
জাপান ও বাংলাদেশ ২০২৫ সাল নাগাদ অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি চূড়ান্ত করতে আলোচনা শুরুর অপেক্ষায় আছে। ২০২৬ সালে জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশগুলোর তালিকা থেকে বেরিয়ে গেলে উন্নত দেশগুলোতে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা আর পাবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বাংলাদেশ ‘ক্ষয়িষ্ণু গণতন্ত্রের’ দেশ। কিন্তু এর মিত্র দেশ জাপানের কাছে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ১৭ কোটির বেশি জনসংখ্যার এই দেশের অবস্থান। বাংলাদেশ এমন এক দেশ, যার জিডিপি ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম ও মালয়েশিয়ার সম্মিলিত জিডিপির চেয়ে বড়।
সরকার নিয়ে আপত্তি থাকলেও চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠতর অর্থনৈতিক সম্পর্ক যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের দ্বিধায় ফেলছে। তারা বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে চাইলেও বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও অবকাঠামো উন্নয়নে সহযোগিতার করার ব্যাপারে জাপানকে উৎসাহিত করেছে।
আর এ সবই হচ্ছে ভারতের সহযোগিতায়। ২০২৩ সালের মার্চ মাসে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার নয়াদিল্লি সফরের পর মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প এবং ঢাকার উত্তরে ছোট রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের জন্য জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) বাংলাদেশকে ১১২ কোটি ডলার নতুন ঋণ দিতে সম্মত হয়েছে।
উত্তর-পূর্ব ভারতেও সক্রিয় আছে জাইকা। মহাসড়কসহ ত্রিপুরা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত শত শত কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ ও উন্নয়নে অর্থায়ন করছে জাইকা। মাতারবাড়ী প্রকল্পের আওতায় আছে খননের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রথম গভীর নৌবন্দর নির্মাণ এবং কক্সবাজারে বিদ্যুৎকেন্দ্র ও শিল্প পার্ক নির্মাণ।
সেখান থেকে চট্টগ্রামে যাওয়ার রাস্তা উন্নত হলে ঢাকা ও বাংলাদেশের অন্যান্য অংশ এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্য থেকে পণ্য পরিবহন সহজতর হবে। সুমিটোমো করপোরেশন, তোশিবা ও আইএইচআই এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে। গভীর নৌবন্দরটি ২০২৭ সালে চালু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
গত এপ্রিলে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় তৃতীয় ভারত-জাপান উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যাতে উত্তর-পূর্ব ভারত ও বাংলাদেশকে ঘিরে এই অঞ্চলের বাণিজ্যিক সম্ভাবনা উপলব্ধি করার উপায় নিয়ে আলোচনা করা হয়। ভারত ও বাংলাদেশের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী এবং ভারতে জাপানের রাষ্ট্রদূত সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
পরে এপ্রিলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার সঙ্গে বৈঠকের জন্য জাপানে যান। তখন এক যৌথ বিবৃতিতে ২০১৪ সালে দুই দেশের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত অংশীদারত্বকে পরবর্তী ৫০ বছরের জন্য ‘কৌশলগত অংশীদারত্বে’ উন্নীত করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়।
অর্থনৈতিক দিক থেকে বাংলাদেশ এবং এর আশপাশের অঞ্চলের উন্নয়নে ‘স্বচ্ছ ও ন্যায্য’ অর্থায়নের মাধ্যমে উচ্চমানের অবকাঠামো নির্মাণের দিকে গুরুত্ব দিয়েছেন তারা। মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্পের ক্ষেত্রে লজিস্টিক, জ্বালানি ও শিল্পের দিকগুলো বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তিতে সহযোগিতার কথাও বলা হয়েছে।
২০২২ সালে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকীতে বে অব বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্ট উদ্যোগের অধীনে অগ্রগতি এবং বাংলাদেশের প্রথম বৈদ্যুতিক ট্রেন, ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট লাইন ৬-এর উদ্বোধনে উভয় রাষ্ট্রপ্রধানই তাদের সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট লাইন-৬ নির্মাণে সহযোগিতা করেছিল জাইকা। জাপান বাংলাদেশকে সাইবার সিকিউরিটিতে তার দক্ষতাও দেবে।
২২ জানুয়ারি ঢাকা সফরকালে জাপানের অর্থনীতি, বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী ইয়াসুতোশি নিশিমুরা বলেন, জাপান পারস্পরিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে একটি অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি করতে চায়। বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ায় অনুকূল শুল্কব্যবস্থা চালু হয়েছে। এই মন্তব্যের সঙ্গে নির্বাচনের সম্পর্ক ছিল না, এটি ছিল দীর্ঘদিনের নীতির ধারাবাহিকতার প্রকাশ।
১৯৭১ সালে স্বাধীনতা ঘোষণার পর থেকে জাপান বাংলাদেশকে বৈদেশিক উন্নয়ন সহায়তার ক্ষেত্রে বৃহত্তম দাতা দেশ ছিল। কিন্তু জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ২০১৪ সালে এই সম্পর্ককে নতুন উচ্চাতায় নিয়ে যান। উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক ধারণাও তার সৃষ্টি।
সে বছরের মে মাসে টোকিওতে অনুষ্ঠিত এক শীর্ষ বৈঠকে জাপান-বাংলাদেশ সমন্বিত অংশীদারত্বের বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছেছিল। বে অব বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্ট নির্মাণসহ ভবিষ্যৎ প্রকল্পের বিষয়ে আলোচনা করতে জাইকার প্রেসিডেন্ট এরপর জুন মাসে বাংলাদেশ সফর করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় নিরাপত্তা সহযোগিতা, উন্নয়ন সহায়তা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা করতে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে শিনজো আবে বাংলাদেশ সফর করেন। টেক্সটাইলের ওপর নির্ভরতা কমাতে এবং উৎপাদন মূল্যশৃঙ্খলে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই বন্দর ও পানি নিয়ন্ত্রণ সুবিধা, সড়ক, রেলপথ, সেতু, বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং অন্যান্য অবকাঠামোগত উন্নয়নের কথা প্রচার করছে।
বৈদেশিক সাহায্য অব্যাহত রেখে বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং আরও অবকাঠামো চুক্তি স্বাক্ষরের ব্যাপারে আশাবাদী ছিল জাপান। জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশন (জেট্রো) গত বছর উল্লেখ করেছে যে, বাংলাদেশে কাজ করা জাপানি কোম্পানির সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ৩৪০টিতে উন্নীত হয়েছে।
জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি বেশ। রপ্তানির চেয়ে আমদানি প্রায় ৬০ শতাংশ বেশি। বাংলাদেশের মাঝারি আকারের বাণিজ্য অংশীদার হচ্ছে জাপান। তবে অবকাঠামো, নকশা ও নির্মাণ পরিষেবাগুলোর ক্ষেত্রে জাপানই বাংলাদেশের বৃহত্তম সরবরাহকারী দেশ।
জাপানের সঙ্গে সহযোগিতা চীনের ওপর বাংলাদেশের নির্ভরশীলতা কমাতে পারে। পাশাপাশি ভারত, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সঙ্গে সম্পর্ক নতুন করে সাজানোর সুযোগও দেয়। জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর জাপানের সঙ্গে এই ভারসাম্যমূলক চুক্তি বাংলাদেশের জন্য আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।

জাপান ও বাংলাদেশ ২০২৫ সাল নাগাদ অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি চূড়ান্ত করতে আলোচনা শুরুর অপেক্ষায় আছে। ২০২৬ সালে জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশগুলোর তালিকা থেকে বেরিয়ে গেলে উন্নত দেশগুলোতে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা আর পাবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বাংলাদেশ ‘ক্ষয়িষ্ণু গণতন্ত্রের’ দেশ। কিন্তু এর মিত্র দেশ জাপানের কাছে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ১৭ কোটির বেশি জনসংখ্যার এই দেশের অবস্থান। বাংলাদেশ এমন এক দেশ, যার জিডিপি ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম ও মালয়েশিয়ার সম্মিলিত জিডিপির চেয়ে বড়।
সরকার নিয়ে আপত্তি থাকলেও চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠতর অর্থনৈতিক সম্পর্ক যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের দ্বিধায় ফেলছে। তারা বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে চাইলেও বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও অবকাঠামো উন্নয়নে সহযোগিতার করার ব্যাপারে জাপানকে উৎসাহিত করেছে।
আর এ সবই হচ্ছে ভারতের সহযোগিতায়। ২০২৩ সালের মার্চ মাসে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার নয়াদিল্লি সফরের পর মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প এবং ঢাকার উত্তরে ছোট রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের জন্য জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) বাংলাদেশকে ১১২ কোটি ডলার নতুন ঋণ দিতে সম্মত হয়েছে।
উত্তর-পূর্ব ভারতেও সক্রিয় আছে জাইকা। মহাসড়কসহ ত্রিপুরা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত শত শত কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ ও উন্নয়নে অর্থায়ন করছে জাইকা। মাতারবাড়ী প্রকল্পের আওতায় আছে খননের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রথম গভীর নৌবন্দর নির্মাণ এবং কক্সবাজারে বিদ্যুৎকেন্দ্র ও শিল্প পার্ক নির্মাণ।
সেখান থেকে চট্টগ্রামে যাওয়ার রাস্তা উন্নত হলে ঢাকা ও বাংলাদেশের অন্যান্য অংশ এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্য থেকে পণ্য পরিবহন সহজতর হবে। সুমিটোমো করপোরেশন, তোশিবা ও আইএইচআই এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে। গভীর নৌবন্দরটি ২০২৭ সালে চালু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
গত এপ্রিলে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় তৃতীয় ভারত-জাপান উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যাতে উত্তর-পূর্ব ভারত ও বাংলাদেশকে ঘিরে এই অঞ্চলের বাণিজ্যিক সম্ভাবনা উপলব্ধি করার উপায় নিয়ে আলোচনা করা হয়। ভারত ও বাংলাদেশের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী এবং ভারতে জাপানের রাষ্ট্রদূত সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
পরে এপ্রিলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার সঙ্গে বৈঠকের জন্য জাপানে যান। তখন এক যৌথ বিবৃতিতে ২০১৪ সালে দুই দেশের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত অংশীদারত্বকে পরবর্তী ৫০ বছরের জন্য ‘কৌশলগত অংশীদারত্বে’ উন্নীত করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়।
অর্থনৈতিক দিক থেকে বাংলাদেশ এবং এর আশপাশের অঞ্চলের উন্নয়নে ‘স্বচ্ছ ও ন্যায্য’ অর্থায়নের মাধ্যমে উচ্চমানের অবকাঠামো নির্মাণের দিকে গুরুত্ব দিয়েছেন তারা। মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্পের ক্ষেত্রে লজিস্টিক, জ্বালানি ও শিল্পের দিকগুলো বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তিতে সহযোগিতার কথাও বলা হয়েছে।
২০২২ সালে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকীতে বে অব বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্ট উদ্যোগের অধীনে অগ্রগতি এবং বাংলাদেশের প্রথম বৈদ্যুতিক ট্রেন, ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট লাইন ৬-এর উদ্বোধনে উভয় রাষ্ট্রপ্রধানই তাদের সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট লাইন-৬ নির্মাণে সহযোগিতা করেছিল জাইকা। জাপান বাংলাদেশকে সাইবার সিকিউরিটিতে তার দক্ষতাও দেবে।
২২ জানুয়ারি ঢাকা সফরকালে জাপানের অর্থনীতি, বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী ইয়াসুতোশি নিশিমুরা বলেন, জাপান পারস্পরিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে একটি অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি করতে চায়। বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ায় অনুকূল শুল্কব্যবস্থা চালু হয়েছে। এই মন্তব্যের সঙ্গে নির্বাচনের সম্পর্ক ছিল না, এটি ছিল দীর্ঘদিনের নীতির ধারাবাহিকতার প্রকাশ।
১৯৭১ সালে স্বাধীনতা ঘোষণার পর থেকে জাপান বাংলাদেশকে বৈদেশিক উন্নয়ন সহায়তার ক্ষেত্রে বৃহত্তম দাতা দেশ ছিল। কিন্তু জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ২০১৪ সালে এই সম্পর্ককে নতুন উচ্চাতায় নিয়ে যান। উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক ধারণাও তার সৃষ্টি।
সে বছরের মে মাসে টোকিওতে অনুষ্ঠিত এক শীর্ষ বৈঠকে জাপান-বাংলাদেশ সমন্বিত অংশীদারত্বের বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছেছিল। বে অব বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্ট নির্মাণসহ ভবিষ্যৎ প্রকল্পের বিষয়ে আলোচনা করতে জাইকার প্রেসিডেন্ট এরপর জুন মাসে বাংলাদেশ সফর করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় নিরাপত্তা সহযোগিতা, উন্নয়ন সহায়তা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা করতে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে শিনজো আবে বাংলাদেশ সফর করেন। টেক্সটাইলের ওপর নির্ভরতা কমাতে এবং উৎপাদন মূল্যশৃঙ্খলে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই বন্দর ও পানি নিয়ন্ত্রণ সুবিধা, সড়ক, রেলপথ, সেতু, বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং অন্যান্য অবকাঠামোগত উন্নয়নের কথা প্রচার করছে।
বৈদেশিক সাহায্য অব্যাহত রেখে বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং আরও অবকাঠামো চুক্তি স্বাক্ষরের ব্যাপারে আশাবাদী ছিল জাপান। জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশন (জেট্রো) গত বছর উল্লেখ করেছে যে, বাংলাদেশে কাজ করা জাপানি কোম্পানির সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ৩৪০টিতে উন্নীত হয়েছে।
জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি বেশ। রপ্তানির চেয়ে আমদানি প্রায় ৬০ শতাংশ বেশি। বাংলাদেশের মাঝারি আকারের বাণিজ্য অংশীদার হচ্ছে জাপান। তবে অবকাঠামো, নকশা ও নির্মাণ পরিষেবাগুলোর ক্ষেত্রে জাপানই বাংলাদেশের বৃহত্তম সরবরাহকারী দেশ।
জাপানের সঙ্গে সহযোগিতা চীনের ওপর বাংলাদেশের নির্ভরশীলতা কমাতে পারে। পাশাপাশি ভারত, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সঙ্গে সম্পর্ক নতুন করে সাজানোর সুযোগও দেয়। জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর জাপানের সঙ্গে এই ভারসাম্যমূলক চুক্তি বাংলাদেশের জন্য আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।

জাপান ও বাংলাদেশ ২০২৫ সাল নাগাদ অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি চূড়ান্ত করতে আলোচনা শুরুর অপেক্ষায় আছে। ২০২৬ সালে জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশগুলোর তালিকা থেকে বেরিয়ে গেলে উন্নত দেশগুলোতে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা আর পাবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বাংলাদেশ ‘ক্ষয়িষ্ণু গণতন্ত্রের’ দেশ। কিন্তু এর মিত্র দেশ জাপানের কাছে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ১৭ কোটির বেশি জনসংখ্যার এই দেশের অবস্থান। বাংলাদেশ এমন এক দেশ, যার জিডিপি ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম ও মালয়েশিয়ার সম্মিলিত জিডিপির চেয়ে বড়।
সরকার নিয়ে আপত্তি থাকলেও চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠতর অর্থনৈতিক সম্পর্ক যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের দ্বিধায় ফেলছে। তারা বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে চাইলেও বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও অবকাঠামো উন্নয়নে সহযোগিতার করার ব্যাপারে জাপানকে উৎসাহিত করেছে।
আর এ সবই হচ্ছে ভারতের সহযোগিতায়। ২০২৩ সালের মার্চ মাসে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার নয়াদিল্লি সফরের পর মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প এবং ঢাকার উত্তরে ছোট রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের জন্য জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) বাংলাদেশকে ১১২ কোটি ডলার নতুন ঋণ দিতে সম্মত হয়েছে।
উত্তর-পূর্ব ভারতেও সক্রিয় আছে জাইকা। মহাসড়কসহ ত্রিপুরা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত শত শত কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ ও উন্নয়নে অর্থায়ন করছে জাইকা। মাতারবাড়ী প্রকল্পের আওতায় আছে খননের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রথম গভীর নৌবন্দর নির্মাণ এবং কক্সবাজারে বিদ্যুৎকেন্দ্র ও শিল্প পার্ক নির্মাণ।
সেখান থেকে চট্টগ্রামে যাওয়ার রাস্তা উন্নত হলে ঢাকা ও বাংলাদেশের অন্যান্য অংশ এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্য থেকে পণ্য পরিবহন সহজতর হবে। সুমিটোমো করপোরেশন, তোশিবা ও আইএইচআই এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে। গভীর নৌবন্দরটি ২০২৭ সালে চালু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
গত এপ্রিলে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় তৃতীয় ভারত-জাপান উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যাতে উত্তর-পূর্ব ভারত ও বাংলাদেশকে ঘিরে এই অঞ্চলের বাণিজ্যিক সম্ভাবনা উপলব্ধি করার উপায় নিয়ে আলোচনা করা হয়। ভারত ও বাংলাদেশের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী এবং ভারতে জাপানের রাষ্ট্রদূত সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
পরে এপ্রিলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার সঙ্গে বৈঠকের জন্য জাপানে যান। তখন এক যৌথ বিবৃতিতে ২০১৪ সালে দুই দেশের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত অংশীদারত্বকে পরবর্তী ৫০ বছরের জন্য ‘কৌশলগত অংশীদারত্বে’ উন্নীত করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়।
অর্থনৈতিক দিক থেকে বাংলাদেশ এবং এর আশপাশের অঞ্চলের উন্নয়নে ‘স্বচ্ছ ও ন্যায্য’ অর্থায়নের মাধ্যমে উচ্চমানের অবকাঠামো নির্মাণের দিকে গুরুত্ব দিয়েছেন তারা। মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্পের ক্ষেত্রে লজিস্টিক, জ্বালানি ও শিল্পের দিকগুলো বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তিতে সহযোগিতার কথাও বলা হয়েছে।
২০২২ সালে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকীতে বে অব বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্ট উদ্যোগের অধীনে অগ্রগতি এবং বাংলাদেশের প্রথম বৈদ্যুতিক ট্রেন, ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট লাইন ৬-এর উদ্বোধনে উভয় রাষ্ট্রপ্রধানই তাদের সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট লাইন-৬ নির্মাণে সহযোগিতা করেছিল জাইকা। জাপান বাংলাদেশকে সাইবার সিকিউরিটিতে তার দক্ষতাও দেবে।
২২ জানুয়ারি ঢাকা সফরকালে জাপানের অর্থনীতি, বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী ইয়াসুতোশি নিশিমুরা বলেন, জাপান পারস্পরিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে একটি অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি করতে চায়। বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ায় অনুকূল শুল্কব্যবস্থা চালু হয়েছে। এই মন্তব্যের সঙ্গে নির্বাচনের সম্পর্ক ছিল না, এটি ছিল দীর্ঘদিনের নীতির ধারাবাহিকতার প্রকাশ।
১৯৭১ সালে স্বাধীনতা ঘোষণার পর থেকে জাপান বাংলাদেশকে বৈদেশিক উন্নয়ন সহায়তার ক্ষেত্রে বৃহত্তম দাতা দেশ ছিল। কিন্তু জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ২০১৪ সালে এই সম্পর্ককে নতুন উচ্চাতায় নিয়ে যান। উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক ধারণাও তার সৃষ্টি।
সে বছরের মে মাসে টোকিওতে অনুষ্ঠিত এক শীর্ষ বৈঠকে জাপান-বাংলাদেশ সমন্বিত অংশীদারত্বের বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছেছিল। বে অব বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্ট নির্মাণসহ ভবিষ্যৎ প্রকল্পের বিষয়ে আলোচনা করতে জাইকার প্রেসিডেন্ট এরপর জুন মাসে বাংলাদেশ সফর করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় নিরাপত্তা সহযোগিতা, উন্নয়ন সহায়তা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা করতে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে শিনজো আবে বাংলাদেশ সফর করেন। টেক্সটাইলের ওপর নির্ভরতা কমাতে এবং উৎপাদন মূল্যশৃঙ্খলে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই বন্দর ও পানি নিয়ন্ত্রণ সুবিধা, সড়ক, রেলপথ, সেতু, বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং অন্যান্য অবকাঠামোগত উন্নয়নের কথা প্রচার করছে।
বৈদেশিক সাহায্য অব্যাহত রেখে বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং আরও অবকাঠামো চুক্তি স্বাক্ষরের ব্যাপারে আশাবাদী ছিল জাপান। জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশন (জেট্রো) গত বছর উল্লেখ করেছে যে, বাংলাদেশে কাজ করা জাপানি কোম্পানির সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ৩৪০টিতে উন্নীত হয়েছে।
জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি বেশ। রপ্তানির চেয়ে আমদানি প্রায় ৬০ শতাংশ বেশি। বাংলাদেশের মাঝারি আকারের বাণিজ্য অংশীদার হচ্ছে জাপান। তবে অবকাঠামো, নকশা ও নির্মাণ পরিষেবাগুলোর ক্ষেত্রে জাপানই বাংলাদেশের বৃহত্তম সরবরাহকারী দেশ।
জাপানের সঙ্গে সহযোগিতা চীনের ওপর বাংলাদেশের নির্ভরশীলতা কমাতে পারে। পাশাপাশি ভারত, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সঙ্গে সম্পর্ক নতুন করে সাজানোর সুযোগও দেয়। জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর জাপানের সঙ্গে এই ভারসাম্যমূলক চুক্তি বাংলাদেশের জন্য আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।

জাপান ও বাংলাদেশ ২০২৫ সাল নাগাদ অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি চূড়ান্ত করতে আলোচনা শুরুর অপেক্ষায় আছে। ২০২৬ সালে জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশগুলোর তালিকা থেকে বেরিয়ে গেলে উন্নত দেশগুলোতে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা আর পাবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বাংলাদেশ ‘ক্ষয়িষ্ণু গণতন্ত্রের’ দেশ। কিন্তু এর মিত্র দেশ জাপানের কাছে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ১৭ কোটির বেশি জনসংখ্যার এই দেশের অবস্থান। বাংলাদেশ এমন এক দেশ, যার জিডিপি ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম ও মালয়েশিয়ার সম্মিলিত জিডিপির চেয়ে বড়।
সরকার নিয়ে আপত্তি থাকলেও চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠতর অর্থনৈতিক সম্পর্ক যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের দ্বিধায় ফেলছে। তারা বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে চাইলেও বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও অবকাঠামো উন্নয়নে সহযোগিতার করার ব্যাপারে জাপানকে উৎসাহিত করেছে।
আর এ সবই হচ্ছে ভারতের সহযোগিতায়। ২০২৩ সালের মার্চ মাসে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার নয়াদিল্লি সফরের পর মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প এবং ঢাকার উত্তরে ছোট রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের জন্য জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) বাংলাদেশকে ১১২ কোটি ডলার নতুন ঋণ দিতে সম্মত হয়েছে।
উত্তর-পূর্ব ভারতেও সক্রিয় আছে জাইকা। মহাসড়কসহ ত্রিপুরা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত শত শত কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ ও উন্নয়নে অর্থায়ন করছে জাইকা। মাতারবাড়ী প্রকল্পের আওতায় আছে খননের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রথম গভীর নৌবন্দর নির্মাণ এবং কক্সবাজারে বিদ্যুৎকেন্দ্র ও শিল্প পার্ক নির্মাণ।
সেখান থেকে চট্টগ্রামে যাওয়ার রাস্তা উন্নত হলে ঢাকা ও বাংলাদেশের অন্যান্য অংশ এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্য থেকে পণ্য পরিবহন সহজতর হবে। সুমিটোমো করপোরেশন, তোশিবা ও আইএইচআই এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে। গভীর নৌবন্দরটি ২০২৭ সালে চালু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
গত এপ্রিলে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় তৃতীয় ভারত-জাপান উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যাতে উত্তর-পূর্ব ভারত ও বাংলাদেশকে ঘিরে এই অঞ্চলের বাণিজ্যিক সম্ভাবনা উপলব্ধি করার উপায় নিয়ে আলোচনা করা হয়। ভারত ও বাংলাদেশের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী এবং ভারতে জাপানের রাষ্ট্রদূত সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
পরে এপ্রিলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার সঙ্গে বৈঠকের জন্য জাপানে যান। তখন এক যৌথ বিবৃতিতে ২০১৪ সালে দুই দেশের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত অংশীদারত্বকে পরবর্তী ৫০ বছরের জন্য ‘কৌশলগত অংশীদারত্বে’ উন্নীত করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়।
অর্থনৈতিক দিক থেকে বাংলাদেশ এবং এর আশপাশের অঞ্চলের উন্নয়নে ‘স্বচ্ছ ও ন্যায্য’ অর্থায়নের মাধ্যমে উচ্চমানের অবকাঠামো নির্মাণের দিকে গুরুত্ব দিয়েছেন তারা। মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্পের ক্ষেত্রে লজিস্টিক, জ্বালানি ও শিল্পের দিকগুলো বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তিতে সহযোগিতার কথাও বলা হয়েছে।
২০২২ সালে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকীতে বে অব বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্ট উদ্যোগের অধীনে অগ্রগতি এবং বাংলাদেশের প্রথম বৈদ্যুতিক ট্রেন, ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট লাইন ৬-এর উদ্বোধনে উভয় রাষ্ট্রপ্রধানই তাদের সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট লাইন-৬ নির্মাণে সহযোগিতা করেছিল জাইকা। জাপান বাংলাদেশকে সাইবার সিকিউরিটিতে তার দক্ষতাও দেবে।
২২ জানুয়ারি ঢাকা সফরকালে জাপানের অর্থনীতি, বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী ইয়াসুতোশি নিশিমুরা বলেন, জাপান পারস্পরিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে একটি অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি করতে চায়। বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ায় অনুকূল শুল্কব্যবস্থা চালু হয়েছে। এই মন্তব্যের সঙ্গে নির্বাচনের সম্পর্ক ছিল না, এটি ছিল দীর্ঘদিনের নীতির ধারাবাহিকতার প্রকাশ।
১৯৭১ সালে স্বাধীনতা ঘোষণার পর থেকে জাপান বাংলাদেশকে বৈদেশিক উন্নয়ন সহায়তার ক্ষেত্রে বৃহত্তম দাতা দেশ ছিল। কিন্তু জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ২০১৪ সালে এই সম্পর্ককে নতুন উচ্চাতায় নিয়ে যান। উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক ধারণাও তার সৃষ্টি।
সে বছরের মে মাসে টোকিওতে অনুষ্ঠিত এক শীর্ষ বৈঠকে জাপান-বাংলাদেশ সমন্বিত অংশীদারত্বের বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছেছিল। বে অব বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্ট নির্মাণসহ ভবিষ্যৎ প্রকল্পের বিষয়ে আলোচনা করতে জাইকার প্রেসিডেন্ট এরপর জুন মাসে বাংলাদেশ সফর করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় নিরাপত্তা সহযোগিতা, উন্নয়ন সহায়তা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা করতে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে শিনজো আবে বাংলাদেশ সফর করেন। টেক্সটাইলের ওপর নির্ভরতা কমাতে এবং উৎপাদন মূল্যশৃঙ্খলে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই বন্দর ও পানি নিয়ন্ত্রণ সুবিধা, সড়ক, রেলপথ, সেতু, বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং অন্যান্য অবকাঠামোগত উন্নয়নের কথা প্রচার করছে।
বৈদেশিক সাহায্য অব্যাহত রেখে বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং আরও অবকাঠামো চুক্তি স্বাক্ষরের ব্যাপারে আশাবাদী ছিল জাপান। জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশন (জেট্রো) গত বছর উল্লেখ করেছে যে, বাংলাদেশে কাজ করা জাপানি কোম্পানির সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ৩৪০টিতে উন্নীত হয়েছে।
জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি বেশ। রপ্তানির চেয়ে আমদানি প্রায় ৬০ শতাংশ বেশি। বাংলাদেশের মাঝারি আকারের বাণিজ্য অংশীদার হচ্ছে জাপান। তবে অবকাঠামো, নকশা ও নির্মাণ পরিষেবাগুলোর ক্ষেত্রে জাপানই বাংলাদেশের বৃহত্তম সরবরাহকারী দেশ।
জাপানের সঙ্গে সহযোগিতা চীনের ওপর বাংলাদেশের নির্ভরশীলতা কমাতে পারে। পাশাপাশি ভারত, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সঙ্গে সম্পর্ক নতুন করে সাজানোর সুযোগও দেয়। জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর জাপানের সঙ্গে এই ভারসাম্যমূলক চুক্তি বাংলাদেশের জন্য আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
৬ ঘণ্টা আগে
শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস।
১২ ঘণ্টা আগে
দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা।
২০ ঘণ্টা আগে
ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
সভায় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. ওমর ফারুক খাঁন এবং শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সদস্যসচিব অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুস সামাদ। এ ছাড়া কাউন্সিলের অন্য সদস্যবৃন্দ সভায় অংশগ্রহণ করেন।

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
সভায় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. ওমর ফারুক খাঁন এবং শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সদস্যসচিব অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুস সামাদ। এ ছাড়া কাউন্সিলের অন্য সদস্যবৃন্দ সভায় অংশগ্রহণ করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বাংলাদেশ ‘ক্ষয়িষ্ণু গণতন্ত্রের’ দেশ। কিন্তু এর মিত্রদেশ জাপানের কাছে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ১৭ কোটির বেশি জনসংখ্যার এই দেশের অবস্থান। বাংলাদেশ এমন এক দেশ, যার জিডিপি ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম ও মালয়েশিয়ার সম্মিলিত জিডিপির চেয়ে বড়। সরকার নিয়ে আপত্তি থাকলেও চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে বাং
৩০ জানুয়ারি ২০২৪
শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস।
১২ ঘণ্টা আগে
দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা।
২০ ঘণ্টা আগে
ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই
১ দিন আগেজাহিদ হাসান, যশোর

শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস। ভোরে সেই রস নামিয়ে শুরু হয় আরেক কর্মযজ্ঞ; চুলায় জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরির কাজ। বাড়ির নারীরাই মূলত এই প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দেন। কয়েক ঘণ্টা জ্বালানোর পর তৈরি হয় সুস্বাদু খেজুর গুড় ও পাটালি।
শীত মৌসুম এলেই এমন দৃশ্য দেখা যায় খেজুর গুড়ের জেলা খ্যাত যশোরের প্রায় প্রতিটি গ্রামে। সম্প্রতি যশোরের খেজুর গুড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় এর ঐতিহ্যের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সম্ভাবনাও নতুন করে সামনে এসেছে।
উৎপাদন ও বাজারের চিত্র
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে যশোরে প্রায় ১২০ কোটি টাকার খেজুর রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই উৎপাদন গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা আরও গতিশীল করবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।
বর্তমানে খেজুরের কাঁচা রস প্রতি মাটির হাঁড়ি ২০০ থেকে ৪০০ টাকা, দানা গুড় প্রতি কেজি ৩৫০-৪০০ টাকা এবং পাটালি প্রতি কেজি ৪৫০-৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারদর বাড়লেও গাছিরা বলছেন, শ্রম ও ঝুঁকির তুলনায় লাভ সীমিত।
গাছির সংকট বড় চ্যালেঞ্জ
যশোর সদর উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের গাছি আজিবর প্রায় ৩৫ বছর ধরে খেজুর গাছ কাটছেন। তিনি বলেন, ‘আগে দেড় শ গাছ কাটতাম, এখন বয়সের কারণে ৩৫-৪০টার বেশি পারি না। রস ও গুড়ের দাম বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু কাটার মতো গাছ কমে গেছে। আবার গাছ থাকলেও দক্ষ গাছির অভাব। এবার বেশি শীত পড়ায় রসও ভালো নামছে, গুড়ের উৎপাদনও বেশি।’

মনিরামপুর উপজেলার সরসকাটি গ্রামের গাছি অতিয়ারও প্রায় ৪০ বছর ধরে এই পেশায় যুক্ত। তিনি বলেন, এবার ৫০টা গাছ কাটছি। প্রতিদিন ৮-১০ কেজি গুড় তৈরি হয়। কাজটা খুব কষ্টের। তবে শীত মৌসুমে এই আয়েই পুরো বছরের সংসার চলে।
ই-কমার্সে বাড়ছে চাহিদা
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, যশোর জেলায় মোট খেজুরগাছের সংখ্যা ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৬৯৫। এগুলোর মধ্যে চলতি মৌসুমে রস আহরণের উপযোগী গাছ রয়েছে ৩ লাখ ৭ হাজার ১৩০টি।
উৎপাদিত গুড় প্রথমে স্থানীয় হাটে বিক্রি হয়, পরে পাইকারদের মাধ্যমে তা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। যশোরের খেজুর গুড় এখন বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। পাশাপাশি ই-কমার্স ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমভিত্তিক উদ্যোক্তাদের হাত ধরে গুড় ও পাটালি সরাসরি ভোক্তার ঘরে পৌঁছানো হচ্ছে। এতে বাজার যেমন সম্প্রসারিত হচ্ছে, তেমনি তৈরি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থান।
কৃষি বিভাগের উদ্যোগ
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, যশোরের খেজুর গুড়ের স্বাদ ও মানের কারণে চাহিদা সব সময় বেশি। এবার শীত বেশি হওয়ায় রসের পরিমাণ ও মান—দুটোই ভালো। চলতি মৌসুমে প্রায় ১২০ কোটি টাকার রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। নিরাপদ খেজুর রস এবং গুড় উৎপাদনে কৃষকদের পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। উঠান বৈঠকের মাধ্যমে গাছিদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস। ভোরে সেই রস নামিয়ে শুরু হয় আরেক কর্মযজ্ঞ; চুলায় জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরির কাজ। বাড়ির নারীরাই মূলত এই প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দেন। কয়েক ঘণ্টা জ্বালানোর পর তৈরি হয় সুস্বাদু খেজুর গুড় ও পাটালি।
শীত মৌসুম এলেই এমন দৃশ্য দেখা যায় খেজুর গুড়ের জেলা খ্যাত যশোরের প্রায় প্রতিটি গ্রামে। সম্প্রতি যশোরের খেজুর গুড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় এর ঐতিহ্যের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সম্ভাবনাও নতুন করে সামনে এসেছে।
উৎপাদন ও বাজারের চিত্র
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে যশোরে প্রায় ১২০ কোটি টাকার খেজুর রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই উৎপাদন গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা আরও গতিশীল করবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।
বর্তমানে খেজুরের কাঁচা রস প্রতি মাটির হাঁড়ি ২০০ থেকে ৪০০ টাকা, দানা গুড় প্রতি কেজি ৩৫০-৪০০ টাকা এবং পাটালি প্রতি কেজি ৪৫০-৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারদর বাড়লেও গাছিরা বলছেন, শ্রম ও ঝুঁকির তুলনায় লাভ সীমিত।
গাছির সংকট বড় চ্যালেঞ্জ
যশোর সদর উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের গাছি আজিবর প্রায় ৩৫ বছর ধরে খেজুর গাছ কাটছেন। তিনি বলেন, ‘আগে দেড় শ গাছ কাটতাম, এখন বয়সের কারণে ৩৫-৪০টার বেশি পারি না। রস ও গুড়ের দাম বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু কাটার মতো গাছ কমে গেছে। আবার গাছ থাকলেও দক্ষ গাছির অভাব। এবার বেশি শীত পড়ায় রসও ভালো নামছে, গুড়ের উৎপাদনও বেশি।’

মনিরামপুর উপজেলার সরসকাটি গ্রামের গাছি অতিয়ারও প্রায় ৪০ বছর ধরে এই পেশায় যুক্ত। তিনি বলেন, এবার ৫০টা গাছ কাটছি। প্রতিদিন ৮-১০ কেজি গুড় তৈরি হয়। কাজটা খুব কষ্টের। তবে শীত মৌসুমে এই আয়েই পুরো বছরের সংসার চলে।
ই-কমার্সে বাড়ছে চাহিদা
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, যশোর জেলায় মোট খেজুরগাছের সংখ্যা ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৬৯৫। এগুলোর মধ্যে চলতি মৌসুমে রস আহরণের উপযোগী গাছ রয়েছে ৩ লাখ ৭ হাজার ১৩০টি।
উৎপাদিত গুড় প্রথমে স্থানীয় হাটে বিক্রি হয়, পরে পাইকারদের মাধ্যমে তা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। যশোরের খেজুর গুড় এখন বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। পাশাপাশি ই-কমার্স ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমভিত্তিক উদ্যোক্তাদের হাত ধরে গুড় ও পাটালি সরাসরি ভোক্তার ঘরে পৌঁছানো হচ্ছে। এতে বাজার যেমন সম্প্রসারিত হচ্ছে, তেমনি তৈরি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থান।
কৃষি বিভাগের উদ্যোগ
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, যশোরের খেজুর গুড়ের স্বাদ ও মানের কারণে চাহিদা সব সময় বেশি। এবার শীত বেশি হওয়ায় রসের পরিমাণ ও মান—দুটোই ভালো। চলতি মৌসুমে প্রায় ১২০ কোটি টাকার রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। নিরাপদ খেজুর রস এবং গুড় উৎপাদনে কৃষকদের পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। উঠান বৈঠকের মাধ্যমে গাছিদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বাংলাদেশ ‘ক্ষয়িষ্ণু গণতন্ত্রের’ দেশ। কিন্তু এর মিত্রদেশ জাপানের কাছে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ১৭ কোটির বেশি জনসংখ্যার এই দেশের অবস্থান। বাংলাদেশ এমন এক দেশ, যার জিডিপি ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম ও মালয়েশিয়ার সম্মিলিত জিডিপির চেয়ে বড়। সরকার নিয়ে আপত্তি থাকলেও চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে বাং
৩০ জানুয়ারি ২০২৪
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
৬ ঘণ্টা আগে
দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা।
২০ ঘণ্টা আগে
ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই
১ দিন আগেজয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা

দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার দাঁড়িয়েছে ৪৯ দশমিক ৬৫ শতাংশে, আর ইসলামি ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে তা আরও বেশি—৫৯ দশমিক শূন্য ২ শতাংশে পৌঁছেছে। অর্থাৎ, এই দুটি খাতেই বিতরণ করা ঋণের অর্ধেকের বেশি অনাদায়ি হয়ে পড়েছে। যেখানে বিশেষায়িত ব্যাংকের খেলাপির হার ৪১ দশমিক ৯৫ ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপির হার মাত্র ৪ দশমিক ৯২ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, শরিয়াহভিত্তিক ১০টি ইসলামি ব্যাংক মোট ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা ঋণ বিনিয়োগ করেছে। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে ২ লাখ ৮৩ হাজার ৫৫ কোটি টাকা। হিসাব বলছে, প্রতি ১০ টাকার প্রায় ৬ টাকাই এখন আদায় অনিশ্চিত। সেই তুলনায় শরিয়াহসহ দেশীয় বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৪ লাখ ৬৩ হাজার ১৮৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এই তুলনাতেই স্পষ্ট, খেলাপির বোঝা এককভাবে সবচেয়ে বেশি ইসলামি ব্যাংকগুলোর ঘাড়েই।
সরকারি ছয় ব্যাংকের অবস্থাও খুব একটা ভিন্ন নয়। এসব ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৭৯২ কোটি টাকা। মোট বিতরণ করা ঋণের প্রায় অর্ধেকই সেখানে অনাদায়ি। ব্যাংকার ও বিশ্লেষকদের মতে, এই সংকট রাতারাতি তৈরি হয়নি। বছরের পর বছর ধরে দুর্বল তদারকি, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং ইচ্ছাকৃত খেলাপিকে আড়াল করার প্রবণতা ধীরে ধীরে ব্যাংকগুলোকে এই জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন মনে করেন, খেলাপি ঋণের এত উচ্চ হার শুধু ব্যাংকিং খাতের ভেতরের সমস্যা নয়, এটি সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য বড় ঝুঁকি। ব্যাংকগুলো নতুন ঋণ দিতে পারছে না, বিনিয়োগ কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ছে, শিল্প-কারখানার সম্প্রসারণ থেমে যাচ্ছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে কর্মসংস্থানে। তাঁর মতে, খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা এবং ঋণ আদায়ে বাস্তবসম্মত উদ্যোগ ছাড়া পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব নয়।
ইসলামি ব্যাংকিং খাতে এস আলম, নাসা ও বেক্সিমকো গ্রুপের নাম বারবার আলোচনায় এসেছে। সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, দীর্ঘদিন সরকারি মদদে এসব গ্রুপ বিপুল ঋণ নিয়ে খেলাপি হলেও তা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি পায়নি। এখন সেই বাস্তবতা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট।
সামগ্রিকভাবে দেশের ব্যাংকিং খাতের চিত্র আরও উদ্বেগজনক। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১৮ লাখ ৩ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে প্রায় ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম বলেন, বিগত সরকারের টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে খেলাপি ঋণ কম দেখানোর যে অপচেষ্টা ছিল, তা এখন ভেঙে পড়েছে। সঠিক হিসাব সামনে আসায় হার ৩৬ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছেছে, যা বাস্তবতারই প্রতিফলন। তিনি আবারও শীর্ষ ১০ খেলাপির জন্য আলাদা ট্রাইব্যুনালের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, আগের সরকারের আমলে লুকিয়ে রাখা খেলাপি ঋণ প্রকাশ পাওয়ায় এই হার বেড়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ঋণ আদায়ে কঠোর নির্দেশনার কারণে আগের তুলনায় আদায় বেড়েছে।

দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার দাঁড়িয়েছে ৪৯ দশমিক ৬৫ শতাংশে, আর ইসলামি ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে তা আরও বেশি—৫৯ দশমিক শূন্য ২ শতাংশে পৌঁছেছে। অর্থাৎ, এই দুটি খাতেই বিতরণ করা ঋণের অর্ধেকের বেশি অনাদায়ি হয়ে পড়েছে। যেখানে বিশেষায়িত ব্যাংকের খেলাপির হার ৪১ দশমিক ৯৫ ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপির হার মাত্র ৪ দশমিক ৯২ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, শরিয়াহভিত্তিক ১০টি ইসলামি ব্যাংক মোট ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা ঋণ বিনিয়োগ করেছে। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে ২ লাখ ৮৩ হাজার ৫৫ কোটি টাকা। হিসাব বলছে, প্রতি ১০ টাকার প্রায় ৬ টাকাই এখন আদায় অনিশ্চিত। সেই তুলনায় শরিয়াহসহ দেশীয় বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৪ লাখ ৬৩ হাজার ১৮৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এই তুলনাতেই স্পষ্ট, খেলাপির বোঝা এককভাবে সবচেয়ে বেশি ইসলামি ব্যাংকগুলোর ঘাড়েই।
সরকারি ছয় ব্যাংকের অবস্থাও খুব একটা ভিন্ন নয়। এসব ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৭৯২ কোটি টাকা। মোট বিতরণ করা ঋণের প্রায় অর্ধেকই সেখানে অনাদায়ি। ব্যাংকার ও বিশ্লেষকদের মতে, এই সংকট রাতারাতি তৈরি হয়নি। বছরের পর বছর ধরে দুর্বল তদারকি, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং ইচ্ছাকৃত খেলাপিকে আড়াল করার প্রবণতা ধীরে ধীরে ব্যাংকগুলোকে এই জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন মনে করেন, খেলাপি ঋণের এত উচ্চ হার শুধু ব্যাংকিং খাতের ভেতরের সমস্যা নয়, এটি সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য বড় ঝুঁকি। ব্যাংকগুলো নতুন ঋণ দিতে পারছে না, বিনিয়োগ কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ছে, শিল্প-কারখানার সম্প্রসারণ থেমে যাচ্ছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে কর্মসংস্থানে। তাঁর মতে, খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা এবং ঋণ আদায়ে বাস্তবসম্মত উদ্যোগ ছাড়া পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব নয়।
ইসলামি ব্যাংকিং খাতে এস আলম, নাসা ও বেক্সিমকো গ্রুপের নাম বারবার আলোচনায় এসেছে। সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, দীর্ঘদিন সরকারি মদদে এসব গ্রুপ বিপুল ঋণ নিয়ে খেলাপি হলেও তা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি পায়নি। এখন সেই বাস্তবতা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট।
সামগ্রিকভাবে দেশের ব্যাংকিং খাতের চিত্র আরও উদ্বেগজনক। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১৮ লাখ ৩ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে প্রায় ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম বলেন, বিগত সরকারের টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে খেলাপি ঋণ কম দেখানোর যে অপচেষ্টা ছিল, তা এখন ভেঙে পড়েছে। সঠিক হিসাব সামনে আসায় হার ৩৬ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছেছে, যা বাস্তবতারই প্রতিফলন। তিনি আবারও শীর্ষ ১০ খেলাপির জন্য আলাদা ট্রাইব্যুনালের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, আগের সরকারের আমলে লুকিয়ে রাখা খেলাপি ঋণ প্রকাশ পাওয়ায় এই হার বেড়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ঋণ আদায়ে কঠোর নির্দেশনার কারণে আগের তুলনায় আদায় বেড়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বাংলাদেশ ‘ক্ষয়িষ্ণু গণতন্ত্রের’ দেশ। কিন্তু এর মিত্রদেশ জাপানের কাছে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ১৭ কোটির বেশি জনসংখ্যার এই দেশের অবস্থান। বাংলাদেশ এমন এক দেশ, যার জিডিপি ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম ও মালয়েশিয়ার সম্মিলিত জিডিপির চেয়ে বড়। সরকার নিয়ে আপত্তি থাকলেও চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে বাং
৩০ জানুয়ারি ২০২৪
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
৬ ঘণ্টা আগে
শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস।
১২ ঘণ্টা আগে
ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই
১ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ প্রসঙ্গে আজকের পত্রিকাকে জানান, ডিসেম্বর মাসে কেনা ডলারের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি, ৯২ কোটি ডলার এবং চলতি অর্থবছর ধরে মোট কেনা হয়েছে ৩ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলার। জুলাইয়ে প্রথম ডলার কেনা হয়েছিল ৪৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার, আগস্টে ৪৫ কোটি ৪০ লাখ, সেপ্টেম্বরেই তা বেড়ে ৯২ কোটি ৯০ লাখে পৌঁছায়। এরপর অক্টোবর ও নভেম্বরে অবশ্য অনেকটাই কমে ১৪ কোটি ২০ লাখ এবং ৫ কোটি ৪০ লাখে নেমে আসে। ডিসেম্বরেই তার বড় উল্লম্ফন ঘটে, কেনার পরিমাণ দাঁড়ায় ৯২ কোটি ১০ লাখ ডলারে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, রেমিট্যান্স বৃদ্ধি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ, ব্যাংকিং চ্যানেলের শক্তিশালীকরণ এবং অনলাইনে আন্তর্জাতিক পণ্যের বাজার মনিটরিংয়ের ফলে বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে। এ ছাড়া ওভার ও আন্ডার ইনভয়েসিং বন্ধ হওয়ায় ব্যবসার আড়ালে ডলার পাচার কমেছে। এসব কারণে ব্যাংকগুলোতে জমে থাকা অতিরিক্ত ডলার ক্রয় করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আগের অর্থবছরগুলোর সঙ্গে তুলনায় এবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ক্রেতার ভূমিকায়, যেখানে অতীতের বছরগুলোতে বড় অঙ্কে বিক্রি হতো। ২০২১-২২ অর্থবছরে বিক্রি হয়েছিল ৭ দশমিক ৬ বিলিয়ন, ২০২২-২৩ এ ছিল ১৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন, ২০২৩-২৪ এ ১২ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন এবং ২০২৪-২৫ এ ১ দশমিক ১২৪ বিলিয়ন ডলার। এই পরিবর্তন বাজারে স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
বর্তমান খোলাবাজারে ডলারের দর ১২৪-১২৫ টাকার মধ্যে, যেখানে গত বছরের এই সময়ে তা ছিল ১৩১ টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে পণ্য আমদানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬১ বিলিয়ন ডলার, আগের বছরের তুলনায় ৭ শতাংশ কম। অনলাইনে বাজার নজরদারি এবং ওভার/আন্ডার ইনভয়েসিং নিয়ন্ত্রণে আসায় পণ্যের আড়াল থেকে ডলার পাচারও অনেক কমেছে।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডলার ক্রয় বাজারে স্থিতিশীলতা আনার জন্য সময়োপযোগী পদক্ষেপ। এর ফলে আমদানি, বিনিয়োগ ও বাজার ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক হয়েছে।’
সব মিলিয়ে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ, পাচার কমে আসা—সব মিলিয়ে ডলার বাজারে স্বস্তি ফিরিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ডলার বিক্রেতা নয়; বরং ক্রেতার ভূমিকায়, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ প্রসঙ্গে আজকের পত্রিকাকে জানান, ডিসেম্বর মাসে কেনা ডলারের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি, ৯২ কোটি ডলার এবং চলতি অর্থবছর ধরে মোট কেনা হয়েছে ৩ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলার। জুলাইয়ে প্রথম ডলার কেনা হয়েছিল ৪৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার, আগস্টে ৪৫ কোটি ৪০ লাখ, সেপ্টেম্বরেই তা বেড়ে ৯২ কোটি ৯০ লাখে পৌঁছায়। এরপর অক্টোবর ও নভেম্বরে অবশ্য অনেকটাই কমে ১৪ কোটি ২০ লাখ এবং ৫ কোটি ৪০ লাখে নেমে আসে। ডিসেম্বরেই তার বড় উল্লম্ফন ঘটে, কেনার পরিমাণ দাঁড়ায় ৯২ কোটি ১০ লাখ ডলারে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, রেমিট্যান্স বৃদ্ধি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ, ব্যাংকিং চ্যানেলের শক্তিশালীকরণ এবং অনলাইনে আন্তর্জাতিক পণ্যের বাজার মনিটরিংয়ের ফলে বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে। এ ছাড়া ওভার ও আন্ডার ইনভয়েসিং বন্ধ হওয়ায় ব্যবসার আড়ালে ডলার পাচার কমেছে। এসব কারণে ব্যাংকগুলোতে জমে থাকা অতিরিক্ত ডলার ক্রয় করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আগের অর্থবছরগুলোর সঙ্গে তুলনায় এবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ক্রেতার ভূমিকায়, যেখানে অতীতের বছরগুলোতে বড় অঙ্কে বিক্রি হতো। ২০২১-২২ অর্থবছরে বিক্রি হয়েছিল ৭ দশমিক ৬ বিলিয়ন, ২০২২-২৩ এ ছিল ১৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন, ২০২৩-২৪ এ ১২ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন এবং ২০২৪-২৫ এ ১ দশমিক ১২৪ বিলিয়ন ডলার। এই পরিবর্তন বাজারে স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
বর্তমান খোলাবাজারে ডলারের দর ১২৪-১২৫ টাকার মধ্যে, যেখানে গত বছরের এই সময়ে তা ছিল ১৩১ টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে পণ্য আমদানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬১ বিলিয়ন ডলার, আগের বছরের তুলনায় ৭ শতাংশ কম। অনলাইনে বাজার নজরদারি এবং ওভার/আন্ডার ইনভয়েসিং নিয়ন্ত্রণে আসায় পণ্যের আড়াল থেকে ডলার পাচারও অনেক কমেছে।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডলার ক্রয় বাজারে স্থিতিশীলতা আনার জন্য সময়োপযোগী পদক্ষেপ। এর ফলে আমদানি, বিনিয়োগ ও বাজার ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক হয়েছে।’
সব মিলিয়ে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ, পাচার কমে আসা—সব মিলিয়ে ডলার বাজারে স্বস্তি ফিরিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ডলার বিক্রেতা নয়; বরং ক্রেতার ভূমিকায়, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বাংলাদেশ ‘ক্ষয়িষ্ণু গণতন্ত্রের’ দেশ। কিন্তু এর মিত্রদেশ জাপানের কাছে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ১৭ কোটির বেশি জনসংখ্যার এই দেশের অবস্থান। বাংলাদেশ এমন এক দেশ, যার জিডিপি ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম ও মালয়েশিয়ার সম্মিলিত জিডিপির চেয়ে বড়। সরকার নিয়ে আপত্তি থাকলেও চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে বাং
৩০ জানুয়ারি ২০২৪
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
৬ ঘণ্টা আগে
শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস।
১২ ঘণ্টা আগে
দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা।
২০ ঘণ্টা আগে