Ajker Patrika

কোরবানির জন্য রাজশাহী বিভাগে প্রস্তুত ৪৩ লাখ পশু, ৩০২ হাটে হবে বেচাকেনা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ১৬ মে ২০২৫, ১৬: ৩৮
দেড় যুগ পর সম্প্রতি নতুন করে চালু হয়েছে রাজশাহীর দামকুড়া পশুর হাট। কোরবানির আগে হাটটিতে পশুও উঠতে শুরু করেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
দেড় যুগ পর সম্প্রতি নতুন করে চালু হয়েছে রাজশাহীর দামকুড়া পশুর হাট। কোরবানির আগে হাটটিতে পশুও উঠতে শুরু করেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহী বিভাগে এবার কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে ৪৩ লাখেরও বেশি পশু। বিভাগের আট জেলার চাহিদা মিটিয়ে এসব পশু যাবে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের নানা প্রান্তে। বিভাগজুড়েও বসবে তিন শতাধিক হাট। কোরবানির আগে এখন পশুর পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারিরা। আর কয়েক দিনের মধ্যেই হাটগুলো জমে উঠবে বলে মনে করছেন তাঁরা।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে এবার সবচেয়ে বেশি কোরবানিযোগ্য পশু মজুত রয়েছে রাজশাহী বিভাগে। বিভাগের আট জেলায় ৪৩ লাখ ৪৪ হাজার ৪৯টি গরু, মহিষ, ছাগল ও অন্যান্য কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে। আর সবচেয়ে কম ৩ লাখ ৮ হাজার ৫১৫টি পশু আছে সিলেট বিভাগে।

এদিকে আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজশাহী বিভাগের ৩০২টি হাটে কোরবানির পশু বেচাকেনা হবে বলে জানিয়েছে বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তর। এসব হাটের মধ্যে ১৬১টি স্থায়ী ও ১৪১টি অস্থায়ী। গতকাল বৃহস্পতিবার এক সরকারি তথ্য বিবরণীতে এ কথা জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, বিভাগজুড়ে হাটগুলোর স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে গঠন করা হয়েছে ২১৩টি ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম। এসব টিম গাভির গর্ভ পরীক্ষা ও পশুর স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধানে কাজ করবে। এ ছাড়া হাটে জাল টাকা শনাক্তকরণের ব্যবস্থা থাকবে। থাকবে ব্যাংকের বুথও। পাশাপাশি হাটের ইজারাদারদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বসানো হবে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা।

খামারিরা বলছেন, গোখাদ্যের লাগামছাড়া দামের কারণে কোরবানির পশুর বাজারে প্রভাব পড়বে। দাম বেশি না হলে লোকসান হবে। যদিও প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, রাজশাহী বিভাগে এবারও কোরবানির পশুর চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেশি। তাই দাম খুব একটা বাড়বে না। সহনীয় একটা দাম থাকবে, এতে ক্রেতা-বিক্রেতা কারও সমস্যা হবে না।

রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিয়ান গ্রামের খামারি মিজানুর রহমান জানান, তাঁর খামারে ছয়টি গরু আছে, এর মধ্যে চারটি কোরবানির উপযোগী।

মিজানুর রহমান বলেন, ‘গরুগুলো চার মাস ধরে লালন পালন করছি। কোরবানির দুই সপ্তাহ আগে থেকে বিক্রি শুরু করব। খামার থেকেই বিক্রির চেষ্টা করব, না হলে হাটে তুলব।’

মিজানুর রহমান বলেন, ‘সব খাবারই কিনে খাওয়াতে হয়। গতবারের তুলনায় এবার গোখাদ্যের দাম অনেক বেড়েছে। বিশেষ করে, ঘাস, ভুট্টা, খৈল ও ভুসির দাম দ্বিগুণ হয়ে গেছে। দাম বাড়ার এ ধারা রীতিমতো চিন্তার বিষয়।’

একই উপজেলার খামারি সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘কোরবানির সময় পশুর দাম কিছুটা বেশি থাকে, এটাও একটা বাড়তি আশার জায়গা। আমাদের গ্রামে এখন প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই একটি বা দুটি গরু আছে। মানুষ মাঠে কাজ করার পাশাপাশি সংসারে সচ্ছলতা ফেরাতে গবাদিপশু পালন করেন। তবে বাইরে থেকে যদি গরু না আসে, তাহলে স্থানীয় খামারিরা ভালো দাম পাবেন।’

বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরিচালক আনন্দ কুমার অধিকারী বলেন, ‘এখন আর ভারতীয় গরু আসে না। পর্যাপ্ত গবাদিপশুর মজুত আমাদেরই আছে। বাইরের গরু আসে না বলে দাম কিছুটা বাড়তে পারে। আবার চাহিদার তুলনায় মজুত বেশি থাকায় দাম খুব বেশি বাড়বেও না। ফলে ধরে নেওয়া যায় যে বাজারে এমন দাম হবে, যেটা ক্রেতা-বিক্রেতা সবার জন্যই ভালো হবে। কয়েক দিনের মধ্যেই হাটগুলো জমে উঠবে। বিভাগের সবচেয়ে বড় পশুর হাট রাজশাহীর সিটিহাট। এটা ইতিমধ্যেই জমে উঠতে শুরু করেছে।’

এদিকে পশুর হাট ঘিরে নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে হাটের ইজারাদার ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সভা করেছেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান। তিনি বলেন, প্রতিটি হাটে সিসি ক্যামেরা, জেনারেটর, স্বেচ্ছাসেবক রাখতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি পানি ও পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে হাট ইজারাদারদের। হাসিল নিয়ে যেন কোনো দ্বন্দ্ব না হয়, সে বিষয়েও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

মহাসড়কের পাশে কোনো পশুর হাট বসানো যাবে না—এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে পুলিশ কমিশনার বলেন, জাল টাকা শনাক্তকরণ বুথ স্থাপনের জন্য ব্যাংকগুলোকেও অনুরোধ করা হয়েছে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হাটকেন্দ্রিক পুলিশ কন্ট্রোল রুম স্থাপন ছাড়াও বাড়ানো হবে গোয়েন্দা নজরদারি। চুরি, ছিনতাই ও চাঁদাবাজি ঠেকাতে নিয়মিত টহলের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি ভারত: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

রংপুর প্রতিনিধি
রংপুরে সার্কিট হাউসে সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
রংপুরে সার্কিট হাউসে সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত দেয়ার ব্যাপারে ভারত এখনও ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। ট্রাইব্যুনালের রায় নিয়ে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, আমরাও তাদের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে রংপুর সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি। রংপুর অঞ্চলে চার দিনের সফরে এসেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা তো চেয়েছি যে তাকে (শেখ হাসিনাকে) ফেরত পাঠানো হোক। যেহেতু উনি একজন কনভিক্টেড, যেহেতু সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থা তাকে একটি শাস্তি দিয়েছে। কিন্তু আমরা ইতিবাচক কোনো সাড়া এখন পর্যন্ত পাইনি। এটা নিয়ে আমার মনে হয় স্পেকুলেট না করাই ভালো। দেখা যাক কী হয়। আমরা তো চেয়েছি খুব, এ ধরনের ঘটনায় তো ঝট করে একদিনে সাত দিনে কোনো পরিবর্তন ঘটে না। আমরা অপেক্ষা করব, দেখি, ভারতের পক্ষ থেকে কি আসছে রিঅ্যাকশন।’

তৌহিদ হোসেন বলেন, একটা রিঅ্যাকশন আমরা দেখেছি যেটা, সেটা হলো তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছে, এরকম একটা কথা আসছে আমাদের। দেখুক তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে।

বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ে পররাষ্ট্র দপ্তরে কোনো তথ্য নেই বলে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, "তারেক সাহেব কখন আসবেন এই সম্বন্ধে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। উনার স্ত্রী সম্ভবত আসছেন বা পৌঁছে গেছেন হয়তো ইতিমধ্যে। আজকে সকালে পৌঁছার কথা ছিল। বেগম জিয়াকে আজকে নেওয়া হচ্ছে না, আমি ঢাকা থেকে আজকে সকালে জানলাম যে, আজকে নেওয়া হচ্ছে না। একটু টেকনিক্যাল প্রবলেম দেখা দিয়েছে ওই এয়ারক্রাফট নিয়ে। সেক্ষেত্রে হয়তো এক-আধ দিন দেরি হতে পারে। "

আরাকান আর্মি বাংলাদেশিদের ধরে নিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, "আরাকান আর্মির সাথে আমাদের দ্বিপাক্ষিক আলোচনা সম্ভব নয়। তারা একটা নন-স্টেট অ্যাক্টর। আমরা স্টেট হিসেবে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা যেমন মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ, থাইল্যান্ড বা ভারতের সাথে করতে পারি সেটা তাদের সাথে করতে পারি না। তবে আমাদের স্বার্থ যেহেতু আছে, আমাদের দেখতে হবে। এই ঘটনা যাতে কমে বা আদৌ না ঘটে, এটার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। "

এছাড়াও নীলফামারীতে প্রস্তাবিত চীনা হাসপাতালের কার্যক্রম অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত শুরু করে যেতে চায় বলেও জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। একই সঙ্গে নির্বাচিত সরকার এলে এই কাজ সমাপ্ত করবে বলেও আশা তার। এ সময় পিছিয়ে পড়া রংপুরের প্রত্নতাত্ত্বিকসহ সবক্ষেত্রে নেয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক সরকারের সদিচ্ছার কথা জানান তৌহিদ হোসেন।

এরপর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সপরিবারে রংপুর জমিদার বাড়ি তাজহাটে পরিদর্শনে যান। এছাড়াও বিকেলে রংপুর সার্কিট হাউসে চা-চক্রের কথা রয়েছে তৌহিদ হোসেনের। আগামীকাল রংপুরের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং রংপুরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জিলা স্কুল পরিদর্শন করার কথাও রয়েছে তার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাতিয়ায় ৫৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ, এতিমখানায় বিতরণ

­হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর হাতিয়ার জাগলার চর এলাকার মেঘনা নদীতে অভিযান চালিয়েছে কোস্ট গার্ড। এ সময় একটি নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ করা হয়। এই ঘটনায় আটক কয়েকজন মাঝিমাল্লার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কোস্ট গার্ড হাতিয়ার একটি দল এই অভিযান চালায়। জব্দ করা জাটকাগুলোর মূল্য প্রায় ২৮ লাখ টাকা।

কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট মো. আবুল কাশেম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মেঘনা নদীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কোস্ট গার্ড। অভিযানে মেঘনা নদীর জাগলার চর এলাকায় একটি কাঠের নৌকায় তল্লাশি করা হয়। ওই নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা জব্দ করা হয়। এ সময় মাঝিদের মুচলেকা নিয়ে নৌকা ছেড়ে দেওয়া হয়। জব্দ মাছগুলো মৎস্য কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এতিমখানা ও দুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। মৎস্য সম্পদ রক্ষায় কোস্ট গার্ডের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মাঠে পড়ে ছিল মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের সালথায় উৎপল সরকার (৩৫) নামের এক মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গৌরদিয়া এলাকার কালীতলা ব্রিজ-সংলগ্ন মাঠ থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় মাঠ-সংলগ্ন সেতু থেকে চোখ বাঁধা অবস্থায় থাকা ফিরোজ মোল্যা নামের এক ভ্যানচালককে জীবিত উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন।

নিহত উৎপল ফরিদপুর জেলা সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের রনকাইল গ্রামের অজয় সরকারের ছেলে। তাঁর স্ত্রী ও আড়াই বছর বয়সী এক শিশুসন্তান রয়েছে।

থানা-পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ ভোরে সড়কের পাশে ফাঁকা মাঠে রক্তাক্ত অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন। পাশেই একটি সেতুর সঙ্গে একই গ্রামের ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে চোখ বাঁধা অবস্থায় বেঁধে রাখা হয়েছিল। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি খুলে বলেন তিনি।

ভ্যানচালকের বরাত দিয়ে রনকাইল গ্রামের বাসিন্দা ও প্রতিবেশী কাজী শাহীন বলেন, উৎপল সরকার ব্যাটারিচালিত ভ্যানে করে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে মাছ কিনতে যাচ্ছিলেন। পথে অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চার ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্রের মুখে ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে ব্রিজের রেলিংয়ে বেঁধে ফেলে। তারা উৎপলের সঙ্গে থাকা টাকাপয়সা লুট করে তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সালথা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কে এম মারুফ হাসান রাসেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুই থেকে তিনজন দুর্বৃত্ত ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে এটাকে ডাকাতি বলা যায় না। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষে মূল কারণ বলা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাসার দরজা ভেঙে চবি শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

চবি প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ওমর ফারুক সুমন নামের এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাতে চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী এলাকার একটি বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

ওমর ফারুক বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

স্থানীয় ও পরিবারের সদস্যরা জানান, সুমন খুলশীতে তাঁর মামার বাসায় থাকতেন। তাঁর বড় ভাইও সেখানে থাকেন। দুই দিন আগে সুমনের মামা পুরো পরিবার নিয়ে তুরস্কে বেড়াতে যান। বাসায় সুমন ও তাঁর বড় ভাই ছিলেন। গতকাল বিকেল ৪টার দিকে ভাইয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন সুমন। ফোনে তাঁর বড় ভাই কখন বাসায় ফিরবেন জানতে চান সুমন। বড় ভাই জানান যে তাঁর আসতে একটু দেরি হবে। এর কিছুক্ষণ পর বড় ভাই সুমনকে ফোন করলে তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি। পরে বাড়ি থেকে সুমনের মা ফোন দিয়ে যোগাযোগ করতে না পেরে বিষয়টি বড় ভাইকে জানান। এতে উদ্বেগ দেখা দিলে বড় ভাই বিল্ডিংয়ের দারোয়ানকে দিয়ে বাসা চেক করান।

দারোয়ান কলিংবেল বাজিয়েও কোনো সাড়া না পেয়ে বড় ভাইকে জানালে তিনি দ্রুত বাসায় এসে সুমনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। ঘটনাস্থলে চিরকুট মিলেছে। এতে লেখা রয়েছে, ‘আমি সুমন, ওমর ফারুক সুমন। আমার কোনো আশা-আকাঙ্ক্ষা নেই। আর আমার কারও প্রতি কোনো অভিযোগ নেই। সবাই ভালো থাকবেন।’ এর আগে ১ ডিসেম্বর লেখা আরেকটি চিরকুট পাওয়া যায়। সেখানে লেখা ছিল—‘আশাই জীবন, আশাই মরণ, ব্যর্থতা হতাশা-অন্ধকারে নিয়ে যায়।’

খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর জামান বলেন, ‘সুমন ও তাঁর বড় ভাই একসঙ্গে মামার বাসায় থাকতেন। মামা ও মামি বর্তমানে বিদেশে আছেন। বড় ভাই সন্ধ্যায় বাইরে যান। সে সময় সুমন বাসায় একা ছিলেন। বড় ভাই বাসায় ফিরে এসে বারবার ডাকলেও ফ্ল্যাটের ভেতর থেকে কোনো সাড়া পাননি। পরে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকলে সুমনের মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। প্রাথমিক তদন্তে এটি আত্মহত্যা মনে হলেও আমরা সব সম্ভাব্য কারণ খতিয়ে দেখছি। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত