রোকন উদ্দীন, ঢাকা

প্রকৃতির এক আশ্চর্য উপহার মধু। মিষ্টি স্বাদ আর গুণাগুণের জন্য মানুষের মনে এর জায়গা চিরকালীন। এক ফোঁটা মধু জিহ্বায় পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা মন থেকে মস্তিষ্ক পর্যন্ত গভীর আনন্দ ছড়িয়ে দেয়।
মধু শুধু স্বাদের জন্য নয়, উপকারিতার জন্যও খ্যাতি অর্জন করেছে। এটি ‘সব রোগের মহৌষধ’ হিসেবে পরিচিত। পুষ্টিবিদেরা বলেন, মধুতে গ্লুকোজ, ফ্রুকটোজ, খনিজ লবণ, অ্যামাইনো অ্যাসিডসহ প্রায় ৪৫টি পুষ্টি উপাদান থাকে। ১০০ গ্রাম মধুতে ২৮৮ ক্যালরি শক্তি থাকে, যা শরীর চাঙা রাখতে সাহায্য করে।
একসময় বন-জঙ্গল থেকে মৌয়ালেরা মধু সংগ্রহ করতেন, যা দাদি-নানিরা বোতলে জমাতেন। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মধু উৎপাদন থেকে বাজারে পৌঁছানোর প্রক্রিয়াটি বাণিজ্যিক রূপ লাভ করেছে এবং শিল্পে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে মধু নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে গবেষক, চাষি, উৎপাদক, ব্যবসায়ী ও ভোক্তার মাঝে সেতুবন্ধ গড়ে উঠেছে। এর সদস্যসংখ্যা ২৬ হাজারের বেশি। প্রতিবছর জাতীয় মৌমাছি ও মধু সম্মেলন, প্রদর্শনী, সেমিনার, মধুমেলা এবং সুন্দরবনে হানি ট্যুরিজমের কার্যক্রমও চলছে।
বর্তমানে দেশে মধুর বার্ষিক বাজারমূল্য ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ২০২৪ সালে প্রাকৃতিক ও চাষ থেকে ২০-২৫ হাজার টন মধু সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯০-৯৫% চাষের। তবে দেশে মধু প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংগ্রহের আধুনিক ব্যবস্থা কম, তাই প্রতিবছর প্রায় ২ হাজার টন মধু আমদানি করা হচ্ছে।
গবেষক ও উদ্যোক্তারা মনে করেন, মধু শুধু পুষ্টি ও স্বাদের বিষয় নয়, এটি একটি বিশাল সম্ভাবনার ক্ষেত্র। একটু পরিকল্পনা ও যত্ন নিলে এই শিল্পকে দেশের অর্থনীতির এক শক্তিশালী খাতে রূপান্তর করা সম্ভব। যদি এই খাতে উন্নতি ঘটে, দেশের বার্ষিক মধু উৎপাদন ২ লাখ টন ছাড়িয়ে যাবে, যার বাজারমূল্য দাঁড়াবে ১৪-১৫ হাজার কোটি টাকায়।
মৌমাছি চাষের ইতিহাস
মৌমাছি চাষের প্রাচীন ইতিহাস খ্রিষ্টপূর্ব ৬ হাজার অব্দে পাওয়া গেলেও পদ্ধতিগতভাবে এটি শুরু হয় ১৬ শতকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। আধুনিক মৌচাষের ভিত্তি স্থাপন করেন ল্যাংস্ট্রোথ, ১৮ শতকে। বাংলাদেশে বাণিজ্যিক মৌচাষ শুরু হয় ১৯৬১ সালে কুমিল্লার পল্লী উন্নয়ন একাডেমিতে। এরপর ১৯৬৩ সালে বিসিক প্রথম মৌ চাষের উদ্যোগ নেয়। ভারতে মৌমাছি চাষ শুরু হয়েছিল ১৮৮৩ সালে। আশির দশকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যুক্ত হয় এবং ২০০০ সাল থেকে বাণিজ্যিকভাবে মধু উৎপাদন শুরু হয়। ২০০৫ সাল পর্যন্ত বিসিক ১৭ হাজার মানুষকে প্রশিক্ষণ দিয়ে মধু চাষে উদ্বুদ্ধ করেছে।
বাড়ছে উৎপাদন-চাহিদা
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের আল আমিন আট বছর আগে মধু ব্যবসা শুরু করেন। তখন তাঁর এলাকায় ১০-১২ জন বিক্রেতা ছিলেন। আজ সেই সংখ্যা বেড়ে কয়েক হাজার হয়েছে। প্রথমে দৈনিক ২-৩ কেজি মধু বিক্রি হলেও বর্তমানে তা ১৫-২০ কেজিতে দাঁড়িয়েছে। তাঁর প্রতিষ্ঠিত ব্র্যান্ড ‘ভিটালিক্স’ও বাজারে পরিচিত।
আল আমিন জানান, করোনাকালে মধুর বাজার দ্রুত বেড়েছে। আগের পাঁচ বছরে যে চাহিদা ছিল, করোনার এক-দুই বছরে তা অনেক বেড়েছে। কারণ, মানুষ এখন শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা (ইমিউনিটি) বাড়ানোর গুরুত্ব বুঝতে পেরেছে।
মধুর বাজারের আকার
দেশে মধু উৎপাদনের প্রকৃত তথ্য এখনো অস্পষ্ট। সরকারি-বেসরকারি হিসাবে এর পরিমাণের তথ্যে ভিন্নতা রয়েছে। বিসিকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে সাড়ে ১০ হাজার টনের বেশি মধু উৎপাদিত হয়, যা ২০১৮-১৯ সালে ছিল ২ হাজার টনের কম। এ ছাড়া প্রতিবছর প্রায় ২ হাজার টন মধু আমদানি করা হয়।
তবে গতকাল শনিবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত হওয়া পঞ্চম মৌমাছি ও মধু সম্মেলনে উপস্থাপিত গবেষণা প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৪ সালে প্রাকৃতিক ও চাষ থেকে মধু সংগ্রহ হয়েছে ২০ থেকে ২৫ হাজার টন।
বাংলাদেশ বি কিপার্স অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোক্তাদের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি কেজি মধুর গড় মূল্য ৭০০ টাকা ধরে ১০ হাজার ৬৫৫ টন মধুর বাজারমূল্য প্রায় ৭৫০ কোটি টাকা। প্রতিবছর আমদানি করা মধুর মূল্য প্রায় ৬০ কোটি টাকা এবং মৌচাক থেকে প্রাপ্ত অন্যান্য উপকরণ বিক্রি হয় প্রায় ৫০ কোটি টাকায়। সুতরাং উৎপাদিত, আমদানি, অন্যান্য মধুর পণ্যসহ দেশে মধুর বাজার ৮৫০ কোটি টাকার বেশি।
বর্তমানে বিসিকের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চাষির সংখ্যা ৬ হাজার। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়া প্রায় ২ হাজার চাষি মধু উৎপাদন করছেন। এসব চাষি সাধারণত ৮০-১০০টি বাক্স ব্যবহার করে মধু উৎপাদন করেন। শখের বশে কিছু বাক্স কিনে ব্যক্তিগতভাবে মধু উৎপাদনকারীও রয়েছেন। এর ফলে বেসরকারি তথ্য অনুযায়ী মধুর বাজারের আকার আরও বড়। যার বার্ষিক বাজারমূল্য ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
কোথায় বেশি উৎপাদন
মধুর ৯৫ শতাংশ উৎপাদিত হয় চাষের মাধ্যমে, যার মধ্যে প্রাকৃতিক মধুর বড় উৎস সুন্দরবন। বন বিভাগের তথ্যমতে, সুন্দরবন থেকে প্রতিবছর প্রায় ৩০০ টন মধু আহরণ করা হয়। সরকারিভাবে মধু চাষ করে বিসিক, যার ছয়টি মধু সংগ্রহকেন্দ্র রয়েছে গাজীপুর, দিনাজপুর, বাগেরহাট, বরিশাল, সিলেট ও কুমিল্লায়। এ ছাড়া মানিকগঞ্জ, পাবনা, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, টাঙ্গাইলসহ বিভিন্ন এলাকায় বেশি মধু উৎপাদিত হয়; বিশেষত সরিষা, ধনিয়া, কালিজিরা ও লিচু ফুলের মৌসুমে।
মধুর ধরন, ব্র্যান্ড ও দাম
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে সরিষা, লিচু, কালিজিরা, সুন্দরবনের বাইং, বরই, ধনিয়া, শজনেসহ ৮-১০ ধরনের ফুলের মধু পাওয়া যায়। সবচেয়ে দামি হলো সুন্দরবনের প্রাকৃতিক মধু, যা ১ হাজার ৯০০ থেকে ২ হাজার টাকা কেজি বিক্রি হয়। এরপরেই সুন্দরবনে বাক্সে উৎপাদিত মধু ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ এবং বাইং ফুলের মধু ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা কেজি। সরিষা ফুলের মধুর দাম সবচেয়ে কম, ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি। কালিজিরার মধু বিক্রি হয় ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা কেজি।
বিক্রেতারা বলেন, মধুর দাম কিছুটা বেশি হলেও এটি স্বাস্থ্যোপকারিতার জন্য অনেকের কাছে সাশ্রয়ী। এ ক্ষেত্রে ২০ গ্রাম মধু খাওয়ার খরচ মাত্র ১২ টাকা, যা অনেকের জন্য সাশ্রয়ী হতে পারে। বাজারে পাওয়া যায় দেশীয় ব্র্যান্ড যেমন স্বপ্ন মধু, ট্রপিকা, এপি মধু ছাড়াও আমদানি করা বিদেশি ব্র্যান্ড; যেমন ভারতের ডাবর, সাফোলা; পাকিস্তানের বি হাইভস; অস্ট্রেলিয়ার অজিবি; সৌদি আরবের আল শিফা; নিউজিল্যান্ডের মানুকা হানি। বিদেশি মধু সাধারণত ৫০০ থেকে ২৫০ গ্রাম কাচের জারে বিক্রি হয়, যার দাম কেজিতে ১ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার টাকা।
ভেজালে বাড়ছে আস্থাহীনতা
মধুর বাজার সম্প্রসারণের সঙ্গে সঙ্গে ভেজালের পরিমাণও বাড়ছে, যা ক্রেতাদের জন্য বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে ভেজাল মধু খাঁটি মধু হিসেবে বিক্রি হচ্ছে, ফলে ক্রেতারা সঠিক পণ্য নির্বাচন করতে পারছেন না। এই আস্থাহীনতা ক্রমাগত বেড়ে যাওয়ায় খাঁটি মধু কেনার প্রতি মানুষের আগ্রহ কমছে। তা ছাড়া ভেজাল মধু বিক্রির কারণে খাঁটি মধুর দামও সঠিকভাবে নির্ধারণ করা যাচ্ছে না। ফলে বাজারে মধুর চাহিদা ও বিশ্বাসে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে, যা ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের জন্য উদ্বেগের কারণ।
মানসনদেও জটিলতা
গোপীবাগ এলাকার মাহবুবা আলম বলেন, বাজারের মধু খাঁটি কি না, তা নিশ্চিত করা কঠিন। যদি সরকারি সংস্থা নিশ্চিত করতে পারত, তাহলে ক্রেতার সংখ্যা আরও বাড়ত। দেশে মধুর বিপণনে মান বজায় রাখার দায়িত্ব বিএসটিআইয়ের। বিএসটিআই কর্তৃক মানসনদপ্রাপ্ত ১৮১টি পণ্যের মধ্যে মধু রয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সনদ নিয়ে মধু বিক্রি হলেও প্রক্রিয়াগত জটিলতার কারণে অনেকে সনদ নেন না। লাইসেন্স প্রক্রিয়া সহজ করলে বাজারে আস্থাহীনতা অনেকটা কমে যেত।
বিএসটিআই সূত্রে জানা যায়, মধুর মানসনদ নিতে উদ্যোক্তাকে একটি প্রতিষ্ঠিত কারখানা, ট্রেড লাইসেন্স, ট্রেডমার্ক সার্টিফিকেট, স্বাস্থ্য সার্টিফিকেট ও মোড়ক তৈরি করতে হয়। এসব কাগজপত্রসহ বিএসটিআইয়ে আবেদন করতে হয়, যেখানে উৎপাদিত পণ্যের নমুনা জমা দিতে হয়। বিএসটিআই নিজস্ব ল্যাবে ১৩টি পরীক্ষা এবং সরেজমিন তদন্তের মাধ্যমে মানসনদ দেয়। বিএসটিআইয়ের পরিচালক মো. নূরুল আমিন বলেন, ‘এখানে ওয়ান-স্টপ সার্ভিস রয়েছে, তবে আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করতেই হবে, অন্যথায় সনদ দেওয়া সম্ভব নয়।’

সমস্যা ও সম্ভাবনা
কিছু বাধার কারণে দেশে মধু উৎপাদন এখনো পূর্ণ সম্ভাবনায় পৌঁছাতে পারেনি। খাতসংশ্লিষ্টরা জানান, মৌমাছির জাত উন্নয়ন ও গবেষণার অভাব প্রধান সমস্যা। গাভির জাত উন্নয়ন করে দুধের উৎপাদন যেমন বাড়ানো সম্ভব হয়েছে, তেমনি মৌমাছির জাত উন্নয়ন হলে মধুর উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব। মৌচাষিরা এক মৌসুমে ৩৫-৪০ কেজি মধু উৎপাদন করতে পারেন, যেখানে চীন ও ভারতের চাষিরা ১০০ থেকে ১২০ কেজি পর্যন্ত উৎপাদন করতে সক্ষম।
বাংলাদেশ বি কিপার্স অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের অভাবও বড় বাধা। বিসিক প্রতিবছর ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে প্রশিক্ষণ দিলেও তা যথেষ্ট নয়। এ ছাড়া মধু বিক্রি ও মানসম্পর্কিত আইন না থাকায় বাজারে আস্থা কম। এ ছাড়া দেশে মধু খাতের জন্য কোনো আলাদা বোর্ড বা দপ্তর না থাকায় কার্যকর নীতিমালা তৈরি সম্ভব হয়নি। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) সাবেক কর্মকর্তা ও মৌ চাষ উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক খোন্দকার আমিনুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যথাযথ উদ্যোগ নিলে দেশের মধু খাত রপ্তানি উপযোগী হয়ে ২ লাখ টন পর্যন্ত উৎপাদন করা সম্ভব। এতে দেশের চাহিদা মিটিয়ে ইউরোপ, আমেরিকা, কানাডাসহ অন্য দেশগুলোতে রপ্তানি করা যাবে।’
খোন্দকার আমিনুজ্জামান আরও জানান, ‘দৈনিক ১০ গ্রাম মধু খেলে দেশের বার্ষিক চাহিদা ৪০ হাজার টন হতে পারে, কিন্তু সচেতনতার অভাবে মানুষ মধু খায় না। মৌমাছি চাষে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। এটি শুধু মধুর উৎপাদন বাড়াবে না, কৃষি ফসলের উৎপাদনও ২৫-৩০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেবে।’

প্রকৃতির এক আশ্চর্য উপহার মধু। মিষ্টি স্বাদ আর গুণাগুণের জন্য মানুষের মনে এর জায়গা চিরকালীন। এক ফোঁটা মধু জিহ্বায় পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা মন থেকে মস্তিষ্ক পর্যন্ত গভীর আনন্দ ছড়িয়ে দেয়।
মধু শুধু স্বাদের জন্য নয়, উপকারিতার জন্যও খ্যাতি অর্জন করেছে। এটি ‘সব রোগের মহৌষধ’ হিসেবে পরিচিত। পুষ্টিবিদেরা বলেন, মধুতে গ্লুকোজ, ফ্রুকটোজ, খনিজ লবণ, অ্যামাইনো অ্যাসিডসহ প্রায় ৪৫টি পুষ্টি উপাদান থাকে। ১০০ গ্রাম মধুতে ২৮৮ ক্যালরি শক্তি থাকে, যা শরীর চাঙা রাখতে সাহায্য করে।
একসময় বন-জঙ্গল থেকে মৌয়ালেরা মধু সংগ্রহ করতেন, যা দাদি-নানিরা বোতলে জমাতেন। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মধু উৎপাদন থেকে বাজারে পৌঁছানোর প্রক্রিয়াটি বাণিজ্যিক রূপ লাভ করেছে এবং শিল্পে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে মধু নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে গবেষক, চাষি, উৎপাদক, ব্যবসায়ী ও ভোক্তার মাঝে সেতুবন্ধ গড়ে উঠেছে। এর সদস্যসংখ্যা ২৬ হাজারের বেশি। প্রতিবছর জাতীয় মৌমাছি ও মধু সম্মেলন, প্রদর্শনী, সেমিনার, মধুমেলা এবং সুন্দরবনে হানি ট্যুরিজমের কার্যক্রমও চলছে।
বর্তমানে দেশে মধুর বার্ষিক বাজারমূল্য ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ২০২৪ সালে প্রাকৃতিক ও চাষ থেকে ২০-২৫ হাজার টন মধু সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯০-৯৫% চাষের। তবে দেশে মধু প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংগ্রহের আধুনিক ব্যবস্থা কম, তাই প্রতিবছর প্রায় ২ হাজার টন মধু আমদানি করা হচ্ছে।
গবেষক ও উদ্যোক্তারা মনে করেন, মধু শুধু পুষ্টি ও স্বাদের বিষয় নয়, এটি একটি বিশাল সম্ভাবনার ক্ষেত্র। একটু পরিকল্পনা ও যত্ন নিলে এই শিল্পকে দেশের অর্থনীতির এক শক্তিশালী খাতে রূপান্তর করা সম্ভব। যদি এই খাতে উন্নতি ঘটে, দেশের বার্ষিক মধু উৎপাদন ২ লাখ টন ছাড়িয়ে যাবে, যার বাজারমূল্য দাঁড়াবে ১৪-১৫ হাজার কোটি টাকায়।
মৌমাছি চাষের ইতিহাস
মৌমাছি চাষের প্রাচীন ইতিহাস খ্রিষ্টপূর্ব ৬ হাজার অব্দে পাওয়া গেলেও পদ্ধতিগতভাবে এটি শুরু হয় ১৬ শতকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। আধুনিক মৌচাষের ভিত্তি স্থাপন করেন ল্যাংস্ট্রোথ, ১৮ শতকে। বাংলাদেশে বাণিজ্যিক মৌচাষ শুরু হয় ১৯৬১ সালে কুমিল্লার পল্লী উন্নয়ন একাডেমিতে। এরপর ১৯৬৩ সালে বিসিক প্রথম মৌ চাষের উদ্যোগ নেয়। ভারতে মৌমাছি চাষ শুরু হয়েছিল ১৮৮৩ সালে। আশির দশকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যুক্ত হয় এবং ২০০০ সাল থেকে বাণিজ্যিকভাবে মধু উৎপাদন শুরু হয়। ২০০৫ সাল পর্যন্ত বিসিক ১৭ হাজার মানুষকে প্রশিক্ষণ দিয়ে মধু চাষে উদ্বুদ্ধ করেছে।
বাড়ছে উৎপাদন-চাহিদা
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের আল আমিন আট বছর আগে মধু ব্যবসা শুরু করেন। তখন তাঁর এলাকায় ১০-১২ জন বিক্রেতা ছিলেন। আজ সেই সংখ্যা বেড়ে কয়েক হাজার হয়েছে। প্রথমে দৈনিক ২-৩ কেজি মধু বিক্রি হলেও বর্তমানে তা ১৫-২০ কেজিতে দাঁড়িয়েছে। তাঁর প্রতিষ্ঠিত ব্র্যান্ড ‘ভিটালিক্স’ও বাজারে পরিচিত।
আল আমিন জানান, করোনাকালে মধুর বাজার দ্রুত বেড়েছে। আগের পাঁচ বছরে যে চাহিদা ছিল, করোনার এক-দুই বছরে তা অনেক বেড়েছে। কারণ, মানুষ এখন শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা (ইমিউনিটি) বাড়ানোর গুরুত্ব বুঝতে পেরেছে।
মধুর বাজারের আকার
দেশে মধু উৎপাদনের প্রকৃত তথ্য এখনো অস্পষ্ট। সরকারি-বেসরকারি হিসাবে এর পরিমাণের তথ্যে ভিন্নতা রয়েছে। বিসিকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে সাড়ে ১০ হাজার টনের বেশি মধু উৎপাদিত হয়, যা ২০১৮-১৯ সালে ছিল ২ হাজার টনের কম। এ ছাড়া প্রতিবছর প্রায় ২ হাজার টন মধু আমদানি করা হয়।
তবে গতকাল শনিবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত হওয়া পঞ্চম মৌমাছি ও মধু সম্মেলনে উপস্থাপিত গবেষণা প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৪ সালে প্রাকৃতিক ও চাষ থেকে মধু সংগ্রহ হয়েছে ২০ থেকে ২৫ হাজার টন।
বাংলাদেশ বি কিপার্স অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোক্তাদের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি কেজি মধুর গড় মূল্য ৭০০ টাকা ধরে ১০ হাজার ৬৫৫ টন মধুর বাজারমূল্য প্রায় ৭৫০ কোটি টাকা। প্রতিবছর আমদানি করা মধুর মূল্য প্রায় ৬০ কোটি টাকা এবং মৌচাক থেকে প্রাপ্ত অন্যান্য উপকরণ বিক্রি হয় প্রায় ৫০ কোটি টাকায়। সুতরাং উৎপাদিত, আমদানি, অন্যান্য মধুর পণ্যসহ দেশে মধুর বাজার ৮৫০ কোটি টাকার বেশি।
বর্তমানে বিসিকের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চাষির সংখ্যা ৬ হাজার। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়া প্রায় ২ হাজার চাষি মধু উৎপাদন করছেন। এসব চাষি সাধারণত ৮০-১০০টি বাক্স ব্যবহার করে মধু উৎপাদন করেন। শখের বশে কিছু বাক্স কিনে ব্যক্তিগতভাবে মধু উৎপাদনকারীও রয়েছেন। এর ফলে বেসরকারি তথ্য অনুযায়ী মধুর বাজারের আকার আরও বড়। যার বার্ষিক বাজারমূল্য ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
কোথায় বেশি উৎপাদন
মধুর ৯৫ শতাংশ উৎপাদিত হয় চাষের মাধ্যমে, যার মধ্যে প্রাকৃতিক মধুর বড় উৎস সুন্দরবন। বন বিভাগের তথ্যমতে, সুন্দরবন থেকে প্রতিবছর প্রায় ৩০০ টন মধু আহরণ করা হয়। সরকারিভাবে মধু চাষ করে বিসিক, যার ছয়টি মধু সংগ্রহকেন্দ্র রয়েছে গাজীপুর, দিনাজপুর, বাগেরহাট, বরিশাল, সিলেট ও কুমিল্লায়। এ ছাড়া মানিকগঞ্জ, পাবনা, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, টাঙ্গাইলসহ বিভিন্ন এলাকায় বেশি মধু উৎপাদিত হয়; বিশেষত সরিষা, ধনিয়া, কালিজিরা ও লিচু ফুলের মৌসুমে।
মধুর ধরন, ব্র্যান্ড ও দাম
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে সরিষা, লিচু, কালিজিরা, সুন্দরবনের বাইং, বরই, ধনিয়া, শজনেসহ ৮-১০ ধরনের ফুলের মধু পাওয়া যায়। সবচেয়ে দামি হলো সুন্দরবনের প্রাকৃতিক মধু, যা ১ হাজার ৯০০ থেকে ২ হাজার টাকা কেজি বিক্রি হয়। এরপরেই সুন্দরবনে বাক্সে উৎপাদিত মধু ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ এবং বাইং ফুলের মধু ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা কেজি। সরিষা ফুলের মধুর দাম সবচেয়ে কম, ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি। কালিজিরার মধু বিক্রি হয় ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা কেজি।
বিক্রেতারা বলেন, মধুর দাম কিছুটা বেশি হলেও এটি স্বাস্থ্যোপকারিতার জন্য অনেকের কাছে সাশ্রয়ী। এ ক্ষেত্রে ২০ গ্রাম মধু খাওয়ার খরচ মাত্র ১২ টাকা, যা অনেকের জন্য সাশ্রয়ী হতে পারে। বাজারে পাওয়া যায় দেশীয় ব্র্যান্ড যেমন স্বপ্ন মধু, ট্রপিকা, এপি মধু ছাড়াও আমদানি করা বিদেশি ব্র্যান্ড; যেমন ভারতের ডাবর, সাফোলা; পাকিস্তানের বি হাইভস; অস্ট্রেলিয়ার অজিবি; সৌদি আরবের আল শিফা; নিউজিল্যান্ডের মানুকা হানি। বিদেশি মধু সাধারণত ৫০০ থেকে ২৫০ গ্রাম কাচের জারে বিক্রি হয়, যার দাম কেজিতে ১ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার টাকা।
ভেজালে বাড়ছে আস্থাহীনতা
মধুর বাজার সম্প্রসারণের সঙ্গে সঙ্গে ভেজালের পরিমাণও বাড়ছে, যা ক্রেতাদের জন্য বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে ভেজাল মধু খাঁটি মধু হিসেবে বিক্রি হচ্ছে, ফলে ক্রেতারা সঠিক পণ্য নির্বাচন করতে পারছেন না। এই আস্থাহীনতা ক্রমাগত বেড়ে যাওয়ায় খাঁটি মধু কেনার প্রতি মানুষের আগ্রহ কমছে। তা ছাড়া ভেজাল মধু বিক্রির কারণে খাঁটি মধুর দামও সঠিকভাবে নির্ধারণ করা যাচ্ছে না। ফলে বাজারে মধুর চাহিদা ও বিশ্বাসে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে, যা ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের জন্য উদ্বেগের কারণ।
মানসনদেও জটিলতা
গোপীবাগ এলাকার মাহবুবা আলম বলেন, বাজারের মধু খাঁটি কি না, তা নিশ্চিত করা কঠিন। যদি সরকারি সংস্থা নিশ্চিত করতে পারত, তাহলে ক্রেতার সংখ্যা আরও বাড়ত। দেশে মধুর বিপণনে মান বজায় রাখার দায়িত্ব বিএসটিআইয়ের। বিএসটিআই কর্তৃক মানসনদপ্রাপ্ত ১৮১টি পণ্যের মধ্যে মধু রয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সনদ নিয়ে মধু বিক্রি হলেও প্রক্রিয়াগত জটিলতার কারণে অনেকে সনদ নেন না। লাইসেন্স প্রক্রিয়া সহজ করলে বাজারে আস্থাহীনতা অনেকটা কমে যেত।
বিএসটিআই সূত্রে জানা যায়, মধুর মানসনদ নিতে উদ্যোক্তাকে একটি প্রতিষ্ঠিত কারখানা, ট্রেড লাইসেন্স, ট্রেডমার্ক সার্টিফিকেট, স্বাস্থ্য সার্টিফিকেট ও মোড়ক তৈরি করতে হয়। এসব কাগজপত্রসহ বিএসটিআইয়ে আবেদন করতে হয়, যেখানে উৎপাদিত পণ্যের নমুনা জমা দিতে হয়। বিএসটিআই নিজস্ব ল্যাবে ১৩টি পরীক্ষা এবং সরেজমিন তদন্তের মাধ্যমে মানসনদ দেয়। বিএসটিআইয়ের পরিচালক মো. নূরুল আমিন বলেন, ‘এখানে ওয়ান-স্টপ সার্ভিস রয়েছে, তবে আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করতেই হবে, অন্যথায় সনদ দেওয়া সম্ভব নয়।’

সমস্যা ও সম্ভাবনা
কিছু বাধার কারণে দেশে মধু উৎপাদন এখনো পূর্ণ সম্ভাবনায় পৌঁছাতে পারেনি। খাতসংশ্লিষ্টরা জানান, মৌমাছির জাত উন্নয়ন ও গবেষণার অভাব প্রধান সমস্যা। গাভির জাত উন্নয়ন করে দুধের উৎপাদন যেমন বাড়ানো সম্ভব হয়েছে, তেমনি মৌমাছির জাত উন্নয়ন হলে মধুর উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব। মৌচাষিরা এক মৌসুমে ৩৫-৪০ কেজি মধু উৎপাদন করতে পারেন, যেখানে চীন ও ভারতের চাষিরা ১০০ থেকে ১২০ কেজি পর্যন্ত উৎপাদন করতে সক্ষম।
বাংলাদেশ বি কিপার্স অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের অভাবও বড় বাধা। বিসিক প্রতিবছর ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে প্রশিক্ষণ দিলেও তা যথেষ্ট নয়। এ ছাড়া মধু বিক্রি ও মানসম্পর্কিত আইন না থাকায় বাজারে আস্থা কম। এ ছাড়া দেশে মধু খাতের জন্য কোনো আলাদা বোর্ড বা দপ্তর না থাকায় কার্যকর নীতিমালা তৈরি সম্ভব হয়নি। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) সাবেক কর্মকর্তা ও মৌ চাষ উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক খোন্দকার আমিনুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যথাযথ উদ্যোগ নিলে দেশের মধু খাত রপ্তানি উপযোগী হয়ে ২ লাখ টন পর্যন্ত উৎপাদন করা সম্ভব। এতে দেশের চাহিদা মিটিয়ে ইউরোপ, আমেরিকা, কানাডাসহ অন্য দেশগুলোতে রপ্তানি করা যাবে।’
খোন্দকার আমিনুজ্জামান আরও জানান, ‘দৈনিক ১০ গ্রাম মধু খেলে দেশের বার্ষিক চাহিদা ৪০ হাজার টন হতে পারে, কিন্তু সচেতনতার অভাবে মানুষ মধু খায় না। মৌমাছি চাষে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। এটি শুধু মধুর উৎপাদন বাড়াবে না, কৃষি ফসলের উৎপাদনও ২৫-৩০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেবে।’
রোকন উদ্দীন, ঢাকা

প্রকৃতির এক আশ্চর্য উপহার মধু। মিষ্টি স্বাদ আর গুণাগুণের জন্য মানুষের মনে এর জায়গা চিরকালীন। এক ফোঁটা মধু জিহ্বায় পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা মন থেকে মস্তিষ্ক পর্যন্ত গভীর আনন্দ ছড়িয়ে দেয়।
মধু শুধু স্বাদের জন্য নয়, উপকারিতার জন্যও খ্যাতি অর্জন করেছে। এটি ‘সব রোগের মহৌষধ’ হিসেবে পরিচিত। পুষ্টিবিদেরা বলেন, মধুতে গ্লুকোজ, ফ্রুকটোজ, খনিজ লবণ, অ্যামাইনো অ্যাসিডসহ প্রায় ৪৫টি পুষ্টি উপাদান থাকে। ১০০ গ্রাম মধুতে ২৮৮ ক্যালরি শক্তি থাকে, যা শরীর চাঙা রাখতে সাহায্য করে।
একসময় বন-জঙ্গল থেকে মৌয়ালেরা মধু সংগ্রহ করতেন, যা দাদি-নানিরা বোতলে জমাতেন। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মধু উৎপাদন থেকে বাজারে পৌঁছানোর প্রক্রিয়াটি বাণিজ্যিক রূপ লাভ করেছে এবং শিল্পে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে মধু নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে গবেষক, চাষি, উৎপাদক, ব্যবসায়ী ও ভোক্তার মাঝে সেতুবন্ধ গড়ে উঠেছে। এর সদস্যসংখ্যা ২৬ হাজারের বেশি। প্রতিবছর জাতীয় মৌমাছি ও মধু সম্মেলন, প্রদর্শনী, সেমিনার, মধুমেলা এবং সুন্দরবনে হানি ট্যুরিজমের কার্যক্রমও চলছে।
বর্তমানে দেশে মধুর বার্ষিক বাজারমূল্য ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ২০২৪ সালে প্রাকৃতিক ও চাষ থেকে ২০-২৫ হাজার টন মধু সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯০-৯৫% চাষের। তবে দেশে মধু প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংগ্রহের আধুনিক ব্যবস্থা কম, তাই প্রতিবছর প্রায় ২ হাজার টন মধু আমদানি করা হচ্ছে।
গবেষক ও উদ্যোক্তারা মনে করেন, মধু শুধু পুষ্টি ও স্বাদের বিষয় নয়, এটি একটি বিশাল সম্ভাবনার ক্ষেত্র। একটু পরিকল্পনা ও যত্ন নিলে এই শিল্পকে দেশের অর্থনীতির এক শক্তিশালী খাতে রূপান্তর করা সম্ভব। যদি এই খাতে উন্নতি ঘটে, দেশের বার্ষিক মধু উৎপাদন ২ লাখ টন ছাড়িয়ে যাবে, যার বাজারমূল্য দাঁড়াবে ১৪-১৫ হাজার কোটি টাকায়।
মৌমাছি চাষের ইতিহাস
মৌমাছি চাষের প্রাচীন ইতিহাস খ্রিষ্টপূর্ব ৬ হাজার অব্দে পাওয়া গেলেও পদ্ধতিগতভাবে এটি শুরু হয় ১৬ শতকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। আধুনিক মৌচাষের ভিত্তি স্থাপন করেন ল্যাংস্ট্রোথ, ১৮ শতকে। বাংলাদেশে বাণিজ্যিক মৌচাষ শুরু হয় ১৯৬১ সালে কুমিল্লার পল্লী উন্নয়ন একাডেমিতে। এরপর ১৯৬৩ সালে বিসিক প্রথম মৌ চাষের উদ্যোগ নেয়। ভারতে মৌমাছি চাষ শুরু হয়েছিল ১৮৮৩ সালে। আশির দশকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যুক্ত হয় এবং ২০০০ সাল থেকে বাণিজ্যিকভাবে মধু উৎপাদন শুরু হয়। ২০০৫ সাল পর্যন্ত বিসিক ১৭ হাজার মানুষকে প্রশিক্ষণ দিয়ে মধু চাষে উদ্বুদ্ধ করেছে।
বাড়ছে উৎপাদন-চাহিদা
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের আল আমিন আট বছর আগে মধু ব্যবসা শুরু করেন। তখন তাঁর এলাকায় ১০-১২ জন বিক্রেতা ছিলেন। আজ সেই সংখ্যা বেড়ে কয়েক হাজার হয়েছে। প্রথমে দৈনিক ২-৩ কেজি মধু বিক্রি হলেও বর্তমানে তা ১৫-২০ কেজিতে দাঁড়িয়েছে। তাঁর প্রতিষ্ঠিত ব্র্যান্ড ‘ভিটালিক্স’ও বাজারে পরিচিত।
আল আমিন জানান, করোনাকালে মধুর বাজার দ্রুত বেড়েছে। আগের পাঁচ বছরে যে চাহিদা ছিল, করোনার এক-দুই বছরে তা অনেক বেড়েছে। কারণ, মানুষ এখন শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা (ইমিউনিটি) বাড়ানোর গুরুত্ব বুঝতে পেরেছে।
মধুর বাজারের আকার
দেশে মধু উৎপাদনের প্রকৃত তথ্য এখনো অস্পষ্ট। সরকারি-বেসরকারি হিসাবে এর পরিমাণের তথ্যে ভিন্নতা রয়েছে। বিসিকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে সাড়ে ১০ হাজার টনের বেশি মধু উৎপাদিত হয়, যা ২০১৮-১৯ সালে ছিল ২ হাজার টনের কম। এ ছাড়া প্রতিবছর প্রায় ২ হাজার টন মধু আমদানি করা হয়।
তবে গতকাল শনিবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত হওয়া পঞ্চম মৌমাছি ও মধু সম্মেলনে উপস্থাপিত গবেষণা প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৪ সালে প্রাকৃতিক ও চাষ থেকে মধু সংগ্রহ হয়েছে ২০ থেকে ২৫ হাজার টন।
বাংলাদেশ বি কিপার্স অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোক্তাদের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি কেজি মধুর গড় মূল্য ৭০০ টাকা ধরে ১০ হাজার ৬৫৫ টন মধুর বাজারমূল্য প্রায় ৭৫০ কোটি টাকা। প্রতিবছর আমদানি করা মধুর মূল্য প্রায় ৬০ কোটি টাকা এবং মৌচাক থেকে প্রাপ্ত অন্যান্য উপকরণ বিক্রি হয় প্রায় ৫০ কোটি টাকায়। সুতরাং উৎপাদিত, আমদানি, অন্যান্য মধুর পণ্যসহ দেশে মধুর বাজার ৮৫০ কোটি টাকার বেশি।
বর্তমানে বিসিকের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চাষির সংখ্যা ৬ হাজার। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়া প্রায় ২ হাজার চাষি মধু উৎপাদন করছেন। এসব চাষি সাধারণত ৮০-১০০টি বাক্স ব্যবহার করে মধু উৎপাদন করেন। শখের বশে কিছু বাক্স কিনে ব্যক্তিগতভাবে মধু উৎপাদনকারীও রয়েছেন। এর ফলে বেসরকারি তথ্য অনুযায়ী মধুর বাজারের আকার আরও বড়। যার বার্ষিক বাজারমূল্য ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
কোথায় বেশি উৎপাদন
মধুর ৯৫ শতাংশ উৎপাদিত হয় চাষের মাধ্যমে, যার মধ্যে প্রাকৃতিক মধুর বড় উৎস সুন্দরবন। বন বিভাগের তথ্যমতে, সুন্দরবন থেকে প্রতিবছর প্রায় ৩০০ টন মধু আহরণ করা হয়। সরকারিভাবে মধু চাষ করে বিসিক, যার ছয়টি মধু সংগ্রহকেন্দ্র রয়েছে গাজীপুর, দিনাজপুর, বাগেরহাট, বরিশাল, সিলেট ও কুমিল্লায়। এ ছাড়া মানিকগঞ্জ, পাবনা, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, টাঙ্গাইলসহ বিভিন্ন এলাকায় বেশি মধু উৎপাদিত হয়; বিশেষত সরিষা, ধনিয়া, কালিজিরা ও লিচু ফুলের মৌসুমে।
মধুর ধরন, ব্র্যান্ড ও দাম
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে সরিষা, লিচু, কালিজিরা, সুন্দরবনের বাইং, বরই, ধনিয়া, শজনেসহ ৮-১০ ধরনের ফুলের মধু পাওয়া যায়। সবচেয়ে দামি হলো সুন্দরবনের প্রাকৃতিক মধু, যা ১ হাজার ৯০০ থেকে ২ হাজার টাকা কেজি বিক্রি হয়। এরপরেই সুন্দরবনে বাক্সে উৎপাদিত মধু ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ এবং বাইং ফুলের মধু ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা কেজি। সরিষা ফুলের মধুর দাম সবচেয়ে কম, ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি। কালিজিরার মধু বিক্রি হয় ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা কেজি।
বিক্রেতারা বলেন, মধুর দাম কিছুটা বেশি হলেও এটি স্বাস্থ্যোপকারিতার জন্য অনেকের কাছে সাশ্রয়ী। এ ক্ষেত্রে ২০ গ্রাম মধু খাওয়ার খরচ মাত্র ১২ টাকা, যা অনেকের জন্য সাশ্রয়ী হতে পারে। বাজারে পাওয়া যায় দেশীয় ব্র্যান্ড যেমন স্বপ্ন মধু, ট্রপিকা, এপি মধু ছাড়াও আমদানি করা বিদেশি ব্র্যান্ড; যেমন ভারতের ডাবর, সাফোলা; পাকিস্তানের বি হাইভস; অস্ট্রেলিয়ার অজিবি; সৌদি আরবের আল শিফা; নিউজিল্যান্ডের মানুকা হানি। বিদেশি মধু সাধারণত ৫০০ থেকে ২৫০ গ্রাম কাচের জারে বিক্রি হয়, যার দাম কেজিতে ১ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার টাকা।
ভেজালে বাড়ছে আস্থাহীনতা
মধুর বাজার সম্প্রসারণের সঙ্গে সঙ্গে ভেজালের পরিমাণও বাড়ছে, যা ক্রেতাদের জন্য বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে ভেজাল মধু খাঁটি মধু হিসেবে বিক্রি হচ্ছে, ফলে ক্রেতারা সঠিক পণ্য নির্বাচন করতে পারছেন না। এই আস্থাহীনতা ক্রমাগত বেড়ে যাওয়ায় খাঁটি মধু কেনার প্রতি মানুষের আগ্রহ কমছে। তা ছাড়া ভেজাল মধু বিক্রির কারণে খাঁটি মধুর দামও সঠিকভাবে নির্ধারণ করা যাচ্ছে না। ফলে বাজারে মধুর চাহিদা ও বিশ্বাসে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে, যা ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের জন্য উদ্বেগের কারণ।
মানসনদেও জটিলতা
গোপীবাগ এলাকার মাহবুবা আলম বলেন, বাজারের মধু খাঁটি কি না, তা নিশ্চিত করা কঠিন। যদি সরকারি সংস্থা নিশ্চিত করতে পারত, তাহলে ক্রেতার সংখ্যা আরও বাড়ত। দেশে মধুর বিপণনে মান বজায় রাখার দায়িত্ব বিএসটিআইয়ের। বিএসটিআই কর্তৃক মানসনদপ্রাপ্ত ১৮১টি পণ্যের মধ্যে মধু রয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সনদ নিয়ে মধু বিক্রি হলেও প্রক্রিয়াগত জটিলতার কারণে অনেকে সনদ নেন না। লাইসেন্স প্রক্রিয়া সহজ করলে বাজারে আস্থাহীনতা অনেকটা কমে যেত।
বিএসটিআই সূত্রে জানা যায়, মধুর মানসনদ নিতে উদ্যোক্তাকে একটি প্রতিষ্ঠিত কারখানা, ট্রেড লাইসেন্স, ট্রেডমার্ক সার্টিফিকেট, স্বাস্থ্য সার্টিফিকেট ও মোড়ক তৈরি করতে হয়। এসব কাগজপত্রসহ বিএসটিআইয়ে আবেদন করতে হয়, যেখানে উৎপাদিত পণ্যের নমুনা জমা দিতে হয়। বিএসটিআই নিজস্ব ল্যাবে ১৩টি পরীক্ষা এবং সরেজমিন তদন্তের মাধ্যমে মানসনদ দেয়। বিএসটিআইয়ের পরিচালক মো. নূরুল আমিন বলেন, ‘এখানে ওয়ান-স্টপ সার্ভিস রয়েছে, তবে আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করতেই হবে, অন্যথায় সনদ দেওয়া সম্ভব নয়।’

সমস্যা ও সম্ভাবনা
কিছু বাধার কারণে দেশে মধু উৎপাদন এখনো পূর্ণ সম্ভাবনায় পৌঁছাতে পারেনি। খাতসংশ্লিষ্টরা জানান, মৌমাছির জাত উন্নয়ন ও গবেষণার অভাব প্রধান সমস্যা। গাভির জাত উন্নয়ন করে দুধের উৎপাদন যেমন বাড়ানো সম্ভব হয়েছে, তেমনি মৌমাছির জাত উন্নয়ন হলে মধুর উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব। মৌচাষিরা এক মৌসুমে ৩৫-৪০ কেজি মধু উৎপাদন করতে পারেন, যেখানে চীন ও ভারতের চাষিরা ১০০ থেকে ১২০ কেজি পর্যন্ত উৎপাদন করতে সক্ষম।
বাংলাদেশ বি কিপার্স অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের অভাবও বড় বাধা। বিসিক প্রতিবছর ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে প্রশিক্ষণ দিলেও তা যথেষ্ট নয়। এ ছাড়া মধু বিক্রি ও মানসম্পর্কিত আইন না থাকায় বাজারে আস্থা কম। এ ছাড়া দেশে মধু খাতের জন্য কোনো আলাদা বোর্ড বা দপ্তর না থাকায় কার্যকর নীতিমালা তৈরি সম্ভব হয়নি। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) সাবেক কর্মকর্তা ও মৌ চাষ উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক খোন্দকার আমিনুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যথাযথ উদ্যোগ নিলে দেশের মধু খাত রপ্তানি উপযোগী হয়ে ২ লাখ টন পর্যন্ত উৎপাদন করা সম্ভব। এতে দেশের চাহিদা মিটিয়ে ইউরোপ, আমেরিকা, কানাডাসহ অন্য দেশগুলোতে রপ্তানি করা যাবে।’
খোন্দকার আমিনুজ্জামান আরও জানান, ‘দৈনিক ১০ গ্রাম মধু খেলে দেশের বার্ষিক চাহিদা ৪০ হাজার টন হতে পারে, কিন্তু সচেতনতার অভাবে মানুষ মধু খায় না। মৌমাছি চাষে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। এটি শুধু মধুর উৎপাদন বাড়াবে না, কৃষি ফসলের উৎপাদনও ২৫-৩০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেবে।’

প্রকৃতির এক আশ্চর্য উপহার মধু। মিষ্টি স্বাদ আর গুণাগুণের জন্য মানুষের মনে এর জায়গা চিরকালীন। এক ফোঁটা মধু জিহ্বায় পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা মন থেকে মস্তিষ্ক পর্যন্ত গভীর আনন্দ ছড়িয়ে দেয়।
মধু শুধু স্বাদের জন্য নয়, উপকারিতার জন্যও খ্যাতি অর্জন করেছে। এটি ‘সব রোগের মহৌষধ’ হিসেবে পরিচিত। পুষ্টিবিদেরা বলেন, মধুতে গ্লুকোজ, ফ্রুকটোজ, খনিজ লবণ, অ্যামাইনো অ্যাসিডসহ প্রায় ৪৫টি পুষ্টি উপাদান থাকে। ১০০ গ্রাম মধুতে ২৮৮ ক্যালরি শক্তি থাকে, যা শরীর চাঙা রাখতে সাহায্য করে।
একসময় বন-জঙ্গল থেকে মৌয়ালেরা মধু সংগ্রহ করতেন, যা দাদি-নানিরা বোতলে জমাতেন। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মধু উৎপাদন থেকে বাজারে পৌঁছানোর প্রক্রিয়াটি বাণিজ্যিক রূপ লাভ করেছে এবং শিল্পে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে মধু নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে গবেষক, চাষি, উৎপাদক, ব্যবসায়ী ও ভোক্তার মাঝে সেতুবন্ধ গড়ে উঠেছে। এর সদস্যসংখ্যা ২৬ হাজারের বেশি। প্রতিবছর জাতীয় মৌমাছি ও মধু সম্মেলন, প্রদর্শনী, সেমিনার, মধুমেলা এবং সুন্দরবনে হানি ট্যুরিজমের কার্যক্রমও চলছে।
বর্তমানে দেশে মধুর বার্ষিক বাজারমূল্য ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ২০২৪ সালে প্রাকৃতিক ও চাষ থেকে ২০-২৫ হাজার টন মধু সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯০-৯৫% চাষের। তবে দেশে মধু প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংগ্রহের আধুনিক ব্যবস্থা কম, তাই প্রতিবছর প্রায় ২ হাজার টন মধু আমদানি করা হচ্ছে।
গবেষক ও উদ্যোক্তারা মনে করেন, মধু শুধু পুষ্টি ও স্বাদের বিষয় নয়, এটি একটি বিশাল সম্ভাবনার ক্ষেত্র। একটু পরিকল্পনা ও যত্ন নিলে এই শিল্পকে দেশের অর্থনীতির এক শক্তিশালী খাতে রূপান্তর করা সম্ভব। যদি এই খাতে উন্নতি ঘটে, দেশের বার্ষিক মধু উৎপাদন ২ লাখ টন ছাড়িয়ে যাবে, যার বাজারমূল্য দাঁড়াবে ১৪-১৫ হাজার কোটি টাকায়।
মৌমাছি চাষের ইতিহাস
মৌমাছি চাষের প্রাচীন ইতিহাস খ্রিষ্টপূর্ব ৬ হাজার অব্দে পাওয়া গেলেও পদ্ধতিগতভাবে এটি শুরু হয় ১৬ শতকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। আধুনিক মৌচাষের ভিত্তি স্থাপন করেন ল্যাংস্ট্রোথ, ১৮ শতকে। বাংলাদেশে বাণিজ্যিক মৌচাষ শুরু হয় ১৯৬১ সালে কুমিল্লার পল্লী উন্নয়ন একাডেমিতে। এরপর ১৯৬৩ সালে বিসিক প্রথম মৌ চাষের উদ্যোগ নেয়। ভারতে মৌমাছি চাষ শুরু হয়েছিল ১৮৮৩ সালে। আশির দশকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যুক্ত হয় এবং ২০০০ সাল থেকে বাণিজ্যিকভাবে মধু উৎপাদন শুরু হয়। ২০০৫ সাল পর্যন্ত বিসিক ১৭ হাজার মানুষকে প্রশিক্ষণ দিয়ে মধু চাষে উদ্বুদ্ধ করেছে।
বাড়ছে উৎপাদন-চাহিদা
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের আল আমিন আট বছর আগে মধু ব্যবসা শুরু করেন। তখন তাঁর এলাকায় ১০-১২ জন বিক্রেতা ছিলেন। আজ সেই সংখ্যা বেড়ে কয়েক হাজার হয়েছে। প্রথমে দৈনিক ২-৩ কেজি মধু বিক্রি হলেও বর্তমানে তা ১৫-২০ কেজিতে দাঁড়িয়েছে। তাঁর প্রতিষ্ঠিত ব্র্যান্ড ‘ভিটালিক্স’ও বাজারে পরিচিত।
আল আমিন জানান, করোনাকালে মধুর বাজার দ্রুত বেড়েছে। আগের পাঁচ বছরে যে চাহিদা ছিল, করোনার এক-দুই বছরে তা অনেক বেড়েছে। কারণ, মানুষ এখন শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা (ইমিউনিটি) বাড়ানোর গুরুত্ব বুঝতে পেরেছে।
মধুর বাজারের আকার
দেশে মধু উৎপাদনের প্রকৃত তথ্য এখনো অস্পষ্ট। সরকারি-বেসরকারি হিসাবে এর পরিমাণের তথ্যে ভিন্নতা রয়েছে। বিসিকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে সাড়ে ১০ হাজার টনের বেশি মধু উৎপাদিত হয়, যা ২০১৮-১৯ সালে ছিল ২ হাজার টনের কম। এ ছাড়া প্রতিবছর প্রায় ২ হাজার টন মধু আমদানি করা হয়।
তবে গতকাল শনিবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত হওয়া পঞ্চম মৌমাছি ও মধু সম্মেলনে উপস্থাপিত গবেষণা প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৪ সালে প্রাকৃতিক ও চাষ থেকে মধু সংগ্রহ হয়েছে ২০ থেকে ২৫ হাজার টন।
বাংলাদেশ বি কিপার্স অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোক্তাদের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি কেজি মধুর গড় মূল্য ৭০০ টাকা ধরে ১০ হাজার ৬৫৫ টন মধুর বাজারমূল্য প্রায় ৭৫০ কোটি টাকা। প্রতিবছর আমদানি করা মধুর মূল্য প্রায় ৬০ কোটি টাকা এবং মৌচাক থেকে প্রাপ্ত অন্যান্য উপকরণ বিক্রি হয় প্রায় ৫০ কোটি টাকায়। সুতরাং উৎপাদিত, আমদানি, অন্যান্য মধুর পণ্যসহ দেশে মধুর বাজার ৮৫০ কোটি টাকার বেশি।
বর্তমানে বিসিকের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চাষির সংখ্যা ৬ হাজার। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়া প্রায় ২ হাজার চাষি মধু উৎপাদন করছেন। এসব চাষি সাধারণত ৮০-১০০টি বাক্স ব্যবহার করে মধু উৎপাদন করেন। শখের বশে কিছু বাক্স কিনে ব্যক্তিগতভাবে মধু উৎপাদনকারীও রয়েছেন। এর ফলে বেসরকারি তথ্য অনুযায়ী মধুর বাজারের আকার আরও বড়। যার বার্ষিক বাজারমূল্য ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
কোথায় বেশি উৎপাদন
মধুর ৯৫ শতাংশ উৎপাদিত হয় চাষের মাধ্যমে, যার মধ্যে প্রাকৃতিক মধুর বড় উৎস সুন্দরবন। বন বিভাগের তথ্যমতে, সুন্দরবন থেকে প্রতিবছর প্রায় ৩০০ টন মধু আহরণ করা হয়। সরকারিভাবে মধু চাষ করে বিসিক, যার ছয়টি মধু সংগ্রহকেন্দ্র রয়েছে গাজীপুর, দিনাজপুর, বাগেরহাট, বরিশাল, সিলেট ও কুমিল্লায়। এ ছাড়া মানিকগঞ্জ, পাবনা, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, টাঙ্গাইলসহ বিভিন্ন এলাকায় বেশি মধু উৎপাদিত হয়; বিশেষত সরিষা, ধনিয়া, কালিজিরা ও লিচু ফুলের মৌসুমে।
মধুর ধরন, ব্র্যান্ড ও দাম
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে সরিষা, লিচু, কালিজিরা, সুন্দরবনের বাইং, বরই, ধনিয়া, শজনেসহ ৮-১০ ধরনের ফুলের মধু পাওয়া যায়। সবচেয়ে দামি হলো সুন্দরবনের প্রাকৃতিক মধু, যা ১ হাজার ৯০০ থেকে ২ হাজার টাকা কেজি বিক্রি হয়। এরপরেই সুন্দরবনে বাক্সে উৎপাদিত মধু ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ এবং বাইং ফুলের মধু ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা কেজি। সরিষা ফুলের মধুর দাম সবচেয়ে কম, ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি। কালিজিরার মধু বিক্রি হয় ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা কেজি।
বিক্রেতারা বলেন, মধুর দাম কিছুটা বেশি হলেও এটি স্বাস্থ্যোপকারিতার জন্য অনেকের কাছে সাশ্রয়ী। এ ক্ষেত্রে ২০ গ্রাম মধু খাওয়ার খরচ মাত্র ১২ টাকা, যা অনেকের জন্য সাশ্রয়ী হতে পারে। বাজারে পাওয়া যায় দেশীয় ব্র্যান্ড যেমন স্বপ্ন মধু, ট্রপিকা, এপি মধু ছাড়াও আমদানি করা বিদেশি ব্র্যান্ড; যেমন ভারতের ডাবর, সাফোলা; পাকিস্তানের বি হাইভস; অস্ট্রেলিয়ার অজিবি; সৌদি আরবের আল শিফা; নিউজিল্যান্ডের মানুকা হানি। বিদেশি মধু সাধারণত ৫০০ থেকে ২৫০ গ্রাম কাচের জারে বিক্রি হয়, যার দাম কেজিতে ১ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার টাকা।
ভেজালে বাড়ছে আস্থাহীনতা
মধুর বাজার সম্প্রসারণের সঙ্গে সঙ্গে ভেজালের পরিমাণও বাড়ছে, যা ক্রেতাদের জন্য বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে ভেজাল মধু খাঁটি মধু হিসেবে বিক্রি হচ্ছে, ফলে ক্রেতারা সঠিক পণ্য নির্বাচন করতে পারছেন না। এই আস্থাহীনতা ক্রমাগত বেড়ে যাওয়ায় খাঁটি মধু কেনার প্রতি মানুষের আগ্রহ কমছে। তা ছাড়া ভেজাল মধু বিক্রির কারণে খাঁটি মধুর দামও সঠিকভাবে নির্ধারণ করা যাচ্ছে না। ফলে বাজারে মধুর চাহিদা ও বিশ্বাসে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে, যা ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের জন্য উদ্বেগের কারণ।
মানসনদেও জটিলতা
গোপীবাগ এলাকার মাহবুবা আলম বলেন, বাজারের মধু খাঁটি কি না, তা নিশ্চিত করা কঠিন। যদি সরকারি সংস্থা নিশ্চিত করতে পারত, তাহলে ক্রেতার সংখ্যা আরও বাড়ত। দেশে মধুর বিপণনে মান বজায় রাখার দায়িত্ব বিএসটিআইয়ের। বিএসটিআই কর্তৃক মানসনদপ্রাপ্ত ১৮১টি পণ্যের মধ্যে মধু রয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সনদ নিয়ে মধু বিক্রি হলেও প্রক্রিয়াগত জটিলতার কারণে অনেকে সনদ নেন না। লাইসেন্স প্রক্রিয়া সহজ করলে বাজারে আস্থাহীনতা অনেকটা কমে যেত।
বিএসটিআই সূত্রে জানা যায়, মধুর মানসনদ নিতে উদ্যোক্তাকে একটি প্রতিষ্ঠিত কারখানা, ট্রেড লাইসেন্স, ট্রেডমার্ক সার্টিফিকেট, স্বাস্থ্য সার্টিফিকেট ও মোড়ক তৈরি করতে হয়। এসব কাগজপত্রসহ বিএসটিআইয়ে আবেদন করতে হয়, যেখানে উৎপাদিত পণ্যের নমুনা জমা দিতে হয়। বিএসটিআই নিজস্ব ল্যাবে ১৩টি পরীক্ষা এবং সরেজমিন তদন্তের মাধ্যমে মানসনদ দেয়। বিএসটিআইয়ের পরিচালক মো. নূরুল আমিন বলেন, ‘এখানে ওয়ান-স্টপ সার্ভিস রয়েছে, তবে আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করতেই হবে, অন্যথায় সনদ দেওয়া সম্ভব নয়।’

সমস্যা ও সম্ভাবনা
কিছু বাধার কারণে দেশে মধু উৎপাদন এখনো পূর্ণ সম্ভাবনায় পৌঁছাতে পারেনি। খাতসংশ্লিষ্টরা জানান, মৌমাছির জাত উন্নয়ন ও গবেষণার অভাব প্রধান সমস্যা। গাভির জাত উন্নয়ন করে দুধের উৎপাদন যেমন বাড়ানো সম্ভব হয়েছে, তেমনি মৌমাছির জাত উন্নয়ন হলে মধুর উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব। মৌচাষিরা এক মৌসুমে ৩৫-৪০ কেজি মধু উৎপাদন করতে পারেন, যেখানে চীন ও ভারতের চাষিরা ১০০ থেকে ১২০ কেজি পর্যন্ত উৎপাদন করতে সক্ষম।
বাংলাদেশ বি কিপার্স অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের অভাবও বড় বাধা। বিসিক প্রতিবছর ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে প্রশিক্ষণ দিলেও তা যথেষ্ট নয়। এ ছাড়া মধু বিক্রি ও মানসম্পর্কিত আইন না থাকায় বাজারে আস্থা কম। এ ছাড়া দেশে মধু খাতের জন্য কোনো আলাদা বোর্ড বা দপ্তর না থাকায় কার্যকর নীতিমালা তৈরি সম্ভব হয়নি। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) সাবেক কর্মকর্তা ও মৌ চাষ উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক খোন্দকার আমিনুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যথাযথ উদ্যোগ নিলে দেশের মধু খাত রপ্তানি উপযোগী হয়ে ২ লাখ টন পর্যন্ত উৎপাদন করা সম্ভব। এতে দেশের চাহিদা মিটিয়ে ইউরোপ, আমেরিকা, কানাডাসহ অন্য দেশগুলোতে রপ্তানি করা যাবে।’
খোন্দকার আমিনুজ্জামান আরও জানান, ‘দৈনিক ১০ গ্রাম মধু খেলে দেশের বার্ষিক চাহিদা ৪০ হাজার টন হতে পারে, কিন্তু সচেতনতার অভাবে মানুষ মধু খায় না। মৌমাছি চাষে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। এটি শুধু মধুর উৎপাদন বাড়াবে না, কৃষি ফসলের উৎপাদনও ২৫-৩০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেবে।’

দেশের বাজারে সোনার দাম আরও বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ১ হাজার ৪৭০ টাকা। এতে এক ভরি সোনার দাম ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ টাকা হয়েছে।
৬ ঘণ্টা আগে
শেভরন বাংলাদেশের সহায়তায় বাস্তবায়িত এসএমআইএল প্রকল্পের আওতায় ‘রিস্টোরিং মোবিলিটি: আর্টিফিশিয়াল লিম্ব সাপোর্ট’ উদ্যোগের সমাপনী অনুষ্ঠান সম্প্রতি গ্র্যান্ড সিলেটে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে সিলেট ও নবীগঞ্জ উপজেলার ৬০ শারীরিক প্রতিবন্ধী উপকারভোগীর মধ্যে কৃত্রিম অঙ্গ (প্রোস্থেটিক) ও অর্থোটিক...
৯ ঘণ্টা আগে
দেশের বৈদেশিক মুদ্রাবাজার স্থিতিশীল রাখতে এবং রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের প্রবাহ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকগুলো থেকে অতিরিক্ত ডলার ক্রয় করেছে। আজ সোমবার ১৩টি ব্যাংক থেকে প্রায় ১৪ কোটি ১৫ লাখ মার্কিন ডলার (১৪১.৫ মিলিয়ন) কেনা হয়েছে।
১০ ঘণ্টা আগে
বাজার সহনীয় করতে পেঁয়াজের আমদানি আরও বাড়িয়েছে সরকার। আজ সোমবার থেকে দৈনিক ১৭ হাজার ২৫০ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে; যা আগে ছিল ৬ হাজার টন করে।
১০ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশের বাজারে সোনার দাম আরও বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ১ হাজার ৪৭০ টাকা। এতে এক ভরি সোনার দাম ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ টাকা হয়েছে।
স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পাকা সোনা) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠক করে এই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে ১৪ ডিসেম্বর ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয় ৩ হাজার ৪৪২ টাকা এবং ১২ ডিসেম্বর ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয় ১ হাজার ৫০ টাকা। এই দাম বাড়ানোর ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে এখন আবার দাম বাড়ানো হলো।
এখন সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ৪৭০ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ৪১১ টাকা বাড়িয়ে ২ লাখ ৭ হাজার ২১১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ ছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ২৪৮ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম ১ লাখ ৭৭ হাজার ৬৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ৬৩ টাকা বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৯০০ টাকা।

দেশের বাজারে সোনার দাম আরও বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ১ হাজার ৪৭০ টাকা। এতে এক ভরি সোনার দাম ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ টাকা হয়েছে।
স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পাকা সোনা) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠক করে এই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে ১৪ ডিসেম্বর ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয় ৩ হাজার ৪৪২ টাকা এবং ১২ ডিসেম্বর ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয় ১ হাজার ৫০ টাকা। এই দাম বাড়ানোর ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে এখন আবার দাম বাড়ানো হলো।
এখন সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ৪৭০ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ৪১১ টাকা বাড়িয়ে ২ লাখ ৭ হাজার ২১১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ ছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ২৪৮ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম ১ লাখ ৭৭ হাজার ৬৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ৬৩ টাকা বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৯০০ টাকা।

প্রকৃতির এক আশ্চর্য উপহার মধু। মিষ্টি স্বাদ আর গুণাগুণের জন্য মানুষের মনে এর জায়গা চিরকালীন। এক ফোঁটা মধু জিহ্বায় পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা মন থেকে মস্তিষ্ক পর্যন্ত গভীর আনন্দ ছড়িয়ে দেয়।
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
শেভরন বাংলাদেশের সহায়তায় বাস্তবায়িত এসএমআইএল প্রকল্পের আওতায় ‘রিস্টোরিং মোবিলিটি: আর্টিফিশিয়াল লিম্ব সাপোর্ট’ উদ্যোগের সমাপনী অনুষ্ঠান সম্প্রতি গ্র্যান্ড সিলেটে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে সিলেট ও নবীগঞ্জ উপজেলার ৬০ শারীরিক প্রতিবন্ধী উপকারভোগীর মধ্যে কৃত্রিম অঙ্গ (প্রোস্থেটিক) ও অর্থোটিক...
৯ ঘণ্টা আগে
দেশের বৈদেশিক মুদ্রাবাজার স্থিতিশীল রাখতে এবং রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের প্রবাহ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকগুলো থেকে অতিরিক্ত ডলার ক্রয় করেছে। আজ সোমবার ১৩টি ব্যাংক থেকে প্রায় ১৪ কোটি ১৫ লাখ মার্কিন ডলার (১৪১.৫ মিলিয়ন) কেনা হয়েছে।
১০ ঘণ্টা আগে
বাজার সহনীয় করতে পেঁয়াজের আমদানি আরও বাড়িয়েছে সরকার। আজ সোমবার থেকে দৈনিক ১৭ হাজার ২৫০ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে; যা আগে ছিল ৬ হাজার টন করে।
১০ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

শেভরন বাংলাদেশের সহায়তায় বাস্তবায়িত এসএমআইএল (SMILE) প্রকল্পের আওতায় ‘রিস্টোরিং মোবিলিটি: আর্টিফিশিয়াল লিম্ব সাপোর্ট’ উদ্যোগের সমাপনী অনুষ্ঠান সম্প্রতি গ্র্যান্ড সিলেটে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে সিলেট ও নবীগঞ্জ উপজেলার ৬০ শারীরিক প্রতিবন্ধী উপকারভোগীর মধ্যে কৃত্রিম অঙ্গ (প্রোস্থেটিক) ও অর্থোটিক ডিভাইস বিতরণ করা হয়।
দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে পুনর্বাসন ও চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত থাকা এই উপকারভোগীরা কৃত্রিম অঙ্গ পেয়ে নতুন জীবন ফিরে পেলেন। জালালাবাদ ডিজেবল্ড রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার অ্যান্ড হাসপাতালের (জেডিআরসিএইচ) সহযোগিতায় এই উদ্যোগ পরিচালিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সমন্বয় ও মনিটরিং উইংয়ের সচিব মো. আবদুল মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন শেভরন বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও প্রেসিডেন্ট এরিক এম ওয়াকার, করপোরেট অ্যাফেয়ার্স পরিচালক মুহাম্মদ ইমরুল কবির, সোশ্যাল ইনভেস্টমেন্ট প্রধান এ কে এম আরিফ আক্তার, সুইসকন্টাক্টের কান্ট্রি ডিরেক্টর হেলাল হোসেন এবং জেডিআরসিএইচ বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান রোটারিয়ান পিপি ইঞ্জিনিয়ার শোয়াইব আহমেদ মতিন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. আবদুল মান্নান বলেন, ‘কৃত্রিম অঙ্গ সহায়তা শুধু চিকিৎসা নয়, এটি প্রতিবন্ধী মানুষের জীবনযাত্রায় মৌলিক পরিবর্তন আনে। শেভরন বাংলাদেশ, সুইসকন্টাক্ট ও জেডিআরসিএইচের যৌথ উদ্যোগ চলাচল সক্ষমতা ফিরিয়ে এনে উপকারভোগীদের জীবনে নতুন আশার দ্বার খুলে দিয়েছে।’
শেভরন বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও প্রেসিডেন্ট এরিক এম ওয়াকার বলেন, ‘বিশ্বের প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ এ ধরনের বিশেষায়িত পুনর্বাসন সেবার পর্যাপ্ত সুযোগ পায় না। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ব্যক্তিকেন্দ্রিক সেবা পৌঁছে দিতে পারা আমাদের জন্য গর্বের। উপকারভোগীদের প্রতিটি অগ্রযাত্রাই একটি সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতের দিকে দৃঢ় পদক্ষেপ।’
সুইসকন্টাক্টের কান্ট্রি ডিরেক্টর হেলাল হোসেন বলেন, ‘এই প্রকল্প কেবল চলাচল সক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়নি; এটি উপকারভোগীদের কর্মজীবনে ফেরা, শিক্ষা চালিয়ে যাওয়া এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করেছে—যা সমাজে অন্তর্ভুক্তি আরও সুদৃঢ় করেছে।’
করপোরেট অ্যাফেয়ার্স পরিচালক মুহাম্মদ ইমরুল কবির বলেন, ‘শেভরন তিন দশকের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের বিশ্বস্ত জ্বালানি অংশীদার। আমাদের অঙ্গীকার কেবল জ্বালানি সরবরাহেই সীমাবদ্ধ নয়। এসএমআইএল প্রকল্পের মতো উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা চলাচল সক্ষমতা ও মানবিক মর্যাদা পুনরুদ্ধারে কাজ করছি। বাংলাদেশে আমাদের সামাজিক বিনিয়োগ কার্যক্রম জাতিসংঘ ঘোষিত ১৭টি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের মধ্যে ৯টির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।’
অনুষ্ঠানে উপকারভোগীরা তাঁদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, কৃত্রিম অঙ্গ পাওয়ার ফলে তাঁরা আবার স্বাভাবিক চলাচল, আত্মনির্ভরতা ও আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছেন। এই ইতিবাচক পরিবর্তনের প্রভাব পরিবার ও সমাজেও ছড়িয়ে পড়ছে।
গৃহস্থালি আয় স্থিতিশীল হওয়া ও আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির ফলে এর ইতিবাচক প্রভাব পরিবার ও সমাজে ছড়িয়ে পড়ছে—যা কমিউনিটির স্থিতিশীলতা ও সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করছে। এ সাফল্যের ধারাবাহিকতায় শেভরন বাংলাদেশ ও সুইসকন্টাক্ট এসএমআইএল প্রকল্পের মাধ্যমে টেকসই ও প্রভাবশালী উন্নয়ন উদ্যোগ বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে। যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে তারা অর্থোটিক ও প্রোস্থেটিক সহায়তা প্রয়োজন, এমন মানুষের জীবনমান উন্নয়নে বাস্তব ও পরিমাপযোগ্য পরিবর্তন নিশ্চিত করছে।

শেভরন বাংলাদেশের সহায়তায় বাস্তবায়িত এসএমআইএল (SMILE) প্রকল্পের আওতায় ‘রিস্টোরিং মোবিলিটি: আর্টিফিশিয়াল লিম্ব সাপোর্ট’ উদ্যোগের সমাপনী অনুষ্ঠান সম্প্রতি গ্র্যান্ড সিলেটে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে সিলেট ও নবীগঞ্জ উপজেলার ৬০ শারীরিক প্রতিবন্ধী উপকারভোগীর মধ্যে কৃত্রিম অঙ্গ (প্রোস্থেটিক) ও অর্থোটিক ডিভাইস বিতরণ করা হয়।
দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে পুনর্বাসন ও চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত থাকা এই উপকারভোগীরা কৃত্রিম অঙ্গ পেয়ে নতুন জীবন ফিরে পেলেন। জালালাবাদ ডিজেবল্ড রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার অ্যান্ড হাসপাতালের (জেডিআরসিএইচ) সহযোগিতায় এই উদ্যোগ পরিচালিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সমন্বয় ও মনিটরিং উইংয়ের সচিব মো. আবদুল মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন শেভরন বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও প্রেসিডেন্ট এরিক এম ওয়াকার, করপোরেট অ্যাফেয়ার্স পরিচালক মুহাম্মদ ইমরুল কবির, সোশ্যাল ইনভেস্টমেন্ট প্রধান এ কে এম আরিফ আক্তার, সুইসকন্টাক্টের কান্ট্রি ডিরেক্টর হেলাল হোসেন এবং জেডিআরসিএইচ বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান রোটারিয়ান পিপি ইঞ্জিনিয়ার শোয়াইব আহমেদ মতিন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. আবদুল মান্নান বলেন, ‘কৃত্রিম অঙ্গ সহায়তা শুধু চিকিৎসা নয়, এটি প্রতিবন্ধী মানুষের জীবনযাত্রায় মৌলিক পরিবর্তন আনে। শেভরন বাংলাদেশ, সুইসকন্টাক্ট ও জেডিআরসিএইচের যৌথ উদ্যোগ চলাচল সক্ষমতা ফিরিয়ে এনে উপকারভোগীদের জীবনে নতুন আশার দ্বার খুলে দিয়েছে।’
শেভরন বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও প্রেসিডেন্ট এরিক এম ওয়াকার বলেন, ‘বিশ্বের প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ এ ধরনের বিশেষায়িত পুনর্বাসন সেবার পর্যাপ্ত সুযোগ পায় না। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ব্যক্তিকেন্দ্রিক সেবা পৌঁছে দিতে পারা আমাদের জন্য গর্বের। উপকারভোগীদের প্রতিটি অগ্রযাত্রাই একটি সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতের দিকে দৃঢ় পদক্ষেপ।’
সুইসকন্টাক্টের কান্ট্রি ডিরেক্টর হেলাল হোসেন বলেন, ‘এই প্রকল্প কেবল চলাচল সক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়নি; এটি উপকারভোগীদের কর্মজীবনে ফেরা, শিক্ষা চালিয়ে যাওয়া এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করেছে—যা সমাজে অন্তর্ভুক্তি আরও সুদৃঢ় করেছে।’
করপোরেট অ্যাফেয়ার্স পরিচালক মুহাম্মদ ইমরুল কবির বলেন, ‘শেভরন তিন দশকের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের বিশ্বস্ত জ্বালানি অংশীদার। আমাদের অঙ্গীকার কেবল জ্বালানি সরবরাহেই সীমাবদ্ধ নয়। এসএমআইএল প্রকল্পের মতো উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা চলাচল সক্ষমতা ও মানবিক মর্যাদা পুনরুদ্ধারে কাজ করছি। বাংলাদেশে আমাদের সামাজিক বিনিয়োগ কার্যক্রম জাতিসংঘ ঘোষিত ১৭টি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের মধ্যে ৯টির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।’
অনুষ্ঠানে উপকারভোগীরা তাঁদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, কৃত্রিম অঙ্গ পাওয়ার ফলে তাঁরা আবার স্বাভাবিক চলাচল, আত্মনির্ভরতা ও আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছেন। এই ইতিবাচক পরিবর্তনের প্রভাব পরিবার ও সমাজেও ছড়িয়ে পড়ছে।
গৃহস্থালি আয় স্থিতিশীল হওয়া ও আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির ফলে এর ইতিবাচক প্রভাব পরিবার ও সমাজে ছড়িয়ে পড়ছে—যা কমিউনিটির স্থিতিশীলতা ও সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করছে। এ সাফল্যের ধারাবাহিকতায় শেভরন বাংলাদেশ ও সুইসকন্টাক্ট এসএমআইএল প্রকল্পের মাধ্যমে টেকসই ও প্রভাবশালী উন্নয়ন উদ্যোগ বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে। যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে তারা অর্থোটিক ও প্রোস্থেটিক সহায়তা প্রয়োজন, এমন মানুষের জীবনমান উন্নয়নে বাস্তব ও পরিমাপযোগ্য পরিবর্তন নিশ্চিত করছে।

প্রকৃতির এক আশ্চর্য উপহার মধু। মিষ্টি স্বাদ আর গুণাগুণের জন্য মানুষের মনে এর জায়গা চিরকালীন। এক ফোঁটা মধু জিহ্বায় পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা মন থেকে মস্তিষ্ক পর্যন্ত গভীর আনন্দ ছড়িয়ে দেয়।
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
দেশের বাজারে সোনার দাম আরও বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ১ হাজার ৪৭০ টাকা। এতে এক ভরি সোনার দাম ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ টাকা হয়েছে।
৬ ঘণ্টা আগে
দেশের বৈদেশিক মুদ্রাবাজার স্থিতিশীল রাখতে এবং রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের প্রবাহ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকগুলো থেকে অতিরিক্ত ডলার ক্রয় করেছে। আজ সোমবার ১৩টি ব্যাংক থেকে প্রায় ১৪ কোটি ১৫ লাখ মার্কিন ডলার (১৪১.৫ মিলিয়ন) কেনা হয়েছে।
১০ ঘণ্টা আগে
বাজার সহনীয় করতে পেঁয়াজের আমদানি আরও বাড়িয়েছে সরকার। আজ সোমবার থেকে দৈনিক ১৭ হাজার ২৫০ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে; যা আগে ছিল ৬ হাজার টন করে।
১০ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশের বৈদেশিক মুদ্রাবাজার স্থিতিশীল রাখতে এবং রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের প্রবাহ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকগুলো থেকে অতিরিক্ত ডলার ক্রয় করেছে। আজ সোমবার ১৩টি ব্যাংক থেকে প্রায় ১৪ কোটি ১৫ লাখ মার্কিন ডলার (১৪১.৫ মিলিয়ন) কেনা হয়েছে। ডলারের বিনিময়হার ছিল ১২২ দশমিক ২৯ থেকে ১২২ দশমিক ৩০ টাকা আর কাট-অফ রেট ছিল ১২২ দশমিক ৩০ টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, ১১ ডিসেম্বর ১৬টি ব্যাংক থেকে প্রায় ১৫ কোটি ডলার (১৪৯ মিলিয়ন) কেনা হয়েছিল। এ সময় প্রতি ডলারের বিনিময়হার ছিল ১২২ টাকা ২৫ পয়সা থেকে ১২২ টাকা ২৯ পয়সা। আর কাট-অফ রেট ছিল ১২২ টাকা ৯ পয়সা। চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এখন পর্যন্ত নিলামপদ্ধতিতে মোট ২৮০ কোটি ৪৫ লাখ ডলার (২.৮০ বিলিয়ন) সংগ্রহ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র জানান, আজ ১৩টি ব্যাংক থেকে প্রায় ১৪ কোটি ১৫ লাখ মার্কিন ডলার কেনা হয়েছে।

দেশের বৈদেশিক মুদ্রাবাজার স্থিতিশীল রাখতে এবং রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের প্রবাহ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকগুলো থেকে অতিরিক্ত ডলার ক্রয় করেছে। আজ সোমবার ১৩টি ব্যাংক থেকে প্রায় ১৪ কোটি ১৫ লাখ মার্কিন ডলার (১৪১.৫ মিলিয়ন) কেনা হয়েছে। ডলারের বিনিময়হার ছিল ১২২ দশমিক ২৯ থেকে ১২২ দশমিক ৩০ টাকা আর কাট-অফ রেট ছিল ১২২ দশমিক ৩০ টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, ১১ ডিসেম্বর ১৬টি ব্যাংক থেকে প্রায় ১৫ কোটি ডলার (১৪৯ মিলিয়ন) কেনা হয়েছিল। এ সময় প্রতি ডলারের বিনিময়হার ছিল ১২২ টাকা ২৫ পয়সা থেকে ১২২ টাকা ২৯ পয়সা। আর কাট-অফ রেট ছিল ১২২ টাকা ৯ পয়সা। চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এখন পর্যন্ত নিলামপদ্ধতিতে মোট ২৮০ কোটি ৪৫ লাখ ডলার (২.৮০ বিলিয়ন) সংগ্রহ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র জানান, আজ ১৩টি ব্যাংক থেকে প্রায় ১৪ কোটি ১৫ লাখ মার্কিন ডলার কেনা হয়েছে।

প্রকৃতির এক আশ্চর্য উপহার মধু। মিষ্টি স্বাদ আর গুণাগুণের জন্য মানুষের মনে এর জায়গা চিরকালীন। এক ফোঁটা মধু জিহ্বায় পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা মন থেকে মস্তিষ্ক পর্যন্ত গভীর আনন্দ ছড়িয়ে দেয়।
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
দেশের বাজারে সোনার দাম আরও বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ১ হাজার ৪৭০ টাকা। এতে এক ভরি সোনার দাম ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ টাকা হয়েছে।
৬ ঘণ্টা আগে
শেভরন বাংলাদেশের সহায়তায় বাস্তবায়িত এসএমআইএল প্রকল্পের আওতায় ‘রিস্টোরিং মোবিলিটি: আর্টিফিশিয়াল লিম্ব সাপোর্ট’ উদ্যোগের সমাপনী অনুষ্ঠান সম্প্রতি গ্র্যান্ড সিলেটে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে সিলেট ও নবীগঞ্জ উপজেলার ৬০ শারীরিক প্রতিবন্ধী উপকারভোগীর মধ্যে কৃত্রিম অঙ্গ (প্রোস্থেটিক) ও অর্থোটিক...
৯ ঘণ্টা আগে
বাজার সহনীয় করতে পেঁয়াজের আমদানি আরও বাড়িয়েছে সরকার। আজ সোমবার থেকে দৈনিক ১৭ হাজার ২৫০ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে; যা আগে ছিল ৬ হাজার টন করে।
১০ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বাজার সহনীয় করতে পেঁয়াজের আমদানি আরও বাড়িয়েছে সরকার। আজ সোমবার থেকে দৈনিক ১৭ হাজার ২৫০ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে; যা আগে ছিল ৬ হাজার টন করে।
আজ এক বিজ্ঞপ্তিতে কৃষি মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
জানা যায়, চলতি মাসের শুরু থেকে হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকে। তিন দিনের ব্যবধানে ১২০ টাকার পেঁয়াজের দাম বেড়ে ১৫০ টাকা পর্যন্ত ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৭ ডিসেম্বর থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া শুরু করে কৃষি মন্ত্রণালয়। শুরুতে প্রতিদিন ৫০ জন আমদানিকারককে ৩০ টন করে মোট ১ হাজার ৫০০ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। দীর্ঘ তিন মাস পর এই অনুমোদন দেওয়া হয়।
তবে এরপরও বাজারে দাম না কমলে আমদানির অনুমতির পরিমাণ বাড়ানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমদানি আরও বাড়ানো হয়। ১৩ ডিসেম্বর থেকে প্রতিদিন ২০০ জনকে ৩০ টন করে ৬ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়, যা আজ থেকে আরও বাড়িয়ে ১৭ হাজার ২৫০ টন করা হয়।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে আজ বলা হয়, পেঁয়াজের বাজার সহনীয় রাখতে ১৫ ও ১৬ ডিসেম্বর দুই দিনের জন্য প্রতিদিন ৫৭৫টি করে আইপি (আমদানি অনুমতি) ইস্যু করা হবে। প্রতিটি আইপিতে আগের ন্যায় সর্বোচ্চ ৩০ টন পেঁয়াজের অনুমোদন দেওয়া হবে। আবেদনের বিষয় আগের ন্যায় বলবৎ থাকবে। অর্থাৎ গত ১ আগস্ট থেকে যেসব আমদানিকারক আমদানি অনুমতির জন্য আবেদন করেছেন, তাঁরাই কেবল এই দুই দিন আবেদন পুনরায় দাখিল করতে পারবেন। একজন আমদানিকারক একবারের জন্য আবেদনের সুযোগ পাবেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ উইংয়ের অতিরিক্ত উপপরিচালক (আমদানি) বনি আমিন খান বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের নির্দেশের পর আজ আমরা ৫৭৫ জনকে আমদানির অনুমোদন দিয়েছি। অনুমোদন নিয়ে এ দিন আমদানিকারকেরা ঋণপত্র খুলতে পেরেছেন। যদিও দুই দিনের কথা বলা হয়েছে, তবে সরকার প্রয়োজন মনে করলে সময় আরও বাড়বে। এর আগে গত শনিবার থেকে প্রতিদিন ৬ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দিয়ে আসছিলাম আমরা।’
দেশে সাধারণত প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করেন ব্যবসায়ীরা। সে হিসাবে যেদিন ঋণপত্র খোলেন, সেদিনই আমদানি করতে পারেন।

বাজার সহনীয় করতে পেঁয়াজের আমদানি আরও বাড়িয়েছে সরকার। আজ সোমবার থেকে দৈনিক ১৭ হাজার ২৫০ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে; যা আগে ছিল ৬ হাজার টন করে।
আজ এক বিজ্ঞপ্তিতে কৃষি মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
জানা যায়, চলতি মাসের শুরু থেকে হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকে। তিন দিনের ব্যবধানে ১২০ টাকার পেঁয়াজের দাম বেড়ে ১৫০ টাকা পর্যন্ত ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৭ ডিসেম্বর থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া শুরু করে কৃষি মন্ত্রণালয়। শুরুতে প্রতিদিন ৫০ জন আমদানিকারককে ৩০ টন করে মোট ১ হাজার ৫০০ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। দীর্ঘ তিন মাস পর এই অনুমোদন দেওয়া হয়।
তবে এরপরও বাজারে দাম না কমলে আমদানির অনুমতির পরিমাণ বাড়ানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমদানি আরও বাড়ানো হয়। ১৩ ডিসেম্বর থেকে প্রতিদিন ২০০ জনকে ৩০ টন করে ৬ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়, যা আজ থেকে আরও বাড়িয়ে ১৭ হাজার ২৫০ টন করা হয়।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে আজ বলা হয়, পেঁয়াজের বাজার সহনীয় রাখতে ১৫ ও ১৬ ডিসেম্বর দুই দিনের জন্য প্রতিদিন ৫৭৫টি করে আইপি (আমদানি অনুমতি) ইস্যু করা হবে। প্রতিটি আইপিতে আগের ন্যায় সর্বোচ্চ ৩০ টন পেঁয়াজের অনুমোদন দেওয়া হবে। আবেদনের বিষয় আগের ন্যায় বলবৎ থাকবে। অর্থাৎ গত ১ আগস্ট থেকে যেসব আমদানিকারক আমদানি অনুমতির জন্য আবেদন করেছেন, তাঁরাই কেবল এই দুই দিন আবেদন পুনরায় দাখিল করতে পারবেন। একজন আমদানিকারক একবারের জন্য আবেদনের সুযোগ পাবেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ উইংয়ের অতিরিক্ত উপপরিচালক (আমদানি) বনি আমিন খান বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের নির্দেশের পর আজ আমরা ৫৭৫ জনকে আমদানির অনুমোদন দিয়েছি। অনুমোদন নিয়ে এ দিন আমদানিকারকেরা ঋণপত্র খুলতে পেরেছেন। যদিও দুই দিনের কথা বলা হয়েছে, তবে সরকার প্রয়োজন মনে করলে সময় আরও বাড়বে। এর আগে গত শনিবার থেকে প্রতিদিন ৬ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দিয়ে আসছিলাম আমরা।’
দেশে সাধারণত প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করেন ব্যবসায়ীরা। সে হিসাবে যেদিন ঋণপত্র খোলেন, সেদিনই আমদানি করতে পারেন।

প্রকৃতির এক আশ্চর্য উপহার মধু। মিষ্টি স্বাদ আর গুণাগুণের জন্য মানুষের মনে এর জায়গা চিরকালীন। এক ফোঁটা মধু জিহ্বায় পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা মন থেকে মস্তিষ্ক পর্যন্ত গভীর আনন্দ ছড়িয়ে দেয়।
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
দেশের বাজারে সোনার দাম আরও বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ১ হাজার ৪৭০ টাকা। এতে এক ভরি সোনার দাম ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ টাকা হয়েছে।
৬ ঘণ্টা আগে
শেভরন বাংলাদেশের সহায়তায় বাস্তবায়িত এসএমআইএল প্রকল্পের আওতায় ‘রিস্টোরিং মোবিলিটি: আর্টিফিশিয়াল লিম্ব সাপোর্ট’ উদ্যোগের সমাপনী অনুষ্ঠান সম্প্রতি গ্র্যান্ড সিলেটে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে সিলেট ও নবীগঞ্জ উপজেলার ৬০ শারীরিক প্রতিবন্ধী উপকারভোগীর মধ্যে কৃত্রিম অঙ্গ (প্রোস্থেটিক) ও অর্থোটিক...
৯ ঘণ্টা আগে
দেশের বৈদেশিক মুদ্রাবাজার স্থিতিশীল রাখতে এবং রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের প্রবাহ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকগুলো থেকে অতিরিক্ত ডলার ক্রয় করেছে। আজ সোমবার ১৩টি ব্যাংক থেকে প্রায় ১৪ কোটি ১৫ লাখ মার্কিন ডলার (১৪১.৫ মিলিয়ন) কেনা হয়েছে।
১০ ঘণ্টা আগে