Ajker Patrika

ভোটের পরিস্থিতি ভালো, আমরা পর্যবেক্ষণ করছি: শিবিরের ভিপি প্রার্থী

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৫: ০৭
জুবেরী ভবনের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ছাত্রশিবির-সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান জাহিদ। ছবি: আজকের পত্রিকা
জুবেরী ভবনের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ছাত্রশিবির-সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান জাহিদ। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাকসু নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবির-সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান জাহিদ ভোটের পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় জুবেরী ভবনের সামনে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভোটকেন্দ্রের অবস্থা এখন পর্যন্ত ভালো দেখছি। আমরা কারও প্রতি কোনো অভিযোগ দিচ্ছি না। তবে আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। কোনো অনিয়ম দেখলে আমরা সাথে সাথে নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করব।’

মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, ‘দীর্ঘ ৩৫ বছর পর এই নির্বাচন হচ্ছে। এটাকে দীর্ঘ সময় বন্ধ রেখে শিক্ষার্থীদের ভোটের আনন্দ থেকে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছিল। আজ ভোট দিয়ে যে আনন্দ পেয়েছি, তা আর জীবনে কখনো পাইনি।’

মোস্তাকুর রহমান আরও বলেন, ‘আমরা আশা করছি শিক্ষার্থীরা আমাদের ভোট দেবে। তারা আমাদের গ্রহণ করবে। তারা আমাদের নির্বাচিত করলে আমরা যে ইশতেহার দিয়েছি, সেটা বাস্তবায়ন করব।’ তিনি নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের প্রতি আহবান, তাঁরা যেন সারা দিন সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁরা যেন বিমাতাসুলভ আচরণ না করেন। ডাকসু ও জাকসুতে কিছু ত্রুটি সামনে এসেছে। সেটাও যেন এখানে না হয়।

জুবেরী ভবনের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ছাত্রশিবির-সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান জাহিদ। ছবি: আজকের পত্রিকা
জুবেরী ভবনের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ছাত্রশিবির-সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান জাহিদ। ছবি: আজকের পত্রিকা

এ সময় ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী শেখ নূর উদ্দিন আবিরের মতো তিনিও ক্যাম্পাসে বহিরাগত না ঢোকার ব্যাপারে নিজের অবস্থান জানান। জাহিদ বলেন, ‘আমাদের অবস্থানও একই। ক্যাম্পাসে যেন কোনোভাবেই বহিরাগত না প্রবেশ করে। ভোট গ্রহণ শেষে যেন সুন্দরভাবে ফল প্রকাশ করা হয়।’

এর আগে মোস্তাকুর রহমান জাহিদ জুবেরী ভবনে নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ফিনল্যান্ডের হেলসিঙ্কি বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তি

শিক্ষা ডেস্ক
ফিনল্যান্ডের হেলসিঙ্কি বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তি

উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন দেখা মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য ফিনল্যান্ডের দ্বার খুলেছে। দেশটির অন্যতম শীর্ষ বিদ্যাপীঠ ইউনিভার্সিটি অব হেলসিঙ্কি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য ঘোষণা করেছে সম্মানজনক বৃত্তি কর্মসূচি। বিশ্বের যেকোনো দেশের শিক্ষার্থীরা দেশটির বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ পাবেন। বিশেষ করে যেসব শিক্ষার্থী আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন পূরণ করতে পারছেন না, তাঁদের জন্য এই বৃত্তি হতে পারে ইউরোপে পড়াশোনার এক স্বর্ণালী সুযোগ।

ইউনিভার্সিটি অব হেলসিঙ্কি ফিনল্যান্ডের সবচেয়ে প্রাচীন ও মর্যাদাপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি। ১৬৪০ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। আন্তর্জাতিক র‍্যাঙ্কিংয়ে নিয়মিতভাবে শীর্ষস্থান দখল করা এ বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা, উদ্ভাবন ও মানসম্মত শিক্ষার জন্য বিশ্বজুড়ে সুপরিচিত।

সুযোগ-সুবিধা: ফিনল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব হেলসিঙ্কিতে পড়ার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে এই বৃত্তি কর্মসূচির আওতায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য বড় ধরনের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এই বৃত্তির আওতায় শিক্ষার্থীরা তাঁদের টিউশন ফির ৫০ বা ১০০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় পেতে পারেন। সাধারণত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক টিউশন ফি ১৩ হাজার থেকে ১৮ হাজার ইউরোর মধ্যে হয়ে থাকে, যা এই স্কলারশিপের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে। ফলে শিক্ষার্থীদের জন্য ফিনল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা অর্জনের পথ আরও সহজ ও সাশ্রয়ী হবে।

আবেদনের যোগ্যতা: বৃত্তিটির জন্য আবেদনে আগ্রহী প্রার্থীদের কিছু নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করতে হবে। প্রার্থীদের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ইউরোপীয় অর্থনৈতিক অঞ্চলের বাইরের দেশের শিক্ষার্থী হতে হবে। আবেদনকারীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো মাস্টার্স প্রোগ্রামে ভর্তিযোগ্য হতে হবে। প্রার্থীকে ফিনল্যান্ডে প্রবেশের জন্য প্রয়োজনীয় স্টুডেন্ট ভিসা ও রেসিডেন্স পারমিটের শর্তও পূরণ করতে হবে। প্রার্থীর অবশ্যই ভালো ফলসহ স্নাতক (ব্যাচেলর) ডিগ্রি থাকতে হবে। এ ছাড়া যাঁদের মাতৃভাষা ইংরেজি নয়, তাঁদের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ইংরেজি ভাষা পরীক্ষার সনদ থাকতে হবে।

প্রয়োজনীয় তথ্য: ইউনিভার্সিটি অব হেলসিঙ্কির স্কলারশিপে আবেদনের জন্য প্রার্থীদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র জমা দিতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণ হিসেবে ডিগ্রির ট্রান্সক্রিপ্ট, ইংরেজি ভাষায় দক্ষতার সনদ (টোয়েফল বা আইইএলটিএস), পরিচয় নিশ্চিত করতে পাসপোর্টের কপি এবং নিজের শিক্ষাগত ও অভিজ্ঞতার বিস্তারিত তুলে ধরতে একটি হালনাগাদ জীবনবৃত্তান্ত। এসব নথি সঠিক ও সম্পূর্ণভাবে জমা দিয়ে আবেদনপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।

অধ্যয়নের ক্ষেত্রগুলো: বিজ্ঞান অনুষদ, জীববিজ্ঞান ও পরিবেশ বিজ্ঞান, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, মানবিক ও ভাষাবিজ্ঞান, আইন অনুষদ, শিক্ষা ও মনোবিজ্ঞান, কৃষি ও বনবিদ্যা ও চিকিৎসাবিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিজ্ঞান অনুষদ। প্রতিটি অনুষদের অধীনে রয়েছে অন্তত ৫-৭টি বিভাগ। বৃত্তির শর্ত ও শিক্ষার্থীদের আগ্রহ অনুযায়ী নিজের পছন্দের অনুষদ ও বিভাগ বেছে নেওয়া যাবে।

আবেদনের পদ্ধতি: আগ্রহী শিক্ষার্থীরা এই লিংকে গিয়ে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।

আবেদনের শেষ সময়: ১৬ জানুয়ারি, ২০২৬

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠিত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

রাজধানীর বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে শনিবার (৬ ডিসেম্বর) অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন ২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ প্রধান অতিথি হিসেবে সমাবর্তন উদ্বোধন করেন। তিনি রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধিত্ব করে গ্র্যাজুয়েট ও মাস্টার্স ডিগ্রি প্রদান করেন।

সমাবর্তনে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ড. আ ন ম এহসানুল হক মিলন। বিশেষ অতিথি ছিলেন ইউজিসি সদস্য ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। এ ছাড়া বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান এম শামসুল আলম লিটন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে অভিভাবক, শিক্ষাবিদ, লেখক, সাংবাদিকসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউজিসি চেয়ারম্যান গ্র্যাজুয়েটদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, জুলাই আন্দোলনের আত্মত্যাগ নতুন বাংলাদেশের পথ তৈরি করেছে। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব জ্ঞানচর্চা ও উদ্ভাবনকে এগিয়ে নেওয়া, যা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সমন্বিত প্রচেষ্টায় সম্ভব।

সমাবর্তন বক্তা ড. মিলন নব-গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশে বলেন, গ্র্যাজুয়েশন শেষ নয়, বরং নতুন যাত্রার শুরু। দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বে টিকে থাকতে হলে দক্ষতা, অধ্যবসায় ও মানিয়ে নেওয়ার সক্ষমতা অর্জন জরুরি।

ইউজিসি সদস্য ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, অতীশ দীপঙ্করের আদর্শ অনুসরণ করে এই বিশ্ববিদ্যালয় ভবিষ্যতের উপযোগী নাগরিক তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষম কারিকুলামের ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।

বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান শামসুল আলম লিটন বলেন, দেশে উচ্চশিক্ষিত বেকারের সংখ্যা ৪০ লাখ হলেও অতীশ দীপঙ্কর বিশ্ববিদ্যালয় যুগোপযোগী শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। এ জন্য স্কিলস ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট (এসডিআই) প্রতিষ্ঠা করে শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল দক্ষতা ও ভোকেশনাল অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করা হচ্ছে।

এবারের সমাবর্তনে মোট ২ হাজার ৩২৬ জন শিক্ষার্থীকে গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি প্রদান করা হয়। তাঁদের মধ্যে ২৭ জন শিক্ষার্থীকে বিশেষ অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। এর মধ্যে ছয়জন চ্যান্সেলরস অ্যাওয়ার্ড, পাঁচজন বিওটি চেয়ারম্যানস অ্যাওয়ার্ড এবং ১৬ জন শিক্ষার্থীকে দেওয়া হয় ভাইস চ্যান্সেলরস অ্যাওয়ার্ড। ইউজিসির চেয়ারম্যান শিক্ষার্থীদের হাতে সার্টিফিকেট ও মেডেল তুলে দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

স্বামীর পর স্ত্রীও পেলেন আচার্য স্বর্ণপদক

ইলিয়াস শান্ত, ঢাকা
আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ০৮
আচার্য স্বর্ণপদক জয়ী উম্মে জান্নাত তাপসী ও তাঁর স্বামী মো. তৌহিদ আনোয়ার
আচার্য স্বর্ণপদক জয়ী উম্মে জান্নাত তাপসী ও তাঁর স্বামী মো. তৌহিদ আনোয়ার

একই বিশ্ববিদ্যালয়, একই বিভাগ এবং একই সর্বোচ্চ সম্মান– স্বামী-স্ত্রী দুজনের হাতেই এখন আচার্য স্বর্ণপদক। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এমন কীর্তি এবারই প্রথম। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ১৭তম সমাবর্তনে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তরে সিজিপিএ ৪-এর মধ্যে ৪ পেয়ে আচার্য স্বর্ণপদক অর্জন করেছেন উম্মে জান্নাত তাপসী। এর আগে ২০২৩ সালের ১৫তম সমাবর্তনে একই পদক পেয়েছিলেন তাঁর স্বামী মো. তৌহিদ আনোয়ার। বর্তমানে দুজনই ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত।

২০২৪ সালের স্প্রিং সেমিস্টারে তাপসীর স্নাতকোত্তরের যাত্রা শুরু হয়। কোনো বিরতি না নিয়ে দুই বছরের কোর্স দেড় বছরের মধ্যেই শেষ করেন তিনি। প্রতিটি সেমিস্টারে তাঁর সিজিপিএ ছিল ৪-এর মধ্যে ৪। বেশির ভাগ কোর্সে ৯৫-এর ওপরে নম্বর তুলেছেন। পুরো স্নাতকোত্তর করেছেন শতভাগ বৃত্তি নিয়ে।

সময়ের আগে ডিগ্রি সম্পন্ন করতে প্রতি সেমিস্টারে তাঁকে বেশি কোর্স নিতে হয়েছে। প্রথম সেমিস্টার থেকে থিসিসের কাজ শুরু করেন। একসঙ্গে কোর্সওয়ার্ক, থিসিস এবং চাকরির চাপ সামলেছেন তিনি। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস নিয়েছেন। নিজের স্নাতকোত্তরের ক্লাস করেছেন সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। অনেক রাত পর্যন্ত পড়াশোনা ও কাজ করতে হয়েছে তাঁকে। সেই দিনগুলো পার করা মোটেও সহজ ছিল না। তবে সময় ব্যবস্থাপনাই ছিল তাঁর সবচেয়ে বড় শক্তি। সপ্তাহের প্রতিদিন ক্লাস, পড়াশোনা ও অফিসের কাজ– সবকিছুই ছিল তাঁর নির্দিষ্ট সময়সূচিতে বাঁধা।

তাপসী কখনো ক্লাস মিস করেননি। ক্লাসে শেখা বিষয়গুলো দ্রুত নিজের মতো করে পড়ে নিতেন। অফিসের ফাঁকে ফাঁকেও পড়াশোনা করতেন। অনলাইন রিসোর্স ব্যবহার করে বিষয়গুলো আরও গভীরভাবে বুঝতেন। প্রতিদিনের সময় সর্বোচ্চ কাজে লাগানোই ছিল তাঁর মূল কৌশল।

তাপসীর ভাষায়, সিএসই বিভাগের শিক্ষকেরা অত্যন্ত সহায়ক এবং শিক্ষার্থীবান্ধব। যেকোনো সমস্যায় তাঁরা তাৎক্ষণিক সাহায্য করেছেন। পরিবারও ছিল তাঁর শক্তির জায়গা। বিশেষ করে স্বামী তৌহিদ আনোয়ার ছিলেন সবচেয়ে বড় ভরসা। পরীক্ষার আগে তিনি যেন নিশ্চিন্তে পড়তে পারেন, সেই পরিবেশ তৈরি করেছেন তিনি। মানসিকভাবেও সব সময় সাহস ও অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। বাবা-মা ও ছোট বোনের সমর্থনও তাঁকে শক্তি জুগিয়েছে।

আচার্য স্বর্ণপদক পাওয়ার ই-মেইল পেয়ে তাপসী প্রথমে জানান তাঁর স্বামীকে। পরদিন ই-মেইলটি প্রিন্ট করে বাবা-মা ও ছোট বোনকে পড়ে শোনান। ছোট বোন তো আনন্দে কেঁদেই ফেলেন। তাপসী জানান, পরিবারকে আনন্দ দিতে পারাটাই আমার জন্য সবচেয়ে বড় অর্জন।

তাপসী
তাপসী

তাপসীর স্বামী মো. তৌহিদ আনোয়ার বর্তমানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র লেকচারার হিসেবে কাজ করছেন। তিনি একই বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। ভালো ফলের কারণে ২০১৯ সালে ব্র্যাকে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন তিনি। ২০২১ সালে স্নাতকোত্তর শুরু করে দুই বছরে ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। ২০২৩ সালে ১৫তম সমাবর্তনে পান আচার্য স্বর্ণপদক এবং ছিলেন ভ্যালেডিক্টোরিয়ানও (স্নাতক সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান বিদায়ী বক্তা)।

উম্মে জান্নাত তাপসীর জন্ম ও বেড়ে ওঠা ঢাকায়। গ্রামের বাড়ি জামালপুরে। প্রতি বছর পরিবারসহ সেখানে বেড়াতে যান। দাদার বাড়ির প্রতি তাঁর রয়েছে আলাদা টান। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক সম্পন্ন করেছেন ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে। দুটোতেই পেয়েছেন জিপিএ–৫। বাবা মো. শফিকুল ইসলাম ব্যবসায়ী, মা তাইয়েবা বেগম গৃহিণী। দুই বোনের মধ্যে তিনি বড়।

২০২০ সালের ব্র্যাকের সিএসই বিভাগে স্নাতকে ভর্তি হন। ২০২৩ সালের ফল সেমিস্টারে ৩.৯৬ সিজিপিএ নিয়ে সর্বোচ্চ সম্মানসহ গ্র্যাজুয়েশন শেষ করেন। তখনো পড়াশোনা করেছেন বৃত্তি নিয়ে। আকর্ষণীয় ফলাফলের কারণে তাপসী সিএসই বিভাগেই লেকচারার হওয়ার সুযোগ পান।

IMG_7326

ছোটবেলায় তাঁর স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার। তবে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জীববিজ্ঞানে আগ্রহ কমে যায়। অন্যদিকে গণিতে ভালো করা এবং প্রযুক্তির প্রতি কৌতূহল তাঁকে সিএসইতে টেনে নেয়। স্নাতকোত্তর শেষের পর তাঁর লক্ষ্য এখন পিএইচডি করা। গবেষণায় নিজের ভবিষ্যৎ দেখছেন তিনি।

তাপসীর মতে, দেশে সিএসই গ্র্যাজুয়েটদের জন্য সুযোগ অনেক। সফটওয়্যার খাতে অগ্রগতি চোখে পড়লেও হার্ডওয়্যার খাত এখনো পিছিয়ে। শিক্ষার্থীরা যদি দ্বিতীয় বা তৃতীয় বর্ষ থেকেই নিজের আগ্রহের ক্ষেত্র ঠিক করে স্কিল ডেভেলপ করতে পারে, তাহলে চাকরির বাজারে তাঁরা এগিয়ে থাকবেন।

নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তাপসী বলেন, শুরু থেকে প্রোগ্রামিংয়ের বুনিয়াদ শক্ত করতে হবে। নিয়মিত কোডিং অনুশীলন করতে হবে। সমসাময়িক প্রযুক্তির সঙ্গে আপডেট থাকতে হবে। আগ্রহের ক্ষেত্র ঠিক করে দুই-তিনটি নতুন টুলসে দক্ষতা অর্জনের ওপর জোর দিতে হবে। এরপর দক্ষতা প্রয়োগের কাজ করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য অস্ট্রিয়ায় টিউশন ফি নেই

ক্যাম্পাস ডেস্ক 
আপডেট : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ২৯
প্যারিস লদরন ইউনিভার্সিটি অব সালজবুর্গে শাহনীরা আলম স্বজনী
প্যারিস লদরন ইউনিভার্সিটি অব সালজবুর্গে শাহনীরা আলম স্বজনী

মধ্য ইউরোপের একটি দেশ অস্ট্রিয়া। পাহাড়, নদী, বন ও প্রকৃতির মিশ্রণের এ দেশে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে বিশ্বমানের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়। এগুলোর মধ্যে অন্যতম প্যারিস লদরন ইউনিভার্সিটি অব সালজবুর্গ। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন, কালচার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন বিষয়ে স্নাতকোত্তর করছেন বাংলাদেশের মেয়ে শাহনীরা আলম স্বজনী।

দেশে শাহনীরা আলম স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিষয়ে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। পরে প্রায় সাত বছর দেশে বিভিন্ন গণমাধ্যম পেশায় যুক্ত ছিলেন। বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে কাজের বেশ অভিজ্ঞতাও রয়েছে তাঁর। বিদেশে পড়াশোনার স্বপ্ন আর ভ্রমণে আগ্রহের কারণেই তিনি অস্ট্রিয়াকে বেছে নেন।

পছন্দের বিষয়ের খোঁজখবর

বিদেশে পড়াশোনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সবচেয়ে বড় উদ্বেগ হলো টিউশন ফি। শাহনীরারও তা ছিল। ইউরোপের বিভিন্ন দেশের খোঁজ নেওয়ার পর তিনি দেখেন, ফি অনেক সময় পড়াশোনার পথে বড় বাধা। তাই তিনি খোঁজখবর নেওয়ার একপর্যায়ে জানতে পারেন, অস্ট্রিয়ার প্রায় সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য টিউশন ফি নেই। শুধু বাংলাদেশ নয়, ইউরোপের বাইরের কিছু দেশও এই সুবিধা পাচ্ছে। এরপর তিনি নিজের পছন্দের বিষয় খুঁজতে থাকেন এবং ভর্তি হন।

আবেদনপ্রক্রিয়া ও প্রয়োজনীয় নথিপত্র

অস্ট্রিয়ার আবেদনপ্রক্রিয়া কিছুটা আলাদা। সাধারণত বাংলাদেশে সার্টিফিকেট বা ট্রান্সক্রিপ্ট সত্যায়িত করলেই চলে। কিন্তু অস্ট্রিয়ার ক্ষেত্রে, স্নাতকের সার্টিফিকেট ও ট্রান্সক্রিপ্টকে অস্ট্রিয়ার এম্বাসি থেকে সত্যায়িত করতে হয়। বাংলাদেশে অবস্থিত অস্ট্রিয়ার কনসুলেট অফিসে এই কাজ করা যায়। খরচ প্রায় ৭৫ হাজার টাকা এবং সময় লাগে আড়াই থেকে তিন মাস।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

  • পাসপোর্টের কপি
  • অস্ট্রিয়া থেকে সত্যায়িত সার্টিফিকেট ও ট্রান্সক্রিপ্ট
  • ভাষাগত দক্ষতার প্রমাণ
  • মোটিভেশন লেটার
  • রিকমেন্ডেশন লেটার

অস্ট্রিয়ার বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে দুটি ইনটেক থাকে—সামার ও উইন্টার। স্নাতকোত্তরে পড়তে চাইলে আইইএলটিএস স্কোর কমপক্ষে ৬.৫ থাকা আবশ্যক। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ৭ পর্যন্ত স্কোর চায়। আবেদন সাধারণত অনলাইনে করা যায়, কিছু ক্ষেত্রে ডকুমেন্ট কুরিয়ারে পাঠাতে হয়।

শাহনীরার বিষয়

দেশে সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করায় তিনি এই বিষয়ে আগ্রহী। তিনি বলেন, ‘প্যারিস লদরন ইউনিভার্সিটি অব সালজবুর্গে যখন বিষয়টি দেখি এবং তাদের কারিকুলাম পর্যালোচনা করি, তখন থেকে আমার আগ্রহ তৈরি হয়। অস্ট্রিয়ায় মাস্টার্স সম্পন্ন করতে হলে ব্যাচেলরের বিষয় সম্পর্কিত থাকা জরুরি।’

ভাষা দক্ষতায় গুরুত্ব

অস্ট্রিয়ার রাষ্ট্রভাষা জার্মান। দীর্ঘ মেয়াদে এখানে অবস্থান করতে হলে জার্মান ভাষায় দক্ষ হওয়া অপরিহার্য। তবে ইংরেজি দক্ষতা থাকলেও দৈনন্দিন জীবন এবং চাকরির ক্ষেত্রে সেটি পর্যাপ্ত নয়।

বাসাভাড়া ও দৈনন্দিন খরচ

শাহনীরা জানালেন, দৈনন্দিন জীবনযাত্রার খরচ নির্ভর করে আপনি কোন শহরে থাকেন, তার ওপর। সালজবুর্গে গড়ে বাসাভাড়া ২৫০ থেকে ৩৫০ ইউরো; ইনস্যুরেন্স ৮০ ইউরো; পরিবহন ২৫ থেকে ৩৫ ইউরো; খাবার খরচ ৫০ থেকে ১০০ ইউরো।

পার্টটাইম কাজের সুযোগ

শিক্ষার্থীদের এখানে সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা কাজ করার সুযোগ রয়েছে। তবে জার্মান ভাষায় যদি আপনি দক্ষ হন, তাহলে কাজের সুযোগ আরও ভালো। রেস্টুরেন্ট বা অন্যান্য দক্ষতা থাকলেও কাজ পাওয়া সম্ভব।

পড়াশোনার পর কাজ ও স্থায়ী বসবাস

শাহনীরা আলম স্বজনী বলেন, অস্ট্রিয়ায় নির্দিষ্ট সময় থাকার পর কিছু শর্ত পূরণ করে স্থায়ী বসবাস বা নাগরিকত্ব পাওয়া সম্ভব।

শাহনীরা আলমের পরামর্শ হলো, বাংলাদেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অস্ট্রিয়ায় স্নাতকোত্তর করা সম্ভব নয়। তাই প্রথমে দেখুন আপনার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আবেদন করার সুযোগ আছে কি না। যাঁরা দীর্ঘ মেয়াদে কাজ কিংবা বসবাস করতে চান, তাঁদের জার্মান ভাষায় অবশ্যই দক্ষ হতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত