মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি

একই গ্রামের হিন্দু ছেলের সঙ্গে মুসলিম মেয়ের বন্ধুত্ব। একপর্যায়ে পালিয়ে বিয়ে। মুসলিম ধর্মাবলম্বী হয়ে অন্য ধর্মের ছেলেকে বিয়ে মেনে নেননি গ্রামের প্রভাবশালী মাতবরেরা। সালিস বসিয়ে সাজা দেওয়া হয় মেয়েকে, সঙ্গে বিয়েতে সাহায্য করার অভিযোগ এনে প্রতিবেশী চারজনকে করা হয় একঘরে। এরই মধ্যে ঘটনার এক যুগ পেরিয়ে গেছে, তবুও কাটেনি রেশ। একঘরে রয়েছে ওই চার পরিবার। তারা মানবেতর জীবন যাপন করছে। তবে ওই ছেলে ও মেয়ের পরিবারের ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা দেননি মাতবরেরা।
ঘটনাটি মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার দরগ্রাম ইউনিয়নের নওগাঁও গ্রামের। সমাজপতিদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ওই চার পরিবার সমাজের কারও সঙ্গে কথা বললে গুনতে হবে এক হাজার টাকা। এমনকি কারও বাড়ির দাওয়াতে যেতে পারবেন না তাঁরা।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, মিথ্যা অপবাদে দীর্ঘ ১২ বছর একঘরে রাখায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এখন সামাজিকভাবে নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাঁদের। ১২ বছর আগের পরিবারের ছোট ছেলে-মেয়েরা এখন বড় হয়েছে। একঘরে হয়ে থাকায় তাঁদের বিয়ে হচ্ছে না। এ বিষয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন জাফর আলী নামের এক ভুক্তভোগী।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালে নওগাঁও গ্রামের হিন্দুধর্মের এক ছেলের সঙ্গে মুসলিম মেয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ে করেন। ওই বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর তাঁদের গ্রামে ধরে এনে সালিস বসানো হয়। আব্দুর রাজ্জাক, আবু হোসেন, বাবু, শফিক মন্ডল, সাঈদ আলীসহ গ্রামের প্রভাবশালী মাতবরেরা সালিস বসান।
সালিসে মেয়েকে জুতা মারা হয়। তাঁদের সহযোগিতা করার অভিযোগ এনে ওই মেয়ের প্রতিবেশী কৃষক জাফর আলী, তাঁর ভাই সাদেক আলী ও আলম হোসেন এবং সাদেকের চাচা জিলাল উদ্দিনকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এমনকি সমাজের কারও সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলে এক হাজার টাকা জরিমানা, একঘরে থাকা চার পরিবারের বাড়িতে কেউ যেতে পারবেন না এবং তাঁরাও সমাজের কারও বাড়িতে যেতে পারবেন না—সালিসে এমন নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
এ ছাড়া গ্রামের মসজিদ, মাদ্রাসা ও ঈদগাহে কোনো অনুদান দিতে পারবেন না বলেও নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়।
এদিকে সালিস ডাকলে ওই হিন্দু ছেলে পালিয়ে যান। এরপর তাঁদের বিয়েও ভেঙে যায়।
একঘরে থাকা জাফর আলীর পঞ্চাশোর্ধ্ব স্ত্রী লিপি বেগম প্রায়ই ঘরের দরজার পাশে ভেজা চোখে বসে থাকেন। লিপি বেগমের পাশের ঘরে থাকা সাদেক আলীর স্ত্রী জাহানারা বেগমেরও একই অবস্থা। জাহানারা বেগম ঘরের জানালার সামনে দাঁড়িয়ে অপলক দৃষ্টিতে দেখেন রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করা মানুষদের।
এলাকার প্রভাবশালী একটি মহল তাঁদের একঘরে করে রাখায় প্রতিবেশী কারও সঙ্গে কথা বলতে পারেন না তাঁরা। মন চাইলেও যেতে পারেন না প্রতিবেশী কারও বাড়িতে। এ অবস্থায় পরিবারের কারও মৃত্যু হলে কবর কোথায় হবে, তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন সত্তোরর্ধ্ব নূরজাহানসহ একঘরে থাকা চার পরিবারের সদস্যরা।
সম্প্রতি নওগাঁও গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, গ্রামের পশ্চিমে দিকে একটি কাঁচা রাস্তার উত্তর পাশে পাশাপাশি জাফর ও তাঁর দুই ভাইয়ের বাড়ি। সেখান থেকে প্রায় ২০০ গজ পশ্চিমে জাফর আলীর কাকা জিলাল আলীর বাড়ি। বাড়ির নারী সদস্যদের একজন বাড়ির দরজার সামনে বসে আছেন, আরেকজন ঘরের জানালার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন; আর জিলাল আলীর স্ত্রী বাড়ির সামনে মুদিদোকান করছেন। পুরুষদের কেউ জমিতে কাজ করতে গেছেন। কেউ আছেন এলাকার বাইরে।
এ বিষয়ে একঘরে হয়ে থাকা জিলাল উদ্দিন বলেন, ‘এক যুগ ধরে আমার তিন ভাতিজার পরিবারসহ আমার পরিবারকে একঘরে করা হয়েছে। প্রভাবশালী মোড়লদের নিষেধাজ্ঞার কারণে ১২ বছর আগের ছোট মেয়েরা এখন বড় হলেও এলাকায় রেখে তাদের বিয়ে দিতে না পারা ও নানা সামাজিক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।’
জিলাল উদ্দিন আক্ষেপের সঙ্গে বলেন, ‘বড় মেয়েকে গ্রামে রেখে বিয়ে দিতে না পারায় মানিকগঞ্জে আমার এক আত্মীয়ের বাসায় রেখে বিয়ে দিয়েছি। আমি গরিব মানুষ অনেক টাকা খরচ হয়েছে। এখন ছোট মেয়েটা বড় হয়েছে, সে এখন অনার্সে পড়ছে। তাকে কীভাবে বিয়ে দেব চিন্তায় আছি। আমার ছেলেটা কারও বাড়িতে যেতে পারেন না, কারও সঙ্গে মিশতে পারেন না। আমি স্বাধীন দেশে বসবাস করে স্বাধীনভাবে চলতে পারছি না। স্বাধীনভাবে বাঁচতে চাই। আমি সরকারের হস্তক্ষেপ চাই।’
‘গ্রামের সালিস বিচারে মেয়েটিকে দোররা মারার ঘটনা আমি প্রতিবাদ করি। তাই আমাদের একঘরে করে রাখছে গ্রামের মাতবরেরা। গ্রামের কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে আমরা যেতে পারি না। মসজিদ, মাদ্রাসায় আমরা কিছু (অনুদান) দিতে পারি না। এটা আমাদের জন্য শুধু কষ্টের না, লজ্জারও।’ বলেন, একঘরে থাকা জাফর আলী।
জাফর আলীর স্ত্রী লিপি বেগম বলেন, ‘কোরবানির ঈদে মাদ্রাসার মাঠে কোরবানির গোশত আনতে গেলে আমাগো পোলাপানরে গোশত দ্যায় না। পোলাপান খালি হাতে ফিরে আসে, এগুলো দেখে আমাগো কষ্ট লাগে।’
‘আমাগো একঘরে রাখায় ইচ্ছে থাকলেও প্রতিবেশীর সঙ্গে কথা বলতে পারি না। মন ছুটলে যেতে পারি না নিজের প্রতিবেশীর বাড়িতে। এই অবস্থায় পরিবারের কারও মৃত্যু হলে কবর কোথায় হবে তা নিয়ে চিন্তায় আছি।’ বলেন, সত্তোরর্ধ্ব নূরজাহান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক প্রতিবেশী বলেন, ‘জাফর ও তাঁর ভাইয়েরা খেটে খাওয়া মানুষ। গ্রামের কেউ তাঁদের বাড়িতে কোনো অনুষ্ঠানে গেলে এক হাজার টাকা জরিমানা করা হবে বলে মাতবরেরা হুঁশিয়ার করে দেন। গ্রামের অনেকেই তাঁদের বাড়িতে যান না, তাঁরাও কারও বাড়িতে আসেন না।’
চার পরিবারেকে একঘরে রাখার কথা স্বীকার করে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আব্দুর হান্নান হানিফ বলেন, ‘বিষয়টি বেশ কয়েকবার মীমাংসা করে দেওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। ভুক্তভোগী ওই পরিবারের লোকজনদের মাতবরদের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা কেউ যাননি।’
তবে ওই পরিবারগুলোকে একঘরে করে রাখার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মাতবরেরা। এ ব্যাপারে সাবেক ইউপি সদস্য ও প্রধান অভিযুক্ত আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘চার পরিবারকে একঘরে রাখার কথা সত্য নয়। সমাজের লোকজনের সঙ্গে ওই পরিবারের সদস্য মেলামেশায় কোনো বিধিনিষেধ নেই।’ তবে তাদের ‘আচরণের কারণে’ সমাজের কিছু বিষয়ে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বলে স্বীকার করেন তিনি।
একঘরে করার বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন ইউএনও শান্তা রহমান। তিনি বলেন, ‘আগামী গণশুনানিতে ভুক্তভোগীসহ সংশ্লিষ্টদের ডেকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে। অভিযোগের বিষয়টি সত্য হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

একই গ্রামের হিন্দু ছেলের সঙ্গে মুসলিম মেয়ের বন্ধুত্ব। একপর্যায়ে পালিয়ে বিয়ে। মুসলিম ধর্মাবলম্বী হয়ে অন্য ধর্মের ছেলেকে বিয়ে মেনে নেননি গ্রামের প্রভাবশালী মাতবরেরা। সালিস বসিয়ে সাজা দেওয়া হয় মেয়েকে, সঙ্গে বিয়েতে সাহায্য করার অভিযোগ এনে প্রতিবেশী চারজনকে করা হয় একঘরে। এরই মধ্যে ঘটনার এক যুগ পেরিয়ে গেছে, তবুও কাটেনি রেশ। একঘরে রয়েছে ওই চার পরিবার। তারা মানবেতর জীবন যাপন করছে। তবে ওই ছেলে ও মেয়ের পরিবারের ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা দেননি মাতবরেরা।
ঘটনাটি মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার দরগ্রাম ইউনিয়নের নওগাঁও গ্রামের। সমাজপতিদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ওই চার পরিবার সমাজের কারও সঙ্গে কথা বললে গুনতে হবে এক হাজার টাকা। এমনকি কারও বাড়ির দাওয়াতে যেতে পারবেন না তাঁরা।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, মিথ্যা অপবাদে দীর্ঘ ১২ বছর একঘরে রাখায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এখন সামাজিকভাবে নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাঁদের। ১২ বছর আগের পরিবারের ছোট ছেলে-মেয়েরা এখন বড় হয়েছে। একঘরে হয়ে থাকায় তাঁদের বিয়ে হচ্ছে না। এ বিষয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন জাফর আলী নামের এক ভুক্তভোগী।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালে নওগাঁও গ্রামের হিন্দুধর্মের এক ছেলের সঙ্গে মুসলিম মেয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ে করেন। ওই বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর তাঁদের গ্রামে ধরে এনে সালিস বসানো হয়। আব্দুর রাজ্জাক, আবু হোসেন, বাবু, শফিক মন্ডল, সাঈদ আলীসহ গ্রামের প্রভাবশালী মাতবরেরা সালিস বসান।
সালিসে মেয়েকে জুতা মারা হয়। তাঁদের সহযোগিতা করার অভিযোগ এনে ওই মেয়ের প্রতিবেশী কৃষক জাফর আলী, তাঁর ভাই সাদেক আলী ও আলম হোসেন এবং সাদেকের চাচা জিলাল উদ্দিনকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এমনকি সমাজের কারও সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলে এক হাজার টাকা জরিমানা, একঘরে থাকা চার পরিবারের বাড়িতে কেউ যেতে পারবেন না এবং তাঁরাও সমাজের কারও বাড়িতে যেতে পারবেন না—সালিসে এমন নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
এ ছাড়া গ্রামের মসজিদ, মাদ্রাসা ও ঈদগাহে কোনো অনুদান দিতে পারবেন না বলেও নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়।
এদিকে সালিস ডাকলে ওই হিন্দু ছেলে পালিয়ে যান। এরপর তাঁদের বিয়েও ভেঙে যায়।
একঘরে থাকা জাফর আলীর পঞ্চাশোর্ধ্ব স্ত্রী লিপি বেগম প্রায়ই ঘরের দরজার পাশে ভেজা চোখে বসে থাকেন। লিপি বেগমের পাশের ঘরে থাকা সাদেক আলীর স্ত্রী জাহানারা বেগমেরও একই অবস্থা। জাহানারা বেগম ঘরের জানালার সামনে দাঁড়িয়ে অপলক দৃষ্টিতে দেখেন রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করা মানুষদের।
এলাকার প্রভাবশালী একটি মহল তাঁদের একঘরে করে রাখায় প্রতিবেশী কারও সঙ্গে কথা বলতে পারেন না তাঁরা। মন চাইলেও যেতে পারেন না প্রতিবেশী কারও বাড়িতে। এ অবস্থায় পরিবারের কারও মৃত্যু হলে কবর কোথায় হবে, তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন সত্তোরর্ধ্ব নূরজাহানসহ একঘরে থাকা চার পরিবারের সদস্যরা।
সম্প্রতি নওগাঁও গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, গ্রামের পশ্চিমে দিকে একটি কাঁচা রাস্তার উত্তর পাশে পাশাপাশি জাফর ও তাঁর দুই ভাইয়ের বাড়ি। সেখান থেকে প্রায় ২০০ গজ পশ্চিমে জাফর আলীর কাকা জিলাল আলীর বাড়ি। বাড়ির নারী সদস্যদের একজন বাড়ির দরজার সামনে বসে আছেন, আরেকজন ঘরের জানালার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন; আর জিলাল আলীর স্ত্রী বাড়ির সামনে মুদিদোকান করছেন। পুরুষদের কেউ জমিতে কাজ করতে গেছেন। কেউ আছেন এলাকার বাইরে।
এ বিষয়ে একঘরে হয়ে থাকা জিলাল উদ্দিন বলেন, ‘এক যুগ ধরে আমার তিন ভাতিজার পরিবারসহ আমার পরিবারকে একঘরে করা হয়েছে। প্রভাবশালী মোড়লদের নিষেধাজ্ঞার কারণে ১২ বছর আগের ছোট মেয়েরা এখন বড় হলেও এলাকায় রেখে তাদের বিয়ে দিতে না পারা ও নানা সামাজিক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।’
জিলাল উদ্দিন আক্ষেপের সঙ্গে বলেন, ‘বড় মেয়েকে গ্রামে রেখে বিয়ে দিতে না পারায় মানিকগঞ্জে আমার এক আত্মীয়ের বাসায় রেখে বিয়ে দিয়েছি। আমি গরিব মানুষ অনেক টাকা খরচ হয়েছে। এখন ছোট মেয়েটা বড় হয়েছে, সে এখন অনার্সে পড়ছে। তাকে কীভাবে বিয়ে দেব চিন্তায় আছি। আমার ছেলেটা কারও বাড়িতে যেতে পারেন না, কারও সঙ্গে মিশতে পারেন না। আমি স্বাধীন দেশে বসবাস করে স্বাধীনভাবে চলতে পারছি না। স্বাধীনভাবে বাঁচতে চাই। আমি সরকারের হস্তক্ষেপ চাই।’
‘গ্রামের সালিস বিচারে মেয়েটিকে দোররা মারার ঘটনা আমি প্রতিবাদ করি। তাই আমাদের একঘরে করে রাখছে গ্রামের মাতবরেরা। গ্রামের কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে আমরা যেতে পারি না। মসজিদ, মাদ্রাসায় আমরা কিছু (অনুদান) দিতে পারি না। এটা আমাদের জন্য শুধু কষ্টের না, লজ্জারও।’ বলেন, একঘরে থাকা জাফর আলী।
জাফর আলীর স্ত্রী লিপি বেগম বলেন, ‘কোরবানির ঈদে মাদ্রাসার মাঠে কোরবানির গোশত আনতে গেলে আমাগো পোলাপানরে গোশত দ্যায় না। পোলাপান খালি হাতে ফিরে আসে, এগুলো দেখে আমাগো কষ্ট লাগে।’
‘আমাগো একঘরে রাখায় ইচ্ছে থাকলেও প্রতিবেশীর সঙ্গে কথা বলতে পারি না। মন ছুটলে যেতে পারি না নিজের প্রতিবেশীর বাড়িতে। এই অবস্থায় পরিবারের কারও মৃত্যু হলে কবর কোথায় হবে তা নিয়ে চিন্তায় আছি।’ বলেন, সত্তোরর্ধ্ব নূরজাহান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক প্রতিবেশী বলেন, ‘জাফর ও তাঁর ভাইয়েরা খেটে খাওয়া মানুষ। গ্রামের কেউ তাঁদের বাড়িতে কোনো অনুষ্ঠানে গেলে এক হাজার টাকা জরিমানা করা হবে বলে মাতবরেরা হুঁশিয়ার করে দেন। গ্রামের অনেকেই তাঁদের বাড়িতে যান না, তাঁরাও কারও বাড়িতে আসেন না।’
চার পরিবারেকে একঘরে রাখার কথা স্বীকার করে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আব্দুর হান্নান হানিফ বলেন, ‘বিষয়টি বেশ কয়েকবার মীমাংসা করে দেওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। ভুক্তভোগী ওই পরিবারের লোকজনদের মাতবরদের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা কেউ যাননি।’
তবে ওই পরিবারগুলোকে একঘরে করে রাখার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মাতবরেরা। এ ব্যাপারে সাবেক ইউপি সদস্য ও প্রধান অভিযুক্ত আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘চার পরিবারকে একঘরে রাখার কথা সত্য নয়। সমাজের লোকজনের সঙ্গে ওই পরিবারের সদস্য মেলামেশায় কোনো বিধিনিষেধ নেই।’ তবে তাদের ‘আচরণের কারণে’ সমাজের কিছু বিষয়ে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বলে স্বীকার করেন তিনি।
একঘরে করার বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন ইউএনও শান্তা রহমান। তিনি বলেন, ‘আগামী গণশুনানিতে ভুক্তভোগীসহ সংশ্লিষ্টদের ডেকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে। অভিযোগের বিষয়টি সত্য হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি

একই গ্রামের হিন্দু ছেলের সঙ্গে মুসলিম মেয়ের বন্ধুত্ব। একপর্যায়ে পালিয়ে বিয়ে। মুসলিম ধর্মাবলম্বী হয়ে অন্য ধর্মের ছেলেকে বিয়ে মেনে নেননি গ্রামের প্রভাবশালী মাতবরেরা। সালিস বসিয়ে সাজা দেওয়া হয় মেয়েকে, সঙ্গে বিয়েতে সাহায্য করার অভিযোগ এনে প্রতিবেশী চারজনকে করা হয় একঘরে। এরই মধ্যে ঘটনার এক যুগ পেরিয়ে গেছে, তবুও কাটেনি রেশ। একঘরে রয়েছে ওই চার পরিবার। তারা মানবেতর জীবন যাপন করছে। তবে ওই ছেলে ও মেয়ের পরিবারের ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা দেননি মাতবরেরা।
ঘটনাটি মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার দরগ্রাম ইউনিয়নের নওগাঁও গ্রামের। সমাজপতিদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ওই চার পরিবার সমাজের কারও সঙ্গে কথা বললে গুনতে হবে এক হাজার টাকা। এমনকি কারও বাড়ির দাওয়াতে যেতে পারবেন না তাঁরা।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, মিথ্যা অপবাদে দীর্ঘ ১২ বছর একঘরে রাখায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এখন সামাজিকভাবে নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাঁদের। ১২ বছর আগের পরিবারের ছোট ছেলে-মেয়েরা এখন বড় হয়েছে। একঘরে হয়ে থাকায় তাঁদের বিয়ে হচ্ছে না। এ বিষয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন জাফর আলী নামের এক ভুক্তভোগী।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালে নওগাঁও গ্রামের হিন্দুধর্মের এক ছেলের সঙ্গে মুসলিম মেয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ে করেন। ওই বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর তাঁদের গ্রামে ধরে এনে সালিস বসানো হয়। আব্দুর রাজ্জাক, আবু হোসেন, বাবু, শফিক মন্ডল, সাঈদ আলীসহ গ্রামের প্রভাবশালী মাতবরেরা সালিস বসান।
সালিসে মেয়েকে জুতা মারা হয়। তাঁদের সহযোগিতা করার অভিযোগ এনে ওই মেয়ের প্রতিবেশী কৃষক জাফর আলী, তাঁর ভাই সাদেক আলী ও আলম হোসেন এবং সাদেকের চাচা জিলাল উদ্দিনকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এমনকি সমাজের কারও সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলে এক হাজার টাকা জরিমানা, একঘরে থাকা চার পরিবারের বাড়িতে কেউ যেতে পারবেন না এবং তাঁরাও সমাজের কারও বাড়িতে যেতে পারবেন না—সালিসে এমন নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
এ ছাড়া গ্রামের মসজিদ, মাদ্রাসা ও ঈদগাহে কোনো অনুদান দিতে পারবেন না বলেও নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়।
এদিকে সালিস ডাকলে ওই হিন্দু ছেলে পালিয়ে যান। এরপর তাঁদের বিয়েও ভেঙে যায়।
একঘরে থাকা জাফর আলীর পঞ্চাশোর্ধ্ব স্ত্রী লিপি বেগম প্রায়ই ঘরের দরজার পাশে ভেজা চোখে বসে থাকেন। লিপি বেগমের পাশের ঘরে থাকা সাদেক আলীর স্ত্রী জাহানারা বেগমেরও একই অবস্থা। জাহানারা বেগম ঘরের জানালার সামনে দাঁড়িয়ে অপলক দৃষ্টিতে দেখেন রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করা মানুষদের।
এলাকার প্রভাবশালী একটি মহল তাঁদের একঘরে করে রাখায় প্রতিবেশী কারও সঙ্গে কথা বলতে পারেন না তাঁরা। মন চাইলেও যেতে পারেন না প্রতিবেশী কারও বাড়িতে। এ অবস্থায় পরিবারের কারও মৃত্যু হলে কবর কোথায় হবে, তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন সত্তোরর্ধ্ব নূরজাহানসহ একঘরে থাকা চার পরিবারের সদস্যরা।
সম্প্রতি নওগাঁও গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, গ্রামের পশ্চিমে দিকে একটি কাঁচা রাস্তার উত্তর পাশে পাশাপাশি জাফর ও তাঁর দুই ভাইয়ের বাড়ি। সেখান থেকে প্রায় ২০০ গজ পশ্চিমে জাফর আলীর কাকা জিলাল আলীর বাড়ি। বাড়ির নারী সদস্যদের একজন বাড়ির দরজার সামনে বসে আছেন, আরেকজন ঘরের জানালার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন; আর জিলাল আলীর স্ত্রী বাড়ির সামনে মুদিদোকান করছেন। পুরুষদের কেউ জমিতে কাজ করতে গেছেন। কেউ আছেন এলাকার বাইরে।
এ বিষয়ে একঘরে হয়ে থাকা জিলাল উদ্দিন বলেন, ‘এক যুগ ধরে আমার তিন ভাতিজার পরিবারসহ আমার পরিবারকে একঘরে করা হয়েছে। প্রভাবশালী মোড়লদের নিষেধাজ্ঞার কারণে ১২ বছর আগের ছোট মেয়েরা এখন বড় হলেও এলাকায় রেখে তাদের বিয়ে দিতে না পারা ও নানা সামাজিক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।’
জিলাল উদ্দিন আক্ষেপের সঙ্গে বলেন, ‘বড় মেয়েকে গ্রামে রেখে বিয়ে দিতে না পারায় মানিকগঞ্জে আমার এক আত্মীয়ের বাসায় রেখে বিয়ে দিয়েছি। আমি গরিব মানুষ অনেক টাকা খরচ হয়েছে। এখন ছোট মেয়েটা বড় হয়েছে, সে এখন অনার্সে পড়ছে। তাকে কীভাবে বিয়ে দেব চিন্তায় আছি। আমার ছেলেটা কারও বাড়িতে যেতে পারেন না, কারও সঙ্গে মিশতে পারেন না। আমি স্বাধীন দেশে বসবাস করে স্বাধীনভাবে চলতে পারছি না। স্বাধীনভাবে বাঁচতে চাই। আমি সরকারের হস্তক্ষেপ চাই।’
‘গ্রামের সালিস বিচারে মেয়েটিকে দোররা মারার ঘটনা আমি প্রতিবাদ করি। তাই আমাদের একঘরে করে রাখছে গ্রামের মাতবরেরা। গ্রামের কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে আমরা যেতে পারি না। মসজিদ, মাদ্রাসায় আমরা কিছু (অনুদান) দিতে পারি না। এটা আমাদের জন্য শুধু কষ্টের না, লজ্জারও।’ বলেন, একঘরে থাকা জাফর আলী।
জাফর আলীর স্ত্রী লিপি বেগম বলেন, ‘কোরবানির ঈদে মাদ্রাসার মাঠে কোরবানির গোশত আনতে গেলে আমাগো পোলাপানরে গোশত দ্যায় না। পোলাপান খালি হাতে ফিরে আসে, এগুলো দেখে আমাগো কষ্ট লাগে।’
‘আমাগো একঘরে রাখায় ইচ্ছে থাকলেও প্রতিবেশীর সঙ্গে কথা বলতে পারি না। মন ছুটলে যেতে পারি না নিজের প্রতিবেশীর বাড়িতে। এই অবস্থায় পরিবারের কারও মৃত্যু হলে কবর কোথায় হবে তা নিয়ে চিন্তায় আছি।’ বলেন, সত্তোরর্ধ্ব নূরজাহান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক প্রতিবেশী বলেন, ‘জাফর ও তাঁর ভাইয়েরা খেটে খাওয়া মানুষ। গ্রামের কেউ তাঁদের বাড়িতে কোনো অনুষ্ঠানে গেলে এক হাজার টাকা জরিমানা করা হবে বলে মাতবরেরা হুঁশিয়ার করে দেন। গ্রামের অনেকেই তাঁদের বাড়িতে যান না, তাঁরাও কারও বাড়িতে আসেন না।’
চার পরিবারেকে একঘরে রাখার কথা স্বীকার করে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আব্দুর হান্নান হানিফ বলেন, ‘বিষয়টি বেশ কয়েকবার মীমাংসা করে দেওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। ভুক্তভোগী ওই পরিবারের লোকজনদের মাতবরদের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা কেউ যাননি।’
তবে ওই পরিবারগুলোকে একঘরে করে রাখার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মাতবরেরা। এ ব্যাপারে সাবেক ইউপি সদস্য ও প্রধান অভিযুক্ত আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘চার পরিবারকে একঘরে রাখার কথা সত্য নয়। সমাজের লোকজনের সঙ্গে ওই পরিবারের সদস্য মেলামেশায় কোনো বিধিনিষেধ নেই।’ তবে তাদের ‘আচরণের কারণে’ সমাজের কিছু বিষয়ে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বলে স্বীকার করেন তিনি।
একঘরে করার বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন ইউএনও শান্তা রহমান। তিনি বলেন, ‘আগামী গণশুনানিতে ভুক্তভোগীসহ সংশ্লিষ্টদের ডেকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে। অভিযোগের বিষয়টি সত্য হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

একই গ্রামের হিন্দু ছেলের সঙ্গে মুসলিম মেয়ের বন্ধুত্ব। একপর্যায়ে পালিয়ে বিয়ে। মুসলিম ধর্মাবলম্বী হয়ে অন্য ধর্মের ছেলেকে বিয়ে মেনে নেননি গ্রামের প্রভাবশালী মাতবরেরা। সালিস বসিয়ে সাজা দেওয়া হয় মেয়েকে, সঙ্গে বিয়েতে সাহায্য করার অভিযোগ এনে প্রতিবেশী চারজনকে করা হয় একঘরে। এরই মধ্যে ঘটনার এক যুগ পেরিয়ে গেছে, তবুও কাটেনি রেশ। একঘরে রয়েছে ওই চার পরিবার। তারা মানবেতর জীবন যাপন করছে। তবে ওই ছেলে ও মেয়ের পরিবারের ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা দেননি মাতবরেরা।
ঘটনাটি মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার দরগ্রাম ইউনিয়নের নওগাঁও গ্রামের। সমাজপতিদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ওই চার পরিবার সমাজের কারও সঙ্গে কথা বললে গুনতে হবে এক হাজার টাকা। এমনকি কারও বাড়ির দাওয়াতে যেতে পারবেন না তাঁরা।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, মিথ্যা অপবাদে দীর্ঘ ১২ বছর একঘরে রাখায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এখন সামাজিকভাবে নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাঁদের। ১২ বছর আগের পরিবারের ছোট ছেলে-মেয়েরা এখন বড় হয়েছে। একঘরে হয়ে থাকায় তাঁদের বিয়ে হচ্ছে না। এ বিষয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন জাফর আলী নামের এক ভুক্তভোগী।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালে নওগাঁও গ্রামের হিন্দুধর্মের এক ছেলের সঙ্গে মুসলিম মেয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ে করেন। ওই বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর তাঁদের গ্রামে ধরে এনে সালিস বসানো হয়। আব্দুর রাজ্জাক, আবু হোসেন, বাবু, শফিক মন্ডল, সাঈদ আলীসহ গ্রামের প্রভাবশালী মাতবরেরা সালিস বসান।
সালিসে মেয়েকে জুতা মারা হয়। তাঁদের সহযোগিতা করার অভিযোগ এনে ওই মেয়ের প্রতিবেশী কৃষক জাফর আলী, তাঁর ভাই সাদেক আলী ও আলম হোসেন এবং সাদেকের চাচা জিলাল উদ্দিনকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এমনকি সমাজের কারও সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলে এক হাজার টাকা জরিমানা, একঘরে থাকা চার পরিবারের বাড়িতে কেউ যেতে পারবেন না এবং তাঁরাও সমাজের কারও বাড়িতে যেতে পারবেন না—সালিসে এমন নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
এ ছাড়া গ্রামের মসজিদ, মাদ্রাসা ও ঈদগাহে কোনো অনুদান দিতে পারবেন না বলেও নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়।
এদিকে সালিস ডাকলে ওই হিন্দু ছেলে পালিয়ে যান। এরপর তাঁদের বিয়েও ভেঙে যায়।
একঘরে থাকা জাফর আলীর পঞ্চাশোর্ধ্ব স্ত্রী লিপি বেগম প্রায়ই ঘরের দরজার পাশে ভেজা চোখে বসে থাকেন। লিপি বেগমের পাশের ঘরে থাকা সাদেক আলীর স্ত্রী জাহানারা বেগমেরও একই অবস্থা। জাহানারা বেগম ঘরের জানালার সামনে দাঁড়িয়ে অপলক দৃষ্টিতে দেখেন রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করা মানুষদের।
এলাকার প্রভাবশালী একটি মহল তাঁদের একঘরে করে রাখায় প্রতিবেশী কারও সঙ্গে কথা বলতে পারেন না তাঁরা। মন চাইলেও যেতে পারেন না প্রতিবেশী কারও বাড়িতে। এ অবস্থায় পরিবারের কারও মৃত্যু হলে কবর কোথায় হবে, তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন সত্তোরর্ধ্ব নূরজাহানসহ একঘরে থাকা চার পরিবারের সদস্যরা।
সম্প্রতি নওগাঁও গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, গ্রামের পশ্চিমে দিকে একটি কাঁচা রাস্তার উত্তর পাশে পাশাপাশি জাফর ও তাঁর দুই ভাইয়ের বাড়ি। সেখান থেকে প্রায় ২০০ গজ পশ্চিমে জাফর আলীর কাকা জিলাল আলীর বাড়ি। বাড়ির নারী সদস্যদের একজন বাড়ির দরজার সামনে বসে আছেন, আরেকজন ঘরের জানালার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন; আর জিলাল আলীর স্ত্রী বাড়ির সামনে মুদিদোকান করছেন। পুরুষদের কেউ জমিতে কাজ করতে গেছেন। কেউ আছেন এলাকার বাইরে।
এ বিষয়ে একঘরে হয়ে থাকা জিলাল উদ্দিন বলেন, ‘এক যুগ ধরে আমার তিন ভাতিজার পরিবারসহ আমার পরিবারকে একঘরে করা হয়েছে। প্রভাবশালী মোড়লদের নিষেধাজ্ঞার কারণে ১২ বছর আগের ছোট মেয়েরা এখন বড় হলেও এলাকায় রেখে তাদের বিয়ে দিতে না পারা ও নানা সামাজিক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।’
জিলাল উদ্দিন আক্ষেপের সঙ্গে বলেন, ‘বড় মেয়েকে গ্রামে রেখে বিয়ে দিতে না পারায় মানিকগঞ্জে আমার এক আত্মীয়ের বাসায় রেখে বিয়ে দিয়েছি। আমি গরিব মানুষ অনেক টাকা খরচ হয়েছে। এখন ছোট মেয়েটা বড় হয়েছে, সে এখন অনার্সে পড়ছে। তাকে কীভাবে বিয়ে দেব চিন্তায় আছি। আমার ছেলেটা কারও বাড়িতে যেতে পারেন না, কারও সঙ্গে মিশতে পারেন না। আমি স্বাধীন দেশে বসবাস করে স্বাধীনভাবে চলতে পারছি না। স্বাধীনভাবে বাঁচতে চাই। আমি সরকারের হস্তক্ষেপ চাই।’
‘গ্রামের সালিস বিচারে মেয়েটিকে দোররা মারার ঘটনা আমি প্রতিবাদ করি। তাই আমাদের একঘরে করে রাখছে গ্রামের মাতবরেরা। গ্রামের কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে আমরা যেতে পারি না। মসজিদ, মাদ্রাসায় আমরা কিছু (অনুদান) দিতে পারি না। এটা আমাদের জন্য শুধু কষ্টের না, লজ্জারও।’ বলেন, একঘরে থাকা জাফর আলী।
জাফর আলীর স্ত্রী লিপি বেগম বলেন, ‘কোরবানির ঈদে মাদ্রাসার মাঠে কোরবানির গোশত আনতে গেলে আমাগো পোলাপানরে গোশত দ্যায় না। পোলাপান খালি হাতে ফিরে আসে, এগুলো দেখে আমাগো কষ্ট লাগে।’
‘আমাগো একঘরে রাখায় ইচ্ছে থাকলেও প্রতিবেশীর সঙ্গে কথা বলতে পারি না। মন ছুটলে যেতে পারি না নিজের প্রতিবেশীর বাড়িতে। এই অবস্থায় পরিবারের কারও মৃত্যু হলে কবর কোথায় হবে তা নিয়ে চিন্তায় আছি।’ বলেন, সত্তোরর্ধ্ব নূরজাহান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক প্রতিবেশী বলেন, ‘জাফর ও তাঁর ভাইয়েরা খেটে খাওয়া মানুষ। গ্রামের কেউ তাঁদের বাড়িতে কোনো অনুষ্ঠানে গেলে এক হাজার টাকা জরিমানা করা হবে বলে মাতবরেরা হুঁশিয়ার করে দেন। গ্রামের অনেকেই তাঁদের বাড়িতে যান না, তাঁরাও কারও বাড়িতে আসেন না।’
চার পরিবারেকে একঘরে রাখার কথা স্বীকার করে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আব্দুর হান্নান হানিফ বলেন, ‘বিষয়টি বেশ কয়েকবার মীমাংসা করে দেওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। ভুক্তভোগী ওই পরিবারের লোকজনদের মাতবরদের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা কেউ যাননি।’
তবে ওই পরিবারগুলোকে একঘরে করে রাখার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মাতবরেরা। এ ব্যাপারে সাবেক ইউপি সদস্য ও প্রধান অভিযুক্ত আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘চার পরিবারকে একঘরে রাখার কথা সত্য নয়। সমাজের লোকজনের সঙ্গে ওই পরিবারের সদস্য মেলামেশায় কোনো বিধিনিষেধ নেই।’ তবে তাদের ‘আচরণের কারণে’ সমাজের কিছু বিষয়ে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বলে স্বীকার করেন তিনি।
একঘরে করার বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন ইউএনও শান্তা রহমান। তিনি বলেন, ‘আগামী গণশুনানিতে ভুক্তভোগীসহ সংশ্লিষ্টদের ডেকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে। অভিযোগের বিষয়টি সত্য হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

লক্ষ্মীপুরে বেলাল হোসেন নামের এক বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে পেট্রল ঢেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শুক্রবার রাতে সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জের চরমনসা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
২৫ মিনিট আগে
পাবনার ঈশ্বরদীতে সিএনজিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নারীসহ দুজন নিহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার বিকেলে ঈশ্বরদী শহরের স্কুলপাড়ায় ঈশ্বরদী-লালপুর-বাঘা-বানেশ্বর আঞ্চলিক মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
১ ঘণ্টা আগে
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যার প্রতিবাদে শরীয়তপুর জেলা শহরে মশাল মিছিল করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গতকাল শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় শহরের জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ চত্বর থেকে মশাল মিছিলটি শুরু হয়।
২ ঘণ্টা আগে
সাতক্ষীরার বহুল প্রতীক্ষিত রেললাইনের নির্মাণকাজ এগোচ্ছে কচ্ছপগতিতে। এক যুগ আগে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর গেল মাসে যশোরের নাভারণ থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের ডিপিপি প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগেলক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

লক্ষ্মীপুরে বেলাল হোসেন নামের এক বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে পেট্রল ঢেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শুক্রবার রাতে সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জের চরমনসা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। আগুনে আয়েশা বেগম (৭) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। দগ্ধ হয়েছেন বেলাল হোসেন এবং তাঁর আরও দুই শিশুসন্তান।
বেলাল হোসেন সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক। তাঁকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দগ্ধ দুই শিশু বীথি আক্তার ও স্মৃতি আক্তারের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। দগ্ধ শিশুদের বয়স ১২ থেকে ১৪ বছর।
বিএনপির নেতা-কর্মীরা জানান, ভবানীগঞ্জের চরমনসা এলাকায় নিজের ঘরে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন বেলাল হোসেন। গভীর রাতে ঘরের দরজায় তালা লাগিয়ে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় দৃর্বৃত্তরা। মুহূর্তের মধ্যে আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় ঘুমন্ত শিশু আয়েশা দগ্ধ হয়ে মারা যায়। দগ্ধ হন বেলাল হোসেন এবং তাঁর আরও দুই মেয়ে। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা তিনজনকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
লক্ষ্মীপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার রনজিত কুমার দাস বলেন, এক শিশুকে মৃত এবং অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় তিনজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর।
লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা অরূপ পাল বলেন, বেলাল হোসেনের শরীরের ২০ শতাংশ পুড়ে গেছে। দুই শিশুর শরীর ৭০ থেকে ৮০ শাতংশ পুড়ে গেছে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওয়াহিদ পারভেজ বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। অগ্নিদগ্ধ হয়ে এক শিশু মারা গেছে। আরও তিনজন অগ্নিদগ্ধ। তবে আগুনের বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। এটি পরিকল্পিতভাবে নাশকতা কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

লক্ষ্মীপুরে বেলাল হোসেন নামের এক বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে পেট্রল ঢেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শুক্রবার রাতে সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জের চরমনসা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। আগুনে আয়েশা বেগম (৭) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। দগ্ধ হয়েছেন বেলাল হোসেন এবং তাঁর আরও দুই শিশুসন্তান।
বেলাল হোসেন সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক। তাঁকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দগ্ধ দুই শিশু বীথি আক্তার ও স্মৃতি আক্তারের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। দগ্ধ শিশুদের বয়স ১২ থেকে ১৪ বছর।
বিএনপির নেতা-কর্মীরা জানান, ভবানীগঞ্জের চরমনসা এলাকায় নিজের ঘরে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন বেলাল হোসেন। গভীর রাতে ঘরের দরজায় তালা লাগিয়ে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় দৃর্বৃত্তরা। মুহূর্তের মধ্যে আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় ঘুমন্ত শিশু আয়েশা দগ্ধ হয়ে মারা যায়। দগ্ধ হন বেলাল হোসেন এবং তাঁর আরও দুই মেয়ে। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা তিনজনকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
লক্ষ্মীপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার রনজিত কুমার দাস বলেন, এক শিশুকে মৃত এবং অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় তিনজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর।
লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা অরূপ পাল বলেন, বেলাল হোসেনের শরীরের ২০ শতাংশ পুড়ে গেছে। দুই শিশুর শরীর ৭০ থেকে ৮০ শাতংশ পুড়ে গেছে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওয়াহিদ পারভেজ বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। অগ্নিদগ্ধ হয়ে এক শিশু মারা গেছে। আরও তিনজন অগ্নিদগ্ধ। তবে আগুনের বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। এটি পরিকল্পিতভাবে নাশকতা কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

একই গ্রামের হিন্দু ছেলের সঙ্গে মুসলিম মেয়ের বন্ধুত্ব। একপর্যায়ে পালিয়ে বিয়ে। মুসলিম ধর্মাবলম্বী হয়ে অন্য ধর্মের ছেলেকে বিয়ে মেনে নেননি গ্রামের প্রভাবশালী মাতবরেরা। সালিস বসিয়ে সাজা দেওয়া হয় মেয়েকে, সঙ্গে বিয়েতে সাহায্য করার অভিযোগ এনে প্রতিবেশী চারজনকে করা হয় একঘরে। এরই মধ্যে ঘটনার এক যুগ পেরিয়ে গেছ
১৫ মার্চ ২০২৪
পাবনার ঈশ্বরদীতে সিএনজিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নারীসহ দুজন নিহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার বিকেলে ঈশ্বরদী শহরের স্কুলপাড়ায় ঈশ্বরদী-লালপুর-বাঘা-বানেশ্বর আঞ্চলিক মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
১ ঘণ্টা আগে
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যার প্রতিবাদে শরীয়তপুর জেলা শহরে মশাল মিছিল করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গতকাল শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় শহরের জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ চত্বর থেকে মশাল মিছিলটি শুরু হয়।
২ ঘণ্টা আগে
সাতক্ষীরার বহুল প্রতীক্ষিত রেললাইনের নির্মাণকাজ এগোচ্ছে কচ্ছপগতিতে। এক যুগ আগে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর গেল মাসে যশোরের নাভারণ থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের ডিপিপি প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগেঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি

পাবনার ঈশ্বরদীতে সিএনজিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নারীসহ দুজন নিহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার বিকেলে ঈশ্বরদী শহরের স্কুলপাড়ায় ঈশ্বরদী-লালপুর-বাঘা-বানেশ্বর আঞ্চলিক মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার সাড়া ইউনিয়নের ঝাউদিয়া এলাকার মৃত আনোয়ার হোসেনের ছেলে শাকিব হোসেন (২২) এবং শহরের পিয়ারাখালী এলাকার রফিকুল ইসলামের স্ত্রী শিরিনা বেগম (৪৫)। নিহত ব্যক্তিরা সম্পর্কে খালা ও ভাগনে ছিলেন। তাঁরা দুজনই অটোরিকশার যাত্রী ছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানায়, গতকাল বিকেলে লালপুর থেকে যাত্রী নিয়ে একটি অটোরিকশা ঈশ্বরদী শহরে আসছিল। অটোরিকশাটি শহরের স্কুলপাড়ার মহাসড়কে এলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে সিএনজি অটোরিকশার দুই যাত্রী গুরুতর আহত হন। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের উদ্ধার করে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোমিনুজ্জামান বলেন, দুর্ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। তবে অটোরিকশার চালক পালিয়েছেন। এ ব্যাপারে মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

পাবনার ঈশ্বরদীতে সিএনজিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নারীসহ দুজন নিহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার বিকেলে ঈশ্বরদী শহরের স্কুলপাড়ায় ঈশ্বরদী-লালপুর-বাঘা-বানেশ্বর আঞ্চলিক মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার সাড়া ইউনিয়নের ঝাউদিয়া এলাকার মৃত আনোয়ার হোসেনের ছেলে শাকিব হোসেন (২২) এবং শহরের পিয়ারাখালী এলাকার রফিকুল ইসলামের স্ত্রী শিরিনা বেগম (৪৫)। নিহত ব্যক্তিরা সম্পর্কে খালা ও ভাগনে ছিলেন। তাঁরা দুজনই অটোরিকশার যাত্রী ছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানায়, গতকাল বিকেলে লালপুর থেকে যাত্রী নিয়ে একটি অটোরিকশা ঈশ্বরদী শহরে আসছিল। অটোরিকশাটি শহরের স্কুলপাড়ার মহাসড়কে এলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে সিএনজি অটোরিকশার দুই যাত্রী গুরুতর আহত হন। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের উদ্ধার করে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোমিনুজ্জামান বলেন, দুর্ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। তবে অটোরিকশার চালক পালিয়েছেন। এ ব্যাপারে মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

একই গ্রামের হিন্দু ছেলের সঙ্গে মুসলিম মেয়ের বন্ধুত্ব। একপর্যায়ে পালিয়ে বিয়ে। মুসলিম ধর্মাবলম্বী হয়ে অন্য ধর্মের ছেলেকে বিয়ে মেনে নেননি গ্রামের প্রভাবশালী মাতবরেরা। সালিস বসিয়ে সাজা দেওয়া হয় মেয়েকে, সঙ্গে বিয়েতে সাহায্য করার অভিযোগ এনে প্রতিবেশী চারজনকে করা হয় একঘরে। এরই মধ্যে ঘটনার এক যুগ পেরিয়ে গেছ
১৫ মার্চ ২০২৪
লক্ষ্মীপুরে বেলাল হোসেন নামের এক বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে পেট্রল ঢেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শুক্রবার রাতে সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জের চরমনসা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
২৫ মিনিট আগে
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যার প্রতিবাদে শরীয়তপুর জেলা শহরে মশাল মিছিল করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গতকাল শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় শহরের জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ চত্বর থেকে মশাল মিছিলটি শুরু হয়।
২ ঘণ্টা আগে
সাতক্ষীরার বহুল প্রতীক্ষিত রেললাইনের নির্মাণকাজ এগোচ্ছে কচ্ছপগতিতে। এক যুগ আগে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর গেল মাসে যশোরের নাভারণ থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের ডিপিপি প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগেশরীয়তপুর প্রতিনিধি

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যার প্রতিবাদে শরীয়তপুর জেলা শহরে মশাল মিছিল করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গতকাল শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় শহরের জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ চত্বর থেকে মশাল মিছিলটি শুরু হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে শরীয়তপুর-ঢাকা সড়কের চৌরঙ্গী মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে প্রায় আধা ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন দলটির নেতা-কর্মীরা। এ সময় হাদি হত্যার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন তাঁরা।
এনসিপির শরীয়তপুর জেলার সদস্যসচিব সবুজ তালুকদার বলেন, ‘হাদি হত্যাকাণ্ড কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। ভিন্নমত দমন ও রাজনৈতিক কণ্ঠরোধের ধারাবাহিকতারই অংশ এই হত্যাকাণ্ড। দিনদুপুরে খুনিরা গুলি করে কীভাবে পালিয়ে গেল? এক সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও খুনিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আমরা অবিলম্বে এই হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত, প্রকৃত খুনিদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। তা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আমিন মোহাম্মদ জিতু বলেন, ‘এটি শুধু একজন ব্যক্তির হত্যাকাণ্ড নয়, এটি মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত। এই হত্যার বিচার না হলে তরুণ সমাজ রাজপথে আবারও দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে।’
বিক্ষোভে এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যার প্রতিবাদে শরীয়তপুর জেলা শহরে মশাল মিছিল করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গতকাল শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় শহরের জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ চত্বর থেকে মশাল মিছিলটি শুরু হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে শরীয়তপুর-ঢাকা সড়কের চৌরঙ্গী মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে প্রায় আধা ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন দলটির নেতা-কর্মীরা। এ সময় হাদি হত্যার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন তাঁরা।
এনসিপির শরীয়তপুর জেলার সদস্যসচিব সবুজ তালুকদার বলেন, ‘হাদি হত্যাকাণ্ড কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। ভিন্নমত দমন ও রাজনৈতিক কণ্ঠরোধের ধারাবাহিকতারই অংশ এই হত্যাকাণ্ড। দিনদুপুরে খুনিরা গুলি করে কীভাবে পালিয়ে গেল? এক সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও খুনিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আমরা অবিলম্বে এই হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত, প্রকৃত খুনিদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। তা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আমিন মোহাম্মদ জিতু বলেন, ‘এটি শুধু একজন ব্যক্তির হত্যাকাণ্ড নয়, এটি মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত। এই হত্যার বিচার না হলে তরুণ সমাজ রাজপথে আবারও দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে।’
বিক্ষোভে এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

একই গ্রামের হিন্দু ছেলের সঙ্গে মুসলিম মেয়ের বন্ধুত্ব। একপর্যায়ে পালিয়ে বিয়ে। মুসলিম ধর্মাবলম্বী হয়ে অন্য ধর্মের ছেলেকে বিয়ে মেনে নেননি গ্রামের প্রভাবশালী মাতবরেরা। সালিস বসিয়ে সাজা দেওয়া হয় মেয়েকে, সঙ্গে বিয়েতে সাহায্য করার অভিযোগ এনে প্রতিবেশী চারজনকে করা হয় একঘরে। এরই মধ্যে ঘটনার এক যুগ পেরিয়ে গেছ
১৫ মার্চ ২০২৪
লক্ষ্মীপুরে বেলাল হোসেন নামের এক বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে পেট্রল ঢেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শুক্রবার রাতে সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জের চরমনসা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
২৫ মিনিট আগে
পাবনার ঈশ্বরদীতে সিএনজিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নারীসহ দুজন নিহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার বিকেলে ঈশ্বরদী শহরের স্কুলপাড়ায় ঈশ্বরদী-লালপুর-বাঘা-বানেশ্বর আঞ্চলিক মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
১ ঘণ্টা আগে
সাতক্ষীরার বহুল প্রতীক্ষিত রেললাইনের নির্মাণকাজ এগোচ্ছে কচ্ছপগতিতে। এক যুগ আগে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর গেল মাসে যশোরের নাভারণ থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের ডিপিপি প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগেআবুল কাসেম, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরার বহুল প্রতীক্ষিত রেললাইনের নির্মাণকাজ এগোচ্ছে কচ্ছপগতিতে। এক যুগ আগে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর গেল মাসে যশোরের নাভারণ থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের ডিপিপি প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
সাতক্ষীরাবাসী বলছে, শত বছরের প্রতীক্ষিত রেললাইন নির্মিত হলে একদিকে যেমন সুন্দরবনকেন্দ্রিক পর্যটন বিকশিত হবে, অন্যদিকে পণ্য পরিবহনে খরচ কমায় ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারিত হবে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন ও অন্যান্য সূত্রে জানা যায়, ১৯১৪ সালে ব্রিটিশ ভাইসরয় সাতক্ষীরাকে রেললাইনে সংযুক্ত করে সুন্দরবন পর্যন্ত সম্প্রসারণের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই নির্দেশনা বাস্তবায়িত হয়নি। ১৯৫৮ সালে সাতক্ষীরা-ভেটখালি সড়ক নির্মাণের সময় জমি অধিগ্রহণ করেও নির্মিত হয়নি রেললাইন।
দীর্ঘকাল পরে ২০১০ সালে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে এক জনসভায় তৎকালীন সরকারপ্রধান নাভারণ-সাতক্ষীরা-মুন্সিগঞ্জ রেললাইন নির্মাণের ঘোষণা দেন। ২০১৩ সালে সম্ভাব্যতা যাচাই করে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দেয় অস্ট্রেলিয়ার ক্যানারেইল কোম্পানি লিমিটেড। সম্ভাব্যতা যাচাই করতে খরচ হয় ১১ কোটি টাকা। সম্ভাব্যতা ম্যাপে ৯৮ কিলোমিটার রেললাইনে ৮টি স্টেশনের প্রস্তাব রাখা হয়।
এরপর আবারও থেমে যায় রেললাইন নির্মাণের উদোগ। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর রেললাইন স্থাপনের দাবিতে সাতক্ষীরায় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের ব্যানারে আন্দোলন শুরু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে নাভারণ-সাতক্ষীরা রেললাইন স্থাপনের উদ্যোগের অংশ হিসেবে যশোর রেলওয়ের পক্ষ থেকে সরেজমিন পরিদর্শন করা হয়। এরপর গত মাসে যশোরের নাভারণ থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত ৫টি স্টেশনযুক্ত ৪২ কিলোমিটার রেললাইনের ডিপিপি প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে জেলা প্রশাসনের একটি সূত্র।
সাতক্ষীরার বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের শেষ জেলা সাতক্ষীরায় ২২ লাখের বেশি মানুষের বাস। এ জেলা থেকে দেশের অন্যান্য স্থানে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম সড়কপথ। সুন্দরবন, চিংড়ি, আম ও ভোমরা বন্দরের কারণে অর্থনৈতিকভাবে ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠায় সাতক্ষীরায় রেললাইন নির্মাণ এখন সময়ের দাবি।
জেলা চিংড়ি চাষি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডা. আবুল কালাম বাবলা বলেন, নৌপথ ও আকাশপথে যাতায়াতের কোনো সুযোগ নেই জেলাবাসীর। রেললাইন নির্মিত হলে মৎস্য খাতের নতুন দিকের সূচনা হবে।
সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলী নূর খান বাবুল বলেন, ‘সাতক্ষীরা থেকে আমরা যে পরিমাণ রাজস্ব সরকারকে দিই, সে ধরনের উন্নয়ন চোখে পড়ে না।’
ভোমরা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবু মুসা বলেন, কলকাতা থেকে ভোমরা স্থলবন্দরের দূরত্ব মাত্র ৬০ কিলোমিটার। তাই রেললাইন হলে ভোমরায় ব্যবসা-বাণিজ্যের চিত্র পাল্টে যাবে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক আফরোজা আখতার বলেন, ‘জিআই পণ্য আম, চিংড়ি এবং ভোমরা স্থলবন্দরের পণ্য পরিবহনের জন্য সাতক্ষীরায় রেললাইন নির্মাণ জরুরি। আমি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রেললাইন নির্মাণের জন্য যত প্রচেষ্টা রয়েছে, সেটা করব।’

সাতক্ষীরার বহুল প্রতীক্ষিত রেললাইনের নির্মাণকাজ এগোচ্ছে কচ্ছপগতিতে। এক যুগ আগে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর গেল মাসে যশোরের নাভারণ থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের ডিপিপি প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
সাতক্ষীরাবাসী বলছে, শত বছরের প্রতীক্ষিত রেললাইন নির্মিত হলে একদিকে যেমন সুন্দরবনকেন্দ্রিক পর্যটন বিকশিত হবে, অন্যদিকে পণ্য পরিবহনে খরচ কমায় ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারিত হবে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন ও অন্যান্য সূত্রে জানা যায়, ১৯১৪ সালে ব্রিটিশ ভাইসরয় সাতক্ষীরাকে রেললাইনে সংযুক্ত করে সুন্দরবন পর্যন্ত সম্প্রসারণের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই নির্দেশনা বাস্তবায়িত হয়নি। ১৯৫৮ সালে সাতক্ষীরা-ভেটখালি সড়ক নির্মাণের সময় জমি অধিগ্রহণ করেও নির্মিত হয়নি রেললাইন।
দীর্ঘকাল পরে ২০১০ সালে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে এক জনসভায় তৎকালীন সরকারপ্রধান নাভারণ-সাতক্ষীরা-মুন্সিগঞ্জ রেললাইন নির্মাণের ঘোষণা দেন। ২০১৩ সালে সম্ভাব্যতা যাচাই করে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দেয় অস্ট্রেলিয়ার ক্যানারেইল কোম্পানি লিমিটেড। সম্ভাব্যতা যাচাই করতে খরচ হয় ১১ কোটি টাকা। সম্ভাব্যতা ম্যাপে ৯৮ কিলোমিটার রেললাইনে ৮টি স্টেশনের প্রস্তাব রাখা হয়।
এরপর আবারও থেমে যায় রেললাইন নির্মাণের উদোগ। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর রেললাইন স্থাপনের দাবিতে সাতক্ষীরায় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের ব্যানারে আন্দোলন শুরু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে নাভারণ-সাতক্ষীরা রেললাইন স্থাপনের উদ্যোগের অংশ হিসেবে যশোর রেলওয়ের পক্ষ থেকে সরেজমিন পরিদর্শন করা হয়। এরপর গত মাসে যশোরের নাভারণ থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত ৫টি স্টেশনযুক্ত ৪২ কিলোমিটার রেললাইনের ডিপিপি প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে জেলা প্রশাসনের একটি সূত্র।
সাতক্ষীরার বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের শেষ জেলা সাতক্ষীরায় ২২ লাখের বেশি মানুষের বাস। এ জেলা থেকে দেশের অন্যান্য স্থানে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম সড়কপথ। সুন্দরবন, চিংড়ি, আম ও ভোমরা বন্দরের কারণে অর্থনৈতিকভাবে ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠায় সাতক্ষীরায় রেললাইন নির্মাণ এখন সময়ের দাবি।
জেলা চিংড়ি চাষি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডা. আবুল কালাম বাবলা বলেন, নৌপথ ও আকাশপথে যাতায়াতের কোনো সুযোগ নেই জেলাবাসীর। রেললাইন নির্মিত হলে মৎস্য খাতের নতুন দিকের সূচনা হবে।
সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলী নূর খান বাবুল বলেন, ‘সাতক্ষীরা থেকে আমরা যে পরিমাণ রাজস্ব সরকারকে দিই, সে ধরনের উন্নয়ন চোখে পড়ে না।’
ভোমরা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবু মুসা বলেন, কলকাতা থেকে ভোমরা স্থলবন্দরের দূরত্ব মাত্র ৬০ কিলোমিটার। তাই রেললাইন হলে ভোমরায় ব্যবসা-বাণিজ্যের চিত্র পাল্টে যাবে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক আফরোজা আখতার বলেন, ‘জিআই পণ্য আম, চিংড়ি এবং ভোমরা স্থলবন্দরের পণ্য পরিবহনের জন্য সাতক্ষীরায় রেললাইন নির্মাণ জরুরি। আমি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রেললাইন নির্মাণের জন্য যত প্রচেষ্টা রয়েছে, সেটা করব।’

একই গ্রামের হিন্দু ছেলের সঙ্গে মুসলিম মেয়ের বন্ধুত্ব। একপর্যায়ে পালিয়ে বিয়ে। মুসলিম ধর্মাবলম্বী হয়ে অন্য ধর্মের ছেলেকে বিয়ে মেনে নেননি গ্রামের প্রভাবশালী মাতবরেরা। সালিস বসিয়ে সাজা দেওয়া হয় মেয়েকে, সঙ্গে বিয়েতে সাহায্য করার অভিযোগ এনে প্রতিবেশী চারজনকে করা হয় একঘরে। এরই মধ্যে ঘটনার এক যুগ পেরিয়ে গেছ
১৫ মার্চ ২০২৪
লক্ষ্মীপুরে বেলাল হোসেন নামের এক বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে পেট্রল ঢেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শুক্রবার রাতে সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জের চরমনসা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
২৫ মিনিট আগে
পাবনার ঈশ্বরদীতে সিএনজিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নারীসহ দুজন নিহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার বিকেলে ঈশ্বরদী শহরের স্কুলপাড়ায় ঈশ্বরদী-লালপুর-বাঘা-বানেশ্বর আঞ্চলিক মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
১ ঘণ্টা আগে
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যার প্রতিবাদে শরীয়তপুর জেলা শহরে মশাল মিছিল করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গতকাল শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় শহরের জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ চত্বর থেকে মশাল মিছিলটি শুরু হয়।
২ ঘণ্টা আগে