Ajker Patrika

প্রতিপক্ষের ওপর হামলা, আত্রাইয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থীর ছেলেসহ গ্রেপ্তার ৮

রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ মে ২০২৪, ১৮: ০০
প্রতিপক্ষের ওপর হামলা, আত্রাইয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থীর ছেলেসহ গ্রেপ্তার ৮

নওগাঁর আত্রাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী এবাদুর রহমানের ভাই-ভাতিজা ও কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী মমতাজ বেগমের ছেলে রাব্বীর নেতৃত্বে এই হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ এবাদুর রহমান প্রামাণিকের মেয়ে রোকসানা আফরোজের।   

হামলায় উভয় পক্ষের অন্তত ৯ জন আহত হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় রাতেই থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার পর চেয়ারম্যান প্রার্থী মমতাজ বেগমের ছেলেসহ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ উপজেলার জয়সারা আব্বাসের মোড় নামকস্থানে এই হামলার ঘটনা ঘটে।  

আত্রাই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রার্থী এবাদুর রহমান প্রামাণিকের (কৈ প্রতীক) মেয়ে রোকসানা আফরোজ বলেন, ‘শুক্রবার রাতে ভোটের প্রচার শেষে রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ তাদের কর্মী-সমর্থকেরা বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় উপজেলার জয়সারা আব্বাসের মোড়ে পৌঁছালে প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী মমতাজ বেগমের (কাপ-পিরিচ প্রতীক) ছেলে রাব্বীর নেতৃত্বে হামলা চালিয়ে লোহার রড, হকিস্টিক দিয়ে আমাদের কর্মীদের বেধড়ক মারপিট করে। এ সময় জয়সারা গ্রামের লোকজন ছুটে আসলে তারা হামলার শিকার হন এবং হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।’ 

হামলায় প্রার্থী এবাদ প্রামাণিকের ভাই শহিদুল ইসলাম, ভাতিজা মনিরুজ্জামান রনি, কর্মী জিহাদ হোসেন, শাহাদাত হোসেন ও উজ্জল হোসেন আহত হয়। আহতদের স্থানীয়দের সহযোগিতায় উদ্ধার করে আত্রাই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। 

এর মধ্যে শহিদুল ইসলাম ও রনির অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাতেই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। রোকসানা আফরোজ বলেন, তার বাবা একটানা তিনবার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মমতাজ বেগমের লোকজন এই হামলা চালিয়েছে। এঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি। 

এদিকে হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদে এবং সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে আজ শনিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করেছেন আত্রাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও চেয়ারম্যান প্রার্থী এবাদুর রহমান। 

উপজেলার সাহেবগঞ্জ নির্বাচনী প্রচার অফিসে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে আত্রাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবু, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আমিনুল ইসলাম, উপজেলা কৃষক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল মুক্তার, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহতাব উদ্দীনসহ দলীয় ও কর্মী-সমর্থকেরা উপস্থিত ছিলেন। 

এদিকে প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী মমতাজ বেগম বলেন, ‘প্রার্থী এবাদের লোকজন টাকা নিয়ে গেছে এমন খবরে আমার লোকজন জয়সারা যায়। সেখানে আমার কর্মীকে এবাদের ভাতিজা রনি মারপিট করে। এরপর রনিকেও কয়েকটা বারি দিয়েছে।’ 

এ ঘটনার জের ধরে তার ছেলে রাব্বী এবং সমর্থকদের মারপিট করে এবং একটি মোটরসাইকেল ভেঙেছে। এতে তার পক্ষের আহাদ, আপু ও আশিক আহত হয়। 

আহতদের আত্রাই হাসপাতালে ভর্তি করালে সেখানে রাতে দেখতে গেলে ছেলের বউকে এবাদুর রহমান মারপিট করেছেন এবং নানা অশ্লীল কথা বলেছেন। এছাড়া হাসপাতাল গেটে তিনি নিজেও হামলার শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেছেন মমতাজ বেগম। 

তবে তার পক্ষের লোকজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। এঘটনায় থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি।

থানা-পুলিশ জানায়, হামলার ঘটনায় রাতেই প্রার্থী এবাদুর রহমানের ভাই সাজেদুর রহমান বাদী হয়ে ১৭ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ৫-৬ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। 

মামলায় প্রার্থী মমতাজ বেগমের ছেলে শফিকুজ্জামান রাব্বীসহ উপজেলার গুড়নই গ্রামের তহিদুল ওরফে ইমান আলী ও হাফিজ উদ্দীন, সাহেবগঞ্জ মোল্লাপাড়ার আশিক রহমান, জগদাস গ্রামের আশরাফুল ইসলাম ও শহিদুল সরদার, চকবিষ্টপুর গ্রামের রফিকুল ইসলাম ও মোজাফ্ফর হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

আত্রাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহুরুল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের শনিবার আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে। এ ছাড়া মমতাজ বেগমের এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। তিনি আরও বলেন, ‘অভিযোগ পেলে অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জামালপুরের ৫টি আসন

ভোটের মাঠে: কোন্দলে ভুগছে বিএনপি

  • প্রচারে ব্যস্ত সময় পার করছেন বিএনপিসহ অন্য দলের প্রার্থীরা।
  • দুটি আসনে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে চলছে আন্দোলন।
  • তিনটি করে আসনে প্রার্থী দিয়েছে সিপিবি ও গণঅধিকার পরিষদ।
  • নির্বাচন নিয়ে কেন্দ্রের দিকে তাকিয়ে জাতীয় পার্টি।
জাহাঙ্গীর আলম, জামালপুর
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে জামালপুরে অন্তঃকোন্দলে ভুগছে বিএনপি। জেলার পাঁচটি আসনের মধ্যে দুটির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবি উঠেছে। তবে আগে থেকে প্রচার শুরু করা জামায়াতে ইসলামী রয়েছে খানিকটা সুবিধাজনক অবস্থানে। এ ছাড়া প্রচারে রয়েছে ইসলামী আন্দোলনও। আর জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) জেলার সব কটি আসনে প্রস্তুতি নেওয়ার কথা বললেও মাঠে দৃশ্যমান তৎপরতা নেই।

আয়তনে ২ হাজার ৩২ বর্গকিলোমিটার ও ৭ উপজেলা, ৮টি পৌরসভা এবং ৬৮ ইউনিয়ন নিয়ে জামালপুর জেলার আসনসংখ্যা ৫। জেলার মোট ভোটার ২১ লাখ ৩৫ হাজার ১১৬ জন। এই জেলায় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) তিনটি আসনে এবং গণঅধিকার পরিষদ তিনটি আসনে প্রার্থী দিলেও প্রচারে নেই কেউ। আর নির্বাচনকেন্দ্রিক তৎপরতা নেই জাতীয় পার্টিতে (জাপা)। কেন্দ্র থেকে নির্বাচনের ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন জেলা জাপার আহ্বায়ক জাকির হোসেন খান। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় নির্দেশ পেলে প্রার্থী নিয়ে মাঠে নামবেন, এমন প্রস্তুতি আছে।

জামালপুর-১ (দেওয়ানগঞ্জ-বকশীগঞ্জ)

দুটি উপজেলা, ২টি পৌরসভা এবং ১৫টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত জামালপুর-১ আসন। এই আসনে ২০০১ সালে বিএনপির সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও মিল্লাতকে (কেন্দ্রীয় বিএনপির কোষাধ্যক্ষ) দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। আসনটিতে জামায়াতের প্রার্থী দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটির শুরা সদস্য নাজমুল হক সাইদীকে। নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণার আগে থেকে আসনটিতে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীরা কোমর বেঁধে মাঠে প্রচারে নেমেছেন।

জামালপুর-২ (ইসলামপুর)

জেলার ১ উপজেলা, ১ পৌরসভা আর ১২টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এই আসন। এবার নির্বাচনে আসনটিতে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে উপজেলা বিএনপির সভাপতি সুলতান মাহমুদ বাবুকে। তিনি ২০০১ সালে বিএনপি থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে তাঁর দলীয় মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে কাফনের কাপড় পরে সড়ক অবরোধ, মানববন্ধন, মিছিল সমাবেশ করছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এবং সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব এ এস এম আবদুল হালিমের অনুসারীরা। এ ছাড়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের ছোট ভাই শরিফুল ইসলাম খানও দলীয় মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপ করছেন।

আসনটিতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সামিউল হক ফারুকীকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী সুলতান মাহমুদ সিরাজী, আর গণঅধিকার পরিষদের প্রার্থী মো. ইসমাঈল হোসেন। আসনটিতে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীর পক্ষে জোরালো প্রচার চলছে।

জামালপুর-৩ (মেলান্দহ-মাদারগঞ্জ)

২টি উপজেলা, ৩টি পৌরসভা ও ১৮টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত আসনটিতে ১৯৯১ সাল থেকে ৭ বার নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের র্মিজা আজম। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক সহসম্পাদক ও মেলান্দহ উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান। তাঁর মনোনয়ন বাতিল চেয়ে মাঠে নেমেছেন বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ৩ প্রার্থী। তাঁরা হচ্ছেন সাবেক সচিব এ কে এম ইহসানুল হক, মাদারগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ফায়েজুল ইসলাম লাঞ্জ এবং মেলান্দহ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদিকুর রহমান শুভ। তাঁরা মনোনয়ন পরিবর্তন চেয়ে মিছিল, সমাবেশসহ গণসংযোগ অব্যাহত রেখেছেন। জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী অধ্যাপক মজিবুর রহমান আজাদী প্রচারে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।

জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী)

এই আসনে ১৯৯১ সালে আসনটিতে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন বিএনপির মহাসচিব ব্যারিস্টার আবদুস সালাম তালুকদার। ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে আসনটিতে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে তাঁর ভাতিজা এবং জামালপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ও সরিষাবাড়ী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল কবীর তালুকদার শামীমকে।

এ ছাড়া আসনটিতে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী করা হয়েছে জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আবদুল আওয়ালকে। ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মো. আলী আকবর সিদ্দিক। এ ছাড়া গণপরিষদের মো. ইকবাল হোসেন এবং বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) মাহবুব জামানকে প্রার্থী করা হয়েছে।

জামালপুর-৫ (সদর)

আগামী নির্বাচনে এই আসনে বিএনপির প্রার্থী করা হয়েছে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক এবং জামালপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ্ মো. ওয়ারেছ আলী মামুনকে। জামায়াতের প্রার্থী হয়েছেন জেলা আমির মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুস সাত্তার। এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মুফতি মোস্তফা কামাল, গণঅধিকার পরিষদের জাকির হোসেন এবং কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী করা হয়েছে বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী আক্কাসকে।

সব মিলিয়ে জামালপুরের ৫ আসনেই নির্বাচনের আমেজ বইতে শুরু করেছে। প্রার্থীরা তাঁদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। ভোটাররাও তাঁদের পছন্দের প্রার্থীকেই ভোট দিতে মুখিয়ে আছেন। তবে নতুন ভোটাররা নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে তাঁদের প্রথম ভোট দেওয়ার কথা জানিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দিপু চন্দ্র দাস ও শিশু আয়েশা হত্যার প্রতিবাদে জাতীয় শ্রমিক শক্তি বিক্ষোভ সমাবেশ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
শাহবাগে জাতীয় শ্রমিক শক্তির বিক্ষোভ সমাবেশ। ছবি: সংগৃহীত
শাহবাগে জাতীয় শ্রমিক শক্তির বিক্ষোভ সমাবেশ। ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহে পোশাকশ্রমিক দিপু চন্দ্র দাস এবং লক্ষ্মীপুরে শিশু আয়েশা আক্তারকে নৃশংসভাবে পুড়িয়ে হত্যার প্রতিবাদে ও জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে এনসিপির অঙ্গসংগঠন জাতীয় শ্রমিক শক্তি। আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে এই সমাবেশে শ্রমিকনেতারা অবিলম্বে দোষীদের গ্রেপ্তার ও দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারের দাবি জানান।

​রোববার বেলা ৩টায় শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মাজহারুল ইসলাম ফকির, সঞ্চালনা করেন সদস্যসচিব ঋআজ মোর্শেদ।

বক্তারা বলেন, শ্রমিক দিপু চন্দ্র দাস বা শিশু আয়েশার ওপর যে পাশবিকতা চালানো হয়েছে, তা কোনো সভ্য সমাজ মেনে নিতে পারে না। কর্মক্ষেত্রে ও নিজ জনপদে সাধারণ মানুষ ও শ্রমিকদের জানমালের নিরাপত্তা আজ চরম সংকটে। যদি অনতিবিলম্বে খুনিদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা না হয়, তবে মেহনতি মানুষ রাজপথে কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে।

​বক্তারা আরও বলেন, ‘শ্রমিকেরাই এই দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখে, অথচ তাদের জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই। শিশু আয়েশার মতো নিষ্পাপ প্রাণের এই মৃত্যু আমাদের বিচারব্যবস্থার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা বিচারহীনতার এই সংস্কৃতি ভাঙতে চাই।’

​সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব ​সাইফ মোস্তাফিজ,​ মুশফিক উস সালেহীন ​মোল্লা ফারুক এহসান, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ​ভেমপালী ডেভিড রাজু ও কৈলাস চন্দ্র রবিদাস প্রমুখ।

​আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় শ্রমিক শক্তির মুখ্য সংগঠক আরমান হোসাইন, ​যুগ্ম আহ্বায়ক মেহেদি হাসান, সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব সৌরভ খান সুজন, যুগ্ম সদস্যসচিব তৌফিকুজ্জামান পীরাচাসহ অন্যান্য নেতা।

শ্রমিকশক্তি নেতারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবি জানান এবং দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের আহ্বান জানান। তাঁরা আরও বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে এবং একই সঙ্গে সারা দেশে শ্রমিক ও সাধারণ নাগরিকদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সুদানে ড্রোন হামলায় শহীদ পাকুন্দিয়ার সেনাসদস্য জাহাঙ্গীর আলমের দাফন

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
পাকুন্দিয়ার সেনাসদস্য জাহাঙ্গীর আলমের জানাজা শেষে দাফন। ছবি: আজকের পত্রিকা
পাকুন্দিয়ার সেনাসদস্য জাহাঙ্গীর আলমের জানাজা শেষে দাফন। ছবি: আজকের পত্রিকা

সুদানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের আওতাধীন কাদুগলি লজিস্টিক বেজে বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠীর ড্রোন হামলায় শহীদ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেস ওয়েটার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের (৩০) বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। স্তব্ধ হয়ে গেছে পরিবারের সদস্যরা। জাহাঙ্গীর আলম কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের তারাকান্দি গ্রামের মো. হযরত আলীর ছেলে। ১১ বছরের বেশি সময় ধরে জাহাঙ্গীর আলম সেনাবাহিনীতে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

উপজেলা প্রশাসন জানায়, আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে হেলিকপ্টারে করে পাকুন্দিয়া সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আনা হয় জাহাঙ্গীর আলমের মরদেহ। সেখান থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে মরদেহ নেওয়া হয় একই উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের তারাকান্দি গ্রামে তাঁর বাড়িতে। বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ির সামনে ফসলের মাঠে তাঁর জানাজা হয়। পরে পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় তাঁকে। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ জানাজায় অংশ নেন।

জাহাঙ্গীরের স্ত্রীর বড় ভাই মো. ওয়ালী উল্লাহ বলেন, জাহাঙ্গীর শাহাদাতবরণ করেছেন। তাঁর জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ যেন জাহাঙ্গীরকে শহীদ হিসেবে কবুল করেন।

জাহাঙ্গীরের স্ত্রী রুবাইয়া আক্তার স্বামীর ছবি ও তিন বছরের ছেলে ইফরানকে বুকে আঁকড়ে ধরে স্তব্ধ হয়ে বসে থাকছেন। মাঝেমধ্যে চিৎকার করে কেঁদে উঠছেন।

নিহত জাহাঙ্গীরের বাবা হযরত আলী কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমার ছেলে আমাদের সব চালাত। ঋণ করে ঘর বানাচ্ছিল, আশা ছিল, এই ঘরেই থাকবে। সেই আশা আর পূরণ হলো না।’

বুকফাটা কান্নায় ভেঙে পড়েছেন শহীদ জাহাঙ্গীর আলমের মা পালিমা বেগম। তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে কই? কেউ আমার ছেলেরে আইনা দেও। আল্লাহ তুমি আমার ছেলেরে আইন্না দেও। সে কারও ক্ষতি করে নাই। তবু কেন আমার ছেলেটারে মারল?’

পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুপম দাস ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিফাত জাহান বলেন, সেনাসদস্য জাহাঙ্গীর আলম বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন। একই সঙ্গে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে গর্বিত করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ওসমান হাদি হত্যার বিচারের দাবি চবির আধিপত্যবাদবিরোধী শিক্ষক ঐক্যের

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরিফ ওসমান বিন হাদির হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষক।

আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ৩টার দিকে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনটি হয়।

‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আধিপত্যবাদবিরোধী শিক্ষক ঐক্য’-এর ব্যানারে এটি আয়োজন করা হয়।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সমন্বয়কারী ও মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. ফুয়াদ হাসান।

মানববন্ধনে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. জামাল উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশের পরিণতি যেন হায়দরাবাদ, ফিলিস্তিন ও সিকিমের মতো না হয়, সে জন্য সব ধরনের আধিপত্যবাদী শক্তির আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

শরিফ ওসমান হাদির হত্যার বিচারের দাবি জানিয়ে অধ্যাপক জামাল উদ্দিন আরও বলেন, ‘আমরা যদি আধিপত্যবাদবিরোধী শক্তির ঐক্যের প্রতীক শরিফ ওসমান হাদির হত্যার বিচার না পাই, তাহলে লাখ লাখ মানুষ জানাজায় গিয়ে লাভ নেই। আমাদের ওসমান হাদি হত্যার বিচার নিশ্চিত করতেই হবে।’

ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. নেসারুল করিম বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের যোদ্ধা ওসমান হাদিকে হত্যার মাধ্যমে বিপ্লবের চেতনা দমিয়ে রাখা যাবে না। কেউ যদি মনে করে, জুলাই বিপ্লবের স্পিরিটকে দমিয়ে রাখতে পারবে, তাদের চিন্তাভাবনা ভুল। তারা একজন হাদিকে হত্যা করে বাংলায় লাখো হাদির জন্ম দিয়েছে।’

মানববন্ধন থেকে চার দফা দাবি ঘোষণা করেন ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ। সেগুলো হলো—শহীদ শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকারীদের দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে; শুধু প্রত্যক্ষ হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচার করলেই হবে না, এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে যেসব মাস্টারমাইন্ড রাজনীতিবিদ অথবা অন্য কুশীলব জড়িত বা ষড়যন্ত্র করেছে বলে প্রতীয়মান হয়, তাদেরও জাতির সামনে উপস্থাপন করতে হবে।

হাদির মতো দ্বিতীয় আর কাউকে যেন জীবন দিতে না হয়, সে জন্য দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে হবে। যেসব ষড়যন্ত্রকারী ও ফ্যাসিস্টের দোসর এখনো দেশের ভেতরে থেকে ষড়যন্ত্র করে বেড়াচ্ছে, তাদের আইনের আওতায় এনে বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে; অধিকন্তু, স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও পূরণ না হওয়া যে আকাঙ্ক্ষা অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর অর্পিত হয়েছে, বাংলাদেশে বিচারহীনতার যে সংস্কৃতি ছিল, সেটির চিরকবর দিয়ে ইনসাফের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহাদাত হোছাইন, দর্শন বিভাগের অধ্যাপক মো. মোজাম্মেল হক, মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সেক্রেটারি সালেহ নোমান, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ড. শহীদুল হক, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. এনায়েত উল্লাহ পাটওয়ারী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত