এনবিআর
আসাদুজ্জামান নূর, ঢাকা

ব্যবসায়ীদের মধ্যস্থতায় আন্দোলন স্থগিত করে গত ৩০ জুন ফের কাজে যোগ দিয়েছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এতে টানা দেড় মাসের স্থবিরতা কাটতে শুরু করে দেশের শুল্ক স্টেশনগুলোয়। গতি ফিরে আসে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে। কিন্তু আন্দোলন শেষ হওয়ার পরপরই এনবিআরের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে সরকার। এতে বিব্রত মধ্যস্থতাকারী ব্যবসায়ীরা, শঙ্কা দেখা দিয়েছে রাজস্ব কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার।
আন্দোলন-পরবর্তী সরকারের কঠোর অবস্থানের কারণে ইতিমধ্যে এনবিআরের চার কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। বরখাস্ত করা হয়েছে একজন কমিশনারকে। গত পাঁচ দিনে ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ ছাড়া এনবিআর কর্মকর্তাদের জন্য বিশেষভাবে আচরণ বিধিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে বলেও জানা গেছে।
গত বুধবার এনবিআরের কর বিভাগের সদস্য আলমগীর হোসেন, শুল্কনীতি ও আইসিটি বিভাগের সদস্য হোসেন আহমদ, মূসক নীতি বিভাগের সদস্য আবদুর রউফ এবং বরিশাল কর অঞ্চলের কমিশনার মো. শব্বির আহমেদকে অবসরে পাঠানো হয়। তার আগে মঙ্গলবার রাতে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার (চলতি দায়িত্ব) জাকির হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। অন্যদিকে গত ৫ দিনে ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ খুঁজে বের করতে তদন্তে নেমেছে দুদক।
গতকাল বৃহস্পতিবার এনবিআরের ৫ কর্মকর্তার বিষয়ে অনুসন্ধানের কথা জানায় দুদক। তাঁরা হলেন ঢাকা পূর্বের কমিশনার (কাস্টমস এক্সাইজ অ্যান্ড ভ্যাট) কাজী মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, বেনাপোল স্থলবন্দরের কমিশনার মো. কামরুজ্জামান, উপকর কমিশনার মো. মামুন মিয়া, অতিরিক্ত কর কমিশনার (আয়কর গোয়েন্দা ইউনিট) সেহেলা সিদ্দিকা ও কর অঞ্চল-২-এর কর পরিদর্শক লোকমান আহমেদ।
অনুসন্ধানের বিষয়ে দুদকের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অসাধু সদস্য ও কর্মকর্তারা কর ও শুল্ক আদায়ের ক্ষেত্রে মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে করদাতাদের কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছেন। কিছু ক্ষেত্রে কর্মকর্তারা ঘুষ না পেয়ে কর ফাঁকি দেওয়ার মিথ্যা মামলা করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিককে হয়রানি করেন।
এর আগে বুধবার ৫ জন এবং গত ২৯ জুন ৬ কর্মকর্তার বিষয়ে অনুসন্ধানের কথা জানায় দুদক। তাঁরা হলেন অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল রশীদ মিয়া, সদস্য লুৎফুল আজীম, সিআইসির সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন, উপকর কমিশনার মো. শিহাবুল ইসলাম এবং যুগ্ম কমিশনার মো. তারেক হাসান, সদস্য (আয়কর নীতি) এ কে এম বদিউল আলম, অতিরিক্ত কর কমিশনার মির্জা আশিক রানা, যুগ্ম কর কমিশনার মোহাম্মদ মোরশেদ উদ্দীন খান, যুগ্ম কর কমিশনার মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা, অতিরিক্ত কমিশনার হাসান তারেক রিকাবদার এবং অতিরিক্ত কমিশনার সাধন কুমার কুন্ডু। তাঁদের বেশির ভাগ এনবিআরের আন্দোলনে নেতৃত্ব ও সক্রিয় ভূমিকায় ছিলেন।
আন্দোলন ছেড়ে কাজে যোগ দেওয়ার পরও সরকারের এমন কঠোর পদক্ষেপে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন এনবিআরের কর্মকর্তারা। বিশেষ করে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আন্দোলনকারীদের মধ্যে ভয় জেঁকে বসেছে। তাঁরা বলছেন, স্বার্থ সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কাজে ফিরতে বললেও এখন প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এ ঘটনায় বিব্রত মধ্যস্থতা করে আন্দোলন থামানো ব্যবসায়ীরা। সরকারের সমালোচনা করেছেন বিশেষজ্ঞরাও। বিষয়গুলো রাজস্ব খাতের শৃঙ্খলা নষ্ট করছে এবং এতে রাজস্ব কার্যক্রম ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ারুল আলম চৌধুরী পারভেজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সরকার কর্মকর্তাদের ট্রান্সফার বা আইনগত কোনো ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে কি না, সেটা জিজ্ঞেস করেছি। তাঁরা বলেছেন, তাৎক্ষণিকভাবে কিছু করবেন না, সহানুভূতিশীল দৃষ্টিতে দেখবেন। সে কথায় আশ্বস্ত হয়ে আমরা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেছি। ঐক্য পরিষদের নেতারা আমাদের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। যেহেতু আমাদের কথাতে তাঁরা কোনো শর্ত ছাড়াই আন্দোলন প্রত্যাহার করেছেন। এরপরও যদি এসব ঘটনা হয়, তাহলে এটি আমাদের জন্য দুঃখজনক।’
এনবিআর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুদকের এভাবে অনুসন্ধানে নামার বিষয়টি ইতিবাচকভাবে দেখছেন না কেউই। সরকারের সাবেক আমলা ও জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ফিরোজ মিয়া বলেন, আন্দোলনটা যেভাবে করা হয়েছে, সেটা কোনোক্রমে সমর্থনযোগ্য নয়। তবে বর্তমানে সরকার স্বাভাবিকভাবে কঠোরতা দেখাচ্ছে। সরকারের উচিত ছিল কৌশলে বিষয়টিকে ম্যানেজ করা। তিনি আরও বলেন, সত্যিকারে কেউ যদি দুর্নীতি করে, অবশ্যই তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে, এতে বাধা দেওয়ার কিছু নেই। কিন্তু বেছে বেছে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে প্রশ্নের উদ্রেক হয়। দমনপীড়ন দিয়ে ফলাফল আসে না। এতে এনবিআরের কর্মকর্তারা কাজে মনোযোগী হবেন না। স্বাভাবিকভাবে তখন রাজস্ব আদায় ব্যাহত হবে, অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
গত ১২ মে এনবিআর বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও ব্যবস্থাপনা বিভাগে বিভক্ত করে অধ্যাদেশ জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়। এরপর থেকে এনবিআর বিলুপ্তি রোধসহ কয়েকটি দাবিতে সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আন্দোলন শুরু করেন। ২৫ মে অর্থ মন্ত্রণালয় ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে অধ্যাদেশটি সংশোধন করার আশ্বাস দিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করা হয়। এরপর ২২ জুন থেকে চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবিতে ফের আন্দোলন শুরু হয়। ২৮ ও ২৯ জুন কমপ্লিট শাটডাউন এবং মার্চ টু এনবিআর কর্মসূচি পালিত হয়। চট্টগ্রামের কাস্টম অফিস বন্ধ করে কর্মকর্তারা ঢাকার আন্দোলনে যোগ দেন। এতে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম।
এমন স্থবিরতার মধ্যে ব্যবসায়ী নেতাদের মধ্যস্থতায় ২৯ জুন রাতে আন্দোলন প্রত্যাহার করে পরদিন কাজে যোগ দেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ওই দিন এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান সবাইকে সবকিছু ভুলে কাজে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান। তবে এরপর থেকে আন্দোলনকারী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া এনবিআরের একজন অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, এখন পর্যন্ত যাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তাঁরা সবাই আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। বলা হচ্ছে, দুদক নিজেদের আইনমতো চলছে। দুদক কতটা আইনমতো চলে, সেটা সবাই জানেন। তিনি বলেন, যদি কোনো কর্মকর্তা সত্যিকার অর্থে অপরাধ করেন থাকেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে পরেও ব্যবস্থা নেওয়া যেত। এ ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে হলে তো বোঝার অপেক্ষা রাখে না, কেন হচ্ছে।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, রাজস্ব প্রশাসনের স্বচ্ছতা এবং সুশাসন বৃদ্ধির লক্ষ্যে এনবিআরের পদক্ষেপ হিসেবে সব কর্মকর্তার জন্য একটি নৈতিকতা এবং পেশাগত আচরণ নীতিমালা প্রস্তুত করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে এটি চূড়ান্ত হতে পারে। প্রশ্ন উঠেছে, ভবিষ্যতে কর্মকর্তাদের প্রতিহত করতেই কি এমন উদ্যোগ!
এ প্রসঙ্গে এক অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ‘আন্দোলন দমন করার জন্য কোড অব কন্ডাক্ট করা হচ্ছে। আমাদের আচরণ বিধিমালা আছে, সরকারি সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর জন্য প্রযোজ্য। এর বাইরে নতুন করে কোনো প্রতিষ্ঠানের জন্য আচরণ বিধিমালা নেই। তাহলে এনবিআরের জন্য কেন হবে? এতে বোঝাই যায়, উদ্দেশ্য ভালো নয়।’
এনবিআরের এক যুগ্ম কমিশনার বলেন, যাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তাঁদের দক্ষতা অনন্য পর্যায়ের। সততা ও একাগ্রতাও প্রশংসনীয়।
সরকারের কঠোর পদক্ষেপের কারণে প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ভেঙে যাওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন এনবিআর কর্মকর্তারা। এক যুগ্ম কমিশনার বলেন, চট্টগ্রাম কাস্টমসে রাত ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত কাজ হয়। যখন একজন সহকারী কমিশনার দেখবেন, এত কাজ করেও এই পরিণতি, তখন কি তিনি আর আগের মতো উদ্যমে কাজ করবেন? করবেন না। বিকেল ৫টা পর্যন্ত করে চলে যাবেন। এতে রাজস্ব আহরণে চরম নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
এনবিআর কর্মকর্তাদের বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর বিষয়ে সংস্থাটির চেয়ারম্যান ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব আবদুর রহমান খান বলেন, ‘এটার বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। এটা সরকারের নীতিনির্ধারকমণ্ডলীর সিদ্ধান্ত। তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন।’ এনবিআরের কর্মকর্তাদের জন্য আলাদা আচরণবিধি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আলাদা করে কোনো কিছু করা হচ্ছে, এমনটি আমার জানা নেই।’

ব্যবসায়ীদের মধ্যস্থতায় আন্দোলন স্থগিত করে গত ৩০ জুন ফের কাজে যোগ দিয়েছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এতে টানা দেড় মাসের স্থবিরতা কাটতে শুরু করে দেশের শুল্ক স্টেশনগুলোয়। গতি ফিরে আসে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে। কিন্তু আন্দোলন শেষ হওয়ার পরপরই এনবিআরের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে সরকার। এতে বিব্রত মধ্যস্থতাকারী ব্যবসায়ীরা, শঙ্কা দেখা দিয়েছে রাজস্ব কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার।
আন্দোলন-পরবর্তী সরকারের কঠোর অবস্থানের কারণে ইতিমধ্যে এনবিআরের চার কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। বরখাস্ত করা হয়েছে একজন কমিশনারকে। গত পাঁচ দিনে ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ ছাড়া এনবিআর কর্মকর্তাদের জন্য বিশেষভাবে আচরণ বিধিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে বলেও জানা গেছে।
গত বুধবার এনবিআরের কর বিভাগের সদস্য আলমগীর হোসেন, শুল্কনীতি ও আইসিটি বিভাগের সদস্য হোসেন আহমদ, মূসক নীতি বিভাগের সদস্য আবদুর রউফ এবং বরিশাল কর অঞ্চলের কমিশনার মো. শব্বির আহমেদকে অবসরে পাঠানো হয়। তার আগে মঙ্গলবার রাতে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার (চলতি দায়িত্ব) জাকির হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। অন্যদিকে গত ৫ দিনে ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ খুঁজে বের করতে তদন্তে নেমেছে দুদক।
গতকাল বৃহস্পতিবার এনবিআরের ৫ কর্মকর্তার বিষয়ে অনুসন্ধানের কথা জানায় দুদক। তাঁরা হলেন ঢাকা পূর্বের কমিশনার (কাস্টমস এক্সাইজ অ্যান্ড ভ্যাট) কাজী মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, বেনাপোল স্থলবন্দরের কমিশনার মো. কামরুজ্জামান, উপকর কমিশনার মো. মামুন মিয়া, অতিরিক্ত কর কমিশনার (আয়কর গোয়েন্দা ইউনিট) সেহেলা সিদ্দিকা ও কর অঞ্চল-২-এর কর পরিদর্শক লোকমান আহমেদ।
অনুসন্ধানের বিষয়ে দুদকের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অসাধু সদস্য ও কর্মকর্তারা কর ও শুল্ক আদায়ের ক্ষেত্রে মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে করদাতাদের কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছেন। কিছু ক্ষেত্রে কর্মকর্তারা ঘুষ না পেয়ে কর ফাঁকি দেওয়ার মিথ্যা মামলা করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিককে হয়রানি করেন।
এর আগে বুধবার ৫ জন এবং গত ২৯ জুন ৬ কর্মকর্তার বিষয়ে অনুসন্ধানের কথা জানায় দুদক। তাঁরা হলেন অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল রশীদ মিয়া, সদস্য লুৎফুল আজীম, সিআইসির সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন, উপকর কমিশনার মো. শিহাবুল ইসলাম এবং যুগ্ম কমিশনার মো. তারেক হাসান, সদস্য (আয়কর নীতি) এ কে এম বদিউল আলম, অতিরিক্ত কর কমিশনার মির্জা আশিক রানা, যুগ্ম কর কমিশনার মোহাম্মদ মোরশেদ উদ্দীন খান, যুগ্ম কর কমিশনার মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা, অতিরিক্ত কমিশনার হাসান তারেক রিকাবদার এবং অতিরিক্ত কমিশনার সাধন কুমার কুন্ডু। তাঁদের বেশির ভাগ এনবিআরের আন্দোলনে নেতৃত্ব ও সক্রিয় ভূমিকায় ছিলেন।
আন্দোলন ছেড়ে কাজে যোগ দেওয়ার পরও সরকারের এমন কঠোর পদক্ষেপে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন এনবিআরের কর্মকর্তারা। বিশেষ করে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আন্দোলনকারীদের মধ্যে ভয় জেঁকে বসেছে। তাঁরা বলছেন, স্বার্থ সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কাজে ফিরতে বললেও এখন প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এ ঘটনায় বিব্রত মধ্যস্থতা করে আন্দোলন থামানো ব্যবসায়ীরা। সরকারের সমালোচনা করেছেন বিশেষজ্ঞরাও। বিষয়গুলো রাজস্ব খাতের শৃঙ্খলা নষ্ট করছে এবং এতে রাজস্ব কার্যক্রম ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ারুল আলম চৌধুরী পারভেজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সরকার কর্মকর্তাদের ট্রান্সফার বা আইনগত কোনো ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে কি না, সেটা জিজ্ঞেস করেছি। তাঁরা বলেছেন, তাৎক্ষণিকভাবে কিছু করবেন না, সহানুভূতিশীল দৃষ্টিতে দেখবেন। সে কথায় আশ্বস্ত হয়ে আমরা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেছি। ঐক্য পরিষদের নেতারা আমাদের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। যেহেতু আমাদের কথাতে তাঁরা কোনো শর্ত ছাড়াই আন্দোলন প্রত্যাহার করেছেন। এরপরও যদি এসব ঘটনা হয়, তাহলে এটি আমাদের জন্য দুঃখজনক।’
এনবিআর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুদকের এভাবে অনুসন্ধানে নামার বিষয়টি ইতিবাচকভাবে দেখছেন না কেউই। সরকারের সাবেক আমলা ও জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ফিরোজ মিয়া বলেন, আন্দোলনটা যেভাবে করা হয়েছে, সেটা কোনোক্রমে সমর্থনযোগ্য নয়। তবে বর্তমানে সরকার স্বাভাবিকভাবে কঠোরতা দেখাচ্ছে। সরকারের উচিত ছিল কৌশলে বিষয়টিকে ম্যানেজ করা। তিনি আরও বলেন, সত্যিকারে কেউ যদি দুর্নীতি করে, অবশ্যই তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে, এতে বাধা দেওয়ার কিছু নেই। কিন্তু বেছে বেছে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে প্রশ্নের উদ্রেক হয়। দমনপীড়ন দিয়ে ফলাফল আসে না। এতে এনবিআরের কর্মকর্তারা কাজে মনোযোগী হবেন না। স্বাভাবিকভাবে তখন রাজস্ব আদায় ব্যাহত হবে, অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
গত ১২ মে এনবিআর বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও ব্যবস্থাপনা বিভাগে বিভক্ত করে অধ্যাদেশ জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়। এরপর থেকে এনবিআর বিলুপ্তি রোধসহ কয়েকটি দাবিতে সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আন্দোলন শুরু করেন। ২৫ মে অর্থ মন্ত্রণালয় ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে অধ্যাদেশটি সংশোধন করার আশ্বাস দিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করা হয়। এরপর ২২ জুন থেকে চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবিতে ফের আন্দোলন শুরু হয়। ২৮ ও ২৯ জুন কমপ্লিট শাটডাউন এবং মার্চ টু এনবিআর কর্মসূচি পালিত হয়। চট্টগ্রামের কাস্টম অফিস বন্ধ করে কর্মকর্তারা ঢাকার আন্দোলনে যোগ দেন। এতে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম।
এমন স্থবিরতার মধ্যে ব্যবসায়ী নেতাদের মধ্যস্থতায় ২৯ জুন রাতে আন্দোলন প্রত্যাহার করে পরদিন কাজে যোগ দেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ওই দিন এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান সবাইকে সবকিছু ভুলে কাজে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান। তবে এরপর থেকে আন্দোলনকারী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া এনবিআরের একজন অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, এখন পর্যন্ত যাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তাঁরা সবাই আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। বলা হচ্ছে, দুদক নিজেদের আইনমতো চলছে। দুদক কতটা আইনমতো চলে, সেটা সবাই জানেন। তিনি বলেন, যদি কোনো কর্মকর্তা সত্যিকার অর্থে অপরাধ করেন থাকেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে পরেও ব্যবস্থা নেওয়া যেত। এ ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে হলে তো বোঝার অপেক্ষা রাখে না, কেন হচ্ছে।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, রাজস্ব প্রশাসনের স্বচ্ছতা এবং সুশাসন বৃদ্ধির লক্ষ্যে এনবিআরের পদক্ষেপ হিসেবে সব কর্মকর্তার জন্য একটি নৈতিকতা এবং পেশাগত আচরণ নীতিমালা প্রস্তুত করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে এটি চূড়ান্ত হতে পারে। প্রশ্ন উঠেছে, ভবিষ্যতে কর্মকর্তাদের প্রতিহত করতেই কি এমন উদ্যোগ!
এ প্রসঙ্গে এক অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ‘আন্দোলন দমন করার জন্য কোড অব কন্ডাক্ট করা হচ্ছে। আমাদের আচরণ বিধিমালা আছে, সরকারি সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর জন্য প্রযোজ্য। এর বাইরে নতুন করে কোনো প্রতিষ্ঠানের জন্য আচরণ বিধিমালা নেই। তাহলে এনবিআরের জন্য কেন হবে? এতে বোঝাই যায়, উদ্দেশ্য ভালো নয়।’
এনবিআরের এক যুগ্ম কমিশনার বলেন, যাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তাঁদের দক্ষতা অনন্য পর্যায়ের। সততা ও একাগ্রতাও প্রশংসনীয়।
সরকারের কঠোর পদক্ষেপের কারণে প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ভেঙে যাওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন এনবিআর কর্মকর্তারা। এক যুগ্ম কমিশনার বলেন, চট্টগ্রাম কাস্টমসে রাত ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত কাজ হয়। যখন একজন সহকারী কমিশনার দেখবেন, এত কাজ করেও এই পরিণতি, তখন কি তিনি আর আগের মতো উদ্যমে কাজ করবেন? করবেন না। বিকেল ৫টা পর্যন্ত করে চলে যাবেন। এতে রাজস্ব আহরণে চরম নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
এনবিআর কর্মকর্তাদের বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর বিষয়ে সংস্থাটির চেয়ারম্যান ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব আবদুর রহমান খান বলেন, ‘এটার বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। এটা সরকারের নীতিনির্ধারকমণ্ডলীর সিদ্ধান্ত। তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন।’ এনবিআরের কর্মকর্তাদের জন্য আলাদা আচরণবিধি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আলাদা করে কোনো কিছু করা হচ্ছে, এমনটি আমার জানা নেই।’

একসময় বিশ্বজুড়ে বাংলার গর্ব ছিল মসলিন। এর অতুলনীয় সূক্ষ্মতা, মসৃণতা ও আরামদায়ক বৈশিষ্ট্যের কারণে রাজা-বাদশাহ থেকে ইউরোপীয় অভিজাত শ্রেণির কাছে মসলিন ছিল আভিজাত্যের প্রতীক। মসলিনের প্রাণ ফুটি কার্পাস তুলা ইংরেজ শাসনামলে ঔপনিবেশিক বাণিজ্যনীতির বলি হয়ে ধীরে ধীরে হারিয়ে যায়।
১ ঘণ্টা আগে
দেশের সব স্থলবন্দরের মাশুল ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। সব ধরনের সেবা, কর ও টোলহারের ক্ষেত্রে এই বর্ধিত মাশুল প্রযোজ্য হবে। বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে বলেছে, এই মাশুলই বন্দরের আয়ের প্রধান উৎস।
১ ঘণ্টা আগে
দেশের উত্তরাঞ্চলে কৃষি খাতে টেকসই উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকারের ২৫২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে। চার বছরের এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য প্রকল্পের আওতাধীন চার জেলায় আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব কৃষিপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়িয়ে উৎপাদন খরচ কমানো এবং কৃষিকে আরও লাভজনক পেশায় রূপান্তর করা।
১ ঘণ্টা আগে
দেশের পুঁজিবাজারে বড় ধরনের অনিয়ম ও অপরাধের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে যে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছিল, তা আজ এক দশক ধরে কার্যত নিষ্ক্রিয়। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অধীনে থাকা এই স্পেশাল ট্রাইব্যুনালে গত ১০ বছরে একটি নতুন মামলাও আসেনি।
৭ ঘণ্টা আগেরাতুল মণ্ডল, শ্রীপুর (গাজীপুর)

একসময় বিশ্বজুড়ে বাংলার গর্ব ছিল মসলিন। এর অতুলনীয় সূক্ষ্মতা, মসৃণতা ও আরামদায়ক বৈশিষ্ট্যের কারণে রাজা-বাদশাহ থেকে ইউরোপীয় অভিজাত শ্রেণির কাছে মসলিন ছিল আভিজাত্যের প্রতীক। মসলিনের প্রাণ ফুটি কার্পাস তুলা ইংরেজ শাসনামলে ঔপনিবেশিক বাণিজ্যনীতির বলি হয়ে ধীরে ধীরে হারিয়ে যায়। দীর্ঘ বছর পর সে হারানো ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারে নতুন করে আশার আলো দেখাচ্ছে গাজীপুরের শ্রীপুর তুলা গবেষণা কেন্দ্র।
ফুটি কার্পাসের পুনর্জাগরণকে ঘিরে গবেষক, ঐতিহ্য অনুরাগী ও শিল্পোদ্যোক্তাদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে নতুন উদ্দীপনা। এটি শুধু একটি বিপন্ন উদ্ভিদের পুনরুদ্ধার নয়; বরং বাংলার হারানো শিল্প-ঐতিহ্য ও সম্ভাব্য উচ্চমূল্যের টেক্সটাইল খাত পুনরুজ্জীবনের চেষ্টা।
শ্রীপুর তুলা গবেষণা কেন্দ্রের পাশাপাশি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড এবং গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে গবেষণা কার্যক্রম চালাচ্ছে। গবেষণার মূল লক্ষ্য—ফুটি কার্পাস তুলা কীভাবে বাণিজ্যিকভাবে চাষযোগ্য করা যায়, উৎপাদন ব্যয় কমিয়ে সাধারণ মানুষের নাগালে আনা যায় এবং দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে মসলিনকে আবার পরিচিত করা যায়। গবেষকদের প্রত্যাশা, সঠিক নীতিগত সহায়তা ও বিনিয়োগ পেলে আগামী দিনে মসলিন আবার বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের পরিচয় বহন করবে।
সম্প্রতি তুলা গবেষণা কেন্দ্র পরিদর্শনে দেখা যায়, সারি সারি ফুটি কার্পাস তুলাগাছ। প্রায় সব গাছেই প্রচুর ফুল এসেছে, যেগুলোর অনেক ফলেও পরিণত হয়েছে। গবেষকদের তথ্যমতে, পুনরুদ্ধার করা ফুটি কার্পাস গাছের উচ্চতা ১৩ থেকে ১৪ ফুট পর্যন্ত। বীজের পরিমাণ তুলনামূলক বেশি হলেও আঁশ সূক্ষ্ম ও স্বল্প, যা মসলিন তৈরির জন্য উপযোগী।
তুলা গবেষণা কেন্দ্রের ইনচার্জ আব্দুল ওয়াহাব বলেন, ফুটি কার্পাসের অস্তিত্বের সূত্র প্রথম পাওয়া যায় দৃক গ্যালারি ও জাতীয় জাদুঘরের সংগ্রহে। সাংস্কৃতিককর্মী সাইফুল ইসলাম এর খোঁজ পান। কার্পাস তুলা থেকেই ‘কাপাসিয়া’ নামের উৎপত্তি।
ব্রিটিশ আলবার্ট মিউজিয়ামে সংরক্ষিত মোগল আমলের মসলিন শাড়ির অংশবিশেষ পরীক্ষা করে গবেষকেরা নিশ্চিত হয়েছেন, সে সময়ে ফুটি কার্পাস থেকেই এসব বস্ত্র তৈরি হতো। ইতিহাস বলছে, শীতলক্ষ্যা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে এই তুলার চাষ হতো এবং ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে মসলিন রপ্তানি করা হতো।
তুলা গবেষণা কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল আমিন বলেন, ‘ফুটি কার্পাস শুধু একটি তুলা নয়, এটি বাংলার ঐতিহ্যের প্রতীক। ইংরেজ শাসনামলে নিজস্ব শিল্প রক্ষার জন্য ব্রিটিশরা পরিকল্পিতভাবে মসলিনশিল্প ধ্বংস করেছিল। আমরা এখন সে হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে কাজ করছি।’

একসময় বিশ্বজুড়ে বাংলার গর্ব ছিল মসলিন। এর অতুলনীয় সূক্ষ্মতা, মসৃণতা ও আরামদায়ক বৈশিষ্ট্যের কারণে রাজা-বাদশাহ থেকে ইউরোপীয় অভিজাত শ্রেণির কাছে মসলিন ছিল আভিজাত্যের প্রতীক। মসলিনের প্রাণ ফুটি কার্পাস তুলা ইংরেজ শাসনামলে ঔপনিবেশিক বাণিজ্যনীতির বলি হয়ে ধীরে ধীরে হারিয়ে যায়। দীর্ঘ বছর পর সে হারানো ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারে নতুন করে আশার আলো দেখাচ্ছে গাজীপুরের শ্রীপুর তুলা গবেষণা কেন্দ্র।
ফুটি কার্পাসের পুনর্জাগরণকে ঘিরে গবেষক, ঐতিহ্য অনুরাগী ও শিল্পোদ্যোক্তাদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে নতুন উদ্দীপনা। এটি শুধু একটি বিপন্ন উদ্ভিদের পুনরুদ্ধার নয়; বরং বাংলার হারানো শিল্প-ঐতিহ্য ও সম্ভাব্য উচ্চমূল্যের টেক্সটাইল খাত পুনরুজ্জীবনের চেষ্টা।
শ্রীপুর তুলা গবেষণা কেন্দ্রের পাশাপাশি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড এবং গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে গবেষণা কার্যক্রম চালাচ্ছে। গবেষণার মূল লক্ষ্য—ফুটি কার্পাস তুলা কীভাবে বাণিজ্যিকভাবে চাষযোগ্য করা যায়, উৎপাদন ব্যয় কমিয়ে সাধারণ মানুষের নাগালে আনা যায় এবং দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে মসলিনকে আবার পরিচিত করা যায়। গবেষকদের প্রত্যাশা, সঠিক নীতিগত সহায়তা ও বিনিয়োগ পেলে আগামী দিনে মসলিন আবার বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের পরিচয় বহন করবে।
সম্প্রতি তুলা গবেষণা কেন্দ্র পরিদর্শনে দেখা যায়, সারি সারি ফুটি কার্পাস তুলাগাছ। প্রায় সব গাছেই প্রচুর ফুল এসেছে, যেগুলোর অনেক ফলেও পরিণত হয়েছে। গবেষকদের তথ্যমতে, পুনরুদ্ধার করা ফুটি কার্পাস গাছের উচ্চতা ১৩ থেকে ১৪ ফুট পর্যন্ত। বীজের পরিমাণ তুলনামূলক বেশি হলেও আঁশ সূক্ষ্ম ও স্বল্প, যা মসলিন তৈরির জন্য উপযোগী।
তুলা গবেষণা কেন্দ্রের ইনচার্জ আব্দুল ওয়াহাব বলেন, ফুটি কার্পাসের অস্তিত্বের সূত্র প্রথম পাওয়া যায় দৃক গ্যালারি ও জাতীয় জাদুঘরের সংগ্রহে। সাংস্কৃতিককর্মী সাইফুল ইসলাম এর খোঁজ পান। কার্পাস তুলা থেকেই ‘কাপাসিয়া’ নামের উৎপত্তি।
ব্রিটিশ আলবার্ট মিউজিয়ামে সংরক্ষিত মোগল আমলের মসলিন শাড়ির অংশবিশেষ পরীক্ষা করে গবেষকেরা নিশ্চিত হয়েছেন, সে সময়ে ফুটি কার্পাস থেকেই এসব বস্ত্র তৈরি হতো। ইতিহাস বলছে, শীতলক্ষ্যা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে এই তুলার চাষ হতো এবং ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে মসলিন রপ্তানি করা হতো।
তুলা গবেষণা কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল আমিন বলেন, ‘ফুটি কার্পাস শুধু একটি তুলা নয়, এটি বাংলার ঐতিহ্যের প্রতীক। ইংরেজ শাসনামলে নিজস্ব শিল্প রক্ষার জন্য ব্রিটিশরা পরিকল্পিতভাবে মসলিনশিল্প ধ্বংস করেছিল। আমরা এখন সে হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে কাজ করছি।’

ব্যবসায়ীদের মধ্যস্থতায় আন্দোলন স্থগিত করে গত ৩০ জুন ফের কাজে যোগ দিয়েছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এতে টানা দেড় মাসের স্থবিরতা কাটতে শুরু করে দেশের শুল্ক স্টেশনগুলোয়। গতি ফিরে আসে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে।
০৪ জুলাই ২০২৫
দেশের সব স্থলবন্দরের মাশুল ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। সব ধরনের সেবা, কর ও টোলহারের ক্ষেত্রে এই বর্ধিত মাশুল প্রযোজ্য হবে। বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে বলেছে, এই মাশুলই বন্দরের আয়ের প্রধান উৎস।
১ ঘণ্টা আগে
দেশের উত্তরাঞ্চলে কৃষি খাতে টেকসই উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকারের ২৫২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে। চার বছরের এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য প্রকল্পের আওতাধীন চার জেলায় আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব কৃষিপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়িয়ে উৎপাদন খরচ কমানো এবং কৃষিকে আরও লাভজনক পেশায় রূপান্তর করা।
১ ঘণ্টা আগে
দেশের পুঁজিবাজারে বড় ধরনের অনিয়ম ও অপরাধের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে যে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছিল, তা আজ এক দশক ধরে কার্যত নিষ্ক্রিয়। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অধীনে থাকা এই স্পেশাল ট্রাইব্যুনালে গত ১০ বছরে একটি নতুন মামলাও আসেনি।
৭ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশের সব স্থলবন্দরের মাশুল ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। সব ধরনের সেবা, কর ও টোলহারের ক্ষেত্রে এই বর্ধিত মাশুল প্রযোজ্য হবে। বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে বলেছে, এই মাশুলই বন্দরের আয়ের প্রধান উৎস। প্রতিবছরের মতো এবারও মাশুল বাড়ানো হয়েছে, যা আগামী ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। তবে অন্যান্য বন্দরের তুলনায় মাশুল বেশি হওয়ায় বেনাপোল স্থলবন্দরের জন্য বর্ধিত মাশুলের আলাদা প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
বেনাপোল বন্দরে যাত্রীদের জন্য ২০২৫ সালের মাশুল ছিল ৪৯ টাকা ৭৯ পয়সা, যা ২০২৬ সালে বেড়ে ৫২ টাকা ২৭ পয়সা হয়েছে। আমদানি করা বাস, ট্রাক ও লরির মাশুল নতুন বছরে ১৮৪ টাকা ৭০ পয়সা, যা আগের তুলনায় প্রায় ৯ টাকা বেশি। মোটর কার, জিপ ও পিকআপের জন্য এখন নতুন মাশুল ১১০ টাকা ৮২ পয়সা এবং মোটরসাইকেল ও বাইসাইকেলের জন্য ৩৬ টাকা ৯৫ পয়সা।
বেনাপোল বন্দরে ট্রাক ও লরির জন্য ওজন মাপার যন্ত্র ব্যবহার করতে হলে ৮৮ টাকা ৬৫ পয়সা দিতে হবে। কাগজপত্র প্রক্রিয়ার মাশুল এখন ১৯৫ টাকা ০৭ পয়সা। কোনো যানবাহন যদি রাতভর বন্দরে থাকে, তবে মাশুল ১১১ টাকা ৪৯ পয়সা। গুদামে পণ্য রাখার মাশুলও পণ্যের সময় অনুযায়ী বাড়ানো হয়েছে।
বেনাপোল ছাড়াও অন্যান্য স্থলবন্দরে মাশুল ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্য বন্দরে যাত্রীদের মাশুল ২০২৫ সালে ৪৯ টাকা ৭৯ পয়সা ছিল, যা ২০২৬ সালে বেড়ে ৫২ টাকা ২৭ পয়সা হয়েছে। আমদানি করা বাস, ট্রাক ও লরির জন্য নতুন মাশুল ১৫৯ টাকা ২২ পয়সা, মোটর কার ও জিপের জন্য ৯৫ টাকা ৫২ পয়সা এবং মোটরসাইকেল, স্কুটার ও থ্রি-হুইলারের জন্য ৪৭ টাকা ৮৩ পয়সা।

দেশের সব স্থলবন্দরের মাশুল ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। সব ধরনের সেবা, কর ও টোলহারের ক্ষেত্রে এই বর্ধিত মাশুল প্রযোজ্য হবে। বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে বলেছে, এই মাশুলই বন্দরের আয়ের প্রধান উৎস। প্রতিবছরের মতো এবারও মাশুল বাড়ানো হয়েছে, যা আগামী ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। তবে অন্যান্য বন্দরের তুলনায় মাশুল বেশি হওয়ায় বেনাপোল স্থলবন্দরের জন্য বর্ধিত মাশুলের আলাদা প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
বেনাপোল বন্দরে যাত্রীদের জন্য ২০২৫ সালের মাশুল ছিল ৪৯ টাকা ৭৯ পয়সা, যা ২০২৬ সালে বেড়ে ৫২ টাকা ২৭ পয়সা হয়েছে। আমদানি করা বাস, ট্রাক ও লরির মাশুল নতুন বছরে ১৮৪ টাকা ৭০ পয়সা, যা আগের তুলনায় প্রায় ৯ টাকা বেশি। মোটর কার, জিপ ও পিকআপের জন্য এখন নতুন মাশুল ১১০ টাকা ৮২ পয়সা এবং মোটরসাইকেল ও বাইসাইকেলের জন্য ৩৬ টাকা ৯৫ পয়সা।
বেনাপোল বন্দরে ট্রাক ও লরির জন্য ওজন মাপার যন্ত্র ব্যবহার করতে হলে ৮৮ টাকা ৬৫ পয়সা দিতে হবে। কাগজপত্র প্রক্রিয়ার মাশুল এখন ১৯৫ টাকা ০৭ পয়সা। কোনো যানবাহন যদি রাতভর বন্দরে থাকে, তবে মাশুল ১১১ টাকা ৪৯ পয়সা। গুদামে পণ্য রাখার মাশুলও পণ্যের সময় অনুযায়ী বাড়ানো হয়েছে।
বেনাপোল ছাড়াও অন্যান্য স্থলবন্দরে মাশুল ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্য বন্দরে যাত্রীদের মাশুল ২০২৫ সালে ৪৯ টাকা ৭৯ পয়সা ছিল, যা ২০২৬ সালে বেড়ে ৫২ টাকা ২৭ পয়সা হয়েছে। আমদানি করা বাস, ট্রাক ও লরির জন্য নতুন মাশুল ১৫৯ টাকা ২২ পয়সা, মোটর কার ও জিপের জন্য ৯৫ টাকা ৫২ পয়সা এবং মোটরসাইকেল, স্কুটার ও থ্রি-হুইলারের জন্য ৪৭ টাকা ৮৩ পয়সা।

ব্যবসায়ীদের মধ্যস্থতায় আন্দোলন স্থগিত করে গত ৩০ জুন ফের কাজে যোগ দিয়েছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এতে টানা দেড় মাসের স্থবিরতা কাটতে শুরু করে দেশের শুল্ক স্টেশনগুলোয়। গতি ফিরে আসে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে।
০৪ জুলাই ২০২৫
একসময় বিশ্বজুড়ে বাংলার গর্ব ছিল মসলিন। এর অতুলনীয় সূক্ষ্মতা, মসৃণতা ও আরামদায়ক বৈশিষ্ট্যের কারণে রাজা-বাদশাহ থেকে ইউরোপীয় অভিজাত শ্রেণির কাছে মসলিন ছিল আভিজাত্যের প্রতীক। মসলিনের প্রাণ ফুটি কার্পাস তুলা ইংরেজ শাসনামলে ঔপনিবেশিক বাণিজ্যনীতির বলি হয়ে ধীরে ধীরে হারিয়ে যায়।
১ ঘণ্টা আগে
দেশের উত্তরাঞ্চলে কৃষি খাতে টেকসই উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকারের ২৫২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে। চার বছরের এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য প্রকল্পের আওতাধীন চার জেলায় আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব কৃষিপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়িয়ে উৎপাদন খরচ কমানো এবং কৃষিকে আরও লাভজনক পেশায় রূপান্তর করা।
১ ঘণ্টা আগে
দেশের পুঁজিবাজারে বড় ধরনের অনিয়ম ও অপরাধের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে যে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছিল, তা আজ এক দশক ধরে কার্যত নিষ্ক্রিয়। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অধীনে থাকা এই স্পেশাল ট্রাইব্যুনালে গত ১০ বছরে একটি নতুন মামলাও আসেনি।
৭ ঘণ্টা আগেমাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা

দেশের উত্তরাঞ্চলে কৃষি খাতে টেকসই উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকারের ২৫২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে। চার বছরের এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য প্রকল্পের আওতাধীন চার জেলায় আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব কৃষিপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়িয়ে উৎপাদন খরচ কমানো এবং কৃষিকে আরও লাভজনক পেশায় রূপান্তর করা।
বগুড়া কৃষি অঞ্চলের টেকসই উন্নয়ন নামের এই প্রকল্প ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে ২০৩০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বগুড়া, জয়পুরহাট, পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলায় বাস্তবায়িত হবে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) প্রকল্পটির বাস্তবায়নকারী সংস্থা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে এবং পুরো ব্যয়ভার বহন করবে সরকার। আধুনিক ফসল ব্যবস্থাপনা, পানিসাশ্রয়ী প্রযুক্তি এবং কৃষকের দক্ষতা উন্নয়ন—এসবের সমন্বয়ে প্রকল্পের কাঠামো তৈরি হয়েছে।
ডিএই মহাপরিচালক এস এম সোহরাব উদ্দিন বলেন, যমুনা-করতোয়া-পদ্মা-বাঙ্গালীবিধৌত বগুড়া অঞ্চলের কৃষি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ঝুঁকির মুখে পড়েছে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়া, কম বৃষ্টিপাত, তাপমাত্রা বৃদ্ধি, বন্যা ও নদীভাঙন এবং অবকাঠামো উন্নয়নের কারণে আবাদি জমি কমছে। অপর দিকে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের সংখ্যা বাড়ছে। সার্বিক বাস্তবতা বিবেচনায় এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) প্রকল্পসংশ্লিষ্ট নথিপত্রে দাবি করা হয়েছে, আধুনিক ফসল ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে উৎপাদন ৫ শতাংশ বাড়ানোর পাশাপাশি শস্য নিবিড়তা ২৩৬ শতাংশ থেকে ২৪১ শতাংশে উন্নীত করা হবে। এক হাজার নতুন দক্ষ কৃষি উদ্যোক্তা তৈরি এবং ৩৫ হাজার কৃষি মানবসম্পদকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। কৃষিযন্ত্রের ব্যবহার বাড়িয়ে উৎপাদন ব্যয় কমানোও প্রকল্পের লক্ষ্য।
এ ছাড়া প্রকল্পের আওতায় প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে থাকছে বগুড়ায় উপপরিচালকের কার্যালয় ও প্রশিক্ষণকেন্দ্র নির্মাণ, ২০০টি পেঁয়াজ সংরক্ষণাগার, তিনটি আধুনিক ফল-সবজি ও কৃষিপণ্য সংরক্ষণাগার স্থাপন এবং ৩ হাজার ১৮৫টি কৃষি যন্ত্রপাতি বিতরণ। কৃষকদের জন্য মোট ৪ হাজার ৮৪০ ব্যাচ প্রশিক্ষণ আয়োজনের পাশাপাশি ৪১ হাজারের বেশি প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রদর্শনী এবং ৭০০টি মাঠ দিবস ও কারিগরি আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিকল্পনাসচিব এস এম শাকিল আখতার আজকের পত্রিকাকে বলেন, টেকসই কৃষি উন্নয়নের স্বার্থে প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে। তবে নির্ধারিত কর্মসূচি মাঠপর্যায়ে কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত হয় কি না, সেটাই প্রকল্পের সাফল্য নির্ধারণ করবে।
একই বিষয়ে কৃষিসচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান আজকের পত্রিকাকে জানান, পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার আবাদি জমির সঠিক ফসল ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করবে। উৎপাদিত ফসলের সংরক্ষণব্যবস্থা উন্নত হলে কৃষকের ক্ষতি কমবে এবং আয়ের সুযোগ বাড়বে।

দেশের উত্তরাঞ্চলে কৃষি খাতে টেকসই উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকারের ২৫২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে। চার বছরের এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য প্রকল্পের আওতাধীন চার জেলায় আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব কৃষিপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়িয়ে উৎপাদন খরচ কমানো এবং কৃষিকে আরও লাভজনক পেশায় রূপান্তর করা।
বগুড়া কৃষি অঞ্চলের টেকসই উন্নয়ন নামের এই প্রকল্প ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে ২০৩০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বগুড়া, জয়পুরহাট, পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলায় বাস্তবায়িত হবে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) প্রকল্পটির বাস্তবায়নকারী সংস্থা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে এবং পুরো ব্যয়ভার বহন করবে সরকার। আধুনিক ফসল ব্যবস্থাপনা, পানিসাশ্রয়ী প্রযুক্তি এবং কৃষকের দক্ষতা উন্নয়ন—এসবের সমন্বয়ে প্রকল্পের কাঠামো তৈরি হয়েছে।
ডিএই মহাপরিচালক এস এম সোহরাব উদ্দিন বলেন, যমুনা-করতোয়া-পদ্মা-বাঙ্গালীবিধৌত বগুড়া অঞ্চলের কৃষি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ঝুঁকির মুখে পড়েছে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়া, কম বৃষ্টিপাত, তাপমাত্রা বৃদ্ধি, বন্যা ও নদীভাঙন এবং অবকাঠামো উন্নয়নের কারণে আবাদি জমি কমছে। অপর দিকে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের সংখ্যা বাড়ছে। সার্বিক বাস্তবতা বিবেচনায় এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) প্রকল্পসংশ্লিষ্ট নথিপত্রে দাবি করা হয়েছে, আধুনিক ফসল ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে উৎপাদন ৫ শতাংশ বাড়ানোর পাশাপাশি শস্য নিবিড়তা ২৩৬ শতাংশ থেকে ২৪১ শতাংশে উন্নীত করা হবে। এক হাজার নতুন দক্ষ কৃষি উদ্যোক্তা তৈরি এবং ৩৫ হাজার কৃষি মানবসম্পদকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। কৃষিযন্ত্রের ব্যবহার বাড়িয়ে উৎপাদন ব্যয় কমানোও প্রকল্পের লক্ষ্য।
এ ছাড়া প্রকল্পের আওতায় প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে থাকছে বগুড়ায় উপপরিচালকের কার্যালয় ও প্রশিক্ষণকেন্দ্র নির্মাণ, ২০০টি পেঁয়াজ সংরক্ষণাগার, তিনটি আধুনিক ফল-সবজি ও কৃষিপণ্য সংরক্ষণাগার স্থাপন এবং ৩ হাজার ১৮৫টি কৃষি যন্ত্রপাতি বিতরণ। কৃষকদের জন্য মোট ৪ হাজার ৮৪০ ব্যাচ প্রশিক্ষণ আয়োজনের পাশাপাশি ৪১ হাজারের বেশি প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রদর্শনী এবং ৭০০টি মাঠ দিবস ও কারিগরি আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিকল্পনাসচিব এস এম শাকিল আখতার আজকের পত্রিকাকে বলেন, টেকসই কৃষি উন্নয়নের স্বার্থে প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে। তবে নির্ধারিত কর্মসূচি মাঠপর্যায়ে কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত হয় কি না, সেটাই প্রকল্পের সাফল্য নির্ধারণ করবে।
একই বিষয়ে কৃষিসচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান আজকের পত্রিকাকে জানান, পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার আবাদি জমির সঠিক ফসল ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করবে। উৎপাদিত ফসলের সংরক্ষণব্যবস্থা উন্নত হলে কৃষকের ক্ষতি কমবে এবং আয়ের সুযোগ বাড়বে।

ব্যবসায়ীদের মধ্যস্থতায় আন্দোলন স্থগিত করে গত ৩০ জুন ফের কাজে যোগ দিয়েছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এতে টানা দেড় মাসের স্থবিরতা কাটতে শুরু করে দেশের শুল্ক স্টেশনগুলোয়। গতি ফিরে আসে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে।
০৪ জুলাই ২০২৫
একসময় বিশ্বজুড়ে বাংলার গর্ব ছিল মসলিন। এর অতুলনীয় সূক্ষ্মতা, মসৃণতা ও আরামদায়ক বৈশিষ্ট্যের কারণে রাজা-বাদশাহ থেকে ইউরোপীয় অভিজাত শ্রেণির কাছে মসলিন ছিল আভিজাত্যের প্রতীক। মসলিনের প্রাণ ফুটি কার্পাস তুলা ইংরেজ শাসনামলে ঔপনিবেশিক বাণিজ্যনীতির বলি হয়ে ধীরে ধীরে হারিয়ে যায়।
১ ঘণ্টা আগে
দেশের সব স্থলবন্দরের মাশুল ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। সব ধরনের সেবা, কর ও টোলহারের ক্ষেত্রে এই বর্ধিত মাশুল প্রযোজ্য হবে। বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে বলেছে, এই মাশুলই বন্দরের আয়ের প্রধান উৎস।
১ ঘণ্টা আগে
দেশের পুঁজিবাজারে বড় ধরনের অনিয়ম ও অপরাধের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে যে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছিল, তা আজ এক দশক ধরে কার্যত নিষ্ক্রিয়। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অধীনে থাকা এই স্পেশাল ট্রাইব্যুনালে গত ১০ বছরে একটি নতুন মামলাও আসেনি।
৭ ঘণ্টা আগেআসাদুজ্জামান নূর, ঢাকা

দেশের পুঁজিবাজারে বড় ধরনের অনিয়ম ও অপরাধের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে যে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছিল, তা আজ এক দশক ধরে কার্যত নিষ্ক্রিয়। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অধীনে থাকা এই স্পেশাল ট্রাইব্যুনালে গত ১০ বছরে একটি নতুন মামলাও আসেনি। ১৯৯৬ ও ২০১০ সালের বাজারধস-সংক্রান্ত ২৭টি পুরোনো মামলাই কেবল এই আদালতের অস্তিত্বের সাক্ষ্য বহন করছে। বাস্তবে রাজধানীর পল্টনে অবস্থিত ট্রাইব্যুনাল ভবনটি এখন আর বিচারকক্ষ নয়; বরং অব্যবহৃত আসবাবের গুদামঘরে পরিণত হয়েছে।
মূলত জরিমানা ও প্রশাসনিক ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করেই এগোচ্ছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। তবে এই কাঠামোয় প্রকৃত শাস্তি আর দায় নির্ধারণের কার্যকর পথ প্রায় বন্ধই রয়ে গেছে। তদন্তে অপরাধ শনাক্ত হলেও মামলা করা হয় না, আর যেসব মামলা করা হয়েছে সেগুলোর বড় অংশ বছরের পর বছর উচ্চ আদালতে ঝুলে রয়েছে। এর ফল দাঁড়িয়েছে স্পষ্ট—ট্রাইব্যুনাল থাকলেও বিচার কার্যত অনুপস্থিত।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আইন, আদালত ও কাঠামো থাকা সত্ত্বেও পুঁজিবাজারে বিচারিকপ্রক্রিয়া অব্যাহত না থাকলে, দায়বদ্ধতা চিহ্নিত না হলে এবং শাস্তি না হলে বাজারে দায়হীনতা ও শাস্তিহীনতার সংস্কৃতি আরও উদ্বেগজনকভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে।
পুঁজিবাজারে বড় কেলেঙ্কারির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সালে জেলা ও দায়রা জজ পদমর্যাদার বিচারকের নেতৃত্বে বিএসইসির এই স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। উদ্দেশ্য ছিল, বাজারে শাস্তির দৃষ্টান্ত স্থাপন এবং অপরাধীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা; কিন্তু বাস্তবে সে উদ্দেশ্য পূরণ হয়নি।
তথ্য অনুযায়ী, ২৭ মামলার মধ্যে এখন পর্যন্ত মাত্র ১০টি নিষ্পত্তি হয়েছে। ১৪টি মামলা উচ্চ আদালতে ঝুলে রয়েছে, ৩টি স্থগিত। এ ছাড়া ২০১৫ সালের পর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে করা চারটি মামলাও আজ পর্যন্ত স্পেশাল ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করতে পারেনি বিএসইসি।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিএসসির বিশেষ ট্রাইব্যুনাল একজন জেলা ও দায়রা জজসহ ছয়জন কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে নিয়ে চললেও বাস্তবে ট্রাইব্যুনালের এজলাসে কোনো বিচারিক কার্যক্রম নেই। আসামিদের জন্য নির্ধারিত কক্ষসহ পুরো বিচারিক আদালত এখন ভাঙাচোরা চেয়ার-টেবিলের গুদামঘরে পরিণত হয়েছে, ধুলাবালু ও ময়লা-আবর্জনার স্তূপ জমেছে। আবার বিনিয়োগকারীদের বড় অংশই জানেন না এমন একটি ট্রাইব্যুনাল আদৌ আছে। বাজারসংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনদের মধ্যেও এর কার্যক্রম সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা নেই।
এ বিষয়ে বিনিয়োগকারী সানী মাহমুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিএসইসির যে স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল আছে, সেটাই তো জানি না। এটা কী কাজ করে, সেটাও আমার জানা নেই।’
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আহমেদ রশিদ লালী বলেন, ‘এটার সর্বশেষ অবস্থা কী, সেটাই আমরা জানি না। এখনো কার্যক্রম আছে কি না, সেটাও অনিশ্চিত।’
এদিকে বিএসইসি জরিমানা ও প্রশাসনিক ব্যবস্থার মাধ্যমে অনিয়ম দমন করছে। সংস্থাটির তথ্যমতে, চলতি বছরেই সাড়ে তিন শর বেশি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দেড় বছরে জরিমানার পরিমাণ ছাড়িয়েছে ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। কিছু মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের লাইসেন্সও বাতিল করা হয়েছে। তবে এসব জরিমানার বড় অংশ আদায় হচ্ছে না। আবার জরিমানা আরোপের পর সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মামলা করার সুযোগও থাকছে না।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম বলেন, ‘মামলা ট্রান্সফার করে আনলেও সেগুলো আবার উচ্চ আদালতে চলে যাচ্ছে। দৃশ্যমান আর্থিক ক্ষতি চিহ্নিত করে জরিমানা করাই কি যথেষ্ট নয়?’
তবে বিশ্লেষকদের মতে, শুধু জরিমানা দিয়ে বাজারে শৃঙ্খলা ফেরানো সম্ভব নয়। বরং অভিযুক্ত ব্যক্তিদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘ট্রাইব্যুনাল সক্রিয় থাকলে প্রকৃত অপরাধীরা শাস্তি পেত এবং অন্যরা অপরাধে নিরুৎসাহিত হতো।’
বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, ‘হাজার হাজার কোটি টাকা জরিমানা করে লাভ নেই। জরিমানা আদায়ই হচ্ছে না; বরং বাজারে অস্বস্তি বাড়ছে।’

দেশের পুঁজিবাজারে বড় ধরনের অনিয়ম ও অপরাধের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে যে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছিল, তা আজ এক দশক ধরে কার্যত নিষ্ক্রিয়। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অধীনে থাকা এই স্পেশাল ট্রাইব্যুনালে গত ১০ বছরে একটি নতুন মামলাও আসেনি। ১৯৯৬ ও ২০১০ সালের বাজারধস-সংক্রান্ত ২৭টি পুরোনো মামলাই কেবল এই আদালতের অস্তিত্বের সাক্ষ্য বহন করছে। বাস্তবে রাজধানীর পল্টনে অবস্থিত ট্রাইব্যুনাল ভবনটি এখন আর বিচারকক্ষ নয়; বরং অব্যবহৃত আসবাবের গুদামঘরে পরিণত হয়েছে।
মূলত জরিমানা ও প্রশাসনিক ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করেই এগোচ্ছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। তবে এই কাঠামোয় প্রকৃত শাস্তি আর দায় নির্ধারণের কার্যকর পথ প্রায় বন্ধই রয়ে গেছে। তদন্তে অপরাধ শনাক্ত হলেও মামলা করা হয় না, আর যেসব মামলা করা হয়েছে সেগুলোর বড় অংশ বছরের পর বছর উচ্চ আদালতে ঝুলে রয়েছে। এর ফল দাঁড়িয়েছে স্পষ্ট—ট্রাইব্যুনাল থাকলেও বিচার কার্যত অনুপস্থিত।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আইন, আদালত ও কাঠামো থাকা সত্ত্বেও পুঁজিবাজারে বিচারিকপ্রক্রিয়া অব্যাহত না থাকলে, দায়বদ্ধতা চিহ্নিত না হলে এবং শাস্তি না হলে বাজারে দায়হীনতা ও শাস্তিহীনতার সংস্কৃতি আরও উদ্বেগজনকভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে।
পুঁজিবাজারে বড় কেলেঙ্কারির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সালে জেলা ও দায়রা জজ পদমর্যাদার বিচারকের নেতৃত্বে বিএসইসির এই স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। উদ্দেশ্য ছিল, বাজারে শাস্তির দৃষ্টান্ত স্থাপন এবং অপরাধীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা; কিন্তু বাস্তবে সে উদ্দেশ্য পূরণ হয়নি।
তথ্য অনুযায়ী, ২৭ মামলার মধ্যে এখন পর্যন্ত মাত্র ১০টি নিষ্পত্তি হয়েছে। ১৪টি মামলা উচ্চ আদালতে ঝুলে রয়েছে, ৩টি স্থগিত। এ ছাড়া ২০১৫ সালের পর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে করা চারটি মামলাও আজ পর্যন্ত স্পেশাল ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করতে পারেনি বিএসইসি।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিএসসির বিশেষ ট্রাইব্যুনাল একজন জেলা ও দায়রা জজসহ ছয়জন কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে নিয়ে চললেও বাস্তবে ট্রাইব্যুনালের এজলাসে কোনো বিচারিক কার্যক্রম নেই। আসামিদের জন্য নির্ধারিত কক্ষসহ পুরো বিচারিক আদালত এখন ভাঙাচোরা চেয়ার-টেবিলের গুদামঘরে পরিণত হয়েছে, ধুলাবালু ও ময়লা-আবর্জনার স্তূপ জমেছে। আবার বিনিয়োগকারীদের বড় অংশই জানেন না এমন একটি ট্রাইব্যুনাল আদৌ আছে। বাজারসংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনদের মধ্যেও এর কার্যক্রম সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা নেই।
এ বিষয়ে বিনিয়োগকারী সানী মাহমুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিএসইসির যে স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল আছে, সেটাই তো জানি না। এটা কী কাজ করে, সেটাও আমার জানা নেই।’
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আহমেদ রশিদ লালী বলেন, ‘এটার সর্বশেষ অবস্থা কী, সেটাই আমরা জানি না। এখনো কার্যক্রম আছে কি না, সেটাও অনিশ্চিত।’
এদিকে বিএসইসি জরিমানা ও প্রশাসনিক ব্যবস্থার মাধ্যমে অনিয়ম দমন করছে। সংস্থাটির তথ্যমতে, চলতি বছরেই সাড়ে তিন শর বেশি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দেড় বছরে জরিমানার পরিমাণ ছাড়িয়েছে ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। কিছু মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের লাইসেন্সও বাতিল করা হয়েছে। তবে এসব জরিমানার বড় অংশ আদায় হচ্ছে না। আবার জরিমানা আরোপের পর সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মামলা করার সুযোগও থাকছে না।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম বলেন, ‘মামলা ট্রান্সফার করে আনলেও সেগুলো আবার উচ্চ আদালতে চলে যাচ্ছে। দৃশ্যমান আর্থিক ক্ষতি চিহ্নিত করে জরিমানা করাই কি যথেষ্ট নয়?’
তবে বিশ্লেষকদের মতে, শুধু জরিমানা দিয়ে বাজারে শৃঙ্খলা ফেরানো সম্ভব নয়। বরং অভিযুক্ত ব্যক্তিদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘ট্রাইব্যুনাল সক্রিয় থাকলে প্রকৃত অপরাধীরা শাস্তি পেত এবং অন্যরা অপরাধে নিরুৎসাহিত হতো।’
বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, ‘হাজার হাজার কোটি টাকা জরিমানা করে লাভ নেই। জরিমানা আদায়ই হচ্ছে না; বরং বাজারে অস্বস্তি বাড়ছে।’

ব্যবসায়ীদের মধ্যস্থতায় আন্দোলন স্থগিত করে গত ৩০ জুন ফের কাজে যোগ দিয়েছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এতে টানা দেড় মাসের স্থবিরতা কাটতে শুরু করে দেশের শুল্ক স্টেশনগুলোয়। গতি ফিরে আসে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে।
০৪ জুলাই ২০২৫
একসময় বিশ্বজুড়ে বাংলার গর্ব ছিল মসলিন। এর অতুলনীয় সূক্ষ্মতা, মসৃণতা ও আরামদায়ক বৈশিষ্ট্যের কারণে রাজা-বাদশাহ থেকে ইউরোপীয় অভিজাত শ্রেণির কাছে মসলিন ছিল আভিজাত্যের প্রতীক। মসলিনের প্রাণ ফুটি কার্পাস তুলা ইংরেজ শাসনামলে ঔপনিবেশিক বাণিজ্যনীতির বলি হয়ে ধীরে ধীরে হারিয়ে যায়।
১ ঘণ্টা আগে
দেশের সব স্থলবন্দরের মাশুল ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। সব ধরনের সেবা, কর ও টোলহারের ক্ষেত্রে এই বর্ধিত মাশুল প্রযোজ্য হবে। বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে বলেছে, এই মাশুলই বন্দরের আয়ের প্রধান উৎস।
১ ঘণ্টা আগে
দেশের উত্তরাঞ্চলে কৃষি খাতে টেকসই উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকারের ২৫২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে। চার বছরের এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য প্রকল্পের আওতাধীন চার জেলায় আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব কৃষিপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়িয়ে উৎপাদন খরচ কমানো এবং কৃষিকে আরও লাভজনক পেশায় রূপান্তর করা।
১ ঘণ্টা আগে