Ajker Patrika

প্রযুক্তির ছোঁয়া নেই ৯৫% প্রতিষ্ঠানে

শাহ আলম খান, ঢাকা 
আপডেট : ২৯ মে ২০২৫, ১২: ৩২
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

যখন এআই, অটোমেশন আর ক্লাউড প্রযুক্তি ব্যবসা বদলে দিচ্ছে সারা বিশ্বে, তখন বাংলাদেশের এসএমই খাতের বেশির ভাগ উদ্যোক্তা এখনো খাতা-কলমে হিসাব রাখেন, হাতে করে অর্ডার সামলান, আর ফেসবুকে ছবি পোস্ট করাকেই ধরেন ডিজিটাল বিপণন। জিডিপির প্রায় এক-চতুর্থাংশে অবদান রেখেও এই খাতের ৯৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠান প্রযুক্তির বাইরে। তথ্য নেই, দিকনির্দেশনা নেই, দক্ষতা তৈরির সুযোগও সীমিত; ফলে আধুনিক ব্যবসার মূলস্রোতের সম্পর্ক ছিন্ন তাদের। প্রযুক্তিবিশারদেরা বলছেন, ব্যবসায় প্রযুক্তি এখন আর বিলাসিতা নয়, বরং টিকে থাকার শর্ত। অন্যদিকে অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, এ লড়াইয়ে পিছিয়ে পড়া মানেই শুধু নিজের ক্ষতি নয়, জাতীয় প্রবৃদ্ধিকেও টেনে ধরা।

জাতীয় এসএমই নীতিতে প্রযুক্তিনির্ভর উন্নয়নের কথা থাকলেও বাস্তবে তা কার্যকর হয়নি। উদ্যোক্তারা জানেন না কী প্রযুক্তি প্রয়োজন, কোথায় পাবেন, কীভাবে শুরু করবেন। তথ্য, পরামর্শ ও অর্থের ঘাটতিতে প্রযুক্তি তাঁদের কাছে এক দুর্লভ ও জটিল বিষয়। সহনীয় কর-ভ্যাটের অভাব এবং অব্যাহতির সংকোচন প্রযুক্তি খাতে অগ্রযাত্রা থামিয়ে দিয়েছে। আগে যেখানে আইসিটির ২৭টি খাত করমুক্ত ছিল, ২০২৪-২৫ সালে তা কমে ১৯-এ নেমেছে। ফলে ৮৫% কর্মসংস্থান জোগানো খাতটি এখনো প্রযুক্তিগত প্রস্তুতির শুরুতেই আটকে আছে।

এসবের প্রভাব পড়ছে উৎপাদন ও ব্যবসার প্রবৃদ্ধিতে। দেশের এসএমই খাত, প্রযুক্তির ঘাটতিতে প্রতিবছর ৩-৫ শতাংশ উৎপাদনশীলতা হারাচ্ছে, এই তথ্য বিশ্বব্যাংকের। বিপরীতে, সঠিক নীতি ও ডিজিটাল ব্যবস্থায় এই খাত থেকে ৮-১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি সম্ভব। বিআইডিএস বলছে, যারা প্রযুক্তি এনেছে, তাদের বিক্রি বেড়েছে গড়ে ১৭ শতাংশ। এই পরিসংখ্যানের বাস্তব উদাহরণ গাজীপুরের গ্রিন হ্যান্ড টেক্সটাইল। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার মাহফুজা ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রযুক্তি আমার অপচয় কমিয়েছে, মান ঠিক রেখেছে, আর বিদেশি ক্রেতা বুঝতে শিখিয়েছে। এতে আমার ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধিও ভালো হচ্ছে।’

অর্থনীতিবিদদের মতে, প্রযুক্তি গ্রহণে দেরি হলে এসএমই খাত ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারবে না। এ প্রসঙ্গে বেসরকারি আর্থিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির বিশেষ ফেলো ও জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ড. মোস্তাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি ছাড়া এসএমই এগোতে পারবে না। উৎপাদন ও প্রবৃদ্ধি থমকে যাবে, আর সক্ষমদের সঙ্গে পাল্লায় না পেরে অনেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হবেন। তাই প্রযুক্তিসেবা সহজলভ্য করতে সরকারেরই এগিয়ে আসা উচিত।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে প্রযুক্তি থেকে এসএমই খাতের বিচ্ছিন্নতা আত্মঘাতী। বিষয়টি সরকারের পরিকল্পনায় আছে। উদ্যোক্তারা যাতে সহজে প্রযুক্তি গ্রহণে এগোতে পারেন, সে জন্য দ্রুত কার্যকর কৌশল নেওয়া হবে।

জানা গেছে, থাইল্যান্ডে ৪০% এসএমই এরই মধ্যে আইওটি ও স্মার্ট ম্যানুফ্যাকচারিং প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু করেছে, মালয়েশিয়ায় ডিজিটাল স্কিলস প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক। সরকার দেয় ভর্তুকিও। আর বাংলাদেশে প্রযুক্তি ব্যবহার ৫ শতাংশের নিচে, তা-ও শুধু বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে সীমিত। গ্রাম ও শহরতলির বেশির ভাগ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা এখনো রয়ে গেছেন অ্যানালগ পদ্ধতির মধ্যে।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সাবেক সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবিরের মতে, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য ক্লাউডভিত্তিক অ্যাকাউন্টিং ও ইনভেনটরি সফটওয়্যার অত্যাবশ্যক। সরকার স্বল্পমূল্যে এসব সরবরাহ করলে এসএমইরা সহজে প্রযুক্তিনির্ভর হতে পারে। অনলাইন বিক্রির জন্য প্রয়োজন ডিজিটাল কমার্স ফ্রেমওয়ার্ক, যা অনেকের নেই। এ জন্য এসএমই ফাউন্ডেশন একটি প্ল্যাটফর্ম গড়ে পণ্যের প্রদর্শন ও বিপণনে ভূমিকা রাখতে পারে। পাশাপাশি তিনি মনে করেন, নীতিগত সীমাবদ্ধতাগুলো এখনই পুনর্বিবেচনা করা জরুরি।

তথ্য আছে, দৃষ্টি নেই

বাংলাদেশের এসএমই খাতে এখনো ডিজিটাল লেনদেন, ক্লাউড অ্যাকাউন্টিং বা সিআরএম সফটওয়্যার কার্যকরভাবে পৌঁছায়নি। প্রশিক্ষণ ও সহায়তা থাকলেও টেকনিক্যাল সাপোর্ট ও পরামর্শের ঘাটতিতে প্রযুক্তির ব্যবহার দৃশ্যমান নয়। অথচ প্রযুক্তি ছাড়া বাজার বোঝা, ক্রেতার চাহিদা ধরা বা খরচ নিয়ন্ত্রণ আজ অসম্ভব।

বিশ্বব্যাংকের ‘এন্টারপ্রাইজ সার্ভে’ অনুযায়ী, বাংলাদেশে মাত্র ১২% এসএমই ডিজিটাল টুল ব্যবহার করে, যেখানে ভিয়েতনামে ৪১% আর ইন্দোনেশিয়ায় ৩৫%। এই ব্যবধানের মূল কারণ সরকারের প্রযুক্তি উদ্যোগ, কর নীতি ও দক্ষতা উন্নয়নে ঘাটতি।

নীতিমালার ফাঁকে আটকে সম্ভাবনা

বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তিনির্ভর এসএমই বিস্তারে উদ্ভাবনী নীতি দৃষ্টান্ত হয়ে উঠছে। ফিলিপাইনে অনুদানের শর্ত ডিজিটাল প্রশিক্ষণ, ঘানায় নারী উদ্যোক্তারা সরকারি অ্যাপে সংযুক্ত, ভিয়েতনামে গ্রামীণ এসএমইতে মোবাইল অ্যাপ বাধ্যতামূলক। এসব আর বিলাসিতা নয়, বাংলাদেশেও এখন সময়ের দাবি।

অথচ চলতি বাজেটেও এসএমই খাতে প্রযুক্তিগত রূপান্তরের জন্য কোনো নির্দিষ্ট বরাদ্দ নেই। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে কর রেয়াত, সফটওয়্যার ক্রয়ে ভ্যাট অব্যাহতি কিংবা প্রযুক্তি ব্যবহারে প্রণোদনা—এসব দাবি বহুদিনের হলেও কানে পৌঁছায়নি নীতিনির্ধারকদের।

ডিসিসিআই সভাপতি সামীর সাত্তারের মতে, সহায়ক নীতিমালা ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতাই স্মার্ট অর্থনীতির পথে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে পারে।

ঋণের পথেও প্রযুক্তি অন্তরায়

ঋণপ্রাপ্তির ক্ষেত্রেও প্রযুক্তিগত অনভিজ্ঞতা বড় বাধা। বাংলাদেশে এখনো ডিজিটাল স্কোরিং, বিকল্প তথ্যভিত্তিক ক্রেডিট অ্যাসেসমেন্ট বা পিয়ার-টু-পিয়ার লেন্ডিং সেভাবে চালু হয়নি। অথচ ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশে এসব প্রযুক্তি ব্যবহার করেই ছোট উদ্যোক্তারা মূলধনের সংস্থান নিশ্চিত করছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রযুক্তি উন্নয়নে বরাদ্দ করা এসএমই ঋণের মাত্র ৩ দশমিক ২ শতাংশ ব্যবহৃত হয় নতুন যন্ত্রপাতি বা প্রযুক্তি আপগ্রেডে। মূলত প্রযুক্তির দাম, দক্ষ জনবল না থাকা এবং প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণের অভাব—এসবই বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহার বলেন, উদ্যোক্তাদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে প্রযুক্তি এখন অপরিহার্য। তথ্য ছাড়া ঝুঁকি নিরূপণ সম্ভব নয়, আর সেই তথ্য আসে প্রযুক্তি থেকেই। তাই উদ্যোক্তাদের ডিজিটাল সক্ষমতা তৈরিতে নীতিগত উদ্যোগ এখন সময়ের দাবি।

প্রশিক্ষণের পরে পথ নেই

ভারতের ‘ডিজিটাল এমএসএমই স্কিম’-এ বছরে ৫ লাখ উদ্যোক্তা প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ পাচ্ছেন, আর বাংলাদেশে এই সংখ্যা ৫০ হাজার, তা-ও কাগজে-কলমেই। মাঠপর্যায়ে এর প্রভাব নেই, কারণ, প্রশিক্ষণের পর নেই কার্যকর প্ল্যাটফর্ম, পরামর্শ বা টেক সাপোর্ট। ২০২৪-২৫ বাজেটে এসএমই খাতে প্রযুক্তি ব্যবহারে নেই আলাদা বরাদ্দ বা প্রশিক্ষণ কোটা। নারী উদ্যোক্তারা আরও পিছিয়ে। এটি যেন মাঝপথে প্রশিক্ষণ দিয়ে ফেলে রাখার মতো অবস্থা।

নারী উদ্যোক্তারা এসএমই খাতের বড় অংশ হলেও তাঁরাই সবচেয়ে প্রযুক্তিবঞ্চিত। ডিজিটাল লেনদেন, ই-কমার্স বা সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যবসার দক্ষতা বহুজনেরই নেই। রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের মৃৎশিল্পী সালমা আক্তার বললেন, ‘আমি প্রতিদিন ৩০-৪০টা পণ্য বানাই, কিন্তু কোথায় বিক্রি করব, কীভাবে ছবি তুলব, পোস্ট করব—এসব শিখিনি। কেউ দেখায়ও না।’

প্রস্তুতির ঘাটতি স্পষ্ট

এসএমই ফাউন্ডেশনের জরিপে দেখা গেছে, ৮২ শতাংশ উদ্যোক্তা চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রযুক্তি সম্পর্কে সচেতন নন, আর ৬৬ শতাংশ জানেন না কীভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবোটিকস বা আইওটি ব্যবসায় কাজে লাগতে পারে। এই বাস্তবতায় প্রযুক্তি ধারণা ছড়িয়ে দিতে ‘টেকনোলজি লিটারেসি প্রোগ্রাম’ শুরু করেছে ফাউন্ডেশন। প্রতিষ্ঠানটির এমডি আনোয়ার হোসেন চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খাতটির সক্ষমতা তৈরিতে বড় পরিসরের পরিকল্পনা জরুরি।’

সমাধানের পথ: একটি সমন্বিত সেতু

বিশ্লেষকেরা বলছেন, বাংলাদেশে এখন প্রয়োজন একটি সমন্বিত নীতিগত কাঠামো; যা প্রযুক্তি, প্রশিক্ষণ, অর্থায়ন ও বাজার ব্যবস্থাপনাকে একসঙ্গে বেঁধে দেবে। এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন মো. মুসফিকুর রহমানের মতে, এ মুহূর্তে বাজেটভিত্তিক প্রযুক্তি নীতি, কর রেয়াত, সফটওয়্যার আমদানিতে শুল্কছাড়, ডিজিটাল স্কোরিংয়ের মাধ্যমে সহজ ঋণ এবং আইসিটি বিভাগ ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগ ছাড়া চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে এসএমই খাতের টিকেa থাকাই কঠিন হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

আজকের রাশিফল: ফেসবুকে জ্ঞান ঝাড়বেন না— বন্ধুরা জানে আপনি কপি মাস্টার, স্ত্রীর কথা শুনুন

নতুন প্রধান বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যুব কর্মসংস্থানে ১৮৩৯ কোটি টাকা ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান ও আয়ের সুযোগ বাড়াতে বাংলাদেশকে ১৫ কোটি ৭ লাখ ৫০ হাজার ডলার ঋণ অনুমোদন দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১ হাজার ৮৩৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা। নারী এবং জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারী নিম্ন আয়ের যুবক ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের অগ্রাধিকার দিয়ে এই অর্থ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

আজ বুধবার বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। অনানুষ্ঠানিক খাত কর্মসংস্থান পুনরুদ্ধার ও অগ্রগতি প্রকল্পের আওতায় এ ঋণ দেওয়া হবে।

বিশ্বব্যাংক জানায়, এই প্রকল্পের মাধ্যমে নতুন করে প্রায় ১ লাখ ৭৬ হাজার যুবকের জন্য কর্মসংস্থান ও আয়ের সুযোগ তৈরি হবে। এর আগে প্রকল্পটির আওতায় ২ লাখ ৩৩ হাজার মানুষ সুবিধা পেয়েছেন। নতুন অর্থায়নের ফলে অংশগ্রহণকারীরা দক্ষতা প্রশিক্ষণ, শিক্ষানবিশ কর্মসূচি, উদ্যোক্তা উন্নয়ন এবং ক্ষুদ্রঋণের সুযোগসহ বিভিন্ন সহায়তা পাবেন। এতে তরুণ ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা কর্মসংস্থান ও ব্যবসা সম্প্রসারণে বিদ্যমান বাধা অতিক্রম করতে পারবেন।

প্রকল্পটির একটি বড় অংশ নারীর ক্ষমতায়ন ও জলবায়ু সহনশীল জীবিকার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে মানসম্মত ও সাশ্রয়ী শিশু যত্নসেবার সুযোগ, পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় সম্প্রদায়ভিত্তিক জীবিকা সহায়তা।

বাংলাদেশে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর গেইল মার্টিন বলেন, ‘একটি ভালো চাকরি একটি জীবন, একটি পরিবার এবং একটি সম্প্রদায়কে বদলে দিতে পারে। কিন্তু প্রতিবছর শ্রমবাজারে প্রবেশ করা অনেক তরুণ বাংলাদেশি কাজ খুঁজে পায় না। কাজের মান, দক্ষতার ঘাটতি ও দক্ষতার অমিল বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে আছে।’

তিনি আরও জানান, নতুন এই অর্থায়ন বিশেষ করে নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর তরুণদের বাজার–প্রাসঙ্গিক দক্ষতা ও প্রশিক্ষণ অর্জনে সহায়তা করবে।

বিশ্বব্যাংক আরও জানায়, অতিরিক্ত অর্থায়নের ফলে প্রকল্পটির কার্যক্রম শহরের বাইরে গ্রামীণ এলাকাতেও সম্প্রসারিত হবে। এতে প্রান্তিক যুবক ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা লক্ষ্যভিত্তিক সহায়তা পাবেন। পাশাপাশি নারীদের প্রশিক্ষণ ও স্টার্টআপ অনুদানের মাধ্যমে গৃহভিত্তিক শিশু যত্নসেবা চালুর উদ্যোগ নেওয়া হবে, যা নারী শ্রমশক্তির অংশগ্রহণ বাড়াবে এবং নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে।

বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র সামাজিক সুরক্ষা অর্থনীতিবিদ ও প্রকল্পের টিম লিডার আনিকা রহমান বলেন, ‘এই নতুন অর্থায়নের মাধ্যমে প্রমাণিত উদ্যোগগুলো সম্প্রসারণ, ক্ষুদ্রঋণের সুযোগ বাড়ানো এবং শিশু যত্নের মতো উদ্ভাবনী সমাধান চালু করা সম্ভব হবে। এতে আরও বেশি তরুণ ও নারী তাদের সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে একটি স্থিতিশীল ভবিষ্যৎ গড়তে পারবেন।’

বিশ্বব্যাংক জানায়, প্রকল্পটি ইতিমধ্যেই ইতিবাচক ফল দেখিয়েছে। শিক্ষানবিশ কর্মসূচি সম্পন্ন করা অংশগ্রহণকারীদের ৮০ শতাংশের বেশি তিন মাসের মধ্যেই কর্মসংস্থান নিশ্চিত করেছেন। একই সঙ্গে তরুণ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা আয় ও ব্যবসা পরিচালনায় উন্নতির কথা জানিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

আজকের রাশিফল: ফেসবুকে জ্ঞান ঝাড়বেন না— বন্ধুরা জানে আপনি কপি মাস্টার, স্ত্রীর কথা শুনুন

নতুন প্রধান বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রমজান উপলক্ষে খেজুর আমদানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক হ্রাস

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৩৯
দীর্ঘ সময় রোজা রাখার পর পর দুটি বা তিনটি খেজুর শরীরে দ্রুত শক্তি এবং প্রাকৃতিক শর্করা জোগায়। ছবি: ভিজিট সৌদি ডট কম
দীর্ঘ সময় রোজা রাখার পর পর দুটি বা তিনটি খেজুর শরীরে দ্রুত শক্তি এবং প্রাকৃতিক শর্করা জোগায়। ছবি: ভিজিট সৌদি ডট কম

রমজান মাস উপলক্ষে খেজুর আমদানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক কমিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। আজ বুধবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি।

এনবিআর জানায়, ধর্মপ্রাণ জনগণের আবেগের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে খেজুরের মূল্য সাধারণের নাগালের মধ্যে নিয়ে আসার লক্ষ্যে আসন্ন রমজান মাস উপলক্ষে খেজুর আমদানিতে বিদ্যমান আমদানি শুল্ক ৪০ শতাংশ কমানো হয়েছে।

এনবিআর আরও জানায়, পবিত্র রমজান মাসে খেজুরের সরবরাহ ও বাজারমূল্য স্বাভাবিক রাখার উদ্দেশ্যে খেজুর আমদানিতে কাস্টমস ডিউটি ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করে গতকাল মঙ্গলবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। এই অব্যাহতি আগামী বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।

এ ছাড়া বিগত বাজেটে আমদানি পর্যায়ে অগ্রিম আয়কর-সংক্রান্ত বিধিমালা সংশোধন করে খেজুরসহ সব ফল আমদানির ওপর প্রযোজ্য অগ্রিম আয়কর ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। খেজুর ও অন্যান্য ফল আমদানিতে গত বছর অগ্রিম আয়করে যে ৫০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হয়েছে, তা এ বছরও বহাল আছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রত্যাশা, খেজুর আমদানিতে আমদানি শুল্ক এবং অগ্রিম আয়করে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ছাড় দেওয়ার কারণে আসন্ন রমজান মাসে খেজুরের সরবরাহ এবং বাজারমূল্য সাধারণ ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

আজকের রাশিফল: ফেসবুকে জ্ঞান ঝাড়বেন না— বন্ধুরা জানে আপনি কপি মাস্টার, স্ত্রীর কথা শুনুন

নতুন প্রধান বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাড়ল মেট্রোরেলের টিকিটে ভ্যাট অব্যাহতির মেয়াদ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ০৮
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

মেট্রোরেলের টিকিটের ওপর ভ্যাট অব্যাহতির সময়সীমা বেড়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) মেট্রোরেল সেবার ওপর ভ্যাট (মূল্য সংযোজন কর) অব্যাহতির মেয়াদ আগামী বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়িয়েছে। মঙ্গলবার এনবিআর এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে।

এনবিআর জানায়, মেট্রোরেল সেবার ওপর মূল্য সংযোজন করের বিদ্যমান অব্যাহতি চালু রাখার জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে জনস্বার্থে এই অব্যাহতির মেয়াদ ৩০ জুন ২০২৬ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে।

মেট্রোরেলের টিকিটের ওপর ভ্যাট অব্যাহতির মেয়াদ শেষ হবে ৩১ ডিসেম্বর।

ভ্যাট আইন অনুযায়ী, যেকোনো শীতাতপনিয়ন্ত্রিত রেলের টিকিটে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের বিধান আছে। পুরোপুরি শীতাতপনিয়ন্ত্রিত এবং গণপরিবহন হওয়ায় মেট্রোরেলের ওপরও এই ভ্যাট আরোপিত হয়। তবে মেট্রোরেল চালুর শুরু থেকেই এর মালিক কোম্পানি ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) অনুরোধে এই সেবার ওপর ভ্যাট আরোপ করা হয়নি।

এর আগে ১১ ডিসেম্বর উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে মেট্রোরেলের টিকিটের ওপর মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট অব্যাহতির সুবিধা অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

আজকের রাশিফল: ফেসবুকে জ্ঞান ঝাড়বেন না— বন্ধুরা জানে আপনি কপি মাস্টার, স্ত্রীর কথা শুনুন

নতুন প্রধান বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ইবিএলের ‘এক্সিলেন্স ইন বিজনেস অ্যাওয়ার্ড’ পেল ফার্স্টট্রিপ

বিজ্ঞপ্তি
ইবিএলের ‘এক্সিলেন্স ইন বিজনেস অ্যাওয়ার্ড’ পেল ফার্স্টট্রিপ

দেশের অন্যতম সেরা বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের (ইবিএল) কাছ থেকে এক্সিলেন্স ইন বিজনেস অ্যাওয়ার্ডস জিতল ফার্স্টট্রিপ। ইস্টার্ন ব্যাংকের গত এক বছরে প্রবৃদ্ধি ও ডিজিটাল রূপান্তর-যাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ‘এক্সিলেন্স ইন অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি’ পুরস্কার অর্জন করে ফার্স্টট্রিপ।

এক্সিলেন্স ইন বিজনেস ইমার্জিং ক্যাটাগরিতে অনলাইন ট্রাভেল প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ফার্স্টট্রিপের অগ্রগতি ও উদ্ভাবনের স্বীকৃতি হিসেবেই এই সম্মান দেওয়া হয়েছে। রাজধানীর ইউনাইটেড কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত এক জমকালো অনুষ্ঠানে তাদের শীর্ষ পার্টনার ও মার্চেন্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে সম্মাননা জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় অনলাইন ট্রাভেল প্ল্যাটফর্ম ফার্স্টট্রিপ সব সময় চায় গ্রাহকদের ভ্রমণ হোক সাশ্রয়ী, সহজ ও আনন্দদায়ক। ফার্স্টট্রিপ ইতিমধ্যে নিজেদের একটা রিলায়েবল মডার্ন আর ফিউচার রেডি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে।

ফার্স্টট্রিপের হেড অব অপারেশন (বি-টু-সি) মীর তাজমুল হোসেনের হাতে ইবিএল আয়োজিত ‘স্কাইস্ফিয়ার: ডিজিটাল এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ অনুষ্ঠানে পুরস্কার তুলে দেন ইবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আলী রেজা ইফতেখার।

ফার্স্টট্রিপের জন্য এই স্বীকৃতি একটি বড় মাইলস্টোন। ইনোভেশন এবং সঠিক পার্টনারশিপের মাধ্যমে ফার্স্টট্রিপ বাংলাদেশের ট্রাভেল খাতে নিজেদের অবস্থান শক্ত করেছে। এই পুরস্কারের পেছনে ইস্টার্ন ব্যাংক পিএলসির সঙ্গে ফার্স্টট্রিপের শক্তিশালী পার্টনারশিপের বড় ভূমিকা রয়েছে। দুই প্রতিষ্ঠানের প্রচেষ্টায় ফার্স্টট্রিপ গ্রাহকদের জন্য পেমেন্ট সলিউশনকে করে তুলেছে স্মার্ট ও সহজ।

ফার্স্টট্রিপের প্রতিনিধিরা এই অর্জনে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, এই সাফল্য পুরো টিম এবং পার্টনারদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফল। বিশেষ করে ইবিএলের সহযোগিতা আমাদের ডিজিটাল যাত্রাকে আরও মসৃণ করেছে। ইনোভেশন ও গ্রাহকের আস্থাকে পুঁজি করে ফার্স্টট্রিপ বাংলাদেশের ট্রাভেল ইন্ডাস্ট্রিতে আরও বড় লক্ষ্য অর্জন করতে চায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

আজকের রাশিফল: ফেসবুকে জ্ঞান ঝাড়বেন না— বন্ধুরা জানে আপনি কপি মাস্টার, স্ত্রীর কথা শুনুন

নতুন প্রধান বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত