Ajker Patrika

কম্বল নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ১৪
সংঘর্ষে আহত ব্যক্তিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
সংঘর্ষে আহত ব্যক্তিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় সরকারি কম্বল বিতরণকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অন্তত ১৩ জন আহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার ধোপাপাড়া বাজার এলাকায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, মাত্র ১৮টি কম্বল বিতরণকে কেন্দ্র করে জিউপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য আনসার আলী এবং ধোপাপাড়া ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আরজ আলীর কর্মী-সমর্থকেরা সংঘর্ষে জড়ান।

বর্তমানে পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আহত ব্যক্তিদের কয়েকজন। তাঁদের মধ্যে আছেন আনসার আলী (৫৪), তাঁর ছেলে সৌমিক হাসান (২৪), দেলোয়ার হাসান (২৫) ও সাব্বির হাসান (১৪)। এ ছাড়া আনসার আলীর স্ত্রী শামীমা বেগম (৪৫) আহত হয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন এবং হাসপাতালেই অবস্থান করছেন। অন্য আহত ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন, ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য বেলাল হোসেন, এমরান আলী, শামীম হোসেন, ওয়ার্ড কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক রনি ইসলাম এবং বাবু, আনোয়ার, আকরাম ও হান্নান।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আনসার আলী বলেন, ধোপাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফারুকনাজ বেগম সরকারি বরাদ্দের ১৮টি কম্বল বিতরণের দায়িত্ব পান। তিনি ধোপাপাড়া ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আরজ আলীকে ফোন করে পাঁচ-ছয়জন শীতার্ত মানুষকে জাতীয় পরিচয়পত্রসহ নিয়ে যেতে বলেন।

আনসার আলী জানান, সেখানে গিয়ে তিনি দেখতে পান, আরজ আলী একাই সব কম্বল নিয়ে গেছেন। এ নিয়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ধোপাপাড়া বাজারে তাঁর মালিকানাধীন মার্কেটে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে আরজ আলী ও তাঁর অনুসারীরা তাঁদের ওপর হামলা চালান। এতে তিনি ও তাঁর পরিবারের সদস্যসহ কয়েকজন আহত হন।

আনসার আলী আরও বলেন, ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হান্নান এই ঘটনার প্রতিবাদ করলে তাঁকেও মারধর করা হয়। ঘটনার পর তিনি আত্মগোপনে থাকায় হাসপাতালে আসতে পারেননি। আনসার আলীর অভিযোগ, এর আগেও আরজ আলী একাই শিশু ও মাতৃকার্ড সংগ্রহ করেছেন। এ নিয়ে এলাকায় ক্ষোভ ছিল। কম্বল বিতরণে অনিয়মের প্রতিবাদ করায় তাঁদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। হামলায় তাঁর ছেলে সৌমিকের মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে। তাঁর নিজের হাত এবং অপর দুই ছেলের হাত-পায়ে জখম হয়।

ধোপাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফারুকনাজ বেগম বলেন, বর্তমানে ইউনিয়ন পরিষদের কোনো নির্বাচিত চেয়ারম্যান বা সদস্য নেই। এ কারণে উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করছেন এবং স্থানীয় পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের। তিনি বলেন, শিক্ষক হিসেবে এলাকায় প্রকৃত দরিদ্র কারা, তা নির্ধারণ করা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। সে কারণে স্থানীয় নেতৃত্বের সহযোগিতা নেওয়া হয়। ধোপাপাড়া ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আরজ আলী তাঁরই ছাত্র হওয়ায় তাঁর ওপর তিনি নির্ভর করেন। আরজ আলীকে জানানো হয়েছিল, ধোপাপাড়া ওয়ার্ডের ৯টি পাড়ার প্রতিটিতে দুটি করে কম্বল দেওয়ার জন্য দরিদ্র লোকজনের জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি আনতে। ফটোকপিতে স্বাক্ষর দিয়ে ১৮টি কম্বল তাঁকে দেওয়া হয়। পরে আনসার আলী এসে বলেন, শুধু আরজ আলীকে না দিয়ে অন্যদেরও যুক্ত করতে হবে। বিষয়টি আরজ আলীকে জানানো হলে তিনি কোনো সমস্যা হবে না বলে আশ্বস্ত করেন। রোববারের ওই ঘটনার পর সোমবার হঠাৎ সংঘর্ষের খবর শুনে তিনি লজ্জিত হন।

জিউপাড়া ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক হায়দার আলী বলেন, কম্বল বিতরণকে কেন্দ্র করে আরজ আলী ও আনসার আলীর সমর্থকদের মধ্যে মারামারি হয়। আনসার আলী ও তাঁর ছেলেরা হাসপাতালে ভর্তি হন। অপর পক্ষের আহত ব্যক্তিরাও প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

ধোপাপাড়া ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আরজ আলী বলেন, ওয়ার্ডের ৯টি পাড়ার জন্য ৯ জন সমন্বয়ক নির্ধারণ করা ছিল। তিনি প্রত্যেককে দুটি করে কম্বল বুঝিয়ে দেন। সোমবার সকালে ধোপাপাড়া বাজারে চা খাওয়ার সময় কম্বল বিতরণ নিয়ে কথা ওঠে। এ সময় প্রধান শিক্ষক ফারুকনাজ বেগম ফোন করে জানান, আনসার আলী তাঁর কাছে কম্বল পাঠাতে বলেছেন। তিনি শিক্ষককে জানান, সভাপতি হিসেবে বিষয়টি তিনি দেখবেন। তখন ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জয়নাল আবেদীন এসে তাঁকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন এবং আনসার আলীর দুই ছেলে তাঁকে কিলঘুষি মারেন। পরে তাঁর অনুসারীরা এসে পরিস্থিতি সামাল দেন। এরপর দুই পক্ষের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে তাঁর পক্ষের ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য বেলাল হোসেন, এমরান আলী, শামীম হোসেন এবং ওয়ার্ড কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক রনি ইসলাম আহত হন। তাঁরা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

এ বিষয়ে পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এখনো কোনো পক্ষ থানায় মামলা করতে আসেনি। অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে ব্যবস্থা করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

চুনারুঘাট (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি 
মাওলানা মুখলিছুর রহমান (চিতল মুখলিছ)। ছবি: সংগৃহীত
মাওলানা মুখলিছুর রহমান (চিতল মুখলিছ)। ছবি: সংগৃহীত

দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রকাশ্যে আপত্তিকর মন্তব্য করায় হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে মাওলানা মুখলিছুর রহমান (চিতল মুখলিছ) নামের এক ব্যক্তিকে গণপিটুনি দিয়েছে স্থানীয় জনতা। তিনি শেখ হাসিনাকে চিতল মাছ ও হিরো আলমকে নোয়া গাড়ি উপহার দিয়ে ‘চিতল মুখলিছ’ নামে পরিচিতি পান। মুখলিছুর রহমান পরে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) বেলা ২টার দিকে চুনারুঘাট পৌর শহরের থানা রোডে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুপুরে থানার গেট এলাকায় দাঁড়িয়ে মাওলানা মুখলিছুর রহমান বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ ও আপত্তিকর মন্তব্য করেন। বিষয়টি বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের কানে গেলে তাঁরা তাঁকে আটক করার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে তিনি পালানোর চেষ্টা করলে উত্তেজিত জনতা তাঁকে ধরে মারধর করে। পরে স্থানীয় মুরব্বিদের হস্তক্ষেপে মাওলানা মুখলিছুর রহমান প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

যুবদল নেতা সাদ্দাম হোসেন বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করায় জনতা ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁকে আটক করে গণপিটুনি দিয়েছে।

উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব মারুফ আহমেদ বলেন, থানার গেট এলাকায় বসে তিনি কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করছিলেন। বিষয়টি জানাজানি হলে উত্তেজিত জনতা তাঁকে কিছু মারধর করে। পরে উপস্থিত মুরব্বিদের হস্তক্ষেপে মাওলানা মুখলিছুর রহমান প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়। তবে পুলিশ পৌঁছানোর আগেই বিষয়টি মীমাংসা হয়ে যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদি হত্যা মামলা: সিবিউন-সঞ্জয়ের তৃতীয় দফায় রিমান্ড, ফয়সাল নামে আরও একজন রিমান্ডে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ০২
হাদি হত্যা মামলা: সিবিউন-সঞ্জয়ের তৃতীয় দফায় রিমান্ড, ফয়সাল নামে আরও একজন রিমান্ডে

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করে হত্যার মামলায় প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খানকে ভারতে পালাতে সাহায্যকারী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সিবিউন দিউ ও সঞ্জয় চিসিমকে তৃতীয় দফা রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারের পর অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার ফয়সাল নামে একজনকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জশিতা ইসলাম প্রত্যেককে তিন দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেন। এরপর গোয়েন্দা পুলিশ তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেন।

দুই আদিবাসী সিবিউন দিউ ও সঞ্জয় চিসিম এবং ফয়সালকে আজ কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। প্রত্যেকের সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়ার পৃথক দুটি আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ। শুনানি শেষে আদালত কারাগারে প্রত্যেকের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আদালতের অতিরিক্ত পিপি মুহাম্মদ শামসুদ্দোহা সুমন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

২৬ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফা রিমান্ড শেষে সিবিউন ও সঞ্জয়কে কারাগারে পাঠানো হয়। ২১ ডিসেম্বর দুজনকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। ১৮ ডিসেম্বর তাঁদের তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।

এর আগে ময়মনসিংহের ধোবাউড়া ও হালুয়াঘাট থেকে এই দুজনকে আটক করে ডিবি পুলিশ।

সিবিউন ও সঞ্জয়ের রিমান্ড আবেদনে বলা হয়েছে, সীমান্তে পারাপারকারী চক্রের হোতা জনৈক ফিলিপ নামক ব্যক্তির অবস্থান শনাক্ত, গ্রেপ্তার, ফিলিপ ব্যতীত আর কারও সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কি না, ফিলিপের সঙ্গে কিলিং মিশনের কে বা কারা যোগাযোগ করেছে তা জানার জন্য, কিলিং মিশনের ইন্ধনদাতা এবং অর্থদাতাদের শনাক্ত করার জন্য সিবিউন দিউ ও সঞ্জয় চিসিমকে পুনরায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।

অন্যদিকে ফয়সালের রিমান্ড আবেদন থেকে জানা যায়, ১৬ ডিসেম্বর র‍্যাব-১১-এর একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নরসিংদী জেলার সদর থানাধীন তরুয়া এলাকার মোল্লার বাড়ির সামনে তরুয়ার বিলে অভিযান চালিয়ে ফয়সালকে আটক করে। অভিযানের সময় বিলের পানিতে ফেলে দেওয়া হাদি হত্যায় ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়। পরে তাঁকে অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।

তাঁর রিমান্ড আবেদনে বলা হয়েছে, হাদি হত্যা মামলা একটি চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলা। মামলার এজাহারনামীয় ও পলাতক আসামি ফয়সাল করিম মাসুদের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়ার তথ্য অনুযায়ী, আসামি ফয়সালের দেখানো মতে নরসিংদী সদরের তরোয়া বিল থেকে ১৬ ডিসেম্বর রাত ১১টার দিকে পিস্তল ও গুলি উদ্ধার করে। নরসিংদী সদর মডেল থানায় অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়।

তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, ফয়সালের তথ্যানুযায়ী উদ্ধার হওয়া অস্ত্র ও গুলি পল্টনে চাঞ্চল্যকর ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হয়েছে। অস্ত্রের উৎস ও সরবরাহকারী সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ, হত্যার মোটিভ উদ্ধার, ইন্ধনদাতাদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার, পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য ফয়সালকে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।

১২ ডিসেম্বর দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোডে বিজয়নগর এলাকায় রিকশায় করে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করা হয়। মোটরসাইকেল করে এসে রিকশার পাশ থেকে করা গুলিতে হাদি মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হন। ঘটনার পরপর তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নেওয়ার হলে সেখানে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর মারা যান হাদি।

১৪ ডিসেম্বর রাতে ফয়সালকে আসামি করে পল্টন থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন ইনকিলাব মঞ্চের যুগ্ম সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের। হাদির মৃত্যুর পর তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটি হত্যা মামলায় রূপ নেয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জাফলংয়ে বালুচাপায় শ্রমিকের মৃত্যু

গোয়াইনঘাট (সিলেট) প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলংয়ে নদীর পাড় থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সময় পাড় ধসে পড়ে এক বালুশ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোর ৬টার দিকে জাফলং চা-বাগানসংলগ্ন নদীর পাড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত বাচ্চু মিয়া (৫০) গোয়াইনঘাট উপজেলার নয়াবস্তি গ্রামের মৃত হাবিব মিয়ার ছেলে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, একদল শ্রমিক নদীর তীর থেকে বালু উত্তোলনের কাজ করছিল। এ সময় হঠাৎ বালুর একটি বড় অংশ ধসে পড়ে শ্রমিকদের ওপর। অন্য শ্রমিকেরা দ্রুত সরে যেতে পারলেও বাচ্চু মিয়া বালুর নিচে চাপা পড়ে গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান জানান, বালু উত্তোলনের সময় মাটি ধসে পড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চকরিয়ায় যুবকের লাশ মিলল বিলে, হত্যার অভিযোগ পরিবারের

চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি 
সাইফুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত
সাইফুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজারের চকরিয়ায় বিল থেকে সাইফুল ইসলাম (৩৩) নামের এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলার কাকারা ইউনিয়নের দরগা রাস্তার মাথায় সড়কের পাশের বিল থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়।

সাইফুল ইসলাম কাকারা ইউনিয়নের মাইজ কাকারার শাইরাবরপাড়া গ্রামের শাহ আলমের ছেলে।

সাইফুলের স্বজনদের অভিযোগ, জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে তাকে প্রতিপক্ষ একটি মামলায় আসামি করে। সোমবার রাতে গ্রেপ্তার করতে তাঁর বাড়িতে যায় পুলিশ। সাইফুলকে বাড়িতে না পেয়ে পুলিশ ফিরে যায়। এরপর হেলমেট পরিহিত একদল যুবক সাইফুলকে খুঁজতে শুরু করে। মূলত প্রতিপক্ষের লোকজন তাঁকে পরিকল্পিতভাবে মারধর ও শ্বাসরোধে হত্যা করেছে।

পুলিশ, স্থানীয় লোকজন ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, কাকারা দরগা রাস্তার মাথা এলাকায় প্রবাসী নুরুল ইসলাম সাড়ে ৭ শতক জমি কেনেন। ওই জমিতে সংস্কারকাজ চলছিল। গত শনিবার দুপুরে ফরিদুল ইসলাম, আমজাদ, সাদ্দামের নেতৃত্বে ২০-২১ জন নুরুল ইসলামের জমি দখল করতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। এতে বাধা দিলে নুরুল ইসলামের স্ত্রী জেসমিন আক্তারসহ পাঁচজন আহত হন।

সাইফুলের স্বজনদের অভিযোগ, এ ঘটনায় নুরুল ইসলামের স্ত্রী জেসমিন আক্তার বাদী হয়ে চকরিয়া থানায় মামলা করেন। ঘটনার বিষয়ে পুলিশকে তথ্য দেওয়ায় সাইফুলকেও ওই মামলায় আসামি করা হয়। সাইফুল ইসলামের বাড়ি বিরোধপূর্ণ জমির পাশে। সোমবার রাতে পুলিশ আসার খবর পেয়ে সাইফুল বাড়ি থেকে দৌড়ে পালিয়ে যান। পরে রাতেই বাড়ির পাশে বিলে তাঁর লাশ দেখতে পাওয়া যায়।

সাইফুল ইসলামের স্ত্রী রিনা আক্তার বলেন, বাড়িতে পুলিশ আসার খবর পেয়ে আমার স্বামী বাড়ির পেছন দিয়ে দৌড়ে চলে যান। এ ছাড়া হেলমেট পরিহিত একদল যুবক আমার স্বামীকে খোঁজাখুঁজি করে। পুলিশ বাড়িতে খোঁজাখুঁজি করে ফিরে যাওয়ায় সাইফুল বাড়িতে ফেরেনি। পরে সকালে বাড়ির কাছে বিলে তাঁর লাশ পাওয়া যায়। নুরুল ইসলামের লোকজন পরিকল্পিতভাবে তাঁকে হত্যা করেছে।

এ মামলার বাদী জেসমিন আক্তারের মোবাইল ফোন নম্বরে কল করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনির হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত শনিবার জমি নিয়ে দুই পক্ষের মারামারি হয়। এ ঘটনায় জেসমিন আক্তার বাদী হয়ে মামলা করেন। ওই মামলায় সাইফুল ৪ নম্বর আসামি। সাইফুল বাড়িতে অবস্থান করার খবর পেয়ে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করতে যায়। তাঁকে না পেয়ে পুলিশ থানায় ফিরে আসে। পরে সাইফুলের পরিবার থেকে তাঁর লাশ পাওয়ার খবর জানালে লাশ উদ্ধার করা হয়।’

ওসি আরও বলেন, সাইফুলের লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। শরীরে জখমের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তাঁর মৃত্যুর কারণ উদ্ঘাটনে তদন্ত চলছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত