Ajker Patrika

চাহিদা বাড়ছে, সমস্যা রয়ে গেছে: মধুশিল্পের ভবিষ্যৎ

রোকন উদ্দীন, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

প্রকৃতির এক আশ্চর্য উপহার মধু। মিষ্টি স্বাদ আর গুণাগুণের জন্য মানুষের মনে এর জায়গা চিরকালীন। এক ফোঁটা মধু জিহ্বায় পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা মন থেকে মস্তিষ্ক পর্যন্ত গভীর আনন্দ ছড়িয়ে দেয়।

মধু শুধু স্বাদের জন্য নয়, উপকারিতার জন্যও খ্যাতি অর্জন করেছে। এটি ‘সব রোগের মহৌষধ’ হিসেবে পরিচিত। পুষ্টিবিদেরা বলেন, মধুতে গ্লুকোজ, ফ্রুকটোজ, খনিজ লবণ, অ্যামাইনো অ্যাসিডসহ প্রায় ৪৫টি পুষ্টি উপাদান থাকে। ১০০ গ্রাম মধুতে ২৮৮ ক্যালরি শক্তি থাকে, যা শরীর চাঙা রাখতে সাহায্য করে।

একসময় বন-জঙ্গল থেকে মৌয়ালেরা মধু সংগ্রহ করতেন, যা দাদি-নানিরা বোতলে জমাতেন। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মধু উৎপাদন থেকে বাজারে পৌঁছানোর প্রক্রিয়াটি বাণিজ্যিক রূপ লাভ করেছে এবং শিল্পে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে মধু নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে গবেষক, চাষি, উৎপাদক, ব্যবসায়ী ও ভোক্তার মাঝে সেতুবন্ধ গড়ে উঠেছে। এর সদস্যসংখ্যা ২৬ হাজারের বেশি। প্রতিবছর জাতীয় মৌমাছি ও মধু সম্মেলন, প্রদর্শনী, সেমিনার, মধুমেলা এবং সুন্দরবনে হানি ট্যুরিজমের কার্যক্রমও চলছে।

বর্তমানে দেশে মধুর বার্ষিক বাজারমূল্য ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ২০২৪ সালে প্রাকৃতিক ও চাষ থেকে ২০-২৫ হাজার টন মধু সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯০-৯৫% চাষের। তবে দেশে মধু প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংগ্রহের আধুনিক ব্যবস্থা কম, তাই প্রতিবছর প্রায় ২ হাজার টন মধু আমদানি করা হচ্ছে।

গবেষক ও উদ্যোক্তারা মনে করেন, মধু শুধু পুষ্টি ও স্বাদের বিষয় নয়, এটি একটি বিশাল সম্ভাবনার ক্ষেত্র। একটু পরিকল্পনা ও যত্ন নিলে এই শিল্পকে দেশের অর্থনীতির এক শক্তিশালী খাতে রূপান্তর করা সম্ভব। যদি এই খাতে উন্নতি ঘটে, দেশের বার্ষিক মধু উৎপাদন ২ লাখ টন ছাড়িয়ে যাবে, যার বাজারমূল্য দাঁড়াবে ১৪-১৫ হাজার কোটি টাকায়।

মৌমাছি চাষের ইতিহাস

মৌমাছি চাষের প্রাচীন ইতিহাস খ্রিষ্টপূর্ব ৬ হাজার অব্দে পাওয়া গেলেও পদ্ধতিগতভাবে এটি শুরু হয় ১৬ শতকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। আধুনিক মৌচাষের ভিত্তি স্থাপন করেন ল্যাংস্ট্রোথ, ১৮ শতকে। বাংলাদেশে বাণিজ্যিক মৌচাষ শুরু হয় ১৯৬১ সালে কুমিল্লার পল্লী উন্নয়ন একাডেমিতে। এরপর ১৯৬৩ সালে বিসিক প্রথম মৌ চাষের উদ্যোগ নেয়। ভারতে মৌমাছি চাষ শুরু হয়েছিল ১৮৮৩ সালে। আশির দশকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যুক্ত হয় এবং ২০০০ সাল থেকে বাণিজ্যিকভাবে মধু উৎপাদন শুরু হয়। ২০০৫ সাল পর্যন্ত বিসিক ১৭ হাজার মানুষকে প্রশিক্ষণ দিয়ে মধু চাষে উদ্বুদ্ধ করেছে।

বাড়ছে উৎপাদন-চাহিদা

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের আল আমিন আট বছর আগে মধু ব্যবসা শুরু করেন। তখন তাঁর এলাকায় ১০-১২ জন বিক্রেতা ছিলেন। আজ সেই সংখ্যা বেড়ে কয়েক হাজার হয়েছে। প্রথমে দৈনিক ২-৩ কেজি মধু বিক্রি হলেও বর্তমানে তা ১৫-২০ কেজিতে দাঁড়িয়েছে। তাঁর প্রতিষ্ঠিত ব্র্যান্ড ‘ভিটালিক্স’ও বাজারে পরিচিত।

আল আমিন জানান, করোনাকালে মধুর বাজার দ্রুত বেড়েছে। আগের পাঁচ বছরে যে চাহিদা ছিল, করোনার এক-দুই বছরে তা অনেক বেড়েছে। কারণ, মানুষ এখন শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা (ইমিউনিটি) বাড়ানোর গুরুত্ব বুঝতে পেরেছে।

মধুর বাজারের আকার

দেশে মধু উৎপাদনের প্রকৃত তথ্য এখনো অস্পষ্ট। সরকারি-বেসরকারি হিসাবে এর পরিমাণের তথ্যে ভিন্নতা রয়েছে। বিসিকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে সাড়ে ১০ হাজার টনের বেশি মধু উৎপাদিত হয়, যা ২০১৮-১৯ সালে ছিল ২ হাজার টনের কম। এ ছাড়া প্রতিবছর প্রায় ২ হাজার টন মধু আমদানি করা হয়।

তবে গতকাল শনিবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত হওয়া পঞ্চম মৌমাছি ও মধু সম্মেলনে উপস্থাপিত গবেষণা প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৪ সালে প্রাকৃতিক ও চাষ থেকে মধু সংগ্রহ হয়েছে ২০ থেকে ২৫ হাজার টন।

বাংলাদেশ বি কিপার্স অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোক্তাদের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি কেজি মধুর গড় মূল্য ৭০০ টাকা ধরে ১০ হাজার ৬৫৫ টন মধুর বাজারমূল্য প্রায় ৭৫০ কোটি টাকা। প্রতিবছর আমদানি করা মধুর মূল্য প্রায় ৬০ কোটি টাকা এবং মৌচাক থেকে প্রাপ্ত অন্যান্য উপকরণ বিক্রি হয় প্রায় ৫০ কোটি টাকায়। সুতরাং উৎপাদিত, আমদানি, অন্যান্য মধুর পণ্যসহ দেশে মধুর বাজার ৮৫০ কোটি টাকার বেশি।

বর্তমানে বিসিকের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চাষির সংখ্যা ৬ হাজার। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়া প্রায় ২ হাজার চাষি মধু উৎপাদন করছেন। এসব চাষি সাধারণত ৮০-১০০টি বাক্স ব্যবহার করে মধু উৎপাদন করেন। শখের বশে কিছু বাক্স কিনে ব্যক্তিগতভাবে মধু উৎপাদনকারীও রয়েছেন। এর ফলে বেসরকারি তথ্য অনুযায়ী মধুর বাজারের আকার আরও বড়। যার বার্ষিক বাজারমূল্য ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।

কোথায় বেশি উৎপাদন

মধুর ৯৫ শতাংশ উৎপাদিত হয় চাষের মাধ্যমে, যার মধ্যে প্রাকৃতিক মধুর বড় উৎস সুন্দরবন। বন বিভাগের তথ্যমতে, সুন্দরবন থেকে প্রতিবছর প্রায় ৩০০ টন মধু আহরণ করা হয়। সরকারিভাবে মধু চাষ করে বিসিক, যার ছয়টি মধু সংগ্রহকেন্দ্র রয়েছে গাজীপুর, দিনাজপুর, বাগেরহাট, বরিশাল, সিলেট ও কুমিল্লায়। এ ছাড়া মানিকগঞ্জ, পাবনা, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, টাঙ্গাইলসহ বিভিন্ন এলাকায় বেশি মধু উৎপাদিত হয়; বিশেষত সরিষা, ধনিয়া, কালিজিরা ও লিচু ফুলের মৌসুমে।

মধুর ধরন, ব্র্যান্ড ও দাম

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে সরিষা, লিচু, কালিজিরা, সুন্দরবনের বাইং, বরই, ধনিয়া, শজনেসহ ৮-১০ ধরনের ফুলের মধু পাওয়া যায়। সবচেয়ে দামি হলো সুন্দরবনের প্রাকৃতিক মধু, যা ১ হাজার ৯০০ থেকে ২ হাজার টাকা কেজি বিক্রি হয়। এরপরেই সুন্দরবনে বাক্সে উৎপাদিত মধু ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ এবং বাইং ফুলের মধু ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা কেজি। সরিষা ফুলের মধুর দাম সবচেয়ে কম, ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি। কালিজিরার মধু বিক্রি হয় ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা কেজি।

বিক্রেতারা বলেন, মধুর দাম কিছুটা বেশি হলেও এটি স্বাস্থ্যোপকারিতার জন্য অনেকের কাছে সাশ্রয়ী। এ ক্ষেত্রে ২০ গ্রাম মধু খাওয়ার খরচ মাত্র ১২ টাকা, যা অনেকের জন্য সাশ্রয়ী হতে পারে। বাজারে পাওয়া যায় দেশীয় ব্র্যান্ড যেমন স্বপ্ন মধু, ট্রপিকা, এপি মধু ছাড়াও আমদানি করা বিদেশি ব্র্যান্ড; যেমন ভারতের ডাবর, সাফোলা; পাকিস্তানের বি হাইভস; অস্ট্রেলিয়ার অজিবি; সৌদি আরবের আল শিফা; নিউজিল্যান্ডের মানুকা হানি। বিদেশি মধু সাধারণত ৫০০ থেকে ২৫০ গ্রাম কাচের জারে বিক্রি হয়, যার দাম কেজিতে ১ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার টাকা।

ভেজালে বাড়ছে আস্থাহীনতা

মধুর বাজার সম্প্রসারণের সঙ্গে সঙ্গে ভেজালের পরিমাণও বাড়ছে, যা ক্রেতাদের জন্য বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে ভেজাল মধু খাঁটি মধু হিসেবে বিক্রি হচ্ছে, ফলে ক্রেতারা সঠিক পণ্য নির্বাচন করতে পারছেন না। এই আস্থাহীনতা ক্রমাগত বেড়ে যাওয়ায় খাঁটি মধু কেনার প্রতি মানুষের আগ্রহ কমছে। তা ছাড়া ভেজাল মধু বিক্রির কারণে খাঁটি মধুর দামও সঠিকভাবে নির্ধারণ করা যাচ্ছে না। ফলে বাজারে মধুর চাহিদা ও বিশ্বাসে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে, যা ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের জন্য উদ্বেগের কারণ।

মানসনদেও জটিলতা

গোপীবাগ এলাকার মাহবুবা আলম বলেন, বাজারের মধু খাঁটি কি না, তা নিশ্চিত করা কঠিন। যদি সরকারি সংস্থা নিশ্চিত করতে পারত, তাহলে ক্রেতার সংখ্যা আরও বাড়ত। দেশে মধুর বিপণনে মান বজায় রাখার দায়িত্ব বিএসটিআইয়ের। বিএসটিআই কর্তৃক মানসনদপ্রাপ্ত ১৮১টি পণ্যের মধ্যে মধু রয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সনদ নিয়ে মধু বিক্রি হলেও প্রক্রিয়াগত জটিলতার কারণে অনেকে সনদ নেন না। লাইসেন্স প্রক্রিয়া সহজ করলে বাজারে আস্থাহীনতা অনেকটা কমে যেত।

বিএসটিআই সূত্রে জানা যায়, মধুর মানসনদ নিতে উদ্যোক্তাকে একটি প্রতিষ্ঠিত কারখানা, ট্রেড লাইসেন্স, ট্রেডমার্ক সার্টিফিকেট, স্বাস্থ্য সার্টিফিকেট ও মোড়ক তৈরি করতে হয়। এসব কাগজপত্রসহ বিএসটিআইয়ে আবেদন করতে হয়, যেখানে উৎপাদিত পণ্যের নমুনা জমা দিতে হয়। বিএসটিআই নিজস্ব ল্যাবে ১৩টি পরীক্ষা এবং সরেজমিন তদন্তের মাধ্যমে মানসনদ দেয়। বিএসটিআইয়ের পরিচালক মো. নূরুল আমিন বলেন, ‘এখানে ওয়ান-স্টপ সার্ভিস রয়েছে, তবে আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করতেই হবে, অন্যথায় সনদ দেওয়া সম্ভব নয়।’

ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

সমস্যা ও সম্ভাবনা

কিছু বাধার কারণে দেশে মধু উৎপাদন এখনো পূর্ণ সম্ভাবনায় পৌঁছাতে পারেনি। খাতসংশ্লিষ্টরা জানান, মৌমাছির জাত উন্নয়ন ও গবেষণার অভাব প্রধান সমস্যা। গাভির জাত উন্নয়ন করে দুধের উৎপাদন যেমন বাড়ানো সম্ভব হয়েছে, তেমনি মৌমাছির জাত উন্নয়ন হলে মধুর উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব। মৌচাষিরা এক মৌসুমে ৩৫-৪০ কেজি মধু উৎপাদন করতে পারেন, যেখানে চীন ও ভারতের চাষিরা ১০০ থেকে ১২০ কেজি পর্যন্ত উৎপাদন করতে সক্ষম।

বাংলাদেশ বি কিপার্স অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের অভাবও বড় বাধা। বিসিক প্রতিবছর ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে প্রশিক্ষণ দিলেও তা যথেষ্ট নয়। এ ছাড়া মধু বিক্রি ও মানসম্পর্কিত আইন না থাকায় বাজারে আস্থা কম। এ ছাড়া দেশে মধু খাতের জন্য কোনো আলাদা বোর্ড বা দপ্তর না থাকায় কার্যকর নীতিমালা তৈরি সম্ভব হয়নি। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) সাবেক কর্মকর্তা ও মৌ চাষ উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক খোন্দকার আমিনুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যথাযথ উদ্যোগ নিলে দেশের মধু খাত রপ্তানি উপযোগী হয়ে ২ লাখ টন পর্যন্ত উৎপাদন করা সম্ভব। এতে দেশের চাহিদা মিটিয়ে ইউরোপ, আমেরিকা, কানাডাসহ অন্য দেশগুলোতে রপ্তানি করা যাবে।’

খোন্দকার আমিনুজ্জামান আরও জানান, ‘দৈনিক ১০ গ্রাম মধু খেলে দেশের বার্ষিক চাহিদা ৪০ হাজার টন হতে পারে, কিন্তু সচেতনতার অভাবে মানুষ মধু খায় না। মৌমাছি চাষে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। এটি শুধু মধুর উৎপাদন বাড়াবে না, কৃষি ফসলের উৎপাদনও ২৫-৩০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

প্রয়োজনীয়সংখ্যক স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন তাসনিম জারা

এনসিপিতে আসিফ মাহমুদ, হলেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল: আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

জ্বালানি তেল প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের (এসএওসিএল) প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার দুদকের উপপরিচালক (মানি লন্ডারিং) মো. জাহাঙ্গীর আলম মামলাটি করেন।

মামলার আসামিরা হলেন এসএওসিএলের কর্মকর্তা (এইচআর) আব্দুল্লাহ আল মামুন (৩৭), উপব্যবস্থাপক (হিসাব) ও ডিপো ইনচার্জ মোহাম্মদ মাহমুদুল হক (৪৫), গোল্ডেন সিফাত এন্টারপ্রাইজের মালিক মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন গিয়াস (৪৬), আজহার টেলিকমের স্বত্বাধিকারী মো. সোহেল রানা (৪৪) এবং মেসার্স মদিনা কোয়ালিটির স্বত্বাধিকারী মো. মাসুদ মিয়া (৫১)।

দুদক চট্টগ্রামের উপপরিচালক সুবেল আহমেদ বলেন, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের হিসাব থেকে প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা বিভিন্নভাবে স্থানান্তর ও আত্মসাৎ করেন।

এজাহার থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এসএওসিএলের এলসি-সংক্রান্ত লেনদেনের নামে প্রকৃত সরবরাহকারীর পরিবর্তে ভুয়া ও সম্পর্কহীন প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে চেক ইস্যু করার বিষয় দুদকের অনুসন্ধানে উঠে আসে। পরে এসব চেকের অর্থ বিভিন্ন ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর কিংবা নগদে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোনো এলসি খোলা হয়নি এবং লেনদেনগুলো কোম্পানির জেভি-০৮ ও জেনারেল লেজারে অন্তর্ভুক্তও করা হয়নি।

অনুসন্ধান প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পাঁচটি চেকের মধ্যে তিনটির অর্থ গোল্ডেন সিফাত এন্টারপ্রাইজ, আজহার টেলিকম ও মদিনা কোয়ালিটির অ্যাকাউন্টে জমা হয় এবং বাকি দুটি চেকের অর্থ নগদে উত্তোলন করা হয়। চেক জমাদানকারী হিসেবে বারবার আব্দুল্লাহ আল মামুনের নাম পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট পেমেন্ট ভাউচারে নিরীক্ষা বিভাগের স্বাক্ষর না থাকাও অনিয়মের প্রমাণ হিসেবে উঠে এসেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

প্রয়োজনীয়সংখ্যক স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন তাসনিম জারা

এনসিপিতে আসিফ মাহমুদ, হলেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইসলামী ব্যাংকের শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ইসলামী ব্যাংকের শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
ইসলামী ব্যাংকের শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।

সভায় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. ওমর ফারুক খাঁন এবং শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সদস্যসচিব অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুস সামাদ। এ ছাড়া কাউন্সিলের অন্য সদস্যবৃন্দ সভায় অংশগ্রহণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

প্রয়োজনীয়সংখ্যক স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন তাসনিম জারা

এনসিপিতে আসিফ মাহমুদ, হলেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যশোরের খেজুর রস: লক্ষ্য ১২০ কোটি টাকার গুড় উৎপাদন

জাহিদ হাসান, যশোর
রসের জন্য খেজুরগাছ কেটে প্রস্তুত করছেন গাছি। গতকাল যশোরের চৌগাছা উপজেলার চাকলা গ্রাম থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
রসের জন্য খেজুরগাছ কেটে প্রস্তুত করছেন গাছি। গতকাল যশোরের চৌগাছা উপজেলার চাকলা গ্রাম থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস। ভোরে সেই রস নামিয়ে শুরু হয় আরেক কর্মযজ্ঞ; চুলায় জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরির কাজ। বাড়ির নারীরাই মূলত এই প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দেন। কয়েক ঘণ্টা জ্বালানোর পর তৈরি হয় সুস্বাদু খেজুর গুড় ও পাটালি।

শীত মৌসুম এলেই এমন দৃশ্য দেখা যায় খেজুর গুড়ের জেলা খ্যাত যশোরের প্রায় প্রতিটি গ্রামে। সম্প্রতি যশোরের খেজুর গুড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় এর ঐতিহ্যের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সম্ভাবনাও নতুন করে সামনে এসেছে।

উৎপাদন ও বাজারের চিত্র

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে যশোরে প্রায় ১২০ কোটি টাকার খেজুর রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই উৎপাদন গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা আরও গতিশীল করবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।

বর্তমানে খেজুরের কাঁচা রস প্রতি মাটির হাঁড়ি ২০০ থেকে ৪০০ টাকা, দানা গুড় প্রতি কেজি ৩৫০-৪০০ টাকা এবং পাটালি প্রতি কেজি ৪৫০-৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারদর বাড়লেও গাছিরা বলছেন, শ্রম ও ঝুঁকির তুলনায় লাভ সীমিত।

গাছির সংকট বড় চ্যালেঞ্জ

যশোর সদর উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের গাছি আজিবর প্রায় ৩৫ বছর ধরে খেজুর গাছ কাটছেন। তিনি বলেন, ‘আগে দেড় শ গাছ কাটতাম, এখন বয়সের কারণে ৩৫-৪০টার বেশি পারি না। রস ও গুড়ের দাম বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু কাটার মতো গাছ কমে গেছে। আবার গাছ থাকলেও দক্ষ গাছির অভাব। এবার বেশি শীত পড়ায় রসও ভালো নামছে, গুড়ের উৎপাদনও বেশি।’

গাছ থেকে নামিয়ে আনা খেজুরের রস জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরি করছেন এক নারী। গতকাল যশোরের চৌগাছা উপজেলার চাকলা গ্রাম থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাছ থেকে নামিয়ে আনা খেজুরের রস জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরি করছেন এক নারী। গতকাল যশোরের চৌগাছা উপজেলার চাকলা গ্রাম থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মনিরামপুর উপজেলার সরসকাটি গ্রামের গাছি অতিয়ারও প্রায় ৪০ বছর ধরে এই পেশায় যুক্ত। তিনি বলেন, এবার ৫০টা গাছ কাটছি। প্রতিদিন ৮-১০ কেজি গুড় তৈরি হয়। কাজটা খুব কষ্টের। তবে শীত মৌসুমে এই আয়েই পুরো বছরের সংসার চলে।

ই-কমার্সে বাড়ছে চাহিদা

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, যশোর জেলায় মোট খেজুরগাছের সংখ্যা ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৬৯৫। এগুলোর মধ্যে চলতি মৌসুমে রস আহরণের উপযোগী গাছ রয়েছে ৩ লাখ ৭ হাজার ১৩০টি।

উৎপাদিত গুড় প্রথমে স্থানীয় হাটে বিক্রি হয়, পরে পাইকারদের মাধ্যমে তা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। যশোরের খেজুর গুড় এখন বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। পাশাপাশি ই-কমার্স ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমভিত্তিক উদ্যোক্তাদের হাত ধরে গুড় ও পাটালি সরাসরি ভোক্তার ঘরে পৌঁছানো হচ্ছে। এতে বাজার যেমন সম্প্রসারিত হচ্ছে, তেমনি তৈরি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থান।

কৃষি বিভাগের উদ্যোগ

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, যশোরের খেজুর গুড়ের স্বাদ ও মানের কারণে চাহিদা সব সময় বেশি। এবার শীত বেশি হওয়ায় রসের পরিমাণ ও মান—দুটোই ভালো। চলতি মৌসুমে প্রায় ১২০ কোটি টাকার রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। নিরাপদ খেজুর রস এবং গুড় উৎপাদনে কৃষকদের পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। উঠান বৈঠকের মাধ্যমে গাছিদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

প্রয়োজনীয়সংখ্যক স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন তাসনিম জারা

এনসিপিতে আসিফ মাহমুদ, হলেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইসলামি ১০ ও সরকারি ৬ ব্যাংক: ঋণের অর্ধেকের বেশি অনাদায়ি

জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা 
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ২৭
গ্রাফিক্স: আজকের পত্রিকা
গ্রাফিক্স: আজকের পত্রিকা

দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার দাঁড়িয়েছে ৪৯ দশমিক ৬৫ শতাংশে, আর ইসলামি ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে তা আরও বেশি—৫৯ দশমিক শূন্য ২ শতাংশে পৌঁছেছে। অর্থাৎ, এই দুটি খাতেই বিতরণ করা ঋণের অর্ধেকের বেশি অনাদায়ি হয়ে পড়েছে। যেখানে বিশেষায়িত ব্যাংকের খেলাপির হার ৪১ দশমিক ৯৫ ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপির হার মাত্র ৪ দশমিক ৯২ শতাংশ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, শরিয়াহভিত্তিক ১০টি ইসলামি ব্যাংক মোট ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা ঋণ বিনিয়োগ করেছে। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে ২ লাখ ৮৩ হাজার ৫৫ কোটি টাকা। হিসাব বলছে, প্রতি ১০ টাকার প্রায় ৬ টাকাই এখন আদায় অনিশ্চিত। সেই তুলনায় শরিয়াহসহ দেশীয় বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৪ লাখ ৬৩ হাজার ১৮৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এই তুলনাতেই স্পষ্ট, খেলাপির বোঝা এককভাবে সবচেয়ে বেশি ইসলামি ব্যাংকগুলোর ঘাড়েই।

সরকারি ছয় ব্যাংকের অবস্থাও খুব একটা ভিন্ন নয়। এসব ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৭৯২ কোটি টাকা। মোট বিতরণ করা ঋণের প্রায় অর্ধেকই সেখানে অনাদায়ি। ব্যাংকার ও বিশ্লেষকদের মতে, এই সংকট রাতারাতি তৈরি হয়নি। বছরের পর বছর ধরে দুর্বল তদারকি, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং ইচ্ছাকৃত খেলাপিকে আড়াল করার প্রবণতা ধীরে ধীরে ব্যাংকগুলোকে এই জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন মনে করেন, খেলাপি ঋণের এত উচ্চ হার শুধু ব্যাংকিং খাতের ভেতরের সমস্যা নয়, এটি সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য বড় ঝুঁকি। ব্যাংকগুলো নতুন ঋণ দিতে পারছে না, বিনিয়োগ কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ছে, শিল্প-কারখানার সম্প্রসারণ থেমে যাচ্ছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে কর্মসংস্থানে। তাঁর মতে, খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা এবং ঋণ আদায়ে বাস্তবসম্মত উদ্যোগ ছাড়া পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব নয়।

ইসলামি ব্যাংকিং খাতে এস আলম, নাসা ও বেক্সিমকো গ্রুপের নাম বারবার আলোচনায় এসেছে। সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, দীর্ঘদিন সরকারি মদদে এসব গ্রুপ বিপুল ঋণ নিয়ে খেলাপি হলেও তা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি পায়নি। এখন সেই বাস্তবতা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট।

সামগ্রিকভাবে দেশের ব্যাংকিং খাতের চিত্র আরও উদ্বেগজনক। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১৮ লাখ ৩ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে প্রায় ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম বলেন, বিগত সরকারের টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে খেলাপি ঋণ কম দেখানোর যে অপচেষ্টা ছিল, তা এখন ভেঙে পড়েছে। সঠিক হিসাব সামনে আসায় হার ৩৬ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছেছে, যা বাস্তবতারই প্রতিফলন। তিনি আবারও শীর্ষ ১০ খেলাপির জন্য আলাদা ট্রাইব্যুনালের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, আগের সরকারের আমলে লুকিয়ে রাখা খেলাপি ঋণ প্রকাশ পাওয়ায় এই হার বেড়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ঋণ আদায়ে কঠোর নির্দেশনার কারণে আগের তুলনায় আদায় বেড়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

প্রয়োজনীয়সংখ্যক স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন তাসনিম জারা

এনসিপিতে আসিফ মাহমুদ, হলেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত