Ajker Patrika

দেশজুড়ে ইমোর মাধ্যমে প্রতারণা কেন্দ্র লালপুর

ইমাম হাসান মুক্তি, প্রতিনিধি, লালপুর (নাটোর)
আপডেট : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৯: ৩৭
দেশজুড়ে ইমোর মাধ্যমে প্রতারণা কেন্দ্র লালপুর

ইতালিপ্রবাসী যুবক রেজুয়ান কবির শাকিবের মা-বাবা থাকেন রাজধানীর দক্ষিণ কাফরুলের বাসায়। গত বছরের ডিসেম্বরে তাঁর মায়ের নম্বরে ফোন আসে ছেলে শাকিবের ‘ইমো’ অ্যাপ থেকে। ফোন করা যুবক তাঁকে জানান, আপনার ছেলেকে ইতালি পুলিশ আটক করেছে। দেড় লাখ টাকা না দিলে জেলে পাঠাবে। টাকা পাঠানোর জন্য পাঁচটি নম্বরও দেওয়া হয়। ছেলের বিপদ দেখে শাকিবের বাবা মুনসুর রহমান ধারদেনা করে দেড় লাখ টাকা পাঠিয়ে দেন সেই সব নম্বরে। পরে ছেলের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন, তিনি ডিজিটাল প্রতারণার শিকার হয়েছিলেন।

শাকিবের বাবা মুনসুর রহমান অবশ্য হাল ছাড়েননি। রাজধানীর কাফরুল থানায় তিনি মামলা করেন। সে মামলার তদন্তে নেমে ডিবির সাইবার ক্রাইম শাখার কর্মকর্তারা অপরাধীকে শনাক্ত করেন। এরপর ৮ জুন পুলিশ নাটোরের লালপুর থেকে মাসুদ রানা নামের সেই যুবককে গ্রেপ্তার করে।

ঘটনা আরও আছে। সৌদি আরবের একটি কোম্পানির কর্মচারী মিজানুর রহমানের পরিবার থাকে মৌলভীবাজারের গ্রামের বাড়িতে। জুলাই মাসে মিজানের ইমো নম্বর থেকে ফোন আসে স্ত্রী লিপি আক্তারের ইমো নম্বরে। অপরিচিত লোকটি তাঁকে জানান, মিজান সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। দ্রুত টাকা লাগবে। লিপি আক্তার সঙ্গে সঙ্গে ১০ হাজার পাঠিয়ে দেন। 

প্রতারকেরা একইভাবে মিজানের আরও কয়েকজন আত্মীয়ের কাছ থেকে আরও ৫০ হাজার হাতিয়ে নেন। জানতে চাইলে নাটোরের পুলিশ সুপার (এসপি) লিটন কুমার সাহা বলেন, আত্মীয়স্বজনের নামে ইমোতে বিপদের কথা বলে টাকা চাইলে যাচাই-বাছাই করা উচিত। যারা এ ব্যাপারে সচেতন নয়, তারাই বিপদে পড়ছে। 

তবে এ মামলার তদন্তে নেমে ডিবির সাইবার অপরাধ শাখা গত ২৫ আগস্ট নাটোরের লালপুর থেকে পলাশ আলী ও সাব্বির হোসেন নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করে। এদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে, ইমো অ্যাপ হ্যাকিং করা এক বিশাল চক্রের হদিস। এই চক্রের মূল কেন্দ্র নাটোরের লালপুর উপজেলা। সেখানকার শতাধিক যুবক নিজেদের এই অপরাধে যুক্ত করে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। সারা দেশে তাঁদের রয়েছে বিস্তৃত নেটওয়ার্ক। এই দলে যেমন আছেন প্রকৌশলী, তেমনটি আছেন সাধারণ মুদিদোকানি-দিনমজুরও।

নাটোরের পুলিশ কর্মকর্তারাও এ তথ্য স্বীকার করেছেন। তাঁরা বলেছেন, গত এক বছরে শুধু লালপুর উপজেলা থেকেই ইমো অ্যাপ হ্যাক করে প্রতারণা করার অভিযোগে ৪৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে ১২টি মামলা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এ সময় চক্রের সদস্যরা সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফজলুর রহমান বলেছেন, বিষয়টি বেশ ভয়াবহ। এটা লালপুর থেকে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। সেপ্টেম্বরে নাটোর জেলার মাসিক আইনশৃঙ্খলা সভায়ও এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সবার সহযোগিতায় এই চক্রের মূল উৎপাটনে পুলিশ দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। 

কেন লালপুরে এই অপরাধ
 স্থানীয় লোকজন জানান, লালপুরের কোনো এক ব্যক্তি ২০১৮ সালে এক প্রবাসীর ইমো নম্বরের দখল নিয়ে প্রতারণা করে বেশ কিছু টাকা আদায় করে নেন। এরপর তিনি দল ভারী করে এ কাজে নেমে পড়েন। তাঁর দেখাদেখি শুরু হয় প্রতারণার কাজ। এখন লালপুরের পাশের অনেক তরুণ-যুবকও এ কাজে নেমে পড়েছেন। র‍্যাব-৫-এর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইমো অ্যাপ হ্যাকিংয়ের অভিযোগে যাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাঁদের বাড়ি লালপুরের মোহরকয়া, চকবাদকয়া, পাইকপাড়া, বিলমাড়িয়া ভাঙাপাড়া, পুরোনো বাজার, রামকৃষ্ণপুরের মোহরকয়া নতুনপাড়া, মনিহারপুর, বিলমাড়িয়া, নাগশোষা, মোহরকয়া পূর্বপাড়া, রামপাড়া, নওপাড়া গ্রামে। এই গ্রামগুলো পাশাপাশি।

সাইবার অপরাধ সম্পর্কে জানেন এমন একজন পুলিশ কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ইমো প্রতারণার আগে জিনের বাদশার নামে যে প্রতারণা হতো, তার কেন্দ্র ছিল গাইবান্ধার ঘাঘট উপজেলা। আর মোবাইল ব্যাংকিং প্রতারণার কেন্দ্র ছিল মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলা। সেই ধারায় এখন ইমো হ্যাকিং হচ্ছে লালপুরে।  

কীভাবে হ্যাক হয়
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইমো হলো কম শিক্ষিত মানুষের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয়। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের প্রবাসী শ্রমিকদের প্রায় সবাই এই অ্যাপ ব্যবহার করে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এই অ্যাপে কম ব্যান্ডউইথড লাগে, আবার একসঙ্গে একাধিক ডিভাইসে ব্যবহার করা যায়। এতে একজনের নম্বর সেভ করলেই অনেকের নম্বর পাওয়া যায়। যাঁরা ব্যবহার করেন, তাঁরা কম শিক্ষিত বলে ডিজিটাল নিরাপত্তা নিয়ে তাঁদের মাথাব্যথা কম। হ্যাকাররা সেই সুযোগই নেন।

সিআইডির সাইবার পুলিশ কেন্দ্রের বিশেষ পুলিশ সুপার আশরাফুল ইসলাম বলেন, ইমো হ্যাক করা অনেক কঠিন কাজ। এখানে যেটা হয়, টার্গেট ব্যক্তির কাছে ওটিপি কোড পাঠানো হয়। পরে ফুসলিয়ে সেই কোড নিয়ে নেন প্রতারক চক্র। সেটা দিয়েই ইমো আইডির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন তাঁরা। 

চক্র যেভাবে কাজ করে
লালপুরের যেসব গ্রাম থেকে ৪৯ জন যুবকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সেসব গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, ওই সব গ্রামের শিক্ষিত-অশিক্ষিত, এমনকি গৃহিণীরাও ইমো প্রতারণার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছেন। গ্রামে আগে যাঁরা দিনমজুর ছিলেন, প্রতারণার আয়ে তাঁদের জীবন বদলে গেছে।

গ্রেপ্তার হওয়া যুবকেরা স্বীকার করেছেন, এ কাজে বিভিন্ন স্তরে লোক রয়েছে। প্রতিটি দলে ৮-১০ জন করে সদস্য আছেন। এর প্রথম দলটি ‘সার্ভিল্যান্স লেয়ার’ নামে পরিচিত। তারা শিকারের জন্য লোকের খোঁজ করে। এরপর আছে দ্বিতীয় দল। তারা অ্যাপটি শুধু হ্যাক করে দেয়। এদের পরিচিত নাম হ্যাকিং লেয়ার। এরপরই যে চক্র আছে, তাদের কাজ কথাবার্তা বলা। সবশেষ দলটির কাজ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করা। কাজ অনুসারে প্রতিটি ভাগের জন্য টাকার পরিমাণও ঠিক করা আছে। প্রতিদিন একটি দল ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা আয় করে।

যাঁরা ধরা পড়েছেন
গত ২৫ মে র‍্যাব-৫-এর নাটোর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মির্জা সালাহ উদ্দিনের নেতৃত্বে ইমো হ্যাকার চক্রের ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই দলে উল্লেখযোগ্য ছিলেন মোহরকয়া গ্রামের মো. পাপ্পু আলী (১৯), চকবাদকয়া গ্রামের মো. অন্তর উদ্দিন ওরফে বিল্লু (১৮), উত্তর লালপুর পুরোনো বাজার গ্রামের মো. আশিকুর রহমান বিন্টু (২২), রামকৃষ্ণপুর গ্রামের মো. মহিন (২১)। ৮ জুন গ্রেপ্তার হন লালপুরের মাসুদ রানা। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মাসুদ রানা স্বীকার করেন, একসময় তিনি দিনমজুর ছিলেন। এখন ইমো প্রতারণার কাজ করেন। দুই বছর ধরে তিনি এ কাজ করে আসছেন। তাঁর নিজের ২১টি সিমকার্ড আছে, যার একটিরও রেজিস্ট্রেশন নেই। প্রতারণার জন্য তাঁর নয়টি মোবাইল ফোনসেট আছে।

ডিবির হাতে গ্রেপ্তার হওয়া পলাশ পেশায় টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার। এ কাজের আগে তিনি একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। এখন সব ছেড়ে প্রতারণা শুরু করেছেন। তাঁর সঙ্গে ধরা পড়া সাব্বির স্কুলে পড়ে। তাঁরা দুজনে দুই বছর ধরে এ কাজ করে আসছেন।

গত ১১ জুন র‍্যাবের হাতে ধরা পড়েন ছয়জন। এদের দলনেতা মোহরকয়া গ্রামের আব্দুল আল মামুন এক বছর ধরে প্রতারণা করে আসছিলেন। লালপুরের পাশের উপজেলা রাজশাহীর বাঘার চণ্ডীপুর গ্রামের মো. মাজেদুল ইসলাম (২৪), বানিয়াপাড়া গ্রামের মো. জিসান আহমেদকেও প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। গত ২০ আগস্ট গ্রেপ্তার হওয়া আশিক ও সাগর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে স্বীকার করেন খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার বিকাশ এজেন্ট ইনসান তালুকদারের কাছ থেকে তাঁরা ৪৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

জানতে চাইলে খুলনার দিঘলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রিপন কুমার সরকার বলেন, এ রকম অনেক ঘটনা তাঁরা আগেও ঘটিয়েছেন।

জানতে চাইলে প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ জেনিফার আলম বলেছেন, যেকোনো তথ্য নিরাপদ এবং অন্যের ধরাছোঁয়ার বাইরে রাখার জন্য মোবাইল বা ডিজিটাল ডিভাইসে ‘টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন’ চালু রাখা উচিত। তাহলে আপনার অনুমতি ছাড়া আইডিতে প্রবেশ করা যাবে না। তা ছাড়া জিমেইল আইডি, পাসওয়ার্ড এবং ওটিপি নম্বর যদি কেউ শেয়ার না করেন, তাহলে কখনোই প্রতারণার শিকার হবেন না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ডেভিল হান্ট-২: এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার ৮ হাজার ৫৯৭

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ডেভিল হান্ট-২: এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার ৮ হাজার ৫৯৭

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

আজ বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।

পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এ সারা দেশে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২ লাখ ৫৮ হাজার ১৬৮টি মোটরসাইকেল ও ২ লাখ ৬৪ হাজার ৪১১টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ৩ হাজার ৩৯৪টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।

অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

বিষয়:

অপরাধ
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ডেভিল হান্ট-২: এক দিনে আরও ৬৯৮ জন গ্রেপ্তার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ডেভিল হান্ট-২: এক দিনে আরও ৬৯৮ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।

পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২৮ হাজার ৭৬৬টি মোটরসাইকেল ও ৪৩ হাজার ৩৫২টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ২৯১টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।

অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদিকে গুলির ঘটনায় সন্দেহভাজন ফয়সাল ওরফে দাউদ কে, মাস্ক পরা ব্যক্তিটিই কি তিনি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ০৫
হাদি হত্যা মামলায় প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ। ছবি: সংগৃহীত
হাদি হত্যা মামলায় প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ। ছবি: সংগৃহীত

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।

হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।

দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’

পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।

এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম।
গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম।

আলোচিত ফয়সাল করিম কে?

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।

২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।

ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।

২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।

২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।

অভ্যুত্থানের অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ফয়সালের দ্রুত জামিন নিয়ে প্রশ্ন সবার

জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।

মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।

জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খুনের পর মোবাইল, ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট, ‘গৃহকর্মী আয়েশা’র পরিচয় মেলেনি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৫৭
ছবি: সিসিটিভির ফুটেজ থেকে নেওয়া
ছবি: সিসিটিভির ফুটেজ থেকে নেওয়া

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।

স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।

পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।

মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।

মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত