রাশেদা রওনক খান

এই মুহূর্তে বাংলাদেশ কেন, সারা বিশ্বেই নানা দেশ নানা ধরনের সমস্যার মধ্য দিয়ে সময় পার করছে। কেউ দেশ দখল তো কেউ ধর্ম নিয়ে, কেউবা গোয়েন্দা সংস্থার চরবৃত্তি নিয়ে শঙ্কিত, কেউবা পরমাণুকেন্দ্র সামাল দেওয়া নিয়ে চিন্তিত। তবে করোনাকালে স্বাস্থ্যব্যবস্থা ও অর্থনীতিতে ব্যাপক চাপ তৈরি হওয়ায় বেশির ভাগ দেশই অর্থনৈতিক সংকটের মুখে আছে। করোনা-পরবর্তী সময়ে কারও কারও ক্ষেত্রে এই সংকট চরমে উঠতে পারে, এমনটি ধারণা করা যেতেই পারে। সেখান থেকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরাম জানাচ্ছে, বাংলাদেশের অর্থনীতি এগিয়ে চলেছে। বিষয়টি আশাব্যঞ্জক তো বটেই, গর্বেরও আমাদের জন্য। চারদিকে সামাজিক ও পারিবারিক অবক্ষয়, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে জবাবদিহির অভাব, রাজনৈতিক সংকট, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, বিভিন্ন পর্যায়ে দুর্নীতিসহ নানা কারণে অনেকের মনেই প্রশ্নটি আসে যে বাংলাদেশ কি আসলেই এগিয়ে যাচ্ছে?
প্রশ্নটার উত্তর সহজ আর সরল থাকে না, অনেকটাই কঠিন হয়ে দাঁড়ায় নানা কারণেই! অনেক বিচার–বিশ্লেষণের দাবিও রাখে সেই সব কারণ এবং এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রগুলো। এত সব বিচার-বিশ্লেষণ এই মুহূর্তে আমার পক্ষে করা কিছুটা কঠিন, যেহেতু দেশের বাইরে আছি। সবকিছু নিজের চোখে দেখার ও শোনার অবকাশ কম। গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম যা জানাচ্ছে, তা–ই কেবল জানছি। এই জানানোর প্রক্রিয়ায় যেমন শুদ্ধতা আছে, তেমনি অনেক রাজনীতি আছে। তাই নির্মোহ বিচার-বিশ্লেষণ করা কঠিন কেবল এই দুইয়ের ওপর ভরসা করে। তাই লেখাটির আমন্ত্রণ পাওয়ার পরও বারবার ভাবছিলাম লিখব কি না! যখন বুঝলাম লিখতেই হবে, ছাড় পাওয়া যাবে না! তখন ভাবলাম, কী নিয়ে লেখা যায়! এমন কী বিষয় আছে যে কারণে দেশকে নিয়ে এই মুহূর্তে আমি ব্যক্তিমানুষ গর্ব করতে পারি? যদি আমার ভাবনাটাকে দুই ভাগে বিভক্ত করে এক ভাগে ওপরে বর্ণিত নানা রাষ্ট্রীয়, সামাজিক ও পারিবারিক সংকটগুলোকে রাখি, অন্য ভাগে কেবল প্রাপ্তি আর সম্ভাবনার কথা চিন্তা করি, তাহলে আমাদের প্রাপ্তি ও সম্ভাবনাগুলো কী?
একদিকে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল, বিদ্যুৎ, খাদ্য উৎপাদন, রিজার্ভ বাড়ছে, মধ্যম আয়ের দেশের স্বীকৃতি ইত্যাদি যখন একসঙ্গে ঘটছে, তখন তো বলা যেতেই পারে, হ্যাঁ, বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে। দেশ এগিয়ে চলার পেছনে প্রধান ভূমিকা এ দেশের খেটে খাওয়া মানুষের। তারা দুর্দান্ত গতিতে ইনফরমাল ইকোনমিতে কাজ করে চলেছে, অন্যদিকে ফরমাল ইকোনমি তো আছেই। আমরা একসময় মঙ্গার কথা শুনতাম, মানুষ না খেয়ে মারা যেত উত্তরবঙ্গে, আজ সেই মঙ্গার প্রকোপ নেই। আমার গবেষণা এলাকা কড়াইল বস্তিতে যখন হেঁটে বেড়াই, তখন মনে হয় এই গরিব মানুষদের অর্থনৈতিক কার্যক্রম আমাদের অর্থনীতির চাকাকে সচল করে দিচ্ছে প্রতিনিয়ত। সেই ভোরবেলায় হাজারো মেয়ের একসঙ্গে রাস্তায় বেরিয়ে পড়া গার্মেন্টসে যাওয়ার দৃশ্য, কী যে এক অভাবনীয় অভূতপূর্ব দৃশ্য, তা নিজের চোখে দেখাটাও অনেক গর্বের! তাদের প্রতি একধরনের কৃতজ্ঞতা বোধ যেমন জন্মায়, অন্যদিকে তাঁদের কর্মক্ষমতা আমাকে উৎসাহ দেয়। কিন্তু তাঁদের এই যাতায়াতের পথ কি আমরা মসৃণ করতে পেরেছি? ইভ টিজিং থেকে শুরু করে নানা রকমের যৌন হয়রানি, ধর্ষণ—এসবই বাধা হয়ে দাঁড়ায় এই কর্মচাঞ্চল্যময় কর্মশক্তির সামনে। এই তো সেদিন সাভারে এক গার্মেন্টস কর্মী কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এইটুকু নিরাপত্তা যদি আমরা তাঁদের নিশ্চিত করতে না পারি, তাহলে তাঁদের নিয়ে যে আমরা দেশে-বিদেশে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে গল্প বলি, তাঁদের এগিয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়াকে গ্রাফে এঁকে দেখাই, তখন তো নিজের ভেতরে অনুশোচনাবোধ হয় যে যাঁদের নিয়ে বিভিন্ন দেশে গল্প বলি, সেসব মানুষের অনেককেই আমরা নিরাপত্তা দিতে পারছি না। রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কি ভেবে দেখবে, কীভাবে তাঁদের এই পথচলাকে আরও নিরাপদ করা যায়? কারণ, দেশের অর্থনীতির চাকা আরও বেগবান করার জন্য হলেও তাঁদের জীবনের নিরাপত্তা দিতে হবে। তা ছাড়া, এভাবে লাগামছাড়া ধর্ষণ বাড়তে থাকলে দেশও ইমেজ সংকটের মধ্যে পড়ে যায়। কেবল অর্থনীতিতে সমৃদ্ধি এলেই কি একটি দেশকে সফল বলা যাবে? না, বিষয়টা কিন্তু এত সহজ নয়। সফলতা তখনই আসবে, যখন অর্থনীতির সঙ্গে সঙ্গে নাগরিকের জীবনের নিরাপত্তাসহ নানা মৌলিক চাহিদাগুলো মেটাতে সক্ষম হবে একটি দেশ ও রাষ্ট্রব্যবস্থা।
প্রবাসীদের রেমিট্যান্স আমাদের রিজার্ভ বাড়িয়ে দিচ্ছে, এমনকি এই করোনার সময়েও। এটা কি আমাদের এগিয়ে চলার একটা নিয়ামক শক্তি নয়? কী প্রচণ্ড পরিশ্রম করে প্রবাসীরা অর্থ পাঠান, তাঁদের পাঠানো অর্থে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৪ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলারে ঠেকেছে। তবে মাঝে মাঝে ভাবি, প্রবাসী শ্রমিকদের মাঝে অনেকেই এত অমানবিক কষ্ট করে মাত্র ১৫-২০ হাজার টাকা আয় করেন, এই পরিশ্রম দিলে কি বাংলাদেশে নিজের গ্রামে বসে আরামে পরিবার নিয়ে টাকাটা উপার্জন করা যেত না? বিদেশের মোহ আমাদের অঙ্কের হিসাবকে এড়িয়ে যায়। কিন্তু এই যে এই অমানবিক পরিশ্রম, কষ্ট, অপমান—এতসবের হয়তো মুখোমুখি হতে হতো না, যদি না দেশে নিজেদের উদ্যোগে ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে দেশেই ব্যবসা করার মনমানসিকতা তৈরি করা যেত। কথাটি আমরা বলি ঠিকই, কিন্তু উদ্যোক্তা হওয়ার যে কঠিন ও সংগ্রামময় পথ, তা কি কিছুটা সহজ করার কথা ভাবছেন পলিসিমেকাররা? যাঁরা এর মাঝে উদ্যোক্তা হয়ে গেছেন, তাঁদের কতজনই সঠিকভাবে সরকারি সাহায্য-সহযোগিতা পেয়েছেন?
চাকরির বাজারে সংকট, বেকারত্ব ইত্যাদি কারণে অনেকেই এখন উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখেছেন। ভাবা যায়, আমাদের দেশের শিল্প খাতের মোট কর্মসংস্থানের ৮০ শতাংশ এবং মোট শ্রমবাজারের ২৫ শতাংশের কর্মসংস্থান হচ্ছে এই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকারখানাগুলোয়? এই পরিসংখ্যান আমাদের জানান দিচ্ছে, অবহেলা ও বৈষম্য পেরিয়ে গত কয়েক বছরে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প বিপুল সম্ভাবনা নিয়ে বিকশিত হচ্ছে। বড় কারণ, কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে তরুণদের উদ্যোক্তা হতে সরকার বেশ উৎসাহ দিচ্ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও প্রতিনিয়ত তরুণদের উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়ে আসছেন। তারপরও রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক কাঠামোয় বড় বড় রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের তুলনায় এই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সব সময়ই বৈষম্যের শিকার, একইভাবে সমাজের কাঠামোতেও এই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়। তবে আশার কথা হলো, তরুণ প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের মধ্যেও এসেছে একধরনের উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন। ফলে উচ্চশিক্ষিত বেকার তরুণেরা, এমনকি বিদেশ থেকেও দেশে ফিরে দেশের শিল্পোন্নয়নে নিয়োজিত করেছেন অনেকে। এ ধরনের স্বল্প পুঁজির মানুষ তাঁদের ব্যবসায়ী উদ্যোগ শুরু করে নিজের ঘর থেকে, ক্ষুদ্র অথবা মাঝারি শিল্প দিয়েই। আমি ফেসবুকে এলেই দেখছি মেয়েরা আজকাল বাড়িতে বসেই ব্যবসা করছেন নানা রকমের সামগ্রী নিয়ে।
খাদ্য উৎপাদনে আমরা দিনকে দিন নিজেদের আরও শক্ত অবস্থানে নিয়ে যাচ্ছি। এটা সম্ভব হচ্ছে আমাদের গ্রামের কিষান-কিষানিদের অবিরত পরিশ্রমের কারণে। আগের তুলনায় মানুষ এখন জানে কখন কীভাবে কোনটার চাষ করতে হবে, কীভাবে উৎপাদন বাড়াতে হবে। দিনকে দিন সুকৌশলী হচ্ছেন আমাদের কৃষকেরা, অন্যদিকে নিজের ঘর্মাক্ত শ্রম দিয়ে আমাদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্য উৎপাদন করছেন। রপ্তানিকারকেরা বিদেশে রপ্তানি করার জন্য সুযোগ পাচ্ছেন কৃষকদের এই কঠোর–কঠিন পরিশ্রমের জন্যই। কৃষিক্ষেত্রে উৎপাদন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মনোবলও বেড়ে যায়, আগের মতো খাদ্যের নিরাপত্তাহীনতায় আমাদের ভুগতে হয় না। একবার এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে বিশ্ব খাদ্য সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি রবার্ট ডি সিম্পসনের সাক্ষাৎকার নিচ্ছিলাম। সেখানে তিনি বাংলাদেশের খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা নিয়ে আমার এক প্রশ্নের জবাবে প্রশংসা করে যাচ্ছিলেন, সেদিন একজন বাংলাদেশি হিসেবে খুব গর্ব হচ্ছিল সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা আমাদের কিষান-কিষানিদের জন্য। তিনি এটাও বলছিলেন, বর্তমান সরকার কৃষিবান্ধব, তাই খাদ্যে ভবিষ্যতে তোমাদের আরও সমৃদ্ধি আসার উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। বিষয়টি আসলে এটাই যে একটি দেশের যেকোনো ক্ষেত্রে উন্নতির জন্য, বিকাশের পথে যেসব বাধা থাকে, তা যদি সরকার উপড়ে ফেলে দিয়ে সহজ করে দেয়, তবেই সম্ভব সেই দেশের জন্য সামনের দিকে এগিয়ে চলা। ক্রমবর্ধমান নগরায়ণ, শিল্পায়ন ও গ্লোবালাইজেশনের এই যুগে আমাদের গ্রামগুলো হারিয়ে যাচ্ছে, মানুষ কৃষিবিমুখ হয়ে উঠছে প্রতিনিয়ত। এর মাঝেও খাদ্য উৎপাদনে যত দূর আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, তাই–বা কম কিসের? তবে সরকারের প্রণোদনার হার আরও বাড়ানো হলে মানুষ আবার হয়তো ফিরে আসবে বাপ-দাদার ভিটেমাটিতে কৃষিকাজের উদ্দেশ্যে। সেই সুযোগ তৈরি করে দিক কৃষিবান্ধব সরকার, সেই প্রত্যাশা রইল।
গণমাধ্যম মারফত জেনেছি, আগামী ডিসেম্বরে ঢাকার গণপরিবহনে যুক্ত হতে যাচ্ছে মেট্রোরেল। এরই মধ্যে ঢাকায় বাসরুট ফ্র্যাঞ্চাইজি চালুর কথাও শোনা যাচ্ছে। এসব প্রকল্পের মাধ্যমে নগরের পরিবহনব্যবস্থা একেবারে বদলে যাবে—এমন মত বিশেষজ্ঞদের। ভাবতেই শান্তি লাগছে, ঢাকাবাসীর ঘণ্টার পর ঘণ্টা জ্যামে বসে থেকে কর্মশক্তি নষ্ট করার দিন বোধ হয় প্রায় শেষ হয়ে এল। আশা করছি মানুষ এখন অনেকটা সময় রাস্তা থেকে বাঁচিয়ে হয় কর্মক্ষেত্রে, নয় পরিবারে দিতে পারবে। আবার এই ভাবনাও উঁকি দিচ্ছে, আমরা কি পারব বাইরের দেশের মতো মেট্রোরেলকে সুন্দর, পরিচ্ছন্ন ও নিরাপদ রাখতে? নারীরা কি স্বচ্ছন্দে নিরাপদে মেট্রোরেল ব্যবহার করতে পারবে রাতের বেলায়? নাকি বছর ঘুরতে না–ঘুরতেই আমাদের মেট্রোরেলের সব রং বিবর্ণ হয়ে যাবে? এই বিবর্ণ করা থেকে নাগরিকদের কীভাবে বিরত রাখা যায়? মেট্রোরেল চালুর আগে এসব বিষয় কি আমরা একটু গবেষণা করে দেখছি? ভাবছি, কীভাবে নাগরিকদের কিছুটা সচেতন করা যায় দেশের সম্পদ রক্ষায়? এই সচেতনতা আসলে তৈরি হবে তখনই, যখন মানুষ দেখবে তাদের প্রতি যত্নশীল রাষ্ট্রযন্ত্র ও নীতিনির্ধারকেরা।
আরও অনেক খাত রয়েছে, যেখানে বাংলাদেশের মানুষ দিনকে দিন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে নিজেদের। সেই সব এগিয়ে যাওয়া খাতের দিকে নীতিনির্ধারকেরা আরও বেশি যুক্ত হয়ে এগিয়ে যাওয়ার পথকে কণ্টকমুক্ত করে দেবেন—এটাই সবার প্রত্যাশা। এখন দেশ যেভাবে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছে, তাতে প্রতিনিয়ত কিছু ভালো খবর পাব আমরা, সেটাই সবার চাওয়া। আমরা দুর্নীতিমুক্ত হতে চাই, ধর্ষণমুক্ত সমাজ চাই, মানবিক রাষ্ট্র চাই। কেবল এ রকম দিকগুলোর দিকে বাড়তি খেয়াল দিলেই আমরা এই সমস্যাগুলো থেকে বের হয়ে আসতে পারব। কেননা, যে সমস্যাগুলো আমাদের জন্য সংকট তৈরি করে, যে সমস্যাগুলোর কারণে আমরা এগিয়ে যাওয়ার পথে খেই হারিয়ে ফেলি, যে ঘাটতির কারণে এতসব ভালো খবর তলিয়ে যায়, সেগুলো থেকে উত্তরণের জন্য কী উপায় আছে, সেদিকেই এখন আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেওয়া দরকার। দেশের এগিয়ে যাওয়ার পথকে অনেকটাই অমসৃণ করে ফেলে আমাদের সেই সংকটগুলো। প্রত্যাশায় রইলাম, দেশ কেবলই এগিয়ে যাবে এসব সংকট কাটিয়ে সামনের দিকে। কারণ এখন আমাদেরই সময়, এগিয়ে যাওয়ার!
রাশেদা রওনক খান,
শিক্ষক, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

এই মুহূর্তে বাংলাদেশ কেন, সারা বিশ্বেই নানা দেশ নানা ধরনের সমস্যার মধ্য দিয়ে সময় পার করছে। কেউ দেশ দখল তো কেউ ধর্ম নিয়ে, কেউবা গোয়েন্দা সংস্থার চরবৃত্তি নিয়ে শঙ্কিত, কেউবা পরমাণুকেন্দ্র সামাল দেওয়া নিয়ে চিন্তিত। তবে করোনাকালে স্বাস্থ্যব্যবস্থা ও অর্থনীতিতে ব্যাপক চাপ তৈরি হওয়ায় বেশির ভাগ দেশই অর্থনৈতিক সংকটের মুখে আছে। করোনা-পরবর্তী সময়ে কারও কারও ক্ষেত্রে এই সংকট চরমে উঠতে পারে, এমনটি ধারণা করা যেতেই পারে। সেখান থেকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরাম জানাচ্ছে, বাংলাদেশের অর্থনীতি এগিয়ে চলেছে। বিষয়টি আশাব্যঞ্জক তো বটেই, গর্বেরও আমাদের জন্য। চারদিকে সামাজিক ও পারিবারিক অবক্ষয়, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে জবাবদিহির অভাব, রাজনৈতিক সংকট, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, বিভিন্ন পর্যায়ে দুর্নীতিসহ নানা কারণে অনেকের মনেই প্রশ্নটি আসে যে বাংলাদেশ কি আসলেই এগিয়ে যাচ্ছে?
প্রশ্নটার উত্তর সহজ আর সরল থাকে না, অনেকটাই কঠিন হয়ে দাঁড়ায় নানা কারণেই! অনেক বিচার–বিশ্লেষণের দাবিও রাখে সেই সব কারণ এবং এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রগুলো। এত সব বিচার-বিশ্লেষণ এই মুহূর্তে আমার পক্ষে করা কিছুটা কঠিন, যেহেতু দেশের বাইরে আছি। সবকিছু নিজের চোখে দেখার ও শোনার অবকাশ কম। গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম যা জানাচ্ছে, তা–ই কেবল জানছি। এই জানানোর প্রক্রিয়ায় যেমন শুদ্ধতা আছে, তেমনি অনেক রাজনীতি আছে। তাই নির্মোহ বিচার-বিশ্লেষণ করা কঠিন কেবল এই দুইয়ের ওপর ভরসা করে। তাই লেখাটির আমন্ত্রণ পাওয়ার পরও বারবার ভাবছিলাম লিখব কি না! যখন বুঝলাম লিখতেই হবে, ছাড় পাওয়া যাবে না! তখন ভাবলাম, কী নিয়ে লেখা যায়! এমন কী বিষয় আছে যে কারণে দেশকে নিয়ে এই মুহূর্তে আমি ব্যক্তিমানুষ গর্ব করতে পারি? যদি আমার ভাবনাটাকে দুই ভাগে বিভক্ত করে এক ভাগে ওপরে বর্ণিত নানা রাষ্ট্রীয়, সামাজিক ও পারিবারিক সংকটগুলোকে রাখি, অন্য ভাগে কেবল প্রাপ্তি আর সম্ভাবনার কথা চিন্তা করি, তাহলে আমাদের প্রাপ্তি ও সম্ভাবনাগুলো কী?
একদিকে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল, বিদ্যুৎ, খাদ্য উৎপাদন, রিজার্ভ বাড়ছে, মধ্যম আয়ের দেশের স্বীকৃতি ইত্যাদি যখন একসঙ্গে ঘটছে, তখন তো বলা যেতেই পারে, হ্যাঁ, বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে। দেশ এগিয়ে চলার পেছনে প্রধান ভূমিকা এ দেশের খেটে খাওয়া মানুষের। তারা দুর্দান্ত গতিতে ইনফরমাল ইকোনমিতে কাজ করে চলেছে, অন্যদিকে ফরমাল ইকোনমি তো আছেই। আমরা একসময় মঙ্গার কথা শুনতাম, মানুষ না খেয়ে মারা যেত উত্তরবঙ্গে, আজ সেই মঙ্গার প্রকোপ নেই। আমার গবেষণা এলাকা কড়াইল বস্তিতে যখন হেঁটে বেড়াই, তখন মনে হয় এই গরিব মানুষদের অর্থনৈতিক কার্যক্রম আমাদের অর্থনীতির চাকাকে সচল করে দিচ্ছে প্রতিনিয়ত। সেই ভোরবেলায় হাজারো মেয়ের একসঙ্গে রাস্তায় বেরিয়ে পড়া গার্মেন্টসে যাওয়ার দৃশ্য, কী যে এক অভাবনীয় অভূতপূর্ব দৃশ্য, তা নিজের চোখে দেখাটাও অনেক গর্বের! তাদের প্রতি একধরনের কৃতজ্ঞতা বোধ যেমন জন্মায়, অন্যদিকে তাঁদের কর্মক্ষমতা আমাকে উৎসাহ দেয়। কিন্তু তাঁদের এই যাতায়াতের পথ কি আমরা মসৃণ করতে পেরেছি? ইভ টিজিং থেকে শুরু করে নানা রকমের যৌন হয়রানি, ধর্ষণ—এসবই বাধা হয়ে দাঁড়ায় এই কর্মচাঞ্চল্যময় কর্মশক্তির সামনে। এই তো সেদিন সাভারে এক গার্মেন্টস কর্মী কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এইটুকু নিরাপত্তা যদি আমরা তাঁদের নিশ্চিত করতে না পারি, তাহলে তাঁদের নিয়ে যে আমরা দেশে-বিদেশে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে গল্প বলি, তাঁদের এগিয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়াকে গ্রাফে এঁকে দেখাই, তখন তো নিজের ভেতরে অনুশোচনাবোধ হয় যে যাঁদের নিয়ে বিভিন্ন দেশে গল্প বলি, সেসব মানুষের অনেককেই আমরা নিরাপত্তা দিতে পারছি না। রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কি ভেবে দেখবে, কীভাবে তাঁদের এই পথচলাকে আরও নিরাপদ করা যায়? কারণ, দেশের অর্থনীতির চাকা আরও বেগবান করার জন্য হলেও তাঁদের জীবনের নিরাপত্তা দিতে হবে। তা ছাড়া, এভাবে লাগামছাড়া ধর্ষণ বাড়তে থাকলে দেশও ইমেজ সংকটের মধ্যে পড়ে যায়। কেবল অর্থনীতিতে সমৃদ্ধি এলেই কি একটি দেশকে সফল বলা যাবে? না, বিষয়টা কিন্তু এত সহজ নয়। সফলতা তখনই আসবে, যখন অর্থনীতির সঙ্গে সঙ্গে নাগরিকের জীবনের নিরাপত্তাসহ নানা মৌলিক চাহিদাগুলো মেটাতে সক্ষম হবে একটি দেশ ও রাষ্ট্রব্যবস্থা।
প্রবাসীদের রেমিট্যান্স আমাদের রিজার্ভ বাড়িয়ে দিচ্ছে, এমনকি এই করোনার সময়েও। এটা কি আমাদের এগিয়ে চলার একটা নিয়ামক শক্তি নয়? কী প্রচণ্ড পরিশ্রম করে প্রবাসীরা অর্থ পাঠান, তাঁদের পাঠানো অর্থে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৪ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলারে ঠেকেছে। তবে মাঝে মাঝে ভাবি, প্রবাসী শ্রমিকদের মাঝে অনেকেই এত অমানবিক কষ্ট করে মাত্র ১৫-২০ হাজার টাকা আয় করেন, এই পরিশ্রম দিলে কি বাংলাদেশে নিজের গ্রামে বসে আরামে পরিবার নিয়ে টাকাটা উপার্জন করা যেত না? বিদেশের মোহ আমাদের অঙ্কের হিসাবকে এড়িয়ে যায়। কিন্তু এই যে এই অমানবিক পরিশ্রম, কষ্ট, অপমান—এতসবের হয়তো মুখোমুখি হতে হতো না, যদি না দেশে নিজেদের উদ্যোগে ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে দেশেই ব্যবসা করার মনমানসিকতা তৈরি করা যেত। কথাটি আমরা বলি ঠিকই, কিন্তু উদ্যোক্তা হওয়ার যে কঠিন ও সংগ্রামময় পথ, তা কি কিছুটা সহজ করার কথা ভাবছেন পলিসিমেকাররা? যাঁরা এর মাঝে উদ্যোক্তা হয়ে গেছেন, তাঁদের কতজনই সঠিকভাবে সরকারি সাহায্য-সহযোগিতা পেয়েছেন?
চাকরির বাজারে সংকট, বেকারত্ব ইত্যাদি কারণে অনেকেই এখন উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখেছেন। ভাবা যায়, আমাদের দেশের শিল্প খাতের মোট কর্মসংস্থানের ৮০ শতাংশ এবং মোট শ্রমবাজারের ২৫ শতাংশের কর্মসংস্থান হচ্ছে এই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকারখানাগুলোয়? এই পরিসংখ্যান আমাদের জানান দিচ্ছে, অবহেলা ও বৈষম্য পেরিয়ে গত কয়েক বছরে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প বিপুল সম্ভাবনা নিয়ে বিকশিত হচ্ছে। বড় কারণ, কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে তরুণদের উদ্যোক্তা হতে সরকার বেশ উৎসাহ দিচ্ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও প্রতিনিয়ত তরুণদের উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়ে আসছেন। তারপরও রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক কাঠামোয় বড় বড় রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের তুলনায় এই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সব সময়ই বৈষম্যের শিকার, একইভাবে সমাজের কাঠামোতেও এই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়। তবে আশার কথা হলো, তরুণ প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের মধ্যেও এসেছে একধরনের উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন। ফলে উচ্চশিক্ষিত বেকার তরুণেরা, এমনকি বিদেশ থেকেও দেশে ফিরে দেশের শিল্পোন্নয়নে নিয়োজিত করেছেন অনেকে। এ ধরনের স্বল্প পুঁজির মানুষ তাঁদের ব্যবসায়ী উদ্যোগ শুরু করে নিজের ঘর থেকে, ক্ষুদ্র অথবা মাঝারি শিল্প দিয়েই। আমি ফেসবুকে এলেই দেখছি মেয়েরা আজকাল বাড়িতে বসেই ব্যবসা করছেন নানা রকমের সামগ্রী নিয়ে।
খাদ্য উৎপাদনে আমরা দিনকে দিন নিজেদের আরও শক্ত অবস্থানে নিয়ে যাচ্ছি। এটা সম্ভব হচ্ছে আমাদের গ্রামের কিষান-কিষানিদের অবিরত পরিশ্রমের কারণে। আগের তুলনায় মানুষ এখন জানে কখন কীভাবে কোনটার চাষ করতে হবে, কীভাবে উৎপাদন বাড়াতে হবে। দিনকে দিন সুকৌশলী হচ্ছেন আমাদের কৃষকেরা, অন্যদিকে নিজের ঘর্মাক্ত শ্রম দিয়ে আমাদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্য উৎপাদন করছেন। রপ্তানিকারকেরা বিদেশে রপ্তানি করার জন্য সুযোগ পাচ্ছেন কৃষকদের এই কঠোর–কঠিন পরিশ্রমের জন্যই। কৃষিক্ষেত্রে উৎপাদন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মনোবলও বেড়ে যায়, আগের মতো খাদ্যের নিরাপত্তাহীনতায় আমাদের ভুগতে হয় না। একবার এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে বিশ্ব খাদ্য সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি রবার্ট ডি সিম্পসনের সাক্ষাৎকার নিচ্ছিলাম। সেখানে তিনি বাংলাদেশের খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা নিয়ে আমার এক প্রশ্নের জবাবে প্রশংসা করে যাচ্ছিলেন, সেদিন একজন বাংলাদেশি হিসেবে খুব গর্ব হচ্ছিল সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা আমাদের কিষান-কিষানিদের জন্য। তিনি এটাও বলছিলেন, বর্তমান সরকার কৃষিবান্ধব, তাই খাদ্যে ভবিষ্যতে তোমাদের আরও সমৃদ্ধি আসার উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। বিষয়টি আসলে এটাই যে একটি দেশের যেকোনো ক্ষেত্রে উন্নতির জন্য, বিকাশের পথে যেসব বাধা থাকে, তা যদি সরকার উপড়ে ফেলে দিয়ে সহজ করে দেয়, তবেই সম্ভব সেই দেশের জন্য সামনের দিকে এগিয়ে চলা। ক্রমবর্ধমান নগরায়ণ, শিল্পায়ন ও গ্লোবালাইজেশনের এই যুগে আমাদের গ্রামগুলো হারিয়ে যাচ্ছে, মানুষ কৃষিবিমুখ হয়ে উঠছে প্রতিনিয়ত। এর মাঝেও খাদ্য উৎপাদনে যত দূর আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, তাই–বা কম কিসের? তবে সরকারের প্রণোদনার হার আরও বাড়ানো হলে মানুষ আবার হয়তো ফিরে আসবে বাপ-দাদার ভিটেমাটিতে কৃষিকাজের উদ্দেশ্যে। সেই সুযোগ তৈরি করে দিক কৃষিবান্ধব সরকার, সেই প্রত্যাশা রইল।
গণমাধ্যম মারফত জেনেছি, আগামী ডিসেম্বরে ঢাকার গণপরিবহনে যুক্ত হতে যাচ্ছে মেট্রোরেল। এরই মধ্যে ঢাকায় বাসরুট ফ্র্যাঞ্চাইজি চালুর কথাও শোনা যাচ্ছে। এসব প্রকল্পের মাধ্যমে নগরের পরিবহনব্যবস্থা একেবারে বদলে যাবে—এমন মত বিশেষজ্ঞদের। ভাবতেই শান্তি লাগছে, ঢাকাবাসীর ঘণ্টার পর ঘণ্টা জ্যামে বসে থেকে কর্মশক্তি নষ্ট করার দিন বোধ হয় প্রায় শেষ হয়ে এল। আশা করছি মানুষ এখন অনেকটা সময় রাস্তা থেকে বাঁচিয়ে হয় কর্মক্ষেত্রে, নয় পরিবারে দিতে পারবে। আবার এই ভাবনাও উঁকি দিচ্ছে, আমরা কি পারব বাইরের দেশের মতো মেট্রোরেলকে সুন্দর, পরিচ্ছন্ন ও নিরাপদ রাখতে? নারীরা কি স্বচ্ছন্দে নিরাপদে মেট্রোরেল ব্যবহার করতে পারবে রাতের বেলায়? নাকি বছর ঘুরতে না–ঘুরতেই আমাদের মেট্রোরেলের সব রং বিবর্ণ হয়ে যাবে? এই বিবর্ণ করা থেকে নাগরিকদের কীভাবে বিরত রাখা যায়? মেট্রোরেল চালুর আগে এসব বিষয় কি আমরা একটু গবেষণা করে দেখছি? ভাবছি, কীভাবে নাগরিকদের কিছুটা সচেতন করা যায় দেশের সম্পদ রক্ষায়? এই সচেতনতা আসলে তৈরি হবে তখনই, যখন মানুষ দেখবে তাদের প্রতি যত্নশীল রাষ্ট্রযন্ত্র ও নীতিনির্ধারকেরা।
আরও অনেক খাত রয়েছে, যেখানে বাংলাদেশের মানুষ দিনকে দিন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে নিজেদের। সেই সব এগিয়ে যাওয়া খাতের দিকে নীতিনির্ধারকেরা আরও বেশি যুক্ত হয়ে এগিয়ে যাওয়ার পথকে কণ্টকমুক্ত করে দেবেন—এটাই সবার প্রত্যাশা। এখন দেশ যেভাবে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছে, তাতে প্রতিনিয়ত কিছু ভালো খবর পাব আমরা, সেটাই সবার চাওয়া। আমরা দুর্নীতিমুক্ত হতে চাই, ধর্ষণমুক্ত সমাজ চাই, মানবিক রাষ্ট্র চাই। কেবল এ রকম দিকগুলোর দিকে বাড়তি খেয়াল দিলেই আমরা এই সমস্যাগুলো থেকে বের হয়ে আসতে পারব। কেননা, যে সমস্যাগুলো আমাদের জন্য সংকট তৈরি করে, যে সমস্যাগুলোর কারণে আমরা এগিয়ে যাওয়ার পথে খেই হারিয়ে ফেলি, যে ঘাটতির কারণে এতসব ভালো খবর তলিয়ে যায়, সেগুলো থেকে উত্তরণের জন্য কী উপায় আছে, সেদিকেই এখন আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেওয়া দরকার। দেশের এগিয়ে যাওয়ার পথকে অনেকটাই অমসৃণ করে ফেলে আমাদের সেই সংকটগুলো। প্রত্যাশায় রইলাম, দেশ কেবলই এগিয়ে যাবে এসব সংকট কাটিয়ে সামনের দিকে। কারণ এখন আমাদেরই সময়, এগিয়ে যাওয়ার!
রাশেদা রওনক খান,
শিক্ষক, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
রাশেদা রওনক খান

এই মুহূর্তে বাংলাদেশ কেন, সারা বিশ্বেই নানা দেশ নানা ধরনের সমস্যার মধ্য দিয়ে সময় পার করছে। কেউ দেশ দখল তো কেউ ধর্ম নিয়ে, কেউবা গোয়েন্দা সংস্থার চরবৃত্তি নিয়ে শঙ্কিত, কেউবা পরমাণুকেন্দ্র সামাল দেওয়া নিয়ে চিন্তিত। তবে করোনাকালে স্বাস্থ্যব্যবস্থা ও অর্থনীতিতে ব্যাপক চাপ তৈরি হওয়ায় বেশির ভাগ দেশই অর্থনৈতিক সংকটের মুখে আছে। করোনা-পরবর্তী সময়ে কারও কারও ক্ষেত্রে এই সংকট চরমে উঠতে পারে, এমনটি ধারণা করা যেতেই পারে। সেখান থেকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরাম জানাচ্ছে, বাংলাদেশের অর্থনীতি এগিয়ে চলেছে। বিষয়টি আশাব্যঞ্জক তো বটেই, গর্বেরও আমাদের জন্য। চারদিকে সামাজিক ও পারিবারিক অবক্ষয়, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে জবাবদিহির অভাব, রাজনৈতিক সংকট, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, বিভিন্ন পর্যায়ে দুর্নীতিসহ নানা কারণে অনেকের মনেই প্রশ্নটি আসে যে বাংলাদেশ কি আসলেই এগিয়ে যাচ্ছে?
প্রশ্নটার উত্তর সহজ আর সরল থাকে না, অনেকটাই কঠিন হয়ে দাঁড়ায় নানা কারণেই! অনেক বিচার–বিশ্লেষণের দাবিও রাখে সেই সব কারণ এবং এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রগুলো। এত সব বিচার-বিশ্লেষণ এই মুহূর্তে আমার পক্ষে করা কিছুটা কঠিন, যেহেতু দেশের বাইরে আছি। সবকিছু নিজের চোখে দেখার ও শোনার অবকাশ কম। গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম যা জানাচ্ছে, তা–ই কেবল জানছি। এই জানানোর প্রক্রিয়ায় যেমন শুদ্ধতা আছে, তেমনি অনেক রাজনীতি আছে। তাই নির্মোহ বিচার-বিশ্লেষণ করা কঠিন কেবল এই দুইয়ের ওপর ভরসা করে। তাই লেখাটির আমন্ত্রণ পাওয়ার পরও বারবার ভাবছিলাম লিখব কি না! যখন বুঝলাম লিখতেই হবে, ছাড় পাওয়া যাবে না! তখন ভাবলাম, কী নিয়ে লেখা যায়! এমন কী বিষয় আছে যে কারণে দেশকে নিয়ে এই মুহূর্তে আমি ব্যক্তিমানুষ গর্ব করতে পারি? যদি আমার ভাবনাটাকে দুই ভাগে বিভক্ত করে এক ভাগে ওপরে বর্ণিত নানা রাষ্ট্রীয়, সামাজিক ও পারিবারিক সংকটগুলোকে রাখি, অন্য ভাগে কেবল প্রাপ্তি আর সম্ভাবনার কথা চিন্তা করি, তাহলে আমাদের প্রাপ্তি ও সম্ভাবনাগুলো কী?
একদিকে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল, বিদ্যুৎ, খাদ্য উৎপাদন, রিজার্ভ বাড়ছে, মধ্যম আয়ের দেশের স্বীকৃতি ইত্যাদি যখন একসঙ্গে ঘটছে, তখন তো বলা যেতেই পারে, হ্যাঁ, বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে। দেশ এগিয়ে চলার পেছনে প্রধান ভূমিকা এ দেশের খেটে খাওয়া মানুষের। তারা দুর্দান্ত গতিতে ইনফরমাল ইকোনমিতে কাজ করে চলেছে, অন্যদিকে ফরমাল ইকোনমি তো আছেই। আমরা একসময় মঙ্গার কথা শুনতাম, মানুষ না খেয়ে মারা যেত উত্তরবঙ্গে, আজ সেই মঙ্গার প্রকোপ নেই। আমার গবেষণা এলাকা কড়াইল বস্তিতে যখন হেঁটে বেড়াই, তখন মনে হয় এই গরিব মানুষদের অর্থনৈতিক কার্যক্রম আমাদের অর্থনীতির চাকাকে সচল করে দিচ্ছে প্রতিনিয়ত। সেই ভোরবেলায় হাজারো মেয়ের একসঙ্গে রাস্তায় বেরিয়ে পড়া গার্মেন্টসে যাওয়ার দৃশ্য, কী যে এক অভাবনীয় অভূতপূর্ব দৃশ্য, তা নিজের চোখে দেখাটাও অনেক গর্বের! তাদের প্রতি একধরনের কৃতজ্ঞতা বোধ যেমন জন্মায়, অন্যদিকে তাঁদের কর্মক্ষমতা আমাকে উৎসাহ দেয়। কিন্তু তাঁদের এই যাতায়াতের পথ কি আমরা মসৃণ করতে পেরেছি? ইভ টিজিং থেকে শুরু করে নানা রকমের যৌন হয়রানি, ধর্ষণ—এসবই বাধা হয়ে দাঁড়ায় এই কর্মচাঞ্চল্যময় কর্মশক্তির সামনে। এই তো সেদিন সাভারে এক গার্মেন্টস কর্মী কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এইটুকু নিরাপত্তা যদি আমরা তাঁদের নিশ্চিত করতে না পারি, তাহলে তাঁদের নিয়ে যে আমরা দেশে-বিদেশে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে গল্প বলি, তাঁদের এগিয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়াকে গ্রাফে এঁকে দেখাই, তখন তো নিজের ভেতরে অনুশোচনাবোধ হয় যে যাঁদের নিয়ে বিভিন্ন দেশে গল্প বলি, সেসব মানুষের অনেককেই আমরা নিরাপত্তা দিতে পারছি না। রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কি ভেবে দেখবে, কীভাবে তাঁদের এই পথচলাকে আরও নিরাপদ করা যায়? কারণ, দেশের অর্থনীতির চাকা আরও বেগবান করার জন্য হলেও তাঁদের জীবনের নিরাপত্তা দিতে হবে। তা ছাড়া, এভাবে লাগামছাড়া ধর্ষণ বাড়তে থাকলে দেশও ইমেজ সংকটের মধ্যে পড়ে যায়। কেবল অর্থনীতিতে সমৃদ্ধি এলেই কি একটি দেশকে সফল বলা যাবে? না, বিষয়টা কিন্তু এত সহজ নয়। সফলতা তখনই আসবে, যখন অর্থনীতির সঙ্গে সঙ্গে নাগরিকের জীবনের নিরাপত্তাসহ নানা মৌলিক চাহিদাগুলো মেটাতে সক্ষম হবে একটি দেশ ও রাষ্ট্রব্যবস্থা।
প্রবাসীদের রেমিট্যান্স আমাদের রিজার্ভ বাড়িয়ে দিচ্ছে, এমনকি এই করোনার সময়েও। এটা কি আমাদের এগিয়ে চলার একটা নিয়ামক শক্তি নয়? কী প্রচণ্ড পরিশ্রম করে প্রবাসীরা অর্থ পাঠান, তাঁদের পাঠানো অর্থে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৪ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলারে ঠেকেছে। তবে মাঝে মাঝে ভাবি, প্রবাসী শ্রমিকদের মাঝে অনেকেই এত অমানবিক কষ্ট করে মাত্র ১৫-২০ হাজার টাকা আয় করেন, এই পরিশ্রম দিলে কি বাংলাদেশে নিজের গ্রামে বসে আরামে পরিবার নিয়ে টাকাটা উপার্জন করা যেত না? বিদেশের মোহ আমাদের অঙ্কের হিসাবকে এড়িয়ে যায়। কিন্তু এই যে এই অমানবিক পরিশ্রম, কষ্ট, অপমান—এতসবের হয়তো মুখোমুখি হতে হতো না, যদি না দেশে নিজেদের উদ্যোগে ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে দেশেই ব্যবসা করার মনমানসিকতা তৈরি করা যেত। কথাটি আমরা বলি ঠিকই, কিন্তু উদ্যোক্তা হওয়ার যে কঠিন ও সংগ্রামময় পথ, তা কি কিছুটা সহজ করার কথা ভাবছেন পলিসিমেকাররা? যাঁরা এর মাঝে উদ্যোক্তা হয়ে গেছেন, তাঁদের কতজনই সঠিকভাবে সরকারি সাহায্য-সহযোগিতা পেয়েছেন?
চাকরির বাজারে সংকট, বেকারত্ব ইত্যাদি কারণে অনেকেই এখন উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখেছেন। ভাবা যায়, আমাদের দেশের শিল্প খাতের মোট কর্মসংস্থানের ৮০ শতাংশ এবং মোট শ্রমবাজারের ২৫ শতাংশের কর্মসংস্থান হচ্ছে এই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকারখানাগুলোয়? এই পরিসংখ্যান আমাদের জানান দিচ্ছে, অবহেলা ও বৈষম্য পেরিয়ে গত কয়েক বছরে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প বিপুল সম্ভাবনা নিয়ে বিকশিত হচ্ছে। বড় কারণ, কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে তরুণদের উদ্যোক্তা হতে সরকার বেশ উৎসাহ দিচ্ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও প্রতিনিয়ত তরুণদের উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়ে আসছেন। তারপরও রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক কাঠামোয় বড় বড় রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের তুলনায় এই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সব সময়ই বৈষম্যের শিকার, একইভাবে সমাজের কাঠামোতেও এই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়। তবে আশার কথা হলো, তরুণ প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের মধ্যেও এসেছে একধরনের উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন। ফলে উচ্চশিক্ষিত বেকার তরুণেরা, এমনকি বিদেশ থেকেও দেশে ফিরে দেশের শিল্পোন্নয়নে নিয়োজিত করেছেন অনেকে। এ ধরনের স্বল্প পুঁজির মানুষ তাঁদের ব্যবসায়ী উদ্যোগ শুরু করে নিজের ঘর থেকে, ক্ষুদ্র অথবা মাঝারি শিল্প দিয়েই। আমি ফেসবুকে এলেই দেখছি মেয়েরা আজকাল বাড়িতে বসেই ব্যবসা করছেন নানা রকমের সামগ্রী নিয়ে।
খাদ্য উৎপাদনে আমরা দিনকে দিন নিজেদের আরও শক্ত অবস্থানে নিয়ে যাচ্ছি। এটা সম্ভব হচ্ছে আমাদের গ্রামের কিষান-কিষানিদের অবিরত পরিশ্রমের কারণে। আগের তুলনায় মানুষ এখন জানে কখন কীভাবে কোনটার চাষ করতে হবে, কীভাবে উৎপাদন বাড়াতে হবে। দিনকে দিন সুকৌশলী হচ্ছেন আমাদের কৃষকেরা, অন্যদিকে নিজের ঘর্মাক্ত শ্রম দিয়ে আমাদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্য উৎপাদন করছেন। রপ্তানিকারকেরা বিদেশে রপ্তানি করার জন্য সুযোগ পাচ্ছেন কৃষকদের এই কঠোর–কঠিন পরিশ্রমের জন্যই। কৃষিক্ষেত্রে উৎপাদন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মনোবলও বেড়ে যায়, আগের মতো খাদ্যের নিরাপত্তাহীনতায় আমাদের ভুগতে হয় না। একবার এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে বিশ্ব খাদ্য সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি রবার্ট ডি সিম্পসনের সাক্ষাৎকার নিচ্ছিলাম। সেখানে তিনি বাংলাদেশের খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা নিয়ে আমার এক প্রশ্নের জবাবে প্রশংসা করে যাচ্ছিলেন, সেদিন একজন বাংলাদেশি হিসেবে খুব গর্ব হচ্ছিল সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা আমাদের কিষান-কিষানিদের জন্য। তিনি এটাও বলছিলেন, বর্তমান সরকার কৃষিবান্ধব, তাই খাদ্যে ভবিষ্যতে তোমাদের আরও সমৃদ্ধি আসার উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। বিষয়টি আসলে এটাই যে একটি দেশের যেকোনো ক্ষেত্রে উন্নতির জন্য, বিকাশের পথে যেসব বাধা থাকে, তা যদি সরকার উপড়ে ফেলে দিয়ে সহজ করে দেয়, তবেই সম্ভব সেই দেশের জন্য সামনের দিকে এগিয়ে চলা। ক্রমবর্ধমান নগরায়ণ, শিল্পায়ন ও গ্লোবালাইজেশনের এই যুগে আমাদের গ্রামগুলো হারিয়ে যাচ্ছে, মানুষ কৃষিবিমুখ হয়ে উঠছে প্রতিনিয়ত। এর মাঝেও খাদ্য উৎপাদনে যত দূর আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, তাই–বা কম কিসের? তবে সরকারের প্রণোদনার হার আরও বাড়ানো হলে মানুষ আবার হয়তো ফিরে আসবে বাপ-দাদার ভিটেমাটিতে কৃষিকাজের উদ্দেশ্যে। সেই সুযোগ তৈরি করে দিক কৃষিবান্ধব সরকার, সেই প্রত্যাশা রইল।
গণমাধ্যম মারফত জেনেছি, আগামী ডিসেম্বরে ঢাকার গণপরিবহনে যুক্ত হতে যাচ্ছে মেট্রোরেল। এরই মধ্যে ঢাকায় বাসরুট ফ্র্যাঞ্চাইজি চালুর কথাও শোনা যাচ্ছে। এসব প্রকল্পের মাধ্যমে নগরের পরিবহনব্যবস্থা একেবারে বদলে যাবে—এমন মত বিশেষজ্ঞদের। ভাবতেই শান্তি লাগছে, ঢাকাবাসীর ঘণ্টার পর ঘণ্টা জ্যামে বসে থেকে কর্মশক্তি নষ্ট করার দিন বোধ হয় প্রায় শেষ হয়ে এল। আশা করছি মানুষ এখন অনেকটা সময় রাস্তা থেকে বাঁচিয়ে হয় কর্মক্ষেত্রে, নয় পরিবারে দিতে পারবে। আবার এই ভাবনাও উঁকি দিচ্ছে, আমরা কি পারব বাইরের দেশের মতো মেট্রোরেলকে সুন্দর, পরিচ্ছন্ন ও নিরাপদ রাখতে? নারীরা কি স্বচ্ছন্দে নিরাপদে মেট্রোরেল ব্যবহার করতে পারবে রাতের বেলায়? নাকি বছর ঘুরতে না–ঘুরতেই আমাদের মেট্রোরেলের সব রং বিবর্ণ হয়ে যাবে? এই বিবর্ণ করা থেকে নাগরিকদের কীভাবে বিরত রাখা যায়? মেট্রোরেল চালুর আগে এসব বিষয় কি আমরা একটু গবেষণা করে দেখছি? ভাবছি, কীভাবে নাগরিকদের কিছুটা সচেতন করা যায় দেশের সম্পদ রক্ষায়? এই সচেতনতা আসলে তৈরি হবে তখনই, যখন মানুষ দেখবে তাদের প্রতি যত্নশীল রাষ্ট্রযন্ত্র ও নীতিনির্ধারকেরা।
আরও অনেক খাত রয়েছে, যেখানে বাংলাদেশের মানুষ দিনকে দিন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে নিজেদের। সেই সব এগিয়ে যাওয়া খাতের দিকে নীতিনির্ধারকেরা আরও বেশি যুক্ত হয়ে এগিয়ে যাওয়ার পথকে কণ্টকমুক্ত করে দেবেন—এটাই সবার প্রত্যাশা। এখন দেশ যেভাবে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছে, তাতে প্রতিনিয়ত কিছু ভালো খবর পাব আমরা, সেটাই সবার চাওয়া। আমরা দুর্নীতিমুক্ত হতে চাই, ধর্ষণমুক্ত সমাজ চাই, মানবিক রাষ্ট্র চাই। কেবল এ রকম দিকগুলোর দিকে বাড়তি খেয়াল দিলেই আমরা এই সমস্যাগুলো থেকে বের হয়ে আসতে পারব। কেননা, যে সমস্যাগুলো আমাদের জন্য সংকট তৈরি করে, যে সমস্যাগুলোর কারণে আমরা এগিয়ে যাওয়ার পথে খেই হারিয়ে ফেলি, যে ঘাটতির কারণে এতসব ভালো খবর তলিয়ে যায়, সেগুলো থেকে উত্তরণের জন্য কী উপায় আছে, সেদিকেই এখন আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেওয়া দরকার। দেশের এগিয়ে যাওয়ার পথকে অনেকটাই অমসৃণ করে ফেলে আমাদের সেই সংকটগুলো। প্রত্যাশায় রইলাম, দেশ কেবলই এগিয়ে যাবে এসব সংকট কাটিয়ে সামনের দিকে। কারণ এখন আমাদেরই সময়, এগিয়ে যাওয়ার!
রাশেদা রওনক খান,
শিক্ষক, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

এই মুহূর্তে বাংলাদেশ কেন, সারা বিশ্বেই নানা দেশ নানা ধরনের সমস্যার মধ্য দিয়ে সময় পার করছে। কেউ দেশ দখল তো কেউ ধর্ম নিয়ে, কেউবা গোয়েন্দা সংস্থার চরবৃত্তি নিয়ে শঙ্কিত, কেউবা পরমাণুকেন্দ্র সামাল দেওয়া নিয়ে চিন্তিত। তবে করোনাকালে স্বাস্থ্যব্যবস্থা ও অর্থনীতিতে ব্যাপক চাপ তৈরি হওয়ায় বেশির ভাগ দেশই অর্থনৈতিক সংকটের মুখে আছে। করোনা-পরবর্তী সময়ে কারও কারও ক্ষেত্রে এই সংকট চরমে উঠতে পারে, এমনটি ধারণা করা যেতেই পারে। সেখান থেকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরাম জানাচ্ছে, বাংলাদেশের অর্থনীতি এগিয়ে চলেছে। বিষয়টি আশাব্যঞ্জক তো বটেই, গর্বেরও আমাদের জন্য। চারদিকে সামাজিক ও পারিবারিক অবক্ষয়, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে জবাবদিহির অভাব, রাজনৈতিক সংকট, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, বিভিন্ন পর্যায়ে দুর্নীতিসহ নানা কারণে অনেকের মনেই প্রশ্নটি আসে যে বাংলাদেশ কি আসলেই এগিয়ে যাচ্ছে?
প্রশ্নটার উত্তর সহজ আর সরল থাকে না, অনেকটাই কঠিন হয়ে দাঁড়ায় নানা কারণেই! অনেক বিচার–বিশ্লেষণের দাবিও রাখে সেই সব কারণ এবং এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রগুলো। এত সব বিচার-বিশ্লেষণ এই মুহূর্তে আমার পক্ষে করা কিছুটা কঠিন, যেহেতু দেশের বাইরে আছি। সবকিছু নিজের চোখে দেখার ও শোনার অবকাশ কম। গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম যা জানাচ্ছে, তা–ই কেবল জানছি। এই জানানোর প্রক্রিয়ায় যেমন শুদ্ধতা আছে, তেমনি অনেক রাজনীতি আছে। তাই নির্মোহ বিচার-বিশ্লেষণ করা কঠিন কেবল এই দুইয়ের ওপর ভরসা করে। তাই লেখাটির আমন্ত্রণ পাওয়ার পরও বারবার ভাবছিলাম লিখব কি না! যখন বুঝলাম লিখতেই হবে, ছাড় পাওয়া যাবে না! তখন ভাবলাম, কী নিয়ে লেখা যায়! এমন কী বিষয় আছে যে কারণে দেশকে নিয়ে এই মুহূর্তে আমি ব্যক্তিমানুষ গর্ব করতে পারি? যদি আমার ভাবনাটাকে দুই ভাগে বিভক্ত করে এক ভাগে ওপরে বর্ণিত নানা রাষ্ট্রীয়, সামাজিক ও পারিবারিক সংকটগুলোকে রাখি, অন্য ভাগে কেবল প্রাপ্তি আর সম্ভাবনার কথা চিন্তা করি, তাহলে আমাদের প্রাপ্তি ও সম্ভাবনাগুলো কী?
একদিকে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল, বিদ্যুৎ, খাদ্য উৎপাদন, রিজার্ভ বাড়ছে, মধ্যম আয়ের দেশের স্বীকৃতি ইত্যাদি যখন একসঙ্গে ঘটছে, তখন তো বলা যেতেই পারে, হ্যাঁ, বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে। দেশ এগিয়ে চলার পেছনে প্রধান ভূমিকা এ দেশের খেটে খাওয়া মানুষের। তারা দুর্দান্ত গতিতে ইনফরমাল ইকোনমিতে কাজ করে চলেছে, অন্যদিকে ফরমাল ইকোনমি তো আছেই। আমরা একসময় মঙ্গার কথা শুনতাম, মানুষ না খেয়ে মারা যেত উত্তরবঙ্গে, আজ সেই মঙ্গার প্রকোপ নেই। আমার গবেষণা এলাকা কড়াইল বস্তিতে যখন হেঁটে বেড়াই, তখন মনে হয় এই গরিব মানুষদের অর্থনৈতিক কার্যক্রম আমাদের অর্থনীতির চাকাকে সচল করে দিচ্ছে প্রতিনিয়ত। সেই ভোরবেলায় হাজারো মেয়ের একসঙ্গে রাস্তায় বেরিয়ে পড়া গার্মেন্টসে যাওয়ার দৃশ্য, কী যে এক অভাবনীয় অভূতপূর্ব দৃশ্য, তা নিজের চোখে দেখাটাও অনেক গর্বের! তাদের প্রতি একধরনের কৃতজ্ঞতা বোধ যেমন জন্মায়, অন্যদিকে তাঁদের কর্মক্ষমতা আমাকে উৎসাহ দেয়। কিন্তু তাঁদের এই যাতায়াতের পথ কি আমরা মসৃণ করতে পেরেছি? ইভ টিজিং থেকে শুরু করে নানা রকমের যৌন হয়রানি, ধর্ষণ—এসবই বাধা হয়ে দাঁড়ায় এই কর্মচাঞ্চল্যময় কর্মশক্তির সামনে। এই তো সেদিন সাভারে এক গার্মেন্টস কর্মী কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এইটুকু নিরাপত্তা যদি আমরা তাঁদের নিশ্চিত করতে না পারি, তাহলে তাঁদের নিয়ে যে আমরা দেশে-বিদেশে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে গল্প বলি, তাঁদের এগিয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়াকে গ্রাফে এঁকে দেখাই, তখন তো নিজের ভেতরে অনুশোচনাবোধ হয় যে যাঁদের নিয়ে বিভিন্ন দেশে গল্প বলি, সেসব মানুষের অনেককেই আমরা নিরাপত্তা দিতে পারছি না। রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কি ভেবে দেখবে, কীভাবে তাঁদের এই পথচলাকে আরও নিরাপদ করা যায়? কারণ, দেশের অর্থনীতির চাকা আরও বেগবান করার জন্য হলেও তাঁদের জীবনের নিরাপত্তা দিতে হবে। তা ছাড়া, এভাবে লাগামছাড়া ধর্ষণ বাড়তে থাকলে দেশও ইমেজ সংকটের মধ্যে পড়ে যায়। কেবল অর্থনীতিতে সমৃদ্ধি এলেই কি একটি দেশকে সফল বলা যাবে? না, বিষয়টা কিন্তু এত সহজ নয়। সফলতা তখনই আসবে, যখন অর্থনীতির সঙ্গে সঙ্গে নাগরিকের জীবনের নিরাপত্তাসহ নানা মৌলিক চাহিদাগুলো মেটাতে সক্ষম হবে একটি দেশ ও রাষ্ট্রব্যবস্থা।
প্রবাসীদের রেমিট্যান্স আমাদের রিজার্ভ বাড়িয়ে দিচ্ছে, এমনকি এই করোনার সময়েও। এটা কি আমাদের এগিয়ে চলার একটা নিয়ামক শক্তি নয়? কী প্রচণ্ড পরিশ্রম করে প্রবাসীরা অর্থ পাঠান, তাঁদের পাঠানো অর্থে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৪ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলারে ঠেকেছে। তবে মাঝে মাঝে ভাবি, প্রবাসী শ্রমিকদের মাঝে অনেকেই এত অমানবিক কষ্ট করে মাত্র ১৫-২০ হাজার টাকা আয় করেন, এই পরিশ্রম দিলে কি বাংলাদেশে নিজের গ্রামে বসে আরামে পরিবার নিয়ে টাকাটা উপার্জন করা যেত না? বিদেশের মোহ আমাদের অঙ্কের হিসাবকে এড়িয়ে যায়। কিন্তু এই যে এই অমানবিক পরিশ্রম, কষ্ট, অপমান—এতসবের হয়তো মুখোমুখি হতে হতো না, যদি না দেশে নিজেদের উদ্যোগে ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে দেশেই ব্যবসা করার মনমানসিকতা তৈরি করা যেত। কথাটি আমরা বলি ঠিকই, কিন্তু উদ্যোক্তা হওয়ার যে কঠিন ও সংগ্রামময় পথ, তা কি কিছুটা সহজ করার কথা ভাবছেন পলিসিমেকাররা? যাঁরা এর মাঝে উদ্যোক্তা হয়ে গেছেন, তাঁদের কতজনই সঠিকভাবে সরকারি সাহায্য-সহযোগিতা পেয়েছেন?
চাকরির বাজারে সংকট, বেকারত্ব ইত্যাদি কারণে অনেকেই এখন উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখেছেন। ভাবা যায়, আমাদের দেশের শিল্প খাতের মোট কর্মসংস্থানের ৮০ শতাংশ এবং মোট শ্রমবাজারের ২৫ শতাংশের কর্মসংস্থান হচ্ছে এই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকারখানাগুলোয়? এই পরিসংখ্যান আমাদের জানান দিচ্ছে, অবহেলা ও বৈষম্য পেরিয়ে গত কয়েক বছরে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প বিপুল সম্ভাবনা নিয়ে বিকশিত হচ্ছে। বড় কারণ, কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে তরুণদের উদ্যোক্তা হতে সরকার বেশ উৎসাহ দিচ্ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও প্রতিনিয়ত তরুণদের উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়ে আসছেন। তারপরও রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক কাঠামোয় বড় বড় রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের তুলনায় এই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সব সময়ই বৈষম্যের শিকার, একইভাবে সমাজের কাঠামোতেও এই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়। তবে আশার কথা হলো, তরুণ প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের মধ্যেও এসেছে একধরনের উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন। ফলে উচ্চশিক্ষিত বেকার তরুণেরা, এমনকি বিদেশ থেকেও দেশে ফিরে দেশের শিল্পোন্নয়নে নিয়োজিত করেছেন অনেকে। এ ধরনের স্বল্প পুঁজির মানুষ তাঁদের ব্যবসায়ী উদ্যোগ শুরু করে নিজের ঘর থেকে, ক্ষুদ্র অথবা মাঝারি শিল্প দিয়েই। আমি ফেসবুকে এলেই দেখছি মেয়েরা আজকাল বাড়িতে বসেই ব্যবসা করছেন নানা রকমের সামগ্রী নিয়ে।
খাদ্য উৎপাদনে আমরা দিনকে দিন নিজেদের আরও শক্ত অবস্থানে নিয়ে যাচ্ছি। এটা সম্ভব হচ্ছে আমাদের গ্রামের কিষান-কিষানিদের অবিরত পরিশ্রমের কারণে। আগের তুলনায় মানুষ এখন জানে কখন কীভাবে কোনটার চাষ করতে হবে, কীভাবে উৎপাদন বাড়াতে হবে। দিনকে দিন সুকৌশলী হচ্ছেন আমাদের কৃষকেরা, অন্যদিকে নিজের ঘর্মাক্ত শ্রম দিয়ে আমাদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্য উৎপাদন করছেন। রপ্তানিকারকেরা বিদেশে রপ্তানি করার জন্য সুযোগ পাচ্ছেন কৃষকদের এই কঠোর–কঠিন পরিশ্রমের জন্যই। কৃষিক্ষেত্রে উৎপাদন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মনোবলও বেড়ে যায়, আগের মতো খাদ্যের নিরাপত্তাহীনতায় আমাদের ভুগতে হয় না। একবার এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে বিশ্ব খাদ্য সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি রবার্ট ডি সিম্পসনের সাক্ষাৎকার নিচ্ছিলাম। সেখানে তিনি বাংলাদেশের খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা নিয়ে আমার এক প্রশ্নের জবাবে প্রশংসা করে যাচ্ছিলেন, সেদিন একজন বাংলাদেশি হিসেবে খুব গর্ব হচ্ছিল সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা আমাদের কিষান-কিষানিদের জন্য। তিনি এটাও বলছিলেন, বর্তমান সরকার কৃষিবান্ধব, তাই খাদ্যে ভবিষ্যতে তোমাদের আরও সমৃদ্ধি আসার উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। বিষয়টি আসলে এটাই যে একটি দেশের যেকোনো ক্ষেত্রে উন্নতির জন্য, বিকাশের পথে যেসব বাধা থাকে, তা যদি সরকার উপড়ে ফেলে দিয়ে সহজ করে দেয়, তবেই সম্ভব সেই দেশের জন্য সামনের দিকে এগিয়ে চলা। ক্রমবর্ধমান নগরায়ণ, শিল্পায়ন ও গ্লোবালাইজেশনের এই যুগে আমাদের গ্রামগুলো হারিয়ে যাচ্ছে, মানুষ কৃষিবিমুখ হয়ে উঠছে প্রতিনিয়ত। এর মাঝেও খাদ্য উৎপাদনে যত দূর আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, তাই–বা কম কিসের? তবে সরকারের প্রণোদনার হার আরও বাড়ানো হলে মানুষ আবার হয়তো ফিরে আসবে বাপ-দাদার ভিটেমাটিতে কৃষিকাজের উদ্দেশ্যে। সেই সুযোগ তৈরি করে দিক কৃষিবান্ধব সরকার, সেই প্রত্যাশা রইল।
গণমাধ্যম মারফত জেনেছি, আগামী ডিসেম্বরে ঢাকার গণপরিবহনে যুক্ত হতে যাচ্ছে মেট্রোরেল। এরই মধ্যে ঢাকায় বাসরুট ফ্র্যাঞ্চাইজি চালুর কথাও শোনা যাচ্ছে। এসব প্রকল্পের মাধ্যমে নগরের পরিবহনব্যবস্থা একেবারে বদলে যাবে—এমন মত বিশেষজ্ঞদের। ভাবতেই শান্তি লাগছে, ঢাকাবাসীর ঘণ্টার পর ঘণ্টা জ্যামে বসে থেকে কর্মশক্তি নষ্ট করার দিন বোধ হয় প্রায় শেষ হয়ে এল। আশা করছি মানুষ এখন অনেকটা সময় রাস্তা থেকে বাঁচিয়ে হয় কর্মক্ষেত্রে, নয় পরিবারে দিতে পারবে। আবার এই ভাবনাও উঁকি দিচ্ছে, আমরা কি পারব বাইরের দেশের মতো মেট্রোরেলকে সুন্দর, পরিচ্ছন্ন ও নিরাপদ রাখতে? নারীরা কি স্বচ্ছন্দে নিরাপদে মেট্রোরেল ব্যবহার করতে পারবে রাতের বেলায়? নাকি বছর ঘুরতে না–ঘুরতেই আমাদের মেট্রোরেলের সব রং বিবর্ণ হয়ে যাবে? এই বিবর্ণ করা থেকে নাগরিকদের কীভাবে বিরত রাখা যায়? মেট্রোরেল চালুর আগে এসব বিষয় কি আমরা একটু গবেষণা করে দেখছি? ভাবছি, কীভাবে নাগরিকদের কিছুটা সচেতন করা যায় দেশের সম্পদ রক্ষায়? এই সচেতনতা আসলে তৈরি হবে তখনই, যখন মানুষ দেখবে তাদের প্রতি যত্নশীল রাষ্ট্রযন্ত্র ও নীতিনির্ধারকেরা।
আরও অনেক খাত রয়েছে, যেখানে বাংলাদেশের মানুষ দিনকে দিন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে নিজেদের। সেই সব এগিয়ে যাওয়া খাতের দিকে নীতিনির্ধারকেরা আরও বেশি যুক্ত হয়ে এগিয়ে যাওয়ার পথকে কণ্টকমুক্ত করে দেবেন—এটাই সবার প্রত্যাশা। এখন দেশ যেভাবে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছে, তাতে প্রতিনিয়ত কিছু ভালো খবর পাব আমরা, সেটাই সবার চাওয়া। আমরা দুর্নীতিমুক্ত হতে চাই, ধর্ষণমুক্ত সমাজ চাই, মানবিক রাষ্ট্র চাই। কেবল এ রকম দিকগুলোর দিকে বাড়তি খেয়াল দিলেই আমরা এই সমস্যাগুলো থেকে বের হয়ে আসতে পারব। কেননা, যে সমস্যাগুলো আমাদের জন্য সংকট তৈরি করে, যে সমস্যাগুলোর কারণে আমরা এগিয়ে যাওয়ার পথে খেই হারিয়ে ফেলি, যে ঘাটতির কারণে এতসব ভালো খবর তলিয়ে যায়, সেগুলো থেকে উত্তরণের জন্য কী উপায় আছে, সেদিকেই এখন আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেওয়া দরকার। দেশের এগিয়ে যাওয়ার পথকে অনেকটাই অমসৃণ করে ফেলে আমাদের সেই সংকটগুলো। প্রত্যাশায় রইলাম, দেশ কেবলই এগিয়ে যাবে এসব সংকট কাটিয়ে সামনের দিকে। কারণ এখন আমাদেরই সময়, এগিয়ে যাওয়ার!
রাশেদা রওনক খান,
শিক্ষক, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
ক্রেডিট কার্ড, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, কিউআর কোড পেমেন্ট ও ডিজিটাল ওয়ালেটের মতো আধুনিক প্রযুক্তির সংযোজন ক্যাশলেস সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এসব বিষয়ে প্রাইম ব্যাংকের ইভিপি ও হেড অব কার্ডস অ্যান্ড রিটেইল অ্যাসেট জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সালের সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক নাদিম নেওয়াজ।
নাদিম নেওয়াজ

দেশে দিন দিন ক্যাশলেস লেনদেন বাড়ছে। এ বিষয়ে আপনার মত জানতে চাই।
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাইম ব্যাংক সব সময় গ্রাহকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে উদ্ভাবনী ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। আমাদের ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, কিউআর কোড পেমেন্ট ও ডিজিটাল ওয়ালেট সেবা গ্রাহকদের সহজ, দ্রুত ও নিরাপদ লেনদেনের সুযোগ দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংক গ্রাহকদের ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত হতে অনুপ্রাণিত করছে, যাতে তাঁরা নিরাপদ, ঝামেলামুক্ত ও আধুনিক ব্যাংকিং সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।
কার্ড ব্যবহারে দেশের মানুষের আগ্রহ কেমন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: দেশে মানুষের কার্ড ব্যবহারের প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের কার্ড ব্যবহারে উৎসাহিত করতে নানা সুবিধা দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদাও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
প্রাইম ব্যাংকের কর্মীরা শুধু কার্ড সরবরাহে সীমাবদ্ধ নন, বরং সরকারের ক্যাশলেস অর্থনীতি বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। দৈনন্দিন লেনদেনকে আরও সহজ ও সুরক্ষিত করতে আমরা ডিজিটাল চ্যানেলের ব্যবহার বাড়াতে সচেতনতা বৃদ্ধি ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি।
পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গ্রাহকদের জন্য কী ধরনের অফার দিচ্ছেন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: গ্রাহকদের উৎসবমুখর অভিজ্ঞতা আরও আনন্দদায়ক করতে আমরা বিভিন্ন খাতে আকর্ষণীয় মূল্যছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার করছি। ইফতার ও সেহরির জন্য শীর্ষস্থানীয় রেস্তোরাঁগুলোতে এক্সক্লুসিভ ডাইনিং অফার, বাই ওয়ান গেট ওয়ান/টু/থ্রি সুবিধা রয়েছে। এ ছাড়া গ্রোসারি ও রিটেইল দোকানগুলোতে বিশেষ ছাড় এবং ক্যাশব্যাক সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের কার্ডহোল্ডাররা যাতে পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন, সে জন্য জনপ্রিয় টিকিটিং প্ল্যাটফর্মগুলোতে এক্সক্লুসিভ ক্যাশব্যাক অফার রাখা হয়েছে। গ্রাহক অভিজ্ঞতা ও সন্তুষ্টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই।
প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
এ ছাড়া আমাদের অনলাইন ব্যাংকিং অ্যাপ ‘মাইপ্রাইম’-এর মাধ্যমে গ্রাহকেরা ক্রেডিট কার্ড থেকে যেকোনো অ্যাকাউন্টে সহজে ফান্ড ট্রান্সফার করতে পারেন। সুদমুক্ত সময়সীমার সুবিধাসহ কোনো অতিরিক্ত চার্জ ছাড়া ওয়ালেট ট্রান্সফার ও টপ-আপ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কার্ডভেদে গ্রাহকেরা দেশে-বিদেশে ১ হাজার ৪০০-এর বেশি এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।

কার্ডের ব্যবহার বাড়াতে আরও কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: আমাদের নির্বাচিত অ্যাকাউন্টধারী ও ঋণগ্রহীতাদের জন্য বান্ডেল ক্রেডিট কার্ডসহ বিশেষ সুবিধা প্রদান করছি। এ ছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন ধরনের ক্রেডিট কার্ড চালু করা হয়েছে, যা ডিজিটাল লেনদেনের প্রসার ঘটাবে এবং গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করবে। সর্বোচ্চ আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে প্রতিটি অ্যাকাউন্টের সঙ্গে ডেবিট কার্ড দেওয়া হচ্ছে, যা ডিজিটাল লেনদেনকে আরও সহজ ও আকর্ষণীয় করে তুলবে। সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের জন্য ব্যাংকিং সুবিধা নিশ্চিত করতে করপোরেট প্রিপেইড কার্ড চালু করা হয়েছে, বিশেষত গার্মেন্টসের কর্মীদের জন্য, যাঁরা এখনো নগদে মজুরি পেয়ে থাকেন। গার্মেন্টস কারখানার সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে আমরা কর্মীদের ব্যাংকিং ব্যবস্থার আওতায় আনছি। পাশাপাশি যেসব এলাকায় ব্যাংকিং সুবিধা সীমিত, সেখানে আমাদের এজেন্ট ব্যাংকিং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ডেবিট কার্ড ইস্যু ও অন্যান্য ব্যাংকিং সেবা দেওয়া হচ্ছে।
আরও খবর পড়ুন:

দেশে দিন দিন ক্যাশলেস লেনদেন বাড়ছে। এ বিষয়ে আপনার মত জানতে চাই।
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাইম ব্যাংক সব সময় গ্রাহকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে উদ্ভাবনী ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। আমাদের ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, কিউআর কোড পেমেন্ট ও ডিজিটাল ওয়ালেট সেবা গ্রাহকদের সহজ, দ্রুত ও নিরাপদ লেনদেনের সুযোগ দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংক গ্রাহকদের ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত হতে অনুপ্রাণিত করছে, যাতে তাঁরা নিরাপদ, ঝামেলামুক্ত ও আধুনিক ব্যাংকিং সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।
কার্ড ব্যবহারে দেশের মানুষের আগ্রহ কেমন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: দেশে মানুষের কার্ড ব্যবহারের প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের কার্ড ব্যবহারে উৎসাহিত করতে নানা সুবিধা দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদাও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
প্রাইম ব্যাংকের কর্মীরা শুধু কার্ড সরবরাহে সীমাবদ্ধ নন, বরং সরকারের ক্যাশলেস অর্থনীতি বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। দৈনন্দিন লেনদেনকে আরও সহজ ও সুরক্ষিত করতে আমরা ডিজিটাল চ্যানেলের ব্যবহার বাড়াতে সচেতনতা বৃদ্ধি ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি।
পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গ্রাহকদের জন্য কী ধরনের অফার দিচ্ছেন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: গ্রাহকদের উৎসবমুখর অভিজ্ঞতা আরও আনন্দদায়ক করতে আমরা বিভিন্ন খাতে আকর্ষণীয় মূল্যছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার করছি। ইফতার ও সেহরির জন্য শীর্ষস্থানীয় রেস্তোরাঁগুলোতে এক্সক্লুসিভ ডাইনিং অফার, বাই ওয়ান গেট ওয়ান/টু/থ্রি সুবিধা রয়েছে। এ ছাড়া গ্রোসারি ও রিটেইল দোকানগুলোতে বিশেষ ছাড় এবং ক্যাশব্যাক সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের কার্ডহোল্ডাররা যাতে পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন, সে জন্য জনপ্রিয় টিকিটিং প্ল্যাটফর্মগুলোতে এক্সক্লুসিভ ক্যাশব্যাক অফার রাখা হয়েছে। গ্রাহক অভিজ্ঞতা ও সন্তুষ্টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই।
প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
এ ছাড়া আমাদের অনলাইন ব্যাংকিং অ্যাপ ‘মাইপ্রাইম’-এর মাধ্যমে গ্রাহকেরা ক্রেডিট কার্ড থেকে যেকোনো অ্যাকাউন্টে সহজে ফান্ড ট্রান্সফার করতে পারেন। সুদমুক্ত সময়সীমার সুবিধাসহ কোনো অতিরিক্ত চার্জ ছাড়া ওয়ালেট ট্রান্সফার ও টপ-আপ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কার্ডভেদে গ্রাহকেরা দেশে-বিদেশে ১ হাজার ৪০০-এর বেশি এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।

কার্ডের ব্যবহার বাড়াতে আরও কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: আমাদের নির্বাচিত অ্যাকাউন্টধারী ও ঋণগ্রহীতাদের জন্য বান্ডেল ক্রেডিট কার্ডসহ বিশেষ সুবিধা প্রদান করছি। এ ছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন ধরনের ক্রেডিট কার্ড চালু করা হয়েছে, যা ডিজিটাল লেনদেনের প্রসার ঘটাবে এবং গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করবে। সর্বোচ্চ আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে প্রতিটি অ্যাকাউন্টের সঙ্গে ডেবিট কার্ড দেওয়া হচ্ছে, যা ডিজিটাল লেনদেনকে আরও সহজ ও আকর্ষণীয় করে তুলবে। সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের জন্য ব্যাংকিং সুবিধা নিশ্চিত করতে করপোরেট প্রিপেইড কার্ড চালু করা হয়েছে, বিশেষত গার্মেন্টসের কর্মীদের জন্য, যাঁরা এখনো নগদে মজুরি পেয়ে থাকেন। গার্মেন্টস কারখানার সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে আমরা কর্মীদের ব্যাংকিং ব্যবস্থার আওতায় আনছি। পাশাপাশি যেসব এলাকায় ব্যাংকিং সুবিধা সীমিত, সেখানে আমাদের এজেন্ট ব্যাংকিং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ডেবিট কার্ড ইস্যু ও অন্যান্য ব্যাংকিং সেবা দেওয়া হচ্ছে।
আরও খবর পড়ুন:

এই মুহূর্তে বাংলাদেশ কেন, সারা বিশ্বেই নানা দেশ নানা ধরনের সমস্যার মধ্য দিয়ে সময় পার করছে। কেউ দেশ দখল তো কেউ ধর্ম নিয়ে, কেউবা গোয়েন্দা সংস্থার চরবৃত্তি নিয়ে শঙ্কিত, কেউবা পরমাণুকেন্দ্র সামাল দেওয়া নিয়ে চিন্তিত। তবে করোনাকালে স্বাস্থ্যব্যবস্থা ও অর্থনীতিতে ব্যাপক চাপ তৈরি হওয়ায় বেশির ভাগ দেশই অর্থনৈ
২৮ জুন ২০২১
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
দেশের ক্রেডিট কার্ড বাজারে সিটি ব্যাংক এক নির্ভরযোগ্য নাম, বিশেষ করে একমাত্র আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) ক্রেডিট কার্ড ইস্যু এবং অ্যাকুয়ারের ক্ষেত্রে। উদ্ভাবন এবং গ্রাহককেন্দ্রিক সেবা দিয়ে নেতৃত্বের আসন মজবুত করেছে। এ বিষয়ে ব্যাংকটির কার্ড বিভাগের প্রধান তৌহিদুল আলমের সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার আসাদুজ্জামান নূর।
আসাদুজ্জামান নূর

সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের সাফল্যের মূল কারণ কী এবং গ্রাহকসংখ্যা ও লেনদেনের ভিত্তিতে ব্যাংকটি কোন অবস্থায় রয়েছে?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তমানে, সিটি ব্যাংক প্রায় ৭ লাখ ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করেছে এবং দেশের ৪৪টি ব্যাংকের মধ্যে ১৫-২০ শতাংশ লেনদেন পরিচালিত হয় আমাদের কার্ডের মাধ্যমে। এর পেছনে রয়েছে মানসম্মত সেবা, উদ্ভাবনী অফার এবং গ্রাহকের প্রতি দায়বদ্ধতা।
এই ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড প্রোডাক্টগুলোর মধ্যে কোনটি সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং গ্রাহকেরা কেন এটি বেশি ব্যবহার করছেন?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক অ্যামেক্স এবং ভিসা—দুটি পেমেন্ট স্কিমের ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে। তবে বাংলাদেশে আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ক্রেডিট কার্ড ইস্যু কর্তা, যা বিশেষ গুরুত্ব পায়। এর ট্রাভেল, ডাইনিং ও লাইফস্টাইল অফারের কারণে অ্যামেক্স কার্ডই আমাদের গ্রাহকদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বেশি ব্যবহৃত।
ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের জন্য বিশেষ অফার বা সুবিধা প্রদান করছে কি? কেন গ্রাহকেরা এই ব্যাংকের কার্ডে বেশি আগ্রহী?
তৌহিদুল আলম: অবশ্যই। সিটি ব্যাংক গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করছে, যেমন অ্যামেক্স কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট, ভিসা ইনফাইনাইট কার্ডে ক্যাশব্যাক এবং এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ, মিট অ্যান্ড গ্রিট, হোটেল-রেস্টুরেন্ট ডিসকাউন্ট অফার। আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হওয়ায়, গ্রাহকদের জন্য কাস্টমাইজড সুবিধা দিতে পারি, যা তাদের আরও আকৃষ্ট করছে।
মোবাইল অ্যাপে ক্রেডিট কার্ড সেবার বিশেষত্ব কী?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ডিজিটাল সুবিধার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত নতুন ফিচার যুক্ত করছে। আমাদের সিটিটাচ অ্যাপ্লিকেশনটি এখন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যাংকিং অ্যাপ। গ্রাহকেরা অ্যাপের মাধ্যমে বিল পেমেন্ট, কার্ড টু অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার, এমএফএস টু কার্ড ট্রান্সফার, কিউআর পেমেন্ট, সরকারি ও বেসরকারি ইউটিলিটি সার্ভিস পেমেন্টসহ বিভিন্ন কার্যক্রম সহজে সম্পন্ন করতে পারেন। এ ছাড়া মেম্বারশিপ রিওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে পারচেইজ, পারসোনাল ডিটেইল চেঞ্জ এবং ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজেকশন ম্যানেজমেন্টও এই প্ল্যাটফর্মে উপলব্ধ। গ্রাহকদের সুবিধা ও চাহিদা অনুযায়ী আমরা নিয়মিত নতুন নতুন সেবা যোগ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও খবর পড়ুন:

সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের সাফল্যের মূল কারণ কী এবং গ্রাহকসংখ্যা ও লেনদেনের ভিত্তিতে ব্যাংকটি কোন অবস্থায় রয়েছে?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তমানে, সিটি ব্যাংক প্রায় ৭ লাখ ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করেছে এবং দেশের ৪৪টি ব্যাংকের মধ্যে ১৫-২০ শতাংশ লেনদেন পরিচালিত হয় আমাদের কার্ডের মাধ্যমে। এর পেছনে রয়েছে মানসম্মত সেবা, উদ্ভাবনী অফার এবং গ্রাহকের প্রতি দায়বদ্ধতা।
এই ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড প্রোডাক্টগুলোর মধ্যে কোনটি সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং গ্রাহকেরা কেন এটি বেশি ব্যবহার করছেন?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক অ্যামেক্স এবং ভিসা—দুটি পেমেন্ট স্কিমের ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে। তবে বাংলাদেশে আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ক্রেডিট কার্ড ইস্যু কর্তা, যা বিশেষ গুরুত্ব পায়। এর ট্রাভেল, ডাইনিং ও লাইফস্টাইল অফারের কারণে অ্যামেক্স কার্ডই আমাদের গ্রাহকদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বেশি ব্যবহৃত।
ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের জন্য বিশেষ অফার বা সুবিধা প্রদান করছে কি? কেন গ্রাহকেরা এই ব্যাংকের কার্ডে বেশি আগ্রহী?
তৌহিদুল আলম: অবশ্যই। সিটি ব্যাংক গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করছে, যেমন অ্যামেক্স কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট, ভিসা ইনফাইনাইট কার্ডে ক্যাশব্যাক এবং এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ, মিট অ্যান্ড গ্রিট, হোটেল-রেস্টুরেন্ট ডিসকাউন্ট অফার। আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হওয়ায়, গ্রাহকদের জন্য কাস্টমাইজড সুবিধা দিতে পারি, যা তাদের আরও আকৃষ্ট করছে।
মোবাইল অ্যাপে ক্রেডিট কার্ড সেবার বিশেষত্ব কী?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ডিজিটাল সুবিধার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত নতুন ফিচার যুক্ত করছে। আমাদের সিটিটাচ অ্যাপ্লিকেশনটি এখন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যাংকিং অ্যাপ। গ্রাহকেরা অ্যাপের মাধ্যমে বিল পেমেন্ট, কার্ড টু অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার, এমএফএস টু কার্ড ট্রান্সফার, কিউআর পেমেন্ট, সরকারি ও বেসরকারি ইউটিলিটি সার্ভিস পেমেন্টসহ বিভিন্ন কার্যক্রম সহজে সম্পন্ন করতে পারেন। এ ছাড়া মেম্বারশিপ রিওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে পারচেইজ, পারসোনাল ডিটেইল চেঞ্জ এবং ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজেকশন ম্যানেজমেন্টও এই প্ল্যাটফর্মে উপলব্ধ। গ্রাহকদের সুবিধা ও চাহিদা অনুযায়ী আমরা নিয়মিত নতুন নতুন সেবা যোগ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও খবর পড়ুন:

এই মুহূর্তে বাংলাদেশ কেন, সারা বিশ্বেই নানা দেশ নানা ধরনের সমস্যার মধ্য দিয়ে সময় পার করছে। কেউ দেশ দখল তো কেউ ধর্ম নিয়ে, কেউবা গোয়েন্দা সংস্থার চরবৃত্তি নিয়ে শঙ্কিত, কেউবা পরমাণুকেন্দ্র সামাল দেওয়া নিয়ে চিন্তিত। তবে করোনাকালে স্বাস্থ্যব্যবস্থা ও অর্থনীতিতে ব্যাপক চাপ তৈরি হওয়ায় বেশির ভাগ দেশই অর্থনৈ
২৮ জুন ২০২১
উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার মাহফুজুল ইসলাম।
মাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা

ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সেবা ও বাজারে প্রতিযোগিতা সম্পর্কে কিছু বলুন?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। আমরা কন্টাক্টলেস ও ডুয়াল কারেন্সি কার্ড, ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস এবং কম বা শূন্য বার্ষিক ফির সুবিধা প্রদান করি। দ্রুত কার্ড ইস্যু, ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার এবং মোবাইল অ্যাপে সহজ তথ্য অ্যাকসেসের সুবিধা রয়েছে। বিভিন্ন উৎসব অফার, কো-ব্র্যান্ড কার্ড এবং ১৫০০+ এয়ারপোর্ট লাউঞ্জে প্রবেশের সুবিধা থাকায় আমাদের কার্ডের চাহিদা বাড়ছে।
অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কীভাবে আলাদা বা বিশেষ সুবিধা প্রদান করে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ঢাকা ব্যাংক পিএলসির ক্রেডিট কার্ডে ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস, কম লেনদেন ও বার্ষিক ফি, কন্টাক্টলেস সুবিধা এবং উন্নত সুরক্ষা যেমন ওটিপি ও ফ্রড ডিটেকশন রয়েছে। ব্যবহারবান্ধব মোবাইল অ্যাপ এবং ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার সেবা গ্রাহকদের নিরাপদ অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে।
দেশে ক্রেডিট কার্ডধারীদের মধ্যে কোন ধরনের লেনদেন প্রবণতা বেশি দেখা যায়?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ডধারীরা ফ্যাশন, ইলেকট্রনিকস, গৃহসজ্জা, দৈনন্দিন পণ্য, রেস্টুরেন্ট, ফুড ডেলিভারি, হোটেল ও ভ্রমণ বুকিং এবং ইউটিলিটি বিল পরিশোধে বেশি ব্যবহার করেন। ডিজিটালাইজেশন ও অনলাইন সেবার সহজলভ্যতা এই প্রবণতাগুলোকে ক্রমাগত বাড়াচ্ছে।
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে সুদের হার ও ফি-সংক্রান্ত নীতি কীভাবে নির্ধারণ করা হচ্ছে, এটি কি গ্রাহকবান্ধব?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ব্যাংকগুলো সাধারণত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা বা বাজার পরিস্থিতি অনুযায়ী রেট নির্ধারণ করে, তবে ক্রেডিট কার্ডের সুদের হার ২৫ শতাংশের বেশি হতে পারে না। বেশির ভাগ কার্ডে ৪৫ দিন বিনা সুদে কেনাকাটার সুযোগ থাকে। বার্ষিক ফি, লেট পেমেন্ট ফি এবং ক্যাশ উত্তোলন ফি প্রযোজ্য হতে পারে এবং অনেক কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট বা ক্যাশব্যাক সুবিধা থাকে। তবে অতিরিক্ত ব্যবহার ও বিলম্বিত পেমেন্টে ঋণের বোঝা বাড়তে পারে।
গ্রাহককে ব্যাংকের গ্রাহক সেবা বিভাগে অভিযোগ জমা দিতে হবে। অনেক প্রতিষ্ঠান ট্র্যাকিং নম্বর দেয়, যা দিয়ে অভিযোগের অবস্থা ট্র্যাক করা যায়। সাধারণত ৭-১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া এবং ৩০-৪৫ দিন পর সম্পূর্ণ সমাধান পাওয়া যায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ক্রেডিট কার্ডসংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করে এবং ব্যাংকগুলোকে ফি, সুদের হার এবং শর্তাবলি সম্পর্কে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে।
ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কতটা নিরাপদ?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংক লেনদেনের নিরাপত্তায় পিসিআই-ডিএসএস এবং আইএসও ২৭০০৩২ কমপ্লায়েন্ট। অনলাইন ট্রানজেকশনে ডেটা এনক্রিপশন ও দুই-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ব্যবহৃত হয়। লেনদেন রিয়েল-টাইমে মনিটর করা হয় এবং গ্রাহকদের নিরাপত্তা টিপস দেওয়া হয়। সন্দেহজনক লেনদেন হলে ২৪/৭ সেবা হটলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন।

যেসব গ্রাহক প্রথমবারের মতো ক্রেডিট কার্ড নিতে চান, তাঁদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: প্রথমবার ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার আগে ক্রেডিট অবস্থা ও আয়প্রবাহ চেক করুন। সঠিক কার্ড নির্বাচন করে সুদ, ফি এবং অফার বুঝে ব্যবহার করুন। ক্রেডিট লিমিট অতিক্রম না করার চেষ্টা করুন, সময়মতো পেমেন্ট করুন এবং অটো পেমেন্ট সেট আপ করুন।
ঢাকা ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ভবিষ্যতে কী ধরনের নতুন উদ্ভাবন বা প্রযুক্তি সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করছে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ড সুরক্ষা বাড়াতে বায়োমেট্রিক অথেন্টিকেশন, এআই ও মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে ব্যয় প্যাটার্ন বিশ্লেষণ এবং ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হতে পারে। ঢাকা ব্যাংক তাদের মোবাইল অ্যাপে এআই-ভিত্তিক গ্রাহকসেবা এবং চ্যাটবট সংযুক্ত করতে পারে।
আরও খবর পড়ুন:

ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সেবা ও বাজারে প্রতিযোগিতা সম্পর্কে কিছু বলুন?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। আমরা কন্টাক্টলেস ও ডুয়াল কারেন্সি কার্ড, ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস এবং কম বা শূন্য বার্ষিক ফির সুবিধা প্রদান করি। দ্রুত কার্ড ইস্যু, ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার এবং মোবাইল অ্যাপে সহজ তথ্য অ্যাকসেসের সুবিধা রয়েছে। বিভিন্ন উৎসব অফার, কো-ব্র্যান্ড কার্ড এবং ১৫০০+ এয়ারপোর্ট লাউঞ্জে প্রবেশের সুবিধা থাকায় আমাদের কার্ডের চাহিদা বাড়ছে।
অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কীভাবে আলাদা বা বিশেষ সুবিধা প্রদান করে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ঢাকা ব্যাংক পিএলসির ক্রেডিট কার্ডে ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস, কম লেনদেন ও বার্ষিক ফি, কন্টাক্টলেস সুবিধা এবং উন্নত সুরক্ষা যেমন ওটিপি ও ফ্রড ডিটেকশন রয়েছে। ব্যবহারবান্ধব মোবাইল অ্যাপ এবং ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার সেবা গ্রাহকদের নিরাপদ অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে।
দেশে ক্রেডিট কার্ডধারীদের মধ্যে কোন ধরনের লেনদেন প্রবণতা বেশি দেখা যায়?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ডধারীরা ফ্যাশন, ইলেকট্রনিকস, গৃহসজ্জা, দৈনন্দিন পণ্য, রেস্টুরেন্ট, ফুড ডেলিভারি, হোটেল ও ভ্রমণ বুকিং এবং ইউটিলিটি বিল পরিশোধে বেশি ব্যবহার করেন। ডিজিটালাইজেশন ও অনলাইন সেবার সহজলভ্যতা এই প্রবণতাগুলোকে ক্রমাগত বাড়াচ্ছে।
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে সুদের হার ও ফি-সংক্রান্ত নীতি কীভাবে নির্ধারণ করা হচ্ছে, এটি কি গ্রাহকবান্ধব?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ব্যাংকগুলো সাধারণত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা বা বাজার পরিস্থিতি অনুযায়ী রেট নির্ধারণ করে, তবে ক্রেডিট কার্ডের সুদের হার ২৫ শতাংশের বেশি হতে পারে না। বেশির ভাগ কার্ডে ৪৫ দিন বিনা সুদে কেনাকাটার সুযোগ থাকে। বার্ষিক ফি, লেট পেমেন্ট ফি এবং ক্যাশ উত্তোলন ফি প্রযোজ্য হতে পারে এবং অনেক কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট বা ক্যাশব্যাক সুবিধা থাকে। তবে অতিরিক্ত ব্যবহার ও বিলম্বিত পেমেন্টে ঋণের বোঝা বাড়তে পারে।
গ্রাহককে ব্যাংকের গ্রাহক সেবা বিভাগে অভিযোগ জমা দিতে হবে। অনেক প্রতিষ্ঠান ট্র্যাকিং নম্বর দেয়, যা দিয়ে অভিযোগের অবস্থা ট্র্যাক করা যায়। সাধারণত ৭-১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া এবং ৩০-৪৫ দিন পর সম্পূর্ণ সমাধান পাওয়া যায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ক্রেডিট কার্ডসংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করে এবং ব্যাংকগুলোকে ফি, সুদের হার এবং শর্তাবলি সম্পর্কে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে।
ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কতটা নিরাপদ?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংক লেনদেনের নিরাপত্তায় পিসিআই-ডিএসএস এবং আইএসও ২৭০০৩২ কমপ্লায়েন্ট। অনলাইন ট্রানজেকশনে ডেটা এনক্রিপশন ও দুই-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ব্যবহৃত হয়। লেনদেন রিয়েল-টাইমে মনিটর করা হয় এবং গ্রাহকদের নিরাপত্তা টিপস দেওয়া হয়। সন্দেহজনক লেনদেন হলে ২৪/৭ সেবা হটলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন।

যেসব গ্রাহক প্রথমবারের মতো ক্রেডিট কার্ড নিতে চান, তাঁদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: প্রথমবার ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার আগে ক্রেডিট অবস্থা ও আয়প্রবাহ চেক করুন। সঠিক কার্ড নির্বাচন করে সুদ, ফি এবং অফার বুঝে ব্যবহার করুন। ক্রেডিট লিমিট অতিক্রম না করার চেষ্টা করুন, সময়মতো পেমেন্ট করুন এবং অটো পেমেন্ট সেট আপ করুন।
ঢাকা ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ভবিষ্যতে কী ধরনের নতুন উদ্ভাবন বা প্রযুক্তি সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করছে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ড সুরক্ষা বাড়াতে বায়োমেট্রিক অথেন্টিকেশন, এআই ও মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে ব্যয় প্যাটার্ন বিশ্লেষণ এবং ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হতে পারে। ঢাকা ব্যাংক তাদের মোবাইল অ্যাপে এআই-ভিত্তিক গ্রাহকসেবা এবং চ্যাটবট সংযুক্ত করতে পারে।
আরও খবর পড়ুন:

এই মুহূর্তে বাংলাদেশ কেন, সারা বিশ্বেই নানা দেশ নানা ধরনের সমস্যার মধ্য দিয়ে সময় পার করছে। কেউ দেশ দখল তো কেউ ধর্ম নিয়ে, কেউবা গোয়েন্দা সংস্থার চরবৃত্তি নিয়ে শঙ্কিত, কেউবা পরমাণুকেন্দ্র সামাল দেওয়া নিয়ে চিন্তিত। তবে করোনাকালে স্বাস্থ্যব্যবস্থা ও অর্থনীতিতে ব্যাপক চাপ তৈরি হওয়ায় বেশির ভাগ দেশই অর্থনৈ
২৮ জুন ২০২১
উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সিনিয়র রিপোর্টার জয়নাল আবেদীন খান।
জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা

মাস্টারকার্ডের যাত্রা কীভাবে শুরু হয়েছিল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: আমরা বাংলাদেশে ১৯৯১ সালে যাত্রা শুরু করি, যখন বিশ্বে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছিল। ১৯৯৭ সালে এএনজেড গ্রিনলেজ (পরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড) ব্যাংকের সঙ্গে মিলে দেশে প্রথম ক্রেডিট কার্ড চালু করি, যা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গ্রাহকদের জন্য নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত ও ই-কমার্স খাতকে লক্ষ্য রেখে প্রথম অফিস চালু করা হয়। বর্তমানে ডিজিটাল প্রযুক্তি ও ই-কমার্সের বিকাশের সঙ্গে ডিজিটাল পেমেন্টের চাহিদা বেড়েছে, যেখানে মাস্টারকার্ড গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
গ্রাহকসেবার মান নিয়ে কিছু বলুন।
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় সর্বোচ্চ মানের গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করে, যাতে নিরাপদ ও সহজ লেনদেন সম্ভব হয়। আমাদের উদ্ভাবনী সলিউশন গ্রাহকদের দৈনন্দিন আর্থিক কার্যক্রম সহজ করে, বিশেষ করে কন্টাক্টলেস পেমেন্ট দ্রুত ও নিরাপদ অভিজ্ঞতা দেয়। কোভিড মহামারির সময় এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। মাস্টারকার্ড সরাসরি কার্ড ইস্যু না করে, বিশ্বব্যাপী ব্যবসা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়।
গ্রাহকের আস্থা অর্জনে কতটা সফল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে গ্রাহকদের আস্থা অর্জনে মাস্টারকার্ড আশাতীত সফল হয়েছে, যা প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। কারণ, আমাদের টোকেনাইজেশন প্রযুক্তি কার্ড তথ্য সুরক্ষিত রাখে, আর নানা অফার ও সুবিধা গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে সম্পর্ক মজবুত করে। গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করতে আমরা নিরন্তর কাজ করছি।
দেশি ও বিদেশি গ্রাহকদের সেবায় কি কোনো পার্থক্য আছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী একই মানের সেবা নিশ্চিত করে। তবে অফারগুলো দেশের বাজার ও গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। বাংলাদেশসহ প্রতিটি দেশে আর্থিক নীতিমালা ও বাজার পরিস্থিতির ভিত্তিতে সেবাগুলো নির্ধারিত হয়।
নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মাস্টারকার্ডের বিশেষত্ব কী?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড ব্যবহারের জনপ্রিয়তা কেন বাড়ছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে মাস্টারকার্ডের জনপ্রিয়তা বেড়েছে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রসার, উন্নত নিরাপত্তা, রিওয়ার্ড ও অফার এবং ই-কমার্সের বিকাশের কারণে। নগদ লেনদেনের বদলে ডিজিটাল লেনদেনের প্রবণতা বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য এখনো অর্জিত হয়নি, যেখানে আরও সহযোগিতা প্রয়োজন। উন্নত নিরাপত্তা প্রযুক্তি গ্রাহকদের আস্থা বাড়িয়েছে এবং বিভিন্ন রিওয়ার্ড ও ডিসকাউন্ট তাঁদের নিয়মিত লেনদেনে সুবিধা দিচ্ছে। ই-কমার্সের প্রসারও মাস্টারকার্ড ব্যবহারের চাহিদা বাড়ার একটি বড় কারণ, যা অনলাইন কেনাকাটায় নিরাপত্তা ও সুবিধা নিশ্চিত করে।
গ্রাহকদের জন্য বিশেষ কী অফার রয়েছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সারা বছর গ্রাহকদের জন্য নানা অফার ও সুবিধা দেয়, যা কেনাকাটা ও লেনদেনকে সহজ ও আকর্ষণীয় করে তোলে। ঈদ, পূজা, ক্রিসমাসসহ বিভিন্ন উৎসবে বিশেষ ছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার থাকে। এবার পবিত্র রমজান ও ঈদ উপলক্ষে ৪০টি শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডের ১৭৫টির বেশি আউটলেটে ২৫ শতাংশ ছাড়, ৫০টি হোটেল ও রেস্টুরেন্টে বোগো অফার, ট্রাভেল প্যাকেজে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় এবং ইলেকট্রনিকসে অতিরিক্ত ডিসকাউন্ট দেওয়া হচ্ছে। দেশের ৯০০০+ মার্চেন্ট আউটলেটে বিশেষ পেমেন্ট সুবিধাও মিলছে, যা গ্রাহকদের কেনাকাটার আনন্দ বাড়াবে।
ভবিষ্যতে মাস্টারকার্ডের নতুন কোনো অভিনব সেবা আসছে কি?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় নতুন সেবা যোগ করে আসছে, যেমন মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট ম্যানেজমেন্ট। ভবিষ্যতে আরও উদ্ভাবনী ও গ্রাহককেন্দ্রিক সলিউশন দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, যেমন এআই প্রযুক্তি দিয়ে লেনদেনের নিরাপত্তা বাড়ানো ও ফ্রড শনাক্তকরণ। ক্রস-বর্ডার পেমেন্ট ও রেমিট্যান্স সেবায় স্বচ্ছতা ও দ্রুততা আনা এবং ডিজিটাল ওয়ালেট সলিউশন বাড়ানো লক্ষ্য। এসব উদ্যোগ মাস্টারকার্ডকে বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতির অগ্রদূত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবে।
আরও খবর পড়ুন:

মাস্টারকার্ডের যাত্রা কীভাবে শুরু হয়েছিল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: আমরা বাংলাদেশে ১৯৯১ সালে যাত্রা শুরু করি, যখন বিশ্বে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছিল। ১৯৯৭ সালে এএনজেড গ্রিনলেজ (পরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড) ব্যাংকের সঙ্গে মিলে দেশে প্রথম ক্রেডিট কার্ড চালু করি, যা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গ্রাহকদের জন্য নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত ও ই-কমার্স খাতকে লক্ষ্য রেখে প্রথম অফিস চালু করা হয়। বর্তমানে ডিজিটাল প্রযুক্তি ও ই-কমার্সের বিকাশের সঙ্গে ডিজিটাল পেমেন্টের চাহিদা বেড়েছে, যেখানে মাস্টারকার্ড গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
গ্রাহকসেবার মান নিয়ে কিছু বলুন।
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় সর্বোচ্চ মানের গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করে, যাতে নিরাপদ ও সহজ লেনদেন সম্ভব হয়। আমাদের উদ্ভাবনী সলিউশন গ্রাহকদের দৈনন্দিন আর্থিক কার্যক্রম সহজ করে, বিশেষ করে কন্টাক্টলেস পেমেন্ট দ্রুত ও নিরাপদ অভিজ্ঞতা দেয়। কোভিড মহামারির সময় এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। মাস্টারকার্ড সরাসরি কার্ড ইস্যু না করে, বিশ্বব্যাপী ব্যবসা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়।
গ্রাহকের আস্থা অর্জনে কতটা সফল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে গ্রাহকদের আস্থা অর্জনে মাস্টারকার্ড আশাতীত সফল হয়েছে, যা প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। কারণ, আমাদের টোকেনাইজেশন প্রযুক্তি কার্ড তথ্য সুরক্ষিত রাখে, আর নানা অফার ও সুবিধা গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে সম্পর্ক মজবুত করে। গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করতে আমরা নিরন্তর কাজ করছি।
দেশি ও বিদেশি গ্রাহকদের সেবায় কি কোনো পার্থক্য আছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী একই মানের সেবা নিশ্চিত করে। তবে অফারগুলো দেশের বাজার ও গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। বাংলাদেশসহ প্রতিটি দেশে আর্থিক নীতিমালা ও বাজার পরিস্থিতির ভিত্তিতে সেবাগুলো নির্ধারিত হয়।
নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মাস্টারকার্ডের বিশেষত্ব কী?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড ব্যবহারের জনপ্রিয়তা কেন বাড়ছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে মাস্টারকার্ডের জনপ্রিয়তা বেড়েছে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রসার, উন্নত নিরাপত্তা, রিওয়ার্ড ও অফার এবং ই-কমার্সের বিকাশের কারণে। নগদ লেনদেনের বদলে ডিজিটাল লেনদেনের প্রবণতা বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য এখনো অর্জিত হয়নি, যেখানে আরও সহযোগিতা প্রয়োজন। উন্নত নিরাপত্তা প্রযুক্তি গ্রাহকদের আস্থা বাড়িয়েছে এবং বিভিন্ন রিওয়ার্ড ও ডিসকাউন্ট তাঁদের নিয়মিত লেনদেনে সুবিধা দিচ্ছে। ই-কমার্সের প্রসারও মাস্টারকার্ড ব্যবহারের চাহিদা বাড়ার একটি বড় কারণ, যা অনলাইন কেনাকাটায় নিরাপত্তা ও সুবিধা নিশ্চিত করে।
গ্রাহকদের জন্য বিশেষ কী অফার রয়েছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সারা বছর গ্রাহকদের জন্য নানা অফার ও সুবিধা দেয়, যা কেনাকাটা ও লেনদেনকে সহজ ও আকর্ষণীয় করে তোলে। ঈদ, পূজা, ক্রিসমাসসহ বিভিন্ন উৎসবে বিশেষ ছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার থাকে। এবার পবিত্র রমজান ও ঈদ উপলক্ষে ৪০টি শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডের ১৭৫টির বেশি আউটলেটে ২৫ শতাংশ ছাড়, ৫০টি হোটেল ও রেস্টুরেন্টে বোগো অফার, ট্রাভেল প্যাকেজে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় এবং ইলেকট্রনিকসে অতিরিক্ত ডিসকাউন্ট দেওয়া হচ্ছে। দেশের ৯০০০+ মার্চেন্ট আউটলেটে বিশেষ পেমেন্ট সুবিধাও মিলছে, যা গ্রাহকদের কেনাকাটার আনন্দ বাড়াবে।
ভবিষ্যতে মাস্টারকার্ডের নতুন কোনো অভিনব সেবা আসছে কি?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় নতুন সেবা যোগ করে আসছে, যেমন মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট ম্যানেজমেন্ট। ভবিষ্যতে আরও উদ্ভাবনী ও গ্রাহককেন্দ্রিক সলিউশন দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, যেমন এআই প্রযুক্তি দিয়ে লেনদেনের নিরাপত্তা বাড়ানো ও ফ্রড শনাক্তকরণ। ক্রস-বর্ডার পেমেন্ট ও রেমিট্যান্স সেবায় স্বচ্ছতা ও দ্রুততা আনা এবং ডিজিটাল ওয়ালেট সলিউশন বাড়ানো লক্ষ্য। এসব উদ্যোগ মাস্টারকার্ডকে বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতির অগ্রদূত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবে।
আরও খবর পড়ুন:

এই মুহূর্তে বাংলাদেশ কেন, সারা বিশ্বেই নানা দেশ নানা ধরনের সমস্যার মধ্য দিয়ে সময় পার করছে। কেউ দেশ দখল তো কেউ ধর্ম নিয়ে, কেউবা গোয়েন্দা সংস্থার চরবৃত্তি নিয়ে শঙ্কিত, কেউবা পরমাণুকেন্দ্র সামাল দেওয়া নিয়ে চিন্তিত। তবে করোনাকালে স্বাস্থ্যব্যবস্থা ও অর্থনীতিতে ব্যাপক চাপ তৈরি হওয়ায় বেশির ভাগ দেশই অর্থনৈ
২৮ জুন ২০২১
উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫