন সেবা, খেলাধুলা ও শরীরচর্চা, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন, সাহিত্য-সংস্কৃতির বিকাশ, বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর অধিকার সংরক্ষণ, ধর্মীয় স্বাধীনতা, আইনি সেবা ও মানবাধিকার সুরক্ষা, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা, ক্যারিয়ার লঞ্চপ্যাড, অন্তর্ভুক্তিমূলক সংগঠন ব্যবস্থাপনা ও জবাবদিহি।

সরে দাঁড়ালেন তিন স্বতন্ত্র ভিপি পদপ্রার্থী

গতকাল ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেলের সংবাদ সম্মেলনে ভিপি পদপ্রার্থী এ কে এম রাকিবকে সমর্থন জানিয়ে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেন তিন স্বতন্ত্র প্রার্থী চন্দন কুমার দাস, রাকিব হাসান ও মাশরুফ আহম্মেদ। তাঁরা বলেন, জবিয়ানদের অধিকার রক্ষার এই লড়াইয়ে অনৈক্যের কোনো স্থান নেই। বৃহত্তর স্বার্থে শক্তিশালী নেতৃত্ব নিশ্চিত করতে তাঁরা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন। একই সঙ্গে তাঁরা এ কে এম রাকিবকে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছেন।

সরে দাঁড়ানো স্বতন্ত্র ভিপি প্রার্থী মাশরুফ আহম্মেদ বলেন, ‘আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে নেমেছিলাম, তবে রাকিব ভাই দীর্ঘদিন ধরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তাই শিক্ষার্থীদের ভালোবাসা তাঁর প্রাপ্য হোক।’

আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী রাকিব হাসান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায় ও দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের দাবিতে রাকিব ভাইয়ের ভূমিকা অনস্বীকার্য। বৃহত্তর স্বার্থ ও ঐক্যের জন্য আমি তাঁর প্রতি সমর্থন জানিয়ে প্রার্থিতা থেকে সরে দাঁড়িয়েছি।’

ইশতেহারের বাস্তবায়ন চান শিক্ষার্থীরা

নির্বাচনের পর প্রার্থীদের প্রতিশ্রুতিগুলো যেন যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হয়, সেই প্রত্যাশাই ব্যক্ত করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী নাদিয়া নোভা বলেন, ‘আমরা সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে শুধু আমাদের সমস্যাগুলোর সমাধান চাই। প্রার্থীরা যে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, তা যেন নির্বাচন শেষে বাস্তবায়িত হয়, এটাই আমাদের কামনা।’

আরেক শিক্ষার্থী আশিক বলেন, ‘আমরা শুধু কথা চাই না, আমরা চাই কাজ। নির্বাচনের আগে যেসব প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে, সেগুলো যেন বাস্তবে দেখা যায়।’

নতুন তফসিল অনুযায়ী ১৫ থেকে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রচারণা চলবে। ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ৩০ ডিসেম্বর এবং ভোট গণনা ও ফল ঘোষণা হবে ৩০ অথবা ৩১ ডিসেম্বর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

আজকের রাশিফল: ফেসবুকে জ্ঞান ঝাড়বেন না— বন্ধুরা জানে আপনি কপি মাস্টার, স্ত্রীর কথা শুনুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১০ম গ্রেডে উন্নীত করে প্রজ্ঞাপন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯: ৪৭
প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১০ম গ্রেডে উন্নীত করে প্রজ্ঞাপন

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের গেজেটেড কর্মকর্তার পদমর্যাদা দিয়ে তাঁদের বেতন একাদশ থেকে বাড়িয়ে দশম গ্রেডে নির্ধারণ করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

আজ মঙ্গলবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। এতে স্বাক্ষর করেন উপসচিব (বিদ্যালয়-২) রাজীব কুমার সরকার।

এদিন এই প্রজ্ঞাপন জারি হলেও নতুন গ্রেডে বেতন ১৫ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর উচ্চ আদালতের নির্দেশনায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪৫ জন প্রধান শিক্ষককে গেল ২৭ অক্টোবর গেজেটেড কর্মকর্তার পদমর্যাদা দিয়ে তাঁদের বেতন দশম গ্রেডে উন্নীত করা হয়। এরপর ৬৫ হাজার ৫০২টি প্রধান শিক্ষকদের সবগুলো পদের বেতন দশম গ্রেডে নির্ধারণের উদ্যোগ নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

গত ২৮ জুলাই অর্থ বিভাগের ব্যয় ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগ ও অক্টোবরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এসব প্রধান শিক্ষক পদের বেতন দশম গ্রেডে উন্নীত করার সম্মতি দিয়েছিল।

পরে গত ১১ নভেম্বর অর্থ বিভাগের বাস্তবায়ন অনুবিভাগ এ প্রস্তাবে সম্মতি জানায়।

৩ ডিসেম্বর প্রশাসনিক উন্নয়ন-সংক্রান্ত সচিব কমিটির সভায়ও প্রধান শিক্ষকদের বেতন দশম গ্রেডে নির্ধারণের সুপারিশ করা হয়।

এদিকে প্রধান শিক্ষকদের বেতন দশম গ্রেডে নির্ধারণের সিদ্ধান্তকে ‘যুগান্তকারী’ আখ্যা দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ উদ্যোগ প্রধান শিক্ষকদের ‘আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত’ এবং তাঁদের ‘সামাজিক মর্যাদা সুসংহত’ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

এর ফলে প্রধান শিক্ষকেরা প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে আরও ‘সৃজনশীল ও উদ্দীপ্ত’ ভূমিকা রাখবেন এবং শিক্ষার্থীদের জন্য ‘আরও উন্নত ও গতিশীল’ শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত হবে বলেও আশা প্রকাশ করা হয় মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে।

মন্ত্রণালয় বলছে, প্রধান শিক্ষকেরা অন্যান্য শিক্ষক, অভিভাবক ও সব স্তরের অংশীজনদের সহায়তায় প্রাথমিক শিক্ষার মান ‘কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে’ উন্নীত করবেন বলে প্রত্যাশা করছে সরকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

আজকের রাশিফল: ফেসবুকে জ্ঞান ঝাড়বেন না— বন্ধুরা জানে আপনি কপি মাস্টার, স্ত্রীর কথা শুনুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অবসর ভাতায় অনিয়ম, ক্ষতি ১২৫০ কোটি

রাহুল শর্মা, ঢাকা 
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৬
অবসর ভাতায় অনিয়ম, ক্ষতি ১২৫০ কোটি
ছবি: সংগৃহীত

অবসর ভাতার আবেদন করতে শিক্ষক-কর্মচারীদের অবশ্যই ইনডেক্স (পরিচয় শনাক্তকারী নম্বর) থাকতে হবে। এই শর্ত ঠিক রেখেই জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া ইনডেক্সধারীদের অবসর ভাতা দেওয়া হয়েছে। এমনকি আবেদন না করেও অনেকে এই ভাতা পেয়েছেন। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ডের অর্থ ব্যয় এবং পরিচালনায় এমন অনেক অনিয়ম ও অসংগতি পেয়েছে শিক্ষা অডিট অধিদপ্তর।

শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের বিশেষ নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব অনিয়মে প্রায় ১ হাজার ২৫০ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে আইন লঙ্ঘন করে বেসরকারি ব্যাংকে রাখা আমানত ফেরত না পাওয়ায় বোর্ডের আর্থিক ক্ষতি ৬৩৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা। বাংলাদেশ মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের (সিএজি) অধীন শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের এই নিরীক্ষা প্রতিবেদন সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে জমা দেওয়া হয়েছে।

নিরীক্ষা প্রতিবেদনটির সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব (নিরীক্ষা ও আইন অনুবিভাগ) জহিরুল ইসলাম ১৪ ডিসেম্বর আজকের পত্রিকাকে বলেন, নিরীক্ষা প্রতিবেদনটি এখনো হাতে পাননি। প্রতিবেদন পাওয়ার পর তা পর্যালোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এমপিওভুক্ত বেসরকারি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের ১৯৯০ সাল থেকে কল্যাণ ট্রাস্টের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। অবসর সুবিধা দেওয়া শুরু হয়েছে ২০০৫ সাল থেকে। এই দুই সুবিধা বাবদ শিক্ষকেরা চাকরিকাল অনুযায়ী এককালীন অর্থ পান। সারা দেশে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন ৫ লাখের বেশি।

নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ৬৪ হাজার ৭৭৫টি আবেদন অনিষ্পন্ন রয়েছে। এর মধ্যে স্কুলপর্যায়ের ২৭ হাজার ৮৬২টি, কলেজের ১৭ হাজার ২৭৮টি, মাদ্রাসার ১২ হাজার ৯৬৮টি এবং কারিগরির শিক্ষকদের ৬ হাজার ৬৬৭টি।

আইন অনুযায়ী, শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিও (বেতনের সরকারি অংশ) থেকে চাঁদা হিসেবে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ কেটে রাখা হয়। এর মধ্যে অবসর সুবিধা বোর্ড ৬ শতাংশ এবং কল্যাণ ট্রাস্ট ৪ শতাংশ পায়। এর বাইরে বিশেষ বা থোক বরাদ্দ এবং বিভিন্ন সময়ে সরকারের দেওয়া সিড মানি বা গচ্ছিত অর্থের লভ্যাংশ পায় সংস্থা দুটি।

শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের নিরীক্ষা প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, ১৮ জন ভুয়া ইনডেক্সধারীকে বোর্ড তহবিল থেকে ১ কোটি ৪২ লাখ ৭৮ হাজার ৫৬৭ টাকা দেওয়া হয়েছে। শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসর সুবিধা পরিশোধের আগে ইনডেক্স যাচাই আবশ্যক। অথচ ইনডেক্স যাচাই না করে ভুয়া ইনডেক্সের বিপরীতে অর্থ পরিশোধ করায় বোর্ডের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এসব অর্থ আদায় করে বোর্ডের তহবিলে জমা দেওয়ার সুপারিশ করেছে নিরীক্ষা দল।

নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০ জন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর ভাতা প্রাপ্তির আবেদন না করলেও এবং বোর্ড থেকে ব্যাংকে কোনো অ্যাডভাইস না পাঠালেও তাঁদের অনুকূলে ১ কোটি ৩৭ লাখ ৯৬ হাজার ৪৯৭ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। এ ছাড়া একই ইনডেক্সধারীকে একাধিকবার অবসর সুবিধা দেওয়ায় বোর্ডের ১ কোটি চার লাখ ৭২ হাজার ৮৬১ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।

প্রতিবেদনে মিথ্যা তথ্য দিয়ে জাল আবেদনপত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন হিসাবে ৫৮ লাখ ৭৬ হাজার ৩৮ টাকা এবং ভুয়া ইনডেক্স নম্বর ব্যবহার করে সফটওয়্যার ভেন্ডরের মাধ্যমে ৩১ লাখ ৯০ হাজার ৭৭৫ টাকা পরিশোধের তথ্যও উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বোর্ডের আইন লঙ্ঘন করে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে না রেখে বেসরকারি ব্যাংকে রাখা আমানতের টাকা ফেরত না পাওয়ায় বোর্ডের আর্থিক ক্ষতি ৬৩৯ কোটি ৬০ লাখ ৬১ হাজার ৭২৫ টাকা। এসব টাকা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে জমা করা আবশ্যক বলে সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিবেদনে অবসর সুবিধা বোর্ডের জন্য আদায় করা ২৮ কোটি ৬৫ লাখ ৭২ হাজার ৪৪০ টাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের তহবিল থেকে অবসর সুবিধা বোর্ডের তহবিলে জমা করার সুপারিশ করা হয়েছে।

নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এমপিওর চেক নগদায়নপূর্বক নির্ধারিত সময়ে ৫২৩ কোটি ৭৩ লাখ ৯৮ হাজার ৪৭৩ টাকা জমা হয়নি। স্থায়ী তহবিলের প্রাপ্ত সুদ চলতি তহবিলে জমা না দেওয়ায় ৫৬ কোটি ৭১ লাখ ২১ হাজার ৫২৮ টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া তহবিল যথাযথভাবে সংরক্ষণ না হওয়ায় ৯১ লাখ ৩৫ হাজার, যথাযথ নিয়মে হিসাবভুক্ত না করায় ২৯ কোটি ২০ লাখ ৬৯ হাজার ১৫৭ টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।

পরামর্শক বাবদ বিল পরিশোধ করায় অনিয়মিত ব্যয় ৪৫ লাখ ৩ হাজার ৪৮০ টাকা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এ ছাড়া প্রাপ্যতা না থাকলেও সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ৭ লাখ ৬৭ হাজার ৬৮০ টাকা পারিতোষিক দেওয়া হয়েছে। আবার অতিরিক্ত অবসর সুবিধা পরিশোধ করায় ৫ লাখ ৭৯ হাজার ৮২৪ টাকা, ভ্যাট না কাটায় ১ লাখ ৯২ হাজার ৫৫৩ টাকা, চেকের ব্যবহার না থাকলেও এ খাতে ব্যয় দেখিয়ে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৩৬৫ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এসব ব্যয়কে প্রতিবেদনে আর্থিক ক্ষতি হিসেবে উল্লেখ করে এসব অর্থ আদায় করে বোর্ড তহবিলে জমা দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

এ ছাড়া প্রতিবেদনে উৎসে কর না কাটায় ১ লাখ ৬ হাজার ১১ টাকা, ক্রয় সিলিং না মেনে ২৬ লাখ ১৬ হাজার ৩০৪ টাকার অতিরিক্ত ব্যয়, বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা না মেনে ১ কোটি ৮ লাখ ২৮ হাজার ৭০৭ টাকা ব্যয় এবং আর্থিক ক্রয়সীমার অতিরিক্ত ৭ লাখ ৬১ হাজার ৯৪১ টাকা ব্যয়ের তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে অবসর সুবিধা বোর্ডের তহবিল ব্যবস্থাপনা ও সম্পাদিত কার্যাবলির প্রতিবেদন প্রণয়ন না করা এবং অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা প্রতিবেদন প্রণয়ন বোর্ডের আইন ও প্রবিধান লঙ্ঘিত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বোর্ড কর্তৃক ক্যাশবই ও স্টক রেজিস্ট্রার সংরক্ষণ করা হয়নি। তহবিল প্রাপ্তি নিশ্চিত না করে অধিক হারে পরিশোধের অঙ্গীকার করার অবসর সুবিধা বোর্ডের দায় উত্তরোত্তর বাড়ছে।

নিরীক্ষা প্রতিবেদনের আপত্তিগুলোর বিষয়ে জানতে চাইলে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ডের সদস্যসচিব (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক মো. জাফর আহম্মদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, নিরীক্ষার আপত্তিগুলোর জবাব দেওয়া হয়েছে। সে আলোকে মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নেবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

আজকের রাশিফল: ফেসবুকে জ্ঞান ঝাড়বেন না— বন্ধুরা জানে আপনি কপি মাস্টার, স্ত্রীর কথা শুনুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত