Ajker Patrika

অস্থির ভূরাজনীতি আর বাণিজ্য বিরোধে বছর শেষে কোথায় দাঁড়াবে বিশ্ব অর্থনীতি

আপডেট : ১২ জানুয়ারি ২০২৪, ২৩: ৪৪
অস্থির ভূরাজনীতি আর বাণিজ্য বিরোধে বছর শেষে কোথায় দাঁড়াবে বিশ্ব অর্থনীতি

বিগত কয়েক বছরের অর্থনীতির হালচাল আমাদের যদি কিছু শিখিয়ে থাকে তবে সেটি হচ্ছে—আকস্মিকভাবে পরিবর্তিত পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকা। তবুও অর্থনীতি নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী তো থেমে থাকবে না। বর্তমান অর্থনীতি ও রাজনীতির সামগ্রিক বিষয়াবলি বিবেচনা সাপেক্ষে বিশ্লেষকেরা ধারণা করছেন, নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ই ২০২৪ সালে বিশ্ব অর্থনীতিতে মূল প্রভাবক হবে। 

আগামী ১২ মাসে অর্থনীতি, সুদের হার এবং বাজারে কোন বিষয়গুলো প্রভাব রাখবে ও হালচাল কেমন হতে পারে তা নিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানে একটি বিশ্লেষণধর্মী নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। সেটির একটি তর্জমা তুলে ধরা হলো: 

রাজনৈতিক অস্থিরতা
মধ্যপ্রাচ্যে অশান্তি বৃদ্ধির আশঙ্কা ও রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ তৃতীয় বছরে প্রবেশের পথে ভূ–রাজনৈতিক সমস্যাগুলো আবার বিশ্ব বাজারকে ধাক্কা দিতে পারে। 

ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের আক্রমণের মুখে লোহিত সাগরে জাহাজ চলাচলে ব্যাঘাত এরই মধ্যে মূল্যস্ফীতির চাপের মধ্যে পরিবহন খরচ বাড়িয়ে দিচ্ছে। শিপিং কোম্পানিগুলো রুট পরিবর্তন করে উত্তমাশা অন্তরীপ দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে এই অতিরিক্ত পরিবহন খরচের মুখে পড়ছে। 

জেনারেলি ইনভেস্টমেন্টসের গবেষণা প্রধান ভিনসেন্ট চেগন্যু বলছেন, ২০২৪ সালের অন্যান্য ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে মূল্যবৃদ্ধির জন্য ওপেক প্লাসের তেল উৎপাদন কমানোর সম্ভাবনা, মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য নির্বাচনী সমর্থন আরও দুর্বল হওয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী প্রচারণার সময় বেইজিং–ওয়াশিংটন উত্তেজনা বৃদ্ধি। 

নেদারল্যান্ডসের বেসরকারি ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান এবিএন আমরো ভবিষ্যদ্বাণী করেছে, পতনের হার ২০২৪ সালের পরে পুনরুদ্ধারে সাহায্য করবে। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসা, ইইউ–চীন বাণিজ্য বিরোধ এবং পশ্চিম ও চীনের মধ্যে দ্বন্দ্ব দ্বিগুণ মাত্রায় পৌঁছে যাওয়ার বিষয়ে সতর্ক করেছে প্রতিষ্ঠানটি। 

ভারত, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাজ্যসহ (যদি ঋষি সুনাক ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ক্ষমতায় না থাকেন) বিশ্বব্যাপী জিডিপির ৬০ শতাংশের অংশীদার দেশগুলোতে এ বছর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সে হিসাবে পৃথিবীর প্রায় অর্ধেক মানুষ তাদের সরকার নির্বাচনে ভোট দেবেন। তবে বিশ্ব বাজারের নজর থাকবে মূলত হোয়াইট হাউসে কে যাচ্ছেন সেটির দিকেই।

এজে বেল ইনভেস্টমেন্টের পরিচালক রাস মোল্ড গবেষণার ভিত্তিতে বলেছেন, মার্কিন পুঁজিবাজার বাইডেন প্রশাসনের শেষ বছরে কাবু থাকে। কিন্তু ব্যাংক অব আমেরিকা বিপরীত যুক্তি দিয়ে বলে, নির্বাচনের বছরে সাধারণত মার্কিন এসঅ্যান্ডপি-৫০০ সূচক ৭৫ শতাংশ বাড়ে।

যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা সংস্থা অ্যালিয়ানজ রিসার্চ সতর্ক করেছে, সামগ্রিকভাবে ২০২৪ সালে বিভিন্ন দেশের জাতীয় নির্বাচন অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা বাড়িয়ে তুলবে...এই প্রসঙ্গে, সরকার, পরিবার এবং কোম্পানিগুলো মূল অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত স্থগিত করে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে পারে। 

ভোটার মতামত জরিপ অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যের আগামী সাধারণ নির্বাচনে লেবার পার্টি জয়লাভ করলেও অর্থবাজারে বড় কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলে মনে করে আরবিসি ওয়েলথ ম্যানেজমেন্ট। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, লেবার পার্টিকে এখন মধ্যপন্থী বলে মনে হচ্ছে এবং করপোরেট সেক্টরের সঙ্গে সম্পর্ক উল্লেখযোগ্যভাবে তারা বাড়িয়েছে।

শেয়ারবাজারে নব বিপ্লব? 
গত বছরের নভেম্বর এবং ডিসেম্বরে পুঁজিবাজারে শেয়ার এবং বন্ডের দাম কিছুটা ভালো থাকায় অনেক ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ রক্ষা পেয়েছে। ২০২৩ সালে এস অ্যান্ড পি–৫০০ সূচক সর্বকালের সর্বোচ্চ— প্রায় ৪ হাজার ৭৭০ পয়েন্ট নিয়ে শেষ হয়। অনেক বিশ্লেষক আশা করছেন, ২০২৪ সালে এটি আরও বাড়বে। 

ইয়ার্ডেনি রিসার্চের সভাপতি এডওয়ার্ড ইয়ার্ডেনি ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, এ বছর সূচকটি ৫ হাজার ৪০০ পয়েন্টে শেষ হবে এবং ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ ৬ হাজারে দাঁড়াবে। 

ইয়ার্ডেনি যুক্তি দেন, বাজারগুলো ১০০ বছর আগে প্রথম বিশ্বযুদ্ধোত্তর সময়ের মতো নব বিপ্লব দেখতে পারে, যেখানে ভোক্তারা ব্যয়ের সুযোগের পাশাপাশি চাকরির নিরাপত্তাও উপভোগ করবে। কারণ মার্কিন করপোরেশনগুলোর নগদ টাকার প্রবাহ তৈরি করার দুর্দান্ত সক্ষমতা মার্কিন অর্থনীতিকে সমর্থন করে। 

যাই হোক, ইউবিএস গ্লোবাল ওয়েলথ ম্যানেজমেন্টের প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা মার্ক হেফেল ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, এস অ্যান্ড পি–৫০০ মোটামুটি যেখানে শুরু করেছে ২০২৪ সালে সেখানেই শেষ হবে। যদিও তিনি মার্কিন প্রযুক্তি খাতসহ মানসম্পন্ন শেয়ারগুলোতে  বিনিয়োগের বিশেষ সুযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন। 

ব্রিটেনের এফটিএসই ১০০ সূচক গত বছর অন্যান্য প্রধান সূচকগুলো থেকে পিছিয়ে ছিল। ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ ৪ শতাংশের কম বেড়ে ৭৭৩৩ পয়েন্টে পৌঁছেছে। যেখানে বিশ্বব্যাপী বাজারগুলোতে ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। 

এদিকে ব্লু–চিপ সূচক বড় ভিত্তি তৈরি করতে পারে। ইন্টারেকটিভ জানিয়েছে, বিনিয়োগকারী গ্রাহকদের একটি ভোটাভুটিতে চারজনের মধ্যে একজন ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, এফটিএসই ১০০ এ বছর ৮ হাজার পয়েন্টে শেষ করবে।

প্যানমুর গর্ডনের প্রধান অর্থনীতিবিদ সাইমন ফ্রেঞ্চ বলছেন, আংশিকভাবে ব্রেক্সিট এবং যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে ধীরে চলো নীতির কারণে বিগত বছরে আন্তর্জাতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় ব্রিটিশ কোম্পানিগুলোর প্রায় ১৯ শতাংশ অবমূল্যায়ন হয়েছে। 

যুক্তরাজ্যে মন্দার আশঙ্কা বাড়ছে
যুক্তরাজ্য এ বছর কর্মসংস্থান হ্রাস পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বেকারত্বের হার বেড়ে এ বছর ৫ শতাংশ এবং ২০২৫ সালে ৫ দশমিক ২ শতাংশ হবে। যুক্তরাজ্যের মূল্যস্ফীতিও নিম্নগামী হবে বলে আশা করা হচ্ছে। মরগান স্ট্যানলি ভবিষ্যদ্বাণী করেছে, ২০২৪ সালে বাৎসরিক গড় মূল্যস্ফীতি ২ দশমিক ৮ শতাংশ হবে, যা গত বছরের নভেম্বরের ৩ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে কম। এরপরও ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের লক্ষ্যমাত্রা ২ শতাংশের চেয়ে এটি অনেক বেশি। 

এদিকে, ২০২৩ সালের শেষের দিকে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে মন্দার আশঙ্কা বাড়ছে। জিডিপির তথ্য হালনাগাদের পর জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে একটি ছোট সংকোচন দেখা গেছে। মরগান স্ট্যানলি পূর্বাভাস দিয়েছে, ২০২৪ সালে কৌশলগত মন্দার কারণে কমপক্ষে দুটি ধারাবাহিক প্রান্তিকে সংকোচনের ভেতর দিয়ে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি ০ দশমিক ১ শতাংশ সংকুচিত হতে পারে।

মরগান স্ট্যানলি গ্রাহকদের বলেছে, যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি একটি চ্যালেঞ্জিং নীতির সঙ্গে একটি ভঙ্গুর ভারসাম্যের মধ্যে দোদুল্যমান। এর থেকে মুক্তির কোনো সহজ পথ নেই, মূল্য চোকাতেই হবে। আমরা বছরের শুরুতে কৌশলগত মন্দা এবং ২০২৪ সালে একটি দুর্বল অর্থনীতির আভাস দেখতে পাচ্ছি। 

অর্থনীতির দুর্বলতা এবং মূল্যবৃদ্ধির ধীরগতির কারণে বিনিয়োগকারীরা আশা করছেন, ব্যাংক অব ইংল্যান্ড ২০২৪ সালে সুদের হার বর্তমান ৫ দশমিক ২৫ থেকে কমিয়ে আনবে। এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে এটি ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশে নেমে যাবে বলে তাঁদের আশা। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এমন কোনো পদক্ষেপ বিবেচনা করছে না।

পুনরায় বন্ধক রাখতে চাওয়া বাড়ির মালিকেরা এরই মধ্যে উন্নতির পূর্বাভাস পেয়ে বেশ স্বস্তিতে আছেন। যেখানে প্রধান ঋণদাতারা নির্দিষ্ট সুদ হারের চুক্তির খরচ কিছু ক্ষেত্রে ৪ শতাংশের কম রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 

অন্যান্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সুদ হার
বাজার সাধারণত ‘বেশি সময়ের জন্য বেশি সুদ হার’ তত্ত্বের বিরুদ্ধে বাজি ধরে। এই ধারণা বলে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো মূল্যস্ফীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য কিছু সময়ের জন্য ঋণ গ্রহণের খরচ সীমাবদ্ধ রাখবে। ইউএস ফেডারেল রিজার্ভ এবং ইউরোপীয় সেন্ট্রাল ব্যাংক উভয়ই ২০২৪ সালে বেশ কয়েকবার সুদের হার কমাতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। ফেডারেল রিজার্ভ বছরের শেষ নাগাদ সুদের হার ৩ দশমিক ৭৫ থেকে ৪ শতাংশে কমানোর পূর্বাভাস দিয়েছে, যা এখনকার ৫ দশমিক ২৫ থেকে ৫ দশমিক ৫ এর চেয়ে অনেক কম। 

পেপার স্টোনের গবেষণা প্রধান ক্রিস ওয়েস্টন ব্যাখ্যা করে বলেন, মূল তত্ত্ব হলো, মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যের দিকে যেতে থাকলে, শ্রমবাজার যথেষ্ট প্রতিযোগিতাপূর্ণ এবং প্রবৃদ্ধি ধারণার চেয়ে কম হলে— সুদের হার অনেক কমানো উচিত। 

গত শরতে ইউরোপীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল ইউরো জোনের মূল্যস্ফীতি ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংকের (ইসিবি) লক্ষ্যমাত্রা— ২ শতাংশের কাছাকাছি এসেছে। ডিসেম্বরের শুরুতে ইসিবি বোর্ডের সদস্য ইসাবেল শ্নাবেল বলেছিলেন, মূল্যস্ফীতির এই ‘উল্লেখযোগ্য’ পতনের অর্থ, সুদের হার বৃদ্ধি এখন আলোচনার টেবিলের বাইরে। 

স্থিতিশীল তবে মন্থর
অক্সফোর্ড ইকোনমিকস বিশ্বাস করে, বিশ্ব অর্থনীতি নিরাপদে বছর শেষ করবে কিন্তু ২০২৪ সালের প্রবৃদ্ধি ২০০৮ সালের মন্দা পরবর্তী সময়ের চেয়ে মন্থর হবে। উচ্চ সুদের হার এবং সরকারি ব্যয়ের চাপসহ নানা কারণে এটি মন্থর হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। 

মরগান স্ট্যানলি ভবিষ্যদ্বাণী করেছে, ২০২৪ সালে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৮ শতাংশ হবে, যা ২০২৩ সালের আনুমানিক ৩ শতাংশ থেকে কম। ২০২৪ সালে ইউরোপে তারা মাত্র ০ দশমিক ৫ শতাংশ এবং ২০২৫ সালে ১ শতাংশ ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি আশা করছে। বিশেষ করে জার্মানিতে জ্বালানি সরবরাহে বড় ব্যাঘাত এবং কঠোর মুদ্রানীতি অর্থনীতির বিলম্বিত প্রভাব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

ঋণ স্ফীতি চক্রের ব্যাপারে বিশ্বের নেতিবাচক ধারণা সত্ত্বেও এ বছরে উদীয়মান বাজারগুলোতে চীনের প্রভাব বাড়বে। গত বছর চীনে আবাসন খাতে ব্যাপক খেলাপি হয়, যা অন্যান্য অর্থনীতিতেও ছড়িয়ে পড়ে। 

ফরাসি অর্থনীতি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান সোসিয়েতে জনারেলে বা সকজেন ২০২৪ সালের বিশ্ব অর্থনীতিকে ‘স্থিতিশীল কিন্তু মন্থর’ আখ্যায়িত করেছে। প্রতিবেদনের সঙ্গে তারা অলস প্রাণী ‘স্লথ’–এর ছবিও যুক্ত করেছে!

ডয়েচে ব্যাংকের কৌশলবিদ জিম রিড ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, ২০২৪ সালে মন্দার সঙ্গে খুনসুটি করবে বিশ্ব অর্থনীতি এবং যুক্তরাষ্ট্র প্রথম ছয় মাসে একটি মৃদু মন্দার শিকার হবে। অর্থনীতি বছরে মাত্র ০ দশমিক ৬ শতাংশ বাড়বে, যেখানে ইউরোপীয় অর্থনৈতিক অঞ্চলে শুধু স্থবিরতার দ্বিতীয় বছরে ০ দশমিক ২ শতাংশ বাড়তে দেখা গেছে। 

ডেলয়েটের প্রধান অর্থনীতিবিদ ইয়ান স্টুয়ার্ট বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের তীব্র মন্দার চেয়ে মূল্যস্ফীতি সংকটে পড়ার আশঙ্কাই বেশি। 

স্টুয়ার্ট ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, ‘যুদ্ধোত্তর বিশ্বের বিবেচনায় এটি স্মরণীয় ঘটনা হবে। আমরা প্রকৃতির বাইরে নই, (আগের অভিজ্ঞতা বলে) ব্যবসা এবং ভোক্তা চাহিদা উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও উচ্চ সুদহারের মুখেও স্থিতিশীল ছিল। যদি কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো নিরাপদ ও স্থিতিশীল পরিকল্পনা করতে পারে, তাহলে আমরা ২০২৪ সালের অর্থনৈতিক চক্রে একটি নতুন উত্থান দেখতে পারব।’

দ্য গার্ডিয়ানের বিশ্লেষণ অনুবাদ করেছেন আব্দুল বাছেদ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সেরা ফিল্ড ফোর্সদের বিশেষ সম্মাননা দিল নগদ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সেরা ফিল্ড ফোর্সদের বিশেষ সম্মাননা দিয়েছে নগদ। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
সেরা ফিল্ড ফোর্সদের বিশেষ সম্মাননা দিয়েছে নগদ। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

সারা দেশের সাত হাজার ডিস্ট্রিবিউটর ফিল্ড ফোর্সের মধ্য থেকে সেরা পারফরম্যান্সের জন্য ৭০ জনকে বিশেষ সম্মাননা দিয়েছে ডাক বিভাগের ডিজিটাল আর্থিক লেনদেন সেবা নগদ।

রাজধানীর একটি হোটেলে গতকাল বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) ‘নগদ ফিল্ড চ্যাম্পিয়ন ২০২৫’ নামের এই সম্মাননা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠান চলাকালে ডিস্ট্রিবিউটর ফিল্ড ফোর্সদের পারফরম্যান্সের জন্য বিশেষ বোনাসের ঘোষণা দেন বাংলাদেশ ব্যাংকনিযুক্ত নগদের প্রশাসক মো. মোতাছিম বিল্লাহ। ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ৭০ জনের নগদ অ্যাকাউন্টে চলে যায় এই অর্থ।

দেশের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে ঢাকায় আসা-যাওয়া, খাওয়া, হোটেলে অবস্থানসহ অন্য সব খরচ নগদের পক্ষ থেকে বহন করা হয়।

সেরা পারফর্মারদের অভিনন্দন জানিয়ে নগদের প্রশাসক মো. মোতাছিম বিল্লাহ বলেন, অনেক চ্যালেঞ্জের মাঝেও বাজারে নগদ একটা ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেছে। বাংলাদেশে ক্যাশলেস লেনদেনের আরও প্রসার ঘটাতে নগদ ভূমিকা রাখবে বলে সরকারের নীতিনির্ধারকদের প্রত্যাশা রয়েছে। সুতরাং, যত অপপ্রচারই নগদকে নিয়ে হোক না কেন, সেসবে কান না দিয়ে নগদের সাফল্যের জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে।

নগদের সেবার প্রসার ঘটাতে এ সময় মোতাছিম বিল্লাহ ডিস্ট্রিবিউটর ফিল্ড ফোর্সদের কাছ থেকে নগদ বিষয়ে পরামর্শ ও সুপারিশ জানতে চান। তাঁদের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে নগদ প্রশাসক বলেন, অল্প সময়ের ভেতরই সেবার কলেবর আরও বাড়বে নগদে। ফলে লেনদেনের অঙ্ক যেমন অনেক গুণ বাড়বে, একই সঙ্গে গ্রাহকেরাও অনেক বেশি উপকৃত হবেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকনিযুক্ত নগদের জ্যেষ্ঠ সহযোগী প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান, ডাক বিভাগনিযুক্ত নগদের জ্যেষ্ঠ সহযোগী প্রশাসক মো. আবু তালেব, নগদের চিফ কমার্শিয়াল অফিসার মোহাম্মদ শাহীন সারওয়ার ভূঁইয়া বক্তব্য দেন।

বক্তারা বলেন, আগামী বছরে বিদেশ থেকে আসা রেমিট্যান্স, বাংলা কিউআর, সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লেনদেনের জন্য আন্তসংযোগ গেম চেঞ্জারের ভূমিকা পালন করবে নগদ। ফলে ২০২৬ সাল নগদের সেরা সাফল্যের বছর হবে বলেও মনে করেন তাঁরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক চালু করল ডিএসই

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক চালু করেছে ডিএসই। ছবি: সংগৃহীত
ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক চালু করেছে ডিএসই। ছবি: সংগৃহীত

তথ্যসেবা আরও সহজ ও কার্যকর করার লক্ষ্যে ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক স্থাপন করেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। আজ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ আসাদুর রহমান এই ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডিএসইর প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা ড. আসিফুর রহমান, প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা মো. ছামিউল ইসলাম, প্রধান রেগুলেটরি কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়াসহ ডিএসইর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় মোহাম্মদ আসাদুর রহমান বলেন, ইনফরমেশন হেল্প ডেস্কের মাধ্যমে পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্ট তথ্য প্রদান আরও সহজ হবে এবং বিনিয়োগকারী ও অন্য অংশীজনদের বিভিন্ন জিজ্ঞাসার দ্রুত ও কার্যকর সমাধান নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এর ফলে ডিএসইর সেবার মান আরও গ্রাহকবান্ধব ও স্বচ্ছ হবে।

ডিএসইর এমডি আশা প্রকাশ করেন, এই হেল্প ডেস্ক ডিএসইর বাজার অংশগ্রহণকারীদের আস্থা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

পুঁজিবাজারসংক্রান্ত সব ধরনের তথ্যের জন্য +৮৮-০২-৪১০৪০১৮৯, ০৯৬৬৬৭০২০৭০ নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ট্রাভেল ও ট্যুরিজম অ্যাওয়ার্ড: লিড স্পনসর ‘গ্যালাক্সি’, হসপিটালিটি পার্টনার ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
ট্রাভেল ও ট্যুরিজম অ্যাওয়ার্ড: লিড স্পনসর ‘গ্যালাক্সি’, হসপিটালিটি পার্টনার ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা

দেশের অন্যতম ভ্রমণ ও পর্যটনবিষয়ক প্রকাশনা বাংলাদেশ মনিটর আয়োজিত ‘বাংলাদেশ ট্রাভেল, ট্যুরিজম ও হসপিটালিটি অ্যাওয়ার্ড (BTTHA) ২০২৫’-এর লিড স্পনসর হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে দেশের ভ্রমণশিল্পের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান গ্যালাক্সি গ্রুপ।

একই সঙ্গে পাঁচ তারকা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা এই আয়োজনের হসপিটালিটি পার্টনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে।

দেশের ভ্রমণ, পর্যটন ও আতিথেয়তা শিল্পে একমাত্র স্বীকৃত এই পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানটি এবার দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

গতকাল বুধবার ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট চুক্তিসমূহ স্বাক্ষরিত হয়।

বাংলাদেশ মনিটরের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন সম্পাদক কাজী ওয়াহিদুল আলম। গ্যালাক্সি গ্রুপের পক্ষে লিড স্পনসর চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ ইউসুফ ওয়ালিদ। অন্যদিকে ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকার পক্ষে হসপিটালিটি পার্টনার চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন হোটেলটির জেনারেল ম্যানেজার ডেভিড ও’ হ্যানলন।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মনিটরের সম্পাদক কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন, গ্যালাক্সি ও ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকার সম্পৃক্ততায় অ্যাওয়ার্ড প্রোগ্রামের মর্যাদা ও পরিসর আরও বৃদ্ধি পাবে। এর মাধ্যমে দেশের ভ্রমণ ও আতিথেয়তা শিল্পে উৎকর্ষতা অর্জন এবং উত্তম চর্চা উৎসাহিত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

গ্যালাক্সি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ ইউসুফ ওয়ালিদ বলেন, পর্যটন ও আতিথেয়তা খাতে উদ্ভাবন, সেবার মান এবং টেকসই উন্নয়নকে স্বীকৃতি প্রদানকারী একটি মহতী উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে তারা গর্বিত।

ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকার জেনারেল ম্যানেজার ডেভিড ও’ হ্যানলন বিশ্বমানের আতিথেয়তা প্রদানের পাশাপাশি অসাধারণ অর্জনকে স্বীকৃতি দেওয়ার লক্ষ্যে এমন একটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে যুক্ত থাকার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

চলতি বছর ২৫টি ক্যাটাগরিতে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। শুধু আবেদনকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানই পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হবে। সমাজের বিভিন্ন স্তরের প্রতিনিধিত্বকারী অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বিচারক প্যানেল বিশেষজ্ঞদের মূল্যায়ন এবং পাবলিক ভোটিংয়ের ভিত্তিতে বিজয়ীদের চূড়ান্ত করবেন।

এবার নতুন করে যুক্ত করা হয়েছে দুটি বিশেষ ক্যাটাগরি—সর্বাধিক পর্যটনবান্ধব বিদেশি গন্তব্য, বাংলাদেশের সর্বাধিক জনপ্রিয় পর্যটন স্পট। এই দুটি ক্যাটাগরির বিজয়ী সরাসরি পাবলিক ভোটিংয়ের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে।

বাংলাদেশের পর্যটন ইকোসিস্টেমের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা জানানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ মনিটর ২০২৪ সালে প্রথমবারের মতো এই পুরস্কারের প্রবর্তন করে।

প্রথম আসরের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় এ বছর আরও বৃহৎ পরিসরে এই আয়োজন করা হচ্ছে, যেখানে অংশগ্রহণের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দৃশ্যমানতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভারত থেকে আসা পণ্যবাহী ট্রাকের চলাচল নজরদারি করবে এনবিআর

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ৪৩
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ভারত থেকে আমদানি করা পণ্যবাহী ট্রাকের চলাচল আরও স্বচ্ছ ও প্রযুক্তিনির্ভর করতে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে ‘ট্রাক মুভমেন্ট’ নামে নতুন একটি সাব-মডিউল চালু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর মাধ্যমে প্রতিটি ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাকের প্রবেশ, অবস্থানকাল এবং খালি ট্রাকের ফেরত-সংক্রান্ত তথ্য ইলেকট্রনিকভাবে সংরক্ষণ করা হবে।

আজ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় এনবিআর।

এনবিআর জানায়, প্রাথমিকভাবে যশোরের বেনাপোল কাস্টম হাউসে ১৫ ডিসেম্বর থেকে এই সাব-মডিউলের পাইলট কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর আগে ট্রাক প্রবেশ ও বহির্গমনের তথ্য ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা হতো, যা সময়সাপেক্ষ ও ত্রুটিপূর্ণ হওয়ার ঝুঁকি ছিল।

নতুন মডিউল চালুর ফলে ভারতীয় প্রতিটি ট্রাকের আগমন ও বহির্গমনের প্রকৃত তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংরক্ষিত থাকবে। এতে ট্রাকের অবস্থানকাল নির্ধারণ, সীমান্ত এলাকায় ট্রাক চলাচল কার্যকরভাবে মনিটরিং এবং রিয়েল-টাইম রিপোর্ট তৈরি করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি তথ্য ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা বাড়বে, রাজস্বহানি রোধে সহায়ক হবে এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত হবে বলে জানিয়েছে এনবিআর।

এনবিআরের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সীমান্ত বাণিজ্য ব্যবস্থাপনায় এই ডিজিটাল উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ট্রাক চলাচলের নির্ভুল তথ্য থাকায় শুল্ক ও কর ব্যবস্থাপনায় নজরদারি জোরদার হবে, একই সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষাও বাড়বে।

খুব শিগগির দেশের সব স্থলবন্দরে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমের ‘ট্রাক মুভমেন্ট’ সাব-মডিউলটি লাইভ অপারেশনে আনার পরিকল্পনা রয়েছে এনবিআরের। এতে স্থলবন্দরভিত্তিক আমদানি কার্যক্রম আরও গতিশীল ও আধুনিক হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত