Ajker Patrika

নামিবিয়ার নির্বাচনে আবারও জয়ী ‘অ্যাডলফ হিটলার’

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
নাজি স্বৈরশাসকের সঙ্গে নামের মিল থাকায় ‘হিটলার’ বাদ দিয়ে নাম পরিবর্তন করেছেন অ্যাডলফ উউনোনা। ছবি: সংগৃহীত
নাজি স্বৈরশাসকের সঙ্গে নামের মিল থাকায় ‘হিটলার’ বাদ দিয়ে নাম পরিবর্তন করেছেন অ্যাডলফ উউনোনা। ছবি: সংগৃহীত

নাজি জার্মানির স্বৈরশাসক অ্যাডলফ হিটলারকে আমরা সবাই চিনি। তবে সম্প্রতি স্বৈরশাসক হিটলারের নামের সঙ্গে মিল থাকায় দক্ষিণ-পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নামিবিয়ার এক রাজনীতিক বেশ আলোচিত হয়েছেন। অ্যাডলফ হিটলার উউনোনা নামের ওই রাজনীতিক টানা পঞ্চমবারের মতো স্থানীয় নির্বাচনে জয় পেয়েছেন। কিন্তু নাজি স্বৈরশাসকের সঙ্গে নামের মিল থাকায় তিনি ‘হিটলার’ বাদ দিয়ে নাম পরিবর্তন করেছেন।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৫৭ বছর বয়সী অ্যাডলফ হিটলার উউনোনা উত্তরাঞ্চলীয় ওশানা অঞ্চলের ওমপুন্ডজা কনস্টিটুয়েন্সিতে আবারও কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন।

দ্য নামিবিয়ান নামে স্থানীয় একটি পত্রিকাকে উউনোনা জানান, এখন তাঁর নাম শুধু অ্যাডলফ উউনোনা। তিনি বলেন, ‘আমার নাম অ্যাডলফ হিটলার নয়, আমি অ্যাডলফ উউনোনা। অনেকে আমাকে অ্যাডলফ হিটলার বলে ডাকেন এবং আমার সঙ্গে এমন একজনকে যুক্ত করেন, যাকে আমি কখনো চিনতামই না।’

উউনোনা জানান, নাজি নেতা অ্যাডলফ হিটলারের পরিচয় বা ইতিহাস সম্পর্কে কোনো ধারণা ছাড়াই তাঁর বাবা এই নাম রেখেছিলেন। শিশুকালে তিনি ভেবেছিলেন—এই নাম স্বাভাবিকই।

২০২০ সালে আগের নির্বাচনে জয়ের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘সম্ভবত আমার বাবা জানতেনই না অ্যাডলফ হিটলার কী করেন। ছোটবেলায় আমার কাছে এটি একেবারেই সাধারণ নাম ছিল। পরে বড় হয়ে বুঝেছি—মানুষটি সারা বিশ্ব জয়ের চেষ্টা করেছিল। এসবের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।’

নামিবিয়ার ক্ষমতাসীন দলের এই কাউন্সিলর আরও বলেন, ‘আমার নাম নিয়ে আলোচনা করার কোনো কারণ নেই।’

স্থানীয় গণমাধ্যম জানায়, তাঁর নাম নিয়ে ভোটারদের কোনো আপত্তি নেই। বরং স্থানীয় মানুষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের কারণে তিনি বেশ জনপ্রিয়।

নামিবিয়ায় জার্মান নাম সাধারণ ঘটনা। আফ্রিকার দক্ষিণ-পশ্চিমের দেশটি ১৮৮৪ সালে জার্মান উপনিবেশে পরিণত হয় এবং ‘জার্মান সাউথ ওয়েস্ট আফ্রিকা’ নামে পরিচিত ছিল।

২০২১ সালে জার্মানি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করে যে ২০ শতকের শুরুর দিকে নামিবিয়ায় তারা গণহত্যা চালিয়েছে। হেরেরো ও নামা জনগোষ্ঠী তাদের জমি ও গবাদিপশু দখলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করলে তৎকালীন জার্মান সামরিক প্রশাসক লথার ফন ট্রোথা পুরো জনগোষ্ঠী নিশ্চিহ্ন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

বেঁচে যাওয়া লোকজনকে মরুভূমিতে ঠেলে দেওয়া হয় এবং পরে কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে বন্দী করে শ্রমে ব্যবহার করা হয়। এভাবে ১০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মান শাসনের অবসান ঘটে। দেশটি দক্ষিণ আফ্রিকার নিয়ন্ত্রণে আসে এবং দীর্ঘ ২৫ বছরের ‘বুশ ওয়্যার’–এর পর ১৯৯০ সালে নামিবিয়া স্বাধীনতা অর্জন করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...