Ajker Patrika

গজঘণ্টা স্কুল অ্যান্ড কলেজে মিলেমিশে ১৫ লাখ আত্মসাৎ

  • ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ, অফিস সহকারী ও দুই সহকারী শিক্ষকের যোগসাজশে টাকা আত্মসাৎ।
  • ভুয়া বিল-ভাউচারে টাকা উত্তোলন।
  • তদন্ত কমিটির দাবি করলেও কাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জানেন না ইউএনও।
আব্দুর রহিম পায়েল (রংপুর) গঙ্গাচড়া
আপডেট : ২৪ আগস্ট ২০২৫, ২২: ১৩
গজঘণ্টা স্কুল অ্যান্ড কলেজ। ছবি: সংগৃহীত
গজঘণ্টা স্কুল অ্যান্ড কলেজ। ছবি: সংগৃহীত

রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার গজঘণ্টা স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ, অফিস সহকারী ও দুই সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে পাঁচ মাস আগে সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও বর্তমানে সহকারী প্রধান শিক্ষক আখতারুজ্জামান ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ দিলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে বলে দাবি করা হলেও আসলে কোনো কমিটি করা হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।

জানা গেছে, ২০২৪ সালের ১০ জুন প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দেন আব্দুল খালেক। যোগদানের পর থেকেই তিনি সরকারি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অধিক হারে সেশন ফি, বেতন ও পরীক্ষার ফি বাবদ প্রায় ১৩ লাখ টাকা আদায় করেন। এর মধ্যে পরীক্ষার খরচ দেখানো হয় মাত্র ৩ লাখ টাকা। এ ছাড়া উপবৃত্তিধারী শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতনের সরকারি বরাদ্দ থেকে ৫ লাখ ১২ হাজার টাকা উত্তোলন করেন। সব মিলিয়ে প্রায় ১৫ লাখ ১২ হাজার টাকা বিভিন্ন অজুহাত ও ভুয়া বিল-ভাউচার দেখিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল খালেক অফিস সহকারী কাজী শওকত আলী এবং দুই সহকারী শিক্ষক মোহাম্মদ হোসেন ও প্রিয়নাথ রায়ের যোগসাজশে আত্মসাৎ করেন।

সম্প্রতি অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটির গ্রামীণ ব্যাংক গজঘণ্টা শাখার স্কুল শাখা (হিসাব নম্বর-১০০০০১) ও কলেজ শাখা (হিসাব নম্বর-১০০০০২) থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট মাস থেকে ২০২৫ সালের ১ আগস্ট পর্যন্ত কোনো লেনদেন হয়নি। কিন্তু রংপুর মেডিকেল কলেজ শাখার অগ্রণী ব্যাংকের হিসাব থেকে ৫ লাখ ১২ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।

সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটিতে গেলে কথা হয় সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও বর্তমান সহকারী প্রধান শিক্ষক আখতারুজ্জামানের সঙ্গে। অতিরিক্ত সেশন ফি ও বেতন আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি অধ্যক্ষ সাহেবকে বারবার নিষেধ করেছিলাম। এমনকি মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রও দিয়েছিলাম; কিন্তু তিনি শোনেননি। বরং আমাকে বলেছিলেন, আপনার এসব বিষয়ে নাক গলানোর দরকার নেই। আমার জানা মতে, দেড় বছরে দুটি পরীক্ষার জন্য ৩ লাখ টাকা খরচ করেছেন। বাকি টাকা কোথায় গেছে, তার কোনো হিসাব নেই।’

আখতারুজ্জামান বলেন, ‘সরকারি বিধি অনুযায়ী স্কুলের অর্থ কমিটির আহ্বায়ক হওয়ার কথা আমার। কিন্তু আর্থিক অনিয়ম করার জন্য তিনি (অধ্যক্ষ) নিজের পছন্দমতো দুই শিক্ষক মোহাম্মদ হোসেন ও প্রিয়নাথ রায়কে নিয়ে দায়সারা কমিটি চালিয়েছেন। প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা সত্ত্বেও আমাকে কোনো কাজে সম্পৃক্ত করা হয়নি।’

অতিরিক্ত সেশন ফি ও বেতন আদায়ের বিষয়ে লাল মিয়া, সাজু মিয়াসহ অন্তত ১৮-২০ জন উপবৃত্তিধারী শিক্ষার্থীর অভিভাবকের সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা বলেন, ‘আমরা জানতামই না উপবৃত্তিধারী বাচ্চাদের বেতন সরকার দেয়। আমরা দিনমজুর মানুষ। এবারের পরীক্ষার সময় কয়েকজন অভিভাবকের টাকা জোগাড় করতে সমস্যা হয়েছিল। প্রধান শিক্ষকের কাছে ফি কমানোর অনুরোধ করলে তিনি রাজি হননি।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী শিক্ষক মোহাম্মদ হোসেন বলেন, ‘আখতারুজ্জামান নিজেই কমিটি করতে চেয়েছিলেন। এ জন্য তিনি তাঁর ভায়রাকে দিয়ে রিট করান। ফলে কমিটি দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়। পরে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আমাদের বলেন, “আপনারা নিজের মতো খরচ করে হিসাব রাখুন।” তাই আমরা প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনে খরচ করেছি। তবে উপবৃত্তিধারী শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতন বা অতিরিক্ত ফি নেওয়া যাবে কি না, সেটা অধ্যক্ষই জানেন।’

অফিস সহকারী কাজী শওকত আলী বলেন, ‘প্রতিদিন যা টাকা ওঠে, সব আমি হেড স্যারকে বুঝিয়ে দিই। আমার কাছে কোনো টাকা থাকে না।’

অভিযুক্ত অধ্যক্ষ আব্দুল খালেক বলেন, ‘যদি প্রতিষ্ঠানে কমিটি না থাকে তাহলে আমি টাকা ব্যাংকে রেখে কি বিপদে পড়ব? তাই ইউএনও ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের মৌখিক অনুমতি নিয়ে অফিস সহকারীর মাধ্যমে টাকা খরচ করি। সরকার থেকে উপবৃত্তিধারী শিক্ষার্থীদের বেতনের যে টাকা আসে, তা দিয়ে প্রতিষ্ঠান চালানো যায় না। তাই অতিরিক্ত ফি নিতে হয়।’ অন্য এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘উপবৃত্তিধারী শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া যাবে না—এমন কোনো পরিপত্র আমার জানা নেই।’

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আবু সাঈদ মো. আরিফ মাহমুদ বলেন, ‘অধ্যক্ষের দাবি ঠিক নয়। আর্থিক বিষয়ে মৌখিক নির্দেশ দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। কাউকে এমন কিছু বলা হয়নি।’

ইউএনও মাহমুদুল হাসান মৃধা বলেন, ‘এ নিয়ে অভিযোগ পাওয়ার পরপরই আমরা তদন্ত কমিটি দিয়ে দিয়েছি। এ মুহূর্তে বলতে পারছি না, কাকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে আমার অফিসের মমতাজ বিস্তারিত বলতে পারবে। অধ্যক্ষ নিজে অপরাধ করে এখন আমার ওপর দায় চাপিয়ে বাঁচতে চাচ্ছেন। আমি তাঁর সঙ্গে কথা বললাম। উনি এখন কিছু বলতে পারছেন না। অধ্যক্ষ যে অপরাধ করেছেন তা আমার কাছে শিকার করেছেন। আমি তাঁকে বৃহস্পতিবার ঢেকেছি, উনি এলে আমি তাঁর কাছে থেকে তাঁর অপরাধের লিখিত নিয়ে নেব।’

জানতে চাইলে উপজেলা উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা মমতাজ বেগম বলেন, ‘যিনি এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন তিনি বলেছিলেন তদন্তটা কয়েক দিন পরে দেন। এ জন্যই তদন্তটা দেওয়া হয়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বদলি নিয়ে ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ শিক্ষক নেতার

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ

সহকর্মী এবং নিজের বদলি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। তিনি বলেন, ‘আমাকে সাড়ে ৪০০ মাইল দূরে বদলি করা হয়েছে। এতে আমি বিচলিত নই।’

আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ফেসবুক লাইভে এসে আবুল কাশেম বলেন, ‘আমার মতো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি আদায়ের নেতৃত্ব দেওয়া শতাধিক শিক্ষককে বদলি করা হয়েছে পার্শ্ববর্তী জেলা এবং বিভাগে। আরও অনেককে বদলি করা হতে পারে। এ নিয়ে কেউ বিচলিত হবেন না। প্রয়োজনে আইনি লড়াইয়ে যাব। তবে আন্দোলন থেকে সরে আসব না। আপনাদের পাশে রয়েছি। অবিলম্বে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা আসবে। সে জন্য যদি জেলেও যেতে হয়, প্রস্তুত রয়েছি।’

এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেমের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

৪ ডিসেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) মাহফুজা খাতুন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার চানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেমকে বরিশাল সদরের চরবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আমনের বাম্পার ফলনেও মুখে হাসি নেই কৃষকের, বাজারে ধানের দাম কমায় হতাশা

মাহিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মৌলভীবাজারের চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফসল ঘরে তুলতে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। তবে বাজারে ধানের দাম কম হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন তাঁরা। কৃষকদের অভিযোগ, বাজারে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। তাই ফলন ভালো হওয়ার পরও বাজারে ধানের যথার্থ মূল্য না পাওয়ায় লোকসানে পড়ছেন তাঁরা।

কৃষকেরা জানান, চলতি আমন মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ধানের দাম অনেক কম। গত বছর বাজারে যেখানে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায় প্রতি মণ ধান বিক্রি হয়েছে, এই বছর মাঝারি শুকনা ধান ৯০০ ও শুকনা ধান ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বীজতলা থেকে শুরু করে ফসল ঘরে তোলার আগপর্যন্ত অনেক শ্রম ও টাকা খরচ করতে হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৯৮ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়েছে। এর থেকে ৪ লাখ ৪১ হাজার ৯০ টন ধান উৎপাদন হবে। আর এই ধান থেকে ২ লাখ ৯৫ হাজার ৫৩০ মেট্রিক টন চাল পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যে ৬৫ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। আমন ধানের শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকেরা।

বাজারে আমন ধানের দাম কম হলেও সরকারিভাবে ভালো দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকারিভাবে প্রতি কেজি আমন ধান ৩৪ টাকা মূল্যে ৭৯০ টন, সেদ্ধ চাল ৫০ টাকা কেজি মূল্যে ২ হাজার ৬৭৭ টন ও আতপ চাল ৪৯ টাকা কেজি মূল্যে ৫ হাজার ৬৪৬ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

জেলার কমলগঞ্জ, রাজনগর, কুলাউড়া ও সদর উপজেলার আমনখেত ঘুরে দেখা যায়, কৃষকেরা পাকা আমন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত। অনেক এলাকায় দ্রুত সময়ে কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ একসঙ্গে সেরে নিচ্ছেন কৃষকেরা। এতে সময়, খরচ ও কষ্ট কম করতে হচ্ছে। আবার কেউ কাজের লোক এনে ধান কেটে ফসলের মাঠেই মাড়াই করে সেদ্ধ দিচ্ছেন। অনেক কৃষক মাঠের মধ্যে রাত জেগে ধান সেদ্ধ করছেন। তবে সবকিছু ঠিক থাকলেও ধানের দাম কম থাকায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন কৃষকেরা।

কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়ন কৃষক আনোয়ার খান বলেন, ‘গত বছর আমাদের ধান একেবারেই হয়নি। এ বছর অনেক ভালো ধান হয়েছে। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ফলন হয়েছে। তবে বাজারে ধানের দাম অনেক কম। প্রতি মণ ধান মাত্র ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কৃষিতে আগের চেয়ে অনেক বেশি খরচ বেড়েছে। সে তুলনায় ধানের দাম বাড়েনি।’

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মিলন কান্তি চাকমা বলেন, ‘আমাদের ধান-চাল সংগ্রহের কার্যক্রম ২০ নভেম্বর শুরু হয়েছে; চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সরকারিভাবে ধানের দাম গত বছরের তুলনায় কেজিপ্রতি ১ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। একটা সময় আমরা ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারতাম না; তবে এখন ধান-চালের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়। আশা করি, চলতি মৌসুমে আমাদের লক্ষ্য পূরণ হবে।’

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দীন বলেন, ‘জেলায় এ বছর খুব ভালো আমন ধান হয়েছে। কৃষকেরা অত্যন্ত উৎসাহ নিয়ে ধান ঘরে তুলছেন। আশা করি, আগামী সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান কাটা হয়ে যাবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও দিনের বেলা কুয়াশা না থাকায় সহজে কৃষকেরা ধান কাটা, মাড়াই ও সেদ্ধ করতে পারছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। ছবি: আজকের পত্রিকা
হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। ছবি: আজকের পত্রিকা

উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা পঞ্চগড়ে ধীরে ধীরে নামতে শুরু করেছে তাপমাত্রার পারদ। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯২ শতাংশ।

গত কয়েক দিন পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১৩ ডিগ্রির ঘরে থাকছে। ফলে বাড়ছে শীতের প্রকোপ। আজ শুক্রবার সকালে পঞ্চগড় সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। সুনসান নীরবতায় গরম কাপড় পরে প্রয়োজনীয় কাজে বের হয়েছে লোকজন। কেউ কেউ মাঠে করছেন হালচাষ। এরই মধ্যে পূর্ব আকাশে সূর্য দেখা দিলেও নেই প্রখর রোদ।

পঞ্চগড় সদর উপজেলার তালমা এলাকার গৃহবধূ নাজমা বেগম বলেন, ‘সকাল-বিকেল খুব ঠান্ডা পড়ে। ঘর থেকে বের হলেই যেন বাতাসে শরীর কেঁপে ওঠে। বাচ্চাদের নিয়ে সবচেয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। ঠান্ডা লাগলে হাসপাতালে যেতে হয় বারবার।’

একই এলাকার দিনমজুর মিজানুর রহমান বলেন, ‘শীতে কাজ পাওয়া কষ্ট হয়ে গেছে। সকালে কুয়াশায় কিছু দেখা যায় না, হাত-পা জমে থাকে। ঠান্ডায় শরীর ঠিকমতো সাড়া না দেওয়ায় কাজের গতি কমে গেছে।’

স্কুলছাত্রী তানজিলা আক্তার বলে, ‘সকালে কলেজ ও প্রাইভেটে যেতে খুব সমস্যা হয়। ঠান্ডা এমন যে হাতে গ্লাভস ছাড়া সাইকেল চালানো যায় না। শীত যেমন বাড়ছে, তেমনি অসুস্থ হওয়ার ভয়ও বাড়ছে।’

জেলার আশপাশ এলাকায় বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগী। এতে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। সর্দি-কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও হঠাৎ তাপমাত্রা পরিবর্তনজনিত অ্যালার্জিতে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

চিকিৎসকেরা বলছেন, দিন-রাতের তাপমাত্রার এই বড় পার্থক্য শরীরের ওপর চাপ ফেলে। বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক ও দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন মানুষ বেশি ঝুঁকিতে থাকে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ চিকিৎসকের।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, শীত ধীরে ধীরে নামছে। আজ ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। সামনে শীত আরও তীব্র হতে পারে। শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গলায় রশি পেঁচানো নছিমনচালকের লাশ উদ্ধার

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ডোবায় নছিমনচালকের লাশ পাওয়া যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ডোবায় নছিমনচালকের লাশ পাওয়া যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ওমর আলী শেখ (৫০) নামের এক নছিমনচালকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে মোবারকগঞ্জ চিনিকল ফার্মের সড়কের ডোবা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ধারণ, নছিমনচালককে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।

নিহত ওমর আলী কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার হাটবেলাটপুর গ্রামের ছাত্তার শেখের ছেলে।

বারোবাজারের ইসমাইল নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে বারোবাজারে শ্রমিকের কাজ করতাম। কিছুদিন আগে ওমর আলী নছিমন কিনেছে। সে বারোবাজারের মাছের ভাড়া টানে। সকালে তার মোবাইলে ফোন দিলে রিসিভ হচ্ছিল না। পরে জানতে পারি, তাকে হত্যা করা হয়েছে।’

কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির গলায় ধারালো অস্ত্রের কাটা দাগ রয়েছে। এ ছাড়া রশি দিয়ে তাঁর গলা পেঁচানো। ধারণা করা হচ্ছে, তাঁকে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করে ফেলে রেখে গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত