নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা: ‘আমি সুইসাইড (আত্মহত্যা) করার মতো মেয়ে না। আমি যদি মরে যাই, আপনারা বুঝবেন আমাকে মেরে ফেলা হয়েছে। আমি সুইসাইড করতে পারি না। আমি সুইসাইড করব না। আমি আমার বিচার নিয়ে মরব।’ ঢাকা বোট ক্লাবে ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টার ঘটনা সাংবাদিকদের জানানোর সময় রোববার (১৩ জুন) রাতে এমন আশঙ্কার জানিয়েছিলেন পরীমনি। তবে ১২ ঘণ্টার মধ্যেই পাল্টে গেল দৃশ্যপট।
গতকাল সোমবার মামলার প্রধান আসামি নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও অমিসহ মোট আটজন গ্রেপ্তারের পর স্বস্তি প্রকাশ করে পরীমনি বলেন, ‘দ্রুত প্রধান আসামি গ্রেপ্তার হওয়ায় এখন ভরসা পাচ্ছি। নিশ্চিন্ত হলাম, বাঁচতে পারব। বাকি অভিযুক্তদেরও দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক।’
গত রোববার সন্ধ্যার পর থেকেই দেশজুড়ে আলোচনায় ঢাকাই সিনেমার শীর্ষ এই নায়িকার ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টা ইস্যু। ফেসবুক থেকে জাতীয় সংসদ—সব জায়গায় গতকাল দিনভর চলেছে আলোচনা। তাঁকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভও হয়েছে। বিচারের দাবিতে সরব সংস্কৃতি অঙ্গনও।
একটি স্ট্যাটাস
রোববার (১৩ জুন) প্রথমে ফেসবুকে দীর্ঘ স্ট্যাটাসে অভিযোগ তোলার পর রাতে বনানীর বাসায় সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন পরীমনি। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের কাছে ‘নির্যাতনকারীদের’ নাম-পরিচয় প্রকাশ করেন। এঁদের একজন রাজধানীর উত্তরা ক্লাব লিমিটেডের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও ঢাকা বোট ক্লাবের নির্বাহী কমিটির নেতা নাসির উদ্দিন মাহমুদ। অন্যজন পরীমনির পোশাক ডিজাইনার জিমির বন্ধু অমি।
বাসায় উপস্থিত সাংবাদিকদের নিজের নিরাপত্তা নিয়ে বারবার আশঙ্কার কথা জানান পরীমনি। অভিযোগ করেন, ঘটনার পর অভিযুক্তরা বাসায় এসে তাঁকে প্রাণে মারার হুমকি দিয়েছেন। ওই রাতে বনানী থানায় গেলেও পুলিশ তাঁর অভিযোগ নেয়নি। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নূরে আযম মিয়া বলেন, ৯ জুন ভোরের দিকে তিনি থানায় এসে অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছিলেন। পুলিশের পক্ষ থেকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠিয়ে তাঁকে সুস্থ হয়ে অভিযোগ জানানোর অনুরোধ করা হয়। তারপর তিনি আর আসেননি।
উত্তরার বাসা থেকে নাসির গ্রেপ্তার
গতকাল সকাল থেকেই নিরাপত্তা বাড়ানো হয় পরীমনির বনানীর বাসায়। ডিএমপির রুপনগর থানার একজন উপপরিদর্শক (এসআই) পরীমনির কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ নিয়ে যান। সাভার থানায় জমা দেওয়ার পর বেলা ১১টার দিকে মামলা করা হয়।
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মাইনুল ইসলাম বলেন, নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও অমির নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও চারজনকে মামলায় আসামি করা হয়।
গতকাল বেলা দুটার দিকে নায়িকা পরিমনিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ, তুহিন সিদ্দিকি অমিসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ।
উত্তরার ১ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর রোডের ১৩ নম্বর বাসা থেকে নাসির, অমি ও তিন নারীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। নাসিরের বাসা থেকে বিদেশি মদ ও ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে বলে পুলিশ গণমাধ্যমকর্মীদের জানায়।
তবে গ্রেপ্তারের সময় গণমাধ্যমের কাছে পরীমনির অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন নাসির। সদস্য না হয়েও ক্লাবে ঢোকা নিয়ে পরীমনির সঙ্গে তাঁর বচসা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। অভিযোগ করেন, মদ্যপ অবস্থায় পরীমনি ও তার সঙ্গে থাকা বন্ধুরা ক্লাবের বার থেকে জোর করে মদ কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।
এর আগে উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরের গরিব ই নেওয়াজ রোডের ২০ নম্বর বাসার অষ্টম তলা থেকে তিনজনকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ওই বাসা ছিল আরএস কুঞ্জ ডেভেলপার্স নামের একটি কোম্পানির, যার চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন মাহমুদ।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন—প্রকৌশলী ইমতিয়াজ ও শাকিব এবং অফিস সহকারী বিধান। অফিসের সিসি ক্যামেরা ও কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক জব্দ করা হয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেন, গুলশান থানা পুলিশ ডিবি পুলিশকে ‘রিকুইজিশন’ দিলে বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরকেও গ্রেপ্তার করা হবে।
হারুন অর রশীদ বলেন, পরীমণির ঘটনায় সাভার থানায় মামলা হলেও আসামি উত্তরায় থাকেন। সাভার থানা-পুলিশ আমাদেরকে ‘রিকুইজিশন’ দেওয়ায় আমরা তড়িৎ ব্যবস্থা নিয়েছি। বসুন্ধরা এমডির ব্যাপারে গুলশান থানা পুলিশ ‘রিকুইজিশন’ দিলে আমরা একই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আসামিদের নিয়ে যা বলছে পুলিশ
নাসিরের বাসার নিচে তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলনে ডিবির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (উত্তর) হারুন অর রশীদ বলেন, আসামিকে গ্রেপ্তারে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালানো হয়। পরে সন্ধান মিলে, উত্তরায় ১২ নম্বর সেক্টরে একটা ডিজে পার্টি হয়েছে। সেখানে সাভারের মামলায় এজাহারভুক্ত দুই আসামি আছেন। পরে এই বাসা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় নাসিরের সঙ্গে দুজন রক্ষিতা ছিলেন। আরও এক নারী ছিলেন যাকে নাসির নিজের স্ত্রী দাবি করেন। এ সময় তাদের কাছে মাদকও পাওয়া যায়।
হারুন বলেন, মাদক পাওয়ায় ডিএমপিতে আরেকটি মামলা হবে। তা ছাড়া পরীমনির ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের সঙ্গে আর কোনো রাঘব বোয়াল আছে কিনা, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পরে মিন্টো রোডে গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে আবারও সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) হারুন। তিনি বলেন, ‘যাদের গ্রেপ্তার করেছি, তাদের কাজই মদের ব্যবসা করা। তিনিও মদের ব্যবসা করেন। ছোট ছোট মেয়েদের রক্ষিত হিসেবে রেখে এমন নির্যাতন করেন। আমরা তদন্ত করছি। আমরা পুরো বিষয়টি জানতে পরীমনিসহ সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করব।’
গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার মশিউর রহমান বলেন, কাল মঙ্গলবার (১৫ জুন) ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে। মাদক মামলায় রিমান্ড শেষে তাঁদের সাভারের মামলায় হস্তান্তর করা হবে। আসামি নাসির দেশ ছেড়ে পালাতে চেয়েছিল বলে ধারণা পুলিশের। তাকে গ্রেপ্তারের সময় ব্রিফকেসে ওষুধ, জামাকাপড় ও পাসপোর্ট পাওয়া যায়। রোববার (১৩ জুন) রাত ১১টা থেকে অভিযুক্তদের মোবাইল বন্ধ ছিল।
বন্ধ বোট ক্লাব, সদস্যপদ স্থগিত নাসিরের
ঢাকা থেকে আব্দুল্লাহপুর হয়ে যেতে হয় বিরুলিয়া। প্রধান সড়কের পাশেই ঢাকা বোট ক্লাবের অবস্থান। জনপ্রিয় নায়িকা পরীমনি ৯ জুন রাতে এই ক্লাবে তার ওপর নির্যাতনের ঘটনার অভিযোগ জানানোর পর আলোচনায় ক্লাবটি।
সোমবার (১৪ জুন) সকাল থেকেই গণমাধ্যমের চোখ ক্লাবের দরজায়। যদিও এটি তালাবদ্ধ ছিল। কোন নোটিশ ছাড়াই ক্লাব বন্ধ হওয়ায় ফিরে যান বোটিং করতে আসা সদস্যরা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়া ভেতরে সবার প্রবেশ নিষিদ্ধ বলে তথ্য দেন ক্লাবের সিকিউরিটি সুপারভাইজার হৃদয়।
বিকেলে ক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির এক ভার্চুয়াল সভায় সদস্য নাসির উদ্দিন মাহমুদকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কমিটির সভাপতি বেনজির আহমেদের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির আরও আট সদস্য যুক্ত হন। ক্লাবের উপদেষ্টা রুবেল আজিজও সভায় ছিলেন। নাসিরের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কমিটি রিপোর্ট জমা দেবে বোট ক্লাব কর্তৃপক্ষের কাছে।
সভায় বলা হয়, নাসির উদ্দিন ক্লাবের নিয়ম না মেনে নির্ধারিত সময়ের বাইরে অতিথিকে ক্লাবের ভেতরে নিয়ে এসেছিলেন, যা ক্লাবের নিয়মশৃঙ্খলার পরিপন্থি। বৈঠকে নাসির উদ্দিন মাহমুদ, তুহিন সিদ্দিকী অমি ও শাহ এস আলমের সদস্যপদ স্থগিত করার সিদ্ধান্ত হয়।
সংসদে বিচার চাইলেন হারুন
পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টায় জড়িতদের বিচারের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির দলীয় সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ। সংসদ অধিবেশন চলাকালে তিনি বলেন, ‘সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নেই। অবশ্যই এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। গতকাল (১৩ জুন) এ ব্যাপারে সব গণমাধ্যমে প্রচার হয়েছে, আমার আর কী বলার আছে।’
হারুনুর রশিদ বলেন, ‘চার দিন ধরে পরীমনি বিচারপ্রার্থী। কিন্তু বিচার পাচ্ছেন না। এটি কি অসত্য? মুনিয়ার ঘটনা ঘটল। এগুলো যাঁরা ঘটাচ্ছেন তাঁরা মাফিয়া।’
বিক্ষোভে নারীরা সরব শিল্পীরা
পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও যথাযথ বিচারের দাবি জানিয়েছে প্রীতিলতা বিগ্রেড। গতকাল বিকেলে প্রেসক্লাবে বিক্ষোভ সমাবেশ করে সংগঠনটি।
সংগঠনটির ঢাকা মহানগরের আহ্বায়ক মাহমুদা দীপা বলেন, ‘নারীদের ওপর সংগঠিত নির্যাতনের সুষ্ঠু বিচার না হওয়ার ফলেই এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। তনু, নুসরাত, মুনিয়ার ফলাফল আমাদের সবারই জানা। পরীমনিও এই তালিকায় যুক্ত হতে পারতেন। পরীমনিসহ আমরা সব নারী নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যার বিচার চাই।’
পরীমনির পাশে দাঁড়িয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সোচ্চার চলচ্চিত্র, টিভি নাটকের নির্মাতা ও অভিনয়শিল্পীরা।
‘জাস্টিস ফর পরীমনি’ হ্যাশট্যাগে ফেসবুকে সোচ্চার হয়েছেন সুবর্ণা মুস্তাফা, জয়া আহসান, গিয়াসউদ্দিন সেলিম, অনিমেষ আইচ, রুনা খান, খিজির হায়াত খান, দেবাশীষ বিশ্বাস, রওনক হাসান, ঊর্মিলা শ্রাবন্তী কর, অপূর্ব রানা, মিশু চৌধুরী, কোনাল, কায়েস আরজু, ভাবনা, নাবিলাসহ অনেক অভিনয়শিল্পী ও নির্মাতা।

ঢাকা: ‘আমি সুইসাইড (আত্মহত্যা) করার মতো মেয়ে না। আমি যদি মরে যাই, আপনারা বুঝবেন আমাকে মেরে ফেলা হয়েছে। আমি সুইসাইড করতে পারি না। আমি সুইসাইড করব না। আমি আমার বিচার নিয়ে মরব।’ ঢাকা বোট ক্লাবে ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টার ঘটনা সাংবাদিকদের জানানোর সময় রোববার (১৩ জুন) রাতে এমন আশঙ্কার জানিয়েছিলেন পরীমনি। তবে ১২ ঘণ্টার মধ্যেই পাল্টে গেল দৃশ্যপট।
গতকাল সোমবার মামলার প্রধান আসামি নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও অমিসহ মোট আটজন গ্রেপ্তারের পর স্বস্তি প্রকাশ করে পরীমনি বলেন, ‘দ্রুত প্রধান আসামি গ্রেপ্তার হওয়ায় এখন ভরসা পাচ্ছি। নিশ্চিন্ত হলাম, বাঁচতে পারব। বাকি অভিযুক্তদেরও দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক।’
গত রোববার সন্ধ্যার পর থেকেই দেশজুড়ে আলোচনায় ঢাকাই সিনেমার শীর্ষ এই নায়িকার ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টা ইস্যু। ফেসবুক থেকে জাতীয় সংসদ—সব জায়গায় গতকাল দিনভর চলেছে আলোচনা। তাঁকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভও হয়েছে। বিচারের দাবিতে সরব সংস্কৃতি অঙ্গনও।
একটি স্ট্যাটাস
রোববার (১৩ জুন) প্রথমে ফেসবুকে দীর্ঘ স্ট্যাটাসে অভিযোগ তোলার পর রাতে বনানীর বাসায় সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন পরীমনি। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের কাছে ‘নির্যাতনকারীদের’ নাম-পরিচয় প্রকাশ করেন। এঁদের একজন রাজধানীর উত্তরা ক্লাব লিমিটেডের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও ঢাকা বোট ক্লাবের নির্বাহী কমিটির নেতা নাসির উদ্দিন মাহমুদ। অন্যজন পরীমনির পোশাক ডিজাইনার জিমির বন্ধু অমি।
বাসায় উপস্থিত সাংবাদিকদের নিজের নিরাপত্তা নিয়ে বারবার আশঙ্কার কথা জানান পরীমনি। অভিযোগ করেন, ঘটনার পর অভিযুক্তরা বাসায় এসে তাঁকে প্রাণে মারার হুমকি দিয়েছেন। ওই রাতে বনানী থানায় গেলেও পুলিশ তাঁর অভিযোগ নেয়নি। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নূরে আযম মিয়া বলেন, ৯ জুন ভোরের দিকে তিনি থানায় এসে অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছিলেন। পুলিশের পক্ষ থেকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠিয়ে তাঁকে সুস্থ হয়ে অভিযোগ জানানোর অনুরোধ করা হয়। তারপর তিনি আর আসেননি।
উত্তরার বাসা থেকে নাসির গ্রেপ্তার
গতকাল সকাল থেকেই নিরাপত্তা বাড়ানো হয় পরীমনির বনানীর বাসায়। ডিএমপির রুপনগর থানার একজন উপপরিদর্শক (এসআই) পরীমনির কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ নিয়ে যান। সাভার থানায় জমা দেওয়ার পর বেলা ১১টার দিকে মামলা করা হয়।
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মাইনুল ইসলাম বলেন, নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও অমির নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও চারজনকে মামলায় আসামি করা হয়।
গতকাল বেলা দুটার দিকে নায়িকা পরিমনিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ, তুহিন সিদ্দিকি অমিসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ।
উত্তরার ১ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর রোডের ১৩ নম্বর বাসা থেকে নাসির, অমি ও তিন নারীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। নাসিরের বাসা থেকে বিদেশি মদ ও ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে বলে পুলিশ গণমাধ্যমকর্মীদের জানায়।
তবে গ্রেপ্তারের সময় গণমাধ্যমের কাছে পরীমনির অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন নাসির। সদস্য না হয়েও ক্লাবে ঢোকা নিয়ে পরীমনির সঙ্গে তাঁর বচসা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। অভিযোগ করেন, মদ্যপ অবস্থায় পরীমনি ও তার সঙ্গে থাকা বন্ধুরা ক্লাবের বার থেকে জোর করে মদ কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।
এর আগে উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরের গরিব ই নেওয়াজ রোডের ২০ নম্বর বাসার অষ্টম তলা থেকে তিনজনকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ওই বাসা ছিল আরএস কুঞ্জ ডেভেলপার্স নামের একটি কোম্পানির, যার চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন মাহমুদ।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন—প্রকৌশলী ইমতিয়াজ ও শাকিব এবং অফিস সহকারী বিধান। অফিসের সিসি ক্যামেরা ও কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক জব্দ করা হয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেন, গুলশান থানা পুলিশ ডিবি পুলিশকে ‘রিকুইজিশন’ দিলে বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরকেও গ্রেপ্তার করা হবে।
হারুন অর রশীদ বলেন, পরীমণির ঘটনায় সাভার থানায় মামলা হলেও আসামি উত্তরায় থাকেন। সাভার থানা-পুলিশ আমাদেরকে ‘রিকুইজিশন’ দেওয়ায় আমরা তড়িৎ ব্যবস্থা নিয়েছি। বসুন্ধরা এমডির ব্যাপারে গুলশান থানা পুলিশ ‘রিকুইজিশন’ দিলে আমরা একই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আসামিদের নিয়ে যা বলছে পুলিশ
নাসিরের বাসার নিচে তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলনে ডিবির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (উত্তর) হারুন অর রশীদ বলেন, আসামিকে গ্রেপ্তারে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালানো হয়। পরে সন্ধান মিলে, উত্তরায় ১২ নম্বর সেক্টরে একটা ডিজে পার্টি হয়েছে। সেখানে সাভারের মামলায় এজাহারভুক্ত দুই আসামি আছেন। পরে এই বাসা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় নাসিরের সঙ্গে দুজন রক্ষিতা ছিলেন। আরও এক নারী ছিলেন যাকে নাসির নিজের স্ত্রী দাবি করেন। এ সময় তাদের কাছে মাদকও পাওয়া যায়।
হারুন বলেন, মাদক পাওয়ায় ডিএমপিতে আরেকটি মামলা হবে। তা ছাড়া পরীমনির ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের সঙ্গে আর কোনো রাঘব বোয়াল আছে কিনা, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পরে মিন্টো রোডে গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে আবারও সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) হারুন। তিনি বলেন, ‘যাদের গ্রেপ্তার করেছি, তাদের কাজই মদের ব্যবসা করা। তিনিও মদের ব্যবসা করেন। ছোট ছোট মেয়েদের রক্ষিত হিসেবে রেখে এমন নির্যাতন করেন। আমরা তদন্ত করছি। আমরা পুরো বিষয়টি জানতে পরীমনিসহ সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করব।’
গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার মশিউর রহমান বলেন, কাল মঙ্গলবার (১৫ জুন) ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে। মাদক মামলায় রিমান্ড শেষে তাঁদের সাভারের মামলায় হস্তান্তর করা হবে। আসামি নাসির দেশ ছেড়ে পালাতে চেয়েছিল বলে ধারণা পুলিশের। তাকে গ্রেপ্তারের সময় ব্রিফকেসে ওষুধ, জামাকাপড় ও পাসপোর্ট পাওয়া যায়। রোববার (১৩ জুন) রাত ১১টা থেকে অভিযুক্তদের মোবাইল বন্ধ ছিল।
বন্ধ বোট ক্লাব, সদস্যপদ স্থগিত নাসিরের
ঢাকা থেকে আব্দুল্লাহপুর হয়ে যেতে হয় বিরুলিয়া। প্রধান সড়কের পাশেই ঢাকা বোট ক্লাবের অবস্থান। জনপ্রিয় নায়িকা পরীমনি ৯ জুন রাতে এই ক্লাবে তার ওপর নির্যাতনের ঘটনার অভিযোগ জানানোর পর আলোচনায় ক্লাবটি।
সোমবার (১৪ জুন) সকাল থেকেই গণমাধ্যমের চোখ ক্লাবের দরজায়। যদিও এটি তালাবদ্ধ ছিল। কোন নোটিশ ছাড়াই ক্লাব বন্ধ হওয়ায় ফিরে যান বোটিং করতে আসা সদস্যরা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়া ভেতরে সবার প্রবেশ নিষিদ্ধ বলে তথ্য দেন ক্লাবের সিকিউরিটি সুপারভাইজার হৃদয়।
বিকেলে ক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির এক ভার্চুয়াল সভায় সদস্য নাসির উদ্দিন মাহমুদকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কমিটির সভাপতি বেনজির আহমেদের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির আরও আট সদস্য যুক্ত হন। ক্লাবের উপদেষ্টা রুবেল আজিজও সভায় ছিলেন। নাসিরের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কমিটি রিপোর্ট জমা দেবে বোট ক্লাব কর্তৃপক্ষের কাছে।
সভায় বলা হয়, নাসির উদ্দিন ক্লাবের নিয়ম না মেনে নির্ধারিত সময়ের বাইরে অতিথিকে ক্লাবের ভেতরে নিয়ে এসেছিলেন, যা ক্লাবের নিয়মশৃঙ্খলার পরিপন্থি। বৈঠকে নাসির উদ্দিন মাহমুদ, তুহিন সিদ্দিকী অমি ও শাহ এস আলমের সদস্যপদ স্থগিত করার সিদ্ধান্ত হয়।
সংসদে বিচার চাইলেন হারুন
পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টায় জড়িতদের বিচারের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির দলীয় সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ। সংসদ অধিবেশন চলাকালে তিনি বলেন, ‘সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নেই। অবশ্যই এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। গতকাল (১৩ জুন) এ ব্যাপারে সব গণমাধ্যমে প্রচার হয়েছে, আমার আর কী বলার আছে।’
হারুনুর রশিদ বলেন, ‘চার দিন ধরে পরীমনি বিচারপ্রার্থী। কিন্তু বিচার পাচ্ছেন না। এটি কি অসত্য? মুনিয়ার ঘটনা ঘটল। এগুলো যাঁরা ঘটাচ্ছেন তাঁরা মাফিয়া।’
বিক্ষোভে নারীরা সরব শিল্পীরা
পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও যথাযথ বিচারের দাবি জানিয়েছে প্রীতিলতা বিগ্রেড। গতকাল বিকেলে প্রেসক্লাবে বিক্ষোভ সমাবেশ করে সংগঠনটি।
সংগঠনটির ঢাকা মহানগরের আহ্বায়ক মাহমুদা দীপা বলেন, ‘নারীদের ওপর সংগঠিত নির্যাতনের সুষ্ঠু বিচার না হওয়ার ফলেই এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। তনু, নুসরাত, মুনিয়ার ফলাফল আমাদের সবারই জানা। পরীমনিও এই তালিকায় যুক্ত হতে পারতেন। পরীমনিসহ আমরা সব নারী নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যার বিচার চাই।’
পরীমনির পাশে দাঁড়িয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সোচ্চার চলচ্চিত্র, টিভি নাটকের নির্মাতা ও অভিনয়শিল্পীরা।
‘জাস্টিস ফর পরীমনি’ হ্যাশট্যাগে ফেসবুকে সোচ্চার হয়েছেন সুবর্ণা মুস্তাফা, জয়া আহসান, গিয়াসউদ্দিন সেলিম, অনিমেষ আইচ, রুনা খান, খিজির হায়াত খান, দেবাশীষ বিশ্বাস, রওনক হাসান, ঊর্মিলা শ্রাবন্তী কর, অপূর্ব রানা, মিশু চৌধুরী, কোনাল, কায়েস আরজু, ভাবনা, নাবিলাসহ অনেক অভিনয়শিল্পী ও নির্মাতা।

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায়
৩ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
৬ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৮ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায় তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে সাতটি মামলা রয়েছে। পুলিশ বলছে, ভবনটি বিস্ফোরক তৈরিতে ব্যবহৃত হতো।
আজ শনিবার দুপুরে সরেজমিন দেখা গেছে, হাসনাবাদ বাজারের ফলপট্টি গলিতে উম্মাল কুরা ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসা। মাদ্রাসায় শিশুদের পাঠদান করা হয়। বিস্ফোরণে চার কক্ষের একতলা ভবনটির পশ্চিম পাশের দুটি কক্ষ সম্পূর্ণ ধসে পড়েছে, সিঁড়ির পাশের ছাদের একাংশ উড়ে গেছে এবং সব কটি কক্ষের পিলার ও দেয়ালে ফাটল ধরেছে। ঘটনাস্থলে ককটেল, রাসায়নিক দ্রব্য ও বোমা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক বিভাগের ক্রাইম সিন ইউনিটের কর্মীরা আলামত সংগ্রহ করছেন। তাঁরা পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছেন। ভবনের পাশের একটি ভবনের দোতলার দেয়ালে বিস্ফোরণে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া বিস্ফোরণে পাশের একটি অটোরিকশার গ্যারেজের টিনের ছাউনি উড়ে গেছে। টিনের নিচে চাপা পড়েছিলেন গ্যারেজের ম্যানেজার আবুল কালাম।
আবুল কালাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এত বিকট শব্দ হয়েছে যে আমার কানে তব্দা লেগে যায়। আমি টিনের নিচে চাপা পড়ি। পরে হামাগুড়ি দিয়ে বের হই। এরপর দেখি মাদ্রাসার মধ্যে আগুন জ্বলছে। যারা ভেতরে ছিল, তারা দ্রুত বাচ্চাদের নিয়ে বের হয়ে চলে যায়।’
গ্যারেজের মালিক মোশাররফ হোসেন ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘বিস্ফোরণের পর পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। আমিও বাসা থেকে দৌড়ে আসি। আমার গ্যারেজের দুজন অটোচালক দুই শিশুকে ওই ভবন থেকে বের করেন। এক নারী আর এক শিশুকে নিয়ে চলে যায়। এ সময় আল আমিনও দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। আধা ঘণ্টার মধ্যে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের লোকজন এসে পুরো এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয়।’
মাদ্রাসার পাশের ৫ তলা বাড়ির বাসিন্দা মনোয়ার বলেন, ‘হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পাই। মনে হয়েছিল ভূমিকম্প। কারণ, বিস্ফোরণে সব ভবনে কাঁপুনি লাগে। সবাই চিৎকার করেছিল।’
ওই বাসিন্দা আরও বলেন, ‘মাদ্রাসাটিতে ৩০-৩৫ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করত। তবে শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় মাদ্রাসা বন্ধ ছিল। এ কারণে বড় ধরনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।’
ভবনটির পশ্চিম পাশের এক পাশে তিনটি কক্ষে মাদ্রাসার কার্যক্রম পরিচালিত হতো। অপর পাশের একটি কক্ষে পরিচালক শেখ আল আমিন (৩২), তাঁর স্ত্রী আছিয়া বেগম (২৮) এবং তাঁদের তিন সন্তান নিয়ে সেখানেই থাকতেন। বিস্ফোরণে দুই ছেলে উমায়েত (১০) ও আবদুল্লাহ (৭) আহত হয়। এর মধ্যে আছিয়া ও তাঁর দুই সন্তানকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
পাশের ভবনের বাসিন্দা হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিস্ফোরণে আমাদের ভবনের কিছু অংশ ফেটে গেছে। ঘরের ভেতরের আসবাবও ভেঙে পড়েছে।’
ঘটনাস্থলেই পুলিশ হেফাজতে বসে ছিলেন ভবনমালিক পারভীন বেগম। ভবনের জমি তাঁর পৈতৃক সম্পত্তি। সেখানে লিবিয়ায় থাকা তাঁর দুই ছেলে এই ভবন ২০২২ সালে তৈরি করেন। এরপর হারুন অর রশীদ নামের এক ব্যক্তি এটি মাদ্রাসা করবেন বলে ১০ হাজার টাকায় ভাড়া নেন। পারভীন বেগম বলেন, ‘তিন বছর ধরে আমার বাড়ি ভাড়া নিয়ে মুফতি হারুন অর রশীদ মাদ্রাসা পরিচালনা করতেন। হারুন তাঁর শ্যালক আল আমিন ও শ্যালকের স্ত্রী আছিয়াকে মাদ্রাসা পরিচালনার দায়িত্ব দেন। তিনি মাঝেমধ্যে মাদ্রাসায় আসতেন। আমি নিয়মিত খোঁজখবর নিতাম। কিন্তু মাদ্রাসার আড়ালে কী কার্যক্রম চলছিল, তা বুঝতে পারিনি। আজ এসে দেখি, ভবনের চারপাশ উড়ে গেছে।’
পারভীন বেগমের পাশেই ছিলেন তাঁর ছোট মেয়ে সোহানা। তিনি বলেন, ‘ভাড়া নেওয়ার সময় শুধু হারুন অর রশীদ একাই এসেছিলেন। এরপর তাঁরা মাদ্রাসা পরিচালনা শুরু করেন। তবে তাঁরা আশপাশের কারও সঙ্গে তেমন মিশতেন না।’
পুলিশ ভবনের ভেতর থেকে কেমিক্যাল, ককটেল, ভেস্ট ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস, কম্পিউটার ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা, কোনো বিস্ফোরক তৈরি করতে গিয়ে বিস্ফোরিত হয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে গতকাল বিকেলে জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিস্ফোরণের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট শেখ আল আমিন পলাতক রয়েছেন। তবে কেরানীগঞ্জ থেকে তাঁর স্ত্রী আছিয়া বেগম, আছিয়ার ভাই হারুনের স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তার এবং ঢাকার বাসাবো থেকে আসমানী খাতুন নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, আল আমিনের গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটে। তাঁর বিরুদ্ধে এর আগে ২০১৭ ও ২০২০ সালে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন জেএমবির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে ঢাকা এবং আশপাশের বিভিন্ন থানায় অন্তত সাতটি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার আসমানী খাতুনের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায় তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে সাতটি মামলা রয়েছে। পুলিশ বলছে, ভবনটি বিস্ফোরক তৈরিতে ব্যবহৃত হতো।
আজ শনিবার দুপুরে সরেজমিন দেখা গেছে, হাসনাবাদ বাজারের ফলপট্টি গলিতে উম্মাল কুরা ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসা। মাদ্রাসায় শিশুদের পাঠদান করা হয়। বিস্ফোরণে চার কক্ষের একতলা ভবনটির পশ্চিম পাশের দুটি কক্ষ সম্পূর্ণ ধসে পড়েছে, সিঁড়ির পাশের ছাদের একাংশ উড়ে গেছে এবং সব কটি কক্ষের পিলার ও দেয়ালে ফাটল ধরেছে। ঘটনাস্থলে ককটেল, রাসায়নিক দ্রব্য ও বোমা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক বিভাগের ক্রাইম সিন ইউনিটের কর্মীরা আলামত সংগ্রহ করছেন। তাঁরা পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছেন। ভবনের পাশের একটি ভবনের দোতলার দেয়ালে বিস্ফোরণে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া বিস্ফোরণে পাশের একটি অটোরিকশার গ্যারেজের টিনের ছাউনি উড়ে গেছে। টিনের নিচে চাপা পড়েছিলেন গ্যারেজের ম্যানেজার আবুল কালাম।
আবুল কালাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এত বিকট শব্দ হয়েছে যে আমার কানে তব্দা লেগে যায়। আমি টিনের নিচে চাপা পড়ি। পরে হামাগুড়ি দিয়ে বের হই। এরপর দেখি মাদ্রাসার মধ্যে আগুন জ্বলছে। যারা ভেতরে ছিল, তারা দ্রুত বাচ্চাদের নিয়ে বের হয়ে চলে যায়।’
গ্যারেজের মালিক মোশাররফ হোসেন ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘বিস্ফোরণের পর পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। আমিও বাসা থেকে দৌড়ে আসি। আমার গ্যারেজের দুজন অটোচালক দুই শিশুকে ওই ভবন থেকে বের করেন। এক নারী আর এক শিশুকে নিয়ে চলে যায়। এ সময় আল আমিনও দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। আধা ঘণ্টার মধ্যে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের লোকজন এসে পুরো এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয়।’
মাদ্রাসার পাশের ৫ তলা বাড়ির বাসিন্দা মনোয়ার বলেন, ‘হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পাই। মনে হয়েছিল ভূমিকম্প। কারণ, বিস্ফোরণে সব ভবনে কাঁপুনি লাগে। সবাই চিৎকার করেছিল।’
ওই বাসিন্দা আরও বলেন, ‘মাদ্রাসাটিতে ৩০-৩৫ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করত। তবে শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় মাদ্রাসা বন্ধ ছিল। এ কারণে বড় ধরনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।’
ভবনটির পশ্চিম পাশের এক পাশে তিনটি কক্ষে মাদ্রাসার কার্যক্রম পরিচালিত হতো। অপর পাশের একটি কক্ষে পরিচালক শেখ আল আমিন (৩২), তাঁর স্ত্রী আছিয়া বেগম (২৮) এবং তাঁদের তিন সন্তান নিয়ে সেখানেই থাকতেন। বিস্ফোরণে দুই ছেলে উমায়েত (১০) ও আবদুল্লাহ (৭) আহত হয়। এর মধ্যে আছিয়া ও তাঁর দুই সন্তানকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
পাশের ভবনের বাসিন্দা হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিস্ফোরণে আমাদের ভবনের কিছু অংশ ফেটে গেছে। ঘরের ভেতরের আসবাবও ভেঙে পড়েছে।’
ঘটনাস্থলেই পুলিশ হেফাজতে বসে ছিলেন ভবনমালিক পারভীন বেগম। ভবনের জমি তাঁর পৈতৃক সম্পত্তি। সেখানে লিবিয়ায় থাকা তাঁর দুই ছেলে এই ভবন ২০২২ সালে তৈরি করেন। এরপর হারুন অর রশীদ নামের এক ব্যক্তি এটি মাদ্রাসা করবেন বলে ১০ হাজার টাকায় ভাড়া নেন। পারভীন বেগম বলেন, ‘তিন বছর ধরে আমার বাড়ি ভাড়া নিয়ে মুফতি হারুন অর রশীদ মাদ্রাসা পরিচালনা করতেন। হারুন তাঁর শ্যালক আল আমিন ও শ্যালকের স্ত্রী আছিয়াকে মাদ্রাসা পরিচালনার দায়িত্ব দেন। তিনি মাঝেমধ্যে মাদ্রাসায় আসতেন। আমি নিয়মিত খোঁজখবর নিতাম। কিন্তু মাদ্রাসার আড়ালে কী কার্যক্রম চলছিল, তা বুঝতে পারিনি। আজ এসে দেখি, ভবনের চারপাশ উড়ে গেছে।’
পারভীন বেগমের পাশেই ছিলেন তাঁর ছোট মেয়ে সোহানা। তিনি বলেন, ‘ভাড়া নেওয়ার সময় শুধু হারুন অর রশীদ একাই এসেছিলেন। এরপর তাঁরা মাদ্রাসা পরিচালনা শুরু করেন। তবে তাঁরা আশপাশের কারও সঙ্গে তেমন মিশতেন না।’
পুলিশ ভবনের ভেতর থেকে কেমিক্যাল, ককটেল, ভেস্ট ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস, কম্পিউটার ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা, কোনো বিস্ফোরক তৈরি করতে গিয়ে বিস্ফোরিত হয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে গতকাল বিকেলে জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিস্ফোরণের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট শেখ আল আমিন পলাতক রয়েছেন। তবে কেরানীগঞ্জ থেকে তাঁর স্ত্রী আছিয়া বেগম, আছিয়ার ভাই হারুনের স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তার এবং ঢাকার বাসাবো থেকে আসমানী খাতুন নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, আল আমিনের গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটে। তাঁর বিরুদ্ধে এর আগে ২০১৭ ও ২০২০ সালে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন জেএমবির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে ঢাকা এবং আশপাশের বিভিন্ন থানায় অন্তত সাতটি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার আসমানী খাতুনের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।

‘আমি সুইসাইড (আত্মহত্যা) করার মতো মেয়ে না। আমি যদি মরে যাই, আপনারা বুঝবেন আমাকে মেরে ফেলা হয়েছে। আমি সুইসাইড করতে পারি না। আমি সুইসাইড করব না। আমি আমার বিচার নিয়ে মরব।’
১৫ জুন ২০২১
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
৬ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৮ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এ সারা দেশে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২ লাখ ৫৮ হাজার ১৬৮টি মোটরসাইকেল ও ২ লাখ ৬৪ হাজার ৪১১টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ৩ হাজার ৩৯৪টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এ সারা দেশে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২ লাখ ৫৮ হাজার ১৬৮টি মোটরসাইকেল ও ২ লাখ ৬৪ হাজার ৪১১টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ৩ হাজার ৩৯৪টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

‘আমি সুইসাইড (আত্মহত্যা) করার মতো মেয়ে না। আমি যদি মরে যাই, আপনারা বুঝবেন আমাকে মেরে ফেলা হয়েছে। আমি সুইসাইড করতে পারি না। আমি সুইসাইড করব না। আমি আমার বিচার নিয়ে মরব।’
১৫ জুন ২০২১
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায়
৩ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৮ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২৮ হাজার ৭৬৬টি মোটরসাইকেল ও ৪৩ হাজার ৩৫২টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ২৯১টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২৮ হাজার ৭৬৬টি মোটরসাইকেল ও ৪৩ হাজার ৩৫২টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ২৯১টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

‘আমি সুইসাইড (আত্মহত্যা) করার মতো মেয়ে না। আমি যদি মরে যাই, আপনারা বুঝবেন আমাকে মেরে ফেলা হয়েছে। আমি সুইসাইড করতে পারি না। আমি সুইসাইড করব না। আমি আমার বিচার নিয়ে মরব।’
১৫ জুন ২০২১
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায়
৩ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
৬ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

‘আমি সুইসাইড (আত্মহত্যা) করার মতো মেয়ে না। আমি যদি মরে যাই, আপনারা বুঝবেন আমাকে মেরে ফেলা হয়েছে। আমি সুইসাইড করতে পারি না। আমি সুইসাইড করব না। আমি আমার বিচার নিয়ে মরব।’
১৫ জুন ২০২১
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায়
৩ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
৬ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৮ দিন আগে