Ajker Patrika

বড়ভাইকে হত্যা করে লাশ বস্তায় ভরে সুরমায় ফেলেন জাহাঙ্গীর

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট
বড়ভাইকে হত্যা করে লাশ বস্তায় ভরে সুরমায় ফেলেন জাহাঙ্গীর

বাবা-মা বেঁচে নেই। চার ভাইয়ের এক ভাই সংযুক্ত আরব আমিরাতে থাকেন। তিন ভাই সিরাজ আলী, সাজ্জাদ আলী ও জাহাঙ্গীর আলী একই বাসায় থাকতেন। জমিজায়গা ভাগাভাগি নিয়ে ভাইয়ে ভাইয়ে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ের জাহাঙ্গীরের ধাক্কায় বটিতে পড়ে গলা ও গাল কেটে যায় সাজ্জাদের। পরে রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়। সিরাজ তা দেখে অজ্ঞান হয়ে যান। ছাদ থেকে দড়ি এনে সাজ্জাদের হাত-পা বেঁধে চায়ের বস্তায় ভরে রাখেন জাহাঙ্গীর। পরে রাতের আঁধারে ভাইয়ের বস্তাবন্দী লাশ সুরমা নদীতে ফেলে আসেন জাহাঙ্গীর।

১৮ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৯টার দিকে সিলেটের জালালাবাদ থানা এলাকার বসন্তরগাঁও গ্রামে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে। সিরাজ আলী, সাজ্জাদ আলী ও জাহাঙ্গীর আলী ওই গ্রামের মৃত ছোয়াব আলীর ছেলে। পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে সাজ্জাদ হত্যাকাণ্ডের চাঞ্চল্যকর তথ্য। আজ বুধবার দুপুরে সিলেট মহানগর পুলিশ (এসএমপি) কমিশনার কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। 

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এসএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) মু. মাসুদ রানা, উপকমিশনার (দক্ষিণ ও ডিবি) মোহা. সোহেল রেজা, অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিটি সার্ভিস) সুদীপ দাস, সহকারী পুলিশ কমিশনার দক্ষিণ সুরমা থানা মাঈন উদ্দিন খাঁন, দক্ষিণ সুরমা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুল হাসান তালুকদার, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই মো. জালাল উদ্দিনসহ বিভিন্ন কর্মকর্তা। 

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, হত্যাকাণ্ডের দুদিন পর দক্ষিণ সুরমায় বরইকান্দি এলাকার টেকনিক্যাল রোডের একটি অটো রাইস মিলের সামনের নদীর তীর থেকে বস্তাবন্দী অবস্থায় সাজ্জাদ আলীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। হাত-পা বাঁধা মরদেহের মাথার পেছনে ধারালো ও বাম গালে অস্ত্রের কোপ ছিল। 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানতে পেরে নিখোঁজ ভাইয়ের সন্ধানে থানা ও সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে যান জাহাঙ্গীর। লাশ শনাক্তের পাশাপাশি ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগে ২২ ফেব্রুয়ারি অজ্ঞাত আসামি করে দক্ষিণ সুরমা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন তিনি। 

এসএমপির উপকমিশনার (দক্ষিণ) মোহা. সোহেল রেজার দিকনির্দেশনায় চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার রহস্য উদ্‌ঘাটন করতে মাঠে নামে দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশ। 

পুলিশের তদন্তের একপর্যায়ে সন্দেহভাজন হিসেবে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার খোজারখলা খসরু মিয়ার কলোনির বাসিন্দা ও লক্ষীপুর সদর থানার রাজাপুর গ্রামের সাহাজানকে (৩৯) জিজ্ঞাসাবাদ করেও কোনো তথ্য পায়নি পুলিশ। 

উপকমিশনার সোহেল রেজার নিহতের বাড়িতে পাঠান মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্টদের। নিহত সাজ্জাদ আলীর বসতঘরে গিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন তাঁর কোনো কাপড়-চোপড় পাননি। বাসার ছাদে কাপড় শুকানোর দড়ির কিছু অংশ সংগ্রহ করে পুলিশ। যে দড়ি নিহতের হাত-পা বাঁধার দড়ির সঙ্গে মিলে যায়। এ কারণে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মামলার বাদী জাহাঙ্গীরকে থানায় ডাকা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি সহোদরকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র গ্রামের কবরস্থান থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মঙ্গলবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন জাহাঙ্গীর। তাঁর দেওয়ার তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ সিরাজকে গ্রেপ্তার করেছে। 

এ ঘটনায় জাহাঙ্গীর, সিরাজ ও সন্দেহভাজন সাহাজানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জাহাঙ্গীর জানান, সাজ্জাদ পাঁচ মাস আগে বিদেশ থেকে আসেন। তাঁরা একই ঘরে থাকলেও আলাদা রান্না করে খাওয়া-দাওয়া করতেন সাজ্জাদ। মূলত; জমিজায়গার ভাগ-বাঁটোয়ারায় নিয়ে জাহাঙ্গীর ও সিরাজের বিরুদ্ধে সালিস ডেকেছিলেন সাজ্জাদ। ঘটনার দিন রাতে সাজ্জাদ রান্না ঘরে বটি দিয়ে মিষ্টি কুমড়া কাটছিলেন। এ সময় জাহাঙ্গীর বাসায় ঢুকলে সাজ্জাদ তাঁকে গালিগালাজ শুরু করেন। সাজ্জাদ বটি ছুড়ে মারলে জাহাঙ্গীর সরে গিয়ে ঝাপটে ধরেন। দুই ভাই এক অপরকে কিলঘুষি মারেন। দুজনই মেঝেতে পড়ে যায়। সাজ্জাদ নিচে আর জাহাঙ্গীর ওপরে থেকে এলোপাতাড়ি কিলঘুষি মারতে থাকেন। একপর্যায়ে জাহাঙ্গীর দেখেন সাজ্জাদ মারছে না। তখন তাঁকে তুলতে গিয়ে জাহাঙ্গীর দেখে সাজ্জাদের গলা দিয়ে রক্ত বের হয় এবং নড়াচড়া বন্ধ হয়ে নিস্তেজ হয়ে যায়। বড় ভাই সিরাজ তা দেখে অজ্ঞান হয়ে যান। পরে জাহাঙ্গীর ছাদ থেকে দড়ি এনে হাত-পা বেঁধে চায়ের বস্তা ভরে সিএনজি করে তাঁর মরদেহ সুরমা নদীতে ফেলে আসেন জাহাঙ্গীর। 

পুলিশ জানায়, সাজ্জাদের মোবাইল বন্ধ হওয়ার আগে সর্বশেষ সাহাজানের সঙ্গে একাধিকবার লম্বা সময় নিয়ে কথা হয়। ফলে সাহাজানকে সন্দেহ হয় পুলিশের। তবে এখন তাঁকে এই মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে। 

উপকমিশনার (দক্ষিণ) মোহা. সোহেল রেজা বলেন, ‘প্রবাসফেরত সাজ্জাদকে জমিজমা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত নিহতের ভাই জাহাঙ্গীর ও সিরাজকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জাহাঙ্গীর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আর সিরাজকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তাঁকে আদালতে পাঠানো হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অটোরিকশাকে চাপা দিল বাস, প্রাণ গেল তিনজনের

ফরিদপুর প্রতিনিধি
বাসচাপায় অটোরিকশাটি ভেঙেচুরে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাসচাপায় অটোরিকশাটি ভেঙেচুরে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বাসের চাপায় একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় শিশুসহ আরও চারজন আহত হয়। আজ শুক্রবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কের কৈডুবী সদরদি রেলক্রসিং এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সোহেল মিয়া এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন নারী ও একজন পুরুষ। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।

খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান চালান। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে।  

হাইওয়ে থানার এসআই সোহেল মিয়া বলেন, অটোরিকশাটি ভাঙ্গা থেকে টেকেরহাটের উদ্দেশে যাচ্ছিল। কৈডুবী সদরদি রেলক্রসিং এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা নিউ মডার্ন পরিবহনের একটি বাস অটোরিকশাটিকে চাপা দেয়। এই ঘটনায় বাসটি আটক করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি ভারত: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

রংপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ৫৪
রংপুরে সার্কিট হাউসে সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
রংপুরে সার্কিট হাউসে সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ‘শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে ভারত এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। ট্রাইব্যুনালের রায় নিয়ে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, আমরাও তাদের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি।’

আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে রংপুর সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। রংপুর অঞ্চলে চার দিনের সফরে এসেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা তো চেয়েছি যে তাঁকে (শেখ হাসিনাকে) ফেরত পাঠানো হোক। যেহেতু উনি একজন কনভিক্টেড, যেহেতু সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থা তাঁকে একটি শাস্তি দিয়েছে। কিন্তু আমরা ইতিবাচক কোনো সাড়া এখন পর্যন্ত পাইনি। এটা নিয়ে আমার মনে হয় স্পেকুলেট না করাই ভালো। দেখা যাক কী হয়। আমরা তো চেয়েছি খুব, এ ধরনের ঘটনায় তো ঝট করে এক দিনে, সাত দিনে কোনো পরিবর্তন ঘটে না। আমরা অপেক্ষা করব, দেখি, ভারতের পক্ষ থেকে কী আসছে রিঅ্যাকশন।’

তৌহিদ হোসেন বলেন, একটা রিঅ্যাকশন আমরা দেখেছি যেটা, সেটা হলো তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছে, এ রকম একটা কথা আসছে আমাদের। দেখুক তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ে পররাষ্ট্র দপ্তরে কোনো তথ্য নেই বলে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘তারেক সাহেব কখন আসবেন, এই সম্বন্ধে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। উনার স্ত্রী সম্ভবত আসছেন বা পৌঁছে গেছেন হয়তো ইতিমধ্যে। আজকে সকালে পৌঁছার কথা ছিল। বেগম জিয়াকে আজকে নেওয়া হচ্ছে না, আমি ঢাকা থেকে আজকে সকালে জানলাম যে আজকে নেওয়া হচ্ছে না। একটু টেকনিক্যাল প্রবলেম দেখা দিয়েছে ওই এয়ারক্র্যাফট নিয়ে। সে ক্ষেত্রে হয়তো এক-আধ দিন দেরি হতে পারে।’

আরাকান আর্মি বাংলাদেশিদের ধরে নিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আরাকান আর্মির সাথে আমাদের দ্বিপক্ষীয় আলোচনা সম্ভব নয়। তারা একটা নন-স্টেট অ্যাক্টর। আমরা স্টেট হিসেবে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা যেমন মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ, থাইল্যান্ড বা ভারতের সাথে করতে পারি, সেটা তাদের সাথে করতে পারি না। তবে আমাদের স্বার্থ যেহেতু আছে, আমাদের দেখতে হবে। এই ঘটনা যাতে কমে বা আদৌ না ঘটে, এটার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’

এ ছাড়াও নীলফামারীতে প্রস্তাবিত চীনা হাসপাতালের কার্যক্রম অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত শুরু করে যেতে চায় বলেও জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। একই সঙ্গে নির্বাচিত সরকার এলে এই কাজ সমাপ্ত করবে বলেও আশা তার। এ সময় পিছিয়ে পড়া রংপুরের প্রত্নতাত্ত্বিকসহ সব ক্ষেত্রে নেওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক সরকারের সদিচ্ছার কথা জানান তৌহিদ হোসেন।

এরপর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সপরিবার রংপুর জমিদার বাড়ি তাজহাটে পরিদর্শনে যান। এ ছাড়াও বিকেলে রংপুর সার্কিট হাউসে চা-চক্রের কথা রয়েছে তৌহিদ হোসেনের। আগামীকাল রংপুরের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং রংপুরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জিলা স্কুল পরিদর্শন করার কথাও রয়েছে তাঁর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাতিয়ায় ৫৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ, এতিমখানায় বিতরণ

­হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর হাতিয়ার জাগলার চর এলাকার মেঘনা নদীতে অভিযান চালিয়েছে কোস্ট গার্ড। এ সময় একটি নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ করা হয়। এই ঘটনায় আটক কয়েকজন মাঝিমাল্লার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কোস্ট গার্ড হাতিয়ার একটি দল এই অভিযান চালায়। জব্দ করা জাটকাগুলোর মূল্য প্রায় ২৮ লাখ টাকা।

কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট মো. আবুল কাশেম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মেঘনা নদীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কোস্ট গার্ড। অভিযানে মেঘনা নদীর জাগলার চর এলাকায় একটি কাঠের নৌকায় তল্লাশি করা হয়। ওই নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা জব্দ করা হয়। এ সময় মাঝিদের মুচলেকা নিয়ে নৌকা ছেড়ে দেওয়া হয়। জব্দ মাছগুলো মৎস্য কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এতিমখানা ও দুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। মৎস্য সম্পদ রক্ষায় কোস্ট গার্ডের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাঠে পড়ে ছিল মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের সালথায় উৎপল সরকার (৩৫) নামের এক মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গৌরদিয়া এলাকার কালীতলা ব্রিজ-সংলগ্ন মাঠ থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় মাঠ-সংলগ্ন সেতু থেকে চোখ বাঁধা অবস্থায় থাকা ফিরোজ মোল্যা নামের এক ভ্যানচালককে জীবিত উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন।

নিহত উৎপল ফরিদপুর জেলা সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের রনকাইল গ্রামের অজয় সরকারের ছেলে। তাঁর স্ত্রী ও আড়াই বছর বয়সী এক শিশুসন্তান রয়েছে।

থানা-পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ ভোরে সড়কের পাশে ফাঁকা মাঠে রক্তাক্ত অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন। পাশেই একটি সেতুর সঙ্গে একই গ্রামের ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে চোখ বাঁধা অবস্থায় বেঁধে রাখা হয়েছিল। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি খুলে বলেন তিনি।

ভ্যানচালকের বরাত দিয়ে রনকাইল গ্রামের বাসিন্দা ও প্রতিবেশী কাজী শাহীন বলেন, উৎপল সরকার ব্যাটারিচালিত ভ্যানে করে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে মাছ কিনতে যাচ্ছিলেন। পথে অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চার ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্রের মুখে ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে ব্রিজের রেলিংয়ে বেঁধে ফেলে। তারা উৎপলের সঙ্গে থাকা টাকাপয়সা লুট করে তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সালথা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কে এম মারুফ হাসান রাসেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুই থেকে তিনজন দুর্বৃত্ত ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে এটাকে ডাকাতি বলা যায় না। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষে মূল কারণ বলা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত