Ajker Patrika

বিদেশি বিনিয়োগের বিশাল কর্মযজ্ঞ আড়াইহাজারে

সাইফুল মাসুম, ঢাকা
বিদেশি বিনিয়োগের বিশাল কর্মযজ্ঞ আড়াইহাজারে

ঢাকা থেকে ৩২ কিলোমিটার দূরে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বাংলাদেশ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের (বিএসইজেড) প্রকল্প এলাকা। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাছে ছনপাড়া এলাকায় বিএসইজেডের প্রধান ফটক। ঢাকা থেকে মোটরসাইকেলে যেতে লাগল এক ঘণ্টার কিছু বেশি সময়। গত শনিবার প্রকল্প এলাকায় গিয়ে রীতিমতো কর্মযজ্ঞ চলতে দেখা যায়। দেশি-বিদেশি শ্রমিকেরা কাজ করছেন পূর্ণোদ্যমে। মহাসড়কের সঙ্গে প্রকল্প এলাকার সংযোগ সড়ক, সীমানাপ্রাচীর তৈরির কাজ শেষ।

একাধিক কর্মকর্তা জানান, এরই মধ্যে চুক্তি হয়েছে তুরস্কভিত্তিক সিঙ্গার এবং জার্মানির কোম্পানি রুডলফের সঙ্গে। আরও কয়েকটি দেশের অন্তত ৪০টি কোম্পানি এরই মধ্যে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ দেখিয়েছে। এসবের মধ্যে জাপানেরই ৩০টি। কাল মঙ্গলবার উদ্বোধনের দিনই জাপানের দুটি কোম্পানিসহ কয়েকটি বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হওয়ার কথা। এখানে প্রায় ১৫০ কোটি ডলার (১৫ হাজার কোটি ডলারের বেশি) বিনিয়োগ হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

জাপানের অংশীদারিতে এক হাজার একর জমির ওপর এই বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাল সকালে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে উদ্বোধন করবেন। জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। 
জাপানের অংশীদারিতে প্রতিষ্ঠিত হতে যাওয়ায় বিএসইজেডটি জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চল নামে পরিচিতি পাচ্ছে।

এরই মধ্যে ১৬০ একর জায়গা হস্তান্তরের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছেঅগ্রগতি ৮৫ শতাংশ
বিএসইজেডের প্রকল্প পরিচালক সালেহ আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রকল্পের অগ্রগতি ৮৫ শতাংশ। বিনিয়োগকারীদের হস্তান্তর করার জন্য ১৬০ একর জায়গা এরই মধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে। বিদেশি একটি কোম্পানিকে ৩৫ একর জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে তারা কারখানা তৈরির কাজ শুরু করেছে। আর প্রকল্প উদ্বোধনের সময় শতাধিক জাপানিসহ কয়েকটি দেশের বিনিয়োগকারীরা উপস্থিত থাকবেন। উদ্বোধনের দিনই কয়েকটি বিদেশি কোম্পানির বিনিয়োগবিষয়ক চুক্তি করার কথা। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কথা ভেবে একটু আগেভাগেই বিশেষ অর্থনৈতিক জোন উদ্বোধন করা হচ্ছে।’

প্রকল্প এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, উদ্বোধন সামনে রেখে কর্মতৎপরতা বেড়েছে কয়েক গুণ। জমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ। কর্মকর্তারা জানান, সিঙ্গার ৭৯০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে।

বিএসইজেডে বেজার মালিকানা ২৪ শতাংশ, জাপানি কোম্পানি সুমিতোমোর ৭৬ শতাংশ এবং জাপান আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) অংশীদারি ১৫ শতাংশ।

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বাংলাদেশ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের (বিএসইজেড) প্রকল্প এলাকা৪২ বিদেশি কোম্পানি বিনিয়োগে আগ্রহী
বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন গতকাল রোববার আগারগাঁওয়ে নিজ কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভায় জানান, বিএসইজেড পুরোপুরি চালু হলে ১৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগ হবে। এতে কর্মসংস্থান হবে এক লাখ মানুষের। বিনিয়োগে এরই মধ্যে চুক্তি সই হয়েছে সিঙ্গার ও জার্মানির রুডলফের সঙ্গে। আরও ৪০টি বিদেশি কোম্পানি বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছে, সেগুলোর মধ্যে ৩০টি জাপানের।

ওনদা, নিক্কা চুক্তি করতে পারে কাল
ডেভেলপমেন্ট জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশের (ডিজেএফবি) সঙ্গে মতবিনিময় সভায় শেখ ইউসুফ হারুন জানান, উদ্বোধনের দিন জাপানের দুটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি সই হওয়ার কথা রয়েছে। তবে ওই দুটি কোম্পানির নাম প্রকাশে অপারগতা জানিয়েছেন তিনি।

মহাসড়কের সঙ্গে প্রকল্প এলাকার সংযোগ সড়ক, সীমানাপ্রাচীর তৈরির কাজ শেষঅন্য একটি সূত্রে জানা যায়, জাপানের ওনদা করপোরেশন ও নিক্কা কেমিক্যালসের সঙ্গে ৬ ডিসেম্বর সরকারের চুক্তি হওয়ার কথা আছে। দুই প্রতিষ্ঠানই বিএসইজেডে ১০ একর করে জায়গা বরাদ্দ পাচ্ছে। ওনদা সেখানে গ্যাস মিটার তৈরির কারখানা করবে, আর নিক্কা কেমিক্যালস রাসায়নিক পণ্য উৎপাদন করবে।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএসইজেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারো কাউয়াচি, প্রকল্প পরিচালক সালেহ আহমেদ, বেজার নির্বাহী সদস্য ইরফান শরীফ, আবদুল আজীম চৌধুরী, ডিজেএফবির সভাপতি হামিদ উজ জামান প্রমুখ।

জাইকার উদ্যোগে হবে দক্ষতা উন্নয়ন কেন্দ্র
আগামী গ্রীষ্মে এখানে উৎপাদন শুরুর আশা করে বিএসইজেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারো কাউয়াচি জানান, দুই বিনিয়োগকারীর মধ্যে সিঙ্গার ৩৫ একর জায়গা পেয়েছে। কোম্পানিটি ৭৯ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। আর রুডলফ পেয়েছে ৫ একর জায়গা, বিনিয়োগ করবে ৭ মিলিয়ন ডলার।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বিএসইজেডসহ অন্যান্য অর্থনৈতিক অঞ্চলে দক্ষ জনবল সরবরাহে জাইকার উদ্যোগে দক্ষতা উন্নয়ন কেন্দ্রও স্থাপন করা হবে।

 দেশি-বিদেশি শ্রমিকেরা কাজ করছেন পূর্ণোদ্যমেউন্নয়নে জাইকার ২৫০০ কোটি, সুমিতোমোর ১০০০ কোটি টাকা
প্রকল্পে বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে দুই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এক হাজার একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। ভূমি ও অবকাঠামো উন্নয়নে আড়াই হাজার কোটি টাকা অর্থায়ন করছে জাইকা। ঠিকাদারির কাজ পেয়েছে জাপানি টোয়া করপোরেশন। উন্নয়নকাজে এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে সুমিতোমো।
জানা যায়, পরিবেশবান্ধব ব্যবস্থাপনায় এখানে উৎপাদিত হবে ওষুধ, অটোমোবাইল, ইলেকট্রনিক সামগ্রীসহ অনেক মূল্যবান পণ্য।

বদলে যাচ্ছে আড়াইহাজার
রাজধানীর কাছে হলেও আড়াইহাজার উপজেলার অধিকাংশ জনপদ ছিল অনগ্রসর। পাঁচরুখি, ছনপাড়া, সিংহদি, পাঁচগাঁও, পাঁচবাড়িয়া ছিল প্রত্যন্ত গ্রাম। তবে বিএসইজেড প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ায় পাল্টাতে থাকে চেহারা। জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় প্রায় ১ হাজার ৮০০ ভূমিমালিক লাভবান হয়েছেন। দরিদ্র মানুষেরা শ্রমিক হিসেবে কাজ পেয়েছেন।

 উদ্বোধন সামনে রেখে কর্মতৎপরতা বেড়েছে কয়েক গুণবিএসইজেডে ফটকের পাশে শীতের পিঠা বিক্রি করেন ছনপাড়ার আনোয়ার-জয়তুন দম্পতি। আনোয়ার জানান, আগে মাছের আড়তে কাজ করতেন। এখন প্রকল্পের শ্রমিকদের কাছে পিঠা বিক্রি করে বেশি আয় করেন।

প্রকল্পের কারণে মাহফুজা বেগমের বাড়ির একাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর জন্য তিনি ৭৫ লাখ টাকা পান। কেউ কেউ কোটি টাকাও পেয়েছেন। প্রকল্পে বালু ভরাট কাজের শ্রমিক রুহুল আমিন বলেন, ‘ছনপাড়ায় একের পর এক ভবন ওঠতাছে, শহরে পরিণত অইতাছে।’

বিদেশি বিনিয়োগে আস্থা বাড়বে
বিএসইজেড পুরোপুরি সচল হলে বিদেশি বিনিয়োগে আস্থার সংকট কাটবে বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সেলিম রায়হান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই অর্থনৈতিক জোন যদি দ্রুত বাস্তবায়িত হয় এবং দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে পারে, তাহলে অবশ্যই আমাদের অর্থনীতিতে বড় ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। এতে বৈদেশিক লেনদেনে ভারসাম্য আসবে। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়বে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

হাদিকে গুলি: সীমান্তে মানুষ পার করা ফিলিপকে খুঁজছে পুলিশ, তাঁর দুই সহযোগী আটক

খালি হাতে বন্দুকধারীকে ঠেকিয়ে নায়ক বনে যাওয়া কে এই আল-আহমেদ

ড. ইউনূস যদি চান, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাতে পারেন—আদালতে আনিস আলমগীর

একটা লাশ পড়লে আমরাও কিন্তু লাশ নেব, অত সুশীলতা করে লাভ নেই: মাহফুজ আলম

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সোনার দাম ভরিতে ১৪৭০ টাকা বাড়ল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

দেশের বাজারে সোনার দাম আরও বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ১ হাজার ৪৭০ টাকা। এতে এক ভরি সোনার দাম ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ টাকা হয়েছে।

স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পাকা সোনা) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।

সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠক করে এই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এর আগে ১৪ ডিসেম্বর ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয় ৩ হাজার ৪৪২ টাকা এবং ১২ ডিসেম্বর ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয় ১ হাজার ৫০ টাকা। এই দাম বাড়ানোর ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে এখন আবার দাম বাড়ানো হলো।

এখন সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ৪৭০ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ৪১১ টাকা বাড়িয়ে ২ লাখ ৭ হাজার ২১১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এ ছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ২৪৮ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম ১ লাখ ৭৭ হাজার ৬৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ৬৩ টাকা বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৯০০ টাকা।

বিষয়:

দামসোনা
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

হাদিকে গুলি: সীমান্তে মানুষ পার করা ফিলিপকে খুঁজছে পুলিশ, তাঁর দুই সহযোগী আটক

খালি হাতে বন্দুকধারীকে ঠেকিয়ে নায়ক বনে যাওয়া কে এই আল-আহমেদ

ড. ইউনূস যদি চান, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাতে পারেন—আদালতে আনিস আলমগীর

একটা লাশ পড়লে আমরাও কিন্তু লাশ নেব, অত সুশীলতা করে লাভ নেই: মাহফুজ আলম

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শেভরনের সহায়তায় সিলেটে ৬০ প্রতিবন্ধী ব্যক্তির স্বাভাবিক জীবনে ফেরা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
শেভরন-এসএমআইএল প্রকল্পে ৬০ প্রতিবন্ধীর মধ্যে কৃত্রিম অঙ্গ বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
শেভরন-এসএমআইএল প্রকল্পে ৬০ প্রতিবন্ধীর মধ্যে কৃত্রিম অঙ্গ বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

শেভরন বাংলাদেশের সহায়তায় বাস্তবায়িত এসএমআইএল (SMILE) প্রকল্পের আওতায় ‘রিস্টোরিং মোবিলিটি: আর্টিফিশিয়াল লিম্ব সাপোর্ট’ উদ্যোগের সমাপনী অনুষ্ঠান সম্প্রতি গ্র্যান্ড সিলেটে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে সিলেট ও নবীগঞ্জ উপজেলার ৬০ শারীরিক প্রতিবন্ধী উপকারভোগীর মধ্যে কৃত্রিম অঙ্গ (প্রোস্থেটিক) ও অর্থোটিক ডিভাইস বিতরণ করা হয়।

দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে পুনর্বাসন ও চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত থাকা এই উপকারভোগীরা কৃত্রিম অঙ্গ পেয়ে নতুন জীবন ফিরে পেলেন। জালালাবাদ ডিজেবল্ড রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার অ্যান্ড হাসপাতালের (জেডিআরসিএইচ) সহযোগিতায় এই উদ্যোগ পরিচালিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সমন্বয় ও মনিটরিং উইংয়ের সচিব মো. আবদুল মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন শেভরন বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও প্রেসিডেন্ট এরিক এম ওয়াকার, করপোরেট অ্যাফেয়ার্স পরিচালক মুহাম্মদ ইমরুল কবির, সোশ্যাল ইনভেস্টমেন্ট প্রধান এ কে এম আরিফ আক্তার, সুইসকন্টাক্টের কান্ট্রি ডিরেক্টর হেলাল হোসেন এবং জেডিআরসিএইচ বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান রোটারিয়ান পিপি ইঞ্জিনিয়ার শোয়াইব আহমেদ মতিন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. আবদুল মান্নান বলেন, ‘কৃত্রিম অঙ্গ সহায়তা শুধু চিকিৎসা নয়, এটি প্রতিবন্ধী মানুষের জীবনযাত্রায় মৌলিক পরিবর্তন আনে। শেভরন বাংলাদেশ, সুইসকন্টাক্ট ও জেডিআরসিএইচের যৌথ উদ্যোগ চলাচল সক্ষমতা ফিরিয়ে এনে উপকারভোগীদের জীবনে নতুন আশার দ্বার খুলে দিয়েছে।’

শেভরন বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও প্রেসিডেন্ট এরিক এম ওয়াকার বলেন, ‘বিশ্বের প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ এ ধরনের বিশেষায়িত পুনর্বাসন সেবার পর্যাপ্ত সুযোগ পায় না। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ব্যক্তিকেন্দ্রিক সেবা পৌঁছে দিতে পারা আমাদের জন্য গর্বের। উপকারভোগীদের প্রতিটি অগ্রযাত্রাই একটি সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতের দিকে দৃঢ় পদক্ষেপ।’

সুইসকন্টাক্টের কান্ট্রি ডিরেক্টর হেলাল হোসেন বলেন, ‘এই প্রকল্প কেবল চলাচল সক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়নি; এটি উপকারভোগীদের কর্মজীবনে ফেরা, শিক্ষা চালিয়ে যাওয়া এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করেছে—যা সমাজে অন্তর্ভুক্তি আরও সুদৃঢ় করেছে।’

করপোরেট অ্যাফেয়ার্স পরিচালক মুহাম্মদ ইমরুল কবির বলেন, ‘শেভরন তিন দশকের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের বিশ্বস্ত জ্বালানি অংশীদার। আমাদের অঙ্গীকার কেবল জ্বালানি সরবরাহেই সীমাবদ্ধ নয়। এসএমআইএল প্রকল্পের মতো উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা চলাচল সক্ষমতা ও মানবিক মর্যাদা পুনরুদ্ধারে কাজ করছি। বাংলাদেশে আমাদের সামাজিক বিনিয়োগ কার্যক্রম জাতিসংঘ ঘোষিত ১৭টি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের মধ্যে ৯টির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।’

অনুষ্ঠানে উপকারভোগীরা তাঁদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, কৃত্রিম অঙ্গ পাওয়ার ফলে তাঁরা আবার স্বাভাবিক চলাচল, আত্মনির্ভরতা ও আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছেন। এই ইতিবাচক পরিবর্তনের প্রভাব পরিবার ও সমাজেও ছড়িয়ে পড়ছে।

গৃহস্থালি আয় স্থিতিশীল হওয়া ও আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির ফলে এর ইতিবাচক প্রভাব পরিবার ও সমাজে ছড়িয়ে পড়ছে—যা কমিউনিটির স্থিতিশীলতা ও সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করছে। এ সাফল্যের ধারাবাহিকতায় শেভরন বাংলাদেশ ও সুইসকন্টাক্ট এসএমআইএল প্রকল্পের মাধ্যমে টেকসই ও প্রভাবশালী উন্নয়ন উদ্যোগ বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে। যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে তারা অর্থোটিক ও প্রোস্থেটিক সহায়তা প্রয়োজন, এমন মানুষের জীবনমান উন্নয়নে বাস্তব ও পরিমাপযোগ্য পরিবর্তন নিশ্চিত করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

হাদিকে গুলি: সীমান্তে মানুষ পার করা ফিলিপকে খুঁজছে পুলিশ, তাঁর দুই সহযোগী আটক

খালি হাতে বন্দুকধারীকে ঠেকিয়ে নায়ক বনে যাওয়া কে এই আল-আহমেদ

ড. ইউনূস যদি চান, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাতে পারেন—আদালতে আনিস আলমগীর

একটা লাশ পড়লে আমরাও কিন্তু লাশ নেব, অত সুশীলতা করে লাভ নেই: মাহফুজ আলম

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আরও ১৪ কোটি ১৫ লাখ ডলার কিনল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দেশের বৈদেশিক মুদ্রাবাজার স্থিতিশীল রাখতে এবং রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের প্রবাহ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকগুলো থেকে অতিরিক্ত ডলার ক্রয় করেছে। আজ সোমবার ১৩টি ব্যাংক থেকে প্রায় ১৪ কোটি ১৫ লাখ মার্কিন ডলার (১৪১.৫ মিলিয়ন) কেনা হয়েছে। ডলারের বিনিময়হার ছিল ১২২ দশমিক ২৯ থেকে ১২২ দশমিক ৩০ টাকা আর কাট-অফ রেট ছিল ১২২ দশমিক ৩০ টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে, ১১ ডিসেম্বর ১৬টি ব্যাংক থেকে প্রায় ১৫ কোটি ডলার (১৪৯ মিলিয়ন) কেনা হয়েছিল। এ সময় প্রতি ডলারের বিনিময়হার ছিল ১২২ টাকা ২৫ পয়সা থেকে ১২২ টাকা ২৯ পয়সা। আর কাট-অফ রেট ছিল ১২২ টাকা ৯ পয়সা। চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এখন পর্যন্ত নিলামপদ্ধতিতে মোট ২৮০ কোটি ৪৫ লাখ ডলার (২.৮০ বিলিয়ন) সংগ্রহ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র জানান, আজ ১৩টি ব্যাংক থেকে প্রায় ১৪ কোটি ১৫ লাখ মার্কিন ডলার কেনা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

হাদিকে গুলি: সীমান্তে মানুষ পার করা ফিলিপকে খুঁজছে পুলিশ, তাঁর দুই সহযোগী আটক

খালি হাতে বন্দুকধারীকে ঠেকিয়ে নায়ক বনে যাওয়া কে এই আল-আহমেদ

ড. ইউনূস যদি চান, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাতে পারেন—আদালতে আনিস আলমগীর

একটা লাশ পড়লে আমরাও কিন্তু লাশ নেব, অত সুশীলতা করে লাভ নেই: মাহফুজ আলম

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দিনে ১৭২৫০ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিল সরকার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বাজার সহনীয় করতে পেঁয়াজের আমদানি আরও বাড়িয়েছে সরকার। আজ সোমবার থেকে দৈনিক ১৭ হাজার ২৫০ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে; যা আগে ছিল ৬ হাজার টন করে।

আজ এক বিজ্ঞপ্তিতে কৃষি মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।

জানা যায়, চলতি মাসের শুরু থেকে হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকে। তিন দিনের ব্যবধানে ১২০ টাকার পেঁয়াজের দাম বেড়ে ১৫০ টাকা পর্যন্ত ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৭ ডিসেম্বর থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া শুরু করে কৃষি মন্ত্রণালয়। শুরুতে প্রতিদিন ৫০ জন আমদানিকারককে ৩০ টন করে মোট ১ হাজার ৫০০ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। দীর্ঘ তিন মাস পর এই অনুমোদন দেওয়া হয়।

তবে এরপরও বাজারে দাম না কমলে আমদানির অনুমতির পরিমাণ বাড়ানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমদানি আরও বাড়ানো হয়। ১৩ ডিসেম্বর থেকে প্রতিদিন ২০০ জনকে ৩০ টন করে ৬ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়, যা আজ থেকে আরও বাড়িয়ে ১৭ হাজার ২৫০ টন করা হয়।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে আজ বলা হয়, পেঁয়াজের বাজার সহনীয় রাখতে ১৫ ও ১৬ ডিসেম্বর দুই দিনের জন্য প্রতিদিন ৫৭৫টি করে আইপি (আমদানি অনুমতি) ইস্যু করা হবে। প্রতিটি আইপিতে আগের ন্যায় সর্বোচ্চ ৩০ টন পেঁয়াজের অনুমোদন দেওয়া হবে। আবেদনের বিষয় আগের ন্যায় বলবৎ থাকবে। অর্থাৎ গত ১ আগস্ট থেকে যেসব আমদানিকারক আমদানি অনুমতির জন্য আবেদন করেছেন, তাঁরাই কেবল এই দুই দিন আবেদন পুনরায় দাখিল করতে পারবেন। একজন আমদানিকারক একবারের জন্য আবেদনের সুযোগ পাবেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ উইংয়ের অতিরিক্ত উপপরিচালক (আমদানি) বনি আমিন খান বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের নির্দেশের পর আজ আমরা ৫৭৫ জনকে আমদানির অনুমোদন দিয়েছি। অনুমোদন নিয়ে এ দিন আমদানিকারকেরা ঋণপত্র খুলতে পেরেছেন। যদিও দুই দিনের কথা বলা হয়েছে, তবে সরকার প্রয়োজন মনে করলে সময় আরও বাড়বে। এর আগে গত শনিবার থেকে প্রতিদিন ৬ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দিয়ে আসছিলাম আমরা।’

দেশে সাধারণত প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করেন ব্যবসায়ীরা। সে হিসাবে যেদিন ঋণপত্র খোলেন, সেদিনই আমদানি করতে পারেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

হাদিকে গুলি: সীমান্তে মানুষ পার করা ফিলিপকে খুঁজছে পুলিশ, তাঁর দুই সহযোগী আটক

খালি হাতে বন্দুকধারীকে ঠেকিয়ে নায়ক বনে যাওয়া কে এই আল-আহমেদ

ড. ইউনূস যদি চান, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাতে পারেন—আদালতে আনিস আলমগীর

একটা লাশ পড়লে আমরাও কিন্তু লাশ নেব, অত সুশীলতা করে লাভ নেই: মাহফুজ আলম

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত