Ajker Patrika

পাতলা খিচুড়ি ও আখনি লাগবেই সিলেটিদের

লবীব আহমদ, সিলেট 
আপডেট : ১৮ মার্চ ২০২৫, ১৫: ২১
সিলেটের জিন্দাবাজার এলাকায় একটি রেস্টুরেন্টে আখনি কিনছেন ক্রেতারা। গতকাল বিকেলে। ছবি: আজকের পত্রিকা
সিলেটের জিন্দাবাজার এলাকায় একটি রেস্টুরেন্টে আখনি কিনছেন ক্রেতারা। গতকাল বিকেলে। ছবি: আজকের পত্রিকা

নানা পদের বাহারি ইফতারসামগ্রীর জন্য সিলেট অঞ্চলের বিশেষ পরিচিতি রয়েছে। আর তারই দুই অপরিহার্য অনুষঙ্গ পাতলা খিচুড়ি ও আখনি। সারা দিন রোজা রাখার পর ইফতারে সিলেটিদের এ দুটি খাবারের অন্তত একটি চাই-ই চাই। মুখরোচক ভাজাভুজি, ফলমূল বা পানীয়সহ আর যত বাহারি পদই থাকুক না কেন, আখনি বা পাতলা খিচুড়ি যেন থাকতেই হবে।

পাতলা খিচুড়ি খাওয়া হয় সারা দেশেই। তবে তেহারিজাতীয় ‘আখনি’ সিলেট অঞ্চলের নিজস্ব খাবার। সুগন্ধি চাল এবং মাংস দিয়ে আখনি রান্না করা হয়।

সিলেটে পাতলা খিচুড়ি শুধু ইফতারেই নয়, বিভিন্ন উৎসব-অনুষ্ঠানেও বেশ জনপ্রিয়। অনেকটা ডালের মতো তরল এ খিচুড়ি রান্না করা হয় সুগন্ধি সরু চালের সঙ্গে গাওয়া ঘি, কালিজিরা, ডাল, তেল ও নানা মসলা দিয়ে। স্বাদে বৈচিত্র্য আনার জন্য অনেকে এতে গরু বা মুরগির মাংস, ছোলা এবং পছন্দের শাকসবজিও মিশিয়ে থাকেন। তবে সাধারণ চাল-ডাল দিয়েও এ খিচুড়ি রান্না করা হয়। শরবত, খেজুর ইত্যাদি খেয়ে রোজা ভাঙার পর পুষ্টিকর পাতলা খিচুড়ি দিনের ক্লান্তি দূর করে দেয়। চাঙা করে শরীর।

কবে বা কীভাবে সিলেটে ইফতারে এই পাতলা খিচুড়ি খাওয়ার সংস্কৃতি চালু হয়েছে, সে ব্যাপারে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। তবে রমজানে বাসাবাড়ির পাশাপাশি এখন হোটেল-রেস্তোরাঁয়ও এর অনেক চাহিদা। রোজার মাসে প্রতিদিন বিকেলে সিলেট নগরের রেস্তোরাঁ ও ইফতারির দোকানগুলোতে পাতলা খিচুড়ির জন্য লাইন লেগে থাকে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সিলেট শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, ছোট-বড় প্রতিটি রেস্টুরেন্টেই পাতলা খিচুড়ি বিক্রি হচ্ছে। ডেগের পাশেই বক্সে ভরে রাখা হয়েছে খিচুড়ি। ছোট বক্সে আধা কেজি আর বড় বক্সে এক কেজি করে খিচুড়ি রয়েছে। আধা কেজির দাম ৬০ আর এক কেজি ১২০ টাকা। এটা গত বছরেরই দাম।

অন্যদিকে আখনি খাবারটি সিলেটে আখনি পোলাও হিসেবেও পরিচিত। এটি রান্নার পদ্ধতি বাবুর্চিভেদে ভিন্ন। একেক বাড়ির রয়েছে নিজস্ব রন্ধন পদ্ধতি। কয়েকজন অভিজ্ঞ বাবুর্চির সঙ্গে কথা বললে তাঁরা জানান, আখনি রান্নায় সুগন্ধি চিনিগুঁড়া কিংবা কালিজিরা চাল ব্যবহার করা হয়। চালের সমপরিমাণ গরু, খাসি কিংবা মুরগির ছোট করে কাটা মাংস নিতে হয়। তবে রাঁধুনিভেদে মাংস ও চালের অনুপাত কমবেশি হতে পারে।

গরুর মাংসের আখনি প্রতি কেজি ৩৮০-৪০০ টাকা আর মুরগির মাংসের প্রতি কেজি ৩২০-৩৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত বছরও এমনই দাম ছিল।

সিলেটের কলেজশিক্ষার্থী মো. মুছলেহ উদ্দিন মুনাঈম বলেন, সিলেটে ইফতারের আয়োজনে প্রধান পদ হলো পাতলা খিচুড়ি। এটি একদিকে যেমন এলাকার ঐতিহ্য, অন্যদিকে স্বাস্থ্যকরও। সিলেটের মানুষ রোজায় বাইরে কোথাও গেলে প্রধান যে সমস্যায় ভুগেন, তা হলো ইফতারে খিচুড়ি খেতে না পারা।

নগরের জিন্দাবাজার এলাকার রাজবাড়ী রেস্টুরেন্টের বাবুর্চি আবুল কালাম জানালেন, তাঁরা প্রতিদিনই গরু-মোরগের আখনি ও পাতলা খিচুড়ি তৈরি করেন। তাঁদের পাতলা খিচুড়ি বিভিন্ন শাকসবজি দিয়ে তৈরি করা হয়।

সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক এস এম আসাদুজ্জামান জুয়েল জানান, পাতলা খিচুড়ি শরীরের জন্য উপকারী একটি খাবার। এটি সাধারণত ডাল ও সবজিসহ বিভিন্ন উপাদান দিয়ে তৈরি করা হয়। এতে শ্বেতসারের (কার্বোহাইড্রেড) পাশাপাশি আমিষ পাওয়া যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গ্রাম্য বিরোধে প্রতিপক্ষের হামলায় একজন নিহত, বাড়িঘর ভাঙচুর

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় গ্রাম্য আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় সাইফুল সরদার ওরফে সাইফেল (৪৮) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার ভোরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় ইসমাইল মোল্যা নামের আরেক ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়েছেন।

নিহত সাইফুল সরদার উপজেলার সদর ইউনিয়নের বিদ্যাধর-ব্রাহ্মণ জাটিগ্রামের বাসিন্দা এবং স্থানীয় ইউপি সদস্য সৈয়দ শরীফুল ইসলামের (মেম্বার গ্রুপ) সমর্থক বলে জানা গেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বিদ্যাধর-ব্রাহ্মণ জাটিগ্রামে দীর্ঘদিন ধরে দুই গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য নিয়ে বিরোধ চলছিল। এক পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন ৩ নম্বর ইউপি সদস্য সৈয়দ শরীফুল ইসলাম এবং অপর পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন শাহাদাৎ হোসেন খোকন মিয়ার ছেলে জুয়েল মিয়া (৩৮)। পুলিশ জানায়, জুয়েল মিয়া একটি মামলায় কারাভোগের পর প্রায় এক মাস আগে জামিনে মুক্ত হন।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে জুয়েল মিয়ার নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জনের একটি দল সৈয়দ শরীফুল ইসলামের সমর্থকদের বাড়িতে অতর্কিত হামলা করে। এ সময় তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে সাইফুল সরদার ওরফে সাইফেলসহ কয়েকজনকে কুপিয়ে জখম করে। পরে তাঁকে উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী কাশিয়ানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে খুলনা মেডিকেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।

ইউপি সদস্য সৈয়দ শরীফুল ইসলামের অভিযোগ, গ্রাম্য বিরোধের জেরে জুয়েল মিয়ার নেতৃত্বে তাঁর সমর্থকদের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। এতে সাইফুল সরদার নিহত হন এবং ১০-১৫টি বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়।

তবে এ বিষয়ে অভিযুক্ত জুয়েল মিয়া পলাতক থাকায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এদিকে এই ঘটনায় গ্রামটিতে উত্তপ্ত অবস্থা বিরাজ করছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। পাশাপাশি অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে৷ এ ছাড়া এই ঘটনায় শফিক মিয়া ও আয়ুব মিয়া নামে জুয়েল গ্রুপের দুজনকে আটক করেছে পুলিশ।

সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালী সার্কেল) মো. আজম খান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মেম্বার গ্রুপ ও জুয়েল গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বর্বরতা চলছে। পাশাপাশি দুই গ্রুপের মধ্যে একাধিক পাল্টাপাল্টি মামলা রয়েছে এবং মামলাগুলো আদালতে বিচারাধীন। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে জুয়েল পলাতক ছিলেন এবং কিছুদিন আগে একটি মামলায় গ্রেপ্তার হলেও এক মাস আগে জামিনে বের হয়ে এসেছেন। তাঁর নেতৃত্বে রাত ৩টার দিকে মেম্বার গ্রুপের ওপর হামলা করা হয় এবং একজন নিহত হয়েছেন। ঘটনার পর ভোররাতে আমরা ছুটে এসেছি এবং দুজনকে আটক করা হয়েছে। এ ছাড়া বেশকিছু দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

লঞ্চ দুর্ঘটনা: তারেক রহমানের গণসংবর্ধনা থেকে ফিরছিলেন যাত্রীরা

ঝালকাঠি প্রতিনিধি
দুর্ঘটনায় দুমড়ে মুচড়ে গেছে লঞ্চ। ছবি: আজকের পত্রিকা
দুর্ঘটনায় দুমড়ে মুচড়ে গেছে লঞ্চ। ছবি: আজকের পত্রিকা

চাঁদপুরে মেঘনা নদীতে মধ্যরাতে দুই লঞ্চের মুখোমুখি সংঘর্ষে চারজনের মৃত্যু এবং অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ঝালকাঠিতে একটি লঞ্চ জব্দ করা হয়েছে। সেই লঞ্চের চারজনকের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।

এদিকে জানা গেছে, দুর্ঘটনা কবলিত লঞ্চটি ভাড়া করেছিলেন বিএনপির স্থানীয় নেতা। ঢাকায় তারেক রহমানের গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগা দিতে এসেছিলেন তাঁরা। গতকাল বৃহস্পতিবার গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষে তাঁর ফিরছিলেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার দিকে চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলা ও হরিণা এলাকার মাঝামাঝি স্থানে মেঘনা নদীতে ঘন কুয়াশার মধ্যে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ভোলা থেকে ঢাকাগামী জাকির সম্রাট–৩ লঞ্চের সঙ্গে ঢাকা–বরিশাল রুটের অ্যাডভেঞ্চার–৯ লঞ্চের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই একজনসহ মোট চারজনের মৃত্যু হয়।

সদরঘাট নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহাগ রানা জানান, হতাহতদের উদ্ধার করে ঢাকায় নেওয়ার পর নিহতের সংখ্যা চারজনে দাঁড়ায়। নিহতদের পরিচয় শনাক্ত ও আইনগত প্রক্রিয়া চলমান।

বিআইডব্লিউটিএ চাঁদপুর ট্রাফিক পরিদর্শক বাবু লাল বৈদ্য জানান, দুর্ঘটনার সময় নদীতে ঘন কুয়াশা থাকায় দৃশ্যমানতা প্রায় শূন্যে নেমে আসে। কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় চালকের অবহেলা ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে ঢাকায় আয়োজিত গণসংবর্ধনা সভায় যোগ দিতে ঝালকাঠি–২ আসনের মনোনীত প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য ইসরাত সুলতানা ইলেন ভুট্টো অ্যাডভেঞ্চার–৯ লঞ্চটি ভাড়া করেছিলেন।

ইসরাত সুলতানার নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা লঞ্চটিত করে গত ২৪ ডিসেম্বর রাতে ঝালকাঠি লঞ্চঘাট থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। ২৫ ডিসেম্বর ঢাকা থেকে ঝালকাঠির উদ্দেশে ফেরার পথে দুর্ঘটনাটি ঘটে।

নিজাম শিপিং লাইনস সূত্রে জানা গেছে, ইসরাত সুলতানা ইলেন ভুট্টো নেতা-কর্মীদের নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার জন্য অ্যাডভেঞ্চার–৯ লঞ্চটি ভাড়া করেছিলেন।

ঝালকাঠি জেলা যুবদলের আহ্বায়ক শামীম তালুকদার জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তিনি ঝালকাঠি লঞ্চঘাটে ছুটে আসেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের নেতা-কর্মীরা সবাই সুস্থ রয়েছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মেঘনায় দুর্ঘটনা: ঝালকাঠিতে অ্যাডভেঞ্চার–৯ লঞ্চ জব্দ, আটক ৪

ঝালকাঠি প্রতিনিধি
ঝালকাঠি লঞ্চ টার্মিনালে নোঙর করা অ্যাডভেঞ্চার–৯। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঝালকাঠি লঞ্চ টার্মিনালে নোঙর করা অ্যাডভেঞ্চার–৯। ছবি: আজকের পত্রিকা

চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে মাঝরাতে দুই লঞ্চের মুখোমুখি সংঘর্ষে চারজন নিহতের ঘটনার পর ঝালকাঠিতে ‘অ্যাডভেঞ্চার–৯’ নামে একটি লঞ্চ জব্দ করেছে নৌ-পুলিশ। এ ঘটনায় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চারজনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

আজ শুক্রবার সকাল আনুমানিক ১০টার দিকে অ্যাডভেঞ্চার–৯ লঞ্চটি ঝালকাঠি লঞ্চ টার্মিনালে নোঙর করলে বরিশাল নৌ-পুলিশ ও ঝালকাঠি থানা-পুলিশের সদস্যরা লঞ্চটি জব্দ করেন।

বরিশাল নৌ-পুলিশের পুলিশ সুপার এস এম নাজমুল হক জানান, চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে সংঘটিত ভয়াবহ দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পরপরই অ্যাডভেঞ্চার–৯ লঞ্চটির অবস্থান শনাক্ত করা হয়। পরবর্তীতে লঞ্চটি ঝালকাঠিতে পৌঁছালে সেটি জব্দ করা হয়। ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

অ্যাডভেঞ্চার–৯ লঞ্চের চারজন আটক। ছবি: আজকের পত্রিকা
অ্যাডভেঞ্চার–৯ লঞ্চের চারজন আটক। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইমতিয়াজ মাহমুদ জানান, লঞ্চটি ঝালকাঠিতে নোঙর করার পর সারেং, সুকানি, সুপারভাইজার ও ইঞ্জিন চালক পালিয়ে যান। পরে চারজন কেবিন বয়কে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার দিকে চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলা ও হরিণা এলাকার মাঝামাঝি স্থানে মেঘনা নদীতে ঘন কুয়াশার মধ্যে ভোলা থেকে ঢাকাগামী জাকির সম্রাট–৩ লঞ্চের সঙ্গে ঢাকা–বরিশাল রুটের অ্যাডভেঞ্চার–৯ লঞ্চের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই একজনসহ মোট চারজনের মৃত্যু হয়। আহত হন আরও অন্তত ১৫ জন যাত্রী।

সদরঘাট নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহাগ রানা জানান, হতাহতদের উদ্ধার করে ঢাকায় নেওয়ার পর নিহতের সংখ্যা চারজনে দাঁড়ায়। নিহতদের পরিচয় শনাক্ত ও আইনগত প্রক্রিয়া চলমান।

বিআইডব্লিউটিএ চাঁদপুর ট্রাফিক পরিদর্শক বাবু লাল বৈদ্য জানান, দুর্ঘটনার সময় নদীতে ঘন কুয়াশা থাকায় দৃশ্যমানতা প্রায় শূন্যে নেমে আসে। কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় চালকের অবহেলা ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সখীপুরে নিখোঁজের ৭ ঘণ্টা পর বন থেকে উদ্ধার শিশুটি মারা গেছে

সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি 
নিহত শিশু শামীম। ছবি: সংগৃহীত
নিহত শিশু শামীম। ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের সখীপুরে নিখোঁজের ৭ ঘণ্টা পর বন থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া শিশু শামীম (১০) মারা গেছে। উদ্ধারের তিন দিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। আজ শুক্রবার সকালে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

নিহত ব্যক্তির মামা সাব্বির হোসেন ও সখীপুর থানা-পুলিশ মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিহত শামীম উপজেলার কালিয়ানপাড়া গ্রামের শাহিন আলমের ছেলে ও স্থানীয় কীর্তনখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

নিহত শিশুর পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার দুপুর ১২টার দিকে শামীম বাড়ি থেকে বের হয়। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্যরা সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেন। একপর্যায়ে তাঁরা বাড়ির আশপাশের বনাঞ্চলে অনুসন্ধান চালান। পরে রাত ৮টার দিকে বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে একটি বন থেকে শামীমকে রক্তাক্ত ও অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। রাত ৯টার দিকে তাকে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার ধানমন্ডিতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।

নিহত শামীমের মামা সাব্বির হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করেছিলাম শিয়ালের আক্রমণে এমন হয়েছে। কিন্তু হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা জানান, এটি শেয়াল-কুকুরের আক্রমণের চিহ্ন নয়, শিশুটির মাথা ও শরীরের আঘাত করা হয়েছে।’

সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, নিহত শামীমের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। এ বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত