আসাদুজ্জামান নূর, ঢাকা

মসলাজাতীয় একটি প্রাচীনতম ফসল আদা; যা বাণিজ্যিকভাবে প্রথম মসলাজাতীয় পণ্য হিসেবে এশিয়া থেকে ইউরোপে রপ্তানি হয়েছিল। প্রাচীন গ্রিস এবং রোমানরা এটি ব্যবহার করত। মুখরোচক রান্নায় আদার জুড়ি মেলা ভার। তাই তো প্রায় চার হাজার বছর আগে থেকে রান্নায় আদার ব্যবহার হয়ে আসছে। এর ভেষজ গুণও উপেক্ষার নয়। চিকিৎসার অন্যতম উপকরণ হিসেবে চীনে আদার প্রচলন ঘটে দুই হাজার বছর আগে।
এখন সময় বদলেছে। বিজ্ঞানের প্রসার ঘটেছে। আগের অনেক কিছু হারিয়ে গেলেও টিকে আছে আদার প্রচলন। বরং আধুনিকতার এই সময়ে আদার ব্যবহার, ক্ষেত্র এবং ভোক্তা আগের চেয়ে বহুগুণ বেড়েছে। এ কারণে বিশ্বজুড়ে রান্নার উপকরণের বাইরেও আদার ব্যবহার রূপান্তর হচ্ছে। আচার, পানীয় তৈরিসহ খাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্পে এর হরেক ব্যবহারের পাশাপাশি ওষুধ এবং সুগন্ধিশিল্পেও অপরিহার্য হয়ে উঠেছে আদা।
দেশীয় বাস্তবতা
বৈশ্বিক বাস্তবতার ছাপ দেশেও পরিলক্ষিত হচ্ছে। তাই আদার ব্যবহার এবং ভোগ—উভয়ই বেড়েছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) মতে, বিশ্বের আদা উৎপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। অন্যদিকে কৃষি অধিদপ্তরের তথ্যমতে, আদার জেনেরিক নাম জিঙ্গিবার, যা মসলার সংস্কৃত নাম সিঙ্গাবেরা এবং গ্রিক জিঙ্গিবেরিস থেকে উদ্ভূত। দেশে এই মসলাজাতীয় পণ্যের চাহিদা বছরে ৪ লাখ ৮০ হাজার টন, কিন্তু উৎপাদিত হয় তার অর্ধেক। আবার উৎপাদন পর্যায়ে মাটিবাহিত রোগ এবং উৎপাদন-পরবর্তী সংরক্ষণের অভাবে ১৫ থেকে ১৮ শতাংশই নষ্ট হয়ে যায়। সব মিলিয়ে প্রতিবছর চাহিদার ঘাটতি পড়ে ৬০ শতাংশের মতো; যা বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানির মাধ্যমে পূরণ করতে হয়; যার ৬০ শতাংশই আসে চীন থেকে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) উদ্ভিদ সংগনিরোধ উইংয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত চার অর্থবছরের হিসাবে চাহিদা পূরণে প্রতিবছর গড়ে ১ লাখ ৩৮ হাজার টন আদা আমদানি করতে হয়েছে। এর মধ্যে ২০২০-২১ অর্থবছরে ১ লাখ ৫৫ হাজার টন, ২০২১-২২ অর্থবছরে ১ লাখ ৬৬ হাজার টন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১ লাখ ৪১ হাজার টন এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৯১ হাজার টন আদা আমদানি হয়েছে। গত রোববার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি আদা বিক্রি হয়েছে ২৬০ থেকে ৩০০ টাকায়। সারা বছর এর প্রতি কেজির গড় মূল্য ২০০ টাকা বিবেচনায় নেওয়া হলে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন এবং আমদানি মিলিয়ে দেশে চাহিদার ৪ লাখ ৮০ হাজার টন আদার বাজারমূল্য ৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।
বাধা যেখানে
দেশে আদার ঘাটতির অন্যতম কারণ হচ্ছে উৎপাদন কম। অভাব রয়েছে আদা চাষের উপযোগী জমিরও। এটি দীর্ঘমেয়াদি ফসল। প্রায় ১০ মাস সময় লাগে। এত সময় ধরে আদা চাষে অনাগ্রহী কৃষক। তাঁরা একই সময় ওই জমিতে ৩-৪টি অন্য ফসল ফলাতে পারেন, যা লাভজনক। অন্যদিকে তদুপরি দেশীয় প্রেক্ষাপটে জমিতে আদার কন্দপচা রোগের ব্যাপক প্রাদুর্ভাব। এর কারণে কোনো কোনো বছর আদার ফলন ৫০-৮০ ভাগ পর্যন্ত কমে যায়। তখন স্থানীয় বাজারে সরবরাহে বড় ঘাটতি তৈরি হয় এবং দাম চলে যায় সাধারণের নাগালের বাইরে।
আছে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার সুযোগ
এসব সমস্যা মোকাবিলা ও ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মসলা গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা উদ্ভাবন করেছেন বারি-১, বারি-২, ও বারি-৩ নামে তিনটি উচ্চফলনশীল আদার জাত; যার প্রতি হেক্টরে ফলন ৩০-৩৯ টন। গবেষকেরা বলছেন, বস্তায় আদা চাষের সুবিধা হলো, আবাদি জমির প্রয়োজন হবে না। যেকোনো পতিত জায়গায় চাষ করা যাবে। যেমন বাড়ির আনাচে-কানাচে, রাস্তার পাশে, অফিসে, যেখানে নতুন বাগান হচ্ছে, যেখানে ছায়া কম, সেসব জায়গায় চাষ করা যাবে। জুন-জলাই মাস আদা চাষের উপযুক্ত সময়। ফলনও পাওয়া যাবে চাষের ৭ থেকে ৮ মাসের মধ্যে। প্রাকৃতিক যেকোনো বিপর্যয়ে বস্তা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরিয়ে নেওয়া যায়। এ পদ্ধতিতে একই জায়গায় বারবার মাটির মিশ্রণ তৈরি করে আদাবীজ রোপণ করা যায়। শুধু বস্তা কিনতে হবে। চার-পাঁচ টাকা দাম। বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক ও জৈব সার, ছাই ব্যবহার করে মিশ্রণ করা যেতে পারে।
বস্তায় আদা চাষের সুবিধা সম্পর্কে বগুড়ায় অবস্থিত শিবগঞ্জের মসলা গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আশিকুল ইসলাম নিরু বলেন, ‘মাটিতে আদা চাষে বিদ্যমান অসুবিধার সমাধান মিলেছে বস্তায় আদা চাষে। এই অভিনব পদ্ধতি দেখাচ্ছে ঘাটতি পূরণের সম্ভাবনা। দিচ্ছে স্বনির্ভরতা অর্জনের হাতছানি। দেশে সাড়ে তিন কোটির মতো বসতবাড়ি রয়েছে। এসব বাড়িতে ১০ বস্তা করে আদা চাষ করা হলেও সাড়ে ৩৫ কোটি বস্তা হবে। প্রতি বস্তায় ১ কেজি আদা উৎপাদিত হলেও আমাদের চাহিদা মিটে যাবে; যা প্রতিবছর সাশ্রয় করতে পারে কয়েক হাজার কোটি টাকার আমদানি ব্যয়।’
বাড়ছে জনপ্রিয়তা
বেশ কয়েক বছর ধরে দেশে অনানুষ্ঠানিক ও স্বল্প পরিসরে বস্তায় আদার চাষ শুরু হলেও বছর দুয়েক হলো এর জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এরই মধ্যে বস্তায় আদা চাষে উদ্বুদ্ধ করতে নেওয়া হয়েছে সরকারি প্রকল্প। দেওয়া হচ্ছে প্রশিক্ষণ, বস্তা, বীজ, সার ইত্যাদি। এ ছাড়া কম খরচে অধিক মুনাফা হওয়ায় ব্যক্তি উদ্যোগেও এখন বস্তায় আদা চাষে ঝুঁকছেন অনেকে। ফেসবুক, ইউটিউবসহ বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমে এ পদ্ধতিতে আদার চাষ শিখছেন অনেক তরুণ। যার মাধ্যমে এর চাষাবাদ পদ্ধতি ছড়িয়ে গেছে দেশের সর্বত্র। বাড়ছে আগ্রহ। উৎপাদনে কমছে জমিনির্ভরতা।
এ প্রসঙ্গে মসলার উন্নত জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্পের পরিচালক রাসেল আহমেদ আজকের পত্রিকাকে জানান, প্রকল্পের অধীনে এ নিয়ে দুই বছর বস্তায় আদা চাষ হয়েছে। এ বছর প্রকল্প ও ব্যক্তি উদ্যোগ মিলিয়ে প্রায় ১ কোটি ৮ লাখ বস্তায় আদা চাষ হয়েছে; যা থেকে প্রায় ১০ হাজার টন আদা উৎপাদিত হবে। এটি কেবল সরকারি হিসাব। এর বাইরে ব্যক্তিগত উদ্যোগেও অনেকে বস্তায় আদা চাষ করছেন। আগে এ-সম্পর্কিত কোনো জরিপ করা হয়নি। তবে পরিসংখ্যান না থাকলেও সন্দেহাতীতভাবে বলা যায়, উৎপাদন ছিল অনেক কম; যা এখন সারা দেশে ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে।
এ পদ্ধতির চর্চা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে জমির ওপর চাপ কমিয়ে স্থানীয় আদার চাহিদা পূরণ সম্ভব হবে বলেও জানান তিনি।
খরচ কম, মুনাফা বেশি
মসলার গবেষক ড. আশিকুল ইসলাম নিরু বলেন, বস্তায় আদা চাষে উৎপাদন খরচ অনেক কম। এক বস্তায় ৫০-৬০ গ্রাম বীজ হলেই হয়, আর চাষের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এক বস্তায় খরচ ৫০ থেকে ৬০ টাকা। কিন্তু আদার ফলন যদি প্রতি বস্তায় এক কেজি হলেও কৃষক ন্যূনতম ২০০ টাকায় তা বিক্রি করতে পারবেন। অর্থাৎ মুনাফা ১৫০ টাকা। আর ১৫০ টাকায় বিক্রি করলেও ১০০ টাকা লাভ হবে।
সফলতার গল্প
ছোটবেলা থেকে শখের বশে পশুপাখি লালনপালনসহ কৃষিকাজে বেশ মনোযোগী সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের গন্ধর্বপুর গ্রামের তরুণ ফখরুল ইসলাম। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘ইউটিউবে ভিডিও দেখে আগ্রহী হই। পরে উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের সহযোগিতায় প্রথমবার বাড়ির আঙিনায় ২৬০টি বস্তায় আদা চাষ করেছি। প্রতি বস্তায় ৩০ টাকা হিসাবে প্রায় ৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বর্তমানে আদাগাছের যে ফলন দেখা যাচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে, প্রতি বস্তায় দেড় কেজি আদা পাওয়া যাবে। উৎপাদিত হবে প্রায় ৪০০ কেজি। স্থানীয় বাজারে বর্তমানে আদার দাম কেজিতে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। আশা করছি, এতে প্রায় ৭০ হাজার টাকার বেশি লাভ হবে।’
৪৫০ বস্তায় ১৫ কেজি আদা রোপণ করেছেন রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের মাড়িয়া গ্রামের উজ্জ্বল শেখ। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, এখন ২ ফুটের বেশি লম্বা হয়েছে গাছ। প্রতি বস্তায় ১ কেজি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে ১২টি ব্লকে ২৫ জন কৃষক প্রায় দেড় হাজার বস্তায় আদা চাষ করেছেন। প্রতি বস্তায় দুই কেজির বেশি আদার ফলন হতে পারে। এতে প্রায় তিন হাজার কেজি আদা উৎপাদিত হবে।
ফুলজোড় নদীর নুরনগর তালপট্টি চরের কৃষক লিটন আলী শেখ আজকের পত্রিকাকে বলেন, একদিকে জমিতে ভিন্ন ফসল এবং খালি পড়ে থাকা জায়গায় বস্তায় আদা চাষ করায় বাড়তি আয়ের সুযোগ তৈরি হয়েছে।
আদার পুষ্টিগুণ এবং ঔষধি ব্যবহার
আদায় রয়েছে পটাশিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, সোডিয়াম, জিংক, ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন এ, বি৬, ই ও সি এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এজেন্ট। এ ছাড়া প্রতি ১০০ গ্রাম আদায় রয়েছে ক্যালরি ৮০, প্রোটিন ১.৮২ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ১৭.৮ গ্রাম (ডায়েটারি ফাইবার ২ গ্রাম), টোটাল ফ্যাট ০.৭৫ গ্রাম, মিনারেল ৭৮.৯ গ্রাম। এসব কারণে সব বয়সী মানুষ আদা খেতে পারেন, বিশেষ করে শিশুদের জন্য আদা-মধু-পানি সুস্থ দেহ ও সতেজ মনের জন্য খুবই কার্যকর। অন্যদিকে ভেষজ ওষুধ হিসেবে দেশে আদার বহুল ব্যবহার রয়েছে। মুখের রুচি বাড়াতে ও বদহজম রোধে আদা শুকিয়ে চিবিয়ে খাওয়া হয়। এ ছাড়া সর্দি, কাশি, আমাশয়, জন্ডিস, পেট ফাঁপায় আদা চিবিয়ে বা রস করে খাওয়া হয়। হৃদ্যন্ত্রের কার্যকারিতা বজায় রাখার পাশাপাশি অনেক গোপন সমস্যা দূর করতেও সহায়ক আদা।
[প্রতিবেদনে সহযোগিতা করেছেন জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি ও কামারখন্দ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি।]

মসলাজাতীয় একটি প্রাচীনতম ফসল আদা; যা বাণিজ্যিকভাবে প্রথম মসলাজাতীয় পণ্য হিসেবে এশিয়া থেকে ইউরোপে রপ্তানি হয়েছিল। প্রাচীন গ্রিস এবং রোমানরা এটি ব্যবহার করত। মুখরোচক রান্নায় আদার জুড়ি মেলা ভার। তাই তো প্রায় চার হাজার বছর আগে থেকে রান্নায় আদার ব্যবহার হয়ে আসছে। এর ভেষজ গুণও উপেক্ষার নয়। চিকিৎসার অন্যতম উপকরণ হিসেবে চীনে আদার প্রচলন ঘটে দুই হাজার বছর আগে।
এখন সময় বদলেছে। বিজ্ঞানের প্রসার ঘটেছে। আগের অনেক কিছু হারিয়ে গেলেও টিকে আছে আদার প্রচলন। বরং আধুনিকতার এই সময়ে আদার ব্যবহার, ক্ষেত্র এবং ভোক্তা আগের চেয়ে বহুগুণ বেড়েছে। এ কারণে বিশ্বজুড়ে রান্নার উপকরণের বাইরেও আদার ব্যবহার রূপান্তর হচ্ছে। আচার, পানীয় তৈরিসহ খাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্পে এর হরেক ব্যবহারের পাশাপাশি ওষুধ এবং সুগন্ধিশিল্পেও অপরিহার্য হয়ে উঠেছে আদা।
দেশীয় বাস্তবতা
বৈশ্বিক বাস্তবতার ছাপ দেশেও পরিলক্ষিত হচ্ছে। তাই আদার ব্যবহার এবং ভোগ—উভয়ই বেড়েছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) মতে, বিশ্বের আদা উৎপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। অন্যদিকে কৃষি অধিদপ্তরের তথ্যমতে, আদার জেনেরিক নাম জিঙ্গিবার, যা মসলার সংস্কৃত নাম সিঙ্গাবেরা এবং গ্রিক জিঙ্গিবেরিস থেকে উদ্ভূত। দেশে এই মসলাজাতীয় পণ্যের চাহিদা বছরে ৪ লাখ ৮০ হাজার টন, কিন্তু উৎপাদিত হয় তার অর্ধেক। আবার উৎপাদন পর্যায়ে মাটিবাহিত রোগ এবং উৎপাদন-পরবর্তী সংরক্ষণের অভাবে ১৫ থেকে ১৮ শতাংশই নষ্ট হয়ে যায়। সব মিলিয়ে প্রতিবছর চাহিদার ঘাটতি পড়ে ৬০ শতাংশের মতো; যা বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানির মাধ্যমে পূরণ করতে হয়; যার ৬০ শতাংশই আসে চীন থেকে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) উদ্ভিদ সংগনিরোধ উইংয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত চার অর্থবছরের হিসাবে চাহিদা পূরণে প্রতিবছর গড়ে ১ লাখ ৩৮ হাজার টন আদা আমদানি করতে হয়েছে। এর মধ্যে ২০২০-২১ অর্থবছরে ১ লাখ ৫৫ হাজার টন, ২০২১-২২ অর্থবছরে ১ লাখ ৬৬ হাজার টন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১ লাখ ৪১ হাজার টন এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৯১ হাজার টন আদা আমদানি হয়েছে। গত রোববার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি আদা বিক্রি হয়েছে ২৬০ থেকে ৩০০ টাকায়। সারা বছর এর প্রতি কেজির গড় মূল্য ২০০ টাকা বিবেচনায় নেওয়া হলে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন এবং আমদানি মিলিয়ে দেশে চাহিদার ৪ লাখ ৮০ হাজার টন আদার বাজারমূল্য ৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।
বাধা যেখানে
দেশে আদার ঘাটতির অন্যতম কারণ হচ্ছে উৎপাদন কম। অভাব রয়েছে আদা চাষের উপযোগী জমিরও। এটি দীর্ঘমেয়াদি ফসল। প্রায় ১০ মাস সময় লাগে। এত সময় ধরে আদা চাষে অনাগ্রহী কৃষক। তাঁরা একই সময় ওই জমিতে ৩-৪টি অন্য ফসল ফলাতে পারেন, যা লাভজনক। অন্যদিকে তদুপরি দেশীয় প্রেক্ষাপটে জমিতে আদার কন্দপচা রোগের ব্যাপক প্রাদুর্ভাব। এর কারণে কোনো কোনো বছর আদার ফলন ৫০-৮০ ভাগ পর্যন্ত কমে যায়। তখন স্থানীয় বাজারে সরবরাহে বড় ঘাটতি তৈরি হয় এবং দাম চলে যায় সাধারণের নাগালের বাইরে।
আছে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার সুযোগ
এসব সমস্যা মোকাবিলা ও ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মসলা গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা উদ্ভাবন করেছেন বারি-১, বারি-২, ও বারি-৩ নামে তিনটি উচ্চফলনশীল আদার জাত; যার প্রতি হেক্টরে ফলন ৩০-৩৯ টন। গবেষকেরা বলছেন, বস্তায় আদা চাষের সুবিধা হলো, আবাদি জমির প্রয়োজন হবে না। যেকোনো পতিত জায়গায় চাষ করা যাবে। যেমন বাড়ির আনাচে-কানাচে, রাস্তার পাশে, অফিসে, যেখানে নতুন বাগান হচ্ছে, যেখানে ছায়া কম, সেসব জায়গায় চাষ করা যাবে। জুন-জলাই মাস আদা চাষের উপযুক্ত সময়। ফলনও পাওয়া যাবে চাষের ৭ থেকে ৮ মাসের মধ্যে। প্রাকৃতিক যেকোনো বিপর্যয়ে বস্তা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরিয়ে নেওয়া যায়। এ পদ্ধতিতে একই জায়গায় বারবার মাটির মিশ্রণ তৈরি করে আদাবীজ রোপণ করা যায়। শুধু বস্তা কিনতে হবে। চার-পাঁচ টাকা দাম। বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক ও জৈব সার, ছাই ব্যবহার করে মিশ্রণ করা যেতে পারে।
বস্তায় আদা চাষের সুবিধা সম্পর্কে বগুড়ায় অবস্থিত শিবগঞ্জের মসলা গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আশিকুল ইসলাম নিরু বলেন, ‘মাটিতে আদা চাষে বিদ্যমান অসুবিধার সমাধান মিলেছে বস্তায় আদা চাষে। এই অভিনব পদ্ধতি দেখাচ্ছে ঘাটতি পূরণের সম্ভাবনা। দিচ্ছে স্বনির্ভরতা অর্জনের হাতছানি। দেশে সাড়ে তিন কোটির মতো বসতবাড়ি রয়েছে। এসব বাড়িতে ১০ বস্তা করে আদা চাষ করা হলেও সাড়ে ৩৫ কোটি বস্তা হবে। প্রতি বস্তায় ১ কেজি আদা উৎপাদিত হলেও আমাদের চাহিদা মিটে যাবে; যা প্রতিবছর সাশ্রয় করতে পারে কয়েক হাজার কোটি টাকার আমদানি ব্যয়।’
বাড়ছে জনপ্রিয়তা
বেশ কয়েক বছর ধরে দেশে অনানুষ্ঠানিক ও স্বল্প পরিসরে বস্তায় আদার চাষ শুরু হলেও বছর দুয়েক হলো এর জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এরই মধ্যে বস্তায় আদা চাষে উদ্বুদ্ধ করতে নেওয়া হয়েছে সরকারি প্রকল্প। দেওয়া হচ্ছে প্রশিক্ষণ, বস্তা, বীজ, সার ইত্যাদি। এ ছাড়া কম খরচে অধিক মুনাফা হওয়ায় ব্যক্তি উদ্যোগেও এখন বস্তায় আদা চাষে ঝুঁকছেন অনেকে। ফেসবুক, ইউটিউবসহ বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমে এ পদ্ধতিতে আদার চাষ শিখছেন অনেক তরুণ। যার মাধ্যমে এর চাষাবাদ পদ্ধতি ছড়িয়ে গেছে দেশের সর্বত্র। বাড়ছে আগ্রহ। উৎপাদনে কমছে জমিনির্ভরতা।
এ প্রসঙ্গে মসলার উন্নত জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্পের পরিচালক রাসেল আহমেদ আজকের পত্রিকাকে জানান, প্রকল্পের অধীনে এ নিয়ে দুই বছর বস্তায় আদা চাষ হয়েছে। এ বছর প্রকল্প ও ব্যক্তি উদ্যোগ মিলিয়ে প্রায় ১ কোটি ৮ লাখ বস্তায় আদা চাষ হয়েছে; যা থেকে প্রায় ১০ হাজার টন আদা উৎপাদিত হবে। এটি কেবল সরকারি হিসাব। এর বাইরে ব্যক্তিগত উদ্যোগেও অনেকে বস্তায় আদা চাষ করছেন। আগে এ-সম্পর্কিত কোনো জরিপ করা হয়নি। তবে পরিসংখ্যান না থাকলেও সন্দেহাতীতভাবে বলা যায়, উৎপাদন ছিল অনেক কম; যা এখন সারা দেশে ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে।
এ পদ্ধতির চর্চা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে জমির ওপর চাপ কমিয়ে স্থানীয় আদার চাহিদা পূরণ সম্ভব হবে বলেও জানান তিনি।
খরচ কম, মুনাফা বেশি
মসলার গবেষক ড. আশিকুল ইসলাম নিরু বলেন, বস্তায় আদা চাষে উৎপাদন খরচ অনেক কম। এক বস্তায় ৫০-৬০ গ্রাম বীজ হলেই হয়, আর চাষের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এক বস্তায় খরচ ৫০ থেকে ৬০ টাকা। কিন্তু আদার ফলন যদি প্রতি বস্তায় এক কেজি হলেও কৃষক ন্যূনতম ২০০ টাকায় তা বিক্রি করতে পারবেন। অর্থাৎ মুনাফা ১৫০ টাকা। আর ১৫০ টাকায় বিক্রি করলেও ১০০ টাকা লাভ হবে।
সফলতার গল্প
ছোটবেলা থেকে শখের বশে পশুপাখি লালনপালনসহ কৃষিকাজে বেশ মনোযোগী সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের গন্ধর্বপুর গ্রামের তরুণ ফখরুল ইসলাম। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘ইউটিউবে ভিডিও দেখে আগ্রহী হই। পরে উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের সহযোগিতায় প্রথমবার বাড়ির আঙিনায় ২৬০টি বস্তায় আদা চাষ করেছি। প্রতি বস্তায় ৩০ টাকা হিসাবে প্রায় ৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বর্তমানে আদাগাছের যে ফলন দেখা যাচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে, প্রতি বস্তায় দেড় কেজি আদা পাওয়া যাবে। উৎপাদিত হবে প্রায় ৪০০ কেজি। স্থানীয় বাজারে বর্তমানে আদার দাম কেজিতে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। আশা করছি, এতে প্রায় ৭০ হাজার টাকার বেশি লাভ হবে।’
৪৫০ বস্তায় ১৫ কেজি আদা রোপণ করেছেন রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের মাড়িয়া গ্রামের উজ্জ্বল শেখ। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, এখন ২ ফুটের বেশি লম্বা হয়েছে গাছ। প্রতি বস্তায় ১ কেজি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে ১২টি ব্লকে ২৫ জন কৃষক প্রায় দেড় হাজার বস্তায় আদা চাষ করেছেন। প্রতি বস্তায় দুই কেজির বেশি আদার ফলন হতে পারে। এতে প্রায় তিন হাজার কেজি আদা উৎপাদিত হবে।
ফুলজোড় নদীর নুরনগর তালপট্টি চরের কৃষক লিটন আলী শেখ আজকের পত্রিকাকে বলেন, একদিকে জমিতে ভিন্ন ফসল এবং খালি পড়ে থাকা জায়গায় বস্তায় আদা চাষ করায় বাড়তি আয়ের সুযোগ তৈরি হয়েছে।
আদার পুষ্টিগুণ এবং ঔষধি ব্যবহার
আদায় রয়েছে পটাশিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, সোডিয়াম, জিংক, ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন এ, বি৬, ই ও সি এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এজেন্ট। এ ছাড়া প্রতি ১০০ গ্রাম আদায় রয়েছে ক্যালরি ৮০, প্রোটিন ১.৮২ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ১৭.৮ গ্রাম (ডায়েটারি ফাইবার ২ গ্রাম), টোটাল ফ্যাট ০.৭৫ গ্রাম, মিনারেল ৭৮.৯ গ্রাম। এসব কারণে সব বয়সী মানুষ আদা খেতে পারেন, বিশেষ করে শিশুদের জন্য আদা-মধু-পানি সুস্থ দেহ ও সতেজ মনের জন্য খুবই কার্যকর। অন্যদিকে ভেষজ ওষুধ হিসেবে দেশে আদার বহুল ব্যবহার রয়েছে। মুখের রুচি বাড়াতে ও বদহজম রোধে আদা শুকিয়ে চিবিয়ে খাওয়া হয়। এ ছাড়া সর্দি, কাশি, আমাশয়, জন্ডিস, পেট ফাঁপায় আদা চিবিয়ে বা রস করে খাওয়া হয়। হৃদ্যন্ত্রের কার্যকারিতা বজায় রাখার পাশাপাশি অনেক গোপন সমস্যা দূর করতেও সহায়ক আদা।
[প্রতিবেদনে সহযোগিতা করেছেন জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি ও কামারখন্দ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি।]
আসাদুজ্জামান নূর, ঢাকা

মসলাজাতীয় একটি প্রাচীনতম ফসল আদা; যা বাণিজ্যিকভাবে প্রথম মসলাজাতীয় পণ্য হিসেবে এশিয়া থেকে ইউরোপে রপ্তানি হয়েছিল। প্রাচীন গ্রিস এবং রোমানরা এটি ব্যবহার করত। মুখরোচক রান্নায় আদার জুড়ি মেলা ভার। তাই তো প্রায় চার হাজার বছর আগে থেকে রান্নায় আদার ব্যবহার হয়ে আসছে। এর ভেষজ গুণও উপেক্ষার নয়। চিকিৎসার অন্যতম উপকরণ হিসেবে চীনে আদার প্রচলন ঘটে দুই হাজার বছর আগে।
এখন সময় বদলেছে। বিজ্ঞানের প্রসার ঘটেছে। আগের অনেক কিছু হারিয়ে গেলেও টিকে আছে আদার প্রচলন। বরং আধুনিকতার এই সময়ে আদার ব্যবহার, ক্ষেত্র এবং ভোক্তা আগের চেয়ে বহুগুণ বেড়েছে। এ কারণে বিশ্বজুড়ে রান্নার উপকরণের বাইরেও আদার ব্যবহার রূপান্তর হচ্ছে। আচার, পানীয় তৈরিসহ খাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্পে এর হরেক ব্যবহারের পাশাপাশি ওষুধ এবং সুগন্ধিশিল্পেও অপরিহার্য হয়ে উঠেছে আদা।
দেশীয় বাস্তবতা
বৈশ্বিক বাস্তবতার ছাপ দেশেও পরিলক্ষিত হচ্ছে। তাই আদার ব্যবহার এবং ভোগ—উভয়ই বেড়েছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) মতে, বিশ্বের আদা উৎপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। অন্যদিকে কৃষি অধিদপ্তরের তথ্যমতে, আদার জেনেরিক নাম জিঙ্গিবার, যা মসলার সংস্কৃত নাম সিঙ্গাবেরা এবং গ্রিক জিঙ্গিবেরিস থেকে উদ্ভূত। দেশে এই মসলাজাতীয় পণ্যের চাহিদা বছরে ৪ লাখ ৮০ হাজার টন, কিন্তু উৎপাদিত হয় তার অর্ধেক। আবার উৎপাদন পর্যায়ে মাটিবাহিত রোগ এবং উৎপাদন-পরবর্তী সংরক্ষণের অভাবে ১৫ থেকে ১৮ শতাংশই নষ্ট হয়ে যায়। সব মিলিয়ে প্রতিবছর চাহিদার ঘাটতি পড়ে ৬০ শতাংশের মতো; যা বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানির মাধ্যমে পূরণ করতে হয়; যার ৬০ শতাংশই আসে চীন থেকে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) উদ্ভিদ সংগনিরোধ উইংয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত চার অর্থবছরের হিসাবে চাহিদা পূরণে প্রতিবছর গড়ে ১ লাখ ৩৮ হাজার টন আদা আমদানি করতে হয়েছে। এর মধ্যে ২০২০-২১ অর্থবছরে ১ লাখ ৫৫ হাজার টন, ২০২১-২২ অর্থবছরে ১ লাখ ৬৬ হাজার টন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১ লাখ ৪১ হাজার টন এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৯১ হাজার টন আদা আমদানি হয়েছে। গত রোববার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি আদা বিক্রি হয়েছে ২৬০ থেকে ৩০০ টাকায়। সারা বছর এর প্রতি কেজির গড় মূল্য ২০০ টাকা বিবেচনায় নেওয়া হলে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন এবং আমদানি মিলিয়ে দেশে চাহিদার ৪ লাখ ৮০ হাজার টন আদার বাজারমূল্য ৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।
বাধা যেখানে
দেশে আদার ঘাটতির অন্যতম কারণ হচ্ছে উৎপাদন কম। অভাব রয়েছে আদা চাষের উপযোগী জমিরও। এটি দীর্ঘমেয়াদি ফসল। প্রায় ১০ মাস সময় লাগে। এত সময় ধরে আদা চাষে অনাগ্রহী কৃষক। তাঁরা একই সময় ওই জমিতে ৩-৪টি অন্য ফসল ফলাতে পারেন, যা লাভজনক। অন্যদিকে তদুপরি দেশীয় প্রেক্ষাপটে জমিতে আদার কন্দপচা রোগের ব্যাপক প্রাদুর্ভাব। এর কারণে কোনো কোনো বছর আদার ফলন ৫০-৮০ ভাগ পর্যন্ত কমে যায়। তখন স্থানীয় বাজারে সরবরাহে বড় ঘাটতি তৈরি হয় এবং দাম চলে যায় সাধারণের নাগালের বাইরে।
আছে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার সুযোগ
এসব সমস্যা মোকাবিলা ও ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মসলা গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা উদ্ভাবন করেছেন বারি-১, বারি-২, ও বারি-৩ নামে তিনটি উচ্চফলনশীল আদার জাত; যার প্রতি হেক্টরে ফলন ৩০-৩৯ টন। গবেষকেরা বলছেন, বস্তায় আদা চাষের সুবিধা হলো, আবাদি জমির প্রয়োজন হবে না। যেকোনো পতিত জায়গায় চাষ করা যাবে। যেমন বাড়ির আনাচে-কানাচে, রাস্তার পাশে, অফিসে, যেখানে নতুন বাগান হচ্ছে, যেখানে ছায়া কম, সেসব জায়গায় চাষ করা যাবে। জুন-জলাই মাস আদা চাষের উপযুক্ত সময়। ফলনও পাওয়া যাবে চাষের ৭ থেকে ৮ মাসের মধ্যে। প্রাকৃতিক যেকোনো বিপর্যয়ে বস্তা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরিয়ে নেওয়া যায়। এ পদ্ধতিতে একই জায়গায় বারবার মাটির মিশ্রণ তৈরি করে আদাবীজ রোপণ করা যায়। শুধু বস্তা কিনতে হবে। চার-পাঁচ টাকা দাম। বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক ও জৈব সার, ছাই ব্যবহার করে মিশ্রণ করা যেতে পারে।
বস্তায় আদা চাষের সুবিধা সম্পর্কে বগুড়ায় অবস্থিত শিবগঞ্জের মসলা গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আশিকুল ইসলাম নিরু বলেন, ‘মাটিতে আদা চাষে বিদ্যমান অসুবিধার সমাধান মিলেছে বস্তায় আদা চাষে। এই অভিনব পদ্ধতি দেখাচ্ছে ঘাটতি পূরণের সম্ভাবনা। দিচ্ছে স্বনির্ভরতা অর্জনের হাতছানি। দেশে সাড়ে তিন কোটির মতো বসতবাড়ি রয়েছে। এসব বাড়িতে ১০ বস্তা করে আদা চাষ করা হলেও সাড়ে ৩৫ কোটি বস্তা হবে। প্রতি বস্তায় ১ কেজি আদা উৎপাদিত হলেও আমাদের চাহিদা মিটে যাবে; যা প্রতিবছর সাশ্রয় করতে পারে কয়েক হাজার কোটি টাকার আমদানি ব্যয়।’
বাড়ছে জনপ্রিয়তা
বেশ কয়েক বছর ধরে দেশে অনানুষ্ঠানিক ও স্বল্প পরিসরে বস্তায় আদার চাষ শুরু হলেও বছর দুয়েক হলো এর জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এরই মধ্যে বস্তায় আদা চাষে উদ্বুদ্ধ করতে নেওয়া হয়েছে সরকারি প্রকল্প। দেওয়া হচ্ছে প্রশিক্ষণ, বস্তা, বীজ, সার ইত্যাদি। এ ছাড়া কম খরচে অধিক মুনাফা হওয়ায় ব্যক্তি উদ্যোগেও এখন বস্তায় আদা চাষে ঝুঁকছেন অনেকে। ফেসবুক, ইউটিউবসহ বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমে এ পদ্ধতিতে আদার চাষ শিখছেন অনেক তরুণ। যার মাধ্যমে এর চাষাবাদ পদ্ধতি ছড়িয়ে গেছে দেশের সর্বত্র। বাড়ছে আগ্রহ। উৎপাদনে কমছে জমিনির্ভরতা।
এ প্রসঙ্গে মসলার উন্নত জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্পের পরিচালক রাসেল আহমেদ আজকের পত্রিকাকে জানান, প্রকল্পের অধীনে এ নিয়ে দুই বছর বস্তায় আদা চাষ হয়েছে। এ বছর প্রকল্প ও ব্যক্তি উদ্যোগ মিলিয়ে প্রায় ১ কোটি ৮ লাখ বস্তায় আদা চাষ হয়েছে; যা থেকে প্রায় ১০ হাজার টন আদা উৎপাদিত হবে। এটি কেবল সরকারি হিসাব। এর বাইরে ব্যক্তিগত উদ্যোগেও অনেকে বস্তায় আদা চাষ করছেন। আগে এ-সম্পর্কিত কোনো জরিপ করা হয়নি। তবে পরিসংখ্যান না থাকলেও সন্দেহাতীতভাবে বলা যায়, উৎপাদন ছিল অনেক কম; যা এখন সারা দেশে ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে।
এ পদ্ধতির চর্চা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে জমির ওপর চাপ কমিয়ে স্থানীয় আদার চাহিদা পূরণ সম্ভব হবে বলেও জানান তিনি।
খরচ কম, মুনাফা বেশি
মসলার গবেষক ড. আশিকুল ইসলাম নিরু বলেন, বস্তায় আদা চাষে উৎপাদন খরচ অনেক কম। এক বস্তায় ৫০-৬০ গ্রাম বীজ হলেই হয়, আর চাষের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এক বস্তায় খরচ ৫০ থেকে ৬০ টাকা। কিন্তু আদার ফলন যদি প্রতি বস্তায় এক কেজি হলেও কৃষক ন্যূনতম ২০০ টাকায় তা বিক্রি করতে পারবেন। অর্থাৎ মুনাফা ১৫০ টাকা। আর ১৫০ টাকায় বিক্রি করলেও ১০০ টাকা লাভ হবে।
সফলতার গল্প
ছোটবেলা থেকে শখের বশে পশুপাখি লালনপালনসহ কৃষিকাজে বেশ মনোযোগী সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের গন্ধর্বপুর গ্রামের তরুণ ফখরুল ইসলাম। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘ইউটিউবে ভিডিও দেখে আগ্রহী হই। পরে উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের সহযোগিতায় প্রথমবার বাড়ির আঙিনায় ২৬০টি বস্তায় আদা চাষ করেছি। প্রতি বস্তায় ৩০ টাকা হিসাবে প্রায় ৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বর্তমানে আদাগাছের যে ফলন দেখা যাচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে, প্রতি বস্তায় দেড় কেজি আদা পাওয়া যাবে। উৎপাদিত হবে প্রায় ৪০০ কেজি। স্থানীয় বাজারে বর্তমানে আদার দাম কেজিতে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। আশা করছি, এতে প্রায় ৭০ হাজার টাকার বেশি লাভ হবে।’
৪৫০ বস্তায় ১৫ কেজি আদা রোপণ করেছেন রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের মাড়িয়া গ্রামের উজ্জ্বল শেখ। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, এখন ২ ফুটের বেশি লম্বা হয়েছে গাছ। প্রতি বস্তায় ১ কেজি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে ১২টি ব্লকে ২৫ জন কৃষক প্রায় দেড় হাজার বস্তায় আদা চাষ করেছেন। প্রতি বস্তায় দুই কেজির বেশি আদার ফলন হতে পারে। এতে প্রায় তিন হাজার কেজি আদা উৎপাদিত হবে।
ফুলজোড় নদীর নুরনগর তালপট্টি চরের কৃষক লিটন আলী শেখ আজকের পত্রিকাকে বলেন, একদিকে জমিতে ভিন্ন ফসল এবং খালি পড়ে থাকা জায়গায় বস্তায় আদা চাষ করায় বাড়তি আয়ের সুযোগ তৈরি হয়েছে।
আদার পুষ্টিগুণ এবং ঔষধি ব্যবহার
আদায় রয়েছে পটাশিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, সোডিয়াম, জিংক, ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন এ, বি৬, ই ও সি এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এজেন্ট। এ ছাড়া প্রতি ১০০ গ্রাম আদায় রয়েছে ক্যালরি ৮০, প্রোটিন ১.৮২ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ১৭.৮ গ্রাম (ডায়েটারি ফাইবার ২ গ্রাম), টোটাল ফ্যাট ০.৭৫ গ্রাম, মিনারেল ৭৮.৯ গ্রাম। এসব কারণে সব বয়সী মানুষ আদা খেতে পারেন, বিশেষ করে শিশুদের জন্য আদা-মধু-পানি সুস্থ দেহ ও সতেজ মনের জন্য খুবই কার্যকর। অন্যদিকে ভেষজ ওষুধ হিসেবে দেশে আদার বহুল ব্যবহার রয়েছে। মুখের রুচি বাড়াতে ও বদহজম রোধে আদা শুকিয়ে চিবিয়ে খাওয়া হয়। এ ছাড়া সর্দি, কাশি, আমাশয়, জন্ডিস, পেট ফাঁপায় আদা চিবিয়ে বা রস করে খাওয়া হয়। হৃদ্যন্ত্রের কার্যকারিতা বজায় রাখার পাশাপাশি অনেক গোপন সমস্যা দূর করতেও সহায়ক আদা।
[প্রতিবেদনে সহযোগিতা করেছেন জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি ও কামারখন্দ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি।]

মসলাজাতীয় একটি প্রাচীনতম ফসল আদা; যা বাণিজ্যিকভাবে প্রথম মসলাজাতীয় পণ্য হিসেবে এশিয়া থেকে ইউরোপে রপ্তানি হয়েছিল। প্রাচীন গ্রিস এবং রোমানরা এটি ব্যবহার করত। মুখরোচক রান্নায় আদার জুড়ি মেলা ভার। তাই তো প্রায় চার হাজার বছর আগে থেকে রান্নায় আদার ব্যবহার হয়ে আসছে। এর ভেষজ গুণও উপেক্ষার নয়। চিকিৎসার অন্যতম উপকরণ হিসেবে চীনে আদার প্রচলন ঘটে দুই হাজার বছর আগে।
এখন সময় বদলেছে। বিজ্ঞানের প্রসার ঘটেছে। আগের অনেক কিছু হারিয়ে গেলেও টিকে আছে আদার প্রচলন। বরং আধুনিকতার এই সময়ে আদার ব্যবহার, ক্ষেত্র এবং ভোক্তা আগের চেয়ে বহুগুণ বেড়েছে। এ কারণে বিশ্বজুড়ে রান্নার উপকরণের বাইরেও আদার ব্যবহার রূপান্তর হচ্ছে। আচার, পানীয় তৈরিসহ খাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্পে এর হরেক ব্যবহারের পাশাপাশি ওষুধ এবং সুগন্ধিশিল্পেও অপরিহার্য হয়ে উঠেছে আদা।
দেশীয় বাস্তবতা
বৈশ্বিক বাস্তবতার ছাপ দেশেও পরিলক্ষিত হচ্ছে। তাই আদার ব্যবহার এবং ভোগ—উভয়ই বেড়েছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) মতে, বিশ্বের আদা উৎপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। অন্যদিকে কৃষি অধিদপ্তরের তথ্যমতে, আদার জেনেরিক নাম জিঙ্গিবার, যা মসলার সংস্কৃত নাম সিঙ্গাবেরা এবং গ্রিক জিঙ্গিবেরিস থেকে উদ্ভূত। দেশে এই মসলাজাতীয় পণ্যের চাহিদা বছরে ৪ লাখ ৮০ হাজার টন, কিন্তু উৎপাদিত হয় তার অর্ধেক। আবার উৎপাদন পর্যায়ে মাটিবাহিত রোগ এবং উৎপাদন-পরবর্তী সংরক্ষণের অভাবে ১৫ থেকে ১৮ শতাংশই নষ্ট হয়ে যায়। সব মিলিয়ে প্রতিবছর চাহিদার ঘাটতি পড়ে ৬০ শতাংশের মতো; যা বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানির মাধ্যমে পূরণ করতে হয়; যার ৬০ শতাংশই আসে চীন থেকে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) উদ্ভিদ সংগনিরোধ উইংয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত চার অর্থবছরের হিসাবে চাহিদা পূরণে প্রতিবছর গড়ে ১ লাখ ৩৮ হাজার টন আদা আমদানি করতে হয়েছে। এর মধ্যে ২০২০-২১ অর্থবছরে ১ লাখ ৫৫ হাজার টন, ২০২১-২২ অর্থবছরে ১ লাখ ৬৬ হাজার টন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১ লাখ ৪১ হাজার টন এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৯১ হাজার টন আদা আমদানি হয়েছে। গত রোববার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি আদা বিক্রি হয়েছে ২৬০ থেকে ৩০০ টাকায়। সারা বছর এর প্রতি কেজির গড় মূল্য ২০০ টাকা বিবেচনায় নেওয়া হলে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন এবং আমদানি মিলিয়ে দেশে চাহিদার ৪ লাখ ৮০ হাজার টন আদার বাজারমূল্য ৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।
বাধা যেখানে
দেশে আদার ঘাটতির অন্যতম কারণ হচ্ছে উৎপাদন কম। অভাব রয়েছে আদা চাষের উপযোগী জমিরও। এটি দীর্ঘমেয়াদি ফসল। প্রায় ১০ মাস সময় লাগে। এত সময় ধরে আদা চাষে অনাগ্রহী কৃষক। তাঁরা একই সময় ওই জমিতে ৩-৪টি অন্য ফসল ফলাতে পারেন, যা লাভজনক। অন্যদিকে তদুপরি দেশীয় প্রেক্ষাপটে জমিতে আদার কন্দপচা রোগের ব্যাপক প্রাদুর্ভাব। এর কারণে কোনো কোনো বছর আদার ফলন ৫০-৮০ ভাগ পর্যন্ত কমে যায়। তখন স্থানীয় বাজারে সরবরাহে বড় ঘাটতি তৈরি হয় এবং দাম চলে যায় সাধারণের নাগালের বাইরে।
আছে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার সুযোগ
এসব সমস্যা মোকাবিলা ও ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মসলা গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা উদ্ভাবন করেছেন বারি-১, বারি-২, ও বারি-৩ নামে তিনটি উচ্চফলনশীল আদার জাত; যার প্রতি হেক্টরে ফলন ৩০-৩৯ টন। গবেষকেরা বলছেন, বস্তায় আদা চাষের সুবিধা হলো, আবাদি জমির প্রয়োজন হবে না। যেকোনো পতিত জায়গায় চাষ করা যাবে। যেমন বাড়ির আনাচে-কানাচে, রাস্তার পাশে, অফিসে, যেখানে নতুন বাগান হচ্ছে, যেখানে ছায়া কম, সেসব জায়গায় চাষ করা যাবে। জুন-জলাই মাস আদা চাষের উপযুক্ত সময়। ফলনও পাওয়া যাবে চাষের ৭ থেকে ৮ মাসের মধ্যে। প্রাকৃতিক যেকোনো বিপর্যয়ে বস্তা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরিয়ে নেওয়া যায়। এ পদ্ধতিতে একই জায়গায় বারবার মাটির মিশ্রণ তৈরি করে আদাবীজ রোপণ করা যায়। শুধু বস্তা কিনতে হবে। চার-পাঁচ টাকা দাম। বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক ও জৈব সার, ছাই ব্যবহার করে মিশ্রণ করা যেতে পারে।
বস্তায় আদা চাষের সুবিধা সম্পর্কে বগুড়ায় অবস্থিত শিবগঞ্জের মসলা গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আশিকুল ইসলাম নিরু বলেন, ‘মাটিতে আদা চাষে বিদ্যমান অসুবিধার সমাধান মিলেছে বস্তায় আদা চাষে। এই অভিনব পদ্ধতি দেখাচ্ছে ঘাটতি পূরণের সম্ভাবনা। দিচ্ছে স্বনির্ভরতা অর্জনের হাতছানি। দেশে সাড়ে তিন কোটির মতো বসতবাড়ি রয়েছে। এসব বাড়িতে ১০ বস্তা করে আদা চাষ করা হলেও সাড়ে ৩৫ কোটি বস্তা হবে। প্রতি বস্তায় ১ কেজি আদা উৎপাদিত হলেও আমাদের চাহিদা মিটে যাবে; যা প্রতিবছর সাশ্রয় করতে পারে কয়েক হাজার কোটি টাকার আমদানি ব্যয়।’
বাড়ছে জনপ্রিয়তা
বেশ কয়েক বছর ধরে দেশে অনানুষ্ঠানিক ও স্বল্প পরিসরে বস্তায় আদার চাষ শুরু হলেও বছর দুয়েক হলো এর জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এরই মধ্যে বস্তায় আদা চাষে উদ্বুদ্ধ করতে নেওয়া হয়েছে সরকারি প্রকল্প। দেওয়া হচ্ছে প্রশিক্ষণ, বস্তা, বীজ, সার ইত্যাদি। এ ছাড়া কম খরচে অধিক মুনাফা হওয়ায় ব্যক্তি উদ্যোগেও এখন বস্তায় আদা চাষে ঝুঁকছেন অনেকে। ফেসবুক, ইউটিউবসহ বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমে এ পদ্ধতিতে আদার চাষ শিখছেন অনেক তরুণ। যার মাধ্যমে এর চাষাবাদ পদ্ধতি ছড়িয়ে গেছে দেশের সর্বত্র। বাড়ছে আগ্রহ। উৎপাদনে কমছে জমিনির্ভরতা।
এ প্রসঙ্গে মসলার উন্নত জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্পের পরিচালক রাসেল আহমেদ আজকের পত্রিকাকে জানান, প্রকল্পের অধীনে এ নিয়ে দুই বছর বস্তায় আদা চাষ হয়েছে। এ বছর প্রকল্প ও ব্যক্তি উদ্যোগ মিলিয়ে প্রায় ১ কোটি ৮ লাখ বস্তায় আদা চাষ হয়েছে; যা থেকে প্রায় ১০ হাজার টন আদা উৎপাদিত হবে। এটি কেবল সরকারি হিসাব। এর বাইরে ব্যক্তিগত উদ্যোগেও অনেকে বস্তায় আদা চাষ করছেন। আগে এ-সম্পর্কিত কোনো জরিপ করা হয়নি। তবে পরিসংখ্যান না থাকলেও সন্দেহাতীতভাবে বলা যায়, উৎপাদন ছিল অনেক কম; যা এখন সারা দেশে ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে।
এ পদ্ধতির চর্চা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে জমির ওপর চাপ কমিয়ে স্থানীয় আদার চাহিদা পূরণ সম্ভব হবে বলেও জানান তিনি।
খরচ কম, মুনাফা বেশি
মসলার গবেষক ড. আশিকুল ইসলাম নিরু বলেন, বস্তায় আদা চাষে উৎপাদন খরচ অনেক কম। এক বস্তায় ৫০-৬০ গ্রাম বীজ হলেই হয়, আর চাষের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এক বস্তায় খরচ ৫০ থেকে ৬০ টাকা। কিন্তু আদার ফলন যদি প্রতি বস্তায় এক কেজি হলেও কৃষক ন্যূনতম ২০০ টাকায় তা বিক্রি করতে পারবেন। অর্থাৎ মুনাফা ১৫০ টাকা। আর ১৫০ টাকায় বিক্রি করলেও ১০০ টাকা লাভ হবে।
সফলতার গল্প
ছোটবেলা থেকে শখের বশে পশুপাখি লালনপালনসহ কৃষিকাজে বেশ মনোযোগী সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের গন্ধর্বপুর গ্রামের তরুণ ফখরুল ইসলাম। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘ইউটিউবে ভিডিও দেখে আগ্রহী হই। পরে উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের সহযোগিতায় প্রথমবার বাড়ির আঙিনায় ২৬০টি বস্তায় আদা চাষ করেছি। প্রতি বস্তায় ৩০ টাকা হিসাবে প্রায় ৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বর্তমানে আদাগাছের যে ফলন দেখা যাচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে, প্রতি বস্তায় দেড় কেজি আদা পাওয়া যাবে। উৎপাদিত হবে প্রায় ৪০০ কেজি। স্থানীয় বাজারে বর্তমানে আদার দাম কেজিতে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। আশা করছি, এতে প্রায় ৭০ হাজার টাকার বেশি লাভ হবে।’
৪৫০ বস্তায় ১৫ কেজি আদা রোপণ করেছেন রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের মাড়িয়া গ্রামের উজ্জ্বল শেখ। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, এখন ২ ফুটের বেশি লম্বা হয়েছে গাছ। প্রতি বস্তায় ১ কেজি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে ১২টি ব্লকে ২৫ জন কৃষক প্রায় দেড় হাজার বস্তায় আদা চাষ করেছেন। প্রতি বস্তায় দুই কেজির বেশি আদার ফলন হতে পারে। এতে প্রায় তিন হাজার কেজি আদা উৎপাদিত হবে।
ফুলজোড় নদীর নুরনগর তালপট্টি চরের কৃষক লিটন আলী শেখ আজকের পত্রিকাকে বলেন, একদিকে জমিতে ভিন্ন ফসল এবং খালি পড়ে থাকা জায়গায় বস্তায় আদা চাষ করায় বাড়তি আয়ের সুযোগ তৈরি হয়েছে।
আদার পুষ্টিগুণ এবং ঔষধি ব্যবহার
আদায় রয়েছে পটাশিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, সোডিয়াম, জিংক, ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন এ, বি৬, ই ও সি এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এজেন্ট। এ ছাড়া প্রতি ১০০ গ্রাম আদায় রয়েছে ক্যালরি ৮০, প্রোটিন ১.৮২ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ১৭.৮ গ্রাম (ডায়েটারি ফাইবার ২ গ্রাম), টোটাল ফ্যাট ০.৭৫ গ্রাম, মিনারেল ৭৮.৯ গ্রাম। এসব কারণে সব বয়সী মানুষ আদা খেতে পারেন, বিশেষ করে শিশুদের জন্য আদা-মধু-পানি সুস্থ দেহ ও সতেজ মনের জন্য খুবই কার্যকর। অন্যদিকে ভেষজ ওষুধ হিসেবে দেশে আদার বহুল ব্যবহার রয়েছে। মুখের রুচি বাড়াতে ও বদহজম রোধে আদা শুকিয়ে চিবিয়ে খাওয়া হয়। এ ছাড়া সর্দি, কাশি, আমাশয়, জন্ডিস, পেট ফাঁপায় আদা চিবিয়ে বা রস করে খাওয়া হয়। হৃদ্যন্ত্রের কার্যকারিতা বজায় রাখার পাশাপাশি অনেক গোপন সমস্যা দূর করতেও সহায়ক আদা।
[প্রতিবেদনে সহযোগিতা করেছেন জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি ও কামারখন্দ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি।]

বাজারে একলাফে লিটারে ৯ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সয়াবিন তেলের দাম। আর দেশি পুরোনো পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা। তবে এসব পণ্যের সরবরাহে তেমন কোনো সমস্যা নেই বাজারে। পুরোনো পেঁয়াজের সঙ্গে নতুন পেঁয়াজও পাওয়া যাচ্ছে।
১৩ ঘণ্টা আগে
উত্তরা ব্যাংক পিএলসির একটি নতুন শাখার উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার ব্যাংক রোড, দৌলতগঞ্জ বাজারে ব্যাংকের ২৫০তম লাকসাম শাখার উদ্বোধন করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. আবুল হাশেম।
১৮ ঘণ্টা আগে
রেমিট্যান্সে প্রবাহ বাড়লেও পণ্য রপ্তানিতে ধাক্কার ধারা থামছে না। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের নভেম্বরে দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৮৯ কোটি ১৫ লাখ ডলার। গত বছরের একই মাসে এই আয় ছিল ৪১১ কোটি ৯৬ লাখ ডলার।
১৯ ঘণ্টা আগে
পাবনার ইশ্বরদীভিত্তিক সিগারেট কোম্পানি ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রায় ৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযানে গিয়ে এই ফাঁকি ধরেছেন বলে আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিআর।
১৯ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বাজারে একলাফে লিটারে ৯ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সয়াবিন তেলের দাম। আর দেশি পুরোনো পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা। তবে এসব পণ্যের সরবরাহে তেমন কোনো সমস্যা নেই বাজারে। পুরোনো পেঁয়াজের সঙ্গে নতুন পেঁয়াজও পাওয়া যাচ্ছে।
ভোজ্যতেল ও পেঁয়াজ ছাড়া বাজারে সবজি, ডিম, মুরগি, আটা, চিনিসহ প্রায় অধিকাংশ পণ্যের দাম কমেছে। বিশেষ করে সবজির বাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় অনেকটাই স্বস্তি ফিরেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শান্তিনগর, মালিবাগ, রামপুরাসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকা, এক সপ্তাহ আগে মানভেদে দাম ছিল ১১০-১২০ টাকা কেজি। নতুন পেঁয়াজের দাম অবশ্য তুলনামূলক কম। খুচরায় পাতাসহ নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজি।
জানতে চাইলে রামপুরা বাজারের সবজি বিক্রেতা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এবার পেঁয়াজ আমদানি না করেই বাজারের চাহিদা মিটে গেছে। এখন আগের মৌসুমের পেঁয়াজের মজুত একেবারেই শেষের দিকে। এই সময় পুরোনো পেঁয়াজের দাম কিছুটা বেশিই থাকে। তবে এটা বেশি দিন থাকবে না। বাজারে পেঁয়াজের ঘাটতি নেই। চাহিদা অনুসার পেঁয়াজ রয়েছে।’
বেড়েছে ভোজ্যতেলের দামও। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৯৮ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৮৯ টাকা। খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭৫-১৭৯ টাকা লিটার, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৭১-১৭৪ টাকা লিটার।
বিক্রেতারা বলছেন, কোম্পানিগুলো গত এক সপ্তাহে ধীরে ধীরে বাজারে বাড়তি দামে তেল সরবরাহ করেছে। এখনো অনেক দোকানে আগের দামের তেল পাওয়া যায়। তবে বাজারের অধিকাংশ দোকানেই বাড়তি দামের তেল রয়েছে।
গত সপ্তাহ পর্যন্ত খুচরায় কাঁচা মরিচ বিক্রি হতো ১২০-১৫০ টাকা কেজি, তবে চলতি সপ্তাহে দাম কমে ৭০-১০০ টাকা কেজিতে নেমেছে। এ ছাড়া শীতের সবজি হলেও শিমের দাম হঠাৎ বেড়ে ১৫০ টাকার ওপরে উঠেছিল।
সেই শিম এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা কেজি। ফুলকপি, বাঁধাকপির দাম কমেছে প্রতিটিতে ১০ টাকা। দুই ধরনের কপিই পাওয়া যাচ্ছে ৩০ টাকায়। তবে ভালো মানের ফুলকপি ৫০ টাকা। গত সপ্তাহে একটি কপি কিনতে ৪০-৬০ টাকা লেগেছিল।
দাম কমেছে টমেটোরও। মান ও বাজারভেদে প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১২০-১৪০ টাকা।
দেশি গাজরের সরবরাহ ব্যাপক বেড়েছে বাজারে, এতে দামও কমেছে। প্রতি কেজি গাজর বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০-১০০ টাকা। তবে আমদানির গাজর আগের মতোই ১২০-১৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে বেগুন বিক্রি হয়েছিল ৮০-১০০ টাকা কেজি, যা চলতি সপ্তাহে কমে ৭০-৮০ টাকায় নেমেছে। বাজারে আলুর দাম আগের মতোই প্রতি কেজি ২৫ টাকা রয়েছে।
আমিষের সবচেয়ে বড় উৎস ডিমের দাম আরও কমেছে। ফার্মের মুরগির সাদা ও বাদামি ডিমের দাম কমে ১১০ থেকে ১২৫ টাকা ডজনে নেমেছে। গত সপ্তাহে ছিল ১২০-১৩০ টাকা।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) তথ্য বলছে, গত বছর এই সময় ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছিল ১৪০-১৫০ টাকা ডজন। টিসিবি বলছে, গত বছরের তুলনায় ডিমের দাম ৩৫ শতাংশ কমেছে।
ডিমের সঙ্গে কমেছে ফার্মের মুরগির দামও। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম কমে ১৫০-১৭০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৬০-১৮০ টাকা কেজি।
সেগুনবাগিচা বাজারের ডিম বিক্রেতা নূর ই আলম বলেন, ‘ডিম ও মুরগির বাজার স্বাভাবিক আচরণ করছে না। হঠাৎ দামের এত পতন হচ্ছে কেন, তা বোঝা যাচ্ছে না। বর্তমানে ডিমের যে দাম, তা গত কয়েক বছরের তুলনায় সবচেয়ে কম।’
ডিম-মুরগির সঙ্গে কিছুটা কমেছে রুই-কাতলা মাছের দামও। বাজারে চাষের এই মাছগুলো বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪০০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩২০-৪৫০ টাকা কেজি।
মুদিপণ্যের মধ্যে চিনির দাম আগে থেকেই কমেছে। খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৯০-১০০ টাকা কেজি। চলতি সপ্তাহে নতুন করে কমেছে আটা, মসুর ডাল, ছোলার দাম। খোলা আটার দাম ২-৩ টাকা কমে ৪৫-৪৮ টাকা বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ছিল ৪৮-৫০ টাকা কেজি। কেজিপ্রতি বড় দানার মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৯০-১০০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৯৫-১০৫ টাকা। ছোলার দামও কেজিপ্রতি ৫ টাকা কমে ৯৫-১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারের মামা-ভাগনে মুদিদোকানের বিক্রেতা হারুনুর রশিদ বলেন, রমজান উপলক্ষে পণ্যের আমদানি ব্যাপক বেড়েছে। তাই প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম কমছে। তবে ভোজ্যতেল ও পেঁয়াজের বিষয়টি কিছুটা ভিন্ন।

বাজারে একলাফে লিটারে ৯ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সয়াবিন তেলের দাম। আর দেশি পুরোনো পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা। তবে এসব পণ্যের সরবরাহে তেমন কোনো সমস্যা নেই বাজারে। পুরোনো পেঁয়াজের সঙ্গে নতুন পেঁয়াজও পাওয়া যাচ্ছে।
ভোজ্যতেল ও পেঁয়াজ ছাড়া বাজারে সবজি, ডিম, মুরগি, আটা, চিনিসহ প্রায় অধিকাংশ পণ্যের দাম কমেছে। বিশেষ করে সবজির বাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় অনেকটাই স্বস্তি ফিরেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শান্তিনগর, মালিবাগ, রামপুরাসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকা, এক সপ্তাহ আগে মানভেদে দাম ছিল ১১০-১২০ টাকা কেজি। নতুন পেঁয়াজের দাম অবশ্য তুলনামূলক কম। খুচরায় পাতাসহ নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজি।
জানতে চাইলে রামপুরা বাজারের সবজি বিক্রেতা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এবার পেঁয়াজ আমদানি না করেই বাজারের চাহিদা মিটে গেছে। এখন আগের মৌসুমের পেঁয়াজের মজুত একেবারেই শেষের দিকে। এই সময় পুরোনো পেঁয়াজের দাম কিছুটা বেশিই থাকে। তবে এটা বেশি দিন থাকবে না। বাজারে পেঁয়াজের ঘাটতি নেই। চাহিদা অনুসার পেঁয়াজ রয়েছে।’
বেড়েছে ভোজ্যতেলের দামও। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৯৮ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৮৯ টাকা। খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭৫-১৭৯ টাকা লিটার, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৭১-১৭৪ টাকা লিটার।
বিক্রেতারা বলছেন, কোম্পানিগুলো গত এক সপ্তাহে ধীরে ধীরে বাজারে বাড়তি দামে তেল সরবরাহ করেছে। এখনো অনেক দোকানে আগের দামের তেল পাওয়া যায়। তবে বাজারের অধিকাংশ দোকানেই বাড়তি দামের তেল রয়েছে।
গত সপ্তাহ পর্যন্ত খুচরায় কাঁচা মরিচ বিক্রি হতো ১২০-১৫০ টাকা কেজি, তবে চলতি সপ্তাহে দাম কমে ৭০-১০০ টাকা কেজিতে নেমেছে। এ ছাড়া শীতের সবজি হলেও শিমের দাম হঠাৎ বেড়ে ১৫০ টাকার ওপরে উঠেছিল।
সেই শিম এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা কেজি। ফুলকপি, বাঁধাকপির দাম কমেছে প্রতিটিতে ১০ টাকা। দুই ধরনের কপিই পাওয়া যাচ্ছে ৩০ টাকায়। তবে ভালো মানের ফুলকপি ৫০ টাকা। গত সপ্তাহে একটি কপি কিনতে ৪০-৬০ টাকা লেগেছিল।
দাম কমেছে টমেটোরও। মান ও বাজারভেদে প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১২০-১৪০ টাকা।
দেশি গাজরের সরবরাহ ব্যাপক বেড়েছে বাজারে, এতে দামও কমেছে। প্রতি কেজি গাজর বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০-১০০ টাকা। তবে আমদানির গাজর আগের মতোই ১২০-১৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে বেগুন বিক্রি হয়েছিল ৮০-১০০ টাকা কেজি, যা চলতি সপ্তাহে কমে ৭০-৮০ টাকায় নেমেছে। বাজারে আলুর দাম আগের মতোই প্রতি কেজি ২৫ টাকা রয়েছে।
আমিষের সবচেয়ে বড় উৎস ডিমের দাম আরও কমেছে। ফার্মের মুরগির সাদা ও বাদামি ডিমের দাম কমে ১১০ থেকে ১২৫ টাকা ডজনে নেমেছে। গত সপ্তাহে ছিল ১২০-১৩০ টাকা।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) তথ্য বলছে, গত বছর এই সময় ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছিল ১৪০-১৫০ টাকা ডজন। টিসিবি বলছে, গত বছরের তুলনায় ডিমের দাম ৩৫ শতাংশ কমেছে।
ডিমের সঙ্গে কমেছে ফার্মের মুরগির দামও। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম কমে ১৫০-১৭০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৬০-১৮০ টাকা কেজি।
সেগুনবাগিচা বাজারের ডিম বিক্রেতা নূর ই আলম বলেন, ‘ডিম ও মুরগির বাজার স্বাভাবিক আচরণ করছে না। হঠাৎ দামের এত পতন হচ্ছে কেন, তা বোঝা যাচ্ছে না। বর্তমানে ডিমের যে দাম, তা গত কয়েক বছরের তুলনায় সবচেয়ে কম।’
ডিম-মুরগির সঙ্গে কিছুটা কমেছে রুই-কাতলা মাছের দামও। বাজারে চাষের এই মাছগুলো বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪০০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩২০-৪৫০ টাকা কেজি।
মুদিপণ্যের মধ্যে চিনির দাম আগে থেকেই কমেছে। খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৯০-১০০ টাকা কেজি। চলতি সপ্তাহে নতুন করে কমেছে আটা, মসুর ডাল, ছোলার দাম। খোলা আটার দাম ২-৩ টাকা কমে ৪৫-৪৮ টাকা বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ছিল ৪৮-৫০ টাকা কেজি। কেজিপ্রতি বড় দানার মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৯০-১০০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৯৫-১০৫ টাকা। ছোলার দামও কেজিপ্রতি ৫ টাকা কমে ৯৫-১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারের মামা-ভাগনে মুদিদোকানের বিক্রেতা হারুনুর রশিদ বলেন, রমজান উপলক্ষে পণ্যের আমদানি ব্যাপক বেড়েছে। তাই প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম কমছে। তবে ভোজ্যতেল ও পেঁয়াজের বিষয়টি কিছুটা ভিন্ন।

মসলাজাতীয় একটি প্রাচীনতম ফসল আদা; যা বাণিজ্যিকভাবে প্রথম মসলাজাতীয় পণ্য হিসেবে এশিয়া থেকে ইউরোপে রপ্তানি হয়েছিল। প্রাচীন গ্রিস এবং রোমানরা এটি ব্যবহার করত। মুখরোচক রান্নায় আদার জুড়ি মেলা ভার। তাই তো প্রায় চার হাজার বছর আগে থেকে রান্নায় আদার ব্যবহার হয়ে আসছে। এর ভেষজ গুণও উপেক্ষার নয়। চিকিৎসার অন্যতম
১০ নভেম্বর ২০২৪
উত্তরা ব্যাংক পিএলসির একটি নতুন শাখার উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার ব্যাংক রোড, দৌলতগঞ্জ বাজারে ব্যাংকের ২৫০তম লাকসাম শাখার উদ্বোধন করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. আবুল হাশেম।
১৮ ঘণ্টা আগে
রেমিট্যান্সে প্রবাহ বাড়লেও পণ্য রপ্তানিতে ধাক্কার ধারা থামছে না। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের নভেম্বরে দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৮৯ কোটি ১৫ লাখ ডলার। গত বছরের একই মাসে এই আয় ছিল ৪১১ কোটি ৯৬ লাখ ডলার।
১৯ ঘণ্টা আগে
পাবনার ইশ্বরদীভিত্তিক সিগারেট কোম্পানি ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রায় ৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযানে গিয়ে এই ফাঁকি ধরেছেন বলে আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিআর।
১৯ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

উত্তরা ব্যাংক পিএলসির একটি নতুন শাখার উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার ব্যাংক রোড, দৌলতগঞ্জ বাজারে ব্যাংকের ২৫০তম লাকসাম শাখার উদ্বোধন করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. আবুল হাশেম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাকসুদুল হাসান।
এ ছাড়া অনুষ্ঠানে মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) মো. রবিউল হাসান এবং উপমহাব্যবস্থাপক ও আঞ্চলিক প্রধান (কুমিল্লা অঞ্চল) মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

উত্তরা ব্যাংক পিএলসির একটি নতুন শাখার উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার ব্যাংক রোড, দৌলতগঞ্জ বাজারে ব্যাংকের ২৫০তম লাকসাম শাখার উদ্বোধন করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. আবুল হাশেম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাকসুদুল হাসান।
এ ছাড়া অনুষ্ঠানে মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) মো. রবিউল হাসান এবং উপমহাব্যবস্থাপক ও আঞ্চলিক প্রধান (কুমিল্লা অঞ্চল) মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

মসলাজাতীয় একটি প্রাচীনতম ফসল আদা; যা বাণিজ্যিকভাবে প্রথম মসলাজাতীয় পণ্য হিসেবে এশিয়া থেকে ইউরোপে রপ্তানি হয়েছিল। প্রাচীন গ্রিস এবং রোমানরা এটি ব্যবহার করত। মুখরোচক রান্নায় আদার জুড়ি মেলা ভার। তাই তো প্রায় চার হাজার বছর আগে থেকে রান্নায় আদার ব্যবহার হয়ে আসছে। এর ভেষজ গুণও উপেক্ষার নয়। চিকিৎসার অন্যতম
১০ নভেম্বর ২০২৪
বাজারে একলাফে লিটারে ৯ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সয়াবিন তেলের দাম। আর দেশি পুরোনো পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা। তবে এসব পণ্যের সরবরাহে তেমন কোনো সমস্যা নেই বাজারে। পুরোনো পেঁয়াজের সঙ্গে নতুন পেঁয়াজও পাওয়া যাচ্ছে।
১৩ ঘণ্টা আগে
রেমিট্যান্সে প্রবাহ বাড়লেও পণ্য রপ্তানিতে ধাক্কার ধারা থামছে না। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের নভেম্বরে দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৮৯ কোটি ১৫ লাখ ডলার। গত বছরের একই মাসে এই আয় ছিল ৪১১ কোটি ৯৬ লাখ ডলার।
১৯ ঘণ্টা আগে
পাবনার ইশ্বরদীভিত্তিক সিগারেট কোম্পানি ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রায় ৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযানে গিয়ে এই ফাঁকি ধরেছেন বলে আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিআর।
১৯ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রেমিট্যান্সে প্রবাহ বাড়লেও পণ্য রপ্তানিতে ধাক্কার ধারা থামছে না। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের নভেম্বরে দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৮৯ কোটি ১৫ লাখ ডলার। গত বছরের একই মাসে এই আয় ছিল ৪১১ কোটি ৯৬ লাখ ডলার। অর্থাৎ মাসওয়ারি হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে রপ্তানি আয় কমেছে ৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ, টাকার অঙ্কে এই হ্রাসকৃত রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়ায় ২২ কোটি ৮১ লাখ ডলার।
এবারই প্রথম নয়, আগস্ট থেকে শুরু হওয়া নিম্নমুখী ধারা নভেম্বরে এসে চতুর্থ মাসে পা দিল। জুলাইয়ের শক্তিশালী সূচনার পর রপ্তানি খাত যে ধারাবাহিক গতি অর্জন করেছিল, সেই গতি আগস্টেই থমকে যায়। ওই মাসে আগের বছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি কমে ২ দশমিক ৯৩ শতাংশে নেমে আসে। সেপ্টেম্বরেও পতন গভীর হয়—৪ দশমিক ৬১ শতাংশ। অক্টোবরে সেই হার আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশে।
জুলাইয়ের ব্যতিক্রমী সাফল্যের পর পরবর্তী চার মাস যেন একটানা ঢালু পথ। সেই জুলাইয়ে রপ্তানি আয় ছিল ৪৭৭ কোটি ৫ লাখ ডলার, প্রবৃদ্ধি প্রায় ২৪ দশমিক ৯০ শতাংশ। কিন্তু এরপর প্রতি মাসেই কমতে কমতে নভেম্বরে এসে রপ্তানি আয়ের ব্যবধান স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
সার্বিক চিত্রটি বলছে, অর্থবছরের শুরুতে পাওয়া জোয়ারটি এখন চার মাসের টানা ভাটার মুখে দাঁড়িয়ে।
আজ বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ইপিবির তথ্য পর্যালোচনায় আরও দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর মিলিয়ে পাঁচ মাসে মোট রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ২০০২ কোটি ৮৫ লাখ ডলার; যা আগের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি ঘটেছে মাত্র দশমিক ৬২ শতাংশ। অর্থাৎ পাঁচ মাসের সার্বিক রপ্তানি আয়ের চিত্রও নামমাত্র।
নভেম্বরের সবচেয়ে বড় আঘাত লেগেছে পোশাক খাতে, যেটি দেশের রপ্তানির প্রধান ভরসা। ওই মাসে পোশাক রপ্তানি থেকে এসেছে ৩১৪ কোটি ৯ লাখ ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ৫ শতাংশ কম। এ সময় নিটওয়্যার খাতে আয় নেমেছে ১৬১ কোটি ৮৪ লাখ ডলারে, আর ওভেনে এসেছে ১৫২ কোটি ২৪ লাখ ডলার। গত বছরের একই সময়ে নিটওয়্যার আয় ছিল ১৭৩ কোটি ৮২ লাখ ডলার এবং ওভেন ১৫৬ কোটি ৯২ লাখ ডলার।
পোশাকের বাইরে কৃষিপণ্যে রপ্তানি কমেছে ২৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ, প্লাস্টিক পণ্যে কমেছে ১৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ। এ ছাড়া রপ্তানি পতনের তালিকায় রয়েছে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত সামগ্রী, হোম টেক্সটাইলস, ফার্মাসিউটিক্যালস, জাহাজ, চিংড়ি ও লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং। এর মানে হচ্ছে, প্রচলিত এসব খাতেও মন্থরতা স্পষ্ট।
তবে সব বাজারে একই চিত্র নয়। কিছু গন্তব্যে বিপরীত প্রবণতা দেখা গেছে, যা সামগ্রিক মন্দার মধ্যেও আশার সঞ্চার করেছে। যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি বেড়েছে ৪ দশমিক ২০ শতাংশ, যুক্তরাজ্যে ৩ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। উদীয়মান বাজারগুলোর মধ্যেও ইতিবাচক প্রবণতা স্পষ্ট—চীনে রপ্তানি বেড়েছে ২৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ, পোল্যান্ডে ১১ দশমিক ৫৭ শতাংশ, সৌদি আরবে ১১ দশমিক ৩৪ শতাংশ এবং স্পেনে ১০ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এ প্রবণতা সাম্প্রতিক বছরগুলোয় যেন অনেকটাই ব্যতিক্রমী সাফল্য।
সব মিলিয়ে চিত্রটি দ্বিমুখী। একদিকে ঐতিহ্যগত প্রধান খাতগুলোতে পতন; অন্যদিকে কিছু নতুন বাজারে ইতিবাচক ইঙ্গিত। তবে বড় প্রশ্ন রয়ে যায়, এই বাজার বৃদ্ধি কি পোশাকসহ প্রধান খাতের ধারাবাহিক মন্দাকে সামাল দিতে পারবে?
বর্তমান বাস্তবতা বলছে, বৈচিত্র্য বাড়ানোর পথে অনেক দূর যেতে হবে। উৎপাদন প্রতিযোগিতা, মূল্যের চাপ, বৈদেশিক অর্ডার সংকোচন এবং বিশ্ববাজারের অনিশ্চয়তা, সব মিলিয়ে রপ্তানি খাতে সামনের পথ সহজ নয়।

রেমিট্যান্সে প্রবাহ বাড়লেও পণ্য রপ্তানিতে ধাক্কার ধারা থামছে না। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের নভেম্বরে দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৮৯ কোটি ১৫ লাখ ডলার। গত বছরের একই মাসে এই আয় ছিল ৪১১ কোটি ৯৬ লাখ ডলার। অর্থাৎ মাসওয়ারি হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে রপ্তানি আয় কমেছে ৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ, টাকার অঙ্কে এই হ্রাসকৃত রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়ায় ২২ কোটি ৮১ লাখ ডলার।
এবারই প্রথম নয়, আগস্ট থেকে শুরু হওয়া নিম্নমুখী ধারা নভেম্বরে এসে চতুর্থ মাসে পা দিল। জুলাইয়ের শক্তিশালী সূচনার পর রপ্তানি খাত যে ধারাবাহিক গতি অর্জন করেছিল, সেই গতি আগস্টেই থমকে যায়। ওই মাসে আগের বছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি কমে ২ দশমিক ৯৩ শতাংশে নেমে আসে। সেপ্টেম্বরেও পতন গভীর হয়—৪ দশমিক ৬১ শতাংশ। অক্টোবরে সেই হার আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশে।
জুলাইয়ের ব্যতিক্রমী সাফল্যের পর পরবর্তী চার মাস যেন একটানা ঢালু পথ। সেই জুলাইয়ে রপ্তানি আয় ছিল ৪৭৭ কোটি ৫ লাখ ডলার, প্রবৃদ্ধি প্রায় ২৪ দশমিক ৯০ শতাংশ। কিন্তু এরপর প্রতি মাসেই কমতে কমতে নভেম্বরে এসে রপ্তানি আয়ের ব্যবধান স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
সার্বিক চিত্রটি বলছে, অর্থবছরের শুরুতে পাওয়া জোয়ারটি এখন চার মাসের টানা ভাটার মুখে দাঁড়িয়ে।
আজ বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ইপিবির তথ্য পর্যালোচনায় আরও দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর মিলিয়ে পাঁচ মাসে মোট রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ২০০২ কোটি ৮৫ লাখ ডলার; যা আগের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি ঘটেছে মাত্র দশমিক ৬২ শতাংশ। অর্থাৎ পাঁচ মাসের সার্বিক রপ্তানি আয়ের চিত্রও নামমাত্র।
নভেম্বরের সবচেয়ে বড় আঘাত লেগেছে পোশাক খাতে, যেটি দেশের রপ্তানির প্রধান ভরসা। ওই মাসে পোশাক রপ্তানি থেকে এসেছে ৩১৪ কোটি ৯ লাখ ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ৫ শতাংশ কম। এ সময় নিটওয়্যার খাতে আয় নেমেছে ১৬১ কোটি ৮৪ লাখ ডলারে, আর ওভেনে এসেছে ১৫২ কোটি ২৪ লাখ ডলার। গত বছরের একই সময়ে নিটওয়্যার আয় ছিল ১৭৩ কোটি ৮২ লাখ ডলার এবং ওভেন ১৫৬ কোটি ৯২ লাখ ডলার।
পোশাকের বাইরে কৃষিপণ্যে রপ্তানি কমেছে ২৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ, প্লাস্টিক পণ্যে কমেছে ১৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ। এ ছাড়া রপ্তানি পতনের তালিকায় রয়েছে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত সামগ্রী, হোম টেক্সটাইলস, ফার্মাসিউটিক্যালস, জাহাজ, চিংড়ি ও লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং। এর মানে হচ্ছে, প্রচলিত এসব খাতেও মন্থরতা স্পষ্ট।
তবে সব বাজারে একই চিত্র নয়। কিছু গন্তব্যে বিপরীত প্রবণতা দেখা গেছে, যা সামগ্রিক মন্দার মধ্যেও আশার সঞ্চার করেছে। যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি বেড়েছে ৪ দশমিক ২০ শতাংশ, যুক্তরাজ্যে ৩ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। উদীয়মান বাজারগুলোর মধ্যেও ইতিবাচক প্রবণতা স্পষ্ট—চীনে রপ্তানি বেড়েছে ২৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ, পোল্যান্ডে ১১ দশমিক ৫৭ শতাংশ, সৌদি আরবে ১১ দশমিক ৩৪ শতাংশ এবং স্পেনে ১০ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এ প্রবণতা সাম্প্রতিক বছরগুলোয় যেন অনেকটাই ব্যতিক্রমী সাফল্য।
সব মিলিয়ে চিত্রটি দ্বিমুখী। একদিকে ঐতিহ্যগত প্রধান খাতগুলোতে পতন; অন্যদিকে কিছু নতুন বাজারে ইতিবাচক ইঙ্গিত। তবে বড় প্রশ্ন রয়ে যায়, এই বাজার বৃদ্ধি কি পোশাকসহ প্রধান খাতের ধারাবাহিক মন্দাকে সামাল দিতে পারবে?
বর্তমান বাস্তবতা বলছে, বৈচিত্র্য বাড়ানোর পথে অনেক দূর যেতে হবে। উৎপাদন প্রতিযোগিতা, মূল্যের চাপ, বৈদেশিক অর্ডার সংকোচন এবং বিশ্ববাজারের অনিশ্চয়তা, সব মিলিয়ে রপ্তানি খাতে সামনের পথ সহজ নয়।

মসলাজাতীয় একটি প্রাচীনতম ফসল আদা; যা বাণিজ্যিকভাবে প্রথম মসলাজাতীয় পণ্য হিসেবে এশিয়া থেকে ইউরোপে রপ্তানি হয়েছিল। প্রাচীন গ্রিস এবং রোমানরা এটি ব্যবহার করত। মুখরোচক রান্নায় আদার জুড়ি মেলা ভার। তাই তো প্রায় চার হাজার বছর আগে থেকে রান্নায় আদার ব্যবহার হয়ে আসছে। এর ভেষজ গুণও উপেক্ষার নয়। চিকিৎসার অন্যতম
১০ নভেম্বর ২০২৪
বাজারে একলাফে লিটারে ৯ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সয়াবিন তেলের দাম। আর দেশি পুরোনো পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা। তবে এসব পণ্যের সরবরাহে তেমন কোনো সমস্যা নেই বাজারে। পুরোনো পেঁয়াজের সঙ্গে নতুন পেঁয়াজও পাওয়া যাচ্ছে।
১৩ ঘণ্টা আগে
উত্তরা ব্যাংক পিএলসির একটি নতুন শাখার উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার ব্যাংক রোড, দৌলতগঞ্জ বাজারে ব্যাংকের ২৫০তম লাকসাম শাখার উদ্বোধন করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. আবুল হাশেম।
১৮ ঘণ্টা আগে
পাবনার ইশ্বরদীভিত্তিক সিগারেট কোম্পানি ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রায় ৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযানে গিয়ে এই ফাঁকি ধরেছেন বলে আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিআর।
১৯ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

পাবনার ইশ্বরদীভিত্তিক সিগারেট কোম্পানি ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রায় ৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযানে গিয়ে এই ফাঁকি ধরেছেন বলে আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিআর।
এনবিআর জানায়, তামাক ও তামাকজাত পণ্যের অবৈধ উৎপাদন, বাজারজাতকরণ এবং রাজস্ব ফাঁকি প্রতিরোধে সম্প্রতি কার্যক্রম আরও জোরদার করেছে এনবিআর। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সূত্রের ভিত্তিতে এনবিআরের ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের একটি দল ঈশ্বরদীতে অবস্থিত ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কারখানায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।
গোয়েন্দা দলের পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি ভ্যাট নিবন্ধন গ্রহণ করলেও দীর্ঘদিন ধরে আনুষ্ঠানিক উৎপাদন কার্যক্রম প্রদর্শন না করে গোপনে সিগারেট উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছে। অভিযানে ৬ লাখ ৩৪ হাজার ৫৯০ শলাকা জাল ব্যান্ডরোলযুক্ত সিগারেট জব্দ করা হয়, যার বাজারমূল্য ৩৮ লাখ টাকারও বেশি। এসব সিগারেটের বিপরীতে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ২৯ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়।
এ ছাড়া ১০ লাখ ২৯ হাজারটি অব্যবহৃত জাল ব্যান্ডরোল বা স্ট্যাম্প উদ্ধার করা হয়, যা ব্যবহার করা হলে অতিরিক্ত ৮ কোটি ৫০ লাখ টাকারও বেশি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া সম্ভব ছিল। প্রতিষ্ঠানটি ৩ লাখ ২২ হাজার ৫০০টি বৈধ ব্যান্ডরোল সংগ্রহ করলেও তা ব্যবহার না করে জাল ব্যান্ডরোল ব্যবহার করে সিগারেট উৎপাদন ও বিক্রি করছিল।
এনবিআর জানিয়েছে, সব সিগারেট ও উপকরণ আইনানুগভাবে জব্দ করা হয়েছে এবং প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনিপ্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। অভিযানে উদ্ধার করা দলিলাদির ভিত্তিতে শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ভ্যাট কমিশনারেটকে প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন ও বিক্রি কার্যক্রমের ওপর কঠোর নজরদারির জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হবে।

পাবনার ইশ্বরদীভিত্তিক সিগারেট কোম্পানি ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রায় ৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযানে গিয়ে এই ফাঁকি ধরেছেন বলে আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিআর।
এনবিআর জানায়, তামাক ও তামাকজাত পণ্যের অবৈধ উৎপাদন, বাজারজাতকরণ এবং রাজস্ব ফাঁকি প্রতিরোধে সম্প্রতি কার্যক্রম আরও জোরদার করেছে এনবিআর। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সূত্রের ভিত্তিতে এনবিআরের ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের একটি দল ঈশ্বরদীতে অবস্থিত ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কারখানায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।
গোয়েন্দা দলের পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি ভ্যাট নিবন্ধন গ্রহণ করলেও দীর্ঘদিন ধরে আনুষ্ঠানিক উৎপাদন কার্যক্রম প্রদর্শন না করে গোপনে সিগারেট উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছে। অভিযানে ৬ লাখ ৩৪ হাজার ৫৯০ শলাকা জাল ব্যান্ডরোলযুক্ত সিগারেট জব্দ করা হয়, যার বাজারমূল্য ৩৮ লাখ টাকারও বেশি। এসব সিগারেটের বিপরীতে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ২৯ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়।
এ ছাড়া ১০ লাখ ২৯ হাজারটি অব্যবহৃত জাল ব্যান্ডরোল বা স্ট্যাম্প উদ্ধার করা হয়, যা ব্যবহার করা হলে অতিরিক্ত ৮ কোটি ৫০ লাখ টাকারও বেশি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া সম্ভব ছিল। প্রতিষ্ঠানটি ৩ লাখ ২২ হাজার ৫০০টি বৈধ ব্যান্ডরোল সংগ্রহ করলেও তা ব্যবহার না করে জাল ব্যান্ডরোল ব্যবহার করে সিগারেট উৎপাদন ও বিক্রি করছিল।
এনবিআর জানিয়েছে, সব সিগারেট ও উপকরণ আইনানুগভাবে জব্দ করা হয়েছে এবং প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনিপ্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। অভিযানে উদ্ধার করা দলিলাদির ভিত্তিতে শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ভ্যাট কমিশনারেটকে প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন ও বিক্রি কার্যক্রমের ওপর কঠোর নজরদারির জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হবে।

মসলাজাতীয় একটি প্রাচীনতম ফসল আদা; যা বাণিজ্যিকভাবে প্রথম মসলাজাতীয় পণ্য হিসেবে এশিয়া থেকে ইউরোপে রপ্তানি হয়েছিল। প্রাচীন গ্রিস এবং রোমানরা এটি ব্যবহার করত। মুখরোচক রান্নায় আদার জুড়ি মেলা ভার। তাই তো প্রায় চার হাজার বছর আগে থেকে রান্নায় আদার ব্যবহার হয়ে আসছে। এর ভেষজ গুণও উপেক্ষার নয়। চিকিৎসার অন্যতম
১০ নভেম্বর ২০২৪
বাজারে একলাফে লিটারে ৯ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সয়াবিন তেলের দাম। আর দেশি পুরোনো পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা। তবে এসব পণ্যের সরবরাহে তেমন কোনো সমস্যা নেই বাজারে। পুরোনো পেঁয়াজের সঙ্গে নতুন পেঁয়াজও পাওয়া যাচ্ছে।
১৩ ঘণ্টা আগে
উত্তরা ব্যাংক পিএলসির একটি নতুন শাখার উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার ব্যাংক রোড, দৌলতগঞ্জ বাজারে ব্যাংকের ২৫০তম লাকসাম শাখার উদ্বোধন করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. আবুল হাশেম।
১৮ ঘণ্টা আগে
রেমিট্যান্সে প্রবাহ বাড়লেও পণ্য রপ্তানিতে ধাক্কার ধারা থামছে না। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের নভেম্বরে দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৮৯ কোটি ১৫ লাখ ডলার। গত বছরের একই মাসে এই আয় ছিল ৪১১ কোটি ৯৬ লাখ ডলার।
১৯ ঘণ্টা আগে