Ajker Patrika

২৫ বছরেও হয়নি সংস্কার, চলাচলে চরম ভোগান্তি

রাকিবুল ইসলাম, গাংনী (মেহেরপুর) 
একসময় এই সড়ক দিয়ে মানুষের যাতায়াত ছিল নিয়মিত। বর্তমানে এটি এতটাই জরাজীর্ণ যে লোকজন বিকল্প পথে চলাচল করে। ছবি: আজকের পত্রিকা
একসময় এই সড়ক দিয়ে মানুষের যাতায়াত ছিল নিয়মিত। বর্তমানে এটি এতটাই জরাজীর্ণ যে লোকজন বিকল্প পথে চলাচল করে। ছবি: আজকের পত্রিকা

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার দেবীপুর থেকে ভরাটের সড়কটির বেহাল দশা দীর্ঘদিনের। প্রায় ২৫ বছর ধরে কোনো সংস্কার না হওয়ায় সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে দেবীপুর ও ভরাট গ্রামের সাধারণ মানুষ ও চাষিরা।

বৃষ্টির মৌসুমে দুর্ভোগ আরও তীব্র হয়। কাদা ও গর্তে ভরা এই সড়কে হেঁটে চলাও কঠিন হয়ে পড়ে। যাতায়াতে বিকল্প পথ না থাকায় অনেক দূর ঘুরে যেতে হয়। স্থানীয়দের ভাষ্য, সড়কটি চালু হলে দুই গ্রামের মধ্যে সহজ যোগাযোগ স্থাপন হবে এবং কৃষিপণ্য পরিবহনও হবে সাশ্রয়ী ও ঝুঁকিমুক্ত।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, একসময় এই সড়কই ছিল দুই গ্রামের প্রধান চলাচলের পথ। প্রায় ২৫ বছর আগে আংশিক হেয়ারিং বন্ড দেওয়া হলেও পরে কাজ আর এগোয়নি। কোথাও কোথাও ইটের চিহ্নও দেখা যায় না। বামন্দী ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য জামাল উদ্দিন বলেন, ‘রাস্তাটি এমন অবস্থায় আছে যে মানুষ যানবাহন নিয়ে চলতে চায় না। দুর্ঘটনার আশঙ্কাও থাকে সব সময়।’

স্থানীয় কৃষক মিরাজ আলী বলেন, ‘রাস্তাটি একেবারেই চলার মতো না। ফসল নিয়ে গাড়ি চলাচলের সময় সব সময় ভয়ে থাকি—না জানি কখন গাড়ি উল্টে যায়।’ অটোচালক শিহাব আলীর অভিযোগ, ‘রাস্তাটি এত খারাপ যে অটো, ভ্যান, মাইক্রো কোনো যানই চলতে পারে না। বাধ্য হয়ে অনেকটা ঘুরে যেতে হয়।’

ভ্যানচালক ইউসুফ আলী বলেন, ‘অনেক রাস্তায় কাজ হচ্ছে, কিন্তু এই রাস্তাটার দিকে কেউ তাকায় না। এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করা যায় না, তাই কেউ ভাড়াও দিতে চায় না।’ পথচারী ওবায়দুল হক জানান, ‘রাস্তায় এত বড় গর্ত যে হেঁটেও চলা যায় না ঠিকমতো। যানবাহনচালকেরা এ রাস্তায় যেতে চায় না।’

জানতে চাইলে তেঁতুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ওহাব আলী বলেন, ‘মানুষ দীর্ঘদিন ধরে কষ্ট করছে। দ্রুত রাস্তাটি সংস্কারের ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।’ এ বিষয়ে গাংনী উপজেলা প্রকৌশলী ফয়সাল হোসেন বলেন, ‘রাস্তাটির উন্নয়নের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নির্মাণাধীন ভবনের পাঁচতলা থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি  
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

গাজীপুরের শ্রীপুরে বহুতল ভবনে নির্মাণকাজ করার সময় পাঁচতলা থেকে পড়ে মো. রাসেল নামের এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। আজ রোববার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। এর আগে গতকাল শনিবার বিকেলে পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বেড়াইদেরচালা গ্রামের জামিয়া আহমাদিয়া এতিমখানা মাদ্রাসায় এই ঘটনা ঘটে।

নিহত নির্মাণশ্রমিক মো. রাসেল মিয়া (২৫) কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার শালুয়াদী গ্রামের মো. দুলাল মিয়ার ছেলে। তিনি শ্রীপুর পৌরসভার মাওনা চৌরাস্তা এলাকার ২ নম্বর সিঅ্যান্ডবি এলাকায় ভাড়া থেকে নির্মাণশ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন।

নিহত ব্যক্তির বাবা দুলাল মিয়া বলেন, ‘ঠিকাদার রফিকের অধীনে মাদ্রাসা ভবনের নির্মাণকাজ করছিল আমার ছেলেসহ ছয়জন। কাজের সময় হঠাৎ বাঁশের মাচা ভেঙে পাঁচতলা ভবন থেকে নিচে পড়ে যায় রাসেল। সঙ্গে থাকা অন্য ব্যক্তিরা তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই তার মৃত্যু হয়।’

ঠিকাদার মো. রফিক বলেন, ‘বহুতল ভবনের নির্মাণকাজ আমার তত্ত্বাবধানে হচ্ছে। ছয়জন নির্মাণশ্রমিক কাজ করছিল। হঠাৎ একজন মাচা ভেঙে নিচে পড়ে গুরুতর আহত হয়। হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করি। পরে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।’

জামিয়া আহমাদিয়া এতিমখানা মাদ্রাসার মুহতামিম মুফতি হুসাইন আহমাদ বলেন, কাজ করার সময় একজন শ্রমিক নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন। খবর শুনে ছাত্র-শিক্ষকেরা এগিয়ে যান। তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।

শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রবিউল ইসলাম মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ইতিমধ্যে নিহত ব্যক্তির স্বজনেরা থানায় এসেছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যোগাযোগ করা হয়েছে। সেখানে ময়নাতদন্তের জন্য বলা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

লক্ষ্মীপুরে কবরস্থান থেকে ৫ রাইফেল ও একটি এলজি উদ্ধার

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
উদ্ধার করা অস্ত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা
উদ্ধার করা অস্ত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা

লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জের বাঁধের পোল এলাকার একটি কবরস্থান থেকে পাঁচটি রাইফেল ও একটি এলজি উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার সকালে চন্দ্রগঞ্জ থানা-পুলিশ অভিযান চালিয়ে এসব অস্ত্র উদ্ধার করে। তবে কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।

পুলিশের ধারণা, অস্ত্র ব্যবসায়ীরা এগুলো বিক্রির উদ্দেশ্যে চন্দ্রগঞ্জ-বেগমগঞ্জ সীমান্তসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছিল। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা অস্ত্র ফেলে পালিয়ে যায়।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের তথ্যমতে, এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র অস্ত্র কেনাবেচা করছিল। সম্প্রতি চন্দ্রগঞ্জ পশ্চিম বাজারে একটি অস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধান পায় পুলিশ। সেখানে ডিবি পুলিশের অভিযানে একটি পিস্তল ও বিপুল পরিমাণ অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় এবারের অভিযান। তবে পুলিশ অভিযানে গেলে সন্ত্রাসীরা অস্ত্রগুলো কবরস্থানে রেখে পালিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে অস্ত্রগুলো জব্দ করা হয়।

চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ফয়েজুল আজীম নোমান বলেন, ‘ঘটনাস্থল থেকে পাঁচটি রাইফেল ও একটি এলজি উদ্ধার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। অস্ত্রগুলো একেবারে নতুন। এই ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যশোরে মধ্যরাতে মাদক নিয়ে দ্বন্দ্বেই খুন হন তানভীর, চাকুসহ আটক দুই

­যশোর প্রতিনিধি
আটক দুজনকে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
আটক দুজনকে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

যশোরে মধ্যরাতে তানভীর হত্যার ঘটনায় দুই যুবককে আটক করেছে কোতোয়ালি থানা-পুলিশ। একই সঙ্গে উদ্ধার করা হয়েছে হত্যায় ব্যবহৃত একটি চাকু। মধ্যরাতে আনসার ক্যাম্প এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে মাদক বেচাকেনা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে খুন হয়েছেন তানভীর। এর আগে শনিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে শহরের বেজপাড়া তালতলা এলাকায় রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তার পাশ থেকে উদ্ধার করা হয় তানভীরকে। পরে তাঁকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহত তানভীর শংকরপুর হাজারিগেট এলাকার মিন্টুর ছেলে।

যশোর কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কাজী বাবুল হোসেন জানান, ‘ঘটনার পর রাতেই কোতোয়ালি থানা-পুলিশ ও ডিবি পুলিশের টিম অভিযানে নামে। তারা রক্তের ছাপ পর্যবেক্ষণ করে আনসার ক্যাম্প এলাকার সোনা মিয়াকে আটক করে। পরে তাঁর বাড়ির ছাদ থেকে একটি বার্মিজ চাকু উদ্ধার করে পুলিশ। আটক করা হয় একই এলাকার সাক্ষরকে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

এর আগে শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে যশোর শহরের শংকরপুর বেলের মাঠ এলাকায় যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে পাঁচটি বোমা ও একটি চাকুসহ নাঈম ও সাজু নামের দুই যুবককে আটক করে। এ সময় তানভীর ঘটনাস্থল থেকে পালিয়েছিলেন। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে সড়কের পাশে পড়ে থাকতে দেখে যশোর ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে কোতোয়ালি মডেল থানা-পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে তাঁর পকেট তল্লাশি করে ৬১টি ইয়াবা উদ্ধার করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাটহাজারীতে সড়ক দুর্ঘটনায় স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা নিহত

হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি 
নিহত এমরান চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত
নিহত এমরান চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে সড়ক দুর্ঘটনায় উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ও হাটহাজারী ইটভাটা সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. এমরান চৌধুরী (৩৮) নিহত হয়েছেন। শনিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের চারিয়া বুড়িপুকুরপাড় মসজিদ-সংলগ্ন হাটহাজারী-নাজিরহাট আঞ্চলিক মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় আরিফ নামের আরও একজন গুরুতর আহত হন।

দুই সন্তানের বাবা এমরান চৌধুরী ওই ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের চারিয়া সিকদারপাড়া মোয়াজ্জেম বাড়ির মৃত বাদশা সারাংয়ের ছেলে।

স্থানীয় লোকজন জানায়, গভীর রাতে এমরান চৌধুরী ও তাঁর বাড়ির মুছার ছেলে আরিফ বুড়িপুকুরপাড় এলাকার একটি চায়ের দোকান থেকে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে পেছন দিক থেকে আসা বেপরোয়া গতির কাঠবোঝাই একটি চাঁদের গাড়ি তাঁদের মোটরসাইকেলে ধাক্কা দিলে দুজনই ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন। মোটরসাইকেলটিও চাঁদের গাড়ির নিচে চাপা পড়ে।

আহত দুজনকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাটহাজারীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়ার পর চিকিৎসক এমরান চৌধুরীকে মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত আরিফকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী কামাল ও চারিয়া এলাকার আবদুল মতিন রুবেল জানান, আরিফ বর্তমানে চমেক হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত