Ajker Patrika

দেশি আচারের স্বাদ ও ঐতিহ্য ধরে রাখতে শুরু হয় ‘মৃ আচার’

মন্টি বৈষ্ণব, ঢাকা
আপডেট : ২২ মার্চ ২০২২, ১১: ০৪
দেশি আচারের স্বাদ ও ঐতিহ্য ধরে রাখতে শুরু হয় ‘মৃ আচার’

মানুষ স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসে। তবে স্বপ্নের জায়গাটা আবার একেকজনের একেকরকম। কেউ আট ঘণ্টার চাকরি করতে পছন্দ করেন। আবার কেউ হয়তো ১০ টা-৫টা অফিস করতে করতেই বিরক্ত হয়ে পড়েন। তেমনি একজন ম্যাগডিলিনা মৃ। স্বাধীনচেতা এই নারী শুরু থেকেই উদ্যোক্তা হওয়ার লড়াই করে গেছেন। শেষ পর্যন্ত থিতু হয়েছেন জিবে জল আনা আচার নিয়ে তাঁর উদ্যোগ ‘মৃ আচার’-এ এসে। 

ম্যাগডিলিনা মৃ বেড়ে উঠেছেন মধুপুরের ইদিলপুর গ্রামে। স্কুল ও কলেজ পর্যায়ের পড়াশোনা করেছেন মধুপুরেই। এর পর বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক সম্পন্ন করেন তিনি। ২০০৭ সাল থেকে বাস করছেন মহানগরী ঢাকায়। 

ছোটবেলা থেকেই স্বাধীনভাবে কাজ করতে চাইলেও চাকরিজীবী পরিচয় নিয়েই প্রবেশ করেন পেশাজীবনে। প্রতিদিন ১০ টা-৫টা অফিস করে কাটিয়ে দেন ২০১৯ সাল পর্যন্ত। কিন্তু স্বস্তি পাচ্ছিলেন না। হাঁপিয়ে ওঠেন রীতিমতো। এই বন্দীজীবন থেকে মুক্তি পেতে চিন্তা করেন, এমন কোনো কাজ করা যায় কি-না, যেখানে আনন্দ থাকবে, সৃজনশীলতা থাকবে, যা দিয়ে ভাঙা যাবে চাকরিজীবনের অনিঃশেষ বৃত্ত। 

হলুদের আচার।

এই চিন্তা থেকেই অফিসের পাশাপাশি স্বামীর সহযোগিতায় শুরু করেন নিরাপদ (কীটনাশক মুক্ত এবং প্রাকৃতিক উপায়ে চাষ করা) কৃষিপণ্য নিয়ে টুকটাক কাজ। শুরুতে তাঁর কৃষি উদ্যোগটি ‘কৃষ্টি’ নামে আত্মপ্রকাশ করলেও পরে নাম দেন ‘নাঙ্গল’। নাঙ্গল থেকে দেশি বিভিন্ন জাতের লাল চাল থেকে শুরু করে ঘি, মসলা, সরিষা তেলের পাশাপাশি কিছু কাঁচা সবজি বিপণন শুরু করেন। এর মধ্যে আবার অনেক ক্রেতার ঘরোয়া আচারের চাহিদার কথা শুনে সিদ্ধান্ত নেন ঘরে তৈরি আচার বিক্রি করবেন। পরে আচারে ক্রেতাদের চাহিদা বাড়তে থাকায় স্বতন্ত্রভাবে শুরু করেন আচারের ব্যবসা। অনলাইনে শুরু করা এই উদ্যোগের নাম দেন ‘মৃ-আচার’। 

আচারের সঙ্গে ‘মৃ’ নামটি যুক্ত করার কারণ জানতে চাইলে ম্যাগডিলিনা মৃ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি মূলত একজন আদিবাসী গারো নারী। আমাদের মধ্যে প্রায় অনেকগুলো মাহারি (গোত্র) রয়েছে, যাদের নামের শেষের অংশ সেই গোত্রগুলোর পরিচয় বহন করে। তো মৃ হলো আমার সেই গোত্রের পদবি। আচারের সঙ্গে মৃ নামটি যুক্ত করার মূল কারণ হলো আমার জাতিগোষ্ঠীকে প্রতিনিধিত্ব করা।’ 

রসুন, জলপাই আর মরিচের আচার।

শুধু আচার নিয়েই কাজ শুরুর কারণ হিসেবে ম্যাগডিলিনা মৃ বলেন, ‘আচার নিয়ে কাজ করার একটা অন্যতম কারণ হলো, বিভিন্ন কোম্পানির প্রস্তুত করা আচারের নিম্নমান। এগুলোর কারণে আমাদের ছোটবেলায় নানি-দাদিদের হাতে তৈরি আচারের যে ঐতিহ্য ও স্বাদ, সেটি এখন হারিয়ে যেতে বসেছে। আচারের পুরোনো সেই স্বাদ এবং ঐতিহ্যকে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আচার নিয়ে কাজ করার একটা বড় কারণ।’ 

গারো সম্প্রদায়ের সমাজব্যবস্থা মাতৃতান্ত্রিক। ম্যাগডিলিনার মৃ পদবিও এসেছে মাতৃকুল থেকেই। এ নিয়ে ম্যাগডিলিনা বলেন, ‘মাতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার কারণে আমাদের বেড়ে ওঠা মায়ের বাড়িতেই। আমার দিদিমা ছিলেন ইদিলপুর গ্রামের একজন বিদুষী নারী। তাঁর দুই সন্তানের মধ্যে আমার মা সবার বড়। আমার একজন মাসি ও তাঁর একটা ছেলে সন্তান রয়েছেন। আমরা তিন বোন ও দুই-ভাই। ভাইবোনদের সবাই শিক্ষাজীবন শেষ করে বিভিন্ন পেশায় কর্মরত।’ 

পেঁয়াজের আচার।

ম্যাগডিলিনা মৃর সঙ্গে আলাপে উঠে এল দেশের উচ্চফলনশীল ধানের বিভিন্ন জাতের কথা। এসব জাতের কারণে উৎপাদন বেশি হচ্ছে, বহু মানুষের খাবারের জোগান দেওয়া সম্ভব হচ্ছে সত্য; কিন্তু এর প্রভাবে হারিয়ে যাচ্ছে বহু দেশীয় জাত। শুধু ধান নয়, হারিয়ে যাচ্ছে অন্যান্য ফসলের জাতও। উচ্চফলনশীল হাইব্রিড বীজের ভিড়ে নিরাপদ খাদ্যের দেখা মিলছে খুব কম। তাই নিরাপদ খাদ্য নিয়ে কাজ করা অনেক বেশি জরুরি বলে মনে করেন ম্যাগডিলিনা মৃ। এ লক্ষ্যে নিজের উদ্যোগ ‘মৃ আচার’ থেকে তিনি দেশীয় ফলের আচার বিক্রি শুরু করেন। তবে কাজটা সহজ ছিল না। 

ম্যাগডিলিনা বলেন, ‘শুরুতেই কীটনাশক, ফরমালিনমুক্ত দেশি ফল সংগ্রহের একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। ধীরে ধীরে গ্রামের কৃষক, গৃহস্থ নারীদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করি।’ শুরুতেই সাফল্য আসেনি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তবে প্রথম কয়েকবার আচার তৈরি করে গ্রাহকদের খুব একটা সন্তুষ্ট করতে না পারলেও ক্রমাগত চেষ্টায় আচারের স্বাদ এবং গুণগত মান বাড়ে। গ্রাহকদের সাড়া পেতেও শুরু করেছিলাম, যা এখনো চলমান।’ 

বরইয়ের আচার।

নিরাপদ (বিষমুক্ত) দেশি ফলের আচার ‘মৃ আচার’ উল্লেখ করে ম্যাগডিলিনা জানান, প্রাকৃতিক কৃষি আন্দোলনের অংশ হিসেবে ‘মৃ আচার’-এর প্রথম এবং প্রধান লক্ষ্য হলো নিরাপদ (বিষমুক্ত) বিভিন্ন দেশি ফল দিয়ে ঘরোয়াভাবে বিশুদ্ধ উপকরণ (মসলা এবং ঘানি ভাঙা সরিষার তেল) সহযোগে আচার প্রস্তুত করা এবং ন্যায্য মূল্যে ভোক্তাদের কাছে তা পৌঁছানো। আচারের উপকরণগুলো কেনা থেকে শুরু করে আচার প্রস্তুত করা পর্যন্ত অনেক পরিশ্রম করতে হয়। এ পুরো প্রক্রিয়া নিজেই তত্ত্বাবধান করেন। বললেন, ‘আচারের মসলা তৈরি থেকে শুরু করে আচারটা বরাবর আমি নিজ হাতেই তৈরি করি। দু-একজন সহযোগী রয়েছেন, যারা অনেক সময় বিভিন্ন দেশি ফল ধুয়ে, বাছাই করে খোসা ছাড়িয়ে, কেটে সহযোগিতা করেন। তা ছাড়া আমি মধুপুরকেন্দ্রিক কিছু আদিবাসী গৃহস্থ নারীর সহযোগিতা পাই। তাঁরা বিভিন্ন মৌসুমে আমাকে নানান রকম দেশি ফল সরবরাহ করে সহযোগিতা করেন। বর্তমানে আমার সঙ্গে ৪-৫ জনের একটি দল কাজ করছে। এ ছাড়া ঢাকার বাইরের কয়েকজন গৃহিণী এবং কৃষক রয়েছেন, যারা নিয়মিত আমাকে দেশি ফল পাঠিয়ে সহযোগিতা করেন।’ 

নিজের তৈরি আচার সম্পর্কে ম্যাগডিলিনা মৃ বলেন, ‘বারো মাসই “মৃ আচারে” নানা পদের আচার থাকে। যেহেতু মৌসুমি ফলের আচার তৈরি করি, সেহেতু নির্দিষ্ট মৌসুমের পর সংশ্লিষ্ট আচার স্টকে থাকে না বললেই চলে। শীত, বর্ষা, গরম—প্রতিটি মৌসুমে পাওয়া যায়—এমন আচারই বেশি তৈরি করা হয়।’ 

চালতার আচার।

মৃ আচার-এ সারা বছর পাওয়া যায় যেসব আচার—দেশি রসুন, এককোষী রসুন, তেঁতুল, পেঁয়াজ, আদা-মরিচ কুচি আচার, নাগা মরিচের আচার, পাহাড়ি ধানি মরিচের আচার ইত্যাদি। এ ছাড়া আরও থাকে চালতার আচার, আমড়ার আচার, মিক্সড আচার (তেঁতুল, চালতা, বরই), জলপাইয়ের আচার, জলপাইয়ের গোল্লা, তেঁতুল-বরই নাড়ু, কদবেলের আচার, জলপাই, রসুন, মরিচের কুচি আচার, কাঁচা হলুদের আচার, আমের আচার, আমসত্ত্ব, তেঁতুল সত্ত্ব, আনারসের আচার এবং দেশি পেয়ারা ও আপেলের জেলি। 

ম্যাগডিলিনা মৃ চাকরিজীবনের একঘেয়েমি থেকে মুক্তি পেতে চেয়েছিলেন। এতটাই যে, মাত্র ১ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে শুরু করেছিলেন ব্যবসা। এখন ‘মৃ আচার’ থেকে প্রতি মাসে আয় সর্বনিম্ন ১৫ থেকে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। ব্যবসার কাজে নিজের জীবনসঙ্গীর কাছ থেকে সহযোগিতা পেয়েছেন পুরোদমে। বললেন, ‘সবদিক থেকে বেশি সহযোগিতা পেয়েছি আমার স্বামীর কাছ থেকে। এ জীবনে ওর সহযোগিতা না পেলে হয়তো সার্বিক দিক দিয়ে এত দূর পর্যন্ত আসা সম্ভব হতো না।’ 

ম্যাগডিলিনা মৃ উদ্যোক্তা হওয়ার পেছনে যেমন অনেকের সহযোগিতা পেয়েছেন। আবার অনেকের কাছে থেকে তিরস্কারও শুনেছেন। ব্যবসার ক্ষেত্রে তিক্ত অভিজ্ঞতা বিষয়ে মৃ বলেন, ‘আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় নারীদের কাজের প্রতিবন্ধকতা প্রতি পদেই রয়েছে। এই সমাজে একজন নারী নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলে শুরু থেকে অনেকের নাক সিটকানো ভাব থাকে। থাকে একটা বাঁকা দৃষ্টিভঙ্গি। অনেকেই সহযোগিতা করার ভান করে। কিন্তু কাজের সময় খুব অল্প কয়েকজন ছাড়া, আর কেউ তেমন সহযোগিতা করেন না। আবার একটু সফল হয়ে গেলে, যারা বাঁকা দৃষ্টিতে দেখেছিল, তাঁরাও প্রশংসা করতে শুরু করেন।’ 

তেঁতুলের আচার।

সবকিছু বিবেচনায় নিয়েই ম্যাগডিলিনা মৃ চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন। চাকরির একঘেয়ে কিন্তু নিয়মিত আয়ের নিশ্চয়তা ছেড়ে শুরু করেছেন নিজের উদ্যোগ। এটা সহজ ছিল না মোটেই। বললেন, ‘ঢাকার মতো একটি ব্যয়বহুল প্রতিযোগিতামূলক শহরে চাকরি না করে ব্যবসা করাটা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। আমি সাহসের সঙ্গে এ চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছি। তবে আমার মতো ভাবনা এই সমাজের অনেক নারীর মধ্যে নেই। এ দেশের চাকরিজীবী নারীদের অনেকে চাকরি চলে গেলে পুরোপুরি হতাশাগ্রস্ত এবং অনিশ্চিত হয়ে পড়েন। আমি চাকরিজীবী নারী কিংবা চাকরিতে যুক্ত হবেন—এমন নারীদের ক্ষেত্রে বলতে চাই, নিজের কর্মদক্ষতা, মেধা, সৃজনশীলতা দিয়ে এমন একটি ক্ষেত্র তৈরি করুন, যেটা একান্তই আপনার আয়ের মাধ্যম না হয়ে আরও দশজনকে যুক্ত করতে পারবে। এতে আপনার কাজের স্বাধীনতা, প্যাশন—দুটোই বজায় থাকবে।’ 

স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসেন ম্যাগডিলিনা মৃ। নিজের স্বপ্নের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘মৃ আচার-এর গ্রাহকের সংখ্যা নিয়মিতই বাড়ছে। ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে ব্যবসার পরিধি বাড়ানোর পরিকল্পনা করছি। ঢাকায় শুধু আচারের একটি আউটলেটের স্বপ্ন তো আছেই। পাশাপাশি সারা দেশে দেশি ফল ও বীজ সংরক্ষণের একটি মাধ্যমও হয়ে উঠবে “মৃ আচার”। আমার বিশ্বাস, আচার মুনাফালোভীদের আগ্রাসন থেকে বের হয়ে নিজস্ব ঐতিহ্য এবং স্বাদ ধরে রাখতে সক্ষম হবে “মৃ আচার”।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপির আপত্তি তোলা দুই অধ্যাদেশে উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন

লন্ডনে চিকিৎসা যাত্রায় খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী ১৪ জন, তালিকায় ছয় চিকিৎসক ও দুই এসএসএফ

ভারতে পা রাখলেন পুতিন, নিয়ম ভেঙে ‘কোলাকুলি’ করলেন মোদি

ঢাকার তিনটিসহ আরও ২৮ আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা বাকি থাকল

মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তেল-পেঁয়াজে দাম বাড়তি, সবজিতে ফিরছে স্বস্তি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
টাটকা সবজি কিনছেন একজন। গতকাল রাজধানীর হাতিরপুল কাঁচাবাজারে।
টাটকা সবজি কিনছেন একজন। গতকাল রাজধানীর হাতিরপুল কাঁচাবাজারে।

বাজারে একলাফে লিটারে ৯ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সয়াবিন তেলের দাম। আর দেশি পুরোনো পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা। তবে এসব পণ্যের সরবরাহে তেমন কোনো সমস্যা নেই বাজারে। পুরোনো পেঁয়াজের সঙ্গে নতুন পেঁয়াজও পাওয়া যাচ্ছে।

ভোজ্যতেল ও পেঁয়াজ ছাড়া বাজারে সবজি, ডিম, মুরগি, আটা, চিনিসহ প্রায় অধিকাংশ পণ্যের দাম কমেছে। বিশেষ করে সবজির বাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় অনেকটাই স্বস্তি ফিরেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শান্তিনগর, মালিবাগ, রামপুরাসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকা, এক সপ্তাহ আগে মানভেদে দাম ছিল ১১০-১২০ টাকা কেজি। নতুন পেঁয়াজের দাম অবশ্য তুলনামূলক কম। খুচরায় পাতাসহ নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজি।

জানতে চাইলে রামপুরা বাজারের সবজি বিক্রেতা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এবার পেঁয়াজ আমদানি না করেই বাজারের চাহিদা মিটে গেছে। এখন আগের মৌসুমের পেঁয়াজের মজুত একেবারেই শেষের দিকে। এই সময় পুরোনো পেঁয়াজের দাম কিছুটা বেশিই থাকে। তবে এটা বেশি দিন থাকবে না। বাজারে পেঁয়াজের ঘাটতি নেই। চাহিদা অনুসার পেঁয়াজ রয়েছে।’

বেড়েছে ভোজ্যতেলের দামও। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৯৮ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৮৯ টাকা। খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭৫-১৭৯ টাকা লিটার, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৭১-১৭৪ টাকা লিটার।

বিক্রেতারা বলছেন, কোম্পানিগুলো গত এক সপ্তাহে ধীরে ধীরে বাজারে বাড়তি দামে তেল সরবরাহ করেছে। এখনো অনেক দোকানে আগের দামের তেল পাওয়া যায়। তবে বাজারের অধিকাংশ দোকানেই বাড়তি দামের তেল রয়েছে।

গত সপ্তাহ পর্যন্ত খুচরায় কাঁচা মরিচ বিক্রি হতো ১২০-১৫০ টাকা কেজি, তবে চলতি সপ্তাহে দাম কমে ৭০-১০০ টাকা কেজিতে নেমেছে। এ ছাড়া শীতের সবজি হলেও শিমের দাম হঠাৎ বেড়ে ১৫০ টাকার ওপরে উঠেছিল।

সেই শিম এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা কেজি। ফুলকপি, বাঁধাকপির দাম কমেছে প্রতিটিতে ১০ টাকা। দুই ধরনের কপিই পাওয়া যাচ্ছে ৩০ টাকায়। তবে ভালো মানের ফুলকপি ৫০ টাকা। গত সপ্তাহে একটি কপি কিনতে ৪০-৬০ টাকা লেগেছিল।

দাম কমেছে টমেটোরও। মান ও বাজারভেদে প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১২০-১৪০ টাকা।

দেশি গাজরের সরবরাহ ব্যাপক বেড়েছে বাজারে, এতে দামও কমেছে। প্রতি কেজি গাজর বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০-১০০ টাকা। তবে আমদানির গাজর আগের মতোই ১২০-১৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে বেগুন বিক্রি হয়েছিল ৮০-১০০ টাকা কেজি, যা চলতি সপ্তাহে কমে ৭০-৮০ টাকায় নেমেছে। বাজারে আলুর দাম আগের মতোই প্রতি কেজি ২৫ টাকা রয়েছে।

আমিষের সবচেয়ে বড় উৎস ডিমের দাম আরও কমেছে। ফার্মের মুরগির সাদা ও বাদামি ডিমের দাম কমে ১১০ থেকে ১২৫ টাকা ডজনে নেমেছে। গত সপ্তাহে ছিল ১২০-১৩০ টাকা।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) তথ্য বলছে, গত বছর এই সময় ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছিল ১৪০-১৫০ টাকা ডজন। টিসিবি বলছে, গত বছরের তুলনায় ডিমের দাম ৩৫ শতাংশ কমেছে।

ডিমের সঙ্গে কমেছে ফার্মের মুরগির দামও। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম কমে ১৫০-১৭০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৬০-১৮০ টাকা কেজি।

সেগুনবাগিচা বাজারের ডিম বিক্রেতা নূর ই আলম বলেন, ‘ডিম ও মুরগির বাজার স্বাভাবিক আচরণ করছে না। হঠাৎ দামের এত পতন হচ্ছে কেন, তা বোঝা যাচ্ছে না। বর্তমানে ডিমের যে দাম, তা গত কয়েক বছরের তুলনায় সবচেয়ে কম।’

ডিম-মুরগির সঙ্গে কিছুটা কমেছে রুই-কাতলা মাছের দামও। বাজারে চাষের এই মাছগুলো বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪০০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩২০-৪৫০ টাকা কেজি।

মুদিপণ্যের মধ্যে চিনির দাম আগে থেকেই কমেছে। খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৯০-১০০ টাকা কেজি। চলতি সপ্তাহে নতুন করে কমেছে আটা, মসুর ডাল, ছোলার দাম। খোলা আটার দাম ২-৩ টাকা কমে ৪৫-৪৮ টাকা বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ছিল ৪৮-৫০ টাকা কেজি। কেজিপ্রতি বড় দানার মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৯০-১০০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৯৫-১০৫ টাকা। ছোলার দামও কেজিপ্রতি ৫ টাকা কমে ৯৫-১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারের মামা-ভাগনে মুদিদোকানের বিক্রেতা হারুনুর রশিদ বলেন, রমজান উপলক্ষে পণ্যের আমদানি ব্যাপক বেড়েছে। তাই প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম কমছে। তবে ভোজ্যতেল ও পেঁয়াজের বিষয়টি কিছুটা ভিন্ন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপির আপত্তি তোলা দুই অধ্যাদেশে উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন

লন্ডনে চিকিৎসা যাত্রায় খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী ১৪ জন, তালিকায় ছয় চিকিৎসক ও দুই এসএসএফ

ভারতে পা রাখলেন পুতিন, নিয়ম ভেঙে ‘কোলাকুলি’ করলেন মোদি

ঢাকার তিনটিসহ আরও ২৮ আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা বাকি থাকল

মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

উত্তরা ব্যাংকের ২৫০তম শাখার উদ্বোধন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

উত্তরা ব্যাংক পিএলসির একটি নতুন শাখার উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার ব্যাংক রোড, দৌলতগঞ্জ বাজারে ব্যাংকের ২৫০তম লাকসাম শাখার উদ্বোধন করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. আবুল হাশেম।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাকসুদুল হাসান।

এ ছাড়া অনুষ্ঠানে মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) মো. রবিউল হাসান এবং উপমহাব্যবস্থাপক ও আঞ্চলিক প্রধান (কুমিল্লা অঞ্চল) মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপির আপত্তি তোলা দুই অধ্যাদেশে উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন

লন্ডনে চিকিৎসা যাত্রায় খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী ১৪ জন, তালিকায় ছয় চিকিৎসক ও দুই এসএসএফ

ভারতে পা রাখলেন পুতিন, নিয়ম ভেঙে ‘কোলাকুলি’ করলেন মোদি

ঢাকার তিনটিসহ আরও ২৮ আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা বাকি থাকল

মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

টানা চার মাস কমল রপ্তানি আয়

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রেমিট্যান্সে প্রবাহ বাড়লেও পণ্য রপ্তানিতে ধাক্কার ধারা থামছে না। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের নভেম্বরে দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৮৯ কোটি ১৫ লাখ ডলার। গত বছরের একই মাসে এই আয় ছিল ৪১১ কোটি ৯৬ লাখ ডলার। অর্থাৎ মাসওয়ারি হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে রপ্তানি আয় কমেছে ৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ, টাকার অঙ্কে এই হ্রাসকৃত রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়ায় ২২ কোটি ৮১ লাখ ডলার।

এবারই প্রথম নয়, আগস্ট থেকে শুরু হওয়া নিম্নমুখী ধারা নভেম্বরে এসে চতুর্থ মাসে পা দিল। জুলাইয়ের শক্তিশালী সূচনার পর রপ্তানি খাত যে ধারাবাহিক গতি অর্জন করেছিল, সেই গতি আগস্টেই থমকে যায়। ওই মাসে আগের বছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি কমে ২ দশমিক ৯৩ শতাংশে নেমে আসে। সেপ্টেম্বরেও পতন গভীর হয়—৪ দশমিক ৬১ শতাংশ। অক্টোবরে সেই হার আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশে।

জুলাইয়ের ব্যতিক্রমী সাফল্যের পর পরবর্তী চার মাস যেন একটানা ঢালু পথ। সেই জুলাইয়ে রপ্তানি আয় ছিল ৪৭৭ কোটি ৫ লাখ ডলার, প্রবৃদ্ধি প্রায় ২৪ দশমিক ৯০ শতাংশ। কিন্তু এরপর প্রতি মাসেই কমতে কমতে নভেম্বরে এসে রপ্তানি আয়ের ব্যবধান স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

সার্বিক চিত্রটি বলছে, অর্থবছরের শুরুতে পাওয়া জোয়ারটি এখন চার মাসের টানা ভাটার মুখে দাঁড়িয়ে।

আজ বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ইপিবির তথ্য পর্যালোচনায় আরও দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর মিলিয়ে পাঁচ মাসে মোট রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ২০০২ কোটি ৮৫ লাখ ডলার; যা আগের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি ঘটেছে মাত্র দশমিক ৬২ শতাংশ। অর্থাৎ পাঁচ মাসের সার্বিক রপ্তানি আয়ের চিত্রও নামমাত্র।

নভেম্বরের সবচেয়ে বড় আঘাত লেগেছে পোশাক খাতে, যেটি দেশের রপ্তানির প্রধান ভরসা। ওই মাসে পোশাক রপ্তানি থেকে এসেছে ৩১৪ কোটি ৯ লাখ ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ৫ শতাংশ কম। এ সময় নিটওয়্যার খাতে আয় নেমেছে ১৬১ কোটি ৮৪ লাখ ডলারে, আর ওভেনে এসেছে ১৫২ কোটি ২৪ লাখ ডলার। গত বছরের একই সময়ে নিটওয়্যার আয় ছিল ১৭৩ কোটি ৮২ লাখ ডলার এবং ওভেন ১৫৬ কোটি ৯২ লাখ ডলার।

পোশাকের বাইরে কৃষিপণ্যে রপ্তানি কমেছে ২৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ, প্লাস্টিক পণ্যে কমেছে ১৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ। এ ছাড়া রপ্তানি পতনের তালিকায় রয়েছে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত সামগ্রী, হোম টেক্সটাইলস, ফার্মাসিউটিক্যালস, জাহাজ, চিংড়ি ও লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং। এর মানে হচ্ছে, প্রচলিত এসব খাতেও মন্থরতা স্পষ্ট।

তবে সব বাজারে একই চিত্র নয়। কিছু গন্তব্যে বিপরীত প্রবণতা দেখা গেছে, যা সামগ্রিক মন্দার মধ্যেও আশার সঞ্চার করেছে। যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি বেড়েছে ৪ দশমিক ২০ শতাংশ, যুক্তরাজ্যে ৩ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। উদীয়মান বাজারগুলোর মধ্যেও ইতিবাচক প্রবণতা স্পষ্ট—চীনে রপ্তানি বেড়েছে ২৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ, পোল্যান্ডে ১১ দশমিক ৫৭ শতাংশ, সৌদি আরবে ১১ দশমিক ৩৪ শতাংশ এবং স্পেনে ১০ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এ প্রবণতা সাম্প্রতিক বছরগুলোয় যেন অনেকটাই ব্যতিক্রমী সাফল্য।

সব মিলিয়ে চিত্রটি দ্বিমুখী। একদিকে ঐতিহ্যগত প্রধান খাতগুলোতে পতন; অন্যদিকে কিছু নতুন বাজারে ইতিবাচক ইঙ্গিত। তবে বড় প্রশ্ন রয়ে যায়, এই বাজার বৃদ্ধি কি পোশাকসহ প্রধান খাতের ধারাবাহিক মন্দাকে সামাল দিতে পারবে?

বর্তমান বাস্তবতা বলছে, বৈচিত্র্য বাড়ানোর পথে অনেক দূর যেতে হবে। উৎপাদন প্রতিযোগিতা, মূল্যের চাপ, বৈদেশিক অর্ডার সংকোচন এবং বিশ্ববাজারের অনিশ্চয়তা, সব মিলিয়ে রপ্তানি খাতে সামনের পথ সহজ নয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপির আপত্তি তোলা দুই অধ্যাদেশে উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন

লন্ডনে চিকিৎসা যাত্রায় খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী ১৪ জন, তালিকায় ছয় চিকিৎসক ও দুই এসএসএফ

ভারতে পা রাখলেন পুতিন, নিয়ম ভেঙে ‘কোলাকুলি’ করলেন মোদি

ঢাকার তিনটিসহ আরও ২৮ আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা বাকি থাকল

মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিল সিগারেট কোম্পানি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৪৮
৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিল  সিগারেট কোম্পানি

পাবনার ইশ্বরদীভিত্তিক সিগারেট কোম্পানি ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রায় ৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযানে গিয়ে এই ফাঁকি ধরেছেন বলে আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিআর।

এনবিআর জানায়, তামাক ও তামাকজাত পণ্যের অবৈধ উৎপাদন, বাজারজাতকরণ এবং রাজস্ব ফাঁকি প্রতিরোধে সম্প্রতি কার্যক্রম আরও জোরদার করেছে এনবিআর। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সূত্রের ভিত্তিতে এনবিআরের ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের একটি দল ঈশ্বরদীতে অবস্থিত ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কারখানায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।

গোয়েন্দা দলের পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি ভ্যাট নিবন্ধন গ্রহণ করলেও দীর্ঘদিন ধরে আনুষ্ঠানিক উৎপাদন কার্যক্রম প্রদর্শন না করে গোপনে সিগারেট উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছে। অভিযানে ৬ লাখ ৩৪ হাজার ৫৯০ শলাকা জাল ব্যান্ডরোলযুক্ত সিগারেট জব্দ করা হয়, যার বাজারমূল্য ৩৮ লাখ টাকারও বেশি। এসব সিগারেটের বিপরীতে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ২৯ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়।

এ ছাড়া ১০ লাখ ২৯ হাজারটি অব্যবহৃত জাল ব্যান্ডরোল বা স্ট্যাম্প উদ্ধার করা হয়, যা ব্যবহার করা হলে অতিরিক্ত ৮ কোটি ৫০ লাখ টাকারও বেশি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া সম্ভব ছিল। প্রতিষ্ঠানটি ৩ লাখ ২২ হাজার ৫০০টি বৈধ ব্যান্ডরোল সংগ্রহ করলেও তা ব্যবহার না করে জাল ব্যান্ডরোল ব্যবহার করে সিগারেট উৎপাদন ও বিক্রি করছিল।

এনবিআর জানিয়েছে, সব সিগারেট ও উপকরণ আইনানুগভাবে জব্দ করা হয়েছে এবং প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনিপ্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। অভিযানে উদ্ধার করা দলিলাদির ভিত্তিতে শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ভ্যাট কমিশনারেটকে প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন ও বিক্রি কার্যক্রমের ওপর কঠোর নজরদারির জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপির আপত্তি তোলা দুই অধ্যাদেশে উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন

লন্ডনে চিকিৎসা যাত্রায় খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী ১৪ জন, তালিকায় ছয় চিকিৎসক ও দুই এসএসএফ

ভারতে পা রাখলেন পুতিন, নিয়ম ভেঙে ‘কোলাকুলি’ করলেন মোদি

ঢাকার তিনটিসহ আরও ২৮ আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা বাকি থাকল

মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত