
পাকিস্তানের সাবেক গোয়েন্দা প্রধান আটক হয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত শুরু হয় গত বছরই। ওই সময় পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন রানা সানাউল্লাহ খান। বর্তমানে তিনি প্রধানমন্ত্রীর রাজনীতি বিষয়ক বিশেষ সহকারী।
সোমবার (১২ আগস্ট) গোয়েন্দা প্রধান আটক হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় সানাউল্লাহ জিও নিউজকে বলেন, এটি একটি ‘খুবই অস্বাভাবিক ঘটনা এবং আমি মনে করি না যে এই স্তরে এর আগে এমন কোনো উদাহরণ আছে।’
তিনি বলেন, সরকার সচেতন যে, সাবেক গোয়েন্দা প্রধানের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে এবং অন্যান্য বিষয়েও তাঁর নাম উঠে এসেছে। এই পর্যায়ে এমন পদক্ষেপ আসবে মানুষ এমনটি ভাবতেই পারেনি। এই পদক্ষেপটি জবাবদিহির ব্যবস্থার জন্য সেনাবাহিনীর সুনাম এবং আত্মবিশ্বাস বাড়াবে বলেই মনে করেন তিনি।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা আসিফ জিও নিউজ শো ‘আজ শাহজেব খানজাদা কে সাথ’–এ একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘অবসর নেওয়ার পর থেকে রাজনৈতিক দৃশ্যপটে জেনারেল ফয়েজের অবশ্যই একটি হাত রয়েছে। সবকিছু জেনেও তিনি বিরত থাকতে পারেননি এবং জল ঘোলা করতে চেয়েছিলেন। যে ব্যক্তি পেছনে থেকে কলকাঠি নাড়তে অপরিমেয় এবং সীমাহীন শক্তি প্রয়োগ করেন, তাঁদের জন্যই ব্যবস্থায় ক্ষত তৈরি হয়।’
খাজা আসিফ বলেন, জেনারেল হামিদ অবসর নেওয়ার পর ‘সরাসরি আরও বেশি’ করে ভূমিকা রেখেছিলেন। পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানের গ্রেপ্তারে গত বছর যে দেশব্যাপী সংঘাত শুরু হয়েছিল তার উল্লেখ করে তিনি সাবেক গোয়েন্দা প্রধানের ‘৯ মে যা ঘটেছিল তাতে ভূমিকা থাকতে পারে’ বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি না। তবে ঘটনাগুলোতে তাঁর দিকেই আঙুল উঠেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রে জানা গেছে, জেনারেল হামিদ তাড়াহুড়ো করে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং ২০২২ সালের নভেম্বরে হাইকমান্ডের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠান। ২০১৯ সালের জুনে তাঁকে আইএসআই প্রধান করা হয়।
২০২১ সালের শেষ প্রান্তিকে আইএসআই–এর নতুন প্রধান হিসেবে লেফটেন্যান্ট জেনারেল নাদিম আঞ্জুমকে নিয়োগের বিষয়ে সেনাবাহিনী এবং পিটিআই সরকারের মধ্যে কথিত টানাপোড়েনের মধ্যে জেনারেল হামিদ অন্যতম কুশীলব ছিলেন।
সেনাবাহিনী ২০২১ সালের ৬ অক্টোবর ঘোষণা দেয়, জেনারেল হামিদকে পেশোয়ার কর্পস কমান্ডার নিযুক্ত করা হয়েছে এবং লেফটেন্যান্ট জেনারেল আঞ্জুমকে তাঁর স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় (পিএমও) তিন সপ্তাহ পর্যন্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল আঞ্জুমের নিয়োগের আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তি জারি করেনি। ফলে ওই সময় বেসামরিক–সামরিক প্রশাসনের সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে নানা জল্পনা শুরু হয়েছিল।
বিলম্বের পরে পিএমও অবশেষে ২০২১ সালের ২৬ অক্টোবর নতুন আইএসআই প্রধান হিসেবে লেফটেন্যান্ট জেনারেল নাদিম আঞ্জুমকে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয়। ইমরান খান পরে বলেছিলেন, তিনি কখনই ‘নিজের লোককে সেনাপ্রধান বানাতে’ চাননি। তিনি সেনাবাহিনীর বিষয়ে ‘কখনো হস্তক্ষেপ করেননি’।
২০২২ সালের নভেম্বরে দুটি শীর্ষ সামরিক অফিসের জন্য সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায় জেনারেল হেডকোয়ার্টার্সের অন্তর্ভুক্ত করা কিছু নাম অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের কাছে এসেছিল। ওই তালিকায় ছয়জন সিনিয়র জেনারেলের মধ্যে জেনারেল হামিদের নামও ছিল।
বাহাওয়ালপুর কর্পস কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আগে জেনারেল হামিদ পেশোয়ারে একই পদে কাজ করেছিলেন। সাবেক এই গোয়েন্দা প্রধান এক দশক ধরে দেশের রাজনৈতিক ভূখণ্ডে অনেক বিতর্কের বিষয় হয়ে রয়েছেন।
জেনারেল হামিদের নাম প্রথম জনসাধারণের নজরে আসে ২০১৭ সালের নভেম্বরে। একটি গোপন সমঝোতার মাধ্যমে তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তানের ফৈজাবাদ অবস্থান কর্মসূচি শেষ করতে সহায়তা করেছিলেন জেনারেল হামিদ।
ঘটনার একটি স্বতঃপ্রণোদিত নোটিশে, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিলেন, আইএসআই, ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো, সামরিক গোয়েন্দা এবং আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর এসব সংস্থার কখনো নিজ নিজ পরিমণ্ডল অতিক্রম করা উচিত নয়।
পিএমএল–এন (মুসলিম লীগ–এন) নেতা নওয়াজ শরীফ এবং তাঁর মেয়ে মরিয়ম নওয়াজ গত বছর তাঁর কঠোর সমালোচনা করেছিলেন। তাঁদের অভিযোগ, জেনারেল হামিদ তাঁদের দোষী সাব্যস্ত হওয়া এবং পিটিআই–এর অনুগত সেট–আপকে সমর্থন দিয়েছিলেন।
২০১৮ সালের জুলাই মাসে, প্রাক্তন ইসলামাবাদ হাইকোর্টের (আইএইচসি) বিচারক শওকত আজিজ সিদ্দিকী একটি নিরাপত্তা সংস্থার কর্মীদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এই সংস্থার লোকরা বিচারিক কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করছে। তিনি আরও অভিযোগ করেন, এজেন্সিগুলো নির্বাচনের আগে নওয়াজ এবং মরিয়মকে ভোটের বাইরে রাখতে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। পরে ওই বিচারককে বরখাস্ত করা হয়।
যাইহোক, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে, ওই বিচারক তাঁর অপসারণের ঘটনায় বেশ কয়েকজন অবসরপ্রাপ্ত সামরিক জেনারেলের পাশাপাশি কিছু প্রাক্তন বিচারকের নামও উল্লেখ করেছিলেন।
সাবেক বিচারপতির পক্ষে সিনিয়র কৌঁসুলি হামিদ খান তাঁর আবেদনে বিবাদী হিসেবে নাম দেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টে একটি সংশোধিত আবেদন করেন। সেখানে সাবেক সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়া, জেনারেল হামিদ, তিন অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার-ইরফান রামায়, ফয়সাল মারওয়াত এবং তাহির ওয়াফির নাম ছিল। সেই সঙ্গে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপতি আনোয়ার খান কাসি এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন রেজিস্ট্রার আরবাব মুহাম্মদ আরিফের নামও ছিল।
জেনারেল হামিদ পিটিশনের প্রতিক্রিয়ায় নওয়াজ এবং মরিয়মের আটক দীর্ঘায়িত করার জন্য ইসলামাবাদ হাইকোর্ট বেঞ্চ গঠনে তাঁর হস্তক্ষেপের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, বিচারক বিনা কারণে তাঁকে এই মামলায় টেনে এনেছেন।
এ ছাড়া তৎকালীন মানবাধিকার মন্ত্রী রিয়াজ পিরজাদা ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে দাবি করেছিলেন, জেনারেল হামিদ নিষিদ্ধ তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানকে (টিটিপি) দেশে ফিরিয়ে আনতে চেয়েছিলেন।
২০২৩ সালের মে মাসে, সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ফয়সাল ভাওদা জেনারেল হামিদকে আল–কাদির ট্রাস্ট মামলার মাস্টারমাইন্ড এবং সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী হিসেবে অভিযুক্ত করেছিলেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী ৫ হাজার কোটি রুপি বৈধ করার শর্তে বাহরিয়া টাউন লিমিটেডের কাছ থেকে কয়েক শ কোটি রুপি এবং বিপুল জমি পেয়েছিলেন। পিটিআই সরকারের আমলে যুক্তরাজ্যে সেই অর্থ ধরা পড়ে এবং দেশে ফেরত আনা হয়।
যে মামলায় জেনারেল হামিদ সামরিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন সেই মামলার এজাহার অনুসারে, ২০১৭ সালের ১২ মে পাকিস্তান রেঞ্জারস এবং আইএসআই–এর কর্মকর্তারা টপ সিটির অফিসে এবং সংস্থার মালিক মইজের বাসভবনে অভিযান চালিয়ে সোনা এবং হিরার অলংকার, নগদ অর্থ এবং মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায়। কথিত সন্ত্রাসবাদের মামলায় তাঁরা এ অভিযান চালান।
এজাহারে আরও বলা হয়, জেনারেল হামিদের ভাই সরদার নাজাফ এ ঘটনায় মধ্যস্থতা করেন এবং সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেন। মইজ পরে বেকসুর খালাস পান। এজাহারে আরও দাবি করা হয়, জেনারেল হামিদ মইজের সঙ্গে তাঁর চাচাতো ভাই—সেনাবাহিনীর একজন ব্রিগেডিয়ার—একটি বৈঠকের ব্যবস্থা করার জন্য যোগাযোগ করেছিলেন।
বৈঠকের সময় জেনারেল হামিদ আবেদনকারীকে বলেছিলেন, অভিযানের সময় ৪০০ তোলা স্বর্ণ ও নগদ টাকা ছাড়া কিছু জিনিসপত্র তিনি ফিরিয়ে দেবেন। এ ছাড়া আইএসআই–এর অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার নাঈম ফখর এবং অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার গাফফার অভিযোগকারীকে নগদ ৪ কোটি রুপি দিতে এবং কয়েক মাসের জন্য একটি বেসরকারি এএপি টিভি নেটওয়ার্ককে স্পনসর করতে জোর জবরদস্তি করেন।
সাবেক আইএসআই কর্মকর্তা ইরতাজা হারুন, সর্দার নাজাফ, ওয়াসিম তাবিশ, জাহিদ মেহমুদ মালিক এবং মোহাম্মদ মুনিরও ওই হাউজিং সোসাইটির অবৈধ দখলে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

পাকিস্তানের সাবেক গোয়েন্দা প্রধান আটক হয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত শুরু হয় গত বছরই। ওই সময় পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন রানা সানাউল্লাহ খান। বর্তমানে তিনি প্রধানমন্ত্রীর রাজনীতি বিষয়ক বিশেষ সহকারী।
সোমবার (১২ আগস্ট) গোয়েন্দা প্রধান আটক হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় সানাউল্লাহ জিও নিউজকে বলেন, এটি একটি ‘খুবই অস্বাভাবিক ঘটনা এবং আমি মনে করি না যে এই স্তরে এর আগে এমন কোনো উদাহরণ আছে।’
তিনি বলেন, সরকার সচেতন যে, সাবেক গোয়েন্দা প্রধানের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে এবং অন্যান্য বিষয়েও তাঁর নাম উঠে এসেছে। এই পর্যায়ে এমন পদক্ষেপ আসবে মানুষ এমনটি ভাবতেই পারেনি। এই পদক্ষেপটি জবাবদিহির ব্যবস্থার জন্য সেনাবাহিনীর সুনাম এবং আত্মবিশ্বাস বাড়াবে বলেই মনে করেন তিনি।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা আসিফ জিও নিউজ শো ‘আজ শাহজেব খানজাদা কে সাথ’–এ একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘অবসর নেওয়ার পর থেকে রাজনৈতিক দৃশ্যপটে জেনারেল ফয়েজের অবশ্যই একটি হাত রয়েছে। সবকিছু জেনেও তিনি বিরত থাকতে পারেননি এবং জল ঘোলা করতে চেয়েছিলেন। যে ব্যক্তি পেছনে থেকে কলকাঠি নাড়তে অপরিমেয় এবং সীমাহীন শক্তি প্রয়োগ করেন, তাঁদের জন্যই ব্যবস্থায় ক্ষত তৈরি হয়।’
খাজা আসিফ বলেন, জেনারেল হামিদ অবসর নেওয়ার পর ‘সরাসরি আরও বেশি’ করে ভূমিকা রেখেছিলেন। পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানের গ্রেপ্তারে গত বছর যে দেশব্যাপী সংঘাত শুরু হয়েছিল তার উল্লেখ করে তিনি সাবেক গোয়েন্দা প্রধানের ‘৯ মে যা ঘটেছিল তাতে ভূমিকা থাকতে পারে’ বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি না। তবে ঘটনাগুলোতে তাঁর দিকেই আঙুল উঠেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রে জানা গেছে, জেনারেল হামিদ তাড়াহুড়ো করে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং ২০২২ সালের নভেম্বরে হাইকমান্ডের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠান। ২০১৯ সালের জুনে তাঁকে আইএসআই প্রধান করা হয়।
২০২১ সালের শেষ প্রান্তিকে আইএসআই–এর নতুন প্রধান হিসেবে লেফটেন্যান্ট জেনারেল নাদিম আঞ্জুমকে নিয়োগের বিষয়ে সেনাবাহিনী এবং পিটিআই সরকারের মধ্যে কথিত টানাপোড়েনের মধ্যে জেনারেল হামিদ অন্যতম কুশীলব ছিলেন।
সেনাবাহিনী ২০২১ সালের ৬ অক্টোবর ঘোষণা দেয়, জেনারেল হামিদকে পেশোয়ার কর্পস কমান্ডার নিযুক্ত করা হয়েছে এবং লেফটেন্যান্ট জেনারেল আঞ্জুমকে তাঁর স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় (পিএমও) তিন সপ্তাহ পর্যন্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল আঞ্জুমের নিয়োগের আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তি জারি করেনি। ফলে ওই সময় বেসামরিক–সামরিক প্রশাসনের সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে নানা জল্পনা শুরু হয়েছিল।
বিলম্বের পরে পিএমও অবশেষে ২০২১ সালের ২৬ অক্টোবর নতুন আইএসআই প্রধান হিসেবে লেফটেন্যান্ট জেনারেল নাদিম আঞ্জুমকে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয়। ইমরান খান পরে বলেছিলেন, তিনি কখনই ‘নিজের লোককে সেনাপ্রধান বানাতে’ চাননি। তিনি সেনাবাহিনীর বিষয়ে ‘কখনো হস্তক্ষেপ করেননি’।
২০২২ সালের নভেম্বরে দুটি শীর্ষ সামরিক অফিসের জন্য সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায় জেনারেল হেডকোয়ার্টার্সের অন্তর্ভুক্ত করা কিছু নাম অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের কাছে এসেছিল। ওই তালিকায় ছয়জন সিনিয়র জেনারেলের মধ্যে জেনারেল হামিদের নামও ছিল।
বাহাওয়ালপুর কর্পস কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আগে জেনারেল হামিদ পেশোয়ারে একই পদে কাজ করেছিলেন। সাবেক এই গোয়েন্দা প্রধান এক দশক ধরে দেশের রাজনৈতিক ভূখণ্ডে অনেক বিতর্কের বিষয় হয়ে রয়েছেন।
জেনারেল হামিদের নাম প্রথম জনসাধারণের নজরে আসে ২০১৭ সালের নভেম্বরে। একটি গোপন সমঝোতার মাধ্যমে তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তানের ফৈজাবাদ অবস্থান কর্মসূচি শেষ করতে সহায়তা করেছিলেন জেনারেল হামিদ।
ঘটনার একটি স্বতঃপ্রণোদিত নোটিশে, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিলেন, আইএসআই, ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো, সামরিক গোয়েন্দা এবং আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর এসব সংস্থার কখনো নিজ নিজ পরিমণ্ডল অতিক্রম করা উচিত নয়।
পিএমএল–এন (মুসলিম লীগ–এন) নেতা নওয়াজ শরীফ এবং তাঁর মেয়ে মরিয়ম নওয়াজ গত বছর তাঁর কঠোর সমালোচনা করেছিলেন। তাঁদের অভিযোগ, জেনারেল হামিদ তাঁদের দোষী সাব্যস্ত হওয়া এবং পিটিআই–এর অনুগত সেট–আপকে সমর্থন দিয়েছিলেন।
২০১৮ সালের জুলাই মাসে, প্রাক্তন ইসলামাবাদ হাইকোর্টের (আইএইচসি) বিচারক শওকত আজিজ সিদ্দিকী একটি নিরাপত্তা সংস্থার কর্মীদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এই সংস্থার লোকরা বিচারিক কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করছে। তিনি আরও অভিযোগ করেন, এজেন্সিগুলো নির্বাচনের আগে নওয়াজ এবং মরিয়মকে ভোটের বাইরে রাখতে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। পরে ওই বিচারককে বরখাস্ত করা হয়।
যাইহোক, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে, ওই বিচারক তাঁর অপসারণের ঘটনায় বেশ কয়েকজন অবসরপ্রাপ্ত সামরিক জেনারেলের পাশাপাশি কিছু প্রাক্তন বিচারকের নামও উল্লেখ করেছিলেন।
সাবেক বিচারপতির পক্ষে সিনিয়র কৌঁসুলি হামিদ খান তাঁর আবেদনে বিবাদী হিসেবে নাম দেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টে একটি সংশোধিত আবেদন করেন। সেখানে সাবেক সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়া, জেনারেল হামিদ, তিন অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার-ইরফান রামায়, ফয়সাল মারওয়াত এবং তাহির ওয়াফির নাম ছিল। সেই সঙ্গে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপতি আনোয়ার খান কাসি এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন রেজিস্ট্রার আরবাব মুহাম্মদ আরিফের নামও ছিল।
জেনারেল হামিদ পিটিশনের প্রতিক্রিয়ায় নওয়াজ এবং মরিয়মের আটক দীর্ঘায়িত করার জন্য ইসলামাবাদ হাইকোর্ট বেঞ্চ গঠনে তাঁর হস্তক্ষেপের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, বিচারক বিনা কারণে তাঁকে এই মামলায় টেনে এনেছেন।
এ ছাড়া তৎকালীন মানবাধিকার মন্ত্রী রিয়াজ পিরজাদা ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে দাবি করেছিলেন, জেনারেল হামিদ নিষিদ্ধ তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানকে (টিটিপি) দেশে ফিরিয়ে আনতে চেয়েছিলেন।
২০২৩ সালের মে মাসে, সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ফয়সাল ভাওদা জেনারেল হামিদকে আল–কাদির ট্রাস্ট মামলার মাস্টারমাইন্ড এবং সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী হিসেবে অভিযুক্ত করেছিলেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী ৫ হাজার কোটি রুপি বৈধ করার শর্তে বাহরিয়া টাউন লিমিটেডের কাছ থেকে কয়েক শ কোটি রুপি এবং বিপুল জমি পেয়েছিলেন। পিটিআই সরকারের আমলে যুক্তরাজ্যে সেই অর্থ ধরা পড়ে এবং দেশে ফেরত আনা হয়।
যে মামলায় জেনারেল হামিদ সামরিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন সেই মামলার এজাহার অনুসারে, ২০১৭ সালের ১২ মে পাকিস্তান রেঞ্জারস এবং আইএসআই–এর কর্মকর্তারা টপ সিটির অফিসে এবং সংস্থার মালিক মইজের বাসভবনে অভিযান চালিয়ে সোনা এবং হিরার অলংকার, নগদ অর্থ এবং মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায়। কথিত সন্ত্রাসবাদের মামলায় তাঁরা এ অভিযান চালান।
এজাহারে আরও বলা হয়, জেনারেল হামিদের ভাই সরদার নাজাফ এ ঘটনায় মধ্যস্থতা করেন এবং সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেন। মইজ পরে বেকসুর খালাস পান। এজাহারে আরও দাবি করা হয়, জেনারেল হামিদ মইজের সঙ্গে তাঁর চাচাতো ভাই—সেনাবাহিনীর একজন ব্রিগেডিয়ার—একটি বৈঠকের ব্যবস্থা করার জন্য যোগাযোগ করেছিলেন।
বৈঠকের সময় জেনারেল হামিদ আবেদনকারীকে বলেছিলেন, অভিযানের সময় ৪০০ তোলা স্বর্ণ ও নগদ টাকা ছাড়া কিছু জিনিসপত্র তিনি ফিরিয়ে দেবেন। এ ছাড়া আইএসআই–এর অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার নাঈম ফখর এবং অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার গাফফার অভিযোগকারীকে নগদ ৪ কোটি রুপি দিতে এবং কয়েক মাসের জন্য একটি বেসরকারি এএপি টিভি নেটওয়ার্ককে স্পনসর করতে জোর জবরদস্তি করেন।
সাবেক আইএসআই কর্মকর্তা ইরতাজা হারুন, সর্দার নাজাফ, ওয়াসিম তাবিশ, জাহিদ মেহমুদ মালিক এবং মোহাম্মদ মুনিরও ওই হাউজিং সোসাইটির অবৈধ দখলে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায়
৪ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
৭ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৯ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৮ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায় তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে সাতটি মামলা রয়েছে। পুলিশ বলছে, ভবনটি বিস্ফোরক তৈরিতে ব্যবহৃত হতো।
আজ শনিবার দুপুরে সরেজমিন দেখা গেছে, হাসনাবাদ বাজারের ফলপট্টি গলিতে উম্মাল কুরা ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসা। মাদ্রাসায় শিশুদের পাঠদান করা হয়। বিস্ফোরণে চার কক্ষের একতলা ভবনটির পশ্চিম পাশের দুটি কক্ষ সম্পূর্ণ ধসে পড়েছে, সিঁড়ির পাশের ছাদের একাংশ উড়ে গেছে এবং সব কটি কক্ষের পিলার ও দেয়ালে ফাটল ধরেছে। ঘটনাস্থলে ককটেল, রাসায়নিক দ্রব্য ও বোমা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক বিভাগের ক্রাইম সিন ইউনিটের কর্মীরা আলামত সংগ্রহ করছেন। তাঁরা পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছেন। ভবনের পাশের একটি ভবনের দোতলার দেয়ালে বিস্ফোরণে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া বিস্ফোরণে পাশের একটি অটোরিকশার গ্যারেজের টিনের ছাউনি উড়ে গেছে। টিনের নিচে চাপা পড়েছিলেন গ্যারেজের ম্যানেজার আবুল কালাম।
আবুল কালাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এত বিকট শব্দ হয়েছে যে আমার কানে তব্দা লেগে যায়। আমি টিনের নিচে চাপা পড়ি। পরে হামাগুড়ি দিয়ে বের হই। এরপর দেখি মাদ্রাসার মধ্যে আগুন জ্বলছে। যারা ভেতরে ছিল, তারা দ্রুত বাচ্চাদের নিয়ে বের হয়ে চলে যায়।’
গ্যারেজের মালিক মোশাররফ হোসেন ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘বিস্ফোরণের পর পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। আমিও বাসা থেকে দৌড়ে আসি। আমার গ্যারেজের দুজন অটোচালক দুই শিশুকে ওই ভবন থেকে বের করেন। এক নারী আর এক শিশুকে নিয়ে চলে যায়। এ সময় আল আমিনও দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। আধা ঘণ্টার মধ্যে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের লোকজন এসে পুরো এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয়।’
মাদ্রাসার পাশের ৫ তলা বাড়ির বাসিন্দা মনোয়ার বলেন, ‘হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পাই। মনে হয়েছিল ভূমিকম্প। কারণ, বিস্ফোরণে সব ভবনে কাঁপুনি লাগে। সবাই চিৎকার করেছিল।’
ওই বাসিন্দা আরও বলেন, ‘মাদ্রাসাটিতে ৩০-৩৫ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করত। তবে শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় মাদ্রাসা বন্ধ ছিল। এ কারণে বড় ধরনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।’
ভবনটির পশ্চিম পাশের এক পাশে তিনটি কক্ষে মাদ্রাসার কার্যক্রম পরিচালিত হতো। অপর পাশের একটি কক্ষে পরিচালক শেখ আল আমিন (৩২), তাঁর স্ত্রী আছিয়া বেগম (২৮) এবং তাঁদের তিন সন্তান নিয়ে সেখানেই থাকতেন। বিস্ফোরণে দুই ছেলে উমায়েত (১০) ও আবদুল্লাহ (৭) আহত হয়। এর মধ্যে আছিয়া ও তাঁর দুই সন্তানকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
পাশের ভবনের বাসিন্দা হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিস্ফোরণে আমাদের ভবনের কিছু অংশ ফেটে গেছে। ঘরের ভেতরের আসবাবও ভেঙে পড়েছে।’
ঘটনাস্থলেই পুলিশ হেফাজতে বসে ছিলেন ভবনমালিক পারভীন বেগম। ভবনের জমি তাঁর পৈতৃক সম্পত্তি। সেখানে লিবিয়ায় থাকা তাঁর দুই ছেলে এই ভবন ২০২২ সালে তৈরি করেন। এরপর হারুন অর রশীদ নামের এক ব্যক্তি এটি মাদ্রাসা করবেন বলে ১০ হাজার টাকায় ভাড়া নেন। পারভীন বেগম বলেন, ‘তিন বছর ধরে আমার বাড়ি ভাড়া নিয়ে মুফতি হারুন অর রশীদ মাদ্রাসা পরিচালনা করতেন। হারুন তাঁর শ্যালক আল আমিন ও শ্যালকের স্ত্রী আছিয়াকে মাদ্রাসা পরিচালনার দায়িত্ব দেন। তিনি মাঝেমধ্যে মাদ্রাসায় আসতেন। আমি নিয়মিত খোঁজখবর নিতাম। কিন্তু মাদ্রাসার আড়ালে কী কার্যক্রম চলছিল, তা বুঝতে পারিনি। আজ এসে দেখি, ভবনের চারপাশ উড়ে গেছে।’
পারভীন বেগমের পাশেই ছিলেন তাঁর ছোট মেয়ে সোহানা। তিনি বলেন, ‘ভাড়া নেওয়ার সময় শুধু হারুন অর রশীদ একাই এসেছিলেন। এরপর তাঁরা মাদ্রাসা পরিচালনা শুরু করেন। তবে তাঁরা আশপাশের কারও সঙ্গে তেমন মিশতেন না।’
পুলিশ ভবনের ভেতর থেকে কেমিক্যাল, ককটেল, ভেস্ট ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস, কম্পিউটার ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা, কোনো বিস্ফোরক তৈরি করতে গিয়ে বিস্ফোরিত হয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে গতকাল বিকেলে জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিস্ফোরণের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট শেখ আল আমিন পলাতক রয়েছেন। তবে কেরানীগঞ্জ থেকে তাঁর স্ত্রী আছিয়া বেগম, আছিয়ার ভাই হারুনের স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তার এবং ঢাকার বাসাবো থেকে আসমানী খাতুন নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, আল আমিনের গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটে। তাঁর বিরুদ্ধে এর আগে ২০১৭ ও ২০২০ সালে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন জেএমবির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে ঢাকা এবং আশপাশের বিভিন্ন থানায় অন্তত সাতটি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার আসমানী খাতুনের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায় তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে সাতটি মামলা রয়েছে। পুলিশ বলছে, ভবনটি বিস্ফোরক তৈরিতে ব্যবহৃত হতো।
আজ শনিবার দুপুরে সরেজমিন দেখা গেছে, হাসনাবাদ বাজারের ফলপট্টি গলিতে উম্মাল কুরা ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসা। মাদ্রাসায় শিশুদের পাঠদান করা হয়। বিস্ফোরণে চার কক্ষের একতলা ভবনটির পশ্চিম পাশের দুটি কক্ষ সম্পূর্ণ ধসে পড়েছে, সিঁড়ির পাশের ছাদের একাংশ উড়ে গেছে এবং সব কটি কক্ষের পিলার ও দেয়ালে ফাটল ধরেছে। ঘটনাস্থলে ককটেল, রাসায়নিক দ্রব্য ও বোমা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক বিভাগের ক্রাইম সিন ইউনিটের কর্মীরা আলামত সংগ্রহ করছেন। তাঁরা পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছেন। ভবনের পাশের একটি ভবনের দোতলার দেয়ালে বিস্ফোরণে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া বিস্ফোরণে পাশের একটি অটোরিকশার গ্যারেজের টিনের ছাউনি উড়ে গেছে। টিনের নিচে চাপা পড়েছিলেন গ্যারেজের ম্যানেজার আবুল কালাম।
আবুল কালাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এত বিকট শব্দ হয়েছে যে আমার কানে তব্দা লেগে যায়। আমি টিনের নিচে চাপা পড়ি। পরে হামাগুড়ি দিয়ে বের হই। এরপর দেখি মাদ্রাসার মধ্যে আগুন জ্বলছে। যারা ভেতরে ছিল, তারা দ্রুত বাচ্চাদের নিয়ে বের হয়ে চলে যায়।’
গ্যারেজের মালিক মোশাররফ হোসেন ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘বিস্ফোরণের পর পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। আমিও বাসা থেকে দৌড়ে আসি। আমার গ্যারেজের দুজন অটোচালক দুই শিশুকে ওই ভবন থেকে বের করেন। এক নারী আর এক শিশুকে নিয়ে চলে যায়। এ সময় আল আমিনও দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। আধা ঘণ্টার মধ্যে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের লোকজন এসে পুরো এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয়।’
মাদ্রাসার পাশের ৫ তলা বাড়ির বাসিন্দা মনোয়ার বলেন, ‘হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পাই। মনে হয়েছিল ভূমিকম্প। কারণ, বিস্ফোরণে সব ভবনে কাঁপুনি লাগে। সবাই চিৎকার করেছিল।’
ওই বাসিন্দা আরও বলেন, ‘মাদ্রাসাটিতে ৩০-৩৫ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করত। তবে শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় মাদ্রাসা বন্ধ ছিল। এ কারণে বড় ধরনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।’
ভবনটির পশ্চিম পাশের এক পাশে তিনটি কক্ষে মাদ্রাসার কার্যক্রম পরিচালিত হতো। অপর পাশের একটি কক্ষে পরিচালক শেখ আল আমিন (৩২), তাঁর স্ত্রী আছিয়া বেগম (২৮) এবং তাঁদের তিন সন্তান নিয়ে সেখানেই থাকতেন। বিস্ফোরণে দুই ছেলে উমায়েত (১০) ও আবদুল্লাহ (৭) আহত হয়। এর মধ্যে আছিয়া ও তাঁর দুই সন্তানকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
পাশের ভবনের বাসিন্দা হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিস্ফোরণে আমাদের ভবনের কিছু অংশ ফেটে গেছে। ঘরের ভেতরের আসবাবও ভেঙে পড়েছে।’
ঘটনাস্থলেই পুলিশ হেফাজতে বসে ছিলেন ভবনমালিক পারভীন বেগম। ভবনের জমি তাঁর পৈতৃক সম্পত্তি। সেখানে লিবিয়ায় থাকা তাঁর দুই ছেলে এই ভবন ২০২২ সালে তৈরি করেন। এরপর হারুন অর রশীদ নামের এক ব্যক্তি এটি মাদ্রাসা করবেন বলে ১০ হাজার টাকায় ভাড়া নেন। পারভীন বেগম বলেন, ‘তিন বছর ধরে আমার বাড়ি ভাড়া নিয়ে মুফতি হারুন অর রশীদ মাদ্রাসা পরিচালনা করতেন। হারুন তাঁর শ্যালক আল আমিন ও শ্যালকের স্ত্রী আছিয়াকে মাদ্রাসা পরিচালনার দায়িত্ব দেন। তিনি মাঝেমধ্যে মাদ্রাসায় আসতেন। আমি নিয়মিত খোঁজখবর নিতাম। কিন্তু মাদ্রাসার আড়ালে কী কার্যক্রম চলছিল, তা বুঝতে পারিনি। আজ এসে দেখি, ভবনের চারপাশ উড়ে গেছে।’
পারভীন বেগমের পাশেই ছিলেন তাঁর ছোট মেয়ে সোহানা। তিনি বলেন, ‘ভাড়া নেওয়ার সময় শুধু হারুন অর রশীদ একাই এসেছিলেন। এরপর তাঁরা মাদ্রাসা পরিচালনা শুরু করেন। তবে তাঁরা আশপাশের কারও সঙ্গে তেমন মিশতেন না।’
পুলিশ ভবনের ভেতর থেকে কেমিক্যাল, ককটেল, ভেস্ট ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস, কম্পিউটার ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা, কোনো বিস্ফোরক তৈরি করতে গিয়ে বিস্ফোরিত হয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে গতকাল বিকেলে জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিস্ফোরণের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট শেখ আল আমিন পলাতক রয়েছেন। তবে কেরানীগঞ্জ থেকে তাঁর স্ত্রী আছিয়া বেগম, আছিয়ার ভাই হারুনের স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তার এবং ঢাকার বাসাবো থেকে আসমানী খাতুন নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, আল আমিনের গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটে। তাঁর বিরুদ্ধে এর আগে ২০১৭ ও ২০২০ সালে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন জেএমবির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে ঢাকা এবং আশপাশের বিভিন্ন থানায় অন্তত সাতটি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার আসমানী খাতুনের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।

পাকিস্তানের সাবেক গোয়েন্দা প্রধান আটক হয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত শুরু হয় গত বছরই। ওই সময় পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন রানা সানাউল্লাহ খান। বর্তমানে তিনি প্রধানমন্ত্রীর রাজনীতি বিষয়ক বিশেষ সহকারী।
১৩ আগস্ট ২০২৪
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
৭ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৯ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৮ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এ সারা দেশে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২ লাখ ৫৮ হাজার ১৬৮টি মোটরসাইকেল ও ২ লাখ ৬৪ হাজার ৪১১টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ৩ হাজার ৩৯৪টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এ সারা দেশে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২ লাখ ৫৮ হাজার ১৬৮টি মোটরসাইকেল ও ২ লাখ ৬৪ হাজার ৪১১টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ৩ হাজার ৩৯৪টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

পাকিস্তানের সাবেক গোয়েন্দা প্রধান আটক হয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত শুরু হয় গত বছরই। ওই সময় পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন রানা সানাউল্লাহ খান। বর্তমানে তিনি প্রধানমন্ত্রীর রাজনীতি বিষয়ক বিশেষ সহকারী।
১৩ আগস্ট ২০২৪
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায়
৪ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৯ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৮ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২৮ হাজার ৭৬৬টি মোটরসাইকেল ও ৪৩ হাজার ৩৫২টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ২৯১টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২৮ হাজার ৭৬৬টি মোটরসাইকেল ও ৪৩ হাজার ৩৫২টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ২৯১টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

পাকিস্তানের সাবেক গোয়েন্দা প্রধান আটক হয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত শুরু হয় গত বছরই। ওই সময় পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন রানা সানাউল্লাহ খান। বর্তমানে তিনি প্রধানমন্ত্রীর রাজনীতি বিষয়ক বিশেষ সহকারী।
১৩ আগস্ট ২০২৪
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায়
৪ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
৭ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৮ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

পাকিস্তানের সাবেক গোয়েন্দা প্রধান আটক হয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত শুরু হয় গত বছরই। ওই সময় পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন রানা সানাউল্লাহ খান। বর্তমানে তিনি প্রধানমন্ত্রীর রাজনীতি বিষয়ক বিশেষ সহকারী।
১৩ আগস্ট ২০২৪
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায়
৪ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
৭ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৯ দিন আগে